ঈদ মুবারক ! ঈদ
মুবারক !! ঈদমুবারক !!!
সুমহান পুত ও
পবিত্র বরকতময় ১৮ ই রবিউছ ছানী শরীফ
“ সাইয়্যিদাতুনা হযরত
আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নুরাইন আলাইহিস
সালাম উনাদের নিসবতে আযীম শরীফ মুবারক দিবস ”
উনাদের নুরুদ
দরাজাত মুবারকে জানাই লক্ষ কোটি বেশুমার ছলাত ও সালাম ।
এক নজরে আফদ্বলুন নিসা ওয়ান নাস বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত
রুক্বইয়্যাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত পরিচিতি মুবারক
আফদ্বলুন
নিসা ওয়ান নাস বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সবচেয়ে বড় পরিচয় মুবারক হচ্ছেন, তিনি হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত লখতে জিগার মুবারক, মহাসম্মানিতা বানাত (মেয়ে) আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
মহাসম্মানিতা হযরত বানাত (মেয়ে) আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে তিনি হচ্ছেন ‘আছ
ছানিয়াহ তথা দ্বিতীয়া।’ সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি না এবং নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি না; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনার
সম্মানিত মুহব্বত মুবারকই হচ্ছেন সম্মানিত ঈমান। সুবহানাল্লাহ! নিম্নে এক নজরে
উনার সম্মানিত পরিচিতি মুবারক তুলে ধরা হলো-
সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক: সাইয়্যিদাতুনা হযরত রুক্বইয়্যাহ আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক: উম্মু
আব্দিল্লাহ আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত লক্বব মুবারক: বিনতু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, বিদ্ব‘আতুম মির রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আফদ্বলুন নিসা ওয়ান নাস বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতুন
নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু
নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, আন নূরুছ
ছানিয়াহ, উম্মু আবীহা, যাতুল হিজরতাইন এছাড়াও আরো অসংখ্য অগণিত। সুবহানাল্লাহ!
যেই সম্মানিত লক্বব মুবারক-এ সম্মানিত পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেছেন: সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম।
সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত আব্বাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম: সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম: উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা
হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার অনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াতী ও রিসালতী শান মুবারক
প্রকাশের প্রায় ৭ বছর পূর্বে ৩রা রবী‘উছ ছানী শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার সম্মানিত
স্থান মুবারক: সম্মানিত মক্কা শরীফ।
সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত অবস্থান মুবারক: সম্মানিত মক্কা
শরীফ (প্রায় ১৩ বছর), সম্মানিত
ও পবিত্র মদীনা শরীফ (প্রায় ১ বছর কয়েক মাস) এবং হাবশা (প্রায় ৭ বছর)।
সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ভাই-বোন আলাইহিমুস সালাম ও আলাইহিন্নাস সালাম: মহাসম্মানিত চার ভাই আলাইহিমুস সালাম এবং মহাসম্মানিতা চার
বোন আলাইহিন্নাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত বোন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে উনার সম্মানিত অবস্থান
মুবারক: ছানিয়াহ তথা দ্বিতীয়া।
সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ভাই-বোন আলাইহিমুস সালাম ও আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে উনার
সম্মানিত অবস্থান মুবারক: পঞ্চম।
সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ: নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত
নুবুওওয়াতী ও রিসালতী শান মুবারক প্রকাশ পাওয়ার সাথে সাথে। সুবহানাল্লাহ! তখন
দুনিয়াবী দৃষ্টিতে বা হিসেবে উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৭ বছর। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত যাওজুম মুকাররম আলাইহিস সালাম: আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সাথে নিসবতে আযীম শরীফ সম্পন্ন হওয়ার সময় উনার
সম্মানিত বয়স মুবারক: ১০ বছর।
সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম: সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যিন নূরাইন আলাইহিস সালাম (হযরত আব্দুল্লাহ
আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত হিজরত মুবারক: দুইবার।
প্রথমবার হাবশায় এবং দ্বিতীয়বার সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ। সুবহানাল্লাহ! তাই
উনার একখানা বিশেষ লক্বব মুবারক হচ্ছেন যাতুল হিজরতাইন তথা সম্মানিত দুই হিজরত
মুবারক উনাদের মালিকাহ। সুবহানাল্লাহ!
হাবশায় হিজরত মুবারক করার সময় উনার সম্মানিত বয়স মুবারক: ১১ বছর প্রায় সাড়ে ৩ মাস । সুবহানাল্লাহ!
হাবশায় সম্মানিত অবস্থান মুবারক: প্রায় ৭ বছর। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ: ২য় হিজরী সনের ১৮ই রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুস সাবত শরীফ শেষ
রাত্রে। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার সম্মানিত স্থান
মুবারক: সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ।
সুবহানাল্লাহ!
দুনিয়ার সম্মানিত যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক: ২১ বছর ৫ মাস ১৫ দিন। সুবহানাল্লাহ!
মহামহাসম্মানিত রওযা শরীফ: জান্নাতুল
বাক্বী’ শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, বিনতু রসূলিল্লাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার
সম্মানিত জীবনী মুবারক
সংক্ষিপ্ত পরিচিতি মুবারক:
বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সবচেয়ে বড় পরিচয় মুবারক, তিনি হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত লখতে জিগার মুবারক, মহাসম্মানিতা বানাত (মেয়ে) আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
মহাসম্মানিতা হযরত বানাত (মেয়ে) আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে তিনি হচ্ছেন
‘ছানিয়াহ তথা দ্বিতীয়া।’ সুবহানাল্লাহ! আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আবনা আলাইহিমুস সালাম এবং
মহাসম্মানিতা হযরত বানাত আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে তিনি হচ্ছেন পঞ্চম।
সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম হচ্ছেন উম্মুল মু’মিনীন
আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু
মহান আল্লাহ পাক তিনি না এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি না; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি।
সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারকই হচ্ছেন সম্মানিত ঈমান। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ:
বিদ্ব‘আতুম মির রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত
নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারক প্রকাশ পাওয়ার প্রায় ৭ বছর পূর্বে ৩রা রবী‘উছ ছানী
শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ সকালে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী
শান মুবারক প্রকাশ করে সমস্ত কায়িনাতবাসীকে ধন্য করেন। সুবহানাল্লাহ! দুনিয়াবী
দৃষ্টিতে বা হিসেবে তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৩৩ বছর। আর উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা
সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৪৮ বছর।
সুবহানাল্লাহ!
এই সম্পর্কে কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে,
وُلِدَتْ
سَيِّدَتُنَا
حَضْرَتْ
رُقَيَّةُ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
بِنْتُ
رَسُوْلِ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
سَنَةَ
ثَلَاثٍ
وَّثَلَاثِيْنَ
مِنْ مَّوْلِدِ
النَّبِىِّ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ. অর্থ: “দুনিয়াবী দৃষ্টিতে বা হিসেবে যখন নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক
৩৩ বছর, তখন বিনতু রসূলিল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস
সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন।”
সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরকে হাকিম)
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও
মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশে স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি, হযরত উম্মুল
মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস
সালাম উনারা, হযরত নবী-রসূল
আলাইহিমুস সালাম উনারা, হযরত
ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা এবং সমস্ত কায়িনাত সকলেই সম্মানিত খুশি মুবারক
প্রকাশ করেছেন, সম্মানিত
‘ফালইয়াফরহূ শরীফ’ তথা মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
يٰاَيُّهَا
النَّاسُ
قَدْ جَاءَتْكُمْ
مَّوْعِظَةٌ
مّـِنْ
رَّبّـِكُـمْ
وَشِفَاءٌ
لِّـمَا
فِى الصُّدُوْرِ
وَهُدًى
وَّرَحْمَةٌ
لّـِلْمُؤْمِنِيْنَ.
قُلْ بِفَضْلِ
اللهِ
وَبِرَحْمَتِهٖ
فَبِذٰلِكَ
فَلْيَفْرَحُوْا
هُوَ خَيْرٌ
مِّـمَّا
يَـجْمَعُوْنَ.
অর্থ: “হে মানুষেরা! হে সমস্ত জিন-ইনসান, কায়িনাতবাসী! অবশ্যই তোমাদের মাঝে মহান আল্লাহ পাক উনার
পক্ষ থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ নছীহতকারী, তোমাদের অন্তরের সর্বপ্রকার ব্যাধিসমূহের সর্বশ্রেষ্ঠ আরোগ্যদানকারী, সর্বশ্রেষ্ঠ হিদায়াত দানকারী এবং খাছ করে ঈমানদারদের জন্য, আমভাবে সমস্ত কায়িনাতবাসীর জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ রহমত
মুবারকস্বরূপ আমার যিনি মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত তাশরীফ মুবারক এনেছেন।
সুবহানাল্লাহ! আমার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি
সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম
কায়িনাতবাসী সবাইকে জানিয়ে দিন, মহান আল্লাহ পাক তিনি যে, সম্মানিত ফযল মুবারক এবং সম্মানিত রহমত মুবারক হিসেবে উনার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাঠিয়েছেন, সেজন্য তারা যেন সম্মানিত ‘ফালইয়াফরহূ শরীফ’ তথা সম্মানিত
খুশি মুবারক প্রকাশ করে, মহাসম্মানিত
সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে। এই সম্মানিত ‘ফালইয়াফরহূ শরীফ’ তথা সম্মানিত
খুশি প্রকাশ করাটা, মহাসম্মানিত
সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করাটা সবকিছু থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বোত্তম; যা তারা দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য সঞ্চয় করে।” সুবহানাল্লাহ!
(সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ইউনূস শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৭-৫৮)
এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার পরিপূর্ণ মিছদাক্ব হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! তাই নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও
মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উপলক্ষে মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ
শরীফ পালন করা যেমন ফরয, তেমনিভাবে
উনার মহাসম্মানিত বানাত সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উপলক্ষে মহাসম্মানিত
সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করাও ফরযতো অবশ্যই; বরং ফরয উনার উপর ফরয। সুবহানাল্লাহ!
কেননা উনার সম্মানিত
রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক, মা’রিফাত-মুহব্বত মুবারক উনার মধ্যেই মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মাহবূব
হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
অর্থাৎ উনাদের সম্মানিত রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক, মা’রিফাত-মুহব্বত মুবারক নিহিত রয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা
ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার সম্মানার্থে
আমাদের সবাইকে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উপলক্ষে সম্মানিত
‘ফালইয়াফরহূ শরীফ’ তথা সম্মানিত খুশি মুবারক প্রকাশ করার, মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার তাওফীক দান
করুন। আমীন!
সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক:
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত কুনিয়াত
মুবারক হচ্ছে ‘উম্মু আব্দিল্লাহ আলাইহাস সালাম’। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত লক্বব মুবারক
আফদ্বালুন নিসা ওয়ান নাস বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক
তিনি না এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি না; এছাড়া যত সম্মানিত লক্বব
মুবারক রয়েছেন সমস্ত সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি।
সুবহানাল্লাহ! বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, বিদ্ব‘আতুম মির রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আফদ্বলুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আন নূরুছ
ছানিয়াহ, উম্মু আবীহা, মালিকাতুল জান্নাহ, মালিকাতুল কায়িনাত ইত্যাদি উনার বিশেষ বিশেষ সম্মানিত লক্বব
মুবারক উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ছূরত মুবারক: বিদ্ব‘য়াতুম মির রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ
আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন বেমেছাল সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারিণী। সুবহানাল্লাহ!
উনার বেমেছাল সৌন্দর্য মুবারক সম্পর্কে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম
তিনি বলেন,
وَكَانَتْ
سَيِّدَتُنَا
حَضْرَتْ
رُقَيَّةُ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
ذَات جَمَالٍ
رَائِعٍ
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন অতি
বিস্ময়কর বেমেছাল সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারিণী।” সুবহানাল্লাহ! (খছায়িছুল কুবরা
শরীফ ১/২১৫, ইবনে আসাকির)
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,
وَكَانَتْ
مِنْ اَحْسَنِ
الْبَشَرِ.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন মানুষের
মাঝে সর্বাধিক সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারিণী।” সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক:
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক
করেন,
اِنَّـمَا
يُرِيْدُ
اللهُ
لِيُذْهِبَ
عَنْكُمُ
الرِّجْسَ
اَهْلَ
الْبَيْتِ
وَيُـطَـهِّـرَكُمْ
تَطْهِيْراً.
অর্থ: “হে মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম! নিশ্চয়ই মহান
আল্লাহ পাক তিনি চান আপনাদের থেকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা দূর করে আপনাদেরকে
পবিত্র করার মতো পবিত্র করতে। অর্থাৎ তিনি আপনাদের থেকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা
দূর করে আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই সৃষ্টি মুবারক করেছেন।”
সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ
৩৩)
এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার পরিপূর্ণ মিছদাক্ব হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি
উনাকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই সৃষ্টি মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই
নয়, উনার সম্মানিত স্পর্শ
মুবারক-এ যা এসেছেন, তাও পবিত্র থেকে
পবিত্রতম হয়ে গেছেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত শৈশবকাল মুবারক এবং সম্মানিত লালন-পালন মুবারক:
বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আব্বজান
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, খ¦াতামুন
নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
এবং মহাসম্মানিতা আম্মাজান উম্মুল মু‘মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা
আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের বেমেছাল সম্মানিত আদর-যতœ মুবারক-এ, মুবারক
তত্ত্বাবধানে সম্মানিত মক্কা শরীফ-এ সম্মানিত শৈশবকাল মুবারক অতিবাহিত করেছেন এবং
লালিত-পালিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ইলম মুবারক:
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
اِنَّـمَا
اَنَا
قَاسِمٌ
وَاللهُ
يُعْطِىْ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি হচ্ছেন দাতা আর আমি হচ্ছি বণ্টনকারী।”
সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)
মূলত, মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ
পর্যন্ত সমস্ত প্রকার সম্মানিত ইলম মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
প্রকৃতপক্ষে উনার সম্মানার্থেই সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সম্মানিত ইলম, আমল, ইখলাছ, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি
মুবারকসহ সমস্ত প্রকার নিয়ামত মুবারক লাভ করেছে, করছে এবং অনন্তকাল ধরে লাভ করতেই থাকবে। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত আক্বদ মুবারক:
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম প্রকাশ পাওয়ার পূর্বে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আক্বদ মুবারক হয়েছিলো আবূ লাহাবের পুত্র
উতবার সাথে এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আক্বদ
মুবারক হয়েছিলো উতাইবার সাথে। তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস
সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৭ বছরের কাছাকাছি আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন
নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৫ বছরের কাছাকাছি।
এটি ছিল শুধু একটি আনুষ্ঠানিক আক্বদ মুবারক। উনাদেরকে তাদের গৃহে যেতে হয়নি।
সুবহানাল্লাহ! তার আগেই সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ‘লাহাব শরীফ’ নাযিল হওয়ার পর আবূ
লাহাব ও তার স্ত্রীর কারণে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম
উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক থেকে উতবাহ মাহরূম হয়ে যায় অর্থাৎ সম্মানিত মুবারক
খিদমত উনার আনজাম মুবারক দেয়ার ব্যাপারে অযোগ্য বলে প্রমাণিত হয়। আর সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক থেকে উতবাহ মাহরূম
হয়ে যায় অর্থাৎ সম্মানিত মুবারক খিদমত উনার আনজাম মুবারক দেয়ার ব্যাপারে অযোগ্য
বলে প্রমাণিত হয়। নাঊযুবিল্লাহ!
সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ:
আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত
মুবারক প্রকাশ পাওয়ার পর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি তা সর্বপ্রথম উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা
আলাইহাস সালাম উনার নিকট প্রকাশ করেন। উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত
কুবরা আলাইহাস সালাম তিনিই পুরুষ-মহিলা সকলের পূর্বে সর্বপ্রথম সম্মানিত ঈমান
মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! উনার সাথে সাথে উনার মহাসম্মানিতা আওলাদ
আলাইহিন্নাস সালাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি
এবং আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আন নূরুর রাবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম
তিনি অর্থাৎ উনারাও সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর আন
নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আফযালু ওয়া খাইরু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অল্প সময়ের ব্যবধানে সংবাদ মুবারক পাওয়ার সাথে সাথে এসে
সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! উনারাই পুরুষ-মহিলা সকলের মাঝে
সর্বপ্রথম সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
তাই মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সায়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ
হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “উনারাই পুরুষ-মহিলা সকলের মাঝে সর্বপ্রথম সম্মানিত ঈমান
মুবারক প্রকাশ করেছেন। কাজেই ক্বিয়ামত পর্যন্ত যত মানুষ ঈমান আনবে এবং যত নেক আমল
করবে, সমস্ত ফযীলত উনাদের সম্মানিত
আমল নামা মুবারক-এ যেয়ে পৌঁছবে।” সুবহানাল্লাহ! যদিও উনারা কোন কিছুর মুহতাজ নন, তারপরেও সাধারণভাবে উনাদের সম্মানিত ফযীলত মুবারক বুঝার
জন্য সহজ। সুবহানাল্লাহ!
আযীমুশ শান সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ:
উতবা যখন বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত
আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক
দেয়া থেকে মাহরূম হয়ে যায়, তখন মহান
আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত ওহী মুবারক প্রেরণ করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জানিয়ে দেন যে, আমার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম! আমি (মহান আল্লাহ পাক) বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সাথে হযরত যুন
নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ
সুসম্পন্ন করেছি। সুবহানাল্লাহ! আপনিও উনাদের সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ দুনিয়ার
যমীনে সুসম্পন্ন করুন। সুবহানাল্লাহ! তাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অনুষ্ঠানিকভাবে দুনিয়াতে সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি
আ‘লাল আলামীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সাথে
সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ
সুসম্পন্ন করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ১০ বছর আর
সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৩৭
বছর। সুবহানাল্লাহ!
বেমেছাল মুহব্বতপূর্ণ সম্পর্ক মুবারক:
বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাদের
মাঝে বেমেছাল মিল-মুহব্বত মুবারক বিদ্যমান ছিলো। আরবের লোকজন বলাবলি করতো এবং এই
কথাটি উপমায় পরিণত হয়েছিলো যে,
اَحْسَنُ
زَوْجَيْنِ
رَاٰهُمَا
اِنْسَانٌ
حَضْرَتْ
رُقَيَّةَ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
وَزَوْجَهَا
حَضْرَتْ
عُثْمَانَ
عَلَيْهِ
السَّلَامُ
অর্থ: “মানুষের দেখা সম্মানিত দম্পতি মুবারক উনাদের মধ্যে বিনতু রসূলিল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস
সালাম তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত যাওজুম মুকাররাম সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস
সালাম উনারা সর্বোত্তম।” সুবহানাল্লাহ! (ইছাবাহ ৭/৬৯৮, বিদায়া-নিহায়া ৭/২২৩, মুখতাছারু তারীখে দিমাশক্ব ৫/১৭৫ ইত্যাদি)
উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ:
সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি আ‘লাল আলামীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ
আলাইহাস সালাম তিনি হাবশায় (আবিসিনিয়ায়) থাকা অবস্থায়ই উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা
সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময়
বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। যার ফলশ্রুতিতে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি হাবশা থেকে সম্মানিত মক্কা শরীফ ফিরে এসে উনার
মহাসম্মানিতা আম্মাজান সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার
সম্মানিত চেহারা মুবারক অবলোকন করতে পারেননি। তাহলে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের সম্মানিত
রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের জন্য কতটুকু ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তা এখান থেকে সুস্পষ্ট হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!
তাই কায়িনাতবাসীর জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে, এখান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা এবং তা আমলে বাস্তবায়ন করা।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে সেই তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
হাবশায় সম্মানিত হিজরত মুবারক:
সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট হাবশায় সম্মানিত হিজরত মুবারক
করার অনুমতি প্রার্থনা করেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
ইরশাদ মুবারক করেন,
اُخْرُجْ
بـِحَضْرَتْ
رُقَيَّةَ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
مَعَكَ
অর্থ: “আপনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনাকেসহ
হাবশায় সম্মানিত হিজরত মুবারক করুন।” (মুস্তাদরকে হাকিম ৪/৫০)
আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশ পাওয়ার ৫ম বৎসরে সম্মানিত রজবুল হারাম শরীফ মাসে উনারা হাবশার উদ্দেশ্যে
রওয়ানা দেন। দীর্ঘ এক মাস পর সম্মানিত শা’বান মাসে উনারা হাবশায় যেয়ে পৌঁছেন।
সুবাহানল্লাহ! উনারা সেখানে যেয়ে নিরাপদে মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদাত-বন্দেগী
করতে থাকেন এবং তা’লীম-তালক্বীন ও সম্মানিত ছোহবত মুবারক দানের মাধ্যমে লোকদেরকে
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দিকে আহ্বান করতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! উনাদের আহ্বানে
বহু লোক ঈমান এনে মুসলমান হয়ে যান।
এভাবে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার মুবারক পদচারণা, সম্মানিত তা’লীম-তালক্বীন ও সম্মানিত ছোহবত মুবারক উনার
মাধ্যমে হাবশার যমীনে তথা অনারবে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার আলো ছড়িয়ে পড়ে।
সুবহানাল্লাহ! আর তার পাশাপাশি হাবশাসহ সমগ্র অনারব রহমত, বরকত, ছাকীনাহ ও নিয়ামত মুবারক লাভে ধন্য হয়। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক উনার পথে সম্মানিত
হিজরতকারী সম্মানিত প্রথম পরিবার:
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ
আলাইহাস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনারা যখন
হাবশায় (আবিসিনিয়ায়) সম্মানিত হিজরত মুবারক করেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাদের সম্মানিত খুছূছিয়াত মুবারক সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক
করেন,
إِنَّهُمَا
لاَوَّلُ
مَنْ هَاجَرَ
بَعْدَ
لُوطٍ
وَإِبْرَاهِيمَ
عَلَيْهِمَا
الصَّلاَةُ
وَالسَّلاَمُ.
অর্থ: “নিশ্চয়ই সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি এবং
হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনারাই হচ্ছেন হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস
সালাম উনার এবং হযরত লূত আলাইহিস সালাম উনাদের পর সর্বপ্রথম হিজরতকারী।”
সুবহানাল্লাহ!’ (মুস্তাদরকে হাকিম ৪/৫০)
মহাসম্মানিত মু‘জিযা শরীফ উনার বহিঃপ্রকাশ:
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
وكانت
ذات جمال
رائع ذكر
ابن قدامة
أن نفرا
من الحبشة
كانوا
ينظرون
إليها،
ويعجبون
من جمالها
فتأذت
من ذلك
فدعت عليهم
فهلكوا
جميعا.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন অতি
বিস্ময়কর বেমেছাল খুব ছূরত মুবারক উনার অধিকারিণী। হযরত ইমাম ইবনে কুদামাহ
রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উল্লেখ করেছেন যে, হাবশার এক দল লোক উনার দিকে তাকাতো এবং উনার সম্মানিত ছূরত
মুবারক-এ অভিভূত হয়ে বিস্ময় প্রকাশ করতো। এতে তিনি খুব কষ্ট পেতেন। ফলে তিনি তাদের
বিরুদ্ধে বদদোয়া করেন এবং তারা সকলেই ধ্বংস হয়ে যায়।” সুবহানাল্লাহ! (শারহুয
যারক্বানী ‘আলাল মাওয়াহিব ৪/২৩৩)
প্রকৃতপক্ষে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্পূর্ণ
জিন্দেগী মুবারকখানাই সম্মানিত কুদরত মুবারক এবং সম্মানিত মু’জিযা শরীফ উনাদের
অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ! তবে কেনো কোনো সময় উনার কোনো কোনো মহাসম্মানিত শান
মুবারক প্রকাশ পেয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত মক্কা শরীফ প্রত্যাবর্তন:
সুদীর্ঘ প্রায় ৭ বছর হাবশায় সম্মানিত অবস্থান মুবারক করার পর উনাদের নিকট
সংবাদ পৌঁছে যে, এখন সম্মানিত
মক্কা শরীফ উনার অবস্থা ভালো হয়েছে। তখন উনারা সম্মানিত মক্কা শরীফ প্রত্যাবর্তন
করেন। কিন্তু উনারা এসে দেখলেন যে, সম্মানিত মক্কা শরীফ-এ এখন পূর্বের চেয়েও নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে।
সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ
হিজরত মুবারক:
দীর্ঘ বছর পর সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি এখন
উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সম্মানিত মক্কা শরীফ সম্মানিত অবস্থান মুবারক করছেন।
এখন এখানে পূর্বের চেয়েও নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে। মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে
সম্মানিত ওহী মুবারক প্রাপ্ত হয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এক সময় সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ-এ সম্মানিত হিজরত
মুবারক করবেন। তাই তিনি সেখানকার পরিবেশ গুছানোর জন্য সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন
আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ-এ হিজরত মুবারক করার জন্য
সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দেন। সম্মানিত নির্দেশ মুবারক পেয়ে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন
নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি হিজরত মুবারক করে সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ চলে
যান। সুবহানাল্লাহ! আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি
উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সম্মানিত মক্কা শরীফ-এ সম্মানিত অবস্থান মুবারক করতে
থাকেন। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র
মদীনা শরীফ-এ সম্মানিত হিজরত মুবারক:
মহান আল্লাহ পাক উনার মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সম্মানিত ওহী মুবারক
প্রাপ্ত হয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি যখন সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ-এ সম্মানিত হিজরত মুবারক করেন, তখন বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনারা প্রত্যেকেই সম্মানিত মক্কা শরীফ-এ সম্মানিত অবস্থান মুবারক করছিলেন।
সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম সম্মানিত রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা
সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ
মুবারক করেন, “নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র
মদীনা শরীফ-এ সম্মানিত হিজরত মুবারক করার প্রায় এক থেকে দেড় মাস পর উম্মুল
মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ (সাওদা) আলাইহাস সালাম তিনি, উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ
আলাইহাস সালাম তিনি, বানাতু
রসূলিল্লাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি
এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আন নূরুর রাবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম তিনি, অর্থাৎ উনারা এক সাথে সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ-এ
সম্মানিত হিজরত মুবারক করেন।” সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ:
সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি আ‘লাল আলামীন
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা
শরীফ-এ হিজরত মুবারক করার পর প্রায় এক বছর কয়েক মাস দুনিয়ার যমীন-এ সম্মানিত
অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! দ্বিতীয় হিজরী সনের সম্মানিত শা’বান মাসের
শুরুর দিকে উনার গুটিবসন্ত হয়। তখন থেকে তিনি সম্মানিত মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ
করেন। সেই যুগের যাহিরী সকল চিকিৎসাই উনাকে করা
হয়েছিলো। কিন্তু কোনো পরিবর্তন ঘটেনি; বরং ধীরে ধীরে সম্মানিত মারীদ্বী শান মুবারক বেশি আকারে প্রকাশ পেতে থাকেন। এই
দিকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে নিয়ে সম্মানিত বদরের
জিহাদে যাওয়ার প্রস্তুতি মুবারক গ্রহণ করছেন। এমতাবস্থায় যখন বিনতু রসূলিল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস
সালাম উনার সম্মানিত মারিদ্বী শান মুবারক খুব বেশি আকারে প্রকাশ পেয়ে যায়, তখন তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাকে
বলেন, আপনাকে সম্মানিত বদর জিহাদ
মুবারক-এ যেতে হবে না। আপনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম
উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা
শরীফেই অবস্থান করুন এবং উনার যথাযথ সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিন।
উনার সাথে তিনি হযরত উসামা বিন যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকেও একই কারণে
সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ-এ অবস্থান করার জন্য সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দেন।
সুবহানাল্লাহ! এই সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছে,
خَلَفَ
النَّبِـىُّ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
حَضْرَتْ
عُثْمَانَ
عَلَيْهِ
السَّلَامُ
وَحَضْرَتْ
اُسَامَةَ
بْنَ زَيْدٍ
رَضِىَ
اللهُ
تَعَالـٰى
عَنْهُ
عَلـٰى
حَضْرَتْ
رُقَيَّةَ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
فِـىْ
مَرَضِهَا
وَخَرَجَ
اِلـٰى
بَدْرٍ
وَّهِىَ
وَجِعَةٌ
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন
নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার
জন্য হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাকে এবং হযরত উসামা বিন যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু
তা‘য়ালা আনহু উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ রেখে সম্মানিত
বদর জিহাদ মুবারক উনার উদ্দেশ্যে বের হন। তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ
আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত মারীদ্বী শান মুবারক বেশি আকারে প্রকাশ পায়।”
উল্লেখ্য যে, এখানে একটি বিষয়
স্পষ্ট যে, স্বয়ং নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার
মহাসম্মানিতা বানাত সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার
সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন
আলাইহিস সালাম উনাকে এবং সাইয়্যিদুনা হযরত উসামা বিন যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা
আনহু উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে সম্মানিত বদরের জিহাদে না নিয়ে সম্মানিত ও পবিত্র
মদীনা শরীফ-এ রেখে যান। তাহলে এখান থেকে এই বিষয়টিই সুস্পষ্ট যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই সম্মানিত বদরের জিহাদের চেয়ে উনার মহাসম্মানিত লখতে জিগার
মুবারক, মহাসম্মানিতা বানাত
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক
করার বিষয়টি প্রাধান্য দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তাহলে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান
মুবারক কত বেমেছাল, সেটা সকলের
চিন্তা-কল্পনার ঊর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!
মূলত, উনার সম্মানিত
খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া সমস্ত ইবাদাত-বন্দেগী থেকে; এমনকি জিহাদ থেকেও শ্রেষ্ঠ। সুবহানাল্লাহ! কত শ্রেষ্ঠ এটা
জিন-ইনসান, তামাম
কায়িনাতবাসী চিন্তা ও কল্পনা করে কখনোই মিলাতে পারবে না। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত বদর জিহাদ মুবারক সংঘটিত হয় ১৭ রমাদ্বান শরীফ আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত
আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন
১৮ই রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুস সাব্ত শরীফ শেষ রাত্রে। সুবহানাল্লাহ! তখন উনার
সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ২১ বছর ৫ মাস ১৫ দিন। বানাতু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মধ্যে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন
নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনিই সর্বপ্রথম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময়
বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন
আলাইহিস সালাম তিনি নিজেই সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার
সম্মানিত কাফন মুবারক পড়ান এবং উনাকে মহাসম্মানিত রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখেন।
সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,
فَجَاءَ
حَضْرَتْ
زَيْدُ
بْنُ حَارِثَةَ
رَضِىَ
اللهُ
تَعَالـٰى
عَنْهُ
بَشِيْرًا
ۢبِوَقْعَةِ
بَدْرٍ
وَّحَضْرَتْ
عُثْمَانُ
عَلَيْهِ
السَّلَامُ
عَلـٰى
قَبْرِ
سَيِّدَتِنَا
حَضْرَتْ
رُقَيَّةَ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
بِنْتِ
رَسُوْلِ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
يَدْفِنُهَا.
অর্থ: “তারপর সাইয়্যিদুনা হযরত যায়িদ ইবনে হারিছাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু
তিনি এমতাবস্থায় সম্মানিত বদর জিহাদ বিজয়ের সুসংবাদ নিয়ে এসেছেন, তখন সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত কাফন মুবারক
সম্পন্ন করছেন তথা উনাকে মহামহাসম্মানিত রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখছেন।”
সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
অবিরত ধারায় সম্মানিত নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রবাহিত করা: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার অনুপস্থিতিতে সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি আ‘লাল আলামীন সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী
শান মুবারক প্রকাশ করেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি সংবাদ মুবারক পাওয়ার সাথে সাথে অবিরত ধারায় সম্মানিত নূরুল
মুহব্বত মুবারক প্রবাহিত করেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর তিনি উনার মহাসম্মানিত লখতে
জিগার মুবারক সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার মহামহাসম্মানিত
রওযা শরীফ যিয়ারত মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
সেখানে যেয়েও তিনি অজস্র ধারায় সম্মানিত নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রকাশ করেন।
সুবহানাল্লাহ! তখন হযরত মহিলা ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারাও
কান্না মুবারক করতে থাকেন। এ সময় সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম
তিনি উনাদের কান্না মুবারক বন্ধ করতে উদ্যত হন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে বলেন, থামুন! উনারা তো কান্না মুবারক করছেন অন্তর মুবারক ও চোখ
মুবারক-এ। আর অন্তর এবং চোখ মুবারক থেকে যা বের হয়, তা সম্মানিত রহমত মুবারক উনার কারণ। আর হাত ও মুখ থেকে যে
ক্রিয়া প্রকাশ পায়, তা শয়তানের পক্ষ
থেকে হয়ে থাকে। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছে,
وَجَعَلَتْ
سَيِّدَتُنَا
حَضْرَتْ
فَاطِمَةُ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
تَبْكِىْ
عَلـٰى
شَفِيْرِ
قَبْرِ
سَيِّدَتِنَا
حَضْرَتْ
رُقَيَّةَ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
فَجَعَلَ
رَسُوْلُ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
يَــمْسَحُ
الدُّمُوْعَ
عَنْ وَّجْهِهَا
بِالْيَدِ
اَوْ قَالَ
بِالثَّوْبِ.
অর্থ: “আর আন নূরুর রাবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত রওযা শরীফ
উনার কাছেই সম্মানিত অবস্থান মুবারক করে সম্মানিত নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রবাহিত
করছিলেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরাহ মুবারক (মহাসম্মানিত ও
মহাপবিত্র হাত মুবারক) অথবা রাবি বলেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুত তাক্বওয়া মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
পোশাক মুবারক) দিয়ে আন নূরুর রাবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম
উনার সম্মানিত চেহারা মুবারক থেকে সম্মানিত নূরুল মুহব্বত মুবারক মুছে দিচ্ছিলেন।”
সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে ত্বয়ালসী, মুসনাদে আহমদ, মুছান্নাফে আবী
শায়বাহ, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ
ইত্যাদি)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
উনার মহাসম্মানিত লখতে জিগার মুবারক সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস
সালাম উনার জন্য বেমেছালভাবে সম্মানিত দোয়া মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি
ইরশাদ মুবারক করেন,
اِلْـحَقِىْ
بِسَلَفِنَا
الْـخَيْرِ
حَضْرَتْ
عُثْمَانَ
بْنِ مَظْعُوْنٍ
رَضِىَ
اللهُ
تَعَالـٰى
عَنْهُ
অর্থ: “আপনি আমাদের পূর্বসূরি হযরত উছমান ইবনে মাজউন রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা
আনহু উনার সাথে মিলিত হোন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ, ত্ববরনী, আল ইছাবাহ ইত্যাদি)
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত
মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার কারণে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম
তিনি সম্মানিত বদর জিহাদ মুবারক-এ না যেয়েও সম্মানিত বদর জিহাদ মুবারক-এ উপস্থিত
থেকে জিহাদ মুবারক করার বেমেছাল ফযীলত মুবারক হাছিল করেছেন। সুবহানাল্লাহ! স্বয়ং
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ
মুবারক করেছেন, হযরত যুন নূরাইন
আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত বদর জিহাদ উনার ফযীলত মুবারক উনার মধ্যে সমান অংশীদার
হবেন। সুবহানাল্লাহ! এবং স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাকে
সম্মানিত বদর জিহাদ উনার সম্মানিত গনীমত মুবারক উনার মাল মুবারকও বণ্টন করে
দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! এরূপ দৃষ্টান্ত কায়িনাতের বুকে দ্বিতীয় আর নেই।
সুবহানাল্লাহ! এ সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে,
اَنَّ
رَسُوْلَ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
قَسَمَ
يَوْمَ
بَدْرٍ
لِّعُثْمَانَ
عَلَيْهِ
السَّلَامُ
سَهْمَهٗ
অর্থ: “নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি সম্মানিত বদর জিহাদ শেষে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম
উনার জন্য সম্মানিত গণীমতের মাল মুবারক বণ্টন করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরকে
হাকিম ৪/৫৩, যখায়েরুল
উক্ববা)
সুতরাং এখান থেকেই বিষয়টি সুস্পষ্ট হয়ে যায় যে, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার
সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার ফযীলত কতো বেমেছাল। সুবহানাল্লাহ!
যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে উনার
শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কত বেমেছাল, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার ঊর্ধ্বে।
সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম:
পূর্বেই আলোচনা করা হয়েছে যে, হাবশায় (আবিসিনিয়ায়) সম্মানিত অবস্থান মুবারককালে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যিন
নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক
প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যিন নূরাইন আলাইহিস সালাম
তিনি সেখানে কিছু সময় সম্মানিত অবস্থান মুবারক করার পর, উনার মহাসম্মানিত আব্বা-আম্মা আলাইহিমাস সালাম উনাদের সাথে
সম্মানিত মক্কা শরীফ-এ আগমন করেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর সম্মানিত মক্কা শরীফ-এ কিছু
সময় সম্মানিত অবস্থান করার পর, তিনি উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস
সালাম উনার সাথে সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ সম্মানিত হিজরত মুবারক করেন। উনার
সম্মানিত বয়স মুবারক যখন প্রায় ৩ বছর, তখন উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস
সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। এরপর
তিনি উনার মহাসম্মানিত নানাজান নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত হুজরা শরীফ-এ বেমেছাল আদর-যতœ ও মুহব্বত মুবারক-এ লালিত-পালিত হতে থাকেন। আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার সম্মানিত দৌহিত্র সাইয়্যিদুনা
হযরত ইমাম ইবনে যিন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাকে বেমেছাল মুহব্বত মুবারক করতেন।
সুবহানাল্লাহ! তিনি যখন ছয় বছর বয়স মুবারক-এ উপনীত হন, তখন উনার সম্মানিত চোখ মুবারক উনার মধ্যে একটি মোরগ ঠোকর
দেয়। ফলশ্রুতিতে তিনি উনার সম্মানিত চোখ মুবারক উনার মধ্যে প্রচ- আঘাত গ্রহণ করেন
এবং সম্মানিত মারিদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করেন। আর এই সম্মানিত মারিদ্বী শান
মুবারক প্রকাশ করা অবস্থায় তিনি ৪র্থ হিজরী সনের পবিত্র ২২ শে জুমাদাল ঊলা শরীফ
ইয়াওমুল আরবিয়া’ শরীফ দুনিয়াবী দৃষ্টিতে বা হিসেবে প্রায় ৬ বৎসর বয়স মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান
মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
উনার প্রিয় দৌহিত্র সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যিন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার
সম্মানিত জানাযা মুবারক উনার সম্মানিত নামায মুবারক পড়ান এবং সাইয়্যিদুনা হযরত যুন
নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি উনাকে মহাসম্মানিত রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখেন।
সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যিন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার পর
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার আর কোনো সম্মানিত আওলাদ
সম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেননি।
সাইয়্যিদাতু নিসায়ি
আহলিল জান্নাহ,
বিদ্ব‘আতুম মির রসূলিল্লাহ, আফদ্বলুন নাস ওয়ান
নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ, ছানিয়াহ, উম্মু আবীহা, মালিকাতুল জান্নাহ, মালিকাতুল কায়িনাত
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার হাবশায় সম্মানিত হিজরত
মুবারক
আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক প্রকাশ পাওয়ার ৫ম সালের কথা।
মুশরিকরা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের উপর যুলুমের
মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাদের অভিপ্রায় ছিলো এর মাধ্যমে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনাকে
চিরতরে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া। না‘ঊযুবিল্লাহ! তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কিছু সংখ্যক হযরত ছাহাবায়ে কিরাম
রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে হাবশায় (আবিসিনিয়ায়) হিজরত মুবারক করার
অনুমতি মুবারক দেন। ওই সময় হাবশার বাদশাহ ছিলেন নাজ্জাশী। তিনি ছিলেন একজন
ন্যায়পরায়ণ শাসক। স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি নাজ্জাশীর প্রশংসা মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! এই সম্পর্কে
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
قَالَ
لَـهُمْ
لَوْ خَرَجْتُمْ
اِلـٰى
اَرْضِ
الْـحَبَشَةِ
فَاِنَّ
بِـهَا
مَلِكًا
لَا يُظْلَمُ
عِنْدَهٗ
اَحَدٌ
وَهِىَ
اَرْضُ
صِدْقٍ
حَتّٰى
يـَجْعَلَ
اللهُ
لَكُمْ
فَرَجَا
مِـمَّا
اَنْتُمْ
فِيْهِ.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে উদ্দেশ্য করে
ইরশাদ মুবারক করেন, আপনারা যদি
হাবশায় চলে যেতেন, তাহলে ভালো হতো।
কারণ, সেখানে একজন বাদশাহ রয়েছেন
যিনি কারো প্রতি যুলুম করেন না এবং সেটি একটি ভালো রাজ্য। ওখানে গেলে মহান আল্লাহ
পাক তিনি আপনাদেরকে এই যুলুম-নির্যাতন থেকে মুক্তির ব্যবস্থা করে দিবেন।” (আল বিদায়াহ
ওয়ান নিহায়াহ ৪/১৬৬)
তখন একদল হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা হাবশায়
সম্মানিত হিজরত মুবারক করেন। কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
فَكَانَتْ
أَوَّلَ
هِجْرَةٍ
كَانَتْ
فِى الْاِسْلَامِ
فَكَانَ
اَوَّلَ
مَنْ خَرَجَ
مِنَ الْمُسْلِمِيْنَ
حَضْرَتْ
عُثْمَانُ
بْنُ عَفَّانَ
عَلَيْهِ
السَّلَامُ
وَزَوْجَتُهٗ
سَيِّدَتُنَا
حَضْرَتْ
رُقَيَّةُ
بِنْتُ
رَسُوْلِ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ.
অর্থ: “এটি ছিলো সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রথম হিজরত মুবারক। আর সম্মানিত
মুসলমান উনাদের মধ্যে প্রথমে যাঁরা (সম্মানিত হিজরত মুবারক-এ) বের হলেন, উনারা হলেন সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি
এবং উনার যাওযাতুম মুকাররমাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম
উনারা।” সুবহানাল্লাহ! (বিদায়াহ-নিহায়াহ ৪/১৬৬-১৬৭)
উনাদের সাথে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু সালামা আলাইহাস সালাম
তিনিসহ আরো অনেকেই ছিলেন। তবে ওই সম্মানিত কাফেলা মুবারক-এ মোট কতজন সদস্য ছিলেন, এই বিষয়ে অনেক ইখতিলাফ রয়েছে। যেমন- ১০ জন, ১২ জন, ১৪ জন, ১৫ জন, ১৬ জন, ১৭ জন এরূপ বিভিন্ন জন বিভিন্ন মত পেশ করেছেন।
সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি যখন নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট হাবশায় হিজরত
করার অনুমতি প্রার্থনা করেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
ইরশাদ মুবারক করেন,
اُخْرُجْ
بـِحَضْرَتْ
رُقَيَّةَ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
مَعَكَ
অর্থ: “আপনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনাকেসহ
হাবশায় সম্মানিত হিজরত মুবারক করুন।” (মুস্তাদরকে হাকিম ৪/৫০)
সম্মানিত হিজরত মুবারক উনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা:
আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশ পাওয়ার ৫ম বৎসরের সম্মানিত রজবুল হারাম শরীফ মাসের কথা। একটি সম্মানিত
কাফিলা মুবারক মক্কাবাসীদের দৃষ্টি এড়ানোর জন্য রাতের বেলা সম্মানিত মক্কা শরীফ
ত্যাগ করেন। উনাদের গন্তব্য হাবশা। সেই সম্মানিত কাফিলা মুবারক উনার মূল মধ্যমণি ছিলেন
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! তিনি উনার
মহাসম্মানিত আব্বাজান নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিতা আম্মাজান উম্মুল মু‘মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা
হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের থেকে বিদায় নেয়ার সময় যেমন অজস্র
ধারায় সম্মানিত নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রবাহিত করেন, ঠিক তেমনিভাবে উনারাও উনাদের মহাসম্মানিত লখতে জিগার মুবারক
উনাকে বিদায় দেয়ার সময় অজস্র ধারায় সম্মানিত নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রবাহিত করেন।
সুবহানাল্লাহ! তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার
সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় ১২ বছর। এই অল্প বয়স মুবারক-এ মহাসম্মানিত
আব্বাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এবং মহাসম্মানিতা হযরত আম্মাজান
আলাইহাস সালাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে ছেড়ে সপরিবারে সম্মানিত হিজরত মুবারক করে
তিনি কায়িনাতের মাঝে এক বেমেছাল দৃষ্টান্ত মুবারক স্থাপন করেছেন। তিনি সমস্ত
জিন-ইনসান, তামাম
কায়িনাতবাসীকে শিক্ষা দিয়েছেন যে, কিভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মাহবূব হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মাঝে ফানা-বাক্বা
হতে হয়। সুবহানাল্লাহ! মূলত, উনার কাছ থেকেই হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা
হাক্বীক্বীভাবে ফানা-বাক্বা হওয়ার বিষয়টি শিক্ষা মুবারক গ্রহণ করেছেন।
সুবহানাল্লাহ!
মুশরিকদের ষড়যন্ত্র:
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনাদের সম্মানিত কাফেলা
মুবারক অতি গোপনে এসে শু‘আইবাহ বন্দরে পৌঁছলেন। উনাদের মধ্যে কেউ হেটে আবার কেউবা
বাহন মুবারক-এ চড়ে এসেছেন। মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত কুদরত মুবারক যে, উনারা শু‘আইবাহ বন্দরে পৌঁছেই সেখানে দুটি (ছোট) বাণিজ্যিক
জাহাজ দেখতে পেলেন। ওগুলো বন্দর ছেড়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। আবিসিনিয়ার বন্দর
পর্যন্ত যাওয়ার জন্য উনাদের নিকট যুক্তিসঙ্গত ভাড়া দাবি করলো। কিতবে বর্ণিত রয়েছে,
فَوَفَّقَ
اللهُ
لَـهُمْ
سَفِينَتَيْنِ
لِلتُّجَّارِ
حَمَلُوْهُمْ
فِيْهِمَا
بِنِصْفِ
دِيْنَارٍ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি সেই সময় সম্মানিত উনাদের উপর খাছ গইবী মদদ
(সাহায্য) মুবারক করেন। উনারা সেখানে (শু‘আইবাহ বন্দরে) এসে দুইটি (ছোট) বাণিজ্যিক
জাহাজ দেখতে পান। তারা (বণিকেরা) অর্ধ দীনারের বিনিময়ে উনাদেরকে জাহাজ দুটিতে তুলে
নিলো।” সুবহানাল্লাহ! (‘উয়ূনুল আছার, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ, তারীখে ত্ববারী ইত্যাদি)
জাহাজ বন্দর ছেড়ে দেয়ার পর একজন মহিলা
সম্মানিত মক্কা শরীফ-এ এসে মক্কাবাসীদরেকে বললো যে, সে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম
উনাকে এবং সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে
শু‘আইবাহ বন্দরের দিকে যেতে দেখেছে। মুশরিকরা যখন উনাদের সম্মানিত হিজরত মুবারক
করার প্রচেষ্টা সম্পর্কে জানতে পারলো, তখন তারা হতাশ হলো। সম্মানিত হিজরতকারী উনাদেরকে বিশেষ করে সাইয়্যিদাতুনা হযরত
আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে এবং সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস
সালাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে বাধা দেয়ার জন্য একদল যোদ্ধা পাঠালো। কিন্তু অন্যান্য
হিজরতকারীদেরকে সাথে নিয়ে উনারা দুইজন শু‘আইবাহ বন্দর বহু পূর্বেই ছেড়ে গেছেন।
সুবহানাল্লাহ!
হাবশায় অবতরণ মুবারক:
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনাদের সম্মানিত কাফেলা মুবারক দীর্ঘ এক মাস
পর সম্মানিত শা’বান মাসে হাবশায় যেয়ে পৌঁছেন। সুবাহানল্লাহ! উনারা সেখানে যেয়ে
নিরাপদে মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদাত-বন্দেগী করতে থাকেন এবং তা’লীম-তালক্বীন ও
সম্মানিত ছোহবত মুবারক দানের মাধ্যমে লোকদেরকে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দিকে
আহ্বান করতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! উনাদের আহ্বানে বহু লোক ঈমান এনে মুসলমান হয়ে
যান।
এভাবে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার মুবারক পদচারণা, সম্মানিত তা’লীম-তালক্বীন ও সম্মানিত ছোহবত মুবারক উনার
মাধ্যমে হাবশার যমীনে তথা অনারবে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার আলো ছড়িয়ে পড়ে।
সুবহানাল্লাহ! আর তার পাশাপাশি হাবশাসহ সমগ্র অনারব রহমত, বরকত, ছাকীনাহ ও নিয়ামত মুবারক লাভে ধন্য হয়। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রচার-প্রসারের ক্ষেত্রে সাইয়্যিদাতুনা হযরত
আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত অবদান মুবারক কত বেমেছাল, তা এখান থেকে সুস্পষ্ট হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক উনার পথে সম্মানিত
হিজরতকারী সম্মানিত প্রথম পরিবার:
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ
আলাইহাস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনারা যখন
হাবশায় (আবিসিনিয়ায়) সম্মানিত হিজরত মুবারক করেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাদের সম্মানিত খুছূছিয়াত মুবারক সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক
করেন,
إِنَّهُمَا
لاَوَّلُ
مَنْ هَاجَرَ
بَعْدَ
لُوطٍ
وَإِبْرَاهِيمَ
عَلَيْهِمَا
الصَّلاَةُ
وَالسَّلاَمُ.
অর্থ: “নিশ্চয়ই সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি এবং
হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনারাই হচ্ছেন হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস
সালাম উনার এবং হযরত লূত আলাইহিস সালাম উনাদের পর সর্বপ্রথম হিজরতকারী।”
সুবহানাল্লাহ!’ (মুস্তাদরকে হাকিম ৪/৫০)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ
حَضْرَتْ
اَنَسِ
بْنِ مَالِكٍ
رَضِيَ
اللهُ
عَنْهُ
قَالَ
أَنَسًا
يَقُولُ
خَرَجَ
عُثْمَانُ
بْنُ عَفَّانَ
ومَعَهُ
رُقَيَّةُ
بِنْتُ
رَسُولِ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
إِلَى
أَرْضِ
الْحَبَشَةِ
فَأَبْطَأَ
خَبَرُهُمْ
عَلَى
رَسُولِ
الله صلى
الله عليه
وَسَلَّمَ
فَقَدِمَتِ
امْرَأَةٌ
مِنْ قُرَيْشٍ
فَقَالَتْ
يَا مُحَمَّدُ
صَلَّى
اللَّهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
قَدْ رَأَيْتُ
خَتَنَكَ
وَمَعَهُ
امْرَأَتُهُ
قَالَ
عَلَى
أَيِّ
حَالٍ
رَأَيْتِيهِمَا،
قَالَتْ
رَأَيْتُه
قَدْ حَمَلَ
امْرَأَتَه
عَلَى
حِمَارٍ
مِنْ هَذِهِ
الدَّبَّانةِ
وَهُوَ
يَسُوقُهَا
فَقَالَ
رَسُولُ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وآله صَحِبَهُمَا
اللهُ
تَعَالَى
إِنَّ
حَضْرَتْ
عُثْمَانَ
عَلَيْهِ
السَّلامُ
لأَوَّلُ
مَنْ هَاجَرَ
إِلَى
اللهِ
تَعَالى
بِأَهْلِه
بَعْدَ
حَضْرَتْ
لُوْطٍ
عَلَيْهِ
السَّلامُ
অর্থ: “হযরত আনাস বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন, সাইয়্যিদুনা
হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা বানাত সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন
নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে নিয়ে হাবশায় সম্মানিত হিজরত মুবারক-এ গেলেন।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট
উনাদের সংবাদ মুবারক আসতে দেরি হয়ে গেলো। এর মধ্যে একজন কুরাইশী মহিলা হাবশা থেকে
সম্মানিত ও পবিত্র মক্কা শরীফ এলেন। তিনি বললেন, আমি আপনার মহাসম্মানিত জামাতা তথা সাইয়্যিদুনা হযরত যুন
নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাকে উনার মহাসম্মানিতা যাওজাতুম মুকাররমাহ তথা
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সাথে দেখেছি। নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জানতে চাইলেন, আপনি উনাদেরকে কী অবস্থায় দেখেছেন? তিনি বললেন, আমি দেখেছি সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে একটি দুর্বল গাধার উপর বসিয়ে
(গাধাটিকে) হাঁকিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন,
صَحِبَهُمَا
اللهُ
تَعَالَى
إِنَّ
حَضْرَتْ
عُثْمَانَ
عَلَيْهِ
السَّلامُ
لأَوَّلُ
مَنْ هَاجَرَ
إِلَى
اللهِ
تَعَالى
بِأَهْلِه
بَعْدَ
حَضْرَتْ
لُوطٍ
عَلَيْهِ
السَّلامُ
“মহান
আল্লাহ পাক তিনি উনাদের দু’জনের সাথী হোন। নিশ্চয়ই হযরত লূত আলাইহিস সালাম উনার পর
হযরত যূন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি সপরিবারে সম্মানিত হিজরত
মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লহ! (আল আহাদ ওয়াল মাছানী ১/১৪৭, আস সুন্নাহ ২/৫৯৬, দালাইলুন নুবুওওয়াহ ২/২৯৭, মা’রিফাতুছ ছাহাবাহ লিআবী নাঈম ২২/২২৬, আল মাত্বালিবুল আলিয়াহ ১৬/৫৩, উসদুল গবাহ ৩/৩৫২, বিদায়াহ-নিহায়াহ ৩/৮৫, তারীখুল ইসলাম লিযযাহাবী ১/১৮৩ ইত্যাদি)
হাবশায় সম্মানিত অবস্থান মুবারক:
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার
এবং উনার মাহবূব হাবীব, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের রেযামন্দি-সন্তুষ্টি
মুবারক হাছিলের লক্ষ্যে স্বদেশ ত্যাগ করে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস
সালাম উনার সাথে সুদূর হাবশায় সম্মানিত অবস্থান মুবারক করতে থাকেন। হাবশায়
সম্মানিত অবস্থান মুবারককালে উনার একজন মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম তিনি
দুনিয়ার যমীনে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন।
সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের সপ্তম দিনে উনার
সম্মানিত আক্বীক্বা মুবারক দেয়া হয় এবং উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক
রাখা হয় ‘সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম’। সুবহানাল্লাহ! উনার
সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক অনুযায়ী সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ
আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক গ্রহণ করেন ‘উম্মু আব্দিল্লাহ আলাইহাস
সালাম’ এবং সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত কুনিয়াত
মুবারক গ্রহণ করেন ‘আবূ আব্দিল্লাহ আলাইহিস সালাম’। সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম সম্মানিত রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা
সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি
ইরশাদ মুবারক করেন, “যখন সাইয়্যিদুনা
হযরত ইমাম ইবনে যিন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি দুনিয়ার যমীনে মহাসম্মানিত ও
মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে বা হিসেবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন প্রায়
৫১ বছর আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স
মুবারক ছিলেন প্রায় ১৮ বছর।” সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত মু‘জিযা শরীফ উনার বহিঃপ্রকাশ:
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
وكانت
ذات جمال
رائع ذكر
ابن قدامة
أن نفرا
من الحبشة
كانوا
ينظرون
إليها،
ويعجبون
من جمالها
فتأذت
من ذلك
فدعت عليهم
فهلكوا
جميعا.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন অতি
বিস্ময়কর বেমেছাল খুব ছূরত মুবারক উনার অধিকারিণী। হযরত ইমাম ইবনে কুদামাহ
রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উল্লেখ করেছেন যে, হাবশার এক দল লোক উনার দিকে তাকাতো এবং উনার সম্মানিত ছূরত
মুবারক-এ অভিভূত হয়ে বিস্ময় প্রকাশ করতো। এতে তিনি খুব কষ্ট পেতেন। ফলে তিনি তাদের
বিরুদ্ধে বদদোয়া করেন এবং তারা সকলেই ধ্বংস হয়ে যায়।” সুবহানাল্লাহ! (শারহুয
যারক্বানী ‘আলাল মাওয়াহিব ৪/২৩৩)
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,
أن
فتيان
أهل الحبشة
كانوا
يعرضون
للسيدة
رقية وينظرون
إليها
ويعجبون
من جمالها
فأذاها
ذلك فدعت
عليهم
جميعا
فهلكوا.
অর্থ: “নিশ্চয়ই হাবশার একদল যুবক সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস
সালাম উনাকে দেখার জন্য আসতো, উনার দিকে তাকিয়ে থাকতো এবং উনার সম্মানিত সৌন্দর্য মুবারক-এ অভিভূত হয়ে
বিস্ময় প্রকাশ করতো। এইভাবে তারা উনাকে কষ্ট দিতো। তাই তিনি তাদের প্রত্যেকের
বিরুদ্ধে বদদোআ করেন। তারপর তারা সকলেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।” সুবহানাল্লাহ!
(সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৩৪)
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে, “সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন মানুষের মাঝে
সর্বাধিক সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারিণী। সুবহানাল্লাহ! তিনি যখন হাবশায় সম্মানিত
অবস্থান মুবারক করছিলেন, তখন
হাবশার একদল যুবক সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে দেখে
বারবার উনার নিকট আসা যাওয়া করতো এবং উনার সম্মানিত সৌন্দর্য মুবারক-এ বিস্ময়
প্রকাশ করতো। এতে তিনি খুব কষ্ট পেতেন। অতঃপর
قَتَلَهُمُ
اللهُ
فِي الْمَعْرَكَةِ
لَمَّا
سَارَ
النَّجَاشِيُّ
إِلَى
عَدُوِّهِ
অর্থ: “নাজ্জাশী যখন শত্রুদের
বিরুদ্ধে জিহাদে বের হয়েছিলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি সেই জিহাদে এই সকল দুষ্ট লোকদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দেন।”
সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরকে হাকিম ৪/৫১)
অপর বর্ণনায় রয়েছে,
فقتلهم
الله جميعا
لم يفلت
منهم أحد.
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদের প্রত্যেককেই নিশ্চিহ্ন করে দেন। তাদের কেউ
এর (সেই খোদায়ী গযব) থেকে পরিত্রাণ পায়নি।” সুবহানাল্লাহ! (সীরাতে ইবনে ইসহাক্ব
১/২১৮)
প্রকৃতপক্ষে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্পূর্ণ
জিন্দেগী মুবারকখানাই সম্মানিত কুদরত মুবারক এবং সম্মানিত মু’জিযা শরীফ উনাদের
অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ! তবে কেনো কোনো সময় উনার কোনো কোনো মহাসম্মানিত শান
মুবারক প্রকাশ পেয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছানিয়া আলাইহাস সালাম উনার সাথে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন
নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার বেমেছাল মুহব্বতপূর্ণ সম্পর্ক মুবারক
বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাদের
মাঝে বেমেছাল মিল-মুহব্বত মুবারক বিদ্যমান ছিলো। আরবের লোকজন বলাবলি করতো এবং এই
কথাটি উপমায় পরিণত হয়েছিলো যে,
اَحْسَنُ
زَوْجَيْنِ
رَاٰهُمَا
اِنْسَانٌ
حَضْرَتْ
رُقَيَّةَ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
وَزَوْجَهَا
حَضْرَتْ
عُثْمَانَ
عَلَيْهِ
السَّلَامُ
অর্থ: “মানুষের দেখা সম্মানিত দম্পতি মুবারক উনাদের মধ্যে বিনতু রসূলিল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস
সালাম তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত যাওজুম মুকাররাম সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন
আলাইহিস সালাম উনারা সর্বোত্তম।” সুবহানাল্লাহ! (ইছাবাহ ৭/৬৯৮, বিদায়া-নিহায়া ৭/২২৩, মুখতাছারু তারীখে দিমাশক্ব ৫/১৭৫ ইত্যাদি)
ইমাম ত্ববারনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বশ্বিখ্যাত কিতাব ‘আল মু’জামুল
কাবীর শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেন,اَنَّ
رَسُوْلَ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
دَخَلَ
عَلَى
ابْنَتِهِ
وَهِي
تَغْسِلُ
رَأْسَ
عُثْمَانَ
عَلَيْهِ
السَّلَامُ
فَقَالَ
يَا بُنَيَّةُ
احْسِنِـىْ اِلـٰى
اَبِـىْ
عَبْدِ
اللهِ
فَاِنَّهٗ
اَشْبَهُ
اَصْحَابِىْ
بِىْ خُلُقًا.
অর্থ: “একদা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত লখতে জিগার মুবারক সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত হুজরা শরীফ-এ তাশরীফ মুবারক নিয়ে দেখেন যে, তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার
সম্মানিত মাথা মুবারক ধৌত করে দিচ্ছেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, হে আমার মহাসম্মানিত লখতে জিগার মুবারক, আপনি হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সাথে উত্তম আচরণ
মুবারক করবেন। কেননা আমার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের
মধ্যে চরিত্র মুবারক-এ আমার সাথে উনার অধিক মিল রয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ! (আল
মু’জামুল কাবীর ১/৭৬)
আরো বর্ণিত রয়েছে,
عَنْ
اَبِىْ
هُرَيْرَةَ
رَضِىَ
اللهُ
تَعَالـٰى
عَنْهُ
قَالَ
دَخَلْتُ
عَلـٰى
حَضْرَتْ
رُقَيَّةَ
بِنْتِ
رَسُوْلِ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
امْرَاَةِ
حَضْرَتْ
عُثْمَانَ
عَلَيْهِ
السَّلَامُ
وَفِىْ
يَدِهَا
مُشْطٌ
فَقَالَتْ
خَرَجَ
مِنْ عِنْدِىْ
رَسُولُ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
اٰنِفًا
رَجَّلْتُ
رَأْسَهٗ
فَقَالَ
كَيْفَ
تَجِدِيْنَ
اَبَا
عَبْدِ
اللهِ
عَلَيْهِ
السَّلَامُ
قُلْتُ
بِخَيْرٍ
قَالَ
اَكْرِمِيْهِ
فَاِنَّهٗ
مِنْ اَشْبَهِ
اَصْحَابِـىْ
بِـىْ
خُلُقًا.
অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন, আমি একদা সাইয়্যিদুনা হযরত
যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার ‘যাওজাতুম মুকাররমাহ’ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত হুজরা শরীফ মুবারক-এ প্রবেশ করলাম। তখন আমি
দেখতে পেলাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত হাত
মুবারক-এ একখানা চিরুনী মুবারক। তারপর তিনি বললেন, একটু আগে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এখান থেকে বের হয়েছেন। তিনি দেখেছেন যে, আমি সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার
সম্মানিত মাথা মুবারক আঁচড়িয়ে দিচ্ছি, উনার চুল মুবারক বিন্যাস মুবারক করে দিচ্ছি। সুবহানাল্লাহ! তারপর তিনি ইরশাদ
মুবারক করেছেন, আপনি হযরত যুন
নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাকে কিরূপ পেয়েছেন? আমি বললাম, অতি উত্তম পেয়েছি। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সাথে উত্তম আচরণ মুবারক
করবেন। কেননা আমার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের মধ্যে
চরিত্র মুবারক-এ আমার সাথে উনার অধিক মিল রয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ! (আল মু’জামুল
কাবীর ১/৩৯, মা’রিফাতুছ
ছাহাবাহ লিলবাগবী ৪/১৪০, মা’রিফাতুছ
ছাহাবাহ লিআবী না‘ঈম ১/২৪৮, ফাদ্বায়িলুছ ছাহাবাহ লিআহমদ ইবনে হাম্বল ১/৫১০, মাজমাউয যাওয়ায়িদ ৮/৩৮৭, জামিউল আহাদীছ ৩৯/২৩০ ইত্যাদি) মূলত, পুরুষ-মহিলা সকলের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ
আলাইহাস সালাম উনাকে এবং সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাকে অর্থাৎ
উনাদেরকে উত্তমভাবে অনুসরণ করা। যদি তারা তা করতে পারে, তাহলে পৃথিবীর বুক থেকে সমস্ত ফিতনা-ফাসাদ মিটে যেয়ে, দুনিয়াটাই জান্নাতে পরিণত হয়ে যাবে। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে সেই তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার আযীমুশ শান সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ
উতবা যখন বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত
আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক
দেয়া থেকে মাহরূম হয়ে যায়, তখন মহান
আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত ওহী মুবারক প্রেরণ করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জানিয়ে দেন যে, আমার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম! আমি (মহান আল্লাহ পাক) বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সাথে হযরত যুন
নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ
সুসম্পন্ন করেছি। সুবহানাল্লাহ! আপনিও উনাদের সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ দুনিয়ার
যমীনে সুসম্পন্ন করুন। সুবহানাল্লাহ! তাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অনুষ্ঠানিকভাবে দুনিয়াতে সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি
আ‘লাল আলামীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সাথে
সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ
সুসম্পন্ন করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ১০ বছর আর
সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৩৭
বছর। সুবহানাল্লাহ!
এই সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক
হয়েছে,
عَنْ
اُمِّ
الْـمُؤْمِنِيْنَ
حَضْرَتْ
عَائِشَةَ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
قَالَتْ
قَالَ
رَسُوْلُ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
اِنَّ
اللهَ
عَزَّ
وَجَلَّ
اَوْحٰى اِلَىَّ
اَنْ اُزَوِّجَ
كَرِيـْمَتَـىَّ
مِنْ حَضْرَتْ
عُثْمَانَ
عَلَيْهِ
السَّلَامُ
حَضْرَتْ
رُقَيَّةَ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
وَحَضْرَتْ
اُمَّ
كُلْثُوْمٍ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস
সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক
তিনি আমার নিকট সম্মানিত ওহী মুবারক প্রেরণ করেছেন, আমি যেন আমার মহাসম্মানিতা দুই আওলাদ আলাইহিমাস সালাম
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার ও সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন
নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ হযরত
যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সাথে সুসম্পন্ন করি।” সুবহানাল্লাহ! (মা’রিফাতুছ
ছাহাবা-লি আবী নাঈম ২২/২২৪)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ
حَضْرَتْ
اِبْنِ
عَبَّاسٍ
رَضِىَ
اللهُ
تَعَالـٰى
عَنْهُ
قَالَ
قَالَ
رَسُوْلُ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
اِنَّ
اللهَ
تَعَالـٰى
اَوْحـٰى
اِلَـىَّ
اَنْ اُزَوِّجَ
كَرِيـْمَتَـىَّ
مِنْ حَضْرَتْ
عُثْمَانَ
عَلَيْهِ
السَّلَامُ
يَعْنِـىْ
حَضْرَتْ
رُقَيَّةَ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
وحَضْرَتْ
اُمَّ
كُلْثُوْمٍ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ.
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমার নিকট সম্মানিত
ওহী মুবারক প্রেরণ করেছেন, আমি যেন
আমার দুই মহাসম্মানিতা আওলাদ আলাইহিমাস সালাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ
আলাইহাস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার
অর্থাৎ উনাদের সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সাথে
সুসম্পন্ন করি।” সুবহানাল্লাহ! (ফাদ্বাইলুছ ছাহাবা ১/১১২, আল মু’জামুল আওসাত্ব ৪/১৮, আল মু’জামুছ ছগীর ১/২৫৩, মাজমাউয যাওয়াইদ ৫/৩৮৯, আল ফাতহুল কাবীর ১/৩০৪, জামিউল আহাদীছ ৭/৪৭৬, ইবনে আদী ৫/৭০, ইবনে আসাকির ৩৯/৪১, জামউল
জাওয়ামি’ ১/৮৩৭২, যাখয়েরুল উক্ববা
লি-মুহিব্বে ত্ববারী ১/১৬৩, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৩৩, আর রিয়াদ্বুন নাদ্বরাহ ১/২০২ ইত্যাদি)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ
حَضْرَتْ
اَنَسِ
بْنِ مَالِكٍ
رَضِىَ
اللهُ
تَعَالـٰى
عَنْهُ
قَالَ
قَالَ
رَسُوْلُ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
خَيْرُ
الشَّفِيْعِ
لِـحَضْرَتْ
عُثْمَانَ
عَلَيْهِ
السَّلَامُ
مَااَنَا
اُزَوِّجُ
بَنَاتِىْ
وَلٰكِنَّ
اللهَ
تَعَالـٰى
يُـزَوِّجُـهُـنَّ.
অর্থ: “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার জন্য সর্বোত্তম
সুপারিশকারী রয়েছেন। আমি আমার মহাসম্মানিত বানাত আলাইহিমাস সালাম উনাদের সাথে হযরত
যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার নিসবতে আযীম শরীফ সুসম্পন্ন করিনি; বরং মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বয়ং নিজেই সেটা সুসম্পন্ন
করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরকে হাকিম)
সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার যবান মুবারক-এ আযীমুশ শান
নিসবতে আযীম শরীফ উনার বর্ণনা মুবারক:
সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আমি সম্মানিত কা’বা শরীফ উনার আঙ্গিনায় কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে
বসেছিলাম। এমন সময় জনৈক ব্যক্তি হঠাৎ উপস্থিত হয়ে জানায় যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত লখতে জিগার মুবারক সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে আবূ লাহাবের পুত্র উতবার সাথে সম্মানিত আক্বদ মুবারক
দিয়েছেন। রূপ-সৌন্দর্য এবং বেমেছাল গুণ-বৈশিষ্ট্যের জন্য সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন
নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি মশহুর ছিলেন। এ কারণে উনার সম্মানিত খিদমত
মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য আমার প্রবল ইচ্ছা ছিলো। এ খবর শুনে আমি
বিচলিত হয়ে পড়ি এবং সোজা ঘরে চলে যাই। ঘরে ছিলেন আমার সম্মানিতা খালা সু’দা বিনতে
কুরাইয রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহা। তিনি পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবের ইলম রাখতেন।
আমাকে দেখেই তিনি বলেন,
اَبْشِرْ
وَحُيِّيْتَ
ثَلَاثًا
تَتْرَا
... ثُـمَّ
ثَلَاثًا
وَّثَلَاثًا
اُخْرٰى
ثُـمَّ
بِاُخْرٰى
كَىْ تَتِمَّ
عَشْرَا
... اَتَاكَ
خَيْرٌ
وَّوُقِيْتَ
شَرَّا
اُنْكِحَتْ
وَاللهِ
حَصَانًا
زَهْرَا
... وَاَنْتَ
بِكْرٌ
وَّلَقِيْتَ
بِكْرَا
وَافَيْتَهَا
بِنْتَ
عَظِيْمٍ
قَدْرَا...بَنَيْتَ
اَمْرًا
قَدْ اَشَادَ
ذِكْرَا
অর্থ:“(হে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম!) আপনার জন্য সুসংবাদ।
আপনাকে তিনবার সালাম। এরপর তিনবার, আবার তিনবার আপনাকে সালাম। এরপর একবার। এমনিভাবে দশবার সালাম পূর্ণ হোক।
সুবহানাল্লাহ! আপনি কল্যাণ মুবারক লাভ করেছেন এবং অমঙ্গল ও অকল্যাণ থেকে রক্ষা
পেয়েছেন। মহান আল্লাহ পাক উনার শপথ! আপনি এমন একজন মহাসম্মানিতা ব্যক্তিত্বা
মুবারক উনাকে সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ করবেন, যিনি হবেন ফুলের মতো নিষ্কুলষ তথা মহাপবিত্রা এবং বেমেছাল
সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারিণী। সুবহানাল্লাহ! আপনিও অবিবাহিত আর আপনার
মহাসম্মানিতা ‘যাওজাতুম মুকাররমাহ’ তিনিও বাকিরাহ অর্থাৎ কোনো জিন-ইনসানের স্পর্শ
মুবারক-এ আসেননি। তিনি হবেন এক মহান মর্যাদাবান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনার মেয়ে। আপনি
এমন এক মহাসম্মানিত কাজ মুবারক উনার ভিত্তি স্থাপন করেছেন, যা আপনার সুমহান মর্যাদা-মর্তবা মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ
ঘটাবেন।” সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি বলেন,
فَعَجِبْتُ
مِنْ قَوْلـِهَا
حَيْثُ
تُبَشِّرُنِـىْ
بِامْرَأَةٍ
قَدْ تَزَوَّجَتْ
بِغَيْرِىْ
فَقُلْتُ
يَا خَالَةُ
مَا تَقُوْلِيْنَ
অর্থ: “আমি উনার মুখে এসব কথা শুনে বিস্মিত হলাম। কারণ তিনি আমাকে এমন এক মহাসম্মানিতা
ব্যক্তিত্বা মুবারক উনার সুসংবাদ মুবারক দিচ্ছেন, যেই মহাসম্মানিতা ব্যক্তিত্বা মুবারক উনার আক্বদ মুবারক
হয়েছে, আমি ছাড়া অন্য একজনের সাথে।
তখন আমি বললাম, খালাজান আপনি কী
বলছেন?”
জবাবে তিনি বললেন,
عُثْمَانُ
يَا عُثْمَانُ
يَا عُثْمَانُ
...
لَكَ
الْـجَمَالُ
وَلَكَ
الشَّانُ
هٰذَا
نَبِـىٌّ
مَعَهُ
الْبُرْهَانُ...
اَرْسَلَهٗبِـحَقِّهِ
الدَّيَّانُ
وجَاءَهُ
التَّنْزِيْلُ
وَالْفُرْقَانُ
...
فَاتْبَعْهُ
لَا تَغْتَالُكَ
الْاَوْثَانُ
অর্থ: “হে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম! হে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন
নূরাইন আলাইহিস সালাম! হে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম! আপনার রয়েছে
বেমেছাল সৌন্দর্য মুবারক এবং সীমাহীন মর্যাদা মুবারক। আর তিনি হচ্ছেন মহাসম্মানিত
নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। উনার সাথে রয়েছে বুরহান। মহান আল্লাহ পাক
তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে
সত্য-সঠিক দ্বীনসহ প্রেরণ করেছেন। আর তিনি ‘আত তানযীল ও আল ফুরক্বান’ তথা
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ নিয়ে এসেছেন। সুবহানাল্লাহ! অতএব, আপনি উনাকে অনুসরণ করুন। মূর্তি যেন আপনাকে ভুল পথে নিয়ে না
যায়।”
অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি বলেন,
قُلْتُ
يَا خَالَةُ
اِنَّكِ
لَتَذْكُرِيْنَ
شَيْئًا
مَّا وَقَعَ
ذِكْرُهٗ
بِبَلَدِنَا
فَاَبِيْنِيْهِ
لِـىْ
فَقَالَتْ
“আমি বললাম, হে খালা, আপনি এমন কিছু কথা বলছেন, যা আমাদের দেশে এখনো প্রকাশ পায়নি, সংঘটিত হয়নি।” তখন তিনি বললেন,
مُحَمَّدُ
بْنُ عَبْدِ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
- رَسُوْلٌمِّنْ
عِنْدِ
اللهِ.
جَاءَ
بِتَنْزِيْلِ
اللهِ
-يَدْعُوْ
بِهٖاِلَى
اللهِ.
ثُـمَّ
قَالَتْ
مِصْبَاحُهٗ
مِصْبَاحُ-
وَدِيْنُهٗ
فَلَاحُ.
وَاَمْرُهٗ
نَجَاحُ-
وَقَرْنُهٗ
نَطَاحُ.
ذَلَّتْ
لَهٗ الْبِطَاحُ-
مَا يَنْفَعُ
الصِّيَاحُ.
لَوْ وَقَعَ
الـذِّبَاحُ
-وَسُلَّتِ
الصِّفَاحُ.
وَمُدَّتِ
الرِّمَاحُ.
অর্থ: “নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম। মহান আল্লাহ পাক উনার কাছ থেকে অবতীর্ণ কিতাব তথা মহাসম্মানিত ও
মহাপবিত্র কুরআন শরীফ নিয়ে এসেছেন। এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কিতাব মুবারক উনার
মাধ্যমে তিনি মানুষকে মহান আল্লাহ পাক উনার দিকে আহ্বান মুবারক করেন। উনার
সম্মানিত নূর মুবারকই প্রকৃত আলোকদীপ্ত। উনার সম্মানিত দ্বীনই কল্যাণ। উনার
নির্দেশ মুবারকই সাফল্য। সুবহানাল্লাহ!
উপত্যকার পর উপত্যকা উনার অনুগত (সমগ্র দেশ, সমস্ত কায়িনাত উনার অনুগত)। জিহাদে কাফেররা নিহত হলে, তরবারি উত্তোলিত হলে এবং বর্শা নিক্ষিপ্ত হলে, হৈ হুল্লোড় করা উপকারী হবে না।”
আমার খালার এসব কথাবার্তা আমার মনে বিরাট প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। আমি পরিণাম
সম্পর্কে চিন্তা করতে থাকি। আমি অধিকন্তু সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর
আলাইহিস সালাম উনার কাছে বসতাম। এরপর একবার উনার কাছে যাই। তখন তিনি একা। যেহেতু
তিনি ছিলেন আমার বন্ধু, তাই আমি
উনার কাছে আমার খালার বক্তব্যের সারকথা বললাম। তিনি বললেন, হে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম! আপনি
বুদ্ধিমান লোক। আপনি যদি হক্ব ও বাতিলের পার্থক্য না করেন, তা হবে অবাক হওয়ার কথা। আপনার জাতি যে মূর্তির পূজা করে, তা কি পাথরের তৈরি নয়? এগুলো না শুনতে পায়, না দেখতে পায়, না উপকার করতে পারে আর না পারে ক্ষতি করতে। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন
আলাইহিস সালাম তিনি বলেন,
قُلْتُ
بَلـٰى
وَاللهِ
اِنَّـهَا
لَكَذٰلِكَ
قَالَ
وَاللهِ
لَقَدْ
صَدَقَتْكَ
خَالَتُكَ
هٰذَا
مُحَمَّدُ
بْنُ عَبْدِ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
قَدْ بَعَثَهُ
اللهُ
بِرِسَالَتِه ٖ
اِلـٰى
جَمِيْعِ
خَلْقِهٖ
অর্থ: “আমি বললাম, মহান
আল্লাহ পাক উনার কসম! আপনি যা বলছেন, তা একান্ত ঠিকই বলছেন। তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার শপথ করে বলছি, আপনার খালা যা বলেছেন, অবশ্যই
তা ঠিকই বলেছেন। তিনি হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম। মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাকে সমস্ত কায়িনাতের জন্য রসূল হিসেবে
প্রেরণ করেছেন।” সুবহানাল্লাহ!
আপনি উনার কাছে যান, তিনি কি বলেন, শুনলে ক্ষতি কি? এক বর্ণনায়
রয়েছে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আমি তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ গেলাম। অপর বর্ণনায় রয়েছে, এমতাবস্থায় স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদের এখানে নিজে যাহির হন। সুবহানাল্লাহ!
অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি বলেন, হে হযরত
সাইয়্যিদুনা যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম! মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে সম্মানিত
জান্নাত উনার দিকে ডাকছেন। আপনি উনার ডাকে সাড়া দিন।
فَاِنِّـىْ
رَسُوْلُ
اللهِ
اِلَيْكَ
واِلـٰى
جَمِيْعِ
خَلْقِهٖ
অর্থ: “নিশ্চয়ই আমি আপনিসহ সমস্ত কায়িনাতের জন্য রসূল হিসেবে প্রেরিত হয়েছি।”
সুবহানাল্লাহ!
উনার কথা মুবারকগুলোতে কি প্রভাব ছিলো, তা মহান আল্লাহ পাক তিনিই ভালো জানেন। আমি আর নিজেকে সংবরণ
করতে পারিনি। আমি বেকারার হয়ে কালিামায়ে শাহাদাত শরীফ পাঠ করে মুসলমান হই।
সুবহানাল্লাহ!
ثُـمَّ
لَـمْ
اَلْبَثْ
اَنْ تَزَوَّجْتُ
حَضْرَتْ
رُقَيَّةَ
بِنْتَ
رَسُوْلِ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
فَكَانَ
يُقَالُ
اَحْسَنُ
زَوْجٍ
رَاٰهُ
اِنْسَانٌ
حَضْرَتْ
رُقَيَّةَ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
وَزَوْجَهَا
حَضْرَتْ
عُثْمَانَ
عَلَيْهِ
السَّلَامُ.
অর্থ: “তারপর অনতিবিলম্বে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম
উনার সাথে আমার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ সুসম্পন্ন হয়। সুবহানাল্লাহ! এরপর মানুষ
বলাবলি করতো, সর্বোত্তম যুগল
মুবারক যা মানুষ দেখতে পেয়েছে, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন
নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা।” সুবহনাল্লাহ!
এ প্রসঙ্গে উনার খালা হযরত সু’দা বিনতে কুরাইয রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা
তিনি বলেন,
هَدَى
اللهُ
عُثْمَانًا
ۢبِقَوْلِـىْ
اِلَى
الْـهُدٰى ...
وَاَرْشَدَهٗ
وَاللهُ
يَهْدِىْ اِلَـى
الْـحَقِّ
فَتَابَعَ
بِالرَّأْىِ
السَّدِيْدِ
مُـحَمَّدًا
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ...
وَّكَانَ
بِرَأْىٍ
لَّا يَصُدُّ
عَنِ الصِّدْقِ
وَاَنْكَحَهُ
الْمَبْعُوْثُ
بِالْـحَقِّ
بِنْتَهٗ ...
فَكَانَا
كَبَدْرٍ
مَّازَجَ
الشَّمْسَ
فِـى الْاُفْقِ
فِدَاؤُكَ
يَا ابْنَ
الْـهَاشِـمِيِّيْنَ
مُهْجَتِـىْ
...
وَاَنْتَ
اَمِيْنُ
اللهِ
اُرْسِلْتَ
لِلْخَلْقِ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি আমার কথা মতে সাইয়্যদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস
সালাম উনাকে হিদায়াত মুবারক দিয়েছেন এবং উনাকে পথ দেখিয়েছেন। আর মহান আল্লাহ পাক
তিনি তো পথ দেখান সত্যের দিকে। তাই তিনি অনুসরণ করেছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঠিক মত-পথ মুবারক। আর উনার মত-পথ
মুবারক কখনোই সত্য হতে বিচ্যুত নয়। সত্যসহ প্রেরিত (নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি) সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ
দিয়েছেন উনার নিকট নিজ মহাসম্মানিতা বানাত (মেয়ে) আলাইহাস সালাম উনাকে। ফলে উনারা
উভয়ে হয়েছেন জ্যোৎসনার চাঁদের মতো, যা মিলিত হয়েছে আকাশ প্রান্তে সূর্যের সঙ্গে। হে হাশিমী
আওলাদ! আপনার জন্য উৎসর্গ আমার প্রাণ। আর
আপনিতো মহান আল্লাহ পাক উনার ‘আমীন’, প্রেরিত হয়েছেন আপনি সৃষ্টিকুলের জন্য।” সুবহানাল্লাহ! (আল বিদায়াহ ওয়ান
নিহায়াহ, খছাইছুল কুবরা, ইছাবা, জামিউল আহাদীছ, কানযুল উম্মাল, কাওছারুল মা‘আনী, আর রিয়াদুন নাদ্বরাহ, তারীখে
দিমাশক্ব ইত্যাদি)
বিদ্বয়াতুম মির রসূলিল্লাহ, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত
ছূরত মুবারক
বিদ্ব‘য়াতুম
মির রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস
সালাম তিনি ছিলেন বেমেছাল সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারিণী। সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত
আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনারা প্রত্যেকেই প্রত্যেকের মাক্বাম মুবারক-এ অনন্যা।” সুবহানাল্লাহ!
তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন উম্মুল মু’মিনীন আল
ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার হুবহু নকশা মুবারক।
সুবহানাল্লাহ! আর আন নূরুর রাবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি
ছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
হুবহু নকশা মুবারক। সুবহানাল্লাহ! আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস
সালাম উনার এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ
উনাদের উভয়ের সম্মানিত নিসবত মুবারক ছিলো উভয় দিক থেকে। অর্থাৎ উনারা নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উম্মুল
মু‘মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের
থেকে সমানভাবে সম্মানিত নিসবত মুবারক পেয়েছিলেন।” সুবহানাল্লাহ!
আর এ কারণেই কিতাবে বর্ণিত রয়েছে যে, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার
এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার অর্থৎ উনাদের উভয়ের
মাঝে সীরত-ছূরত মুবারক, আকার-আকৃতি
মুবারক, চাল-চলন মুবারক সর্বদিক থেকে
হুবহু মিল ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল সৌন্দর্য
মুবারক সম্পর্কে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি বলেন,
وَكَانَتْ
سَيِّدَتُنَا
حَضْرَتْ
رُقَيَّةُ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
ذَاتَ
جَمَالٍ
رَائِعٍ
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন অতি
বিস্ময়কর বেমেছাল সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারিণী ছিলেন।” সুবহানাল্লাহ! (খছায়িছুল
কুবরা শরীফ ১/২১৫, ইবনে আসাকির)
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,
وَكَانَتْ
ذَاتَ
جَمَالٍ
رَائِعٍ
ذَكَرَ
ابْنُ
قُدَامَةَ
اَنَّ
نَفَرًا
مِّنَ
الْـحَبَشَةِ
كَانُوْا
يَنْظُرُوْنَ
اِلَيْهَا
وَيَعْجَبُوْنَ
مِنْ جَمَالِـهَا
فَتَاَذَّتْ
مِنْ ذٰلِكَ
فَدَعَتْ
عَلَيْهِمْ
فَهَلَكُوْا
جَمِيْعًا.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন অতি
বিস্ময়কর বেমেছাল সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারিণী। হযরত ইমাম ইবনে কুদামাহ
রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উল্লেখ করেছেন যে, হাবশার এক দল লোক উনার দিকে তাকাতো এবং উনার বেমেছাল
সৌন্দর্য মুবারক-এ অভিভূত হয়ে বিস্ময় প্রকাশ করতো। এতে তিনি খুব কষ্ট পেতেন। ফলে
তিনি তাদের বিরুদ্ধে বদদোয়া করেন এবং তারা সকলেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।”
সুবহানাল্লাহ! (শারহুয যারক্বানী ‘আলাল মাওয়াহিব ৪/২৩৩)
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,
وَكَانَتْ
مِنْ اَحْسَنِ
الْبَشَرِ.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন মানুষের
মাঝে সর্বাধিক সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারিণী।” সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,
عَنْ
حَضْرَتْ
اُسَامَةَ
بْنِ زَيْدٍ
رَضِىَ
اللهُ
تَعَالـٰى
عَنْهُ
قَالَ
بَعَثَنِىَ
النَّبِىُّ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
اِلـٰى
حَضْرَتْ
عُثْمَانَ
عَلَيْهِ
السَّلَامُ
بِصَحْفَةٍ
فِيْهَا
لَـحْمٌ
فَدَخَلْتُ
عَلَيْهِ
وَحَضْرَتْ
رُقَيَّةُ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
جَالِسَةٌ
فَمَا
رَأَيْتُ
اثْنَيْنِ
اَحْسَنَ
مِنْهُمَا
فَجَعَلْتُ
مَرَّةً
اَنْظُرُ
اِلـٰى
حَضْرَتْ
رُقَيَّةَ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
وَمَرَّةً
اَنْظُرُ
اِلـٰى
حَضْرَتْ
عُثْمَانَ
عَلَيْهِ
السَّلَامُ
فَلَمَّا
رَجَعْتُ
قَالَ
لِىَ النَّبِىُّ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
اَدَخَلْتَ
عَلَيْهِمَا
قُلْتُ
نَعَمْ
قَالَ
هَلْ رَأَيْتَ
زَوْجًا
اَحْسَنَ
مِنْهُمَا
قُلْتُ
لَا يَا
رَسُوْلَ
اللهِ
صَلَّى
اللهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
لَقَدْ
جَعَلْتُ
اَنْظُرُ
مَرَّةً
اِلـٰى
حَضْرَتْ
رُقَيَّةَ
عَلَيْهَا
السَّلَامُ
وَمَرَّةً
اِلـٰى
حَضْرَتْ
عُثْمَانَ
عَلَيْهِ
السَّلَامُ
قَالَ
اَبُو
الْقَاسِمِ
رَحِمَهُ
اللهُ
وَهٰذَا
كَانَ
قَبْلَ
نُزُوْلِ
اٰيَةِ
الْحِجَابِ.
অর্থ: “হযরত উসামা ইবনে যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একখানা পাত্র মুবারক-এ
কিছু গোশত মুবারকসহ আমাকে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার নিকট
পাঠালেন। আমি উনার নিকট গেলাম। আমি যেয়ে দেখতে পেলাম যে, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি
সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার পাশে বসা। আমি উনাদের দু’জনের
চেয়ে এতো অধিক সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারী দ্বিতীয় দু’জন আর কখনো দেখিনি।
সুবহানাল্লাহ! অতঃপর আমি একবার সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম
উনার দিকে তাকাতে থাকলাম, আরেকবার
সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার দিকে তাকাতে থাকলাম। তারপর আমি
যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ উপস্থিত হলাম, তখন তিনি আমাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনি কি উনাদের দু’জনের নিকট গিয়েছিলেন? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, আপনি কি
উনাদের দু’জন থেকে অধিক সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারী আর কোনো যুগল মুবারক দেখেছেন? আমি বললাম- না, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। অবশ্যই আমি
একবার সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার দিকে তাকাচ্ছিলাম, আরেকবার সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার
দিকে তাকাচ্ছিলাম। ইমাম আবুল ক্বাসিম ত্ববারনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, এই বিষয়টি ঘটেছিলো, পর্দার বিধান নাযিল হওয়ার পূর্বে।” সুবহানাল্লাহ! (আল
মু’জামুল কাবীর ১/৭৬, মাজমাউয যাওয়ায়িদ
৮/৩৮৬, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ
১১/৩৪)
এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি কত বেমেছাল সৌন্দর্য
মুবারক উনার অধিকারিণী ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, সম্মানিত চরিত্র মুবারক উনার দিক থেকেও তিনি ছিলেন সমস্ত
জিন-ইনসান, তামাম
কায়িনাতবাসী সকলের জন্য সর্বোত্তম আদর্শ মুবারক। মূলত, তিনি হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হুবহু ক্বায়িম-মাক্বাম হিসেবে সমস্ত
কায়িনতাবসীর জন্য আবাদুল আবাদের জন্য অনুসরণীয়-অনুকরণীয়। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
لَقَدْ
كَانَ
لَكُمْ
فِـىْ
رَسُوْلِ
اللهِ
اُسْوَةٌ
حَسَنَةٌ অর্থ: “নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য তোমাদের যিনি রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে সর্বোত্তম
আদর্শ মুবারক নিহিত রয়েছে।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ :
সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২১)
এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার পরিপূর্ণ মিছদাক্ব হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! তাই সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী আমাদের সকলের জন্য ফরয হচ্ছে-
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে সর্বোত্তমভাবে
অনুসরণ-অনুকরণ করা। তবেই ইহক্বাল ও পরকালে হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল করা যবে।
সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে সেই তাওফীক্ব দান করুন। আমীন
0 Comments:
Post a Comment