এক নজরে সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, মালিকুল জান্নাহ, মালিকুদ দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ্, মালিকুল কায়িনাত, হাবীবাতুল্লাহ, সাইয়্যিদাতুছ ছাক্বালাইন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পরিচিতি মুবারক
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত এবং মহাপবিত্র হযরত আম্মাজান আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্বা মুবারক। সুবহানাল্লাহ! উনার উসীলায় সমস্ত জিন-ইনসান এবং তামাম কায়িনাতবাসী সকলেই মর্যাদা-মর্তবা, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক হাছিল করেছে, করছে এবং অনন্তকাল যাবৎ হাছিল করতেই থাকবে। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়; উনার মাধ্যমেই সমস্ত কায়িনাতবাসী স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকেই লাভ করতে পেরেছে। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! নিম্নে এক নজরে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পরিচিতি মুবারক তুলে ধরা হলো।
মহাসম্মানিত এবং মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক: সাইয়্যিদাতুনা হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লক্বব মুবারক: উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, মালিকু আহলি বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, হাবীবাতুল্লাহ, মালিকুল জান্নাহ, মালিকুদ দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ্, মালিকুল কায়িনাত ইত্যাদি।
যেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লক্বব মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেছেন: সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুনিয়াত মুবারক: সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু আহমদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আব্বাজান আলাইহিস সালাম: সাইয়্যিদুনা হযরত ওয়াহাব ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি। উনার একখানা বিশেষ লক্বব মুবারক ছিলেন ‘সাইয়্যিদুন নাস’। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মাজান আলাইহাস সালাম: সাইয়্যিদাতুনা হযরত র্বারাহ আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জাওযুম মুকাররম আলাইহিস সালাম: আবূ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম: সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দ্বীন: সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দ্বীন অর্থাৎ দ্বীনে হানীফ। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত এবং মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হিজরত মুবারক উনার ৭২ বছর পূর্বে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৫ই সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ) ইয়াওমুল জুমুয়াহ শরীফ বা’দ ফজর। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত এবং মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র স্থান মুবারক: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র অবস্থান মুবারক: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ভাই-বোন আলাইহিমুস সালাম ও আলাইহিন্নাস সালাম: নেই অর্থাৎ তিনি একক এবং অদ্বিতীয়। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উনার ৮ মাস ১২ দিন পূর্বে সম্মানিত ও পবিত্র রজবুল হারাম শরীফ মাস উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১লা তারিখ লাইলাতুল জুমু‘য়াহ শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় দুনিয়াবী দৃষ্টিতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বয়স মুবারক: ১৮ বছর ৩ মাস ২৫ দিন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত এবং মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ: ২৫ বছর বয়স মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১০ই সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ অর্থাৎ সোমবার) সকাল ৯-১০টার দিকে। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বয়স মুবারক ছিলেন ৬ বছর। সুবহানাল্লাহ!
দুনিয়ার যমীনে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র অবস্থান মুবারক: ২৫ বছর ৫ দিন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত এবং মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র স্থান মুবারক: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আবওয়া শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত এবং মহাপবিত্র রওযা শরীফ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আবওয়া শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, মালিকাতুল জান্নাহ, হাবীবাতুল্লাহ, সাইয়্যিদাতুছ ছাক্বালাইন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত এবং মহাপবিত্র বরকতময় নসবনামাহ মুবারক মহাসম্মানিত হযরত আব্বাজান আলাইহিস সালাম উনার দিকে থেকে
اُمُّ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَيّـِدَتُنَا حَضْرَتْ اٰمِنَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ بِنْتُ وَهْبِ بْنِ عَبْدِ مَنَافٍ بْنِ زُهْرَةَ بْنِ كِلَابِ بْنِ مُرَّةَ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ.
১. اُمُّ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَيّـِدَتُنَا حَضْرَتْ اٰمِنَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম।
২. سَيّـِدُنَا حَضْرَتْ وَهْبٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ওয়াহাব আলাইহিস সালাম।
৩. عَبْدُ مَنَافٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيّـِدُنَا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দু মানাফ আলাইহিস সালাম।
৪. سَيّـِدُنَا حَضْرَتْ زُهْرَةُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত যুহ্রাহ আলাইহিস সালাম।
৫. كِلَابٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيّـِدُنَا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত কিলাব আলাইহিস সালাম।
৬. مُرَّةُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيّـِدُنَا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত র্মুরাহ আলাইহিস সালাম।
মহাসম্মানিতা হযরত আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার দিক থেকে
سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ بَرَّةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ بِنْتُ عَبْدِ الْعُزّى بْنِ عُثْمَانَ بْنِ عَبْدِ الدّارِ بْنِ قُصَيّ بْنِ كِلَابِ بْنِ مُرّةَ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ.
১. سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ بَرَّةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ সাইয়্যিদাতুনা হযরত বাররাহ আলাইহাস সালাম,
২. سَيّـِدُنَا حَضْرَتْ عَبْدُ الْعُزّى عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল উয্যা আলাইহিস সালাম,
৩. سَيّـِدُنَا حَضْرَتْ عُثْمَانُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত উছমান আলাইহিস সালাম,
৪. سَيّـِدُنَا حَضْرَتْ عَبْدُ الدَّارِ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুদ দার আলাইহিস সালাম,
৫. سَيّـِدُنَا حَضْرَتْ قُصَىٌّ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত কুছাই আলাইহিস সালাম,
৬. سَيّـِدُنَا حَضْرَتْ كِلَابٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত কিলাব আলাইহিস সালাম।
৭. سَيّـِدُنَا حَضْرَتْ مُرَّةُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত র্মুরাহ আলাইহিস সালাম। (ইবনে হিশাম, আর রওদ্বুল উন্ফ)
সাইয়্যিদাতুনা হযরত বাররাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত নসবনামা মুবারক সাইয়্যিদুনা হযরত কিলাব আলাইহিস সালাম উনার এখানে এসে সাইয়্যিদুনা হযরত ওয়াহাব আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নসবনামা মুবারক উনার সাথে একত্রিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য যে, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নসবনামা মুবারক মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম উনার দিক থেকে সাইয়্যিদুনা হযরত কিলাব আলাইহিস সালাম উনার নিকট যেয়ে এবং মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহাস সালাম উনার দিক থেকে সাইয়্যিদুনা হযরত কুছাই আলাইহিস সালাম উনার নিকট যেয়ে আবূ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নসবনামা মুবারক উনার সাথে মিলিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, মালিকাতুল জান্নাহ, হাবীবাতুল্লাহ, সাইয়্যিদাতুছ ছাক্বালাইন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত সংক্ষিপ্ত জীবনী মুবারক
মহাসম্মানিত বংশীয় পবিত্রতা মুবারক:
মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ’ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,
وَتَقَلُّبَكَ فِي السَّاجِدِينَ
অর্থ: “(আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনার স্থানান্তরিত হওয়ার বিষয়টিও ছিল সম্মানিত সিজদাকারীগণ উনাদের মাধ্যমে।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা শুয়ারা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২১৯)
‘তাফসীরে কবীর শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছেন,
فَالْاٰيَةُ دَالَّـةٌ عَلـٰى اَنَّ جَمِيعَ ابَاءِ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانُوْا مُسْلِمِيْنَ.
অর্থ: “এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ থেকে প্রমাণিত হয় যে, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত পূর্বপুরুষ আলাইহিমুস সালাম উনারা সকলেই সর্বোত্তম মুসলমান ছিলেন, সর্বশ্রেষ্ঠ ঈমানদার ছিলেন।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে কবীর শরীফ ১৩/৩২)
আরো উল্লেখ রয়েছে যে,
اِنَّهٗ كَانَ يَنْقُلُ نُوْرَهُ مِنْ سَاجِدٍ إِلَى سَاجِدٍ.
অর্থ: “নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক সম্মানিত সিজদাকারীগণ উনাদের মাধ্যমে স্থানান্তরিত হয়েছিলেন।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে কবীর শরীফ ১৩/৩২, মাওয়াহিবুল লাদুননিয়্যাহ শরীফ ১/১০৪, শরহুয যারক্বানী আলাল মাওয়াহিব ১/৩২৬, তারীখুল খমীস ১/২৩৪, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ শরীফ)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
لَمْ اَزَلْ اُنْقَلُ مِنْ اَصْلَابِ الطَّاهِرِيْنَ اِلى اَرْحَامِ الطَّاهِرَاتِ.
অর্থ: “আমি সবসময় পূত-পবিত্র পুরুষ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে পূত-পবিত্রা মহিলা আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সম্মানিত রেহেম শরীফ-এ স্থানান্তরিত হয়েছি।” সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ اللهَ قَسَّمَ الْـخَلْقَ قِسْمَيْنِ فَجَعَلَنِىْ فِىْ خَيْرِهِـمَا قِسْمًا ثُـمَّ جَعَلَ الْقِسْمَيْنِ اَثْلَاثًا فَجَعَلَنِىْ فِىْ خَيْرِهَا ثُلُثًا ثُـمَّ جَعَلَ الْاَثْلَاثَ قَبَائِلَ فَجَعَلَنِىْ فِىْ خَيْرِهَا قَبِيْلَةً ثُـمَّ جَعَلَ الْقَبَائِلَ بُيُوْتًا فَجَعَلَنِىْ فِىْ خَيْرِهَا بَيْتًا فَذٰلِكَ قَوْلُهٗ تَعَالـٰى اِنَّـمَا يُرِيْدُ اللهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ اَهْلَ الْبَيْتِ وَيُـطَـهِّـرَكُـمْ تَطْهِيْرًا فَاَنَا وَاَهْلُ بَيْتِىْ مُطَهَّرُوْنَ مِنَ الذُّنُوْبِ.
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত সৃষ্টিকে দু’ভাগে বিভক্ত করে আমাকে সর্বোত্তম ভাগে রেখেছেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর উভয় ভাগকে তিন প্রকারে বিভক্ত করে আমাকে সর্বোত্তম প্রকারে রেখেছেন। সুবহানাল্লাহ! এরপর প্রত্যেক প্রকারকে গোত্রে গোত্রে বিভক্ত করে আমাকে সর্বোত্তম গোত্র মুবারক-এ রেখেছেন। সুবহানাল্লাহ! এরপর গোত্রকে সম্মানিত আহাল (পরিবার) মুবারক-এ বিভক্ত করে আমাকে সর্বোত্তম সম্মানিত আহাল (পরিবার) মুবারক-এ রেখেছেন। সুবহানাল্লাহ! এ কারণেই মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, ‘হে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম! নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি চান আপনাদের থেকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা দূর করে আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করতে। অর্থাৎ তিনি আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই সৃষ্টি মুবারক করেছেন।’ সুবহানাল্লাহ! আর আমি এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম আমরা সকলেই যুনূব তথা সমস্ত প্রকার ছগীরা-কবীরা এবং যাবতীয় অপছন্দনীয় কাজ থেকে পূত-পবিত্র।” সুবহানাল্লাহ! (দালায়িলুন নুবুওওয়াহ লিল বায়হাক্বী, শিফা শরীফ ১/৩২৫, সীরাতে হালবিয়্যাহ ১/৪২, আল মা’রিফাতু ওয়াত তারীখ ১/৪৯৮, খছাইছুল কুবরা ১/৬৬, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১/২৩৫ ইত্যাদি)
সুতরাং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মাজান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পূর্বপুরুষ আলাইহিমুস সালাম উনারা প্রত্যেকেই ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ দ্বীনদার, মহান আল্লাহ পাক উনার আখাছ্ছুল খাছ বিশেষ ব্যক্তিত্ব মুবারক। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ উনারা অনেকেই ছিলেন হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম। আর যাঁরা হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম ছিলেন না, উনারা ছিলেন সেই যামানায় মহান আল্লাহ পাক উনার আখাছ্ছুল খাছ লক্ষ্যস্থল। উনারা প্রত্যেকেই সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব মুবারক এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
‘নিহায়াতুল ঈজাযে’ বর্ণিত রয়েছেন,
سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اٰمِنَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ اَفْضَلُ اِمْرَاَةٍ فِىْ قُرَيْشٍ حَسَبًا وَنَسَبًا وَجَمَالًا.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ছিলেন কুরাইশ বংশীয় তথা কায়িনাতের সকল মহিলাদের মধ্যে মান, মর্যাদা, সম্মান, বংশ ও সৌন্দর্যগত দিক থেকে সর্বশ্রেষ্ঠা।” সুবহানাল্লাহ!
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছেন-
وَهِىَ يَوْمَئِذٍ اَفْضَلُ اِمْرَاَةٍ فِـىْ قُرَيْشٍ نَسَبًا وَمَوْضِعًا.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ছিলেন কুরাইশ তথা কায়িনাতের সমস্ত মহিলাদের মধ্যে মুবারক বংশগত ও অবস্থানগত তথা পিতা-মাতা উনাদের উভয়ের দিক থেকে অর্থাৎ সামগ্রিকভাবে সর্বশ্রেষ্ঠা।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে হিশাম, আর রওদ্বুল উন্ফ, দালাইলুন নুবুওওয়াহ, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ, শরহুয যারক্বানী ‘আলাল মাওয়াহিব, শরফুল মুস্ত¡ফা)
সুতরাং সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, মালিকাতুল জান্নাহ, হাবীবাতুল্লাহ, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বংশীয় পবিত্রতা মুবারক উনার বিষয়টি যে কতো বেমেছাল তা এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ! যা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা-কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওয়ালিদাইন শরীফাইন আলাইহিমাস সালাম উনাদের বুযূর্গী-সম্মান মুবারক
মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, মালিকাতুল জান্নাহ, মালিকাতুল কায়িনাত সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত পিতা সাইয়্যিদুন নাস, ইমামুল মুত্তাক্বীন, সাইয়্যিদুল বাশার, জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (লিউম্মিন) সাইয়্যিদুনা হযরত ওয়াহাব ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি এবং মহাসম্মানিতা মাতা সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদাতুনা হযরত বাররাহ বিনতে আব্দুল উয্যা আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা ছিলেন মহান আল্লাহ পাক উনার আখাছ্ছুল খাছ মাহবূব এবং মাহবূবাহ। সুবহানাল্লাহ! উনারা হচ্ছেন সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব ও ব্যক্তিত্বা মুবারক। সুবহানাল্লাহ! উনাদের সবচেয়ে বড় পরিচয় হচ্ছেন উনারা হলেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত নানা আলাইহিস সালাম ও মহাসম্মানিতা হযরত নানী আলাইহাস সালাম এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম ও মহাসম্মানিতা হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! উনারা শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন উনারা। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত ওয়াহাব ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক বর্ণনা করে উনার মহাসম্মানিতা বানাত, লখতে জিগার, মালিকাতুল জান্নাহ, মালিকাতুল কায়িনাত সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একখানা ‘সম্মানিত না’ত শরীফ’ পাঠ করেন। সুবহানাল্লাহ!
উক্ত সম্মানিত না’ত শরীফখানা হচ্ছেন,
اِنّـِىْ لَبَاكِيَة ٌوَهْبًا فَمُعْوِلَةٌ ৃৃৃৃوَهْبُ بْنُ عَبْدِ مَنَافٍ سَيّـِدُ النَّاسِ
فَقَدْ رُزِئْتُ كَرِيْمًا غَيْرَ مُؤْتَشَبٍ ..........ضَخْمَ الدَّسِيْعَةِ حَنَّاسًا لّـِحَنَّاسِ
مَاضِىَ الْعَزِيـْمَةِ لَايـَخْشٰى غَوَائِلَهٗ .......مِنْ جَوْهَرٍ مّـِنْ قُرَيْشٍ غَيْرِ اَنْكَاسِ
অর্থ: “নিশ্চয়ই আমি আমার মহাসম্মানিত হযরত আব্বাজান সাইয়্যিদুনা হযরত ওয়াহাব আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত জুদায়ী মুবারক উনার কারণে অত্যন্ত কঠিনভাবে সম্মানিত নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রকাশ করছি (কান্না মুবারক করছি)। অতঃপর আমি হয়েছি অত্যন্ত মুহব্বত মুবারক উনার সাথে বেমেছাল সম্মানিত নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রকাশকারিণী (ক্রন্দনকারিণী)।
আমার মহাসম্মানিত হযরত আব্বাজান সাইয়্যিদুনা হযরত ওয়াহাব ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন সাইয়্যিদুন নাস তথা সমস্ত মানুষের সাইয়্যিদ। সুবহানাল্লাহ!
নিশ্চয়ই আমি বঞ্চিত হয়েছি দয়াময়, দাতা, রহমশীল, স্নেহময়, মর্যাদাবান, মহাসম্মানিত হযরত আব্বাজান আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত স্নেহ, করুণা, আদর, মমতা মুবারক থেকে। যিনি ছিলেন বেমেছাল সম্মানিত শান-মান, ফাযায়িল-ফাযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনার অধিকারী এবং সম্মানিত নছব মুবারক উনার দিক থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ, সম্ভ্রান্ত ও পূতঃপবিত্র বংশ মুবারক উনার অধিকারী। উনার সম্মানিত বংশ মুবারক-এ কস্মিনকালেও কোন প্রকার অপবিত্রতার ছোঁয়াও লাগেনি। সুবহানাল্লাহ!
তিনি ছিলেন অপরিসীম দাতা, মযলূমদের তরে সর্বশ্রেষ্ঠ আশ্রয়দানকারী এবং যালিমদের যুলুম প্রতিহতকারী, তাদেরকে সমুচিত শিক্ষাদানকারী। যুদ্ধক্ষেত্রে তিনি ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ বীরত্ব মুবারক উনার অধিকারী, তিনি ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ বীর, উনার সমকক্ষ আর কেউ ছিলো না। সুবহানাল্লাহ!
তিনি ছিলেন দৃঢ়তার তীক্ষè ধারালো তরবারী মুবারক। তিনি উনার বিপদ-আপদ, বিদ্বেষ, শত্রুতা, শত্রু কোন কিছুকেই কখনও কোন প্রকার পরোয়া করতেন না, ভয় করতেন না। সুবহানাল্লাহ!
আমার মহাসম্মানিত হযরত আব্বাজান আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন সম্মানিত কুরাইশ উনাদের মধ্যে জাওহার তথা মণি বা রতœ তুল্য, তিনি ছিলেন সর্বময় গুণাবলী মুবারক উনাদের অধিকারী এবং সর্বপ্রকার দুর্বলতা থেকে পূতঃপবিত্র।” সুবহানাল্লাহ! (আল বাদ্উ ওয়াত তারীখ ৪/১১৬)
মহাসম্মানিত আওলাদ লাভের জন্য সম্মানিত দো‘আ মুবারক
সাইয়্যিদুনা হযরত ওয়াহাব ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত বাররাহ আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর দীর্ঘ বছর অতিবাহিত হয়। কিন্তু উনাদের কোন আওলাদ ছিলেন না। তাই উনারা সম্মানিত আওলাদ লাভের জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট অনেক রোনাজারী-আহাজারী করেন, সম্মানিত দোআ মুবারক করেন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় অনেক দান-ছদক্বাহ করেন। সুবহানাল্লাহ!
উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট সম্মানিত দোআ মুবারক করেন, “আয় বারে এলাহী! আমাদেরকে একজন সম্মানিত আওলাদ (সন্তান) হাদিয়া মুবারক করুন। যদি আমাদের একজন সম্মানিত আওলাদ (সন্তান) বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তাহলে শুকরিয়াস্বরূপ আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ-এ যেয়ে সম্মানিত হজ্জ মুবারক আদায় করবো।” সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত বরকতময় রগায়িব শরীফ
সাইয়্যিদুনা হযরত ওয়াহাব ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত বাররাহ আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা একজন সম্মানিত আওলাদ লাভের জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট অনেক রোনাজারী-আহাজারী করেন, সম্মানিত দোআ মুবারক করেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদের সম্মানিত দোআ মুবারক কবুল করে নেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার নিকট অতিপছন্দনীয় এক মহাসম্মানিত রজনী মুবারক উনাকে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ‘সম্মানিত রগায়িব শরীফ’ উনার সম্মানিত রজনী মুবারক হিসেবে নির্দিষ্ট করেন। অর্থাৎ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট অতিপছন্দনীয় এক মহাসম্মানিত রজনী মুবারক-এ উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ (সম্মানিত রেহেম শরীফ মুবারক-এ) কুদরতীভাবে তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! সেই সম্মানিত রজনী মুবারক-এ মহান আল্লাহ পাক তিনি সারা কায়িনাতে বেমেছাল সম্মানিত রহমত, বরকত ও সাকীনা মুবারক বর্ষণ করেন। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনাকে অপরূপ সাজে সুসজ্জিত করেন। সুবহানাল্লাহ! হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুবারকবাদ জানানোর জন্য সম্মানিত নির্দেশ মুবারক প্রদান করেন। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সুসংবাদ মুবারক হাদিয়া:
মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার আখাছ্ছুল খাছ মাহবূবাহ ব্যক্তিত্বা মুবারক সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, মালিকাতুল কায়িনাত সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার ব্যাপারে এবং উনার সম্মানিত ফাযায়িল-ফযীলত মুবারক বর্ণনা করে সাইয়্যিদুনা হযরত ওয়াহাব ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম উনাকে এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত বাররাহ আলাইহাস সালাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে অনেক সুসংবাদ মুবারক হাদিয়া মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! বিশেষ করে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ (সম্মানিত রেহেম শরীফ মুবারক-এ) অবস্থানকালীন সময়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে আরো আখাছ্ছুল খাছ সুসংবাদ মুবারক হাদিয়া মুবারক করেন এবং তিনি যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম হবেন সেই বিষয়েও আখাছ্ছুল খাছ সম্মানিত সুসংবাদ মুবারক হাদিয়া মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুন নাস সাইয়্যিদুনা হযরত ওয়াহাব ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ (সম্মানিত রেহেম শরীফ-এ) অবস্থান মুবারক করছিলেন, তখন একদা উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান সাইয়্যিদুন নাস সাইয়্যিদুনা হযরত ওয়াহাব ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি একখানা বিশেষ স্বপ্ন মুবারক দেখতে পান। তিনি দেখেন, একজন সম্মানিত বুযূর্গ ব্যক্তি তিনি উনাকে লক্ষ্য করে বলছেন, হে সাইয়্যিদুনা হযরত ওয়াহাব আলাইহিস সালাম! আপনি কায়িনাতের বুকে সবচেয়ে বড় ভাগ্যবান। সুবহানাল্লাহ! ভবিষ্যতে এমন একজন সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনার সাথে আপনার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপিত হবে, যিনি হবেন সমস্ত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী এবং সমস্ত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ! তিনি সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর হিদায়াত, মুক্তি ও প্রকৃত কামিয়াবী দানের লক্ষ্যে সকলের জন্য সম্মানিত রহমত মুবারকস্বরূপ প্রেরিত হবেন। সুবহানাল্লাহ! আরবের লোকেরা উনাকে ‘আল আমীন’ বলে আহ্বান মুবারক করবে। সুবহানাল্লাহ! আর উনারই মহাসম্মানিতা আম্মাজান হবেন আপনার এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! তাই আপনার এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার পর উনার সম্মানিত নাম মুবারক রাখবেন ‘হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম’। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত হিজরত মুবারক উনার ৭২ বছর পূর্বে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সায়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ) মাস উনার সম্মানিত ৫ তারিখ ইয়াওমুল জুমুয়াহ শরীফ বা’দ ফজর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সম্মানিত কুরাইশ বংশের বনু যুহরাহ গোত্রে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশকালে উনার এবং উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত জান্নাত মুবারক থেকে বিশেষ বিশেষ সম্মানিতা মহিলা আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে প্রেরণ করেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশে বেমেছাল মহাসম্মানিত ‘ফালইয়াফরাহূ শরীফ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
يٰاَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَتْكُمْ مَّوْعِظَةٌ مّـِنْ رَّبّـِكـُمْ وَشِفَاءٌ لِّـمَا فِى الصُّدُوْرِ وَهُدًى وَّرَحْمَةٌ لّـِلْمُؤْمِنِيْنَ قُلْ بِفَضْلِ اللهِ وَبِرَحْمَتِه فَبِذٰلِكَ فَلْيَفْرَحُوْا هُوَ خَيْرٌ مِّـمَّا يَـجْمَعُوْنَ.
অর্থ: “হে মানুষেরা! হে সমস্ত জিন-ইনসান, কায়িনাতবাসী! অবশ্যই তোমাদের মাঝে মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ নছীহতকারী, তোমাদের অন্তরের সর্বপ্রকার ব্যাধিসমূহের সর্বশ্রেষ্ঠ আরোগ্যদানকারী, সর্বশ্রেষ্ঠ হিদায়াতদানকারী এবং খাছ করে ঈমানদারদের জন্য, আমভাবে সমস্ত কায়িনাতবাসী সকলের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ রহমত মুবারকস্বরূপ আমার যিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তাশরীফ মুবারক এনেছেন। সুবহানাল্লাহ! হে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলকে জানিয়ে দিন, মহান আল্লাহ পাক তিনি যে, সম্মানিত ফযল মুবারক এবং সম্মানিত রহমত মুবারক হিসেবে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাঠিয়েছেন, সেজন্য তারা যেন মহাসম্মানিত ‘ফালইয়াফরাহূ শরীফ’ তথা সম্মানিত খুশি মুবারক প্রকাশ করে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে। সুবহানাল্লাহ! এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘ফালইয়াফরাহূ শরীফ’ তথা সম্মানিত খুশি মুবারক প্রকাশ করাটা, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করাটা সবকিছু থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বোত্তম; যা তারা দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য সঞ্চয় করে।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ইউনূস শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৭-৫৮)
এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার পরিপূর্ণ মিছদাক্ব হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
তাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উপলক্ষে মহাসম্মানিত ‘ফালইয়াফরাহূ শরীফ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা যেমন ফরয, তেমনিভাবে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মাজান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উপলক্ষে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘ফালইয়াফরাহূ শরীফ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করাও ফরয তো অবশ্যই; বরং ফরয উনার উপর ফরয। সুবহানাল্লাহ! কেননা উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশে স্বয়ং যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজে সম্মানিত খুশি মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি সারা পৃথিবী, সারা কায়িনাত এবং সমস্ত সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনাদেরকে অপরূপ সাজে সুসজ্জিত করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি সমস্ত কায়িনাতকে সম্মানিত খুশী মুবারক প্রকাশ করার জন্য সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দেন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক অনুযায়াী সমস্ত কায়িনাত খুশীতে মাতোওয়ারা হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়; মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক অনুযায়াী সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা এবং হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা সকলেই সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশে সম্মানিত খুশী মুবারক প্রকাশ করে আহলান-সাহলান জানান। সুবহানাল্লাহ!
আর সাইয়্যিদুনা হযরত ওয়াহাব ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত বাররাহ আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা উনাদের একমাত্র মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশে বেমেছাল সম্মানিত খুশি মুবারক প্রকাশ করেন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার বেমেছাল প্রশংসা মুবারক করেন ও শুকরিয়া মুবারক আদায় করেন। সুবহানাল্লাহ! উনাদের সম্মানিত হুজরা শরীফ-এ খুশির মহাজোয়ার বয়ে যায়। উনারা এতো বেমেছাল সম্মানিত খুশি মুবারক প্রকাশ করেন যা সমস্ত কায়িনাতের চিন্তা ও কল্পনার ঊর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিলাøহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশে মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত খুশি মুবারক প্রকাশ করে সারা কায়িনাতে আখাছ্ছুল খাছ বেমেছাল সম্মানিত রহমত, বরকত, সাকীনাহ, দয়া-দান, ইহসান মুবারক, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক বর্ষণ করেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত আক্বীক্বা মুবারক দেয়া এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক রাখা
সাইয়্যিদুনা হযরত ওয়াহাব ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত লখতে জিগার সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের সপ্তম দিন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১১ই সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ) ইয়াওমুল খ¦মীস শরীফ (বৃহস্পতিবার) উনার সম্মানিত আক্বীক্বা মুবারক দেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক রাখেন ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত (اٰمِنَةُ, اَمِيْنَةُ) আমিনা আলাইহাস সালাম’। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক উনার অর্থ ও তাৎপর্য মুবারক
‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত (اٰمِنَةُ, اَمِيْنَةُ) আমিনা আলাইহাস সালাম’। এই সম্মানিত নাম মুবারক উনার আভিধানিক অর্থ মুবারক হচ্ছেন, ঈমানদার, মু’মিনা, বিশ্বাসী, নিরাপদ, বিশ্বস্ত, আমানতদার ইত্যাদি। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ইসম বা নাম মুবারক থেকেই উনার বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনার বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ! মূলত যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা হযরত আম্মাজান আলাইহাস সালাম হিসেবে সর্বপ্রকার সর্বোত্তম গুণাবলী মুবারক হাদিয়া মুবারক করে সর্বশ্রেষ্ঠ ঈমানদার হিসেবেই সৃষ্টি মুবারক করেছেন এবং দুনিয়ার যমীনে প্রেরণ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
ঈমানদার, মু’মিনা: সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ছিলেন কায়িনাতের বুকে সর্বশ্রেষ্ঠা ঈমানদার, মু’মিনা। সুবহানাল্লাহ! তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের প্রতি যেরূপ সর্বোত্তমভাবে সম্মানিত ঈমান মুবারক এনেছেন, কায়িনাতের কারো পক্ষে এরূপ সর্বোত্তমভাবে সম্মানিত ঈমান মুবারক আনা সম্ভব হয়নি এবং হবেও না। সুবহানাল্লাহ! মূলত, উনার সম্মানার্থে সমস্ত কায়িনাত সম্মানিত ঈমান মুবারক লাভ করেছে, করছে এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত সম্মানিত ঈমান মুবারক লাভ করবে। সুবহানাল্লাহ! তাই সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন ‘আমিনা বা ঈমানদার, মু’মিনা’। সুবহানাল্লাহ!
আমানতদার: সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ আমানত ও নিয়ামত মুবারক হিসেবে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গ্রহণ মুবারক করেছেন, ধারণ মুবারক করেছেন এবং উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! এটা উনার একক, অনন্য খুছূছিয়াত বা বেশিষ্ট্য মুবারক। সুবহানাল্লাহ! তাই সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন ‘আমিনা বা সর্বশ্রেষ্ঠা আমানতদার’। সুবহানাল্লাহ!
নিরাপদ: মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা থেকে নিরাপদ বা মুক্ত করে, সমস্ত কায়িনাত থেকে বেনিয়ায করে উনাকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই সৃষ্টি মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! এই প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
اِنَّـمَا يُرِيْدُ اللهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ اَهْلَ الْبَيْتِ وَيُـطَـهِّـرَكُمْ تَطْهِيْرًا.
অর্থ: “হে মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম! নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি চান আপনাদের থেকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা দূর করে আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করতে। অর্থাৎ তিনি আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই সৃষ্টি মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৩)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
هُمْ اَهْلُ بَيْتٍ طَهَّرَهُمُ اللهُ مِنَ السُّوْءِ وَاخْتَصَّهُمْ بِرَحْمَتِهٖ.
অর্থ: “উনারা হচ্ছেন মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা ও পাপ থেকে পূত-পবিত্র রেখেছেন এবং উনার সম্মানিত রহমত মুবারক দ্বারা খাছ করে নিয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন,
نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ طَهَّرَهُمُ اللهُ مِنْ شَجَرَةِ النُّبُوَّةِ وَمَوْضِعِ الرِّسَالَـةِ وَمُـخْتَلِفِ الْمَلَائِكَةِ وَبَيْتِ الرَّحْمَةِ وَمَعْدِنِ الْعِلْمِ.
অর্থ: “আমরা মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস উনাদেরকে (আমাদেরকে) সম্মানিত নুবুওয়াত মুবারক উনার বৃক্ষ, সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার স্থান, বিভিন্ন হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক (ইত্যাদি সমস্ত কিছু) থেকে পবিত্র রেখেছেন, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (দুররে মানছূর ৬/৬০৬, ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩)
উপরোক্ত সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের পরিপূর্ণ মিছদাক্ব হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! তাই সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন ‘আমিনা বা নিরাপদ’ তথা পূত-পবিত্রা, বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)। সুবহানাল্লাহ!
বিশ্বাসী, বিশ্বস্ত: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কি আশ্চার্যজনক সামনযশ্যতা মুবারক। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন (الامين)আল আমীন, আর উনার মহাসম্মানিতা হযরত আম্মাজান আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন (امينة)‘আমীনা’। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যেমন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে অল্প বয়স মুবারক থেকেই সকলের মাঝে বিশ্বাসী, বিশ্বস্ত হিসেবে পরিচিত ছিলেন, ঠিক তেমনিভাবে উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও দুনিয়াবী দৃষ্টিতে অল্প বয়স মুবারক থেকেই সকলের মাঝে বিশ্বাসী, বিশ্বস্ত হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! এই সম্পর্কে কিতাবে একখানা ঘটনা মুবারক উল্লেখ করা হয় যে, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক যখন সাত বছর, তখন একদা তিনি উনার এক মুহব্বতকারিণীর বাড়িতে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার সময় তাদের বাড়ির কাছে পথিমধ্যে একটি স্বর্ণমুদ্রা দেখতে পেলেন। তিনি মুদ্রাটি তুলে নিলেন। পরক্ষণে তিনি চিন্তা করলেন, এটা কার মুদ্রা, তা হাতে নেয়া কতটুকু ঠিক হলো। যে তা হারিয়েছে নিশ্চয়ই সে তা অনুসন্ধান করছে। হয়তো সে খোঁজ করতে করতে এখানেও আসবে। তা যথা স্থানে পড়ে থাকলে দেখে সে নিজের জিনিসটি তখন পেতে পারবে। তিনি এরূপ ভেবে সে দীনারটি যেখানে পড়ে ছিলো, সেখানেই রাখতে গেলেন। কিন্তু হঠাৎ আবার উনার মনে উদয় হলো যে, জিনিসটি মূল্যবান, তাই ওখানে রেখে দিলে হয়তো তা প্রকৃত মালিকের হাতে না পড়ে অন্যের হাতেও পড়ে যেতে পারে। কারণ পথের উপরে তা পড়ে থাকলে যে দেখবে সে-ই তুলে নিবে। অতএব, তা ওখানে ফেলে রাখা ঠিক হবে না। তার চেয়ে তা নিজের নিকট রেখে অনুসন্ধান করে দেখা উত্তম যে, দীনারটি কে হারিয়েছে?
অতঃপর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দীনারটি হাতের মুঠোয় নিয়ে উনার মুহব্বতকারিণীর বাড়িতে গেলেন এবং তার সাথে সাক্ষাৎ করে বললেন, তোমাদের বাড়ীতে আসার সময় আমি পথে এই দীনারটি পেয়েছি। বলতো এখন কিভাবে এর প্রকৃত মালিককে বের করে তা তাকে ফিরিয়ে দিতে পারি? সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু অলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কথা মুবারক শুনে উনার মুহব্বতকারিণী বললো, আরে আপনি এ ব্যাপারে এত ব্যস্ত হয়েছেন কেন, কত জনেরই কতো জিনিস হারিয়ে যায়। হারানো জিনিস আবার ফেরত পায় নাকি? আর পথের উপরে পাওয়া জিনিস ফেরতই বা কে কবে দেয় শুনি? আপনি এই বিষয়টি নিয়ে এতো চিন্তা করছেন কেন? চলুন, আমরা দোকানে যেয়ে তা দ্বারা ভালো কিছু জিনিস কিনে খাই আর মনের মতো কতগুলি সখের জিনিস ক্রয় করি।
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দেখলেন, উনার মুহব্বতকারিণীর মতলব মোটেই ভালো নয়। তিনি তার কথায় চরম অস্তুষ্ট হলেন এবং তাকে বললেন- না, তা কখনো হতে পারে না। দীনারটির প্রকৃত মালিককে খুঁজে বের করে তাকে তা অবশ্যই ফেরত দিতে হবে। তিনি মনে মনে স্থির করলেন, বাড়ি যেয়ে উনার মহাসম্মানিত হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম উনার এবং মহাসম্মানিতা হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের নিকট দীনারটির কথা বলবেন এবং উনাদের দ্বারা এর মালিককে খোঁজ করে দীনারটি তার হাতে ফিরিয়ে দিবেন। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আর বিলম্ব না করে নিজেদের বাড়ি অভিমুখে চললেন। পথে বের হয়ে কিছু দূর যাওয়ার পর দেখলেন, এক বৃদ্ধ লাঠি ভর দিয়ে ধীরে ধীরে এই দিকে এগিয়ে আসছে আর সে চোখের দৃষ্টি নিচু করে পথের উপরে কি যেন খুঁজতে খুঁজতে অগ্রসর হচ্ছে। বৃদ্ধের গতি-বিধি ও চোখ-মুখের অবস্থা দেখে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বুঝতে আর বাকী রইলো না যে, এই বৃদ্ধ লোকটিই দীনারটি হারিয়েছে। তিনি বৃদ্ধের নিকটবর্তী হয়ে কোমল কণ্ঠ মুবারক-এ জিজ্ঞাসা করলেন, এই পথে আপনি কি কিছু হারিয়েছেন? বৃদ্ধ লোকটি উত্তর দিলো, হ্যাঁ মা, আমার একটি স্বর্ণমুদ্রা এই রাস্তার উপরই কোনখানে যেন পড়ে গেছে। দীনারটি বড় কষ্টে আমি সঞ্চয় করেছিলাম। পর পর তিনদিন অনাহারে থাকার পর অবশেষে বাধ্য হয়ে আজ সেই সঞ্চিত মুদ্রাটি নিয়ে কিছু খাবার ক্রয় করার জন্য বাজারে যাচ্ছিলাম। কিন্তু রাস্তায় চলাকালে না জানি কোথায় কেমনভাবে দীনারটি পড়ে গেছে। এখন আমার ঘরে এমন আর কোনো সম্বল নেই যে, যা দ্বারা একটি দিনেরও মাত্র খোরাক যোগাড় করতে পারি। এখন নিশ্চয়ই আমাকে ঘরের সবাইকে নিয়ে অনাহারে থাকতে হবে।
বৃদ্ধের এই করুণ কথা শুনে এবং তার বিষণœ বদন দেখে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত হৃদয় মুবারক ব্যথিত হয়ে উঠলেন। তিনি বৃদ্ধের হাত ধরে তাকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসলেন এবং উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনাকে বলে তাকে সযতেœ পেট ভরে খাওয়া-দাওয়া করালেন। সুবহানাল্লাহ! বৃদ্ধ লোকটি এরূপ যতœ লাভ করে এবং তৃপ্তি সহকারে খাওয়া-দাওয়া গ্রহণ করে দীনারের কথা একরূপ ভুলেই গিয়েছিলো। তাছাড়া কোনো কিছু হারিয়ে গেলে তা আর পুনরায় পাওয়া যায় না, এইরূপ ধারণা করে বৃদ্ধ বিদায় হওয়ার জন্য তৈরি হলো এবং বিদায় গ্রহণকালে তার প্রতি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এরূপ সর্বোত্তম ব্যবহারের কারণে কৃজ্ঞতা প্রকাশ করলো এবং তার ভাষায় উনার জন্য দোয়া করলো। অতঃপর বৃদ্ধ লোকটি উঠে পা বাড়াবে ঠিক এমন সময় সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, আমি আপনাকে যেজন্য এখানে ডেকে এনেছি তা তো বলা হয়নি। ‘দেখুন তো’ এই দীনারটি আপনার কিনা? এই কথা বলে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দীনারটি তার হাতে দিলেন। বৃদ্ধ লোকটি দীনারটি হাতে নিয়ে অত্যন্ত খুশি হয়ে বললো, হ্যাঁ, মা, এই দীনারটিই হারিয়ে গিয়েছিলো। এই তো বহুদিন ঘরে রাখার ফলে তার কোণায় যেই দাগটি পড়েছিলো, তা দেখা যাচ্ছে। সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, বেশ, তাহলে এবার আপনার দীনারটি আপনি নিয়ে যান। দীনারটি আমি পথে পেয়ে প্রকৃত মালিকের হাতে তুলে দেবার জন্য অস্থির হয়ে পড়েছিলাম। এই মুহূর্তে আমি মালিকের হাতে দীনারটি তুলে দিতে পেরে আনন্দ অনুভব করছি। সুবহানাল্লাহ!
আনন্দের আতিশয্যে বৃদ্ধের নেত্রযুগল হতে আনন্দের তপ্ত আঁশু দু’ গাল বেয়ে ঝরে পড়লো। সে বললো, মা আপনি দীর্ঘজীবী হোন! এতটুকু সম্মানিত বয়স মুবারক-এ সততার যে প্রমাণ আপনি দিলেন, তাতে আশ্চর্য না হয়ে পারছি না। মা আপনার জন্য দোআ করি, ইতহাসে আপনি বাক্বা লাভ করুন, যে জীবন ইতিহাস স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। বিশ্ববাসী শ্রদ্ধাভরে যেন আপনার সম্মানিত নাম মুবারক স্মরণ করে এবং আপনার এ সম্মানিত আদর্শ মুবারক উনার শিক্ষায় শিক্ষিত হয়। এই কথা বলে বৃদ্ধ লোকটি বিদায় নিলো। সুবহানাল্লাহ!
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য শুধু ওই লোকটিই দোয়া করলো না; বরং উনার মহাসম্মানিত হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম তিনি এবং মহাসম্মানিতা হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা উনাদের এই অল্প বয়স্কা মহাসম্মানিতা আওলাদ আলাইহাস সালাম উনার এমন সর্বোত্তম আদর্শ মুবারক ও সততা মুবারক উনাদের বহি:প্রকাশ মুবারক দেখে অভিভূত হয়ে পড়লেন এবং গর্বে ও আনন্দে স্বীয় মহাসম্মানিতা আওলাদ আলাইহাস সালাম উনার জন্য সম্মানিত দু’হাত মুবারক তুলে মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত দরবার শরীফ-এ সম্মানিত দোয়া মুবারক করলেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক -উম্মু মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মু আহমদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মু কুছাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত লক্বব মুবারক
মহান আল্লাহ পাক তিনি যেমন অসীম, ঠিক তেমনিভাবে উনার সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের সংখ্যাও অসীম। সুবহানাল্লাহ! অনুরূপভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পরিপূর্ণ ক্বায়িম মাক্বাম হওয়ার কারণে উনার সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের সংখ্যাও অসংখ্য-অসীম। সুবহানাল্লাহ! এক কথায় তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন; এছাড়া সমস্ত সম্মানিত লক্বব মুবারক উনার অধিকারী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! ঠিক একইভাবে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম হওয়ার করণে উনার সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের সংখ্যাও অসংখ্য-অসীম। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া যত সম্মানিত লক্বব মুবারক রয়েছেন, সমস্ত সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ!
উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, মালিকু আহলি বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, হাবীবাতুল্লাহ, মালিকাতুল জান্নাহ, মালিকাতুল কায়িনাত ইত্যাদি। এছাড়াও অসংখ্য-অসীম সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের মালিকাহ হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ইলম মুবারক
মূলত, মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত ইলমে গইব মুবারকসহ সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত প্রকার সম্মানিত ইলম মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত ইলম মুবারক উনার কোনো কুল-কিনারা নেই। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ أَبِىْ سَعِيدِ ۨ الْخُدْرِىِّ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم اتَّقُوا فِرَاسَةَ الْمُؤْمِنِ فَإِنَّهُ يَنْظُرُ بِنُورِ اللهِ.
অর্থ: “হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা মু’মিন তথা ওলীআল্লাহ উনার ফিরাসাত তথা অন্তরদৃষ্টি মুবারক উনাকে ভয় করো। কেননা তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার নূর মুবারক দ্বারা দেখে থাকেন।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ, আল মু’জামুল কাবীর ৭/১০৯, আল মু’জামুল আওসাত্ব ৩/৩১২, আহকামুশ শরীয়াহ ৩/২৯৩, মুসনাদুশ শামিয়্যীন ৩/১৮৩)
মূলত, ওলীআল্লাহগণ উনারা সম্মানিত নূর মুবারক উনার মাধ্যমেই সমস্ত কায়িনাত, জান্নাত-জাহান্নাম, সাত আসমান, সাত যমীন সমস্ত কিছু দেখতে পান। সৃষ্টি জগতের কোনো কিছুই উনাদের দৃষ্টি মুবারক উনার অন্তরালে থাকে না। আর উনারা এই সম্মানিত নূর মুবারক তথা ফয়েয-তাওয়াজ্জুহ মুবারক লাভ করে থাকেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে যিনি যত বেশি সম্মানিত নূর মুবারক তথা ফয়েয-তাওয়াজ্জুহ মুবারক গ্রহণ করতে পারেন, উনার সম্মানিত ইলম মুবারক উনার গভীরতা তত বেশি ও ব্যাপক হয়। সুবহানাল্লাহ! যদি বিষয়টি এরূপ হয়, তাহলে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সরাসরি ‘মহাসম্মানিত নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ উনাকে ধারণ মুবারক করেছেন, তাহলে উনার সম্মানিত ইলম মুবারক উনার বিষয়টি কত ব্যাপক হবে, সেটা মাখলূকাতের চিন্তা-কল্পনার সীমাহীন ঊর্ধ্বে তা আর বলার অপেক্ষাই রাখেনা। সুবহানাল্লাহ!
মূলত, তিনি সম্মানিত ইলমে গইব মুবারকসহ যত প্রকার সম্মানিত ইলম মুবারক রয়েছেন সমস্ত প্রকার সম্মানিত ইলম মুবারক উনাদের মালিকাহ তথা ছাহিবাতু জামি‘য়িল ইলম, মালিকাতু জামি‘য়িল ইলম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক উনার কায়িনাতে যা কিছু রয়েছে সমস্ত কিছুই দায়িমীভাবে উনার কাছে সুস্পষ্ট। সুবহানাল্লাহ! কায়িনাতের কোনো কিছুই উনার নিকট অস্পষ্ট নেই, অজানা নেই। সুবহানাল্লাহ! এই বিষয়ে সন্দেহ পোষণ করাটাও চরম আদবের খিলাফ ও সুস্পষ্ট কুফরী। নাঊযুবিল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছলী শান মুবারক প্রকাশ করার সময় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ যে বেমেছাল সম্মানিত না‘ত শরীফ ইরশাদ মুবারক করেছেন (পাঠ করেছেন) সেই বেমেছাল সম্মানিত না‘ত শরীফখানা ফিকির করলেই উনার সম্মানিত ইলম মুবারক উনার ব্যাপকতার বিষয়টা সুস্পষ্ট হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!
প্রকৃপক্ষে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থেই ওলীআল্লাহগণ উনারা এবং কুল কায়িনাতের সকলেই সম্মানিত ইলম মুবারকসহ সমস্ত প্রকার সম্মানিত নিয়ামত মুবারক লাভ করে থাকেন। সুবহানাল্লাহ!
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সুলত্বানুন নাছীর মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে সম্মানিত নূর মুবারক, ইলিম, পবিত্রতা, দয়া-দান, ইহসান মুবারক ও তাওফীক্ব ভিক্ষা চাচ্ছি। তিনি আমাদেরকে খছভাবে কবূল করুন। আমীন!
বেমেছাল সম্মানিত সৌন্দর্য মুবারক ও শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত সৌন্দর্য মুবারক ও শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক সম্পর্কে ‘আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে,
فَقَالَ سَيّـِدُنَا حَضْرَتْ عَبْدُ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ لِاُمّـِه عَلَيْهَا السَّلَامُ اُرِيْدُ مِنْكِ اَنْ تَـخْطُبِـىْ لِـىَ امْرَاَةً ذَاتَ حُسْنٍ وَّجَمَالٍ وَّقَدٍّ وَّاعْتِدَالٍ وَّبَـهَاءٍ وَّكَمَالٍ وَّحَسَبٍ وَّنَسَبٍ عَالٍ قَالَتْ حُبًّا وَّكَرَامَةً يَّا وَلَدِىْ ثُـمَّ اِنَّـهَا دَارَتْ اَحْيَاءَ قُرَيْشٍ وَّبَنَاتِ الْعَرَبِ فَلَمْ يُعْجِبْهَا اِلَّا سَيّـِدَتُنَا حَضْرَتْ اٰمِنَةُ بِنْتُ وَهْبٍ عَلَيْهَا السَّلَامُ فَقَالَ يَا اُمَّاهُ انْظُرِيْهَا مَرَّةً ثَانِيَةً فَمَضَتْ وَنَظَرَتْـهَا فَاِذَا هِىَ تُضِىْءُ كَاَنَّـهَا كَوْكَبٌ دُرِّىٌّ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনাকে লক্ষ্য করে বললেন, হে আমার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম! আমি আশা করি, আপনি আমার পক্ষ থেকে এমন একজন মহাসম্মানিতা মেয়ে উনার কাছে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার বিষয়ে প্রস্তাব মুবারক দিবেন, যিনি হবেন সর্বশ্রেষ্ঠা, সর্বোত্তম চরিত্র মুবারক উনার অধিকারিণী, অতি উত্তম জিসম মুবারক উনার অধিকারিণী, সুদর্শনা, ন্যায়পরায়ণী, উজ্জ্বল দীপ্তিময়ী, সর্বদিক থেকে পরিপূর্ণতার অধিকারিণী, বেমেছাল মান-সম্মান-ইজ্জত মুবারক উনার অধিকারিণী, সর্বশ্রেষ্ঠা ও সুউচ্চ বংশীয়া। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহাস সালাম তিনি উত্তরে বললেন, হে আমার মহাসম্মানিত স্নেহের আওলাদ আলাইহিস সালাম! আপনার জন্য সম্মানিত মুহব্বত মুবারক ও সম্মান-ইজ্জত মুবারক। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত কুরাইশ বংশ উনার ও আরবের সকল গোত্রের সমস্ত কুমারী মেয়ে উনাদের ব্যাপারে অত্যন্ত নিখুঁতভাবে সংবাদ নিলেন। কিন্তু তিনি একমাত্র সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ব্যতীত অন্য কাউকে উপরোক্ত সমস্ত গুণাবলী মুবারক উনাদের অধিকারিণী পেলেন না। সুবহানাল্লাহ!
অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, হে আমার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম! আপনি দ্বিতীয়বারের মতো আবারো উনাকে দেখুন। তারপর তিনি পুনরায় দেখতে গেলেন এবং উনার দিকে তাকালেন। তখন তিনি উনাকে এমতাবস্থায় দেখলেন যে, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যেন মুক্তা সাদৃশ্য তারকার ন্যায় নূর মুবারক বিচ্ছুরণ করছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
‘আল বারাহীনুল ক্বিত্ব‘ইয়্যাহ ফী মাওলিদি খইরিল বারিয়্যাহ’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে যে,
وهو اراد ايضا تزويج حَضْرَتْ عبد الله عليه السلام فكان يتفحص امراة تكون بشرف النسب والحسب والعفة ممتازة فى الدرجة القصوى فوجد حَضْرَتْ امنة عليها السلام ابنت حَضْرَتْ وهب عليه السلام متصفة بهذه الاوصاف.
অর্থ: “আর সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও তখন উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ করানোর জন্য এমন একজন মহাসম্মানিতা মেয়ে অনুসন্ধান করছিলেন, যিনি হবেন সর্বোচ্চ বংশীয়া এবং সম্মান-ইজ্জত মুবারক, পবিত্রতা মুবারক ও চারিত্রিক নিষ্কুলষতার দিক থেকে সর্বশ্রেষ্ঠত্বের অধিকারিণী। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এই সকল গুণের সর্বশ্রেষ্ঠ গুণে গুণান্বিতা পেলেন।” সুবহানাল্লাহ!
‘নিহায়াতুল ঈজাযে’ বর্ণিত রয়েছে,
سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اٰمِنَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ اَفْضَلُ امْرَأَةٍ فِىْ قُرَيْشٍ حَسَبًا وَّنَسَبًا وَّجَمَالًا.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ছিলেন কুরাইশ বংশীয় তথা কায়িনাতের সকল মহিলা উনাদের মধ্যে মান, মর্যাদা, সম্মান, বংশ ও সৌন্দর্যগত দিক থেকে সর্বশ্রেষ্ঠা।” সুবহানাল্লাহ!
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে-
وَهِىَ يَوْمَئِذٍ اَفْضَلُ امْرَأَةٍ فِىْ قُرَيْشٍ نَسَبًا وَّمَوْضِعًا.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ছিলেন কুরাইশ তথা কায়িনাতের সমস্ত মহিলা উনাদের মধ্যে মুবারক বংশগত ও অবস্থানগত তথা মহাসম্মানিত হযরত পিতা আলাইহিস সালাম উনার এবং মহাসম্মানিতা হযরত মাতা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের দিক থেকে অর্থাৎ সামগ্রিকভাবে সর্বদিক থেকে সর্বশ্রেষ্ঠা, সর্বোত্তম।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে হিশাম, আর রওদ্বুল উন্ফ, দালাইলুন নুবুওওয়াহ, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ, শরহুয যারক্বানী ‘আলাল মাওয়াহিব, শরফুল মুস্ত¡ফা)
মূলত, মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম হিসেবে, সর্বপ্রকার সর্বোত্তম ছিফত তথা গুণাবলী মুবারক, খুছূছিয়াত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক ও শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক হাদিয়া মুবারক করেই সৃষ্টি মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! যার কারণে তিনি ছিলেন যাহিরী-বাতিনী সৌন্দর্য মুবারক, সুমহান চরিত্র মুবারক ও শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক উনার দিক থেকে কায়িনাতের বুকে অদ্বিতীয়া। উনার কোনো মেছাল নেই। উনার মেছাল তিনি নিজেই। সুবহানাল্লাহ! যা ভাষায় প্রকাশ করা কস্মিনকালেও সম্ভব নয়। সুবহানাল্লাহ!
বিভিন্ন দিক থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার প্রস্তাব মুবারক এবং অস্বীকৃতি মুবারক জ্ঞাপন
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
وَقَدْ كَانَ خَطَبَهَا اَشْرَافُ قُرَيْشٍ وَّكَانَتْ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اٰمِنَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ تأبى ذلك.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কুরাইশ বংশের অভিজাত ব্যক্তিবর্গ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছিলো; কিন্তু তিনি তা অস্বীকার করেন।” সুবহানাল্লাহ! (তারীখুল খমীস শরীফ ১/৮২)
এমনকি কথিত শক্তিধর রোম-পারস্য শাসকদের পক্ষ থেকেও উনার নিকট প্রস্তাবনা এসেছে। কিন্তু তিনি তা অস্বীকার করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত ওয়াহাব আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান সাইয়্যিদুনা হযরত ওয়াহাব আলাইহিস সালাম তিনি এক রাতে এক বিশেষ স্বপ্ন মুবারক দেখেন। এক বুযূর্গ ব্যক্তি উনাকে বলছেন, “হে সাইয়্যিদুনা হযরত ওয়াহাব আলাইহিস সালাম! স্বয়ং যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনার মহাসম্মানিতা আওলাদ (মেয়ে) আলাইহাস সালাম উনার তত্ত্বাবধান ও নিরাপত্তা মুবারক উনার ভার গ্রহণ করেছেন। আপনি উনাকে এমন এক সর্বোত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠ সম্মানিত বংশ মুবারক উনার অধিকারী সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনার নিকট সমর্পণ করুন, যেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাকে সম্মানিত কুরবানী মুবারক করার জন্য উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত মানত মুবারক করেছেন এবং মহান আল্লাহ পাক তিনিও উনার সম্মানিত কুরবানী মুবারক ক্ববূল করেছেন।” সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত ওয়াহাব আলাইহিস সালাম উনার কর্তৃক সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত মু’জিযা শরীফ দর্শন
‘আল বারাহীনুল ক্বিত্ব‘ইয়্যাহ ফী মাওলিদি খইরিল বারিয়্যাহ’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে,
اَهْلُ الْكِتَابِ كَانُوْا يَعْرِفُوْنَ عَنْ بَعْضِ الْعَلَامَاتِ اَنَّ نَّبِىَّ اٰخِرِ الزَّمَانِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَكُوْنُ مِنْ صُلْبِ سَيّـِدِنَا حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَيُعَادُوْنَهٗ عُدْوَانًا وَّيُقِيْمُوْنَ فِىْ مَقَامِ اِهْلَاكِهٖ وَيَـجِيْئُوْنَ مِنْ اَطْرَافِ مَكَّةَ قَاصِدِيْنَ لِاِهْلَاكِهٖ دَائِمًا وَّيُشَاهِدُوْنَ اٰثَارًا غَرِيْبَةً وَّاُمُوْرًا عَجِيْبَةً فَيَنْقَلِبُوْنَ خَائِبِيْنَ خَاسِرِيْنَ نَدَامٰى. وَكَانَ سَيّـِدُنَا حَضْرَتْ عَبْدُ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ ذَهَبَ لِلصَّيْدِ يَوْمًا فَوَصَلَ جَمَاعَةٌ كَثِيْرَةٌ مّـِنْ جَانِبِ الشَّامِ لِقَصْدِ سَيّـِدِنَا حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ مُسَلّـِيْنَ سُيُوْفًا وَّكَانَ حَضْرَتْ وَهْبُ بْنُ عَبْدِ مَنَافٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ اَبُوْ سَيّـِدَتِنَا حَضْرَتْ اٰمِنَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ اُمِّ الْمُـصْطَفٰى صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِىْ ذٰلِكَ الصَّحْرَاءِ اَيْضًا فَرَاٰى فُرْسَانًا اَجْلَادًا لَّايَشْبَهُوْنَ بِاَهْلِ عَالَـمِ الشَّهَادَةِ ظَهَرُوْا مِنَ الْغَيْبِ وَدَفَعُوا الْـجَمَاعَةَ عَنْ سَيّـِدِنَا حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ دَفْعًا.
অর্থ: “আহলে কিতাব তথা ইহুদী-খ্রিস্টানরা (তাদের আসমানী কিতাবসমূহে বর্ণিত) বিভিন্ন আলামতের মাধ্যমে জানতো যে, আখিরী নবী, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এখন সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মাঝে অবস্থান মুবারক করছেন। অর্থাৎ ‘ মহাসম্মানিত নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ এখন সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মাঝে অবস্থান মুবারক করছেন। সুবহানাল্লাহ! তাই তারা সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার বিরুদ্ধে কঠিন শত্রুতা শুরু করে দিলো। উনাকে শহীদ করার জন্য ওঁৎ পেতে থাকলো। না‘ঊযুবিল্লাহ! শুধু তাই নয়, উনাকে শহীদ করার জন্য সর্বদা তাদের পক্ষ থেকে সম্মানিত মক্কা শরীফ উনার আশে-পাশে অনেক গুপ্তচর আসা-যাওয়া করতে থাকলো। এই সকল গুপ্তচরেরা বিভিন্ন অলৌকিক ও আশ্চর্যজনক ঘটনা দেখে তথা সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত মু’জিযা শরীফ দেখে ব্যর্থ, ভীত-সন্ত্রস্ত, লাঞ্ছিত, লজ্জিত ও ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় ফিরে যেত। সুবহানাল্লাহ!
একদা সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি একা শিকার করার উদ্দেশ্যে বের হলেন। এটা জেনে শাম দেশের দিক হতে শত্রুদের একটি বিরাট দল উনাকে শহীদ করার জন্য তরবারী নিয়ে এগিয়ে আসলো। না‘ঊযুবিল্লাহ! এদিকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা হযরত আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আব্বাজান সাইয়্যিদুনা হযরত ওয়াহাব ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনিও ঘটনাক্রমে সেই নির্জন ময়দানে উপস্থিত ছিলেন। (হঠাৎ করে) তিনি অত্যন্ত শক্তিশালী একদল আশ্বারোহী সৈন্য দেখতে পেলেন। উনারা ইহজগতের কোনো মানুষের সাদৃশ্য ছিলেন না। (উনারা ছিলেন মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য নিয়োজিত সম্মানিত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ!) উনারা অদৃশ্য থেকে এসে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার শত্রুবাহিনীকে পরিপূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন করে দিলেন।” সুবহানাল্লাহ!
‘নুযহাতুল মাজালিস’ কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
فَعَلِمَتْ اَحْبَارُ الشَّامِ بِسَيّـِدِنَا حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ لِاَنَّ فِـىْ كُتُبِهِمْ اِذَا قَطَرَتْ جُبَّةُ حَضْرَتْ يَـحْيٰـى عَلَيْهِ السَّلَامُ فَقَدْ وُلِدَ وَالِدُ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمَّا كَبُرَ سَيّـِدُنَا حَضْرَتْ عَبْدُ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَصَدُوْا قَتْلَهٗ فَاَرْسَلَ اللهُ تَعَالـٰى مَلَائِكَةً فَقَتَلَهُمْ عَنْ اٰخرِهِمْ وَكَانَ حَضْرَتْ وَهْبٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَّالِدُ سَيّـِدَتِنَا حَضْرَتْ اٰمِنَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ يَنْظُرُ عَلـٰى رَأْسِ جَبَلٍ اِلـٰى هٰذِهِ الْكَرَامَةِ.
অর্থ: “শাম দেশের পাদ্রীরা সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার ব্যাপারে জানতো। কেননা তাদের আসমানী কিতাবসমূহে লিখা ছিলো যে, যখন হযরত ইয়াহইয়া আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত জুব্বা মুবারক থেকে ফোঁটা ফোঁটা করে রক্ত মুবারক ঝরতে থাকবে, তখন বুঝতে হবে যে অবশ্যই সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর যখন সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বড় হলেন, তখন তারা উনাকে শহীদ করার জন্য ইচ্ছা পোষণ করলো। না‘ঊযুবিল্লাহ! তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে প্রেরণ করে উনাদের মাধ্যমে তাদেরকে হত্যা করলেন, নিশ্চিহ্ন করে দিলেন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান সাইয়্যিদুনা হযরত ওয়াহাব আলাইহিস সালাম তিনি পাহাড়ের উপর থেকে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার এই সম্মানিত কারামাত মুবারক দেখলেন।” সুবহানাল্লাহ! (নুযহাতুল মাজালিস ২/৭৫)
‘তারীখুল খমীস শরীফ’ উনার মধ্যে আরো উল্লেখ রয়েছে যে,
اَنَّهٗ خَرَجَ سَيّـِدُنَا حَضْرَتْ عَبْدُ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ يَوْمًا اِلـٰى قَنَصِهٖ وَقَدْ قَدِمَ عَلَيْهِ تِسْعُوْنَ رَجُلًا مّـِنْ اَحْبَارِ يَهُوْدِ الشَّامِ مَعَهُمُ السُّيُوْفُ الْـمَسْمُوْمَةُ يُرِيْدُوْنَ اَنْ يَّغْتَالُوْهُ وَيَقْتُلُوْهُ وَكَانَ حَضْرَتْ وَهْبُ بْنُ عَبْدِ مَنَافٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ اَبُوْ سَيّـِدَتِنَا حَضْرَتْ اٰمِنَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ صَاحِبَ قَنَصٍ اَيْضًا قَالَ فَلَمَّا نَظَرْتُ اِلَـى الْاَحْبَارِ قَدْ اَحْدَقُوْا بِسَيّـِدِنَا حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَسَيّـِدُنَا حَضْرَتْ عَبْدُ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ يَوْمَئِذٍ وَحْدَهٗ تَقَدَّمْتُ اِلَيْهِ لَاُعِيْنُهٗ عَلَيْهِمْ فَنَظَرْتُ اِلـٰى رِجَالٍ لَّايَشْبَهُوْنَ رِجَالَ الدُّنْيَا عَلـٰى خَيْلٍ شُهْبٍ قَدْ حَمَلُوْا عَلَى الْاَحْبَارِ حتّٰـى هَزَمُوْهُمْ عَنْ سَيّـِدِنَا حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ.
অর্থ: “একদা সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি শিকারের উদ্দেশ্যে বের হলেন। তখন শাম দেশের ইহুদী পাদ্রীদের মধ্য থেকে ৯০ জন পাদ্রী বিষাক্ত তরবারী নিয়ে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে গুপ্তহত্যা এবং শহীদ করার উদ্দেশ্যে উনার দিকে অগ্রসর হতে লাগলো। না‘ঊযুবিল্লাহ! আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান সাইয়্যিদুনা হযরত ওয়াহাব আলাইহিস সালাম তিনিও শিকারের উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলেন। তিনি বলেন, অতঃপর যখন আমি দেখলাম যে, পাদ্রীরা সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে পুরোপুরিভাবে ঘেরাও করে ফেলেছে। অথচ সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি একা। তখন আমি সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার দিকে অগ্রসর হতে লাগলাম। উদ্দেশ্য হচ্ছে, আমি ওই সকল পাদ্রীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই উনাকে সাহায্য করবো, উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিবো। সুবহানাল্লাহ! তখন আমি ধূসর রঙ্গের ঘোড়ার উপর কিছু লোক দেখতে লাগলাম, উনারা দুনিয়ার অন্য কোনো লোকের সাথে সাদৃশ্য রাখেন না। উনারা সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার পক্ষ হয়ে পাদ্রীদের উপর আক্রমণ করে তাদেরকে পরাজিত করলেন, তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দিলেন। সুবহানাল্লাহ! (তারীখুল খমীস ১/৮৩)
সম্মানিত যুহরাহ গোত্রে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হওয়ার পূর্বাভাস
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছে,
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ عَنْ اَبِيْهِ حَضْرَتْ اَلْعَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ عَلَيْهِمَا السَّلَامُ قَالَ قَالَ حَضْرَتْ عَبْدُ الْمُطَّلِبِ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَدِمْتُ الْيَمَنَ فِىْ رِحْلَةِ الشّـِتَاءِ فَنَزَلْتُ عَلـٰى حَبْرٍ مِنَ الْيَهُوْدِ فَقَالَ رَجُلٌ مّـِنْ اَهْلِ الزَّبُوْرِ يَعْنِـىْ اَهْلَ الْكِتَابِ مِـمَّنِ الرَّجُلُ قُلْتُ مِنْ قُرَيْشٍ قَالَ مِنْ اَيّـِهِمْ قُلْتُ مِنْ بَنِـىْ هَاشِمٍ قَالَ يَا حَضْرَتْ عَبْدَ الْمُطَّلِبِ عَلَيْهِ السَّلَامُ أَتَأْذَنُ لِـىْ اَنْ أَنْظُرَ اِلـٰى بَعْضِكَ قَالَ نَعَمْ مَا لَـمْ يَكُنْ عَوْرَةً قَالَ فَفَتَحَ اَحَدَ مَنْخِرَىَّ ثُـمَّ فَتَحَ الْاٰخَرَ فَقَالَ اَشْهَدُ اَنَّ فِـىْ اِحْدٰى يَدَيْكَ مُلْكًا وَّفِى الْاُخْرٰى النُّبُوَّةَ وَاِنَّا نَـجِدُ ذٰلِكَ فِـىْ بَنِـىْ زُهْرَةَ فَكَيْفَ ذٰلِكَ قُلْتُ لَا اَدْرِىْ قَالَ هَلْ لَّكَ مِنْ شَاغَةٍ قُلْتُ وَمَا الشَّاغَةُ قَالَ الزَّوْجَةُ قُلْت اَمَّا الْيَوْمُ فَلَا فَقَالَ فَاِذَا رَجَعْتَ فَتَزَوَّجْ فِيْهِمْ فَرَجَعَ حَضْرَتْ عَبْدُ الْمُطَّلِبِ عَلَيْهِ السَّلَامُ اِلـٰى مَكَّةَ فَتَزَوَّجَ هَالَةَ بِنْتَ وُهَيْبِ بْنِ عَبْدِ مَنَافِ بْنِ زُهْرَةَ فَوَلَدَتْ لَهٗ حَضْرَتْ حَمْزَةَ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَحَضْرَتْ صَفِيَّةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ وَتَزَوَّجَ سَيّـِدُنَا حَضْرَتْ عَبْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيّـِدَتَنَا حَضْرَتْ اٰمِنَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ بِنْتَ وَهْبٍ عَلَيْه السَّلَامُ فَوَلَدَتْ لَهٗ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَتْ قُرَيْشٌ حِيْنَ تَزَوَّجَ سَيّـِدُنَا حَضْرَتْ عَبْدُ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيّـِدَتَنَا حَضْرَتْ اٰمِنَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ فَلَحَ سَيّـِدُنَا حَضْرَتْ عَبْدُ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ عَلـٰى اَبِيْهِ.
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উনার সম্মানিত আব্বাজান সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিমাস সালাম উনার থেকে বর্ণনা করেন। সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি একবার এক শীতের সফরে ইয়ামানে যাই। সেখানে যাওয়ার পর আমার সাথে একজন ইহুদী পাদ্রীর সাক্ষাৎ হয়। তখন আহলে কিতাবদের মধ্য থেকে এক ব্যক্তি আমাকে বলেন, আপনি কে? আমি বললাম, আমি সম্মানিত কুরাইশ বংশীয় একজন সম্মানিত বিশেষ ব্যক্তিত্ব মুবারক। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, সম্মানিত কুরাইশ বংশ উনার কোন পরিবার থেকে? আমি বললাম, আমি বনূ হাশিম হতে। অতঃপর তিনি বলেন, আপনার সম্মানিত অনুমতি মুবারক পেলে আমি আপনার সম্মানিত জিসম মুবারক (শরীর মুবারক) উনার কিছু অংশ দেখতে চাই। আমি বললাম, হ্যাঁ, দেখতে পারেন, যদি তা আওরাত (সতর) না হয়। তারপর তিনি প্রথমে আমার এক নাক মুবারক উনার ছিদ্র মুবারক দেখলেন, অতঃপর অপর নাক মুবারক উনার ছিদ্র মুবারক দেখলেন। তারপর তিনি বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনার একহাত মুবারক-এ সম্মানিত মুলকিয়াত তথা শাসন ক্ষমতা এবং অপর হাত মুবারক-এ সম্মানিত নবুওওয়াত মুবারক। সুবহানাল্লাহ! আমি তা বনূ যুহরাহ গোত্রে দেখতে পাচ্ছি। এ কেমন করে হলো? আমি বললাম, তা আমি জানি না। অর্থাৎ আমি উক্ত পাদ্রীর জবান থেকে বিষয়টি শুনতে চাইলাম। লোকটি বললো, আপনার কি ‘শাগাহ’ আছে? আমি বললাম, ‘শাগাহ’ কী? লোকটি বললো, মানে যাওজুমতুম মুর্কারমাহ তথা স্ত্রী। আমি বললাম, বর্তমানে নেই। অর্থাৎ এখানে আমার সাথে নেই। লোকটি বললো, তাহলে ফিরে গিয়ে যুহরাহ গোত্রে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ করে নিবেন। সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম তিনি দেশে ফিরে এলেন এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত হালা বিনতে উহাইব ইবনে আবদে মানাফ ইবনে যুহ্রাহ আলাইহাস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ করলেন। আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত হালা আলাইহাস সালাম উনার মাধ্যমে সাইয়্যিদুনা হযরত হামযাহ আলাইহিস সালাম তিনি ও সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছফিয়্যাহ আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর সাইয়্যদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ করেন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাধ্যমে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ করার পর কুরাইশগণ বলাবলি করতে শুরু করেন যে, সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান আলাইহিস সালাম উনার উপর কামিয়াবী হাছিল করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (বাইহাক্বী ১/১০৬, আল মু’জামুল কাবীর, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ২/১৯০, মুস্তাদরকে হাকিম, আবূ নাঈম ১/১৮৬, খছায়িছুল কুবরা, আল বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ, ইমতা‘উল আসমা’ ৪/৩৬)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার সম্মানিত প্রস্তাব মুবারক
‘নুযহাতুল মাজালিস’ কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
فَلَمَّا كَبُرَ سَيّـِدُنَا حَضْرَتْ عَبْدُ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَصَدُوْا قَتْلَهٗ فَاَرْسَلَ اللهُ تَعَالـٰى مَلَائِكَةً فَقَتَلَهُمْ عَنْ اٰخرِهِمْ وَكَانَ حَضْرَتْ وَهْبٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَالِدُ سَيّـِدَتِنَا حَضْرَتْ اٰمِنَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ يَنْظُرُ عَلـٰى رَأْسِ جَبَلٍ اِلـٰى هٰذِهِ الْكَرَامَةِ لِـحَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَاَخْبَرَ زَوْجَتَهٗ حَضْرَتْ بَرَّةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ بِنْتَ عَبْدِ الْعُزّٰى عَلَيْه السَّلَامُ اُمَّ سَيّـِدَتِنَا حَضْرَتْ اٰمِنَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ بِذٰلِكَ وَقَالَ هَلْ لَّكِ اَنْ تَزَوَّجِىْ حَضْرَتْ عَبْدَ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ بِسَيّـِدَتِنَا حَضْرَتْ اٰمِنَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ قَالَتْ نَعَمْ فَتَوَجَّهَ حَضْرَتْ وَهْبٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَحَضْرَتْ بَرَّةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ اِلـٰى حَضْرَتْ عَبْدِ الْـمُطَّلِبِ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَاسْـمُهٗ حَضْرَتْ شَيْبَةُ الْـحَمْدِ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَخَطَبَا مِنْهُ حَضْرَتْ عَبْدَ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ لِـسَيّـِدَتِنَا حَضْرَتْ اٰمِنَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ لَـمَّا رَاٰى حَضْرَتْ وَهْبٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ مِنْ كَرَامَةِ وَالِدِ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَزَوَّجَهٗ بِـهَا.
অর্থ: “অতঃপর যখন সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বড় হলেন, তারা (শাম দেশের পাদ্রীরা) উনাকে শহীদ করার জন্য ইচ্ছা পোষণ করলো। না‘ঊযুবিল্লাহ! তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে প্রেরণ করে উনাদের মাধ্যমে তাদেরকে হত্যা করলেন, দনিশ্চিহ্ন করে দিলেন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান সাইয়্যিদুন নাস সাইয়্যিদুনা হযরত ওয়াহাব আলাইহিস সালাম তিনি পাহাড়ের উপর থেকে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার এই মহাসম্মানিত মু’জিযা শরীফ দেখলেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর তিনি বাড়িতে যেয়ে উনার মহাসম্মানিতা ‘যাওযাতুম মুকাররামাহ’ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান সাইয়্যিদাতুনা হযরত র্বারাহ বিনতে আব্দুল উয্যা আলাইহাস সালাম উনাকে এই সম্মানিত কারামাত মুবারক সম্পর্কে অবহিত করলেন। তারপর তিনি বললেন, আপনি কি সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সাথে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ দিবেন? জবাবে তিনি বললেন, হ্যাঁ। অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত ওয়াহাব আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান আলাইহিস সালাম উনার এই সম্মানিত কারামাত মুবারক দেখে তিনি এবং উনার মহাসম্মানিতা যাওজাতুম মুকাররমাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত বাররাহ আলাইহাস সালাম উনারা দু’জনে সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার নিকট গেলেন। উনার সম্মানিত নাম মুবারক ছিলেন, ‘শায়বাতুল হামদ’ (এটা উনার বিশেষ লক্বব মুবারক। তবে উনার মূল নাম মুবারক ছিলেন ‘সাইয়্যিদুনা হযরত শায়বাহ আলাইহিস সালাম’।) অতঃপর উনারা উভয়ে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সাথে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার ব্যাপারে প্রস্তাব মুবারক দিলেন। তারপর তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সাথে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ সুসম্পন্ন করলেন।” সুবহানাল্লাহ! (নুযহাতুল মাজালিস ২/৭৫)
আর আল্লামা হযরত কারামাত আলী জৈনপুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আল বারাহীনুল ক্বিত্ব‘ইয়্যাহ ফী মাওলিদি খইরিল বারিয়্যাহ’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেন,
فَلَمَّا رَاٰى وَهْبُ بْنُ عَبْدِ مَنَافٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ هٰذِهِ الْـحَالَ رَجَعَ اِلـٰى بَيْتِهٖ مِنَ الصَّحْرَاءِ وَقَالَ لِاَهْلِهٖ اَنَّ تَزْوِيْجَ بِنْتِـىْ سَيّـِدَتِنَا حَضْرَتْ اٰمِنَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ (مَعَ) سَيّـِدِنَا حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْن عَبْدِ الْـمُطَّلِبِ عَلَيْهِمَا السَّلَامُ يَكُوْنُ حَسَنًا فَاَرْسَلَ بِـهٰذِهِ الْـخِطْبَةِ اِلـٰى سَيّـِدِنَا حَضْرَتْ عَبْدِ الْـمُطَّلِبِ عَلَيْهِ السَّلَامُ مِنْ اَحْبَابِهٖ بَعْضًا وَّهُوَ اَرَادَ اَيْضًا تَزْوِيْجَ سَيّـِدِنَا حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَكَانَ يَتَفَحَّصُ امْرَاَةً تَكُوْنُ بِشَرْفِ النَّسَبِ وَالْـحَسَبِ وَالْعفَّةِ مُـمْتَازَةً فِـى الدَّرَجَةِ الْقُصْوٰى فَوَجَدَ سَيّـِدَتَنَا حَضْرَتْ اٰمِنَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ ابْنَتَ وَهْبٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ مُتَّصِفَةً بِـهٰذِهِ الْاَوْصَافِ فَزَوَّجَ سَيّـِدَنَا حَضْرَتْ عَبْدَ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ اِيَّاهَا.
অর্থ: “সাইয়্যিদুন নাস সাইয়্যিদুনা হযরত ওয়াহাব ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি এই ঘটনা মুবারক অবলোকন করার পর সেখান থেকে বাড়ি ফিরে গেলেন এবং তিনি উনার মহাসম্মানিতা যাওজাতুম মুকাররমাহ আলাইহাস সালাম উনার নিকট (সমস্ত ঘটনা মুবারক খুলে বলার পর বললেন,) সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার নিকট আমার মহাসম্মানিতা বানাত (মেয়ে) সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ দিতে পারলে অতি উত্তম হতো। অতঃপর তিনি উনার কিছু মুহব্বতের লোক উনাদের মাধ্যমে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম উনার নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার এই প্রস্তাব মুবারক পাঠালেন। আর সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও তখন উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ করানোর জন্য এমন একজন মহাসম্মানিতা মেয়ে অনুসন্ধান করছিলেন, যিনি হবেন সর্বোচ্চ বংশীয়া এবং সম্মান-ইজ্জত, পবিত্রতা ও চারিত্রিক নিষ্কুলষতার দিক থেকে সর্বশ্রেষ্ঠত্বের অধিকারিণী। সুবহানাল্লাহ! তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এই সকল গুণে গুণান্বিতা পেলেন। সুবহানাল্লাহ! তাই তিনি (উক্ত প্রস্তাবে রাজি হয়ে) সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সাথে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ সুসম্পন্ন করলেন।” সুবহানাল্লাহ!
‘আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে,
قَالَ حَسَنُ بْنُ اَحْـمَدَ الْبَكْرِىُّ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ لَـمَّا اَرَادَ الْـجَلِيْلُ جَلَّ جَلَالُهٗ اَنْ يَّنْقُلَ نُوْرَ سَيّـِدِنَا مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَرَّكَ فِىْ قَلْبِ سَيّـِدِنَا حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ الْـمُطَّلِبِ عَلَيْهِمَا السَّلَامُ اَنْ يَّتَزَوَّجَ فَقَالَ سَيّـِدُنَا حَضْرَتْ عَبْدُ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ لِاُمّـِهٖ عَلَيْهَا السَّلَامُ اُرِيْدُ مِنْكِ اَنْ تَـخْطُبِـىْ لِـىَ امْرَاَةً ذَاتَ حُسْنٍ وَّجَمَالٍ وَّقَدٍّ وَّاعْتِدَالٍ وَّبَـهَاءٍ وَّكَمَالٍ وَّحَسَبٍ وَّنَسَبٍ عَالٍ قَالَتْ حُبًّا وَّكَرَامَةً يَّا وَلَدِىْ ثُـمَّ اِنَّـهَا دَارَتْ اَحْيَاءَ قُرَيْشٍ وَّبَنَاتِ الْعَرَبِ فَلَمْ يُعْجِبْهَا اِلَّا سَيّـِدَتُنَا حَضْرَتْ اٰمِنَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ بِنْتُ وَهْبٍ عَلَيْه السَّلَامُ فَقَالَ يَا اُمَّاهُ انْظُرِيْهَا مَرَّةً ثَانِيَةً فَمَضَتْ وَنَظَرَتْـهَا فَاِذَا هِىَ تُضِىْءُ كَاَنَّـهَا كَوْكَبٌ دُرِّىّ فَاَنْقَدُوْهَا.
অর্থ: “হযরত হাসান বিন আহমদ বাকরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত নূর মুবারক উনাকে উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ স্থানান্তরিত করার ইচ্ছা মুবারক করলেন, তখন সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত অন্তর মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ করার আগ্রহ মুবারক সৃষ্টি করে দিলেন। সুবহানাল্লাহ! ফলে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনাকে লক্ষ্য করে বললেন, হে আমার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম! আমি আশা করি, আপনি আমার পক্ষ থেকে এমন একজন মহাসম্মানিতা মেয়ে উনার কাছে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার বিষয়ে সম্মানিত প্রস্তাব মুবারক দিবেন, যিনি হবেন সর্বশ্রেষ্ঠা, সর্বোত্তম চরিত্র মুবারক উনার অধিকারিণী, অতি উত্তম জিসম মুবারক উনার অধিকারিণী, সুদর্শনা, ন্যায়পরায়ণা, উজ্জ্বল দীপ্তিময়ী, সর্বদিক থেকে পরিপূর্ণতার অধিকারিণী, বেমেছাল মান-সম্মান-ইজ্জত মুবারক উনার অধিকারিণী, সর্বশ্রেষ্ঠা ও সুউচ্চ বংশীয়া। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহাস সালাম তিনি উত্তরে বললেন, হে আমার মহাসম্মানিত স্নেহের পুত্র আলাইহিস সালাম! আপনার জন্য সম্মানিত মুহব্বত মুবারক ও সম্মান-ইজ্জত মুবারক। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত কুরাইশ বংশ উনার ও আরবের সকল গোত্রের সমস্ত কুমারী মেয়ে উনাদের ব্যাপারে অত্যন্ত নিখুঁতভাবে সংবাদ নিলেন। কিন্তু তিনি একমাত্র সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ব্যতীত অন্য কাউকে উপরোক্ত সমস্ত গুণাবলী মুবারক উনাদের অধিকারিণী পেলেন না। সুবহানাল্লাহ!
অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, হে আমার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম, আপনি দ্বিতীয়বারের মতো আবারো উনাকে দেখুন। তারপর তিনি পুনরায় দেখতে গেলেন এবং উনার দিকে তাকালেন। তখন তিনি উনাকে এমতাবস্থায় দেখলেন যে, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যেন মুক্তা সাদৃশ্য তারকার ন্যায় নূর মুবারক বিচ্ছুরণ করছেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর উভয়ের মধ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ সুসম্পন্ন করে দিলেন।” সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠান মুবারক
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ পরিপূর্ণরূপে সম্মানিত সুন্নতী কায়দায় হয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ! নির্দিষ্ট সময়ে উনাকে সম্মানিত মদীনা শরীফ থেকে সম্মানিত মক্কা শরীফ নিয়ে আসা হয়। সম্মানিত কা’বা শরীফ উনার পাশেই সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত হুজরা শরীফ। সেখানেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার সম্মানিত মজলিস মুবারক অনুষ্ঠিত হন। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার অনুষ্ঠানে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সকলের উপস্থিতে সম্মানিত সুন্নতী তারতীব মুবারক অনুযায়ী প্রথমে মহান আল্লাহ পাক উনার প্রশংসা ও ছানা-ছিফত মুবারক করেন। তারপর সকলের উদ্দেশ্যে সম্মানিত নছীহত মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি বলেন, সেই মহান আল্লাহ পাক উনার অসংখ্য শুকরিয়া আদায় করছি, উনার প্রশংসা মুবারক করছি যিনি আমাদেরকে অফুরন্ত সম্মানিত নিয়ামত মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছেন, আমাদেরকে দয়া-ইহসান মুবারক করেছেন এবং আমাদের হৃদয়ে উনার সম্মানিত শুকরিয়া, প্রশংসা, ছানা-ছিফত মুবারক করার উপলব্ধি দিয়েছেন এবং তা করার তাওফীক মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি আমাদেরকে সম্মানিত শহর মক্কা শরীফ উনার অধিবাসী বানিয়েছেন। তিনি অন্যান্য গোত্রের উপর আমাদেরকে মর্যাদাবান করেছেন এবং দুর্যোগ ও দুরবস্থা থেকে মুক্তি দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! সেই মহান আল্লাহ পাক উনার প্রশংসা করছি যিনি আমাদের জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ বৈধ করেছেন এবং অবৈধ সংসর্গ নিষিদ্ধ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! এইভাবে অনুষ্ঠান মুবারক সূচনা করে তিনি বলেন, এখন আপনাদের অবগতির জন্য পেশ করছি যে, আমাদের মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি আপনাদের মহাসম্মানিতা আওলাদ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ হতে চান এবং আপনাদের সম্মতি হলে এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ নিষ্পন্ন করতে চান। আপনারা কি এ প্রস্তাবে রাজি রয়েছেন?
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সুলত্বানুন নাছীর মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “অতঃপর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান খাজা সাইয়্যিদুনা হযরত ওয়াহাব ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আমরা এই প্রস্তাব মুবারক গ্রহণ করলাম। সুবহানাল্লাহ! তারপর তিনিও মহান আল্লাহ পাক উনার প্রশংসা ও ছানা-ছিফত মুবারক করার পর সকলের উদ্দেশ্যে কিছু সম্মানিত নছীহত মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি বলেন, সেই মহান আল্লাহ পাক উনার অসংখ্য শুকরিয়া আদায় করছি, উনার প্রশংসা মুবারক করছি যিনি আমাদেরকে দ্বীনে হানীফ উনার উপর প্রতিষ্ঠিত রেখেছেন, উনার সম্মানিত শুকরিয়া, প্রশংসা, ছানা-ছিফত মুবারক করার তাওফীক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি আমাদেরকে সম্মানিত কুরাইশ গোত্র উনার বিশেষ শাখা সম্মানিত যুহরাহ গোত্র উনার অন্তর্ভুক্ত করেছেন এবং সম্মানিত শহর মদীনা শরীফ উনার অধিবাসী বানিয়েছেন। তিনি অন্যান্য গোত্রের উপর আমাদেরকে মর্যাদাবান করেছেন এবং মানুষের খিদমত করার সুযোগ করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! সেই মহান আল্লাহ পাক উনার প্রশংসা করছি যিনি আমাদের জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ বৈধ করেছেন এবং অবৈধ সংসর্গ নিষিদ্ধ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
এভাবে সাইয়্যিদুনা খাজা হযরত ওয়াহাব ইবনে আবদে মানাফ আলাইহিস সালাম তিনি উনার সংক্ষিপ্ত নছীহত মুবারক শেষ করেন। এতে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অত্যন্ত খুশি মুবারক প্রকাশ করেন। অতঃপর তিনি হাসিমুখে সায় দিয়ে সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা সকলে এই সম্মানিত পবিত্র কাজের সাক্ষী থাকলেন। সুবহানাল্লাহ!
তারপর সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার শুকরিয়া আদায় করেন এবং দোয়া মুনাজাত পরিচালনা করেন। সুবহানাল্লাহ!
এইভাবে সম্মানিত সুন্নতী তরতীব মুবারক অনুযায়ী সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ সুসম্পন্ন হন।” সুবহানাল্লাহ!
যখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হন, তখন উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ১৮ বছর ৩ মাস ২৫ দিন। আর সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ২৪ বছর ১১ মাস ২৯ দিন তথা পূর্ণ ২৫ বছর। সুবহানাল্লাহ!
সময়টি ছিলো নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের ৮ মাস ১২ দিন পূর্বে সম্মানিত রজবুল হারাম শরীফ মাস উনার ১লা তারিখ লাইলাতুল জুমু‘য়াহ শরীফ বা‘দ মাগরিব। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ عَلِـىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ اِنَّ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ خَرَجْتُ مِنْ نِكَاحٍ وَّلَـمْ اَخْرُجْ مِنْ سِفَاحٍ مّـِنْ لَّدُنْ حَضْرَتْ اٰدَمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ اِلـٰى اَنْ وَّلَدَنِـىْ اَبِـىْ وَاُمِّىْ لَـمْ يُصِبْنِـىْ مِنْ سِفَاحِ الْـجَاهِلِيَّةِ شَىْءٌ مَّا وَلَدَنِـىْ اِلَّا نِكَاحٌ كَنِكَاحِ الْاِسْلَامِ.
অর্থ: “আমি সর্বোত্তম বিশুদ্ধ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার মাধ্যমে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছি; কস্মিনকালেও এর ব্যতিক্রমটি ঘটেনি। সুবহানাল্লাহ! আবুল বাশার সাইয়্যিদুনা হযরত আদম ছফীউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার থেকে শুরু করে আমার মহাসম্মানিত হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম উনার এবং মহাসম্মানিতা হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের পর্যন্ত আমি যেই সকল সুমহান ব্যক্তিত মুবারক ও ব্যক্তিত্বা মুবারক উনাদের মাঝে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেছি, উনারা প্রত্যেকেই উনাদের সম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন সর্বোত্তম বিশুদ্ধ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার মাধ্যমে। যাতে জাহিলী যুগের কোনো অপকর্ম কস্মিনকালেও স্পর্শ করেনি। আমি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার ন্যায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার মাধ্যমে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছি।” সুবহানাল্লাহ! (আল মু’জামুল আওসাত্ব লিত ত্ববারনী ৫/৮০, আল বাদরুল মুনীর ৭/৬৩৭, আল মাত্বালিবুল আলীয়াহ ১৭/১৯৮, মাজমাউয যাওয়াইদ ৮/১৪৯, আল জামিউছ ছগীর ১/৩৬৪, আল ফাতহুল কাবীর ২/৮২, দায়লামী শরীফ ২/১৯০, জামিউল আহাদীছ ৯/৪৯৮, আল খছাইছুল কুবরা ১/৬৫, সীরাতে হালবিয়্যাহ ১/৬৮, দালাইলুন নুবুওওয়াহ লিআবী নাঈম ১/১৯, সুবুলুলহুদা ওয়ার রশাদ ১/২৩৭)
এই সমস্ত দলীল-আদিল্লাহ উনাদের মাধ্যমে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম উনার এবং মহাসম্মানিতা হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ সম্মানিত সুন্নতী তরতীব মুবারক অনুযায়ী হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! মূলত এই সম্মানিত তরতীব মুবারক অনুযায়ী বিবাহ অনুষ্ঠান করা সকলের জন্য সম্মানিত সুন্নত মুবারক হিসেবে সাব্যস্ত হয়েছে। অর্থাৎ উনারা সকলকে সম্মানিত সুন্নত মুবারক শিক্ষা দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত মোহরানা মুবারক
সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার সম্মানিত মোহরানা মুবারক ছিলো নগদ এক উকিয়া স্বর্ণ ও এক উকিয়া রৌপ্য। সুবহানাল্লাহ!
এই সম্পর্কে বর্ণিত রয়েছে,
فانقدوها اوقية من فضة واوقية من ذهب
অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার সম্মানার্থে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নগদ এক আউকিয়া স্বর্ণ ও এক আউকিয়া রৌপ্য মুবারক মোহর হিসেবে প্রদান করা হয়েছিলো।” সুবহানাল্লাহ! (আন নি’মাতুল কুবর ‘আলাল ‘আলাম)
সম্মানিত ওলীমা মুবারক
সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ছিলেন সমস্ত কুরাইশ সম্প্রদায় উনাদের সাইয়্যিদ। তিনি তো জিন-ইনসানকে খাওয়াতেনই; শুধু তাই নয়, এমনকি বন্যপশু-পাখীদেরকেও খাদ্য খাওয়াতেন। সুবহানাল্লাহ! তাই তিনি সকলের মাঝে ‘মুত্ব‘ইমুল ইন্সি ওয়াল ওয়াহ্শি ওয়াত ত্বইর’ তথা মানুষ, বন্য পশু ও পাখীদেরকে খাদ্যদানকারী এই সম্মানিত লক্বব মুবারক-এ পরিচিত ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! যদি তাই হয়, তাহলে তিনি উনার সবচেয়ে প্রিয় মহাসম্মানিত আওলাদ, লখতে জিগার সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার ওলীমা মুবারক-এ কত বিশাল বড় অনুষ্ঠান মুবারক করেছেন, কতো বেমেছালভাবে আয়োজন মুবারক করেছেন এবং জিন-ইনসান ও পশু-পাখীকে কি পরিমাণ মেহমানদারী মুবারক করেছেন, খাদ্য মুবারক খায়িছেন, তা সকলের চিন্তা ও কল্পনার ঊর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! তবে কিতাবের এক বর্ণনায় দেখা যায় যে, তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত ওলীমা মুবারক উপলক্ষে একশত উট, একশত গরু, একশত বকরী জবাই করে প্রচুর পরিমাণে খাবার প্রস্তুত করেছেন এবং সম্মানিত মক্কা শরীফ ও তৎসংলগ্ন এলাকার সবাইকে দাওয়াত করে মেহমানদারী মুবারক করেছেন। এই সম্মানিত মেহমানদারী মুবারক চারদিন পর্যন্ত চলেছেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত লাইলাতুল বিনা’ শরীফ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রগাইব শরীফ
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার ফুল সজ্জিত সম্মানিত হুজরা শরীফ-এ নিয়ে যাওয়া হলো। অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বিশেষ ছোহবত মুবারক তথা সাক্ষাৎ মুবারক-এ গেলেন এবং মহাসম্মানিত নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার থেকে কুদরতীভাবে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। সুবাহনাল্লাহ! সেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় রাতখানা ছিলেন সম্মানিত রজবুল হারাম শরীফ উনার ১লা তারিখ এবং সম্মানিত জুমুয়াহ শরীফ উনার সম্মানিত রাত মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
আল্লামা কারামত আলী জৈনপুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আল বারাহীনুল ক্বিত্ব‘ইয়্যাহ ফী মাওলিদি খইরিল বারিয়্যাহ শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেন,
اِنَّ فِىْ هٰذِهِ اللَّيْلَةِ نُوْدِىَ فِى الْملكِ وَالْمَلَكُوْتِ اَنْ يُّنَوِّرُوْا الْعَالَمَ بِاَنْوَارِ الْقدسِ تَنْوِيْرًا واهتز وابتهج ملائكة الارض والسماء اهتزازا وابتهاجا وامر خازن الجنة بان يفتح باب الفردوس الاعلى ويجعل العالم بالفوائح والروائح معطرا وبشر فى طبقات السموات وبقاع الارض كلها بان النور المحمدى فى هذه الليلة استقر فى رحم حضرت امنة عليها السلام استقرارا.
অর্থ: “এই রাতে মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত কুদরত মুবারক উনার জগতে এবং হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের জগতে বলে দেয়া হয়েছিলো যে, উনারা যেন সম্মানিত পবিত্র নূর মুবারক দ্বারা সমস্ত সৃষ্টিজগতকে নূরানী করেন, আলোকিত করেন। সুবহানাল্লাহ! আকাশ-যমীন, সারা কায়িনাতের সকল ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা মহা খুশিতে বিভোর হয়ে গিয়েছিলেন। সর্বশ্রেষ্ঠ জান্নাত ফেরদাউস উনার দরজা মুবারক খুলে দেয়ার জন্য সম্মানিত বেহেশত উনার রক্ষণাবেক্ষণকারী হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম উনাকে হুকুম করা হলো। সমগ্র কায়িনাতকে বিভিন্ন প্রকার খুশবু দ্বারা খুশবূময় করে রাখার আদেশ মুবারক আসলো। আকাশের সকল স্তরে এবং যমীনের সকল স্তরে, পৃথিবীর সকল ঘরে ঘরে খোশখবরি দেয়া হয়েছিলো যে, মহাসম্মানিত নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এই সম্মানিত রাত মুবারক-এ ক্বুদরতীভাবে উনার মহাসম্মানিত হযরত আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক এনেছেন।” সুবহানাল্লাহ!
‘আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম’ কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
وَفِىْ حَدِيْثِ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُمَا اَنَّـهٗ قَالَ كَانَ مِنْ دَلَالَةِ حَمْلِ حَضْرَتْ اٰمِنَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ بِرَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَنَّ كُلَّ دَابَّةٍ كَانَتْ لِقُرَيْشٍ نَطَقَتْ تلْكَ اللَّيْلَةَ وَقَالَتْ حمل بِرَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَرَبِّ الْكَعْبَةِ وَهُوَ اِمَامُ اَهْلِ الدُنْيَا وَسِرَاجُ اَهْلِهَا وَلَـمْ يَبْقِ سَرِيْرُ مَلِكٍ مِّنْ مُلُوْكِ الْعَرَبِ وَالْعَجَمِ اِلَّا وَاَصْبَحَ مَنْكُوْسًا وَاَقْبَلَ اِبْلِيْسُ لَعَنَهُ اللهُ هَارِبًا عَلـٰى وَجْهِهٖ حَتٰى اَتٰى عَلـٰى جَبَلِ اَبِىْ قُبَيْسٍ وَصَاحَ صَيْحَةً وَّرَنَّ رَنَّةً فَاجْتَمَعَتْ اِلَيْهِ الشَّيَاطِيْنُ مِنْ كُـلِّ جَانِبٍ.
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা উনার থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণিত রয়েছে। নিশ্চয়ই তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক এনেছেন এই বিষয়ে একটি দলীল হচ্ছে, সম্মানিত কুরাঈশ গোত্র উনার সকল গৃহপালিত পশুগুলো সেই (লাইলাতুর রাগায়িব শরীফ উনার) সম্মানিত রাত্রি মুবারক-এ পরস্পরে কথা বলেছে। সুবহানাল্লাহ! তারা বলেছে, (আজ রাতে) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিতা হযরত আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক এনেছেন। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত কা’বা শরীফ উনার রব মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! তিনি দুনিয়াবাসী সকলের ইমাম এবং তাদের জন্য আলোকবর্তিকা বা হিদায়াতদানকারী। সুবহানাল্লাহ! আরব ও আজম তথা সারা পৃথিবীর সকল শাসকদের সিংহাসনগুলো উল্টে পড়েছিলো। সুবহানাল্লাহ! ইবলীস লা’নাতুল্লাহি আলাইহি (তার উপর মহান আল্লাহ পাক উনার লা‘নত সার্বক্ষণিক বর্ষিত হচ্ছে।) পলায়ন করে আবূ কুবাইস পাহাড়ে এসে আর্তচিৎকার ও কঠিন রোনাজারী করতেছিলো। এ আর্ত চিৎকার শুনে সর্বদিক থেকে সমস্ত শয়তানগুলো তার নিকট এসে একত্রিত হয়েছিলো।” (আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম)
‘শরফুল মুস্ত¡ফা শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে,
فَاَمَرَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ خَازِنَ الْجَنَّةِ بِاَنْ يَّفْتَحَ اَبْوَابَ الْجِنَانِ لِلنُّوْرِ الْمَكْنُوْنِ فَاسْتَقَرَّ عِنْدَ حَضْرَتْ اٰمِنَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ فَاَصْبَحَتْ يَوْمَئِذٍ اَصْنَامُ الدُّنْيَا كُلُّهَا مَنْكُوْسَةً وَاَصْبَحَ عَرْضُ اِبْلِيْسَ عَدُوِّ اللهِ مَنْكُوْسًا اَرْبَعِيْنَ يَوْمًا فَاَفْلَتَ اِبْلِيْسُ هَارِبًا اَسْوَدَ مُـحْتَرِقًا حَتّٰى اَتٰى جَبَلَ اَبِـىْ قُبَيْسٍ فَصَاحَ صَيْحَةً وَّرَنّ رَنّةً فَاجْتَمَعَ اِلَيْهِ الشَّيَاطِيْنُ مِنْ كُـلِّ نَاحِيَةٍ فَقَالُوْا يَا سَيِّدَ الْقَوْمِ مَا الَّذِيْ دَهَاكَ فَقَالَ اَبْلِيْسُ وَيْلَكُمْ اَهْلَكَتْنَا هذِهِ الْمَرْاَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ.
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত জান্নাত উনার রক্ষণাবেক্ষণকারী সম্মানিত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম উনাকে নির্দেশ মুবারক প্রদান করলেন, মহাসম্মানিত সুরক্ষিত নূর মুবারক তথা মহাসম্মানিত নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার সকল দরজা মুবারকগুলো উন্মুক্ত করে দেয়ার জন্য। অতঃপর মহাসম্মানিত নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কুদরতীভাবে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করলেন। ফলে সেই দিন পৃথিবীর সমস্ত মূর্তিগুলো উল্টে পড়েছিলো এবং মহান আল্লাহ পাক উনার দুশমন ইবলীসের আসন ৪০ দিন পর্যন্ত উল্টে পড়েছিলো। তখন ইবলীস দগ্ধীভূত অতি কুৎসিত কালো কদাকার রং ধারণ করে কঠিন লাঞ্ছিত অবস্থায় পলায়নকারীরূপে আবূ কুবাইস পাহাড়ে এসেছিলো। তারপর সে অত্যন্ত কঠিনভাবে চিৎকার ও রোনাজারী করছিলো। ফলে সর্বদিক থেকে সমস্ত শয়তান তার নিকট এসে জমা হয়ে বলেছিলো, হে (শয়তান) সম্প্রদায়ের নেতা! কোন্ জিনিস তোমাকে আঘাত করেছে, তোমাকে কষ্ট দিয়েছে? তখন ইবলীস বললো, তোদের জন্য আফসোস! এই মহাসম্মানিতা মহিলা আলাইহাস সালাম (সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনি আমাদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ! (শরফুল মুস্ত¡ফা শরীফ ১/৩৪৭)
সাইয়্যিদুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ মহাসম্মানিত নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাশরীফ মুবারক:
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
حضرت عبد الرزاق عن معمر عن ابن الـمنكدر عن حضرت جابر رضى الله تعالى عنه قال سألت رسول الله صلى الله عليه وسلم عن أول شىء خلقه الله تعالى؟ فقال هو نور نبيك يا جابر رضى الله تعالى عنه خلقه الله ثم خلق فيه كل خير وخلق بعده كل شيء، وحين خلقه اقامه قدامه من مقام القرب اثنى عشر ألف سنة ثم جعله أربعة أقسام فخلق العرش (من قسم) والكرسى من قسم وحملة العرش وخزنة الكرسى من قسم، وأقام القسم الرابع فى مقام الحب اثنى عشر ألف سنة، ثم جعله أربعة أقسام فخلق القلم من قسم، واللوح من قسم، والجنة من قسم، ثم أقام القسم الرابع في مقام الخوف اثنى عشر ألف سنة، ثم جعله أربعة أجزاء: فخلق الملائكة من جزء، والشمس من جزء، والقمر والكواكب من جزء، وأقام الجزء الرابع في مقام الرجاء اثنى عشر ألف سنة، ثم جعله أربعة أجزاء: فخلق العقل من جزء، والعلم (من جزء)، والحكمة والعصمة والتوفيق من جزء، وأقام الجزء الرابع في مقام الحياء اثنى عشر ألف سنة، ثم نظر اللهُ عز وجل إليه فترشح النور عرقا، فقطر منه مائة ألف واربعة (وعشرون ألفا، وأربعة الاف) قطرة من نور فخلق الله من كل قطرة روح نبي أو روح رسول، ثم تنفست أرواح الأنبياء فخلق الله من أنفاسهم الأولياء والسعداء والشهداء والمطيعين إلى يوم القيامة ؛ فالعرش والكرسى من نورى، والكروبيون من نورى والروحانيون والملائكة من نورى، والجنة وما فيها من النعيم من نوري، وملائكة السموات السبع من نورى، والشمس والقمر والكواكب من نورى والعقل والتوفيق من نورى، وأرواح الرسل والأنبياء من نورى، والشهداء والسعداء والصالحون من نتاج نورى، ثم خلق الله اثنى عشر الف حجاب فأقام الله نورى وهو الجزء الرابع في كل حجاب ألف سنة وهي مقامات العبودية، والسكينة والصبر والصدق واليقين، فغمس الله ذلك النور في كل حجاب ألف سنة، فلما اخرج الله النور من الحجب ركبه الله في الأرض فكان يضىء منها ما بين المشرق والمغرب كالسراج في الليل المظلم، ثم خلق الله حضرت آدم عليه السلام من الارض فركب فيه النور في جبينه ثم انتقل منه إلى حضرت شيث عليه السلام، وكان ينتقل من طاهر إلى طيب ومن طيب الى طاهر إلى أن اوصله الله صلب حضرت عبد الله بن عبد المطلب عليه السلام، ومنه إلى رحم امى حضرت امنة بنت وهب عليها السلام.
অর্থ: হযরত ‘আব্দুর রায্যাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত মা’মার রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে তিনি মুহম্মদ ইবনে মুনকাদির রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে, তিনি হযরত জাবির বিন আব্দুল্লাহ আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণনা করেন। হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি সর্বপ্রথম কোন জিনিস সৃষ্টি মুবারক করেছেন, সেই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলাম। তখন নূরে মুজসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, হে হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সর্বপ্রথম আপনার যিনি নবী-রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নূর মুবারক সৃষ্টি মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর উনার মধ্যে সমস্ত কল্যাণ ও ভালাই মুবারক সৃষ্টি করেছেন। উনার পরে মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছেন, সমস্ত মাখলূক্বাত সৃষ্টি মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! যখন মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নূর মুবারক সৃষ্টি করেন, তখন তিনি সেই সম্মানিত নূর মুবারক উনাকে উনার সম্মুখে মাক্বামে কুরব মুবারক তথা নৈকট্য মুবারক উনার স্তর মুবারক-এ ১২ হাজার বছর অবস্থান মুবারক করান। সুবহানাল্লাহ! তারপর উক্ত সম্মানিত নূর মুবারক উনাকে চার ভাগে ভাগ করেন। অতঃপর এক ভাগ দিয়ে ‘সম্মানিত আরশ মুবারক, অপর ভাগ দিয়ে সম্মানিত কুর্সী মুবারক এবং আরেক ভাগ দিয়ে সম্মানিত আরশ মুবারক বহনকারী এবং সম্মানিত কুর্সী মুবারক উনার গুপ্ত রহস্য মুবারক সৃষ্টি করেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত চতুর্থভাগ নূর মুবারক উনাকে মাক্বামে হুব্ব তথা সম্মানিত মুহব্বত মুবারক উনার মাক্বাম মুবারক-এ ১২ হাজার বছর অবস্থান মুবারক করান। সুবহানাল্লাহ! তারপর উক্ত সম্মানিত চতুর্থ ভাগ নূর মুবারক উনাকে চারভাগে ভাগ করেন। অতঃপর একভাগ দিয়ে সম্মানিত ক্বলম মুবারক, অপরভাগ দিয়ে সম্মনিত লাওহ মুবারক এবং তৃতীয় ভাগ দিয়ে সম্মানিত জান্নাত মুবারক সৃষ্টি মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত চতুর্থ ভাগ নূর মুবারক উনাকে সম্মানিত মাক্বামে খওফ মুবারক উনার মধ্যে ১২ হাজার বছর রাখেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর উনাকে চারভাগে ভাগ করেন। তারপর এক ভাগ দিয়ে সম্মানিত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে, অপরভাগ দিয়ে সূর্য এবং তৃতীয়ভাগ দিয়ে চাঁদ এবং তারকারাজি সৃষ্টি করেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর মহান আল্লাহ পাক তিনি আবার সম্মানিত চতুর্থ ভাগ নূর মুবারক উনাকে সম্মানিত মাক্বামে রযা’ তথা প্রত্যাশা উনার মাক্বাম মুবারক-এ ১২ হাজার বছর অবস্থান মুবারক করান। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর উক্ত সম্মানিত নূর মুবারক উনাকে চারভাগে ভাগ করেন। একভাগ দিয়ে সম্মানিত আক্বল মুবারক, অপরভাগ দিয়ে সম্মানিত ইলম মুবারক এবং আরেকভাগ দিয়ে সম্মানিত হিকমত মুবারক, সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক এবং সম্মানিত তাওফীক্ব মুবারক সৃষ্টি করেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর সম্মানিত চতুর্থভাগ নূর মুবারক উনাকে সম্মানিত মাক্বামে হায়া তথা সম্মানিত লজ্জাশীলতা উনার মাক্বাম মুবারক-এ ১২ হাজার বছর অবস্থান মুবারক করান। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি উক্ত সম্মানিত নূর মুবারক উনার প্রতি সম্মানিত বিশেষ দৃষ্টি মুবারক হাদিয়া মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত বিশেষ দৃষ্টি মুবারক উনার কারণে উক্ত সম্মানিত নূর মুবারক থেকে ফোঁটা ফোঁটা করে সম্মানিত নূর মুবারক বের হতে লাগলেন। সুবহানাল্লাহ! এইভাবে উক্ত সম্মানিত নূর মুবারক উনার থেকে এক লক্ষ চব্বিশ হাজার সম্মানিত নূর মুবারক উনার ফোঁটা বা বিন্দু মুবারক বের হলেন। সুবহানাল্লাহ!
অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি উক্ত প্রত্যেক সম্মানিত নূর মুবারক উনার ফোঁটা থেকে হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত রূহ মুবারক সৃষ্টি করেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত রূহ মুবারক শ্বাস মুবারক গ্রহণ করেন। তারপর মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের শ্বাস মুবারক থেকে ক্বিয়ামত পর্যন্ত যত হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম, সৌভাগ্যশীল, শহীদ এবং আনুগত্যশীল আসবেন উনাদের প্রত্যেকের সম্মানিত রূহ মুবারক সৃষ্টি করেন। সুবহানাল্লাহ! (নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,) সুতরাং সম্মানিত আরশ মুবারক এবং সম্মানিত কুরসী মুবারক আমার সম্মানিত নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি। সুবহানাল্লাহ! নৈকট্যপ্রাপ্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা আমার সম্মানিত নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি। সুবহানাল্লাহ! পবিত্র আত্মার অধিকারীগণ উনারা এবং হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা সকলে আমার সম্মানিত নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত জান্নাত এবং উনার মধ্যে অবস্থিত সমস্ত নিয়ামত মুবারক আমার সম্মানিত নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি। সুবহানাল্লাহ! সূর্য-চন্দ্র ও তারকারাজি আমার সম্মানিত নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত আক্বল বা বিবেক মুবারক এবং তাওফীক্ব বা সামর্থ্য মুবারক আমার সম্মানিত নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি। সুবহানাল্লাহ! হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত রূহ মুবারক আমার সম্মানিত নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি। সুবহানাল্লাহ! এবং সকল শহীদ, সৌভাগ্যশীল ও ছালিহীন তথা হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা আমার সম্মানিত নূর মুবারক উনারই ফসল মুবারক তথা উনারাও সম্মানিত নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি। সুবহানাল্লাহ!
তারপর মহান আল্লাহ পাক তিনি ১২ হাজার সম্মানিত হিজাব মুবারক সৃষ্টি করেন। অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি আমার সম্মানিত নূর মুবারক উনাকে- হিজাবে আযমত উনার চতুর্থ হিজাব মুবারক-এ কায়িম করেন, অতঃপর সম্মানিত নূর মুবারক উনাকে প্রত্যেক হিজাব মুবারক উনার মধ্যে ১ হাজার বছর করে রাখেন। সুবহানাল্লহ! আর তা হচ্ছে, সম্মানিত উবূদিয়্যাহ (বন্দেগী মুবারক), সাকীনা (প্রশান্তি মুবারক), ছবর (ধৈর্য মুবারক), ছিদক্ব (সততা মুবারক) এবং ইয়াক্বীন (দৃঢ় বিশ্বাস মুবারক) উনাদের মাক্বাম মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি সেই সম্মানিত নূর মুবারক উনাকে প্রত্যেক হিজাব তথা পর্দা মুবারক উনার মধ্যে এক হাজার বছর করে নিমজ্জিত মুবারক করে রাখলেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর মহান আল্লাহ পাক তিনি যখন সম্মানিত হিজাব তথা পর্দা মুবারক উনার ভিতর থেকে সেই সম্মানিত নূর মুবারক উনাকে বের করে পৃথিবীতে আরোহণ মুবারক করালেন, উক্ত সম্মানিত নূর মুবারক উনার আলো মুবারক-এ পৃথিবীর পূর্ব-পশ্চিম এবং উভয়ের মাঝে যা কিছু রয়েছে সমস্ত কিছু আলোকিত হয়ে গেলো যেমন অন্ধকার রাতে বাতি আলোকিত করে থাকে। সুবহানাল্লহ! তারপর মহান আল্লাহ পাক তিনি মাটি থেকে আবুল বাশার হযরত আদম ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে সৃষ্টি করেন। অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত আদম ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত কপাল মুবারক উনার মাঝে সেই সম্মানিত নূর মুবারক উনাকে রাখলেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর সেই সম্মানিত নূর মুবারক হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার থেকে হযরত শীস আলাইহিস সালাম উনার মাঝে স্থানান্তরিত হলো। সুবহানাল্লাহ! আর এই সম্মানিত স্থানান্তর মুবারক পূত-পবিত্র ও সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাদের থেকে সর্বোত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব মুবারক উনার মাঝে, সর্বোত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাদের থেকে পূত-পবিত্র ও সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাদের মাঝে চলতে থাকলো। সুবহানাল্লাহ! এইভাবে মহান আল্লাহ পাক তিনি এই সম্মানিত নূর মুবারক আমার সম্মানিত পিতা সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার মাঝে পৌঁছিয়ে দেন এবং উনার থেকে আমার সম্মানিতা মাতা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আমিনা বিনতে ওহাব আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত রেহেম মুবারক-এ স্থানান্তরিত করেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর মহান আল্লাহ পাক তিনি আমার সম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার মাধ্যমে আমাকে দুনিয়ার যমীনে প্রেরণ করেন তথা আমার সম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে ভূষিত করেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমতুল্লিল আলামীন এবং অতি উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব মুবারক তথা সমস্ত মাহবূব ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাদের ক্বায়িদ হিসেবে। সুবহানাল্লাহ! এই হচ্ছে আপনার নবী, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সৃষ্টি মুবারক উনার সূচনা বা উৎস- হে হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! সুবহানাল্লাহ! (মুছান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক্ব: হাদীছ শরীফ: ১৮, আল জুযউল মাফক্বূদ মিনাল জুযয়িল আউওয়াল মিনাল মুছান্নিছ লিহাফিযিল কাবীর আবী বকর আব্দুর রাজ্জাক্ব আছ ছন‘আনী ৬৩ পৃ. হাদীছ শরীফ নং ১৮)
সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, মালিকাতুল জান্নাহ, হাবীবাতুল্লাহ, সাইয়্যিদাতুছ ছাক্বালাইন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত লক্বব মুবারক
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
وَلِلّٰهِ الْاَسْـمَاءُ الْـحُسْنٰـى فَادْعُوْهُ بِـهَا.
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক উনার অনেক সুন্দর সুন্দর সম্মানিত নাম মুবারক তথা সম্মানিত লক্বব মুবারক রয়েছেন, তোমরা উনাকে সেই সম্মানিত নাম মুবারক তথা সম্মানিত লক্বব মুবারক দ্বারা উনাকে আহ্বান মুবারক করো।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা আ’রাফ শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৮০)
মহান আল্লাহ পাক তিনি যেমন অসীম, ঠিক তেমনিভাবে উনার সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের সংখ্যাও অসীম। সুবহানাল্লাহ! অনুরূপভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পরিপূর্ণ ক্বায়িম মাক্বাম হওয়ার কারণে উনার সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের সংখ্যাও অসংখ্য-অসীম। সুবহানাল্লাহ! এক কথায় তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন; এছাড়া সমস্ত সম্মানিত লক্বব মুবারক উনার অধিকারী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! ঠিক একইভাবে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম হওয়ার করণে উনার সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের সংখ্যাও অসংখ্য-অসীম। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া যত সম্মানিত লক্বব মুবারক রয়েছেন, সমস্ত সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ!
এখানে উনার কতিপয় সম্মানিত বরকতময় লক্বব মুবারক উল্লেখ করা হলো:
১. اُمُّ رَسُوْل ِاللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
২. اَهْلُ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ(আহলু বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আহলু বাইত শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
৩. مَالِكَةُ اَهْلِ بَيْتٍ شَرِيْفٍ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ (মালিকাতু আহলি বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম) মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মালিকা।
৪. سَيِّدَةُ النِّسَاءِ عَلـٰى الْعَالَمِيْنَ (সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন) সারা কায়িনাতে যত মহিলা রয়েছেন উনাদের প্রত্যেকের সাইয়্যিদাহ। সুবহানাল্লাহ!
৫. سَيِّدَةُ نِسَاءِ اَهْلِ الْجَنَّةِ (সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ) জান্নাতবাসী সমস্ত মহিলাগণ উনাদের সাইয়্যিদাহ। সুবহানাল্লাহ!
৬. اٰيَةُ اللهِ (আয়াতুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত নির্দশন মুবারক।
৭. اَلْبُشْرٰى (আল বুশরা)- সম্মানিত সুসংবাদ মুবারক।
৮. جَامِعةُ النِّعْمَةِ وَالنِّسْبَةِ (জামি‘য়াতুন নি’মাতি ওয়ান নিসবাহ)- সমস্ত নিয়ামত মুবারক ও নিবসত মুবারক উনাদের মালিকাহ।
৯. اَلْـحَافِظَةُ (আল হাফিযাহ)- সর্বোত্তম হিফাযতকারিণী, সর্বশ্রেষ্ঠ সংরক্ষণকারিণী, সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত মুবারক তথা মহাসম্মানিত নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ধারণকারিণী।
১০. اَلْـحَامِدَةُ (আল হামিদাহ)- সর্বোত্তম প্রশংসাকারিণী।
১১. حَبِيْبَةُ اللهِ (হাবীবাতুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীবাহ।
১২. اَلْـحَلِيْمَةُ (আল হালীমাহ)- পরম ধৈর্যশীলা, মহাসহনশীলা।
১৩. اَلْـحَكِيْمَةُ (আল হাকীমাহ)- মহাপ্রজ্ঞাবান, সমস্ত হিকমত মুবারক উনাদের মালিকাহ।
১৪. اَلْـخَالِصَةُ (আল খ¦ালিছাহ)- খালিছাহ, পূত-পবিত্রা।
১৫. اَلْـخَبِيْرَةُ (আল খ¦বীরাহ)- মহাবিচক্ষণা।
১৬. اَلْـخَلِيْلَةُ (আল খ¦লীলাহ)- আখাছ্ছুল খাছ মাহবূবাহ।
১৭. خَلِيْلَةُ الرَّحْـمٰنِ (খ¦লীলাতুর রহমান)- মহান আল্লাহ উনার আখাছ্ছুল খাছ মাহবূবাহ।
১৮. اَلذَّاكِرَةُ (আয যাকিরাহ)- সর্বোত্তম যিকিরকারিণী।
১৯. ذِكْرُ اللهِ (যিক্রুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত যিকির মুবারক। অর্থাৎ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই যিকরুল্লাহ। সুবহানাল্লাহ!
২০. ذَاتُ الْـخلق العظيم (যাতুল খুলুক্বিল আযীম)- সর্বোত্তম সুমহান চরিত্র মুবারক উনার অধিকারিণী।
২১. ذَاتُ السَّكِيْنَةِ (যাতুস সাকীনাহ)- সাকীনাহ, শান্তি, প্রশান্তি, ইতমিনান মুবারক উনাদের মালিকাহ।
২২. ذَاتُ الـصِّـرَاطِ الْمُسْتَقِيْمِ (যাতুছ ছিরাত্বিল মুস্তাক্বীম)- ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার মালিকাহ।
২৩. ذَاتُ الْعِزَّةِ (যাতুল ‘ইযযাহ)- সম্মানিত ইজ্জত মুবারক উনার মালিকাহ।
২৪. ذَاتُ الْفَضْلِ (যাতুল ফাদ্বল)- সম্মানিত ফযল মুবারক উনার মালিকাহ।
২৫. ذَاتُ الْكَرَامَةِ (যাতুল কারামাত)- মহাসম্মানিত মু’জিযা শরীফ উনার মালিকাহ।
২৬. ذَاتُ الْوَسِيْلَةِ (যাতুল ওয়াসীলাহ)- সম্মানিত ওসীলাহ মুবারক উনার মালিকাহ।
২৭. اَلرَّاضِيَةُ (আর রাদ্বিয়াহ)- আখাছ্ছুল খাছ সন্তুষ্টি মুবারক প্রাপ্তা।
২৮. اَلرَّاغِبَةُ (আর রাগিবাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার দিকে দায়িমীভাবে রুজু।
২৯. اَلرَّافِعَةُ (আর রাফি‘য়াহ)- সুউচ্চ মর্যাদা-মর্তবা মুবারক উনার অধিকারিণী এবং সুউচ্চ মর্যাদা-মর্তবা মুবারক দানকারিণী।
৩০. رَحْـمَةُ الْاُمَّةِ (রহমাতুল উম্মাহ)- সমস্ত উম্মতের জন্য সম্মানিত রহমত মুবারক।
৩১. لِّـلْـعَـالَـمِيْنَ ٌ رَحْـمَة (রহমাতুল্লিল ‘আলামীন)- সমস্ত আলমের জন্য সম্মানিত রহমত মুবারক।
৩২. اَلرَّشِيْدَةُ (আর রশীদাহ)- সৎপথপ্রাপ্তা, সৎপথ প্রদর্শনকারিণী, ন্যায়পরায়ণা।
৩৩. اَلرِّضْوَانُ (আর রিদ্বওয়ান)- চরম সন্তুষ্টি মুবারক উনার মালিকাহ।
৩৪. رِضْوَانُ اللهِ (রিদ্বওয়ানুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে চরম সন্তুষ্টি মুবারক প্রাপ্তা।
৩৫. اَلرَّفِيْقَةُ (আর রফীকহ)- রফীক্বাহ, হাবীবাহ।
৩৬. رَفِيْقَةُ اللهِ (রফীক্বুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার রফীক্বাহ, হাবীবাহ।
৩৭. رَفِيْعَةُ الدَّرَجَاتِ (রফী‘য়াতুদ দারাজাত)- সকল সুউচ্চ সুমহান মর্যাদা-মর্তাবা ও মাক্বামাত মুবারক উনাদের মালিকাহ।
৩৮. رُوْحُ الْقُدس (রূহুল কুদুস)- পবিত্র রূহ বা আত্মা মুবারক।
৩৯. اَلزَّاهِدَةُ (আয যাহিদাহ)- দুনিয়াবিরাগিণী, মহান আল্লাহ পাক উনার দিকে দায়িমীভাবে রুজু।
৪০. اَلـزَّكِـىَّةُ (আঝ ঝাকিয়্যাহ)- পূত-পবিত্রা, মহাবিচক্ষণা।
৪১. اَلسَّابِقَةُ بِالْـخَيْرَاتِ (আস সাবিক্বাতু বিল খইরাত)- খইর, কল্যাণ, ভালাই ইত্যাদি সর্ববিষয়ে অগ্রগামিণী।
৪২. اَلسَّاجِدَةُ (আস সাজিদাহ)- সর্বোত্তম সিজদাকারিণী।
৪৩. اَلسَّخِىَّةُ(আস সাখি¦য়্যাহ)- মহাদানশীলা।
৪৪. سَعِيْدَةُ (আস সাঈদাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ সুখী।
৪৫. اَلسَّلَامُ (আস সালাম)- সর্বশ্রেষ্ঠ শান্তিদাতা।
৪৬. اَلسَيِّدَةُ (আস সাইয়্যিদাহ)- সাইয়্যিদাহ।
৪৭. سَيِّدَةُ الثَّقَلَيْنِ (সাইয়্যিদাতুছ ছাক্বলাইন)- দুই প্রধান সৃষ্টিজীব- জিন ও ইনসানের সাইয়্যিদাহ।
৪৮. سَـيِّـدَةُ الْكَوْنَيْنِ (সাইয়্যিদাতুল কাওনাঈন)- দুই জগতের সাইয়্যিদাহ।
৪৯. اَلشَّافِعَةُ (আশ শাফি‘য়াহ)- সর্বোত্তম সুপারিশকারিণী, সর্বশ্রেষ্ঠ শাফায়াতকারিণী।
৫০. اَلشَّافِـيَةُ (আশ শাফিয়াহ)- শিফাদানকারিণী, আরোগ্যদানকারিণী, সমস্ত উম্মতের জন্য যাহিরী-বাতিনী আরোগ্যদানকারিণী।
৫১. اَلشَّاكِرَةُ (আশ শাকিরাহ)- যথার্থ পুরস্কারদানকারিণী, যথাযথ শুকরিয়া আদায়কারিণী।
৫২. اَلشَّاهِدَةُ (আশ শাহিদাহ)- উপস্থিত, হাযির-নাযির, সাক্ষ্যদানকারিণী।
৫৩. اَلشَّرِيْفَةُ (আশ শারীফাহ)- সর্বোচ্চ শরীফ, সর্বোচ্চ মর্যাদাবান, সর্বোচ্চ সম্ভ্রান্তশীলা।
৫৪. اَلصَّابِرَةُ (আছ ছাবিরহ)- চরম ধৈর্যশীলা।
৫৫. اَلصَّاحِبَةُ (আছ ছাহিবাহ)- মালিকাহ, অধিকারিণী।
৫৬. صَاحِبَةُ الشَّفَاعَةِ (ছাহিবাতুশ শাফা‘আহ)- সম্মানিত শাফায়াত মুবারক উনার মালিকাহ।
৫৭. صَاحِبَةُ الْفَضِيْلَةِ (ছাহিবাতুল ফাদ্বীলাহ)- সম্মানিত ফযীলত মুবারক উনার মালিকাহ।
৫৮. صَاحِبَةُ الْـخَيْرِ (ছাহিবাতুল খইর)- সমস্ত কল্যাণ মুবারক উনাদের মালিকাহ।
৫৯. صَاحِبَةُ الْكَوْثَرِ (ছাহিবাতুল কাওছার)- সম্মানিত কাওছার মুবারক উনার মালিকাহ, সম্মানিত খাইরে কাছীর মুবারক তথা সমস্ত সম্মানিত ভালাই বা কল্যাণ মুবারক উনাদের মালিকাহ।
৬০. صَاحِبَةُ الْحَوْضِ(ছাহিবাতুল হাউদ্ব)- সম্মানিত হাউযে কাওছার মুবারক উনার মালিকাহ।
৬১. صَاحِبَةُ الدَّرَجَةِ الْعَالِيَةِ الرَّفِيْعَةِ (ছাহিবাতুদ দারাজাতিল ‘আলিয়াতির রফী‘য়াহ) সুউচ্চ সুমহান সম্মানিত দারাজাত তথা সম্মান ও মাক্বামাত মুবারক উনার মালিকাহ।
৬২. صَاحِبَةُ السُّلْطَانِ (ছাহিবাতুস সুলত্বান)- যাহিরী-বাতিনী সর্বদিক থেকে সর্বোচ্চ কর্তৃত্ব মুবারক উনার মালিকাহ।
৬৩. اَلصِّدِّيْقَةُ (আছ ছিদ্দীক্বাহ)- চরম সত্যবাদী।
৬৪. اَلصَّالِحَةُ (আছ ছালিহাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ নেককার, সর্বোত্তম পরহেযগার, হক্কুল্লাহ ও হক্কুল ইবাদ যথাযথ আদায়কারিণী।
৬৫. اَلصِّرَاطُ الْمُسْتَقِيْمُ (আছ ছিরাতুল মুস্তাক্বীম)- ছিরাতুল মুস্তাক্বীম, সরল-সঠিক পথ।
৬৬. اَلطَّاهِرَةُ (আত্ব ত্বাহিরাহ)- পূত-পবিত্রা, পূত-পবিত্রতাদানকারিণী।
৬৭. اَلطَّبِيْبَةُ (আত ত্ববীবাহ)- যাহিরী-বাতিনী ও জিসমানী-রূহানী সর্ববিষয়ে সর্বশ্রেষ্ঠ শিফাদানকারিণী, আরোগ্যদানকারিণী।
৬৮. اَلظَّاهِرَةُ (আয যাহিরাহ)- অত্যন্ত সুস্পষ্ট, উজ্জ্বল, সুউচ্চ মর্যাদাবান, সর্বশ্রেষ্ঠ বিজয়িনী।
৬৯. اَلْعَابِدَةُ (আল ‘আবিদাহ)- একনিষ্ঠ ইবাদাতকারিণী, মহান আল্লাহ পাক উনার চরম অনুগতা ও আখাছ্ছুল খাছ মাহবূবা ব্যক্তিত্বা মুবারক।
৭০. اَلْعَادِلَةُ (আল ‘আদিলাহ)- চরম ন্যায়বিচারকারিণী, চরম ন্যায়পরায়ণা।
৭১. اَلْعَارِفَةُ (আল ‘আরিফাহ)- পরিচিত, অবহিত, জ্ঞাত। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার হাক্বীক্বী সম্মানিত পরিচয় মুবারক লাভকারিণী।
৭২. اَلْعَافِـيَةُ (আল ‘আফিয়াহ)- মাফকারিণী, ক্ষমাকারিণী।
৭৩. اَلْعَالِـمَةُ (আল ‘আলিমাহ)- আলিমাহ।
৭৪. اَلْعَلِيْمَةُ (আল ‘আলীমাহ)- সর্বজ্ঞাত, মহাজ্ঞানী।
৭৫. اَلْعَائِلَةُ (আল ‘আয়িলাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার পরিপূর্ণ মুহতাজ, মহান আল্লাহ পাক উনার দিকে দায়িমীভাবে রুজু।
৭৬. اَلْعِصْمَةُ (আল ‘ইছমাহ)- মহাপবিত্রা, পূত-পবিত্রা।
৭৭. عِصْمَةُ اللهِ تَعَالـٰى (‘ইছমাতুল্লাহি তা‘য়ালা) মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সর্বপ্রকার পাপ থেকে মুক্ত, মহাপবিত্রা, পূত-পবিত্রা।
৭৮. اَلْعَظِيْمَةُ (আল ‘আযীমাহ)- মহাসম্মানিতা, সুমহান মর্যাদা-মর্তবা মুবারক উনার অধিকারিণী।
৭৯. اَلْعَزِيْزَةُ (আল ‘আযীযাহ)- মাহবূবাহ, মহাসম্মানিতা, বেমেছাল মর্যাদা-মর্তবা ও প্রভাব-প্রতিপত্তি মুবারক উনার অধিকারিণী, মালিকাহ।
৮০. اَلْعَلِـيَّةُ (আল ‘আলিয়্যাহ)- সুউচ্চ, মহামর্যাদাবান, মহাসম্মানিতা।
৮১. اَلْغَالِبَةُ (আল গ¦ালিবাহ)- গালিবাহ, মহাবিজয়িনী, সর্বাধিক প্রাধান্য বিস্তারকারিণী।
৮২. اَلْغَنِيَّةُ (আল গ¦নিয়্যাহ)- মহাসম্পদশালিনী, মহাধনী, অমুখাপেক্ষী।
৮৩. اَلْفَاضِلَةُ (আল ফাদ্বিলাহ)- মহাসম্মানিতা, সুউচ্চ মর্যাদা-মর্তবা মুবারক উনার অধিকারিণী, সর্বশ্রেষ্ঠা, সর্বসেরা।
৮৪. اَلْفَائِقَةُ (আল ফায়িক্বাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠা, অনন্যা।
৮৫. اَلْفَارِقَةُ (আল ফারিক্বাহ)- হক্ব ও নাহক্বের মাঝে পার্থক্যকারিণী।
৮৬. فَخْرُ الْاَوْلِيَاءِ وَالْاَنْبِيَاءِ وَالْـمُرْسَلِيْنَ (ফখরুল আউলিয়া ওয়াল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন)- সমস্ত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের এবং সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রত্যেকের ফখর, গর্ব।
৮৭. اَلْفَصِيْحَةُ (আল ফাছীহাহ)- সুভাষিণী, বিশুদ্ধভাষিণী।
৮৮. اَلْقَاسِمَةُ (আল ক্বাসিমাহ)- বণ্টনকারিণী।
৮৯. اَلْقَاضِـيَةُ (আল ক্বাদ্বিয়াহ)Ñ ফায়সালাকারিণী।
৯০. اَلْقَائِدَةُ (আল ক্বায়িদাহ)- সাইয়্যিদাহ, মহানপরিচালিকা, হিদায়াত উনার পথে পরিচালনাকারিণী।
৯১. قَائِدَةُ الْـخَيْرِ (ক্বায়িদাতুল খইর)- কল্যাণের দিকে পরিচালনাকারিণী, যিনি সবাইকে কল্যাণের দিকে নিয়ে যান।
৯২. اَلْقَرِيْبَةُ (আল ক্বরীবাহ)- চিরনিকটবর্তী, অতি নিকটস্থ, অতি ঘনিষ্ঠ,
৯৩. اَلْقَوِيَّةُ (আল ক্বওইয়াহ)- সর্বশক্তিমান, মহাশক্তিধর।
৯৪. اَلْكَامِلَةُ (আল কামিলাহ)- পরিপূর্ণ, পরিপূর্ণতাদানকারিণী।
৯৫. اَلْكَرِيْـمَةُ (আল কারীমাহ)- মহাসম্মানিতা, মহামর্যাদাবান, মহাদানশীলা।
৯৬. اَلْمُؤْتَـمَنَةُ (আল মু’তামানাহ)- চির বিশ্বস্ত, সর্বশ্রেষ্ঠা আমানাতদার, আমানতের যথাযথ হিফাযতকারিণী।
৯৭. اَلْمَأْمُوْنَةُ (আল মা’মূনাহ)- নিরাপদ, চির বিশ্বস্ত।
৯৮. اَلْـمُؤْمِنَةُ (আল মু’মিনাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠা ঈমানদার, সর্বশ্রেষ্ঠা মু’মিনাহ।
৯৯. اَلْمَاجِدَةُ (আল মাজিদাহ)- গৌরবময়ী, মহামর্যাদাবান, মহান, গৌরবান্বিত।
১০০. اَلْمُبَاركَةُ (আল মুবারিকাহ)- বরকতদানকারিণী, কল্যাণদানকারিণী।
১০১. اَلْمُبَارَكَةُ (আল মুবারকাহ)- বরকতময়, কল্যাণময়।
১০২. اَلْـمُبَشِّرَةُ (আল মুবাশশিরাহ)- সুসংবাদদানকারিণী।
১০৩. اَلْمُبَلِّغَةُ (আল মুবাল্লিগহ)- সম্মানিত দ্বীন উনার প্রতি আহ্বানকারিণী।
১০৪. اَلْمُتَبَسِّمَةُ (আল মুতাবাসসিমাহ)- হাস্যোজ্জ্বল, যিনি মুচকি হাসি মুবারক দেন।
১০৫. اَلْمَتِيْنَةُ (আল মাতীনাহ)- মহাশক্তিমান, মহাশক্তিধর।
১০৬. اَلْـمُثَبِّتَةُ (আল মুছাব্বিতাহ)- দৃঢ়ভাবে স্থাপনকারিণী।
১০৭. اَلْمُجَاهِدَةُ (আল মুজাহিদাহ)- মুজাহিদাহ, জেহাদকারিণী।
১০৮. اَلْمُجِيْبَةُ (আল মুজীবাহ)- জবাবদানকারিণী, সাড়াদানকারিণী, কবুলকারিণী।
১০৯. اَلْمُجِيْرَةُ (আল মুজীরহ)- আশ্রয়দানকারিণী, সাহায্যকারিণী, রক্ষাকারিণী, উদ্ধারকারিণী।
১১০. اَلْمَجِيْدَةُ (আল মাজীদাহ)- মহামর্যাদাবান, মহীয়ান, গৌরবান্বিত, গৌরবময়ী।
১১১. اَلْمَحْفُوْظَةُ (আল মাহফূযাহ)- সংরক্ষিত।
১১২. اَلْمَحْمُوْدَةُ (আল মাহমূদাহ)- চরম প্রশংসিত।
১১৩. اَلْمُخْتَارَةُ (আল মুখ¦তারহ)- মনোনীত, সর্বশ্রেষ্ঠা।
১১৪. اَلْمُخْتَصَّةُ (আল মুখতাচ্ছাহ)- বিশেষ ব্যক্তিত্বা মুবারক, আখাছ্ছুল খাছ ব্যক্তিত্বা মুবারক।
১১৫. اَلْـمَخْصُوْصَةُ بِالعِزَّةِ (আল মাখ¦ছূছাতু বিল ‘ইজ্জাহ)- বিশেষ সম্মান-ইজ্জত মুবারক উনার অধিকারিণী, আখাছ্ছুল খাছ সম্মান-ইজ্জত, মর্যাদা-মর্তবা মুবারক উনাদের মালিকাহ।
১১৬. اَلْـمُخْلِصَةُ (আল মুখলিছাহ)- মুখলিছাহ, বিশ্বস্ত, আন্তরিক, মাহবূবাহ, একনিষ্ঠ, মহান আল্লাহ পাক উনার আখাছ্ছুল খাছ মাহবূবাহ।
১১৭. مَدِيْنَةُ الْعِلْمِ (মাদীনাতুল ‘ইলম)- সম্মানিত ইলম মুবারক উনার শহর, সমস্ত ইলম মুবারক উনাদের মালিকাহ।
১১৮. اَلْمُذَكِّرَةُ (আল মুযাক্কিরহ)- উপদেশ দানকারিণী, নছীহতকারিণী, তা’লীমদানকারিণী, শিক্ষা দানকারিণী।
১১৯. اَلْـمُرْشِدَةُ (আল মুরশিদাহ)- সৎ পথ প্রদর্শনকারিণী, হিদায়াতদানকারিণী।
১২০. اَلْـمُزَكِّيَةُ (আল মুযাক্কিয়াহ)- তাযকিয়াদানকারিণী, পবিত্রতাদানকারিণী।
১২১. اَلْـمُسْتَجِيْبَةُ (আল মুস্তাজীবাহ)- সাড়াদানকারিণী, জবাবদানকারিণী।
১২২. اَلْمُسْتَفِيْضَةُ (আল মুস্তাফীযাহ)- ফয়েযদানকারিণী।
১২৩. اَلْمُسْتَقِيْمَةُ (আল মুস্তাক্বীমাহ)- সরল, সঠিক।
১২৪. اَلْمَسْعُوْدَةُ (আল মাস‘ঊদাহ)- সৌভাগ্যশীলা, সর্বশ্রেষ্ঠা ভাগ্যবান।
১২৫. اَلْمَشْهُوْدَةُ (আল মাশহূদাহ)- উপস্থিত, হাযির-নাযির।
১২৬. اَلْـمُشَفَّعَةُ (আল মুশাফ্ফা‘আহ)- যেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক উনার সুপারিশ কবুল করা হয়।
১২৭. اَلْمُصْلِحَةُ (আল মুছলিহাহ)- ইছলাহদানকারিণী, সংশোধনকারিণী।
১২৮. اَلْمُصَدِّقَةُ (আল মুছদ্দিক্বাহ)- সত্যায়নকারিণী।
১২৯. اَلْـمُطَهَّرَةُ (আল মুত্বহ্হারহ)- পূত-পবিত্রা, পূত-পবিত্রতাদানকারিণী।
১৩০. اَلْـمُظَفَّرَةُ (আল মুয¦ফ্ফারহ)- চির সফল, চির বিজয়িনী, সর্বশ্রেষ্ঠ বিজয়িনী।
১৩১. اَلْمَعْرُوْفَةُ (আল মা’রূফাহ)- পরিচিত, প্রসিদ্ধ।
১৩২. اَلْمَعْصُوْمَةُ (আল মা’ছূমাহ)- নিষ্পাপ, মা’ছূমাহ।
১৩৩. اَلْـمُعَزَّزَةُ (আল মু‘আয্যাযাহ)- মহাসম্মানিতা, মহামর্যাদাবান।
১৩৪. اَلْمَعْشُوْقَةُ (আল মা’শূক্বাহ)- মা’শূক্বাহ, সকলের নিকট সর্বাধিক মাহবূবাহ।
১৩৫. اَلْمُعَظَّمَةُ (আল মু’য়ায্যামাহ)- মহাসম্মানিতা, মহামর্যাদাবান।
১৩৬. اَلْمُعَلِّمَةُ (আল মু‘য়াল্লিমাহ)- মু‘য়াল্লিমাহ, তা’লীমদানকারিণী।
১৩৭. اَلْمُعِيْنَةُ (আল মু‘ঈনাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ সাহায্যকারিণী।
১৩৮. اَلْـمُقَدِّسَةُ (আল মুক্বদ্দিসাহ)- উৎসর্গকারিণী, পবিত্রতাদানকারিণী।
১৩৯. اَلْـمُقَدَّسَةُ (আল মুক্বাদ্দাসাহ)- মহাপবিত্রা, উৎসর্গকৃত।
১৪০. مُقِيْمَةُ السُنَّةِ (মুক্বীমাতুস সুন্নাহ)- সম্মানিত সুন্নত মুবারক প্রতিষ্ঠাকারিণী, আবাদকারিণী।
১৪১. اَلْمُكَرَّمَةُ (আল মুর্কারমাহ)- মহাসম্মানিতা।
১৪২. اَلْمَالِكَةُ (আল মালিকাহ)- মালিকাহ, অধিকারিণী।
১৪৩. مَالِكَةُ الْـجَنَّةِ (মালিকাতুল জান্নাহ)- সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার মালিকাহ।
১৪৪. مَالِكَةُ الْكَائِنَاتِ (মালিকাতুল কায়িনাত)- সমস্ত কায়িনাতের মালিকাহ।
১৪৫. مَالِكَةُ جَامِعِ النِعَمِ(মালিকাতু জামিয়িন নি‘য়াম)- সমস্ত সম্মানিত নিয়ামত মুবারক উনাদের মালিকাহ।
১৪৬. اَلْـمُنْتَصِرَةُ (আল মুনতাছিরহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ বিজয়িনী, মহাশক্তিধর।
১৪৭. منّة الله (মিন্নাতুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পক উনার সর্বশ্রেষ্ঠ অনুগ্রহ মুবারক।
১৪৮. اَلْـمُنْذِرَةُ (আল মুনযিরহ)- ভীতিপ্রদর্শনকারিণী, সতর্ককারিণী।
১৪৯. اَلْـمُنِيْبَةُ (আল মুনীবাহ)- মালিকাহ, মুনীবাহ, সমস্ত কায়িনাত যেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক উনার গোলাম।
১৫০. اَلْـمُغِيْثَةُ (আল মুগীছাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ সাহায্যকারিণী, ত্রাণকর্তা, উদ্ধারকারিণী।
১৫১. اَلْـمُنِيْرَةُ (আল মুনীরহ)- আলোদানকারিণী, উজ্জ্বল, নূর দানকারিণী, হিদায়াত দানকারিণী, ফয়েযদানকারিণী, সম্মানিত রহমত মুবারক দানকারিণী।
১৫২. اَلْمَوْعِظَةُ (আল মাও‘িয়যাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ নছীহতকারিণী।
১৫৩. اَلْمُهَذَّبَةُ (আল মুহায্যাবাহ)- পূত-পবিত্রা, মহাপবিত্রা।
১৫৪. اَلنَّاصِحَةُ (আল নাছিহাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ নছীহতকারিণী, উপদেশদানকারিণী।
১৫৫. اَلنَّاصِرَةُ (আন নাছিরহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ সাহায্যকারিণী।
১৫৬. اَلنَّاهِـيَةُ (আন নাহিয়াহ)- (সম্মানিত শরী‘য়াত উনার খিলাফ সমস্ত কাজে) নিষেধকারিণী, বারণকারিণী।
১৫৭. اَلنِّعْمَةُ (আল নি’মাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত মুবারক।
১৫৮. نِعْمَةُ اللهِ (নি’মাতুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত মুবারক।
১৫৯. اَلنَّقِيْبَةُ (আন নাক্বীবাহ)- সাইয়্যিদাহ।
১৬০. اَلنُّوْرُ (আন নূর)- নূর মুবারক।
১৬১. اَلنُّوْرُ الْمُكَرَّمَةُ (আন নূরুল মুকাররমাহ)- সম্মানিত নূর মুবারক।
১৬২. اَلنُّوْرُ الْمُطَهَّرَةُ (আন নূরুল মুত্বহ্হারহ)- মহাপবিত্র সম্মানিত নূর মুবারক।
১৬৩. نُوْرُ اللهِ (নূরুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত নূর মুবারক।
১৬৪. نُوْرُ الْاُمَمِ (নূরুল উমাম)- সমস্ত উম্মতের জন্য নূর মুবারক, আলোকবর্তিকা, নূরুল উমাম।
১৬৫. نُوْرُ الْكَائِنَات (নূরুল কায়িনাত)- সমস্ত কায়িনাতের জন্য নূর মুবারক, আলোকবর্তিকা।
১৬৬. اَلْـهَادِيَةُ (আল হাদিয়াহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ হিদায়াতকারিণী।
১৬৭. هَدِيَّةُ اللهِ (হাদিয়্যাতুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে মহাসম্মানিত হাদিয়া মুবারক, তোহফা মুবারক।
১৬৮. اَلْوَاجِدَةُ (আল ওয়াজিদাহ)- যা চান তাই পান এমন সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক।
১৬৯. اَلْوَاسِعَةُ (আল ওয়াসি‘আহ)- সীমাহীন ইলম মুবারক উনার অধিকারিণী, মহাদানশীলা।
১৭০. اَلْوَاعِظَةُ (আল ওয়া‘য়িযহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ ওয়ায়েজ, নছীহতকারিণী, উপদেশদানকারিণী।
১৭১. اَلْوَافِـيَةُ (আল ওয়াফীয়াহ)- পরিপূর্ণ, পরিপূর্ণতাদানকারিণী।
১৭২. اَلْوَسِيْلَةُ (আল ওয়াসীলাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ ওয়াসীলাহ মুবারক, সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম।
১৭৩. اَلْوَهَّابَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ (আল ওহ্হাবাহ আলাইহাস সালাম)- সর্বশ্রেষ্ঠ দানশীল, সীমাহীন দানকারিণী। সুবহানাল্লাহ!
এছাড়াও অসংখ্য-অসীম সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের মালিকাহ হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
0 Comments:
Post a Comment