হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রবিউল আউয়াল শরীফ মাস উনার ১২ তারিখ ই দুনিয়ার জমিনে বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন, এটাই পবিত্র সহীহ হাদীস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত

Related imageহাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রবিউল আউয়াল শরীফ মাস উনার ১২ তারিখ ই দুনিয়ার জমিনে বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন, এটাই পবিত্র সহীহ হাদীস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত
=================================================
বিভিন্ন বাতিল ও গোমরাহ ফেরকার লোকেরা ১২ শরীফ পবিত্র সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ তথা ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরুধীতা করতে গিয়ে বলে থাকে, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনি নাকি ৯ রবিউল আউয়াল শরীফ তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। মূলত তাদের বক্তব্যই ভুল এবং বিদ্ধেষ প্রসূত।
কারণ নূরে মুজাসসাম,হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে মহাপবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন তা সর্বোচ্চ পর্যায়ের ছহীহ হাদীছ শরীফ উনার দ্বারাই প্রমাণিত।
মহাপবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ সম্পর্কে সম্মানিত ও পবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
اَخْرَجَ أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ فِىْ كِتَابِهٖ قَالَ حَدَّثَنَا عَفَّان عَنْ سَلِيمِ بْنِ حَيَّانَ عَنْ سَعِيدِ بْنِ مِينَا، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الْانْصَارِىِّ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ وَعَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ اَنَّهُمَا قَالَا وُلِدَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَامَ الْفِيْلِ يَوْمَ الِاثْنَيْنِ الثَّانِـىْ عَشَرَ مِنْ شَهْرِ رَبِيْعِ الْاَوَّلِ. هٰذَا حَدِيْثٌ صَحِيْحٌ عَلـٰى شَرْطِ الشَّيْخَيْنِ وَجَامِعِ اَئِمَّةِ الْـحَدِيْثِ.
অর্থ: “হযরত আবূ বকর ইবনে আবী শায়বাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি স্বীয় কিতাবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমাদের কাছে সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন ‘আফফান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, আর তিনি সালীম ইবনে হাইয়্যান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে, তিনি সা‘ঈদ ইবনে মীনা’ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে আর হযরত সা‘ঈদ ইবনে মীনা’ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার এবং হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের থেকে বর্ণনা করেন। উনারা দু’জন বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন,ইমামুল মুরসালীন,নূরে মুজাসসাম,হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমুল ফীল (হস্তীর বছর) মহাপবিত্র ১২ই রবী‘উল আউওয়াল শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (বুলূগুল আমানী মিন আসরারিল ফাত্হির রব্বানী ২০তম খ- ১৮৯ পৃ., আছ ছিহ্হাহ ওয়াল মাশাহীর ১ম খ- ২৬৭ পৃ.)
সমস্ত আইম্মাতুল হাদীছ তথা হাদীছ শরীফ উনার সমস্ত ইমাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের শর্ত অনুযায়ী ছহীহ। সুবহানাল্লাহ! যেমন উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফখানা মুত্তাছিল সনদ তথা অবিচ্ছিন্ন সূত্রে বর্ণিত, বর্ণনাকারীদের সকলেই ‘আদ্ল বা নির্ভরযোগ্য, ন্যায়-পরায়ণ, দ্বীনদার ও উন্নত শিষ্টাচারের অধিকারী।সকলেই প্রখর স্মৃতিশক্তির অধিকারী, অধিক নির্ভরযোগ্য কোন বর্ণনাকারী থেকে এর বিপরীত কোন বর্ণনা বিদ্যমান নেই সুতরাং উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফখানা شَاذّ( শায) নয়। সনদে বা মতনে প্রচ্ছন্ন কোনো ক্রটি বা عِلَّة বিদ্যমান নেই। উক্ত পবিত্র হাদীস শরীফখানা দুইজন বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার এবং হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের থেকে বর্ণিত, যিনারা হচ্ছেন মুকাছ্ছিরীন রাবী তথা সবার্ধিক সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনাকারী উনাদের অন্তর্ভুক্ত। উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার সমর্থনে মুরসাল হাদীছ শরীফ রয়েছে এবং উক্ত হাদীছ শরীফখানা উনার সমর্থনে উম্মতের মশহূর আক্বওয়াল (বর্ণনা) রয়েছে। যাঁরা রাবীর নির্ভরযোগ্যতা যাচাই-বাছাইয়ের ইলম রাখেন, উনাদের দৃষ্টিতে উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফখানার বর্ণানাকারী উনারা প্রত্যেকেই চরম বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য।
সুতরাং কোন প্রকার সন্দেহ-সংসয় ছাড়াই নিশ্চিতভাবে এ সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফখানা ছহীহ। সুবহানাল্লাহ!
এছাড়াও উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফখানা উনার সমর্থনে উম্মতের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব হযরত ইমাম ইবনে জাওযী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত ইমাম ইবনে জায্যার রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি , হযরত ইমাম ত্বীবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এবং হযরত ইমাম ইবনে বাযযার রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারা ইজমা’ বর্ণনা করেছেন। সুবহানাল্লাহ! (শরহুয যারক্বানী ১/২৪৮, মা ছাবাত বিসসুন্নাহ ২৩৯, সীরাতু খতামুল আম্বিয়া ১২)
উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফখানা দুইজন সর্বজনমান্য ও নির্ভরযোগ্য ইমাম উনারা উনাদের স্বীয় কিতাবে বর্ণনা করেছেন।
উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফখানা উনার সকল রাবীগণ থেকে ছিহাহ সিত্তার ইমামগণসহ আরো অন্যান্য সর্বজনমান্য ও নির্ভরযোগ্য ইমামগণ স্বীয় কিতাবে পবিত্র হাদীছ শরীফ লিপিবদ্ধ করেছেন। যিনাদের সনদে বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মুসনাদে আহমদ শরীফ, ইবনে হিব্বান শরীফ, আবূ না‘ঈম শরীফ, বাইহাক্বী শরীফ, মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ শরীফসহ বিভিন্ন কিতাবে ২৫টির ও অধিক পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণিত হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই যারা পবিত্র ১২ই শরীফ উনার পরিবর্তে অন্য কোনো তারীখকে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের তারিখ হিসেবে সাব্যস্ত করতে চায়, তারা কি আলোচ্য সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ন্যায় এরূপ বিশুদ্ধ কোনো সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ দেখাতে পারবে? কস্মিনকালেও পারবে না। যদি তাই হয়, তাহলে তাদের জন্য ফরযে আইন হচ্ছে- মহাসম্মানিত মহাপবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ উনাকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ তারীখ হিসেবে মেনে নেয়া। এরপরেও যারা মানবে না, সম্মানিত শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে তারা হচ্ছে লা-মাযহাবী, ওহাবী-সালাফী, মুনাফিক্ব-উলামায়ে সূ’ ও বাতিল ৭২ ফিরক্বার অন্তর্ভুক্ত। না‘ঊযুবিল্লাহ!