যিনি খালিক্ব মালিক
রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “(হে আমার হাবীব আলাইহিস
সালাম!) আপনি বলে দিন, আমি তোমাদের নিকট কোনো বিনিময় চাচ্ছি
না। আর চাওয়াটাও স্বাভাবিক নয়; তোমাদের পক্ষে দেয়াও কস্মিনকালে সম্ভব
নয়। তবে তোমরা যদি ইহকাল ও পরকালে হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল করতে চাও; তাহলে তোমাদের জন্য
ফরয হচ্ছে আমার হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা, তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, উনাদের গোলামী মুবারক উনার আনজাম দেয়া।” [পবিত্র সূরা শূরা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৩]
আর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমাদেরকে খাওয়া
পরার যে নিয়ামত মুবারক দিয়েছেন সেজন্য মহান আল্লাহ পাক উনাকে মুহব্বত করো। আর
আমাকে মুহব্বত করো মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক লাভ করার জন্য। আর
আমার হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করো আমার
সন্তুষ্টি মুবারক লাভ করার জন্য।” (তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! ততক্ষণ
পর্যন্ত কোনো মুসলমান ব্যক্তির অন্তরে পবিত্র ঈমান দাখিল হবে না
(হাক্বীক্বীভাবে ঈমানদার হবে না) যতক্ষণ পর্যন্ত সে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক
উনার সন্তুষ্টি মুবারক উনার জন্য আমার সম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম বা
সম্মানিত বংশধর আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত না করবে।” (মুসনাদে আহমদ শরীফ)
অর্থাৎ সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম আলাইহিস সালাম উনাকে মুহব্বত করা
ঈমান, মূলত তিনিই স্বয়ং
ঈমান। সুবহানাল্লাহ! শুধু এতটুকু নয়, মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বীয় ফদ্বল ও
রহমতস্বরূপ উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক আলাইহিস সালাম অর্থাৎ উনার সম্মানিত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম
অর্থাৎ সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম আলাইহিস সালাম উনাকে হাদিয়াস্বরূপ লাভ
করার কারণে খুশি প্রকাশের মাধ্যমে সর্বোত্তম আমল মুবারক করতে বলেছেন।
সুবহানাল্লাহ!
অর্থ:-“হযরত আলী কাররামাল্লাহু
ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নূরে মুজাসসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমার শাফায়াত ওই সকল
উম্মত উনাদের জন্য যাঁরা আমার সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম
উনাদরেকে মুহব্বত করে থাকেন। আর উনারা হচ্ছেন আমার খাছ উম্মত তথা অনুসারী।
সুবহানাল্লাহ!” (জামিউছ ছগীর ২/১৪, আল ফাতহুল কাবীর
২/১৬৯, জামিউল আহাদীছ ১৩/৪১৫, জামউল জাওয়ামি’, তারীখে বাগদাদ ২/১৪৬
ইত্যাদি)
শুধু তাই নয়, যাঁরা মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, হাবীবুল্লাহ, কায়িম মাক্বামে
সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম, আওলাদে রসূল
সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম আলাইহিস সালাম উনার মুহব্বত মুবারক-এ ইন্তেকাল
করবে তাঁরা পরকালে চরম-পরম কামিয়াবী হাছিল করবে। এই সম্পর্কে সম্মানিত হাদীছ
শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
অর্থ: “হযরত জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ
বাজালী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত
মুবারক-এ ইন্তেকাল করবেন, তিনি শহীদী মৃত্যু পাবেন। সুবহানাল্লাহ!
সাবধান! যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের
সম্মানিত মুহব্বত মুবারক-এ ইন্তেকাল করবেন, তিনি ক্ষমাপ্রাপ্ত
হয়ে ইন্তেকাল করবেন। সুবহানাল্লাহ! সাবধান! যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত হযরত আহলু
বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক-এ ইন্তেকাল করবেন, তিনি তওবাকারীরূপে
ইন্তেকাল করবেন। সুবহানাল্লাহ! যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ
আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক-এ ইন্তেকাল করবেন, তিনি পরিপূর্ণ
ঈমানদার মু’মিন হিসেবে ইন্তেকাল করবেন।
সুবহানাল্লাহ! সাবধান! যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস
সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক-এ ইন্তেকাল করবেন, উনাকে মালাকুল মউত আলাইহিস
সালাম তিনি এবং হযরত মুনকার ও নকীর আলাইহিমাস সালাম উনারা সম্মানিত জান্নাত
মুবারক উনার সুসংবাদ মুবারক দিবেন। সুবহানাল্লাহ! সাবধান! যে ব্যক্তি
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত
মুবারক-এ ইন্তেকাল করবেন, উনাকে এমনভাবে সুসজ্জিত করে জান্নাতে
নেয়া হবে, যেমনভাবে কনেকে
সাজিয়ে তার স্বামীর ঘরে নেয়া হয়। সুবহানাল্লাহ! সাবধান! যে ব্যক্তি
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত
মুবারক-এ ইন্তেকাল করবেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ঐ ব্যক্তির কবরে ঐ
ব্যক্তির জন্য সম্মানিত জান্নাত উনার দিকে দুটি দরজা মুবারক খুলে দিবেন।
সুবহানাল্লাহ! সাবধান! যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস
সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক-এ ইন্তেকাল করবেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি
উক্ত ব্যক্তি উনার কবরকে সম্মানিত রহমতের ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের মাযার
শরীফ বা যিয়ারতগাহ বানাবেন। সুবহানাল্লাহ! সাবধান! যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক-এ
ইন্তেকাল করবেন, তিনি সম্মানিত আহলু
সুন্নাত ওয়াল জামায়াত উনার উপর ইন্তেকাল করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে
কুরতুবী ১৬/২৩, তাফসীরে কবীর ২৭/৫৯৫, তাফসীরে হাক্কী ১৩/৭৯, তাফসীরে রূহুল বয়ান
৮/২৩৯, তাখরীজু আহাদীছুল
কাশ্শাফ ৩/২৩৮, নুজহাতুল মাজালিস
১/৩৬৫)
“সাইয়্যিদুনা হাদিউল
উমাম আলাইহিস সালাম”
‘হাদিউল উমাম’ সম্মানিত লক্বব বা উপাধি মুবারক দু’ খানি মুবারক শব্দের সমন্বয়ে
প্রকাশিত হয়েছে এবং প্রসিদ্ধি লাভ করেছে। সুবহানাল্লাহ! উক্ত সম্মানিত উপাধি মুবারক
উনার মাধ্যমে যিনি পরিচিত হয়েছেন তিনি আমাদের অতি আপন, অতি কাছের, অতি ঘনিষ্ঠ, অতি প্রিয় ও পছন্দনীয়, মহা সম্মানিত, কুতুবুল আলম,আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত
শাহদামাদ ছানী ক্বিবলা আলাইহিস সালাম।সুবহানাল্লাহ!
তিনি সম্মানিত আওলাদে রসূল আলাইহিস সালাম উনার অর্ন্তভুক্ত। উনাকে
মুহব্বত করা শুধু আমাদের জন্যেই নয়, সকল মু’মিন-মুসলমান, পুরুষ-মহিলা, জিন-ইনসান প্রত্যেকের
জন্যেই ফরয এবং নাজাত ও কামিয়াবী হাছিলের উপায়।
তাই তো তিনি সম্মানিত ‘হাদিউল উমাম’ উপাধি দ¦ারা ভূষিত হয়েছেন। হাদিউন অর্থ পথ
প্রর্দশক, পথ নির্দেশক। আর উমাম
আরবি উম্মত শব্দের বহুবচন। উম্মতদেরকে যিনি সঠিক পথ প্রদর্শন করেন অর্থাৎ
যিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার পথের নির্দেশনা দেন, উনার পথে পরিচালিত
করেন, মহান আল্লাহ পাক উনার
ও উনার সম্মানিত রসূল, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক আলাইহিস সালাম উনাদের মুহব্বত-মা’রিফাত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি
মুবারক হাছিলে তা’লীম-তরবিয়ত দান করেন।
কায়িনাত মাঝে উনারাই সর্বশ্রেষ্ঠ শাহদামাদ আলাইহিমাস সালাম।
সুবহানাল্লাহ!
সৃষ্টি কায়িনাতের মধ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত হাবীব নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক আলাইহিস সালাম তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত
আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারাই সর্বোত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠ। এ প্রসঙ্গে
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখিত কাওছার
মুবারক উনার ব্যাখ্যায়র্ ঈসুল মুফাসসিরীন হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু তিনি বলেন, কাওছার মুবারক উনার বহু অর্র্থের মধ্যে
দুটি অর্থ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
(এক) হাউজে কাওছার।
অর্থাৎ রোজ-কিয়ামতে পানির পিপাসায় মানুষ কাতর হয়ে পড়বে, সেখানে একমাত্র হাওজে
কাওছার মুবারক উনার পানি ব্যতীত কোন পানি থাকবে না। নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক আলাইহিস সালাম তিনি যাকে অনুমতি দিবেন তিনিই কেবল
হাওজে কাওছার মুবারক উনার পানি লাভ করবেন। সুবহানাল্লাহ!
(দুই) খইরে কাছীর।
অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত
ওজূদ পাক উনার সাথে নিসবতযুক্ত সমস্ত বিষয় সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বোত্তম।
সুবহানাল্লাহ! যেমন এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
অর্থ: নিশ্চয়ই মহান
আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত মাখলূক সৃষ্টি করেছেন। তন্মধ্যে আমাকে সর্বশ্রেষ্ঠ বা
সর্বোত্তম শ্রেণীতে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। উক্ত শ্রেণীকে আবার দু’ভাগে (আরব ও আজম) বিভক্ত করেছেন। উনাদের মধ্যে আমাকে সর্বশ্রেষ্ঠ বা সর্বোত্তম
দলে (আরবের মধ্যে) অন্তর্ভুক্ত করেছেন। অতঃপর সেই দলকে আবার বিভিন্ন গোত্রে
বিভক্ত করেছেন। উনাদের মধ্যে আমাকে সর্বশ্রেষ্ঠ বা সর্বোত্তম (কুরাইশ)
গোত্রের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। আবার সেই গোত্রকেও অনেক পরিবারে বিভক্ত করেছেন।
তন্মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ বা সর্বোত্তম (হাশিম) পরিবারে আমাকে অন্তর্ভুক্ত
করেছেন। সুতরাং ব্যক্তি হিসেবেও আমি সর্বশ্রেষ্ঠ বা সর্বোত্তম এবং পরিবার
হিসেবেও আমি সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বোত্তম। সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ শরীফ,তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ)
উল্লেখিত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বর্ণনা দ্বারা
প্রতিভাত হয়েছে যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক আলাইহিস
সালাম উনার মহাসম্মানিত পরিবার তথা মহাসম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস
সালাম উনারাই সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বোত্তম। সুবহানাল্লাহ!
আর বর্তমান যামানায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের
অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেন মুজাদ্দিদে আ'যম, নূরে মুর্কারম
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত আহলু
বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা।
0 Comments:
Post a Comment