হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা একদিকে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছাহাবী। আরেকদিকে উনারা হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহাল তথা আহলে বাইত, উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সর্বোপরি উনারা হচ্ছেন হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র আহলিয়া বা আযওয়াজে মুত্বাহহারাত। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মু’মিনদের নিকট তাঁদের জানের চেয়ে প্রিয়। আর উনার পবিত্র আযওয়াজ বা আহলিয়া আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হলেন তাঁদের (মু’মিনগণের) মাতা।”
, যার কারণে অন্যান্য পরহেযগার-মুত্তাক্বী মহিলাগণের চেয়ে উনাদেরকে অসংখ্য-অগণিত নিয়ামত, মর্যাদা, মর্তবা, ফাযায়িল-ফযীলত প্রদান করা হয়েছে। যা স্বয়ং খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা প্রদান করেছেন।
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার কালাম পাক-এ ইরশাদ করেন, “হে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যারা আহলিয়া অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম! আপনারা অন্য নারীদের মতো নন।” (সূরা আহযাব : আয়াত শরীফ ৩২)
এ আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় বিশ্ববিখ্যাত ও সর্বজনমান্য তাফসীরের কিতাব “তাফসীরে মাযহারী”-এর ৭ম খন্ডের ৩৩৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে- “হে উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম! আপনারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সহধর্মিনী হওয়ার কারণেই মর্যাদা, মর্তবা, ফযীলতের দিক থেকে কোনো মহিলাই আপনাদের সমকক্ষ নয়। .... হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি (আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায়) বলেন, আপনাদের মর্যাদা, মর্তবা, ফাযায়িল, ফযীলত অন্যান্য সতী-সাধ্বী মহিলাগণ উনাদের মতো নয়। বরং আপনাদের সম্মান-মর্যাদা, ফাযায়িল-ফযীলত, অধিক পুণ্য ও প্রতিদান আমার নিকটে অধিক মর্যাদা সম্পন্ন, অনেক ঊর্ধ্বে। এ আয়াত শরীফ-এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, সমস্ত মহিলাগণ উনাদের উপরে আপনাদের অধিক মর্যাদা, মর্তবা, ফাযায়িল, ফযীলত রয়েছে।” (অনুরূপভাবে তাফসীরে খাযিন ৫ম খন্ডের ২৫৭ পৃষ্ঠা, তাফসীরে বাগবী ৫ম খন্ডের ২৫৭ পৃষ্ঠা, তাফসীরে মাদারিকুত তানযীল ৩য় খন্ডের ৪৬৫ পৃষ্ঠা এবং অন্যান্য সকল নির্ভরযোগ্য তাফসীর গ্রন্থে আলোচনা রয়েছে।)
থালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তিনি আরো বলেন- “হে আহলে বাইতগণ! খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি চান আপনাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং আপনাদেরকে পূর্ণরূপে পূত-পবিত্র রাখতে।” (সূরা আহযাব : আয়াত শরীফ ৩৩) এ আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় “তাফসীরে মাযহারী”-এর ৭ম খন্ডের ৩৩৯ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে- “হযরত ইকরামা ও মুক্বাতিল রহমতুল্লাহি আলাইহিমা উনারা বলেন, আয়াত শরীফ-এ ‘আহলে বাইত’ দ্বারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়া অর্থাৎ হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে উদ্দেশ্য করা হয়েছে।”
“তাফসীরে ইবনে কাছীর”-এর ৩য় খন্ডের ৭৬৯ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে, “এ আয়াত শরীফ এটাই প্রমাণ করে যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়া অর্থাৎ হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা আহলে বাইত উনাদের অন্তর্ভুক্ত।”
কাজেই, প্রত্যেক উম্মতের জন্য, প্রত্যেক মু’মিন-মুসলমানের জন্য হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা, উনাদের প্রতি সুধারণা পোষণ করা এবং উনাদেরকে অনুসরণ করা কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ-এর নির্দেশ তথা ফরযের অন্তর্ভুক্ত।
0 Comments:
Post a Comment