প্রথম হিজরী সনেই হযরত আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম
উনাদের মধ্যে দুজন অত্যন্ত মর্যাদাশীল হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহুমা উনারা পবিত্র বিছাল শরীফ গ্রহণ করেন। উনারা হলেন হযরত কুলসুম বিন হাদাম
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং হযরত আসআদ বিন যুরারাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু।
হযরত আসআদ বিন যুরারাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সম্পর্কে আমরা পূর্বেই
আলোচনা করেছি।
হযরত কুলসুম বিন হাদাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি ছিলেন ওই ব্যক্তি যাঁর
হুজরা মুবারকে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন
নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কুবায় অবস্থানকালে সম্মানিত মেহমান
হয়েছিলেন। অধিকাংশ জলীলুল ক্বদর হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম
উনারা হুজরা শরীফ উনার মধ্যে আতিথ্য গ্রহণ করেছিলেন।
হযরত কুলসুম বিন হাদাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং হযরত আসআদ বিন যুরারাহ
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাদের পবিত্র বিছাল শরীফ উনার পর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
শোক মুবারক প্রকাশ করেছেন। আর এ ঘটনাকে নিয়ে ইহুদীরা বলতে লাগলো, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যদি সত্যিই আখিরী
নবী হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতেন তাহলে এমন আঘাত
উনাকে সইতে হতো না। নাউযুবিল্লাহ!
তার পাশাপাশি কাফিরদের দু’জন নেতা মৃত্যুবরণ করে। ওয়ালীদ বিন মুগীরা- যে হযরত
খালিদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার পিতা ছিলো। অপরজন আস বিন ওয়ায়িল সাহমী। যার
ছেলে ছিলেন হযরত আমর বিন আস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, যিনি মিসর জয় করেছিলেন।
উল্লেখ যে, ওয়ালীদ ইবনে
মুগীরা মুমূর্ষ অবস্থায় খুবই চিৎকার করে হাহুতাশ
করছিলো। তখন আবু জাহেল তাকে বললো এতো চিৎকার করার কারণ কি? সে বললো, আমার আশঙ্কা হচ্ছে যে, ইবনে আবূ কাবছা উনার দ্বীন পবিত্র মক্কা শরীফ উনার মধ্যে
প্রাধান্য লাভ করবে। হযরত আবূ সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, (তখনও তিনি পবিত্র ইসলাম গ্রহণ করেননি) তুমি মিছামিছি ভয়
পেয়ো না। উনার পবিত্র দ্বীন যাতে পবিত্র মক্কা শরীফ উনার মধ্যে বিস্তার করতে না
পারেন আমি তার দায়িত্ব গ্রহণ করলাম। পবিত্র মক্কা শরীফ উনার কাফির-মুশরিকরা আখিরী
রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাকে আবূ কাবছা উনার পুত্র নামে অভিহিত করতো।
স্মরণীয় যে, জাহিলায়াতের
যুগে আবূ কাবছা নামক এক ব্যক্তি ইবাদত করতো। তার সাথে তুলনা করে কাফির-মুশরিকরা
আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাকে আবূ কাবছার পুত্র বলতো। নাউযুবিল্লাহ! কেউ কেউ বলেন- আবূ কাবছা ছিলেন আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুগ্ধ সম্পর্কের
পূর্ব-পুরুষ। (মাদারিজুন নুবুওওয়াত, সীরাতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
হযরত আবু কায়স সিরমা ইবনে আবু আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু উনার পবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণ:
হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি যখন পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে
বসবাস মুবারক করতে লাগলেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে
সুপ্রতিষ্ঠিত করলেন, হযরত মুহাজির ও
হযরত আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
চতুষ্পার্শ্ব মুবারকে সমবেত করলেন তখন হযরত আবু কায়স সিরমা ইবনে আবু আনাস
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি পবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন।
হযরত ইবনে হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হযরত আবু কায়স রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নসবনামা হযরত
আবু কায়স সিরমা ইবনে আবু আনাস ইবনে সিরমা ইবনে মালিক ইবনে আদী ইবনে আমির ইবনে
গানাম ইবনে আদী ইবনে নাজ্জার রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু।
হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, তিনি জাহিলীয়াতের যুগে সংসার বিরাগী হন এবং মোটা বস্ত্র
পরিধান করতেন। মূর্তিপূজা থেকে দূরে থাকতেন। জানাবাতের গোসল করতেন এবং ঋতুমতী
নারীদের সংসর্গ পরিহার করে চলতেন। একবার তিনি খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করতে ইচ্ছা করলেন
কিন্তু পরে তা থেকে বিরত থাকেন এবং উনার একটি গৃহকে ইবাদত খানায় রূপান্তরিত করে
তাতে প্রবেশ করেন। এতে কোনো ঋতুমতী বা জুনুবী লোক প্রবেশ করতে পারতো না। তিনি যখন
মূর্তিপূজা ত্যাগ করলেন এবং তার প্রতি বিরাগ হলেন, তখন তিনি বললেন, আমি হযরত ইবরাহীম খলীল আলাইহিস সালাম উনার রব উনার (প্রভুর) ইবাদত করি। তারপর
যখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে
হিযরত মুবারক করলেন তখন হযরত আবু কায়স সিরমা ইবনে আবু আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু তিনি পবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করলেন এবং একজন বিশিষ্ট ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু হিসেবে পরিণত হলেন।
হযরত আবূ কায়স সিরমা ইবনে আবূ আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি পবিত্র
দ্বীন ইসলাম গ্রহণের সময় অত্যন্ত বয়োবৃদ্ধ ছিলেন। স্পষ্টবাদিতা ও সত্য বলাতে তিনি
ছিলেন দ্বিধাদ্বন্দ্বহীন। জাহিলিয়াতের যুগেও তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি উনার
গভীর সম্মান ও মুহব্বত প্রকাশ করেন। এ ব্যাপারে খুবই সুন্দর সুন্দর কবিতা রচনা
করতেন। তিনি বলেন,
يقول أبو قيس وأصبح غاديا- ألا ما استطعتم من وصاتي فافعلوا
আবু কায়স তিনি নিত্য ভোরে গুণগুনিয়ে বলে উঠেন, ধর আমার উপদেশ যতখানি সাধ্য জুটে।
فأوصيكم بالله والبر والتقى- وأعراضكم والبر بالله أول
আমি তোমাদের নির্দেশ করছি, মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি ঈমান বা বিশ্বাস, সৎ কাজ ও খোদা ভীতি অর্জনের ব্যাপারে, সৎকাজের ব্যাপারে মহান
আল্লাহ পাক উনার কাজটিই আরো অতপর অন্যান্য কাজ।
وإن قومكم سادوا فلا تحسدنهم- وإن كنتم أهل الرئاسة فاعدلوا
বংশে তোমাদের নেতা হলে হিংসা করবে না; নিজে যদি রাজ্য লাভ করো তবে বে ইনসাফী
করবে না।
وإن نزلت إحدى الدواهي بقومكم- فأنفسكم دون العشيرة فاجعلوا
ভাগ্য বিবর্তনে যদি বংশে কোনো বিপদ আসে; তবে তোমাদের নিজেদেরকে বিলিয়ে দিয়ে স্বজাতিকে রক্ষা করবে।
وإن ناب غر فادح فارفقوهم- وما حملوكم في الملمات فاحملوا
যদি তোমার উপর কোনো কিসাস বা দ-ভার চাপে, তবে তোমরা তাদেরকে সহযোগিতা করবে, দুর্যোগপূর্ণ কঠিন সময়ে তোমাদের উপর কোনো দায়িত্ব অর্পিত
হলে আমরণ তা পালন করবে।
وإن أنتم أمعزتم فتعففوا- وإن كان فضل الخير فيكم فأفضلوا
যদি কোনো সময় তোমরা অভাবগ্রস্ত হয়ে পড় তবে তাতে ধৈর্যধারণ করো, আর যদি সচ্ছল অবস্থায় থাকো তাহলে তোমরা মানুষের প্রতি
বদান্যতা দেখাবে।
হযরত ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো বলেন,
سبحوا الله شرق كل صباح- طلعت شمسه وكل هلال
মহান আল্লাহ পাক উনার তাসবীহ মুবারক পাঠ করো সকালে যখন আকাশে সূর্যোদয় হয়, আর যখন রাতে চন্দ্রোদয় হয়।
عالم السر والبيان جميعا- ليس ما قال ربنا بضلال
মহান আল্লাহ পাক তিনি গোপন প্রকাশ্য সবই জানেন তিনিই জ্ঞানের মালিক বা সত্তা।
আমাদের রব মহান আল্লাহ পাক তিনি যা বলেছেন তা ভ্রান্ত নয়।
وله الطير تستزيد وتأوي- في وكور من آمنات الجبال
যে পাখিটি উড়ে বেড়ায় এবং নিরাপদে
পাহাড় চূড়ায় তার নীড়ে আশ্রয় নেয়। সে পাখিরও মালিক তিনি।
وله الوحش بالفلاة تراها- في حقاف وفي ظلال الرمال
প্রান্তরে যে বন্য প্রাণী তুমি দেখতে
পাও পাহাড়ের গর্তে ও বালুর টিলা প্রান্তে।
وله هودت يهود ودانت- كل دين مخافة من عضال
উনার দিকে প্রত্যাবর্তন করেছে ইহুদীরা এবং উনারই কাছে নত হয়েছে, অপরপক্ষে তুমি যেদিনেরই উল্লেখ কর না কেন, তা হলো দুরারোগ্য রোগ।
وله شمس النصارى وقاموا- كل عيد لربهم واحتفال
উনার জন্য ইবাদত করছে খ্রিস্টানরা এবং তারা মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদতে তাদের
ঈদ বা খুশির মাহফিল ও অন্যান্য দ্বীনি মাহফিলগুলোতে সপ্ন থাকে।
وله الراهب الحبيس تراه- رهن بؤس وكان أنعم بال
উনার জন্য সংসার ত্যাগী পাদ্রীদেরকে দেখতে পাবে যে, তারা অতিকষ্টে জীবন-যাপন করছেন, অথচ তাদের জীবন কেটেছে অতি সুখে।
يا بني الارحام لا تقطعوها- وصلوها قصيرة من طوال
হে বৎস! তোমরা আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করো না, তুমি উদার ব্যবহার করো, যদিও সে সঙ্কীর্ণ হয়।
واتقوا الله في ضعاف اليتامى- وبما يستحل غير الحلال
মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করো, দুর্বল ইয়াতীমদের ব্যাপারে অনেক সময় অবৈধকে বৈধ বানানো হয়।
واعلموا أن لليتيم وليا- عالما يهتدي بغير سؤال
জেনে রাখো, ইয়াতীমদের এমন
একজন সর্বজ্ঞা অভিভাবক রয়েছেন, যিনি সুওয়াল ছাড়াও সব ব্যাপারে অ বহিত।
ثم مال اليتيم لا تأكلوه- إن مال اليتيم يرعاه والي
ইয়াতীমের সম্পদ তুমি গ্রাস করো না
লোভের বশে, কেননা ইয়াতীমের
মালের জন্য একজন তত্ত্বাবধায়ক বা রক্ষক রয়েছেন।
يا بني التخوم لا تخزلوها- إن جزل التخوم ذو عقال
বৎস তুমি ভূমির সীমা লংঘন করো না।
কেননা পরের জমি সীমা লংঘন করলে অধঃপতন ঘটে।
يا بني الايام لا تأمنوها- واحذروا مكرها ومر الليالي
হে বৎস! তুমি কালের বিবর্তন থেকে
নিশ্চিন্ত থেকো না এবং তার ধোঁকা ও চক্র থেকে সতর্ক থাকো।
واعلموا أن مرها لنفاد- الخلق ما كان من جديد وبالي
আর জেনে রেখো, কালের বিবর্তন
হচ্ছে সৃষ্টির লয়ের জন্য; সে নতুন
হোক বা পুরান।
واجمعوا أمركم على البر والتقوى- ويترك الخنا وأخذ الحلال
আর তোমরা পূর্ণ ও তাকওয়া অবলম্বনে এবং হালাল উপার্জনে ও অশ্লীলতা ত্যাগে দৃঢ়
প্রত্যয়ী হও।
হযরত আবূ কায়স সিরমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার
দ্বারা মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার কতটুকু মহিমান্বিত মর্যাদা প্রকাশ করেছেন তারও
চমৎকার অভিব্যক্তি ঘটিয়েছেন উনার
স্বরচিত কবিতায়।
ثوى في قريش بضع عشرة حجة- يذكر لو يلقى حبيبا مؤاتيا
আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
কুরাইশদের মধ্যে এক দশকের বেশি সময় অবস্থান মুবারক করেন এবং তাদেরকে নছীহত মুবারক
করতে থাকেন এই আশা মুবারকে যে, তিনি কোনো ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সন্ধান পাবেন।
ويعرض في أهل المواسم نفسه- فلم ير من يؤوي ولم ير داعيا
পবিত্র হজ্জ উনার মওসুমে তিনি লোকদের
নিকট উপস্থিত হতেন কিন্তু তিনি কোনো খিদমত উনার আঞ্জামকারীদের ও আহ্বান মুবারকে
সাড়াদানকারী পেলেন না। (সর্ব শেষে পবিত্র মদীনা শরীফ উনার আউস ও খাজরাজ সম্পদায়কে
পেলেন)
فلما أتانا أظهر الله دينه- وأصبح مسرورا بطيبة راضيا
তিনি যখন আমাদের নিকট তাশরিফ মুবারক নিলেন, তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার দ্বীন ইসলাম উনাকে
আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ী করলেন এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে খুশীতে জীবন মুবারক যাপন করলেন।
وألفى صديقا واطمأنت به النوى- وكان له عونا من الله باديا
তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সন্ধান এবং
পবিত্র হিজরত উনার পর সেখানে অবস্থান মুবারক করলেন। তিনি ছিলেন মহান আল্লাহ পাক
উনার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য সুস্পষ্ট ধারক বাহক ও সাহায্যকারী।
يقص لنا ما قال حضرت نوح عليه السلام لقومه- وما قال حضرت موسى عليه السلام إذ أجاب المناديا
হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার কাওম বা সম্প্রদায়কে যা বলেছেন তিনি তা আমাদের
নিকট বর্ণনা করেছেন। হযরত মূসা কালিমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি গায়িব থেকে (মহান
আল্লাহ পাক) উনার জবাবে যা বলেছেন তিনিও তা আমাদের নিকট প্রকাশ করেছেন।
فأصبح لا يخشى من الناس واحدا- قريبا ولا يخشى من الناس نائيا
তিনি এভাবে যমীনে চলা-ফিরা মুবারক করতেন যে, তিনি কোন মানুষ তথা মাখলুকাত বা কাউকে ভয় করতেন না। আর তিনি
কোন ব্যক্তিকে ভয় করতেন না, সে হোক নিকটের বা দূরের।
بذلنا له الاموال من جل مالنا- وأنفسنا عند الوغى والتآسيا
আমরা উনার খিদমত মুবারকে আমাদের হালাল সম্পদসমূহ ব্যয় করেছি, আর আমরা বিলিয়ে দিয়েছি সম্পদ ও জিহাদের সময়ে আমাদের জান।
ونعلم أن الله لا شئ غيره- وإن كتاب الله أصبح هاديا
আমরা জেনেছি যে, মহান আল্লাহ পাক
তিনি ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই, আরো জানতে পেরেছি যে, নিশ্চয়ই
মহান আল্লাহ পাক ও উনার কিতাব মুবারক সর্বশ্রেষ্ঠ পথপ্রদর্শক।
نعادي الذي عادى من الناس كلهم- جميعا وإن كان الحبيب المصافيا
মানুষের মধ্যে যারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে শত্রুতা পোষণ
করে আমরা সে সব ব্যক্তিদের সাথে শত্রুতা পোষণ করে থাকি যদিও তারা অন্তরঙ্গ বন্ধু
হোক না কেন।
أقول إذا صليت فى كل بيعة- تباركت اسم الله أنت المواليا
সব বাইয়াত গ্রহণের সময় যখন আমি আপনাকে আহবান করি, তখন আমি বলি আপনার রব তিনি খুবই বরকতময় আমি আপনার নাম
মুবারক অনেকবার স্মরণ করেছি।
أقول إذا جاوزت أرضا مخيفة- حنانيك لا تظهر علينا الا عاديا
যখন আমি কোন শঙ্কাপূর্ণ স্থান অতিক্রম করি তখন আমি বলি হে দয়াময়! আপনার মেহেরবানীতে
আমার উপর শত্রুকে বিজয়ী করবেন না।
فطا معرضا إن الحتوف كثيرة- وانك لا تبقي لنفسك باقيا
তুমি মুখ ফিরিয়ে পথ অতিক্রম করতে থাকো, কেননা, মৃত্যু রয়েছে অনেক প্রকার। তুমি বাঁচতে চাইলেও বেঁচে থাকতে পারবে না।
فو الله ما يدري الفتى كيف سعيه- إذا هو لم يجعل له الله واقيا
মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! কোন যুবক জানে না কেমন করে বাঁচবে সে, যদি মহান আল্লাহ পাক তিনি তার জন্য কোন হিফাযতকারী নিযুক্ত
না করেন।
ولا تحفل النخل المعيمة ربها- إذا أصبحت ريا وأصبح
কাজে আসে না শুকনা খেজুর গাছ তার মালিকের জন্য, সে অতি শীঘ্র জীর্ণ শীর্ণ হয়ে ধ্বংস হয়ে যাবে।
0 Comments:
Post a Comment