মহাসম্মানীত মহাপবিত্র চার ত্বরীকা উনার শাজরা শরীফ-রাজারবাগ শরীফ

***মহাসম্মানীত পুত ও পবিত্র রাজারবাগ দরবার শরীফ উনার ***
সাইয়্যিদুনা হযরত মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার আযীমুশ শান নূরানী সিলসিলা মুবারক :
 চার তরীক্বার শাজরা শরীফ

১।  নক্শবন্দিয়ায়ে মুজাদ্দিদিয়া তরীক্বা :

ইমামুল মুসলিমীন, মুকতাদায়ে জামীয়ে উমাম, ইনায়েতে হিলম, পেশওয়ায়ে আহলে বাছীরাত, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক উসীলায় নিয়ামতে পরিপূর্ণ হয়েছে ক্বাইয়্যূমে আউওয়াল, আফযালুল আউলিয়া, ইমামে রব্বানী, আজিমুল বারাকাত, খাযীনাতুর রহমাহ, মাখদূমে যামান, আল মুনাওওয়ার, খাজায়ে খাঁজেগা, আবুল বারাকাত, বদরুদ্দীন সাইয়্যিদুনা হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মক্ববূল মাশহুর নক্শবন্দিয়ায়ে মুজাদ্দিদিয়া তরীক্বা উনার শাজরা শরীফ :

একথা দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের নিকট ইলমসহ সমস্ত নিয়ামতরাজি পুঞ্জীভূত। যা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাধ্যমে সুস্পষ্ট হয়েছে। হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের উসীলা ব্যতিত কোনো কিছুই পূর্ণাঙ্গতা লাভ করে না। যার বাস্তব নমুনা ইলমে তাছাউফ উনার তরীক্বাসমূহ।
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার অসীম রহমত বরকত সাকীনা মুবারক উনার বদৌলতে এবং সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, রহমতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক ইহসান উনার উসীলায় আজো বিশ্বব্যাপী জারি রয়েছে ক্বাইয়্যূমে আউওয়াল, আফযালুল আউলিয়া, ইমামে রব্বানী, আজিমুল বারাকাত, খাযীনাতুর রহমাহ, মাখদূমে যামান, আল মুনাওওয়ার, খাজায়ে খাঁজেগা, আবুল বারাকাত, বদরুদ্দীন সাইয়্যিদুনা হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মক্ববূল মাশহুর নক্শবন্দিয়ায়ে মুজাদ্দিদিয়া তরীক্বা। সুবহানাল্লাহ! ইনশাআল্লাহ ক্বিয়ামত পর্যন্ত তা ছহীহ তরতীবে জারি থাকবে সেটা নিঃসন্দেহে বলা যায়। তবে এ তরীক্বা নিয়ামতে পরিপূর্ণ হয়েছে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক উসীলায়। যা এ মহান ত্বরীক্বা উনার পবিত্র শাজরা শরীফ পর্যালোচনা করলেই দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট হবে। বিশ্বব্যাপী সুমহান শান মুবারক-এ জারি থাকা মুবারক নক্শবন্দিয়ায়ে মুজাদ্দিদিয়া তরীক্বা উনার সুমহান শাজরা শরীফ এখানে উল্লেখ করা হলো:-
১। ইলাহী বহুরমতে কুল-মাখলূক্বাতের নবী ও রসূল, হায়াতুন নবী, ছাহিবে ইলমে গইব, ছাহিবে মুত্তালা’ ‘আলাল গইব, জামিউল ইলম, ছাহিবে মাফাতীহুল ইলম, আল্হাদ্বির, আন্নাযির, ছাহিবে লাওলাক, ছাহিবে ক্বাবা ক্বওসাইনি আও আদনা, ছাহিবে কাওছার, ছাহিবে মাক্বামে মাহমূদ, ছাহিবে লিওয়ায়িল হামদ, ছাহিবে শাফাআতে কুবরা, ছাহিবে লাসতু কাআহাদিকুম, ছাহিবে মি’রাজ, ছাহিবে কুন ফা-ইয়াকুন, ছাহিবে ওয়াহয়ি, আশশারা’, আলগনিইইয়ু, রঊফুর রহীম, আত্ত্বাহির, আত্তইয়িব, শাফিউল উম্মাহ, খতীবুল আম্বিয়া ওয়াল উমাম, সাইয়্যিদুল মাখদূম, ছাহিবে জামিউল আসমা ওয়াছ ছিফাত, ফাদ্বলুল্লাহ, আকরামুল আওওয়ালীন ওয়াল আখিরীন, ফখরুল আম্বিয়া, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
২। ইলাহী বহুরমতে ছাহিবু রসূলিল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ছানী ইছনাইন, আরহামু উম্মাতিন নাবিইয়ি, আল আতীক্ব, আছছিদ্দীক্ব, আল আতক্বা, আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম।
৩। ইলাহী বহুরমতে ছাহিবু রসূলিল্লাহ হযরত সালমান ফারসী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু।
৪। ইলাহী বহুরমতে হযরত ইমাম ক্বাসিম বিন মুহম্মদ বিন আবূ বকর আলাইহিস সালাম।
৫। ইলাহী বহুরমতে ইমামুল মুহাক্বক্বিক্বীন, আওলাদু রসূলিল্লাহ, ইয়াদগারে নুবুওওয়াহ, ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস আলাইহিস সালাম।
৬। ইলাহী বহুরমতে ইমামুল মুহাক্বক্বিক্বীন, আওলাদু রসূলিল্লাহ, ইয়াদগারে নুবুওওয়াহ, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
৭। ইলাহী বহুরমতে ইমামুল মুহাক্বক্বিক্বীন, আওলাদু রসূলিল্লাহ, ইয়াদগারে নুবুওওয়াহ, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছামিন মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
৮। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ মা’রূফ কারখী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৯। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ আবুল হাসান সাররী সাকতী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১০। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা সাইয়্যিদুত ত্বায়িফা জুনায়িদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১১। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা আবূ আলী রোদবারী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১২। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ আবুল ক্বাসিম নাসিরাবাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১৩। ইলাহী বহুরমতে হযরত আবূ আলী দাক্কাক রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১৪। ইলাহী বহুরমতে হযরত ইমাম আবুল ক্বাসিম কুশাইরী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১৫। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা আবূ আলী ফারমুদী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
* তিনি পঞ্চম হিজরী শতকের মহান মুজাদ্দিদ হুজ্জাতুল ইসলাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম গাযযালী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মানিত পীর ছাহিব। তিনি হযরত আবুল হাসান খারকানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকেও খিলাফত মুবারক পেয়েছেন। হযরত আবুল হাসান খারকানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সুলত্বানুল আরিফীন হযরত খাজা বায়েজীদ বোস্তামী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে রূহানী ফায়িয পেয়েছেন, যিনি ইমামুল মুহাক্বক্বিক্বীন, আওলাদু রসূলিল্লাহ, ইয়াদগারে নুবুওওয়াহ, ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম জা’ফর ছাদিক্ব আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খলীফা।
১৬। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা আবূ ইউসুফ হামদানী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১৭। ইলাহী বহুরমতে খাজায়ে জাহাঁ হযরত আব্দুল খালিক্ব গুজদাওয়ানী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১৮। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা আরিফ রেওগারী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১৯। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা মাহমূদ আনজীর ফাগনবী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২০। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা আযীযানে আলী রামিতানী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২১। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা মুহম্মদ বাবা সাম্মাসী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২২। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা সাইয়্যিদ আমীর কুলাল রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৩। ইলাহী বহুরমতে খাজায়ে খাজেগাঁ, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত হযরত খাজা বাহাউদ্দীন নক্শবন্দ বুখারী আল হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
* তিনি পবিত্র নক্শবন্দিয়া তরীক্বা উনার সম্মানিত ইমাম। তিনি নবম হিজরী শতকের মহান মুজাদ্দিদ।
২৪। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা আলাউদ্দীন আত্তার রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৫। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা ইয়া’কুব চরখী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৬। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা উবায়দুল্লাহ আহরার রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৭। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা মুহম্মদ যাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৮। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা দরবেশ মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি।

২৯। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা মুহম্মদ আমাকাংগী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৩০। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা বাক্বী বিল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৩১। ইলাহী বহুরমতে আফদ্বালুল আউলিয়া, ইমামে রব্বানী, ক্বাইয়ূমে আউওয়াল, আজিমুল বারাকাত, গাউছুল সাক্বালাইন, খাযীনাতুর রহমাহ, মাখদূমে যামান, আল মুনাওওয়ার, খাজায়ে খাঁজেগা, আবুল বারাকাত বদরুদ্দীন শায়েখ আহমদ ফারূক্বী সাইয়্যিদুনা হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী সিরহিন্দী আল হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
* তিনি সম্মানিত মুজাদ্দিদিয়া তরীক্বা উনার ইমাম। তিনি পবিত্র নক্শবন্দিয়া তরীক্বা উনাকে এতদূর সংস্কার ও সম্প্রসারণ করেন; যা নতুন রূপ লাভ করে, পরবর্তী সময়ে তা পবিত্র মুজাদ্দিদিয়া তরীক্বা নামে মশহুর হয়। এই তরীক্বা উনাকে ‘পবিত্র নক্শবন্দিয়ায়ে মুজাদ্দিদিয়া’ তরীক্বাও বলা হয়। তিনি একাদশ হিজরী শতকের মহান মুজাদ্দিদ।
৩২। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ আদম বিন নূরী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৩৩। ইলাহী বহুরমতে হযরত সাইয়্যিদ আব্দুল্লাহ আকবরাবাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৩৪। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ আব্দুর রহীম মুহাদ্দিছ দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৩৫। ইলাহী বহুরমতে রঈসুল মুহাদ্দিছীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত হযরত শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিছ দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
* তিনি দ্বাদশ হিজরী শতকের মহান মুজাদ্দিদ।
৩৬। ইলাহী বহুরমতে হযরত শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিছ দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৩৭। ইলাহী বহুরমতে মুজাহিদে আ’যম, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত, ছাহিবুল আসরার, রূহুল হক্ব মুজাদ্দিদে মিল্লাত, আমীরুল মু’মিনীন, আওলাদে রসূল হযরত শাহ সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলবী আলাইহিস সালাম।
* তিনিই ত্রয়োদশ হিজরী শতাব্দীর মহান মুজাদ্দিদ এবং সুপ্রসিদ্ধ ‘মুহম্মদিয়া তরীক্বা’ উনার সম্মানিত ইমাম।
৩৮। ইলাহী বহুরমতে কুতুবুল আকতাব হযরত মাওলানা শাহ ছূফী নূর মুহম্মদ নিজামপুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৩৯। ইলাহী বহুরমতে ওয়াসিল বিল্লাহ, আশিক্বে রসূলিল্লাহ, কুতুবুল ইরশাদ হযরত মাওলানা শাহ ছূফী ফতেহ আলী বর্ধমানী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
* উনাকে রসূলে নোমা বলা হয়। কারণ তিনি অনায়াশে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক যিয়ারত করিয়ে দিতেন।
৪০। ইলাহী বহুরমতে আমীরুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত, মুজাদ্দিদে যামান, কুতুবুল আলম শাহ ছূফী আলহাজ্জ হযরত মাওলানা আব্দুল্লাহিল মা’রূফ মুহম্মদ আবূ বকর ছিদ্দীক্বী ফুরফুরাবী আল হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
* তিনি চতুর্দশ হিজরী শতকের মহান মুজাদ্দিদ।
৪১। (ক) ইলাহী বহুরমতে ওলীয়ে মাদারযাদ, কুতুবুল আলম, সুলত্বানুল আরিফীন, হযরত মাওলানা শাহ ছূফী আবূ নজম মুহম্মদ নাজমুস সায়াদাত ছিদ্দীক্বী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
(খ) ইলাহী বহুরমতে, কুতুবুল আলম, ক্বাইয়ূমে যামান, শায়খুল মাশায়িখ, হযরত মাওলানা শাহ ছূফী আবূ নছর মুহম্মদ আব্দুল হাই ছিদ্দীক্বী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৪২। ইলাহী বহুরমতে কুতুবুল আলম, আমীরুশ শরীয়ত, মাহতাবে তরীক্বত, সুলত্বানুল আরিফীন, মাহিয়ে বিদয়াত, মুহইয়ে সুন্নাত, মুজাদ্দিদে যামান, হুজ্জাতুল ইসলাম, তাজুল মুফাসসিরীন, রঈসুল মুহাদ্দিছীন, ফখরুল ফুক্বাহা আলহাজ্জ হযরত মাওলানা শাহ ছূফী আবুল খায়ের মুহম্মদ ওয়াজীহুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি।
* তিনি উপরোক্ত উনাদের দু’জন থেকেই খিলাফত প্রাপ্ত হন। তবে উনার প্রধান শায়েখ হচ্ছেন হযরত নাজমুস সায়াদাত ছিদ্দীক্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৪৩। ইলাহী বহুরমতে খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত, যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইউস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, গউছুল আ’যম, ইমামে আ’যম, হুজ্জাতুল ইসলাম, সুলত্বানুল আরিফীন, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, সুলত্বানুন নাছীর, ক্বইয়ূমুয যামান, জাব্বারিউল আউওয়াল, ক্বউইউল আউওয়াল, আস্ সাফফাহ, হাবীবুল্লাহ, জামিউল আলক্বাব, আওলাদে রসূল, মাওলানা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম আল হাসানী ওয়াল হুসাইনী ওয়াল কুরাইশী ওয়াল হানাফী ওয়াল ক্বাদিরী ওয়াল চীশতী ওয়ান নক্শবন্দী ওয়াল মুজাদ্দিদী।
* তিনিই সারা বিশ্বে সমাদৃত, প্রশংসিত, গ্রহণযোগ্য ও হক্ব সিলসিলা “রাজারবাগ শরীফ”-উনার মহা সম্মানিত হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম। তিনিই হিজরী পঞ্চদশ শতাব্দীর মহান ‘মুজাদ্দিদ’।
আয় বারে ইলাহী! উনাদের উসীলায় আমাদের উপর আপনার খাছ রহমত, মুহব্বত ও মা’রিফত এবং নূরে মুজাসসাম,হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাছ তাওয়াজ্জুহ, ফায়িয, যিয়ারত, মুহব্বত ও মা’রিফাত মুবারক দান করুন। পবিত্র সুন্নত উনার পূর্ণ পায়রবী করার তাওফীক দিন। যাহিরী ও বাতিনী দৃঢ়তা আর ইহকাল ও পরকালের সুস্থতা দান করুন। এই সকল সম্মানিত মহান বুযুর্গানে দ্বীন উনাদের ফুয়ূজাত, বারাকাত ও কামালাতের পূর্ণ হিসসা নছীব করুন। আমীন!
*****************************************

২।
***ক্ববূল মাশহূর চীশতিয়া তরীক্বা উনার শাজরা শরীফ : ***
 
 সাইয়্যিদুনা হযরত মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার আযীমুশ শান নূরানী সিলসিলা মুবারক উনার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী হাক্বীক্বী শানে জারি রয়েছে- মক্ববূল মাশহূর চীশতিয়া তরীক্বা উনার শাজরা শরীফ

১। ইলাহী বহুরমতে কুল-মাখলূক্বাতের নবী ও রসূল, হায়াতুন নবী, ছাহিবে ইলমে গইব, ছাহিবে মুত্তালা’ ‘আলাল গইব, জামিউল ইলম, ছাহিবে মাফাতীহুল ইলম, আল্হাদ্বির, আন্নাযির, ছাহিবে লাওলাক, ছাহিবে ক্বাবা ক্বওসাইনি আও আদনা, ছাহিবে কাওছার, ছাহিবে মাক্বামে মাহমূদ, ছাহিবে লিওয়ায়িল হামদ্, ছাহিবে শাফা’আতে কুবরা, ছাহিবে লাসতু কাআহাদিকুম, ছাহিবে মি’রাজ, ছাহিবে কুন ফাইয়াকুন, ছাহিবে ওয়াহ্য়ি, আশশারি’, আলগনিইইয়ু, রঊফুর রহীম, আত্ত্বাহির, আত্তইয়িব, শাফিউল উম্মাহ, খতীবুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, সাইয়্যিদুল মাখদূম, ছাহিবে জামিউল আসমা ওয়াছ ছিফাত, ফাদ্বলুল্লাহ, আকরামুল আউওয়ালীন ওয়াল আখিরীন, ফখরুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
২। ইলাহী বহুরমতে সাইয়্যিদুল আরব, বাবুল ইলমি ওয়াল হিকমাহ, আমীনু আহলি আরদ্ব, কুদওয়াতুল মুত্তাক্বীনা, যীনাতুল আরিফীন, নূরুল মুত্বীয়ীন, ইমামুল আদিলীন, আহলু বাইতিন নাবিইয়ি, আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন, ইমামুল আউওয়াল মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আসাদুল্লাহিল গালিব সাইয়্যিদুনা হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম।
৩। ইলাহী বহুরমতে কাবীরুশ শান, আখতাবুল নাস, মুফাসসিরুল আলী, শায়খুশ শুয়ূখ, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত হযরত ইমাম হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৪। ইলাহী বহুরমতে আলিমুল কাবীর, আফদ্বালুন আবিদীন হযরত শায়েখ ওয়াহিদ বিন যায়িদ রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৫। ইলাহী বহুরমতে হাদিউন নাস, ক্বামিউল বিদয়াত হযরত শায়েখ ফুযাইল ইবনে আয়ায রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৬। ইলাহী বহুরমতে আলিমুর রব্বানী, আতক্বান নাস হযরত শায়েখ ইব্রাহীম ইবনে আদ্হাম বলখী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৭। ইলাহী বহুরমতে আযীমুশ শান, আখশালিল্লাহ হযরত শায়েখ হুযাইফা মারয়াশী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৮। ইলাহী বহুরমতে আওরাউন নাস, আহলুত তাক্বওয়া হযরত শায়েখ আমীনুদ্দীন হুবায়রা বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৯। ইলাহী বহুরমতে ইলমুল আছফিয়া, আশিকুল্লাহ হযরত শায়েখ আবূ ইবরাহীম ইসহাক্ব মামশাদ উলু দিনারী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১০। ইলাহী বহুরমতে আবিদুল মুখলিছ, আশিকু রসূলিল্লাহ হযরত খাজা আবূ ইসহাক্ব শামী চীশতি রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১১। ইলাহী বহুরমতে আকরামুল ইবাদ, ছাহিবুত তাক্বওয়া হযরত খাজা আবূ আহমদ আবদাল চীশতি রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১২। ইলাহী বহুরমতে আলিমুছ ছালিহ, আবিদুর রফী হযরত খাজা আবূ মুহম্মদ চীশতি রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১৩। ইলাহী বহুরমতে আলিমু বিদদ্বীন, যাহিদুন ফিদ দুনইয়া হযরত খাজা নাছীরুদ্দীন আবূ ইউসুফ চীশতি রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১৪। ইলাহী বহুরমতে আলিমুম বিল্লাহ, যাকিরুল লিল্লাহ হযরত খাজা কুতুবুদ্দীন মওদূদ চীশতি রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১৫। ইলাহী বহুরমতে আলিমুল কামিল, মুতাশাম্মিরুল আবিদ হযরত খাজা হাজী শরীফ জিন্দানী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১৬। ইলাহী বহুরমতে শায়েখুন নাস, শায়খুশ শুয়ূখ হযরত খাজা উছমান হারূনী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১৭। ইলাহী বহুরমতে ছাহিবুল আসরার, ছাহিবু কুন ফাইয়াকুন, সাইয়্যিদুল আবিদীন, সুলত্বানুল আরিফীন, কুতুবুল মাশায়িখিল বাররি ওয়াল বাহরি, আলিমু ইলমিয যাহির ওয়াল বাতিন, মুহ্ইউস সুন্নাহ, সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল হিন্দ, খাজায়ে খাজেগাঁ, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতি আজমীরী সানজরী আল হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 তিনি চীশতিয়া তরীক্বার মহামান্য ইমাম। তিনি সপ্তম হিজরী শতকের মহান মুজাদ্দিদ। তিনিই খাজা ছাহেব নামে মশহূর।
১৮। ইলাহী বহুরমতে ওয়ারিছুল আম্বিয়া, আশরাফুল আওলিয়া, কুতুবুয যামান হযরত খাজা কুতুবুদ্দীন বখতিয়ার কাকী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১৯। ইলাহী বহুরমতে ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ হযরত খাজা বাবা ফরীদুদ্দীন মাসঊদ গঞ্জেশকর রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২০। ইলাহী বহুরমতে মুজাদ্দিদে মিল্লাত, সুলত্বানুল আউলিয়া, মাহবূবে ইলাহী হযরত খাজা নিজামুদ্দীন আউলিয়া আল হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি অষ্টম হিজরী শতকের মহান মুজাদ্দিদ।
২১। ইলাহী বহুরমতে সুলত্বানুল উলামা, বুরহানুল আশিক্বীন হযরত খাজা আঁখি সিরাজুদ্দীন উছমান আওদাহী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২২। ইলাহী বহুরমতে শায়খুল উলামা, উস্তাযুল আসাতিয়াহ হযরত শায়খ আলাউল হক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৩। ইলাহী বহুরমতে ওলিয়্যুল কামিল, শামসুল আরিফীন হযরত শায়েখ নূর কুতুবে আলম রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৪। ইলাহী বহুরমতে মুঈনুল হক্ব, রাহনুমায়ে মুসলিমীন হযরত শায়েখ হুসসামুদ্দীন মানিকপুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৫। ইলাহী বহুরমতে হাদিউয যামান, মুঈনুল মিল্লাহ হযরত শায়েখ রাযী হামিদ শাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৬। ইলাহী বহুরমতে সিরাজুস সালিকীন, সিরাজুল উম্মাহ শায়েখ হাসান বিন ত্বাহির রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৭। ইলাহী বহুরমতে নায়িবুর রসূল, মুরশিদুন নাস হযরত শায়েখ ক্বাযী খান আবূ ইউসুফ নাছিহী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৮। ইলাহী বহুরমতে মুত্বীউস সুন্নাহ, ইলমুল আছফিয়া হযরত শায়েখ আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৯। ইলাহী বহুরমতে ওয়ারিছু রসূলিল্লাহ, আহলুত তাক্বওয়া হযরত শায়েখ নাজমুল হক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৩০। ইলাহী বহুরমতে আফদ্বালুল আবিদীন, আবিদুল মুখলিছ হযরত শায়েখ আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৩১। ইলাহী বহুরমতে মুদাওয়িমু আলা ইবাদাতিল্লাহ, মুহ্ইউস সুন্নাহ হযরত শায়েখ কুতুবুল আলম রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৩২। ইলাহী বহুরমতে আহলুল ইল্ম্, আহলুত তাছাওউফ হযরত শাহ রফীউদ্দীন মুহাদ্দিছ দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৩৩। ইলাহী বহুরমতে শামসুল উলামা, মুহাদ্দিছুশ শাহীর হযরত শায়েখ আব্দুর রহীম মুহাদ্দিছ দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৩৪। ইলাহী বহুরমতে বাহরুল উলূম, রঈসুল মুহাদ্দিছীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত হযরত শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিছ দেহলবী আল হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি দ্বাদশ হিজরী শতকের মহান মুজাদ্দিদ।
৩৫। ইলাহী বহুরমতে তাজুল মুহাদ্দিছীন, রঈসুল মুফাসসিরীন, আলিমুল ফাদ্বিল হযরত শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিছ দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৩৬। ইলাহী বহুরমতে খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, আমীরুশ শরীয়ত ওয়াত ত্বরীক্বত, আমীরুল মু’মিনীন, মুজাদ্দিদে যামান, হযরত শাহ সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলবী আল হানাফী আলাইহিস সালাম। তিনি হিজরী ১৩ শতকের মহান মুজাদ্দিদ।
৩৭। ইলাহী বহুরমতে ফখরুল উলামা ওয়াল মাশায়িখ, কুতুবুল আকতাব হযরত আল্লামা শাহ ছূফী নূর মুহম্মদ নিজামপুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৩৮। ইলাহী বহুরমতে ওয়াসিল বিল্লাহ, আশিক্বে রসূলিল্লাহ, কুতুবুল ইরশাদ হযরত আল্লামা শাহ ছূফী ফতেহ আলী বর্ধমানী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 উনাকে রসূলে নোমা বলা হয়। কারণ তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যিয়ারত মুবারক করিয়ে দিতে পারতেন।
৩৯। ইলাহী বহুরমতে আমীরুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত, মুজাদ্দিদে যামান, কুতুবুল আলম, শাহ ছূফী আলহাজ্জ হযরত আল্লামা আব্দুল্লাহিল মা’রূফ মুহম্মদ আবূ বকর ছিদ্দীক্বী ফুরফুরাবী আল হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি হিজরী ১৪ শতকের মহান মুজাদ্দিদ।
৪০। (ক) ইলাহী বহুরমতে ওলীয়ে মাদারযাদ, কুতুবুল আলম, সুলত্বানুল আরিফীন, হযরত আল্লামা শাহ ছূফী আবূ নজম মুহম্মদ নাজমুস সায়াদাত ছিদ্দীক্বী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
(খ) ইলাহী বহুরমতে, কুতুবুল আলম, কাইয়্যুমে যামান, শায়েখুল মাশায়িখ, হযরত আল্লামা শাহ ছূফী আবূ নছর মুহম্মদ আব্দুল হাই ছিদ্দীক্বী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৪১। ইলাহী বহুরমতে কুতুবুল আলম, আমীরুশ শরীয়ত, মাহতাবে তরীক্বত, সুলত্বানুল আরিফীন, মাহিয়ে বিদয়াত, মুহইয়ে সুন্নাত, মুজাদ্দিদে যামান, হুজ্জাতুল ইসলাম, তাজুল মুফাসসিরীন, রঈসুল মুহাদ্দিছীন, ফখরুল ফুক্বাহা আলহাজ্জ হযরত আল্লামা শাহ ছূফী আবুল খায়ের মুহম্মদ ওয়াজীহুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 তিনি উপরোক্ত দু’জন উনাদের থেকেই খিলাফত প্রাপ্ত হন। তবে উনার প্রধান শায়েখ হচ্ছেন হযরত নাজমুস সায়াদাত ছিদ্দীক্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৪২। ইলাহী বহুরমতে, খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইউস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, গওছুল আ’যম, কুতুবুল আলম, হুজ্জাতুল ইসলাম, সুলত্বানুল আরিফীন, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, ক্বইয়ূমুয যামান, জাব্বারিউল আউওয়াল, ক্বউইউল আউওয়াল, সুলত্বানুল নাছীর, আস সাফফাহ, হাবীবুল্লাহ, আওলাদে রসূল, নূরে মুকাররম, মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা কা’বা সাইয়্যিদুনা ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম।
 তিনিই সারা বিশ্বে সমাদৃত, প্রশংসিত, গ্রহণযোগ্য ও হক্ব সিলসিলা “রাজারবাগ শরীফ” উনার মহা সম্মানিত হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম। তিনিই হিজরী পঞ্চদশ শতাব্দীর মহান ‘মুজাদ্দিদ’।
আয় বারে ইলাহী! উনাদের উসীলায় আমাদেরকে আপনার খাছ রহমত, মুহব্বত ও মা’রিফাত এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাছ তাওয়াজ্জুহ, ফায়িয, যিয়ারত, মুহব্বত ও মা’রিফাত দান করুন। সুন্নতের পূর্ণ পায়রবী করার তাওফীক দিন। যাহিরী ও বাতিনী দৃঢ়তা আর ইহকাল ও পরকালের সুস্থতা দান করুন। এই সকল বুযুর্গানে দ্বীন উনাদের ফুয়ূজাত, বারাকাত ও কামালাতের পূর্ণ হিসসা নছীব করুন। আমীন!


***********************************************************************************৩। ক্বাদিরিয়া তরীক্বা উনার শাজরা শরীফ :

মুজাদ্দিদে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার আযীমুশ শান নূরানী সিলসিলা মুবারক উনার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী হাক্বীকী শানে জারি রয়েছে- মাহবূবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী, মুহিউদ্দিন, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মক্ববূল মাশহূর ক্বাদিরিয়া তরীক্বা উনার শাজরা শরীফ :

 বিশ্বব্যাপী সুমহান শান মুবারক-এ জারি থাকা উনার মুবারক ক্বাদিরিয়া তরীক্বা উনার সুমহান শাজরা শরীফ এখানে উল্লেখ করা হলো:-
 ১। ইলাহী বহুরমতে কুল-মাখলূক্বাতের নবী ও রসূল, হায়াতুন নবী, ছাহিবে ইলমে গইব, ছাহিবে মুত্তালা’ ‘আলাল গইব, জামিউল ইলম, ছাহিবে মাফাতীহুল ইলম, আল্হাদ্বির, আন্নাযির, ছাহিবে লাওলাক, ছাহিবে ক্বাবা ক্বওসাইনি আও আদনা, ছাহিবে কাওছার, ছাহিবে মাক্বামে মাহমূদ, ছাহিবে লিওয়ায়িল হামদ্, ছাহিবে শাফা‘আতে কুবরা, ছাহিবে লাসতু কাআহাদিকুম, ছাহিবে মি’রাজ, ছাহিবে কুন ফাইয়াকুন, ছাহিবে ওয়াহ্য়ি, ছাহিবে শারীআহ, আলগনিইয়্যূ, রঊফুর রহীম, আত্ত্বাহির, আত্তইয়িব, শাফিউল উম্মাহ, খতীবুল আম্বিয়া ওয়াল উমাম, সাইয়্যিদুল মাখদূম, ছাহিবে জামিউল আসমা ওয়াছ ছিফাত, ফাদ্বলুল্লাহ, আকরামুল আওওয়ালীন ওয়াল আখিরীন, ফখরুল আম্বিয়া, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
২। ইলাহী বহুরমতে সাইয়্যিদুল আরব, বাবুল ইলমি ওয়াল হিকমাহ, আমীনু আহলি আরদ্ব, কুদওয়াতুল মুত্তাক্বীনা, যীনাতুল আরিফীন, নূরুল মুত্বীয়ীন, ইমামুল আদিলীন, আহলু বাইতিন নাবিইয়ি, আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন, আসাদুল্লাহিল গালিব, আল ইমামুল আউওয়াল মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম।
৩। ইলাহী বহুরমতে সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, সিবতু রসূলিল্লাহ, আলু রসূলিল্লাহ, আল ইমামুস সাইয়্যিদ, আল ইমামুল হুমাম, আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন, আল ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম।
 ৪। ইলাহী বহুরমতে সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, সিবতু রসূলিল্লাহ, আলু রসূলিল্লাহ, আল ইমামুস সাইয়্যিদ, আল ইমামুল হুমাম, কাবীরুশ শা’ন, শহীদে কারবালা, সাইয়্যিদুশ শুহাদা, আল ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম।
 ৫। ইলাহী বহুরমতে ইমামুল মুহাক্বক্বিক্বীন, আওলাদু রসূলিল্লাহ, ইয়াদগারে নুবুওওয়াহ, পেশওয়ায়ে দ্বীন, আস সাজ্জাদ, আল ইমামুর রাবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আলী আওসাত যাইনুল আবিদীন আলাইহিস সালাম।
 ৬। ইলাহী বহুরমতে ইমামুল হুদা, ইমামু আহলিল ইয়াক্বীন, সুলালাতুন নুবুওওয়াহ, সিরাজুল মিল্লাহ, আল ইমামুল খামিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম বাকির আলাইহিস সালাম।
 ৭। ইলাহী বহুরমতে ইমামুল মুহাক্বক্বিক্বীন, আওলাদু রসূলিল্লাহ, ইয়াদগারে নুবুওওয়াহ, ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম জা’ফর ছাদিক্ব আলাইহিস সালাম।
 ৮। ইলাহী বহুরমতে ইমামুল মুহাক্বক্বিক্বীন, আওলাদু রসূলিল্লাহ, ইয়াদগারে নুবুওওয়াহ, ইমামুস সাবি’ মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম মূসা কাযিম আলাইহিস সালাম। ৯। ইলাহী বহুরমতে ইমামুল মুহাক্বক্বিক্বীন, আওলাদু রসূলিল্লাহ, ইয়াদগারে নুবুওওয়াহ, ইমামুছ ছামিন মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আলী রিযা আলাইহিস সালাম। ১০। ইলাহী বহুরমতে ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত হযরত শায়েখ মা’রূফ কারখী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 ১১। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ আবূল হাসান সাররী সাকতী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 ১২। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা সাইয়্যিদুত ত্বায়িফা জুনায়িদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 ১৩। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ আবূ বকর শিবলী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১৪। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ আব্দুল আযীয বিন হারিছ তামিমী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 ১৫। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ আব্দুল ওয়াহিদ বিন আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১৬। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ আবূল ফাররাহ মুহম্মদ তারতুসী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 ১৭। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ আবূল হাসান হাককারী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১৮। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ আবূ সাঈদ মুবারক মখদুমী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 ১৯। ইলাহী বহুরমতে ইমামে রব্বানী, মাহবূবে সুবহানী, সাইয়্যিদুল আওলিয়া, ইমামুর রাসিখীন, সুলত্বানুল আরিফীন, গাউছে সামদানী, মাশায়েখে আকবর মাশরিক ওয়াল মাগরিব, কুতুবুল আলম, ফরদুল আহবাব, গউছুল আ’যম, শায়েখে শুইয়খিল আলম, গাউসে সাক্বালাইন, শাইখুল ইসলাম, ইমামুল আইম্মাহ, সাইয়্যিদুনা হযরত মুহিউদ্দীন আব্দুল ক্বাদির জিলানী বড়পীর ছাহিব আল হাম্বলী রহমতুল্লাহি আলাইহি। * তিনিই পবিত্র ক্বাদিরিয়া তরীক্বা উনার সম্মানিত ইমাম রহমতুল্লাহি আলাইহি। সকলের নিকট তিনি বড়পীর ছাহিব গাউছুল আ’যম, দস্তগীর লক্বম মুবারক-এ মশহূর।
 ২০। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ সাইয়্যিদ আব্দুর রাযযাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২১। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ শরফুদ্দীন কাত্তাল রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২২। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ আব্দুল ওয়াহহাব রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৩। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ বাহাউদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৪। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ আক্বীল রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 ২৫। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ শামসুদ্দীন সাহরায়ি রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 ২৬। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ গাদায়ে রহমান আউওয়াল রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৭। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ শামসুদ্দীন আরিফ রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২৮। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ গাদায়ে রহমান ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 ২৯। ইলাহী বহুরমতে হযরত শাহ ফাযিল রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 ৩০। ইলাহী বহুরমতে হযরত শাহ কামাল কায়থালী রহমতুল্লাহি আলাইহি। ৩১। ইলাহী বহুরমতে হযরত শাহ সিকান্দার কায়থালী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 ৩২। ইলাহী বহুরমতে আফযালুল আওলিয়া, ইমামে রব্বানী, কাইয়্যুমে আউওয়াল, আজিমুল বারাকাত, গউছুল সাক্বালাইন, খাযীনাতুর রহমাহ, মাখদূমে যামান, আল মুনাওওয়ার, খাজায়ে খাঁজেগা, আবূল বারাকাত, বদরুদ্দীন শায়েখ আহমদ ফারূক্বী হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী সিরহিন্দী আল হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি। * তিনি মহান মুজাদ্দিদিয়া তরীক্বা উনার ইমাম রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনিই হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার খেরকা মুবারক হযরত শাহ সিকান্দার কায়থালী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুবারক মারফত প্রাপ্ত হয়েছেন।
 ৩৩। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ আদম বিন নূরী রহমতুল্লাহি আলাইহি। ৩৪। ইলাহী বহুরমতে হযরত সাইয়্যিদ আব্দুল্লাহ আকবরাবাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 ৩৫। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়েখ আব্দুর রহীম মুহাদ্দিছ দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 ৩৬। ইলাহী বহুরমতে রঈসুল মুহাদ্দিছীন, মুজাদ্দিদে যামান ও মুজাদ্দিদে মিল্লাত হযরত শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিছ দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি। * তিনি দ্বাদশ হিজরী শতকের মহান মুজাদ্দিদ।
 ৩৭। ইলাহী বহুরমতে হযরত শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিছ দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 ৩৮। ইলাহী বহুরমতে আমীরুল মু’মিনীন, মুজাদ্দিদে যামান, হযরত শাহ সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলবী আলাইহিস সালাম। * তিনিই ত্রয়োদশ হিজরী শতাব্দীর মহান মুজাদ্দিদ এবং সুপ্রসিদ্ধ ‘মুহম্মদিয়া তরীক্বা’ উনার সম্মানিত ইমাম।
 ৩৯। ইলাহী বহুরমতে কুতুবুল আকতাব হযরত মাওলানা শাহ ছূফী নূর মুহম্মদ নিজামপুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
 ৪০। ইলাহী বহুরমতে ওয়াসিল বিল্লাহ, আশিক্বে রসূলিল্লাহ, কুতুবুল ইরশাদ হযরত মাওলানা শাহ ছূফী ফতেহ আলী বর্ধমানী রহমতুল্লাহি আলাইহি। * উনাকে রসূলে নোমা বলা হয়। কারণ তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যিয়ারত করিয়ে দিতে পারতেন। ৪১। ইলাহী বহুরমতে আমীরুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত, মুজাদ্দিদে যামান, কুতুবুল আলম শাহ ছূফী আলহাজ্জ হযরত মাওলানা আব্দুল্লাহিল মা’রূফ মুহম্মদ আবূ বকর ছিদ্দীক্বী ফুরফুরাবী আল হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি। * তিনি চতুর্দশ হিজরী শতকের মহান মুজাদ্দিদ।
 ৪২। (ক) ইলাহী বহুরমতে ওলীয়ে মাদারজাদ, কুতুবুল আলম, সুলত্বানুল আরিফীন, হযরত মাওলানা শাহ ছূফী আবূ নজম মুহম্মদ নাজমুস সায়াদাত ছিদ্দীক্বী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি। (খ) ইলাহী বহুরমতে, কুতুবুল আলম, কাইয়্যুমে যামান, শায়খুল মাশায়িখ, হযরত মাওলানা শাহ ছূফী আবূ নছর মুহম্মদ আব্দুল হাই ছিদ্দীক্বী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৪৩। ইলাহী বহুরমতে কুতুবুল আলম, আমীরুশ শরীয়ত, মাহতাবে তরীক্বত, সুলত্বানুল আরিফীন, মাহিয়ে বিদয়াত, মুহইয়ে সুন্নাত, মুজাদ্দিদে যামান, হুজ্জাতুল ইসলাম, তাজুল মুফাসসিরীন, রঈসুল মুহাদ্দিছীন, ফখরুল ফুক্বাহা আলহাজ্জ হযরত মাওলানা শাহ ছূফী আবূল খায়ের মুহম্মদ ওয়াজীহুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনি উপরোক্ত উনাদের দু’জন থেকেই খিলাফত প্রাপ্ত হন। তবে উনার প্রধান শায়েখ হচ্ছেন হযরত নাজমুস সায়াদাত ছিদ্দীক্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৪৪। ইলাহী বহুরমতে, খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইউস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, ক্বইয়ূমুয যামান, হুজ্জাতুল ইসলাম, সুলত্বানুল আরিফীন, সাইয়্যিদুল আওলিয়া, জাব্বারিউল আউওয়াল, ক্বউইয়্যূল আউওয়াল, সুলত্বানুন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, জামিউল আলক্বাব, আওলাদে রসূল, মাওলানা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম। * তিনিই সারা বিশ্বে সমাদৃত, প্রশংসিত, গ্রহণযোগ্য ও হক্ব সিলসিলা “রাজারবাগ শরীফ”-উনার মহাসম্মানিত হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম। তিনিই হিজরী পঞ্চদশ শতাব্দীর ‘মুজাদ্দিদ’। আয় বারে ইলাহী! উনাদের ওসীলায় আমাদের উপর আপনার খাছ রহমত, মুহব্বত ও মা’রিফাত এবং হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাছ তাওয়াজ্জুহ, ফায়িয, যিয়ারত, মুহব্বত ও মা’রিফাত দান করুন। সুন্নতের পূর্ণ পায়রবী করার তাওফীক দিন। যাহিরী ও বাতিনী দৃঢ়তা আর ইহকাল ও পরকালের সুস্থতা দান করুন। এই সকল বুযুর্গানে দ্বীন উনাদের ফুয়ূজাত, বারাকাত ও কামালাতের পূর্ণ হিসসা নছীব করুন। (আমীন)
লিখনে : খাজা মুহম্মদ ইউসুফ রাজী
ুhttps://www.al-ihsan.net/details/%E0%A6%9A%E0%A7%80%E0%A6%B6%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A6%BE-%E0%A6%A4%E0%A6%B0%E0%A7%80%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%B0%E0%A6%BE-%E0%A6%B6%E0%A6%B0%E0%A7%80%E0%A6%AB-22812/22812



































নছীহতে উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম -(১ম খণ্ড)২য় অংশ-সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ফযীলত মুবারক-পর্ব-৬.২

সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ফযীলত মুবারক-২য় অংশ-পর্ব-৬.২

মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন,

قُلْ لَّا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ أَجْرًا إِلَّا الْمَوَدَّةَ فِي الْقُرْبَى وَمَنْ يَقْتَرِفْ حَسَنَةً نزِدْ لَه فِيهَا حُسْنًا إِنَّ اللهَ غَفُورٌ شَكُورٌ (۲۳) سورة الشورى

(হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনি বলে দিন, আমি তোমাদের কাছে কোনো বিনিময় চাচ্ছি না, নিকটবর্তী আত্মীয়-স্বজন (আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম) উনাদেরকে মুহাব্বত মুবারক করা ব্যতীত। আর যে ব্যক্তি (এই) নেক কাজ করবে আমি (মহান আল্লাহ পাক) তার নেকীগুলো দ্বিগুণ পরিমাণে বাড়িয়ে দিবো। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি ক্ষমাশীল এবং নেক কাজে প্রতিদান দানকারী। [সূরা শূরা শরীফ: ২৩]

উপরোক্ত আয়াত শরীফে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ থেকে যে বিনিময় চাওয়ার কথা বলা হয়েছে এই বিনিময় চাওয়ার বিষয়টি মূলত স্বাভাবিক নয়, চাইলে তা দেয়া কুল কায়িনাতের কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। তবে যেহেতু সমস্ত মুসলমানদেরকে মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি-রেযামন্দি মুবারক হাছিল করতে হবে তাই সকলের দায়িত্ব-কর্তব্যের প্রতি গুরুত্ব দেওয়ার জন্য বিনিময়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহাব্বত, তা'যীম-তাকরীম করার জন্য পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি বান্দাদেরকে আদেশ মুবারক করেছেন তেমনিভাবে পবিত্র হাদীছ শরীফেও উনাদেরকে যারা মুহাব্বত করবেন, অনুসরণ করবেন, তা'যীম-তাকরীম করবেন উনাদেরকে অনেক ফযীলত, মর্যাদা-মর্তবা হাছিলের সুসংবাদ প্রদান করা হয়েছে।

আর পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَحِبُّوا اللهَ لِمَا يَغْلُوكُمْ مِنْ نِعْمَةٍ وَأَحِبُّوْنِي لِحُبِّ اللَّهِ وَأَحِبُّوا أَهْلَ بَيْتِي لِحْتِي. رواه ترمذى والحاكم والطبراني والبيهقى وجامع الاحاديث وجمع الجوامع للسيوتي وكنز العمال والجامع الاصول من احاديث الرسول وفضائل الصحابة واحمد ابن حنبل)

হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনাকে মুহাব্বত করো যেহেতু তিনি স্বীয় অনুগ্রহে তোমাদেরকে রিযিক দান করেন এবং তোমরা আমাকে মুহাব্বত করো মহান আল্লাহ পাক উনাকে মুহাব্বত করার জন্য এবং আমার আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহাব্বত করো আমাকে মুহাব্বত করার জন্য।

[তিরমিযী, ত্ববারানী, বাইহাক্বী শরীফ ইত্যাদি)

তাহলে দেখা যাচ্ছে, হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহাব্বত করলে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মুহাব্বত করা হয় আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মুহাব্বত করা হলে মহান আল্লাহ পাক উনাকে মুহাব্বত করা হয়। আর মহান আল্লাহ পাক উনাকে মুহাব্বত করা হলে ইহকাল ও পরকালে কামিয়াবী লাভ করা সম্ভব হবে। সুবহানাল্লাহ।

হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহাব্বতকারীদের সম্পর্কে বর্ণিত রয়েছে,

عَنْ حَضْرَتْ عَلَي عَلَيْهِ السَّلَامُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اتَّبَتُكُمْ عَلَى الصِّرَاطِ أَشَدُّكُمْ حُبًّا لِأَهْلِ بَيْنِي وَلِأَصْحَابِي. ابن عدى والديلمي والصواعق المحرقة وكنز العمال)

হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমাদের মধ্যে তারাই সঠিক পথের উপর দৃঢ় থাকতে পারবে, যারা আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম এবং আমার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদেরকে সর্বাধিক মুহাব্বত করবে। সুবহানাল্লাহ! [দায়লামী ও কানযুল উম্মাল শরীফ ইত্যাদি]

পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,

عَنْ حَضْرَتْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَيْرُكُمْ خَيْرُكُمْ لِأَهْلِي مِنْ بَعْدِي. (مشكوة)

হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তি সর্বোত্তম, যে ব্যক্তি আমার পরে আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের নিকট সর্বোত্তম। সুবহানাল্লাহ। [মিশকাত শরীফ, মুস্তাদরাকে হাকিম শরীফ ৩/৩৫২, মাজমাউয যাওয়ায়িদ শরীফ ৯/১৭৪ ইত্যাদি)

পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,

عن حَضْرَتْ عَلَى عَلَيْهِ السَّلامُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَرْبَعَةٌ أَنَا لَهُمْ شَفِيعٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ الْمُكْرِمُ لِذُرِّيَتِي وَالْقَاضِي لَهُمْ حَوَائِجَهُمْ وَالسَّاعِى لَهُمْ فِي أُمُورِهِمْ عِنْدَ مَا اضْطَرُّوا إِلَيْهِ وَالْمُحِبُّ لَهُمْ بِقَلْبِهِ وَلِسَانِهِ.

হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি কিয়ামতের দিন চার শ্রেণীর লোকদের জন্য সুপারিশ করবো। এক, যারা আমার সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সম্মান করবে। দুই, যারা আমার সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মালী তথা আর্থিকভাবে খিদমতের আনজাম দিবে। তিন, যারা আমার সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে জান দিয়ে তথা শারীরিকভাবে খিদমতের আনজাম দিবে। চার, যারা আমার সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে অন্তরে মুহাব্বত করবে এবং জবানে উনাদের ছানা-ছিফত মুবারক বর্ণনা করবে। [জামিউল আহাদীছ ৪/২২৯, জামউল জাওয়ামি, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ৭/১১, দায়লামী শরীফ]

অর্থাৎ হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে যারা সর্বদিক থেকে মুহাব্বত করবেন উনারা দুনিয়াতে সঠিক পথে থাকতে পারবেন এবং কিয়ামতের দিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শাফায়াত বা সুপারিশ মুবারক লাভ করবেন। সুবহানাল্লাহ!

অন্য পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত হয়েছে, 

عن حضرت ابْنِ مَسْعُودٍ رَضِيَ الله تعالى عنه قال قال النبي صل اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حُبُّ آل محمد صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمًا خَيْرٌ مِّنْ عبادة سنةٍ وَمَنْ مَاتَ عَلَيْهِ دخل الجنَّة، (مفتاح النجاة)

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, একদিন সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহাব্বত করা সারা বছর ইবাদত-বন্দেগী করার চেয়েও উত্তম। আর যে উনাদের পবিত্র মুহাব্বত মুবারক উনার উপর ইন্তেকাল করলো, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। সুবহানাল্লাহ। [মিফতাহুন নাজাহ]

পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো বর্ণিত রয়েছে-

عن حضرت جرير بن عبد الله البجَلِي رَضِيَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ الله صلى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ مَاتَ على حب آل مُحَمَّدٍ صلى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَاتَ شَهِيدًا، أَلا وَمَنْ مَاتَ عَلَى حُبِّ ال مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَاتَ مَغْفُورًا له. أَلا وَمَنْ مَاتَ عَلَى حب آل مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَاتَ ثَالِبًا، أَلَا وَمَنْ مَاتَ عَلَى حب آلِ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَاتَ مُؤْمِنًا مُسْتَكْمِل الْإِيْمَانِ. أَلا وَمَنْ مَاتَ عَلَى حُبِّ آلِ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ

ومن مات بشره ملك الموت بالجنة ثم منكر ونكير الا. الجنة كما ترف الْعَرُوسُ إلى بيت زوجها الا وَمَنْ مَاتَ على حب آل محمد صلى الله عليه وسلم فتح الله له في قبره نابين إلى الجنَّة، ألا ومن مات على حب الى محمد صلى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَعَلَ اللَّهُ قَبْرَهُ مَزَارَ ملائِكَةِ الرَّحْمَةِ، أَلا وَمَنْ مَاتَ عَلى حُبِّ آلِ مُحَمَّدٍ صلى الله . بعض ال وَمَنْ مَاتَ على ومسلم مات على السنة والجماعة الا و م جاء يوم الْقِيَامَةِ مَكْتُوبًا بَيْنَ عَيْنَيْهِ أَيسَ عليه وسلم . مُحَمَّدٍ صلى الله من رَحْمَةِ اللَّهِ أَلا وَمَنْ مَاتَ عَلَى بَعْضٍ آلِ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَاتَ كَافِرًا أَلَا وَمَنْ مَاتَ عَلَى بُعْضٍ آلِ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمْ يَشْمُ رَائِحَةِ الْجَنَّةِ.

হযরত জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ বাজালী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যিনি সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহাব্বত মুবারকে ইন্তেকাল করবেন, তিনি শহীদ হিসাবে ইন্তেকাল করবেন। সাবধান। যিনি সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহাব্বত মুবারকে ইন্তেকাল করবেন, তিনি ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়ে ইন্তেকাল করবেন। সাবধান। যিনি হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহাব্বত মুবারকে ইন্তেকাল করবেন, তিনি তওবাকারী হিসেবে ইন্তেকাল করবেন। সাবধান। যিনি সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহাব্বত মুবারকে ইন্তেকাল করবেন, তিনি পরিপূর্ণ ঈমানদার হিসেবে ইন্তেকাল করবেন। সাবধান। যিনি সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহাব্বত মুবারকে ইন্তেকাল করবেন,

উনাকে মালাকুল মউত আলাইহিস সালাম, হযরত মুনকার ও নকীর আলাইহিমাস সালাম উনারা সম্মানিত বেহেশতের সুসংবাদ মুবারক দিবেন। সাবধান! যিনি সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহাব্বত মুবারকে ইন্তেকাল করবেন, উনাকে এমনভাবে সুসজ্জিত করে জান্নাতে নেয়া হবে, যেমনভাবে নববধূকে সাজিয়ে তার স্বামীর ঘরে নেয়া হয়। সাবধান! যিনি সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহাব্বত মুবারকে ইন্তেকাল করবেন, উনার কবরে সম্মানিত জান্নাতের দিকে দু'টি দরজা খুলে দেয়া হবে। সাবধান! যিনি সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহাব্বত মুবারকে ইন্তেকাল করবেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি তার কবরকে সম্মানিত রহমতের ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের যিয়ারতের স্থান বানাবেন। সাবধান। যিনি সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহাব্বত মুবারকে ইন্তেকাল করবেন, তিনি আহলু সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আক্কাঈদের উপর ইন্তেকাল করবেন। সুবহানাল্লাহ! সাবধান! আর যে ব্যক্তি সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে মারা যাবে, কিয়ামতের দিন তার দুই চোখের মাঝখানে লিখা থাকবে যে, সে মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র রহমত থেকে বঞ্চিত। নাউযুবিল্লাহ! সাবধান! যে ব্যক্তি সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে মারা যাবে, সে কাফির অবস্থায় মারা যাবে। নাউযুবিল্লাহ! সাবধান! যে ব্যক্তি সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে মারা যাবে, সে সম্মানিত জান্নাত উনার ঘ্রাণ পর্যন্ত পাবে না। নাউযুবিল্লাহ! [তাফসীরে কুরতুবী ১৬/২৩, তাফসীরে কবীর ২৭/৫৯৫, তাফসীরে হাক্কী ১৩/৭৯, তাফসীরে রুহুল বয়ান ৮/২৩৯, তাখরীজু আহাদীছুল কাশশাফ ৩/২৩৮, নুজহাতুল মাজালিস ১/৩৬৫]

অর্থাৎ, যে ব্যক্তি সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহাব্বত মুবারকে ইন্তেকাল করবেন,

• তিনি শহীদী মৃত্যু পাবেন।

• তিনি ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়ে ইন্তেকাল করবেন।

• তিনি তওবাকারী হিসেবে ইন্তেকাল করবেন।

• তিনি পরিপূর্ণ ঈমানদার হিসেবে ইন্তেকাল করবেন।

• উনাকে মালাকুল মউত আলাইহিস সালাম, হযরত মুনকার ও নকীর আলাইহিমাস সালাম উনারা সম্মানিত বেহেশতের সুসংবাদ মুবারক দিবেন।

• উনাকে নববধূর ন্যায় সুসজ্জিত করে জান্নাতে নেয়া হবে

• উনার কবরে সম্মানিত জান্নাত উনার দিক থেকে দু'টি দরজা খুলে দেয়া হবে।

• মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার কবরকে সম্মানিত রহমতের ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের যিয়ারতের স্থান বানাবেন।

• তিনি সম্মানিত আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত উনার আক্বাইদের উপরই ইন্তেকাল করবেন। সুবহানাল্লাহ।

হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহাব্বত মুবারকে ইন্তেকাল করলে উপরোক্ত নিয়ামতসমূহ লাভ করা যায়; কেউ যদি জীবিত অবস্থায় হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহাব্বত না করে, উনাদের খিদমত মুবারকের আনজাম না দেয়, তাহলে সে কি ইন্তেকালের সময় উনাদের মুহাব্বত অন্তরে রাখতে পারবে? কখনোই নয়। হ্যাঁ, যদি জীবিত অবস্থায় হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহাব্বত করে, উনাদের খিদমত মুবারকের আনজাম দেয়, তাহলে তার জন্য উভয়কালেই কামিয়াবী থাকবে। সে ইন্তেকালের সময়ও উনাদের মুহাব্বত অন্তরে রাখতে পারবে। ইনশাআল্লাহ।

আর যারা হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সুমহান মর্যাদা-সম্মান মুবারক রক্ষা করবে না, উনাদেরকে মুহাব্বত করবে না বরং উনাদের প্রতি অসম্মান বা বেয়াদবীমূলক আচরণ করবে, উনাদের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ করবে; তাদের পরিণতি হবে অত্যন্ত ভয়াবহ। তারা মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত থেকে বঞ্চিত হবে, ঈমানহারা হয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নিবে এবং পরকালে তাদের ঠিকানা হবে জাহান্নাম। নাউযুবিল্লাহ।

পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,

عَنْ أَبِي سَعِيدِدِ الْخُدْرِيِّ رَضِيَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ أَبْغَضَنَا أَهْلَ الْبَيْتِ فَهُوَ مُنَافِقٌ.

হযরত আবু সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যারা আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিরোধিতা করে, উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে, তারা মুনাফিক।

[দুররুল মানছুর ১৩/১৫১, ফাযায়িলু ছাহাবা লিআহমদ ইবনে হাম্বল ২/৬৬১, আর রিয়াদুন নাম্বরা ১/৩৬২, যখায়েরুল উকবা ১/১৮]

অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে-

لَوْ أَنَّ رَجُلًا صَعِدَ بَيْنَ الرَّكْنِ وَالْمَقَامِ فَصَلَّى وَصَامَ ثُمَّ مَاتَ وَهُوَ مبْغِضُ لِأَهْلِ بَيْتِ سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَخَلَ النَّارَ.

যদি কোনো ব্যক্তি সম্মানিত রুকনে ইয়ামিন ও পবিত্র মাক্কামে ইবরাহীমে আরোহণ করে অতঃপর সে নামায পড়ে এবং রোযা রাখে কিন্তু সে সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ব্যাপারে বিদ্বেষ পোষণ করে, চু-চেরা কীল-কাল করে তবে সে নিশ্চিত জাহান্নামে প্রবেশ করবে। নাউযুবিল্লাহ!

[তাফসীরে রুহুল বয়ান]

উপরোক্ত বর্ণনাগুলো থেকে বুঝা যায় যে, হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করার পরিণাম কতো ভয়াবহ!

অতএব, সমস্ত সৃষ্টি জগতের জন্য ফরযে আইন হচ্ছে সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি ঈমান আনা, উনাদেরকে মুহাব্বত করা, তা'যীম-তাকরীম করা, উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারকের আনজাম দেয়া। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে ছহীহ সমঝ দান করুন এবং হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের আদর্শ মুতাবিক জীবন গড়ে হাক্বীক্বী মুসলমান হওয়ার তাওফীক দান করুন। (আমীন)












১০০টি চমৎকার ঘটনা -পর্ব-৫৪( ঐশ্বর্যে লালিত আরাবী দুলাল )

ঐশ্বর্যে লালিত আরাবী দুলাল -পর্ব-৫৪

হযরত মুসয়াব ইবনে উমাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, পিতা-মাতার পরম আদর আর ঐশ্বর্যের মধ্যে লালিত মক্কা শরীফের অন্যতম সুদর্শন যুবক ছিলেন তিনি। মা সম্পদশালী হওয়ার কারণে অত্যন্ত ভোগ বিলাসের মধ্যে উনাকে প্রতিপালন করে। তখনকার যুগে মক্কা শরীফের যত রকমের চমৎকার পোশাক ও উৎকৃষ্ট খুশবু পাওয়া যেত সবই তিনি ব্যবহার করতেন। রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সামনে কোনভাবে উনার প্রসঙ্গ উঠলে বলতেন, "মক্কা শরীফে মুসয়াব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার চেয়ে সুদর্শন এবং উৎকৃষ্ট পোশাকধারী আর কেউ ছিল না।” ঐতিহাসিকরা বলেছেন, "তিনি ছিলেন মক্কা শরীফের সর্বোৎকৃষ্ট সুগন্ধি ব্যবহারকারী।”

মক্কার অলিতে গলিতে কুরাইশগণের আড্ডায়, পরামর্শ সভায় তখন একই আলোচনা- আল আমীন মুহাম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উনার নতুন দ্বীন আল ইসলাম। কুরাইশগণের এই আদুরে দুলাল এসব আলোচনা অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে শুনতেন। অল্প বয়সী হওয়া সত্ত্বেও তিনি হতেন কুরাইশগণের সকল বৈঠক ও মজলিসের শোভা ও মধ্যমণি। তাদের প্রতিটি বৈঠকে সবার কাম্য হতো উনার উপস্থিতি। তীক্ষ্ম মেধা, প্রখর বুদ্ধিমত্তা ও ব্যক্তিত্ব ছিল উনার চরিত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য। আর এ বৈশিষ্ট্য উনার হৃদয়ের সকল দ্বার, সকল অর্গল উন্মুক্ত করে দেয়।

তিনি শুনতে পেলেন, রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উনার প্রতি বিশ্বাসীরা কুরাইশদের সকল অর্থহীন কাজ ও তাদের যুলুম অত্যাচার থেকে দূরে থাকার উদ্দেশ্যে সেই সাফা পাহাড়ের পাদদেশে আল আরকাম ইবনে আবিল আরকাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বাড়িতে সমবেত হন। সব দ্বিধা, সব দ্বন্দ ঝেড়ে ফেলে একদিন সন্ধ্যায় তিনি হাযির হলেন দারুল আরকামে। রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেই দিনগুলোতে সেখানে উনার সাথীদের সঙ্গে মিলিত হতেন, উনাদেরকে কুরআন শরীফ শিক্ষা দিতেন এবং উনাদের সাথে নামায আদায় করতেন।

মুসয়াব ইবনে উমাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু দারুল আরকামে বসতে না বসতেই আয়াত শরীফ নাযিল হলো। রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যবান মুবারক থেকে নিঃসৃত সেই আয়াত শরীফ যেন সকল শ্রোতার কর্ণকুহরে ও হৃদয়ের গভীরে প্রবেশ করতে লাগলো। সেই বরকতময় সন্ধ্যায় ইবনে উমাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুও হয়ে গেলেন এক বিশ্বাসী অন্তঃকরণের অধিকারী। খুশি ও আনন্দে তিনি আত্মহারা হয়ে পড়লেন।

রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একটি পবিত্র হাত মুবারক বাড়িয়ে দিলেন মুসয়াব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বুকের ওপর। দারুণ এক প্রশান্তিতে বিভোর হয়ে পড়েন মুসয়াব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। মূহুর্তে তিনি উনার বয়সের তুলনায় বহুগুণ বেশি হিকমত ও জ্ঞান লাভ করলেন এবং এমন দৃঢ়তা অর্জন করলেন যে, হাজারো বিপদ মুছীবত উনাকে কোনদিন বিন্দুমাত্র টলাতে পারেনি।

হযরত মুসয়াব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার আম্মা খুনাস বিনতু মালিক ছিল এক প্রচন্ড ব্যক্তিত্বের অধিকারিণী। তিনি উনার আম্মাকে খুব ভয় করতেন। তিনি ইসলাম গ্রহণের পর ধরাপৃষ্ঠে একমাত্র উনার মা ছাড়া আর কাউকে ভয় পেতেন না। কুরাইশ ও তাদের দেব-দেবী সহ সকল শক্তি উনার কাছে ছিল তুচ্ছ। কিন্তু মায়ের ভয় দূর হচ্ছিলো না। তাই মহান আল্লাহ পাক উনার চূড়ান্ত ফায়সালা না হওয়া পর্যন্ত ইসলাম গ্রহণের সংবাদটি চেপে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন।

দারুল আরকামে যাতায়াত চলতে লাগলো। তিনি রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মজলিসে বসতে লাগলেন। কিন্তু উনার মা কিছুই জানতে পারলো না।

একদিন গোপনে তিনি দারুল আরকামে প্রবেশ করছেন, সে সময় উসমান ইবনে তালহা তা দেখে ফেললো। আরেক দিন তিনি হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মতো নামায পড়ছেন। সেদিনও তা উসমানের চোখে পড়ে যায়। বাতাসের আগে খবরটি মক্কা শরীফের অলিতে গলিতে ছড়িয়ে পড়লো। উনার মায়ের কানেও খবরটি পৌঁছে গেল।

উনার মা, বংশের লোকজন ও মক্কা শরীফের নেতৃবৃন্দের সামনে উনাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করালো। তিনি অত্যন্ত স্থির বিশ্বাস ও প্রশান্ত চিত্তে তাদেরকে পাঠ করে শুনাতে লাগলেন পবিত্র কুরআন শরীফের সেই মহাবাণী যার ওপর তিনি ঈমান এনেছেন। উনার মা উনাকে চপেটাঘাত করে চুপ করিয়ে দিতে চাইলো। বকাঝকা, মারপিট চললো। তারপর উনাকে ঘরে আবদ্ধ করে রাখা হলো।

তিনি বন্দী অবস্থায় দিন কাটাতে লাগলেন। রাতদিন চব্বিশ ঘন্টা উনাকে পাহারা দেয়া হতো। এর মধ্যে তিনি খবর পেলেন উনারই মত কিছু মযলুম মু'মিন মুসলমান হাবশায় হিজরত করছেন। তিনি মায়ের চোখে ধুলো দিয়ে সেই দলটির সাথে হাবশায় চলে গেলেন।

কিছুদিন হাবশায় থাকার পর তিনি পবিত্র মক্কা শরীফে ফিরে এলেন। তারপর রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নির্দেশে আরেকটি দলকে সঙ্গে করে হাবশায় চলে যান। কিন্তু হযরত মুসয়াব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উপলব্ধি করেছিলেন, তিনি পবিত্র মক্কা শরীফে কিংবা হাবশায় যেখানেই থাকুন না কেন জীবন উনার নতুন রূপ ধারণ করেছে। উনার একমাত্র অনুকরণীয় আদর্শ হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং একমাত্র কাম্য মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক।

একদিন মুসলমানদের একটি দল রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের পৈত্রিক ধর্ম ত্যাগ করতে উৎসাহিত করছেন, তিনি তাদের উপাস্য দেব দেবীকে গালাগালও করছেন। এসব ভেবে রেগে আগুন হয়ে উনাকে প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে আসলেন, উসাইদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার এ রণমূর্তি দেখে হযরত মুসয়াব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার পাশে বসা লোকেরা ভয় পেয়ে গেলেন।

কিন্তু না, হযরত মুসয়াব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি তো উনাকে ভয় পেলেনই না বরং সহাস্যে উসাইদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে স্বাগতম জানালেন। হাসতে হাসতে উনার সামনে গিয়ে দাঁড়ালেন। উসাইদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তখন উনাকে ও আসআদ ইবনে যারারা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে লক্ষ্য করে বললেন, আপনারা আমাদের গোত্রীয় এলাকায় এসে এভাবে আমাদের দুর্বল লোকদের বোকা বানাচ্ছেন কেন? যদি আপনাদের মারা যাওয়ার শখ না থাকে তাহলে আমাদের এলাকা থেকে বেরিয়ে যান।

একথা শুনে হাসতে হাসতে মুসয়াব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বললেন, "আপনি কি একটু বসে আমার কথা শুনবেন না? আমার কথা শুনুন। ভালো লাগলে মানবেন, ভালো না লাগলে আমরা চলে যাবো।"

উসাইদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ছিলেন একজন বুদ্ধিমান লোক। এই কথাটা উনার মনে লাগলো। এ তো বুদ্ধিমানের কথা! শুনতে আপত্তি কিসের! তিনি অস্ত্র ফেলে মাটিতে বসে কান লাগিয়ে হযরত মুসয়াব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার কথা শুনতে লাগলেন।

হযরত মুসয়াব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি পবিত্র কুরআন শরীফের আয়াত শরীফ তিলাওয়াত করে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে পবিত্র দ্বীন নিয়ে এসেছেন সে সম্পর্কে ব্যাখ্যা করছেন, আর এদিকে উসাইদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার মুখমন্ডল একটু একটু করে হাস্যোজ্জ্বল হয়ে উঠছে। হযরত মুসয়াব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বক্তব্য এখনও শেষ করতে পারেননি, এর মধ্যে উসাইদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও তার সঙ্গী লোকটি বলে বসলো, এ তো খুব চমৎকার ও সত্য কথা। আপনাদের দ্বীনে প্রবেশ করতে গেলে কি করতে হয়? হযরত মুসয়াব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, শরীর ও পোশাক পবিত্র করে "লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" এই সাক্ষ্য দিতে হয়।

উসাইদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উঠে চলে গেলেন। কিছুক্ষণ পর যখন ফিরে এলেন তখন উনার মাথার চুল থেকে টপ টপ করে পানি পড়ছে। তিনি এসে ঘোষণা করলেন, "আশহাদু আল্লাহ ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রসূলুহু।"

এ খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লো, সাদ ইবনে মুয়াজ ও সাদ ইবনে উবাদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা ছুটে এলেন হযরত মুসয়াব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার কাছে। উনারা উভয়ে ইসলাম গ্রহণ করলেন। এসব নেতৃবৃন্দের ইসলাম গ্রহণের পর সাধারণ মদীনাবাসী বলাবলি করতে লাগলেন, আমরা পেছনে পড়ে থাকবো কেন! চলো, মুসয়াব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার কাছে যাই, পবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করি। এভাবেই হযরত মুসয়াব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি মহান আল্লাহ পাক প্রদত্ত বুদ্ধি, মেধা ও মহৎ চরিত্রের সাহায্যে মদীনাবাসীদের হৃদয়ের সাথে সংলাপ করেন। ফলে উনারা দলে দলে মহান আল্লাহ পাক উনার দ্বীনে প্রবেশ করেন।

হযরত মুসয়াব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু পবিত্র মদীনা শরীফে আসার পূর্বে সেখান থেকে মাত্র বারো জন লোক আকাবায় এসে দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু তিনি পবিত্র মদীনা শরীফে আসার পর কয়েক মাস যেতে না যেতেই বহু মানুষ উনার দাওয়াতে সাড়া দিয়ে দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন। পরবর্তী হজ্জ মওসুমে মদীনাবাসী মুসলমানদের বাহাত্তর জনের একটি প্রতিনিধি দল, উনাদের যিনি ধর্মীয় শিক্ষক ও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রেরিত দূত হযরত মুসয়াব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সাথে পবিত্র মক্কা শরীফে এসে আকাবায় রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মিলিত হন।

যখন ওহুদ যুদ্ধ সংগঠিত হয়। তখন হযরত মুসয়াব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হাত মুবারকে ছিল ইসলামের পতাকা। যুদ্ধের ময়দানে শত্রুর প্রচন্ড আঘাতে উনার ডান হাত কেটে যায়। এরপর তিনি বাম হাত দিয়ে ইসলামের পতাকা উড্ডীন রাখেন। একটু পরে বাম হাতও কাটা যায়। দু'হাত কাটা যাওয়ার পর দুই হাতের অবশিষ্টাংশ দিয়ে ইসলামের পতাকা বুকে ধরে রাখলেন তিনি। যতক্ষণ প্রাণ ছিল ইসলামের ঝান্ডা মাটিতে পড়তে দেননি। অবশেষে শত্রু পক্ষের তীরের আঘাতে তিনি শাহাদাত বরণ করেন। সুবহানাল্লাহ!

তিনি উনার দুনিয়াবী যিন্দেগীর আরাম, আয়েশ, সুখ, প্রভাব-প্রতিপত্তি সব অকাতরে ত্যাগ করেছেন শুধু মহান আল্লাহ পাক ও উনার প্রিয়তম হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুহাব্বতে। দ্বীন ইসলাম উনার ঝান্ডা বুলন্দ করার জন্য শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত কুরবান করে দিয়ে গিয়েছেন। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা এভাবেই উনাদের শত সহস্র ত্যাগের বিনিময়ে, বুকের তাজা খুন ঝরিয়ে আমাদের জন্য দ্বীনের পথকে মসৃণ করে এক স্বর্ণালী যুগ রচনা করে দিয়ে গিয়েছিলেন।