ইনজেকশন নেয়া রোজা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া ( ২ নং )


ইনজেকশন নেয়া রোজা ভঙ্গের কারণ
ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া

গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

          সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন উনার এবং অসংখ্য দুরূদ ও সালাম মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি। মহান আল্লাহ পাক উনার রহমতে গবেষণা কেন্দ্র, মুহম্মদীয়া জামিয়া শরীফ উনার ফতওয়া বিভাগের তরফ থেকে মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকায় যথাক্রমে টুপি, অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান, নিয়ত করে মাযার শরীফ জিয়ারত করা, ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া, জুময়ার নামায ফরজে আইন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া, মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ্ তাহরীমী সম্পর্কে ফতওয়া, কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ্ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ্ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, ফরজ নামাযের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া প্রকাশ করার পর দশম ফতওয়া হিসাবে ইনজেকশন নেয়া রোজা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া,” প্রকাশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার দরবারে অসংখ্য শুকরিয়া।
          মূলতঃ ইনজেকশন সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার কারণ হলো- মাসিক আল বাইয়্যিনাত উনার সুপ্রিয় অগণিত পাঠক ও দ্বীনদার ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণের পুনঃপুনঃ আবেদনের প্রেক্ষিতে এবং বিশেষ করে, রোজা যেহেতু একটি বুনিয়াদী ইবাদত, আর ইতিপূর্বে রোজা অবস্থায় ইনজেকশন নেয়া সম্পর্কে যারা ফতওয়া দিয়েছে, তাদের ফতওয়াটি ভুল হয়েছে বিধায় উক্ত মাসয়ালাটির গুরুত্ব অনুধাবন করে রোজা অবস্থায় ইনজেকশন নেয়ার সঠিক ও সহীহ্ মাসয়ালাটি মুসলমানদের নিকট পৌঁছে দেয়ার জন্যেই ইনজেকশন সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়। কেননা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ আছে,
بلغوا عنى ولو اية.
অর্থঃ- আমার নিকট হতে যদি একটি পবিত্র আয়াত শরীফও তোমরা পেয়ে থাক, তবে তা মানুষের নিকট পৌঁছে দাও।
          এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
 من سئل عن علم عليمه ثم ثم كتمه الجم يوم العيأمة بلجام من النار.
অর্থঃ- যাকে কোন প্রশ্ন করা হয়, আর সে জানা থাকা সত্বেও যদি তা গোপন করে অর্থাৎ জবাব না দেয়, তবে ক্বিয়ামতের দিন তার গলায় আগুনের বেড়ী পরিয়ে দেয়া হবে।
          অন্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে যে, তার জিহব্বা আগুনের কেচি দ্বারা কেটে দেয়া হবে।
          মূলকথা হলো- পবিত্র ইলম উনার উপরোক্ত হক্ব আদায় করার লক্ষ্যেই সর্বোপরি মহান আল্লাহ পাক উনার ও নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাছ সন্তুষ্টি মুবারক হাসিল করার উদ্দেশ্যেই ইনজেকশন সম্পর্কে ফতওয়া প্রকাশ করা হলো।
          এটা বাস্তব সত্য যে, আমাদের ইনজেকশনের ফতওয়াটি সমগ্র বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ দ্বীন তথা পবিত্র ঈমান ও আমল রক্ষার এক বিরাট ও মূল্যবান পাথেয়। শুধু তাই নয়, ইতিপূর্বে যারা ইনজেকশন সম্পর্কে ভুল ফতওয়া দিয়েছে, তাদেরও বিরাট উপকারে আসবে, কারণ তাদের ভুল ফতওয়ার কারণে যারা এতদিন রোজা অবস্থায় ইনজেকশন নিয়ে একটি বুনিয়াদী ফরজ তরক করেছে, এ ফতওয়ার কারণে তারা উক্ত ফরজ তরকের গুণাহ্ হতে বেঁচে থাকতে পারবে ইনশাআল্লাহ! সাথে সাথে ভুল ফতওয়া প্রদানকারীদের আমলনামায়ও আর অসংখ্য লোকের ফরজ তরকের গুণাহ্ লেখা হবেনা। অতএব, এটা আর বলার অপেক্ষাই রাখেনা যে, আমরা ইনজেকশনের ফতওয়া দিয়ে মূলতঃ কারো ক্ষতি করিনি, বরং উপকারই করেছি।
          পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
ان الانسان مر كب من الخطاء والنسيان
অর্থঃ- নিশ্চয়ই মানুষ ভুল-ক্রটি যুক্ত।
          উপরোক্ত হাদীছ শরীফ দ্বারা স্পষ্টই প্রমাণিত হয় যে, মানুষ মাত্রই ভুল হওয়াটা স্বাভাবিক। আর এটাও সত্য যে, নিজের ভুল নিজের কাছে সাধারণতঃ ধরা পড়েনা। অপরের নিকট তা ঠিকই ধরা পড়ে। আর তাই পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বলা হয়েছে,
المؤمن مرأة المؤمن.
অর্থঃ- একজন মুমিন অপর মুমিনের জন্য আয়না স্বরূপ।
          সুতরাং ইনজেকশন সম্পর্কে যারা বিভ্রান্তির মধ্যে রয়েছে, তাদের উক্ত বিভ্রান্তি দূর করার জন্যে এবং তাদের ভুল সংশোধনের উদ্দেশ্যেই আমরা ইনজেকশনের ফতওয়া দিয়েছি। কোন ব্যক্তি বিদ্বেষ বা হিংসার বশবর্তী হয়ে নয়। কেননা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে যে,
من احب لله وابغض لله واعطى لله ومع لله فقد استكمل الايمان.
অর্থঃ- যে ব্যক্তির মুহব্বত, শত্রুতা, আদেশ-নিষেধ সবকিছুই মহান আল্লাহ পাক উনার জন্যে হবে, তার ঈমানই পরিপূর্ণ।
          মূলতঃ আমাদেরকে সর্বাবস্থায় মহান আল্লাহ পাক উনাকেই বেশী মুহব্বত করতে হবে। কেননা মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন,
والذين امنوا اشد حبالله.
অর্থঃ- হে ঈমানদারগণ! মহান আল্লাহ পাক উনাকেই অধিক মুহব্বত করো।” (কোন ব্যক্তি, সমাজ বা রাষ্ট্রকে নয়।)
          বর্তমান সমাজের প্রেক্ষাপটে এ ফতওয়াটি (অর্থাৎ ইনজেকশন নেয়া রোজা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া) বিশেষ গুরুত্ব ও তাৎপর্য বহন করে, যা অস্বীকার করার উপায় নেই। কেননা বর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞানে চিকিৎসার মাধ্যম হিসাবে ইনজেকশনের ভূমিকা অপরিসীম, বিশেষ করে কিছু কিছু রোগের ক্ষেত্রে নিয়মিত ইনজেকশন নেয়ার প্রয়োজন পড়ে। সুতরাং রোজাদার অবস্থায় ইনজেকশন নেয়া, না নেয়ার ব্যাপারে অনেকেই সিদ্ধান্ত হীনতায় ভোগেন, যেহেতু কিছু সংখ্যক মাওলানা সাহেব ইনজেকশনের কার্যকারিতা সম্পর্কে অজ্ঞতা হেতু বিভ্রান্তিমূলক ফতওয়া দিয়েছেন যে, “রোজা রাখা অবস্থায় ইনজেকশন নিলে রোজা ভঙ্গ হয়না
অথচ ইসলামী শরীয়া উনার উসুল মোতাবেক যা সম্পূর্ণ ভুল। অর্থাৎ রোজা অবস্থায় ইনজেকশন নিলে অবশ্যই রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে।
          পবিত্র হাদীছ শরীফ মোতাবেক ইসলামী শরীয়ত উনার সাধারণ উসুল হলো শরীরের ভিতর থেকে কোনকিছু বের হলে ওযূ ভঙ্গ হয় এবং বাইরে থেকে কোন কিছু শরীরের ভিতরে প্রবেশ করলে রোজা ভঙ্গ হয়।অবশ্য কিছু কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে এই উসুলের ব্যতিক্রম লক্ষণীয়। কিন্তু খাছভাবে রোজার ব্যাপারে ইমামে আ’যম আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার যে উসুল, অর্থাৎ বাইরে থেকে রোজা অবস্থায় যে কোন প্রকারে বা পদ্ধতিতে শরীরের ভিতর কিছু প্রবেশ করলে, যদি তা পাকস্থলী অথবা মগজে প্রবেশ করে, তবে অবশ্যই রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে- এই উসুলের উপরেই ফতওয়া এবং অন্যান্য ইমাম মুজতাহিদগণও এ ব্যাপারে একমত যে, যদি নিশ্চিতভাবে জানা যায় যে, ওষুধ মগজ অথবা পাকস্থলীতে পৌঁছায়, তবে অবশ্যই রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে।
ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে দৃষ্টিতে এখানে মগজ বলতে মাথার ভিতরের ঐ থলীকে বুঝানো হয়েছে, যেখানে মগজ অবস্থান করে। অর্থাৎ ওষুধ ইত্যাদি মগজ পর্যন্ত পৌঁছানো শর্ত।
          উপরোক্ত উসুলের ভিত্তিতে যে কোন প্রকারের বা যে কোন পদ্ধতিতে ইনজেকশন নিলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়, তা এই ফতওয়ার মাধ্যমে প্রমাণ করা হয়েছে। যেহেতু যে কোন প্রকারের বা পদ্ধতিতেই ইনজেকশন নেওয়া হোক না কেন, ইনজেকশনের ওষুধ কিছু সময়ের মধ্যে রক্তস্রোতে মিশে যায় ও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং রক্তের মাধ্যমে তা কয়েক মিনিটের মধ্যে মগজে পৌঁছে যায়। কেননা রক্ত এমন একটি মাধ্যম, যার সাথে সরাসরি শরীরের প্রত্যেকটি কোষ ও কলা-এর সংযোগ রয়েছে।
          সাধারণভাবে সকলের স্পষ্টভাবে বুঝবার সুবিধার্থে ইনজেকশনের প্রকারভেদ, পদ্ধতি, কার্যকারিতা ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা অর্থাৎ কিভাবে মগজে পৌঁছায় ইত্যাদি আলোচ্য ফতওয়ায় উল্লেখ করা হয়েছে। আমরা মনে করি এ ব্যাপারে ইনশাআল্লাহ আর কোন প্রকার সন্দেহের অবকাশ থাকবে না। চিকিৎসা বিজ্ঞান ও শরয়ী দলীল তথা আকলী ও নকলী দলীল-আদিল্লার মাধ্যমে বিস্তারিতভাবে আমরা যেভাবে প্রমাণ করেছি যে, “ইনজেকশন নিলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়”, কারো পক্ষে তা খন্ডান সম্ভব হবে না ইনশাআল্লাহ।
ইনজেকশনের আহকাম  :  
          মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন উনার পবিত্র কালাম পাক উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
وما خلقت الجن والانس الا ليعبدون.
অর্থঃ- আমি জ্বিন ও মানুষকে সৃষ্টি করেছি একমাত্র আমার ইবাদত করার জন্যে।
          আর বান্দার জন্যে সৃষ্টি করেছেন অসংখ্য নিয়ামত। এক কথায় এ পৃথিবীর সবকিছুই বান্দার ফায়দার জন্যে সৃষ্টি করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কালাম পাক উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে যে,
هوالذى خلقلكم ما فى الارض جميعا.
অর্থঃ- তিনি সেই মহান আল্লাহ পাক, যিনি যমীনে সবকিছু তোমাদের (ফায়দার) জন্যে সৃষ্টি করেছেন।
          আর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
ان الدنيا خلقت لكم وانكم خلعتم للاخرة.
অর্থঃ- নিশ্চয়ই এ পৃথিবী (এবং এর মধ্যে যা কিছু রয়েছে) সব তোমাদের জন্যই সৃষ্টি করা হয়েছে।
          মূলকথা হলো- মহান আল্লাহ পাক তিনি যতকিছুই সৃষ্টি করেছেন, তার সবই ফায়দাজনক বা উপকারী, কোনটিই অহেতুক সৃষ্টি করেননি। আর তাই এ প্রসঙ্গে পবিত্র কালাম পাক উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
ربنا ما خلقت هذا با طلا.
অর্থঃ- আমাদের রব এগুলো অহেতুক সৃষ্টি করেননি।
          তবে লক্ষণীয় বিষয় হলো- মানুষ কিন্তু এ পৃথিবীর কোন কিছুই ইচ্ছে মত ব্যবহার বা গ্রহণ করতে পারবেনা, তাকে এব্যাপারে অবশ্যই মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মুবারক মেনে চলতে হবে।
          আর তাই মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন,
وما اتاكم الرسول فخذوه وما نها كم عنه فانتهوا واتقوا الله ان الله شديد العقاب.
অর্থঃ- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তোমাদের জন্যে যা নিয়ে এসেছেন, তা আঁকড়িয়ে ধরো এবং যার থেকে বিরত থাকতে বলেছেন তার থেকে বিরত থাকো এবং মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয়  করো, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি কঠিন শাস্তিদাতা।
          আর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে যে,
تر كت فيكم امرين لن تضلوا ما تمسكتم بهما كتاب الله وسنتى.
অর্থঃ- আমি তোমাদের মধ্যে দুটি জিনিস রেখে গেলাম, যতদিন তোমরা এদুটোকে আঁকড়িয়ে ধরে থাকবে, (অর্থাৎ মেনে চলবে) ততদিন তোমরা গুমরাহ্ হবেনা। (সে দুটো হলো) মহান আল্লাহ পাক উনার কিতাব মুবারক ও আমার সুন্নাহ মুবারক।
          অতএব, আমাদেরকে কোনকিছু করতে হলে, বলতে হলে, তা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ভিত্তিতেই করতে হবে। তবে কোন বিষয়ে যদি পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে স্পষ্ট বর্ণনা পাওয়া না যায়, তখন সেক্ষেত্রে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দৃষ্টিতে ইজতেহাদ করার আদেশ মুবারক ইসলমী শরীয়ত উনার মধ্যে রয়েছে। এ প্রসঙ্গে কিতাবে উল্লেখ করা হয়, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে ইয়েমেনের গভর্ণর করে পাঠানোর প্রাক্কালে জিজ্ঞাসা করেছিলেন,
بم تقضى يا معاذ؟ فقال بكتاب الله، فان لم تحبد؟ قال بسنة رسول الله، فان لم تجبد، قال اجتهد براى، فقال الحمد الله الذى وفق رسول رسول الله بما يوضى به رسوله. (مشكواة)
অর্থঃ- হে মুয়ায, আপনার নিকট কোন মুকাদ্দমা আসলে কিভাবে তা ফায়সালা করবেন? হযরত মুয়ায  রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার কিতাব মুবারক উনার দ্বারা। যদি ওটাতে না পান তাহলে? মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র সুন্নাহ মুবারক দ্বারা। অতঃপর জিজ্ঞেস করলেন, যদি ওটাতেও না পান তাহলে? আমি পবিত্র কিতাব মুবারক ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ ভিত্তিতে ইজতিহাদ করে রায় দেবো। এ উত্তর শুনে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, সমস্ত প্রশংসা ঐ মহান আল্লাহ পাক যিনি উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দূত উনাকে এ যোগ্যতা দান করেছেন, যাতে উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সন্তুষ্ট হন।
          আর মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালাম পাক উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
الطيعوا الله والطيعوا الرسول واولى الامر منكم.
অর্থঃ- মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইত্বায়াত কর এবং তোমাদের মধ্যে যারা (উলিল আমর) আদেশ দাতা, তাদের অনুসরণ কর।
          এখানে উলিল আমরবলতে ইমাম, মুজতাহিদ ও আউলিয়া-ই-কিরামগণ উনাদেরকেই বুঝানো হয়েছে। সুতরাং উলিল আমরযেমন ক্বিয়ামত পর্যন্ত পৃথিবীতে থাকবেন, তদ্রুপ ইজতিহাদের দরজাও ক্বিয়ামত পর্যন্ত খোলা থাকবে। আর পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ এ ইজতিহাদেরই অন্তর্ভূক্ত।
          অতএব, পৃথিবীতে ক্বিয়ামত পর্যন্ত যত নতুন সমস্যারই উদ্ভব হোক না কেন, তার ফায়সালা অবশ্যই পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে করতে হবে।
          প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, আমরা শরীরের রোগ নিরাময়ের জন্যে বিভিন্ন পদ্ধতিতে ওষুধ সেবন বা ব্যবহার করে থাকি, তার মধ্যে একটি অন্যতম পদ্ধতি হলো- ইনজেকশন। এ ইনজেকশন বর্তমান  আধুনিক চিকিৎসা ক্ষেত্রে এক বিশেষ পদ্ধতি,  যা চিকিৎসার ক্ষেত্রে অপরিসীম গুরুত্ব বহন করছে। কিন্তু কথা হচ্ছে- সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার পাঁচটি ভিত্তির মধ্যে অন্যতম একটি ভিত্তি হলো- পবিত্র রমযান শরীফ মাস উনার রোজা, যেটা উম্মতে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্যে ফরজে আইন করা হয়েছে।
          এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন তিনি উনার পবিত্র কালাম পাক উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,
يا ايها الذين امنوا- كتب عليكم الصيام كما كتب على الذين من قبلكم لعلكم تتقون.
অর্থঃ- হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হলো- যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর ফরজ করা হয়েছিল, যেন তোমরা তাক্ওয়া হাছিল করতে পার।
          আর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
بنى الاسلام على خمس- شهادة ان لا اله الا الله وان محمدا عبده وسوله واقام الصلوة وايتاء الزكوة والحج والصوم رمضان.
অর্থঃ- পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার ভিত্তি পাঁচটি- (১) সাক্ষি দেয়া মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত আর কোন ইলাহ্ (মাবূদ) নেই এবং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার বান্দা ও রসূল। (২) নামায কায়েম করা। (৩) যাকাত আদায় করা। (৪) পবিত্র হজ্জ করা। (৫) পবিত্র রমযান শরীফ মাস উনার রোজা রাখা।
          এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআন মজীদ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ হয়েছে,
فمن شهد منكم الشهر فليصمه.
অর্থঃ- সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে কেউ রমযান মাস পাবে, তাকে অবশ্যই রোজা রাখতে হবে।
          তবে পবিত্র রমযান শরীফ মাস উনার মধ্যে যারা ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে মাজূর বা অসুস্থ থাকবে, তাদের জন্যে অন্য সময় রোজা রাখার আদেশ মুবারক করা রয়েছে। আর তাই পবিত্র কালাম পাক উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
ومن كان مرسضا اوعلى سفر فعدة من ايام اخر.
অর্থঃ- আর যারা অসুস্থ অথবা মুসাফির, তারা অন্য সময় রোজাগুলো আদায় করে নেবে।
          মূলকথা হলো- পবিত্র রমযান শরীফ মাস উনার ৩০ দিন বা ২৯ দিন (চাঁদের হিসাব মোতাবেক) রোজা রাখা ফরজ। এটার অস্বীকারকারী কাফির এবং তরক করলে কবীরা গুণাহ্ হবে। অতএব উক্ত ফরজ রোজাগুলো আমাদেরকে সঠিকভাবে আদায় করতে হবে। আর সঠিকভাবে আদায় করতে হলে অবশ্যই তার মাসয়ালা-মাসায়েলগুলো জানতে হবে। অর্থাৎ কি করলে রোজা ভঙ্গ হয়, আর কি করলে রোজা ভঙ্গ হয়না, এ সম্পর্কিত ইলম (জ্ঞান) অর্জন করা অবশ্য কর্তব্য, অর্থাৎ ফরজ। এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে যে,
طلب العلم فريضة على كل مسلم.
অর্থঃ- প্রত্যেক মুসলমান পুরুষ-মহিলা সবার জন্য ইলম বা জ্ঞান অর্জন করা ফরজ।
          অতএব ইসলামী শরীয়ত সম্পর্কিত সকল বিষয়ের প্রয়োজনীয় ইলম অর্জন করা যেমন ফরজ তদ্রুপ রোজা অবস্থায় ইনজেকশন নিলে রোজা ভঙ্গ হবে কিনা এ সম্পর্কিত ইলম অর্জন করাও ফরজ। সুতরাং যারা না জেনে রোজা অবস্থায় ইনজেকশন নিবে, তারা এ সম্পর্কিত ইলম অর্জন না করার কারণে ফরজ তরকের গুণাহে গুণাহ্গার হবে।
          মূলতঃ পূর্ববর্তী ও পরবর্তী ইমাম, মুজতাহিদগণ উনাদের পবিত্র ফিক্বাহ শরীফ কিতাবসমূহে রোজা ভঙ্গ হওয়া না হওয়ার কারণসমূহ বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করেছেন। তবে সম্প্রতি যে বিষয়টি নিয়ে মুসলিম উম্মাহ্ বেশী সমস্যার সম্মুখীন, তা হলো- রোজা অবস্থায় ইনজেকশন ব্যবহার করা।পূর্ববর্তী হযরত ইমাম-মুজতাহিদ উনাদের সময় যেহেতু ইনজেকশনের ব্যবহার ছিলনা, তাই উনারা ইনজেকশন সম্পর্কে কোন আলোচনা করেননি। তবে রোজা ভঙ্গ হওয়া না হওয়ার কারণ বা উসূলগুলো কিতাবসমূহে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করে গিয়েছেন। কাজেই স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারে যে, ইনজেকশন নিলে রোজা ভঙ্গ হবে কি হবেনা। ইতিপূর্বে কেউ কেউ ফতওয়া দিয়েছেন যে, “ইনজেকশন নিলে রোজা ভঙ্গ হয়না।যেমন ইমদাদুল ফতওয়ার ২য় জিঃ ১৫৪নং পৃষ্ঠায়, ২১৯নং সুওয়ালের জাওয়াবে বলা হয়েছে যে, “ইনজেকশন নিলে রোজা ভঙ্গ হয়না।
          অনেকে ইনজেকশন সম্পর্কে এ ফতওয়াকেই দলীল হিসাবে পেশ করে থাকেন এবং এটাকেই ইনজেকশন সম্পর্কে সর্বশেষ সিদ্ধান্ত বা ফায়সালা মনে করে থাকেন।
          আর এর উপর ভিত্তি করে বর্তমানে অনেকে ফতওয়া দিচ্ছে যে, রোজা অবস্থায় ইনজেকশন নিলে রোজা ভঙ্গ হয়না।
          ইমদাদুল ফতওয়ার বক্তব্যের উপর ভিত্তি করে ফতওয়া দেয়ার পূর্বে উচিৎ ছিল ইমদাদুল ফতওয়ার বক্তব্যকে ভালরূপে তাহক্বীক্ব করা। বিনা তাহ্ক্বীক্বে ফতওয়া দেয়ার পরিণামও খুব ভয়াবহ। কেননা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে,
عن ابى هريرة رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من افتى بغير علم كان اثمه على من افتا. (رواه ابو دارد)
অর্থঃ- হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “যে ব্যক্তিকে ইলম ব্যতীত ফতওয়া দেয়া হয়েছে, অতঃপর সে তদানুযায়ী কাজ করেছে, তার গুণাহ্ যে তাকে ফতওয়া দিয়েছে, তার উপরই পড়বে।(আবু দাউদ শরীফ)
          অতএব, কেউ যদি কারো ফতওয়ার উপর ভিত্তি করে রোজা অবস্থায় ইনজেকশন নেয় (আর যেহেতু ইনজেকশন নিলে  রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়) তবে রোজা ভঙ্গের গুণাহ্ উক্ত ফতওয়া প্রদানকারীর উপর বর্তাবে। সুতরাং ফতওয়াদানের ব্যাপারে আমাদের সাবধান থাকতে হবে। অর্থাৎ বিনা তাহ্ক্বীক্বে ফতওয়া দান হতে বিরত থাকতে হবে। এ প্রসঙ্গে হযরত ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ওয়াকেয়াটি আমাদের জন্যে এক অমূল্য নসীহত, যদি আমরা বুঝি। তাহলো- 
          এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে, হযরত ইমাম মালেক  রহমতুল্লাহি আলাইহি, যিনি মালেকী মাযহাবের ইমাম। উনার সীরতগন্থে উল্লেখ করা হয়েছে যে, হযরত ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি প্রথম যেদিন ফতওয়ার মসনদে বসলেন মুফতী হিসেবে, ফতওয়া দেওয়ার জন্য সেদিনই উনার কাছে ৪০টি মাসয়ালা বা সুওয়াল আসলো। তিনি ১৮টার জাওয়াব দিয়েছেন এবং বাকী ২২টির জাওয়াবে বলেছেন, ‘আমি জানি নাযখন জাওয়াব শেষ হয়ে গেলো এবং সুওয়ালকারীগণ চলে গেলো, তখন উনার নিকটবর্তী যে সকল বড় বড় আলেমগণ বসেছিলেন উনারা বললেন, “হে হযরত ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি! আপনি কি সত্যিই ঐ ২২টি মাসয়ালার জাওয়াব জানেন না? তখন হযরত ইমাম মালেক  রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, “হ্যাঁ, আমার জানা আছে, তবে ১৮টি মাসয়ালায় আমার পূর্ণ তাহ্ক্বীক্ব আছে, তাই জাওয়াব দিয়েছি, আর বাকী ২২টি মাসয়ালায় পূর্ণ তাহ্ক্বীক্ব নেই, হতে পারে বর্তমানে ২২টি মাসয়ালা সম্বন্ধে আমার যে ফয়সালা আছে পূর্ণ তাহ্ক্বীক্বের পরে তার ব্যতিক্রমও হতে পারে। এই লোকগুলি অনেক দূর থেকে প্রায় ৬ মাসের রাস্তা অতিক্রম করে আমার কাছে এসেছে মাসয়ালা জানার জন্য। এখন যদি আমি বিনা তাহ্ক্বীক্বে তার জাওয়াব দিয়ে দেই যা পূর্ণ শুদ্ধ নয়, তবে তার ভিত্তিতে তারা আমল শুরু করবে, আর পরে যখন আমার পূর্ণ তাহ্ক্বীক্ব হবে এবং তা যদি বর্তমান ফয়সালার ব্যতিক্রম ফয়সালা হয়, তাহলে তাদেরকে কে এই ফয়সালার বিশুদ্ধ বা পূর্ণ তাহ্ক্বীক্ব সম্বলিত মতটি জানাবে? যেহেতু আমি তাদের বিস্তারিত পরিচয় বা ঠিকানা জানি না। আর এজন্য হয়ত আমাকে মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে জওয়াবদিহি ও পাকড়াও হতে হবে। কেননা মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেছেন,
فاسئلوا اهل الذكر انكنتم لا تعلمون.
অর্থঃ- যদি তোমরা না জান, তাহলে যারা জানেন ও অভিজ্ঞ, তাদেরকে জিজ্ঞেস করে নাও।সেজন্য আমি তাদেরকে বলেছি আমি জানি না। অর্থাৎ আমার পূর্ণ তাহ্কীক নেই। যার এব্যাপারে পূর্ণ তাহ্কীক আছে, তার কাছ থেকে জেনে নাও।
          মূলতঃ ইনজেকশন সম্পর্কে ইমদাদুল ফতওয়ার উক্ত বক্তব্য শুদ্ধ হয়নি। কারণ পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ফিক্বাহ শরীফ উনার কিতাবে বর্ণিত উসুল ও বর্তমান আধুনিক বিশ্বের উন্নততর চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে ভালরূপে তাহক্বীক্ব  বা গবেষণা করার পর এটাই প্রমাণিত হয় যে, ইনজেকশন নিলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে। কারণ ইনজেকশনের  দ্বারা প্রবেশকৃত ওষুধ মগজে পৌঁছে। অতএব, ইনজেকশন সম্পর্কে ইমদাদুল ফতওয়ার বক্তব্য ভুল, কাজেই তা গ্রহণযোগ্য নয়। পাঠকগণের সুবিধার্থে গত সংখ্যায় ইমদাদুল ফতওয়ার বক্তব্যটি হুবহু বাংলা অনুবাদসহ ছাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল, যেন পাঠকগণ সহজেই ভুল ও শুদ্ধ ফতওয়াটির পার্থক্য করতে পারেন। ফতওয়ার কলেবর বৃদ্ধি হওয়ায় ইমদাদুল ফতওয়ার বক্তব্য এ সংখ্যায় দেয়া হলোনা। তবে পাঠকগণের সুবিধার্থে ইনজেকশন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কেইমদাদুল ফতওয়ার বক্তব্য খন্ডন এ সংখ্যায় পুণরায় প্রথম হতে ছাপানো হলো। যদিও গত সংখ্যায় প্রকাশিত বক্তব্যের মধ্যে কিছুটা পরিবর্তন ও পরিবর্ধন লক্ষণীয়।
ইনজেকশন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ইমদাদুল ফতওয়া’-এর বক্তব্য খণ্ডন :
          গত সংখ্যায় অর্থাৎ ২১তম সংখ্যায় আমরা ইনজেকশন সম্পর্কে ইমদাদুল ফতওয়ার বক্তব্য জানতে পেরেছি। এখন আমরা পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ফিক্বাহ শরীফ ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে প্রমাণ করবো যে, ইনজেকশন সম্পর্কে ইমদাদুল ফতওয়ার বক্তব্য সম্পূর্ণ ভুল। যেমন ইমদাদুল ফতওয়ায় প্রথমেই বলা হয়েছে-

ঊদূ লেখা ঢুকবে......................................

অর্থঃ- প্রশ্নঃ- ওলামায়ে দ্বীন এ মাসয়ালা সম্পর্কে কি বলেন- বর্তমানে ইনজেকশনের দ্বারা শরীরের ভিতর যে ওষুধ প্রবেশ করানো হয়, তাতে রোজা ভঙ্গ হবে কি? ইসলামী শরীয়ত উনার দলীল দ্বারা উত্তর দিয়ে বাধিত করবেন।
জাওয়াবঃ- ডাক্তারদের সাথে তাহক্বীক্ব ও গবেষণার পর এটাই সাব্যস্ত হয় যে, ইনজেকশনের দ্বারা ওষুধ অর্থাৎ শিরার ভিতরে পৌঁছান হয় এবং শারাঈন অর্থাৎ যে রগ দিয়ে রক্ত চলাচল করে। অথবা আভেরদাহ অর্থাৎ যে রগ দিয়ে রক্ত চলাচল করেনা, এসকল রগের ভিতর দিয়ে গিয়ে রক্তের সাথে মিশে যায়। মগজ অথবা পেটের ভিতর প্রবেশ করেনা। অথচ রোজা ভঙ্গ হওয়ার জন্য ওষুধ ইত্যাদি মগজ অথবা পেটের ভিতর প্রবেশ করা আবশ্যক।
আমাদের বক্তব্যঃ-
ইমদাদুল ফতওয়ার উপরোক্ত বক্তব্য দ্বারা দুটি বিষয় স্পষ্ট হয়ে যায়-
          (১) ইনজেকশন মগজ অথবা পেটে প্রবেশ করেনা।
          (২) ইনজেকশন রগের ভিতর দিয়ে গিয়ে রক্তের সাথে মিশে যায়।
          মূলতঃ ইনজেকশন ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সম্পর্কে সঠিক ধারণা ও জ্ঞান না থাকার কারণেই একথা বলা হয়েছে। তাই পাঠকগণকে ইনজেকশন ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সম্পর্কে সঠিক ধারণা দেয়ার জন্য চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে কিছু আলোচনা করবো।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে ইনজেকশন :
          রোগ নিরাময়ের জন্যে আমরা বিভিন্ন পদ্ধতিতে ওষূধ সেবন করি। বিভিন্ন ডোজেজ ফরম বলতে বোঝায়- ওষুধ গ্রহণের যত রকম পদ্ধতি আছে যেমন- ট্যাবলেট, ক্যাপসুল, সাসপেনশান, সিরাপ, ইনজেকশান ইত্যাদি)-এর মধ্যে ইনজেকশনও একটি পদ্ধতি। ইনজেকশন পদ্ধতিটি মূলতঃ --- পদ্ধতির একটি অংশ। --- পদ্ধতি সম্পর্কে বলা হয়- --- (এক, ---) --- অর্থাৎ পেরেনটারাল পদ্ধতিটি হচ্ছে সেই পদ্ধতি, যেখানে এক অথবা বেশী সংখ্যক শরীরের ত্বকের স্তর অথবা মিউকাস মেমব্রেনের স্তরের মধ্য দিয়ে ইনজেকশনের মাধ্যমে শরীরে ওষুধ প্রবেশ করানো হয়।
          ইনজেকশনকে পাঁচটা সাধারণ শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে-
১। দ্রবণ জাতীয় ইনজেকশন ---
২। শুস্ক দ্রব্য, কিন্তু শরীরে ইনজেকশন পদ্ধতিতে দেয়ার পূর্বে কোন দ্রবণে দ্রবীভূত করে নেয়া যায়। যেমন- ---
৩। সাসপেনশন জাতীয়। ---
৪। শুষ্ক অদ্রবণীয় দ্রব্য কিন্তু কোন ঠবযরপষব (মাধ্যম)-এ মিশিয়ে দেয়া হয়। ---
৫। ইমালশান জাতীয়। ----
          এই পাঁচ প্রকার ইনজেকশন আবার বিভিন্ন পথে শরীরে প্রবেশ করানো হয় এবং কোন পথে কোন ইনজেকশন দেয়া হবে, তা নির্ভর করে সাধারণতঃ ওষুধের গুণাগুনের ওপর। যেমন সাসপেনশন জাতীয় ইনজেকশন সরাসরি রক্তে দেয়া হয়না, কেননা সেখানে বড় বড় দানা --- অর্থাৎ রক্ত জালিকা বন্ধ করে দিতে পারে। আবার ---- জাতীয় ইনজেকশন ত্বকের স্তর দিয়ে দিতে হলে ---- খুব গুরুত্বপূর্ণ। নতুবা ত্বকে --- অর্থাৎ জ্বালা হতে পারে। সে কারণেই আবার বিভিন্ন পদ্ধতিতে দেয়া হয়। এর মধ্যে নিচের মাধ্যমগুলি উল্লেখযোগ্য-
১। ইন্ট্রাভেনাস
২। সাবকিউটেনিয়াস
৩। ইন্ট্রাডারমাল
৪। ইন্ট্রামাসকিউলার
৫। ইন্ট্রাথিকাল
৬। ইন্ট্রা আরটারিয়াল
ইন্ট্রাভেনাস :- এ পদ্ধতিতে --- (শিরা) -এর মাধ্যমে রক্তে ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। এ পদ্ধতিতে ওষুধ সরাসরি রক্তে মিশে যায়।
--- সাবকিউটেনিয়াস : শরীরে ত্বকের এবং মিউকাস মেমব্রেনের এক বা একাধিক স্তরের মধ্য দিয়ে এ পদ্ধতিতে ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। তবে এ পদ্ধতিতেও ওষুধ রক্ত স্রোতে মিশে যায়।
ইন্ট্রামাসকিউলার : এ পদ্ধতিতে ওষুধ শরীরের পেশীসমূহের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করানো হয় এবং কিছু সময় পর ওষুধ রক্ত স্রোতে গিয়ে মিশে।
ইন্ট্রাথিকাল : অনেক সময় --- অর্থাৎ কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে ওষুধ অন্যান্য পদ্ধতিতে প্রয়োগ করলে বিলম্বে পৌঁছে, আর সে কারণেই এখন এ পদ্ধতি ব্যবহার করলে ওষুধ সহজেই ---এ পৌঁছে।
          এটা সহজেই বোঝা যায় যে, ইনজেকশনের যে কোন পদ্ধতিতেই শরীরে ওষুধ প্রয়োগ করা হোক না কেন শরীরে ওষুধের শোষণের কিছু সময় পরেই রক্ত স্রোতের মাধ্যমে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। এ ব্যাপারে ---- তে বলা হয়েছে-
---
          অর্থাৎ ওষুধের শোষনের কয়েক মিনিটের মধ্যেই হৃৎপিন্ড, যকৃৎ, কিডনী, মগজ এবং অন্যান্য অঙ্গে বেশীরভাগ ওষুধ চলে যায়।
          ওষুধ মূলতঃ রক্তস্রোতের মাধ্যমেই শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে থাকে, কেননা রক্তকে বলা হয় --- এর সংজ্ঞায় বলা হয়- 
----
          অর্থাৎ রক্ত হচ্ছে এমন একটি মাধ্যম, যার মধ্য দিয়ে খাদ্য, অক্সিজেন, পানি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান টিস্যুসমূহে পৌঁছে এবং বর্জ দ্রব্যসমূহ বহন করে নিয়ে আসে। এটা এক ধরণের সংযোগ কলা --। সুতরাং ----এ পৌঁছে ওষুধ শরীরের সর্বাংশে ছড়ায়, অর্থাৎ মগজে পৌঁছে। তবে আমাদের আলোচনার প্রয়োজনে আমরা এবারে মগজে ওষুধ প্রবেশের পথটি বর্ণনা করবো, তবে তার পূর্বে মগজের গঠন নিয়ে একটু আলোচনা করা যাক।
---
আমাদের মগজের উপর আছে তিনটি পর্দা-
১। ডুরা মেটার
২। --- এ্যরাকনয়েড
৩। --- পায়া মেটার
          ডুরা মেটারের গঠন একটু পুরু এবং পায়া মেটার অত্যন্ত সুক্ষ্ম একটি পর্দা, যা কিনা মগজকে ঢেকে আছে। আর এ দুয়ের মাঝামাঝি হলো এ্যারাকনয়েড। --- রক্ত নালী এ তিনটি পর্দা --- পার হয়ে মগজে বা --- এ পৌঁছেছে এবং জালিকার মত মগজের অভ্যন্তরে ছড়িয়ে আছে।
          এ পর্যন্ত আলোচনায় তাহলে আমরা যে ধারণা পেলাম তা হচ্ছে-
১। ইনজেকশন কত প্রকার এবং কত রকম পদ্ধতিতে দেয়া হয়,
২। তা কিভাবে রক্ত স্রোতের মাধ্যমে শরীরের সর্বাংশে ছড়ায়।
৩। বিশেষত মগজের অভ্যন্তরে কি করে ইনজেকশনের পর ওষুধ প্রবেশ করে।
          এখানে উল্লেখ্য যে, ইনজেকশন  সাধারণতঃ দুধরণের হয়ে থাকে- (১) ওষুধ ভিত্তিক ইনজেকশন। (২) খাদ্য ভিত্তিক ইনজেকশন। উভয়টির একই হুকুম।
আমাদের এতক্ষণের আলোচনায় এটাই দেখেছি যে, যত প্রকারের ইনজেকশন হোক না কেন, তা এক সময় রক্ত স্রোতে মিশবে এবং মগজে পৌঁছে যাবে।
          অতএব চিকিৎসা বিজ্ঞানের তথ্যবহুল আলোচনা দ্বারা স্পষ্টই প্রমাণিত হলো যে, ইনজেকশান ইত্যাদি মগজে পৌঁছে। সুতরাং রোজা অবস্থায় ইনজেকশান নিলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে। কারণ, পবিত্র ফিক্বাহ শরীফ উনার কিতাবে উল্লেখ রয়েছে যে,
وما وصل الى الجوف اوالى الدمأغ من مخارقة الا صلية كالا نف والاذن والدبر ..... فسدصومه (بدائح الصنائع)
অর্থঃ- যা নাক, কান, পায়খানার রাস্তা ইত্যাদি দ্বারা মগজ অথবা পেটে পৌঁছবে, তাতে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে। (বাদায়ে)
          এ প্রসঙ্গে কিতাবে আরো উল্লেখ করা হয় যে,
وما وصلا الى جوف الرأس والبطن من الاذن والانف والدبر فهو مغطر بالا جماع. (خلاصة الفتاوى)
অর্থঃ- কান, নাক ও পায়খানার রাস্তা দিয়ে ওষুধ ইত্যাদি মগজ অথবা পেটে পৌঁছা সকলের নিকটেই রোজা ভঙ্গের কারণ।(খোলাসাতুল ফতওয়া) অনুরূপ হেদায়া, আইনুল হেদায়া, মাবসূত, বাহরুর রায়েক, রদ্দুল মোহতার উল্লেখ আছে)
          উপরোক্ত কিতাবসমূহে যদিও ওষুধ ইত্যাদি মূল রাস্তা অর্থাৎ নাক, কান, মুখ ইত্যাদি দিয়ে মগজ অথবা পেটে পৌঁছার কথা বলা হয়েছে কিন্তু ইমামগণের নিকট মূল রাস্তা শর্ত নয়, যেমন এ প্রসঙ্গে কিতাবে উল্লেখ করা হয় যে,
وابو حنيفة رحمه الله تعالى يقول المفسد للصوم وصول المفطر الى با طنه فالعبرة للواصل لا للمسلك. (مبسوط)
অর্থঃ- হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, রোজা ভঙ্গের কারণ হলো- রোজা ভঙ্গকারী কোন কিছু ভিতরে প্রবেশ করা, সুতরাং পৌঁছাটাই গ্রহণযোগ্য, মূল রাস্তা নয়।(মাবসূত)
আর ফতহুল ক্বাদীর ২য় জিঃ ২৬৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে যে
وابو حنيفة رحمة الله عليه وسلم يعتبر الوصول.
অর্থঃ- হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট পৌঁছাটাই গ্রহণযোগ্য।
          আর সাহেবাইন রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা মূল রাস্তাকে গ্রহণ করেছেন। তবে ওনারা মূল রাস্তাকে এ জন্যই গ্রহণ করেছেন যে, মূল রাস্তা দিয়ে ওষুধ ইত্যাদি মগজ অথবা পেটে পৌঁছার ব্যাপারে কোন সন্দেহ থাকেনা কিন্তু অন্য স্থান দিয়ে প্রবেশ করলে তাতে সন্দেহ থেকে যায়। এ প্রসঙ্গে কিতাবে উল্লেখ করা হয় যে,
............................................................................................
অর্থঃ- মূল রাস্তা ব্যতীত অন্য কোন স্থান দিয়ে যদি কোন কিছু প্রবেশ করানো হয়, আর উহা যদি মগজ অথবা পেটে পৌঁছে, তবে সাহেবাইনের মতে রোজা ভঙ্গ হবেনা। (মূলতঃ) ওনারা দুজন মূল রাস্তাকে গ্রহণ করেছেন, কেননা মূল রাস্তা দিয়ে প্রবেশ করা বিশ্বাসযোগ্য, আর অন্য স্থান দিয়ে প্রবেশ করা সন্দেহযুক্ত। সুতরাং আমরা সন্দেহের উপর ভিত্তি করে রোজা ভঙ্গের আদেশ দিতে পারিনা। (বাদায়ে, অনুরুপ ফতহুল ক্বাদীরে উল্লেখ আছে)
          অতএব, মূল রাস্তা দিয়ে প্রবেশ করুক অথবা মূল রাস্তা ব্যতীত অন্য কোন স্থান দিয়েই প্রবেশ করুক না কেন, যদি মগজ অথবা পেটে পৌঁছে, তবে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে।      
[ বিঃ দ্রঃ- ওষুধ ইত্যাদি মূল রাস্তা দিয়ে প্রবেশ করা ও মূল রাস্তা ব্যতীত অন্যকোন রাস্তা দিয়ে প্রবেশ করার ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা সম্মুখে আসছে ]
          উপরোক্ত বক্তব্য দ্বারা এটাই প্রমাণিত হলো যে, রোজা ভঙ্গকারী কোন কিছু যেমন ওষুধ ইত্যাদি মগজ অথবা পেটে পৌঁছালে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে। অর্থাৎ ফিক্বাহ্বিদগণের নিকট রোজা ভঙ্গ হওয়ার জন্যে ওষুধ ইত্যাদি মগজ অথবা পেটে পৌঁছা শর্ত।
          আর চিকিৎসা বিজ্ঞানের বক্তব্যের দ্বারা যেহেতু স্পষ্ট প্রমাণিত হয়েছে যে, ইনজেকশান মগজে পৌঁছে যায়, সেহেতু ইনজেকশান নিলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে। অতএব ইমদাদুল ফতওয়ায় যেটা বলা হয়েছে অর্থাৎ ইনজেকশন মগজে পৌঁছেনা সেটা সম্পূর্ণই ভুল।
ইমদাদুল ফতওয়ায় দ্বিতীয়তঃ বলা হয়েছেঃ- যে, “ইনজেকশনের দ্বারা ওষুধ ইত্যাদি শিরার ভিতর পৌঁছানো হয় এবং শারাঈন (অর্থাৎ যে রগ দিয়ে রক্ত চলাচল করে) ও আভেরদা (অর্থাৎ যে রগ দিয়ে রক্ত চলাচল করেনা) এর ভিতর দিয়ে গিয়ে রক্তের সাথে মিশে যায়। মগজ অথবা পেটে ওষুধ প্রবেশ করেনা।
আমাদের বক্তব্যঃ-
ইমদাদুল ফতওয়ার উপরোক্ত বক্তব্যটিও ভুল। কারণ এখানে তিনি রগ বলতে কি বুঝিয়েছেন তা অস্পষ্ট। কেননা ডাক্তারী পরিভাষায় রগ বলতে যেখানে যেটি প্রযোজ্য, সুনির্দিষ্টভাবে সেটাকেই বোঝানো হয়ে থাকে। যদি --- এর কথা ধরা হয়, তবে সেক্ষেত্রে --- বা শিরা হলো রগ। তাহলে এমন কোন --- পাওয়া যাবেনা,  যার  মাধ্যমে  রক্ত চলাচল করেনা। এখন তাহলে চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে রগ সম্পর্কে একটু আলোচনা করা যাক।
রগের বর্ণনা
          (বলা হয়ে থাকে- রগে টান পড়া, রগ কেটে দেয়া, রগ ফুলে যাওয়া, রগ ছিড়ে যাওয়া, রগ টনটন করা, রগ দপদপ করা। এক্ষেত্রে সব রগ এক নয়। কোনটি ---, কোনটা --- কোনটা বা --- কিন্তু আমরা সবগুলোকেই রগ বলছি। এভাবে রগ দশ প্রকার-
১। ধমনি --- : এটা এক প্রকার রক্তনালী যা সাধারণতঃ পরিশোধিত রক্ত বহন করে।
২। শিরা --- : দূষিত রক্ত বহনকারী রক্তনালী।
৩। লসিকা নালী --- : লসিকা বহনকারী নালী, লসিকা --- মানবদেহের জন্য রক্তের মতই একটি অতীব প্রায়োজনীয় দুধের মত সাদা জলীয় পদার্থ। লসিকা নালী লসিকা তন্ত্র --- এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই লসিকা তন্ত্রের প্রধান প্রধান কাজ হলো-
(ক) শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে ফ্যাট এবং বড় আকৃতির প্রোটিন কণা মিশ্রিত বিশেষ জলীয় পদার্থ হৃদ্পিন্ডের দিকে বহন করা।
(খ) রোগ প্রতিরোধে সক্রিয় অংশ গ্রহণ করা।
৪। পেশী --- : এক প্রকার সংযোগ কলা --- যা মানুষের অস্থিসমূহকে আবৃত করে রাখে এবং মানব দেহকে সুন্দর আকৃতি দানে সহায়তা করে। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ চলাচলে মূল ভূমিকা পালন করে এই পেশী। বিভিন্ন প্রকার রক্তনালী, লসিকা নালী ও গ্রন্থি---, স্নায়ু ইত্যাদিসমূহ পেশীর মধ্য দিয়ে অতিক্রমকালে তাদের স্ব স্ব কাজ সম্পাদন করে। গোশ্তপেশীর অভ্যন্তরভাগ ফাপা নয়।
৫। টেনডন : এটা পেশীর প্রান্তিয় অংশ যাদ্বারা গোশ্তপেশী সাধারণতঃ অস্থির সহিত সংযুক্ত থাকে। টেনডন মূলতঃ পেশীরই পরিবর্তীত রূপ- শরীরের বাইরে থেকে যাকে শক্ত দড়ির মত মনে হয়।
৬। স্নায়ু : যা মানবদেহের অনুভূতি বহনকারী স্নায়ুতন্ত্রের ---- একটি বিশেষ অংশ। এটা দেখতে এবং আকার আকৃতিতে সাদা রং-এর দড়ির মত। এর অভ্যন্তর ভাগও ফাপা নয়।
৭। স্পাইনাল কর্ড --- : এটাও স্নায়ূতন্ত্রেরই একটি অংশ যা মেরুদন্ডের অভ্যন্তরে অবস্থিত। এটি মস্তিস্কের সাথে শরীরের অভ্যন্তরস্থ দূরবর্তী স্নায়ূসমূহকে সংযোগকারী। স্পাইনাল কর্ড আসলে বহু সংখ্যক স্নায়ুর সমষ্টি। তবে এর অভ্যন্তরভাগে সরু একটি নালী আছে, যার ভিতর দিয়ে --- নামক পানির মত স্বচ্ছ তরল পদার্থ মস্তিষ্ক থেকে --- এর নিম্ন প্রান্ত পর্যন্ত চলাচল করে।
৮। কক্তনালী বা শ্বাসনালী ---:  গলার সম্মুখভাগে অবস্থিত দেখতে প্রায় বাঁশের আকৃতির, যার মধ্যখান ফাপা এবং ভিতর দিয়ে বাতাস চলাচল করে। মানবদেহের শ্বাসতন্ত্র _--- - এর অন্যতম প্রধান অংশ হিসাবে এটি কাজ করে থাকে।
৯। খাদ্যনালী –-- : শ্বাসনালীর ঠিক পশ্চাতেই অবস্থিত। মানবদেহের পরিপাকতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসাবে মুখ ও পাকস্থলীকে সংযোগ করে থাকে।
১০। স্পারমাটিক কর্ড ---- : অন্ডকোষকে পেটের সাথে সংযোগকারী নালী -যা শুক্রনালী, ধমনি, শিরা লসিকা নালী ও স্নায়ু ইদ্যাদির সমন্বয়ে গঠিত। উল্লেখ্য, সাধারণতঃ মানুষ রগ বলতে উপরুক্ত দশটির যে কোন একটি বা একাধিকটিকে বুঝিয়ে থাকেন যেমন- রগে টান পড়া, রগ কেটে দেয়া, রগ ফুলে যাওয়া, রগ ছিড়ে যাওয়া, রগ টনটন করা, রগ দপদপ করা) যদিও ডাক্তারী পরিভাষায় রগ বলতে যেখানে যেটি প্রযোজ্য সুনির্দিষ্টভাবে সেটিকেই বোঝানো হয়ে থাকে।   
          উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, রগ সম্পর্কে ইমদাদুল ফতওয়ার উক্ত বক্তব্যও ভুল। কারণ চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে এমন কোন শিরা বা রগ পাওয়া যাবেনা, যার দ্বারা রক্ত চলাচল করেনা। আর কোন ওষুধই রক্তের সাথে মিশে গিয়ে নিঃচিহ্ন হয়ে যায়না বরং রক্তে ওষুধের উপস্থিতি থাকে এবং তা সহজেই মগজে পৌঁছে যায়।
          সুতরাং উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা এটাই প্রমাণিত হলো যে, ইনজেকশন সম্পর্কে ইমদাদুল ফতওয়ার উপরোক্ত বক্তব্য মোটেও শুদ্ধ হয়নি। মূলকথা হলো- ইনজেকশন নিলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে। কারণ ইনজেকশনের দ্বারা ব্যবহৃত ওষুধ মগজে পৌঁছে থাকে।
          উক্ত ইমদাদুল ফতওয়ার অন্যত্র আরো বলা হয়েছে-

ঊদূ লেখা ঢুকবে......................................

অর্থঃ- ফক্বীহ্গণ সাধারণতঃ জখমে (আঘাত প্রাপ্ত স্থান) ওষুধ দেয়াকে রোজা ভঙ্গের কারণ বলেননি, বরং অর্থাৎ যে জখম পাকস্থলী পর্যন্ত পৌঁছেছে অথবা অর্থাৎ যে জখম মগজ পর্যন্ত পৌঁছেছে তার শর্ত দিয়েছেন। কেননা তাদের মতে এ দুধরণের জখম দ্বারা ওষুধ মগজ অথবা পেটে পৌঁছে থাকে। নতুবা ওষুধ অন্যান্য জখমের দ্বারা শিরার ভিতরে পৌঁছে থাকে।
আমাদের বক্তব্যঃ-
কিন্তু কথা হচ্ছে- বাস্তবে জায়েফা এবং আম্মাহ মত জখম প্রাপ্ত রোগীর মৃত্যুর প্রহর গুণা ছাড়া স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকা সম্ভব নয় এবং এ রকম রোগীর চিকিৎসা শুধুমাত্র শয্যায় রেখেই সম্ভব। পরবর্তীতে বলা হয়েছে- নতুবা ওষুধ অন্যান্য জখমের দ্বারা শিরার ভেতরে পৌঁছে যায়।অর্থাৎ তারা জায়েফা এবং আম্মাহকে অন্যান্য জখমের সঙ্গে পার্থক্য করেছেন, তারা বুঝাতে চেয়েছেন- জায়েফা এবং আম্মাহ্তে ওষুধ প্রয়োগ করলে সরাসরি মগজে এবং পাকস্থলীতে পৌঁছায় এবং তা রোজা ভঙ্গের কারণ। কিন্তু অন্যান্য জখমে ওষুধ প্রয়োগ করলে তা মগজে বা পেটে পৌঁছায় না, শুধু শিরায় পৌঁছায়, তাই সেখানে ওষুধ প্রয়োগ করা রোজা ভঙ্গের কারণ নয়। কিন্তু মূলতঃ যে কোন জখমেই ওষুধ প্রয়োগ করা হোক না কেন (শুষ্ক পাউডার বা মলম) তা যদি শিরায় পৌঁছে, তবে তা মগজে সহজেই পৌঁছে যাবে।
          মূলত চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে যেকোন জখম বা আঘাতেই ওষুধ প্রয়োগ করা হোক না কেন, তা যদি শিরায় পৌঁছে, তবে তা সহজে মগজে পৌঁছাবে। আর ইমদাদুল ফতওয়ার উক্ত বক্তব্যে যেহেতু উল্লেখ করা হয়েছে যে, “নতুবা ওষুধ অন্যান্য জখমের দ্বারা শিরার ভিতর পৌঁছে থাকে।সেহেতু শিরার ভিতর পৌঁছার কারণে মগজেই পৌঁছাবে। অতএব জখমের মধ্যে ওষুধ দিলেও রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে। এ ব্যাপারে ফিক্বাহের কিতাবে উল্লেখ করা হয় যে,
بن داواى جائفه والامة فان داواها بدواء يابس لا يفسد لانه لم يصل الى الجوف ولا الى الدماغ ولو علم افه وصل يفسد فى قول ابى حنيفه وان داواها بدواء رطب يفسد عند ابى حنيفه. (بدائع الصنائح)
অর্থঃ- জায়েফা ও আম্মাতে যে ওষুধ দেওয়া হয়, উক্ত ওষুধ যদি শুকনা হয়, তবে রোজা ভঙ্গ হবেনা। কেননা উক্ত ওষুধ পেট অথবা মগজে পৌঁছেনা। আর যদি জানা যায় যে, উক্ত ওষুধ মগজ অথবা পেটে পৌঁছে, তবে ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মতে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে। আর ওষুধ যদি ভিজা হয়, তবেও ইমাম আবূ হানীফা  রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মতে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে।(বাদায়ে, হেদায়া, আলমগীরি, আইনুল হেদায়া, মাবসূত ইত্যাদি)
          মূলকথা হলো- যেকোন জখম দ্বারা যেকোন ওষুধ প্রবেশ করানো হোক না কেন, যদি জানা যায় যে, তা মগজ অথবা পেটে পৌঁছেছে, তবে অবশ্যই রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে।
          আর চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে যেহেতু জখমে ওষুধ প্রয়োগ করালে তা রক্তের স্রোতে পৌঁছে যায় এবং রক্ত স্রোতের মাধ্যমে মগজে পৌঁছে যায়, সেহেতু জখমে ওষুধ দিলেও রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে।
          ইমদাদুল ফতওয়ার অন্য এক সুওয়ালের জাওয়াবে বলা হয়েছে যে,
ঊদূ লেখা ঢুকবে...................................................................................
অর্থঃ- সাধারণভাবে যেকোন স্থান দিয়ে (পেটে অথবা মগজে) পৌঁছানো রোজা ভঙ্গের কারণ নয়, বরং যখন --- রাস্তা দিয়ে পৌঁছে (তখন রোজা ভঙ্গ হয়) এবং লোমকুপ থেকে পৌঁছালে ভঙ্গ হবেনা।
আমাদের বক্তব্যঃ-
উক্ত বক্তব্য দ্বারা মূলতঃ এটাই বুঝানো হয়েছে যে, মূল রাস্তা ব্যতীত (অর্থাৎ নাক, কান, মুখ, পায়খানার রাস্তা ইত্যাদি) অন্য কোন স্থান দিয়ে ওষুধ ইত্যাদি মগজে অথবা পেটে প্রবেশ করলেও রোজা ভঙ্গ হবেনা। যদি এটাই সত্য হয়, তবে امه – جائفه তে ওষুধ দিলেও রোজা ভঙ্গ হবেনা, কারণ ওটা তো মূল রাস্তা নয়, মূলতঃ ফিক্বাহের কোন কিতাবেই মূল রাস্তাকে শর্ত করা হয়নি অর্থাৎ কোথাও একথা বলা হয়নি যে, রোজা ভঙ্গ হওয়ার জন্যে ওষুধ ইত্যাদি মূল রাস্তা দিয়ে প্রবেশ করা শর্ত। হযরত ইমাম আযম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মতে ওষুধ ইত্যাদি রাস্তা দিয়ে প্রবেশ করা শর্ত নয় বরং মগজ অথবা পেটে পৌঁছাই রোজা ভঙ্গের কারণ, চাই তা যে স্থান দিয়েই প্রবেশ করুক না কেন। যেমন এ প্রসঙ্গে কিতাবে উল্লেখ করা হয় যে,         
وابو حنيفة رحمه الله تعالى يقول المفسد للصوم وصول المفطر الى با طنه فا لعبرة للواصل لا للمسلك. (مبسوط)
অর্থঃ- হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, রোজা ভঙ্গের কারণ হলো- রোজা ভঙ্গকারী কোন কিছু ভিতরে প্রবেশ করা, সুতরাং পৌঁছাটাই গ্রহণযোগ্য, মূল রাস্তা নয়।(মাবসূত)
আর ফতহুল ক্বাদীর ২য় জিঃ ২৬৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে যে
وابو حنيفة رحمة الله عليه وسلم يعتبر الوصول.
অর্থঃ- হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট পৌঁছাটাই গ্রহণযোগ্য।
          আর সাহেবাইন রহমতুল্লাহি আলাইহি মূল রাস্তাকে গ্রহণ করেছেন। তবে ওনারা মূল রাস্তাকে এ জন্যই গ্রহণ করেছেন যে, মূল রাস্তা দিয়ে ওষুধ ইত্যাদি মগজ অথবা পেটে পৌঁছার ব্যাপারে কোন সন্দেহ থাকেনা কিন্তু অন্য স্থান দিয়ে প্রবেশ করলে তাতে সন্দেহ থেকে যায়। এ প্রসঙ্গে কিতাবে উল্লেখ করা হয় যে,
وما وصل الى الجوف او الى الدماغ عن غير المخارق الاصليه ........... عند هما لا يفسد هما اعتبرا المخارق الا صلية لان الوصول الى الجوف من المخارق الاعلية متقين به ومن غيرها مشكوك فيه فلانحكم بالفساد مح الشك......
অর্থঃ- মূল রাস্তা ব্যতীত অন্য কোন স্থান দিয়ে যদি কোন কিছু প্রবেশ করানো হয়, আর তা যদি মগজ অথবা পেটে পৌঁছে, তবে সাহেবাইনের মতে রোজা ভঙ্গ হবেনা। (মূলতঃ) ওনারা দুজন মূল রাস্তাকে গ্রহণ করেছেন, কেননা মূল রাস্তা দিয়ে প্রবেশ করা বিশ্বাসযোগ্য, আর অন্য স্থান দিয়ে প্রবেশ করা সন্দেহযুক্ত। সুতরাং আমরা সন্দেহের উপর ভিত্তি করে রোজা ভঙ্গের আদেশ দিতে পারিনা। (বাদায়ে, অনুরূপ ফতহুল ক্বাদীরে উল্লেখ আছে)
          এ প্রসঙ্গে কিতাবে আরো উল্লেখ করা হয় যে,
اذا علم ان اليابس وصل يفسد صومه ولو علم ان الرطب لم يصل لم يفسد هكذا فى العناية واذالم يعلم احدهما وكان الدواء رطبا فعند ابى حنيفة رحمة الله عليه يفطر للو صول عادة وقال لا لعدم العلم به فلا يفطر با لشك وان كان يابسا فلا يفطر اتفاقا هكذا فى فتح القدير. (فتاو . عالمكيربة ج صفه ২০৪)
অর্থঃ- যখন জানা যাবে যে, শুকনা ওষুধ মগজ অথবা পেটে পৌঁছেছে, তবে তার রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে। আর যদি জানা যায় যে, ভিজা ওষুধ মগজ অথবা পেটে পৌঁছেনি তবে রোজা ভঙ্গ হবেনা। অনুরূপ এনায়াতে উল্লেখ আছে। আর যদি পৌঁছালো কি পৌঁছালো না কোনটিই জানা না যায়, আর এমতবস্থায় ওষুধ যদি ভিজা হয়, তবে ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মতে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে। কারণ, স্বভাবতঃ ভিজা ওষুধ পৌঁছে থাকে। আর সাহেবাইন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন- (ওষুধ মগজে পৌঁছালো কি পৌঁছালোনা) এটা নিশ্চিতভাবে না জানার কারণে রোজা ভঙ্গ হবেনা। কেননা সন্দেহের দ্বারা রোজা ভঙ্গ হয়না। আর যদি ওষুধ শুকনা হয় এবং যদি জানা না যায় যে, পৌঁছালো কি পৌঁছালোনা, তবে কারো মতেই রোজা ভঙ্গ হবেনা। অনুরূপ ফতহুল ক্বাদীরে উল্লেখ আছে।(ফতওয়ায়ে আলমগীরী ১ম জিঃ পৃঃ-২০৪)
          ফতওয়ায়ে হিন্দীয়াতে এ বিষয়টা আরো সুস্পষ্টভাবে বলে দেয়া হয়েছে। যেমন বলা হয়-

ঊদূ লেখা ঢুকবে...................................................................................
অর্থঃ- ওষুধ মগজে অথবা পেটে পৌঁছাটাই মূলতঃ গ্রহণযোগ্য অর্থাৎ রোজা ভঙ্গের কারণ। ওষুধ শুকনা বা ভিজা হওয়া নয়।
          উপরোক্ত কিতাবসমূহের বক্তব্য দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, ওষুধ ইত্যাদি মূল রাস্তা ব্যতীত অন্যস্থান দিয়ে পৌঁছার ব্যাপারে হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাথে ছাহেবাইনের মূলতঃ কোন মতভেদ নেই। অর্থাৎ উনাদের সকলের মতেই যদি নিশ্চিত জানা যায় যে, ওষুধ ইত্যাদি মগজ অথবা পেটে পৌঁছেছে এবং ওষুধ ইত্যাদি মগজে পৌঁছার ব্যাপারে যদি কোন সন্দেহ না থাকে, তবে হযরত ইমাম আ’যম আবূ হানীফা  রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ন্যায়, ছাহেবাইনের মতেও রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে। তা মূল রাস্তা দিয়ে প্রবেশ করুক বা অন্য স্থান দিয়েই প্রবেশ করুক না কেন। অতএব, ইনজেকশনের দ্বারা ব্যবহৃত ওষুধের ব্যাপারে যেহেতু প্রমাণিত হয়েছে যে, তা নিশ্চিত মগজে পৌঁছে, সেহেতু সকলের ঐক্যমতে রোজা অবস্থায় ইনজেকশন নিলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে। যদিও তা মূল রাস্তা দিয়ে প্রবেশ করেনি। অতএব, মূল রাস্তা শর্ত নয়, শর্ত হলো মগজ অথবা পেটে পৌঁছা।
          আর লোমকুপ, অন্যান্য যখম বা ত্বকের মধ্য দিয়ে অর্থাৎ মূল রাস্তা ব্যতীত অন্য রাস্তা বা স্থান দিয়েও যে ওষুধ অর্থাৎ মলম, মালিশ ইত্যাদি রক্তে পৌঁছে, তা নিয়ে আমরা চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে একটু আলোচনা করবো।
মলমের বর্ণনা:
এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে -  ফার্মাসিউটিক্যাল সেমিসলিড --- প্রিপারেশন্সসমূহের মধ্যে রয়েছে, মলম ---, পেষ্ট ---, ক্রীম ----,  ইমালশান ---, জেল --- ইত্যাদিসমূহ। এ সবগুলো মাধ্যমই ত্বকে ওষুধ প্রয়োগের জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তবে খুব অল্পসংখ্যক মাধ্যম দ্বারা --- মিউকাস মেমব্রেনে, যেমন রেকটাল টিস্যূ ---, বাক্কাল টিস্যূ ---, ইউরিথ্রাল মেমব্রেন ---, কানের বাইরের ত্বকে ---, নাকের মিউকোসাতে এবং চোখের কর্ণিয়াতে ওষুধ দেয়া হয়। মিউকাস মেমব্রেনে ওষুধ প্রবেশ করলে, তা রক্তে ছড়িয়ে যায় কিন্তু শরীরের সাধারণ ত্বক ---- তুলনামূলকভাবে মিউকাস মেমব্রেনের চেয়ে কম ওষুধ প্রবেশের যোগ্যতা রাখে।
          ত্বকের মধ্য দিয়ে ওষুধের প্রবেশ পথটি বর্ণনার পূর্বে আমরা একটু ত্বক নিয়ে আলোচনা করবো। এনাটমী অনুযায়ী ত্বকের অনেক স্তর রয়েছে, তবে প্রধাণতঃ তিনটি।
১। --- (এপিডার্মিস স্তর)
২। --- (ডার্মিস স্তর)
৩। --- (ত্বকের চর্বির স্তর)
          এদের মধ্যে সবচেয়ে বাইরের অংশটিকে বলা হয় ষ্ট্রেটাম করনিয়াম অথবা হরনি স্তর। --- ষ্ট্রেটাম কর্নিয়ামের নীচে রয়েছে, এপিডার্মিস --- এবং এপিডার্মিসের নীচে রয়েছে ডার্মিস অথবা কোরিয়াম ---.
          জানা গেছে যদি ত্বকে ওষুধ প্রয়োগ করা হয় এবং তা কোনভাবে ষ্ট্রেটাম করনিয়াম --- ভেদ করে, তবে পরবর্তীতে --- এবং --- স্তর ভেদ করে যেতে উল্লেখযোগ্য কোন বাধা নেই এবং সহজেই ক্যাপিলারির মাধ্যমে রক্ত স্রোতে মেশে।

(ঙহপব ধ ংঁনংঃধহপব ঢ়ধংংবং ঃযৎড়ঁময ঃযব ংঃৎধঃঁস ঈড়ৎহবঁস. ঃযবৎব রং ধঢ়ঢ়ৎধবহঃষু হড় ংরমহরভরপধহঃ ভঁৎঃযবৎ যরহফৎধহপব ঃড় ঢ়বহবঃৎধঃরড়হ ড়ভ ঃযব ৎবসধরহরহম বঢ়রফবৎসধষ ষধুবৎং ধহফ পড়ৎরঁস, ঃযবৎব রং ঃযবহ ৎবধফু বহঃৎু রহঃড় ঃযব পরৎপঁষধঃরড়হ ারধ ঃযব পধঢ়রষষধৎরবং)
ত্বকরে মধ্য দয়েি ওষুধ প্রবশরেে ব্যাপারে ইরড়ঢ়যধৎসধপবঁঃরপং এ বলা হয়ছ-েে
ওহ মবহবৎধষ, ফৎঁম ধনংড়ৎঢ়ঃরড়হ ভৎড়স ফবৎসধষ াধমরহধষ, ৎবপঃধষ, ঢ়ধৎবহঃবৎধঃ, ড়ৎ মধংঃৎড়রহঃবংঃরহধষ ধনংড়ৎঢ়ঃরড়হ ংরঃবং রহঃড় ংুংঃবসরপ পরৎপঁঃধঃরড়হ ড়পপঁৎং নু ধ ঢ়ধংংরাব ফরভভঁংরড়হ ধপৎড়ংং নষড়ষড়মরপ সবসনৎধহব. ঞযবংব সবসনৎধহবং ভড়ৎস ষরঢ়ড়রফধষ নধৎৎরবৎং ঃযধঃ ংবঢ়বৎধঃব ঃযব নড়ফু’ং রহঃবৎরড়ৎভৎড়স রঃং বীঃবৎরড়ৎ বহারৎড়হসবহঃ.
র্ অথাৎ ত্বকরে মধ্য দয়েি এবং আরো কয়কটেি মাধ্যম দয়েি (উল্লখ্য)ে রক্তে ওষুধরে শোষণ ঘটে বায়োলোজকি মমব্রেনরেে মধ্য দয়েি পসভেি ডফউিশিনরে দ্বারা এবং এ সকল মমব্রেনসেমূহ লপয়িডাল প্রতবন্ধিকতা র্(অথাৎর্ চবি জাতীয় স্তর) তরীৈ কর,ে যা শরীররে ভতরেরে অংশ থকেে বাইররে অংশকে আলাদা কর।ে
ইরড়ষড়মরপ সবসনৎধহব র্সম্পকে আরো বলা হয়ছ-েে ইরড়ষড়মরপ সবসনৎধহবং, নবরহম ষরঢ়ড়রফধষ রহ হধঃঁৎব, ধৎব ঁংঁধষষু সড়ৎব ঢ়বৎসবধনষব ঃড় ষরঢ়রফ ংড়ষঁনষব ংঁনংঃধহপবং. ঞৎধৎরংঢ়ড়ৎঃ ধপৎড়ংং ঃযবংব সবসনৎধহবং ঃযবৎবভড়ৎব ফবঢ়বহফং, রহ ঢ়ধৎঃ, ড়হ ঃযব ষরঢ়রফংড়ষঁনরষরঃু ড়ভ ঃযব ফরভভঁংরহম ংঢ়বপরবং. খরঢ়রফ ড়ংষঁনরষরঃু ড়ভ ধ ফৎঁম রং ফবঃবৎসরহবফ নু ঃযব ঢ়ৎবংবহপব ড়ভ হড়হ ঢ়ড়ষধৎ মৎড়ঁঢ়ং রহ ঃযব ংঃৎঁপঃঁৎব ড়ভ ঃযব ফৎঁম সড়ষবপঁষব ধং বষষি ধং রড়হরুধনষব মৎড়ঁঢ়ং ঃযধঃ ধৎব ধভভবপঃবফ নু ষড়পধষ ঢ়ঐ.র্
অথাৎ বায়োলজকি মমব্রেনে হচ্ছে লপডিি র্(চব)ি জাতীয় এবং যার মধ্য দয়েির্ চবতেি দ্রবীভূত হওয়ার গুণসম্পন্ন (খরঢ়রফ ংড়ষঁনষব) ওষুধ প্রবাহতি করা যায়। এবং এসকল মমব্রেনরেে মধ্য দয়েি প্রবাহতি হওয়ার যোগ্যতার ওপর র্নভরি করে এবং একটি ওষুধরে লপডিি সলউবিলটিিি র্নধািরতি হয় সাধারণত ওষুধরে অণুর মধ্যে ঘড়হ-ঢ়ড়ষধৎ গ্রুপরে উপস্থতরিি ওপর এবং পাশাপাশি যগুেলো আয়নকি অবস্থায় ভঙ্গেে যায় এবং যঔ দ্বারা প্রভাবতি হয় তার উপর। তাহলে এর্ পযন্ত আমরা যে ধারণা পলোম, তা হচ্ছ-ে
১। ঝবসরংড়ষরফ প্রপািরশনেসমূহরে মধ্যে যমনে মলম (ঙরহঃসবহঃং), ক্রীম (ঈৎবধস), জলে (এবষং) ইত্যাদি শরীরে প্রয়োগ করলইে তা শরীররে শোষতি হবনো। কননো কোল্ড ক্রীম, ভনশেংিি ক্রীম এগুলোও টপক্যািলি ব্যবহৃত হয় এবং ঝবসরংড়ষরফ ঢ়ৎবঢ়ধৎধঃরড়হং.
২। রক্তে শোষনরে জন্য প্রয়োজন জায়গা র্নবািচন করা যমনে জবপঃধষ, ইঁপপধষ, টস্যূি ইত্যাদ।ি
৩। ওষুধরে গুণাগুণরে উপর।র্ অথাৎ ত্বকে খষঢ়ড়ঢ়যরষষরপ ওষুধ প্রয়োগ করলে বশীে মাত্রায় শোষতি হয়। কননো  ইরড়ষড়মরপ  মমব্রেনে দয়েি সহজইে প্রবশে কর।ে সাধারণ ত্বকরে মধ্য দয়ওিে প্রবশে করতে পার,ে তবে সে র্সম্পকে বলা হয়ছ-েে ঝরহপব ংশরহ ড়হ াধৎরড়ঁং ঢ়ড়ৎঃরড়হং ড়ভ ঃযব নড়ফু যধং নববহ ংযড়হি ঃড় যধাব ফরভভবৎবহঃ ঢ়বৎসবধনরষরঃু পযধৎধপঃবৎরংঃরপং ভড়ৎ ধ মরাবহ ফৎঁম, ংবষবপঃরড়হ ড়ভ ধ ংরঃব ড়ভ ধঢ়ঢ়ষরপধঃরড়হ রং রসঢ়ড়ৎঃধহঃ. ঞযব ৎধঃব ড়ভ ঢ়বহবঃৎধঃরড়হ ফবঢ়বহফং ড়হ ফরভভঁংরড়হ ড়ভ ফৎঁম রহ ঃযব াবযরপষব ঃড় ঃযব ংশরহ ংঁৎভধপব, ংঁৎলধপব ঢ়ঐ পড়হংরফবৎধঃরড়হং ধহফ ফরভভঁংরড়হ ঃযৎড়ঁময ঃযব ংঃৎধঃঁস পড়ৎহবঁস ধহফ ংঁঢ়ঢ়ড়ৎভরাব ঃরংংঁবং. উৎুম সধু ধষংড় সড়াব ধষড়হম যধরৎ ভড়ষষরপষবং, ংবধঃি মষধহফং. ংবনধপবড়ঁং মষধহফং ড়ৎ ধয়ঁবড়ঁং পযধহহবষং.র্
অথাৎ যহতেুে একটি প্রয়োগকৃত ওষুধরে শরীররে ত্বকরে বভন্নিি স্থানে অনুপ্রবশরেে যোগ্যতা রাখ,ে সহতেুে ওষুধ প্রয়োগরে জায়গা র্নবািচন করা খুব গুরুর্ত্বপূণ। কি মাত্রায় ত্বকে প্রবশে করব,ে তা র্নভরি করে ত্বকে ওষুধরে প্রবশরেে যোগ্যতার উপর, ত্বকরে ঢ়ঐ-এর উপর এবং ঝঃৎধঃঁস ঈড়ৎহবঁস এবং ংঁঢ়ঢ়ড়ৎঃরাব ঃরংংঁব-এর উপর। ওষুধ লোমকুপ দ্বারা, ঘামরে রন্ধ্র দ্বারা, সবসিয়ািস গ্রন্থি দ্বারা প্রবশে করতে পার।ে
সবশষেে আমরা বলতে পার-ি
টহঃরষ ৎবপবহঃষু, ফবৎসধষ ধঢ়ঢ়ষরপধঃরড়হ ড়ভ ফৎঁমং ধংি রহঃবহফবফ ভড়ৎ ষড়পধষ বভভবপঃং ড়হষু. অং ঃৎধহংঢ়ড়ৎঃ ড়ভ ংঁনংঃধহপবং ঃযৎড়ঁময ংশরহ রং নবঃঃবৎ ঁহফবৎংঃড়ড়ফ, যড়বাবিৎ ষরঢ়ড়ঢ়যষষরপ ফৎঁমং ঃযধঃ ধৎব ৎবধংড়হধনষু ঢ়ড়ঃবহষ ধৎব নবরহম রহপড়ৎঢ়ড়ৎধঃবফ রহঃড় ঃৎধহংফবৎসধষ ফড়ংধমব ভড়ৎসং ডরঃয ঃযব রহঃবহঃ ড়ভ বংঃধনষরংযরহম ঃযবৎধঢ়বহঃরপ নষড়ড়ফ ষবাবষং ড়ভ ফৎঁম.র্
অথাৎ এখনর্ পযন্ত ত্বকরে উপর ওষুধ প্রয়োগ করা হয় ষড়পধষ ড়ভভবপঃ পাওয়ার জন্য। যহতেুে ত্বকরে মধ্য দয়েি ওষুধরে প্রবশরেে ঘটনা ভালভাবে জানা হয়ছ,েে সহতেুে খরঢ়ড়যরষরপ এবং উপযুক্তভাবে সক্রয়ি ওষুধসমূহ সগুেলো ত্বকরে উপর এ কারণইে প্রয়োগ করা হয়, যাতে রক্তে ওষুধরে প্রয়োজনীয় মাত্রা পাওয়া যায়।
আমরা জানি রোজা রখেে গোসল করলে অথবা শরীরে তলে মালশি করলে রোজা ভাঙ্গনো। সুতরাং শরীররে প্রবশে করতে পারে এমন কোন তলাৈক্ত উপাদান যমনে পট্রোেলয়ািম জল,েি ঈড়ষফ ঈৎবধস, ঠধহরংযরহম ঈৎবধস ইত্যাদি প্রয়োগওে রোজা ভাঙ্গবনো। যহতেুে এগুলোর সঙ্গে কোন ওষুধ মশ্রতিি থাকনো। কন্তুি যদি উপরোক্ত তলাৈক্ত উপাদানসমূহে (ঈৎবধস বা ঙরহঃসবহঃ নধংব)-এ ওষুধ থাক,ে বশষিতেঃ যগুেলো খরঢ়ড়ঢ়যরষরপ রহ হধঃঁৎব  এবং যা ঝঃৎধঃঁস ঈড়ৎহবঁস ভদে করবে জানা যায়, তবে রোজা ভঙ্গ হব।ে
উপরোক্ত চকৎিসিা বজ্ঞািনরে বক্তব্য দ্বারা স্পষ্টই প্রমাণতি হলো য,ে ওষুধ ইত্যাদি (যমনে মলম, মালশি ইত্যাদ)ি লোমকুপ দ্বারা ঘামরে রন্ধ্র দ্বারা বা অন্যান্য যখম দ্বারা ভতরিে প্রবশে করে থাক।ে
সুতরাং মলম ইত্যাদি লাগালে যদি জানা যায়, তা রক্তে শোষণ ঘটছেে এবং মগজে বা পটেে পৗঁেছছ,েে তবে রোজা ভঙ্গ হব।ে
সুতরাং যকোেন স্থান দয়ইিে প্রবশে করুক না কনে যদি তা মগজ অথবা পটেে পৗঁেছ,ে তবে সকলরে মতইে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাব।ে তাছাড়া এ মতরে স্বপক্ষে হাদীছ শরীফরওে র্সমথন পাওয়া যায়। যমনে হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়ছ,েে
من حديث عائشة مر قوعا انما الافطار مما دخل وليس مما خرج وعن ابن مسعود من قوله انما الوضوء مما خرج وليس مما دخل والفطر فى الصو مما دخل وليس مما خرح واخرج واخرجه الطبرانى والابن ابى شيبة عن اين عباس الفطر مما دخل وليس مما خرج.র্
অথঃ- “হযরত আয়শো রদ্বয়ািল্লাহু তায়ালা আনহু হতে মরফূ হসািবের্ বণত-ি নশ্চয়ি রোজা ভঙ্গ হবে শরীররে ভতরি কছুি প্রবশে করল,ে বরে হলে নয়। হযরত ইবনে মাসউদ রদ্বয়ািল্লাহু তায়ালা আনহু হতের্ বণতি আছ-ে ওযূর ব্যাপারে নয়মি হলো- শরীর হতে কছুি বরে হলে ওযূ ভঙ্গ হব,ে প্রবশে করলে ভঙ্গ হবনো। আর রোজার ব্যাপারে নয়মি হলো- শরীররে ভতরি কছুি প্রবশে করলে রোজা ভঙ্গ হব,ে বরে হলে নয়। আর তবরিানী ও ইবনে আবী শায়বা, হযরত ইবনে আব্বাস  রদ্বয়ািল্লাহু তায়ালা আনহু হতের্ বণনা করন,ে কছুি ভতরিে প্রবশে করলে  রোজা ভঙ্গ হয়ে যাব,ে বরে হলে রোজা ভঙ্গ হবনো।
উপরোক্ত হাদীছ শরীফরে দ্বারাও প্রমাণতি হয় য,ে শরীররে ভতরি কোন কছুি প্রবশে করলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাব।ে উক্ত হাদীছ শরীফে মূল রাস্তাকের্ শত করা হয়ন।ি তবের্ সবক্ষত্রইেে ভতরিে কছুি প্রবশে করালে রোজা ভঙ্গ হয় এবং বরে হলে রোজা ভঙ্গ হবনো তা নয়- যমনে সাপে কাটলে রোজা ভঙ্গ হয়না। অথচ সাপরে বষি ভতরিে প্রবশে করে থাকে এবং ইচ্ছাকৃতভাবে বমী করলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায় অথচ ওটা বরে হয়ে থাক।ে অনুরূপ শরীর হতে রক্ত বরে হলে বা বরে করা হলওে রোজা ভঙ্গ হওয়না। এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফে এরশাদ হয়ছেে য,ে
ثلاث لا يفطرن ااصائم الحجامة والقئ والاحتلام.র্
অথঃ- “তনটিি জনসিি রোজা ভঙ্গ করনো- (১) শঙ্গাি লাগানো র্(অথাৎ শঙ্গাি দ্বারা শরীর হতে যদি ইচ্ছাকৃতভাবওে রক্ত বরে করে তবওে রোজা ভঙ্গ হবনো এখন তা যভোবইে বরে করা হোক না কন)ে। (২) অনচ্ছািকৃত বমী, (৩) স্বপ¦দোষ।
অনকেে সাপে কাটার সাথে ইনজকশেনকে তুলনা করে বলে থাক-ে সাপে কাটলে যমনে বষি ভতরিে প্রবশে করা সত্বওে রোজা ভঙ্গ হয়না, তদ্রুপ ইনজকশেনওে রোজা ভাঙ্গবে না। মূলতঃ ইনজকশেনরে দ্বারা যে ওষুধ শরীরে প্রবশে করানো হয়, তার সাথে সাপরে বষকিে কখনো মলািনো যাবনো, কননো এ বষি প্রবশরেে ঘটনাটি র্সম্পূণ অনচ্ছািকৃত। এ ব্যাপারে আরো বলা যতেে পার,ে যমনে- রোজা রখেে আগরবাতী জ্বালাল,ে ধুমপান করল,ে কোন গ্যাস নাক দয়েি গ্রহণ করলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়। কননো এক্ষত্রেে সবগুলো কাজ ইচ্ছা শক্তরি নয়ন্ত্রিন।ে অথচ আমরা রাস্তায় চলা-ফরোর ও রান্না-বান্নার সময় যে ধোঁয়া গ্রহণ কর,ি তাতে রোজা ভঙ্গ হয়না। কননো এটা আমাদরে নয়ন্ত্রিনরে বাইর।ে অতএব, ইনজকশেনরে সাথে সাপরে বষরিে সাথে কয়ািস করা র্সম্পূণই ভুল। কারণ ইনজকশেন ইচ্ছাকৃতভাবইে দওয়ো হয়।
অনুরূপ যদি কউে ভুলে পটে ভরওে খাদ্য খায়, তবে তার রোজা ভঙ্গ হবনো। কননো হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়ছ,েে
قال رسول الله صلى الله عليه وسلم- من نسى وهو صائم فاكل او شرب فاليتم صومه فانما اطعمه الله وسقاه.র্
অথঃ- হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলন,ে “যে ব্যক্তি রোজা অবস্থায় খলে অথবা পান করলো, সে যনে তার রোজার্ পূণ করে নয়।ে কননো আল্লাহ পাকই তাকে খাদ্য খাইয়ছনেে ও পান করায়ছনে।ে”
আর অখাদ্য যমনে পাথর, কাঠরে টুকরা ইত্যাদি ইচ্ছাকৃতভাবে খলওেে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাব।ে তদ্রুপ ওযূর পানি অনচ্ছািকৃতভাবে মুখরে ভতরি চলে গলওেে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাব।ে এরূপ অবস্থায় রোজা কাজ্বা করতে হব।ে
মূলকথা হলো- আমাদরে নকটি মূল রাস্তার্ শত নয় বরং শরীররে যকোেন স্থান দয়ইিে ওষুধ ইত্যাদি প্রবশে করুক না কন,ে যদি নশ্চতিভিাবে জানা যায় য,ে তা মগজে অথবা পটেে পৗঁেছছ,েে তবে তার রোজা ভঙ্গ হয়ে যাব।ে অতএব ইনজকশেনরে দ্বারা যে ওষুধ শরীরে প্রবশে করানো হয়, তা যে মগজে পৗঁেছে তাতে বন্দুিমাত্রও সন্দহে নই।ে এটাই চকৎিসিা বজ্ঞািনরে অভমতি। সুতরাং ইনজকশেন নলেি রোজা ভঙ্গ হয়ে যাব।ে
কানরের্ বণনা:
ইমদাদুল ফতওয়ার অন্য একস্থানে বলা হয়ছেে য,ে
 ঊদূ লখো ঢুকব..ে................................................................................র্
অথঃ- এবং খোলাসাতুল ফতওয়ার ভাষ্য এ বষয়িে আরো সুস্পষ্ট। যা নম্নরিূপ- যে ওষুধ কান, নাক এবং পছনিরে রাস্তা দয়েি মাথা ও পটেে পৗঁেছ,ে সগুেলোর্ সবসম্মতক্রমিইে রোজা ভঙ্গরে কারণ। আর উক্ত রোজার কাযা করতে হব।ে এ মাসয়ালা ক্বুতুর র্(অথাৎ কানরে মধ্যে ওষুধ দয়ো) সুউত র্(অথাৎ নাকরে ভতরি ওষুধ দওয়ো) উজুর র্(অথাৎ মুখরে ভতরি ওষুধ দওয়ো) এবং হুকনা র্(অথাৎ পায়খানার রাস্তায় ওষুধ দওয়ো)-এর ক্ষত্রেে প্রযোজ্য।
আমাদরে বক্তব্যঃ- কন্তুি চকৎিসিা বজ্ঞািনরে মতে নাকে ওষুধ দলেি তা পটেে প্রবশে করতে পারে এবং পায়খানার রাস্তায় ওষুধ প্রবশে করালে ওষুধরে রক্তে শোষনরে মাধ্যমে মস্তষ্কেি যতেে পারে কন্তুি কানরে সঙ্গে পটরেে এবং মস্তষ্করিে সরাসরি কোন সংযোগ নই।ে আসলে কানে ওষুধ গলেে কখনো রোজা ভাঙ্গব,ে আবার কখনো ভাঙ্গবনো। আসলে কানে পানি গলেে রোজা ভাঙ্গবে না, কন্তুি তলে গলেে রোজা ভাঙ্গবে এব্যাপারে ইজমা হয়ে গছ।েে এ থকেে আমরা বুঝতে পারি য,ে পানি বাহতি ওষুধ কানে প্রয়োগ করালে রোজা ভাঙ্গবনো কন্তুি তলে বাহতি ওষুধ কানে প্রয়োগ করালে রোজা ভাঙ্গব।ে পানি বাহতি ওষুধে রোজা না ভাঙ্গার মূল কারণ ওষুধে পানরি উপস্থতিি এবং তলে বাহতি ওষুধে রোজা ভাঙ্গার কারণ ওষুধে তলরেে উপস্থত।িি মূলতঃ সকলইে একমত য,ে কানে তলে গলেে রোজা ভাঙ্গব,ে পানি গলেে রোজা ভাঙ্গবনো। মগজ অথবা পটেে প্রবশে করুক আর না করুক, এটার উপরই ফতওয়া।
যমনে কতািবে উল্লখে করা হয়-
او اقطر فى اذنه دهنا افطر ولا كفارة عليه هكذا فى الهداية- ولو دخل الدهن بغير صنعه فطره كذا فى المحيط السرخسى- ولو اقطر فى اذنه الماء لا يفسد صومه كذا فى الهدايه وهو الصحيح.র্
অথঃ- “অথবা যদি কানরে ভতরি তলরেে ফোটা ফলো হয়, তবে তার রোজা ভঙ্গ হয়ে যাব,ে এতে কাফ্ফারা ওয়াজবি হবনো। অনুরূপ হদোয়াতে উল্লখে আছ।ে আর যদি তলে অনচ্ছািকৃত ভাবে প্রবশে কর,ে তবওে তার রোজা ভঙ্গ হয়ে যাব।ে এটা মুহীতে সারাখসীতে আছ।ে আর যদি কানরে ভতরি পানরি ফোটা ফল,েে তবে তার রোজা ভঙ্গ হবনো। এটা হদোয়াতে আছে এবং এটাই সহীহ মত। (আলমগীরী ১ম জঃি পৃঃ-২০৪)
সুতরাং কানে ওষুধ প্রয়োগে রোজা ভাঙ্গা বা না ভাঙ্গার পছনেে এ উসুলকইে অগ্রাধকাির দতেি হব।ে পাকস্থলী বা ব্রনেে পৗঁেছানোকে নয়। অনুরূপ কউে যদি চোখে সুরমা ব্যবহার কর,ে তবে তার রোজা ভঙ্গ হবনো, এ ব্যাপারে ফতওয়া হয়ে গছ,েে অথচ চোখ হতে গলার্ পযন্ত রাস্তা রয়ছ।েে এ প্রসঙ্গে বলা হয় য,ে
لواكتحل لم يفطر لا نه ليس بين العين والدماغ منفذ.র্
অথঃ- “যদি চোখে সুরমা দয়,ে তবে রোজা ভঙ্গ হবনো, কননো চোখ হতে মগজর্ পযন্ত রাস্তা নই।ে (হদোয়া ১ম জঃি ২১৭ পৃষ্ঠা)
মূলতঃ সুরমা মগজে অথবা পাকস্থলীতে পৗঁেছুক আর না পৗঁেছুক কোন অবস্থাতইে সুমরা ব্যবহারে রোজা ভঙ্গ হবনো। কারণ হাদীছ শরীফে উল্লখে আছে স্বয়ং সাইয়্যদুিল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হজুরে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রোজা অবস্থায় সুরমা ব্যবহার করছনে।ে যমনে হাদীছ শরীফে উল্লখে করা হয়-
عن عائشة قالت- اكتحل النتبىصلى الله عليه وسلم وهو صائم.র্
অথঃ- “হযরত আয়শো ছদ্দীিকা আলাইহসি সালাম তনিির্ বণনা করনে য,ে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তনিি রোজা অবস্থায় সুরমা ব্যবহার করছনে।ে”
অতএব, যে সকল বষয়ি সরাসরি হাদীছ শরীফে অথবা ইজমা দ্বারা সাব্যস্ত হয়ে গছ,েে ঐ সকল ব্যাপারে কোন ক্বয়ািস বা উসূল গ্রহণযোগ্য নয়। মূলকথা হলো- কানে তলে গলেে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাব,ে পানি গলেে রোজা ভঙ্গ হবনো। কারণ এ ব্যাপারে ইমামদরে ইজমা হয়ে গছ।েে অনুরূপ চোখে সুরমা দলেি রোজা ভঙ্গ হবনো। কারণ হাদীছ শরীফে আছ,ে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তনিি রোজা অবস্থায় চোখে সুরমা ব্যবহার করছনে।ে
চকৎিসিা বজ্ঞািনরে অন্যান্য বষয়িরে ফায়সালা :
আমরা জনছেিে কি করে ইনজকশেন   প্রয়োগে রোজা ভাঙ্গ।ে মলম লাগালওে রোজা ভাঙ্গতে পারে সে ব্যাপারে আমরা বস্তৃিত আলোচনা করছ।েি এ দু’টো ক্ষত্রইেে রোজা ভাঙ্গার মূলকারণ হচ্ছ-ে প্রথমতঃ রক্তে ওষুধরে শোষণ এবং দ্বতীিয়তঃ মস্তষ্কেি বা পাকস্থলীতে  প্রবশে করা । এবারে আমরা একটি ওষুধ নয়েি আলোচনা করবো, ইনজকশেনরে  মাধ্যমে যা  গ্রহণ করলে পাকস্থলী এবং মস্তষ্কি উভয় স্থানইে পৗঁেছ।ে
ওষুধ, ইনজকশেনরে  মাধ্যমে শরীরে  প্রয়োগ করলে মস্তষ্কেি এবং পটওেে যে ওষুধ পৗঁেছে তা নীচরে উদাহরণটি থকেে স্পষ্ট বুঝা যায়।  আমাদরে পাকস্থলী (ংঃড়সধপয) রয়ছেে দুটি গুরুর্ত্বপূণ গ্ল্যান্ড (এষধহফ) একটি অক্সনটিকি গ্ল্যান্ড (ঙীুহঃরপ ড়ৎ এধংঃৎষপ মষধহফ) এবং অপরটি পাইলোরকি গ্ল্যান্ড (চুষড়ৎরপ মষধহফ)। অক্সনটিকি  গ্ল্যান্ডে থাকে পরোইটাল কোষ এবং পরোইটাল কোষরে ঐ২ ৎবপবঢ়ঃড়ৎ  উত্তজতেি হলে নঃসিরতি হয় হাইড্রোক্লোরকি এসড।ি যখন গণধভ  বা শরাি অথবা গঁংপষব বা পশীের মাধ্যমে রনটেডিনিি (জধহরঃরফরহব) ইনজকশেন প্রয়োগ করা হয় তখন রনটেডিনিি পরোইটাল কোষরে ঐ২ ৎবপবঢ়ঃড়ৎ কে ইষড়পশ কর।ে ফলে পাকস্থলীতে হাইড্রোক্লোরকি এসডি নঃসিরতি হয় না। সুতরাং এর দ্বারা পটেে ওষুধরের্ কাযকারতাি বুঝা গল।ে রনটেডিনিি রক্তরে মাধ্যমে সহজইে মস্তষ্কেি পৗঁেছ।ে শুধু তাই নয়, মস্তষ্করিে কোষওে অল্পমাত্রায় শোষণ ঘট।ে
সভ্যতার বকািশরে সঙ্গে সঙ্গে মানুষরে প্রয়োজনে নানা জনসিরিে ব্যবহার বড়ছে।েে চকৎিসিা বজ্ঞািনরে উন্নতি হয়ছেে অনক।ের্ পূবে যে সকল পদ্ধততেি চকৎিসিা হত, এখন চকৎিসিা পদ্ধতরি মান, উপকরণ সবই বড়ছে।েে এ সকল পদ্ধতরি অনকে কছুিই আমরা রোজা অবস্থায় ব্যবহার করছ,ি কস্তুি উপকরণগুলো রোজা অবস্থায় ব্যবহার করা যাবে কি যাবে না, সে ব্যাপারে হয়তো আমাদরে অনকরেইে সঠকি কোন ধারণা নই।ে সে কারণে আমরা কয়কটেি বষয়ি নয়েি ধারাবাহকভিাবে আলোচনা করবো।
ওঘঐঊখঅজ (ইনহলোর)
প্রথমইে আমরা ইনহলোর (ওঘঐঊখঅজ) নয়েি আলোচনা করবো- বাজারে যে সকল ইনহলোর পাওয়া যায়, তার ইঅঝঊ  হচ্ছে অঊজঙঝঙখ র্ অথাৎ অঊজঙঝঙখ-এর মাধ্যমইে ওষুধ নাকরে ভতরে দয়েি  প্রবশে করানো হয়। উদাহরণ হসবিেে  সলবউটিামল ইনহলোররে কথাই ধরা যাক। যখন সলবউটিামল ইনহলোর নয়ো হয় এবং প্রথমবার ওষুধ গ্রহণরে মাত্রা যদি হয় ৪০ থকেে ১০০ মাইক্রো গ্রাম, তবের্ সবাচ্চে প্লাজমা ঘনত্বে (চবধশ ঢ়ষধংসধ পড়হপবহঃৎধঃরড়হ) পৗঁেছতে সময় লাগবে তনি থকেে পাঁচ ঘন্টা। রক্তে পৗঁেছলে যহতেুে ওষুধ মস্তষ্কেি পৗঁেছ,ে সুতরাং রোজা ভঙ্গেে যাব।ে
ওঘঋটঝওঙঘ (ইনফউশিান)
অনকরেইে শাররীিক অসুস্থতার কারণে স্যালাইন নবোর প্রয়োজন পড়।ে বাজারে গ্লুকোজ, ডক্সট্টেোজ স্যালাইন পাওয়া যায়। রোজা রখেে স্যালাইন  গ্রহণে অবশ্যই রোজা ভঙ্গেে যাব।ে
এনসথেসয়োি
এনসথেসয়োি সাধারণতঃ গ্রহণ  করা  হয় ইনহলশেনেরে মাধ্যম,ে শরাির মধ্য দয়েি বা কখনও পশীের মধ্য দয়।িে যগুেলো ইনহলশেনেরে মাধ্যমে নয়ো হয় তাতে রয়ছ-েে ক্লোরফরম, সাইক্লোপ্রোপন,ে এনফ্লুরন,ে ইথার, নাইট্রাসঅক্সাইড ইত্যাদ।ি ক্লোরফরমরে কথাই ধরা যাক। ক্লোরফরম খুব সহজইে শোষতি হয়। রক্তে এবং মস্তষ্কেি ওষুধরে মাত্রা খুব অল্প সময়ইে পৗঁেছে যায়।
রাসায়নকভিাবে লোকাল এনসথেটকেসি আবার দুই প্রকার।-
১। পুরনো উপাদানসমূহ, যমনে এষ্টার।
২। সাম্প্রতকি উপাদানসমূহ, যমনে এমাইডস।
এ ছাড়াও রয়ছেে বনজোইল এলকোহল, মনথেল, ফনলে, এরোসল, প্রপলন্টিে ইত্যাদ।ি উদাহরণ হসবিেে লগনিোকইনেরে কথাই ধরা যাক। বশীেরভাগ লোকাল এনসথেটকেসি খুব  দ্রুত ত্বকরে মাধ্যম,ে মউকিাস মমব্রেনরেে  স্তর এবং ক্ষতগ্রস্তি ত্বকরে মাধ্যমে শোষতি হয়। ইনজকশেনরে  মাধ্যমে লগনিোকইনে খুব  দ্রুত হৃৎপন্ড,ি মস্তষ্ক,ি কডনিী এবং অন্যান্য, টস্যূিতে ছড়য়েি যায়। সুতরাং সহজইে সদ্ধািন্তে আসা যায় রোজা রখেে এনসথসয়োি দলেি রোজা ভঙ্গেে যাব।ে
ঝটঝঞঅওঘঊউ জঊখঊঅঝঊ উজটএ
(সাসটইন্ডে রলজিি ড্রাগ)
কছুি কছুি ওষুধ রয়ছ,েে যা একবার সবনে করলে তা শরীর থকেে ধীরে ধীরে রক্তে প্রয়োজনীয় মাত্রা যুক্ত কর।ে ফলে বার বার ওষুধ সবনেরে প্রয়োজন পড়ে না। এর মধ্যে কছুি ইনজকশেন  রয়ছ,েে যা সাতদনেি একটি নলইিে হয়। কছুি ট্যাবলটে রয়ছ,েে যা ২৪ ঘন্টায় ১ টি সবনেই যথষ্ট।ে এ সকল ওষুধ রোজা রাখারর্ পূবইে গ্রহণ করলে রোজা অবস্থায় এরর্ কাযকারতাি শরীরে থাকলওে তাতে রোজার কোন ক্ষতি হবে না।
টকাি
সম্প্রতি চালু হয়ছেে হজ্জ্বে যাওয়ারর্ পূবে মননেজিাইটসি টকাি নয়োর ব্যাপারট।ি এ টকাির মাধ্যমে শরীরে এন্টজনিে প্রবশে করয়েি দয়ো হয়, যা কনাি শরীরে এন্টবডিি তরীৈ করে শরীরে রোগ প্রতরোিধ ক্ষমতা সৃষ্টি কর।ে রোজা রখেে যে কোন টকাি গ্রহণইে রোজা ভঙ্গেে যাব।ে
ঢ-জঅণ (এক্সর)ে
রোগ র্নণয়িরে জন্য এক্সরে একটি গুরুর্ত্বপূণ পদ্ধত।ি রোজা রখেে এক্সরে করালে রোজা ভাঙ্গবে কনাি, সে ব্যাপারে আলোচনারর্ পূবে এক্সরে নয়েি একটু আলোচনা করা প্রয়োজন। সাধারণতঃ সাধারণ অবস্থায় ইলকট্রেোডরে মধ্য দয়েি ইলকট্রেসটিিি  প্রবাহতি হয় না।
কন্তুি যখন প্রসোর ০.০১ থকেে ০.০০১ মঃমিঃির্ পযন্ত কময়েি আনা হয় তখন সরাসরি সোজাভাবে কছুি রশ্মি র্নগতি হয়, এদরে বলা হয়- ক্যাথোড র।ে এই ক্যাথোড রে প্রবাহরে সময় সামনে মটোল জনসিি ধরা হয় তখন খুব ছোট ওয়ভলেন্থরেে ইলট্রোেমগনেটকেি রশ্মি র্নগতি হয়, যার কনাি শরীরে ভদে করে যাওয়ার ক্ষমতা রয়ছ,েে একইে বলা হয় এক্সর।ে
দখো গছ,েের্ সূযরশ্মি যদি গ্লাস প্রজমিরে মধ্য দয়েি প্রবাহতি করানো যায় তবে যে রকমর্ বণালী দখো দয়,ে তমনেি পটাশয়ািম ফরোেসায়ানাইডরে ক্রষ্টািল সল্টরে মধ্য দয়েি ঙ-রটহ পরচািলনা করলে একই রকমরে র্ বণালী দখো দয়।ে মূলতঃর্ সূয রশ্মরি মতই ঙ-রটহ এক ধরণরে রশ্ম।ি রোজা রখেে এক্সরে করালে রোজার কোন ক্ষতি হবে না। তমনেি ত্বকরে অসুখরে ক্ষত্রেে অনকে সময় খগ-ঋসযমবরণ দয়ো হয় এতওে রোজার কোন ক্ষতি হবে না।
ইষড়ড়ফ ঞৎধহংভঁংরড়হ
(রক্ত সঞ্চালন প্রক্রয়াি)
রোজা রখেে রক্ত গ্রহণ করলে অবশ্যই রোজা ভঙ্গেে যাব।ে কন্তুি রোজা রখেে কউে রক্তদান করলে রোজার কোন ক্ষতি হবে না। কননো প্রথম অবস্থায় রক্ত শরীরে প্রবশে করানো হয়ছ।েে কন্তুি দ্বতীিয় অবস্থায় রক্ত বরে হয়ছ।েে শরীর থকেে সাধারণভাবে কছুি বরে হলে রোজা ভঙ্গ হয় না, শরীয়তে উল্লখতেি বষয়িগুলো ছাড়া।
আকুপাংচার
বলা হয়ে থাকে এ পদ্ধতটিি প্রথমে চীনে প্রচলন ঘট।ে শরীররে বভন্নিি অংশে বশষিতে সইে সকল অংশে যখোনে শরীররে  ঘঊজঠঊ (স্নায়ু) রয়ছ,েে সখোনে এক ধরণরে সূচ ফোটানো হয়, যাতে শরীরে এক ধরণরে নঃসিরণ ঘট।ে কন্তুি সূচরে  মধ্য দয়েি শরীরে কছুি প্রবশে করানো হয় না, সে কারণে আকুপাংচারে রোজা ভাঙ্গার কোন সম্ভাবনা নই।ে
আল্ট্রাসনোগ্রাম
আল্ট্রাসনোগ্রাম পদ্ধততেি শরীরে এক ধরণরে ঝঙটঘউ ডঅঠঊ  পাঠানো হয় এবং তা পুণরায় ধারণ কর,ে তার প্রতক্রয়িাির্ পদায় দখো হয়। সুতরাং এতে রোজা নষ্ট হবে না এবং আল্ট্রাসনোগ্রাম করারর্ পূবে যে জলটেি শরীরে লাগানো হয়, তা ডঅঞঊজ ঝঙখটইখঊ  এবং তা মস্তষ্কেি বা পটেে পৗঁেছায় না। সুতরাং সে জলওেে রোজা ভাঙ্গার কোন সম্ভাবনা নই।ে
এন্ডোসকপি
এন্ডোসকপতেি একটি পাইপ পটরেে মধ্যে প্রবশে করয়েি ভতরিরে অবস্থা দখো হয়। সুতরাং নলটি যদি পাকস্থলীর্ স্পশ কর,ে তবে রোজা ভঙ্গ হবে কন্তুি যদি পাকস্থলীর্ স্পশ করারর্ পূবইে  বরে করে আনা হয়, তবে রোজা ভঙ্গ হবে না।
নাক, কান ছদ্রি করলে
রোজা রখেে কউে যদি গহনা পরধািনরে জন্য নাক, কান ছদ্রি কর,ে তবে রক্ত বরে হলওে রোজা ভঙ্গ হবে না কন্তুি তাতে যদি মলম লাগনো হয়, (ঙওঘঞগঊঘঞ) যগুেলোতে ওষুধ রয়ছ)েে তবে রোজা ভঙ্গ হব।ে
ঞঊঊঞঐ ঊঢঞজঅঈঞওঙঘ (দাঁত তোলা)  রোজা রখ,েে লোকাল এনসথেসয়োি ছাড়া দাঁত তুললে রোজা ভঙ্গ হবে না। তবে যদি কছুি পরমািণ রক্ত ভতরিে চলে যায়, রোজা ভঙ্গ হব।ে কন্তুি লোকাল এনসথেসয়োি দয়েি দাঁত তুললে রোজা ভঙ্গ হব।ে
ইনসুলনি গ্রহণ
এমন অনকে রোগী আছন,ে যারা রোজা না রাখার মত অসুস্থ নন কন্তুি রোজা রাখার র্সামথ থাকলওে ওষুধ গ্রহণরওে প্রয়োজন পড়।ে যমনে ডায়াবটকেি রোগীদরে ক্ষত্রেে ইনসুলনি ইনজকশেন । সক্ষত্রেেে ইনসুলনি গ্রহণরে সময়সীমা পর্রবতিন করে সুফল পাওয়া যাব।ে কন্তুি রোজা রখেে ইনসুলনি নলেি রোজা ভঙ্গঁ হব।ে
রডওেি থরোপি
রডওেি থরোপি দয়ো হয়, সাধারণতঃ দু’টি প্রধান পদ্ধতত-িে (১) টলথেরিোপি (ঞবষব ঞযবৎধঢ়), (২) ব্রকিে থরোপি (ইৎংপু ঞযবৎধঢ়ু)। এ দু’টো পদততেি বশষিতেঃ দু’টি ৗটহ ব্যবহৃত হয়- গামা রে (ৎ-ৎধু)  এবং বটাি রে (ই-ৎধু)  রডওেি থরোপতেি যে সকল রডওেি একটভি র্পদাথ ব্যবহৃত হয়, তাদরে মধ্যে কোবাল্ট-৬০, সজয়িািম-১৩৭, রডয়োিম, ইররডয়িািম, ষ্ট্রনয়ািম, ফসফরাস, ইট্রয়ািম ইত্যাদি উল্লখযেোগ্য। রডওেি থরোপি এক্সরে প্রয়োগরে মাধ্যমওে দয়ো হয়। তবে সখোনে অনকে উচ্চ মাত্রার এক্সরে প্রয়োগ করা হয়। এই পদ্ধততেি জধু ব্যবহৃত হয় বলে রডওেি থরোপি প্রয়োগে রোজার কোন ক্ষতি হবনো।
মডসেনিািল পচে (চঅঞঈঐ)
মডসেনিািল পচে সাধারণতঃ বভন্নিি রোগরে জন্য বভন্নিি উপাদানরে তরীৈ হয়ে থাক।ে মাথা ব্যাথা, বুকরে ব্যাথা, বাতরে ব্যাথা এ সকল রোগরে জন্য বভন্নিি রকমরে চধঃপয ব্যবহৃত হয়ে থাক।ে উদাহরণ হসবিেে কয়কটেি চধঃপয নয়েি আলোচনা করা যাক।
বুকরে ব্যাথাঃ- বুকরে ব্যাথায় অনকে সময় হৃৎপন্ডরিে কৌশকি নালী সংকুচতি হলে সখোনে রক্ত সঞ্চালন কম হয়, ফলে ব্যাথা উঠ।ে সে ক্ষত্রেে আইসোসরবাইড-ডাইনাইট্রটে পচে ব্যবহার করলে ব্যাথা কমে যায়। কননো কৌশকি নালী (ইষড়ড়ফ ঈধঢ়রষষধৎু) সম্প্রসারতি হয়। রক্তে ওষুধরে শোষন না হলে এটা সম্ভব নয়।
বাতরে ব্যাথাঃ- বাতরে ব্যাথায় ইবষষধফড়হহধ চষধংঃবৎ যা বাতরে ব্যাথা এবং আরো বভন্নিি কারণে ব্যবহৃত হয়। বলোডোনা প্লাষ্টারে আরো লখো হয়ে থাকে  “অমধরহংঃ চষবঁৎরংু, ইৎড়হপযরঃরং, ঈড়ঁময, ঃযব ধভভবপঃরড়হং ড়ভ ঃযব ঃযৎড়ধঃ, পযবংঃ, ষঁহমং, বঃপ. ১ ড়ৎ ২ ঢ়ষধংঃবৎং ধং ঃযব পধংব ৎবয়ষবঁৎরং ধৎব ঁংবফ.”
সুতরাং এ সকল পচে ব্যবহারে রক্তে ওষুধরে শোষন ঘট।ে সুতরাং যদি জানা যায়, কোন পচে ব্যবহারে রক্তে ওষুধরে শোষন ঘট,ে তবে রোজা ভঙ্গেে যাব।ে কন্তুি যদি জানা যায় পৗঁেছনো, তবে ভাঙ্গবে না। কন্তুি মূলতর্ঃ টডদে  এ কারণইে দয়ো হয়, যাতে ধীরে ধীরে রক্তে ওষুধরে শোষণ ঘট।ে

স্প্রে (ঝচজঅণ)
বাজারে বভন্নিি রকমরে  ঝঢ়ৎধু পাওয়া যায়। বভন্নিি কারণে বভন্নিি রকম  ঝঢ়ৎধু ব্যবহৃত হয়।  হঠাৎ ব্যাথা পলেে ব্যাথা অংশে ঝঢ়ৎধু করলে ব্যাথা কমে যায়। এ সকল স্প্রতেে সাধারণতঃ চধরহ করষষঃবৎ সধঃবৎরধষং থাক।ে কন্তুি কছুি স্প্রে ব্যবহৃত হয় ঘাম কময়েি আনার জন্য,ে এগুলো ব্যবহারে ঝববঃি মষধহফ সংকুচতি হয়ে আসে এবং ঘামরে পরমািণ কমে যায়। এছাড়াও রয়ছেে অষপড়যড়ষ ংড়ৎধু  যা এনসথেসয়োির জন্য ব্যবহৃত হয়। সুতরাং যদি জানা যায়, কোন স্প্রে ব্যবহারে ওষুধ রক্তে পৗঁেছ,ে তবে সে ধরণরে স্প্রে ব্যবহারে রোজা ভঙ্গেে যাব।ে কন্তুি যে সকল স্প্রে ব্যবহারে রক্তে উপস্থতিি পাওয়া যাবনো, সরকেম স্প্রে ব্যবহারে রোজার কোন ক্ষতি হবনো। শুধু চবৎভঁসব ঝঢ়ৎধু শরীররে ত্বকরে কোন অংশে দলেি যদি তার প্রবশরেে কোন যোগ্যতা না থাক,ে তবে রোজা ভঙ্গ হবনো। কননো অনকে স্প্ররে ক্ষত্রইেে ঠড়ষধঃরষড় ঝঁনংঃধহপব থাকাতে সটো শরীররে ত্বকে প্রবশরেের্ পূবইে উড়ে যায়।
মূলকথা হলো- রক্তে যে সকল ওষুধরে শোষন ঘট,ে ঐ সকল ওষুধ ব্যবহারে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাব,ে কারণ রক্তে ওষুধরে শোষন ঘটলে তা অবশ্যই মগজে পৗঁেছে যায়।
অসুস্থতার কারণে রোজা না রাখার হুকুম :
এখানে একটি বষয়ি খুবই লক্ষনীয়, তাহলো- কারো যদি রোজা অবস্থায় দনরিে বলোয় ইনজকশেন নওয়োর খুব বশীে প্রয়োজন হয়ে যায়, তবে তার জন্যে রোজা না রাখার হুকুম তো শরীয়তে রয়ইে গছ।েে যমনে আল্লাহ পাক বলন,ে
ومن كان مر يضا او على سفر فعدة من ايام اخر-র্
অথঃ- “আর যদি কউে অসুস্থ বা মুসাফরি হয়, তবে অন্য সময় রোজাগুলো আদায় করব।”ে
এখন কউে প্রশ্ন করতে পারনে য,ে অসুস্থতার কারণ,ে মুসাফরি সফররে কারণে অথবা কারো রোজা অবস্থায় ইনজকশেন  নওয়োর প্রয়োজন হলো, অনুরূপ শরয়ী কোন ওজররে কারণে যদি কউে রমজান মাসে রোজা না রাখে এবং অন্য সময় রোজাগুলো আদায় করে নয়,ে তবে কি সে রমজান মাসরে ন্যায় ফযীলত লাভ করতে পারব?ে
তার জবাবে বলতে হয়- হ্যাঁ কউে যদি অসুস্থতার কারণ,ে সফর অথবা শরয়ী যকোেন ওজররে কারণে রমজান মাসে রোজা রাখতে না পারে এবং অন্য সময় রোজাগুলো আদায় করে নয়,ে তবে সে রমজান মাসরে ন্যায় সকল ফাযায়ল-েফযীলত হাসলি করতে পারব।ে কারণ শরীয়তরে কোথাও উল্লখে নইে য,ে এরূপ ব্যক্তি রমযানরে ফাযায়ল-েফযীলত হাসলি করতে পারবনো। বরং হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়ছ,েে
عن ابى هريرة قال- قال  رسول الله صلى الله عليه وسلم- من افطر يوما من رمضان من غير رخصة ولا مرض لم يقض عنه صوم الدهر كله وان صامه. (رواه احمد ولتر مذى- ابو دود- ابن ماجه)র্
অথঃ- হযরত আবূ হুরায়রা  রদ্বয়ািল্লাহু তায়ালা আনহু বলন-ে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করন,ে “যে ব্যক্তি ওজর অথবা রোগ ব্যতীত রমজান মাসরে একটি রোজা ভঙ্গ করব,ে সে যদি তার পর্রবতিে সারা বৎসরও রোজা রাখ,ে তবওে ওটার সমকক্ষ হবনো।” (আহমদ, তরমিযীি, আবূ দাউদ, ইবনে মাযাহ)
এ প্রসঙ্গে আরো বলা যতেে পারে য,ে যমনে- ময়দেরেে অসুস্থতার র্(অথাৎ হায়জ-েনফোস)-এর সময় নামায পড়া ও রোজা রাখা নষধি।ে কন্তুি সুস্থ হওয়ার পর রোজা কাজ্বা করতে হয় কন্তুি নামায কাজ্বা করতে হয়না। এর কি কারণ?
এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফে উল্লখে করা হয় য,ে
عن معاذة العدوية انها قالت لعانشة مابال الحائض نغض الصوم ولا نفض الصلوة قالت عائشة كان يصيبنا ذالك فنؤمر يقضاء الصوم ولا نؤمر بقضاء الصلوة. (رواه مسلم)র্
অথঃ- “হযরত মুয়াজাহ্ আদভয়াি তাবয়ীে  রহমতুল্লাহি আলাইহ,ি হযরত আয়শো সদ্দীিকা  আলাইহাস সালাম উনাকে জজ্ঞািসা করলনে য,ে হায়জগ্রেস্থা স্ত্রীলোক রোজা কাজ্বা করে কন্তুি নামায কাজ্বা করনো, তার কি কারণ? তখন হযরত আয়শো  ছদ্দীিকা আলাইহাস সালাম তনিি বলন,ে যখন আমরা এ অবস্থায় পৗঁেছাতাম, তখন আমাদরকেে রোজার কাজ্বা করার আদশে দওয়ো হতো কন্তুি নামায কাজ্বা করার আদশে দয়ো হতোনা।” (অথচ আমরা কখনো কোন কারণ তালাশ করন)িি (মুসলমি শরীফ)
এখন প্রশ্ন হচ্ছ-ে যে সকল ময়রেো অসুস্থতার কারণে নামায পড়তে পারনো এবং রমযান মাসে কছুি সংখ্যক রোজা রাখতে পারলোনা, তবে কি তারা উক্ত নামাযরে ফযীলত ও রমযান মাসরে রোজার ফযীলত হতে মাহ্রূম থাকব?ে জবাবে বলা যায়- কখনোই নয় বরং সে নামায ও রোজার পরর্পূিণ ফযীলতই লাভ করব।ে কারণ সে শরীয়তরে দৃষ্টতেি মাজূর।
অনুরূপ কারো যদি ওযু অথবা গোসলরে প্রয়োজন হয় কন্তুি যদি পানি পাওয়া না যায়, তবে তায়াম্মুম করে নামায আদায় করব,ে এখানে পানি দ্বারা ওযু-গোসল করে নামায আদায় করলে যে ফযীলত সে লাভ করতো, তায়াম্মুমরে দ্বারা নামায পড়লওে সে ততটুকু ফযীলত লাভ করব।ে
এমনভািবে ই’তকািফকারী র্সম্পকে হাদীছ শরীফে বলা হয়ছ,েে
قال النبى صلى الله عليه وسلم- فى المعتكف هو يعتكف الذنوت وبجرى له الحسنات كعامل الحسنات كلها.র্
অথঃ- ই’তকািফকারী র্সম্পকে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তনিি বলন,ে “সে ব্যক্তি মূলতঃ সকল গুণাহ্ হতে বরতি এবং সকল নকে আমলরে ফযীলত তাকওে দান করা হয়।”র্
অথাৎ ই’তকািফকারী মসজদেি আবদ্ধ থাকার কারণে বাইররে যে নকে কাজগুলো করতে পারনে না, সে সকল নকে কাজরে সওয়াব তার আমলনামায় লখো হয়ে থাক।ে
উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা এটাই প্রমাণতি হয় য,ে যারা ওজর বশতঃ বা অসুস্থতার কারণে রমাজন মাসরে রোজা রাখতে পারবনো, তারা অন্য সময় উক্ত রোজাগুলো আদায় করলে অবশ্যই রমযান মাসরে ন্যায় সুযোগ-সুবধাির্ অথাৎ ফাযায়ল-েফযীলত লাভ করতে পারব।ে বরং অনকে ক্ষত্রেে উল্লখতেি অবস্থায় রোজা রাখার মধ্যইে বরং কোন ফায়দা বা ছওয়াব নই।ে যমনে এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়ছ,েে
عن جابر قال- كان رسول الله صلى الله عليه وسلم فى سفر- قرأى زحاما ورجلا قد ظلل عليه فقال ما هذا؟ قالو صائم فقال ليس من البر الصوم فى السفر. (متفق عليه)র্
অথঃ- হযরত জাবরে  রদ্বয়ািল্লাহু তায়ালা আনহুর্ বণনা করন-ে একবার রাসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সফরে ছলনি,ে একস্থানে লোকরে ভীড় দখলেন,ে (সখোনে গয়েি দখলেন)ে এক ব্যক্তরি উপরে ছায়া দওয়ো হচ্ছ।ে (এটা দখ)েে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তনিি জজ্ঞািসা করলন,ে “এখানে ক?”ি লোকরো বললো- (যাকে ছায়া দওয়ো হচ্ছ)ে সে একজন রোজাদার, (তখন) হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তনিি বললন,ে “সফরে রোজা রাখা সাওয়াবরে কাজ নয়।” (বোখারী-মুসলম)ি
অতএব, কউে যদি ওজরবশতঃ রমযান মাসে কছুি রোজা রাখতে না পার,ে তবে সে তা অন্য সময় ক্বাজা আদায় করলওে রমযান মাসরে ন্যায় ফযীলত লাভ করব।ে
তাক্ওয়ার্ অজনে রোজার গুরুত্ব
মূলতঃ রমজান মাসরে রোজা ফরজ করা হয়ছেে যনে বান্দা “তাক্ওয়া” বা পরহযগোরী হাসলি করতে পার।ে আর তাই বলা হয়ছ,েে لعلكم تتقونর্ অথাৎ আশা করা যায়, রমজান মাসরে রোজার মাধ্যমে তোমরা “তাকওয়া” বা খোদাভীতি হাসলি করতে পারব।ে কারণ  رمضان(রমাদ্বান) শব্দটরি উৎপত্তইি হচ্ছ-ে রমাদ্ব হত,ে যারর্ অথ হচ্ছ-ে জ্বালয়েি দওয়ো, নশ্চহ্নিি করে দয়ো। অতএব, বুঝা গলে য,ে রমযান এমন একখানা মাস, যে মাস রোজাদার বান্দার সকল অন্যায়, অপরাধ, গুণাহ্খাতা জ্বালয়-িপেুড়য়েি র্সম্পূণ নশ্চহ্নিি করে দয়।ে
তাছাড়া الصوم (ছাওম) শব্দরের্ অথই হচ্ছ-ে الامساك (আল্ ইমসাক)র্ অথাৎ আল্লাহ পাক ও হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ হতে নষধিকেৃত সকর হারাম, নাজায়যে এমন কি মাকরূহ্ কাজ হতওে রোজা অবস্থায় নজকিেে ফরািয়ে রাখা বা বরতি রাখা। আর এজন্যইে হাদীছ শরীফে বলা হয়ছ,েে الصوم جنةর্ অথাৎ রোজা হলো- “ঢাল স্বরূপ।”
ঢাল যরূেপ মানুষকে নানা প্রকার বপদিাপদ হতে বাঁচায়ে রাখ,ে রোজাও তদ্রƒপ ঈমানদার বান্দাকে সকল প্রকার হারাম, নাজায়য,ে মাকরূহ্ এমনকি “তাকওয়া” খলোফর্ অথাৎ সন্দহজেনক কাজ বা আমল হতওে হফািযত করে বা বাঁচয়েি রাখ।ে আর বান্দাকে করে দয়ে মাসূম বা নষ্পািপ। এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফে এরশাদ হয়ছ,েে
من صام رمضان من اوله الى اخره خرج كيوم ولدته امه.র্
অথঃ- “যদি কউে রমযান মাসরে শুরু হতে শষের্ পযন্ত সবগুলো রোজা (সহীহ্ভাব)ে আদায় কর,ে তবে সে গুণাহ্ হতে এরূপ পবত্রি হব,ে যনে সে আজকইে জন্মগ্রহণ করছ।ে”ে
উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা এটাই প্রমাণতি হলো য,ে রোজাদার বান্দা হারাম, নাজায়যে ও মাকরূহ্ কাজ তো করতে পারবইে না বরং তাকে তাকওয়ার খলোফ কাজ হতওে বঁচেে থাকতে হব।ে তবইে তার পক্ষে তাকওয়া হাসলি করা বা মুত্তাক্বী হওয়া সম্ভব। আর যে ব্যক্তি মুত্তাক্বী হতে পারব,ে তার জন্যইে কাময়ািবী। কননো মহান আল্লাহ পাক তনিি কালামে পাকে ইরশাদ করছনে,ে
ان اكرم كم عند الله اتقاكم.র্
অথঃ- “তোমাদরে মধ্যে সে ব্যক্তইি আমার নকটি অধকি সম্মানত,ি যে ব্যক্তি অধকি তাকওয়াধারী বা মোত্তাক্বী।”
আর হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়ছ,েে
من اتقى الشبهة استبرأ لدينه وعرضه. (متفق عليه)র্
অথঃ- “যে ব্যক্তি সন্দহে হতে বাঁচলো র্(অথাৎ তাক্ওয়া হাসলি করলো), সে তার দ্বীন ও সম্মানকে হফািযত করলো।” (বুখারী শরীফ, মুসলমি শরীফ)
অতএব, রোজা অবস্থায় ইনজকশেন  নয়েি একটি বুনয়ািদী ফরজ তরক করে মুত্তাকী হওয়াতো দূররে কথা, বরং ফরজ তরক করার কারণে কবীরা গুণাহে গুণাহ্গার হব।ে
এখন কউে বলতে পারন,ে আমরা যারা জনেে বা না জনেে রোজা অবস্থায় ইনজকশেন নয়ছি,েি আমাদরে এ রোজার ব্যাপারে ফায়সালা ক?ি এবং ত্রা কাজ্বা করতে হবে ক?ি
হ্যাঁ, জনেে হোক অথবা না জনেে হোক রোজা অবস্থায় যারা ইনজকশেন নয়ছি,েে তাদরে উক্ত রোজা অবশ্যই কাজ্বা করতে হব।ে তবে কাফ্ফারা ওয়াজবি হবনো।
উপরোক্ত কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ ও ফক্বািহরে অকাট্য ও র্নভরিযোগ্য দলীল-আদল্লাি ও চকৎিসিা বজ্ঞািনরে সার্রগভ আলোচনা দ্বারা এটা স্পষ্টই প্রমাণতি হয় য,ে ইনজকশেন র্সম্পকে ইমদাদুল ফতওয়ার উল্লখতেি বক্তব্যসমূহ র্সম্পূণই ভুল। মূলত রোজা অবস্থায় ইনজকশেন  নলেি রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়।
উল্লখ্যে য,ে ইসলাম একটি পরর্পূিণ দ্বীন। এ দ্বীন পালন করতে গয়েি আমরা ক্বয়ািমতর্ পযন্ত বহু নতুন সমস্যার সম্মুখীন হব।ে সত্য কথাই, তবে ক্বয়ািমতর্ পযন্ত সৃষ্ট সকল সমস্যার সমাধানই কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বয়ািসরে মধ্যে রয়ছ।েে
বস্তুতঃ কোন বষয়িে ফতওয়া দতেি হলে সে বষয়িে যারা সবচয়েে বশীে পার্রদশী, তাদরে সাথে পর্রামশ করতে হব,ে ঐ র্সম্পকতি বই-পুস্তক ভালরূপে পাঠ করতে হব,ে অতঃপর কোন বষয়িে ফায়সালা দলেি সটো ভুল হওয়ার সম্ভবনা খুবই কম। আর এজন্যে বলা হয় য,ে
لكل فان رجالর্
অথঃ- প্রত্যকে বষয়িইে অভজ্ঞি লোক রয়ছ।ে”ে
মোটকথা হলো- উত্তমরূপে গবষণো ও তাহ্ক্বীক্ব করার পর এটাই প্রমাণতি হয় য,ে ইনজকশেন ইত্যাদি মগজে পৗঁেছে থাক,ে আর শরীয়তরে উসুল হলো- ওষুধ ইত্যাদি মগজ অথবা পটেে পৗঁেছলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাব।ে ইমামদরে মত হলো- ওষুধ ইত্যাদি মূল রাস্তা দয়েি প্রবশে করার্ শত নয় বরং যস্থোন দয়ইিে প্রবশে করুক না কন,ে যদি তা মগজ অথবা পটরেে যকোেন একটরি ভতরি প্রবশে করার ব্যাপারে কোন সন্দহে না থাক,ে তবে তার রোজা ভঙ্গ হয়ে যাব।ে
সুতরাং ইনজকশেন  র্সম্পকে সঠকি রায় হলো- “রোজা অবস্থায় ইনজকশেন  নলেি রোজা ভঙ্গ হয়ে যাব।ে কারণ ইনজকশেনরে  দ্বারা ব্যবহৃত ওষুধ নশ্চতিভিাবে মগজে পৗঁেছ।ে মহান আল্লাহ পাক তনিি আমাদরে সকলকে উপরোক্ত ফতওয়া মোতাবকে আমল করার এবং সহীহভাবে রমযানরে রোজা পালন কর,ে তাক্ওয়া হাছীল করার বা মুত্তাক্বী হওয়ার তৌফকি দান করুন (আমীন)।