ইমামুল মুসলিমীন, মুকতাদায়ে জামীয়ে উমাম, ইনায়েতে হিলম, পেশওয়ায়ে আহলে বাছীরাত, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক-
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
اِنَّـمَا يُرِيْدُ الله لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ اَهْلَ الْبَيْتِ وَيُـطَـهِّـرَكُمْ تَطْهِيْرًا.
অর্থ: “হে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম! নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি চান আপনাদের থেকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা দূর করে আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করতে। অর্থাৎ তিনি আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই সৃষ্টি মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত আয়াত শরীফ ৩৩)
এই সম্মানিত আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
هُمْ اَهْلُ بَيْتٍ طَهَّرَهُمُ الله مِنَ السُّوْءِ وَاخْتَصَّهُمْ بِرَحْمَتِهٖ
অর্থ: “উনারা হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা ও পাপ থেকে পূত-পবিত্র রেখেছেন এবং উনার সম্মানিত রহমত মুবারক দ্বারা খাছ করে নিয়েছেন, উনার সম্মানিত খাছ রহমত মুবারক দ্বারা আবৃত করে নিয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন,
فَاَنَا وَاَهْلُ بَيْتِىْ مُطَهَّرُوْنَ مِنَ الذُّنُوْبِ.
অর্থ: “আমি এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম আমরা সকলেই যুনূব তথা সমস্ত প্রকার ছগীরা-কবীরা এবং যাবতীয় অপছন্দনীয় কাজ থেকে পূত-পবিত্র।” সুবহানাল্লাহ! (দালায়িলুন নুবুওওয়াহ লিল বায়হাক্বী, শিফা ১/৩২৫, সীরাতে হালবিয়্যাহ ১/৪২, আল মা’রিফাতু ওয়াত তারীখ ১/৪৯৮, খছাইছুল কুবরা ১/৬৬, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১/২৩৫, তাফসীরে দুররে মানছূর লিস সুয়ূত্বী ৬/৬০৬, তাফসীরে ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩ ইত্যাদি)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
اَنَّ نَبِـىَّ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُوْلُ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ طَهَّرَهُمُ اللهُ مِنْ شَجَرَةِ النُّبُوَّةِ وَمَوْضِعِ الرِّسَالَـةِ وَمُـخْتَلِفِ الْمَلَائِكَةِ وَبَيْتِ الرَّحْمَةِ وَمَعْدِنِ الْعِلْمِ.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি প্রায় সবসময় ইরশাদ মুবারক করতেন। আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে (আমাদেরকে) সম্মানিত নুবুওয়াত মুবারক উনার বৃক্ষ, সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার স্থান, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক (ইত্যাদি সমস্ত কিছু) থেকে পবিত্র রেখেছেন, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে দুররে মানছূর ৬/৬০৬, তাফসীরে ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩)
ইমামুল মুহাদ্দিছীন মিনাল আউওয়ালিন ইলাল আখিরীন, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আলোচ্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে- اَهْلُ بَيْتٍ نَـحْنُ (আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম) বলেÑ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে উনার নিজের অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! আর طَهَّرَهُمُ الله - মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে পবিত্র করেছেন। সুবহানাল্লাহ! অর্থ হলো- মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মুহতাজ ও উনাদের সম্মানার্থে উনারা সম্মানিত এবং উনাদের প্রতিই উনারা দায়েমীভাবে রুজু। সুবহানাল্লাহ! ফলে উনারা সমস্ত কিছু থেকেই বেনিয়াজ। সুবহানাল্লাহ! কাজেই সম্মানিত নুবুওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের ও উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক ইত্যাদি বরকতময় নিয়ামত মুবারক উনাদের প্রতি রুজু হওয়ার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কোন সুযোগ নেই। অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা সমস্ত কিছু থেকে পবিত্র, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) । সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কারণেই সম্মানিত নুবুওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, সমস্ত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা, সম্মানিত রহমত মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারকসহ সমস্ত কিছুই ফযীলতপ্রাপ্ত হয়েছেন, সম্মানিত হয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
اَلله الصَّمَدُ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা ইখলাছ শরীফ, সম্মানিত আয়াত শরীফ ২)
ইমামুল মুফাসসিরীন মিনাল আউওয়ালিন ইলাল আখিরীন, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি যেমন সমস্ত মাখলূকাত থেকে, সমস্ত কিছু থেকে ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)। সুবহানাল্লাহ! ঠিক তেমনিভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একমাত্র যিনি খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত সমস্ত মাখলূকাত থেকে, সমস্ত কিছু থেকে ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)। সুবহানাল্লাহ! আর ঠিক একইভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত কায়িনাত থেকে, সমস্ত কিছু থেকে ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)। সুবহানাল্লাহ! উনারা সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের ও উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম উনার খনি মুবারক ইত্যাদি সমস্ত কিছু থেকে পবিত্র, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযুর্গী-সম্মান মুবারক এক কথায় উনারা শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন। এছাড়া যত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক রয়েছেন, সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন উনারা। সুবহানাল্লাহ! তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কত বেমেছাল, তা এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ! আর সেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরই অন্তুর্ভুক্ত হচ্ছেন ইমামুল মুসলিমীন, মুকতাদায়ে জামীয়ে উমাম, ইনায়েতে হিলম, পেশওয়ায়ে আহলে বাছীরাত, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উনার সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। যা কস্মিনকালেও ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। সুবহানাল্লাহ! কাজেই উনার সাথে সৃষ্টি জগতের কারোই তুলনা করা যাবে না। সুবহানাল্লাহ! এই সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ لَّا يُقَاسُ بِنَا اَحَدٌ.
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমাদের সাথে অন্য কারো তুলনা করা যাবে না।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী ৪/২৮৩, জামি‘উল আহাদীছ ২২/২১৯, কানজুল ‘উম্মাল ১২/১০৪, জাম‘উল জাওয়ামি’ ১/২৪৯৫০, যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ ফী মানাক্বিবে যাওইল কুরবা লিমুহিব্বে ত্ববারী ১/১৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৭ ইত্যাদি)
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইমামুল মুসলিমীন, মুকতাদায়ে জামীয়ে উমাম, ইনায়েতে হিলম, পেশওয়ায়ে আহলে বাছীরাত, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বেমেছাল পবিত্রতা মুবারক উনার হিস্সা আমাদেরকে নছীব করুন। আমীন!
ইমামুল মুসলিমীন, মুকতাদায়ে জামীয়ে উমাম, ইনায়েতে হিলম, পেশওয়ায়ে আহলে বাছীরাত, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক সম্পর্কে জানা সকলের জন্য ফরয-
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
قُلْ لَّا اَسْاَلُكُمْ عَلَيْهِ اَجْرًا اِلَّا الْمَوَدَّةَ فِى الْقُرْبـٰى وَمَنْ يَّقْتَرِفْ حَسَنَةً نَّزِدْ لَهٗ فِيْهَا حُسْنًا اِنَّ اللهَ غَفُوْرٌ شَكُوْرٌ.
অর্থ: “(হে আমার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি সমস্ত বান্দা-বান্দীদেরকে, উম্মতদেরকে, তামাম কায়িনাতবাসীকে) বলে দিন যে, তোমাদের নিকট কোনো বিনিময় চাওয়া হচ্ছে না, প্রতিদান চাওয়া হচ্ছে না। আর চাওয়াটাও স্বাভাবিক নয়; তোমাদের পক্ষে দেয়াও কস্মিনকালে সম্ভব নয়। বরং তোমাদের জন্য এটা চিন্তা করাটাও কাট্টা কুফরী হবে। তবে তোমরা যদি ইহকাল ও পরকালে হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল করতে চাও, যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের হাক্বীক্বী রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক লাভ করতে চাও, তাহলে তোমাদের জন্য দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে, ফরয হচ্ছে, আমার নিকটাত্মীয় তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা, তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া, উনাদের সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক বর্ণনা করা। আর যে ব্যক্তি কোনো নেক কাজ করে আমি তার সেই নেকীকে বহুগুণে বৃদ্ধি করে দিয়ে থাকি। নিশ্চিয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ ক্ষমাশীল এবং সর্বোত্তম প্রতিদান দানকারী।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা শূরা শরীফ : সম্মানিত আয়াত শরীফ ২৩)
এই সম্মানিত আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَحِبُّوا اللهَ لِمَا يَغْذُوْكُمْ مِّنْ نِّـعْمَةٍ وَّاَحِبُّوْنِـىْ لـِحُبِّ اللهِ وَاَحِبُّوْا اَهْلَ بَــيْـتِـىْ لِـحُبِّىْ.
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনাকে মুহব্বত করো। কেননা তিনি তোমাদেরকে খাদ্যসামগ্রীসহ সার্বিকভাবে অনুগ্রহ করে থাকেন। আর তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত-মা’রিফাত মুবারক পেতে হলে, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক পেতে হলে আমাকে মুহব্বত করো। আর তোমরা আমার সম্মানিত মুহব্বত-মা’রিফাত মুবারক পেতে হলে, সম্মানিত রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক পেতে হলে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করো।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ, মুস্তাদরাকে হাকিম, ত্ববারনী শরীফ, শু‘য়াবুল ঈমান)
‘আল বাহ্রুল মাদীদ ফী তাফসীরিল কুরআনিল মাজীদ’ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,
مَـحَبَّةُ اَهْلِ الْبَيْتِ وَاجِبَةٌ عَلَى الْبَشَرِ حُرْمَةً وَّتَعْظِيْمًا لِّسَيِّدِ الْبَشَرِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَدْ قَالَ مَنْ اَحَبَّهُمْ فَبِحُبّـِىْ اَحَبَّهُمْ وَمَنْ اَبْغَضَهُمْ فَبِبُغْضِـىْ اَبْغَضَهُمْ فَمَحَبَّةُ الرَّسُوْلِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رُكْنٌ مّـِنْ اَرْكَانِ الْاِيْـمَانِ وَعَقْدٌ مِّنْ عُقُوْدِهٖ لَا يَـتِمُّ الْاِيْـمَانُ اِلَّا بِـهَا وَكَذٰلِكَ مَـحَبَّةُ اَهْلِ بَيْتِهٖ. وَفِـى الْـحَدِيْثِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يُؤْمِنُ اَحَدُكُمْ حَتّٰى يُـحِبَّنِـىْ وَلَا يـُحِبُّنِـىْ حَتّٰى يُـحِبَّ ذَوِىْ قَرَابَـتِـىْ اَنَا حَرْبٌ لِّـمَنْ حَارَبَهُمْ وَسَلْمٌ لِّـمَنْ سَالَـمَهُمْ وَعَدُوٌّ لِّـمَنْ عَادَاهُمْ اَلَا مَنْ اٰذٰى قَرَابَـتِـىْ فَقَدْ اٰذَانِـىْ وَمَنْ اٰذَانِـىْ فَقَدْ اٰذَى اللهَ تَعَالـٰى. وَقَالَ اَيْضًا عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ اِنّـِـىْ تَارِكٌ فِيْكُمْ مَّا اِنْ تَـمَسَّكْتُمْ بِهٖ لَنْ تَضِلُّوْا كِتَابَ اللهِ تَعَالـٰى وَعِتْرَتِـىْ.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে এবং উনার মর্যদা-মর্তবা, শান-মান, ফযায়িল-ফযীলত, পবিত্রতা মুবারক উনাদের কারণে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা সমস্ত মানুষের জন্য, সমস্ত কায়িনাতের জন্য ফরয। সুবহানাল্লাহ! আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সম্মানিত মুহব্বত মুবারক করলো, সে মূলত, আমার সম্মানিত মুহব্বত মুবারক উনার কারণেই উনাদেরকে সম্মানিত মুহব্বত মুবারক করলো। সুবহানাল্লাহ! আর যারা উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করলো, তারা মূলত, আমার প্রতি তাদের বিদ্বেষ থাকার কারণেই উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করলো। নাঊযুবিল্লাহ! সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারক সম্মানিত ঈমান উনার রুকনসমূহ থেকে একখানা রুকন মুবারক এবং সম্মানিত ঈমান উনার বন্ধনসমূহ থেকে একখানা বন্ধন মুবারক। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারক ব্যতীত সম্মানিত ঈমান পূর্ণ হয় না। সুবহানাল্লাহ! অনুরূপভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক। অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক সম্মানিত ঈমান উনার রুকনসমূহ থেকে একখানা রুকন মুবারক এবং সম্মানিত ঈমান উনার বন্ধনসমূহ থেকে একখানা বন্ধন মুবারক। উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক ব্যতীত সম্মানিত ঈমান পূর্ণ হয় না। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমাদের কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত ঈমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা আমাকে মুহব্বত না করবে। আর তোমরা আমাকে মুহব্বত করতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত না করবে। আমি তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করবো, যারা আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করবে। নাঊযুবিল্লাহ! আর আমি তাদের সাথে সন্ধি স্থাপন করবো, যারা আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে সন্ধি স্থাপন করবে। সুবহানাল্লাহ! তারা আমার শত্রু, যারা আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে শত্রুতা পোষণ করবে। নাঊযুবিল্লাহ! সাবধান! যারা আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে কষ্ট দিলো, তারা মূলত আমাকেই কষ্ট দিলো। নাঊযুবিল্লাহ! আর যারা আমাকে কষ্ট দিলো, তারা মূলত যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনাকে কষ্ট দিলো। নাঊযুবিল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, আমি তোমাদের মাঝে দু’খানা সম্মানিত বিশেষ নিয়ামত মুবারক রেখে যাচ্ছি, যতদিন তোমরা উনাদেরকে আঁকড়িয়ে ধরে রাখবে, ততদিন পর্যন্ত তোমরা গোমরাহ হবে না। আর তা হচ্ছেন, ১. মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত কিতাব কুরআন শরীফ এবং ২. আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা।” সুবহানাল্লাহ! (আল বাহ্রুল মাদীদ ফী তাফসীরিল কুরআনিল মাজীদ ৫/২১১)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ لَيْلـٰى رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يُؤْمِنُ عَبْدٌ حَتّٰى اَكُوْنَ اَحَبَّ اِلَيْهِ مِنْ نَّفْسِهٖ وَاَهْلِـىْ اَحَبَّ اِلَيْهِ مِنْ اَهْلِهٖ وَعِتْرَتِـىْ اَحَبَّ اِلَيْهِ مِنْ عِتْرَتِهٖ وَذَاتِـىْ اَحَبَّ اِلَيْهِ مِنْ ذَاتِهٖ.
অর্থ: “হযরত আবূ লায়লা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, কোনো বান্দা ততক্ষণ পর্যন্ত ঈমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তার নিকট তার নফস তথা জীবন থেকে অধিক প্রিয় না হবো, আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা তার নিকট তার পরিবার থেকে অধিক প্রিয় না হবেন, আমার সম্মানিত বংশধরগণ উনারা তার নিকট তার বংশধর থেকে অধিক প্রিয় না হবেন এবং আমার মহাসম্মানিত ওজুদ মুবারক তার নিকট তার যাত থেকে অধিক প্রিয় না হবেন।” সুবহানাল্লাহ! (আল মু’জামুল আওসাত্ব লিত্ব ত্ববারনী ৬/৫৯, আল মু’জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারনী ৭/৭৫, জামি‘উল আহাদীছ ১৬/৪৯৩, আছ ছওয়া‘ইকুল মুহরিক্বহ ২/৪৯৫)
অপর বর্ণনায় এসেছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ لَيْلـٰى رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يُؤْمِنُ عَبْدٌ حَتّٰـى اَكُوْنَ اَحَبَّ اِلَيْهِ مِنْ نَّفْسِهٖ وَتَكُوْنَ عِتْرَتِـىْ اَحَبَّ اِلَيْهِ مِنْ عِتْرَتِهٖ وَيَكُوْنَ اَهْلِـىْ اَحَبَّ اِلَيْهِ مِنْ اَهْلِهٖ وَتَكُوْنَ ذَاتِـىْ اَحَبَّ اِلَيْهِ مِنْ ذَاتِهٖ.
অর্থ: “হযরত আবূ লায়লা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, কোনো বান্দা ততক্ষণ পর্যন্ত ঈমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তার নিকট তার নফস তথা জীবন থেকে অধিক প্রিয় না হবো, আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা তার নিকট তার পরিবার থেকে অধিক প্রিয় না হবেন, আমার সম্মানিত বংশধরগণ উনারা তার নিকট তার বংশধর থেকে অধিক প্রিয় না হবেন এবং আমার মহাসম্মানিত ওজুদ মুবারক তার নিকট তার যাত থেকে অধিক প্রিয় না হবেন।” সুবহানাল্লাহ! (আল মু’জামুল আওসাত্ব ৬/৫৯, আল মু’জামুল কাবীর ৭/৭৫, জামি‘উল আহাদীছ ১৬/৪৯৩, আছ ছওয়া‘ইকুল মুহরিক্বহ ২/৪৯৫, শু‘আবুল ঈমান শরীফ ৩/৮৮, দায়লামী শরীফ ৫/১৫৪ ইত্যাদি)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ صَعِدَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى الْـمِـنْۢـبَرِ فَحَمِدَ اللهَ تَعَالـٰى وَاَثْنٰـى عَلَيْهِ ثُـمَّ قَالَ مَالِـىَ اَرَاكُمْ تَـخْتَلِفُوْنَ فِـىْ اَصْحَابِـىْ اَمَا عَلِمْتُمْ اَنَّ حُبِّـىْ وَحُبَّ اَهْلِ بَيْتِـىْ وَحُبَّ اَصْحَابِـىْ فَرَضَهُ اللهُ تَعَالـٰى عَلـٰى اُمَّتِـىْ اِلـٰى يَوْمِ الْقِيَامَةِ.
অর্থ: “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত মিম্বর শরীফ উনার উপর সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখলেন। অতঃপর তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার হামদ ও ছানা-ছিফত মুবারক বর্ণনা মুবারক করলেন। তারপর তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, কি হলো! আমি তোমাদেরকে দেখতে পাচ্ছি, তোমরা আমার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে নিয়ে ইখতিলাফ করো? সাবধান! তোমরা জেনে রাখ, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি আমার সম্মানিত মুহব্বত মুবারক, আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক এবং আমার হযরত ছাহাবা-ই কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক ক্বিয়ামত পর্যন্ত তথা অনন্তকাল যাবৎ আমার উম্মতের উপর অর্থাৎ সমস্ত কায়িনাতের উপর ফরয করে দিয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ! (রিয়াদ্বুন নাদ্বরহ)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَلْعَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ عَلَيْهِمَا السَّلَامُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَا بَالُ اَقْوَامٍ اِذَا جَلَسَ اِلَيْهِمْ اَحَدٌ مِّنْ اَهْلِ بَيْتِـىْ قَطَعُوْا حَدِيْثَهُمْ وَالَّذِىْ نَفسِىْ بِيَدِهٖ لَا يَدْخُلُ قَلْبَ امْرَئِ ۣ الْاِيْـمَانُ حَتّٰى يُـحِبَّهُمْ لِلّٰهِ وَلِقَرَابَتِـىْ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্ত্বলিব আলাইহিমাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, লোকদের কি হলো যে, তারা আলোচনারত থাকে, যখন আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে কাউকে দেখে, তখন তাদের আলোচনা বন্ধ করে দেয়! যেই মহান সত্তা উনার সম্মানিত কুদরতী হাত মুবারক-এ আমার সম্মানিত প্রাণ মুবারক উনার শপথ! কোন লোকের অন্তরে ততক্ষণ পর্যন্ত ঈমান প্রবেশ করবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টির জন্য এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম হওয়ার কারণে উনাদেরকে মুহব্বত না করবে।” সুবহানাল্লাহ! (আল ফাতহুল কাবীর ৩/৮০, জামি‘উল আহাদীছ ৩৫/২৮১)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ دُرَّةَ بِنْتِ اَبِـىْ سَهْبٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهَا قَالَتْ خَرَجَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُغْضِبًا حَتَّى اسْتَوٰى عَلَى الْـمِـنْۢـبَرِ فَحَمِدَ اللهَ وَاَثْنٰـى عَلَيْهِ ثُـمَّ قَالَ مَا بَالُ الرِّجَالِ يُؤْذُوْنَنِـىْ فِـىْ اَهْلِىْ وَالَّذِىْ نَفْسِىْ بِيَدِهٖ لَا يُؤْمِنُ عَبْدٌ حَتّٰى يُـحِبَّنِـىْ وَلَا يُـحِبُّنِـىْ حَتّٰى يُـحِبَّ ذَوِىْ.
অর্থ: “হযরত র্দুরা বিনতে আবী সাহ্ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত জালালী শান মুবারক প্রকাশ করা অবস্থায় (সম্মানিত হুজরা শরীফ থেকে) বের হয়ে সম্মানিত মিম্বর শরীফ উনার মধ্যে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখলেন। অতঃপর তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার হামদ ও ছানা-ছিফত মুবারক বর্ণনা মুবারক করলেন। তারপর তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, লোকদের কি হলো যে, তারা আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ব্যাপারে আমাকে কষ্ট দেয়? যেই মহান সত্তা উনার সম্মানিত কুদরতী হাত মুবারক-এ আমার সম্মানিত প্রাণ মুবারক উনার শপথ! কোন বান্দা-বান্দী কখনও ঈমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা আমাকে মুহব্বত না করবে এবং কখনও তারা আমাকে মুহব্বত করতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত না করবে।” সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ শরীফ ১১/৯)
সুতরাং উপরোক্ত দলীলভিত্তিক আলোচনার দ্বারা দিবালোকের ন্যায় অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা ব্যতীত কেউ কস্মিনকালেও ঈমানদার হতে পারবে না। সুবহানাল্লাহ!
এ জন্যই শাফেয়ী মাযহাব উনার সম্মানিত ইমাম হযরত ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছেন,
يَا اَهْلَ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ حُبُّكُمْ..........فَرْضٌ مِّنَ اللهِ فِـى الْقُرْاٰنِ اَنْزَلَهٗ
অর্থ: “হে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম! আপনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে ফরয করা হয়েছে, যা মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত কুরআন শরীফ উনার সম্মানিত আয়াত শরীফ নাযিল করে সাব্যস্ত করে দিয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ! (দেওয়ানে শাফেয়ী ১০৬ পৃ., মুখতাছরুত তোহফাহ ১/৭, ছব্বুল আযাব ১/৩১৯, আল ক্বওলুল বাদী’ ফী ছলাতি ‘আলা হাবীবিশ শাফী’ লিস সাখাওই ১/৯১)
হযরত ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো বলেছেন,
اِنْ كَانَ رَفْضًا حُبُّ اٰلِ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ............... فَلْيَشْهَدِ الثَّقَلَانِ اَنِّـىْ رَافِضِـىٌّ.
অর্থ: “যদি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করলে রাফিযী হতে হয়, তাহলে জিন-ইনসান তারা সাক্ষী থাকুক যে, নিশ্চয়ই আমি রাফেযী।” সুবহানাল্লাহ! (দেওয়ানে শাফেয়ী ৮৯ পৃ., মুখতাছরুত তোহফাহ ১/৮, ছব্বুল আযাব লিল আলূসী ১/৩২১)
তিনি আরো বলেছেন,
اَلْعِلْمُ وَالتَّوْحِيْدُ فِـىْ جَانِبٍ ...............وَّحُبُّ اَهْلِ الْبَيْتِ فِـىْ جَانِبٍ.
অর্থ: “সম্মানিত ইলম এবং তাওহীদ মুবারক এক পাশে আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক এক পাশে।” সুবহানাল্লাহ! (মুখতাছরুত তোহফাহ ১/৭, ছব্বুল আযাব ১/৩২০)
অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক ব্যতীত সম্মানিত ইলম মুবারক ও সম্মানিত তাওহীদ মুবারক দ্বারা কেউ কোনো ফায়দা লাভ করতে পারবে না। কাজেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক হচ্ছেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফরয। সুবহানাল্লাহ! উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক ব্যতীত কেউ কস্মিনকালেও ঈমানদার হতে পারবে না।
আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করতে হলে অবশ্যই উনাদের সম্পর্কে জানতে হবে, উনাদের বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক জানতে হবে, অন্যথায় উনাদেরকে মুহব্বত করা আদৌ সম্ভব নয়। আর উছূল হচ্ছে,
مَا لَا يَتِمُّ بِهِ الْفَرْضُ فَهُوَ الْفَرْضُ
অর্থ: “যা ব্যতীত ফরয পূর্ণ হয় না, সেটাও ফরয।”
অতএব, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বেমেছাল ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক সম্পর্কে জানা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন। সুবহানাল্লাহ! আর ইমামুল মুসলিমীন, মুকতাদায়ে জামীয়ে উমাম, ইনায়েতে হিলম, পেশওয়ায়ে আহলে বাছীরাত, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে বিশেষ ব্যক্তিত্ব মুবারক। সুবহানাল্লাহ! কাজেই উনার বেমেছাল ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক সম্পর্কে জানাও সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে ইমামুল মুসলিমীন, মুকতাদায়ে জামীয়ে উমাম, ইনায়েতে হিলম, পেশওয়ায়ে আহলে বাছীরাত, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক হাক্বীক্বীভাবে উপলব্ধি করে উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করার, সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করার এবং সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ১১ ইমাম আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক এবং বিছালী শান মুবারক প্রকাশের সম্মানিত তারিখ মুবারক প্রকাশে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার অভুতপূর্ব বেমেছাল বিস্ময়কর মহাসম্মানিত তাজদীদ মুবারক-
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَضَّرَ اللهُ امْرَءًا سَـمِعَ مِنَّا حَدِيْثًا فَبَلَّغَهٗ كَمَا سَـمِعَهٗ فَرُبَّ مُبَلَّغٍ اَوْعـٰى مِنْ سَامِعٍ.
অর্থ: “ফক্বীহুল উম্মত হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাস‘ঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ওই ব্যক্তির সম্মানিত চেহারা মুবারক সম্মুজ্জ্বল করুন, (উনাকে সম্মানিত রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক, মা’রিফাত-মুহব্বত মুবারক দান করুন,) যিনি আমার থেকে যেরূপ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ শুনবেন ঠিক হুবহু সেরূপ বর্ণনা করবেন। কেননা (পরবর্তীতে) যেই সকল সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাদের কাছে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ পৌঁছানো হবে, উনারা যাঁদের থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ শুনবেন, উনাদের থেকে অধিক বেশি বুঝবেন, উপলব্ধি করবেন, অনেক বেশি সম্মানিত ইলম মুবারক উনার অধিকারী হবেন।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ, ছহীহ ইবনে হিব্বান, মুসনাদে বাযযার, ত্ববারনী শরীফ)
এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার পরিপূর্ণ মিছদাক্ব হচ্ছেন আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত প্রকার সম্মানিত ইলম মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি হচ্ছেন সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত প্রকার সম্মানিত ইলম মুবারক উনার মালিক। সুবহানাল্লাহ!
মূলত, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাথে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার বেমেছালা সম্মানিত তা‘য়াল্লুক-নিসবত, মুহব্বত-ক্বুরবত মুবারক রয়েছেন, যা কায়িনাতের কারো পক্ষে ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। সুবহানাল্লাহ! যার কারণে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ১১ ইমাম আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক এবং বিছালী শান মুবারক প্রকাশের তারিখ নিয়ে অনেকে অনেক ইখতিলাফ করলেও যিনি সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ছাহিবুল ইলমিল আউওয়াল ওয়াল ইলমিল আখিরি, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইয়্যুল আউওয়াল, সুলত্বানুন নাছীর সম্মানিত রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি সকলের সমস্ত ইখতিলাফকে মিটিয়ে দিয়ে মহাসম্মানিত ১১ ইমাম আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক এবং বিছালী শান মুবারক প্রকাশের সম্মানিত তারিখ মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! নিম্নে তা উল্লেখ করা হলো-
ইমামুল আউওয়াল মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম:
মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ: আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত রিসালত মুবারক প্রকাশের ১০ বছর পূর্বে ১৩ই রজবুল হারাম শরীফ জুমুয়াহ শরীফ যোহরের ওয়াক্তে। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ: ৪০ হিজরী সনের ১৭ই রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুস সাবত শরীফ আছরের সময়। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম:
মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ : ৩য় হিজরী সনের ১৫ই রমাদ্বান ইয়াওমুল আরবিয়া শরীফ বা’দ আছর। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ: ৪৯ হিজরী সনের ২৮শে সফর শরীফ জুমুয়াহ শরীফ ভোর রাত্রে। ফজরের আগে তাহাজ্জুদের শেষ সময়ে। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম:
মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ: ৪র্থ হিজরী সনের ৫ই শা’বান শরীফ ইয়াওমুল জুমুয়াহ শরীফ বা’দ আছর। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ: ৬১ হিজরী সনের ১০ই মুহাররমুল হারাম শরীফ ইয়াওমুল জুমুয়াহ শরীফ যোহরের সময়। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুর রাবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম:
মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ: ৪৭ হিজরী সনের ৫ই শা’বান শরীফ ইয়াওমুল খমীস শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ: ৯৪ হিজরী সনের ২৫ শে মুহাররমুল হারাম শরীফ ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খামিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম:
মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ: ৬৭ হিজরী সনের ১লা রজবুল হারাম শরীফ জুমুয়াহ শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ: ১১৭ হিজরী সনের ৭ই যিলহজ্জ শরীফ ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম:
মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ: ৯৬ হিজরী সনের ১৭ই রবীউল আউওয়াল শরীফ ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ: ১৪৮ হিজরী সনের ১৪ই রজবুল হারাম শরীফ ইছানাইনিল ‘আযীম শরীফ রাতে বাদ ঈশা। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম:
মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ: ১২৮ হিজরী সনের ৭ই সফর শরীফ ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ: ১৮৩ হিজরী সনের ২৫শে রজবুল হারাম শরীফ জুমুয়াহ শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছামিন মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম:
মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ: ১৪৮ হিজরী সনের ১১ই যিলক্বদ শরীফ ইয়াওমুল আহাদ শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ: ২০৮ হিজরী সনের ২১শে রমাদ্বান শরীফ জুমুয়াহ শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম:
মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ: ১৯৫ হিজরী সনের ১০ই রজবুল হারাম শরীফ জুমুয়াহ শরীফ রাতে। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ: ২২০ হিজরী ৬ই যিলহজ্জ শরীফ ছুলাছা’ শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল ‘আশির মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম:
মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ: ২১০ হিজরী সনের ১৫ই যিলহজ্জ শরীফ জুমুয়াহ শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ: ২৫৪ হিজরী সনের ৩০ শে জুমাদাল উখরা শরীফ ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল হাদী ‘আশার মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম:
মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ: ২৩১ হিজরী সনের ১০ই রবীউল আউওয়াল শরীফ ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ: ২৬০ হিজরী সনের ৮ই রবীউল আউওয়াল শরীফ জুমুয়াহ শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
মূলত, এর মাধ্যমেই প্রতিভাত হয় যে, মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার কত বেমেছাল আখাচ্ছুল খাছ তায়াল্লুক-নিসবত মুবারক, যেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার ঊর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি সম্মানিত দুরূদ শরীফ পাঠ করা ব্যতীত নামায কবূল হয় না-
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ مَسْعُوْدِ ۣ الْاَنْصَارِىِّ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ صَلّٰى صَلٰوةً لَّـمْ يُصَلِّ فِيْهَا عَلَىَّ وَلَا عَلـٰى اَهْلِ بَيْـتِـىْ لَـمْ تُقْبَلْ مِنْهُ.
অর্থ: “হযরত আবূ মাস‘ঊদ আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি নামায পড়বে, কিন্তু নামাযে আমার এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি সম্মানিত দুরূদ শরীফ পাঠ করবে না, তার নামায কবূল হবে না।” (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৯, সুনানুদ দারাকুত্বনী ২/১৭১, শরহু সুনানি আবী দাঈদ লিল ‘আইনী ৪/২৬৬, আল বাদরুল মুনীর ৪/১৫, নাছবুর রাইয়াহ ১/৪২৭, আদ দিরায়াহ ১/১৫৮, আল ‘ইলাল ৬/১৯৭, আন নাজমুল ওহহাজ ২/১৬৪)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ مَسعُودٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ لَوْ صَلَّيْتَ صَلٰوةً لَّـمْ يُصَلَّ فِيْهَا عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَا عَلـٰى اَهْلِ بَيْتِهٖ لَرَاَيْتَ اَنَّهَا لَا تَتِمُّ مَوْقُوْفًا.
অর্থ: “হযরত আবূ মাস‘ঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তুমি যদি কোন নামায আদায় কর, কিন্তু ওই নামাযে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি দুরূদ শরীফ পাঠ না করো। তাহলে তুমি অবশ্যই দেখবে যে, সেই নামায পূর্ণ হয়নি; বরং ঝুলন্ত।” (দারাকুত্বনী ৬/১৯৮)
আরো বর্ণিত হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ جَعْفَرٍ مُحَمَّدِ بْنِ عَلِـىِّ بْنِ الْـحُسَيْنِ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ اَنَّهٗ قَالَ لَوْ صَلَّيْتُ صَلٰوةً لَّـمْ اُصَلِّ فِـيْهَا عَلَى النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَا عَلـٰى اَهْلِ بَيْتِهٖ لَرَاَيْتُ اَنَّهَا لَا تَتِمُّ.
অর্থ: “হযরত আবূ জা’ফর মুহম্মদ ইবনে আলী ইবনে হুসাইন আলাইহিমুস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি যদি কোন নামায আদায় করি, কিন্তু ওই নামাযে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি সম্মানিত দুরূদ শরীফ পাঠ না করি। অবশ্যই আমি দেখি যে, নিশ্চয়ই উক্ত নামায পূর্ণ হয়নি।” সুবহানাল্লাহ! (শিফা শরীফ ২/৬৪, শরহুশ শিফা ২/১১২, তাফসীরে কুরতুবী শরীফ ১৪/২৩৬, দারাকুত্বনী ইত্যাদি)
কাজেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি সম্মানিত ছলাত তথা দুরূদ শরীফ পাঠ না করলে, নামায কবুল হয় না। আর এই কারণেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি কিভাবে সম্মানিত ছলাত বা দুরূদ শরীফ পাঠ করতে হবে, সেই বিষয়টি তা’লীম বা শিক্ষা মুবারক দিয়েছেন। যেমন, এই সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ اَبِـىْ لَيْلٰى رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ لَقِيَـنِـىْ حَضْرَتْ كَعْبُ بْنُ عُجْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ فَقَالَ اَلَا اُهْدِىْ لَكَ هَدِيَّةً سَـمِعْتُهَا مِنَ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُلْتُ بَلٰى فَاَهْدِهَا لِـىْ فَقَالَ سَاَلْنَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُلْنَا يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَيْفَ الصَّلٰوةُ عَلَيْكُمْ اَهْلَ الْبَيْتِ فَاِنَّ اللهَ قَدْ عَلَّمَنَا كَيْفَ نُسَلِّـمُ عَلَيْكُم قَالَ قُوْلُوْا اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلـٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلـٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلـٰى اِبْرَاهِيْمَ وَعَلـٰى اٰلِ اِبْرَاهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّـجِيْدٌ اَللّٰهُمَّ بَارِكْ عَلـٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلـٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلـٰى اِبْرَاهِيْمَ وَعَلـٰى اٰلِ اِبْرَاهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّـجِيْدٌ.
অর্থ: “হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আবূ লাইলা (তাবেয়ী) রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হযরত কা’ব ইবনে উজরা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সাথে একদা আমার সাক্ষাৎ হলো। তিনি বললেন, (হে আব্দুর রহমান!) আমি কি আপনাকে একটি কথা হাদিয়া দিবো না, যা আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছ থেকে শুনেছি? আমি বললাম, হাঁ, আমাকে তা হাদিয়া করুন। তখন তিনি বললেন, একবার আমরা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সুওয়াল করেছিলাম। আমরা বলেছিলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার এবং আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অর্থাৎ আপনাদের প্রতি কিভাবে সালাম পাঠ করবো তা মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন। দয়া করে বলুন, আপনার প্রতি এবং আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি আমরা কিভাবে সম্মানিত ‘ছলাত’ (দুরূদ শরীফ) পাঠ করবো?
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনারা এইভাবে বলবেন,
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلـٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلـٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلـٰى اِبْرَاهِيْمَ وَعَلـٰى اٰلِ اِبْرَاهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّـجِيْدٌ اَللّٰهُمَّ بَارِكْ عَلـٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلـٰى اٰلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلـٰى اِبْرَاهِيْمَ وَعَلـٰى اٰلِ اِبْرَاهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّـجِيْدٌ.
“হে মহান আল্লাহ পাক! আপনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি সম্মানিত ছলাত মুবারক পেশ করুন, যেভাবে আপনি ছলাত পেশ করেছেন সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার এবং উনার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি। নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত এবং সম্মানিত। সুবহানাল্লাহ! হে মহান আল্লাহ পাক! আপনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি সম্মানিত বরকত নাযিল করুন, যেভাবে আপনি বরকত নাযিল করেছেন সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার এবং উনার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি। নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত এবং সম্মানিত।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মেশকাত শরীফ)
এই সম্মানিত দুরূদ শরীফ প্রতি ওয়াক্তে প্রত্যেক নামাযেই পাঠ করা হয়। সুবহানাল্লাহ! যারা নামাযে উপরোক্ত সম্মানিত দুরূদ শরীফ পাঠ করে না, তাদের নামায কবুল হয় না। সুবহানাল্লাহ!
এ জন্যই হযরত ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছেন,
يَا اَهْلَ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ حُبُّكُمْ ................. فَرْضٌ مِّنَ اللهِ فِـى الْقُرْاٰنِ اَنْزَلَهٗ
يَكْفِيْكُمْ مِّنْ عَظِيْمِ الْفَخْرِ اَنَّكُمْ ............... مَّنْ لَّـمْ يُصَلِّ عَلَيْكُمْ لَا صَلَاةَ لَهٗ.
অর্থ: “হে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম! আপনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে ফরয, যা মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত কুরআন শরীফ উনার সম্মানিত আয়াত শরীফ নাযিল করে সাব্যস্ত করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
আপনাদের মহাসম্মানিত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত মুবারক বুঝার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, যে ব্যক্তি আপনাদের উপর সম্মানিত দুরূদ শরীফ পাঠ করে না, তার নামায কবূল হয় না।” সুবহানাল্লাহ! (দেওয়ানে শাফেয়ী ১০৬ পৃ., মুখতাছরুত তোহফাহ ১/৭, ছব্বুল আযাব ১/৩১৯, আল ক্বওলুল বাদী’ ফী ছলাতি ‘আলা হাবীবিশ শাফী’ ১/৯১)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত পরিচিতি মুবারক-
শাব্দিক পরিচিতি মুবারক: আরবী ক্বাওয়ায়িদ বা ব্যাকরণ অনুযায়ীاَهْلُ بَيْتٍ (আহলু বাইত) মুরাক্কাবে ইদ্বাফী হয়েছে। অর্থাৎ اَهْلُ (আহাল) শব্দ মুবারকখানা হচ্ছেন মুদ্বাফ আর بَيْتٍ (বাইত) শব্দ মুবারকখানা হচ্ছেন মুদ্বাফ ইলাইহ। اَهْلُ (আহাল) শব্দ মুবারক উনার অর্থ মুবারক হচ্ছেন অধিবাসী, পরিবার-পরিজন, লোকজন, বাসিন্দা, সদস্য, আত্মীয়-স্বজন ইত্যাদি। আর بَيْتٍ (বাইত) শব্দ মুবারক উনার অর্থ মুবারক হচ্ছেন ঘর, হুজরা শরীফ, বাড়ি, বাসস্থান, পরিবার ইত্যাদি। সুতরাং اَهْلُ بَيْتٍ (আহলু বাইত) উনার শাব্দিক অর্থ মুবারক হলো, ঘরের অধিবাসী, হুজরা শরীফ উনার অধিবাসী, পরিবারের সদস্য, পরিবারের লোকজন, পরিবার-পরিজন ইত্যাদি। সুবহানাল্লাহ!
পারিভাষিক অর্থ: সম্মানিত শরীয়ত মুবারক উনার পরিভাষায় اَهْلُ بَيْتٍ ‘আহলু বাইত’ বলতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত পরিবার মুবারক উনাকে বুঝায়, উনার সম্মানিত পরিবার মুবারক উনার সম্মানিত সদস্যগণ উনাদেরকে বুঝায়, উনার সম্মানিত হুজরা শরীফ উনার অধিবাসী উনাদেরকে বুঝায়। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত হুজরা শরীফ উনার অধিবাসী যাঁরা রয়েছেন, উনারাই হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য যে, যদিও স্বাভাবিকভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত হুজরা শরীফ উনার অধিবাসী বলতে উনার মহাসম্মানিত হযরত আব্বা-আম্মা আলাইহিমাস সালাম উনাদেরকে, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে, হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে, হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে এবং উনাদের মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম ও আওলাদ আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে বুঝায়, তথাপি বিষয়টি অতি সূক্ষ্ম, অত্যন্ত ব্যাপক এবং অনেক ব্যাখ্যা সাপেক্ষ। তবে সংক্ষেপে বলতে গেলে, যেই সকল সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম হিসেবে দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিয়েছেন এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিবেন, উনারা প্রত্যেকেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত হুজরা শরীফ উনার অধিবাসী। সুবহানাল্লাহ! এই বিষয়টি সম্মানিত কুদরত মুবারক এবং সম্মানিত মু’জিযা শরীফ উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ! যদিও স্বাভাবিকভাবে মানুষের জন্য বুঝতে একটু কঠিন মনে হতে পারে। তবে সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ এই বিষয় মুবারক উনার বরকতময় হাক্বীক্বত মুবারক অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রকাশিত হবে। সুবহানাল্লাহ! যেই সকল সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত হবেন, উনারা প্রত্যেকেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত হুজরা শরীফ উনার অধিবাসী হবেন। উনারা একই সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ অবস্থান মুবারক করবেন। সুবহানাল্লাহ! তবে অবশ্যই সম্মানিত কুরবত বা নৈকট্য মুবারক উনার প্রগাঢ়তা অনুযায়ী স্তর বিন্যাস রয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
আরো সহজভাবে বলতে গেলে- মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
قُلْ لَّا اَسْاَلُكُمْ عَلَيْهِ اَجْرًا اِلَّا الْمَوَدَّةَ فِى الْقُرْبـٰى.
অর্থ: “(হে আমার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি বলে দিন, তোমাদের নিকট কোনো বিনিময় চাওয়া হচ্ছে না, চাওয়াটাও স্বাভাবিক নয়। তবে তোমাদের জন্য ফরয হচ্ছে আমার সর্বাধিক নিকট সম্পর্কের অধিকারী, নিকটাত্মীয় তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা, তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা শূরা শরীফ : সম্মানিত আয়াত শরীফ-২৩)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ থেকে এই সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং উনার সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক বংশানুক্রমে (অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বংশধর আলাইহিমুস সালাম উনাদের থেকে) যেই সকল সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক এবং ব্যক্তিত্বা মুবারক উনারা ধারণ করেছেন এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত যেই সকল সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক এবং ব্যক্তিত্বা মুবারক উনারা ধারণ করবেন, উনারাই হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! উনাদের শান মুবারকেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন-
نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ طَهَّرَهُمُ اللهُ مِنْ شَجَرَةِ النُّبُوَّةِ وَمَوْضِعِ الرِّسَالَـةِ وَمُـخْتَلِفِ الْمَلَائِكَةِ وَبَيْتِ الرَّحْـمَةِ وَمَعْدِنِ الْعِلْمِ.
অর্থ: “আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস উনাদেরকে (আমাদেরকে) সম্মানিত নুবুওয়াত মুবারক উনার বৃক্ষ, সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার স্থান, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক (ইত্যাদি সমস্ত কিছু) থেকে পবিত্র রেখেছেন, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে দুররে মানছূর লিস সুয়ূত্বী ৬/৬০৬, তাফসীরে ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা কারা?
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে তিনটি স্তর মুবারক রয়েছেন। যেমন-
প্রথম স্তর মুবারক:
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রথম স্তর মুবারক-এ হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আব্বা-আম্মা আলাইহিমাস সালাম উনারা। সুবহানাল্লাহ! উনারা হচ্ছেন,
** আবূ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম। তিনি সম্মানিত হিজরত মুবারক উনার ৭৮ বছর ৮ মাস ১০ দিন পূর্বে ২রা রজবুল হারাম শরীফ লাইলাতুস সাব্ত শরীফ মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি সম্মানিত হিজরত মুবারক উনার ৫৩ বছর ২ মাস পূর্বে অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার ২ মাস ১০ দিন পূর্বে ২রা মুহররমুল হারাম শরীফ ইয়াওমুল জুমুয়াহ শরীফ সকালে মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে মোট ২৫ বছর ৬ মাস সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
** সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি সম্মানিত হিজরত মুবারক উনার ৭২ বছর পূর্বে সাইয়্যিদুশ শুহূর মহাসম্মানিত রবীউল আউওয়াল শরীফ উনার ৫ তারিখ ইয়াওমুল জুমুয়াহ শরীফ বা’দ ফজর সম্মানিত মদীনা শরীফ মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি সাইয়্যিদুশ শুহূর মহাসম্মানিত রবীউল আউওয়াল শরীফ উনার ১০ তারিখ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ সকাল ৯-১০ টার দিকে অর্থাৎ ইশরাক উনার ওয়াক্ত শেষ হয়ে চাশত বা দ্বোহা উনার ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে ২৫ বছর ৫ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
দ্বিতীয় স্তর মুবারক:
দ্বিতীয় স্তর মুবারক-এ হচ্ছেন, মহাসম্মানিত হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা। সুবহানাল্লাহ! উনারা হচ্ছেন,
১. উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা (হযরত খাদীজা) আলাইহাস সালাম।
২. উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ (হযরত সাওদাহ বিনতে যাম‘আহ) আলাইহাস সালাম,
৩. উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ (হযরত আয়িশা) আলাইহাস সালাম।
৪. উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রাবি‘য়াহ ইবনাতু আবীহা (হযরত হাফছাহ) আলাইহাস সালাম।
৫. উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল খামিসাহ উম্মুল মাসাকিন (হযরত যাইনাব বিনতে খুযাইমাহ) আলাইহাস সালাম।
৬. উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাদিসাহ (হযরত উম্মু সালামাহ বিনতে আবী উমাইয়্যাহ) আলাইহাস সালাম।
৭. উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাবি‘য়াহ আত্বওয়ালু ইয়াদান (হযরত যাইনাব বিনতে জাহ্শ) আলাইহাস সালাম।
৮. উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছামিনাহ (হযরত জুওয়াইরিয়া বিনতে হারিছ) আলাইহাস সালাম।
৯. উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ (হযরত রায়হানাহ বিনতে শাম‘ঊন) আলাইহাস সালাম।
১০. উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ (হযরত ছফিয়্যাহ বিনতে হুইয়াই বিনতে আখত্বব) আলাইহাস সালাম।
১১. উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল হাদিয়াহ ‘আশার (হযরত উম্মু হাবীবাহ বিনতে আবী সুফিয়ান) আলাইহাস সালাম।
১২. উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ ‘আশার (হযরত মারিয়াহ ক্বিবতিয়াহ) আলাইহাস সালাম।
১৩. উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ ‘আশার (হযরত মাইমূনাহ বিনতে হারিছ) আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
তৃতীয় স্তর মুবারক:
তৃতীয় স্তর মুবারক-এ হচ্ছেন, মহাসম্মানিত হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (নূরে মুজাসসাম হাবীল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ছেলে সন্তান আলাইহিমুস সালাম) উনারা এবং মহাসম্মানিতা হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা মেয়ে সন্তান আলাইহিন্নাস সালাম) উনারা এবং উনাদের মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম ও আলাইহিন্নাস সালামগণ উনারা। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা এবং মহাসম্মানিতা হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা হচ্ছেন মোট আট (৮) জন। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার ধারাবাহিকক্রমে উনারা হচ্ছেন,
১. ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুল আউওয়াল (হযরত ক্বাসিম) আলাইহিস সালাম। তিনি ২রা রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুছ ছুলাছা’ শরীফ সকালে মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে ২২মাস সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। অতঃপর ২রা রজবুল হারাম শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ ভোর রাত্রে মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
২. খইরু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা (হযরত যাইনাব) আলাইহাস সালাম। তিনি ২১শে জুমাদাল উখরা শরীফ ইয়াওমুল জুমুয়াহ শরীফ বা’দ ফজর মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি ৮ম হিজরী সনের ৮ই মুহাররমুল হারাম শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ ইশরাকের ওয়াক্তে সম্মানিত মদীনা শরীফ-এ মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ৩০ বছর ৬ মাস ১৭ দিন দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! মহসম্মানিত হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের এবং মহাসম্মানিতা হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মধ্যে তিনিই দুনিয়ার যমীনে সবচেয়ে বেশি দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
৩. ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছানী (হযরত ত্বইয়্যিব) আলাইহিস সালাম। তিনি ২রা রবীউল আউওয়াল শরীফ ইয়াওমুল খমীস শরীফ মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে মাত্র ৭ দিন অবস্থান মুবারক করেন। অতঃপর ৮ই রবীউল আউওয়াল শরীফ ইয়াওমুল আরবিয়া’ শরীফ বা’দ আছর মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! মহসম্মানিত হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের এবং মহাসম্মানিতা হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মধ্যে তিনিই দুনিয়ার যমীনে সবচেয়ে কম সময় সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
৪. ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছ (হযরত ত্বাহির) আলাইহিস সালাম। তিনি ৪ঠা রবী‘উল আউওয়াল শরীফ ইয়াওমুল আরবিয়া শরীফ সকালে মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে মাত্র ৮ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। অতঃপর তিনি ১২ রবীউল আউওয়াল শরীফ ইয়াওমুল খমীস শরীফ চাশতের সময় মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
৫. বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ (হযরত রুক্বইয়্যাহ) আলাইহাস সালাম। তিনি ৩রা রবী‘উছ ছানী শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ সকালে মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহনাল্লাহ! আর তিনি ২য় হিজরী সনের ১৮ই রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুস সাব্ত শরীফ শেষ রাত্রে মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ২১ বছর ৫ মাস ১৫ দিন। সুবহানাল্লাহ!
৬. বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ (হযরত উম্মু কুলছূম) আলাইহাস সালাম। তিনি ১১ই জুমাদাল ঊলা শরীফ লাইলাতুস সাবত শরীফ মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি ৯ম হিজরী সনের ৬ রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ বা’দ ফজর মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ২৬ বছর ৩ মাস ২৫ দিন দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
৭. বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রাবি‘য়াহ যাহরা (হযরত ফাত্বিমা) আলাইহাস সালাম। তিনি ২০শে জুমাদাল উখরা শরীফ ইয়াওমুল জুমুয়াহ শরীফ সুবহে ছাদিক্ব উনার সময় মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি ১১ হিজরী সনের ৩রা রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ বা’দ আছর মহাসম্মানিত রবকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ২৬ বছর ২ মাস ১৩ দিন দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! এবং
৮. ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রাবি’ (হযরত ইবরাহীম) আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তিনি ৮ম হিজরী সনের ২রা যিলহজ্জ শরীফ লাইলাতুল জুমুয়াহ শরীফ তথা জুমুয়াবার রাতে দুনিয়ার যমীনে মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি ১০ম হিজরী সনের সাইয়্যিদুশ শুহূর মহাসম্মানিত রবীউল আউওয়াল শরীফ উনার ১০ তারিখ ইয়াওমুছ ছুলাছা শরীফ মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ১৫ মাস ৮ দিন দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা প্রত্যেকেই অল্প বয়স মুবারক-এ তথা সম্মানিত দুধ মুবারক পানরত অবস্থায় মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! আর মহাসম্মানিতা হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লাম উনারা প্রত্যেকেই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার যুগ পেয়েছেন, সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেছেন, সম্মানিত মদীনা শরীফ হিজরত মুবারক করেছেন এবং উনাদের সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফও হয়েছিলো। সুবহানাল্লাহ! উনাদের মধ্যে একমাত্র বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি ব্যতীত অন্যান্য যাঁরা রয়েছেন অর্থাৎ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার এবং সাইয়্যদাতুনা হযরত আন নূরুর রাবিয়া’হ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের প্রত্যেকেরই মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম ও আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! উনারাই হচ্ছেন হাফাদাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সিবতুন (নাতি) আলাইহিমুস সালাম এবং সিবত্বাতুন (নাতনী) আলাইহিন্নাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! উনারা সর্বমোট ১০ জন। সুবহানাল্লাহ! উনারা হচ্ছেন,
১. সিবত্বতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উমামাহ আলাইহাস সালাম।
২. সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আলী ইবনে হযরত যুন নূর (আবিল আছ) আলাইহিস সালাম।
৩. একজন মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করা অবস্থায় মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। এই ৩ জন উনারা খইরু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার মাধ্যমে মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
৪. সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আব্দুল্লাহ ইবনে হযরত যুন নূরাইন (হযরত উছমান) আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তিনি বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার মাধ্যমে মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
৫. সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম।
৬. সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম।
৭. সিবত্বতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব বিনতে যুন নূর হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহ (হযরত আলী) আলাইহাস সালাম।
৮. সিবত্বতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত রুক্বইয়্যাহ বিনতে যুন নূর হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহ (হযরত আলী) আলাইহাস সালাম।
৯. সিবত্বতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে যুন নূর হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহ (আলী) আলাইহাস সালাম।
১০. সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম মুহসিন আলাইহিস সালাম।
উনারা ৬ জন বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রাবিয়া’হ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মাধ্যমে মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
খইরু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত যাওযুম মুকাররাম সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূর (হযরত আবুল আছ ইবনে রবী’) আলাইহিস সালাম তিনি এবং খুলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনারাও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
আর ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম ও আওলাদ আলাইহিন্নাস সালাম উনারা এবং ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম ও আওলাদ আলাইহিন্নাস সালাম উনারা প্রত্যেকেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ! আবার উপরের দিকে হযরত আবুল বাশার ছফীউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার থেকে শুরু করে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সময় পর্যন্ত যেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক এবং ব্যক্তিত্বা মুবারক উনারা নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ধারণ মুবারক করেছেন উনারা প্রত্যেকেই হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ! আর নিচের দিকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত সিবতুন ও সিবত্বাতুন (নাতী-নাতনী) আলাইহিমুস সালাম ও আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের পর থেকে ক্বিয়ামত পর্যন্ত যেই সকল সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক বংশানুক্রমে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং উনার সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক ধারণ করবেন, উনারাই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম হিসেবে মনোনীত হবেন। আর উনারাই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য যে, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারাও হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আখাচ্ছুল খাছ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ! আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ওজূদ পাক মুবারক উনার সাথে সম্পৃক্ত। সুবহানাল্লাহ! তিনি তো নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আখাচ্ছুল খাছ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত অবশ্যই; শুধু তাই নয়, তিনি হচ্ছেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একক ও অদ্বিতীয় হাক্বীক্বী কায়িম মাক্বাম। সুবহানাল্লাহ! আর মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা হচ্ছেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের হাক্বীক্বী ক্বায়িম মাক্বাম। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আব্বা-আম্মা আলাইহিমাস সালাম উনারা হচ্ছেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আব্বা-আম্মা আলাইহিমাস সালাম উনাদের হাক্বীক্বী ক্বায়িম মাক্বাম। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, হাবীবাতুল্লাহ আমাদের মহাসম্মানিতা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন, মহাসম্মানিতা হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের হাক্বীক্বী ক্বায়িম মাক্বাম। সুবহানাল্লাহ! নাক্বীবাতুল উমাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত শাহযাদী ঊলা আলাইহাস সালাম তিনি এবং নিবরাসাতুল উমাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত শাহযাদী ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা হচ্ছেন, মহসম্মানিত হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের হাক্বীক্বী ক্বায়িম মাক্বাম। সুবহানাল্লাহ! খলীফাতুল উমাম আল মানছূর সাইয়্যিদুনা হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন, মহাসম্মানিত হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের হাক্বীক্বী ক্বায়িম মাক্বাম। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত শাহনাওয়াসা আলাইহিস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদাতাল উমাম সাইয়্যিদাতানা হযরত শাহনাওয়াসী ক্বিবলাতাইন আলাইহিমাস সালাম উনারা, সাইয়্যিদাতুল উমাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত শাহনাওয়াসী আছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি, সাইয়্যিদাতুল উমাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত শাহনাওয়াসী আর রাবিয়া’হ আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা হচ্ছেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সিবতুন ও সিবত্বতুন (নাতী-নাতনী) আলাইহিমুস সালাম ও আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের হাক্বীক্বী ক্বায়িম মাক্বাম। সুবহানাল্লাহ! শাফিউল উমাম সাইয়্যিদুনা হযরত শাহদামাদ ক্বিবলা আউওয়াল আলাইহিস সালাম তিনি এবং হাদিউল উমাম সাইয়্যিদুনা হযরত শাহদামাদ ক্বিবলা ছানী আলাইহিস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা হচ্ছেন, সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের হাক্বীক্বী ক্বায়িম মাক্বাম। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের এবং আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মধ্যে পার্থক্য-
এটি একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অনেকে মনে করে থাকে যে, যিনি আওলাদে রসূল তিনিই আহলু বাইত শরীফ। আওলাদে রসূল এবং আহলু বাইত শরীফ উনাদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। নাঊযুবিল্লাহ! আবার অনেকে মনে করে থাকে যে, আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মধ্যে যারা বড় ওলীআল্লাহ উনারা হচ্ছেন আহলু বাইত শরীফ। নাঊযুবিল্লাহ!
প্রকৃতপক্ষে এই বক্তব্যগুলো একটাও শুদ্ধ না। মূলত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের এবং আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মাঝে অনেক পার্থক্য রয়েছে। যেমন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যাঁরা বংশধর অর্থাৎ যাঁরা ইমামুছ ছানী সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম উনার এবং ইমামুছ ছালিছ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের যাঁরা বংশধর উনারা প্রত্যেকেই আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। তবে আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মধ্যে তিনটি ভাগ রয়েছে। যেমন-
১. যাঁদের আক্বীদা ও আমল আখলাক্ব শুদ্ধ রয়েছে উনাদেরকে মুহব্বত করতে হবে এবং অনুসরণও করতে হবে।
২. যাঁদের আক্বীদা শুদ্ধ রয়েছে কিন্তু আমল আখলাক্ব শুদ্ধ নেই উনাদেরকে মুহব্বত করতে হবে, সম্মান করতে হবে; কিন্তু অনুসরণ করা যাবে না।
৩. যাদের আক্বীদার মধ্যে কুফরী রয়েছে, তাদেরকে আওলাদে রসূল বা সাইয়্যিদ বলা যাবে না। মুহব্বত, সম্মান ও অনুসরণ করার তো প্রশ্নোই উঠে না।
এই সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ بُرَيْدَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيهِ وَسَلَّمَ لَا تَقُوْلُوْا لِلْمُنَافِقِ سَيِّدٌ فَاِنَّكُمْ اِذَا فَعَلْتُمْ اَغْضَبْتُمْ رَبَّكُمْ تَبَارَكَ وَتَعَالـٰى.
অর্থ: “হযরত বুরাইদাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা মুনাফিক্বদেরকে সাইয়্যিদ বলো না। যদি তোমরা এরূপ করো, তাহলে তোমরা তোমাদের রব মহান আল্লাহ পাক তাবারাকা ওয়া তায়ালা উনাকে অসন্তুষ্ট করলে।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (আল আদাবুল মুফরাদ ১/২৬৭, মুসনাদে বাযযার ৪/২৯৫, আবূ দাঊদ)
আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত সিবতুন ও সিবত্বাতুন (নাতী-নাতনী) আলাইহিমুস সালাম ও আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের পর থেকে ক্বিয়ামত পর্যন্ত যেই সকল সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক বংশানুক্রমে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং উনার সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক ধারণ করবেন, উনারাই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম হিসেবে মনোনীত হবেন। আর উনারাই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
উনারা প্রত্যেকেই পূর্ব মনোনীত। উনাদেরকে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই সৃষ্টি মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! উনারা শুধু যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন উনারা। সুবহানাল্লাহ! নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা যেমন পূর্ব মনোনীত ঠিক তেমনিভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারাও পূর্ব মনোনীত। সুবহানাল্লাহ!
সহজে বুঝার জন্য বলা যেতে পারে, প্রত্যেক রসূলই নবী; কিন্তু প্রত্যেক নবীই রসূল নন। ঠিক তেমনিভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা প্রত্যেকেই আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ! কিন্তু প্রত্যেক আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা আহলু বাইত শরীফ নন।
সুতরাং উপরোক্ত দলীলভিত্তিক আলোচনার দ্বারা অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, প্রত্যেক আওলাদে রসূলই আহলু বাইত শরীফ নন। আবার আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মধ্যে বড় ওলীআল্লাহ হলেই আহলু বাইত শরীফ হওয়া যায় না। বরং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে আলাদা। সুবহানাল্লাহ! উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযুর্গী-সম্মান মুবারক এক কথায় উনারা শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া যত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক রয়েছেন সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন উনারা। সুবহানাল্লাহ! উনারা একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মুহতাজ। এছাড়া কায়িনাতের অন্য কারো মুহতাজ নন; বরং কায়িনাতের সকলেই উনাদের মুহতাজ। সুবহানাল্লাহ! উনাদের সাথে কারো তুলনা করা যাবে না। সুবহানাল্লাহ!
উনাদের শান মুবারকেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ لَّا يُقَاسُ بِنَا اَحَدٌ.
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমাদের সাথে অন্য কারো তুলনা করা যাবে না।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী ৪/২৮৩, জামি‘উল আহাদীছ ২২/২১৯, কানজুল উম্মাল ১২/১০৪, জাম‘উল জাওয়ামি’ ১/২৪৯৫০, যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ ফী মানাক্বিবে যাওইল কুরবা লিমুহিব্বে ত্ববারী ১/১৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৭ ইত্যাদি)
0 Comments:
Post a Comment