সুমহান পুত ও পবিত্র ১৯ শে রবিউছ ছানী শরীফ ( ক )



Image result for ফুলঈদ মুবারক! ঈদ মুবারক!! ঈদ মুবারক!!!
সুমহান পুত ও পবিত্র ১৯ শে  রবিউছ ছানী শরীফ
ঈদে বিলাদতে ,
ঈদে বিলাদতে হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম
উনার নুরুদ দরাজাত মুবারকে জানাই লক্ষ কোটি বেশুমার ছলাত ও সালাম ।

আজ সুমহান পবিত্র ও বরকতময় ১৯শে রবীউছ ছানী শরীফ-

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “(হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি জানিয়ে দিন, আমি তোমাদের নিকট কোনো বিনিময় চাচ্ছি না। আর চাওয়াটাও স্বাভাবিক নয়; তোমাদের পক্ষে দেয়াও কস্মিনকালে সম্ভব নয়। তবে তোমরা যদি ইহকাল ও পরকালে হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল করতে চাও; তাহলে তোমাদের জন্য ফরয হচ্ছে- আমার হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা, তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, উনাদের খিদমত মুবারক উনার আঞ্জাম দেয়া।”

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আমার হযরত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনারা হলেন তোমাদের জন্য হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার নৌকার মত। যে তাতে আরোহণ করবে, সে নাজাত পাবে। আর যে তা হতে পশ্চাতে থাকবে সে ধ্বংস হবে।”

আজ সুমহান পবিত্র ও বরকতময় ১৯শে রবীউছ ছানী শরীফ-
হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ দিবস।
যিনি আখাচ্ছুল খাছ হযরত আওলাদে রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত।
তাই উনার সুমহান পবিত্র বিলাদত শরীফ দিবসে খুশি প্রকাশ করা এবং উনার মুবারক খিদমতে যথাযথ আঞ্জাম দেয়া সকলের জন্যই রহমত, বরকত, নিয়ামত, সাকীনা ও নাজাত লাভ উনার কারণ।

যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস্ সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মনোনীত ও মাহবুব বান্দা-বান্দী উনাদের পবিত্র বিলাদত শরীফ ও পবিত্র বিছাল শরীফ উনাদের মাধ্যমে অনেক মাস, তারিখ ও বারকে মহাসম্মানিত করেন।

যেমন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ ও পবিত্র বিছাল শরীফ উনাদের মাধ্যমে পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস উনাকে, পবিত্র ১২ই শরীফ তারিখ উনাকে এবং পবিত্র ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম বা সোমবার শরীফ বার উনাকে মহাসম্মানিত করেছেন। সুবহানাল্লাহ! পবিত্র ১৭ই রমাদ্বান শরীফ উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম ও উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনাদের পবিত্র বিছাল শরীফ দিবস।

পবিত্র ২০শে জুমাদাল উখরা সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ দিবস। পবিত্র শা’বান মাস উনার ৫ তারিখ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ দিবস। ১৫ই শা’বান সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ দিবস। সুবহানাল্লাহ! আর সুমহান পবিত্র ১৯শে রবীউছ ছানী শরীফ হচ্ছে আওলাদে রসূল, নিবরাসাতুল উমাম, রাজারবাগ শরীফ উনার হযরত শাহযাদী ছানী ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ দিবস।

যে দিবসগুলো কুল-কায়িনাতের সকলের জন্যই মহান ঈদের বা খুশির দিন। সুবহানাল্লাহ! আর আজই হচ্ছে সেই সুমহান পবিত্র ১৯শে রবীউছ ছানী শরীফ।
সুমহান পবিত্র ১৯শে রবিউছ ছানী শরীফ অর্থাৎ আওলাদে রসূল, নিবরাসাতুল উমাম, রাজারবাগ শরীফ উনার হযরত শাহযাদী ছানী ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ উপলক্ষে তিনি উপরোক্ত ক্বওল শরীফ পেশ করেন।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি আখাছ্ছুল খাছ আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সম্মানিত পিতা এবং সম্মানিত মাতা উভয় দিক থেকেই তিনি আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাছ বংশধর। অর্থাৎ হযরত আওলাদে রসূল আলাইহিস সালাম।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হযরত আওলাদে রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ উনার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, হযরত আবূ যর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত, তিনি পবিত্র কা’বা শরীফ উনার দরজা মুবারক ধরে বলেছেন, আমি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি, সাবধান! আমার হযরত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনারা হলেন তোমাদের জন্য হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার নৌকার মতো। যে তাতে আরোহণ করবে, সে নাজাত পাবে। আর যে তা হতে পশ্চাতে থাকবে সে ধ্বংস হবে।”

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, এ সম্পর্কে ইমামুল আইম্মাহ, ইমামুল আ’যম, হাকীমুল হাদীছ হযরত ইমাম আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার জীবনী মুবারক উনার একটি ঘটনা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। একবার তিনি একস্থানে বসে স্বীয় ছাত্রদেরকে দর্স দিচ্ছিলেন। দর্স প্রদানরত অবস্থায় তিনি কিছুক্ষণ পর পরই দর্স বন্ধ করে দাঁড়িয়ে যাচ্ছিলেন। যখন দর্স শেষ হলো, তখন ছাত্ররা প্রশ্ন করলো, “হে হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি! বেয়াদবী ক্ষমা করবেন, আমরা লক্ষ্য করেছি যে, আপনি বারবার দর্স বন্ধ করে দাঁড়িয়ে যাচ্ছিলেন, এর পিছনে কি কারণ রয়েছে?” উত্তরে তিনি বললেন যে, “তোমরা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছো যে, আমাদের দর্সগাহের পাশেই কিছু ছোট ছেলেরা দৌড়াদৌড়ি করছিল। তন্মধ্যে অমুক ছেলেটি বারবার আমার নিকটবর্তী হলেই আমি দাঁড়িয়ে যেতাম।” ছাত্ররা জানতে চাইলো, সেই ছোট ছেলেটি আপনার নিকটবর্তী হলে কেন দাঁড়িয়ে যেতেন? তখন ইমামে আ’যম হযরত আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন যে, “দেখ, সেই ছেলে তিনি আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বংশধর। উনার সাথে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রক্ত মুবারক অর্থাৎ নূরুন নাজাত মুবারক উনার সম্পর্ক রয়েছে। সুবহানাল্লাহ!

 সেজন্য যখনই তিনি আমাদের দর্সগাহের নিকটবর্তী হয়েছেন তখনই আমি উনার সম্মানার্থে দাঁড়িয়েছি। কেননা আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে তা’যীম-তাকরীম ও সম্মান প্রদর্শন করা জুযয়ে ঈমান তথা মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নির্দেশ মুবারক।” সুবহানাল্লাহ!

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হযরত আওলাদে রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত, মর্যাদা-মর্তবা, শান-মান মুবারক সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে, হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, “আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেখেছি, তিনি বিদায় হজ্জে আরাফার দিন উনার ‘কাসওয়া’ নামক উষ্ট্রীর উপর সাওয়ার অবস্থায় খুৎবা মুবারক প্রদান করেছেন আমি শুনেছি, তিনি খুতবা মুবারকে বলেছেন, “হে লোক সকল! আমি তোমাদের মাঝে এমন দুটি মহান নিয়ামত মুবারক রেখে যাচ্ছি, তোমরা যদি তা শক্তভাবে ধরে রাখ। অর্থাৎ মুহব্বত খিদমত কর, তবে তোমরা কখনও গুমরাহ বা ধ্বংস হবে না; তা হলো মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র কিতাব ও আমার সম্মানিত ইতরত বা আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম বা আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনারা।” অনুরূপ আরো বহু পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণিত রয়েছে।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আওলাদে রসূল, নিবরাসাতুল উমাম, রাজারবাগ শরীফ উনার হযরত শাহযাদী ছানী ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের হাক্বীক্বী মিছদাক। উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের দ্বারা বুঝা যায়, আওলাদে রসূল, নিবরাসাতুল উমাম, রাজারবাগ শরীফ উনার হযরত শাহযাদী ছানী ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি উম্মতগণের জন্য সুমহান নিয়ামত, বরকত, সাকীনা এবং মাগফিরাত, নাজাত লাভের উসীলা। তাই পবিত্র ১৯শে রবীউছ ছানী শরীফ জিন-ইনসান সকলের জন্যই অত্যন্ত আনন্দের দিন তথা ঈদ বা খুশির দিন।

অতএব, সকলের দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে- আওলাদে রসূল, নিবরাসাতুল উমাম, রাজারবাগ শরীফ উনার হযরত শাহযাদী ছানী ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ দিবস অত্যন্ত জওক্ব-শওক্ব ও শান-শওক্বত উনার সাথে উদযাপন করা। পাশাপাশি উনাদের মুবারক ছোহবত ইখতিয়ার করা, উনাদেরকে মুহব্বত করা, অনুসরণ-অনুকরণ করা ও উনাদের যথাযথ খিদমত মুবারক উনার আঞ্জাম দেয়া। যা সকলের জন্যই রহমত, বরকত, নিয়ামত, সাকীনা ও নাজাত লাভের কারণ হবে।

সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত শাহযাদীয়ে ছানী আলাইহাস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী শরীফ বিষয়ে কিছু আলোচনা করা হলো:
লখতে জিগারে মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত শাহযাদীয়ে ছানী ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার আগমনের প্রেক্ষাপট এবং প্রয়োজনীয়তা :
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মহান আল্লাহ পাক তিনি (উনার খাছ ওলী হিসেবে) যাঁকে ইচ্ছা উনাকেই মনোনীত করেন।” (পবিত্র সূরা শুরা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩)
বলাবাহুল্য, আজ পৃথিবীতে সর্বোচ্চ ভয়ঙ্কর ফিতনা ‘নারী ঘটিত’ ফিতনা। সম্মানিত ইসলামিক আদর্শ উনার লেশমাত্র অবশিষ্ট নেই বর্তমান নারী সমাজে। চারদিকে বাতিলের জয়জয়কার আর নারী নিয়ে নোংরামী উল্লাস। নারী স্বাধীনতার আপ্ত শ্লোগানের আড়ালে নারীরা ভোগ্যপণ্যের নিম্নস্তরে পদার্পণ করেছে। আজ নারী সমাজ বাতিলের খপ্পরে পড়ে ভোগবাদী নেশায় বুদ হয়ে বহুরূপী দুনিয়ার কঠিন আগুনে ঝাঁপ দিয়েছে। তারা পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার সুমহান আদর্শকে ছেড়ে কথিত ‘স্বাধীনতা’ অর্জনের দিবাস্বপ্নে বিভোর হয়ে নষ্ট করে দিচ্ছে তাদের ইজ্জত-আবরুকে। ফলতঃ নিষিদ্ধপল্লীর মেয়ে আর ভদ্র পরিবারের মেয়ে পার্থক্য করা বড়ই কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। পবিত্র দ্বীন ইসলাম নারী জাতিকে যে সীমাহীন শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা দিয়েছে, তারা সেই মর্যাদাকে ধরে রাখতে পারছে না। বরং তারা সেখানে কুঠারাঘাত করছে নিজের অজান্তেই।
শুধু কি অমুসলিম নারীদের এই করুণ পরিণতি? না; খোদ মুসলিম নারীরাও পর্দাহীনতা, নগ্নতা, অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, নির্লজ্জতা, হারাম খেলাধুলা, গান-বাজনা, নাচ-অভিনয়, বিজ্ঞাপনী মডেল, অবৈধ ভালোবাসা, উল্কি আঁকা, নষ্টামী, বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতা থেকে শুরু করে বিবিধ শরীয়তবিরোধী কাজে নিজেকে নোংরামীর শেষস্তরে পৌঁছে দিয়েছে। পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালনে চরম হীনম্মন্যতা দেখিয়ে নিশ্চুপ থাকলেও দেহপ্রদর্শনীতে ক্ষুধার্ত বাঘের ন্যায় ঝাঁপিয়ে পড়ছে। পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শ মুবারক তাদের মাঝে খুঁজে পাওয়া দুঃসাধ্য ব্যাপার। আজকের নারীরা এভাবেই তাদের মান-সম্মান-ইজ্জত-আবর¬ুকে নাক ছিটকানী দিয়ে ছুঁড়ে ফেলে আইয়ামে জাহিলায়াতের ন্যায় আচরণ জারি রাখায় তারা ইহজগতে বর্ণনাতীত লাঞ্ছিত, পদদলিত হচ্ছে এবং হতেই থাকবে। আর তাই সমাজে ‘নারী’ মানেই ‘ভোগ্যপণ্য’ হিসেবে তাদের নোংরা পরিচিতির বিস্তার ঘটছে। লা’নতের অগ্নি ছেয়ে যাচ্ছে সর্বত্র। আর পরকালে জাহান্নামের ভয়ানক আযাব-গযবে পাকড়াও হওয়া ছাড়া বাঁচার উপায় থাকছে না কারো
মহাসম্মানিত আব্বাজান হলেন- মুজাদ্দিদে মাদারজাদ, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা কা’বা আলাইহিস সালাম
মহাসম্মানিতা আম্মাজান হলেন-সাইয়্যিদাতুন নিসা, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, ক্বায়িম-মাক্বামে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, ইমামতুছ ছিদ্দীক্বা, বাহরুল উলূম, ছিদ্দীক্বায়ে কুবরা, নূরে মদীনা, গুলে মুবীনা, উম্মুল খইর, রাহনুমায়ে দ্বীন, মাদারজাদ, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা কা’বা আলাইহাস সালাম তিনি।

মুজাদ্দিদে মাদারজাদ, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা কা’বা আলাইহিস সালাম এবং ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদে রসূল, উম্মুল উমাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা কা’বা আলাইহাস সালাম উনাদেরই বেমেছাল মর্যাদা ও মাক্বাম সম্পন্না নেক আওলাদ হলেন সাইয়্যিদাতুন নিসা, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, ক্বায়িম-মাক্বামে হযরত উম্মে কুলসুম আলাইহাস সালাম, ত্বহিরা, ত্বইয়্যিবা, মাহবূবা, ফক্বীহা, মাশুক্বাহ, সাইয়্যিদাহ, আফক্বাহু নিসায়িল উম্মাতী, আলামুন নিসায়ী, আহাব্বুন নাসি ইলা আহলে বাইতি, আফদ্বালু আলা সাইয়িরিম ছিদ্দীক্বাত, আওসাউ ইলমান, ছাহিবাতু কামালাতিত্ তাক্বওয়া, ছাহিবাতু আজরিন আ’যীম, লাছতুন্নাকা আহাদিম মিনান নিসায়ী, উলুল আলবাবি, ওয়ারিসাতুন নাবিইয়ী, আল আমিরু বিল মা’রূফ, আন নাহিউ আনিল মুনকার, আল খাইরু, আস সিতরুর রফীউ, হাবীবাতু মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম, লখতে জিগারে মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম, লখতে জিগারে হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম, মাহবুবায়ে ইলাহী, উম্মু আবীহা, উম্মুল ওয়ারা, ছাহিবাতুল হুসনা, বাহরুল উলূম, মিছদাক্বে কুরআন ওয়াল হাদীছ, ছাহিবাতুল ইলম ওয়াল হিকাম ওয়াল কাশফ ওয়াল কারামত, হাবীবাতুল্লাহ, হাবীবাতু রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদে রসূল, নিবরাসাতুল উমাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত শাহযাদী ছানী ক্বিবলা কা’বা আলাইহাস সালাম তিনি।
শাদী বা নিসবাতুল আযীম মুবারকঃ
শাদী বা নিসবাতুল আযীম মুবারক উনার লক্ষ্যে উনার জন্য যে পাত্র দরকার, সে পাত্র উনার কতটুকু শান-মান, মর্যাদা, বুযূর্গী, মাক্বামাত প্রয়োজন, তা আমাদের আক্বল-সমঝ, উপলব্ধি ও অনুভূতির সীমাহীন ঊর্ধ্বে। আর সে বুযূর্গ পাত্র তিনি হলেন- কুতুবুল আলম, কুতুবুল ইরশাদ, বাহরুল উলূম, বাবুল ইলম, মাহিউল বিদয়াত, ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদে রসূল, ছাহিবুল ইলম ওয়াল হিকাম ওয়াল কাশফ ওয়াল কারামত, ছাহিবুত তাক্বওয়া, ছাহিবুশ শুকুর, ছাহিবুল হিলম, হাদিউল উমাম হযরত শাহদামাদ ছানী আলাইহিস সালাম তিনি।
উনার মান-শান, সম্মান-ইযযত, ঐতিহ্য, বুযূর্গী, খুছুছিয়ত, মাক্বামাত উপলব্ধি ও বর্ণনার যোগ্যতা আমাদের নেই।  অবশেষে উনার শাদী বা নিসবাতুল আযীম মুবারক উনার দিন ধার্য হয়। ১৪৩৩ হিজরী সনের ২২ শাওওয়াল শরীফ শাদী বা নিসবাতুল আযীম মুবারক অনুষ্ঠিত হয়। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহূ তায়ালা উনার মুবারক নির্দেশে এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সদয় উপস্থিতে এ মুবারক শাদী অনুষ্ঠিত হয় জান্নাতে। ওই মুবারক অনুষ্ঠানের একই আদলে ঢাকা রাজারবাগ পাক দরবার শরীফস্থ সুন্নতী জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত মাহফিলে মুবারক তাশরীফ আনেন সকল নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম এবং সকল আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা। বিশেষতঃ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক উপস্থিতিতে শাদী বা নিসবাতুল আযীম মুবারক উনার মাহফিল কামিয়াবী ও মাক্ববুলিয়াতের চূড়ান্ত সোপানে উপনীত হন।

সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা কা’বা আলাইহিস সালাম তিনি খুতবা মুবারক পাঠ করেন এবং মক্ববুল দোয়া ও মুনাজাত করেন। সুবহানাল্লাহ!
মুবারক একখানা ঘটনা আলোচনা করলেই শাহ দামাদ ছানী আলাইহিস সালাম উনার শান-মান, বুযূর্গী ও মাক্বাম যে কতো উচ্চতায়, তা বুঝতে সহজ ও সম্ভব হবে। এ মুবারক ঘটনা উনার মুবারক শাদী অনুষ্ঠানের আনুমানিক ছয় মাস পূর্বের। মুজাদ্দিদে মাদারজাদ, পঞ্চদশ হিজরী শতকের মহান মুজাদ্দিদ, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার যবান মুবারক-এ আমরা শুনেছি।

তিনি বলেন : “আমি স্বপ্নে দেখলাম- রহমতুল্লিল আলামীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অতি সুন্দর একটি আসন মুবারক-এ বসে রয়েছেনউনার মুবারক পাশে ঘেরাও করা মনোরম জায়গায় কয়েকটি আসন মুবারক রয়েছে। তিনি আমাকে এবং আমার আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে ডেকে নিয়ে ওই আসন মুবারকগুলোয় বসালেন এবং বললেন : ‘চিহ্নিত এ আসন মুবারকগুলো আপনাদের জন্যই নির্ধারিত। আপনারা আমার আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত।’

আমাদের সঙ্গে শাফিউল উমাম হযরত শাহদামাদ আউওয়াল আলাইহিস সালাম তিনিও ছিলেন। আমাদের অদূরে বসে ছিলেন হাদিউল উমাম হযরত শাহদামাদ ছানী আলাইহিস সালাম তিনি। নূরে মুজাসসাম, মাশুকে মাওলা, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে লক্ষ্য করে বললেন : ‘হাদিউল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি আমার আওলাদ। তিনি আমার আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত।’ আমাকে লক্ষ্য করে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো বললেন, হে আমার প্রিয়তম আওলাদ! হে আমার কায়িম-মাক্বাম! হে আমার আখাছছুল খাছ নায়িব! হে আমার মনোনীত ও লক্ষ্যস্থল মুজাদ্দিদে আ’যম! আপনি আমার প্রিয় আওলাদ সাইয়্যিদুনা হাদীউল উমাম আলাইহিস সালাম উনাকে আপনাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে নিন। আপনারা সকলেই আমার আওলাদ এবং আপনারা সকলেই আমার আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত।” সুবহানাল্লাহ!

উপরোক্ত মুবারক ঘটনা অনুষ্ঠানের স্বল্প সময়ের ব্যবধানে ভিন্ন এক মুবারক স্বপ্ন দেখেন সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, ক্বায়িম-মাক্বামে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, উম্মুল উমাম, ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি। তিনি স্বপ্নে দেখেন, উত্তম পোশাকে পরিশোভিত হয়ে এবং একখানা কম্বল মুবারক গায়ে জড়িয়ে হযরত হাদিউল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি রাজারবাগ পাক দরবার শরীফস্থ মুবারক হুজরা শরীফ উনার দিকে অগ্রসর হচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ! মুবারক দুটি স্বপ্ন বিবরণে বুঝতে কষ্ট হয় না যে, ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদে রসূল, হযরত শাহদামাদ ছানী ক্বিবলা কা’বা আলাইহিস সালাম উনার মক্ববুলিয়াতের সোপান কতো সীমাহীন উচ্চতায়! আরো বুঝতে কষ্ট হওয়ার কথা নয় যে, তিনিই সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম এবং উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনাদের “দামাদ ছানী” হবেন। ওই দুটি স্বপ্ন মুবারকেই তার সুস্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে। সুবহানাল্লাহ! ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদে রসূল, হাদিউল উমাম হযরত শাহদামাদ ছানী ক্বিবলা কা’বা আলাইহিস সালাম উনার মুবারক চেহারায় মাদানী নূর।
অদৃশ্যশক্তি ও আশ্চর্য কারামত সমূহঃ
আকাঈদের কিতাবে আছে, ‘কারামাতুল আউলিয়ায়ে হাক্কুন।’অর্থাত ওলীআল্লাহ গণ উনাদের কারামত সত্য।মহান আল্লাহপাক তিনি উনার মতো ব্যক্তিত্বের শানে হাদীছে কুদসীতে ইরশাদকরেন- …………… অর্থ: নিশ্চয়ই হযরত আউলিয়ায়ে কিরামগণ উনারা আমার কুদরতী জুব্বা মুবারক-এ আবৃত।উনাদেরকে আমি ছাড়া আর কেউ চিনেনা।

(ক )আধ্যাতিক শক্তির প্রভাব উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ লগ্নে ,আমাদের অনেকের তা জানা আছে কম বেশি ! একটি কারামত যা উনার শান মুবারাকে প্রকাশ তার মধ্যে যে ঘটনাটি আমার পীরবোন এর ক্ষেত্রে বাস্তবে পরিণত হয়েছে সেটিই এখানে উল্লেখ করছি। ঘটনাটি হলো, আমাদের পীরবোন অবিবাহিতা থাকাকালে উম্মুল ওয়ারা হযরত শাহযাদী ছানী ক্বিবলা আলাইহাস সালাম এবং উনার পবিত্র আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের খাদিমা ছিলেন। খাদিমা হওয়ার সুবাদে উনাদের সাথে তিনি বিশেষ মাহফিল উনার উদ্দেশে জেলা কুড়িগ্রাম শহরে সফরে যান। সেখানে স্মৃতি হোটেলে সাইয়্যিদাতুন নিসা, হাবীবাতুল্লাহ হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা ওয়া কাবা আলাইহাস সালাম উনার হেদায়েতপূর্ণ নুরী তা’লীমী মুবারক উনার মজলিসের ব্যবস্থা করা হয়। সেই তা’লীম ও ছোহবত গ্রহণের জন্য অনেকের মতো আমাদের পীরবোন তিনিও গিয়েছিলেন। ছোহবত ও তা’লীম শেষে আমার পীরবোন উনার সাথে আমাদের আরেক পীরবোন কথা বলছিলেন। সেটা প্রত্যক্ষ করে উম্মুল ওয়ারা হযরত শাহযাদী ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি তখন খাদীমা পীরবোন উনাকে বলেছিলেন, “বেশি খাতির জমায়ে কথা বলিও না, আবার ভাইয়ের বৌ করিয়ে নিবে।” উনার এ কথা মুবারক তিনি অনেক পূর্বে বলেছিলেন। কিন্তু অনেক বছর পর সে কথা মুবারক বাস্তবে পরিণত হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি যে পিতার কারণে ছিদ্দীক্বা ছিলেন তা নয়। বরং তিনি নিজ বৈশিষ্ট্য গুণেই ‘ছিদ্দীক্বা’ লক্বব মুবারক-এ ভূষিত। উনার ছিদ্দীক্বা বা সত্যবাদিনী হওয়ার স্বপক্ষে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআনুল কারীম উনার পবিত্র আয়াত শরীফও নাযিল করেছেন।
সুবহানাল্লাহ! তদ্রপ উম্মুল ওয়ারা হযরত শাহযাদী ছানী ক্বিবলা ওয়া কাবা আলাইহাস সালাম তিনি যে ‘ছিদ্দীক্বা’ সে বিষয়ে আরেকটি ঘটনা আমরা জানি
সমস্ত ছানা-ছিফত এবং অবারিত প্রশংসার একচ্ছত্র অধিকারী খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি। আর অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম মুবারক বর্ষিত হোক সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি।  অসংখ্য-অগণিত ছলাত-সালাম মুবারক মহাপরাক্রমশালী, মহাপ্রতাপশালী খলিফা, আস সাফফাহ, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার প্রতি এবং উনার হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি।
সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
اِنَّـمَا يُرِيْدُ الله لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ اَهْلَ الْبَيْتِ وَيُـطَـهِّـرَكُمْ تَطْهِيْرًا.
অর্থ: “হে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম! নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি চান আপনাদের থেকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা দূর করে আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করতে। অর্থাৎ তিনি আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই সৃষ্টি মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৩)
এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
هُمْ اَهْلُ بَيْتٍ طَهَّرَهُمُ الله مِنَ السُّوْءِ وَاخْتَصَّهُمْ بِرَحْمَتِهٖ
অর্থ: “উনারা হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা ও পাপ থেকে পূত-পবিত্র রেখেছেন এবং উনার সম্মানিত রহমত মুবারক দ্বারা খাছ করে নিয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন,
فَاَنَا وَاَهْلُ بَيْتِىْ مُطَهَّرُوْنَ مِنَ الذُّنُوْبِ.
অর্থ: “আমি এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম আমরা সকলেই যুনূব তথা সমস্ত প্রকার ছগীরা-কবীরা এবং যাবতীয় অপছন্দনীয় কাজ থেকে পূত-পবিত্র।” সুবহানাল্লাহ! (দালায়িলুন নুবুওওয়াহ লিল বায়হাক্বী, শিফা ১/৩২৫, সীরাতে হালবিয়্যাহ ১/৪২, আল মা’রিফাতু ওয়াত তারীখ ১/৪৯৮, খছাইছুল কুবরা ১/৬৬, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১/২৩৫, তাফসীরে দুররে মানছূর লিস সুয়ূত্বী ৬/৬০৬, তাফসীরে ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩ ইত্যাদি)
সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
اَنَّ نَبِـىَّ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُوْلُ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ طَهَّرَهُمُ اللهُ مِنْ شَجَرَةِ النُّبُوَّةِ وَمَوْضِعِ الرِّسَالَـةِ وَمُـخْتَلِفِ الْمَلَائِكَةِ وَبَيْتِ الرَّحْمَةِ وَمَعْدِنِ الْعِلْمِ.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবসময় ইরশাদ মুবারক করতেন। আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস উনাদেরকে (আমাদেরকে) সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার বৃক্ষ, সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার স্থান, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক (ইত্যাদি সমস্ত কিছু) থেকে পবিত্র রেখেছেন, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে দুররে মানছূর লিস সুয়ূত্বী ৬/৬০৬, তাফসীরে ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩)
ইমামুল মুহাদ্দিছীন মিনাল আউওয়ালিন ইলাল আখিরীন, ছাহিবু ইলমিল আউওয়ালি ওয়াল ইলমিল আখিরি, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আলোচ্য সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে- اَهْلُ بَيْتٍ نَـحْنُ (আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম) বলেÑ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের নিজের অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! আর طَهَّرَهُمُ اللهُ -মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে পবিত্র করেছেন। সুবহানাল্লাহ! অর্থ হলো- মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা শুধু মাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুহতাজ ও উনার সম্মানার্থে উনারা সম্মানিত এবং উনাদের প্রতিই উনারা দায়েমীভাবে রুজু। ফলে উনার সমস্ত কিছু থেকেই বেনিয়াজ। কাজেই সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম উনার খনি মুবারক ইত্যাদি বরকতময় নিয়ামত মুবারক উনাদের প্রতি রুজু হওয়ার সুযোগ নেই। অর্থাৎ উনারা সমস্ত কিছু থেকে পবিত্র, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! উনাদের কারণেই সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, সমস্ত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা, সম্মানিত রহমত মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারকসহ সমস্ত কিছুই ফযীলতপ্রাপ্ত হয়েছেন, সম্মানিত হয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
اَللهُ الصَّمَدُ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি ছমাদ তথা  বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ইখলাছ শরীফ, সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২)
ইমামুল মুহাদ্দিছীন মিনাল আউওয়ালিন ইলাল আখিরীন, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি যেমন সমস্ত মাখলূকাত থেকে, সমস্ত কিছু থেকে ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)। সুবহানাল্লাহ! ঠিক তেমনিভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি, যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত সমস্ত মাখলূকাত থেকে, সমস্ত কিছু থেকে ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)। সুবহানাল্লাহ! আর ঠিক একইভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত কায়িনাত থেকে, সমস্ত কিছু থেকে ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)। সুবহানাল্লাহ! উনারা সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম উনার খনি মুবারক ইত্যাদি সমস্ত কিছু থেকে পবিত্র, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযুর্গী-সম্মান মুবারক এক কথায় উনারা শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন। এছাড়া যত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক রয়েছেন সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন উনারা। সুবহানাল্লাহ! উনারা একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মুহতাজ। এছাড়া কায়িনাতের অন্য কারো মুহতাজ নন; বরং কায়িনাতের সকলেই উনাদের মুহতাজ। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কত বেমেছাল, তা এখান থেকে স্পষ্ট হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ! আর সেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরই অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উনার সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার ঊর্ধ্বে। যা কস্মিনকালেও ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। সুবহানাল্লাহ! কাজেই উনার সাথে সৃষ্টি জগতের কারোই তুলনা করা যাবে না। সুবহানাল্লাহ! এই সম্পর্কে সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ لَّا يُقَاسُ بِنَا اَحَدٌ.
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমাদের সাথে অন্য কারো তুলনা করা যাবে না।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী ৪/২৮৩, জামি‘উল আহাদীছ ২২/২১৯, কানজুল ‘উম্মাল ১২/১০৪, জাম‘উল জাওয়ামি’ ১/২৪৯৫০, যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ ফী মানাক্বিবে যাওইল কুরবা লিমুহিব্বে ত্ববারী ১/১৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৭ ইত্যাদি)
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার সম্মানার্থে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বেমেছাল পবিত্রতা মুবারক উনার হিস্সা আমাদেরকে নছীব করুন। আমীন!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক সম্পর্কে জানা সকলের জন্য ফরয
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
قُلْ لَّا اَسْاَلُكُمْ عَلَيْهِ اَجْرًا اِلَّا الْمَوَدَّةَ فِى الْقُرْبـٰى وَمَنْ يَّقْتَرِفْ حَسَنَةً نَّزِدْ لَهٗ فِيْهَا حُسْنًا اِنَّ اللهَ غَفُوْرٌ شَكُوْرٌ.
অর্থ:“ (হে আমার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি সমস্ত বান্দাদেরকে, উম্মতদেরকে, তামাম কায়িনাতবাসীকে) বলে দিন যে, তোমাদের নিকট কোনো বিনিময় বা প্রতিদান চাচ্ছি না। আর চাওয়াটাও স্বাভাবিক নয়; তোমাদের পক্ষে দেয়াও কস্মিনকালে সম্ভব নয়। বরং তোমাদের জন্য এটা চিন্তা করাটাও কাট্টা কুফরী হবে। তবে তোমরা যদি ইহকাল ও পরকালে হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল করতে চাও, মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ উনাদের হাক্বীক্বী রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক লাভ করতে চাও, তাহলে তোমাদের জন্য ফরয হচ্ছে আমার নিকটাত্মীয় তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করা, তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা শূরা শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ: ২৩)
এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত কায়িনাতবাসীর জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করা ফরয সাব্যস্ত করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
এ জন্যই শাফেয়ী মাযহাব উনার ইমাম হযরত ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছেন,
يَا اَهْلَ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ حُبُّكُمْ ..
فَرْضٌ مّنَ اللهِ فِـى الْقُرْاٰنِ اَنْزَلَهٗ
يَكْفِيْكُمْ مّنْ عَظِيْمِ الْفَخْرِ اَنَّكُمْ ...
مّنْ لَّـمْ يُصَلّ عَلَيْكُمْ لَا صَلَاةَ لَهٗ
অর্থ: “হে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম! আপনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে ফরয, যা মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত ও পবিত্র কুরআন শরীফ উনার আয়াত শরীফ নাযিল করে সাব্যস্ত করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
আপনাদের মহাসম্মানিত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত মুবারক বুঝার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, যে ব্যক্তি আপনাদের উপর সম্মানিত ও পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করে না, তার নামায কবূল হয় না।” সুবহানাল্লাহ! (দেওয়ানে শাফেয়ী ১০৬ পৃ., মুখতাছরুত তোহফাহ ১/৭, ছব্বুল আযাব ১/৩১৯, আল ক্বওলুল বাদী’ ফী ছলাতি ‘আলা হাবীবিশ শাফী’ লিস সাখাওই ১/৯১)
হযরত ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো বলেছেন,
اِنْ كَانَ رَفْضًا حُبُّ اٰلِ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ...
فَلْيَشْهَدِ الثَّقَلَانِ اَنّـىْ رَافِضِـىٌّ    অর্থ: “যদি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করলে, রাফিযী হতে হয়, তাহলে জিন-ইনসান তারা সাক্ষী থাকুক যে, নিশ্চয়ই আমি রাফেযী।” সুবহানাল্লাহ! (দেওয়ানে শাফেয়ী ৮৯ পৃ., মুখতাছরুত তোহফাহ লিআব্দিল আযীয মুহাদ্দিছ দেহলভী ১/৮, ছব্বুল আযাব লিল আলূসী ১/৩২১)
তিনি আরো বলেছেন,
اَلْعِلْمُ وَالتَّوْحِيْدُ فِـىْ جَانِبٍ ..
وَّحُبُّ اَهْلِ الْبَيْتِ فِـىْ جَانِبٍ
অর্থ: “ইলম এবং তাওহীদ এক পাশে আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক এক পাশে।” সুবহানাল্লাহ! (মুখতাছরুত তোহফাহ লিআব্দিল আযীয মুহাদ্দিছ দেহলভী ১/৭, ছব্বুল আযাব লিল আলূসী ১/৩২০)
আর সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
وَاَحِبُّوْا اَهْلَ بَــيْـتِـىْ لِـحُبِّىْ.
অর্থ: “আর তোমরা আমার সম্মানিত মুহব্বত-মা’রিফাত মুবারক পেতে হলে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করো।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ)
সুতরাং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা ফরয। শুধু তাই নয়, উনাদেরকে মুহব্বত করা ফরয উনার উপর ফরয। কারণ উনাদের উপর সম্মানিত ও পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ না করলে, ফরয ইবাদাত ‘নামায’ কবূল হয় না। সুবহানাল্লাহ! তাহলে এখান থেকে স্পষ্ট হয়ে গেলো যে, উনাদেরকে সম্মানিত মুহব্বত মুবারক করার বিষয়টি সম্মানিত নামায, সম্মানিত রোযা, সম্মানিত হজ্জ, সম্মানিত যাকাত থেকে শুরু করে সমস্ত সম্মানিত ফরয ইবাদাত উনাদের উপরে। আর এই কারণেই উনাদেরকে মুহব্বত করা সম্মানিত ফরয উনার উপরও ফরয। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক হচ্ছেন সমস্ত সম্মানিত ফরয ইবাদাত কবূল হওয়ার পূর্ব শর্ত। সুবহানাল্লাহ!
এই সম্পর্কে সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ مَسْعُوْد الْاَنْصَارِىّ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ صَلّى صَلَاةً لَّـمْ يُصَلّ فِيْهَا عَلَىَّ وَلَا عَلـٰى اَهْلِ بَيْتِـىْ لَـمْ تُقْبَلْ مِنْهُ.
অর্থ: “হযরত আবূ মাস‘ঊদ আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি নামায পড়লো, কিন্তু নামাযে আমার এবং  আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি সম্মানিত ও পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করলো না, তার নামায কবূল হবে না।” (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৯, সুনানুদ দারাকুত্বনী ২/১৭১, শরহু সুনানি আবী দাঊদ লিল ‘আইনী ৪/২৬৬, আল বাদরুল মুনীর ৪/১৫, নাছবুর রাইয়াহ লিল যাইলা‘ঈ ১/৪২৭, আদ দিরায়াহ ১/১৫৮, আল ‘ইলাল লিদ দারাকুত্বনী ৬/১৯৭, আন নাজমুল ওহহাজ ২/১৬৪ ইত্যাদি )
সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَوْ اَنَّ رَجُلًا صَفَّ بَيْنَ الرُّكْنِ وَالْـمَقَامِ فَصَلّى وَصَامَ ثُـمَّ لَقِىَ اللهَ وَهُوَ مُبْغِضٌ لِّاَهْلِ بَيْتِ سيدنا نبينا حبيبنا شفيعنا مولانا مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَخَلَ النَّارَ.
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, কোনো ব্যক্তি যদি সম্মানিত রুকন ইয়ামেন এবং মাক্বামে ইবরাহীম শরীফ উনাদের মধ্যবর্তী স্থানে সারিবদ্ধ হয়ে থাকে। অতঃপর সম্মানিত নামায পড়ে এবং সম্মানিত রোযা রাখে। কিন্তু এই অবস্থায় তার মৃত্যু হয় যে, সে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে। তাহলে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (যাখাইরুল ‘উক্ববাহ লিমুহিব্বে ত্ববারী ১/১৮, ¦ছায়িছুল কুবরা ২/৪৬৫)
আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করতে হলে অবশ্যই উনাদের সম্পর্কে জানতে হবে, উনাদের বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক জানতে হবে, অন্যথায় উনাদেরকে মুহব্বত করা আদৌ সম্ভব নয়। আর উছূল হচ্ছে,
مَا لَا يَتِمُّ بِهِ الْفَرْضُ فَهُوَ الْفَرْضُ
অর্থ: “যা ব্যতীত ফরয পূর্ণ হয় না, সেটাও ফরয।”
অতএব, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বেমেছাল ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক সম্পর্কে জানা সমস্ত  জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন। সুবহানাল্লাহ! আর সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা, হাবীবাতুল্লাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে বিশেষ ব্যক্তিত্বা মুবারক। সুবহানাল্লাহ! কাজেই উনার বেমেছাল ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক সম্পর্কে জানাও সমস্ত  জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক হাক্বীক্বীভাবে জানার, উপলব্ধি করার তাওফীক দান করুন। আমীন!








0 Comments: