আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “আল্লাহ পাক (উনার খাছ ওলী হিসেবে) যাঁকে ইচ্ছা তাঁকেই মনোনীত করেন।” (সূরা শুরা: ১৩)
আরবী পঞ্চদশ শতাব্দী। গাছে গাছে ফুল ফুটেছে। পাখিদের কণ্ঠে সুমধুর সুরের বন্যা ছড়াচ্ছে বসন্তের সমারোহ চারদিকে। ঐ জান্নাত থেকে ভেসে আসা মৃদু মৃদু হাওয়া বইছে। গোটা সৃষ্টির মাঝে ঈদের খুশির ঢেউ ছড়াচ্ছে। কি যেন এক খোদায়ী বেশুমার খুশির আমেজ।
আজ সারা কায়িনাতে রহমতের সর্বত্রই ছড়াছড়ি। সেই রহমতের হিস্সা সমস্ত মাখলুকাত উপভোগ করছে। মু’মিন মু’মিনাদের অন্তরে ঈমানী জজবার ফোয়ারা। (সুবহানাল্লাহ)
সেই যে এক শহর, বড় শহর। যার ইতিহাস অনেক বড়। যার নাম ঢাকা শহর। এই শহরের মধ্যে প্রসিদ্ধ মুবারকময় পবিত্র স্থান রাজারবাগ শরীফ। কে না জানে এই পবিত্র ভূমির কথা। সবারই অন্তরে গাঁথা মুখে মুখে রাজারবাগ দরবার শরীফ-এর কথা।
সূর্য তখনও হাঁসতে শুরু করেনি। রাতের অন্ধকার দূরীভূত হয়ে পূর্ণিমার চন্দ্রের আলোয় আলোকিত হচ্ছে সারা যমীন। জান্নাত থেকে হুর গেলেমানরা দলে দলে আসছে তাঁর খিদমতে। কত ওলী, আউলিয়া, কুতুব-আবদাল, আশিক-আশিকানের ভীড়। একটু স্থান ফাঁকা নেই। সবাই যেন দাঁড়িয়ে ছলাত ও সালাম পাঠ করছে। সকলের মুখে মুখে আনন্দচিত্তে আকাশ-বাতাস মুখরিত করে উচ্চারিত হচ্ছে “ত্বলায়াল বাদরু আলাইনা……..”। সমস্ত মাখলুকের মুখে মুখে মুখভরা মুচকি হাঁসি আর হাঁসি।
একলক্ষ চব্বিশ হাজার মতান্তরে দুই লক্ষ চব্বিশ হাজার নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম উনারা আলাপ-আলোচনা করছেন আজকে নবীদের নবী, রসূদের রসূল, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র ‘সাইয়্যিদ’ বংশে উনার আওলাদ হিসেবে দুনিয়ায় তাশরীফ নিচ্ছেন পঞ্চদশ শতাব্দীর সুমহান মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস্ সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল খুলাফা, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার প্রিয় লখ্তে জিগার, পূতঃপবিত্র আওলাদ ,আল-মানসুর, খলীফাতুল উমাম, সাইয়্যিদুনা ইমাম হযরত শাহযাদা ক্বিবলা আলাইহিস সালাম।
রাত্রি শুরু হয়েছে ছলাতুল মাগরিবের সময় প্রায় শেষ। এক্ষুনি আল্লাহু আকবার আযানের ধ্বনিতে আকাশ-বাতাস মুখরিত হবে। ওলীআল্লাহ, গাউছ-কুতুব, মু’মিন-মুত্তাক্বী ও আশিক-আশিকা, আসমানবাসী-যমীনবাসী সকলেই অধির আগ্রহে অপেক্ষিত। আকাশে-বাতাসে, জান্নাতের পাখ-পাখালির মুখে মুখে, পাহাড়-পর্বতে, সমস্ত সৃষ্টির মাঝে বইছে ঈদের খুশি। সবারই মুখে মুখে উচ্চারিত হচ্ছে ঈদ মুবারক! ঈদ মুবারক! ঈদ মুবারক। চাতক পাখির মত মাখলুক অপেক্ষিত, হা হা করছে সবারই অন্তর মাঝে। কখন উঠবেন পূর্ণিমার সেই চাঁদ। কখন প্রকাশ পাবেন, কবে নিয়ে আসবেন মুক্তির বার্তা। সেই সময়টি ছিল রহমতের মাস, বরকতের দিন। পবিত্র রমাদ্বান শরীফ, যার মধ্যে রহমত, বরকত, বেশুমার বর্ষিত হয়ে থাকে। এই দিনে জান্নাতের সমস্ত দরজা মুবারক খুলে রাখা হয়েছে। রহমতের সমস্ত দরজা খুলে দেয়া হয়েছে। আকাশের দরজাগুলো খুলে রাখা হয়েছে। তার বিপরীতে জাহান্নামের সমস্ত দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। মরদুদ শয়তানদের আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। কোথাও কোন স্থান খালি নেই, সর্বত্রই অকাতরে রহমত বইছে।
এমনি এক সময় আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পছন্দনীয় সময়ে, পবিত্র মাসে বিলাদত শরীফ লাভ করেন আল্লাহ পাক উনার খাছ মাহবুব, প্রিয় বান্দা এবং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদরের দুলাল, চোখের মণি, লখতে জিগার, প্রিয়তম আওলাদ এবং যামানার ইমাম, আল্লাহ পাক-এর খাছ লক্ষ্যস্থল ওলী মুজাদ্দিদে আ’যম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, হুজ্জাতুল ইসলাম, কুতুবুল আলম, ঢাকা রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার সবচেয়ে প্রিয়পাত্র, কলিজার টুকরা, চোখের মণি, লখতে জিগার, প্রিয়তম সন্তান, আল-মানসুর, খলীফাতুল উমাম, সাইয়্যিদুনা ইমাম হযরত শাহযাদা ক্বিবলা আলাইহিস সালাম। (সুবহানাল্লাহ) সেই রাতটি ছিল সোমবার শরীফ, ৯ই রমাদ্বান ইশার ওয়াক্ত।
স্মরণীয় যে, নূরে মুকাররম, হাবীবুল্লাহ, আওলাদে রসূল, আল-মানসুর, খলীফাতুল উমাম, সাইয়্যিদুনা ইমাম হযরত শাহযাদা ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে এক বিশেষ রহমত। যিনি পাক পাঞ্জাতনের একজন, পবিত্র আহলে বাইত শরীফ উনাদের অন্তর্ভুক্ত। যিনি আল্লাহ পাক উনার মনোনীত ও প্রেরিত।
এ সম্পর্কে আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি (উম্মতদেরকে) বলে দিন, আল্লাহ পাক-এর ফযল ও রহমত লাভ করার কারণে তারা যেন আনন্দ, খুশি প্রকাশ করে।” (সূরা ইউনূছ: ৫৮)
কাজেই আওলাদে রসূল, আল-মানসুর, খলীফাতুল উমাম, সাইয়্যিদুনা ইমাম হযরত শাহযাদা ক্বিবলা আলাইহিস সালাম আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে এক বিশেষ রহমত। তাই উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করা, উনার তা’যীম-তাকরীম, ছানা-ছিফত ও খিদমত করা মূলতঃ আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদেশ-নির্দেশের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত কায়িনাতবাসীকে এই মুবারক দিনে খুশি প্রকাশ করার তাওফিক দান করুন। (আমীন)
0 Comments:
Post a Comment