পঞ্চদশ হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদুর রসূল, ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মহা সম্মানিতা আম্মা আওলাদুর রসূল, সাইয়্যিদাতুনা আমাদের-
হযরত দাদী হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম
উনার সীমাহীন ফাদ্বায়িল-ফদ্বীলত, বুযূর্গী-সম্মান, মান-শান, বৈশিষ্ট্য এবং উনার অনুপম মাক্বাম সম্পর্কে
কিঞ্চিৎ আলোকপাত
- মুবারক শৈশব ও কৈশোর থেকেই সাইয়্যিদাতুনা হযরত দাদী হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস
সালাম উনার সুন্নত মুবারক ও শরয়ী পর্দা পালনের একনিষ্ঠ অভ্যস্ততা
উপকারী
ইলম দু’প্রকার: ১. ইলমে জাহির এবং ২. ইলমে বাতিন। ইলমে বাতিন শিক্ষার মাধ্যমে অন্তর
পরিশুদ্ধ না করলে ইলমে জাহির প্রয়োগে সম্পাদিত আমল নিষ্ফল হয়। ইলমে বাতিন মূলত
ছিদ্দীক্ব ও সূক্ষ্মদর্শী মাহবূব ওলীআল্লাহ উনাদের সম্পদ। তবে বিশুদ্ধ আক্বীদায়
সাধারণ ঈমানদারগণও প্রাণপণ কোশেশে মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহু ওয়া তায়ালা এবং উনার
প্রিয়তম রসূল, নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাদের দয়া, দান ও ইহসানে আপেক্ষিক যোগ্যতায় উপনীত হতে পারেন। এ মর্মে মহান আল্লাহ পাক
তিনি ইরশাদ মুবারক করেন:
والذين جاهدوا فينا لنهدينهم سبلنا
অর্থ: “যারা
আমাকে পাওয়ার জন্য কোশেশ করে, তাদেরকে আমি আমাকে পাওয়ার সমস্ত রাস্তা দেখিয়ে দিয়ে থাকি।” সুবহানাল্লাহ!
ইলমে
বাতিন হলো অন্তরের নূর। মুহ্লিকাত (বদ খাছলত) দূর হয়ে ধ্যান-ধারণা, মন-মনন ও
স্বভাবে যখন মুন্জিয়াত (নেক খাছলত) প্রাধান্য বিস্তার করে, অর্থাৎ
মন্দ প্রবৃত্তি ও মন্দ স্বভাব দূরীভূত হয়, তখন অন্তরে ইলমে বাতিন-লব্ধ নূর
উনার প্রকাশ ঘটে। এমন অবস্থায় ঈমান-আক্বীদা-হুসনে যন দ্বারা অনুভূত গোপন বিষয়গুলোর
রহস্যের দ্বার উন্মোচিত হতে থাকে। প্রকৃত যা কথা তা হলো, অন্তরে
মুন্জিয়াত পয়দা না হওয়া পর্যন্ত ইবাদত-বন্দেগী কিছুই কবুল হয় না। নাউযুবিল্লাহ!
ইলমে
বাতিন উনার কাজ হলো- মানুষের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ সকল বিষয়ের পরিশুদ্ধি ঘটানো। এ
ক্ষেত্রে সকল বিষয়ে সার্বক্ষণিক সতর্কতা অবলম্বন ছাড়া নৈকট্যশীল মানুষের কোনো
গত্যন্তর থাকে না। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
ইরশাদ মুবারক করেন: “মানুষ মুত্তাক্বী হয় না, যে পর্যন্ত সম্পৃক্ত হওয়ার ভয়ে এমন বিষয় পরিত্যাগ না করে, যে বিষয়ে
কোনো ক্ষতি নেই, কিন্তু ক্ষতি হতে পারে।”
অর্জনযোগ্য
ফরজ ইলম উনার প্রকার ও ব্যাখ্যায় সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
ইরশাদ মুবারক করেন:
العلم علمان علم فى القلب فذاك العلم النافع وعلم على اللسان فذالك حجة الله عز وجل على ابن ادم
অর্থ: “ইলম দু’প্রকার:
১. ক্বলবী ইলম, অর্থাৎ ইলমে তাসাওউফ। আর এই ইলমই মূলত উপকারী ইলম। ২. যবানী ইলম, অর্থাৎ
ইলমে ফিক্বাহ, যে ইলম মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ হতে বান্দার জন্য দলীল।” সুবহানাল্লাহ!
ইলমে
ফিক্বাহ ও ইলমে তাছাউওফ উনাদের গুরুত্ব ও তাৎপর্যের ব্যাখ্যায় “মিশকাত
শরীফ” উনার প্রখ্যাত ব্যাখ্যাকার সাইয়্যিদুল মুহাদ্দিছীন, হযরত
মুল্লাহ আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি “মিরকাত শরীফ” উনার
মধ্যে উল্লেখ করেন যে,
মালিকী মাযহাব উনার ইমাম, ইমামুল আইম্মাহ, হযরত
ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি তিনি বলেন:
من تفقه ولـم يتصوف فقد تفسق ومن تصوف ولـم يتفقه فقد تزندق ومن جمع بينهما فقد تحقق.
অর্থ: “যে
ব্যক্তি ইলমে ফিক্বাহ শিক্ষালাভ করলো, কিন্তু ইলমে তাছাওউফ শিখলোনা, সে
ব্যক্তি ফাসিক্ব। আর যে ব্যক্তি ইলমে তাছাওউফ শিক্ষালাভ করলো, কিন্তু
ইলমে ফিক্বাহ শিখলো না,
সে ব্যক্তি যিন্দিক (কাফির)। আর যে ব্যক্তি উভয় ইলমই শিখলো, সে
মুহাক্কিক।” সুবহানাল্লাহ!
আমরা
এখানে উপকারী ইলম উনার গুরুত্ব ও তাৎপর্য এবং দুনিয়ায় এই ইলম উনার সিলসিলা রেখে যাওয়ার কারণে কবরবাসীর অপরিসীম
ফায়দালাভ সম্পর্কে আলোচনা করছি। পবিত্র এ ইলম উনার মূল কাজ হলো মানুষের ঈমান, আক্বীদা
বিশুদ্ধ করা এবং অন্তর ইছলাহ করা। কবরে ফায়দা হাছিলের জন্য প্রয়োজন হলো, পবিত্র
ইলমে ফিক্বাহ ও ইলমে তাছাওউফ উনাদের দায়িমী চর্চা ও প্রশিক্ষণ সিলসিলাক্রমে
দুনিয়ায় চলতে থাকা। সুবহানাল্লাহ! (চলবে)
আবা-২৪৫
0 Comments:
Post a Comment