ঈদে বিলাদতে আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম


Image result for ফুলআওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার সুমহান দিবস
জুমাদাল ঊলা’ মাস সম্মানিত মাস। মুবারক মাস। কারণ এ মাসেরই ৯ তারিখ পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন বর্তমান যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, গাউসুল আ’যম, আওলাদে রসূল, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার লখতে জিগার, ছানী আওলাদ, সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ছাহিব যিনি আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার সুমহান দিবস। যা কায়িনাতবাসীর জন্য রহমতপূর্ণ, বরকতপূর্ণ, ফযীলতপূর্ণ মহাখুশি বা ঈদের দিনমহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে এ মুবারক দিবসটি যথাযথ মর্যাদার সাথে উদযাপন করার তাওফীক দান করুন। আমীন!
ঈদে বিলাদতে আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
সমস্ত অন্ধকার দূরীভূত করে, বিশ্বজগতের মাঝে তাশরীফ এনেছেন আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামউনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস ৯ই জুমাদাল ঊলা শরীফ; যা মূলত মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন উনার এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের দয়া, দান, ইহসান মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
বর্তমান বিশ্বের সমস্ত মানুষ হারাম-নাজায়িয এবং পাপ কাজের মধ্যে লিপ্ত হয়ে গেছে। যা ইতঃপূর্বে কোনো সম্প্রদায়ই এতো পাপ কাজে লিপ্ত হয়নি। কারণ বর্তমান সময়ের মানুষরা আজ হারামকে হালাল এবং হালালকে হারাম ফতওয়া দিচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ! এজন্য মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এই বর্তমান যামানা তথা শেষ যামানা সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “আখিরী যামানায় ঈমান রক্ষা করা এতো কঠিন হবে যেমন জ্বলন্ত আগুনের কয়লা হাতে রাখা কঠিন।”
অর্থাৎ বর্তমান যামানা তথা শেষ যামানার অবস্থা খুব ভয়াবহ হবে। আর বর্তমানে তাই দেখা যাচ্ছে অর্থাৎ বর্তমানে ঈমান-আমল হিফাযত করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা দয়া-ইহসান করে আমাদের মাঝে পাঠিয়েছেন আহলে মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে। এজন্য আমাদেরকে শুকরিয়া আদায় করতে হবে। আর এই শুকরিয়া আদায় করাটাও মহান আল্লাহ পাক উনারই নির্দেশ মুবারক। কারণ মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, “তোমাদেরকে যে নিয়ামত দেয়া হয়েছে তার শুকরিয়া আদায় করো।”
আর শুকরিয়া আদায় করতে হবে কিভাবে? শুকরিয়া আদায় করতে হবে উনাদের পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে।
আর আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আহলে মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে অন্যতম। উনাকে মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তিনি আমাদের মাঝে হাদী হিসেবে পাঠিয়েছেন। এজন্য আমাদেরকে উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করতে হবে।
মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তিনি এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা যেন আমাদের সবাইকে আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করার তাওফীক্ব দান করেন। আমীন!
আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যেমন দেখেছি
 আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে খুব সন্নিকটে তথা কাছে থেকে দেখা। আজও মনে পড়ে তিনি যখন প্রথম বিদেশে তাশরীফ আনলেন গাউছুল আ’যম, হাবীবে আ’যম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হুকুম মুবারক-এ, তখন হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হুকুম মুবারক মুতাবিক আমাকে দায়িত্ব দেয়া হলো- উনার সব ব্যাপারে সাহায্য-সহযোগিতা তথা খিদমত করার। প্রথম সাক্ষাৎ হলো প্রবেশ দরজায়। সুন্নতী লিবাস মুবারক পরিম-িত, মাথা মুবারক উনার মধ্যে পাগড়ি মুবারক, রুমাল মুবারক, অনিন্দ্য সুন্দর এক যুবা! ডান কপাল মুবারক উনার মধ্যে তিল মুবারক, চোখ মুবারক উনার মধ্যে সুরমা মুবারক। সালাম-কালাম বিনিময়ে অতঃপর মুয়ানাকা হলো। আমার ক্বলবে তখনই নেদা হলো- তিনিই আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামঅতঃপর তাশরীফ আনলেন গৃহে। উনার সঙ্গে বসে কথাবার্তা হলো। সে অনেক কথা। উনার জিন্দেগী মুবারক উনার বিভিন্ন পর্যায়ের ঘটনা মুবারক ও বৃত্তান্ত বয়ান করলেন, শুনালেন। কিভাবে হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সান্নিধ্যে আসলেন, যিকির-ফিকির উনার দিকে রুজু হলেন, মুবারক সুন্নতী বেশ-ভুষায় আপ্লুত হলেন- এ সমস্ত অনেক কথা। আমি শুধু দেখতে থাকলাম উনার আচার-আচরণ মুবারক, বিনয়ী ব্যবহার মুবারক, আদব-কায়দা মুবারক ইত্যাদি। এক কথায় অপূর্ব। সবসময় উনাকে দেখেছি এবং বারবার অনুযোগ করেছেন, ‘আপনি সিনিয়র, নামায পড়ান, মুনাজাত শরীফ করেন।’ কিন্তু নিজে কখনই উদ্যত হননি শুধু নয়, রাজিই হননি এসবে অগ্রজ ভূমিকা নিতে। এত গভীর বিনয়, এত গভীর নির্মল্যতা মনের তথা অন্তরের।
উনার প্রথম যে খাছ বৈশিষ্ট্য মুবারক দেখেছি সেটা হলো- খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং হযরত আহলে বাইত আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি একনিষ্ঠ মুহব্বত, একাগ্রচিত্ত নিবেদন ও হুসনে যন। মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কোনো আদেশ-নির্দেশ শোনামাত্রই আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চেহারা মুবারক পাল্টে যেত। তিনি ব্যতিব্যস্ত হয়ে যেতেন সেই হুকুম মুবারক তামিলে।
আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দ্বিতীয় যে বৈশিষ্ট্য মুবারক দেখেছি সেটা হলো- দুনিয়া বিমুখতা। এত স্বল্পে তৃপ্ত ও মিতব্যয়ী ব্যক্তিত্ব আমি পূর্বে কখনো দেখিনি। তিনি শুধু স্বল্প নয়, সমস্তই মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারক-এ ব্যয় করে দিতেন। আর হুকুম মুবারক হলে তো কথাই নেই। নিজের ব্যবস্থা কি হবে সেই ফিকিরে উনাকে কখনও মগ্ন হতে দেখিনি। একটিমাত্র ব্যাগ মুবারক-এই উনার আমেরিকা প্রবাসকালের পুরো সংসারের স্থান সংকুলান হয়ে যেত এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় স্থানান্তরে।
আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তৃতীয় আরেকটি খাছ বৈশিষ্ট্য মুবারক হলো- হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের হুকুম মুবারক পালনে, শরীয়ত উনার তাঁবেদারিতে, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হুকুম মুবারক পালনে তিনি পিতা-মাতা, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব কারোরই কোনো অবস্থাতেই একবিন্দু তোয়াক্কা করেননি। যে যাই বলুক, যাই শোনাক। এত গভীর উনার ইস্তিকামত ও ইখলাছ। খাবার-দাবার মুবারক-এ, আচার-আচরণ মুবারক-এ, চলন-বলন মুবারক-এ সর্বাবস্থায় পরিমিত ও সংযত দেখেছি উনাকে। কথা বলার সময় সর্বদায়ই তিনি বলতেন- ‘বেয়াদবি, গোস্তাখি মাফ করে দিবেন।’ এমনকি এই সেদিনও যখন দূরালাপনী হলো, সেই একই কথা। আমি বললাম, আমাদেরই বরং অসংখ্য বেয়াদবি ও গোস্তাখি হয়ে গেছে, আপনার প্রকৃত শান ও মর্যাদার অনুরূপ ব্যবহার না করার কারণে।
আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আরেকটি খাছ বৈশিষ্ট্য মুবারক- যেটাকে মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দয়া ও ইহসানে কারামতই বলা চলে।
যুক্তরাষ্ট্রেই আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হাত মুবারক-এ অনেক মানুষ মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বাইয়াত গ্রহণ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
আর একটি খাছ যে কথাটুকু বলতে চাই সেটা হলো- সাইয়্যিদুনা হযরত শাহদামাদে ছানী ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একটি বিষয় ছিলো আমার অত্যন্ত প্রিয়। কখনো উনাকে বলিনি। আজ প্রথম প্রকাশ করছি। সেটি হলো- উনার পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করা। এত আবেগ-আপ্লুত ও ইখলাছ মুবারক উনার সাথে পবিত্র মীলাদ শরীফ আমরা কেউ পাঠ করতে পারি না। দিল ও ক্বলব এবং জান-প্রাণ ভরে যেত উনার মীলাদ শরীফ পাঠ শুনে। আমি ইচ্ছাকৃতভাবেই চাইতাম উনি পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করুন আমাদের আমেরিকার আনজুমান মজলিসগুলোতে। শুধু এটিই হচ্ছে একটি বিষয়, যেখানে আমি লক্ষ্য করেছি উনার ছিল অনাবিল আগ্রহ ও আকুলতা যে, তিনি পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করবেন এবং আমার জন্যে সেটা ছিল সর্বদাই একটি অত্যন্ত আনন্দের বিষয়। অবশেষে যে বিষয়টি পূর্বেই উল্লেখ করেছি, যা এখন প্রকাশ করা যাক, বিগত দু’বছর যাবৎ আমার মনে বদ্ধমূল ধারণা এটিই ছিলো যে, তিনি আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামসুবহানাল্লাহ!
চারবার এবং সর্বশেষ যখন তিনি বাংলাদেশের জন্য প্রস্থান করলেন, আমার মনে বিশেষ ভাবাবেগ সৃষ্টি হওয়াতে আমি দু’বছর পূর্বে প্রথম ও এবার শেষ ও চতুর্থবার বন্ধুবরেষু ইঞ্জিনিয়ার মুহম্মদ শওকত হুসাইন উনাকে বলেছিলাম একথা। কিন্তু যেহেতু আমরা তিনি সাইয়্যিদ কিনা- এ বিষয়ে ধারণার অধিকারী ছিলাম না, এই কারণে অন্য কাউকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করার সাহস হয়নি, যদি বেয়াদবি হয়ে যায় এই ভয়ে। আর প্রমাণিত হলো, এটিও মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আরও একটি খাছ কারামত।
সর্বশেষ আমি আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পাক ক্বদম মুবারকে এই বলে আরজি পেশ করবো, যেন তিনি আমার ও আমাদের সকল বেয়াদবি, গোস্তাখি, ভুল, ভ্রান্তি এবং বদ আখলাকি ও বদ আচরণসহ সমস্ত কিছু উনার অনিন্দ্য অন্তঃকরণ মুবারক উনার বিশালতা দিয়ে ক্ষমা করে আমাকে ও আমাদেরকে কবুল করে নেন। আমীন!

0 Comments: