মহান রব্বুল আলামীন
জাল্লা শানহূ তিনি উনার পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে সূরা আর রহমান শরীফ উনার
মধ্যে অসংখ্যবার ইরশাদ মুবারক করেছেন, “তোমরা আমার কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?” অর্থাৎ মহান আল্লাহ
পাক তিনি এতোই নিয়ামত দান করেছেন যা সমস্ত মাখলুকাত তারা কখনো অস্বীকার করতে পারবে
না। আর এই মুবারক নিয়ামতরাজি কখনো কারো পক্ষে বর্ণনা করাও সম্ভব নয়। মহান রব্বুল
আলামীন উনার এই মুবারক নিয়ামত উনাদের যিনি জামে উনাকেই বর্তমান যামানায় আমাদের
মাঝে পাঠিয়েছেন। যাঁর শুকরিয়া আদায় করা কুল-কায়িনাতের পক্ষে কস্মিনকালেও সম্ভব নয়।
মহান রব্বুল আলামীন
তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “হে মানুষেরা! নিশ্চয়ই
তোমাদের নিকট এসেছেন মহান নছীহতকারী, আরোগ্য দানকারী মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ
থেকে এবং মু’মিনের অন্তরের শিফা মুবারক, মু’মিনদের জন্য হিদায়েত মুবারক এবং রহমত
হিসেবেও তাশরীফ এনেছেন। হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি সকলকে
বলে দিন তারা যেন উক্ত ফযল ও রহমত উনার জন্য খুশি প্রকাশ করে। আর এটাই তার
উপার্জনের মধ্যে,
আমলের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ।” (পবিত্র সূরা ইউনূস শরীফ: পবিত্র
আয়াত শরীফ ৫৭,
৫৮)
এখানে মহান রব্বুল
আলামীন জাল্লা শানহূ তিনি নিয়ামত উনার শুকরিয়া আদায় করা এবং উনার মুবারক তাশরীফ
উনার কারণে খুশি প্রকাশ করা সকল মাখলুকাতের জন্য ফরয করে দিয়েছেন। আর যে ব্যক্তি
তা করবে না তার জন্য এমন কঠিন শাস্তি নির্ধারণ করা হবে তা শুধু মহান আল্লাহ পাক
রব্বুল আলামীন তিনি এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারাই ভালো জানেন। যেমন হযরত ঈসা রূহুল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সেই খাদ্যসহ খাঞ্চা নাযিলের দিনটিতে খুশি প্রকাশ না করলে
কায়িনাতের সবচেয়ে বড় শাস্তি দেয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাহলে যিনি সমস্ত
নিয়ামতের জামে উনার তাশরীফ মুবারক উপলক্ষে খুশি প্রকাশ না করলে কিরূপ শাস্তি হবে
তা উপলব্ধির বাইরে। জানতে কী একটিবারও ইচ্ছা করে না, সেই মুবারক নিয়ামত
উনাদের জামে তিনি কে? অবশ্যই ইচ্ছা করবে। কেননা যদি আমরা নাই জানি নিয়ামত উনাদের
জামে তিনি কে- তাহলে কিভাবে শুকরিয়া আদায় করবো, খুশি প্রকাশ করবো।
কিভাবে খিদমত উনার আঞ্জাম দিবো। ইচ্ছা করছে সবাই মিলে উনার মুবারক ছানা-ছিফত করে
এক সাথে খুশি প্রকাশ করে সুমহান ব্যক্তিত্ব উনার নাম মুবারক উচ্চারণ করতে। কিন্তু
হায় অক্ষম আমরা। সমস্ত নিয়ামত উনাদের জামে তিনি হচ্ছেন ক্বায়িম-মাক্বামে যুন
নূরাইন ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হাদিউল উমাম সাইয়্যিদুনা হযরত শাহদামাদ
ছানী ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। হে হযরত শাহ দামাদ ছানী
ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমাদের অক্ষমতা দূর করে দিন এবং আবাদুল
আবাদ আপনার ছানা-ছিফতে ডুবে থাকার তাওফীক দান করুন। (আমীন)
পবিত্র ৯ই জুমাদাল
ঊলা শরীফ নিয়ামতপূর্ণ, বরকতপূর্ণ, সাকীনাপূর্ণ, মাগফিরাত ও
নাজাতপূর্ণ দিন
হযরত
আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করা সম্পর্কে মহান আল্লাহ
পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “(হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম!) আপনি বলে দিন, আমি তোমাদের নিকট কোনো বিনিময় চাচ্ছি না। আর চাওয়াটাও
স্বাভাবিক নয়;
তোমাদের পক্ষে দেয়াও কস্মিনকালে সম্ভব নয়। তবে তোমরা যদি
ইহকাল ও পরকালে হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল করতে চাও; তাহলে তোমাদের জন্য
ফরয হচ্ছে আমার হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা, তা’যীম-তাকরীম
মুবারক করা,
উনাদের গোলামী মুবারক উনার আনজাম দেয়া।” [পবিত্র সূরা শূরা
শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৩]
হযরত আহলে বাইত
শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহব্বত মুবারক করা সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “সম্মানিত আহলে বাইত
শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা হচ্ছে ঈমান আর উনাদের প্রতি বিদ্বেষ
পোষণ করা কুফরী।
উল্লেখ্য যে, বাবুল ইলম ওয়াল
হিকাম, ক্বায়িম-মাক্বামে
শেরে হায়দার হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আওলাদে রসূল
সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হলেন সম্মানিত
আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম এবং আওলাদে রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্যতম
সদস্য মক্ববুল ওলীআল্লাহ।
আর পবিত্র হাদীছ
শরীফ উনার মধ্যে ওলীআল্লাহগণ উনাদের সম্পর্কে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, “যাঁরা ওলীআল্লাহ
উনাদের তোমরা মুহব্বত করো, কেননা উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট মক্ববুল।”
মহান আল্লাহ পাক
তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার রহমত তথা নিয়ামত মুবারক
মুহসিনীন বা ওলীআল্লাহগণ উনাদের নিকট রয়েছে।”
আর পবিত্র হাদীছ
শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “নিশ্চয়ই নেককার বান্দা-বান্দীগণ উনাদের
আলোচনায় রহমত বর্ষণের কারণ।”
উপরোক্ত পবিত্র
আয়াত শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের পরিপূর্ণ মিছদাক হচ্ছেন আওলাদে রসূল
সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। যিনি সম্মানিত আহলে
মুজাদ্দিদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যমণি। যিনি পবিত্র ৯ই জুমাদাল ঊলা শরীফ উনার
দিনে তাশরীফ এনে কুল-কায়িনাতবাসীকে অসংখ্য নিয়ামত মুবারক বণ্টন করে দেয়ার মাধ্যমে
ধন্য করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
বর্তমান যামানায়
যদি কেউ সেই নিয়ামত মুবারক পেতে চায় তাহলে অবশ্যই উনাকে উনার বিলাদত শরীফ উনার দিন
অর্থাৎ ৯ই জুমাদাল ঊলা শরীফ দিনটিতে খুশি প্রকাশ করতে হবে। রহমত, রবকত, সাকীনা, মাগফিরাত, লাভের ও নাজাত
লাভের জন্য উনাকে হাক্বীক্বীভাবে মুহব্বত করতে হবে। উনার ছানা-ছিফত মুবারক, তা’যীম-তাকরীম
মুবারক করতে হবে। তাহলেই আমরা হাক্বীক্বীভাবে কামিয়াবী লাভ করতে পারবো। মহান
আল্লাহ পাক তিনি ও উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং সম্মানিত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস
সালাম উনারা যেন আমাদেরকে সেই তাওফীক দান করেন। (আমীন)
কে পারবে আওলাদে
রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান
শান-মান, মর্যাদা-মর্তবা
মুবারক বর্ণনা করতে?
মহান আল্লাহ পাক
তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “(হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি বলে
দিন, আমি তোমাদের
নিকট কোনো বিনিময় চাচ্ছি না। আর চাওয়াটাও স্বাভাবিক নয়; তোমাদের পক্ষে
দেয়াও কস্মিনকালে সম্ভব নয়। তবে তোমরা যদি ইহকাল ও পরকালে হাক্বীক্বী কামিয়াবী
হাছিল করতে চাও;
তাহলে তোমাদের জন্য ফরয হচ্ছে আমার হযরত আহলে বাইত শরীফ
আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা, তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, উনাদের গোলামী
মুবারক উনার আনজাম দেয়া।” [পবিত্র সূরা শূরা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৩] উক্ত
পবিত্র আয়াত শরীফ দ্বারা মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই ইরশাদ মুবারক করেছেন সম্মানিত
হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি ঈমান আনা, উনাদের
তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, খিদমত মুবারক করা ফরয-ওয়াজিব উনার অন্তর্ভুক্ত।
সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক
তিনি পবিত্র সূরা শূরা শরীফ উনার ১৩নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক
করেছেন, “মহান
আল্লাহ পাক তিনি যাকে চান উনাকে খাছভাবে মনোনীত করেন।”
মহান আল্লাহ পাক
রব্বুল আলামীন আমাদের জন্য আখাচ্ছুল খাছভাবে রহমতস্বরূপ নাজাতের উসীলা হিসেবে
হাদিয়া মুবারক করেছেন যিনি আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত
হাদিউল উমাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে। সুবহানাল্লাহ!
উনার শান-মান, মর্যাদা-মর্তবা
মুবারক বর্ণনা করা কায়িনাতের মাঝে কারো ক্ষমতা নেই। কেউ যদি এমন দুঃসাহস করে তবে
ক্বিয়ামত পর্যন্ত সে চেষ্টা করতে পারবে কিন্তু কামিয়াবী হাছিল করতে পারবে না। কারণ
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সংস্পর্শে যা কিছু এসেছেন তা অতি পবিত্র
থেকে পবিত্রতম। এমনকি উনার মুবারকসংস্পর্শ যে মাটি পেয়েছেন সেই মাটির মর্যাদা আরশে
মুয়াল্লা উনার চাইতেও বেশি।” সুবহানাল্লাহ!
তাহলে উনার
সম্মানিত ও সর্বশ্রেষ্ঠ আওলাদ আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত হাদিউল উমাম ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান-মান, মর্যাদা কত ঊর্ধ্বে যা বলার ভাষা নেই। আর
কেউ যদি এই বিষয়ে চু-চেরা, ক্বীল-ক্বাল করে তবে তার ফায়সালা মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র
কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “কোনো মু’মিন-মু’মিনার জন্য জায়িয হবে না
মহান আল্লাহ পাক তিনি ও উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা যা ফায়সালা মুবারক করেছেন সেই বিষয়ে
তাদের মত পেশ করা। যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নাফরমানি করবে বা অবাধ্য হবে অবশ্যই সে
প্রকাশ্য বিভ্রান্তিতে বিভ্রান্ত হবে।” (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ
১১৫)
সুতরাং প্রত্যেক
মুসলমান পুরুষ-মহিলা উনাদের প্রতি ফরয-ওয়াজিব হলো আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত
হাদিউল উমাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যথার্থ খিদমত মুবারক, তাযীম-তাকরীম
মুবারক করা।
মহান আল্লাহ পাক
উনার ও উনার হাবীব,
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনাদের দয়া ও ইহসানে মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উনার পবিত্র সম্মানিত নূরানী আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম
উনাদের উসীলায় অনন্তকাল উনার ছানা-ছিফত, তা’যীম-তাকরীম মুবারক ও খিদমত মুবারক
করার তাওফীক দান করেন উনারা যেভাবে চান। (আমীন)
0 Comments:
Post a Comment