হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -১১


হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -১১

আবু সুফইয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হুদাইবিয়া সন্ধি নবায়ন উপলক্ষে মদীনা শরীফে গিয়ে উনার কন্যা উম্মুল মুমিনীন উম্ম হাবীবাহ আলাইহাস সালাম উনাকে দেখতে তার ঘরে যান (তখন আবু সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ইসলাম গ্রহন করেননি)। তিনি উনার গৃহে প্রবেশ করে হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিছানার উপর বসতে উদ্যত হন। এমন সময় তার কন্যা বিছানাটি গুটিয়ে ফেলেন। আবু সুফইয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, হে আমার কন্যা! আপনি কি আমার জন্য এ বিছানাকে অপছন্দ করছেন? নাকি বিছানার জন্য আমাকে অপছন্দ করছো? তিনি উত্তরে বলেন,
هُوَ فِراشُ رَسولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَنْتَ مُشْرِكٌ نَجَسٌ، فَلَمْ أُحِبَّ أَنْ تَجْلِسَ عَلَى فِرَاشِهِ
এটা হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিছানা। আর আপনি মুশরিক, অপবিত্র। সুতরাং আপনি উনার বিছানায় বসুন তা আমি পছন্দ করি না। (বিদায়া ওয়ান নিহায়া ৪/২৮০)
ফিকিরের বিষয় হচ্ছে, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহব্বত ও মর্যাদার কতটা গুরুত্ব দেয়া হতো। সুবহানাল্লাহ
 হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -১০

 
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -১০

হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের কিবলা ছিলেন স্বয়ং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
হাদীছ শরীফে বর্ণিত আছে,
أَخْبَرَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ الأَنْصَارِيُّ ـ وَكَانَ تَبِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَخَدَمَهُ وَصَحِبَهُ أَنَّ أَبَا بَكْرٍ كَانَ يُصَلِّي لَهُمْ فِي وَجَعِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم الَّذِي تُوُفِّيَ فِيهِ، حَتَّى إِذَا كَانَ يَوْمُ الاِثْنَيْنِ وَهُمْ صُفُوفٌ فِي الصَّلاَةِ، فَكَشَفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم سِتْرَ الْحُجْرَةِ يَنْظُرُ إِلَيْنَا، وَهْوَ قَائِمٌ كَأَنَّ وَجْهَهُ وَرَقَةُ مُصْحَفٍ، ثُمَّ تَبَسَّمَ يَضْحَكُ، فَهَمَمْنَا أَنْ نَفْتَتِنَ مِنَ الْفَرَحِ بِرُؤْيَةِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، فَنَكَصَ أَبُو بَكْرٍ عَلَى عَقِبَيْهِ لِيَصِلَ الصَّفَّ، وَظَنَّ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم خَارِجٌ إِلَى الصَّلاَةِ، فَأَشَارَ إِلَيْنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ أَتِمُّوا صَلاَتَكُمْ، وَأَرْخَى السِّتْرَ،
“হযরত আনাস ইবনে মালিক আনসারী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু যিনি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাদিম এবং সাহাবী ছিলেন উনার থেকে বর্ণিত, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মারিদ্বী শানে অবস্থান করা অবস্থায় হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক আলাইহিস সালাম ছাহাবীগণকে নিয়ে নামায আদায় করতেন। অবশেষে যখন সোমবার এল এবং লোকেরা নামাযের জন্য কাতারে দাঁড়ালেন, তখন হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হুজরা শরীফের পর্দা উঠিয়ে আমাদের দিকে তাকালেন। তিনি দাঁড়িয়ে ছিলেন, উনার চেহারা মুবারক যেন কুরআন শরীফের পৃষ্ঠার ন্যায় ঝলমল করছিল। তিনি মুচকি হাসলেন। আমরা হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেখতে পেয়ে খুশীতে প্রায় আত্মহারা হয়ে গিয়েছিলাম এবং হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক আলাইহিস সালাম ইমামতি থেকে কাতারে দাঁড়ানোর জন্য পিছন দিকে সরে আসছিলেন। তিনি ভেবেছিলেন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হয়তো নামাযের বেরিয়ে আসবেন। হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে ইশারায় জানালেন যে, তোমরা তোমাদের নামায পূর্ণ করে নাও। অতঃপর তিনি পর্দা ছেড়ে দিলেন।” (বুখারী শরীফ- কিতবুল আযান- হাদীছ শরীফ ৬৮০, মুসলিম শরীফ ৪১৯)
পোষ্টে সংযুক্ত ছবিটি খুবই ভালো করে লক্ষ্য করুন, অন্তরে গেঁথে নিন। তাহলে সেসময় পরিস্থিতিটা ভালো বুঝতে পারবেন।
১) হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমগন ক্বাবা শরীফের দিকে মুখ করে মসজিদে নববীতে নামায আদায় করছিলেন।
২) হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হুজরা শরীফ ছিলো মসজিদের সাথে সংযুক্ত ঠিক বাম দিকে।
৩) নামায তখন চলছিলো।
৪) এমতাবস্থায় হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হুজরা শরীফ থেকে পর্দা উঠিয়ে তাকালেন। উনার চেহারা মুবারক এসময় ছিলো অত্যান্ত উজ্জল।
৫) ছাহাবায়ে কিরাম নামাযরত অবস্থায় বিষয়টা কিভাবে বুঝলেন? ছবির দিকে তাকান , উনাদের নামাযের মধ্যেই মিনিমাম ৯০ ডিগ্রী ঘুরে তাকাতে হয়েছে।
৫) হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হাসি মুবারক দেখে যেভাবে আন্দন্দে আত্মহারা হলেন, সেভাবে দেখতে গেলে কি কাতারবদ্ধ থাকা যায়?
৬) কাতারের সামনে ছিলেন হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক আলাইহিস সালাম তিনি। উনি কি করলেন? নামাযের ইমামতি ছেড়ে দিয়ে পিছনের কাতারে চলে আসতে লাগলেন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সেটা না করার জন্য ইশারা করলেন। কি বুঝা গেলো এ ইশারা দেখতে হলে স্বয়ং ইমাম সাহেবকেও কিবলা থেকে মুখ ঘুরিয়ে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দিকে তাকাতে হয়েছিলো।
৭) হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নামায চালিয়ে যেতে বললেন।
তারমানে এতক্ষণ যা কিছু হলো নামায কিন্তু চলমান। সকল কিবলার কিবলা যখন উনার নূরানী চেহারা মুবারক দেখালেন তখন ছাহাবায়ে কিরাম উনারা ক্বাবা শরীফের দিক থেকে মুখ সরিয়ে মিনিমাম ৯০ ডিগ্রী ঘুরে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দিকে কিবলা স্থির করে নিলেন। সম্ভবত ঐসময় ইমাম হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক আলাইহিস সালাম সূরা কিরয়াতও পাঠ করাও বন্ধ রেখেছিলেন।
নবীজী কি বলেছিলেন আপনাদের নামায হয়নি। আপনারা নামায দোহরিয়ে পড়ুন। আপনারা নামায বাদ দিয়ে তাকাচ্ছেন কেন? বরং তিনি হাসি মুবারক দিয়েছিলেন, ইশকে রসূলের স্বীকৃতি দিয়েছিলেন এবং সে চলমান নামাযও শেষ করতে বলেছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
ঘটনাটা ফিকির করেন অনেক কিছু বুঝবেন।
 হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -৯

 হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -৯

হযরত ইমাম কাজী আয়ায রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ‘আশ শিফা বিতারিফে হুকুকীল মুস্তফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ কিতাবে বর্ণনা করেন,
وَمِنْ إِعْظَامِهِ وَإِكْبَارِهِ إِعْظَامُ جَمِيعِ أَسْبَابِهِ، وَإِكْرَامُ مَشَاهِدِهِ وَأَمْكِنَتِهِ مِنْ مَكَّةَ وَالْمَدِينَةِ، وَمَعَاهِدِهِ. وَمَا لَمَسَهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَوْ عُرِفَ به. عَنْ صَفِيَّةَ بِنْتِ نَجْدَةَ قَالَتْ: كَانَ لِأَبِي مَحْذُورَةَ قُصَّةٌ فِي مُقَدَّمِ رَأْسِهِ إِذَا قَعَدَ وأرسلها أصابت الأرض.. فقيل له: أَلَا تَحْلِقُهَا؟! فَقَالَ: لَمْ أَكُنْ بِالَّذِي أَحْلِقُهَا وَقَدْ مَسَّهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِيَدِهِ.
হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি গভীর সম্মান ও আদব প্রদর্শনের অন্যতম দিক হলো উনার সঙ্গে সম্পর্কিত সব কিছুর প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করা। উনার কদম মুবারক স্পর্শীত স্থানসমূহকে মর্যাদা দেওয়া। উনার অবস্থানস্থল যেমন মক্কা শরীফ ও মদীনা শরীফ, উনার অবস্থান ও ইবাদতের স্থান গুলোকে সম্মান করা। এবং যেসব জিনিস হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্পর্শ করেছেন বা যেগুলো উনার সঙ্গে সম্পর্কিত হিসেবে পরিচিত সেসবেরও ।
হযরত সাফিয়্যা বিনতে নাজদাহ রহমতুল্লাহি আলাইহিহা থেকে বর্ণিত,
হযরত আবূ মাহযূরাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার কপালের সামনের দিকে একটি লম্বা চুলের গোছা ছিল। যখন তিনি বসতেন, সেই চুলের আগা মাটিতে লেগে যেত। কেউ উনাকে বললেন, ‘আপনি এটা ছেটে ফেলেন না কেন?’
তখন তিনি বললেন, ‘আমি কখনোই এটা ছাটবো না। কারণ হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিজের হাতে এই স্থানটি স্পর্শ করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
وَكَانَتْ فِي قَلَنْسُوَةِ خَالِدِ بْنِ الْوَلِيدِ شَعَرَاتٌ مِنْ شَعَرِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.. فَسَقَطَتْ قَلَنْسُوَتُهُ فِي بَعْضِ حُرُوبِهِ فَشَدَّ عَلَيْهَا شَدَّةً أَنْكَرَ عَلَيْهِ أَصْحَابُ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَثْرَةَ مَنْ قُتِلَ فِيهَا.. فَقَالَ: ‌لَمْ ‌أَفْعَلْهَا ‌بِسَبَبِ ‌الْقَلَنْسُوَةِ، ‌بَلْ ‌لِمَا ‌تَضَمَّنَتْهُ ‌مِنْ ‌شَعَرِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِئَلَّا أُسْلَبَ «٥» بَرَكَتَهَا وَتَقَعَ فِي أَيْدِي الْمُشْرِكِينَ.
হযরত খালিদ ইবনু ওয়ালিদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর টুপিতে হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চুলের কয়েকটি কেশরাশি রাখা ছিল।
এক যুদ্ধে উনার সেই টুপিটি পড়ে গেল। তখন হযরত খালিদ ইবনু ওয়ালিদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু সেটি উদ্ধার করার জন্য এমন প্রবলভাবে শত্রুর দিকে ঝাঁপিয়ে পড়লেন যে, এতে অনেক মানুষ শহীদ হলো।
হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অন্যান্য ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগন এই ঘটনায় উনার প্রতি বিস্ময় প্রকাশ করলেন। অন্যান্য ছাহাবায়ে কিরাম অবাক হলেন যে, এত বিপদ মাথায় নিয়ে তিনি কেন টুপিটির জন্য এত লড়লেন?
তখন হযরত খালিদ ইবনু ওয়ালিদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বললেন, আমি টুপির জন্য এমন করিনি; বরং টুপির ভেতরে ছিল হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর চুল মুবারক। আমি ভয় পেয়েছিলাম যেন উনার বরকত থেকে বঞ্চিত না হই, এবং যেন তা মুশরিকদের হাতে না পরে। (আশ শিফা বিতারিফে হুকুকীল মুস্তফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ২য় খন্ড ১২৭ পৃষ্ঠা)
সুবহানাল্লাহ! এই হচ্ছে হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নমুনা। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগন সব কিছুর উপর হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রাধান্য দিতেন।
 হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম - ৮

 হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম - ৮

ইন্তেকাল পথযাত্রী হযরত বিলাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাক্ষাত লাভের সুযোগ হচ্ছে মর্মে আনন্দ প্রকাশ-
হযরত বিলাল ইবন রাবাহ রদ্বিয়াল্লাহ তা'আলা 'আনহু যখন ইন্তেকাল পথযাত্রী, তখন উনার স্ত্রী দুঃখ ও বেদনায় ভরাক্রান্ত হয়ে কাঁদছেন আর বলছেন, হায় কষ্ট! হায় দুশ্চিন্তা! তখন বিলাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু স্ত্রীর দুঃখ-বেদনা প্রকাশের প্রেক্ষিতে নিজের মনের কথা তুলে ধরে বলেন,
بَلْ وَا طَرَبَاهُ غَدًا نَلْقَى الأَحِبَّةَ مُحَمَّدًا وَصَحِبَه
'বরং খুশী ও আনন্দের কথা যে, কালকেই আমি আমার সর্বাধিক প্রিয় নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং উনার সাথীদের সাথে মিলিত হব' (মিরকাতুল মাফাতীহ ৪/১৩২৫)
অর্থাৎ তিনি স্ত্রীকে শান্ত্বনা দিচ্ছেন যে, উনার ইন্তেকাল স্ত্রীর জন্য দুঃখ ও বেদনার বিষয় হলেও এই ইন্তোকালের মাধ্যমেই তিনি হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সাক্ষাত লাভে ধন্য হবেন। এটা উনার জন্য পরম আনন্দের বিষয়। কতটা হুব্বে রসূল প্রকাশ করতেন ছাহাবীগন সেটা চিন্তা করে দেখেন।
 হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-৭

 হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-৭

عَنْ عُمَارَةَ بْنِ خُزَيْمَةَ، أَنَّ عَمَّهُ، حَدَّثَهُ وَهُوَ، مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم ابْتَاعَ فَرَسًا مِنْ أَعْرَابِيٍّ فَاسْتَتْبَعَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِيَقْضِيَهُ ثَمَنَ فَرَسِهِ فَأَسْرَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْمَشْىَ وَأَبْطَأَ الأَعْرَابِيُّ فَطَفِقَ رِجَالٌ يَعْتَرِضُونَ الأَعْرَابِيَّ فَيُسَاوِمُونَهُ بِالْفَرَسِ وَلاَ يَشْعُرُونَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم ابْتَاعَهُ فَنَادَى الأَعْرَابِيُّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ إِنْ كُنْتَ مُبْتَاعًا هَذَا الْفَرَسَ وَإِلاَّ بِعْتُهُ ‏.‏ فَقَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم حِينَ سَمِعَ نِدَاءَ الأَعْرَابِيِّ فَقَالَ ‏"‏ أَوَلَيْسَ قَدِ ابْتَعْتُهُ مِنْكَ ‏"‏ ‏.‏ فَقَالَ الأَعْرَابِيُّ لاَ وَاللَّهِ مَا بِعْتُكَهُ ‏.‏ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ بَلَى قَدِ ابْتَعْتُهُ مِنْكَ ‏"‏ ‏.‏ فَطَفِقَ الأَعْرَابِيُّ يَقُولُ هَلُمَّ شَهِيدًا ‏.‏ فَقَالَ خُزَيْمَةُ بْنُ ثَابِتٍ أَنَا أَشْهَدُ أَنَّكَ قَدْ بَايَعْتَهُ ‏.‏ فَأَقْبَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَى خُزَيْمَةَ فَقَالَ ‏"‏ بِمَ تَشْهَدُ ‏"‏ ‏.‏ فَقَالَ بِتَصْدِيقِكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ ‏.‏ فَجَعَلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم شَهَادَةَ خُزَيْمَةَ بِشَهَادَةِ رَجُلَيْنِ ‏.‏
হযরত উমারাহ ইবনু খুযাইমাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত,উনার চাচা জানিয়েছেন যে, তিনি হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ছাহাবীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। একদা হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক বেদুঈনের কাছ হতে একটি ঘোড়া কিনলেন। হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে ঘোড়ার দাম নেয়ার জন্য উনার পিছে পিছে আসতে বললেন। হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দ্রুত চলতে লাগলেন। তাতে বেদুঈন পিছে পড়ে গেলো। তখন কতিপয় ব্যক্তি বেদুঈনের সামনে এসে দরদাম করতে শুরু করলো। তারা জানতো না যে, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এটা কিনেছেন। বেদুঈন হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে ডেকে বললো, যদি আপনি কিনতে চান তবে কিনুন, নতুবা আমি এটা বিক্রি করে দিচ্ছি। হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বেদুঈনের ডাক শুনে দাঁড়ালেন। তিনি বললেন, আমি কি তোমার কাছ হতে এটা ক্রয় করিনি? বেদুঈন বললো, আল্লাহর কসম! না, আমি আপনার নিকট তা বিক্রি করিনি (নাউযুবিল্লাহ)। হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হাঁ, আমি কিছুক্ষণ আগেই তোমার কাছ হতে এটা কিনেছি। বেদুঈন বলতে লাগলো, তাহলে সাক্ষী পেশ করুন। তখন হযরত খুযাইমাহ্ ইবনু সাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, নিশ্চয়ই তুমি এই ঘোড়া হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট বিক্রি করেছো। হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত খুযাইমাহ ইবনু সাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে বললেন, তুমি কী সাক্ষ্য দিচ্ছো? তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার কথার সত্যতার অনুকূলে সাক্ষ্য দিচ্ছি। হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত খুযাইমাহ ইবনু সাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর একার সাক্ষ্য দুইজনের সাক্ষ্যের সমান গণ্য করলেন। (আবু দাউদ শরীফ ৩৬০৭)
এ বিষয়ে বর্নিত আছে,
من طريق مُحَمَّد بْن زُرَارَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ خُزَيْمَةَ بْنِ ثَابِتٍ، حَدَّثَنِي عُمَارَةُ بْنُ خُزَيْمَةَ، عَنْ أَبِيهِ خُزَيْمَةَ بْنِ ثَابِتٍ : " أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ابْتَاعَ مِنْ سَوَاءَ بْنِ الْحَارِثِ الْمُحَارِبِيِّ فَرَسًا فَجَحَدَهُ فَشَهِدَ لَهُ خُزَيْمَةُ بْنُ ثَابِتٍ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَا حَمَلَكَ عَلَى الشَّهَادَةِ وَلَمْ تَكُنْ مَعَهُ؟ قَالَ: صَدَقْتَ يَا رَسُولَ اللَّهِ، وَلَكِنْ صَدَّقْتُكَ بِمَا قُلْتَ وَعَرَفْتُ أَنَّكَ لَا تَقُولُ إِلَّا حَقًّا، فَقَالَ: مَنْ شَهِدَ لَهُ خُزَيْمَةُ أَو شهِدَ عَلَيْهِ ؛ فَحَسْبُهُ .
মুহম্মাদ ইবনু জরারাহ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু খুযাইমাহ ইবনু সাবিত বলেন, আমাকে বর্ণনা করেছেন উমারাহ ইবনু খুযাইমাহ, তিনি তাঁর পিতা হযরত খুযাইমাহ ইবনু সাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সূত্রে বলেন,
হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাওয়া ইবনুল হারিস আল-মুহারিবী নামের একজনের কাছ থেকে একটি ঘোড়া ক্রয় করেন। কিন্তু সে ব্যক্তি (মূল্য পাওয়ার পর) তা অস্বীকার করে। তখন খুযাইমাহ ইবনু সাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএর পক্ষে সাক্ষ্য দেন।
তখন হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে বললেন,
“তুমি তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলে না, তবু তোমাকে কোন বিষয় সাক্ষ্য দিতে অনুপ্রাণিত করল?”
হযরত খুযাইমাহ ইবনু সাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উত্তর দিলেন,
“হে আল্লাহর রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি সত্য বলেছেন। আমি আপনাকে বিশ্বাস করেছি, কারণ আমি জানি আপনি কখনো মিথ্যা বলেন না; আপনি কেবল সত্যই বলেন।”
তখন হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,
যার পক্ষে বা বিপক্ষে খুযাইমাহ সাক্ষ্য দেবে, সেটাই যথেষ্ট (অর্থাৎ উনার একক সাক্ষ্যই প্রমাণস্বরূপ গণ্য হবে)। (ইবনে আবি শায়বা ১৯, সুনানুল কুবরা বায়হাকী ২০৫১৬, মুজামুল কবীর তাবরানী ৩৮৩০)
এ কারণে হযরত খুযাইমাহ ইবনু সাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-কে “ذو الشهادتين” (দুই সাক্ষ্যধারী) উপাধি দেওয়া হয়। অর্থাৎ উনার এক সাক্ষ্যই দুজন সাক্ষ্যের সমান ধরা হতো, কারণ তিনি হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সত্যবাদিতার প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস রেখেছিলেন।
 হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-৬


 
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-৬

وَسُئِلَ عَلِيّ بن أَبِي طَالِب رَضِيَ اللَّه عَنْهُ كَيْفَ كَانَ حُبُّكُمْ لِرَسُولِ اللَّه صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ قَالَ ‌كَانَ ‌والله ‌أَحَبَّ ‌إِلَيْنَا ‌من ‌أَمْوَالِنَا ‌وَأَوْلادِنَا ‌وَآبَائِنَا ‌وأُمَّهَاتِنَا ‌وَمِنَ ‌المَاءِ ‌الْبَارِدِ ‌عَلَى ‌الظَّمَإِ،
হযরত আলী ইবন আবি তালিব আলাইহিস সালাম উনাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এর প্রতি আপনাদের ভালোবাসা কেমন ছিল? তিনি এ প্রশ্নের জবাবে বলেন,
"আল্লাহ পাকের শপথ! তিনি আমাদের কাছে আমাদের ধন সম্পদ, আমাদের সন্তান-সন্ততি, আমাদের পিতৃবর্গ, আমাদের মায়েদের এবং পিপাসার্ত অবস্থায় ঠান্ডা পানির চেয়েও অধিক প্রিয় ছিলেন ।" (আশ শিফা ২/২২)
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত ছহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাদের থেকে শিখতে হবে। তবেই ঈমানের স্বাদ পাওয়া যাবে।
 হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-৫

 হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-৫

হযরত জাবির ইবনু আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বলেছিলেন,
لَوْ قَدْ جَاءَنَا مَالُ الْبَحْرَيْنِ قَدْ أَعْطَيْتُكَ هَكَذَا وَهَكَذَا وَهَكَذَا ‏"‌‏.‏ فَلَمَّا قُبِضَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَجَاءَ مَالُ الْبَحْرَيْنِ قَالَ أَبُو بَكْرٍ مَنْ كَانَتْ لَهُ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عِدَةٌ فَلْيَأْتِنِي‏.‏ فَأَتَيْتُهُ فَقُلْتُ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ كَانَ قَالَ لِي ‏"‏ لَوْ قَدْ جَاءَنَا مَالُ الْبَحْرَيْنِ لأَعْطَيْتُكَ هَكَذَا وَهَكَذَا وَهَكَذَا ‏"‌‏.‏ فَقَالَ لِي احْثُهْ‏.‏ فَحَثَوْتُ حَثْيَةً فَقَالَ لِي عُدَّهَا‏.‏ فَعَدَدْتُهَا فَإِذَا هِيَ خَمْسُمِائَةٍ، فَأَعْطَانِي أَلْفًا وَخَمْسَمِائَةٍ‏.‏
যদি আমার নিকট বাহরাইন থেকে মাল আসে তবে আমি তোমাকে এ পরিমাণ, এ পরিমাণ, এ পরিমাণ দিব। পরে যখন হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিছাল শরীফ সংঘটিত হয়, পরে বাহরাইনের সম্পদ এসে যায় তখন খলীফা হযরত আবূ বকর সিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বললেন, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট যে ব্যক্তির কোন ওয়াদা থাকে, সে যেন আমার নিকট আসে। তখন আমি উনার নিকট গেলাম এবং বললাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বলেছিলাম, যদি আমার নিকট বাহরাইনের সম্পদে আসে, তবে আমি তোমাকে এ পরিমাণ, এ পরিমাণ ও এ পরিমাণ দিব। হযরত আবূ বকর সিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু আমাকে বললেন, তুমি অঞ্জলি ভরে নাও। আমি এক অঞ্জলি উঠালাম। তিনি আমাকে বললেন, এগুলো গুণে দেখ। আমি গুণে দেখলাম যে, তাতে পাঁচশ রয়েছে। তখন তিনি আমাকে এক হাজার পাঁচশ দিলেন। (বুখারী শরীফ ৩১৬৪)
ফিকিরের বিষয় হচ্ছে হযরত আবূ বকর সিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার কাছে হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কথা বলা মাত্র কোন ফিকির কোন যাচাই, কোন সাক্ষী তলব না করেই সে পরিমাণ সম্পদ দিয়ে দিলেন। হুব্বে রসূল এটাকেই বলে। সুবহানাল্লাহ!
 হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-৪

 হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-৪

হযরত যায়দ ইবন সাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উহুদ যুদ্ধের দিনে আমাকে হযরত সা'দ ইবনুর রাবী' রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এর অনুসন্ধানে এই বলে পাঠালেন যে,
إن رأيته فالمرأه مني السلام، وَقُلْ لَهُ يَقولُ لَكَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وسَلَّمَ كَيْفَ تَجِدُكَ ؟
'যদি তুমি তাকে পাও তাহলে আমার সালাম পৌঁছে দিও এবং তাকে বলো, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপনাকে বলেছেন, 'আপনার অবস্থা কি?
হযরত যায়েদ ইবন সাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আমি নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে উনাকে খুঁজতে থাকলাম এবং উনাকে জীবনের শেষ প্রহরে দেখতে পেলাম। দেখি উনার শরীরে ৭০টি তীর, বল্লম, বর্শা ও তরবারীর আঘাত রয়েছে। আমি তাকে বললাম, হে সা'দ। হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপনার নিকট সালাম পাঠিয়েছেন এবং তিনি আপনার উদ্দেশ্যে বলেছেন যে, আপনার অবস্থা কি? তা যেন আমাকে অবহিত করেন।
হযরত সা'দ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি এবং আপনার প্রতি আমার সালাম। উনাকে বলবেন যে, আমি জান্নাতের সুঘ্রান পাচ্ছি। আর আনসারদেরকে বলবেন,
لا عُذْرَ لَكُمْ عِنْدَ اللهِ أَنْ يُخْلِصَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ وَفِيْكُمْ شُفْرٌ يَطْرِفُ
তোমাদের জীবনের শেষ বিন্দু দিয়ে হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি নিষ্ঠাবান থেকো, অন্যথায় আল্লাহর নিকট তোমাদের কোনো ওযর গ্রহণযোগ্য হবে না'।
যায়েদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, এই কথা বলার সাথে সাথেই তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
(মুসতাদরাক আলাস সহীহাইন ৪৯০২, দালায়েলুন নবুওয়া লিল বায়হাকী ৩/২৪৮)
জিহাদে প্রচন্ড আহত হয়েও , শরীরে ৭০ টি আঘাত নিয়েও উনার চিন্তা ছিলো হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিয়ে। এরই নাম হুব্বে রসূল।
 হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-৩

 হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-৩

বদরের জিহাদে সময় হযরত আব্দুল্লাহ ইবন মাস'উদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, 'আমি আল-মিকদাদ ইবনুল আসওয়াদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এর একটি শান মুবারক দেখেছি, যে সে ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া আমার নিকট পৃথিবীর সমস্ত বস্তুর চেয়ে অধিক প্রিয়।
হযরত আল-মিকদাদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট এমন সময় আসলেন, যখন হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুশরিকদের বিরুদ্ধে দু'আ করছিলেন। হযরত আল-মিকদাদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন,
لَا تَقُولُ كَمَا قَالَ قَوْمُ مُوسَى اذْهَبْ أَنْتَ وَرَبُّكَ فَقَاتِلَا وَلَكِنَّا نُقَاتِلُ عَنْ يَمِينِكَ وَعَنْ شِمَالِكَ وَبَيْنَ يَدَيْكَ وَخَلْفَكَ فَرَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَشْرَقَ وَجْهُهُ وَسَرَّهُ
আমরা এমনটি বলবো না, যেমন হযরত মুসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালামকে উনার কওম বলেছিল, 'আপনি আর আপনার রব দুজনে গিয়ে যুদ্ধ করুন', বরং আমরা আপনার ডান পাশে, বাম পাশে, সম্মুখ থেকে এবং পেছন থেকে লড়াই করবো'। আমি হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দিকে তাকিয়ে দেখলাম যে, (আল-মিকদাদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর এ কথার পর) উনার মুখমন্ডল উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। তিনি আনন্দিত হয়েছেন' ।
একইভাবে আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আরো বলেন,
فَقَامَ سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ، فَقَالَ : إِيَّانَا تُرِيدُ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ، لَوْ أَمَرْتَنَا أَنْ تُحِيضَهَا الْبَحْرَ لَأَحْضْنَاهَا ، وَلَوْ أَمَرْتَنَا أَنْ نَضْرِبَ أَكْبَادَهَا إِلَى بَرْكِ الْغمَادِ لَفَعَلْنَا،
তখন সা'দ ইবন 'উবাদাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু দাঁড়ালেন, অতঃপর বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! ঐ সত্তার শপথ, যার হাতে আমার জীবন! আপনি যদি আমাদের ঘোড়াসহ সমুদ্রে ঝাঁপ দিতে নির্দেশ করেন আমরা অবশ্যই সাগরে ঝাঁপ দেব। আপনি যদি নির্দেশ দেন যে, আমরা ঘোড়াগুলোকে পদাঘাত করে অগ্রসর হয়ে বারকুল গিমাদ পর্যন্ত পৌছে যাই, আমরা অবশ্যই তা করব' (মুসনাদে আহমদ ৩৬৯৮, ১৩৭০৩)
মদীনা শরীফ থেকে বারকুল গিমাদ সাগর তীর প্রায় ১৭০০ কিলোমিটার দূরত্ব।
 হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-২

 

হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-২

মক্কার কাফিরদের হাতে বন্দী সাহাবী হযরত যায়েদ ইবনুদ দাসিনা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু কে যখন হত্যার উদ্দেশ্যে কা'বার আঙ্গিনা থেকে বের করে নেওয়া হয়, তখন আবু সুফইয়ান ইবন হারব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (তিনি তখন ঈমান গ্রহন করেন নাই) তাকে জিজ্ঞাসা করেন, হে যায়েদ। আল্লাহর নামে তোমাকে বলছি, তুমি কি এটা পছন্দ কর যে হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ মুহূর্তে আমাদের নিকট তোমার স্থানে থাকুক, আমরা উনাকে শহীদ করি (নাউযুবিল্লাহ), বিনিময়ে তুমি মুক্ত হয়ে তোমার পরিবারে ফিরে যাও? তিনি উত্তরে বলেন:
وَاللَّهِ مَا أُحِبُّ أَنَّ مُحَمَّدًا الآن في مَكَانِهِ الَّذي هُوَ فِيْهِ تُصِيبُه شَوْكَةٌ تُؤْذِيهِ وَإِنِّي جَالِسٌ فِي أَهْلِي
আল্লাহ পাকের শপথ! এখন হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেখানে আছেন, সেখানে থেকেই উনার শরীরে কাঁটার আঁচর লেগে তিনি কষ্ট পাবেন, আর আমি আমার পরিবারে বসে থাকবো, আমি তাও পছন্দ করি না। তখন আবু সুফইয়ান বলেন,
مَا رَأَيْتُ مِنَ النَّاسِ أَحَدًا يُحِبُّ أَحَدًا حُبِّ أَصْحَابِ مُحَمَّدٍ مُحَمَّدًا
"আমি মানুষের মধ্যে কোনো ব্যক্তি অন্য কোনো ব্যক্তিকে এমন ভালোবাসতে দেখিনি, যেমন হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথীগণ উনাকে যেরুপ ভালোবাসেন। (ইবনে হিশাম- সিরাতুন নাবাবিয়াহ ২/১৭২)
 হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-১

 হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-১

عَنْ أَنَسٍ قَالَ لَمَّا كَانَ يَوْمُ أُحُدٍ انْهَزَمَ النَّاسُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَأَبُوْ طَلْحَةَ بَيْنَ يَدَيْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مُجَوِّبٌ بِهِ عَلَيْهِ بِحَجَفَةٍ لَهُ وَكَانَ أَبُوْ طَلْحَةَ رَجُلًا رَامِيًا شَدِيْدَ الْقِدِّ يَكْسِرُ يَوْمَئِذٍ قَوْسَيْنِ أَوْ ثَلَاثًا وَكَانَ الرَّجُلُ يَمُرُّ مَعَهُ الْجَعْبَةُ مِنْ النَّبْلِ فَيَقُوْلُ انْشُرْهَا لِأَبِيْ طَلْحَةَ فَأَشْرَفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَنْظُرُ إِلَى الْقَوْمِ فَيَقُوْلُ أَبُوْ طَلْحَةَ يَا نَبِيَّ اللهِ بِأَبِيْ أَنْتَ وَأُمِّيْ لَا تُشْرِفْ يُصِيْبُكَ سَهْمٌ مِنْ سِهَامِ الْقَوْمِ نَحْرِيْ دُوْنَ نَحْرِكَ
হযরত আনাস ইবন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত,তিনি বলেন, ওহুদ যুদ্ধের এক সময়ে হযরত সহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমগন যুদ্ধ করতে করতে হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে আলাদা হয়ে পড়েছিলেন। তখন হযরত আবূ ত্বলহা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ঢাল হাতে নিয়ে হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সামনে প্রাচীরের মত দৃঢ় হয়ে দাঁড়ালেন। হযরত আবূ ত্বলহা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু সুদক্ষ তীরন্দাজ ছিলেন। এক নাগাড়ে তীর ছুঁড়তে থাকায় তাঁর হাতে ঐদিন দু’ বা তিনটি ধনুক ভেঙ্গে যায়। ঐ সময় তীর ভর্তি তীরাধার নিয়ে যে কেউ উনার নিকট দিয়ে যেতো হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকেই বলতেন, তোমরা তীরগুলি হযরত আবূ ত্বলহা রদ্বিয়াল্লাহু আনহুর জন্য রেখে দাও। এক সময় হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাথা উঁচু করে শত্রুদের অবস্থা দেখতে চাইলে হযরত আবূ ত্বলহা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বললেন, হে আল্লাহ পাকের নবী! আমার মাতা পিতা আপনার জন্য কুরবান হোক, আপনি মাথা উঁচু করবেন না। হয়ত শত্রুদের নিক্ষিপ্ত তীর এসে আপনার শরীর মুবারকে লাগতে পারে। আমার বক্ষ আপনার বক্ষের সামনে ঢাল হিসেবে রয়েছে। (অর্থাৎ, আমি আপনাকে আড়াল করে দাঁড়িয়ে আছি যদি শত্রুদের কোনো তীর এসে যায়ও তাহলে আমার শরীরে আগে বিদ্ধ হবে। আপনার শরীর মুবারকে স্পর্শ করবে না।)
(বুখারী শরীফ- কিতাবু মানাকিবুল আনছার- বাবু মানাকিবে আবু তালহা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু- হাদীছ ৩৮১১ )
 মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসবনামাহ মুবারক ও  পরিচিতি মুবারক

 
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসবনামাহ মুবারক ও  পরিচিতি মুবারক 

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত পিতা হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত যায়েদ আলাইহিস সালাম। তিনি ছিলেন জলীলুল ক্বদর নবী ও রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত ভাই সাইয়্যিদুনা হযরত হারূন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বংশধর। সুবহানাল্লাহ! তিনি ছিলেন বনূ নাযীর গোত্রের। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত পিতা উনার দিক থেকে সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার নিকট যেয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মিলিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! যেমন-

اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُناَ حَضْرَتْ رَيْـحَانَةُ بِنْتُ زَيْدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ خَنَافَةَ بْنِ شَـمْعُوْنَ بْنِ زَيْدِ )عَدَدُ الْاٰبَاءِ غَيْرُ مَرْوِىٍّ( بْنِ النَّضِيْرِ بْنِ النَّحَّامِ بْنِ نَاخُوْمِ بْنِ الْـخَزْرَجِ بْنِ الصَّرِيْحِ بْنِ التَّوْمَانِ بْنِ السِّبْطِ بْنِ الْيَسَع بْنِ سَعْدِ بْنِ لَاوِىِّ بْنِ خَيْرِ بْنِ النَّجَّامِ بْنِ تَنْحُوْمَ بْنِ عَازِرِ بْنِ عَيْزَر بْنِ هَارُوْنَ بْنِ عِمْرَانَ بْنِ قَاهَاتِ بْنِ لَاوِىِّ بْنِ يَعْقُوْبَ بْنِ اِسْحَاقَ بْنِ اِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ

১. اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُناَ حَضْرَتْ رَيْـحَانَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত রায়হানাহ্ আলাইহাস সালাম।

২. زَيْدٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত যায়েদ আলাইহিস সালাম।

৩. عَمْرٌو عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আমর আলাইহিস সালাম।

৪. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ خَنَافَةُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত খনাফাহ্ আলাইহিস সালাম।

৫. شَـمْعُوْنُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত শাম‘ঊন আলাইহিস সালাম।

৬. زَيْدٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত যায়েদ আলাইহিস সালাম।

৭.  عَدَدُ الْاٰبَاءِ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ غَيْرُ مَرْوِىٍّ কয়েকজন মহাসম্মানিত পূর্বপুরুষ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত ইসিম বা নাম মুবারক (কিতাবে) বর্ণিত নেই। 

৮. النَّضِيْرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত নাযীর আলাইহিস সালাম।

৯. النَّحَّامُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত নাহ্হাম আলাইহিস সালাম।

১০. نَاخُوْمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত নাখূম আলাইহিস সালাম।

১১. اَلْـخَزْرَجُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত খয্রায আলাইহিস সালাম।

১২. الصَّرِيْحُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ছরীহ্ আলাইহিস সালাম।

১৩. التَّوْمَانُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত তাওমান আলাইহিস সালাম।

১৪. عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ السِّبْطُ সাইয়্যিদুনা হযরত সিব্ত্ব আলাইহিস সালাম।

১৫. الْيَسَعُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত আল ইয়াসা’ আলাইহিস সালাম।

১৬. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ سَعْدٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত সা’দ আলাইহিস সালাম।

১৭. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ لَاوِىٌّ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত লাওই আলাইহিস সালাম।

১৮. خَيْرٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত খইর আলাইহিস সালাম।

১৯. النَّجَّامُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত নাজ্জাম আলাইহিস সালাম।

২০. تَنْحُوْمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত তানহূম আলাইহিস সালাম।

২১. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ عَازِرٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আযির আলাইহিস সালাম।

২২. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ عَيْزَر عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আইযার আলাইহিস সালাম।

২৩. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ هَارُوْنُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত হারূন আলাইহিস সালাম।

২৪. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ عِمْرَانُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘ইমরান আলাইহিস সালাম।

২৫. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ قَاهَاتٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বহাত আলাইহিস সালাম।

২৬. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ لَاوِىٌّ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত লাওই আলাইহিস সালাম।

২৭. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ يَعْقُوْبُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ইয়া’কূব আলাইহিস সালাম।

২৮. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ اِسْحَاقُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ইসহাক্ব আলাইহিস সালাম।

২৯. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম।

(ইবনে সা’দ ৮/১২৯, ‘উয়ূনুল আছার ২/৩৮৮, আল মুখতাছারুল কাবীর ১/১০০, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ৫/১৫) 

উল্লেখ্য যে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ইসিম বা নাম মুবারক কিতাবাদিতে পাওয়া যায় না।

এক নজরে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত পরিচিতি মুবারক-

 মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে বিশেষ ব্যক্তিত্বা মুবারক। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারকই হচ্ছেন সম্মানিত ঈমান। সুবহানাল্লাহ! 

নিম্নে এক নজরে উনার সম্মানিত পরিচিতি মুবারক তুলে ধরা হলো-

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক: সাইয়্যিদাতুনা হযরত রায়হানাহ্ আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! 

সম্মানিত লক্বব মুবারক: উম্মুল মু’মিনীন, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, আত্ব ত্বাহিরাহ, আত্ব ত্বইয়্যিবাহ্, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, মালিকাতুল জান্নাহ, মালিকাতুল কায়িনাত এছাড়াও আরো অসংখ্য-অগণিত। সুবহানাল্লাহ! 

যেই সম্মানিত লক্বব মুবারক-এ সম্মানিত পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেছেন: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পিতা আলাইহিস সালাম: সাইয়্যিদুনা হযরত যায়েদ আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত পূর্বপুরুষ সাইয়্যিদুনা হযরত শাম‘ঊন আলাইহিস সালাম উনার দিকে নিসবত মুবারক করে উনাকে ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত রায়হানাহ্ বিনতে শাম‘ঊন আলাইহাস সালাম’ বলা হয়। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ: আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের ১৯ বছর পূর্বে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৮শে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবী‘উল আউয়াল শরীফ) ইয়াওমুছ ছুলাছা’ শরীফ (মঙ্গলবার)। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বংশ মুবারক: বনূ নাযীর। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার সম্মানিত স্থান মুবারক: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার বনূ নাযীর গোত্রে। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত অবস্থান মুবারক: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ। সুবহানাল্লাহ!

আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ: ৬ষ্ঠ হিজরী শরীফ উনার মুহররমুল হারাম শরীফ মাসে। সুবহানাল্লাহ! 

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান সম্মানিত নিসবতে ‘আযীম শরীফ: ৬ষ্ঠ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৩শে রবীউছ ছানী শরীফ লাইলাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (লাইলাতু ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ তথা সোমবার রাতে)। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উনার সম্মানিত বয়স মুবারক: ৩৭ বছর ২৫ দিন। সুবহানাল্লাহ!

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক প্রদান: ৪ বছর ৮ মাস ১২ দিন। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ: ১১ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৫ই মুহররমুল হারাম শরীফ ইয়াওমুল খমীস শরীফ (বৃহস্পতিবার)। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার সম্মানিত স্থান মুবারক: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ছলাতুল জানাযা মুবারক পড়ান: সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!

দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক: ৪১ বছর ৯ মাস ৭ দিন। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ : মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জান্নাতুল বাক্বী’ শরীফ-এ। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদাতু নিসায়ি ‘আলাল ‘আলামীন, মালিকুদ দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ্, মুত্বহ্হার, মুত্বহহির, আছ ছমাদ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত সংক্ষিপ্ত জীবনী মুবারক

 সম্মানিত পরিচিতি মুবারক

যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

اَلنَّبِـىُّ اَوْلـٰى بِالْمُؤْمِنِيْنَ مِنْ اَنْفُسِهِمْ وَاَزْوَاجُهۤٗ اُمَّهٰتُهُمْ.

অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা মু’মিন উনাদের নিকট উনাদের জানের চেয়ে অধিক প্রিয় এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন সমস্ত সৃষ্টির মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পিতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হচ্ছেন সমস্ত সৃষ্টির মহাসম্মানিত মাতা আলাইহিন্নাস সালাম।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ছিলেন মোট ১৩ জন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেয়ার মুবারক ধারাবাহিকক্রম অনুযায়ী মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন ‘আত তাসি‘য়াহ্ তথা ৯ম’। এ জন্য উনাকে ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম’ বলা হয়। সুবহানাল্লাহ! তবে উনার মূল মহাম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক হচ্ছেন ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত রায়হানাহ্ আলাইহাস সালাম’। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারকই হচ্ছেন সম্মানিত ঈমান। সুবহানাল্লাহ! উনাকে সম্মানিত মুহব্বত মুবারক করা, উনার সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করা এবং উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য ফরযে আইন। সুবহানাল্লাহ! তাই উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক জানাও সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য ফরযে আইন। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পিতা-মাতা আলাইহিমাস সালাম: 

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম হচ্ছেন- সাইয়্যিদুনা হযরত যায়েদ ইবনে ‘আমর আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! অপর বর্ণনা মতে শাম‘ঊন বিনতে যায়েদ আলাইহিস সালাম। তিনি নাযীর গোত্রের বিশেষ ব্যক্তিত্ব মুবারক। সুবহানাল্লাহ! তবে উনার সবচেয়ে বড় পরিচয় মুবারক হচ্ছেন, তিনি হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত নাম মুবারক কিতাবাদিতে পাওয়া যায় না।

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ:

পৃথিবীর কোনো কিতাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের মহাসম্মানিত তারীখ মুবারক উল্লেখ নেই। এটা মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত আফসোসের বিষয় যে, মুসলমানরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের মহাসম্মানিত তারীখ মুবারক সংরক্ষণ করতে পারেনি। না‘ঊযুবিল্লাহ!

উল্লেখ্য যে, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, আস সাফফাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত সুলত্বানুন নাছীর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন একমাত্র যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে আখাছ্ছুল খাছভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সাথে উনার রয়েছেন বেমেছাল হাক্বীক্বী দায়িমী তা‘য়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক এবং যিয়ারত মুবারক। সুবহানাল্লাহ! যার কারণে একমাত্র উনার পক্ষেই সম্ভব হয়েছে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের, আখাছ্ছুল খাছভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মহাম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের মহাসম্মানিত তারীখ মুবারকসমূহ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হওয়ার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তারীখ মুবারকসমূহ প্রকাশ করা। সুবহানা সুলত্বানিন নাছীর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! 

মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, আস সাফফাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত সুলত্বানুন নাছীর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন যে, “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের ১৯ বছর পূর্বে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৮শে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবী‘উল আউয়াল শরীফ) ইয়াওমুছ ছুলাছা’ শরীফ (মঙ্গলবার) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন।” সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত শৈশবকাল মুবারক

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত শৈশবকাল মুবারক-এ উনার মহাসম্মানিত পিতা-মাতা আলাইহিমাস সালাম এবং পরিবার-পরিজন উনাদের সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যেই অতিবাহিত করেন। সুবহানাল্লাহ! 

সম্মানিত প্রথম শাদী মুবারক

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার প্রথম শাদী মুবারক হয় বনী কুরাইযাহ্ গোত্রের হাকামের সাথে। এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন,

كانت ام المؤمنين سيدتنا حضرت التاسعة عليها السلام (سيدتنا حضرت ريحانة عليها السلام) متزوجةً رجلًا من بني قريظة يُقال له: الحكم.

অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক নেয়ার পূর্বে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি বনী কুরাইযাহ্ গোত্রের হাকাম নামে এক ব্যক্তির যাওজিয়াতে ছিলেন।”

এ কারণে কেউ কেউ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম উনাকে বনী কুরাইযাহ্ গোত্রের বলেছেন।

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ:

মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, আস সাফফাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত সুলত্বানুন নাছীর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন যে, “৬ষ্ঠ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৩শে রবীউছ ছানী শরীফ লাইলাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (লাইলাতু ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ অর্থাৎ সোমবার) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৩৭ বছর ২৫ দিন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ৪ বছর ৮ মাস ১২ দিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেন । সুবহানাল্লাহ!

কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন,

وكانت ام المؤمنين سيدتنا حضرت التاسعة عليها السلام (سيدتنا حضرت ريحانة عليها السلام) تقول تزوجني رسول الله صلى الله عليه وسلم ومهرني مثل نسائه وكان يقسم لي وضرب عليّ الحجاب.

অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ করেন এবং আমাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সম্মানিত মোহরানা মুবারক উনার অনুরুপ সম্মানিত মোহরানা মুবারক হাদিয়া মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি আমার জন্য (সম্মানিত দিন-রাত্র মুবারক) বন্টন করেন এবং আমার উপর পর্দার বিধান মুবারক আরোপ করেন অর্থাৎ আমাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম হিসেবে গ্রহণ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (আন্সাবুল আশরাফ ১/২০০)

কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছেন,

واصطفى عليه السلام لنفسه منهم ام المؤمنين سيدتنا حضرت التاسعة عليها السلام (سيدتنا حضرت ريحانة بنت شمعون عليها السلام) وكانت جميلة واسلمت فاعتقها رسول الله وتزوجها ولم تزل عنده حتى ماتت مرجعه

অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজের জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে মনোনীত করেন, পছন্দ মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ছিলেন অত্যন্ত সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারিণী। সুবহানাল্লাহ! তিনি যখন আনুষ্ঠানিকভাবে (সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন,) সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে মুক্ত করে দিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ করেন। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অধীনে থাকা অবস্থায় তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তিনি কখনো নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে পৃথক হন নি।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে হাক্কী ১১/৩২, তাফসীরে রূহুল বয়ান ৭/১২৫, ) 

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন,

فدعاني فأجلسني بين يديه فقال إن اخترت الله ورسوله اختارك رسول الله صلى الله عليه وسلم لنفسه فقلت فإني أختار الله ورسوله فلما أسلمت اعتقني وتزوجني وأصدقني اثني عشرة أوقية ونشا كما كان يصدق نساءه وأعرس بي في بيت أم المنذر وكان يقسم لي كما كان يقسم لنسائه وضرب علي الحجاب.

অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে ডেকে এনে উনার সামনে বসিয়ে আমাকে (উদ্দেশ্য করে) ইরশাদ মুবারক করেন, আপনি যদি মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে প্রাধান্য দেন, পছন্দ করেন, তাহলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আপনাকে উনার নিজের জন্য (পছন্দ করবেন,) গ্রহণ করবেন। সুবহানাল্লাহ! তখন আমি বললাম, আমি মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে প্রাধান্য দিলাম, পছন্দ করলাম। সুবহানাল্লাহ! অত:পর যখন আমি সম্মানিত ও পবিত্র ইসলাম গ্রহণের বিষয়টা প্রকাশ করলাম, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে মুক্ত করে দিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ সুসম্পন্ন মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! আর আমাকে সাড়ে বার আউক্বিয়া স্বর্ণ (৫০০ দিরহাম) মোহরানা মুবারক হাদিয়া মুবারক দেন, যেমন অন্যান্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে হাদিয়া মুবারক দিয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ! আর মহাম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত উম্মু মুনযির রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা উনার সম্মানিত বাড়ি মুবারক-এ আমার সাথে প্রথম রাত্রি মুবারক অতিবাহিত করেন। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের জন্য যেমন (দিন-রাত্র মুবারক) বন্টণ করে দিয়েছিলেন, ঠিক তদ্রুপ আমার জন্যও (দিন-রাত্র মুবারক) বন্টণ করে দেন এবং আমার উপর পর্দার হুকুম মুবারক আরোপ করেন অর্থাৎ আমাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম হিসেবে গ্রহণ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (আল মুন্তাখাব)