আমাদের সম্মানিত দাদা হুজুর ক্বিবলা রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার স্মরণে-
একজন কুতুবুজ্জামান – উনার দিদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-
হিদায়েতের প্রণালী ও ব্যাপ্তি হযরত সাইয়্যিদ
মুহম্মদ আলাউদ্দিন রহমাতুল্লাহি আলাইহি সমাজ থেকে অন্যায়, অবিচার ও
জুলুমের মূলোৎ পাটন করেন । তাঁর অমায়িক ব্যবহার, মধুর আচরণ, তেজোদ্দীপ্ত
ব্যক্তিত্ব, জ্ঞানগর্ভনসীহত,
নিরবচ্ছিন্ন তালীম-তালক্বীন এবং সর্বপরি তাঁর বেলায়েত ও কামালতের
প্রভাবে দলে দলে মানুষ ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হতে থাকে । তাসাউফ চর্চায় পরিপূর্ণ রূপে
অভ্যস্ত হয়ে মানুষ দুনিয়া তরক করে আখিরাতকে প্রাধান্য দিতে আগ্রহী হয়ে উঠে । তাঁরই
মুবারক উসীলায় ইসলাম বিবর্জিত বিস্তীর্ণ জনপদের মানুষ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্নাবিয়্যীন, হুজুরপাক ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুন্নত অনুসরণের
মাধ্যমে আল্লাহ্পাক- উনার সন্তুষ্টি হাসিলে সক্ষম হয় । তাঁর মুবারক সোহবতে এসে মানুষ
আল্লাহ্পাক- উনার নৈকট্য প্রাপ্ত ওলী হিসেবে কবুল হয়ে হিদায়েতের কাজে আঞ্জাম দিতে থাকে
। এই হিদায়েতের প্রভাব এতো ব্যাপক ও সুদূর প্রসারী হয় যে, তা প্রভাকরদীর
সীমানা ছাড়িয়ে দেশ-বিদেশে বিস্তার লাভ করে।সমাজে সাম্য, সম্প্রীতি
ও ন্যায়-নীতি প্রতিষ্ঠিত হয় । তাঁর তালীম-তালক্বীন ও ফয়েজে মানুষের ঈমান নবায়ন হয়, আক্বীদার
বুনিয়াদ বিশুদ্ধ ও দৃঢ় হয় এবং নববী আদর্শে মানুষ ইসলাম পালন ও আমলে অভ্যস্ত হয়ে উঠে।
মাজার
শরীফ উনার ফায়েজ তাওয়াজ্জু মুবারক -
প্রভারকরদী গ্রামের যে স্থানে
হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদআলাউদ্দিন রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার হিদায়েতের কেন্দ্রস্থল (খানকাশরীফ),
সে স্থানের মাজার শরীফেই শায়িত আছেন উনার ছেলে হযরত সাইয়্যিদ মালাউদ্দীন রহমাতুল্লাহি
আলাইহি এবং অন্যান্য আউলিয়া-ই-কিরাম রহমাতুল্লাহি
আলাইহিম । চারিদিকে গাছপালা পরিবেষ্টিত রহমতের কেন্দ্রস্থল এ মাজার শরীফের বাইরের পরিবেশ
দেখে এবং মাজার জিয়ারত করে অন্তরের গভীরে যে শান্তি অনুভূত হয়, তা বাস্তব
দর্শনকারী ও জিয়ারত কারী ছাড়া অন্য কারো উপলব্ধিতে আসবে না।অসংখ্য প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, দিন শেষে
রাত নেমে এলে মাজার শরীফের মধ্য ভাগ থেকে প্রলম্বিত এক নূর বের হয় এবং সুদূর আসমান পর্যন্ত পরিব্যাপ্ত হয়। নেক মাকসুদ হাসিলের
জন্য এ মাজারকে উসীলা করে আল্লাহ্পাক- উনার কাছে দোয়া করলে তা নির্ঘাত কবুল হয়। দুঃখ-বেদনা
ভারাক্রান্ত মানুষ মাজারের সান্নিধ্যে এসে অনাবিল প্রশান্তি লাভ করে। মানুষ ছাড়াও অনেক
জ্বীন মাজার শরীফের খিদমতে নিয়োজিত আছে । মাজার সংলগ্ন এলাকায় কেউ বেয়াদবী অথবা খারাপ
ধারণা পোষণ করলে সঙ্গে সঙ্গে তার শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতা দেখা দেয় । খালিছ তওবা
করে মাজারের খিদমত ও জিয়ারত না করলে তাকে সীমাহীন দুর্গতির শিকার হতে হয়। এ ধরনের বহু
ঘটনা দেখেছেন এলাকাবাসী। এ সব ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন আমাদের আলোচ্য কুতুবুজ্জামান, আরিফবিল্লাহ্, আওলাদেরাসূল, হযরতুল আল্লামা
শাহ্সূফী আলহাজ্ব সাইয়্যিদ মুহম্মদমু খলেছুর রহমান রহমাতুল্লাহি আলাইহি আলহাসানী, ওয়ালহুসাঈনী, ওয়ালকুরাঈশী।সোনারগাঁও-
এর মাজার শরীফে শায়িত হযরত সাইয়্যিদ আলাউদ্দীন রহমাতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত সাইয়্যিদ
মুহম্মদ সালাহুদ্দিন রহমাতুল্লাহি আলাইহি এবং অন্যান্য আউলিয়া-ই-কিরাম (রহমাতুল্লাহি
আলাইহিম। প্রতি নিয়ত রূহানী ভাবে প্রভাকরদীর মাজার শরীফে এসে হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ
মালা উদ্দিন রহমাতুল্লাহি আলাইহি এবং সেখানে শায়িত অন্যান্য আউলিয়া-ই-কিরাম রহমাতুল্লাহি
আলাইহিম উনার সাথে সাক্ষাত করেন এবং আলাপ আলোচনায় মশগুল হন । উনাদের মুবারক সাক্ষাত
ও আলাপচারিতা প্রত্যক্ষ করেছেন কুতুবুজ্জামান, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর
রহমান রহমাতুল্লাহি আলাইহি । এ সব কথা তিনি নিজ জবান মুবারকে বলেছেন। মাদারজাদ ওলী
হবার জন্য বংশের প্রভাব হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ
মালা উদ্দিন রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার বেলায়েত ও কামালতের প্রভাব এতো ব্যাপক যে, আজ অবধি উনার
মাজার শরীফ থেকে নিয়মিত হিদায়েতের নূর বিচ্ছুরিত হচ্ছে । ইচ্ছা-অনিচ্ছায় সে নিয়ামতের
হিস্সা লাভে মানুষ ধন্য হচ্ছে । আজ থেকে তিন’শ বছর আগে প্রভাকরদীর পূণ্য ভূমিতে ইসলাম ধর্ম আবাদের যে ভিত রচিত হয়েছিল, তা আজ ও বহমান।
বংশ পরম্পরায় এমন মহান ওলীর অধস্তন সন্তান গণ যে মাদারজাদ ওলী হবেন এবং মিথ্যাকে দূরীভূত
করে সমাজে সত্য প্রতিষ্ঠা করবেন, এটাই তো আল্লাহ্পাক – উনার অমোঘ বিধান। (অসমাপ্ত)
আবা-৬২
0 Comments:
Post a Comment