এক নজরে সাইয়্যিদুল বাশার, সাইয়্যিদুল আসইয়াদ, আল মুবাশ্শির, আল আবাররু, আল আজওয়াদ, আশবাহুল খলক্বি বি-রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পরিচিতি মুবারক
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক: সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লক্বব মুবারক: সাইয়্যিদুল বাশার, সাইয়্যিদুল আসইয়াদ, আল মুবাশ্শির, আল আবাররু, আল আজওয়াদ, আশবাহুল খলক্বি বি-রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এছাড়াও আরো অসংখ্য অগণিত। সুবহানাল্লাহ!
যেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লক্বব মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেছেন: ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আব্বাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম: সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মাজান আলাইহাস সালাম: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দাদাজান আলাইহিস সালাম: আবূ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দাদীজান আলাইহাস সালাম: সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি আলাল আলামীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ: ৮ম হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২রা যিলহজ্জ শরীফ লাইলাতুল জুমু‘য়াহ শরীফ অর্থাৎ জুমুয়াবার রাতে। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র স্থান মুবারক: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র অবস্থান মুবারক: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ভাই-বোন আলাইহিমুস সালাম এবং আলাইহিন্নাস সালাম: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চার ভাই আলাইহিমুস সালাম এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চার বোন আলাইহিন্নাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ভাই আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র অবস্থান মুবারক: রবি’ অর্থাৎ চতুর্থ। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ভাই-বোন আলাইহিমুস সালাম এবং আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র অবস্থান মুবারক: আছ ছামিন অর্থাৎ অষ্টম। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ: ১০ম হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১০ই সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ) ইয়াওমুছ ছুলাছা’ শরীফ (মঙ্গলবার)। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র স্থান মুবারক: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
দুনিয়ার যমীনে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র অবস্থান মুবারক: মাস হিসেবে ১৬ মাস। আর দিন হিসেবে ১৫ মাস ৮ দিন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জান্নাতুল বাক্বী’ শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইবনু রসূলিল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনাকে উনার সম্মানিত ছোহবত মুবারক-এ নিয়ে যাওয়ার জন্য অর্থাৎ উনার বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের তিন দিন পূর্বেই হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট সংবাদ মুবারক প্রেরণ করেন
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইবনু রসূলিল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনাকে উনার সম্মানিত ছোহবত মুবারক-এ নিয়ে যাওয়ার জন্য অর্থাৎ উনার বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের তিন দিন পূর্বেই হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট সংবাদ মুবারক প্রেরণ করেন। সুবহানাল্লাহ! এর ৩ দিন পরেই ইবনু রসূলিল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করে মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ছোহবত মুবারক-এ চলে যান। সুবহানাল্লাহ!
এই সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ كُنْتُ عِنْدَ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعَلـٰى فَخِذِهِ الاَيْسَرِ ابْنُهٗ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَعَلـٰى فَخِذِهِ الْاَيْـمَنِ حَضْرَتْ الْـحُسَيْنُ بْنُ عَلِىٍّ عَلَيْهِمَا السَّلَامُ تَارَةً يُقَبِّلُ هٰذَا وَتَارَةً يُقَبِّلُ هٰذَا. اِذَا هَبَطَ عَلَيْهِ حَضْرَتْ جِبْرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ بِوَحْىٍ مِّنْ رَّبِّ الْعَالَمِيْنَ فَلَمَّا سُرِّىَ عَنْهُ قَالَ اَتَانِـىْ حَضْرَتْ جِبْرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ مِنْ رَّبّـِـىْ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ رَبَّكَ يُقْرِئُكَ السَّلَامَ وَيَقُوْلُ لَكَ لَسْتُ اَجْمَعُهُمَا فَافْتَدِ اَحَدَهُمَا فَنَظَرَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِلـٰى حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَبَكٰى وَنَظَرَ اِلـٰى حَضْرَتْ اَلْـحُسَيْنِ فَبَكٰى ثُـمَّ قَالَ اِنَّ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ اُمُّهٗ اَمَةٌ اَىْ اَمَةُ اللهِ وَمَتٰى مَاتَ لَمْ يَحْزَنْ عَلَيْهِ غَيْرِىْ وَاُمُّ الْـحُسَيْنِ عَلَيْهِ السَّلَامُ حَضْرَتْ فَاطِمَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ وَاَبُوْهُ حَضْرَتْ عَلِىُّ ابْنُ عَـمِّـىْ وَلَحْمِىْ وَدَمِىْ. وَمَتٰى مَاتَ حَزِنَتْ عَلَيْهِ ابْنَتِىْ وَحَزِنَ ابْنُ عَـمِّـىْ وَحَزِنْتُ اَنَا عَلَيْهِ وَاَنَا اُوْثِرُ حُزْنِـىْ عَلـٰى حُزْنِـهِمَا يَا حَضْرَتْ جِبْرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ يُقْبَضُ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ. فَدَيْتُهٗ بِـحَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ فَقُبِضَ بَعْدَ ثَلَاثٍ فَكَانَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِذَا رَاٰى حَضْرَتْ الْـحُسَيْنَ عَلَيْهِ السَّلَامُ مُقْبِلًا قَبَّلَهٗ وَضَمَّهٗ اِلـٰى صَدْرِهٖ وَرَشَفَ ثَنَايَاهُ وَقَالَ فَدَيْتُ مَنْ فَدَيْتُهٗ بِابْنِىْ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ.
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একবার সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ উপস্থিত ছিলাম। তখন আমি দেখলাম যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বাম ঊরু মুবারক-এ অবস্থান মুবারক করছেন উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি এবং উনার সম্মানিত ডান ঊরু মুবারক-এ অবস্থান মুবারক করছেন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (বেমেছাল খুশি মুবারক প্রকাশ করে) একবার উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত বুছা মুবারক দিচ্ছেন আরেকবার ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত বুছা মুবারক দিচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ! এমতাবস্থায় হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি রব্বুল আলামীন মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সম্মানিত ওহী মুবারক নিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ উপস্থিত হলেন। এতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো খুশি মুবারক প্রকাশ করলেন। তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আমার রব মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি এসেছেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি আমাকে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! নিশ্চয়ই আপনার যিনি রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে সম্মানিত সালাম মুবারক জানিয়েছেন এবং বলেছেন যে, আমি ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনাকে এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে একই সাথে আপনার সম্মানিত ছোহবত মুবারক রাখবো না। (অর্থাৎ আমি উনাদের দু’জনের একজনকে আমার সম্মানিত ছোহবত মুবারক-এ নিয়ে আসবো। অপরজন আপনার সম্মানিত সোহবত মুবারক-এ থাকবেন। সুবহানাল্লাহ!) অতএব, আপনি উনাদের দু’জনের একজনকে উৎসর্গ করুন। অর্থৎ আমার সম্মানিত ছোহবত মুবারক-এ পাঠিয়ে দিন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার দিকে তাকালেন এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রবাহিত করলেন। সুবহানাল্লাহ! আবার সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার দিকে তাকালেন এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রবাহিত করলেন। তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, নিশ্চয়ই আমার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার আখাচ্ছুল খাছ হাবীবাহ, মাহবূবাহ এবং পরিপূর্ণরূপে উনার পথে পথ মতে মত। সুবহানাল্লাহ! আমার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করলে (উনার সম্মানিত জুদায়ী মুবারক উনার কারণে) শুধু আমি চিন্তিত হবো, কষ্ট পাবো। অর্থাৎ আমি এবং উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম আমরা কষ্ট পাবো। আর সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান হচ্ছেন আমার মহাসম্মানিতা বানাত, আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি। যিনি আমার আপন চাচাতো ভাই, আমার খাছ নৈকট্য মুবারক প্রাপ্ত, নিসবত মুবারক প্রাপ্ত এবং প্রিয় ব্যক্তিত্ব মুবারক। সুবহানাল্লাহ! ফলে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম তিনি যদি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তাহলে (উনার সম্মানিত জুদায়ী মুবারক উনার কারণে) আমার মহাসম্মানিতা বানাত, আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি চিন্তিত হবেন, কষ্ট পাবেন, সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনিও চিন্তিত হবেন, কষ্ট পাবেন এবং ফলে আমিও চিন্তিত হবো, কষ্ট পাবো। আমি আমার কষ্ট উনার উপর আমার মহাসম্মানিতা বানাত, আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের কষ্টকে প্রাধান্য দিলাম। তাই হে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম! আমার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনিই মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ছোহবত মুবারক-এ যাবেন। সুবহানাল্লাহ! আমি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার পরিবর্তে আমার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনাকে কুরবানী মুবারক করলাম, উৎসর্গ মুবারক করলাম। সুবহানাল্লাহ! এই ঘটনার তিন দিন পর ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করে মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ছোহবত মুবারক-এ চলে যান। সুবহানাল্লাহ!
এরপর থেকে যখনই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনাকে উনার সামনে দেখতেন উনাকে সম্মানিত বুছা মুবারক দিতেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ইলম মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বুক মুবারক-এ) জড়িয়ে নিতেন এবং উনার সামনের সম্মানিত দাঁত মুবারক চুষতেন। সুবহানাল্লাহ! আর ইরশাদ মুবারক করতেন, তিনি সেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক যে, উনার পরিবর্তে আমি আমার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনাকে উৎসর্গ মুবারক করেছি, কুরবান করেছি।” সুবহানাল্লাহ! (তারীখে বাগদাদ ২/৬০২, তারীখে দিমাশক্ব ৫২/৩২৪, শাওয়াহিদুন নুবুওওয়াহ ইত্যাদি)
এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনার বিষয়টি স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। সুবহানাল্লাহ! স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাকে উনার সম্মানিত ছোহবত মুবারক নিয়ে যাওয়ার জন্য হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট সম্মানিত ওহী মুবারক প্রেরণ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
কিন্তু শিয়ারা এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার শান-মান মুবারক খিলাফ বলতে চায়। না‘ঊযুবিল্লাহ! তারা বলতে চায় যে, ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার তুলনায় সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার শান-মান, ফযীলত বেশি। না‘ঊযুবিল্লাহ!
মূলত, এখানে যেই বিষয়টি ঘটেছে, তা হচ্ছে- যদি ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ না করতেন, তাহলে তিনি অবশ্যই অবশ্যই ‘ছিদ্দীক্বান রসূলান’ তথা ছিদ্দীক্ব শ্রেণীর রসূল হিসেবে প্রকাশ পেতেন তথা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হুবহু পরিপূর্ণ ক্বায়িম মাক্বাম নবী ও রসূল হিসেবে দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ! আর যেহতেু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর আর কোনো নবী বা রসূল হবেন না, কেউ নবী বা রসূল হিসেবে প্রকাশ হবেন না। তাই ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি দুনিয়াবী দৃষ্টিতে অল্প বয়স মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
আর এটা বুখারী শরীফ, ইবনে মাজাহ শরীফ, বাইহাক্বী শরীফসহ আরো অন্যান্য বিশুদ্ধ হাদীছ শরীফ উনাদের কিতাব মুবারক-এ বর্ণিত রয়েছে। সুবহানাল্লহ!
আর এই কারণে মহান আল্লাহ পাক উনার ইচ্ছা মুবারক ছিলো, ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনাকে উনার সম্মানিত ছোহবত মুবারক নিয়ে যাবেন। তাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ইচ্ছা মুবারক উনাকে প্রাধান্য দিয়ে উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনাকে মদহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ছোহবত মুবারক-এ যাওয়ার বিষয়টি প্রাধান্য দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! কেননা তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ওহী মুবারক ছাড়া কিছু বলেন না, করেন না। সুবহানাল্লাহ!
অন্যদিকে মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বয়ং নিজে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে উনাদের দু’জন থেকে একজনকে উৎসর্গ মুবারক করার জন্য বলেছেন। আর যখন উৎসর্গ বা কুরবানী মুবারক করার বিষয়টি এসেছে, তখন সর্বোত্তম, সবচেয়ে প্রিয়, সবচেয়ে মুহব্বত মুবারক উনার পাত্র উনাকেই উৎসর্গ বা কুরবানী মুবারক করতে হবে। তাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনাকেই সম্মানিত কুরবানী মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! যেমন সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক উনার জন্য উনার সবচেয়ে প্রিয় ব্যক্তিত্ব মুবারক সাইয়্যিদুনা হযরত ইসমাইল যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত উৎসর্গ বা কুরবানী মুবারক করেছেন এবং সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম তিনি উনার সবচেয়ে প্রিয় ব্যক্তিত্ব মুবারক আবূ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক উনার জন্য উৎসর্গ বা কুরবানী মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনাকে দেখে বলতেন আমি আপনার পরিবর্তে আমার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনাকে কুরবানী মুবারক করেছি, উৎসর্গ মুবারক করেছি। মূলত, এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মাধ্যমে তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারক উনার বিষয়টিই প্রকাশ করতেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশে মহান আল্লাহ পাক তিনি, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা, মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা এবং হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা সকলেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘ফালইয়াফরাহূ শরীফ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করেন
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
يٰاَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَتْكُمْ مَّوْعِظَةٌ مّـِنْ رَّبّـِكـُمْ وَشِفَاءٌ لِّـمَا فِى الصُّدُوْرِ وَهُدًى وَّرَحْمَةٌ لّـِلْمُؤْمِنِيْنَ. قُلْ بِفَضْلِ اللهِ وَبِرَحْمَتِهٖ فَبِذٰلِكَ فَلْيَفْرَحُوْا هُوَ خَيْرٌ مِّـمَّا يَـجْمَعُوْنَ.
অর্থ: “হে মানুষেরা! হে সমস্ত জিন-ইনসান, কায়িনাতবাসী! অবশ্যই তোমাদের মাঝে মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ নছীহতকারী, তোমাদের অন্তরের সর্বপ্রকার ব্যাধিসমূহের সর্বশ্রেষ্ঠ আরোগ্যদানকারী, সর্বশ্রেষ্ঠ হিদায়াত দানকারী এবং খাছ করে ঈমানদারদের জন্য, আমভাবে সমস্ত কায়িনাতবাসীর জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ রহমতস্বরূপ আমার যিনি মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাশরীফ মুবারক এনেছেন। সুবহানাল্লাহ! আমার মাহবূব হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সবাইকে জানিয়ে দিন, মহান আল্লাহ পাক তিনি যে, সম্মানিত ফযল মুবারক এবং সম্মানিত রহমত মুবারক হিসেবে উনার মহাসম্মানিত রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাঠিয়েছেন, সেজন্য তারা যেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘ফালইয়াফরাহূ শরীফ’ তথা সম্মানিত খুশি মুবারক প্রকাশ করে, মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে। এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘ফালইয়াফরাহূ শরীফ’ তথা সম্মানিত খুশি প্রকাশ করাটা, মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করাটা সবকিছু থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বোত্তম; যা তারা দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য সঞ্চয় করে।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ইউনূস শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৭-৫৮)
এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার পরিপূর্ণ মিছদাক্ব হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
তাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উপলক্ষে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা যেমন ফরয, তেমনিভাবে উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উপলক্ষে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করাও ফরয তো অবশ্যই; বরং ফরয উনার উপর ফরয। সুবহানাল্লাহ! কেননা উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশে স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা এবং হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা সকলেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘ফালইয়াফরাহূ শরীফ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
এই সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ الله تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ لَمَّا وُلِدَ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ ابْنُ النَّبِـىِّ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَتَاهُ حَضْرَتْ جِبْرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَقَالَ السَّلَامُ عَلَيْكَ يَا اَبَا اِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ.
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ উপস্থিত হয়ে বলেন, ‘আস সালামু আলাইকা ইয়া আবা ইবরাহীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ তথা হে হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আপনাকে সালাম।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে মুন্দা, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ শরীফ ১১/২১)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
وَلَـمَّا وُلِدَ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ بَشَّرَ النَّبِىَّ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِهٖ حَضْرَتْ اَبُوْ رَافِعٍ رَضِىَ الله تَعَالـٰى عَنْهُ مَوْلَاهُ فَوَهَبَ لَهٗ عَبْدًا.
অর্থ: “যখন সাইয়্যদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে উনার আযাদকৃত সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ রাফি’ রদ্বিয়াল্লাহ তা‘য়ালা আনহু তিনি এই সুসংবাদ মুবারক দেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এই সুসংবাদ মুবারক শুনে (অত্যন্ত খুশি প্রকাশ করে) অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘ফালইয়াফরাহূ শরীফ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে হযরত আবূ রাফি’ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে একজন গোলাম হাদিয়া করেন।” সুবহানাল্লাহ! (আক্বীদাতু আহলিস সুন্নাতি ১/৩৪৯, ইবনে সা’দ ১/১৩৫, যাদুল মা‘য়াদ ১/১০০, উসদুল গবাহ ১/২৩, মুন্তাখব ১/৫৯, ইস্তিয়াব ১/১৮, যাখাইরুল ‘উক্ববাহ ১/১৫৩ ইত্যাদি)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ حَضْرَتْ عَائِشَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ قَالَتْ لَمَّا وُلِدَ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ جَاءَ بِهٖ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِلَىَّ فَقَالَ انْظُرِىْ اِلـٰى شَبَهِهٖ بِىْ
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে আমার নিকট নিয়ে আসেন। অতঃপর তিনি (অত্যন্ত খুশি প্রকাশ করে) অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘ফালইয়াফরাহূ শরীফ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে আমাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন, আপনি আমার সাথে আমার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার বেমেছাল সাদৃশ্যতা মুবারক অবলোকন করুন!” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে সা’দ ১/১০৯)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ الله تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ خَرَجَ عَلَيْنَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِيْنَ اَصْبَحَ فَقَالَ اِنَّهٗ وُلِدَ لِىْ فِـى اللَّيْلَةِ وَلَدٌ وَّاِنّـِىْ سَـمَّيْتُهٗ بِاسْمِ اَبِـىْ اِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ.
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন, এক সম্মানিত বরকতময় সকালে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দয়া করে আমাদের মাঝে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখলেন। অতঃপর তিনি (অত্যন্ত খুশি প্রকাশ করে) অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘ফালইয়াফরাহূ শরীফ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে ইরশাদ মুবারক করলেন, নিশ্চয়ই আজ এই মহাসম্মানিত রাতে আমার একজন মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন এবং আমি উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইস্ম বা নাম মুবারক রেখেছি আমার সম্মানিত পিতা তথা পূর্বপুরুষ সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নাম মুবারক-এ। অর্থাৎ আমি আমার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইস্ম বা নাম মুবারক রেখেছি ‘হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম।’ সুবহানাল্লাহ!” (মুসলিম, মুসনাদে আহমদ, ইবনে সা’দ সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ শরীফ ১১/২১ ইত্যাদি)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার পূর্বেই মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মহাসম্মানিত সুসংবাদ মুবারক হাদিয়া করেন
ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি যখন উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত অবস্থান মুবারক করছিলেন, তখনই মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ হওয়া সম্পর্কে মহাসম্মানিত সুসংবাদ মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছেন এবং উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইস্ম বা নাম মুবারক ‘হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম’ রাখার জন্য বলেছেন। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, মহান আল্লাহ পাক তিনি তখনই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘আবূ ইবরাহীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ এই সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
এই সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلَا اُخْبِرُكَ يَا حَضْرَتْ عُمَرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ اَنَّ حَضْرَتْ جِبْرِيْلَ عَلَيْهِ السَّلَامُ اَتَانِـىْ فَاَخْبَرَنِـىْ اَنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ قَدْ بَرَّاَ حَضْرَتْ مَارِيَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ وَقَرِيـبَهَا مِـمَّا وَقَعَ فِـىْ نَفْسِىْ وَبَشَّرَنِـىْ اَنَّ فِـىْ بَطْنِهَا غُلَامًا مِّـنِّــىْ وَاَنَّهٗ اَشْبَهُ الْـخَلْقِ بِىْ وَاَمَرَنِـىْ اَنْ اُسَـمِّـىَ ابْنِىْ اِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَكَنَّانِـىْ بِاَبِـىْ اِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَلَوْلَا اَنِّـىْ اَكْرَهُ اَنْ اُحَوِّلَ كُنْيَــتِـىَ الَّتِـىْ عُرِفْتُ بـِهـَا لَاكْتَنَيْتُ بِاَبِـىْحَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ كَمَا كَنَّانِـىْ حَضْرَتْ جِبْرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ.
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ‘আমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হে হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম! আমি কি আপনাকে এই মহাসম্মানিত সুসংবাদ মুবারক দিবো না যে, নিশ্চয়ই আমার নিকট হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত ওহী মুবারক নিয়ে তাশরীফ মুবারক নিয়েছেন। অতঃপর তিনি আমার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ এই মুবারক সুসংবাদ পেশ করেছেন যে, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে আমার সম্মানিত আখাচ্ছুল খাছ নৈকট্য মুবারক হাদিয়া করেছেন এবং আমাকে এই মহাসম্মানিত সুসংবাদ মুবারক হাদিয়া করেছেন যে, নিশ্চয়ই উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ আমার একজন মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম তিনি অত্যন্ত সম্মানিত অবস্থায় সম্মানিত অবস্থান মুবারক করছেন। (যিনি অতিশীঘ্রই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করবেন।) সুবহানাল্লাহ! আমার এই মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম তিনি সৃষ্টি জগতের মাঝে, সমস্ত মানুষের মাঝে আমার সাথে অধিকতর সদৃশ হবেন, সামঞ্জস্যপূর্ণ হবেন, হুবহু আমার অনুরূপ হবেন তথা আমার হুবহু নকশা মুবারক হবেন। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে সম্মানিত ওহী মুবারক করেছেন যে, আমি যেন আমার উক্ত মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইস্ম বা নাম মুবারক রাখি ‘হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম’। সুবহানাল্লাহ! তিনি আমার সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক দিয়েছেন ‘আবূ ইবরাহীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’। সুবহানাল্লাহ! আর আমি যেই সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক-এ সম্মানিত পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেছি, যদি তা পরিবর্তন করতে পছন্দ করতাম, তাহলে আমি অবশ্যই ‘আবূ ইবরাহীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক গ্রহণ করতাম। যেই সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে আমাকে সম্মানিত হাদিয়া মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে আসাকির, জামিউল আহাদীছ শরীফ ৩/৯১ এবং ২০/৪১০, কানযুল উম্মাল শরীফ ১১/৪৭১, ই’তিলালুল ক্বুলূব ২/৩৫৬, আল মু’জামুল কাবীর লিত ত্ববারনী ১৪/১১০, মাজমাউয যাওয়ায়িদ ৯/৮৬ ইত্যাদি)
সুতরাং এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কত বেমেছাল। সুবহানাল্লাহ! যেটা জিন-ইনসানসহ তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার বাইরে। সুবহানাল্লাহ!
ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আশবাহুল খলক্বি বিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদুল বাশার, সাইয়্যিদুল আসইয়াদ, আল মুবাশ্শির, আল আবাররু, আল আজওয়াদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত সাওয়ানেহ ‘উমরী মুবারক
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পিতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম:
ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আশবাহুল খলক্বি বিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদুল বাশার, সাইয়্যিদুল আসইয়াদ, আল মুবাশ্শির, আল আবাররু, আল আজওয়াদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত পিতা হচ্ছেন ছাহিবু লাওলাক, ছাহিবু ক্বাবা ক্বাওসাইনি আও আদনা, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাতা আলাইহাস সালাম:
ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আশবাহুল খলক্বি বিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদুল বাশার, সাইয়্যিদুল আসইয়াদ, আল মুবাশ্শির, আল আবাররু, আল আজওয়াদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত আম্মাজান হচ্ছেন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! ১৩ জন হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেয়ার ধারাবাহিকক্রম মুবারক অনুযায়ী সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল ‘আলামীন, আফযালুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন ‘আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার তথা ১২তম’। এজন্য উনাকে ‘উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম’ বলা হয়। তিনি সকলের মাঝে ‘উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম’ হিসেবেই সম্মানিত পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! তবে উনার মূল মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইস্ম বা নাম মুবারক হচ্ছেন- ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত মারিয়াহ্ আলাইহাস সালাম।’ সুবহানাল্লাহ! ১৩ জন হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে ৬ জন ছিলেন সম্মানিত কুরাঈশ বংশীয়। ১ জন ছিলেন বনূ আসাদ বংশীয়। ২ জন ছিলেন বনূ হিলাল বংশীয়। ২ জন ছিলেন বনূ নাযীর বংশীয়। বনূ নাযীর গোত্র ছিলেন ইহুদী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। ১ জন ছিলেন বনূ মুছ্ত্বলিক্ব বংশীয় এবং ১ জন ছিলেন মিশরের বনূ ক্বিব্ত্ব বংশীয়। বনূ মুছত্বলিক্ব এবং বনূ ক্বিব্ত্ব গোত্র ছিলেন ঈসায়ী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন মিশরের বনূ ক্বিবত বংশীয়। সুতরাং তিনি ছিলেন ঈসায়ী সম্প্রদায় থেকে। তিনি হচ্ছেন-
اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ سيدتنا حضرت مارية عليها السلام بنت شمعون بن إبراهيم عليهما السلام
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার সাইয়্যিদাতুনা হযরত মারিয়াহ্ আলাইহাস সালাম বিনতে শাম‘ঊন ইবনে ইবরাহীম আলাইহিমাস সালাম।” সুবহানাল্লাহ! (নসবু কুরাইশ ১/২১)
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত পিতা হচ্ছেন, সাইয়্যিদুনা হযরত শাম‘ঊন ইবনে ইবরাহীম আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের ২ বছর পূর্বে ১৩ই সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (রবী‘উল আউয়াল শরীফ) ইয়াওমুল জুমু‘য়াহ্ শরীফ মিশরে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত ও পবিত্র কুনিয়াত মুবারক হচ্ছেন, ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু ইবরাহীম আলাইহাস সালাম’। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিত আওলাদ ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ইসম মুবারক অনুযায়ী তিনি এই সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, আত্ব ত্বাহিরাহ, আত্ব ত্বইয়্যিবাহ্, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, মালিকাতুল জান্নাহ, মালিকাতুল কায়িনাত এছাড়াও আরো অসংখ্য-অগণিত। সুবহানাল্লাহ! এক কথায় তিনি শুধু যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত শৈশবকাল মুবারক উনার মহাসম্মানিত পিতা-মাতা আলাইহিমাস সালাম ও পরিবারের সাথে মিশরে অতিবাহিত করেন। সুবহানাল্লাহ!
ইমাম ওয়াক্বেদীর মতে, ৬ষ্ঠ হিজরী শরীফ উনার যিলহজ্জ শরীফ মাসে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মিসর ও আলেকজান্দ্রিয়ার খ্রিষ্টান স¤্রাট জুরায়েজ ইবনে মীনা’ ওরফে মুক্বাউক্বিসের নিকট সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দাওয়াত দিয়ে একখানা পত্র মুবারক লিখেন। উক্ত পত্র মুবারক উনার বাহক ছিলেন হযরত হাত্বিব ইবনে আবূ বালতা‘আহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত পত্র মুবারকখানা হচ্ছেন-
: بِسْمِ اللّهِ الرّحْمَنِ الرّحِيمِ مِنْ مُحَمّدٍ عَبْدِ اللّهِ وَرَسُولِهِ إلَى الْمُقَوْقِسِ عَظِيمِ الْقِبْطِ سَلَامٌ عَلَى مَنْ اتّبَعَ الْهُدَى أَمّا بَعْدُ فَإِنّي أَدْعُوكَ بِدِعَايَةِ الْإِسْلَامِ أَسْلِمْ تَسْلَمْ وَأَسْلِمْ يُؤْتِكَ اللّهُ أَجْرَكَ مَرّتَيْنِ فَإِنْ تَوَلّيْت فَإِنّ عَلَيْكَ إثْمَ الْقِبْطِ {يَا أَهْلَ الْكِتَابِ تَعَالَوْا إِلَى كَلِمَةٍ سَوَاءٍ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ أَلّا نَعْبُدَ إِلّا اللّهَ وَلَا نُشْرِكَ بِهِ شَيْئًا وَلَا يَتّخِذَ بَعْضُنَا بَعْضًا أَرْبَابًا مِنْ دُونِ اللّهِ فَإِنْ تَوَلّوْا فَقُولُوا اشْهَدُوا بِأَنّا مُسْلِمُونَ} [ آلِ عِمْرَانَ ৬৪ ]
“বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম। মহান আল্লাহ পাক উনার মাহবূব হাবীব এবং মহাসম্মানিত রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ থেকে ক্বিবতীদের বাদশাহ্ মুক্বাউক্বিস উনার প্রতি। সালাম উনার প্রতি যিনি সম্মানিত হিদায়াত মুবারক উনার অনুসরণ করেন। অতঃপর, আমি আপনাকে সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দাওয়াত দিচ্ছি। ইসলাম গ্রহণ করুন। নিরাপদ থাকুন। ইসলাম গ্রহণ করুন। মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে দ্বিগুণ পুরস্কার দান করবেন। কিন্তু যদি মুখ ফিরিয়ে নেন, তাহলে সমস্ত ক্বিবত্বীদের (ইসলাম গ্রহণ না করার) পাপ আপনার উপর বর্তাবে। (মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আল ইমরান শরীফ উনার ৬৪নং সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,) হে আহলে কিতাবগণ! তোমরা একই বিষয়ের দিকে আসো, যা আমাদের এবং তোমাদের মধ্যে সমান। আর তাহচ্ছে, আমরা আল্লাহ পাক ব্যতীত কারো ইবাদত করবো না, উনার সাথে কোন কিছু শরীক করবো না এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত আমরা একে অপরকে রব হিসাবে গ্রহণ করবো না। এরপরও যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাহলে আপনারা বলে দিন যে, তোমরা সাক্ষী থাক, নিশ্চয়ই আমরা মুসলমান।” সুবহানাল্লাহ! (‘উয়ূনুল আছার ২/২৩২, আস সীরাতুল হালাবিয়্যাহ শরীফ ৩/২৯৫, মাওয়াহিবুল লাদুননিয়্যাহ্ ১/৫৪৪ ইত্যাদী)
মুক্বাউক্বিস পত্র মুবারকখানা পেয়ে অত্যন্ত তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণ করেন এবং জবাবে নিম্নোক্ত পত্রখানা লিখেন-
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ، لِمُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ مِنَ الْمُقَوْقِسِ عَظِيمِ الْقِبْطِ، سَلامٌ، أَمَّا بَعْدُ فَقَدْ قَرَأْتُ كِتَابَكَ، وَفَهِمْتُ مَا ذَكَرْتَ فِيهِ، وَمَا تَدْعُو إِلَيْهِ، وَقَدْ عَلِمْتُ أَنَّ نَبِيًّا بَقِيَ، وَكُنْتُ أَظُنُّ أَنَّهُ يَخْرُجُ بِالشَّامِ، وَقَدْ أَكْرَمْتُ رَسُولَكَ، وَبَعَثْتُ إِلَيْكَ بِجَارِيَتَيْنِ لَهُمَا مَكَانٌ فِي الْقِبْطِ عَظِيم، وَبِكِسْوَةٍ، وَأَهْدَيْتُ لَكَ بَغْلَةً لِتَرْكَبَهَا، وَالسَّلامُ عَلَيْكَ.
“বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত-এ ক্বিবত্বী বাদশাহ্ মুক্বাউক্বিস উনার পক্ষ থেকে- আপনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত সালাম মুবারক। অতঃপর আমি আপনার পত্র মুবারক পাঠ করেছি এবং সেখানে আপনি যা বর্ণনা করেছেন ও যেদিকে আহ্বান করেছেন, তা অনুধাবন করেছি। আমি জানি যে, একজন মহাসম্মানিত নবী-রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আসতে বাকী রয়েছেন। আমি ধারণা করতাম যে, তিনি শাম (সিরিয়া) থেকে আবির্ভূত হবেন। আমি আপনার দূতকে সম্মান করেছি। আমি আপনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য অত্যন্ত সম্মানিত দু’জন মেয়ে হাদিয়া হিসেবে পাঠালাম। ক্বিবতীদের মধ্যে উনাদের অবস্থান মুবারক হচ্ছেন- রাজকীয় বা শাহী অবস্থান। অর্থাৎ উনারা হচ্ছেন রাজ বংশীয় বা রাজ পরিবারের সদস্য। সুবহানাল্লাহ! আপনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ হাদিয়া স্বরূপ পোষাক এবং বাহন হিসেবে একটি খচ্চর পাঠালাম। আপনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত সালাম মুবারক। সুবহানাল্লাহ! (মাওয়াহিবুল লাদুননিয়্যাহ্ ১/৫৪৫, ‘উয়ূনুল আছার ১/৮৩, শারহু যারক্বানী)
পত্রে উল্লেখিত এই দু’জন সম্মানিতা মেয়ে হচ্ছেন- উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি এবং উনার সম্মানিত বোন সাইয়্যিদাতুনা হযরত সীরীন রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে উম্মুল মু’মিনীন হিসেবে গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত সীরীন রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা উনাকে (নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাছ কবি) হযরত হাসসান বিন ছাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার নিকট সম্মানিত শাদী মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ!
আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যেই খচ্চরটি সম্মানিত হাদিয়া মুবারক করা হয়েছিলো, সেটি ছিলো সাদা। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উক্ত খচ্চর মুবারক উনার নাম মুবারক রাখেন, ‘দুলদুল’। সুবহানাল্লাহ! সেই খচ্চর মুবারক হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার যামানা পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! এছাড়াও হাদিয়া মুবারক হিসেবে ছিলো- মা’বূর নামক একজন দাস, ‘আফরা নামক একটি গাধা, ১০০০ মিছকাল স্বর্ণ, মিশরীয় সূতায় তৈরী ২০ টি মসৃন কাপড়, সুরমাদানী, জুব্বা, আয়না, চিরুনি, পানি পান করার পাত্র, মধু, মেশক ও এক জোড়া মোজা। সুবহানাল্লাহ!
মুক্বাউক্বিস সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন এবং উপরোক্ত হাদিয়া মুবারকগুলো নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক পেশ করেন। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হাদিয়া মুবারকগুলো অত্যন্ত মুহ্ববতের সাথে গ্রহণ করেন। কিতাবে বর্ণিত রয়েছে যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বাদশাহ্র পক্ষ থেকে হাদিয়াকৃত পানপাত্রে পানি মুবারক পান করতেন এবং খচ্চর মুবারক-এ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরোহণ করতেন এবং অত্যন্ত মুহব্বত করে খচ্চর মুবারক উনার নাম মুবারক রাখেন ‘দুলদুল’। সুবহানাল্লাহ!
পূর্ববর্তীদের কেউ কেউ মুক্বাউক্বিস উনাকে ছাহাবী হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
উল্লেখ যে, মুক্বাউক্বিস তিনি উনার চিঠিতে স্পষ্ট ভাষায় লিখেছেন,
وَبَعَثْتُ إِلَيْكَ بِجَارِيَتَيْنِ لَهُمَا مَكَانٌ فِي الْقِبْطِ عَظِيم،
অর্থ: “আমি আপনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য অত্যন্ত সম্মানিত দু’জন মেয়ে পাঠালাম। ক্বিবতীদের মধ্যে উনাদের অবস্থান মুবারক হচ্ছেন- রাজকীয় বা শাহী অবস্থান। অর্থাৎ উনারা হচ্ছেন রাজ বংশীয় বা রাজ পরিবারের সদস্য।” সুবহানাল্লাহ!
এখানে প্রথমে বলা হয়েছে, অত্যন্ত সম্মানিত দু’জন মেয়ে। আরবী جَارِيَةٌ শব্দ মুবারক উনার একখানা অর্থ হচ্ছে- মেয়ে। কিন্তু যাদের অন্তরে কুফরী ও নিফাক্বী রয়েছে, তারা جَارِيَةٌ শব্দ মুবারক উনার অর্থ দাসী নিয়ে থাকে এবং অনেক এলোমেলো বলে থাকে। না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! যারা এলোমেলো বলে বা বলবে, তারা কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী হবে।
তারপর মুক্বউক্বিস তিনি বলেছেন,
لَهُمَا مَكَانٌ فِي الْقِبْطِ عَظِيم،
অর্থ: “ক্বিবতীদের মধ্যে উনাদের অবস্থান মুবারক হচ্ছেন- রাজকীয় বা শাহী অবস্থান। অর্থাৎ উনারা হচ্ছেন রাজ বংশীয় বা রাজ পরিবারের সদস্য।” সুবহানাল্লাহ!
কেননা, মুক্বাউক্বিস তিনি উনার পত্রের শুরুতে বলেছেন,
مِنَ الْمُقَوْقِسِ عَظِيمِ الْقِبْطِ،
অর্থ: “ক্বিবত্বীদের বাদশাহ্ মুক্বাউক্বিস উনার পক্ষ থেকে।”
এখানে সে عَظِيمِ শব্দ দ্বারা বাদশাহ বা রাজা বুঝিয়েছেন। عَظِيمِ الْقِبْطِ অর্থ- ক্বিবতীদের বাদশাহ বা রাজা।
আবার তিনি একই শব্দ অর্থাৎ عَظِيمِ শব্দ উনাদের শান মুবারকেও ব্যবহার করেছে। তিনি বলেছেন,
لَهُمَا مَكَانٌ فِي الْقِبْطِ عَظِيم،
অর্থ: “ক্বিবতীদের মধ্যে উনাদের অবস্থান মুবারক হচ্ছেন- রাজকীয় বা শাহী অবস্থান। অর্থাৎ উনারা হচ্ছেন রাজ বংশীয় বা রাজ পরিবারের সদস্য।” সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং মুক্বাউক্বিস উনার পত্র থেকেই অত্যন্ত স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি কখনও দাসী ছিলেন না। তিনি ছিলেন রাজ বংশীয় বা রাজ পরিবারে সদস্য। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
এখান থেকে আরো একটি বিষয় স্পষ্ট হচ্ছে যে, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি যেহেতু রাজ পরিবারের সদস্য। সে হিসেবে উনার সম্মানিত দাদা সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি এবং মিশরের বাদশাহ্ মুক্বাউক্বিস উনার বাবা মীনা’ তিনি অর্থাৎ উনারা উভয়ে আপন ভাই ছিলেন। অপর বর্ণনা মতে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন মিশরের বাদশাহ্ মুক্বাউক্বিস উনার আপন ভাতিজী। সুবহানাল্লাহ!
৭ম হিজরী শরীফ উনার ২৪শে ছফর শরীফ লাইলাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (লাইলাতু ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ) সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হয়। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ২০ বছর ১১ মাস ১১ দিন। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই, যারা উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে দাসী বলবে, না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক নিয়ে চূ-চেরা, ক্বীল-ক্বাল করবে, না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! সম্মানিত শরীয়ত মুবারক উনার ফতওয়া মুবারক অনুযায়ী তারা সবচেয়ে বড় কাট্টা কাফির, চিরজাহান্নামী, চিরমাল‘ঊন, চিরমাল‘ঊন, চিরমাল‘ঊন। তারা যদি মুসলমান বা ঈমানদার দাবি করে, তাহলে তাদের উপর মুরতাদের হুকুম বর্তাবে এবং মুরতাদের শাস্তিও বর্তাবে এবং তাদের প্রাপ্য হলো চির লা’নত ও চির জাহান্নাম। আর যদি কাফির হয়, তাহলে তারা তাদের কুফরীকে আরো বৃদ্ধি করলো। তাদের শাস্তিও মৃত্যুদ-। তাদেরও প্রাপ্য হলো চির লা’নত ও চির জাহান্নাম। তারা ইবলীসের ন্যায়; বরং ইবলীসের চেয়েও চরম মাল‘ঊন। তাদের প্রত্যেককেই লা’নাতুল্লাহি আলাইহি বলা ফরয, ফরয এবং ফরয। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে আমার সম্মানিত আখাচ্ছুল খাছ নৈকট্য মুবারক ও বিশেষ নি‘য়ামত মুবারক হাদিয়া প্রদানে সুসংবাদ মুবারক:
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلَا اُخْبِرُكَ يَا حَضْرَتْ عُمَرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ اَنَّ حَضْرَتْ جِبْرِيْلَ عَلَيْهِ السَّلَامُ اَتَانِـىْ فَاَخْبَرَنِـىْ اَنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ قَدْ بَرَّاَ حَضْرَتْ مَارِيَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ وَقَرِيـبَهَا مِـمَّا وَقَعَ فِـىْ نَفْسِىْ وَبَشَّرَنِـىْ اَنَّ فِـىْ بَطْنِهَا غُلَامًا مِّـنِّــىْ وَاَنَّهٗ اَشْبَهُ الْـخَلْقِ بِىْ وَاَمَرَنِـىْ اَنْ اُسَـمِّـىَ ابْنِىْ اِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَكَنَّانِـىْ بِاَبِـىْ اِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَلَوْلَا اَنِّـىْ اَكْرَهُ اَنْ اُحَوِّلَ كُنْيَــتِـىَ الَّتِـىْ عُرِفْتُ بـِهـَا لَاكْتَنَيْتُ بِاَبِـىْ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ كَمَا كَنَّانِـىْ حَضْرَتْ جِبْرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ.
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ‘আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হে হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম! আমি কি আপনাকে এই মহাসম্মানিত সুসংবাদ মুবারক দিবো না যে, নিশ্চয়ই আমার নিকট হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত ওহী মুবারক নিয়ে তাশরীফ মুবারক নিয়েছেন। অতঃপর তিনি আমার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ এই মুবারক সুসংবাদ পেশ করেছেন যে, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে আমার সম্মানিত আখাচ্ছুল খাছ নৈকট্য মুবারক ও বিশেষ নি‘য়ামত মুবারক হাদিয়া করেছেন এবং আমাকে এই মহাসম্মানিত সুসংবাদ মুবারক হাদিয়া করেছেন যে, নিশ্চয়ই উনার মহাসম্মানিত রেহেম শরীফ-এ আমার একজন মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত অবস্থায় অবস্থান মুবারক করছেন। (যিনি অতিশীঘ্রই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করবেন।) সুবহানাল্লাহ! আমার এই মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম তিনি সৃষ্টি জগতের মাঝে, সমস্ত মানুষের মাঝে আমার সাথে অধিকতর সদৃশ হবেন, সামঞ্জস্যপূর্ণ হবেন, হুবহু আমার অনুরূপ হবেন তথা আমার হুবহু নকশা মুবারক হবেন। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে এই সম্মানিত নির্দেশ মুবারক প্রদান করেছেন যে, আমি যেন আমার উক্ত মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নাম মুবারক রাখি ‘হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম’। সুবহানাল্লাহ! তিনি আমার সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক দিয়েছেন ‘আবূ ইবরাহীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’। সুবহানাল্লাহ! আর আমি যেই সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক-এ পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেছি, যদি তা পরিবর্তন করতে পছন্দ করতাম, তাহলে আমি অবশ্যই ‘আবূ ইবরাহীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক গ্রহণ করতাম। যেই সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে আমাকে সম্মানিত হাদিয়া মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে আসাকির, জামিউল আহাদীছ শরীফ ৩/৯১ এবং ২০/৪১০, কানযুল উম্মাল শরীফ ১১/৪৭১, ই’তিলালুল ক্বুলূব ২/৩৫৬, আল মু’জামুল কাবীর লিত ত্ববারনী ১৪/১১০, মাজমাউয যাওয়ায়িদ ৯/৮৬ ইত্যাদি)
ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ:
ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি ৮ম হিজরী শরীফ-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করে সমস্ত জিন-ইনসান ও তামাম কায়িনাতবাসী সবাইকে অফুরন্ত রহমত-বরকত, ছাকীনাহ ও নি‘য়ামত মুবারক দানে ধন্য করেন। সুবহানাল্লাহ! এই বিষয়ে কারো কোন ইখতিলাফ নেই। কিন্তু তিনি কোন মাসে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন, এই বিষয়ে অনেকর অনেক ইখতিলাফ রয়েছে। আর তারিখ ও বারের বিষয়ে তো কিতাবে কোনো আলোচনাই নেই।
ছাহিবুল ইলমিল আউওয়ালি ওয়াল আখিরি, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বওইউল আউওয়াল, সুলত্বানুন নাছীর সম্মানিত রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সকলের সমস্ত ইখতিলাফকে মিটিয়ে দিয়ে ইরশাদ মুবারক করেন, “ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আশবাহুল খলক্বি বিরসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আল মুবাশ্শির সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি ৮ম হিজরী শরীফ উনার যিলহজ্জ শরীফ মাসে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের দায়িমী আখাচ্ছুল খাছ তাওয়াল্লুক-নিসবত মুবারক উনার মাধ্যমে এই বিষয়টিও সমস্ত জিন-ইনসান ও তামাম কায়িনাতবাসীর মাঝে প্রকাশ করে দিয়েছেন যে, সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি ৮ম হিজরী শরীফ উনার ২রা যিলহজ্জ শরীফ লাইলাতুল জুমু‘য়াহ শরীফ তথা জুমু‘য়াবার রাতে দুনিয়ার যমীনে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! দুনিয়াবী দৃষ্টিতে তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলো ৬১ বছর।” সুবহানাল্লাহ!
এটা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার একখানা অভূতপূর্ব বেমেছাল মহাসম্মানিত তাজদীদ মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
অনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত ও পবিত্র ইস্ম বা নাম মুবারক রাখা এবং সম্মানিত আক্বীক্বাহ মুবারক দেয়া:
এই সম্পর্কে কিতাব মুবারক উনাদের মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,
وَعَقَّ عَنْهُ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ سَابِعِهٖ بِكَبْشَيْنِ وَحَلَقَ رَأْسَهٗ حَضْرَتْ اَبُوْ هِنْدَ رَضِىَ الله تَعَالـٰى عَنْهُ وَسَـمَّاهُ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَئِذٍ وَّتَصَدَّقَ بِزِنَةِ شَعْرِهٖ وَرَقًا عَلَى الْـمَسَاكِيْنِ وَدُفِنُوْا شَعْرُهٗ فِى الْاَرْضِ.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের সপ্তম দিনে উনার পক্ষ থেকে দুইটি দুম্বা মুবারক সম্মানিত আক্বীক্বাহ মুবারক দেন। হযরত আবূ হিন্দ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি উনার সম্মানিত মাথা মুবারক মু-ন মুবারক করেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সেই দিন উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইস্ম বা নাম মুবারক রাখেন। আর উনার সম্মানিত চুল মুবারক পরিমাপ করে সেই ওজন অনুযায়ী রূপা মিসকীনদেরকে দান করে দেন এবং উনার সম্মানিত চুল মুবারক উনাদেরকে যমীনে দাফন মুবারক করা হয়।” সুবহানাল্লাহ! (মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়্যাহ ১/৪৮৫, শারহুয যারক্বানী আলাল মাওয়াহিব ৪/৩৪৫, মুন্তাখাব, শরহু মুসনাদে আবী হানীফা ইত্যাদি )
ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি যখন উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত অবস্থান মুবারক করছিলেন, তখনই মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময়ম বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ সম্পর্কে সুসংবাদ মুবারক হাদিয়া করেছেন, উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইস্ম বা নাম মুবারক ‘ইবরাহীম’ আলাইহিস সালাম রাখার জন্য বলেছেন এবং উনাকে ‘আবূ ইবরাহীম’ সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
তারপর উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের সাথে সাথে মহান আল্লাহ উনার নির্দেশে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ এসে ইরশাদ মুবারক করেছেন ‘হে সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।’ সুবহানাল্লাহ!
আর স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই ইরশাদ মুবারক করেছেন, নিশ্চয়ই আজ এই মহাসম্মানিত রাতে আমার একজন মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন এবং আমি উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইস্ম বা নাম মুবারক রেখেছি আমার সম্মানিত পিতা তথা পূর্বপুরুষ সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইস্ম বা নাম মুবারক-এ। অর্থাৎ আমি আমার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইস্ম বা নাম মুবারক রেখেছি ‘হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম’। সুবহানাল্লাহ!
তারপরেও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের সপ্তম দিনে উনার পক্ষ থেকে সম্মানিত আক্বীক্বাহ মুবারক দেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে পুনরায় উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইস্ম বা নাম মুবারক রাখেন ‘সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম’। সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং এই সকল বর্ণনা মুবারক উনাদের মাধ্যমে দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট হয়ে যায় যে, ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কত বেমেছাল, যেটা সমস্ত কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার বাইরে। সুবাহানাল্লাহ!
সেটাই আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সুলত্বানুন নাছীর সম্মানিত রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন যে, ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আশবাহুল খলক্বি বি-রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আল মুবাশ্শির সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত লক্বব মুবারক:
মহান আল্লাহ পাক তিনি যেমন অসীম, ঠিক তেমনিভাবে উনার সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের সংখ্যাও অসীম। সুবহানাল্লাহ! অনুরূপভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত লক্বব মুবারক উনার সংখ্যাও অসংখ্য অসীম। এক কথায় তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন; এছাড়া সমস্ত লক্বব মুবারক উনার অধিকারী। সুবহানাল্লাহ! ঠিক একইভাবে ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া যত সম্মানিত লক্বব মুবারক রয়েছেন, সমস্ত সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ!
ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদুল আসইয়াদ, বিদ্ব‘আতুম মির রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদুল বাশার, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল কাওনাইন, মালিকুল জান্নাত, মালিকুল কায়িনাত, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ ইত্যাদি উনার সম্মানিত বিশেষ লক্বব মুবারক উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিতা দুধমাতা আলাইহাস সালাম:
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
فَتَنَافَسَتْ فِيْهِ نِسَاءُ الْاَنْصَارِ مَنْ يُّرْضِعُهٗ
অর্থ: “হযরত আনছার মহিলা ছাহাবীয়াহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুন্নাগণ উনারা পরস্পর প্রতিযোগিতায় লেগে গেলেন, কে সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানতি দুধ মুবারক পান করানোর ব্যাপারে সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিবেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুন্তাখাব)
অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত উম্মে সাইফ আলাইহাস সালাম উনাকে কবূল করলেন। সুবহানাল্লাহ! এই সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ الله تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وُلِدَ لِىَ اللَّيْلَةَ غُلَامٌ فَسَمَّيْتُهٗ بِاسْمِ اَبِـىْ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ ثُـمَّ دَفَعَهٗ اِلـٰى حَضْرَتْ اُمِّ سَيْفٍ عَلَيْهَا السَّلَامُ اِمْرَاَةِ قَيْنٍ يُّقَالُ لَهٗ حَضْرَتْ اَبُوْ سَيْفٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَانْطَلَقَ يَأْتِيْهِ وَاتَّبَعْتُهٗ فَانْتَهَيْنَا اِلـٰى حَضْرَتْ اَبِـىْ سَيْفٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَهُوَ يَنْفُخُ بِكِيْرِهٖ قَدِ امْتَلَاَ الْبَيْتُ دُخَانًا فَاَسْرَعْتُ الْمَشْىَ بَيْنَ يَدَىْ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُلْتُ يَا حَضْرَتْ اَبَا سَيْفٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ اَمْسِكْ جَاءَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاَمْسَكَ فَدَعَا النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالصَّبِىِّ فَضَمَّهٗ اِلَيْهِ وَقَالَ مَا شَاءَ اللهُ اَنْ يَّقُوْلَ.
অর্থ: “হযরত আনাস বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- আমার একজন মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম তিনি আজ রাতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন এবং আমি উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইস্ম বা নাম মুবারক রেখেছি আমার সম্মানিত পিতা তথা পূর্বপুরুষ সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নাম মুবারক-এ। সুবহানাল্লাহ!
অর্থাৎ আমি আমার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইস্ম বা নাম মুবারক রেখেছি ‘সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম’। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে (সম্মানিত দুধ মুবারক পান করানোর জন্য) সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মে সাইফ আলাইহাস সালাম উনার নিকট হস্তান্তর মুবারক করেন। আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মে সাইফ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আহাল তথা স্বামী ছিলেন কর্মকার। উনাকে সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ সাইফ আলাইহিস সালাম বলা হতো। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আওলাদ উনাকে দেখার জন্য হযরত আবূ সাঈফ আলাইহিস সালাম উনার নিকট তথা উনার বাড়িতে আসতেন এবং আমি উনাকে অনুসরণ করতাম (খাদিম হিসেবে উনার সাথে যেতাম)। আমরা দেখতাম সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ সাইফ আলাইহিস সালাম তিনি উনার হাঁপরে ফুঁক দিচ্ছেন। আর উনার সম্মানিত হুজরা শরীফ ধোঁয়ায় পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। অতঃপর আমি খুব দ্রুত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পৌঁছার আগেই এগিয়ে যেতাম এবং বলতাম, হে হযরত আবূ সাইফ আলাইহিস সালাম! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেছেন, আপনি বিরত থাকুন। অতঃপর তিনি বিরত থাকতেন। তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনাকে ডাকতেন এবং উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ইলম মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বুক মুবারক) উনার সাথে জড়িয়ে নিতেন। অতঃপর তিনি যা ইচ্ছা পোষণ করতেন, তা ইরশাদ মুবারক করতেন।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, তিরমিযী শরীফ, ইবনে সা’দ ইত্যাদি)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ الله تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ مَا رَاَيْتُ اَحَدًا كَانَ اَرْحَمَ بِالْعِيَالِ مِنْ رَّسُوْلِ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ مُسْتَرْضَعًا لَّهٗ فِىْ عَوَالِى الْمَدِيْنَةِ. فَكَانَ يَنْطَلِقُ وَنَـحْنُ مَعَهٗ. فَيَدْخُلُ الْبَيْتَ وَاِنَّهٗ لَيُدَّخَنُ وَكَانَ ظِئْرُهٗ قَيْنًا فَيَأْخُذُهٗ فَيُقَبّـِلُهٗ ثُـمَّ يَرْجِعُ.
অর্থ: “হযরত আনাস বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, পরিবার-পরিজনের প্রতি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চেয়ে অধিক স্নেহ-মমতাবান আর কাউকে আমি দেখিনি। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার আওয়ালী (উঁচু) মহল্লায় সম্মানিত দুধ মুবারক পানরত ছিলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার মুহব্বত মুবারক-এ) সেখানে চলে যেতেন। আমরা উনার সাথে সেখানে যেতাম। তারপর তিনি সম্মানিত হুজরা শরীফ-এ প্রবেশ করতেন; সম্মানিত হুজরা শরীফখানা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন থাকতো। (কারণ) ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত দুধপিতা আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন একজন কর্মকার। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনাকে {বেমেছাল মুহব্বত মুবারক করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল আযহার মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কোল মুবারক-এ)} তুলে নিতেন এবং উনাকে সম্মানিত বুছা মুবারক দিতেন। অতঃপর তিনি ফিরে আসতেন।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে সা’দ ১/১০৯, আল বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ৩/৩৩১, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ ইত্যাদি)
এখান থেকে দিবালোকের ন্যায় অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আওলাদ, আল মুবাশ্শির সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনাকে কত বেমেছাল মুহব্বত মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ! তাই বান্দা-বান্দী, উম্মত যদি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের হাক্বীক্বী মুহব্বত-মা’রিফত, নিসবত-কুরবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক পেতে চায়, তাহলে তাদের জন্য ফরয উনার উপর ফরয হচ্ছে ইবনু রসূলিল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত মুহব্বত মুবারক করা, সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, উনার সম্মানিত গোলামির আনজাম মুবারক দেয়া, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক বর্ণনা করা। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ:
ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি ১০ম হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ) উনার ১০ তারিখ ইয়াওমুছ ছুলাছা শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
তিনি দুনিয়ার যমীনে কতদিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেছিলেন, এই নিয়ে অনেক ইখতিলাফ রয়েছে। তবে ছাহিবুল ইলমিল আউওয়ালি ওয়াল আখিরি, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, সুলত্বানুন নাছীর মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি এই বিষয়ে সর্বোত্তম ফায়ছালা মুবারক দিয়েছেন যে, ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি ১৬ মাস দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ তিনি ১৬ মাস বয়স মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর তিনি সম্মানিত দলীল মুবারক পেশ করেন,
عَنْ حَضْرَتْ اَلْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ مَاتَ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ ابْنُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ ابْنُ سِتَّةَ عَشَرَ شَهْرًا فَاَمَرَ بِهٖ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَنْ يُّدْفَنَ فِى الْبَقِيْعِ وَقَالَ اِنَّ لَهٗ مُرْضِعًا يُّرْضِعُهٗ فِى الْـجَنَّةِ
অর্থ: “হযরত বারা ইবনে আযিব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার দুনিয়াবী দৃষ্টিতে বয়স মুবারক যখন ১৬ মাস, তখন তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ জান্নাতুল বাক্বী’ শরীফ উনার মধ্যে স্থাপন করার জন্য সম্মানিত নির্দেশ মুবারক প্রদান করেন এবং তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই উনার জন্য সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ একজন সম্মানিতা দুধপানকারিনী রয়েছেন, যিনি উনাকে দুধ মুবারক পান করাবেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ ৩০/৫২০, মুসনাদে আবী ইয়া’লা ৩/২৫১, আল আহাদ ওয়াল মাছানী ৫/৫৬৪, তারীখুল মদীনা ১/৯৭)
অনুরূপ বর্ণনা আস সুনানুল কুবরা লিলবাইহাক্বী, শরহু মা‘আনিল আছার, মুছান্নাফে আবী শায়বাহ, মা’রিফাতুছ ছাহাবাহ লিআবী নাঈম, মুছান্নাফে আব্দির রাজ্জাক্ব ইত্যাদি কিতাবসমূহেও রয়েছে।
স্মরণীয় যে, সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি মাস হিসেবে দুনিয়ার যমীনে ১৬ মাস সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেছিলেন। আর দিন হিসেবে ১৫ মাস ৮ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
وَسَلَامٌ عَلَيْهِ يَوْمَ وُلِدَ وَيَوْمَ يَـمُوْتُ وَيَوْمَ يُبْعَثُ حَيًّا
অর্থ: “(হযরত ইহ্ইয়াহ আলাইহিস সালাম) উনার উপর সালাম তথা রহমত, বরকত, ছাকীনাহ যেদিন তিনি সম্মানিত ও পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন, যেদিন তিনি সম্মানিত ও পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন এবং যেদিন তিনি পুনরুত্থিত হবেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা মারইয়াম শরীফ : সম্মানতি আয়াত শরীফ ১৫)
সুতরাং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যেই রয়েছে যে, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত ও পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের দিন, সম্মানিত ও পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশের দিন এবং পুনরুত্থানের দিন সালাম তথা রহমত, বরকত, ছাকীনাহ, দয়া, দান, ইহসান মুবারক বর্ষিত হয়। যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের দিন এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের দিন কত বেশি সম্মানিত রহমত, বরকত, ছাকীনাহ, দয়া, দান, ইহসান মুবারক বর্ষিত হন, তা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধে। সুবহানাল্লাহ!
অতএব সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলে যদি আখাচ্ছুল খাছ রহমত, বরকত, ছাকীনাহ, দয়া, দান, ইহসান মুবারক, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করতে চায়, ইহকাল ও পরকালে হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল করতে চায়, আল্লাহ ওয়ালা, আল্লাহ ওয়ালী হতে চায়, তাহলে তাদের জন্য ফরয উনার উপরেও ফরয হচ্ছে ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের দিন এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের দিন উপলক্ষে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘ফালইয়াফরহূ শরীফ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক বর্ণনা করা, সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া এবং উনার সম্মানতি জীবনী মুবারক আলোচনা করা এবং সেখান শিক্ষা গ্রহণ করা। সুবহানাল্লাহ!
ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত জুদায়ী মুবারক উনার কারণে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অজস্র ধারায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রবাহিত করা:
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ لَمَّا قُبِضَ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ ابْنُ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَـهُمُ النَّبِـىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا تُدْرِجُوْهُ فِىْ اَكْفَانِهٖ حَتّٰى اَنْظُرَ اِلَيْهِ فَاَتَاهُ فَانْكَبَّ عَلَيْهِ وَبَكٰى حتَّى اضْطَرَبَ لِـحْيَاهُ وَجَنْبَاهُ صلَّى الله عَلَيْهِ وسلَّم.
অর্থ: “হযরত আনাস বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি উনাকে না দেখা পর্যন্ত আপনারা উনাকে সম্মানিত কাফন মুবারক-এ জড়িয়ে দিবেন না। পরে তিনি এসে উনার উপর ঝুঁকে পড়লেন এবং উনার সম্মানিত জুদায়ী মুবারক উনার কারণে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুনাওওয়ার/মুনাওওইর (চক্ষু) মুবারক দিয়ে অজস্র ধারায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রবাহিত করতে লাগলেন। ফলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুন নি‘য়ামত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দাড়ি মুবারক) এবং সম্মানিত গ-দ্বয় মুবারক কেঁপে উঠতে লাগলেন।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে মাজাহ, তিরমিযী, বিদায়া-নিহায়াহ)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-
عَنْ حَضْرَتْ اَسْـمَاءَ بِنْتِ يَزِيْدَ بْنِ السَّكَنِ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهَا قَالَتْ لَمَّا تُوُفِّـىَ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ بَكٰى رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ حَضْرَتْ اَبُوْ بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَحَضْرَتْ عُمَرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ اَنْتَ اَحَقُّ مَنْ عَلِمَ اللهَ حَقَّهٗ فَقَالَ تَدْمَعُ الْعَيْنُ وَيـَحْزَنُ الْقَلْبُ وَلَا نَقُوْلُ مَا يُسْخِطُ الرَّبَّ لَوْلَا اَنَّهٗ وَعْدٌ صَادِقٌ وَّمَوْعُوْدٌ جَامِعٌ وَّاَنَّ الْاٰخِرَ مِنَّا يَتْبَعُ الْاَوَّلَ لَوَجَدْنَا عَلَيْكَ يَا حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَجْدًا اَشَدَّ مِـمَّا وَجَدْنَا وَاِنَّا بِكَ يَا حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ لَمَحْزُوْنُوْنَ.
অর্থ: “হযরত আসমা বিনতে ইয়াযীদ ইবনে সাকান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার সম্মানিত জুদায়ী মুবারক উনার কারণে অজস্র ধারায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রবাহিত করেন। সুবহানাল্লাহ! এমতাবস্থায় সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার যথার্থ হক্ব ও অধিকার অনুধাবনে আপনিই সকলের অনুসরণীয়। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুনাওওয়ার/মুনাওওইর (চোখ) মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুহব্বত মুবারক যুক্ত, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হৃদয় মুবারক ব্যথিত। আর আমরা এমন কিছু বলি না, যা মহান আল্লাহ পাক উনাকে অসন্তুষ্ট করে। অর্থাৎ আমরা যা বলছি এবং করছি সবকিছুই মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক উনার কারণ। সুবহানাল্লাহ! যদি তা (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক) বাস্তব অঙ্গীকার ও সমবেতকারী প্রতিশ্রুতি না হতো এবং যদি এমন না হতো যে, আমাদের পরবর্তীরা পূর্ববর্তীদের অনুসরণ করবে, তবে অবশ্যই আমরা (হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম) আপনার জন্য যত মর্মাহত হয়েছি, বেক্বারার হয়েছি, সম্মানিত মুহব্বত মুবারক প্রকাশ করেছি, তার চেয়ে অত্যধিক মর্মাহত হতাম, বেক্বারার হতাম, সম্মানিত মুহব্বত মুবারক প্রকাশ করতাম। সুবহানাল্লাহ! আর হে হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম! আপনার (সম্মানিত জুদায়ী মুবারক উনার) কারণে আমরা অবশ্যই দুঃখ ভারাক্রান্ত, চিন্তিত, পেরেশান।” সুবহানাল্লাহ! (মুসলিম শরীফ, ইবনে মাজাহ, ত্ববারনী, বিদায়া-নিহায়াহ)
সম্মানিত গোসল মুবারক ও সম্মানিত কাফন মুবারক:
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক উপস্থিতিতে এবং মুবারক তত্ত্বাবধানে ও সম্মানিত দিক-নিদের্শনা মুবারক অনুযায়ী সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত গোসল মুবারক ও সম্মানিত কাফন মুবারক সুসম্পন্ন মুবারক করা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছেন,
غَسَلَهُ حَضْرَتْ اَلْفَضْلُ بْنُ عَبَّاسٍ رَضِىَ الله تَعَالـٰى عَنْهُ وَرَسُوْلُ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَحَضْرَتْ اَلْعَبَّاسُ عَلَيْهِ السَّلَامُ جَالِسَانِ
অর্থ: “ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত গোসল মুবারক করার খিদমত মুবারক-এ আনজাম মুবারক দেন হযরত ফযল ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়াল আনহু তিনি। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম উনারা পাশে বসা ছিলেন।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে সা’দ, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
لَا تُدْرِجُوْهُ فِىْ اَكْفَانِهٖ حَتّٰى اَنْظُرَ اِلَيْهِ
অর্থ: “আমি উনাকে না দেখা পর্যন্ত আপনারা উনাকে সম্মানিত কাফন মুবারক-এ জড়িয়ে দিবেন না।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে মাজাহ, তিরমিযী)
তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত দিক-নির্দেশনা মুবারক অনুযায়ী সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত কাফন মুবারক সম্পন মুবারক করা হয়। সুবহানাল্লাহ! অতঃপরÑ
حُمِلَ مِنْ بَيْتِ اُمِّ بُرْدَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهَا عَلـٰى سَرِيْرٍ صَغِيْرٍ (فِى الْبَقِيْعِ)
অর্থ: “হযরত উম্মে বুরদাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা উনার বাড়ি থেকে একটি সম্মানিত ছোট খাটিয়া মুবারক-এ করে সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত জান্নাতুল বাক্বী’ শরীফ-এ নিয়ে যাওয়া হলো।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে সা’দ)
সম্মানিত জানাযা নামায মুবারক:
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
صَلّٰى عَلَيْهِ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالْبَقِيْعِ
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত জান্নাতুল বাক্বী’ শরীফ-এ উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত জানাযা নামায মুবারক পড়ান।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে সা’দ)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ لَمَّا مَاتَ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ ابْنُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلّٰى رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার সম্মানিত জানাযা নামায মুবারক পড়ান।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে মাজাহ শরীফ)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ صَلّٰى رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى ابْنِهٖ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَكَبَّرَ عَلَيْهِ اَرْبَعًا
অর্থ: “হযরত ইবনে ‘উমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত জানাযা নামায মুবারক সম্মানিত চার তাকবীর মুবারক উনার সাথে আদায় করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (আমালী ১/৪৪১, মুসনাদে আবী ইয়া’লা ৬/৩৩৫আল মাত্বালিবুল আলীয়াহ ৫/৪১০, মাজমাউ যাওয়াইদ শরীফ ৩/৫৪, কাশফুল খফা ১/৩১৩ ইত্যাদি)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখা:
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
ثُـمَّ حُمِلَ فَرَاَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلـٰى شَفِيْرِ الْقَبْرِ وَالْعَبَّاسُ عَلَيْهِ السَّلَامُ جَالِسٌ اِلٰى جَنْبِهٖ
অর্থ: “(বর্ণনাকারী তিনি বলেন,) অতঃপর উনাকে যখন সম্মানিত খাটিয়া মুবারক-এ করে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার নিকট নিয়ে যাওয়া হলো, তখন আমি দেখলাম যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার পাশে অবস্থান মুবারক করছেন এবং সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি উনার পাশে বসা।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে সা’দ, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
فَاَمَرَ بِهٖ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَنْ يُّدْفَنَ فِى الْبَقِيْعِ
অর্থ: “তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত জান্নাতুল বাক্বী’ শরীফ-এ সম্মানিত দাফন মুবারক করার জন্য তথা উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ স্থাপন করার জন্য সম্মানিত নির্দেশ মুবারক প্রদান করেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ শরীফ)
فَقِيْلَ لَهٗ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَيْنَ نَدْفِنُهٗ قَالَ عِنْدَ فَرَطِنَا عُثْمَانَ بْنِ مَظْعُوْنٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ
অর্থ: “অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট আরজি মুবারক পেশ করা হলো- ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমরা উনাকে কোথায় সম্মানিত দাফন মুবারক করবো তথা উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ কোথায় নির্দিষ্ট করবো? তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আমাদের অগ্রগামী হযরত উছমান ইবনে মায‘ঊন রদ্বিয়াল্লাহ তা‘য়ালা আনহু উনার নিকট।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে সা’দ, মুস্তাদরকে হাকিম)
অপর বর্ণনায় এসেছেন,
وَنَزَلَ فِىْ حُفْرَتِهٖ حَضْرَتْ اَلْفَضْلُ بْنُ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ وَحَضْرَتْ اُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ
অর্থ: “হযরত ফযল ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এবং উসামা ইবনে যায়েদ রদ্বিয়াল্লাহ তা‘য়ালা তিনি অর্থাৎ উনারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার মধ্যে অবতরণ মুবারক করেন।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে সা’দ, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ)
এইভাবে উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখার কাজ সুসম্পন্ন মুবারক হয়। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার মধ্যে একটি ফাঁক মুবারক দেখলেন। তারপর তিনি নিজে মাটির টুকরা দ্বারা উক্ত ফাঁক মুবারক বন্ধ করে দিলেন। তারপর তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, এতে কোনো উপকার নেই, ক্ষতিও নেই। তবে তা মানুষের দৃষ্টি আর্কষণ করে থাকে।
আরো বর্ণিত রয়েছেন,
اَمَرَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بـِحَجَرٍ فَوُضِعَ عِنْدَ قَبْرِهٖ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَرُشَّ عَلـٰى قَبْرِهٖ عَلَيْهِ السَّلَامُ اَلْمَاءُ.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একটি পাথর মুবারক নিয়ে আসার জন্য নির্দেশ মুবারক দেন। অতঃপর একটি পাথর মুবারক এনে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার নিকট রাখা হলো এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার উপর পানি মুবারক ছিটিয়ে দেয়া হলো।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে সা’দ)
আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-
ثُـمَّ خَرَجَ وَرَشَّ عَلـٰى قَبْرِهٖ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَاَدْخَلَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدَهٗ فِىْ قَبْرِهٖ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَقَالَ اَمَا وَاللهِ اِنَّهٗ لَنَبِىٌّ اِبْنُ نَبِىٍّ وَّبَكٰى رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وسَلَّمَ وَبَكَى الْمُسْلِمُوْنَ حَوْلَهٗ حتَّى ارْتَفَعَ الصَّوْتُ ثُـمَّ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَدْمَعُ الْعَيْنُ وَيَـحْزَنُ الْقَلْبُ وَلَا نَقُوْلُ مَا يُغْضِبُ الرَّبَّ وَاِنَّا عَلَيْكَ يَا حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ لَمَحْزُوْنُوْنَ.
অর্থ: “তারপর বের হয়ে এসে সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার উপরে পানি মুবারক ছিটিয়ে দিলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার মধ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরহ্ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক) প্রবেশ করালেন। অতঃপর তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, সাবধান, মহান আল্লাহ পাক উনার কসম, নিশ্চয়ই (সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম) তিনি সম্মানিত নবী নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম উনার জন্য উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত জুদায়ী মুবারক উনার কারণে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুনাওওয়ার/ মুনাওওইর মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চক্ষু মুবারক) দিয়ে অজস্র ধারায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রবাহিত করলেন এবং উনার সাথে সাথে সমস্ত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারাও কান্না মুবারক করতে লাগলেন। এমনকি আওয়াজ মুবারক উঁচু হয়ে গেলো। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুনাওওয়ার/ মুনাওওইর মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চোখ মুবারক) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুহব্বত মুবারক যুক্ত, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হৃদয় মুবারক ব্যথিত আর আমরা এমন কিছু বলি না- যা মহান আল্লাহ পাক উনাকে অসন্তুষ্ট করে। অর্থাৎ আমরা যা বলছি বা করছি তা মহান আল্লাহ পাক উনার রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক উনার কারণ। সুবহানাল্লাহ! হে হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম! আপনার (সম্মানিত জুদায়ী মুবারক উনার) কারণে আমরা অবশ্যই দুঃখ ভারাক্রান্ত, চিন্তিত, পেরেশান।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে আসাকির, বিদায়া-নিহায়া, কানযুল উম্মাল ইত্যাদি)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের দিন সূর্যের শোক প্রকাশ করা:
ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যেই বেমেছাল মুহব্বত মুবারক প্রকাশ করেছেন, এর মাধ্যম দিয়েই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কত বেমেছাল। যেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!
তাই সমস্ত কায়িনাতবাসীর জন্য ফরয উনার উপর ফরয হচ্ছে ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনাকে মুহব্বত মুবারক করা, উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক আলোচনা করা।
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের খাদিম হচ্ছে সমস্ত কায়িনাতবাসী। উনাদের গোলামী করার জন্য সমস্ত কায়িনাত বেক্বারার-পেরেশান। সমস্ত কায়িনাত উনাদের মুহব্বত মুবারক-এ গরক্ব। তারা দায়িমীভাবে উনাদের সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করে থাকে, উনাদের তা’যীম-তাকরীম মুবারক করে থাকে। সুবহানাল্লহ! আর উনাদের সম্মানিত জুদায়ী মুবারক উনার কারণে শোক প্রকাশ করে থাকে। সেটাই দেখা গিয়েছে যে, সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের দিন জিন-ইনসান তো অবশ্যই এমনকি সারা কায়িানাত শোক প্রকাশ করেছিলো। এমনকি সূর্যও শোক প্রকাশ করেছিলো। এই সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-
عَنْ حَضْرَتْ اَلْـمُغِيْرَةِ بْنِ شُعْبَةَ رَضِىَ الله تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ اِنْكَسَفَتِ الشَّمْسُ يَوْمَ مَوْتِ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَقَالَ النَّاسُ لِـمَوْتِ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ.
অর্থ: “হযরত মুগীরা বিন শু’বা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের দিন সূর্যগ্রহণ হয়েছিলো তথা সূর্য অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়েছিলো। অর্থাৎ সূর্যও শোক প্রকাশ করেছিলো তথা সমস্ত ক্বায়িনাতই শোক প্রকাশ করেছিলো। তার বহিঃপ্রকাশ হলো সূর্যের মাধ্যম দিয়ে। তখন লোকজন বলাবলি করতে লাগলেন, ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের কারণে সূর্যগ্রহণ হয়েছে, সূর্য শোকাহত হয়েছে।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ শরীফ)
মূলত, এটা একটি কুদরতী বিষয়। যদিও স্বাভাবিকভাবে চন্দ্রের ২৬-২৭ তারিখে সূর্যগ্রহণ হয়। কিন্তু ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানার্থে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের দিন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১০ই সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবী‘উল আউওয়াল শরীফ) সূর্যগ্রহণ হয়েছিলো তথা সূর্য শোক প্রকাশ করেছিলো। সুবহানাল্লাহ! এই বিষয়টি সমস্ত ইমাম মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা এক বাক্যে মেনে নিয়েছেন। কেউ কেউ এই মতের মুখালিফদের বিরুদ্ধে শক্ত জবাবও দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত তালক্বীন মুবারক দেয়া এবং উনার সম্মানার্থে মু’মিন উনাদের জন্য আখাচ্ছুল খাছ সুসংবাদ মুবারক উনার সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল হওয়া
এই সম্পর্কে ১০ম হিজরী শতক উনার মুজাদ্দিদ হযরত ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূত্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আল হাওই শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেন,
مَا رُوِىَ اَنَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمَّا دَفَنَ اِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قُلِ اللهُ رَبِّـىْ وَرَسُوْلُ اللهِ اَبِىْ وَالْاِسْلَامُ دِيْنِىْ فَقِيْلَ لَهٗ يَا رَسُوْلَ اللهِ اَنْتَ تُلَقِّنُهٗ فَمَنْ يُّلَقِّنُنَا فَاَنْزَلَ اللهُ تَعَالـٰى {يُثَبِّتُ اللهُ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا بِالْقَوْلِ الثَّابِتِ فِى الْـحَيَاةِ الدُّنْيَا وَفِي الْاٰخِرَةِ} وَفِىْ رِوَايَةٍ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَنَّهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمَّا دَفَنَ وَلَدَهٗ اِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَقَفَ عَلـٰى قَبْرِهٖ وَقَالَ يَا بُنَىَّ اِنَّ الْقَلْبَ يَحْزَنُ وَالْعَيْنَ تَدْمَعُ وَلَا نَقُوْلُ مَا يُسْخِطُ الرَّبَّ اِنَّا ِ لِلّٰهِ وَاِنَّا اِلَيْهِ رَاجِعُوْنَ يَا بُنَىَّ قُلِ اللهُ رَبِّـىْ وَالْاِسْلَامُ دِيْنِىْ وَرَسُوْلُ اللهِ اَبِىْ فَبَكَتِ الصَّحَابَةُ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُمْ وَمِنْهُمْ عُمَرُ حَتَّى ارْتَفَعَ صَوْتُهٗ فَالْتَفَتَ اِلَيْهِ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ مَا يُبْكِيْكَ يَا حَضْرَتْ عُمَرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ هٰذَا وَلَدُكَ وَمَا بَلَغَ الْـحُلُمَ وَلَا جَرٰى عَلَيْهِ الْقَلَمُ وَيَحْتَاجُ اِلـٰى تَلْقِيْنِ مِثْلِكَ تُلَقِّنُهُ التَّوْحِيْدَ فِىْ مِثْلِ هٰذَا الْوَقْتِ فَمَا حَالُ حَضْرَتْ عُمَرَ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَقَدْ بَلَغَ الْـحُلُمَ وَجَرٰى عَلَيْهِ الْقَلَمُ وَلَيْسَ لَهٗ مُلَـقِّـنٌ مِّـثْـلُـكَ فَبَكَى النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَبَكَتِ الصَّحَابَةُ مَعَهٗ وَنَزَلَ جِبْرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ بِقَوْلِهٖ تَعَالـٰى{يُـثَـبِّتُ اللهُ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا بِالْقَوْلِ الثَّابِتِ فِى الْـحَيَاةِ الدُّنْيَا وَفِى الْاٰخِرَةِ} يُرِيْدُ بِذٰلِكَ وَقْتَ الْمَوْتِ اَىْ وَعِنْدَ وُجُوْدِ الْفَتَّانِيْنَ وَعِنْدَ السُّؤَالِ فِى الْقَبْرِ فَتَلَا النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْاٰيَةَ فَطَابَتِ الْاَنْفُسُ وَسَكَنَتِ الْقُلُوْبُ وَشَكَرُوا اللهَ
অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে যা বর্ণিত রয়েছে, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনাকে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখার পর ইরশাদ মুবারক করেন, ‘হে আমার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম! আপনি বলুন, মহান আল্লাহ পাক তিনি আমার রব, আমার মহাসম্মানিত আব্বাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সম্মানিত ইসলাম আমার সম্মানিত দ্বীন।’ সুবহানাল্লাহ! তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলা হলো- ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি উনাকে সম্মানিত তালক্বীন মুবারক দিচ্ছেন, আমাদেরকে তালক্বীন মুবারক দিবেন কে? তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি নাযিল করলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইহকাল ও পরকালে মু’মিন উনাদেরকে মজবুত বাক্য মুবারক দ্বারা সুদৃঢ় করেন। সুবহানাল্লাহ!
আর অপর বর্ণনায় এসছে- নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখার পর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার নিকট দাঁড়িয়ে ইরশাদ মুবারক করেন, হে আমার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হৃদয় মুবারক ব্যথিত এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুনাওওয়ার/ মুনাওওইর (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চোখ মুবারক) থেকে অজস্র ধারায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রবাহিত হচ্ছেন। আর আমরা এমন কিছু বলি না, যা মহান আল্লাহ পাক উনাকে অসন্তুষ্ট করে। অর্থাৎ আমরা যা বলছি বা করছি তা মহান আল্লাহ পাক উনার রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক উনার কারণ। সুবহানাল্লাহ! নিশ্চয়ই আমরা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য এবং উনার নিকটই আমারা প্রত্যাবর্তন করবো। হে আমার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম! আপনি বলুন, মহান আল্লাহ পাক তিনি আমার রব, সম্মানিত ইসলাম আমার সম্মানিত দ্বীন এবং আমার মহাসম্মানিত আব্বাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ! তখন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা কান্না মুবারক করতে লাগলেন। উনাদের মধ্যে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনিও ছিলেন। তিনি এমন কঠিনভাবে কান্না মুবারক করলেন যে, উনার কান্না মুবারক উনার আওয়াজ মুবারক উঁচু হয়ে গেল।
তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার দিকে সম্মানিত দৃষ্টি মুবারক করলেন এবং বললেন, কোন্ বিষয় আপনাকে কাঁদাচ্ছে? জবাবে তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন স্বয়ং আপনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! আর উনার সম্মানিত বয়স মুবারক অল্প এবং উনার উপর সম্মানিত কলম মুবারক জারি নেই তথা তিনি সম্মানিত শরীয়ত মুবারক উনার বিধান জারি হওয়ার বয়স মুবারকেও উপনীত হননি। (উনার তো কস্মিনকালেও কোন তালক্বীন মুবারক উনার প্রয়োজন নেই।) অথচ মহান আল্লাহ পাক উনার পরেই আপনার স্থান, স্বয়ং আপনি নিজে এই মুহূর্তে উনাকে সম্মানিত তাওহীদ মুবারক উনার সম্মানিত তালক্বীন মুবারক দিচ্ছেন। তাহলে ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার কী অবস্থা হবে? তিনি তো প্রাপ্ত বয়স মুবারক-এ উপনীত হয়েছেন এবং উনার উপর সম্মানিত কলম মুবারক জারি রয়েছে তথা সম্মানিত শরীয়ত মুবারক উনার বিধান জারি রয়েছে; কিন্তু উনার জন্য আপনার মতো তালক্বীন দানকারী নেই। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রবাহিত করতে লাগলেন এবং উনার সাথে সাথে সমস্ত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারাও কান্না মুবারক করতে লাগলেন। সুবহানাল্লাহ! তখন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সম্মানিত ওহী মুবারক নিয়ে আগমন করলেন,
يُـثَـبِّتُ اللهُ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا بِالْقَوْلِ الثَّابِتِ فِى الْـحَيَاةِ الدُّنْيَا وَفِى الْاٰخِرَةِ
“মহান আল্লাহ পাক তিনি ইহকাল ও পরকালে মু’মিনগণ উনাদেরকে মজবুত বাক্য মুবারক দ্বারা সুদৃঢ় করেন।” সুবহানাল্লাহ!
এখানে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইহকাল ও পরকাল দ্বারা মৃত্যুর সময় উদ্দেশ্য করেছেন। অর্থাৎ ফিতনার সময় এবং ক্ববরে সুওয়াল-জাওয়াবের সময় উদ্দেশ্য। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উক্ত সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ তিলাওয়াত মুবারক করলেন। তখন সমস্ত হযরত ছাহাবয়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের সকলের মন আনন্দিত হলো, উনাদের অন্তর মুবারকগুলো ইতমিনান মুবারক লাভ করলো এবং উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার শুকরিয়া মুবারক আদায় করলেন। সুবহানাল্লাহ! (তুহফাতুল হাবীব আলা শারহিল খত্বীব ২/২৯৮, আল হাওই লিস সুয়ূত্বী ২/২১৪, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/২৫)
ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত দুধ মুবারক পান করানোর জন্য সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ সম্মানিতা দুধপানকারিনী রয়েছেন
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ حَضْرَتْ اَلْبَرَاءِ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ لَمَّا مَاتَ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ عَلَيْهِ السَّلاَمُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ لَهٗ مُرْضِعًا فِى الْـجَنَّةِ.
অর্থ: “হযরত বারা ইবনে আযিব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই উনার জন্য সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ একজন সম্মানিতা দুধপানকারিনী রয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ)
অপর বর্ণনায় এসেছেন,
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ اَبِىْ اَوْفٰى رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ تُوُفِّـىَ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَرْضَعُ بَقِيَّةَ رَضَاعِهٖ فِى الْـجَنَّةِ.
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবূ আওফা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ উনার অবশিষ্ট দুধ মুবারক পান করার মেয়াদ পূর্ণ হবে।” সুবহানাল্লাহ! (বিদায়া-নিহায়াহ)
অপর বর্ণনায় এসেছেন,
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ قَالَ لَمَّا مَاتَ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ ابْنُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلّٰى رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَالَ اِنَّ لَهٗ مُرْضِعًا فِى الْـجَنَّةِ.
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার সম্মানিত জানাযা নামায মুবারক পড়ান। তারপর তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস্ সালাম উনার জন্য সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ একজন সম্মানিতা দুধপানকারিনী রয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে মাজাহ শরীফ)
অন্য বর্ণনায় এসেছেন,
عَنْ حَضْرَتْ اَلْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ لَمَّا تُوُفِّـىَ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ ابْنُ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ لَهٗ مُرْضِعًا فِى الْـجَنَّةِ تُتِمُّ بَقِيَّةَ رَضَاعِهٖ
অর্থ: “হযরত বারা ইবনে আযিব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই উনার জন্য সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ একজন সম্মানিতা দুধপানকারিনী রয়েছেন, যিনি উনার অবশিষ্ট দুধ মুবারক পান করার মেয়াদ পূর্ণ করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (আল আহাদ ওয়াল মাছানী শরীফ)
অপর বর্ণনায় রয়েছে,
اِنَّ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ اِبْنِىْ وَاِنَّهٗ مَاتَ فِى الثَّدْىِ وَاِنَّ لَهٗ لَظِئْرَيْنِ تُكْمِلَانِ رَضَاعَهٗ فِى الْـجَنَّةِ.
অর্থ: “নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি আমার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম। তিনি দুধ মুবারক পান করা অবস্থায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। উনার জন্য সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ দুই জন সম্মানিতা দুধপানকারিনী রয়েছেন। উনারা উনার দুধ মুবারক পান সম্পন্ন করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে সা’দ)
ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি যদি দুনিয়ার যমীনে অবস্থান মুবারক করতেন, তাহলে অবশ্য অবশ্যই নবী ও রসূল হিসেবে প্রকাশিত হতেন তথা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরিপূর্ণ হুবহু ক্বায়িম-মাক্বাম নবী ও রসূল হিসেবে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হিসেবে অবস্থান মুবারক করতেন
এই সম্পর্কে সম্মানিত ছহীহ সনদ মুবারক-এ অনেক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণিত হয়েছে। যেমন ‘ছহীহ বুখারী শরীফসহ আরো অন্যান্য সম্মানিত বিশুদ্ধ হাদীছ শরীফ উনাদের কিতাব মুবারক’ উনাদের মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اِسْـمَاعِيْلَ بْنِ اَبِىْ خَالِدٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ قُلْتُ لِعَبْدِ اللهِ بْنِ اَبِىْ اَوْفٰى رَضِىَ الله تَعَالـٰى عَنْهُ رَاَيْتَ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمَ ابْنَ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَليْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَاتَ وَهُوَ صَغِيْرٌ وَّلَوْ قُضِىَ اَنْ يَّكُوْنَ بَعْدَ سَيّـِدِنَا مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَبِىٌّ لَّعَاشَ ابْنُهٗ وَلٰكِنْ لَّا نَبِىَّ بَعْدَهٗ
অর্থ: “হযরত ইসমাইল ইবনে আবূ খালিদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবূ আওফা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে বললাম, আপনি কি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনাকে দেখেছেন? তিনি বললেন, (হ্যাঁ, দেখেছি।) ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি অল্প বয়স মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। যদি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর নবী হওয়ার (নবী ও রসূল হিসেবে প্রকাশ হওয়ার) কোনো (কুদরতী) ফায়সালা থাকতো, তাহলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি দুনিয়ার যমীনে অবস্থান মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ! কিন্তু ফায়সালা তো হচ্ছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর আর কোন নবী হবেন না, কেউ নবী হিসেবে প্রকাশ হবেন না। (তাই ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি অল্প বয়স মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন।) সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, ইবনে মাজাহ শরীফ, মুখতাছার, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ)
আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ اَبِىْ خَالِدٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ سَـمِـعْتُ ابْنَ اَبِىْ اَوْفـٰى رَضِىَ الله تَعَالـٰى عَنْهُ يَقُوْلُ لَوْ كَانَ بَعْدَ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَبِىٌّ مَّا مَاتَ ابْنُهٗ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ.
অর্থ: “হযরত ইবনে আবূ খালিদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবূ আওফা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে বলতে শুনেছি, যদি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর নবী বা রসূল হওয়ার ব্যবস্থা থাকতো, (নবী ও রসূল হিসেবে প্রকাশ হওয়ার) কোনো (কুদরতী) ফায়সালা থাকতো, তাহলে ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করতেন না।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ ৩১/৪৫৪, কাশফুল খফা ২/১৫৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ শরীফ ১১/২৫ ইত্যাদি)
আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنِ السُّدِّىِّ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قُلْتُ لِاَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ كَمْ بَلَغَ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ ابْنُ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ قَدْ كَانَ غُلَامًا بِالْـمَهْدِ وَلَوْ بَقِىَ لَكَانَ نَبِيًّا وَّلٰكِنْ لَّـمْ يَبْقَ لِاَنَّ نَبِيَّكُمْ اٰخِرُ الْاَنْبِيَاءِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ: “হযরত ইমাম সুদ্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন, আমি হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহ তা‘য়ালা আনহু উনাকে সুওয়াল করেছিলাম যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক কতো ছিলো? তিনি বললেন, তিনি ছিলেন উনার মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত কোল মুবারক উনার শিশু। যদি তিনি দুনিয়ার যমীনে অবস্থান মুবারক করতেন, তাহলে তিনি অবশ্যই নবী তথা রসূল হতেন। অর্থাৎ উনার সম্মানিত রিসালতী শান মুবারক প্রকাশ হতো। সুবহানাল্লাহ! কিন্তু তিনি দুনিয়ার যমীনে অবস্থান মুবারক না করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। কারণ আপনাদের (সমস্ত কায়িনাতের) নবী-রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সর্বশেষ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। (উনার পরে যেহেতু আর কেউ নবী বা রসূল হবেন না, নবী বা রসূল হিসেবে প্রকাশ পাবেন না, তাই সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে আসাকির, সুবুলুল হুদার ওয়ার রশাদ শরীফ ১১/২৫)
আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ لَمَّا مَاتَ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ ابْنُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلّٰى رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَالَ اِنَّ لَهٗ مُرْضِعًا فِى الْـجَنَّةِ وَلَوْ عَاشَ لَكَانَ صِدِّيْـقًا نَّبِيًّا
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার সম্মানিত জানাযার নামায মুবারক পড়ান। তারপর তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার জন্য সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ একজন সম্মানিতা দুধপানকারিনী রয়েছেন। আর তিনি যদি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ না করে দুনিয়ার যমীনে অবস্থান মুবারক করতেন, তাহলে তিনি অবশ্য অবশ্যই ছিদ্দীক্ব শ্রেণীর নবী তথা রসূল হিসেবে প্রকাশ পেতেন তথা আমার হুবহু পরিপূর্ণ ক্বায়িম-মাক্বাম নবী ও রসূল হিসেবে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হিসেবে দুনিয়ার যমীনে অবস্থান মুবারক করতেন।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে মাজাহ শরীফ, বাইহাক্বী শরীফ)
আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ الله تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَوْ عَاشَ حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ لَكَانَ صِدِّيْـقًا نَّبِيًّا.
অর্থ: “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যদি সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ না করে দুনিয়ার যমীনে অবস্থান মুবারক করতেন, তাহলে তিনি অবশ্য অবশ্যই ছিদ্দীক্ব শ্রেণীর নবী তথা রসূল হিসেবে প্রকাশ পেতেন তথা আমার হুবহু পরিপূর্ণ ক্বায়িম-মাক্বাম নবী ও রসূল হিসেবে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হিসেবে দুনিয়ার যমীনে অবস্থান মুবারক করতেন।” সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/২৫, মুসনাদে আহমদ শরীফ)
এরূপ আরো অনেক রিওয়ায়েত রয়েছে। মূল কথা হলো, উপরোক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের থেকে দিবালোকের ন্যায় অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে যে, যদি ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ না করতেন, তাহলে তিনি অবশ্য অবশ্যই ছিদ্দীক্ব শ্রেণীর রসূল হিসেবে প্রকাশ পেতেন তথা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হুবহু পরিপূর্ণ ক্বায়িম মাক্বাম রসূল হিসেবে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হিসেবে দুনিয়ার যমীনে অবস্থান মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ! আর যেহেতু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর আর কোনো নবী বা রসূল হবেন না, কেউ নবী বা রসূল হিসেবে প্রকাশ হবেন না। তাই ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি অল্প বয়স মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কত বেমেছাল, তা জিন-ইনসান ও তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!
সেটাই আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সুলত্বানুন নাছীর মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, এক কথায় ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি না এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি না; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী। সুবহানাল্লাহ!
মহান অল্লাহ পাক তিনি আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক উসীলায় আমাদের সবাইকে ইবনু রসূলিল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক জানার, উনার সম্মানিত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক জানার, বুঝার, উপলব্ধি করার তাওফীক্ব দান করুন এবং উনার সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করার, সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার ও সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানার্থে ক্বিবতী উনাদের জন্য সম্মানিত ওয়াছীয়ত মুবারক
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-
عَنْ اُمِّ الْـمُؤْمِنِيْنَ حَضْرَتْ اُمِّ سَلَمَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَوْصٰى عِنْدَ وَفَاتِهٖ فَقَالَ اَللهَ اَللهَ فِىْ قِبْطِ مِصْرَ فَاِنَّكُمْ سَتَظْهَرُوْنَ عَلَيْهِمْ فَيَكُوْنُوْنَ لَكُمْ عُدَّةً وَّاَعْوَانًا فِىْ سَبِيْلِ اللهِ.
অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মে সালামা আলাইহাস সালাম তিনি বর্ণনা করেন, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশকালে সম্মানিত ওছীয়ত মুবারক করে ইরশাদ মুবারক করেন, আপনারা মিশরের ক্বিবতী উনাদের ব্যাপারে মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করুন। আপনারা মিশরের ক্বিবতী উনাদের ব্যাপারে মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করুন। নিশ্চয়ই অতিশীঘ্রই আপনারা উনাদের উপর বিজয়ী হবেন তথা আপনারা মিশর জয় করবেন। তখন উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় আপনাদের জন্য আয়োজনকারী ও সাহায্যকারী হবেন।” সুবহানাল্লাহ! (আল মু’জামুল কাবীর লিইমাম ত্ববারনী ১৭/১০০, আত তাওদ্বীহ ১৮/৫৮৮, মাজমাউয যাওয়ায়িদ ১০/৬৩, জামিউল আহাদীছ ৬/৯১, কানযুল উম্মাল ১২/৬৬, আল মাত্বালিবুল আলীয়াহ ১৭/১৫৪, জামউল ফাওয়ায়িদ ৪/২৭, আল খাছাইছুল কুবরা ২/১৭১, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১০/৭৭ ইত্যাদি)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
اِذَا مَلَكْتُمُ الْقِبْطَ فَاَحْسِنُوْا اِلَيْهِمْ فَاِنَّ لَـهُمْ ذِمَّةً وَّاِنَّ لَـهُمْ رَحِمًا.
অর্থ: “যখন আপনারা ক্বিবতী উনাদের অভিভাবক হবেন, তখন উনাদের সাথে উত্তম ব্যবহার করবেন। কেননা উনাদের জন্য রয়েছে নিরাপত্তা, সম্মান, দায়িত্ব এবং আত্মীয়তা-সম্পর্ক।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে সা’দ, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ)
এই বিষয়ে ‘মুসলিম শরীফ’সহ আরো অনেক কিতাব মুবারক-এ এরূপ আরো অনেক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ রয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত লক্বব মুবারক
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
وَلِلّٰهِ الْاَسْـمَاءُ الْـحُسْنٰـى فَادْعُوْهُ بِـهَا
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক উনার অনেক সুন্দর সুন্দর সম্মানিত নাম মুবারক তথা লক্বব মুবারক রয়েছে, তোমরা উনাকে সেই সম্মানিত নাম মুবারক তথা লক্বব মুবারক দ্বারা আহ্বান করো।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা আ’রাফ শরীফ: সম্মানিত আয়াত শরীফ ১৮০)
মহান আল্লাহ পাক তিনি যেমন অসীম, ঠিক তেমনিভাবে উনার সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের সংখ্যাও অসীম। সুবহানাল্লাহ! অনুরূপভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত লক্বব মুবারক উনার সংখ্যাও অসংখ্য অসীম। সুবহানাল্লাহ! এক কথায় তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন; এছাড়া সমস্ত লক্বব মুবারক উনার অধিকারী। সুবহানাল্লাহ! ঠিক একইভাবে ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছানী আলাইহিস সালাম তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া যত সম্মানিত লক্বব মুবারক রয়েছেন, সমস্ত সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! এখানে উনার কতিপয় সম্মানিত বরকতময় লক্বব মুবারক উল্লেখ করা হলো:
اِبْنُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
اَهْلُ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (আহলু বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আহলু বাইত শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
بِضْعَةٌ مِّنْ رَّسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (বিদ্ব‘আতুম মির রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) - নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুজাসসাম মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জিস্ম মুবারক) উনার এক টুকরো নূর মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
اَلْـحَافِظُ (আল হাফিয)- হিফাযতকারী।
اَلْـحَامِدُ (আল হামিদ)- প্রশংসাকারী।
حَبِيْبُ اللهِ (হাবীবুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব।
اَلْـحَلِيْمُ (আল হালীম)- পরম ধৈর্যশীল, মহাসহনশীল।
اَلْـخَالِصُ (আল খ¦ালিছ)- খালিছ, পূত-পবিত্র।
اَلْـخَبِيْرُ (আল খ¦বীর)- মহাবিজ্ঞ, মহাবিচক্ষণ।
اَلْـخَلِيْلُ (আল খ¦লীল)- আখাচ্ছুল খাছ প্রিয়, আখাচ্ছুল খাছ মাহবূব।
خَلِيْلُ الرَّحْـمٰنِ (খ¦লীলুর রহমান)- মহান আল্লাহ উনার আখাচ্ছুল খাছ প্রিয়, মাহবূব।
ذُو السَّكِيْنَةِ (যুস সাকীনাহ)- সাকীনাহ, শান্তি, প্রশান্তি, ইতমিনান ইত্যাদির মালিক।
اُسْوَةٌ حَسَنَةٌ (উসওয়াতুন হাসানাহ্)- সর্বোত্তম আদর্শ মুবারক।
ذُو الـصِّـرَاطِ الْمُسْتَقِيْمِ (যুছ ছি¦রাত্বিল মুস্তাক্বীম)- ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার মালিক।
ذُو الْعِزَّةِ (যুল ‘ইঝ্ঝাহ)- সম্মানিত ইজ্জত মুবারক উনার মালিক।
ذُو الْفَضْلِ (যুল ফাদ্বল)- সম্মানিত ফযল মুবারক উনার মালিক।
ذُو الْكَرَامَةِ (যুল কারামাতি)- সম্মানিত কারামত মুবারক উনার মালিক।
ذُو الْوَسِيْلَةِ (যুল ওয়াসীলাহ)- সম্মানিত ওসীলাহ মুবারক উনার মালিক।
اَلرَّاضِىْ (আর রাদ্বী)- আখাচ্ছুল খাছ সন্তুষ্টি মুবারক প্রাপ্ত।
اَلرَّافِعُ (আর রাফি’)- সুউচ্চ মর্যাদা-মর্তবা মুবারক উনার অধিকারী এবং সুউচ্চ মর্যাদা-মর্তবা মুবারক দানকারী।
رَحْـمَةُ الْاُمَّةِ (রহমাতুল উম্মাহ)- সমস্ত উম্মতের জন্য রহমত মুবারক।
لِّـلْـعَـالَـمِيْنَ رَحْـمَةٌ (রহমাতুল্লিল ‘আলামীন)- সমস্ত আলম তথা কায়িনাতের জন্য সম্মানিত রহমত মুবারক।
اَلرَّشِيْدُ (আর রশীদ)- সৎপথপ্রাপ্ত, সৎপথ প্রদর্শনকারী, ন্যায়পরায়ণ, বিচক্ষণ।
اَلـزَّكِـىُّ (আঝ ঝাকি)- পূত-পবিত্র, বিচক্ষণ।
اَلسَّابِقُ بِالْـخَيْرَاتِ (আস সাবিকু বিল খইরাত)- খইর, কল্যাণ, ভালাই ইত্যাদি সর্ববিষয়ে অগ্রগামী।
اَلسَّخِىُّ (আস সাখি¦)- মহাদানশীল।
سَـيِّـدُ الْكَوْنَيْنِ (সাইয়্যিদুল কাওনাঈন)- দুই জগতের সাইয়্যিদ।
اَلشَّافِعُ (আশ শাফি’)- সুপারিশকারী, শাফায়েতকারী।
اَلشَّاكِرُ (আশ শাকির)- যথাযথ বিনিময় প্রদানকারী, যথার্থ পুরস্কারদাতা, যথাযথ শুকরিয়াকারী।
اَلطَّاهِرُ (আত্ব ত্বাহিরাহ)- পূত-পবিত্র, নিষ্কলুষ।
اَلطَّبِيْبُ (আত ত্ববীব)- চিকিৎসক, আরোগ্যদানকারী।
اَلْعَابِدُ (আল ‘আবিদ)- একনিষ্ঠ ইবাদাতকারী।
اَلْعَادِلُ (আল ‘আদিল)- ন্যায়বিচারকারী, ন্যায়পরায়ণ।
اَلْعِصْمَةُ (আল ‘ইছমাহ)- মহাপবিত্র, পূত-পবিত্র।
عِصْمَةُ اللهِ تَعَالـٰى (‘ইছমাতুল্লাহি তা‘য়ালা) মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সর্বপ্রকার পাপ থেকে মুক্ত, মহাপবিত্র, পূত-পবিত্র।
اَلْعَظِيْمُ (আল ‘আযীম)- মহাসম্মানিত, সুমহান মর্যাদা-মর্তবা মুবারক উনার অধিকারী।
اَلْعَزِيْزُ (আল ‘আঝীঝ)- প্রিয়, মাহবূব, মহাসম্মানিত, বেমেছাল মর্যাদা-মর্তবা ও প্রভাব-প্রতিপত্তি মুবারক উনার অধিকারী।
اَلْغَالِبُ (আল গ¦ালিব)- গালিব, মহাবিজয়ী, সর্বাধিক প্রাধান্য বিস্তারকারী।
اَلْغَنِىُّ (আল গ¦নি)- মহাসম্পদশালী, মহাধনী, অমুখাপেক্ষী।
اَلْفَاضِلُ (আল ফাদ্বিল)- মহাসম্মানিত, সুউচ্চ মর্যাদা-মর্তবা মুবারক উনার অধিকারী, সর্বশ্রেষ্ঠ, সর্বসেরা।
اَلْفَائِقُ (আল ফায়িক্ব)- সর্বশ্রেষ্ঠ, অনন্য।
اَلْفَصِيْحُ (আল ফাছীহ)- সুভাষী, বিশুদ্ধভাষী।
اَلْقَاسِمُ (আল ক্বাসিম)- বণ্টনকারী।
اَلْقَائِدُ (আল ক্বায়িদ)- সাইয়্যিদ, মহান পরিচালক।
قَائِدُ الْـخَيْرِ (ক্বায়িদুল খইর)- কল্যাণের দিকে পরিচালনাকারী, যিনি সবাইকে কল্যাণের দিকে নিয়ে যান।
اَلْقَرِيْبُ (আল ক্বরীব)- চিরনিকটবর্তী, অতি নিকটস্থ, অতি ঘনিষ্ঠ।
اَلْكَرِيْـمُ (আল কারীম)- মহাসম্মানিত, পরম দাতা, মহামর্যাদাবান, মহাদানশীল, মহানুভব।
اَلْمُؤْتَـمَنُ (আল মু’তামান)- চির বিশ্বস্ত।
اَلْمَأْمُوْنُ (আল মা’মূন)- নিরাপদ, বিপদমুক্ত, চির বিশ্বস্ত।
اَلْمَعْصُوْمُ (আল মা’ছূম)- নিস্পাপ, বেগুনাহ।
اَلْمَاجِدُ (আল মাজিদ)- গৌরবময়, মর্যাদাবান, মহান, গৌরবান্বিত।
اَلْمُعَظَّمُ (আল মু’য়ায্যাম)- মহাসম্মানিত, মহামর্যাদাবান।
اَلْمُعِيْنُ (আল মু‘ঈন)- সাহায্যকারী।
اَلْمُكَرَّمُ (আল মুর্কারম)- মহাসম্মানিত।
اَلْمَوْعِظَةُ (আল মাও‘িয়যাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ নছীহতকারী।
اَلْمُهَذَّبُ (আল মুহায্যাব)- পূত-পবিত্র, মহাপবিত্র।
اَلنَّاصِحُ (আল নাছিহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ নছীহতকারী, উপদেশদাতা।
اَلنُّوْرُ (আন নূর)- সম্মানিত নূর মুবারক।
نُوْرُ الْاُمَمِ (নূরুল উমাম)- সমস্ত উম্মতের নূর মুবারক, আলোকবর্তীকা।
اَلنِّعْمَةُ (আল নি’মাহ)- সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত মুবারক।
اَلْـهَادِىْ (আল হাদী)- সর্বশ্রেষ্ঠ হিদায়াতকারী।
نِعْمَةُ اللهِ (নি’মাতুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত মুবারক।
هَدِيَّةُ اللهِ (হাদিয়্যাতুল্লাহ)- মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে মহাসম্মানিত হাদিয়া মুবারক, তোহফা মুবারক।
اَلْوَاسِعُ (আল ওয়াসি’)- সীমাহীন ইলম মুবারক উনার অধিকারী, মহাদানশীল। সুবহানাল্লাহ!
এছাড়াও
سَيِّدُ الْبَشَرِ،سَيّـِدُ الْاَسْيَادِ، اَلْـمُـبَشِّـرُ، اَلْاَبَرُّ، اَلْاَجْوَدُ، اَجْوَدُ النَّاسِ، اَلْاَجَلُّ، اَلْاَخْشٰى لِلّٰهِ، اَلْاَزْكٰـى، اَلْاَعْظَمُ، اَلْاَعْلـٰى، اَكْرَمُ النَّاسِ، اَلْاَمْـجَدُ، اَلْاِمَامُ، اِمَامُ الْـخَيْرِ، اِمَامُ الْمُتَّقِيْنَ، اِمَامُ النَّاسِ، اَلْاَمَانُ، اَلْبَهَاءُ، اَلْـجَلِيْلُ، اَلْـجَوَّادُ، اَلْوَالِـىْ،اَلسَّاجِدُ، اَلسَّعِيْدُ، اَلشَّرِيْفُ، اَلصَّابِرُ، اَلصَّاحِبُ، صَاحِبُ الدَّرَجَةِ الْعَالِيَةِ، اَلرَّفِيْعُ، اَلصِّدِّيْقُ، صَاحِبُ الْفَضِيْلَةِ، صَاحِبُالشَّفَاعَةِ، اَلصَّالِحُ، اَلصِّرَاطُ الْمُسْتَقِيْمُ، اَلْعَارِفُ، اَلْعَافِـىْ، اَلْعَالِـمُ، اَلْعَلِيْمُ، اَلْعَامِلُ، اَلْعَائِلُ، اَلْعَلِـىُّ، اَلْغَنِـىُّ، اَلْفَارِقُ، اَلْقَارِىْ، اَلْقَاضِـىْ، اَلْقَانِتُ، اَلْقَائِلُ، اَلْقَائِمُ،اَلْكَافُّ، اَلْكَافِـىْ،اَلْكَامِلُ، اَلْمَاحِـىْ، اَلْمَانِعُ، اَلْمُبَارَكُ، اَلْمُبَلِّغُ، اَلْمُتَبَسِّمُ، اَلْمُتَّقِـىْ، اَلْمُتَوَكِّلُ،اَلْمَتِيْنُ، اَلْمُجَاهِدُ، اَلْمُجْتَهِدُ، اَلْمُجِيْبُ، اَلْمُجِيْرُ، اَلْمَجِيْدُ، اَلْمَحْفُوْظُ، اَلْمَحْمُوْدُ، اَلْمُخْبِرُ، اَلْمُخْتَارُ، اَلْمُخْتَصُّ، مَدِيْنَةُ الْعِلْمِ، اَلْمُذَكِّرُ، اَلْمُسْتَعِيْذُ،اَلْمُسْتَقِيْمُ،اَلْمَسْعُوْدُ، اَلْمَشْهُوْدُ،اَلْمُصَدِّقُ، اَلْمَصْدُوْقُ، اَلْمُصْلِحُ، اَلْمَعْرُوْفُ، اَلْمُعَلِّمُ، مُعَلِّمُالْاُمَّةِ، مُقِيْمُ السُّنَّةِ، نَاصِرُ الدِّيْنِ، اَلنَّاهِـىْ، اَلْوَاعِظُ، اَلْوَافِـىْ
ইত্যাদি ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছানী আলাইহিস সালাম উনার বিশেষ সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!