১০০টি চমৎকার ঘটনা - পর্ব-২৯ ( একজন সাইয়্যিদার সম্মান হিফাযতের পুরষ্কার )

একজন সাইয়্যিদার সম্মান হিফাযতের পুরষ্কার-পর্ব-২৯

বাগদাদ শহরে একটি খারাপ দল ছিল। তাদের কাজ ছিল খুনখারাবি, ছিনতাই, রাহাজানি, মহিলা ব্যবসা করা। নাউযুবিল্লাহ! সেই দলে ছেলে বুড়ো বুড়ি জোয়ান অনেকে মিলেই কাজ করতো বিভিন্ন রকম চুরি জোচ্চরি ডাকাতি ইত্যাদি করার জন্য। এভাবে একদিন তাদের দলের এক বুড়ি একজন মেয়েকে ধোঁকা দিয়ে আনলো। মেয়েটি যখন বুঝতে পারলেন তিনি খারাপ চক্রের পাল্লায় পড়েছেন, তখন তিনি বারবার উনাকে ছেড়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ করতে লাগলেন। বললেন, তিনি একজন আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে যেন উনার কোনো ক্ষতি না করা হয়, উনাকে মুক্ত করে দেয়া হয়।

সে দলের প্রধান ছিল খুব শক্তিশালী লোক। মেয়েটির বারবার অনুরোধ শুনে তার মনে চিন্তা জাগ্রত হলো যে সত্যিই তিনি যদি আওলাদে রসূল হন তাহলে উনার সাথে কোনো রকম বেয়াদবি করা ঠিক হবে না। তাই সে তার লোকদের বললো, মেয়েটিকে ছেড়ে দিতে। কিন্তু দলের লোকেরা ভাবলো, তাদের সর্দার বোধহয় নিজে এই মেয়েটিকে দখল করে ব্যবসা করতে চায়। নাউযুবিল্লাহ! তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়ে তা হাতাহাতিতে রূপ নিল। এক পর্যায়ে লোকটি তার দলের একজনকে খুন করে ফেললো, নিজেও আহত হলো। এই দেখে দলের বাকিরা পালিয়ে গেল। তখন লোকটি মেয়েটিকে অনুরোধ করলো, তিনি যেন দ্রুত এখান থেকে চলে যান। কেননা দলের লোকেরা আরো সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে আসলে সে আর তাদের থামাতে পারবে না। মেয়েটি একথা শুনে তাড়াতাড়ি সে স্থান ত্যাগ করে নিরাপদ জায়গায় চলে গেলেন।

ইতিমধ্যে খবর পেয়ে পুলিশ এসে লোকটিকে গ্রেফতার করলো। লোকটিও স্বীকার করলো যে সেই খুন করেছে। তাকে জেলখানায় আটকে রাখা হলো। সেই রাতেই বাগদাদ শহরের পুলিশ কমিশনার স্বপ্নে দেখলো হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাশরীফ মুবারক এনেছেন। তিনি তাকে বললেন, 'আজ রাতে তোমার হাজতে একজন খুনীকে গ্রেফতার করে আনা হয়েছে। তুমি অতি সত্ত্বর তাকে মুক্ত করে দাও।' পুলিশ কমিশনার তো ঘুম থেকে উঠে তড়িঘড়ি করে জেলখানায় ছুটল। খবর নিল কাকে গ্রেফতার করে আনা হয়েছে। লোকটিকে তার সামনে পেশ করতে বললো। লোকটি যখন আসলো তখন কমিশনার তার সাথে একাকী কথা বললো, সমস্ত ঘটনা জানতে চাইলো। লোকটি সব খুলে বললো। কমিশনার সব শুনে বললো, 'আপনি অতি উত্তম কাজ করেছেন। আপনার উপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এতো সন্তুষ্ট হয়ে গিয়েছেন যে, তিনি নিজে আমাকে হুকুম করেছেন আপনাকে মুক্ত করে দিতে।' সুবহানাল্লাহ! লোকটি এই কথা শুনে অনেক কাঁদলো এই ভেবে যে, তার মত এমন নিকৃষ্ট একটা লোকের জন্য স্বয়ং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সুপারিশ করেছেন! সে খালিছ তওবা ইস্তিগফার করলো যে, আর কখনো কোনো খারাপ কাজ করবে না। হাক্বীক্বী ঈমানদার হিসেবে জীবন কাটাবে। সত্যিই তিনি একজন হক্কানী ওলীআল্লাহ উনার নিকট বাইয়্যাত হয়ে নিজেও খালিছ আল্লাহওয়ালা হয়ে গেলেন। সুবহানাল্লাহ!

0 Comments: