একবার পবিত্র হজ্জের সময় মক্কা শরীফ উনার মাঝে ভয়ানক খরা (অনাবৃষ্টি) দেখা দিলো। পানির অভাবে লোকজনের মধ্যে হাহাকার পড়ে গেল। বিদেশ হতে আগত পবিত্র হজ্জযাত্রীগণের সাথে সাথে খোদ মক্কাবাসীগণের মধ্যেও পানির এমন সঙ্কট দেখা দিল যে, লোকজন হয়রান-পেরেশান হয়ে চারিদিকে পানির তালাশে ছুটাছুটি করতে লাগলো। পবিত্র কা’বা শরীফ উনার মাঝে পর্যায়ক্রমে লোকেরা দোয়া-ইস্তিসকা করছেন, কিন্তু এক ফোটা বৃষ্টির চিহ্ন কোথাও দেখা গেল না।
বসরা হতে একদল দরবেশ পবিত্র হজ্জে আসলেন। লোকজন উনাদের নিকট গিয়ে দোয়ার জন্য আবেদন-নিবেদন করলেন। কিন্তু কিছুতেই কিছু হলো না। গরম উত্তরোত্তর বাড়তে লাগলো। শেষ পর্যন্ত নিরাশ জনতার দৃষ্টি অপূর্ব দেহসৌষ্ঠব বিশিষ্ট এক যুবকের উপর নিবদ্ধ হলো। তিনি নিবিষ্ট মনে তাওয়াফ করছেন। উনার চেহারা মুবারক হতে যেন অপূর্ব নূরের আভা ফুটে বাহির হচ্ছিল। সম্মানিত যুবক তিনি তাওয়াফ হতে অবসর হওয়ার পর লোকজন গিয়ে উনার চতুর্দিকে সমবেত হলেন। কিছু সংখ্যক লোক উনাকে চিনে ফেললেন।
বলতে লাগলেন, হে আওলাদে রসূল, ইমামুর রবি’ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম যাইনুল আবিদীন আলাইহিস সালাম! পবিত্র মক্কা শরীফ উনার মাঝে আজ লাখ লাখ লোক পিপাসায় কাতর হয়ে ছুটাছুটি করছে। আপনি দোয়া মুবারক করুন, মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন বৃষ্টি বর্ষণ করেন।
লোকজনের অস্থিরতা লক্ষ্য করে সুলত্বানুল আউলিয়া, ইমামুল মুহাক্বক্বিক্বীন, পেশওয়ায়ে দ্বীন, আওলাদে রসূল, ইমামুর রবি’ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম যাইনুল আবিদীন আলাইহিস সালাম পুনরায় পবিত্র কা’বা শরীফ উনার সন্নিকটে ফিরে গেলেন। দুই রাকাত নামায পড়ে সিজদারত অবস্থায় মহান আল্লাহ পাক উনার দরবারে পানির জন্য দোয়া মুবারক করতে লাগলেন।
দেখা গেল, আওলাদে রসূল, ইমামুর রবি’ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম যাইনুল আবিদীন আলাইহিস সালাম সিজদারত অবস্থাতেই আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে প্রবল বর্ষণ শুরু হলো।
এমন বর্ষণ হলো যে, পবিত্র কা’বা শরীফ উনার প্রাঙ্গণে রীতিমত পানির স্রোত প্রবাহিত হতে লাগল। পিপাসার্ত মক্কাবাসীগণ শান্ত হলো। হজ্জে আগত লাখ লাখ লোকের মধ্যেও সুলত্বানুল আউলিয়া, আওলাদে রসূল, ইমামুর রবি’ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম যাইনুল আবিদীন আলাইহিস সালাম উনার যথার্থ পরিচয় মুবারক আরো ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লো।
0 Comments:
Post a Comment