হাদিউল উমাম -জিন্দাবাদ
ছানী শাহদামাদ-জিন্দাবাদ
ঈদে মীলাদ -জিন্দাবাদ
হে নূরী শাহদামাদ! আরশের পরশে, রওজায় মিশে, অতি নিমিষে আপনার আগমন।
শুকরিয়া জানাতে, মাহফিল রাঙাতে, নূরী প্রভাতে, উজ্জীবিত সকল হৃদয় মন। মন
মননে, হৃদী কাননে, মুবারক শানে, লিখিবার নেই ভাষা। শুধু
দয়া, শুধু মায়া, নজরি ছায়া পাওয়া, মোর আশা। লিখনীর ছোঁয়া, হবে না ভুয়া, করেন যদি ইহসান। ছোট হলেও
হবে তা অফুরান। আপনি হাবীবী নন্দন, চাই আপনার বন্দন, চাই নিছবতী করিডোর। একটু ছায়া, একটু মায়া, পেলেই শুভ হবে মোর ভোর।
করুন ইহসান, চাই দয়া দান, চাই অফুরান, আপনার মুবারক কদমে, নূরানী হৃদে রাখুন বেঁধে বলি কেঁদে কেঁদে তাড়াবেন না অধমে।
আপনি আলীশান, আপনি মহীয়ান, আপনি দয়াবান, রাখি আমি বিশ্বাস। ফজল, করম, রহম, পরম পেলে ছাড়তে পারবো নিঃশ্বাস। এ আমার অভিষেক আরজি কদমে
ভেজি, থাকুন রাজি, মুবারক দিন আজি, শুধু এ দিনের তরে। হে
আক্বাজী, হে দাতাজী করুন মর্জি, রাখুন মুবারক দ্বারে।
হে সাইয়্যিদী খান্দান!
ধরা সাজিয়ে, মাখলুক মজিয়ে, নূর চমকিয়ে, আঁধার থমকিয়ে, সুবাস ছড়িয়ে, সুন্নত জড়িয়ে, রূপালী অবয়বে, নিথর নীরব আজকের মহান দিনে
আপনার মুবারক তাশরীফ সত্যিই আমাদেরকে করেছে বিমোহিত, আলোড়িত,
আন্দোলিত ও আনন্দ মুখর। মুবারক নূরী পরশ মাখা শুভ দিবসে
আপনাকে জানাই কায়িনাতের জানা অজানা সমস্ত পুষ্পমালার শুভেচ্ছা। অতি আদরে, দয়া ও সাদরে আপনি আমাদের শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন।
হে তারাক্কির মিনহাজ!
আপনি তাশরীফ নিয়ে আমাদের করেছেন মুগ্ধ, ধন্য ও বরকতময়। আমরা যা পূর্বে বুঝতাম না, জানতাম না, মানতাম না, ভ্রুক্ষেপ করতাম না, ইতমিনান মনে করতাম না তা সবই আপনি বুঝিয়ে দেন, নজরে এনে দেন, জানিয়ে দেন, ইতমিনান বানিয়ে দেন। তাই আপনি হচ্ছেন আমাদের তারাক্কির
মিনহাজ। মুর্শিদী রেযা পেতে আপনি আমাদের পরম সহায়ক।
হে ছহিবে নিজাম!
উল্টোপাল্টা, এলোমেলো, অগোছানো, দৃষ্টিকটু ইত্যাদি
কার্যক্রমে, আমলে আমরা ছিলাম বিভোর।
আপনার সুনির্দেশিকা, সুপরামর্শ, মুবারক আদেশ-নিষেধ, তর্জ-তরীক্বা, নিয়ম-নীতি আমাদেরকে করেছে
সুশৃঙ্খল, সুবিন্যস্ত, সুনিপুণ। তাই আমরা দৃঢ়চিত্তে এক বাক্যে বলতে বাধ্য হবো আপনি
হচ্ছেন ছহিবে নিজাম।
হে রূপালী চাঁদ!
ব্যক্তির ভালো কথাও ভালো লাগে না, ভালো জিনিসও পছন্দ হয় না, যদি না ধরে অন্তরে। তাই তো প্রবাদে বলা হয়েছে- যাকে দেখতে
নারি তার চলন বাঁকা। আর আপনার রূপালী চাঁদ সদৃশ অবয়বের মাঝ থেকে দু’খানা হেলালের মতো শাফাতাইন
নিসৃত মধুমাখা ঐশী বাণীমালা সত্যি আমাদেরকে আবেগাপ্লুত করে দেয়। আজীব করে দেয়, মোহনীয় করে দেয়, যার কারণে দায়িমী শুনতে
ইচ্ছে করে আপনার মুবারক নছিহত, ওয়াজ শরীফ, পরামর্শ শরীফ, সুনির্দেশনা শরীফ।
ইয়া শাহদামাদে মুজাদ্দিদে আ’যম
আলাইহিস সালাম!
সুমহান মুজাদ্দিদ যেমন কোশেশ করে, রিয়াজাত, মাশাক্কাত করে হওয়া যায়
না। ঠিক তেমনি কোশেশ, রিয়াজত, মাশাক্কাত করে মুজাদ্দিদ উনার দামাদ হওয়াও যায় না। কেননা এই
বিষয়গুলো হলো মুরাদ, মক্ববুল, মাহবুব, তথা মনোনীত হওয়া বিষয়ের
গ-িতে والله يختص برحمته من يشاء
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি যাকে উনার রহমতে খাছ
দ্বারা বেষ্টন করে নেন, উনারাই হতে পারেন
মুজাদ্দিদ, হতে পারেন উনার শাহদামাদ।
ইয়া হাদিউল উমাম আলাইহিস সালাম!
আপনার মুবারক লক্বব বুঝিয়ে দেন আপনি কত বড় মাক্বাম উনার
ওলীআল্লাহ। আপনি কায়িনাতের সকল উম্মতের পথ-প্রদর্শক। আপনি বিদয়াত, বিশরা, কুফর, শিরক ইত্যাদি থেকে উম্মাহকে টেনে বের করে ফরয-ওয়াজিব
সুন্নতের পাবন্দ করে দেন। কাফিরকে করেন মুসলমান। বিদয়াতীকে করেন ইছলাহ। বেহায়াকে
করেন রুচিসম্মত স্বাভাবিক।
হে ওয়ারাউল ওয়ারা!
আপনার শান আলীশান, অফুরান। আপনার সব শানের বিকাশ হয়েছে আজকের এই মুবারক ৯ই
জুমাদাল ঊলা শরীফ-এ। তাই মুবারক এদিনে আপনাকে আবারও জানাই আহলান, সাহলান, স্বাগতম, খোশ আমদেদ। শুভ বিলাদত জিন্দাবাদ, ৯ই জুমাদাল ঊলা শরীফ জিন্দাবাদ।
আহলান ওয়া সাহলান আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম
আলাইহিস সালাম
আরবী পঞ্চম মাস উনার নাম
পবিত্র জুমাদাল ঊলা শরীফ। পবিত্র জুমাদাল ঊলা শরীফ মাস উনার অনেক ফাযায়িল-ফযীলতের
মধ্যে একটি বিশেষ দিক হচ্ছে, এ মাসে জলীলুল ক্বদর
ছাহাবী এবং হযরত খুলাফায়ে রাশিদা আলাইহিমুস সালাম উনাদের ৩য় খলীফা সাইয়্যিদুনা
হযরত যূন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার খাছ কায়িম-মাক্বাম, কুতুবুল আলম, বাবুল ইলম, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম আলাইহিস সালাম
তিনি পবিত্র জুমাদাল ঊলা শরীফ মাস উনার ৯ তারিখ মুবারক-এ পবিত্র বিলাদতী শান
মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
যিনি আওলাদে রসূল আলাইহিস সালাম। যিনি খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, হাবীবুল্লাহ, আওলাদে রসূল, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম এবং উম্মুল উমাম, ক্বায়িম-মক্বামে উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের
শাহদামাদ। সুবহানাল্লাহ!
যিনি সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মু আবীহা, ছিদ্দীক্বা, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, নিবরাসাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ছানী ক্বিবলা আলাইহাস সালাম
সালাম উনার জাওযুল মুকাররম। সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য যে, হযরত আওলাদে রসূল অর্থাৎ
হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের আগমন, আবির্ভাব, পবিত্র বিলাদত শরীফ
যমীনবাসীর জন্য সবচেয়ে বড় রহমত, বরকত তথা ঈদ বা ঈদে আ’যম উনার শামিল।
আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম আলাইহিস সালাম
উনার ফযীলত, বুযূর্গী, তাক্বওয়া, তায়াল্লুক, নিসবত বেমেছাল। উনি খাছ সন্তুষ্টিপ্রাপ্ত এবং পাশাপাশি
বেমেছালভাবে নিবেদিত। সেই সাথে রাজারবাগ শরীফ উনার মুরীদান তথা উম্মাহ উনার তরফ
থেকে বেমেছাল রহমত, বরকত ও ফযীলত প্রাপ্ত
হচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ!
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, আমাদের এক পীর ভাই তিনি আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত
হাদিউল উমাম আলাইহিস সালাম উনার শান মুবারক বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছিলেন, খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহি
সালাম এবং হযরত আহলে বাইত আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা
হযরত হাদিউল উমাম আলাইহিস সালাম উনার একনিষ্ঠ মুহব্বত, একাগ্রচিত্ত নিবেদন ও হুসনে যন অপরিসীম। মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার কোনো মুবারক আদেশ-নির্দেশ শোনামাত্রই আওলাদে
রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি ব্যতিব্যস্ত হয়ে যেতেন সেই
হুকুম মুবারক তামিলে। হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের হুকুম মুবারক
পালনে, শরীয়ত উনার তাঁবেদারিতে, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হুকুম মুবারক পালনে
তিনি পিতা-মাতা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব কারোরই কোনো অবস্থাতেই
একবিন্দু তোয়াক্কা করেন না। সুবহানাল্লাহ! তিনি আরো বর্ণনা
করেছিলেন, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা
হযরত হাদিউল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি শত ভাগ দুনিয়া বিমুখতা, স্বল্পে তৃপ্ত ও মিতব্যয়ী। তিনি উনার সমস্ত কিছুই মামদূহ
হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার খিদমত-এ ব্যয় করেন। সুবহানাল্লাহ!
তিনি আরো বর্ণনা করেছিলেন, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম আলাইহিস সালাম
তিনি পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করার সময় এত আবেগ-আপ্লুত ও ইখলাছ মুবারক উনার সাথে
পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করেন তা শুনে দিল ও ক্বলব এবং জান-প্রাণ ভরে যায়।
সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “(হে আমার হাবীব আলাইহিস সালাম!) আপনি বলে দিন, আমি তোমাদের নিকট কোনো বিনিময় চাচ্ছি না। আর চাওয়াটাও
স্বাভাবিক নয়; তোমাদের পক্ষে দেয়াও
কস্মিনকালে সম্ভব নয়। তবে তোমরা যদি ইহকাল ও পরকালে হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল
করতে চাও; তাহলে তোমাদের জন্য ফরয
হচ্ছে আমার হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা, তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, উনাদের গোলামী মুবারক উনার আনজাম দেয়া।” [পবিত্র সূরা শূরা শরীফ :
পবিত্র আয়াত শরীফ ২৩]
হযরত আবূ যর গিফারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে
বর্ণিত, তিনি পবিত্র কা’বা শরীফ উনার দরজা মুবারক ধরে
বলেছেন, ‘আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাকে বলতে শুনেছি, সাবধান! আমার আহলে বাইত
শরীফ তথা আওলাদে রসূল আলাইহিস সালাম উনারা হলেন তোমাদের জন্য হযরত নূহ আলাইহিস্
সালাম উনার কিশতীর মতো। যারা তাতে আরোহণ করবে, তারা নাজাত পাবে। আর যারা তা হতে পশ্চাতে থাকবে তারা ধ্বংস
হবে।”
অতএব. সকলের উচিত হযরত আহলে বাইত শরীফ তথা আওলাদে রসূল আলাইহিস
সালাম উনাদের পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উপলক্ষে অত্যন্ত জওক-শওক ও
শান-শওকতের সাথে খুশি প্রকাশ করে রহমত, বরকত, সাকীনা, মাগফিরাত ও নাজাত মুবারক
উনার হিসসা লাভ করা। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের খাছ রেযামন্দি মুবারক হাছিল করা।
পরিশেষে আপনার ক্বদম পাকে
অরজি- আমার সমস্ত বেয়াদবি, গোস্তাখি, ভুল-ভ্রান্তি এবং বদআখলাকি
ও বদআচরণসহ সমস্তকিছু আপনার অনিন্দ্য অন্তঃকরণের বিশালতা দিয়ে ক্ষমা করে আমাকে
কবুল করে নিন। আমীন!
0 Comments:
Post a Comment