সম্মিলিতভাবে
মুনাজাত ও তার
সংশ্লিষ্ট
বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া
(পূর্ব
প্রকাশিতের পর)
গবেষণা
কেন্দ্র- মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ
সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আ’লামীনের এবং অসংখ্য দরূদ ও সালাম মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব সাইয়্যিদুল
মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি। মহান আল্লাহ পাক উনার রহমতে গবেষণা কেন্দ্র, মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ উনার ফতওয়া বিভাগের তরফ থেকে “মাসিক আল
বাইয়্যিনাত”
পত্রিকায় যথাক্রমে টুপি, অঙ্গুলী
চুম্বনের বিধান,
নিয়ত করে মাজার শরীফ জিয়ারত করা, ছবি ও
তার সংশ্লিষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া, জুময়ার নামায ফরজে আইন ও তার
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া, মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে
নামায পড়া মাকরূহ্ তাহরীমী সম্পর্কে ফতওয়া, কদমবুছী
ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া এবং তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ্
তাহরীমী ও বিদয়াতে বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ্ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া
প্রকাশ করার পর নবম ফতওয়া হিসাবে “ফরজ নামাযের পর মুনাজাত ও তার
সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” প্রকাশ করতে পারায় মহান আল্লাহ
পাক উনার দরবারে অসংখ্য শুকরিয়া।
আমাদের ‘মাসিক আল
বাইয়্যিনাত’
পত্রিকায় ফরজ নামাযের পর হাত উঠায়ে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত ও
তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া গত ছয় সংখ্যা অর্থাৎ ১৪তম সংখ্যা থেকে ধারাবাহিকভাবে
ছাপা হচ্ছে। গত তিন সংখ্যা হতে মুনাজাত সংশ্লিষ্ট প্রতিটি বিষয়ের অকাট্য দলীলসমূহ
পেশ করা হচ্ছে।
[বিঃ দ্রঃ- গত সংখ্যায় “ফরজ নামাযের পর সম্মিলিতভাবে
মুনাজাত করা”
বিষয়ে কিছু দলীল পেশ করা হয়েছিল, পত্রিকায়
স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় সবগুলো দলীল পেশ করা সম্ভব হয়নি। পাঠকগণের সুবিধার্থে গত
সংখ্যায় প্রকাশিত দলীলগুলো বর্তমান সংখ্যায় প্রকাশিত দলীলসমূহের সাথে পুণরায়
প্রকাশ করা হলো]
ফরজ
নামাযের পর সম্মিলিতভাবে
মুনাজাত
করা
ফরজ নামাযের পর ইমাম ও মুক্তাদীগণ
সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করাও জায়েয ও ইসলামী শরীয়ত সম্মত। যার স্বপক্ষে অসংখ্য দলীল
বিদ্যমান রয়েছে। তাছাড়া কেউ প্রমাণ করতে পারবেনা যে, ইসলামী শরীয়ত
উনার কোথাও ফরজ নামাযের পর সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করতে নিষেধ করা হয়েছে। মূলতঃ
সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা মুস্তাহাবের অন্তর্ভূক্ত।
(১)
عن
ثوبان قال- قال النبى صلى الله عليه وسلم لايؤم قوما فيخص نفسه بدعوة دونهم فان
فعل خائهم. (ترمذى شريف ج ২ صفه ৪৭)
অর্থঃ- “কোন ইমাম ছাহেব মুক্তাদীগণকে বাদ দিয়ে শুধু নিজের জন্য মুনাজাত করবে না। যদি
সে তা করে,
তবে সে মুক্তাদীগণের প্রতি খিয়ানতকারী হবে।” (তিরমিযী শরীফ ২য় জিঃ পৃঃ-৪৭)
উল্লিখিত পবিতর হাদীছ শরীফখানা ফরয নামাযের পর
সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার প্রতিই ইঙ্গিত দেয়। কেননা এ পবিতর হাদীছ শরীফ উনার
মধ্যে সরাসরি ইমাম ও মুক্তাদীর কথা উল্লেখ রয়েছে।
(২)
لا
يجتمع ملاء فيدعر بعضهم وبؤمن بعضهم الا اجابهم. (معارف السنن)
অর্থঃ- “সম্মিলিত মুনাজাতে কিছু লোক মুনাজাত করলো, আর কিছু
লোক ‘আমীন’
বললো, মহান আল্লাহ পাক অবশ্যই তাদের এ
মুনাজাত কবূল করবেন।” (মায়ারেফুস্ সুনান)
উল্লিখিত পবিতর হাদীছ শরীফ ফরজ, নফল বা কোন সময়ের নির্ধারণ ছাড়াই সম্মিলিত মুনাজাত কবুল হওয়ার কথা বলা হয়েছে।
সুতরাং এ পবিতর হাদীছ শরীফ ফরয নামাযের পর সম্মিলিত মুনাজাত জায়েয হওয়ারও প্রমাণ
বহন করে।
তাছাড়া হযরত আসওয়াদ আমেরী রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত পবিতর হাদীছ
শরীফ দ্বারাও ফরজ নামাযের পর (ইজতেমায়ী) সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা মুস্তাহাব
প্রমাণিত হয়। যেমন মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বায় উল্লেখ রয়েছে,
(৩)
عن
الاسود العامرى عن ابيه قال صليت مع رسول الله صلى الله عليه وسلم الفجر. فلما سلم
انصرف ورفع يديه ودعا. (مصنف ابن ابى شيبه)
অর্থঃ- “হযরত আসওয়াদ আমেরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত- তিনি উনার পিতা হতে
বর্ণনা করেন। উনার পিতা বলেন- আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে ফজর নামায পড়লাম। যখন তিনি নামাযের
সালাম ফিরালেন,
ঘুরে বসলেন এবং উভয় হাত মুবারক উঠিয়ে মুনাজাত করলেন।” (মুছান্নেফ ইবনে আবী শায়বা)
ব্যাখ্যাঃ- উক্ত পবিতর হাদীছ শরীফ উনার
মধ্যে যে সমস্ত বিষয় রয়েছে তাহলো- হযরত আসওয়াদ আমেরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
উনার পিতা,
তিনি বলেছেন, صليت الفجر
অর্থঃ- “আমি ফজর নামায পড়েছি।”
এর দ্বারা ফরজ নামায সাবেত
হলো, অন্য কোন নফল নামায এটা হতে “এস্তেছ্না” বা বাতিল হলো। দ্বিতীয়তঃ বলা হয়েছে। এটা হতে বুঝা গেল, পবিতর হাদীছ
শরীফ বর্ণনাকারী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার সাথে একা ছিলেন না, কেননা মাসয়ালা হলো ইমামের সাথে
মুক্তাদী যদি একজন হয়, তাহলে তো মুক্তাদী ইমামের সাথে দাঁড়াবে। আর সাথে দাঁড়ালে তো
হওয়ার অর্থাৎ ঘুরে বসার কোন প্রয়োজন নেই। সুতরাং শব্দ দ্বারা বুঝা গেল, জামায়াতে একাধিক মুক্তাদী ছিল, তাই তিনি মুক্তাদীগণের দিকে মুখ
মুবারক ফিরিয়ে বসেছেন।
এক্ষেত্রে মুনাজাত বিরোধীগণ বলে থাকেন যে, হযরত আসওয়াদ আমেরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত পবিতর হাদীছ শরীফ
দ্বারা হাত উঠায়ে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা প্রমাণিত হয়না। কারণ পবিতর হাদীছ শরীফ
উনার শব্দগুলো একবচনে ব্যবহৃত হয়েছে। কাজেই এর দ্বারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে হযরত
ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনাদের মুনাজাত করা বুঝায় না। আর হযরত
ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনারা সর্বক্ষেত্রে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অনুসরণ করতেন না, অনুরূপ এখানেও করেননি। যদি অনুসরণ করতেন, তবে তা পবিতর
হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ থাকতো।
মুনাজাত বিরোধীদের উক্ত বক্তব্যের জবাব হলো- হযরত
ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ অনেকক্ষেত্রে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরণ করেননি
একথা সম্পূর্ণই অজ্ঞতাপ্রসূত। কারণ সর্বক্ষেত্রেই হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরণ করেছেন। তবে যেক্ষেত্রে
মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ হতে কোন বিষয়ে অনুসরণ না করার নির্দেশ
রয়েছে,
তা ব্যতীত সকলক্ষেত্রেই অনুসরণ করতেন। তবে নিষেধকৃত বিষয়
আমল না করাটাও অনুসরণ-অনুকরণের অন্তর্ভূক্ত। এ প্রসঙ্গে পবিতর হাদীছ শরীফ উনার
মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, একদিন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জুতা মুবারকসহ
মসজিদে নামায পড়ছিলেন, এমন সময় হযরত জিব্রাঈল
আলাইহিস সালাম এসে বললেন, “ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম! আপনার জুতা মোবারক উনার মধ্যে নাপাকি রয়েছে।” তখন নূরে
মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
জুতা মোবারক খুলে ফেললেন। সাথে সাথে উপস্থিত সকল হযরত হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনারাও জুতা খুলে ফেললেন। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “এ হুকুম তোমাদের জন্য নয়, এটা আমার জন্যে খাছ।”
এখানে আরো উল্লেখ্য যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে
যা করতে দেখতেন,
হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনারাও
তাই করতেন। আর যা বর্জন করতেন, উনারা তাই বর্জন করতেন, কখনো কি ও কেন প্রশ্ন করতেন না। যেমন- হযরত ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে ওমর ফারুক আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন- ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একটি স্বর্ণের
আংটি ব্যবহার করতেন, হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণও স্বর্ণের
আংটি বানিয়ে ব্যবহার করা শুরু করলেন। কিন্তু যখন স্বর্ণ ব্যবহার পুরুষের জন্য
সম্পূর্ণ হারাম হয়ে যায়, তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আংটিটি খুলে ছুঁড়ে
ফেলে দিলেন এবং বললেন, “আমি আর কখনও এটা ব্যবহার করবো না।” তখন হযরত
ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনারা সকলেই উনাদের আংটিগুলো খুলে
ছুঁড়ে ফেলে দিলেন। এটাই ছিল হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ
উনাদের নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাকে অনুসরণের নমুনা। এরকম হাজারো লাখো ঘটনার দ্বারা প্রমাণ করা সম্ভব যে, হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ সর্ব ব্যাপারে নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
অনুসরণ-অনুকরণ করেছেন। কেবলমাত্র যেসব ব্যাপারে নিষেধ করা হয়েছে, ঐ নিষেধ মানাও অনুসরণ-অনুকরণের অন্তর্ভূক্ত। কাজেই মুনাজাত বিরোধীরা কি এরকম
একটি ঘটনাও দেখাতে পারবেন, যেখানে নিষেধাজ্ঞা ব্যতীত হযরত
ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরণ-অনুকরণ করেননি বা মুনাজাতে নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে হযরত
ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনাদেরকে হাত উঠাতে নিষেধ করেছেন?
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহুগণ উনাদেরকে হুকুম না দেয়া সত্বেও নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরণের লক্ষ্যে সকলেই জুতা ও আংটি মোবারক
খুলে ফেললেন। এটাই যদি হতে পারে, তবে যেখানে ফরয নামাযের পর দোয়া
কবুল হওয়ার সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে এবং সম্মিলিতভাবে দোয়া কবুল হয় বলে সহীহ্ ক্বাওলী
হাদীছ শরীফ রয়েছে এবং যেখানে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বয়ং হাত
মোবারক উঠালেন,
সেখানে উপস্থিত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহুগণ হাত উঠাননি এরূপ ধারণা তারাই করতে পারে- যাদের, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যে কতটুকু অনুসরণ-অনুকরণ করতেন, সে সম্পর্কে মোটেও ইলম নেই এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনাদের
মান-মর্যাদা সম্পর্কে নেহায়েত অজ্ঞ ও মূর্খ। কাজেই পবিতর হাদীছ শরীফ উনার ইবারত
দ্বারা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনাদের হাত না উঠান
যতটুকু প্রমাণিত হয়, তার চেয়ে বেশী প্রমাণিত হয় হাত উঠানোর। কারণ পবিতর হাদীছ
শরীফ উনার মধ্যে স্পষ্ট বলা হয়নি যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হাত মুবারক উঠালেন কিন্তু আমরা
হাত উঠাইনি। এখন মুনাজাত বিরোধীদের নিকট আমাদের জিজ্ঞাসা নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে হযরত ছাহাবায়ে
কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ হাত উঠাননি, এরূপ
স্পষ্ট বর্ণনা আপনারা একটিও দেখাতে পারবেন কি? কখনো নয়।
তবে কিসের ভিত্তিতে বলেন, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনারা হাত উঠাননি?
অতএব, উক্ত পবিতর
হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম,
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনাকে
নিয়ে ফরজ নামাযের পর সম্মিলিত বা ইজতেমায়ীভাবে মুনাজাত করেছেন। সুতরাং ফরজ নামাযের
পর সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা মুস্তাহাব।
(৪-৬)
اما
الدعاء اجتماعا فهو ايضا ثابت بحديث رواه الحاكم وقال على شرط مسلم مرفوعا- قال
النبى صلى الله عليه وسلم لا يجتمع ملاء فيدغو بعضهم ويأمن بعصهم الا استجاب الله
دعائهم. (المريد الى المراد وكذا فى سباحة الفكر، وكتاب لا ذكار)
অর্থঃ- “মূলতঃ সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করাও পবিতর
হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে। যেটা হযরত হাকেম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা
করেছেন এবং তিনি বলেছেন, এ পবিতর হাদীছ শরীফখানা ইমাম
মুসলিম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার শর্তানুসারে মরফূ হিসাবে সাব্যস্ত। (পবিতর হাদীছ
শরীফখানা হলো- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি বলেন, সম্মিলিত মুনাজাতে কিছু লোক মুনাজাত করলো, আর কিছু লোক আমীন বললো, মহান আল্লাহ পাক তিনি অবশ্যই
তাদের এ মুনাজাত কবূল করবেন।” (আল মুরীদ ইলাল মুরাদ, অনুরূপ সাবাহাতুল ফিকহ ও কিতাবুল আযকারে বর্ণিত রয়েছে)
(৭)
كان
فى زمن النبى صلى الله عليه وسلم رجل يعال له ابودجانة فاذا صلى الصبح خرج من المسجد
شريعا ولم يحضر الدعاء- فسأله النبى صلى ما لله عليه وسلم من ذالك فقال ان جارى له
نخلة يسقط رطها فى دارى لبلا من الهواء.
فاسبق
اولادى قبل ان يستيقظوا فا طرحه فى ذاره قفال النبى صلى الله عليه وسلم لصا حبها
يعنى نخلتك بعشر نخلات فى الجنة عروقها من ذهب احمر وزبر جد اخضر واغصانها من
اللؤلؤ الا بيض-
فقال
لا ابيع حاضر الغائب فقال ابوبكر صديق رضى الله عنه قد اشتر بتها منه بعشر نخلات
فى مكان كذا ... الخ. (نزهة المجالس لعبد الحق محدث دهلوى)
অর্থঃ- “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সময় আবূ দাজানা নামক
এক ব্যক্তি ছিল। সে একদিন ফজরের নামায (জামায়াতে) আদায় করে, মুনাজাতে শরীক না হয়ে দ্রুতবেগে মসজিদ হতে বের হয়ে গেল। পরবর্তীতে নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আবূ
দাজানাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেন যে, (তুমি কেন মুনাজাতে হাজির না থেকে
তাড়াতাড়ি চলে গেলে?) আবূ দাজানা উত্তর দিল- আমার প্রতিবেশীর একটি খেজুর গাছ
রয়েছে,
রাত্রিবেলায় ঝড়ে উক্ত গাছের খেজুর আমার সীমানায় পড়ে, আমার সন্তানগণ ঘুম হতে উঠার পূর্বেই আমি সেখানে পৌঁছে যাই এবং উক্ত খেজুরগুলো
কুড়ায়ে তার সীমানায় পৌঁছে দেই। (যেন আমার সন্তানগণ উক্ত খেজুর খেয়ে পরের হক্ব
নষ্ট না করে)
অতঃপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আবূ দাজানার উত্তর শুনে, উক্ত খেজুর গাছের মালিককে বললেন- তোমার খেজুর গাছটি বেহেস্তী লাল, সোনালী ও সবুজ, হলুদ শিকড় ও সাদা মুতি-জহরতের ডালা বিশিষ্ট দশটি খেজুর
গাছের বিনিময়ে আমার নিকট বিক্রি করে দাও। সে ব্যক্তি বললো- আমার বিদ্যমান গাছটিকে
অদৃশ্য গাছের বিনিময়ে বিক্রি করবোনা। তখন হযরত আবূ বকর সিদ্দীক আলাইহিস সালাম তিনি
বললেন,
তাহলে আমি আমার অমুক স্থানের দশটি খেজুর গাছের বিনিময়ে এই
খেজুর গাছটি (আবূ দাজানার জন্যে) কিনে নিলাম .... ।” সুবহানাল্লাহ!
(নুজহাতুল মাজালিস লি আবদিল হক্ব মুহাদ্দিস দেহ্লভী)
উক্ত ঘটনার মধ্যে বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয় বিষয়
হলো- বলা হয়েছে-
ولم يحضر فى الدعاء
অর্থাৎ আবূ দাজানা মুনাজাতে
উপস্থিত না হয়ে দ্রুতবেগে চলে গেল। একথা বলা হয়নি যে
ولم يدع
অর্থাৎ মুনাজাত করলোনা।
সুতরাং এতে স্পষ্টই বুঝা যায় যে, তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনাকে নিয়ে সম্মিলিতভাবে ফরজ নামাযের পর মুনাজাত করতেছিলেন।
কাজেই উক্ত ঘটনা দ্বারাও ফরজ নামাযের পর
সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা মুস্তাহাব প্রমাণিত হলো।
(৮)
بعد
الفراغ عن الصلوة يدعو الامام لنفسه وللمسلمين رافعى ايديهم. (امداد الفتاوى)
অর্থঃ- “নামায শেষ করে ইমাম সাহেব নিজের জন্যে এবং সকল মুসলমানের জন্যে (ইমাম ও মুক্তাদী)
সকলে হাত উঠায়ে মুনাজাত করবে।” (ইমদাদুল ফতওয়া)
উক্ত ইবারত দ্বারাও ফরজ নামাযের পর হাত উঠায়ে
সম্মিলিতভাবে মুনাজাত জায়েয প্রমাণিত হয়। কারণ رافعى ايديهم -এর মধ্যে সর্বনাম বহুবচন আনা হয়েছে। অর্থাৎ সকলেই হাত উঠায়ে
মুনাজাত করবে।
(৯)
دعا و تسبیحات امام و مقتدی سب کیلئے بعد نماز
مستحب ھے اگر سب ھی اس مین مشغول ھونگے تو یہ ایک اقتران اتفاقی ھوگا- نہ کے
اجتماعی مستقل- اسلئے ان افعال کوفی نفسھا
مستحب کھا جائیگا اور اجتماعئی کو نہ ضروری سجھا جائے اور نہ بدعت غیر مشروع کھا
جائے اسلئے عامہء سلف سے اس اجتماع پر نکیر
منقول نھین- اور علامہ شاطبی نے "کتاب الاعتصام" مین جو اسکو بدعت فرمایا
ھے- اسکا حاصل بھی احقر نے یھی سجھا ھے کہ اجتماع للدعاء کو مقصود اصلی مثل دیگر
عبادات کے سمجھنا بدعت ھے- (امداد المفتین ج 2 صفہ 742)
অর্থঃ- “এ সকল কাজ অর্থাৎ মুনাজাত, তাসবীহ-তাহ্লীল ইত্যাদি নামাযের
পর, ইমাম ও মুক্তাদী সকলের জন্যই মুস্তাহাব। যদি সকলেই উহাতে মশগুল হয়ে যায়, তবে এটা হবে হঠাৎ একত্র হয়ে যাওয়া, পৃথক একত্র হওয়া নয়। এজন্য
এগুলোকে মুস্তাহাব বলা হয় এবং সম্মিলিত মুনাজাতকে (ফরজ ওয়াজিবের ন্যায়) জরুরী মনে
করা যাবেনা। আর বিদয়াত ও শরীয়ত পরিপন্থিও বলা যাবেনা। এ জন্যেই সলফে সালেহীনগণ হতে
ফরজ নামাযের পর সম্মিলিত মুনাজাত করার বিপক্ষে কোন বক্তব্য বর্ণিত নেই। আর আল্লামা
শাতবী সাহেব উনার “কিতাবুল ই’তেছামে” যেটাকে বিদয়াত
বলেছেন। তার মূল অর্থ আমি নগন্য ইহাই বুঝেছি যে, সম্মিলিত
মুনাজাতকে ‘আসল মকছূদ’
অর্থাৎ অন্যান্য ইবাদতের ন্যয় মনে করা বিদয়াত। (অতএব, মুস্তাহাব মনে করে সম্মিলিত মুনাজাত করলে সেটা কখনো বিদয়াত হতে পারেনা, যা অত্র ইবারত দ্বারা স্পষ্ট প্রমাণিত হলো) (ইমদাদুল মুফতীন ২য় জিঃ পৃঃ-২৪২)
১০)
بعد نماز ختم کر چکنے کے دونون ھاتھ سینہ تک
اطھا کر پھیلائے اور اللہ تعالی سے اپنے لئے بھی اور بعد دعا مانگ چکنے کے دونون ھاتھ
منہ پر پھیرلے- مقتدی خواہ اپنی دعا مانگے یا امام کی دعا سنائی دے تو خواہ سب امین
امین کھتے رھین- (اشرفیہ بھشتی زیور ج 11 صفہ 32)
অর্থঃ- “নামায শেষ করার পর উভয় হাত সীনা পর্যন্ত উঠাবে এবং মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট
নিজের জন্য মুনাজাত করবে। আর ইমাম হলে সকলের জন্য মুনাজাত করবে, মুনাজাত শেষে উভয় হাত দ্বারা মুখ মোসেহ্ করবে। মুক্তাদীগণ নিজ নিজ দোয়া চাইবে
অথবা ইমাম সাহেবের মুনাজাত শোনা গেলে তার সাথে সকলে ‘আমীন, আমীন’
বলবে।” (আশ্রাফী বেহেস্তী জিওর
১১তম জিঃ পৃঃ ৩২)
(১১-১৩)
ثم
يدعون لا نفسهم وللمسلمين بالادعية الماثورة الجامعه رافعى ايديهم. (مراقى الفلاح
صفه ১৮৪- ১৮৫،
وكذا فى مجمح الزوائد صفه ২০১، نورالايضاح صفه ২০)
অর্থঃ- “অতঃপর (ফরজ নামায শেষ করে) সকলে নিজের জন্য ও সকল মুসলমানের জন্য হাত উঠায়ে
দোয়ায়ে মাছূরা পড়ে মুনাজাত করবে।” (মারাকিউল ফালাহ্ পৃষ্ঠা
১৮৪-১৮৫,
মাজমাউল যাওয়ায়েদ পৃষ্ঠা ২০১, নূরুল ইজাহ পৃষ্ঠা-৬০)
১৪)
مسنون یہ ھے کہ جنس طرح فرض نماز جماعت سے پرھی
ھے دعا بھی جماعت کے ساتھ کی جائے یعنی امام اور مقتدی سب مل کر دعا ما نگین-
...... ان حضرت صلی اللہ علیہ وسلم ، صحابہء کرام اور سلف صالحین رضی اللہ تعالی
عنھم کا طریقہ یہ تھکہ فرض نماز جماعت سے ادا فرما کر دعا بھی جماعت کے ساتھ (امام
اور مقتدی سب ملکر) مانگا کرتے تھے-
(فتوئے رحیمیہ ج 1 صفہ 215-216)
অর্থঃ- “নামায যেভাবে জামায়াতের (সম্মিলিতভাবে) সাথে আদায় করা হয়, মুনাজাতও তদ্রুপ সম্মিলিতভাবে করা সুন্নত। অর্থাৎ ইমাম ও মুক্তাদী সকলে
সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করবে ........। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ ও হযরত সলফে সালেহীনগণের
সুন্নত তরীক্বা এটাই ছিল যে, উনারা ফরজ নামায জামায়াতে আদায় করার পর, সম্মিলিতভাবে (ইমাম ও মুক্তাদী সকলে সম্মিলিতভাবে) মুনাজাত করতেন।” (ফতওয়ায়ে রহীমিয়া ১ম জিঃ পৃঃ ২১৫-২১৬)
(১৫)
فرض نمازون کے بعد امام اور مقتدی کے ملکر دعا
مانگنے کی بری فضیلت ھے اور اسکا مسنون اور افضل طریقۃ یہ ھے کہ امام اور مقتدی
دونون اھستہ اھستہ دعا مانگین-
(فتاوئے رحیمیہ ج4 صفہ 226)
অর্থঃ- “ফরজ নামাযের পর ইমাম ও মুক্তাদী সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার মধ্যে বহু ফযীলত
রয়েছে। আর এটার সুন্নত পদ্ধতি হলো- ইমাম ও মুক্তাদী অল্প আওয়াজে মুনাজাত করবে।” (ফতওয়ায়ে রহীমিয়া ৪র্থ জিঃ পৃঃ২২৬)
(১৬-১৭)
شریعت کا حکم یہ ھے کہ جو عبادت اجتماعی طور پر
ادا کی گئی ھے اس کے بعد تو دعاء اجتماعی طور پر کی جائے- (اختلاف امت اور صراط
مستقیم صفہ 120، وکذا فی فتاوئے محمودیہ ج 2 صفہ 362)
অর্থঃ- “ইসলামী শরীয়ত উনার নির্দেশ মুবারক হলো- যে সকল ইবাদত সম্মিলিতভাবে করা হয়, উহার পর মুনাজাতও সম্মিলিতভাবে করবে।” (ইখতেলাফে উম্মত আওর ছিরাতে মুস্তাকীম পৃঃ ১২০, অনুরূপ ফতওয়ায়ে মাহমুদিয়া ২য় জিঃ পৃঃ ৩৬২ কিতাবেও উল্লেখ আছে)
18-19)
انفرادا دعا مانگنا امام اور مقتدی ھر ایک کیئے
سنتون اور نفلون کے بعد بھی جائز ھے- اور اجتماعی بھی- بشرطیکہ التزام و اعتقاد سنیت
نہ ھو اور اجتماعی بھی- بشرطیکہ التزام و اعتقاد سنیت نہ ھو اور اجتماعی دعا کا
افضل طریقہ یہ ھے کہ بعد فرائض اور قبل سنن و نوافل ھو= (کفایۃ المفتی ج 3 صفہ
273، و کذا فی النفائس المرغوبۃ)
অর্থঃ- “সুন্নত এবং নফল নামাযের পরও একাকী বা সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা প্রত্যেকের
জন্য জায়েয। তবে শর্ত হলো- জরুরী মনে করা ও খাছ সুন্নত মনে করা যাবেনা। আর
সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার উত্তম পদ্ধতি হলো- ফরজ নামাযের পর সুন্নত ও নফল নামাযের
পূর্বে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা।” (কিফাইয়াতুল মুফতী ৩য় জিঃ
পৃঃ ২৭৩,
অনুরূপ নাফায়িসুল মারগুবা কিতাবে বর্ণিত রয়েছে)
২০)
امام جس و قت نماز سے فارغ ھو مع مقتدیون کے
سب اکھطے دعا مانگین-
(فتاوئے دیوبند ج4 صفہ 130)
অর্থঃ- “ইমাম সাহেব যখন নামায শেষ করবেন, তখন মুক্তাদীগণকে নিয়ে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করবেন।” (ফতওয়ায়ে দেওবন্দ ৪র্থ জিঃ পৃঃ ১৩০)
সুতরাং অকাট্যভাবে প্রমাণিত হয় যে, ফরজ নামাযের পর সম্মিলিতভাবে (ইজতেমায়ী) মুনাজাত করা জায়েয ও মুস্তাহাব।
ফরজ
নামাযের পর
আওয়াজ
করে মুনাজাত করা
(১-৩)
اذا
دعا بالدعاء الماثوره جهرا وجهر معه القوم ايضالتعلموا الداؤ لا يأسبه. (فتاو..
بزازيهوكذا فى السعايه، نفائس المرغوبه)
অর্থঃ- “দোয়া শিক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্যে ইমাম সাহেব ও মুক্তাদীগণ আওয়াজ করে মুনাজাত করাতে
কোন ক্ষতি নেই।”
(ফতওয়ায়ে বাজ্জাজিয়া, অনুরূপ সায়াইয়াহ্, নাফায়েসুল মারগুবা কিতাবেও বর্ণিত
আছে)।
(৪)
والظاهر
انهم لا يكر هون الجهر بالدعاء لقصد التعليم والتامين. (امداد الفتاوى ج১ صفه ৮০৬)
অর্থঃ- “ইমাম ছাহেবের দোয়া শুনে মুক্তাদীগণ দোয়া শিক্ষা লাভ করা ও আমীন বলার উদ্দেশ্যে
আওয়াজ করে মুনাজাত করাকে আলেমগণ মাকরূহ্ বলেন না।” (বরং
জায়েয) (ইমদাদুল ফতওয়া ১ম জিঃ পৃঃ ৮০৬)
(৫-৬)
اھستہ اور پست اواز سے دعا مانگنا افضل ھے-
مصلی دعا یاد کرلین یا دعایہء جملۃ ختم ھونے پو امین کھہ سکے اس غرض سے ذرا اوراز
سے دعا مانگی جائے تو کوئی حرج نھین- وہ بھی اس شرط سے کہ فازیون کا حرج نہ ھو- کذا
فی الروح المعانی ج8 صفہ 170)
অর্থঃ- “অল্প আওয়াজে মুনাজাত করাই উত্তম। তবে মুসল্লীদের দোয়া মুখস্ত করা বা দোয়া শেষে
যেন আমীন বলতে পারে, এ উদ্দেশ্যে মুনাজাত কিছুটা উচ্চ আওয়াজে করাতে কোন প্রকার
ক্ষতি নেই। তবে শর্ত হলো- মুসল্লী বা
নামাযীদের যেন কোন ক্ষতি না হয়। অনুরূপ রুহুল মা’য়ানীতে
উল্লেখ আছে।”
(ফতওয়ায়ে রহীমিয়া ১ম জিঃ পৃঃ ১৭০)
(৭)
بعد فرض نماز كے دعا جھر سے کے دعا
جھر سے کرنا جائز ھے- اگر کوئی مانع عارض نہ ھو-
(فتاوئے رشیدیہ صفہ 218)
অর্থঃ- “ফরজ নামাযের পর আওয়াজ করে মুনাজাত করা জায়েয, যদি কোন
প্রকার বাধাভিঘ্ন সৃষ্টি না হয়।” (ফতওয়ায়ে রশীদিয়া পৃঃ ২১৮)
(৮)
دعا عھستہ مانگنا افضل ھے- اگر دعا کی تعلیم
مقضور ھو تو بلند اواز سے بھی مضائقہ نھین- (فتاوئے محمودیہ ج2 صفہ 173)
অর্থঃ- “মুনাজাত অল্প আওয়াজে করাই উত্তম, যদি দোয়া শিক্ষা দেয়া উদ্দেশ্য হয়, তবে উচ্চ আওয়াজে মুনাজাত করাতেও কোন প্রকার ক্ষতি নেই।” (ফতওয়ায়ে মাহমুদিয়া ২য় জিঃ পৃঃ১৭৩)
উল্লেখিত দীর্ঘ দলীলভিত্তিক আলোচনা দ্বারা এটা
স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, ফরজ নামাযের পর উভয় হাত তুলে
সম্মিলিতভাবে আওয়াজ করে মুনাজাত করা সুন্নত ও মুস্তাহাব, বিদয়াত
বা নাজায়েয মোটেও নয়।
তারাবীহ নামাযের
পর হাত উঠায়ে,
সম্মিলিতভাবে
মুনাজাত করা
তারাবীহ নামাযের প্রতি চার রাকায়াত পর পর অথবা
বিশ রাকায়াত পর হাত উঠায়ে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা জায়েয ও মুস্তাহাব। তবে
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আমল হিসাবে পবিতর হাদীছ শরীফে উনার মধ্যে উল্লেখ নেই।
যেহেতু সাধারণভাবে নামাযের পর মুনাজাত করার আদেশ মুবারক পবিতর হাদীছ শরীফ উনার
মধ্যে এসেছে,
তাই ফক্বীহগণ ফরজ নামাযের ন্যায় তারাবীহ নামাযের পর মুনাজাত
করা মুস্তাহাব বলে উল্লেখ করেছেন। তাছাড়া শরীয়তের কোথাও তারাবীহ নামাযের পর
মুনাজাত করাকে নিষেধ করা হয়নি। আর যেহেতু মুনাজাতের মধ্যে হাত উঠানো আদব ও সুন্নত
মুবারক উনার অন্তর্ভূক্ত এবং পবিতর হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে সম্মিলিত মুনাজাত কবুল
হয় বলে উল্লেখ আছে, সেহেতু তারাবীহ নামায উনার প্রতি চার রাকায়াত পর পর অথবা
বিশ রাকায়াত পর হাত উঠায়ে, সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা জায়েয ও
মুস্তাহাব। কারণ কেউ প্রমাণ করতে পারবেন না যে, ইসলামী শরীয়ত
উনার কোথাও তারাবীহ নামাযের পর হাত উঠায়ে, সম্মিলিতভাবে
মুনাজাত করা বিদয়াত বা নাজায়েয বলা হয়েছে।
নিম্মে তারাবীহ নামায উনার পর হাত
উঠায়ে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার অকাট্য দলীলসমূহ পেশ করা হলো-
(১)
السوال:- بعد نماز تراویح دعا مانگنا جائز ھے
یا نھین؟
الجواب:- بعد ختم تراویح دعا مانگنا درست اور
مستحب ھے- اور معمول سلف و خلف ھے- (فتاوے دیوبند ج 4 صفہ 253 )
অর্থঃ- প্রশ্ন- তারাবীহ
নামাযের পর মুনাজাত করা জায়েয আছে কি?
উত্তর- তারাবীহ নামাযের পর
মুনাজাত করা জায়েয ও মুস্তাহাব এবং সলফ ও খলফগণের আমলের অন্তর্ভূক্ত। (ফতওয়ায়ে
দেওবন্দ,
৪র্থ জিঃ পৃঃ-২৫৩)
(২)
السوال:- تراویح ختم ھونے پر و ترسے پھلے
احتماعی دعا ھتھ اطھاکر کیسا ھے؟
الجواب:- اس سے متعلق کوئی صریح جنریہ نھین البتہ دعا بعد الصلوۃ کےکلیہ مین یہ
بھی داخل ھے- کیونکہ تراویح مستقل نمار ھے-
(احسن الفتاوی ج 3 صفہ 519)
অর্থঃ- প্রশ্ন- তারাবীহ
নামায শেষে বিতর নামাযের পূর্বে হাত উঠায়ে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা কিরূপ?
উত্তর- এ ব্যাপারে স্পষ্ট
কোন বর্ণনা পাওয়া যায়না, অবশ্য নামাযের পর মুনাজাত করা
সংক্রান্ত পবিতর হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে তারাবীহ নামাযও অন্তর্ভূক্ত, কেননা তারাবীহ একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ও পৃথক নামায। (সুতরাং তারাবীহ নামাযের পরও
মুনাজাত করা জায়েয)। (আহ্সানুল ফতওয়া, ৩য় জিঃ পৃঃ ৫১৯)
(৩)
السوال:- تراویح کی بیس رکعت ختم ھونے پر دعا
مانگنا کیسا ھے؟
الجواب:- مستحب ھے- (فتاوے محمودیہ ج1 صفہ
362)
অর্থঃ- প্রশ্ন- তারাবীহ
নামায বিশ রাকায়াত শেষ করে মুনাজাত করা কিরূপ?
উত্তর- মুস্তাহাব। (ফতওয়ায়ে
মাহ্মূদিয়াহ্, ২য় জিঃ পৃঃ ৩৬২)
(৪-৫)
السوال:- تراویح کی چار رکعت کے بعد ھاتھ اطھاکر
دعا مانگنا کیسا ھے؟
الجواب:- تراویح کی ھر چر رکعت کے بعد جلسہ
استراحت مستحب ھے اور اس مین اختیار ھے
خواہ تبیح و درود پرھے- خواہ نوافل و تلاوت مین مشغول رھے- خواہ اسوقت کو دعا و
مناجات مین گزرین- کڈا فی سکب الانھر ج 1 صفہ 236 فتاوے محمودیہ ج2 صفہ 326)
অর্থঃ- প্রশ্ন- তারাবীহ
নামাযের প্রত্যেক চার রাকায়াত পর পর হাত উঠায়ে মুনাজাত করা কিরূপ?
উত্তর- তারাবীহ নামাযের
প্রত্যেক চার রাকায়াত পর পর বিশ্রাম নেয়া মুস্তাহাব। ঐ সময় তাসবীহ, দরুদ শরীফ পাঠ করবে, চাই নফল নামায এবং কুরআন শরীফ তিলাওয়াতে মশগুল থাকবে, অথবা ঐ সময়টুকু মুনাজাতে কাটিয়ে দিবে। (অর্থাৎ ঐ সময় মুনাজাত করা নাযায়েয নয়
বরং জায়েয ও মুস্তাহাব)। (অনুরূপ সাকাবুল আনহার, ১ম জিঃ পৃঃ২৩৬ কিতাবে বর্ণিত আছে- ফতওয়ায়ে মাহমুদিয়া, ২য় জিঃ পৃঃ ৩৬৬)
(৬)
تراویح کے بعد دعا کرنا احادیث سے صراحۃ تو
ثابت نھین- ھان عام طور پر نماز کے بعد دعاکو مستحب ھونا احادیث سے مفھوم ھوتا ھے
اس عموم مین تراویح بھی داخل ھے- الخ-
(امداد الاحکام ج1 صفہ 233)
অর্থঃ- তারাবীহ নামাযের পর
মুনাজাত করা পবিতর হাদীছ শরীফ দ্বারা
স্পষ্ট প্রমাণিত নেই। হ্যাঁ, পবিতর হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, সাধারণভাবে
নামাযের পর মুনাজাত করা মুস্তাহাব। তারাবীহ
নামাযও এটার অন্তর্ভূক্ত। (অতএব, অন্যান্য নামাযের ন্যায় তারাবীহ
নামাযের পরও মুনাজাত করা মুস্তাহাব) (ইমদাদুল আহ্কাম, ১ম জিঃ পৃঃ-২৩৩)
সুতরাং উপরোক্ত দলীলভিত্তিক আলোচনা দ্বারা
স্পষ্ট প্রমাণিত হয় যে, তারাবীহ নামাযের প্রতি চার
রাকায়াত পর পর অথবা বিশ রাকায়াত পর হাত উঠায়ে, সম্মিলিতভাবে
মুনাজাত করা জায়েয ও মুস্তাহাব।
ঈদের
নামাযের পর হাত উঠায়ে
সম্মিলিতভাবে
মুনাজাত করা
তারাবীহ নামাযের ন্যায় ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার
নামাযের পরও হাত উঠায়ে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা জায়েয ও মুস্তাহাব।
কিন্তু উক্ত মুনাজাত খুৎবার পূর্বে করতে হবে, না পরে করতে হবে, এ বিষয়ে মতভেদ পরিলক্ষিত হয়, তবে আফযল
হলো- খুৎবার পর মুনাজাত করা। কারণ নামাযের পর খুৎবার পূর্বেই যদি মুনাজাত হয়ে যায়, তবে মুসল্লীগণ হয়তোবা মুনাজাত শেষে খুৎবা না শুনেই চলে যাবে, যার কারণে একটি সুন্নত থেকে তারা মাহরুম থেকে যাবে, তাই
খুৎবার পর পরই মুনাজাত করা উত্তম। তবে খুৎবার পূর্বেও করা জায়েয।
নিম্মে তার অকাট্য ও নির্ভরযোগ্য দলীলসমূহ পেশ
করা হলো-
(1)
السوال:- انحضرت صلی اللہ علیہ وسلم بعد نماز
عیدین دعا مانگتے یا نھین؟
الجواب:- عام طور سے نماز کے بعد دعا مانگنا
وارد ھواھے لھذا عیدین کی نماز کے بعد بھی دعا مانگنا مسنون و مستحب ھے-
(فتاوے دیوبند ج5 صفہ 188)
অর্থঃ- প্রশ্ন- নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঈদাইনের
নামাযের পর মুনাজাত করতেন কি?
উত্তর- সাধারণভাবে নামাযের
পর মুনাজাত করার কথা বর্ণিত রয়েছে। এজন্যে ঈদাইনের নামাযের পরও মুনাজাত করা সুন্নত
ও মুস্তাহাব। (ফতওয়ায়ে দেওবন্দ, ৫ম জিঃ পৃঃ-১৮৮)
(২)
السوال-
دعا بعد الصلوات عيدين رابعض مكروة كو يند وبعض بدعت وبعض كويندكه مستحب است؟
الجواب-
دعا بعد الصلوات مسنون ومستحب است ودر احاديث وارد شده است كما نقلها فى الحصن
وغيره ..درصلوات صلوة عيدن هم داخل وشامل است بدعت كفت اند سحيح نيست ........
حضرت مولانا رشيد احمد محدث وفقيه كنكر هى راوجميغ اكابرواساتده مابعد عماز عيدين نثل
صلوات مكتوبات دعا كى قرمودئدথ .. هر كه اورابد بد عت كفت حيح نيست- (فتاو
.. ديوبند ج ৫ صفه ২০ ২)
অর্থঃ- প্রশ্ন- ঈদাইনের
নামাযের পর মুনাজাত করাকে কেউ মাকরূহ্, কেউ বিদয়াত এবং কেউ মুস্তাহাব
বলেন। (কোনটি সঠিক)?
উত্তর- সকল নামাযের পরেই
মুনাজাত করা সুন্নত ও মুস্তাহাব। এ ব্যাপারে হিসনে হাসীন ও অন্যান্য পবিতর হাদীছ শরীফ উনার কিতাবে বর্ণিত রয়েছে।
সুতরাং নামাযসমূহের মধ্যে ঈদাইনের নামাযও অন্তর্ভূক্ত, বিদয়াত
বলা সঠিক নয়। মাওলানা রশীদ আহমদ গাঙ্গুহী এবং সকল আকাবর ও আসাতিযাগণ ফরজ নামাযের
ন্যায় ঈদাইনের নামাযের পরও মুনাজাত করতেন। সুতরাং ঈদাইনের নামাযের পর মুনাজাত
করাকে বিদয়াত বলা কারো জন্যে শুদ্ধ হবেনা। (ফতওয়ায়ে দেওবন্দ, ৫ম জিঃ পৃঃ-২০২)
(3)
السوال:- بعد السلام نماز عیدین کے مناجات برفع یدین جائز ھے یا
ناجائز؟ اگر جائز ھے تو کرنے و الون پر ثواب و برکات دارین کی امید ھے یا نھین
الخ-
الجواب:- نماز کے بعد دعاء کرنا مطلقا جائز ھے-
اور رفع یدین اداب دعا سے ھے لھذا بعد نماز عیدین کے دعاء برفع یدین جائز ھے- اور
ثواب کی بھی امید ھے- امداد الاحکام ج 1 صفہ 643)
অর্থঃ- প্রশ্ন- দুই ঈদের
নামাযের সালামের পর হাত উঠায়ে মুনাজাত করা জায়েয কিনা? যদি
জায়েয থাকে,
তবে মুনাজাতকারী সাওয়াব লাভের আশা করতে পারে কি?
উত্তর- সাধারণভাবে (সকল)
নামাযের পর মুনাজাত করা জায়েয, আর মুনাজাতে হাত উঠানো আদবের
অন্তর্ভূক্ত। তাই ঈদাইনের নামাযের পর হাত উঠায়ে মুনাজাত করা জায়েয এবং সাওয়াব
লাভের আশা করা যায়। (ইমদাদুল আহ্কাম ১ম জিঃ পৃঃ-৬৪৩)
(৪)
السوال:- صلوۃ عیدین اور ان کے خطبہ کے بعد
دعا ما نگنا بھتر ھے یا نہ مانگنا- سلف کا کیا معمول ھے؟
الجواب:- احادیث سے دعا کا ثبوت ھوتا ھے- مگر
ضروری نھین- بھتر یہ ھے کہ دعا کرلیا کرین- اجتماع مسلمین گے وقت دعا قبول ھوتی ھے-
(امداد الاحکام، ج1 صفہ 655)
অর্থঃ- প্রশ্ন- দুই ঈদের
নামায এবং খুৎবার পর মুনাজাত করা উত্তম, না মুনাজাত নাকরা উত্তম? এব্যাপারে সলফে সালেহীনগণের আমল কি?
উত্তর- পবিতর হাদীছ শরীফ
দ্বারা মুনাজাত করা প্রমাণিত হয়, কিন্তু অত্যাবশ্যকীয় নয় (অর্থাৎ
ফরজের ন্যায় জরুরী নয়) উত্তম হলো- মুনাজাত করে নেয়া, কারণ
মুসলমানদের সম্মিলনের সময় মুনাজাত কবূল হয়ে থাকে। (ইমদাদুল আহ্কাম, ১ম জিঃ পৃঃ-৬৫৫)
(১)
عیدین کی نماز کے بعد تو دعا مانگنا مثل تمام
نمازون کے مسنون و مستحب ھے- (عزیز الفتاوی ج 1 صفہ 299)
অর্থঃ- দুই ঈদের নামাযের
পর অন্যান্য নামাযের ন্যায় মুনাজাত করা সুন্নত ও মুস্তাহাব। (আযীযুল ফতওয়া, ১ম জিঃ পৃঃ-২৯৯)
(৬)
احادیث قولیہ مین نبی کریم صلی اللہ علیہ وسلم
سے باسانید صحیحہ ھر نماز کے بعد جس مین نماز عید بھی داخل ھے- دعا مانگنے- دعا
مانگنے- کی فضیلت و ثواب منقول ھے اگرچہ احادیث فعلیہ مین عمل کی تصریح نھین مگر
نفی بھی منقول نھیی اسلئے حدیث قولہہ پر عمل کرنا اور ھر نماز کے بعد اور عیدین کے
بعد دعاء مانگنا جائز و مستحب ھوگا- (امداد المفبین ج 2 صفہ 408)
অর্থঃ- ক্বওলী পবিতর হাদীছ
শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম হতে সহীহ্ সনদে প্রত্যেক নামাযের পর যার মধ্যে ঈদের নামাযও অন্তর্ভূক্ত, মুনাজাত
করার ফযীলত ও সাওয়াব বর্ণিত রয়েছে। যদিও ফে’লী পবিতর
হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আমলের বর্ণনা নেই, কিন্তু মুনাজাত করতে নিষেধও করা
হয়নি। এজন্যে ক্বওলী পবিতর হাদীছ শরীফ অনুযায়ী আমল করা এবং প্রত্যেক নামাযের পর ও
ঈদের নামাযের পর মুনাজাত করা জায়েয ও মুস্তাহাব হবে। (ইমদাদুল মুফতিয়্যীন, ২য় জিঃ পৃঃ ৪০৮)
(৭)
بعد نماز عیدین کے (یاخطبہ کے بعد) دعا مانگنا
گو نبی کریم صلی اللہ علیہ وسلم اور انکے صحابہ، تابعین اور تبع تابعین رضی اللہ
تعالی عنھم سے منقول نھین- مگر چونکہ ھر
نماز کے بعد دعا مانگنا مسنون ھے
اسلئے بعد نماز عیدین بھی دعا مانگنا
مسنون ھوگا-
অর্থঃ- ঈদের নামাযের পর
অথবা খুৎবার পর মুনাজাত করা, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, তাবেয়ীন, তাবে-তাবেয়ীনগণ
হতে বর্ণিত নেই,
কিন্তু প্রত্যেক নামাযের পর যেহেতু মুনাজাত করা সুন্নত, সেহেতু ঈদের নামাযের পরও মুনাজাত করা সুন্নত। (আশ্রাফিয়া বেহেশতী জিওর, ১১তম জিঃ পৃঃ-৮৫)
(৮)
چونکہ نصوص عام سے فضیلت دعاء بعد الصلوۃ ثابت ھے احادیث کثیرہ کے علاوہ
"فاذا فرغت فانصب" سے بھی
استدلال کیا جاتا ھے- لھذا نماز عیدین کے بعد بھی دعا جائز ھے-
(احسن الفتاوی صفہ 303)
অর্থঃ- যেহেতু সাধারণভাবে পবিতর
হাদীছ শরীফ উনার বর্ণনা দ্বারা নামাযের পর মুনাজাত করার ফযীলত প্রমাণিত রয়েছে।
অসংখ্য পবিতর হাদীছ শরীফ ছাড়াও এ পবিতর আয়াত শরীফ দ্বারাও নামাযের পর মুনাজাত করা
প্রমাণিত হয়। তাই ঈদের নামাযের পরও মুনাজাত করা জায়েয। (আহসানুল ফতওয়া, পৃঃ-৩০৩)
(৯)
دعا بعد الصلوۃ کا استحباب احادیث صریحہ کثیرہ
سے ثابت ھے اس کلیہ مین نماز عید بھی داخل ھے- خواہ نماز کے بعد متصل دعا ھو یا
خطبہ کے بعد، خطبہ توابع نماز کے ھے اسلئے بعد الخطبہ بھی بعد الصلوۃ مین داخل ھے- جیسا کہ تمام نمازون مین تبیحات و اوراد کے بعد
ھونے و الی دعا کو کلیہ بعد الصلوۃ المکتوبہ مین شمار کیا جاتاھے- علاوہ ازین ھر
مجلس خیر اور دینی اجتماع کے اختمام پر دعا کا تعامل پوری امت مین ھے- لھذا خطبہ کے
بعد یا خطبہ سے پھلے یا دونون جگہ- تینون صورتین درست ھے- (احسن الفتاوی ج 4 صفہ
115)
অর্থঃ- নামাযের পর মুনাজাত
করা মুস্তাহাব হওয়ার ব্যাপারে অসংখ্য পবিতর হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে স্পষ্ট বর্ণিত
রয়েছে। এর মধ্যে ঈদের নামাযও অন্তর্ভূক্ত। চাই নামাযের পর মুনাজাত করুক অথবা
খুৎবার পর,
খুৎবা নামাযের সাথে সম্পৃক্ত, তাই
খুৎবার পর মুনাজাত করা নামাযের পর মুনাজাত করারই অন্তর্ভূক্ত। যেভাবে সকল নামাযের তাসবীহ, তাহ্লীলের পর মুনাজাতকে, নামাযের পর মুনাজাত করার মধ্যেই
গণ্য করা হয়ে থাকে। যেমন সুন্নত ও নফলের পর যে মুনাজাত করা হয়, তাকেও ফরজ নামাযের পর মুনাজাত হিসাবে গণ্য করা হয়। তাছাড়া প্রত্যেক উত্তম
মজ্লিস এবং দ্বীনী সম্মেলন শেষ হওয়ার পর মুনাজাত করা সকল উম্মতেরই আমল। এজন্যে
খুৎবার পর অথবা খুৎবার পূর্বে অথবা দুই স্থানেই অর্থাৎ তিন অবস্থাই মুনাজাত করা
জায়েয। (আহ্সানুল ফতওয়া, ৪র্থ জিঃ পৃঃ-১১৫)
(১০)
اور عیدین کی نماز کے بعد خصوصیت سے دعاء یا
عدم دعاء منقول نھین لیکن مطلقا ھر نماز کے بعد دعا روایات سے ثابت ھے- پس عیدین کے
بعد بھی دعا کرنا مسنون ھوگا-
(فتاوی محمودیہ ج 2 صفہ 295)
অর্থঃ- এবং ঈদের নামাযের
পর নির্দিষ্টভাবে মুনাজাত করার ব্যাপারে কোন আদেশ বা নিষেধ মুবারক বর্ণিত নেই।
কিন্তু সাধারণভাবে প্রত্যেক নামাযের পর মুনাজাত করা, পবিতর হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত
রয়েছে। সুতরাং ঈদের নামাযের পর মুনাজাত করাও সুন্নত। (ফতওয়ায়ে মাহমুদিয়াহ্, ২য় জিঃ পৃঃ-২৯৫)
(১১)
السوال:- عید کی نماز کے بعد دعا مانگے یا خطبہ
کے بعد ؟
الجواب:- عیدین کے خطبہ کے بعد دعا مانگنا اچھا
ھے- ( کفایۃ لمفتی ج 3 صفہ 252)=
অর্থঃ- প্রশ্ন- ঈদের
নামাযের পর মুনাজাত করবে, নাকি খুৎবার পর?
উত্তর- দুই ঈদের নামাযের
খুৎবার পর মুনাজাত করা উত্তম। (কিফাইয়াতুল মুফ্তী, ৩য় জিঃ পৃঃ-২৫২)
(১২-১৩)
دعا مانگنا بعد نماز عیدین کے مث تمام نمازون کے
مستحب ھے لعموم الادلۃ-
(ترجیح الراجح ج 4 ، فتاوے صدیقہ)
অর্থঃ- দলীলসমূহের
ব্যাপকতার ভিত্তিতে অন্যান্য নামাযের ন্যায় ঈদের নামাযের পর মুনাজাত করা মুস্তাহাব।
(তারজীহুর রাজেহ্ ৪র্থ জিঃ, ফতওয়ায়ে
সিদ্দীকিয়াহ্)
সুতরাং স্পষ্ট প্রমাণিত হলো যে, দুই ঈদের নামাযের খুৎবার পর হাত উঠায়ে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা জায়েয ও
সুন্নত।
ইস্তেস্কা নামাযের পর হাত উঠায়ে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা:
মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ হতে বৃষ্টিলাভের
জন্য যে নামায আদায় করা হয়, তাকে ইস্তেস্কার নামায বলে। উক্ত ইস্তেস্কা নামাযের পর হাত
উঠায়ে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা সুন্নত। এ সম্পর্কে হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে স্পষ্ট
বর্ণনা রয়েছে। তবে অন্যান্য মুনাজাতের সাথে ইস্তেস্কার মুনাজাতের কিছুটা পার্থক্য
পরিলক্ষিত। অর্থাৎ ইস্তেস্কার মুনাজাতে হাত কাঁধের উপরে উঠাতে হয় এবং হাতের উল্টা
পিঠ আকাশের দিকে রাখতে হয়। আর এটাই ইস্তেস্কার মুনাজাতে হাত উঠানোর সঠিক ও সুন্নত
পদ্ধতি।
নিম্নে ইস্তেস্কা নামাযের পর হাত উঠায়ে
সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার অকাট্য ও নির্ভরযোগ্য দলীলসমূহ পেশ করা হলো-
(১-৪)
عن
انس بن مالك قال- اتى رجل اعرابى من اهل البدر الى رسول الله صلى الله عليه وسلم
يوم الجمعه- فقال يا رسول الله صلى الله عليه وسلم هلكت الماشية- هلك العيال- هلك
الناس فرفغ رسول الله صلى الله عليه وسلم يديه يد عو ورفغ الناس ايديهم مع رسول
الله صلى الله عليه وسلم يدعون. (بخارى شريف ج ১ صفه ১৪০-
فتح
البارى ج ২ صفه ৫১৬- تيسير
البارى ج ২ صفه ৯৮- فتح
المهم شرح مسلم ج২ صفه ৪৪৩)
অর্থঃ- হযরত আনাস ইবনে
মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা তিনি করেন, বাদউ
গোত্রের এক বেদুঈন ব্যক্তি জুমুয়ার দিন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট এসে বললো- ইয়া রসূলাল্লাহ্
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! (বৃষ্টির অভাবে) পশু-পাখি, সন্তান-সন্ততী এবং সকল মানুষ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। অতঃপর (একথা শুনে) সাইয়্যিদুল
মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের উভয় হাত মোবারক
উঠায়ে মুনাজাত করলেন এবং উপস্থিত সকলেও নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে উভয় হাত উঠায়ে মুনাজাত করলেন।
(বুখারী শরীফ ১ম জিঃ পৃঃ-১৪০, ফাতহুল
বারী ২য় জিঃ পৃঃ-৫১৬, তাইসীরুল বারী শরহে বুখারী ২য় জিঃ
পৃঃ-৯৭,
ফাতহুল মুলহিম ২য় জিঃ পৃঃ-৪৪৩)
উপরোক্ত সহীহ পবিতর হাদীছ শরীফ দ্বারা স্পষ্ট
প্রমাণিত হলো যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ উনাদেরকে নিয়ে ইস্তেস্কার
নামাযের পর উভয় হাত মুবারক উঠায়ে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করেছেন।
(৫-৯)
عن
انس بن مالك قال- كان النبى صلى الله عليه وسلم لا يرفغ يديه فى شى من دعائه الافى
الاستسقاء وانه يرفح حتى بياض ابطيه. (بخارى شريف ج১ صفه ১৪০، تيسير التارى ج২ صفه ৯৮، مصنف ابن ابيشيبة ج ২ صفه ৪৮৬،
تفة الاحوذى شرح تر مذىج ৩ صفه ১২৮، مشكوة شريف صفه ১৩১)
অর্থঃ- হযরত আনাস
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ইস্তেস্কার
মুনাজাত ব্যতীত অন্য কোন মুনাজাতে হাত মুবারক অত্যাধিক উপরে উঠাতেন না। অর্থাৎ তিনি
ইস্তেস্কার মুনাজাতে হাত মুবারক এতটুক উপরে উঠাতেন যে, তাঁর পবিতর
বোগলদ্বয়ের শুভ্রতা প্রকাশ পেত। (বুখারী শরীফ ১ম জিঃ পৃঃ-১৪০, তাইসীরুল বারী ২য় জিঃ পৃঃ-৯৮, মুছান্নেফ
ইবনে আবী শায়বা ২য় জিঃ পৃঃ-৪৮৬, তোহফাতুল
আহ্ওয়াযী শরহে তিরমিযী ৩য় জিঃ পৃঃ-১২৮, মিশকাত শরীফ পৃঃ-১৩১)
উপরোক্ত পবিতর হাদীছ শরীফ দ্বারা স্পষ্ট
প্রমাণিত হয় যে,
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইস্তেস্কার মুনাজাতে হাত মুবারক কাঁধ মোবারক উনার
উপরে উঠাতেন।
(১০-১১)
عن
انس بن مالك قال- ان النبى صلى الله عليه وسلم- استقى فاشار بظهر كفيه الى السماء.
(مسلم شرف ج১ صفه ২৯৩،
مشكوة صفه ১৩১)
অর্থঃ- হযরত আনাস
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইস্তেস্কার
মুনাজাতে হাতের পিঠ মুবারক আকাশের দিকে রাখতেন। (মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ পৃঃ-২৯৩, মিশকাত শরীফ পৃঃ-১৩১)
উক্ত পবিতর হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি ইস্তেস্কার মুনাজাতে উভয় হাতের পিঠ মুবারক আকাশের দিকে রেখে মুনাজাত
করতেন।
(১২)
عن
عبادبن تميم عن عمه انه رأى رسول الله صلى الله عله وسلم فى الاستسقاء استقبل
القبلة وقلب الرداء ورفغ يديه. (نسائ شريف صفه، ২২১)
অর্থঃ- হযরত ইবাদ ইবনে
তামীম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার মামা হতে বর্ণনা করেন- তিনি দেখেছেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
ক্বিবলামুখী হয়ে, চাদর উল্টায়ে, উভয় হাত মুবারক উঠায়ে ইস্তেস্কার
মুনাজাত করতেন। (নাসাঈ শরীফ পৃঃ-২২৪)
(১৩-১৫)
استسقاء مین اتنے ھاتھ اطھاتے کہ اپ صلی اللہ
علیہ وسلم کی بغلون کی سفیدی دیکھائی دیتی مسلم کی ایک روایت مین ھے کہ استسقاء کی
دعا مین اپ صلی اللہ علیہ وسلم نے ھتھیلی کی پشت اسمان کی طرف کی-
اور شافعیہ نے کھا قحط و غیرہ بلیات کے رفع کے
لئے اسی طرح دعا کرنا سنت ھے-
(فتح الباری ج 11 صفہ 142 ، تیسیر الباری ج 2
صلہ 98 و کذا فی القسطلانی)
অর্থঃ- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইস্তেস্কার
মুনাজাতে হাত মুবারকদ্বয় এতটুক উপরে উঠাতেন যে, উনার
বোগল মুবারকের শুভ্রতা প্রকাশ পেত। মুসলিম শরীফ উনার এক বর্ণনায় রয়েছে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
ইস্তেস্কা নামায উনার মুনাজাতে হাতের পিঠ আকাশের দিকে রাখতেন। আর শাফিয়ীগণ বলেন, অভাব-অনটন ইত্যাদি বিপদাপদ হতে রক্ষা পাওয়ার জন্যে মুনাজাত করার সময় হাত অধিক
উপরে উঠানো সুন্নত। (ফাতহুল বারী ১১তম জিঃ পৃঃ-১৪২, তাইসীরুল বারী ২য় জিঃ পৃঃ-৯৮, অনুরূপ
কোস্তলানীতে বর্ণিত রয়েছে)
(১৬)
جاء
رجل الى النبى صلى الله عليه وسلم فقال يا رسول الله استسق فرفح رسول الله صلى
الله عليه وسلم يديه. (ابن ماجه صفه ৯১)
অর্থঃ- এক ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট এসে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! বৃষ্টির জন্যে মুনাজাত করুন।
অতঃপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উভয় হাত মুবারক উঠায়ে মুনাজাত করলেন। (ইবনে
মাযাহ শরীফ পৃঃ-৯১)
(১৭)
نماز استسقاء مین نبی کریم صلی اللہ علیہ وسلم
سے الطے ھاتھ کرکے دعاء مانگنا ثابت ھے استسقاء مین الطے ھاتھ کر کے دعا مانگنا
سنت ھے- (امداد المفتین ج2 1 صفہ 409)
অর্থঃ- ইস্তেস্কার নামাযে
হাত উল্টা করে মুনাজাত করা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে প্রমাণিত আছে। মূলতঃ ইস্তেস্কার
মধ্যে হাত উল্টায়ে মুনাজাত করা সুন্নত। (ইমদাদুল মুফতিয়্যীন ২য় জিঃ পৃঃ-৪০৯)
উপরোক্ত দলীলভিত্তিক আলোচনা দ্বারা স্পষ্টতঃ
প্রমাণিত হলো যে, ইস্তেস্কার নামাযের পর হাত উঠায়ে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা
সুন্নতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
আর মুনাজাতের সময় হাত কাঁধের উপর উঠানো এবং
হাত উল্টায়ে মুনাজাত করাও পবিতর সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভূক্ত।
নামাযে
জানাযা,
দাফন ও জিয়ারতের পর হাত উঠায়ে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা
জানাযা নামাযের পর হাত
উঠায়ে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা জায়েয। স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জানাযা নামাযের পর মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া
করেছেন বলে পবিতর হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে। তাছাড়া মৃত ব্যক্তির জন্যে
যতবেশী দোয়া করা যায়, ততই তার জন্যে লাভকর। কারণ পবিতর হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ
মুবারক হয়েছে-
الميت كالغريق.
“মৃত
ব্যক্তি ডুবন্ত ব্যক্তির ন্যায়।” অর্থাৎ
মৃত ব্যক্তি সর্বদাই দোয়ার অপেক্ষায় থাকে, আর তাই
মৃত ব্যক্তির জন্যে অধিক মাত্রায় দোয়া করার আদেশ শরীয়তে রয়েছে।
অতএব, কেউ যদি
উক্ত আদেশ অনুযায়ী আমল করতে গিয়ে এবং মৃত ব্যক্তির ফায়দার জন্যে বেশী বেশী দোয়া
করে, তবে তা নাজায়েয বা মাকরূহ্ হবে কেন? পবিতর হাদীছ শরীফ উনার কোথাও কি
জানাযার নামাযের পর মুনাজাত করতে নিষেধ করা হয়েছে? একটি
প্রমাণও কি কেউ দেখাতে পারবে? কখনো সম্ভব নয়। অথচ আমরা প্রমাণ
করতে সক্ষম যে,
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি জানাযার নামাযের পর মৃত ব্যক্তির জন্যে মুনাজাত করেছেন ইনশাআল্লাহ!
হ্যাঁ,
উক্ত মুনাজাতে হাত উঠায়েছেন কিনা এ সম্পর্কিত স্পষ্ট কোন বর্ণনা
পবিতর হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে নেই। তবে যেহেতু অনুসরণীয় ইমাম, মুজতাহিদগণ উনাদের রায় হলো-
رفع
اليدين عند الدعاء على ما عليه عمل الامة اغما هو من الا داب والاستحباب والاتباغ
الاثر لا على سنة الهدى. (فتح القرير)
অর্থঃ- উম্মতের মধ্যে
মুনাজাতে হাত উঠানোর যে আমল বিদ্যমান রয়েছে, নিশ্চয়ই
তা আদব,
মুস্তাহাব ও ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুগণ
উনাদের অনুসরণের অন্তর্ভূক্ত। তবে সুন্নতে মুয়াক্কাদা নয়। (ফতহুল ক্বাদীর)
অতএব, নাজাযার
নামাযের পরও হাত উঠায়ে মুনাজাত করা সুন্নতের অন্তর্ভূক্ত।
এমনিভাবে জানাযার নামাযের পর সম্মিলিতভাবে
মুনাজাত করাও জায়েয ও শরীয়তসম্মত। কেননা পবিতর হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক
হয়েছে,
لا
يجتمع ملاء فيدعو بعضهم ويؤمن بعضهم الااجابهم. (معارف السين)
অর্থঃ- সম্মিলিত মুনাজাতে
কিছু লোক মুনাজাত করলো, আর কিছু লোক আমীন বললো, মহান আল্লাহ পাক তাদের উক্ত মুনাজাত অবশ্যই কবূল করবেন। (মায়ারেফুস সুনান)
কিতাবে আরো উল্লেখ করা হয়েছে,
شریعت کاحکم یہ ھے کہ جو عبادت اجتماعی طور پر
ادا کی گی ھے اسکے بعد تو دعاء اجتماعی طور پر گیا جائے- (اختلاف امۃ اور صراط
مستقیم صفہ 120)
অর্থঃ- মহাসম্মানিত ইসলামী
শরীয়ত উনার নির্দেশ মুবারক হলো- যে ইবাদত সম্মিলিতভাবে করা হয়, সে ইবাদতের পর মুনাজাতও সম্মিলিতভাবে করা যায়। (ইখতেলাফে উম্মত আওর ছিরাতে
মুস্তাক্বীম)
উপরোক্ত দলীলের ভিত্তিতে স্পষ্টই প্রমাণিত হয়
যে, জানাযার নামাযের পর সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা জায়েয ও মুস্তাহাব। কারণ জানাযার
নামায জামায়াতের সাথেই আদায় করা হয়ে থাকে।
কেউ কেউ কোন কোন কিতাবের বরাত দিয়ে বলে থাকে
যে, জানাযার নামাযের পর মুনাজাত করা মাকরূহ্ যেমন হানাফী মায্হাবের সুপ্রসিদ্ধ ও
নির্ভরযোগ্য ফতওয়ার কিতাব মূহীত্বে সারাখছী কিতাবে উল্লেখ আছে যে,
ان الدعاء بعد الصلوة الجنازة مكروه.
অর্থঃ- “নিশ্চয়ই জানাযার নামাযের পর মুনাজাত করা মাকরূহ্।”
ফিক্বাহের বিশ্ববিখ্যাত কিতাব খুলাছাতুল ফতওয়া
সিরীজিয়া,
বাজ্জাজিয়াহ্ এবং বাহরুর রায়েক উনাদের মধ্যে উল্লেখ আছে যে,
لايدعوا
بعد التسليم كما فى الخلاصة وعن الفضلى لابأس به.
অর্থঃ- “(জানাযার নামাযের) সালামের পর মুনাজাত করবেনা।
অনুরূপ খোলাসা কিতাবে বর্ণিত আছে-
ফাজলীহ কিতাবে বর্ণিত মুনাজাত করাতে কোন ক্ষতি নেই।”
আর বিখ্যাত মুহাদ্দিস মুল্লা আলী ক্বারী
রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিশ্ববিখ্যাত কিতাব মিশকাত শরীফ উনার মধ্যে শরাহ মিরকাত
শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ করেন যে,
ولا
يدعوا للميت بعد صلوة الجنازة لا نه يشبه الزيادة فى صلوة الجنازة.
অর্থঃ- “জানাযার নামাযের পর মৃত ব্যক্তির জন্যে মুনাজাত করবে না, কেননা এরূপ মুনাজাত করা জানাযার নামাযে বৃদ্ধি করার নামান্তর।”
পাঠকবৃন্দ! উল্লেখিত ইবারত বা বক্তব্যসমূহ অবশ্যই সঠিক ও যুক্তিযুক্ত, তবে তা অবশ্যই ব্যাখ্যা সাপেক্ষ। মূলতঃ উপরোক্ত বক্তব্য দ্বারা এটাই বুঝানো
হয়েছে যে,
জানাযার নামাযের পর পর অর্থাৎ সালাম ফিরানোর সাথে সাথে
অন্যন্য নামাযের ন্যায় কাতারে থেকেই মুনাজাত করা মাকরূহ, কেননা
তাতে মুনাজাতও জানাযার নামাযের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যায়। অতএব, জানাযার
নামাযের পর কাতার ভঙ্গ করে এবং মৃত ব্যক্তির নিকট হতে সরে গিয়ে সকলে একত্রিত হয়ে
মুনাজাত করবে,
এরূপভাবে মুনাজাত করা মাকরূহ্ নয়। যদি সাধারণভাবে জানাযার
নামাযের পর মুনাজাত করা মাকরূহ্ বা নাজায়েয হতো, তবে
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জানাযার নামাযের পর মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া করতেন না।
অথচ পবিতর হাদীছ শরীফ ও পবিতর ফিক্বাহ শরীফ উনাদের কিতাবে স্পষ্ট বর্ণিত রয়েছে যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানাযার
নামাযের পর মৃত ব্যক্তির জন্যে মুনাজাত বা দোয়া করেছেন। তবে কি তিনি নাজায়েয ও
মাকরূহ্ কাজ করেছেন? নাউযুবিল্লাহ!
মূলতঃ জানাযার নামাযের পর মৃত ব্যক্তির জন্যে
মুনাজাত করা সুন্নত। তবে শর্ত হলো-
(১) উক্ত
মুনাজাতকে ফরজ-ওয়াজিবের ন্যায় জরুরী মনে করা যাবেনা অর্থাৎ সুন্নত মনে করেই করতে
হবে।
(২)
জানাযার নামাযের সালাম ফিরানোর সাথে সাথে মুনাজাত করা যাবেনা।
(৩) সালাম
ফিরানোর পর কাতার ভঙ্গ করে মৃত ব্যক্তি থেকে সরে গিয়ে মুনাজাত করবে। এরূপভাবে
মুনাজাত করা জায়েয বরং সুন্নত, অর্থাৎ সুন্নাতে যায়েদাহ্।
এখানে উল্লেখ্য যে, মুজাদ্দিদে
যামান,
কুতুবুল আলম, আমীরুশ শরীয়ত ওয়াত্ব ত্বরীক্বত, হুজ্জাতুল ইসলাম, কাইউমুয্ যামান, শায়খুল মাশায়েখ, রঈসুল মুহাদ্দিসীন, বাহরুর উলুম, মুহইয়্যূস সুন্নাহ্, তাজুল মুফাসসিরীন, ফখরুল ফুক্বাহা হযরত আবূ বকর সিদ্দীক ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার “মত ও পথ” নামক কিতাব উনার মধ্যে বর্ণিত আছে যে, তিনি-
(১) পাঁচ ওয়াক্ত আযান ও জুমুয়ার ছানী আযানের জাওয়াব দিতে এবং সর্বদা হাত উঠায়ে
মুনাজাত করতেন।
(২) জানাযা নামাযের পর কাতার ভঙ্গ করে মৃত ব্যক্তির জন্যে হাত উঠায়ে মাগফিরাতের
মুনাজাত করতেন।
(৩) তারাবীহ নামাযের প্রতি চার রাকায়াত পর পর হাত উঠায়ে মুনাজাত করতেন।
(৪) কবর জিয়ারতের সময় কবরের দিকে হাত রেখে মুনাজাত করতেন।
মূল কথা হলো- উল্লিখিত পদ্ধতিতে জানাযার
নামাযের পর হাত উঠায়ে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা জায়েয ও মুস্তাহাবের অন্তর্ভূক্ত।
নিম্নে তার অকাট্য ও নির্ভরযোগ্য
দলীলসমূহ পেশ করা হলো-
(১-৩)
ফতহুল
ক্বাদীর,
সিফরুস সায়াদাত এবং যাদুল আখিরাত কিতাবে উল্লেখ আছে যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জানাযার নামায পড়ে এ
দোয়া করতেন-
اللهم
انت ربها وانت خلقتها وانت رزقتها وانت تبضت روحها وائت اعلم بشرها وعلانينها جئنا
شفعاء فا غفر لها وارحمها انك انت الغفور الر حيم.
অর্থঃ- আয় আল্লাহ পাক!
আপনিই তার রব,
আর আপনিই তাকে সৃষ্টি করেছেন ও রিযিক দান করেছেন। আর তাকে দ্বীন
ইসলাম উনার দ্বারা হিদায়েত দান করেছেন। আপনিই তার রূহ্ কবয করেছেন ও আপনিই তার
জাহির ও বাতিন সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত। আমি সুপারিশ করছি তাকে মাফ করে দিন, তার প্রতি দয়া করুন। নিশ্চয়ই আপনি অতি ক্ষমাশীল ও অতিশয় দয়ালু।
(৪)
যাদুল আখিরাত কিতাবে বর্ণিত আছে যে, জানাযা নামাযের সালামের পর এ দোয়া পড়বে-
اللهم
لا تحر منا اجره ولا تفتنا بعده واغفرلنا وله.
অর্থঃ- আয় আল্লাহ পাক!
মৃত্যুজনিত কারণে ধৈর্য্যধারণের সাওয়াব হতে আমাদেরকে বঞ্চিত করবেন না। আর মৃত্যুর
পর আমাদেরকে পরীক্ষার মধ্যে ফেলবেন না এবং আমাদের ও উনার (মৃতের) গুণাহ মাফ করুন।
(৫)
জামিউর রূমূয কিতাবে লেখা আছে, এ দোয়া পড়বে-
ربنا
لاتزغ قلوبنا بعداذ هديتنا وهب لنا من لدنك رحمة انك انت الوهاب.
অর্থঃ- হে আমাদের রব!
আমাদেরকে হিদায়েত দান করার পর আমাদের অন্তরসমূহকে বক্র করবেন না। আমাদেরকে আপনার নিকট
হতে করুনা প্রদান করুন। নিশ্চয় আপনি প্রচুর দানকারী।
(৬)
তাতারখানিয়া কিতাবে লেখা আছে, এ দোয়া
পড়বে-
سبحان
ربك رب العزة عمايصفون وسلام على المرسلين والحمد لله رب العالمين.
অর্থঃ- তোমাদের রব তায়ালা
তিনি মান-সম্মান ও মহত্বের অধিকারী। তিনি লোকদের সমস্ত গর্হিত কথা হতে সম্পূর্ণ পবিতর
ও মুক্ত। সকল হযরত রসূল আলাইহিমুস সালামগণ উনাদের প্রতি সালাম। আর সারাজাহানের রব
মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য সমূদয় প্রশংসা।
(৭)
হযরতুল
আল্লামা,
ফক্বীহুল আসর, মুফতীয়ুল আযম আমীমুল ইহ্সান মুজাদ্দেদী
রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার “হাদীয়াতুল মুসল্লীন” কিতাবে লেখেন- কোন কোন রেওয়ায়েতে আছে, জানাযার
নামাযের পর এ দোয়া পড়বে-
اللهم
انه فلان بن فلان فى ذمتك- دخل فى جوارك- فقه من فتنة القبر ةعذاب النار- وانت اهل
الوفاء والخق- اللهم اغفر له وارحمه انك انت الغفور الر حيم.
অর্থঃ- আয় আল্লাহ পাক! অমুকের পুত্র অমুক আপনার জিম্মাদারী ও হিফাজতে রয়েছে, আপনি
তাকে কবরের পরীক্ষা ও দোযখের আযাব হতে রক্ষা করুন। আপনি ওয়াদা ও হক্ব পূরণকারী।
অতএব,
আপনি তাকে মাফ করে দিন ও তার প্রতি রহম করুন, নিশ্চয়ই আপনি মহা ক্ষমাশীল ও মহা দয়াবান।
(৮)
কিতাবে আরো উল্লেখ করা হয় যে,
وضح
عمر على شريره فتكفنه الناس يدعون ويثنون ويصلون عليه قبل ان يرفح. (مرقات شرح
مشكوة ج৫ صفه ৫৪৮)
অর্থঃ- হযরত ওমর ফারুক
আলাইহিস সালাম উনাকে উনার খাটের উপর রাখা হয়েছিল, অতঃপর
লোকেরা উনাকে কাফন পরাচ্ছিল এবং উনাকে উঠিয়ে নেয়ার পূর্বে উনার জন্যে লোকেরা দোয়া, দরূদ পড়ছিলেন। (মিরকাত শরহে মিশকাত ৫ম জিঃ পৃঃ-৫৪৮)
(৯-১০)
روى
ان رجلا فعل هكذا بعد الصلوة فراه رسول الله صلى الله عليه وسلم ققال ادع يستجب
لك- (كفاية- عنايه)
অর্থঃ- বর্ণিত আছে, এক ব্যক্তি জানাযার নামাযের পর অনুরূপ দোয়া, দরূদ
পড়ছিলেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাকে দেখে বললেন, “দোয়া কর, তোমার দোয়া অবশ্যই কবূল হবে।” (কেফারা, ইনায়া)
(১১)
رخوائدن
قران مجيد برميت ودعا درحق او قبل بر داشتن جنازه وبيش ازدفن سبب محجات از احوال
اخرت وعذاب قبراست. (شرح برزخ)
অর্থঃ- জানাযা উঠিয়ে নেয়া
ও দাফন করার পূর্বে অর্থাৎ জানাযার নামাযের পর মৃতের জন্যে কুরআন শরীফ তিলাওয়াত
করা ও মুনাজাত করা আখিরাতের কঠিন অবস্থা এবং কবর আযাব হতে পরিত্রান পাওয়ার বিশেষ
কারণ। (শরহে বরযখ)
(১২)
اچھا طریقہ ثواب رسانی کا مردہ کے حق مین یہ ھین
کہ قبل دفن جس قدر ھوسکے کلمہ یا قران شریف یا کوئی سورت اپرھ کر ثواب جتشے- (تحفۃ
الغافلین صفہ 3)
অর্থঃ- মৃতের জন্যে দোয়া
করার উত্তম পদ্ধতি হলো- দাফন করার পূর্বে যতটুক সম্ভব হয় দোয়া, দরূদ,
তাসবীহ, সূরা কিরায়াত পাঠ করে বখশিয়ে
দেয়া। (তোহফাতুল গাফেলীন পৃঃ-২)
(১৩-১৪)
وفى
نافع المسلمين وجل رفع يديه بدعاء الفاتحه للميت قبل الدفن جاز. (حواهر النفيس شرح
بح.. صفه ১৩২)
অর্থঃ- নাফেউল মুসলিমীন
কিতাবে উল্লেখ আছে, মৃতের জন্যে দাফনের পূর্বে (অর্থাৎ জানাযার নামাযের পর) উভয়
হাত উঠায়ে মুনাজাত করা জায়েয। (জাওয়াহিরুল নাফীস শরহে দুররুল ক্বাইস পৃঃ-১৩২)
(১৫)
مصلحت
الميت ان يخبتمعوا عنده لقرائة القران والذكر فان الميت ينتفح به. (عينى شرح بخارى)
অর্থঃ- মৃতের জন্য উত্তম
হলো- (দাফন করার পূর্বে) তার নিকটে একত্রিত হয়ে কুরআন তিলাওয়াত ও যিকির আযকার করা, কেননা মৃত ব্যক্তি তার দ্বারা ফায়দা লাভ করে থাকে। (আইনী শরহে বুখারী)
(১৬)
السوال :- بعد نماز جنازہ قبل دفن اولیاء میت مصلیون سے کھتے ھے کہ اپ لوگ تین تین مرتبہ
سورہء اخلاص پرھ کر میت کو ثواب پھنچا دین تو اس مین کچہ حرج نھین ھے-
(فتاوی دیوبند ج 5 صفہ 418)
অর্থঃ- সুওয়ালঃ-
জানাযার নামাযের পর, মৃতের ওলী উপস্থিত মুসল্লীদেরকে লক্ষ্য করে বলেন যে, আপনারা তিনবার সূরায়ে ইখলাস পড়ে মৃতের উপর সাওয়াব বখশায়ে দিন। (এটা কিরূপ)?
জাওয়াবঃ- এরূপ করাতে কোন দোষ বা ক্ষতি নেই। সুতরাং জানাযার নামাযের পর যদি সকল লোক
অথবা কিছু লোক সূরা ইখলাস তিনবার পড়ে মৃতের প্রতি সাওয়াব রেসানী করে, তাতে কোনই ক্ষতি নেই। (অর্থাৎ জায়েয) (ফতওয়ায়ে দেওবন্দ ৫ম জিঃ পৃঃ-৪১৮)
(১৭)
السوال:-
بعد نماز جنازہ قبل دفن چند مصلیون کا ایصال ثواب کی لئے سورہء فاتحہ ایکبلر
اور سورہء اخلاص تین بار اھستہ اواز سے پرھنا اور امام جنازہ یا کسی نیک ادمی سے پرھنا
اور امام جنازہ یا کسی نیک ادمی کا دونون ھاتھ اطھاکر مختصر دعا کرنا شرعا درست ھے
یا نھین؟
الجواب:- اس مین کچھ حرج نھین ھے- لیکن کوئی
رسم کرلینا اور التزام کرنا مثل و اجبات اسکو بدعت بنا دے گا-
(فتاوے دیوبند ج 5 صفہ
434)
অর্থঃ- সুওয়ালঃ- জানাযার
নামাযের পর,
দাফনের পূর্বে কতক মুসল্লী (মৃতের প্রতি) সাওয়াব রেসানী
করার জন্য অল্প আওয়াজে একবার সূরা ফাতিহা, তিনবার
সূরা ইখলাস পড়া এবং জানাযা নামাযের ইমাম অথবা কোন নেক লোকের জন্যে (জানাযার
নামাযের পর) উভয় হাত উঠায়ে সংক্ষিপ্ত মুনাজাত করা শরীয়তে জায়েয কিনা?
জাওয়াবঃ- এরূপ পদ্ধতিতে মুনাজাত করাতে কোন ক্ষতি নেই। কিন্তু কোন প্রকার রসম করে নেওয়া
এবং ওয়াজিবের ন্যায় জরুরী মনে করা বিদয়াত হবে। (ফতওয়ায়ে দেওবন্দ ৫ম জিঃ
পৃঃ-৪৩৪)
(১৮)
জানাযার নামাযের পর কাতার
ভঙ্গ করে মৃতের মাগফিরাতের জন্য মুনাজাত ও সওয়াব রেসানী করা জায়েয। (ফুরফুরা
শরীফের মত ও পথ, পৃষ্ঠা- ২৭)
জানাযার নামাযের পর যেরূপ হাত উঠায়ে
সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা জায়েয, তদ্রুপ লাশ দাফন করার পরও হাত
উঠায়ে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা জায়েয ও সুন্নত।
এ প্রসঙ্গে কিতাবে উল্লেখ করা হয় যে,
(১৯-২০)
السوال:- بعد فراغ دفن میت رسم عام ھے کہ جملہء
حاضرین کھرے ھوکر فاتحہ بہ بسط الیدین پر ھتے ھین یہ رسم مسنون ثابت بالحدیث ھے یا
نھین؟
الجواب:- اس بارہ مین حدیث شریف مین اس قدر و
ارد ھے- و ان عثمان قال کان النبی رسول اللہ صلی اللہ علیہ وسلم اذا فرغ من دفن
المیت و قف علیہ و قال استغفر وا لاخیکم وا سئلوا اللہ لہ- الخ- (رواہ ابودؤد،
فتاوے دیوبند ج 5 صفہ 400)
অর্থঃ- সুওয়ালঃ-
সাধারণভাবে প্রচলিত নিয়ম হলো- মৃত ব্যক্তিকে দাফন করার পর উপস্থিত সকলে দাঁড়িয়ে
উভয় হাত উঠায়ে মুনাজাত করে থাকে, এ পদ্ধতি পবিতর হাদীছ শরীফ দ্বারা
সুন্নত প্রমাণিত কি?
জাওয়াবঃ- এ ব্যাপারে পবিতর হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এতটুক বর্ণিত আছে যে, হযরত ওসমান আলাইহিস সালাম উনার হতে বর্ণিত নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মৃত ব্যক্তিকে
দাফন করে তার নিকট অপেক্ষা করতেন এবং বলতেন “তোমাদের
ভাইয়ের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা কর, আর তার জন্যে মহান আল্লাহ পাক
উনার নিকট সুওয়াল কর .....।” এটা আবূ দাউদ বর্ণনা করেছেন। (ফতওয়ায়ে
দেওবন্দ, ৫ম জিঃ পৃ-৪০০)
(২১)
السوال:- میت کو دفن کرنے کے بعد قبر پر کچ دیر
طھرنا اور دع کرنا ثابت ھے، مگر دعا مین رفع یدین ثابت ھے یا نھین؟
الجواب:- بمقتضا ئے قاعدہ رفع یدین مستحب ھے
اور دعابوقت زیارۃ القبور مین ثبوت رفع یدین سے بھی اسکی تائید ھوتی ھے.....
عن حضرت ابن مسعود رضی اللہ تعالی عنہ- رأیت
رسول اللہ صلی اللہ علیہ وسلم فی قبر عبد اللہ ....... فلما فرغ من دفنہ استقبل
القبلۃ رافعا یدیہ (فتح الباری) اب استحباب رفع یدین مین کوئی تأمل تحین رھا-
(احسن الفتاوی ج4 صفہ 224)
অর্থঃ- সুওয়ালঃ-
মৃত ব্যক্তিকে দাফন করার পর কবরস্থানে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করা এবং মুনাজাত বা দোয়া
করা প্রমাণিত আছে। কিন্তু উক্ত মুনাজাতে হাত উঠানো প্রমাণিত আছে কি?
জাওয়াবঃ- নিয়ম অনুযায়ী উক্ত মুনাজাতে হাত উঠানো মুস্তাহাব। আর কবর জিয়ারতের সময় হাত
উঠানোর প্রমাণ দ্বারাও (দাফনের পর) হাত উঠায়ে মুনাজাত করা প্রমাণিত হয়।
হযরত ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
তিনি বলেন,
আমি দেখেছি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত আব্দুলাহ্ আলাইহিস সালাম উনার কবরে (অর্থাৎ) যখন তাকে দাফন
করলেন,
তখন ক্বিবলামূখী হয়ে উভয় হাত উঠায়ে মুনাজাত করলেন। (ফাতহুল
বারী শরহে বুখারী)
এখন দাফনের পর উভয় হাত উঠায়ে মুনাজাত করা মুস্তাহাব
হওয়ার ব্যাপারে কোন সন্দেহ থাকল না। (আহ্সানুল ফতওয়া ৪র্থ জিঃ পৃঃ২২৪)
(২২)
السوال:- قبرستان مین ھاتھ اطھاکر دعا مانگنا کیسا
ھے؟
الجواب:- فی نفسہ میت کیلئے استغفار کرنا اور ھاتھ
اطھاکر دعا مانگنا قبرستان مین جائز ھے. (فباوئے محمودیہ ج 2 صفہ 393)
অর্থঃ- সুওয়ালঃ-
কবরস্থানে হাত উঠায়ে মুনাজাত করা কিরূপ?
জাওয়াবঃ- মূলতঃ মৃত ব্যক্তির জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং হাত উঠায়ে মুনাজাত করা কবরস্থানেও
জায়েয। (ফতওয়ায়ে মাহমুদিয়া ২য় জিঃ পৃঃ-৩৯৩)
(২৩-৩৩)
قبرستان مین بحالت قیام قبلہ رخ ھوکر اور
دونون ھاتھ اطھاکر دعاکرنا اداب مین سے ھے اور مسنون ھے بدعت نھین ھے .. حضور صلی
اللہ علیہ وسلم کے متعلق دیث مین ھے جاء البقیع فاطال القیام ثم
رفع یدید
ثلاث مرات-
(مسلم شریف ج 1 صفہ 213 ، و :کذا فی خزانۃ الفتاوی- فتاوی
عالمگیریہ- بنایہ- فتح الباری- ابو عوانہ،
درالمختار، فتاوے رحیمیا ج 3 صفہ102 امداد الفتاوی ج 1 صفہ 730، فتاوے رشیدیہ صفہ
234 ، احسن الفتاوی ج 4 صفہ 215)
অর্থঃ- কবরস্থানে দাঁড়ানো
অবস্থায়,
ক্বিবলামূখী হয়ে উভয় হাত উঠায়ে মুনাজাত করা আদব ও সুন্নতের
অন্তর্ভূক্ত। বিদয়াত মোটেও নয়।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে পবিতর হাদীছ শরীফ
উনার মধ্যে উল্লেখ করা হয় যে, তিনি জান্নাতুল বাক্বী কবরস্থানে
আসলেন,
অতঃপর অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলেন। আর উভয় হাত উঠায়ে তিনবার
মুনাজাত করলেন। (মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ পৃঃ-৩১৩ অনুরূপ খাযানাতুল ফতওয়া, ফতওয়ায়ে আলমগীরী, বেনায়া, ফতহুল বারী, আবূ আওয়ানাহ্ দুররুল মোখতার, ফতওয়ায়ে রহীমিয়া ৩য় জিঃ পৃঃ-১০২, ইমদাদুল ফতওয়া ১ম জিঃ পৃঃ-৭৩০, ফতওয়ায়ে রশীদিয়া পৃঃ-২৩৪, আহ্সানুল
ফতওয়া ৪র্থ জিঃ পৃঃ-২১৫)
উপরোক্ত বিস্তারিত ও নির্ভরযোগ্য দলীল-আদীল্লার
ভিত্তিতে স্পষ্টই প্রমাণিত হলো যে, জানাযার নামাযের পর, দাফনের পর ও কবর জিয়ারতের সময় উভয় হাত উঠায়ে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা জায়েয ও
মুস্তাহাব। এটাকে নাজায়েয, বিদয়াত ও মাকরূহ বলা গোমরাহী
ব্যতীত কিছুই নয়।
পাঠকবৃন্দ! আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকার
১৪তম সংখ্যা হতে বর্তমান সংখ্যা অর্থাৎ ২০তম সংখ্যা পর্যন্ত ফরজ নামাযের পর, হাত উঠায়ে,
সম্মিলিতভাবে মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া প্রকাশ
করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার দরবারে অশেষ শুকরিয়া। মূলতঃ উল্লেখিত
সংখ্যাগুলোতে অসংখ্য অকাট্য ও নির্ভরযোগ্য দলীল-আদিল্লার ভিত্তিতে সুস্পষ্টভাবেই
প্রমাণ করা হয়েছে যে-
(১) ফরজ
নামাযের পর,
হাত উঠায়ে, সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা জায়েয ও
মুস্তাহাব।
(২) তারাবীহ
নামাযের প্রতি চার রাকায়াত পর পর অথবা বিশ রাকায়াত পর হাত উঠায়ে, সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা জায়েয ও মুস্তাহাব।
(৩) দুই
ঈদের নামাযের খুৎবার পর, হাত উঠায়ে, সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা জায়েয ও মুস্তাহাব।
(৪)
জানাযার নামাযের পর (কাতার ভঙ্গ করে) হাত উঠায়ে, সম্মিলিতভাবে
মুনাজাত করা জায়েয ও মুস্তাহাব। এগুলোকে বিদয়াত ও মাকরূহ্ বলা সম্পূর্ণই অজ্ঞতা ও গুমরাহীর
নামান্তর।
পাঠকবৃন্দ, উল্লেখিত
বিষয়ে যে দলীলসমূহ পেশ করা হয়েছে, তাছাড়াও আমাদের নিকট বহু দলীল
বিদ্যমান রয়েছে। ফতওয়ার কলেবর বৃদ্ধির আশঙ্কায় সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। প্রয়োজনে আরো
অধিক দলীল-আদিল্লাহ্সহ বিস্তারীতভাবে ফতওয়া প্রকাশ করতে সক্ষম। ইনশাআল্লাহ!
তবে আমাদের বিশ্বাস, মুনাজাত
সম্পর্কে যে ফিতনা আজ সারাবিশ্বে বিরাজমান, তা
সম্পূর্ণরূপে দূর করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করার জন্যে উল্লেখিত দলীলসমূহই যথেষ্ট।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সকলকে উক্ত ফতওয়া
মোতাবেক আমল করার তাওফিক দান করুন। আর মুনাজাত বিরোধীদেরকে সঠিক বুঝ দান করুন। (আমীন)
(সমাপ্ত)