সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানি ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উপলক্ষে যাঁরা খুশি প্রকাশ করবেন, উনারা অবশ্যই জান্নাতী হবেন
সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ اَحَبَّ سُنَّتِـىْ فَقَدْ اَحَبَّـنِـىْ وَمَنْ اَحَبَّنِـىْ كَانَ مَعِـى فِـى الْـجَنَّةِ.
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার কোনো একটি সম্মানিত সুন্নত মুবারক উনাকে মুহব্বত করলো, সে মূলত, আমাকেই মুহব্বত করলো। আর যে ব্যক্তি আমাকে মুহব্বত করলো, সেই ব্যাক্তি তিনি মূলত, আমার সাথেই সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ অবস্থান মুবারক করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (তুহফাতুল আহওয়াযী বিশরহি জামিয়িত তিরমিযী ৭/৩৭১, জামি‘উল উছূল ফী আহাদীছির রসূল ৯/৫৬৭, ক্বওয়া‘িয়দুত তাহদীছ ১/৫৫, তিরমিযী শরীফ, শরহুল বুখারী ১/৪০৯, মিরক্বাত শরীফ ১/২৬২, তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ)
এখন বলার বিষয় হচ্ছে- একখানা সম্মানিত সুন্নত মুবারক উনাকে মুহব্বত করলে যদি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ অবস্থান করা যায়, তাহলে যেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক উনার সম্মানিত জিসম মুবারক-এ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নূরুন নাজাত (রক্ত) মুবারক প্রবাহিত, যেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক উনার মুবারক উসীলায় লক্ষ-কোটি সম্মানিত সুন্নত মুবারক জারি হচ্ছে এবং ক্বিয়ামত অবধি জারি হতেই থাকবে- সেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক, হাবীবাতুল্লাহ, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনাকে যাঁরা মুহব্বত করবে, উনার মুহব্বতে উনার সম্মানিত ও পবিত্র কুরআন শরীফ বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করবে, ফালইয়াফরহূ তথা মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করবে, বিশেষ মাহফিল উনার ইনতেজাম করবে এবং উক্ত সম্মানিত মাহফিল মুবারক-এ যাঁরা শরীক ও শামিল থাকবে উনাদের অবস্থা কী হবে?
মূলত, উনারা প্রত্যেকেই অবশ্যই অবশ্যই জান্নাতী হবেন এবং সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে থাকবেন, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে থাকবেন। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে কবুল করুন। আমীন!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক আলোচনা করার, সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করার গুরুত্ব, তাৎপর্য ও বেমেছাল ফযীলত মুবারক
সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
اِنَّ ذِكْرَ الصَّالـحِيْنَ تَنْزِلُ الرَّحْمَةُ
অর্থ: “নিশ্চয়ই ওলীআল্লাহগণ উনাদের আলোচনা মুবারক করলে সম্মানিত রহমত মুবারক নাযিল হয়।” সুবহানাল্লাহ্! (ইহইয়ায়ে ‘উলূমিদ্দীন, ফাদ্বাইলে আশারাহ লিযামাখশারী, কাশফুল খফা)
এখন বলার বিষয় যে, যদি ওলীআল্লাহ উনাদের আলোচনা মুবারক করলে সম্মানিত রহমত মুবারক নাযিল হয়, তাহলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুবারক আলোচনা করলে, উনাদের সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করলে কতো সীমাহীন রহমত মুবারক বর্ষিত হবে, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! কেননা, উনাদের সম্মানার্থে, উনাদেরকে মুহব্বত করেই মানুষ ওলীআল্লাহ হয়ে থাকে। সেই ওলীআল্লাহ উনাদের আলোচনা করলে যদি রহমত নাযিল হয়, তাহলে যিনি সম্মানিত রহমত মুবারক উনার মালিক, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আলোচনা মুবারক করলে, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করলে কি পরিমাণ রহমত, বরকত, সাকীনা, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক বর্ষিত হবে, তা কেউ কস্মিনকালেও ভাষা দিয়ে প্রকাশ করতে পারবে না। সুবহানাল্লাহ!
প্রকৃত কথা হলো, যারা সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আলোচনা করবে, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করবে, তারা মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের আখাচ্ছুল খাছ মুহব্বত-মা’রিফত, নিসবত-ক্বুরবত, রিযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করবে। সুবহানাল্লাহ!
মাওলানা জালালুদ্দীন রূমী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার লিখিত বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘মছনবী শরীফ’ উনার ফযীলত বর্ণনা করতে যেয়ে হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেছেন, “যারা ‘মছনবী শরীফ’ পাঠ করবে, তারা ওলীউল্লাহ না হলেও ‘মছনবী শরীফ’ পাঠ করা অবস্থায় তাদের নামগুলো ওলীউল্লাহ উনাদের দফতরে লিখা থাকবে।” সুবহানাল্লাহ!
আর দ্বিতীয় হাজারের মুজাদ্দিদ হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘মাকতূবাত শরীফ’ উনার ব্যাপারে বলেছেন, “কেউ যদি উনার সম্মানিত ‘মাকতূবাত শরীফ’ পাঠ করে, ‘মাকতূবাত শরীফ’ পাঠ করা অবস্থায় নবী না হওয়া সত্ত্বেও তার নাম ‘সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক’ উনার দফতরে লিখা হয়।” সুবহানাল্লাহ!
যদি তাই হয়, তাহলে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক আলোচনা করলে, পাঠ করলে বান্দা-বান্দী, উম্মতের নাম কোন ত্ববকায় লিখা থাকবে, সেটা চিন্তা-ফিকির করতে হবে। সুবহানাল্লাহ! মূলত, তাদের নাম তখন সম্মানিত রিসালত মুবারক উনার তবক্বায় লিখা থাকবে। সুবহানাল্লাহ!
আর যদি কেউ মুহব্বতের সাথে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক আলোচনা করে, পাঠ করে, তাহলে অবশ্যই অবশ্যই তার উপর জাহান্নাম হারাম হয়ে সম্মানিত জান্নাত মুবারক ওয়াজিব হয়ে যাবে। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, সে ব্যক্তি সর্বোচ্চ সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে আবাদুল আবাদের তরে অবস্থান মুবারক করবে। সুবহানাল্লাহ! এতে বিন্দু থেকে বিন্দুতমও সন্দেহের অবকাশ নেই। কেননা, সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ اَحَبَّ سُنَّتِـىْ فَقَدْ اَحَبَّـنِـىْ وَمَنْ اَحَبَّنِـىْ كَانَ مَعِـى فِـى الْـجَنَّةِ.
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার কোনো একখানা সম্মানিত সুন্নত মুবারক উনাকে মুহব্বত করলেন, তিনি মূলত, আমাকেই মুহব্বত করলেন। আর যিনি আমাকে মুহব্বত করলেন, তিনি মূলত, আমার সাথেই সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ অবস্থান মুবারক করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (তুহফাতুল আহওয়াযী বিশরহি জামিয়িত তিরমিযী, জামি‘উল উছূল ফী আহাদীছির রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বওয়া‘িয়দুত তাহদীছ, শরহুল বুখারী, মিরক্বাত শরীফ, তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ)
এখন বলার বিষয় হচ্ছে, একখানা সম্মানিত সুন্নত মুবারক উনাকে মুহব্বত করলে যদি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ অবস্থান করা যায়, তাহলে যেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক উনার সম্মানিত জিসম মুবারক-এ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নূরুন নাজাত (রক্ত) মুবারক প্রবাহিত, যেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক উনার মুবারক উসীলায় লক্ষ-কোটি সম্মানিত সুন্নত মুবারক জারি হচ্ছে এবং ক্বিয়ামত অবধি জারি হতেই থাকবে- সেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক, হাবীবাতুল্লাহ, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনাকে যাঁরা মুহব্বত করবেন, উনাদের ফায়ছালা কী হবে? উনারা কার সাথে, কোন সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ অবস্থান করবেন? মূলত, অবশ্যই অবশ্যই ওই সকল ব্যক্তিত্ব উনারা স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে সর্বোচ্চ সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ চিরস্থায়ীভাবে বসবাস করবেন এবং উনাদের মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক ও জিয়ারত মুবারক-এ আবাদুল আবাদের তরে মশগূল থাকবেন। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আখাচ্ছুল খাছ উম্মত হিসেবে বিবেচিত হবেন এবং স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার ওই সকল উম্মত উনাদেরকে ইহকাল ও পরকালে দায়িমীভাবে শাফায়াত করবেন, উনার আখাচ্ছুল খাছ বিশেষ নেক দৃষ্টি মুবারক, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি, মা’রিফাত-মুহব্বত, তায়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক দান করবেন। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি আহলু বাইত রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে কবূল করুন। আমীন!
সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন সমস্ত কায়িনাতবাসীর জন্য নিরাপত্তাদানকারী
সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ عَلِـىٍّ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ النُّجُوْمُ اَمَانٌ لِّاَهْلِ السَّمَاءِ اِذَا ذَهَبَتِ النُّجُوْمُ ذَهَبَ اَهْلُ السَّمَاءِ وَاَهْلُ بَيْتِـىْ اَمَانٌ لِّاَهْلِ الْاَرْضِ فَاِذَا ذَهَبَ اَهْلُ بَيْـتِـىْ ذَهَبَ اَهْلُ الْاَرْضِ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তারকারাজি আসমানবাসীর জন্য নিরাপত্তাদানকারী। যখন তারকারাজি বিদায় নিবে, তখন আসমানবাসীরাও ধ্বংস হয়ে যাবে। আর আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা হচ্ছেন যমীনবাসীর জন্য, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য নিরাপত্তাদানকারী। যখন আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বিদায় নিবেন, তখন সমস্ত যমীনবাসীরা, সমস্ত কায়িনাতবাসীরা ধ্বংস হয়ে যাবে।” সুবহানাল্লাহ! (ফাদ্বায়িলুছ ছাহাবাহ ২/৬৭১, আছ ছওয়ায়িকুল মুহরিক্বহ ২/৬৭৫, আল মু’জাম ১/৪০৪, মিরক্বাত শরীফ ৯/৩৯৮৮, যাখায়িরুল ‘উক্ববাহ ১/১৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৭)
অপর বর্ণায় এসেছে,
عَنْ حَضْرَتْ سَلَمَةَ بْنِ الْاَكْوَعِ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلنُّجُوْمُ اَمَانٌ لِّاَهْلِ السَّمَاءِ وَاَهْلُ بَيْتِـىْ اَمَانٌ لِّاُمَّتِـىْ.
অর্থ: “হযরত সালামাহ ইবনে আকওয়া’ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তারকারাজি হচ্ছে আসমানবাসীর জন্য নিরাপত্তাদানকারী। আর আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা হচ্ছেন আমার সমস্ত উম্মতের জন্য নিরাপত্তাদানকারী।” সুবহানাল্লাহ! (মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ, মুসাদ্দাদ, আবূ ইয়া’লা, হাকিম, তিরমিযী, ত্ববারনী, ইবনে ‘আসাকির, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৬, যাখায়িরুল ‘উক্ববাহ ১/১৭)
অপর বর্ণনায় রয়েছে,
النُّجُوْمُ اَمَانٌ لِّاَهْلِ السَّمَاءِ وَاَهْلُ بَيْتِـىْ اَمَانٌ لِّاَهْلِ الْاَرْضِ فَاِذَا ذَهَبَ اَهْلُ بَيْـتِـىْ ذَهَبَ اَهْلُ الْاَرْضِ.
অর্থ: “তারকারাজি আসমানবাসীর জন্য নিরাপত্তাদানকারী। আর আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা হচ্ছেন যমীনবাসীর জন্য, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য নিরাপত্তাদানকারী। যখন আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বিদায় নিবেন, তখন সমস্ত যমীনবাসী, সমস্ত কায়িনাতবাসী ধ্বংস হয়ে যাবে।” সুবহানাল্লাহ!
অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা হচ্ছেন তারকারাজিসহ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য নিরাপত্তাদানকারী। সুবহানাল্লাহ! উনাদের সম্মানার্থেই সমস্ত কায়িনাতবাসী নিরাপত্তা লাভ করে থাকে এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত নিরাপত্তা লাভ করতেই থাকবে। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কত বেমেছাল তা এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ! উনারা হচ্ছেন সমস্ত উম্মতের জন্য, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য নিরাপত্তাদানকারী। যাঁরা উনাদেরকে মুহব্বত করবেন, তা’যীম-তাকরীম করবেন, উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিবেন, উনাদের সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করবেন, উনারা ইহকাল ও পরকালে নিরাপত্তা লাভ করবেন, হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল করবেন। সুবহানাল্লাহ!
আর লখতে জিগারে মুজাদ্দিদে আ’যম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে বিশেষ ব্যক্তিত্বা মুবারক। সুবহানাল্লাহ! তাই উনার একখানা সম্মানিত বিশেষ লক্বব মুবারক হচ্ছেন ‘আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।’ সুবহানাল্লাহ! কাজেই তিনি হচ্ছেন সমস্ত উম্মতের জন্য, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য নিরাপত্তাদানকারিণী। যারা উনাকে মুহব্বত করবে, তা’যীম-তাকরীম করবে, উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিবে, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করবে, তারা ইহকাল ও পরকালে নিরাপত্তা লাভ করবে, হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল। সুবহানাল্লাহ!
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে হাক্বীক্বী নিরাপত্তা নছীব করুন। আমীন!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
اِنَّا اَعْطَيْنٰكَ الْكَوْثَرَ
অর্থ: “নিশ্চয়ই আমি আপনাকে সম্মানিত কাউছার মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছি।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা কাওছার শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১)
এই সম্মানিত ও পবিত্র ‘কাওছার’ মুবারক উনার লক্ষ-কোটি ব্যাখ্যা মুবারক। উনাদের মধ্যে একখানা ব্যাখ্যা মুবারক হচ্ছেন, ‘খইরে কাছীর’ তথা সমস্ত প্রকার ভালাই। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সমস্ত প্রকার ভালাই তথা সর্বোত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠ বিষয় মুবারকগুলো হাদিয়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! অপরদিকে উনার সাথে যে বিষয় মুবারকগুলো সম্পৃক্ত হয়েছেন, সে বিষয় মুবারকগুলো সর্বোত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠ হয়ে গেছেন। সুবহানাল্লাহ!
যার কারণে এই ব্যাপারে সমস্ত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা ইজমা করেছেন যে,
اِنَّ التُّرْبَةَ الَّتِىْ اِتَّصَلَتْ اِلـٰى اَعْظُمِ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَفْضَلُ مِنَ الْاَرْضِ وَالسَّمَاءِ حَتَّى الْعَرْشِ الْعَظِيْمِ.
অর্থ: ‘নিশ্চয়ই এক মুহূর্তের তরেও নূরে মুজসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত জিসম মুবারক উনার স্পর্শ মুবারক-এ এসেছেন, যেই মাটি, ধূলি-বালি (পদার্থ-বস্তু যা কিছুই হোক না কেন) উনাদের ফযীলত, মর্যাদা-মর্তবা আসমান-যমীন; এমনকি মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক থেকেও লক্ষ-কোটিগুণ বেশি।” সুবহানাল্লাহ!
অন্য ইজমা মুবারক-এ বলা হয়েছে,
فَاِنَّهٗ اَفْضَلُ مُطْلَقًا مِّنَ الْكَعْبَةِ وَالْـكُـرْسِىِّحَتَّى الْعَرْشِ الْعَظِيْمِ.
অর্থ: ‘নিশ্চয়ই নূরে মুজসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার স্পর্শ মুবারক-এ যা কিছু এসেছেন তা অবশ্যই সম্মানিত কা’বা শরীফ, সম্মানিত কুরসী শরীফ; এমনকি মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক থেকেও লক্ষ-কোটিগুণ বেশি ফযীলতপ্রাপ্ত, সম্মানিত এবং সর্বশ্রেষ্ঠ।’ সুবহানাল্লাহ!
অর্থাৎ এক মুহূর্তের তরেও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার স্পর্শ মুবারক-এ যা কিছু এসেছেন তা আসমান-যমীন, সম্মানিত কা’বা শরীফ, সম্মানিত কুরসী শরীফ, মহান আল্লাহ পাক উনার কায়িনাতে যা কিছু রয়েছে; এমনকি সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক থেকেও লক্ষ-কোটিগুণ বেশি পবিত্র, ফযীলতপ্রাপ্ত, সম্মানিত এবং সর্বশ্রেষ্ঠ।’ সুবহানাল্লাহ!
সেই বিষয়টি সম্মানিত মি’রাজ শরীফ উনার রজনীতে স্পষ্ট হয়ে গেছে। যেটা সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
اِنَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمَّا اُسْرِىَ بِهٖ لَيْلَةَ الْمِعْرَاجِ اِلَى السَّمٰوَاتِ الْعُلـٰى وَوَصَلَ اِلَى الْعَرْشِ الْمُعَلّٰى اَرَادَ خَلْعَ نَعْلَيْهِ اَخْذًا مِّـنْ قَوْلِهٖ تَعَالـٰى لِسَيِّدِنَا حَضْرَتْ مُوسٰى عَلَيْهِ السَّلَامُ حِيْنَ كَلَّمَهٗ فَاخْلَعْ نَعْلَيْكَ اِنَّكَ بِالْوَادِ الْمُقَدَّسِ طُوًى. فَنُوْدِىَ مِنَ الْعَـلِـىِّ الْاَعْلـٰى يَا حَضْرَتْ مُـحَمَّدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا تَـخْلَعْ نَعْلَيْكَ فَاِنَّ الْعَرْشَ يَتَشَرَّفُ بِقُدُوْمِكَ مُتَنَعِّـلًا وَّيَفْتَخِرُ عَلـٰى غَيْرِهٖ مُتَـبَـرِّكًـا فَصَعِدَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِلَى الْعَرْشِ وَفِىْ قَدَمَيْهِ النَّعْلَانِ وَحَصَلَ لَهٗ بِذٰلِكَ عِزٌّ وَّشَأْنٌ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত মি’রাজ শরীফ উনার রাতে সুউচ্চ সপ্ত আসমান অতিক্রম করে সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক উনার নিকটবর্তী হলেন, তখন তিনি উনার সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ খুলে সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক নেয়ার চিন্তা মুবারক করলেন। মহান আল্লাহ পাক উনার ওই বাণী মুবারক ফিকির করে, যেটা মহান আল্লাহ পাক তিনি (যখন সাইয়্যিদুনা হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি তূর পাহাড়ে মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে কথা বলার জন্য তাশরীফ মুবারক রাখবেন, তখন) হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেছিলেন,
فَاخْلَعْ نَعْلَيْكَ اِنَّكَ بِالْوَادِ الْمُقَدَّسِ طُوًى.
‘আপনি আপনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ মুবারক খুলুন। কেননা আপনি সম্মানিত (তূর পাহাড়ের) পবিত্র তুয়া উপত্যকায় তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করতে যাচ্ছেন। (সেখানে আমার সম্মানিত আরশে আযীম থেকে ৭০ হাজার ভাগের এক ভাগ সম্মানিত নূর মুবারক পতিত হয়েছে। যার কারণে সেই স্থানটি সম্মানিত ও পবিত্র হয়ে গেছে। সুবহানাল্লাহ! তাই আপনি সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলে আসুন।’ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এই বিষয়টি ফিকির করে উনার সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ খুলার চিন্তা মুবারক করেছিলেন।) তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত ওহী মুবারক করলেন, হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! দয়া করে আপনি আপনার সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ খুলবেন না। অর্থাৎ আপনি আপনার সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফসহ আমার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করুন। কেননা আমার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক আপনার সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের পরশে, সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের ধূলি-বালি মুবারক উনাদের স্পর্শ মুবারক-এ ধন্য হবেন, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক হাছিল করবেন। সুবহানাল্লাহ! (শুধু তাই নয়,) আমার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক আপনার সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের স্পর্শ মুবারক পাওয়ার কারণে, সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের ধূলি-বালি মুবারক লাভ করে বরকতময় হয়ে আরো পবিত্রতা হাছিল করবেন এবং অন্য সবার উপর ফখর করবেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ পরিধান মুবারক করা অবস্থাতেই সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করলেন। আর সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ মুবারক উনাদের স্পর্শ মুবারক লাভ করে, উনাদের ধূলি-বালি মুবারক পেয়ে ইয্যত-সম্মান, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক হাছিল করলেন।” সুবহানাল্লাহ! (ফাতহুল মুত‘য়াল ফী মাদহি খইরিন নি‘য়াল শরীফ)
দশম হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ হযরত ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূত্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘ই’জাযুল কুরআন শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ্য করেন,
وَمَوْلَانَا مُـحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَـمَّا زُجَّ بِهٖ فِىْ عَالَـمِ الْعِزَّةِ اَرَادَ اَنْ يـَّخْلَعَ نَعْلَيْهِ فَاِذَا النِّـدَاءُ يَا مـُحَمَّدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا تَـخْلَعْ نَعْلَيْكَ. فَقَالَ يَا رَبِّ سَــمِعْتُكَ تَقُوْلُ لِـمُوْسٰى عَلَيْهِ السَّلَامُ فَاخْلَعْ نَعْلَيْكَ .فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَئِنْ اَمَرْتُ حَضْرَتْ مُوْسٰى عَلَيْهِ السَّلَامُ بِنَزْعِ نَعْلَيْهِ عَلـٰى جَبَلِ الطُّوْرِ فَقَدْ اَبَـحْنَا لَكَ اَنْ تَطَأَ بِنَعْلَيْكَ عَلـٰى بَسَاطِ النُّوْرِ لِاَنَّكَ الْمُكَرَّمُ عِنْدَنَا وَالْعَزِيْزُ لَدَيْنَا.
“আর আমাদের যিনি মাওলা, নবী-রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন (সম্মানিত মি’রাজ শরীফ উনার রজনীতে) সম্মানিত ইয্যত উনার জগতে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করলেন তথা সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক উনার নিকটবর্তী হলেন, তখন তিনি উনার সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ খুলার চিন্তা মুবারক করলেন। এমতাবস্থায় মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত ওহী মুবারক করেন, হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! দয়া করে আপনি আপনার সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ খুলবেন না। অর্থাৎ আপনি সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফসহ আমার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করুন। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আয় বারে ইলাহী! আমি তো শুনেছি, আমি জানি, আপনি জলীলুল ক্বদর নবী ও রসূল হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেছিলেন,
فَاخْلَعْ نَعْلَيْكَ
অর্থ: “(আপনি সম্মানিত তূর পাহাড়ে তাশরীফ মুবারক রাখতে যাচ্ছেন। তাই) আপনি আপনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলে আসুন।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ত্বহা শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১২)
তারপর মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! যদিও আমি হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলে সম্মানিত তূর পাহাড়ে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করার জন্য নির্দেশ মুবারক প্রদান করেছি। কিন্তু আমি আপনার ক্ষেত্রে এটাই পছন্দ করি যে, আপনি যেন আপনার সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফসহ সম্মানিত নূর মুবারক উনার প্রশস্ত ময়দান মুবারক-এ তথা নূরে নূরময় আমার সম্মানিত নূরানী আরশে আযীম মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! কেননা আপনি আমার নিকট সবচেয়ে সম্মানিত এবং সর্বাধিক প্রিয়, মাহবূব। সুবহানাল্লাহ! (আমার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক আপনার সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের পরশে, সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের ধূলি-বালি মুবারক পেয়ে ধন্য হবেন, শান-মান, ফাযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক হাছিল করবেন। শুধু তাই নয়, আমার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক আপনার সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের স্পর্শ মুবারক লাভ করে, সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের ধূলি-বালি মুবারক পেয়ে বরকতময় হয়ে আরো পবিত্রতা হাছিল করবেন এবং অন্য সবার উপর ফখর করবেন।)” সুবহানাল্লাহ! (ই’জাযুল কুরআন শরীফ ৩/৬৩)
এখন বলার বিষয় হচ্ছে, হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন একজন জলীলুল ক্বদর নবী এবং রসূল। সুবহানাল্লাহ! যদি কিতাব হিসেবে ধরা হয়, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিষয়টি আলাদা। অন্যান্য সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন প্রথম। সুবহানাল্লাহ! আর উনাকেই তূর পাহাড়ে যেতে হয়েছিলো উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলে। কেননা সেখানে সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক উনার সত্তর হাজার ভাগের এক ভাগ নূর মুবারক বর্ষিত হয়েছিলো বা যাহির হয়েছিলো। অন্যদিকে, সাধারণ মাটি, ধূলি-বালি যার কোনো ক্বদর নেই; কিন্তু নূরে মুজসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত স্পর্শ মুবারক-এ আসার কারণে উক্ত মাটি, ধূলি-বালির মর্যাদা, শ্রেষ্ঠত্ব, পবিত্রতা আসমান-যমীন, সম্মানিত কা’বা শরীফ, সম্মানিত কুরসী শরীফ, এমনকি মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক থেকেও লক্ষ-কোটিগুণ বেশি হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, উনার সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের ধূলি-বালি মুবারক পেয়ে সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক আরো পবিত্রতা হাছিল করেছেন, সম্মানিত ও বরকতময় হয়েছেন এবং সকলের উপর ফখর করেছেন। সুবহানাল্লাহ! যদি তাই হয়, তাহলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নূরুন নাজাত (রক্ত) মুবারক যেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক উনার সম্মানিত জিসম মুবারক-এ প্রবাহিত, সেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, হাবীবাতুল্লাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক, পবিত্রতা মুবারক কত বেমেছাল সেটা এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ! মূলত, এক কথায় তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া যত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক, পবিত্রতা মুবারক রয়েছে সমস্ত কিছুর অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনাকে শুধু পূত-পবিত্র বললে ভুল হবে। তিনি হচ্ছেন পূত-পবিত্রতাদানকারিণী। সুবহানাল্লাহ!
যাঁরা আক্বলমান্দ উনাদের জন্য আর কোনো দলীলের প্রয়োজন নেই। কিন্তু যারা সৃষ্টির সর্বনিকৃষ্ট জীব ইহুদী, খ্রিস্টান, কাফির, মুশরিক, মুনাফিক্ব, উলামায়ে সূ’, ওহাবী, খারিজী, দেওবন্দী, লা-মাযহাবী ও বদ আক্বীদাধারী, বদ মাযহাবী তাদেরকে আরো শত-সহস্র, লক্ষ-কোটি দলীল দিলেও তারা কস্মিনকালেও বুঝবে না। তারা হচ্ছে চতুষ্পদ জন্তু তথা শূকর, কুকুরের চেয়েও অত্যধিক নিকৃষ্ট। না‘ঊযুবিল্লাহ! এদের ব্যাপারেই যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন,
وَلَقَدْ ذَرَاْنَا لِـجَهَنَّمَ كَثِيْرًا مِّنَ الْـجِـنِّ وَالْاِنْسِ لَـهُمْ قُلُوْبٌ لَّا يَفْقَهُوْنَ بِـهَا وَلَـهُمْ اَعْيُنٌ لَّا يُبْصِرُوْنَ بِـهَا وَلَـهُمْ اٰذَانٌ لَّا يَسْمَعُوْنَ بِـهَا اُولٰـئِكَ كَالْاَنْعَامِ بَلْ هُمْ اَضَلُّ اُولٰـئِكَ هُمُ الْغٰفِلُوْنَ.
অর্থ: “আর জিন ও মানুষের মাঝে এমন অনেক জিন ও মানুষ রয়েছে, যাদের জন্য জাহান্নাম অবধারিত হয়ে গেছে। অর্থাৎ তারা তাদের বদ আমলের দ্বারা তাদের উপর জাহান্নাম অবধারিত করে নিয়েছে। তাদের অন্তর রয়েছে; কিন্তু তারা উপলব্ধি করতে পারে না। তাদের চক্ষু রয়েছে; কিন্তু তারা দেখতে পায় না। তাদের কান রয়েছে; কিন্তু তারা শুনতে পায় না। তারা হচ্ছে চতুষ্পদ জন্তুর ন্যায়; বরং তার চেয়েও অধিক নিকৃষ্ট। মূলত তারা হচ্ছে গাফিল।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আ’রাফ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৭৯)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন,
وَلِلَّهِ الْعِزَّةُ وَلِرَسُولِهِ وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَلَكِنَّ الْمُنَافِقِينَ لَا يَعْلَمُونَ
অর্থ: “সমস্ত ইজ্জত তথা শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক একমাত্র যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য, উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার (উনার মহাসম্মানিত হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম উনার এবং মহাসম্মানিতা হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের) জন্য এবং মু’মিনীন উনাদের জন্য। সুবহানাল্লাহ! কিন্তু মুনাফিক্বরা তা জানে না, বুঝে না।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা মুনাফিকূন শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৮)
সুতরাং সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, হাবীবাতুল্লাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক নিয়ে যারা চূ-চেরা, ক্বীল-ক্বাল করবে, তারা হচ্ছে গোমরা, পথভ্রষ্ট, বিভ্রান্ত, মুনাফিক্ব ও উলামায়ে সূ’দের অন্তর্ভুক্ত।
মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, হাবীবাতুল্লাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে যাহিরী-বাত্বিনী সর্বদিক থেকে হাক্বীক্বী পবিত্রতা দান করুন। আমীন
সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনাকে মুহব্বত করার বেমেছাল ফযীলত এবং উনার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করার ভয়াবহ পরিণতি
সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَيْرُكُمْ خَيْرُكُمْ لِأَهْلَىْ مِنْ بَعْدِىْ.
অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তি উত্তম, শ্রেষ্ঠ, ফযীলতপ্রাপ্ত, যে ব্যক্তি আমার পরে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের নিকট উত্তম।” সুবহানাল্লাহ! (আবূ ইয়া’লা শরীফ, মাজমাউয যাওয়ায়িদ শরীফ)
সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ عَلِىّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَه عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ لِـىْ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَا حَضْرَتْ عَلِىُّ عَلَيْهِ السَّلَامُ اِنَّ الْاِسْلَامَ عُرْيَانٌ وَّلِبَاسُهُ التَّقْوٰى وَرِيَاشُهُ الْـهُدٰى وَزِيْنَتُهُ الْـحَيَاءُ وَعِمَادُهُ الْوَرَعُ وَمِلَاكُهُ الْعَمَلُ الصَّالِحُ وَاَسَاسُ الْاِسْلامِ حُبِّـىْ وَحُبُّ اَهْلِ بَيْتِـىْ
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন, হে হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম! নিশ্চয়ই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম লেবাসহীন। উনার সম্মানিত লেবাস মুবারক হচ্ছেন তাক্বওয়া, উনার আসবাবপত্র হচ্ছেন হিদায়াত, উনার সৌন্দর্য মুবারক হচ্ছেন লজ্জা, উনার খুঁটি হচ্ছেন পরহেজগারী, উনার কাঠামো হচ্ছেন সম্মানিত আমলে ছলেহ তথা নেক আমল। আর সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মূল ভিত্তি হচ্ছেন আমার এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক।” সুবহানাল্লাহ! (জামিউল আহাদীছ ২৩/৩২৩, ৩১/২১৪, জামউল জাওয়ামি’, কাশফুল খফা ১/২৩, কানযুল ‘উম্মাল ১২/১০৫, তারীখে দিমাশক্ব ৪৩/২৪১, মুখতাছারু তারীখে দিমাশক্ব ৫/৪৭৫ ইত্যাদি)
সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ عَلِىّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَه عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَرْبَعَةٌ اَنَا لَـهُمْ شَفِيْعٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ الْـمُكْرِمُ لِذُرِّيَتِىْ وَالْقَاضِىْ لَـهُمْ حَوَائِجَهُمْ وَالسَّاعِىْ لَـهُمْ فِـىْ اُمُوْرِهِمْ عِنْدَ اضْطِرَارِهِمْ اِلَيْهِ وَالْمُحِبُّ لَـهُمْ بِقَلْبِهٖ وَلِسَانِهٖ
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি ক্বিয়ামতের দিন চার শ্রেণীর লোকদের সুপারিশ করবোÑ এক. যাঁরা আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সম্মান করবেন। দুই. যাঁরা আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মালী তথা আর্থিকভাবে সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম দিবেন। তিন. যাঁরা আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে জান দিয়ে তথা শারীরিকভাবে সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম দিবেন। এবং চার. যাঁরা আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে অন্তরে মুহব্বত মুবারক করবেন এবং জবানে উনাদের সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক বর্ণনা করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (জামিউল আহাদীছ ৪/২২৯, জামউল জাওয়ামি’, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ৭/১১, দায়লামী শরীফ)
সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ عَلِىّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَه عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَفَاعَتِىْ لِاُمَّتِىْ مَنْ اَحَبَّ اَهْلَ بَيْتِىْ وَهُمْ شِيْعَتِىْ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমার সম্মানিত শাফায়াত মুবারক ওই সকল উম্মত উনাদের জন্য যাঁরা আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদরেকে মুহব্বত করে থাকেন। আর উনারা হচ্ছেন আমার খাছ উম্মত তথা অনুসারী।” সুবহানাল্লাহ! (জামিউছ ছগীর ২/১৪, আল ফাতহুল কাবীর ২/১৬৯, জামিউল আহাদীছ ১৩/৪১৫, জামউল জাওয়ামি’, তারীখে বাগদাদ ২/১৪৬ ইত্যাদি)
সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
اِنَّ اَوْلَادِىْ كَسَفِيْنَةِ حَضْرَتْ نُوْحٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ مَنْ دَخَلَهَا نَـجٰى.
অর্থ: “নিশ্চয়ই আমার আওলাদ তথা আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা হচ্ছেন, হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত কিশতী মুবারক উনার ন্যায়। যিনি তাতে প্রবেশ করবেন, তিনি নাজাতপ্রাপ্ত হবেন। অর্থাৎ যে ব্যক্তি হযরত আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে মুহব্বত করবেন, তিনি নাজাতপ্রাপ্ত হবেন।” সুবহানাল্লাহ! (সিররুশ শাহাদাতাঈন)
সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ جَرِيْرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ الْبَـجَـلِـىِّ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ مَّاتَ عَلـٰى حُبِّ اٰلِ سَيِّدِنَا مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَاتَ شَهِيْدًا اَلَا وَمَنْ مَّاتَ عَلـٰى حُبِّ اٰلِ سَيِّدِنَا مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَاتَ مَغْفُوْرًا لَّهٗ اَلَا وَمَنْ مَّاتَ عَلـٰى حُبِّ اٰلِ سَيِّدِنَا مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَاتَ تَائِبًا اَلَا وَمَنْ مَّاتَ عَلـٰى حُبِّ اٰلِ سَيِّدِنَا مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَاتَ مُؤْمِنًا مُّسْتَكْمِلَ الْاِيْـمَانِ اَلَا وَمَنْ مَّاتَ عَلـٰى حُبِّ اٰلِ سَيِّدِنَا مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَشَّرَهٗ مَلَكُ الْمَوْتِ بِالْـجَنَّةِ ثُـمَّ مُنْكَرٌ وَّنَكِيْرٌ اَلَا وَمَنْ مَّاتَ عَلـٰى حُبِّ اٰلِ سَيِّدِنَا مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُزَفُّ اِلَـى الْـجَنَّةِ كَمَا تُزَفُّ الْعَرُوْسُ اِلـٰى بَيْتِ زَوْجِهَا اَلَا وَمَنْ مَّاتَ عَلـٰى حُبِّ اٰلِ سَيِّدِنَا مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَتَحَ اللهُ لَهٗ فِـىْ قَبْرِهٖ بَابَيْنِ اِلَـى الْـجَنَّةِ اَلَا وَمَنْ مَّاتَ عَلـٰى حُبِّ اٰلِ سَيِّدِنَا مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَعَلَ اللهُ قَبْرَهٗ مَزَارَ مَلَائِكَةِ الرَّحْـمَةِ اَلَا وَمَنْ مَّاتَ عَلـٰى حُبِّ اٰلِ سَيِّدِنَا مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَاتَ عَلَى السُّنَّةِ وَالْـجَمَاعَةِ أَلا وَمن مَاتَ عَلَى بغض اٰلِ سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم جَاءَ يَوْم الْقِيَامَة مَكْتُوبًا بَين عَيْنَيْهِ آيس من رَحْمَة الله أَلا وَمن مَاتَ عَلَى بغض اٰلِ سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم مَاتَ كَافِرًا أَلا وَمن مَاتَ عَلَى بغض اٰلِ سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم لم يشم رَائِحَة الْجنَّة.
অর্থ: “হযরত জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ বাজালী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক-এ ইন্তেকাল করবেন, তিনি শহীদী মৃত্যু পাবেন। সুবহানাল্লাহ! সাবধান! যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক-এ ইন্তেকাল করবেন, তিনি ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়ে ইন্তেকাল করবেন। সুবহানাল্লাহ! সাবধান! যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক-এ ইন্তেকাল করবেন, তিনি তওবাকারীরূপে ইন্তেকাল করবেন। সুবহানাল্লাহ! সাবধান! যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক-এ ইন্তেকাল করবেন, তিনি পরিপূর্ণ ঈমানদার মু’মিন হিসেবে ইন্তেকাল করবেন। সুবহানাল্লাহ! সাবধান! যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক-এ ইন্তেকাল করবেন, উনাকে মালাকুল মউত আলাইহিস সালাম তিনি এবং হযরত মুনকার ও নকীর আলাইহিমাস সালাম উনারা সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার সুসংবাদ মুবারক দিবেন। সুবহানাল্লাহ! সাবধান! যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক-এ ইন্তেকাল করবেন, উনাকে এমনভাবে সুসজ্জিত করে সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ নেয়া হবে, যেমনভাবে কনেকে সাজিয়ে তার স্বামীর ঘরে নেয়া হয়। সুবহানাল্লাহ! সাবধান! যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক-এ ইন্তেকাল করবেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ওই ব্যক্তি উনার কবরে ওই ব্যক্তি উনার জন্য সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার দিকে দুটি দরজা মুবারক খুলে দিবেন। সুবহানাল্লাহ! সাবধান! যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক-এ ইন্তেকাল করবেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি উক্ত ব্যক্তি উনার কবরকে সম্মানিত রহমতের ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের মাযার শরীফ বা যিয়ারতগাহ বানাবেন। সুবহানাল্লাহ! সাবধান! যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক-এ ইন্তেকাল করবেন, তিনি সম্মানিত আহলু সুন্নাত ওয়াল জামায়াত উনার উপর ইন্তেকাল করবেন। সুবহানাল্লাহ! সাবধান! আর যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে মারা যাবে, ক্বিয়ামতের দিন তার দুই চোখের মাঝখানে লিখা থাকবে যে, সে মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ও পবিত্র রহমত মুবারক থেকে বঞ্চিত। নাঊযুবিল্লাহ! সাবধান! যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে মারা যাবে, সে কাফির অবস্থায় মারা যাবে। নাঊযুবিল্লাহ! সাবধান! যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে মারা যাবে, সে সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার ঘ্রাণ পর্যন্ত পাবে না।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (তাফসীরে কুরতুবী ১৬/২৩, তাফসীরে কবীর ২৭/৫৯৫, তাফসীরে হাক্কী ১৩/৭৯, তাফসীরে রূহুল বয়ান ৮/২৩৯, তাখরীজু আহাদীছুল কাশ্শাফ ৩/২৩৮, নুজহাতুল মাজালিস ১/৩৬৫)
সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ سَعِيْدِ نِ الْـخُدْرِىِّ رَضِىَ الله تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ اَبْغَضَنَا اَهْلَ الْبَيْتِ فَهُوَ مُنَافِقٌ.
অর্থ: “হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যারা আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিরোধিতা করে, উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে, তারা মুনাফিক্ব।” নাউযুবিল্লাহ! (দুররুল মানছূর ১৩/১৫১, ফাযায়িলু ছাহাবা লিআহমদ ইবনে হাম্বল ২/৬৬১, আর রিয়াদুন নাদ্বরা ১/৩৬২, যখায়েরুল উক্ববা ১/১৮)
অন্য বর্ণনায় এসেছে-
مَنْ اَبْغَضَ اَهْلَ الْبَيْتِ فَهُوَ مُنَافِقٌ.
অর্থ: “যে ব্যক্তি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করলো, উনাদের বিরোধিতা করলো সে মুনাফিক্ব।” নাউযুবিল্লাহ! (যাখায়েরুল উক্ববা লিমুহিব্বে ত্ববারী ১/১৮, জামিউল আহাদীছ লিস সুয়ীত্বী ৪১/৩৬০, আছ ছওয়াইকুল মুহ্রিক্বাহ্ লিইবনে হাজার হাইছামী ২/৫০৩, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ লিইউসূফ ছালিহী শামী ১১/৮, দায়লামী শরীফ ইত্যাদি)
সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ عَلِـىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَه عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ لَـمْ يَعْرِفْ حَقَّ عِتْرَتِـىْ وَالْاَنْصَارِ وَالْعَرَبِ فَهُوَ لِاِحْدٰى ثَلَاثٍ اِمَّا مُنَافِقٌ وَاِمَّا لِزَنْيَةٍ وَاِمَّا امْرُؤٌ حَمَلَتْ بِهٖ اُمُّهٗ فِـىْ غَيْرِ طُهْرٍ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের, হযরত আনছার ছাহাবা-ই কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের এবং সম্মানিত আরব উনাদের হক্ব মুবারক বুঝলো না তথা উনাদের সম্মান ইজ্জত মুবারক বুঝলো না, উনাদেরকে সম্মান করলো না, উনাদের বিরোধিতা করলো, সেই ব্যক্তির তিনটির যে কোন একটি অবস্থাÑ হয় সে মুনাফিক্ব, না হয় অবৈধ সন্তান অথবা তার মা তাকে গাইরে তুহুর তথা নিষিদ্ধ সময় গর্ভে ধারণ করেছে।” নাঊযুবিল্লাহ! (দায়লামী শরীফ ৩/৬২৬, আছ ছওয়ায়িকুল মুহরিক্বাহ ২/৪৯৯, জামিউল আহাদীছ লিস সুয়ূত্বী ২১/৪২০, জামউল জাওয়ামি’, শুয়াবুল ঈমান লিল বাইহাক্বী ৩/১৬২, তারতীবুল আমালী ১/২০৬, আল মাক্বাছিদুল হাসানাহ ১/৬৪, কাশফুল খফা ১/৫৪, যখীরাতুল হুফফায ৪/২৪০৫, শরফুল মুস্ত¡ফা ৫/৩৩৬ ইত্যাদি)
সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِىَ الله تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَايُـحِبُّنَا اَهْلَ الْبَيْتِ اِلَّا مُؤْمِنٌ تَقِىٌّ وَّلَا يُبْغِضُنَا اِلَّا مُنَافِقٌ شَقِىٌّ.
অর্থ: “হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, একমাত্র যিনি পরহেজগার, দ্বীনদার, মুত্তাক্বী মু’মিন তিনিই শুধু আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করেন। সুবহানাল্লাহ! আর একমাত্র যে দুর্ভাগা, অপরাধী, দুষ্কর্মা মুনাফিক্ব সেই কেবল আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিরোধিতা করে। নাঊযুবিল্লাহ!” (যাখায়েরুল উক্ববা লিমুহিব্বে ত্ববারী ১/১৮, আছ ছওয়াইকুল মুহরিক্বাহ লিইবনে হাজার হাইছাইমী ২/৫০০ ও ৬৬৩)
সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ الْاَنْصَارِىِّ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ خَطَبَنَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَمِعْتُهٗ وَهُوَ يَقُوْلُ يَا اَيُّهَا النَّاسُ مَنْ اَبْغَضَنَا اَهْلَ الْبَيْتِ حَشَّرَهُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَهُوْدِيًّا فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاِنْ صَامَ وَصَلّٰى قَالَ وَاِنْ صَامَ وَصَلّٰى وَزَعِمَ اَنَّهٗ مُسْلِمٌ.
অর্থ: “হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি শুনলাম যে, যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একদা আমাদের উদ্দেশ্যে খুতবা মুবারক দিচ্ছেন এবং ইরশাদ মুবারক করছেন যে, হে লোক সকল! যে ব্যক্তি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করবে, উনাদের বিরোধিতা করবে, তার হাশর-নশর হবে ইহুদীদের সাথে। আমি আরজ করলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! যদি সে রোযা রাখে এবং নামায পড়ে? উত্তরে তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, হ্যাঁ! যদিও সে রোযা রাখে, নামায পড়ে এবং দাবি করে যে, সে মুসলমান। (তা সত্ত্বেও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিরোধিতা করার কারণে, উনাদের শত্রু হওয়ার কারণে যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি তার সমস্ত ইবাদত বিনষ্ট করে দিয়ে তাকে ক্বিয়ামতের দিন ইহুদীদের দলভুক্ত করে উঠাবেন।)” নাউযুবিল্লাহ! (আল মু’জামুল আওসাত্ব লিতত্ববারণী ৪/২১২, জামিউল আহাদীছ লিস সুয়ূত্বী ১০/৪৭৫, জামউল জাওয়ামি‘ লিস সুয়ূত্বী, মাজমাউয যাওয়াইদ লিল হাইছামী ৯/৭১২, তারীখে জুরজান ৩৬৯ পৃষ্ঠা)
সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَوْ اَنَّ رَجُلًا صَفَّ بَيْنَ الرُّكْنِ وَالْـمَقَامِ فَصَلّٰى وَصَامَ ثُـمَّ لَقِىَ اللهَ وَهُوَ مُبْغِضٌ لِّاَهْلِ بَيْتِ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَخَلَ النَّارَ.
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, কোন ব্যক্তি যদি সম্মানিত রুকনে ইয়ামেন এবং সম্মানিত মাক্বামে ইবরাহীম শরীফ উনাদের মধ্যবর্তী স্থানে সারিবদ্ধ হয়ে থাকে। অতঃপর সম্মানিত নামায পড়ে এবং সম্মানিত রোযা রাখে। কিন্তু এই অবস্থায় তার মৃত্যু হয় যে, সে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে। তাহলে সে অবশ্যই জাহান্নামে প্রবেশ করবে।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (যাখাইরুল উক্ববা লিমুহিব্বে ত্ববারী ১/১৮, খ¦ছায়িছুল কুবরা ২/৪৬৫)
সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ عَلِـىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَه عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ اٰذَانِـىْ فِـىْ عِتْـرَتِـىْ فَقَدْ اٰذَى اللهَ عَزَّ وَجَلَّ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ব্যাপারে আমাকে কষ্ট দিলো, সে মূলত যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনাকেই কষ্ট দিলো।” নাঊযুবিল্লাহ! (দায়লামী শরীফ, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৯)
সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ عَلِـىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَه عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ اٰذَانِـىْ وَعِتْرَتِـىْ فَعَلَيْهِ لَعْنَةُ اللهِ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমাকে এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে কষ্ট দিবে, তার উপর মহান আল্লাহ পাক উনার লা’নত।” নাঊযুবিল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৯)
সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ عَلِـىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَه عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حُرِّمَتِ الْـجَنَّةُ عَلـٰى مَنْ ظَلَمَ اَهْلَ بَيْتِـىْ اَوْ قَاتَلَهُمْ اَوْ اَعَانَ عَلَيْهِمْ اَوْ سَبَّهُمْ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ওই ব্যক্তির জন্য সম্মানিত জান্নাত মুবারক হারামÑ ১. যে ব্যক্তি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের উপর যুলুম করবে। না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! ২. অথবা উনাদেরকে শহীদ করবে। না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! ৩. অথবা উনাদেরক শহীদ করার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে। না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! ৪. অথবা উনাদেরকে গালমন্দ করবে, কষ্ট দিবে।” না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৯)
অপর বর্ণনায় এসেছে,
حُرِّمَتِ الْـجَنَّةُ عَلـٰى مَنْ ظَلَمَ اَهْلَ بَيْتِـىْ وَاٰذَانِـىْ فِـىْ عِتْرَتِـىْ
অর্থ: “ওই ব্যক্তির উপর সম্মানিত জান্নাত মুবারক হারামÑ যে ব্যক্তি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের উপর যুলুম করবে এবং আমার সম্মানিত বংশধর উনাদের ব্যাপারে আমাকে কষ্ট দিবে।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (তাফসীরে কুরতুবী ১৬/২২, তাফসীরে কাশ্শাফ ৪/২২০, তাফসীরে হাক্কী ১৩/৭৯, তাফসীরে রূহুল বায়ান ৮/২৩৮ ইত্যাদি)
সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ سَعِيْدِ نِ الْـخُدْرِىِّ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالَّذِىْ نَفْسِىْ بِيَدِهٖ لَا يُبْغِضُ اَهْلَ الْبَيْتِ اَحَدٌ اِلَّا اَدْخَلَهُ اللهُ النَّارَ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ সা‘ঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ওই মহান আল্লাহ পাক উনার কসম, যেই মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত কুদরতী হাত মুবারক-এ আমার সম্মানিত প্রাণ মুবারক। যে ব্যক্তি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (ছহীহ ইবনে হিব্বান ১৫/৪৩৫, মুস্তাদরকে হাকিম ৩/১৬২, আদ দুররুল মানছূর ফিত তাফসীরি বিল মা’ছূর লিস সুয়ূত্বী ১৩/৫১, তাফসীরে রূহুল মা‘আনী ১৩/৩২, তাফসীরে নীসাপুরী ১/৩২০, জামি‘উল আহাদীছ ১৭/৩, জাম‘উল জাওয়ামি’ ১/১৯০৪১, খছায়িছুল কুবরা ২/৩৯৫, শরফুল মুস্ত¡ফা ৫/৩৩২, সিয়ারু আ’লামিন নুবালা ২/১২৩ ইত্যাদি)
উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে বিশেষ ব্যক্তিত্বা মুবারক। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উনাকে মুহব্বত করার মাধ্যমে বান্দা-বান্দী ও উম্মত কতো বেমেছাল ফযীলত লাভ করতে পারবে এবং উনার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করলে কতো কঠিন ভয়াবহ পরিণতির সম্মুখীন হবে, তা এখান থেকে স্পষ্ট হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনাকে হাক্বীক্বীভাবে মুহব্বত করার এবং যারা উনার বিরোধিতা করে, উনার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে এই সকল সৃষ্টির সর্বনিকৃষ্ট প্রাণীদেরকে চিহ্নিত করার ও তাদেরকে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত মুহব্বত মুবারক করার এবং উনার সম্মানিত নিসবত মুবারক হাছিল করার বেমেছাল ফযীলত
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
وَتَحْسَبُهُمْ أَيْقَاظًا وَّهُمْ رُقُوْدٌ وَّنُقَلِّبُهُمْ ذَاتَ الْيَمِيْنِ وَذَاتَ الشِّمَالِ وَكَلْبُهُمْ بَاسِطٌ ذِرَاعَيْهِ بِالْوَصِيْدِ لَوِ اطَّلَعْتَ عَلَيْهِمْ لَوَلَّيْتَ مِنْهُمْ فِرَارًا وَّلَمُلِئْتَ مِنْهُمْ رُعْبًا.
অর্থ: “(হে আমার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি উম্মতদেরকে বলে দিন,) তোমরা মনে করবেতারা জাগ্রত, অথচ তারা নিদ্রিত। আমি তাদেরকে পার্শ্ব পরিবর্তন করাই ডান দিকে ও বাম দিকে। তাদের কুকুরটি সামনের পা দুটি গুহাদ্বারে প্রসারিত করে রয়েছে। যদি তোমরা উঁকি দিয়ে তাদেরকে দেখতে, তবে পেছনে ফিরে পলায়ন করতে এবং তাদের ভয়ে আতঙ্ক গ্রস্ত হয়ে পড়তে।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা কাহ্ফ শরীফ, সম্মানিত আয়াত শরীফ ১৮)
এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে ‘তাফসীরে কুরতুবী শরীফ উনার ১০ম খ-ের ৩৭১-৩৭২ পৃষ্ঠায়’ উল্লেখ রয়েছে,
قَالَ ابْنُ عَطِيَّةَ وَحَدَّثَنِىْ اَبِىْ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ قَالَ سَـمِعْتُ اَبَا الْفَضْلِ الْـجَوْهَرِىَّ فِىْ جَامِعِ مِصْرَ يَقُوْلُ عَلٰى مِنْبَرِ وَعْظِهٖ سَنَةَ تِسْعٍ وَّسِتِّيْنَ وَأَرْبَعِمِائَةٍ اِنَّ مَنْ اَحَبَّ اَهْلَ الْـخَيْرِ نَالَ مِنْ بَرَكَتِهِمْ كَلْبٌ اَحَبَّ اَهْلَ فَضْلٍ وَّصَحِبَهُمْ فَذَكَرَهُ اللهُ فِىْ مُـحْكَمِ تَنْزِيْلِهٖ. قُلْتُ اِذْ كَانَ بَعْضُ الْكِلَابِ قَدْ نَالَ هٰذِهِ الدَّرَجَةَ الْعُلْيَا بِصُحْبَتِهٖ وَمُخَالَطَتِهِ الصُّلَحَاءَ وَالْاَوْلِيَاءَ حَتّٰى اَخْبَرَ اللهُ تَعَالٰى بِذٰلِكَ فِىْ كِتَابِهٖ جَلَّ وَعَلَا فَمَا ظَنُّكَ بِالْـمُؤْمِنِيْنَ الْـمُوَحِّدِيْنَ الْـمُخَالِطِيْنَ الْمُحِبِّيْنَ لِلْاَوْلِيَاءِ وَالصَّالِـحِيْنَ بَلْ فِىْ هٰذَا تَسْلِيَةٌ وَّاُنْسٌ لِلْمُؤْمِنِيْنَ الْمُقَصِّرِيْنَ عَنْ دَرَجَاتِ الْكَمَالِ الْمُحِبِّيْنَ لِلنَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاٰلِهٖ خَيْرِ اٰلٍ.
رَوَى الصَّحِيْحُ عَنْ حَضْرَتْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ بَيْنَا اَنَا وَرَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَارِجَانِ مِنَ الْمَسْجِدِ فَلَقِيَنَا رَجُلٌ عِنْدَ سُدَّةِ الْمَسْجِدِ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَتَى السَّاعَةُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا اَعْدَدْتَّ لَـهَا قَالَ فَكَاَنَّ الرَّجُلَ اسْتَكَانَ ثُـمَّ قَالَ وَيَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا اَعْدَدْتُّ بِـهَا كَثِيْرَ صَلَاةٍ وَّلَا صِيَامٍ وَّلَا صَدَقَةٍ وَّلَكِنِّىْ اُحِبُّ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ فَاَنْتَ مَعَ مَنْ اَحْبَبْتَ فِىْ رِوَايَةٍ قَالَ حَضْرَتْ اَنَسُ بْنُ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ فَمَا فَرِحْنَا بَعْدَ الْاِسْلَامِ فَرَحًا اَشَدَّ مِنْ قَوْلِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاَنْتَ مَعَ مَنْ اَحْبَبْتَ قَالَ حَضْرَتْ اَنَسٌ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ فَاَنَا اُحِبُّ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَحَضْرَتْ اَبَا بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَحَضْرَتْ عُمَرَ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَاَرْجُوْ اَنْ اَكُوْنَ مَعَهُمْ وَاِنْ لَّـمْ اَعْمَلْ بِاَعْمَالِـهِمْ قُلْتُ وَهٰذَا الَّذِىْ تَـمَسَّكَ بِهٖ حَضْرَتْ اَنَسٌ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ يَشْمَلُ مِنَ الْمُسْلِمِيْنَ كُلَّ ذِىْ نَفْسٍ فَكَذٰلِكَ تَعَلَّقَتْ اَطْمَاعُنَا بِذٰلِكَ وَاِنْ كُنَّا مُقَصِّرِيْنَ وَرَجَوْنَا رَحْمَةَ الرَّحْمٰنِ وَاِنْ كُنَّا غَيْرَ مُسْتَأْهِلِيْنَ كَلْبٌ اَحَبَّ قَوْمًا فَذَكَرَهُ اللهُ مَعَهُمْ فَكَيْفَ بِنَا وَعِنْدَنَا عَقْدُ الْاِيْـمَانِ وَكَلِمَةُ الْاِسْلَامِ وَحُبُّ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَقَدْ كَرَّمْنا بَنِىْ اٰدَمَ وَحَمَلْناهُمْ فِى الْبَرِّ وَالْبَحْرِ وَرَزَقْناهُمْ مِنَ الطَّيِّباتِ وَفَضَّلْنَاهُمْ عَلـٰى كَثِيْرٍ مِـمَّنْ خَلَقْنَا تَفْضِيْلًا.
অর্থ: “ইবনে আতিয়্যাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমার শ্রদ্ধেয় পিতা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছেন যে, তিনি ৪৬৯ হিজরী সনে মিসরের জামে মসজিদে আবুল ফযল জওহারী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার একটি ওয়ায শুনেছেন। তিনি মিম্বরে বসে বলেছিলেন, যে ব্যক্তি নেককার উনাদেরকে মুহব্বত করে উনাদের নেকীর অংশ সে-ও পায়। দেখ, আছহাবে কাহ্ফের কুকুর উনাদেরকে মুহব্বত করেছে এবং উনাদের সঙ্গী হয়ে গেছে। ফলে মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত কুরআন শরীফ-এ এই কুকুরটির কথা উল্লেখ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
(ইমাম কুরতুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,) আমি বলি, একটি কুকুর যখন নেককার এবং ওলীগণ উনাদের ছোহবত মুবারক অর্জন করার কারণে এবং উনাদের সঙ্গী হওয়ার কারণে এই সুউচ্চ মর্যাদা পেতে পারে যে, স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি এই বিষয়টি উনার সম্মানিত কিতাব কুরআন শরীফ উনার মধ্যে আলোচনা মুবারক করেছেন, তখন আপনি অনুমান করুন, যেসব ঈমানদার তাওহীদী লোক মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী ও নেককার উনাদেরকে মুহব্বত করে, উনাদের সঙ্গী হয়, তাদের মর্যাদা কতটুকু হবে? সুবহানাল্লাহ! এ ঘটনা মুবারক-এ সেসব মুসলমান উনাদের জন্য সান্তনা ও সুসংবাদ রয়েছে, যারা আমলে কাঁচা, কিন্তু নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মনে প্রাণে মুহব্বত করে। সুবহানাল্লাহ!
(অতঃপর ইমাম কুরতুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,) ‘ছহীহ বুখারী শরীফ’-এ হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত রয়েছে। তিনি বলেন, একদিন আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সম্মানিত মসজিদে নববী শরীফ থেকে বের হচ্ছিলাম। সম্মানিত মসজিদে নববী শরীফ উনার দরজা মুবারক উনার নিকট আমাদের সাথে একজন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার দেখা হলো। তিনি সুওয়াল করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! কিয়ামত কবে হবে? নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনি কিয়ামতের জন্যে কী প্রস্তুতি নিয়েছেন (যে, আপনি কিয়ামত সম্পর্কে প্রশ্ন করেছেন)? এই কথা শুনে উক্ত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি মনে মনে কিছুটা লজ্জিত হলেন। অতঃপর তিনি বললেন, আমি কিয়ামতের জন্যে অনেক নামায, রোযা ও দান-খয়রাত সঞ্চয় করিনি, কিন্তু আমি মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে মুহব্বত করি। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, যদি তাই হয়, তবে, আপনি (পরকালে) উনার সাথে থাকবেন, যাকে আপনি মুহব্বত মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
অপর বর্ণনায় রয়েছে, হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন,
فَاَنْتَ مَعَ مَنْ اَحْبَبْتَ
“আপনি (পরকালে, সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ) উনার সাথে থাকবেন, যাকে আপনি মুহব্বত মুবারক করেন।” সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জবান মুবারক-এ এই সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ শুনে আমরা এতই আনন্দিত হলাম যে, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করার পর, মুসলমান হওয়ার পর এর চাইতে বেশী আনন্দিত আর কখনো হইনি। সুবহানাল্লাহ! হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি আরো বলেন, আমি মহান আল্লাহ পাক উনাকে, উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনাকে ও সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে মুহব্বত করি এবং আশা করি যে, (পরকালে সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ) উনাদের সাথেই থাকবো। যদিও আমি উনাদের অনুরূপ আমল করি না। সুবহানাল্লাহ!
(অতঃপর ইমাম কুরতুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,) আমি বলি, আর এই বিষয়টি যা হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি আঁকড়িয়ে ধরেছেন, তা প্রত্যেক মুসলমান উনাদেরকে শামিল করেছে। সুবহানাল্লাহ! অনুরূপভাবে আমাদের কাঙ্খিত প্রত্যাশা, কামনা-বাসনা তার সাথে সম্পৃক্ত হয়েছে, যদিও আমরা এই বিষয়ে ব্যর্থ। আর আমরা মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত রহমত মুবারক প্রত্যাশা করি, যদিও আমরা আযোগ্য। সুবহানাল্লাহ! কুকুর আছহাবে কাহ্ফ উনাদেরকে মুহব্বত করার কারণে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদের সাথে কুকুরের আলোচনা (সম্মানিত ও পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে) করেছেন। (যদি তাই হয়,) তাহলে আমাদের তো রয়েছে সম্মানিত ঈমান মুবারক উনার বন্ধন, সম্মানিত ইসলাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র কালিমা মুবারক এবং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারক, তাহলে আমাদের সাথে মহান আল্লাহ পাক তিনি কিরূপ আচরণ করবেন? সুবহানাল্লাহ! (অথচ মহান আল্লাহ পাক তিনি ‘সম্মানিত ও পবিত্র সূরা বানী ইসরাঈল শরীফ উনার ৭০ নং আয়াত শরীফ’ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেছেন,)
وَلَقَدْ كَرَّمْنَا بَنِىْ اٰدَمَ وَحَمَلْنَاهُمْ فِى الْبَرِّ وَالْبَحْرِ وَرَزَقْنَاهُمْ مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَفَضَّلْنَاهُمْ عَلـٰى كَثِيْرٍ مِـمَّنْ خَلَقْنَا تَفْضِيْلًا.
“নিশ্চয়ই আমি আদম সন্তান উনাদেরকে সম্মানিত করেছি, আমি উনাদেরকে স্থল ও পানিতে চলাচলের বাহন দান করেছি; উনাদেরকে উত্তম জীবনোপকরণ প্রদান করেছি এবং উনাদেরকে অনেক তথা সমস্ত সৃষ্টি জীবের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে কুরতুবী শরীফ ১০/৩৭১-৩৭২)
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে যে, নিম্নোক্ত ১০টি প্রাণী বিশেষ কারণে সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ প্রবেশ করবে-
১. সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত উটনী মুবারক।
২. হযরত ছালিহ আলাইহিস সালাম উনার উটনী, ৩. হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার এবং হযরত ইসমাঈল যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের দুম্বা, ৪. হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার গাভী, ৫. বালআম ইবনে বাঊরার গাধা, ৬. হযরত ইউনূস আলাইহিস সালাম উনাকে যেই মাছ ধারন করেছিলো, সেই মাছ। এই মাছ সবসময় মহান আল্লাহ পাক উনার যিকির করতো, ৭. হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম উনার পিপীলিকা, ৮. হযরত ওযাইর আলাইহিস সালাম উনার গাধা, এবং ৯. রাণী হযরত বিলকিস আলাইহাস সালাম উনার হুদহুদ পাখি, ১০. আসহাবে কাহ্ফের কুকুর হযরত শেখ সা’দী রমহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
ساگ اصحاب كهف روزے چند
پئے نيگاں گرفت مردم شد
অর্থ: “আছহাবে কাহ্ফের কুকুর নেককারদের ছোহবতে থাকার কারণে মানুষের ছূরতে জান্নাতী হবে।” সুবহানাল্লাহা!
ইমামুল মুফাসসিরীন মিনাল আউওয়ালীন ইলাল আখিরীন, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “পরকালে হিসাব-নিকাশের পর আছহাবে কাহ্ফের কুকুরটি বণী ইসরাঈলের মরদূদ দরবেশ বাল‘আম ইবনে বা‘ঊরার ছূরতে সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ প্রবেশ করবে এবং অনন্তকাল যাবৎ সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ অবস্থান করবে।” সুবহানাল্লাহ!
এখন বলার বিষয় হচ্ছে, সম্মানিত ও পবিত্র সূরা কাহ্ফ শরীফ হচ্ছেন সম্মানিত ও পবিত্র কুরআন শরীফ উনার অন্যতম একখানা সম্মানিত ও পবিত্র সূরা শরীফ। সুবহানাল্লাহ! সেই সম্মানিত ও পবিত্র সূরা শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ‘আছহাবে কাহ্ফ’ উনাদের আলোচনা করেছেন এবং উনাদের সাথে উনাদের কুকুরটিরও আলোচনা করেছেন। সুবহানাল্লাহ! এই কুকুরটি উনাদেরকে মুহব্বত করার কারণে, উনাদের সঙ্গী হওয়ার কারণে পরকালে মরদূদ দরবেশ বাল‘আম ইবনে বা‘ঊরার ছূরতে সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ প্রবেশ করবে। সুবহানাল্লাহ! আছহাবে কাহ্ফ উনার সদস্যরা ছিলেন হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার উম্মত। উনারা অনেক বড় ওলীআল্লাহ ছিলেন তা না। উনারা ঈমান হেফাযতের লক্ষ্যে পাহাড়ের গুহায় প্রবেশ করেছেন। আর উনাদেরকে মুহব্বত করার কারণে, উনাদের সঙ্গী হওয়ার কারণে যদি একটি কুকুর এত বেমেছাল ফযীলত লাভ করে যে, স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজে সম্মানিত ও পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে কুকুরটির আলোচনা করেন এবং কুকুরটি পরকালে মানুষের ছূরতে জান্নাতী হবে। সুবহানাল্লাহ! তাহলে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক হচ্ছেন এক কথায় উনারা শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন উনারা। সুবহানাল্লাহ! আর উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে বিশেষ ব্যক্তিত্বা মুবারক। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উনাকে যদি এই উম্মত মুহব্বত করে, উনার সম্মানিত ছোহবত মুবারক অর্জন করে, তাহলে এই উম্মত কী নিয়ামত মুবারক লাভ করবে? সুবহানাল্লাহ! মূলত, এই বিষয়টি সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ফযল-করম মুবারক-এ এবং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দয়া-দান, ইহ্সান মুবারক-এ ঐ সকল উম্মত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের আখাচ্ছুল খাছ মুহব্বত-মা’রিফত, নিসবত-কুরবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক লাভ করবে এবং উনাদের খাদিম হিসেবে উনাদেরই সাথেই অনন্তকাল যাবৎ সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ অবস্থান মুবারক করবে। সুবহানাল্লাহ! যদিও তাদের আমলে শত ত্রুটি থাকুক না কেন। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ তিনি আমাদের সবাইকে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে, খাছ করে সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনাকে হাক্বীক্বীভাবে মুহব্বত করার, উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার, উনার তা’যীম-তাকরীম ও ছানা-ছিফত মুবারক করার এবং উনার সম্মানিত নিসবত মুবারক হাছিল করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
0 Comments:
Post a Comment