হাফেযে হাদীছ
হযরাতুল আল্লামা রূহুল আমীন রহমতুল্লাহি আলাইহি
মির্জ্জা
গোলাম আহমদ ছাহেব
প্রতিশ্রুত
মাহদী হইতে পারেন কিনা?
(পূর্ব
প্রকাশিতের পর)
মিশকাত, ৪৭০
পৃষ্ঠা:
عن عبد الله بن مسعود قال قال رسول الله صلى وسلم لا تذهب الدنيا حتى يهلك العرب رجل من اهل بيتى يواطى اسمه اسمى رواه الترمذى وابوداؤد.
“আবদুল্লাহ বেনে মাছউদ রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু বলিয়াছেন,
(হযরত) রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
বলিয়াছেন, যতক্ষণ
না আমার আহ্লে বাইত (খান্দান) হইতে এক ব্যক্তি আরবের অধিপতি (বাদশাহ্) হইবে ততক্ষণ
দুনিয়া ধ্বংসপ্রাপ্ত হইবে না। তাঁহার নাম আমার নামের তুল্য হইবে (মোহাম্মদ নামের
হইবে), তিরমিযি
ও আবু দাউদ এই হাদীছ রেওয়াএত করিয়াছেন।”
وفى رواية له قال لم يبق من الدنيا الا يوم لطول الله ذلك اليوم حتى يبعت الله فيه رجلا منى اومن اهل بيتى يواطئ اسمه اسمى واسم ايبه اسم ابى يملأ الارض قسطا وعدلا كما ملعت ظلما وجورا.
‘আবু দাউদের’ অন্য
রেওয়াএতে আছে, যদি
দুনিয়ার একটি দিবস ব্যতীত বাকি না থাকে, তবু মহান আল্লাহ পাক নিশ্চয়ই উক্ত
দিবস লম্বা করিয়া দিবেন,
এমন কি মহান আল্লাহ তাআ’লা উক্ত দিবসে আমার বংশ হইতে এক ব্যক্তিকে প্রেরণ করিবেন, উনার নাম ও
আমার নাম একই হইবে,
উনার পিতার নাম ও আমার পিতার নাম একই হইবে, সেই ব্যক্তি ন্যায় বিচারে দুনিয়া
পূর্ণ করিয়া দিবেন,
যেরূপ জুলুম ও অত্যাচারে উহা পরিপূর্ণ করা হইয়াছিল।
মিশকাত, ৪৭১
পৃষ্ঠা-
عن ابى اسحاق قال قال على ونظرالى ابنه الحسن قال ان ابني هذا سيد كما سماه رسول الله صلى الله عليه وسلم وسيخرج من صلبه رجل يسمى با سم نبيكم يشلهه فى الخلق ولايشبهه فى الخلق ثم ذ كر قصة يملأ الارض عد لا رواه ابو داؤد.
“আবু
ইছহাক বলিয়াছেন, হযরত
আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার পুত্র হাছানের দিকে দৃষ্টিপাত করিয়া
বলিয়াছিলেন, নিশ্চয়ই
আমার পুত্র ছৈয়দ যেরূপ রাছুলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাহাকে উক্ত
নামে অভিহিত করিয়াছেন,
অচিরে ইহার বংশ হইতে এক ব্যক্তি পয়দা হইবে তাহার নাম তোমাদের নবীর নামের তুল্য
হইবে, সে
ব্যক্তি চরিত্রে তাঁহার তুল্য হইবে, কিন্তু রূপে তুল্য হইবে না। তৎপরে
তিনি বলিলেন, সে
ব্যক্তি জমিকে ন্যায় বিচারে পূর্ণ করিবে। আবু দাউদ ইহা রেওয়াএত করিয়াছেন।
মোল্লা আলী ক্বারী ‘মিরকাত’ টীকায়
লিখিয়াছেন, কোন
রেওয়াএতে আছে, এমাম
মাহ্দী এমাম হাছানের বংশধর হইবেন। অন্য রেওয়াএতে আছে, তিনি এমাম
হোছাইনের বংশধর হইবেন,
তাঁহার পিতা এমাম হাছানের বংশধর ও তাঁহার মাতা এমাম হোছাইনের বংশধর হইবেন, এই হেতু
তাঁহাকে হাছানি ও হোছায়নি বলা হইয়াছে।”
(৪)
আরও ৪৭০ পৃষ্ঠা,
عن ام سلمة قالت سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول المهدى من عتر تى من اولاد فاطمة رواه ابو داؤد.
“(হজরত)
উম্মে ছাল্মা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলিয়াছেন, আমি
রাছুলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট শুনিয়াছি, তিনি
বলিতেছিলেন, মাহ্দী
আমার নিকট আত্মীয়গণের বংশধর- ফাতেমার বংশধর হইবেন। আবু দাউদ ইহা রেওয়াএত করিয়াছেন।”
(৫)
আরও উক্ত পৃষ্ঠা-
عن ابى سعيد المدرى قال قال رسول الله صلى الله عليه عليه وسلم والمهدى منى اجل الجبهة اقنى الانف يملا الارض قطا وعد لا كما مدمت ظلما وجورا يملك يسح سيبن رواه ابو داؤد...
“আবু
ছাইদ খুদরি রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
বলিয়াছেন, হযরত
রাছুলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলিয়াছেন, মাহ্দী
আমার বংশধর হইবেন, তাঁহার
ললাট উজ্জ্বল প্রশস্থ হইবে,
তাঁহার নাসিকার উপরি অংশ উচ্চ হইবে, সে ব্যক্তি পৃথিবীকে সুবিচার ও
ন্যায় বিচারে পূর্ণ করিবেন,
যেরূপ উহা অত্যাচারে ও জুলুম পূর্ণ করা হইয়াছিল, সে ব্যক্তি সাত বৎসর (পৃথিবীর)
অধিপতি হইবেন। আবু দাউদ ইহা রেওয়াএত করিয়াছেন।”
(৬)
কাঞ্জোল ওম্মাল, ১৯৫৬
পৃষ্ঠা-
وفى خده الايمن خال اسود.
“মাহ্দীর
ডাহিন চেহারাতে কাল তিলক হইবে।”
(৭) বোরহান কিতাবে আছে,
ان رسول الله صلى الله عليه وسلم وصف المهدى فذكر ثقلا فى لسانه.
“নিশ্চয়
রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মাহ্দীর লক্ষণ বর্ণনা উপলক্ষে
বলিয়াছিলেন, তিনি
তোৎলা হইবেন।
(৮) মেশকাত ৪৭১ পৃষ্ঠা,
عن ابن سعيد قال ذكر رسول الله صلى الله عليه وسلم بلاء يصيب هذه الا مة حتى لا يجد الرجل ملجأ اليه من الظلم فيبعث الله رجلا من عتر تى واهل بيتى فيملا به الارض قسطا وعد لا كما مد مت طلما وجورا يرضى عنه ساك السماء وساكن الارض لا تدع السماء من وطرها شيأ الا صبته مد رارا ولا تدع المساء من وطرها شيأالا صبته مد رارا ولا تد ع الارض من نبا تها شيأ الا اخر جته حتى يتمنى الا حياء الا موات يعيش فى ذلك سبح سنين اوثمان سنين اوتسع سيين.
“আবু ছাইদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
তিনি বলিয়াছেন, রাছুলুল্লাহ্
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এক বিপদের কথা উল্লেখ করিয়াছিলেন, যাহা এই
উম্মতের উপর পতিত হইবে। এমনকি লোক অত্যাচার হইতে (রক্ষা পাওয়ার জন্য) আশ্রয় গ্রহণ
করার উপযুক্ত কোন আশ্রয়স্থল পাইবেনা। তৎপরে আল্লাহ্ পাক আমার বংশধরগণের মধ্যে এক
ব্যক্তিকে প্রেরণ করিবেন,
ইহাতে তিনি পৃথিবীকে সুবিচারে পূর্ণ করিবেন, যেরূপ উহা অত্যাচার ও অনাচারে পূর্ণ
করা হইয়াছিল; আসমানের
অধিবাসিগণ এবং জমিনের অধিবাসিগণ তাঁহার উপর সন্তুষ্ট থাকিবেন। আসমান উহার
বৃষ্টিসমূহের কিছুই বাকি রাখিবে না, বরং উহা মুসলধারে বর্ষন করিবে। জমি
ইহার উদ্ভিদরাশি কিছুই বাকি রাখিবে না, বরং সমস্তই উৎপাদন করিবে, এমন কি
জীবিতরা মৃতদের (জীবিত থাকার) কামনা করিবে, তিনি এই অবস্থায় সাত কিম্বা আট
কিম্বা নয় বৎসর জীবন অতিবাহিত করিবেন।”
হাকেম এই হাদীছ শরীফটি ছহীহ ছনদে উল্লেখ করিয়াছেন। তিনি কয়
বৎসর খেলাফত কার্য সম্পাদন করিবেন, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার রাবি ইহাতে সন্দেহ করিয়াছেন, হযরত উম্মে ছালমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি সাত
বৎসরের কথা উল্লেখ করিয়াছেন।
0 Comments:
Post a Comment