মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্রতা মুবারক নিয়ে বিভ্রান্তিকর বক্তব্যের দালীলিক জাওয়াব
নাস্তিকদের আপত্তি ১০ : মহান আল্লাহ পাক উনার কি সন্তান হতে পারে? না (Quran 6:101) এবং হ্যাঁ (Quran 39:4)!
খণ্ডণ: মহান আল্লাহ পাক উনার শান-মান মুবারক সম্পর্কে এ ধরণের আপত্তি চরম মূর্খতা ও বিদ্বেষের বহিঃপ্রকাশ।
কেননা মহান আল্লাহ পাক তিনি স্পষ্ট করে ইরশাদ মুবারক করেন-
اِنَّـمَا اللهُ اِلٰهٌ وَاحِدٌ ۖ سُبْحَانَهُ اَنْ يَكُوْنَ لَهُ وَلَدٌ ۘ
অর্থ : “নিঃসন্দেহে মহান আল্লাহ পাক তিনি একক ইলাহ। সন্তান-সন্ততি হওয়াটা উনার যোগ্য বিষয় নয়।” (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৭১)
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার অন্যত্র ইরশাদ মুবারক করেন-
وَقَالَتِ الْيَهُوْدُ عُزَيْرٌ ابْنُ اللهِ وَقَالَتِ النَّصَارَى الْمَسِيْحُ ابْنُ اللهِ ۖ ذٰلِكَ قَوْلُـهُمْ بِاَفْوَاهِهِمْ ۖ يُضَاهِئُوْنَ قَوْلَ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا مِنْ قَبْلُ ۚ قَاتَلَهُمُ اللهُ ۚ اَنّٰـى يُؤْفَكُوْنَ◌
অর্থ : “ইহুদীরা বলে হযরত উযাইর আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পুত্র নাঊযুবিল্লাহ! এবং নাছারারা বলে হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পুত্র। নাঊযুবিল্লাহ! এ হচ্ছে তাদের মুখের কথা। এরা পূর্ববর্তী কাফিরদের মত কথা বলে। মহান আল্লাহ পাক তিনি এদের ধ্বংস করুন, এরা কোন উল্টা পথে চলে যাচ্ছে।” (পবিত্র সূরা তওবা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩০)
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার অন্যত্র ইরশাদ মুবারক করেন-
اَمْ يَـحْسَبُوْنَ اَنَّا لَا نَسْمَعُ سِرَّهُمْ وَنَـجْوَاهُمْ ۚ بَلٰى وَرُسُلُنَا لَدَيْهِمْ يَكْتُبُوْنَ ◌ قُلْ اِنْ كَانَ لِلرَّحْـمٰنِ وَلَدٌ فَاَنَا اَوَّلُ الْعَابِدِيْنَ ◌ سُبْحَانَ رَبِّ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِ رَبِّ الْعَرْشِ عَمَّا يَصِفُوْنَ ◌
অর্থ : “তারা কি মনে করে যে, আমি তাদের গোপন বিষয় ও গোপন পরামর্শ শুনি না? হ্যাঁ, শুনি। আমার হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা তাদের নিকটে থেকে লিপিবদ্ধ করে। বলুন, দয়াময় আল্লাহ পাক উনার কোন সন্তান থাকলে আমি সর্বপ্রথম তার ইবাদত করবো। তারা যা বর্ণনা করে, তা থেকে আসমান ও যমীনের পালনকর্তা, আরশের পালনকর্তা পবিত্র।” (পবিত্র সূরা যুখরুফ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৮০-৮২)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
مَا اتَّـخَذَ اللهُ مِنْ وَلَدٍ وَمَا كَانَ مَعَهُ مِنْ اِلٰهٍ ۚ اِذًا لَّذَهَبَ كُلُّ اِلٰهٍ بِـمَا خَلَقَ وَلَعَلَا بَعْضُهُمْ عَلٰى بَعْضٍ ۚ سُبْحَانَ اللهِ عَمَّا يَصِفُوْنَ ◌
অর্থ : “মহান আল্লাহ পাক তিনি কোন সন্তান গ্রহণ করেননি এবং উনার সাথে কোন মাবুদ নেই। থাকলে প্রত্যেক মাবুদ নিজ নিজ সৃষ্টি নিয়ে চলে যেতো এবং একজন অন্যজনের উপর প্রবল হয়ে যেতো। তারা যা বলে, তা থেকে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র।” (পবিত্র সূরা মু’মিনূন শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৯১)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
بَدِيْعُ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِ ۖ اَنّٰـى يَكُوْنُ لَهُ وَلَدٌ وَلَـمْ تَكُنْ لَّهُ صَاحِبَةٌ ۖ وَخَلَقَ كُلَّ شَيْءٍ ۖ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ ◌
অর্থ : “মহান আল্লাহ পাক তিনি আসমান ও যমীনের আদি স্রষ্টা। কিরূপে মহান আল্লাহ পাক উনার পুত্র হতে পারে, অথচ উনার কোন সঙ্গী নেই? তিনি যাবতীয় কিছু সৃষ্টি করেছেন। তিনি সব বস্তু সম্পর্কে সুবিজ্ঞ।” (পবিত্র সূরা আন‘আম শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১০১)
উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত হয়েছে যে, মহান আল্লাহ পাক উনার কোন সঙ্গী নেই। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি এক এবং একক। আর তাই এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি পূর্ণাঙ্গ একখানা সূরা শরীফ নাযিল করেন এবং উক্ত সূরা শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
قُلْ هُوَ اللهُ اَحَدٌ ◌ اَللهُ الصَّمَدُ ◌ لَـمْ يَلِدْ وَلَـمْ يُوْلَدْ ◌ وَلَـمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا اَحَدٌ◌
অর্থ : “হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলুন- মহান আল্লাহ পাক তিনি এক। মহান আল্লাহ পাক তিনি বেনিয়াজ বা অমুখাপেক্ষী। মহান আল্লাহ পাক উনার থেকে কেউ জন্ম নেয়নি এবং মহান আল্লাহ পাক উনাকেও কেউ জন্ম দেয়নি। আর মহান আল্লাহ পাক উনার সমকক্ষ কেউ নেই।” (পবিত্র সূরা ইখলাছ শরীফ)
যেহেতু মহান আল্লাহ পাক উনার থেকে কেউ জন্ম নেয়নি এবং মহান আল্লাহ পাক উনাকেও কেউ জন্ম দেয়নি। আর এজন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি সুস্পষ্ট করেই বর্ণনা মুবারক করেন-
اَاِلٰهٌ مَّعَ اللهِ ۚ تَعَالَى اللهُ عَمَّا يُشْرِكُوْنَ ◌
অর্থ : “অতএব, মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে অন্য কোন ইলাহ আছে কি? তারা যাকে শরীক করে মহান আল্লাহ তা থেকে অনেক ঊর্ধ্বে।” (পবিত্র সূরা নামল শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৬৩)
মহান আল্লাহ পাক তিনি অন্যত্র ইরশাদ মুবারক করেন-
لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَىْءٌ.
অর্থ : “মহান আল্লাহ পাক উনার মিছাল বা অনুরূপ কোন কিছুই নেই।” (পবিত্র সূরা শুরা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১১)
মহান আল্লাহ পাক উনার কোন মিছালই নেই। তাহলে এ কথা কি করে সম্ভব যে, মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তান হতে পারে। আর তাই মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
لَوْ اَرَادَ اللهُ اَنْ يَتَّخِذَ وَلَدًا لَّاصْطَفٰى مِـمَّا يَـخْلُقُ مَا يَشَاءُ ۚ سُبْحَانَهُ ۖ هُوَ اللهُ الْوَاحِدُ الْقَهَّارُ ◌
অর্থ : “মহান আল্লাহ পাক তিনি যদি সন্তান গ্রহণ করার ইচ্ছা করতেন, তবে উনার সৃষ্টির মধ্য থেকে যা কিছু ইচ্ছা মনোনীত করতেন, তিনি পবিত্র। তিনি মহান আল্লাহ পাক, এক পরাক্রমশালী।” (পবিত্র সূরা যুমার শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৪)
এই পবিত্র আয়াত শরীফ উনার দ্বারা স্পষ্ট যে, মহান আল্লাহ পাক উনার কোন সন্তান হতে পারে না। তাই তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- سُبْحَانَهُ তিনি পবিত্র। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি সন্তানের বিষয়টি সহ সমস্ত অপবিত্রতা থেকে পবিত্র। তিনি হচ্ছেন সারা জাহানের স্রষ্টা।
0 Comments:
Post a Comment