মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক পাঠ করার, আলোচনা করার এবং উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করার গুরুত্ব, তাৎপর্য ও বেমেছাল ফযীলত মুবারক-

সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, 

اِنَّ ذِكْرَ الصَّالـحِيْنَ تَنْزِلُ الرَّحْـمـَةُ.

অর্থ: “নিশ্চয়ই ওলীআল্লাহগণ উনাদের আলোচনা মুবারক করলে সম্মানিত রহমত মুবারক নাযিল হয়।” সুবহানাল্লাহ্! (ইহইয়ায়ে ‘উলূমিদ্দীন, ফাদ্বাইলে আশারাহ লিযামাখশারী, কাশফুল খফা) 

এখন বলার বিষয় যে, যদি ওলীআল্লাহ উনাদের আলোচনা মুবারক করলে সম্মানিত রহমত মুবারক নাযিল হয়, তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত সাওয়ানেহ ‘উমরী মুবারক আলোচনা করলে, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করলে কতো সীমাহীন রহমত মুবারক বর্ষিত হবে, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! কেননা, উনার সম্মানার্থে, উনাকে মুহব্বত মুবারক করেই মানুষ ওলীআল্লাহ হয়ে থাকেন। সেই ওলীআল্লাহ উনাদের আলোচনা করলে যদি সম্মানিত রহমত  মুবারক নাযিল হয়, তাহলে যিনি সম্মানিত রহমত মুবারক উনার মালিক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত সাওয়ানেহ ‘উমরী মুবারক আলোচনা করলে, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করলে কি পরিমাণ সম্মানিত রহমত, বরকত, সাকীনা, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক বর্ষিত হবে, তা কেউ কস্মিনকালেও ভাষা দিয়ে প্রকাশ করতে পারবে না। সুবহানাল্লাহ! 

প্রকৃত কথা হলো, যাঁরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত সাওয়ানেহ ‘উমরী মুবারক আলোচনা করবেন, পাঠ করবেন, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করবেন, উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের আখাছ্ছুল খাছ সম্মানিত মুহব্বত-মা’রিফত, নিসবত-কুরবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করবেন। সুবহানাল্লাহ!

মাওলানা জালালুদ্দীন রূমী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার লিখিত বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘মছনবী শরীফ’ উনার ফযীলত বর্ণনা করতে যেয়ে হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেছেন, “যারা ‘মছনবী শরীফ’ পাঠ করবেন, উনারা ওলীউল্লাহ না হলেও ‘মছনবী শরীফ’ পাঠ করা অবস্থায় উনাদের নামগুলো ওলীউল্লাহ উনাদের দফতরে লিখা থাকবে।” সুবহানাল্লাহ!

আর দ্বিতীয় হাজারের মুজাদ্দিদ হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘মাকতূবাত শরীফ’ উনার ব্যাপারে বলেছেন, “কেউ যদি উনার সম্মানিত ‘মাকতূবাত শরীফ’ পাঠ করেন, ‘মাকতূবাত শরীফ’ পাঠ করা অবস্থায় নবী না হওয়া সত্ত্বেও উনার নাম ‘সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক’ উনার দফতরে লিখা হয়।” সুবহানাল্লাহ!

আর আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহহির, আছ ছমাদ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “কেউ যদি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক আলোচনা করেন, পাঠ করেন, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাওয়ানেহ উমরী মুবারক আলোচনাকালীন, পাঠকালীন, বান্দা-বান্দী, উম্মত উনাদের নাম তখন ছমাদিয়াতের তবক্বায় লিখা থাকবে।” সুবহানাল্লাহ!

আর যদি কেউ সম্মানিত মুহব্বত মুবারক উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক আলোচনা করেন, পাঠ করেন, উনার সম্মানিত সাওয়ানেহ উমরী মুবারক আলোচনা করেন, পাঠ করেন, তাহলে অবশ্য অবশ্যই উনার উপর জাহান্নাম হারাম হয়ে জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, সেই ব্যক্তি তিনি সর্বোচ্চ সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে আবাদুল আবাদের তরে অবস্থান মুবারক করবেন। সুবহানাল্লাহ! এতে বিন্দু থেকে বিন্দুতমও সন্দেহের অবকাশ নেই। কেননা, সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, 

عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ اَحَبَّ سُنَّتِـىْ فَقَدْ اَحَبَّـنِـىْ وَمَنْ اَحَبَّنِـىْ كَانَ مَعِـىَ فِـى الْـجَنَّةِ.

 অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার কোনো একখানা সম্মানিত সুন্নত মুবারক উনাকে মুহব্বত করলেন, তিনি মূলত, আমাকেই মুহব্বত করলেন। আর যিনি আমাকে মুহব্বত করলেন, তিনি মূলত, আমার সাথেই সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ অবস্থান মুবারক করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (তুহফাতুল আহওয়াযী বিশরহি জামিয়িত তিরমিযী, জামি‘উল উছূল ফী আহাদীছির রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বওয়া‘িয়দুত তাহদীছ, শরহুল বুখারী, মিরক্বাত শরীফ, তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ)

এখন বলার বিষয় হচ্ছে একখানা সম্মানিত সুন্নত মুবারক উনাকে মুহব্বত করলে যদি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ অবস্থান করা যায়, তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি তো হচ্ছেন সমস্ত সম্মানিত সুন্নত মুবারক উনাদের মালিক। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উনাকে যাঁরা মুহব্বত করবেন, উনাদের ফায়ছালা কী হবে? উনারা কার সাথে, কোন সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ অবস্থান করবেন? মূলত, অবশ্য অবশ্যই ওই সকল ব্যক্তি উনারা স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে এবং উনার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে সর্বোচ্চ সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ চিরস্থায়ীভাবে অবস্থান করবেন এবং উনাদের মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক ও জিয়ারত মুবারক-এ আবাদুল আবাদের তরে মশগূল থাকবেন। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আখাছ্ছুল খাছ উম্মত হিসেবে বিবেচিত হবেন এবং স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার ওই সকল উম্মত উনাদেরকে ইহকাল ও পরকালে দায়িমীভাবে সম্মানিত শাফায়াত মুবারক করবেন, উনার আখাছ্ছুল খাছ বিশেষ নেক দৃষ্টি মুবারক, মুহব্বত-মা’রিফত, নিসবত-কুরবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক দান করবেন। সুবহানাল্লাহ!

মহান আল্লাহ পাক তিনি আহলু বাইত রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে কবূল করুন। আমীন!


এক নজরে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পরিচিতি মুবারক

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে বিশেষ ব্যক্তিত্বা মুবারক। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারকই হচ্ছেন সম্মানিত ঈমান। সুবহানাল্লাহ! 

নিম্নে এক নজরে উনার মহাসম্মানিত পরিচিতি মুবারক তুলে ধরা হলো-

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক: সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছফিয়্যাহ আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লক্বব মুবারক: উম্মুল মু’মিনীন, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, আত্ব ত্বাহিরাহ, আত্ব ত্বইয়্যিবাহ্, মালিকাতুল জান্নাহ, মালিকাতুল কায়িনাত এছাড়াও আরো অসংখ্য-অগণিত। সুবহানাল্লাহ! 

যেই সম্মানিত লক্বব মুবারক-এ মহাসম্মানিত পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেছেন:  মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!

পিতা: হুইয়াই ইবনে আখ্ত্বব। 

মাতা: র্বারাহ বিনতে সামাওয়াল।

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ: আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের ৩য় বৎসর ২৫শে রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুল আহাদ শরীফ। সুবহানাল্লাহ! 

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার সম্মানিত স্থান মুবারক: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত অবস্থান মুবারক: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ। সুবহানাল্লাহ!

আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ: সম্মানিত খায়বর বিজয়ের পর ৭ম হিজরী শরীফ উনার সম্মানিত মুহররমুল হারাম শরীফ মাসে। সুবহানাল্লাহ! 

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ: সম্মানিত খায়বর বিজয়ের পর ৭ম হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৫শে মুহররমুল হারাম শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ তথা সোমবার)। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উনার সম্মানিত বয়স মুবারক: ১৬ বছর ৪ মাস। সুবহানাল্লাহ!

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া: ৪ বছর ১ মাস ১৭ দিন। সুবহানাল্লাহ!

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক: ৩৯ বছর ৬ মাস ১১ দিন। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ: ৫০ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৩শে রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুল জুমু‘য়াহ শরীফ। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার সম্মানিত স্থান মুবারক: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ। সুবহানাল্লাহ!

দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক: ৫৯ বছর ১১ মাস ২৮ দিন অর্থাৎ প্রায় ৬০ বছর। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম এবং আলাইহিন্নাস সালাম: নেই।

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ : মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জান্নাতুল বাক্বী’ শরীফ। সুবহানাল্লাহ!


মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসবনামাহ মুবারক পিতা উনার দিক থেকে-

صَفِيَّةُ بِنْتُ حُيَىِّ بْنِ اَخْطَبَ بْنِ سَعْيَةَ بْنِ ثَعْلَبَةَ بْنِ عُبَيْدِ بْنِ كَعْبِ بْنِ الْـخَزْرَجِ بْنِ اَبِى الْـحَبِيْبِ بْنِ النَّضِيْرِ بْنِ النَّحَّامِ بْنِ نَاخُوْمِ بْنِ الْـخَزْرَجِ بْنِ الصَّرِيْحِ بْنِ التَّوْمَانِ بْنِ السِّبْطِ بْنِ الْيَسَع بْنِ سَعْدِ بْنِ لَاوِىِّ بْنِ خَيْرِ بْنِ النَّجَّامِ بْنِ تَنْحُوْمَ بْنِ عَازِرِ بْنِ عَيْزَر بْنِ هَارُوْنَ بْنِ عِمْرَانَ بْنِ قَاهَاتِ بْنِ لَاوِىِّ بْنِ يَعْقُوْبَ بْنِ اِسْحَاقَ بْنِ اِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ

১. اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ الْعَاشِرَةُ سَيِّدَتُناَ حَضْرَتْ صَفِيَّةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছফিয়্যাহ আলাইহাস সালাম।

২. حُيَـىّ হুইয়াই।

৩. اَخْطَبُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত আখ্ত্বব আলাইহিস সালাম।

৪. سَعْيَةُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত সা’ইয়াহ্ আলাইহিস সালাম।

৫. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ ثَعْلَبَةُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ছা’লাবাহ আলাইহিস সালাম।

৬. عُبَيْدٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘উবাইদ্ আলাইহিস সালাম।

৭. كَعْبٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত কা’ব আলাইহিস সালাম।

৮. اَلْـخَزْرَجُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত খয্রায আলাইহিস সালাম।

৯. اَبُو الْـحَبِيْبِ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ হাবীব আলাইহিস সালাম।

১০. اَلنَّضِيْـرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত নাযীর আলাইহিস সালাম।

১১. اَلنَّحَّامُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত নাহ্হাম আলাইহিস সালাম।

১২. نَاخُوْم عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত নাখূম আলাইহিস সালাম।

১৩. اَلْـخَزْرَجُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত খয্রায আলাইহিস সালাম।

১৪. اَلصَّرِيْحُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ছরীহ্ আলাইহিস সালাম।

১৫. اَلتَّوْمَانُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত তাওমান আলাইহিস সালাম।

১৬. عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ اَلسِّبْطُ সাইয়্যিদুনা হযরত সিব্ত্ব আলাইহিস সালাম।

১৭. اَلْيَسَعُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত আল ইয়াসা’ আলাইহিস সালাম।

১৮. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ سَعْدٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত সা’দ আলাইহিস সালাম।

১৯. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ لَاوِىٌّ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত লাওই আলাইহিস সালাম।

২০. خَيْرٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত খইর আলাইহিস সালাম।

২১. اَلنَّجَّامُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত নাজ্জাম আলাইহিস সালাম।

২২. تَنْحُوْم عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত তানহূম আলাইহিস সালাম।

২৩. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ عَازِرٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আযির আলাইহিস সালাম।

২৪. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ عَيْزَر عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আইযার আলাইহিস সালাম।

২৫. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ هَارُوْنُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত হারূন আলাইহিস সালাম।

২৬. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ عِمْرَانُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘ইমরান আলাইহিস সালাম।

২৭. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ قَاهَاتٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বহাত আলাইহিস সালাম।

২৮. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ لَاوِىّ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত লাওই আলাইহিস সালাম।

২৯. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ يَعْقُوْبُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ইয়া’কূব আলাইহিস সালাম।

৩০. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ اِسْحَاقُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ইসহাক্ব আলাইহিস সালাম।

৩১. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম।


মাতা উনার দিক থেকে-

أمها برة بنت سَمَوْأَل من بَنِىْ قُرَيْظَة وهي أخت الصحابى رفاعة بن سموال.

অর্থ: “ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মুমিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনার মাতা বাররাহ বিনতে সামাওয়াল। তিনি ছিলেন বনী কুরাইযাহ গোত্রের এবং বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত রিফা‘আহ ইবনে সামাওয়াল রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার আপন বোন।” সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ)

অর্থাৎ বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত রিফা‘আহ ইবনে সামাওয়াল রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি ছিলেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত মামা। সুবহানাল্লাহ!

সুতরাং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন পিতার দিক থেকে বনু নযীর গোত্রের এবং মাতার দিক থেকে বনু কুরাইযাহ গোত্রের। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনার পিতা হুইয়াই এবং মহাসম্মানিত দাদা সাইয়্যিদুনা হযরত আখ্ত্বব আলাইহিস সালাম উনারা উভয়ই ছিলেন ইহুদী জাতির মধ্যে সবচেয়ে সম্ভ্রান্ত, অনুসরণীয় এবং সকলের সাইয়্যিদ বা সর্দার। এ কারণে বনী ইসরাঈলের সকল আরবীয় গোত্রের মধ্যে উনাকে বিশেষ মর্যাদা দেয়া হতো। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনার পিতা হুইয়াইকে অসীম সম্মান করা হতো। জাতির সব লোক বীনা দ্বিধায় হুইয়াইর নেতৃত্ব-কর্তৃত্ব মেনে নিয়েছিলো। আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনার মাতা বাররাহ ছিলো সামওয়াল আলাইহিস সালাম উনার মেয়ে। সাইয়্যিদুনা হযরত সামাওয়াল আলাইহিস সালাম তিনি শান-মান, মর্যাদা, গৌরব, শ্রেষ্ঠত্ব ও বীরত্বের জন্য গোটা জাযীরাতুল আরবে বিখ্যাত ছিলেন। মূল কথা হলো, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বংশধারা মুবারক এক বিশেষ খুছূছিয়াত মুবারক উনার অধিকারী ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!

হযরত ইমাম জাহিয রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘কিতাবুল মাওয়ালী শরীফ’ উনার মধ্যে বলেন,

وقد ولد صفية بنت حيي مائة نبيّ ومائة ملك ثم سيرها الله تعالى أمة لنبيه صلى الله عليه وسلم.

অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত পূর্বপুরুষ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে ১০০ জন ছিলেন সম্মানিত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত এবং ১০০ জন ছিলেন বাদশাহ। তারপর যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মত হিসেবে তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মাহাতুল মু’মিনীন হিসেবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনাকে মনোনীত করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (কিতাবুল মাওয়ালী, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ শরীফ, ‘উমদাতুল ক্বারী শরহু ছহীহিল বুখারী লিল‘আইনী, ইরশাদুস সারী লিশরহি ছহীহিল বুখারী লিলকুস্ত¡লানী, শরহুয যারক্বানী ‘আলাল মাওয়াহিব, নিহায়াতুল ঈজায ফী সীরাতি সাকিনিল হিজায ইত্যাদি)

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন,

أَلا قُلْتِ لَهُنَّ كَيْفَ تَكُنَّ خَيْرًا مِنِّي وَأَبِي هَارُونُ وَعَمِّي مُوسَى وَزَوْجِي مُحَمَّدٌ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.

অর্থ: “আপনি উনাদেরকে কেন বললেন না যে, আপনারা কিভাবে আমার চেয়ে শ্রেষ্ঠ হবেন? আমার সম্মানিত পিতা (পূর্বপুরুষ) হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত হারূন আলাইহিস সালাম তিনি, আমার সম্মানিত চাচা (পূর্বপুরুষ) হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র যাওজুম মুকাররম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছেন স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি।” সুবহানাল্লাহ! (আল ইস্তি‘য়াব ৪/১৮৭১)

অপর বর্ণনায় রয়েছেন,

وَاللهِ إِنَّكِ لَابْنَةُ نَبِيٍّ وَإِنَّ عَمَّكِ لنَبِيُّ وَإِنَّكِ لَتَحْتَ نَبِيٍّ فِيمَ تَفْخَرُ عَلَيْكِ

অর্থ: “যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! নিশ্চয়ই আপনার সম্মানিত পূর্বপুরুষ (সাইয়্যিদুনা হযরত হারূন আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন) একজন সম্মানিত নবী আলাইহিস সালাম এবং আপনার সম্মানিত চাচা (পূর্বপুরুষ সাইয়্যিদুনা হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম) তিনিও ছিলেন একজন সম্মানিত নবী আলাইহিস সালাম। আর নিশ্চয়ই আপনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক অধীনে রয়েছেন। অর্থাৎ আপনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। তাহলে অন্য কেউ কি নিয়ে আপনার সাথে ফখর করবেন? সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে ইসহাক্ব ৪/২৬১)


মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক এবং মহাসম্মানিত পরিচিতি মুবারক:

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনার প্রকৃত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক ছিলেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তবে তিনি ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছফিয়্যাহ আলাইহাস সালাম’ এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসম বা নাম মুবারক-এ মশহূর হন। সুবহানাল্লাহ! আরবের প্রথা অনুযায়ী যুদ্ধলব্ধ মাল বন্টনের সময় যে উৎকৃষ্ট বা উত্তম মাল দলপতির জন্য রাখা হত তাকেই ‘ছফিয়্যাহ’ বলা হতো। সম্মানিত খায়বার জিহাদ মুবারক-এ প্রাপ্ত সকল কিছুর মধ্যে যেহেতু মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ এবং শেষ পর্যন্ত তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক আনেন, এজন্য উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নামকরণ মুবারক করা হয়েছিল সাইয়্যিদাতুনা হযরত সফিয়্যাহ আলাইহাস সালাম হিসেবে। আর এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারকেই তিনি প্রসিদ্ধি লাভ করেন। সুবহানাল্লাহ! উনার পিতার নাম ছিলো হুইয়াই ইবনে আখতাব। তিনি ছিলেন হযরত হারূন ইবনে ‘ইমরান আলাইহিমাস সালাম উনাদের অধস্তন পুরুষ। 

পারিবারিক অবস্থান মুবারক: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ আলাইহাস সালাম উনার পিতা এবং মহাসম্মনিত দাদা আলাইহিস সালাম উভয়েই ছিলেন তৎকালীন ইয়াহূদী জাতির সম্মানিত ও মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব। যে কারণে বনী ইসরাঈলের সমস্ত আরবীয় গোত্রের মধ্যে উনাদেরকে আলাদা সম্মান করা হতো। বিশেষ করে উনার পিতা হুইয়াই ইবনে আখ্ত্ববকে মর্যাদার শীর্ষে স্থান দেয়া হয়েছিল। ইয়াহূদীরা বিনা বাক্যে তার নেতৃত্ব মেনে চলতো। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মনিত নানা সাইয়্যিদুনা হযরত সামাওয়াল আলাইহিস সালাম তিনি শান-মান, মর্যাদা, গৌরব, শ্রেষ্ঠত্ব ও বীরত্বের জন্য গোটা জাযিরাতুল আরবে বিখ্যাত ছিলেন। মূল কথা হলো, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বংশধারা মুবারক এক বিশেষ খুছূছিয়াত মুবারক উনার অধিকারী ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!

প্রথম শাদী মুবারক: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনার প্রথম শাদী মুবারক হয় আরবের বিখ্যাত কবি ও সর্দার সালাম ইবনে মিশকাম কুরাইযীর সাথে। প্রথম দিকে উনার দাম্পত্য জীবন সুখের হলেও পরবর্তীতে মনোমালিন্য ঘটে এবং শেষ পর্যন্ত ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। ফলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম তিনি পিতৃগৃহে ফিরে আসেন। 

এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন,

وكانت ام المؤمنين سيدتنا حضرت العاشرة عليها السلام (سيدتنا حضرت صفية عليها السلام) تزوجها سلام بن مشكم القرظي ثم فارقها.

অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনার প্রথম শাদী মুবারক হয়েছিলো বনী কুরাইযার সালাম ইবনে মিশকামের সাথে। তারপর তিনি সেখান থেকে পিতৃগৃহে চলে আসেন।” (ইবনে সা’দ ৮/৯৫) 

দ্বিতীয় শাদী মুবারক: এরপর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনার দ্বিতীয় শাদী মুবারক হয় কিনানাহ্ ইবনে রবী ইবনে আবুল হুক্বাইক্ব নামক এক ইহুদীর সাথে।

এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন,

فتزوجها كنانة بن الربيع بن أبي الْـحُقَيْقِ النضري

অর্থ: “তারপর বনূ নাযীর গোত্রের কিনানাহ্ ইবনে রবী’ ইবনে আবুল হুক্বাইক্বের সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনার (দ্বিতীয়) শাদী মুবারক অনুষ্ঠিত হয়।” (ইবনে সা’দ ৮/৯৫)

অপর বর্ণনায় রয়েছেন, 

وكانت عند كنانة بن الربيع بن أبي الْـحُقَيْقِ.

 অর্থ: “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক-এ আসার পূর্বে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম তিনি কিনানাহ্ ইবনে রবী’ ইবনে আবুল হুক্বাইক্বের নিকট ছিলেন ।” (ইবনে হিশাম, আর রওদ্বুল উনফ, অল বিদায়া ওয়ান নিহায়াহ) 

এ সময় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ১৬ বছরের চেয়ে একটু বেশি।

পিতা এবং চাচার মৃত্যু: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনার পিতা হুইয়াই ইবনে আখ্ত্বব এবং চাচা আবূ ইয়াসির- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলিাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চরম শত্রু ছিলো। তারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ থেকে বিতারিত হয়ে চতুর্থ হিজরী শরীফ-এ খায়বারে যেয়ে কিনানার সাথে বসবাস করতে থাকে। এখানে বসেই হুইয়াই ইবনে আখ্ত্বব সম্মানিত মুসলমান উনাদের ক্ষতি করার সর্বপ্রকার চেষ্টা করতে থাকে। পরবর্তীতে ৭ম হিজরী শরীফ উনার মুহররমুল হারাম শরীফ মাসে যখন নুরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খায়বার অভিযান পরিচালনা করেন, তখন মুসলমান উনাদের হাতে আল কামূস দুর্গের পতন ঘটে। যুদ্ধে ইয়াহূদীদের চূড়ান্ত পরাজয় ঘটে। বহু নেতৃস্থানীয় ইয়াহূদী নিহত হয়। কিনানাহ ইবনে রবী’ ইবনে আবুল হুক্বাইক্ব দুর্গের অভ্যন্তরে নিহত হয়। এমন কি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনার পিতা হুইয়াই ইবনে আখ্ত্ববও নিহত হয়। 


নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ:

খায়বার বিজয়ের পর যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ উপস্থিত হন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ আলাইহাস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি যা পছন্দ করেন, তা বেছে নিন। যদি আপনি সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে পছন্দ করেন, তাহলে আমি আপনাকে আমার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ কবূল করবো। আর যদি আপনি ইয়াহূদী ধর্ম পছন্দ করেন, তাহলে আমি আপনাকে মুক্ত করে দিবো, যাতে আপনি আপনার কাওমের সাথে মিলিত হতে পারেন। জবাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন,

يَا رَسُولَ اللَّهِ لَقَدْ هَوَيْتُ الإِسْلامَ وَصَدَّقْتُ بِكَ قَبْلَ أَنْ تَدْعُوَنِي.

অর্থ: “ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! অবশ্যই আমি সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে মুহব্বত করি। আপনি আমাকে সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার প্রতি আহ্বান করার পূর্বেই আমি আপনাকে সত্য হিসেবে তথা যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন হিসেবে স্বীকার করে নিয়েছি।” সুবহানাল্লাহ!

 ইহুদী ধর্মের প্রতি আমার কোন টান নেই। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনী সাইয়্যিদাতুনা হযরত ‘আশিরাহ আলাইহাস সালাম তিনি আরো বলেন,

وَخَيَّرْتَنِي الْكُفْرَ وَالإِسْلامَ فَاللَّهُ وَرَسُولُهُ أَحَبُّ إِلَيَّ مِنَ الْعِتْقِ وَأَنْ أَرْجِعَ إِلَى قَوْمِي. 

অর্থ: “আর আপনি আমাকে কুফরী বা সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম যে কোন একটি গ্রহণের ইখতিয়ার মুবারক দিয়েছেন। স্বাধীন হওয়ার চেয়ে এবং আমার কওমের নিকট ফিরে যাওয়ার চেয়ে যিনি খালিক্ব মালিক রব আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারাই আমার নিকট সর্বাধিক প্রিয়।” সুবহানাল্লাহ! 

ইয়া রসূলল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারকেই থাকতে চাই। দয়া করে আপনি আমাকে গ্রহণ করুন। সুবহানাল্লাহ! তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার আরজী মুবারক কবূল করেন। সুবহানাল্লাহ!

কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন,

وجمع السبي فجاءه دحية فقال يا رسول الله أعطني جارية من السبي فقال اذهب فخذ جارية فأخذ صفية بنت حيي فجاء رجل إلى نبي الله صلى الله عليه وسلم فقال يا نبي الله أعطيت دحية صفية بنت حيي سيدة قريظة والنضير ما تصلح إلا لك قال ادعوه بها فجاء بها فلما نظر إليها النبي صلى الله عليه وسلم قال خذ جارية من السبي غيرها وأعتقها وتزوجها.

অর্থ: “আর (খায়বর বিজয়ের পর) বন্ধিদেরকে একত্রিত করা হলে হযরত দাহ্ইয়াতুল কালবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এসে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ আরজী পেশ করেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! দয়া করে আমাকে একজন দাসী দান করুন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনি গিয়ে একজনকে গ্রহণ করুন। তারপর তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ আলাইহাস সালাম উনাকে গ্রহণ করলেন। অত:পর একজন হযরত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এসে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনী সাইয়্যিদাতুনা হযরত ‘আশিরাহ আলাইহাস সালাম উনাকে হযরত দাহ্ইয়াতুল কালবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার জন্য দিয়েছেন। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ আলাইহাস সালাম তিনি বনূ কুরাইযাহ্ এবং বনূ নযীর গোত্রের সাইয়্যিদাহ। তিনি একমাত্র আপনার জন্যই উপযুক্ত। সুবহানাল্লাহ! তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ্ আলাইহাস সালাম উনাকেসহ হযরত দাহ্ইয়াতুল কালবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে আসতে বলুন। অত:পর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ আলাইহাস সালাম উনাকেসহ হযরত দাহ্ইয়াতুল কালবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি আসলেন। যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত মর্যাদা মুবারক উনার বিষয় লক্ষ্য করলেন, তখন হযরত দাহ্ইয়াতুল কালবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে বললেন, উনাকে ব্যতীত অন্য কাউকে আপনি গ্রহণ করুন। তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ আলাইহাস সালাম উনাকে মুক্ত করে দিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (‘আক্বীদাতু আহলিস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘য়াহ)

অপর বর্ণনায় রয়েছেন,

وَقَدْ قُتِلَ زوجها وكانت عروسًا فاصطفاها النبي صلى الله عليه وسلم لنفسه. 

অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ্ আলাইহাস সালাম উনার (দ্বিতীয়) আহাল কিনানাহ্ খায়বরের জিহাদে নিহত হয়, তখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন নববধু। অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনার দ্বিতীয় শাদী মুবারক হওয়ার পর পরই উনার দ্বিতীয় আহাল কিননাহ্ খায়বার জিহাদে নিহত হয়। তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ্ আলইহাস সালাম উনাকে নিজের জন্য কবূল করেন।” সুবহানাল্লাহ! (্অল বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ৪/২২৩)

খায়বার থেকে রওয়ানা হওয়ার পর ছহ্বা’ নামক স্থানে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ হওয়ার পর আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। এখানে সম্মানিত ওয়ালিমা মুবারক উনার মেহমানদারী মুবারক সম্পন্ন করা হয়। ছহ্বা আগমনকালে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে নিজ উটের পিঠে বসান আর নিজর সম্মানিত জুব্বা মুবারক দিয়ে উনাকে ছায়া মুবারক দেন, যাতে লোকেরা জানতে পারে যে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম তিনি হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ পৌঁছে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনাকে নিয়ে বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত হারিছ ইবনে নু’মান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সম্মানিত বাড়ী মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখেন। তিনি ছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একজন অত্যন্ত প্রিয় ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক উনাকে অনেক সম্পদ মুবারক দিয়েছিলেন। তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার ব্যাপারে অগ্রগামী উনাদের অন্তুর্ভুক্ত ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম তিনি যখন হযরত হারিছ ইবনে নু’মান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সম্মানিত বাড়ী মুবারক-এ সম্মানিত অবস্থান করছিলেন, তখন উনার সম্মানিত খুব ছূরত মুবারক উনার কথা শুনে উনাকে দেখার জন্য হযরত আনসার মহীলা ছাহাবীয়া রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুন্না উনারা সেখানে গমন করেন।” সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত ওলীমাহ্ মুবারক

কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন,

فَكَانَتْ وَلِيْمَتُهُ السَّمْنَ وَالأَقِطَ وَالتَّمْرَ

অর্থ: “সম্মানিত ওলীমাহ্ মুবারক ছিলেন ঘি/মাখন, পনির এবং খেজুর। অর্থাৎ হাইস্ নামক খাবার।”

‘সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ’-এ বর্ণিত রয়েছেন,

وأطعم الناس ثلاثة أيام

অর্থ: “সবাইকে ওলীমার খাবার ৩ দিন পর্যন্ত খাওয়ানো হয়।” সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছেন,

 عَنْ حَضْرَتْ جَابِرٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـى عَنْهُ  اَنَّ  اُمَّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اَلْعَاشِرَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ صَفِيَّةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) لَمَّا أُدْخِلَتْ عَلَى النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فُسْطَاطَهُ حَضَرْنَا فَقَالَ قُوْمُوا عَنْ أُمِّكُمْ فَلَمَّا كَانَ العَشِيُّ حَضَرْنَا وَنَحْنُ نَرَى أَن ثَــمَّ قَسْماً فَخَرَجَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَفِي طَرَفِ رِدَائِهِ نَحْوٌ مِنْ مُدٍّ وَنِصْفٍ مِنْ تَـمَرِ عَجْوَةٍ فَقَالَ كُلُوْا مِنْ وَلِيْمَةِ اُمِّكُمْ

অর্থ: “হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ্ আলাইহাস সালাম উনাকে যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত তাঁবু মুবারক উনার ভিতর প্রবেশ করানো হলো, তখন আমরা (উনার সম্মানিত তাঁবু মুবারক উনার নিকট) উপস্থিত হলাম। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আপনারা আপনাদের মহাসম্মানিতা মাতা উনার এখান থেকে চলে যান। অতঃপর যখন সন্ধ্যা হলো, তখন আমরা (উনার সম্মানিত তাবু মুবারক উনার নিকট) উপস্থিত হলাম। আর আমরা সেখানে (সম্মানিত জিহাদ উনার গনিমত) বণ্টন দেখলাম। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার সম্মানিত চাদর মুবারক উনার এক পার্শ্বে দেড় মুদের মত আজওয়াহ্ খেজুর নিয়ে বের হলেন। তারপর তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

كُلُوْا مِنْ وَلِيْمَةِ اُمِّكُمْ

আপনারা আপনাদের মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ওলীমাহ্ মুবারক গ্রহণ করুন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ, সিয়ারু আ’লামিন নুবালা ইত্যাদি)

কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন,

فرأت أنّ القمر وقع في حجرها وقيل رأت الشمس وقعت على صدرها وقصّتها علي أبيها أو زوجها فلطمها وقال أتريدين ملك يثرب وفي رواية ما تمنين إلا هذا الملك الذى نزل.

অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম তিনি একবার স্বপ্ন মুবারক-এ দেখলেন যে আকাশের চাঁদখানা উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল আযহার মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কোল মুবারক-এ) সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! অন্য বর্ণনা রয়েছেন- তিনি স্বপ্ন মুবারক-এ দেখেছেন আসমানের সূর্যখানা উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূুরুল ইলম মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বক্ষ মুবারক-এ) সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি এই সম্মানিত স্বপ্ন মুবারকখানা উনার পিতা বা আহালের নিকট বর্ণনা করলে, উনার গাল মুবারক-এ স্বজোড়ে একটা থাপড় মারে এবং বলে যে, আপনি কি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার মালিক (বাদশাহ) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে (আপনার মহাসম্মানিত জাওযুম মুকাররম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিসেবে পাওয়ার) প্রত্যাশা করতেছেন? অপর বর্ণনায় রয়েছেন, নিশ্চয়ই আপনি খায়বার বিজয়ের জন্য যিনি এখানে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিয়েছেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে (মহাসম্মানিত জাওযুম মুকাররম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিসেবে) পাওয়ার তামান্না মুবারক করছেন।” (নিহায়াতুল ঈজায ফী সীরাতি সাকিনিল হিজায)

অপর বর্ণনায় রয়েছেন,

وكانت ام المؤمنين سيدتنا حضرت العاشرة عليها السلام (سيدتنا حضرت صفية عليها السلام) رأت قبل ذلك أن القمر وقع في حجرها فذكرت ذلك لأبيها فلطم وجهها وقال إنك لتمدين عنقك إلى أن تكوني عند ملك العرب فلم يزل الأثر في وجهها حتى أتى بها صلى الله عليه وسلم فسألها عنه فأخبرته.

অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম তিনি খায়বর বিজয়ের পূর্বে স্বপ্ন মুবারক দেখেন যে, আকাশের চাঁদখানা উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল আযহার মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কোল মুবারক-এ) সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তখন তিনি উনার স্বপ্ন মুবারকখানা উনার পিতার নিকট বর্ণনা করলেন। (উনার পিতা হুইয়াই ইবনে আখ্ত্বব ছিলো স্বপ্নের বিশিষ্ট তা’বীরবীদ)। উনার পিতা সম্মানিত স্বপ্ন মুবারকখানা শুনে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুর রহমত মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চেহারা মুবারক-এ) স্বজোড়ে একটা থাপড় মারে এবং বলে যে, নিশ্চয়ই নি:সন্দেহে আপনি নিজেকে যিনি আরব উনার মালিক সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক-এ সপে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুর রহমত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চেহারা মুবারক) থেকে থাপ্পড়ের এই চিহ্ন মুবারক কখনও দূর হয়নি। {(মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পূর্ব পর্যন্ত উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুর রহমত মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র চেহারা মুবারক-এ এই চিহ্ন মুবারক ছিলেন।)} মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম তিনি যখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক আনেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনাকে জিজ্ঞাসা মুবারক করেন যে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূুরুর আনওয়ার মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র গাল মুবারক-এ) এটা কিসের চিহ্ন মুবারক? তখন তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বিষয়টি খুলে বললেন।” (শরহুয যারক্বানী ‘আলাল মাওয়াহিব ৩/২৭২-২৭৩)

মূলত, যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এই সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক উনার মাধ্যম দিয়ে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনাকে এ বিষয়ে সম্মানিত সুসংবাদ মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছেন যে, আপনি অতিশীঘ্রই যিনি সারা কায়িনাতের মালিক সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিছবতে ‘আযীম শরীফ উনার মাধ্যমে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম হতে যাচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ! আর এই সম্মানিত স্বপ্ন মুবারক উনার মাধ্যমে যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এই বিষয়টিও স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা পূর্ব মনোনীত। যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম হিসেবে এবং সমস্ত কায়িনাতের মালিকাহ হিসেবেই পবিত্র করার মত পবিত্রতম করেই সৃষ্টি মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ!

বেমেছাল সম্মানিত মুহব্বতপূর্ণ সম্পর্ক মুবারক


মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অত্যন্ত মুহব্বত মুবারক করতেন। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পূর্বে সমস্ত হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক-এ উপস্থিত হন। এ সময় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম তিনি দুঃখ প্রকাশ করে সীমাহীন মুহব্বত মুবারক উনার সাথে বলেন, 

اِنِّـىْ وَاللهِ يَا نَبِـىَّ اللهَ لَوَدَدْتُ اَنَّ الَّذِىْ بِكَ بِـىْ

অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার একান্ত ইচ্ছা যদি আপনার সমস্ত দুঃখ-কষ্ট, যন্ত্রনা আমি পেতাম।” সুবহানাল্লাহ! (আল ইছাবাহ)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূুরুস সালাম মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জবান মুবারক-এ) এই কথা মুবারক শুনে অন্যান্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা একে অপরের দিকে তাকান। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

وَاللهِ اِنَّـهَا لَصَادِقَةٌ

অর্থ: “যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! নিশ্চয়ই তিনি চরম সত্যবাদী।” সুবহানাল্লাহ! (আল ইছাবাহ)

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনাকে অত্যন্ত সম্মানিত মুহব্বত মুবারক করতেন এবং উনাকে সবসময় সন্তুষ্ট রাখতেন। সুবহানাল্লাহ! একবার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে কোন এক সম্মানিত সফর মুবারক-এ ছিলেন। সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে আরো কয়েকজন ছিলেন। ঘটনাক্রমে পথিমধ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনার উট মুুবারকটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। এটা দেখে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রবাহিত করতে থাকেন (কান্না মুবারক করতে থাকেন।) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিষয়টি জানতে পেরে নিজে উনার নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তাশরীফ মুবারক রাখেন। 

فَجَعَلَ يـَمْسَحُ دُمُوْعَهَا بِيَدِهِ وَجَعَلَتْ تَزْدَادُ بُكَاءً وَهُوَ يَنْهَاهَا فَنَزَلَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالنَّاسِ

অর্থ: “তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরহ্ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক) দ্বারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুহব্বত মুবারক (সম্মানিত অশ্রু মুবারক) মুছে দিতে লাগলেন। কিন্তু এর ফলে তিনি আরো বেশি আকারে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রবাহিত করতে লাগলেন (উনার সম্মানিত কান্না মুবারক আরও বেড়ে যায়)। আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রবাহিত না করার জন্য (সম্মানিত কান্না মুবারক না করার জন্য) বলতে থাকেন। তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবাইকে নিয়ে নেমে পড়েন।” সুবহানাল্লাহ! (উসদুল গবাহ্)

সমস্ত উত্তম ছিফত মুবারক উনাদের মালিক-

হযরত ইমাম ইবনে আব্দুল বার রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,

كَانَتْ صَفِيَّةُ حَلِيْمَةً عَاقِلَةً فَاضِلَةً

অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন অত্যন্ত ধৈর্যশীলা, অত্যাধিক বুদ্ধিমতী এবং বেমেছাল মর্যাদাবান।” সুবহানাল্লাহ! (আল ইছাবাহ, ইস্তী‘য়াব)

কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,

وَكَانَتْ اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلْعَاشِرَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ صفيَّةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ) ذاتَ حِلْمٍ وَوَقَارٍ

অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি অত্যন্ত ধৈর্যশীলা এবং বেমেছাল গাম্ভির্যপূর্ণ, মর্যাদা সম্পন্না, সম্মানিতা ও সহনশীলতার অধিকারিনী ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! (ফাদ্বলু আহলিল বাইত)

কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছেন,

وَكَانَتْ شَرِيْفَةً عَاقِلَةً ذَاتَ حَسَبٍ وَجَـمَالٍ وَدِيْنٍ

অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি অত্যন্ত সম্মানিত শরাফত মুবারক উনার অধিকারিণী ছিলেন, বেমেছাল ‘আক্বলমান্দ ছিলেন, সম্মানিত বংশ মর্যাদা সম্পন্না ছিলেন, অত্যন্ত সম্মানিত সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারিণী ছিলেন এবং সম্মানিত দ্বীনদারী, পরহেযগারীতায় তিনি ছিলেন অনন্যা। সুবহানাল্লাহ! (ফাদ্বলু আহলিল বাইত)

কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছেন,

كَانَتْ مِنْ سَيِّدَاتِ النِّسَاءِ عِبَادَةً وَوَرْعاً وَزَهَادَةً وبِرًّا وَصَدَقَةً

অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত ইবাদত-বন্দেগী মুবারক উনার দিক থেকে, সম্মানিত তাক্বওয়া-পরহেযগারীর দিক থেকে, দুনিয়া থেকে বিমূখ হওয়ার দিক থেকে, সততা ও ইনসাফগারীতার দিক থেকে এবং দান খায়রাত করার বিষয়ে সমস্ত মহিলাদের থেকে সর্বশ্রেষ্ঠা ছিলেন।” সুবহানাল্লাহ! 

কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন,

ان جَارِيَةً لَهَا أَتَتْ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ فَقَالَتْ إِنَّ صَفِيَّةَ تُحِبُّ السَّبْتَ وَتَصِلُ الْيَهُودَ فَبَعَثَ إِلَيْهَا عُمَرُ فَسَأَلَهَا فَقَالَتْ أَمَّا السَّبْتُ فَإِنِّي لَمْ أُحِبَّهُ مُنْذُ أَبْدَلَنِي اللَّهُ بِهِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَأَمَّا الْيَهُودُ فَإِنّ لِي فِيهِمْ رَحِمًا وَأَنَا أَصِلُهَا ثُمَّ قَالَتْ لِلْجَارِيَةِ مَا حَمَلَكِ عَلَى مَا صَنَعْتِ قَالَتِ الشَّيْطَانُ قَالَتِ اذْهَبِي فَأَنْتِ حُرَّةٌ.

অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনার একটা দাসী ছিলো। সে একবার আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নিকট এসে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম উনার ব্যাপারে বললো যে, নিশ্চয়ই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম তিনি ইয়াওমুস সাবত তথা শনিবারকে মুহব্বত করেন এবং ইহুদীদের সাথে সম্পর্ক রাখেন। না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি এই বিষয়ে লোক মারফত উনার কাছ থেকে জানতে চাইলেন। তখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, যেদিন থেকে মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে সম্মানিত ও পবিত্র জুমু‘য়াহ শরীফ উনার দ্বারা ইয়াওমুস সাব্ত তথা শনিবারকে পরিবর্তন করে দিয়েছেন তথা যেদিন থেকে আমি সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেছি, সেদিন থেকে আমি সাবত তথা শনিবারকে মুহব্বত করি না। আর ইহুদীদের সঙ্গে যেহেতু আমার আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিলো, তাই তাদেরকে হিদায়াত দানের লক্ষ্যে আমি তাদের খোজ-খবর নিয়ে থাকি। তারপর তিনি দাসীকে জিজ্ঞেস করেন, কে তোমাকে এ ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করেছে? সে বললো, শয়তান। এটা শুনে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ‘আশিরহ্ আলাইহাস সালাম তিনি উনার দাসীকে বললেন, তুমি চলে যাও। তুমি মুক্ত। (আমি তোমাকে আযাদ করে দিলাম।)” সুবহানাল্লাহ! (আল ইছাবাহ, ইস্তী‘য়াব)


সংক্ষিপ্ত পরিচিতি মুবারক-

যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

اَلنَّبِـىُّ اَوْلـٰى بِالْمُؤْمِنِيْنَ مِنْ اَنْفُسِهِمْ وَاَزْوَاجُهۤٗ اُمَّهٰتُهُمْ.

অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন মু’মিন উনাদের নিকট উনাদের জানের চেয়ে অধিক প্রিয়, উনাদের মহাসম্মানিত পিতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযওয়াজুম মুত্বহহারাত’ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম) উনারা হচ্ছেন সমস্ত মু’মিন উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাতা আলাইহিন্নাস সালাম।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬)

হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ছিলেন মোট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৩ জন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেয়ার ধারাবাহিকক্রম মুবারক অনুযায়ী মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন ‘আছ ছালিছাহ্ ‘আশার তথা ১৩তম’। এ জন্য উনাকে ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম’ বলা হয়। তিনি সকলের মাঝে ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম’ হিসেবে মহাসম্মানিত পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! উনার মূল মহাম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসম বা নাম মুবারক হচ্ছেন ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত মাইমূনাহ্ আলাইহাস সালাম’। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার মাহবূব হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিনী। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারকই হচ্ছেন সম্মানিত ঈমান। সুবহানাল্লাহ! উনাকে সম্মানিত মুহব্বত মুবারক করা, উনার সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করা এবং উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য ফরযে আইন। সুবহানাল্লাহ! তাই উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক জানাও সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য ফরযে আইন। সুবহানাল্লাহ!


মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ ইবনে হায্ন আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ ইবনে হায্ন আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন বনূ হিলাল গোত্রের সবচেয়ে সম্মানিত ও অনুসরণীয় বিশেষ ব্যক্তিত্ব মুবারক। সুবাহনাল্লাহ! উনার সবচেয়ে বড় পরিচয় মুবারক হচ্ছেন, তিনি হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম উনার দিক থেকে ১৮তম পুরুষে যেয়ে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মিলিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! উনার ৭ম পুরুষ হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত হিলাল ইবনে ‘আমির আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত হিলাল ইবনে ‘আমির আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন আরবের প্রসিদ্ধ গোত্র ‘বনূ হিলাল’ গোত্রের মহাসম্মানিত প্রথম পুরুষ। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক অনুযায়ী উনার সম্মানিত বংশ মুবারক উনার নামকরণ মুবারক করা হয় ‘বনূ হিলাল’ হিসেবে। সুবহানাল্লাহ! এজন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে ‘আল হিলালিয়্যাহ’ বলা হয়। সুবাহনাল্লাহ! যেমন- কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,

أم المؤمنين سيدتنا حَضْرَتْ ميمونة بنت الحارث الهلالية عليها السلام

অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ ‘আশার সাইয়্যিদাতুনা হযরত মাইমূনাহ্ বিনতে হারিছ আল হিলালিয়্যাহ্ আলাইহাস সালাম।” সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/২০৮, দালাইলুন নুবুওওয়াহ্ লিল বাইহাক্বী ৭/২৮৯, সীরাতে ইবনে ইসহাক্ব ৫/২৪৭, মুসনাদে আহমদ ৬/৩২৯, আখ্বারু মাক্কাহ্ ২/২১৩, আর রওদ্বুল উন্ফ ১/৪৩১, আস সীরাতুল হালাবিয়্যাহ ২/৭৮১, ‘উয়ূনুল আছার ২/১৫৮, নিহায়াতুল ঈজায ১/৩৩৯, বাহ্জাতুল মাহাফিল ১/৩৭৯, তারীখুল খ¦মীস ২/২৯৪, মাওয়াহিবুল লাদুননিয়্যাহ্ ১/৫০৩, শারহুয যারক্বানী ৭/১৬১, শরফুল মুস্ত¡ফা শরীফ ৩/৬১, বিদায়াহ্-নিহায়াহ্ ৫/৩০০, সিমতুন নুজূম ১/৪৭০ ইত্যাদি)

হযরত ইমাম আল্লামা যারক্বানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,

الهلالية  عليها السلام نسبة إلى جدها هلال عليه السلام

অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে ‘আল হিলালিয়্যাহ’ বলা হয় উনার মহাসম্মানিত পূর্বপুরুষ সাইয়্যিদুনা হযরত হিলাল আলাইহিস সালাম উনার সাথে নিসবত করে।” সুবহানাল্লাহ! (শরহুয যারক্বানী আলাল মাওয়াহিব ৪/৪১৮)

আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার ৮ম পুরুষ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আমির ইবনে ছ’ছ‘আহ্ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক অনুযায়ী মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে ‘আল আমিরিয়্যাহ আলাইহাস সালাম’ বলা হয়। সুবহানাল্লাহ! যেমন-

কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,

أم المؤمنين سيدتنا حَضْرَتْ ميمونة بنت الحارث بن حزن الهلالية العامريّة عليها السلام

অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ ‘আশার সাইয়্যিদাতুনা হযরত মাইমূনাহ্ বিনতে হারিছ ইবনে হায্ন আল হিলালিয়্যাহ্ আল ‘আমিরিয়্যাহ্ আলাইহাস সালাম।” সুবহানাল্লাহ! (জাম‘উল ওসায়িল ফী শরহিস শামায়িল ১/২৪৯, মুন্তাহাস সূল ‘আল ওয়াসায়িলিল উছূল ২/২৫০)


মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম তিনি কে, যদিও এ বিষয়ে অনেকে অনেক ইখতিলাফ করেছেন, তবে বিশুদ্ধ কথা হচ্ছে- উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম হচ্ছেন- ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আউফ আলাইহাস সালাম।’ সুবহানাল্লাহ! তিনি ছিলেন উনার সম্প্রদায়ের মধ্যে সবচেয়ে সম্মানিতা ব্যক্তিত্বা মুবারক। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক উনার কায়িনাতে একমাত্র তিনিই সেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক যিনি দুইজন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিমাস সালাম উনাদের মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ তিনি হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার এবং  মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! এদিক থেকে তিনি ছিলেন এক অনন্য বেমেছাল শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক উনার অধিকারিণী। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুর্যূগী-সম্মান মুবারক এবং বংশীয় পবিত্রতা মুবারক কতো বেমেছাল, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ বর্ণিত রয়েছে,

التي توصف بأنها أكرم عجوز في الأرض أصهاراً. فسيدتنا  حَضْرَتْ هند بنت عوفٍ عليها السلام هذه أم كل من:

ام الؤمنين الـخامسة سيدتنا حضرت ام الـمساكيـن عليها السلام (سيدتنا حضرت زينب بنت خزيمة عليها السلام) زوج النبى صلى الله عليه وسلم

ام الؤمنين سيدتنا حضرت الثالثة عشر عليها السلام (سيدتنا حضرت مَيْمُونَة بنت الحارث عليها السلام) زوج النبى صلى الله عليه وسلم

سيدتنا  حَضْرَتْ أسماء بنت عميس الخثعمية رضي الله تعالى عنها، تزوجت من حضرت جعفر بن أبي طالب رضي الله تعالى عنه ثم تزوجها سيدنا حضرت أبي بكر الصديق  عليه السلام ثم تزوجها سيدنا حضرت علي بن أبي طالب كرم الله وجهه عليه السلام

سيدتنا حضرت سلمى بنت عميس الخثعمية رضي الله تعالي عنه زوج سيدنا حضرت حمزة بن عبد المطلب عليه السلام

أم الفضل سيدتنا  حَضْرَتْ لبابة الكبرى بنت الحارث الهلالية رضي الله تعالى عنها زوج سيدنا حضرت العباس بن عبد المطلب عليه السلام  

 سيدتنا حَضْرَتْ لبابة الصغرى بنت الحارث الهلالية رضي الله تعالى عنها أم سيدنا حضرت خالد بن الوليد رضي الله تعالى عنه

অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আওফ আলাইহাস সালাম তিনি এমন সুমহান মহাসম্মানিতা ব্যক্তিত্বা মুবারক যে, উনার সম্মানিত প্রশংসা মুবারক করা হয় এভাবে- ‘নিশ্চয়ই তিনি হচ্ছেন আত্মীয়তার দিক থেকে দুনিয়ার যমীনে সবচেয়ে সম্মানিতা মহিলা।’ সুবহানাল্লাহ! কেননা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আওফ আলাইহাস সালাম তিনি যেই সমস্ত মহাসম্মানিতা ব্যক্তিত্বা মুবারক উনাদের মহাসম্মানিতা আম্মাজান ছিলেন উনারা হচ্ছেন, 

১. মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি। যিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র যাওজাতুম মুত্বহ্হারত (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম) ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! 

২. মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি। যিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র যাওজাতুম মুত্বহ্হারত (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম) ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! 

৩. সাইয়্যিদাতুনা হযরত আসমা’ বিনতে ‘উমায়েস আল খ¦ছ‘আমিয়্যাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা। তিনি সর্বপ্রথম হযরত জা’ফর ইবনে আবী ত্বালিব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার আহলিয়াহ্ ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর (উনার সম্মানিত শাহাদাত মুবারক উনার পর) সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি উনাকে সম্মানিত শাদী মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর (উনার সম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর) ইমামুল আউওয়াল মিন আহ্লি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি উনাকে সম্মানিত শাদী মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! 

৪. সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালমা বিনতে ‘উমায়েস আল খ¦ছ‘আমিয়্যাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি। তিনি ছিলেন, সাইয়্যিদুশ শুহাদা’ সাইয়্যিদুনা হযরত হামযাহ্ ইবনে ‘আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত আহলিয়াহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহা। সুবহানাল্লাহ! 

৫. সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল ফযল লুবাবাহ্ কুবরা বিনতে হারিছ আল হিলালিয়্যাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি। তিনি ছিলেন, খ¦াতিমুল মুহাজিরীন সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আব্বাস ইবনে ‘আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিতা আহলিয়াহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহা। সুবহানাল্লাহ! 

৬. সাইয়্যিদাতুনা হযরত লুবাবাহ্ ছুগরা বিনতে হারিছ আল হিলালিয়্যাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি। তিনি ছিলেন, সাইয়্যিদুনা হযরত খ¦ালিদ ইবনে ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সম্মানিতা আম্মাজান। সুবহানাল্লাহ!

আল্লামা দিয়ার বাক্রী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিছাল শরীফ: ৯৬৬ হিজরী শরীফ) তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘তারীখুল খমীস শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেন, 

فكان يقال أكرم عجوز في الأرض أصهارا سيدتنا حضرت هند الجرشية عليها السلام لأن أصهارها رسول الله صلى الله عليه وسلم وسيدنا حضرت حمزة عليه السلام وسيدنا حضرت علي عليه السلام وسيدنا حضرت جعفر رضي الله تعالي عنه وسيدنا حضرت أبو بكر الصديق عليه السلام وسيدنا حضرت العباس عليه السلام وسيدنا حضرت شداد بن الهاد رضي الله تعالي عنه.

 অর্থ: “এ কথা প্রচলিত ছিলো যে, দুনিয়ার যমীনে আত্মীয়তার দিক থেকে সবচেয়ে সম্মানিতা মহিলা হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আওফ আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! কেননা উনার মহাসম্মানিত আত্মীয় হচ্ছেন-

১. স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!

২. সাইয়্যিদুশ শুহাদা’ সাইয়্যিদুনা হযরত হামযাহ্ ইবনে আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! 

৩. সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!

৪. সাইয়্যিদুনা হযরত জা’ফর ইবনে আবী ত্বালিব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি। সুবহানাল্লাহ!  

৫. সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!  

৬. সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!

৭. সাইয়্যিদুনা হযরত শাদ্দাদ ইবনে হাদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা ‘আনহু তিনি।” সুবহানাল্লাহ! (তারীখুল খমীস ১/২৬৭)

কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে, 

سيدتنا حضرت هند بنت عوف بن زهير بن الحارث عليها السلام التي قيل عنها إنها أكرم عجوز في الأرض أصهارا حيث إن أصهارها رسول الله صلى الله عليه وسلم وسيدنا حضرت أبو بكر الصديق عليه السلام وسيدنا حضرت حمزة عليه السلام وسيدنا حضرت العباس عليه السلام وسيدنا حضرت جعفر رضي الله تعالي عنه وسيدنا حضرت علي بن أبي طالب عليه السلام أجمعين وكان لها أيضا أصهار آخرون من المبرزين وذوي المكانة والمنزلة بين أقوامهم.

অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আউফ ইবনে যুহাইর ইবনে হারিছ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ বলা হয় যে, ‘নিশ্চয়ই তিনি হচ্ছেন আত্মীয়তার দিক থেকে দুনিয়ার যমীনে সবচেয়ে সম্মানিতা মহিলা।’ সুবহানাল্লাহ! কেননা উনার মহাসম্মানিত আত্মীয় হচ্ছেন- 

১. স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!

২. সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!

৩. সাইয়্যিদুশ শুহাদা’ সাইয়্যিদুনা হযরত হামযাহ্ ইবনে আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!

৪. সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি। 

৫. সাইয়্যিদুনা হযরত জা’ফর ইবনে আবী ত্বালিব রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু তিনি।  

৬. সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!

এছাড়াও উনার আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিলো উনাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে যাঁরা সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ, সম্মানিত ও নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাদের সাথে।” সুবহানাল্লাহ! (নিসাউন নাবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)

সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আউফ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন বনূ হিম্ইয়ার গোত্রের। সুবহানাল্লাহ! উনার ৩০ তম পূর্বপুরুষ সাইয়্যিদুনা হযরত হিম্ইয়ার ইবনে সাবা’ আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন সাইয়্যিদুনা হযরত হূদ আলাইহিস সালাম উনার বংশধর। সুবহানাল্লাহ! আর সাইয়্যিদুনা হযরত হূদ আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন সাইয়্যিদুনা হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত সাম আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বংশধর। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত হিম্ইয়ার আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক অনুযায়ী পরবর্তীতে উনার বংশ মুবারক উনার নামকরণ মুবারক করা হয় ‘বনূ হিমইয়ার’ হিসেবে। সেই দিকে নিসবত মুবারক রেখে সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আউফ আলাইহাস সালাম উনাকে ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আউফ আল হিম্ইয়ারিয়্যাহ্ আলাইহাস সালাম’ বলা হয়। সুবহানাল্লাহ! আর উনার ৮ম পুরুষ সাইয়্যিদুনা হযরত জুরাশ ইবনে আসলাম আলাইহিস সালাম উনার দিকে নিসবত করে উনাকে ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আউফ আল জুরাশিয়্যাহ্ আলাইহাস সালাম’ বলা হয়। সুবহানাল্লাহ!


মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসবনামাহ্ মুবারক

১৩ জন হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে ৬ জন ছিলেন সম্মানিত কুরাঈশ বংশীয়। ১ জন ছিলেন বনূ আসাদ বংশীয়। ২ জন ছিলেন বনূ হিলাল বংশীয়। ২ জন ছিলেন বনূ নাযীর বংশীয়। বনূ নাযীর গোত্র ছিলেন ইহুদী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। ১ জন ছিলেন বনূ মুছ্ত্বলিক্ব বংশীয় এবং ১ জন ছিলেন মিশরের বনূ ক্বিব্ত্ব বংশীয়। বনূ মুছত্বলিক্ব এবং বনূ ক্বিব্ত্ব গোত্র ছিলেন ঈসায়ী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন বনূ হিলাল বংশীয়। উনার মহাসম্মানিত পিতা হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ ইবনে হায্ন আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! তিনি উনার মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম উনার দিক থেকে ১৯তম পুরুষে যেয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মিলিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! নি¤েœ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসবনামাহ্ মুবারক উল্লেখ করা হলো-

اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ مَيْمُونَةُ بِنْتُ الْـحَارِثِ بْنِ حَزْنِ بْنِ بُـجَيْرِ بْنِ الْـهَزْمِ بْنِ رُوَيْبَةَ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ هِلَالِ بْنِ عَامِرِ بْنِ صَعْصَعَةَ بْنِ مُعَاوِيَةَ بْنِ بَكْرِ بْنِ هَوَازِنَ بْنِ مَنْصُوْرِ بْنِ عِكْرَمَةَ بْنِ خَصَفَةَ بْنِ قَيْسِ بْنِ عَيْلَانَ بْنِ مُضَرَ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ.

৩২. اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ مَيْمُوْنَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত মাইমূনাহ্ আলাইহাস সালাম। 

৩৩. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ اَلْـحَارِثُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম।

৩৪. حَزْنٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত হায্ন আলাইহিস সালাম।

৩৫. بُـجَيْرٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত বুজাইর আলাইহিস সালাম।

৩৬. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ اَلْـهَزْمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত হায্ম আলাইহিস সালাম।

৩৭. عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ رُوَيْبَةُ সাইয়্যিদুনা হযরত রুওয়াইবাহ্ আলাইহিস সালাম।

৩৮. عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ عَبْدُ اللهِ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম।

৩৯. هِلَالٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত হিলাল আলাইহিস সালাম।

৪০. عَامِرٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আমির আলাইহিস সালাম।

৪১. صَعْصَعَةُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ছ’ছ‘আহ্ আলাইহিস সালাম।

৪২. مُعَاوِيَةُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত মু‘আবিয়াহ্ আলাইহিস সালাম।

৪৩. بَكْرٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত বাক্র আলাইহিস সালাম।

৪৪. هَوَازِنُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত হাওয়াযিন আলাইহিস সালাম।

৪৫. مَنْصُوْرٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত মানছূর আলাইহিস সালাম।

৪৬. عِكْرَمَةُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘ইক্রামাহ্ আলাইহিস সালাম।

৪৭. خَصَفَةُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত খ¦ছাফাহ্ আলাইহিস সালাম।

৪৮. عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ قَيْسٌ সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বইস্ আলাইহিস সালাম।

৪৯. عَيْلَانُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আইলান আলাইহিস সালাম।

৫০. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ مُضَرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত মুদ্বর আলাইহিস সালাম।

সাইয়্যিদুনা হযরত মুদ্বর আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত পূর্বপুরুষ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর আবুল বাশার সাইয়্যিদুনা হযরত ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার পর্যন্ত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ আশার আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নসবনামাহ মুবারক হুবহু একই। সুবহানাল্লাহ! (মিরআতুল আনসাব ৫৭, ইমতা‘উল আসমা’ ৬/১৮৮, সীরাতে ইবনে হিশাম ৬/৬৩, আর রওদ্বুল উন্ফ ৪/৪২৮, তাহ্যীবু সীরতি ইবনে হিশাম ১/৪৩৯, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/১৪৪, মুখতাছারু তারীখে দিমাশ্ক্ব ৪/২৩৫, ‘উয়ূনুল আছার ২/৩৭০, মুস্তাদরকে হাকিম ৪/৩১, আস সুনানুল কুবরা লিল বাইহাক্বী ৭/৭০, আল মু’জামুল কাবীর লিত ত্ববারনী ১৭/২৩৬, আল আহাদ ওয়াল মাছানী ৫/৫৩০, আল মুন্তাখাব ১/১৮, আল মুখ্তাছারুল কাবীর ফী সীরতির রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১/১০৩, শারহুয যারক্বানী, বিদায়াহ্-নিহায়াহ্ ৫/৩১৬, তারীখুল উমাম ওয়াল মুল্ক ২/২১৪, আনসাবুল আশরাফ ১/১৯৬, আল আনসাব ১৩/৪১১, তারীখে বাগদাদ ৮/৩৪১, তারীখে ত্ববারী ১১/৬২২, ত্ববাক্বাতে খলীফাহ্ ১/৪০৪ ইত্যাদি)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিতা মাতা হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আউফ আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! তিনি ছিলেন সম্মানিত বনী হিম্ইয়ার গোত্রের। সুবহানাল্লাহ! 

তিনি হচ্ছেন-

اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ مَيْمُوْنَةُ بِنْتُ هِنْدِ بِنْتِ عَوْفِ بْنِ زُهَيْرِ بْنِ الْـحَارِثِ بْنِ حَمَاطَةَ بْنِ رَبِيْعَةَ بْنِ ذِىْ جَلِيْلِ بْنِ جُرَشِ بْنِ اَسْلَمَ بْنِ زَيْدِ بْنِ الْغَوْثِ بْنِ سَعْدِ بْنِ عَوْفِ بْنِ عَدِىِّ بْنِ مَالِكِ بْنِ زَيْدِ بْنِ سَهْلِ بْنِ عَمْرِو بْنِ قَيْسِ بْنِ مُعَاوِيَةَ بْنِ جُشَمِ بْنِ عَبْدِ شَـمْسِ بْنِ وَائِلِ بْنِ الْغَوْثِ بْنِ قَطَنِ بْنِ غَرِيْبِ بْنِ زُهَيْرِ بْنِ اَيْـمَنَ بْنِ الْـهَمَيْسَعِ بْنِ حِمْيَرِ بْنِ سَبَاَ بْنِ يَشْجُبَ بْنِ يَعْرُبَ بْنِ قَحْطَانَ بْنِ هُوْدِ النَّبِــىِّ بْنِ شَالَـخِ بْنِ اَرْفَخْشَذَ بْنِ سَامِ بْنِ نُوْحِ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ.

৫১.  اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ مَيْمُوْنَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত মাইমূনাহ্ আলাইহাস সালাম। 

৫২. سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ هِنْدٌ عَلَيْهَا السَّلَامُ সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ আলাইহাস সালাম।

৫৩. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ عَوْفٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আউফ আলাইহিস সালাম।

৫৪. زُهَيْرٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত যুহাইর আলাইহিস সালাম।

৫৫. اَلْـحَارِثُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত হারিছ আলাইহিস সালাম।

৫৬. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ حَمَاطَةُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত হামাত্বহ্ আলাইহিস সালাম।

৫৭. رَبِيْعَةُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত রবী‘আহ্ আলাইহিস সালাম।

৫৮. ذُوْ جَلِيْلٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত যূ জালীল আলাইহিস সালাম।

৫৯. جُرَشٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত জুরাশ আলাইহিস সালাম।

৬০. اَسْلَمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত আসলাম আলাইহিস সালাম।

৬১. زَيْدٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত যায়েদ আলাইহিস সালাম।

৬২. اَلْغَوْثُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত গ¦ওছ্ আলাইহিস সালাম।

৬৩. سَعْدٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত সা’দ আলাইহিস সালাম।

৬৪. عَوْفٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আউফ আলাইহিস সালাম।

৬৫. عَدِىٌّ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আদী আলাইহিস সালাম।

৬৬. مَالِكٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত মালিক আলাইহিস সালাম।

৬৭. عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ زَيْدٌ সাইয়্যিদুনা হযরত যায়েদ আলাইহিস সালাম।

৬৮. سَهْلٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত সাহ্ল আলাইহিস সালাম।

৬৯. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ عَمْرٌو عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আমর আলাইহিস সালাম।

৭০. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ قَيْسٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বইস্ আলাইহিস সালাম।

৭১. مُعَاوِيَةُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত মু‘আবিয়াহ্ আলাইহিস সালাম।

৭২. جُشَمٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত জুশাম আলাইহিস সালাম।

৭৩. عَبْدُ شَـمْسٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আবদু শাম্স আলাইহিস সালাম।

৭৪. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ وَائِلٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ওয়াইল আলাইহিস সালাম।

৭৫. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ اَلْغَوْثُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত গ¦ওছ্ আলাইহিস সালাম।

৭৬. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ قَطَنٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বত্বন্ আলাইহিস সালাম।

৭৭. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ غَرِيْبٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত গ¦রীব আলাইহিস সালাম।

৭৮. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ زُهَيْرٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত যুহাইর আলাইহিস সালাম।

৭৯. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ اَيْـمَنُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত আইমান আলাইহিস সালাম।

৮০. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ اَلْـهَمَيْسَعُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত আল হামাইসা’ আলাইহিস সালাম।

৮১. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ حِمْيَرٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত হিম্ইয়ার আলাইহিস সালাম।

৮২. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ سَبَاُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত সাবা’ আলাইহিস সালাম।

৮৩. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ يَشْجُبُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ইয়াশ্জুব আলাইহিস সালাম।

৮৪. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ يَعْرُبُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ইয়া’রুব আলাইহিস সালাম।

৮৫. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ قَحْطَانُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বহ্ত্বান আলাইহিস সালাম।

৮৬. هُوْدٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত হূদ আলাইহিস সালাম।

৮৭. شَالَـخٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত শালাখ আলাইহিস সালাম।

৮৮. اَرْفَخْشَذُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত আরফাখ্শায আলাইহিস সালাম।

৮৯. سَامٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত সাম আলাইহিস সালাম।

৯০. نُوْحٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত নূহ আলাইহিস সালাম।

(মাক্বাতিলুত্ব ত্বালিবিয়্যীন, মাস‘ঊদী, ত্ববারী, শারহুয যারক্বানী, আল ইস্তী‘য়াব, ইবনে হিশাম, আর রওদ্বুল উন্ফ, ‘উয়ূনুল আছার, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ, আল আনসাব, জমহুরাতুল আনসাব, আল মুন্তাখ¦ব ইত্যাদি)

কেউ কেউ উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিতা মাতা সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আউফ আলাইহাস সালাম উনাকে বনী কেনানাহ গোত্রের বলেছেন। সে হিসেবে উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান উনার দিক থেকে ১৪তম পুরুষ হয়ে ১৫ তম পুরুষে যেয়ে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মিলিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!


মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিতা আখাওয়াত বা বোন আলাইহিন্নাস সালাম

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনারা ছিলেন মোট ১২ বোন। সুবহানাল্লাহ! উনারা হচ্ছেন-

১. মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!

২. সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল ফযল লুবাবাহ্ কুবরা বিনতে হারিছ আল হিলালিয়্যাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি। তিনি ছিলেন খ¦াতিমুল মুহাজিরীন সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আব্বাস ইবনে ‘আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিতা আহলিয়াহ্। সুবহানাল্লাহ! (এক) সাইয়্যিদুনা হযরত ফযল ইবনে আব্বাস  রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি, (দুই) সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ‘আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি, (তিন) সাইয়্যিদুনা হযরত ‘উবাইদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি, (চার) সাইয়্যিদুনা হযরত মা’বাদ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি, (পাঁচ) সাইয়্যিদুনা হযরত কুছাম ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এবং (ছয়) সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুর রহমান ইবনে ‘আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি অর্থাৎ উনারা প্রত্যেকেই ছিলেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল ফযল লুবাবাহ্ কুবরা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা উনার সম্মানিত আওলাদ। সুবহানাল্লাহ!

৩. সাইয়্যিদাতুনা হযরত লুবাবাহ্ ছুগরা বিনতে হারিছ আল হিলালিয়্যাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি। সুবহানাল্লাহ! তিনি ছিলেন হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সম্মানিতা আম্মাজান। সুবহানাল্লাহ!

৪. সাইয়্যিদাতুনা হযরত ‘আছমা বিনতে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা। কেউ কেউ বলেছেন, তিনিই হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত লুবাবাহ্ ছুগরা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা।

৫. উম্মু হুফাইদ সাইয়্যিদাতুনা হযরত হুযাইলাহ্ বিনতে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা। 

৬. উম্মু যিয়াদ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ‘আয্যাহ্ বিনতে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা। এবং

৭. সাইয়্যিদাতুনা হযরত র্বাযাহ্ বিনতে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা। উনার সম্মানিত আওলাদ হচ্ছেন হযরত ইয়াযীদ ইবনে আছাম্ম রহমতুল্লাহি আলাইহি।

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি এবং উপরে বর্ণিত ৬ জন উনারা হচ্ছেন সহোদর বা আপন বোন। সুবহানাল্লাহ! এ হিসেবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনিসহ উনারা মোট ৭ জন হচ্ছেন আপন বোন। সুবহানাল্লাহ! তবে কেউ কেউ এর ব্যতিক্রমও বলেছেন।

আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার বৈপিত্রেয় বোন হচ্ছেন-

১. মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম (সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব বিনতে খুযাইমাহ্ আলাইহাস সালাম) তিনি। সুবহানাল্লাহ!

কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,  

قَالَ حضرت اَبُو الحسن علي بْن عبد العزيز الجرجاني النسابة رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ كانت ام الؤمنين الـخامسة سيدتنا حضرت ام الـمساكيـن عليها السلام (سيدتنا حضرت زينب بنت خزيمة عليها السلام) اخت ام الؤمنين سيدتنا حضرت الثالثة عشر عليها السلام (سيدتنا حضرت مَيْمُونَة بنت الحارث عليها السلام) لامها 

অর্থ: “বিশিষ্ট নসববীদ হযরত ইমাম আবুল হাসান আলী ইবনে আব্দুল আযীয জুরজানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল খ¦মিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিতা বৈপিত্রেয় বোন। অর্থাৎ মায়ের দিক থেকে বোন।” সুবহানাল্লাহ! (আল ইস্তি‘য়াব ৪/১৮৫৩, আল বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ্ ৪/১১০, তারীখুল খমীস ১/২৬৬, শারহুয যারক্বানী ‘আলাল মাওয়াহিব ৪/২১৬ ইত্যাদি)

২. সাইয়্যিদাতুনা হযরত আসমা’ বিনতে ‘উমায়েস আল খ¦ছ‘আমিয়্যাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি। তিনি সর্বপ্রথম হযরত জা’ফর ইবনে আবী ত্বালিব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার আহলিয়াহ্ ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! তখন সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে জা’ফর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি, সাইয়্যিদুনা হযরত মুহম্মদ ইবনে জা’ফর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আওন ইবনে জা’ফর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি অর্থাৎ উনারা ৩ জন সম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর (উনার সম্মানিত শাহাদাত মুবারক উনার পর) সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি উনাকে সম্মানিত শাদী মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন সাইয়্যিদুনা হযরত মুহম্মদ ইবনে আবূ বকর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর (উনার সম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর) ইমামুল আউওয়াল মিন আহ্লি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি উনাকে সম্মানিত শাদী মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ইয়াহ্ইয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আওন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারা সম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!

৩. সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালমা বিনতে ‘উমায়েস আল খ¦ছ‘আমিয়্যাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি। তিনি সর্বপ্রথম সাইয়্যিদুশ শুহাদা’ সাইয়্যিদুনা হযরত হামযাহ্ ইবনে ‘আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত আহলিয়াহ্ ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আমাতুল্লাহ বিনতে হামায্হ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি সম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত সাইয়্যিদুশ শুহাদা’ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশের পর সাইয়্যিদুনা হযরত শাদ্দাদ ইবনে হাদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি উনাকে সম্মানিত শাদী মুবারক করেন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে শাদ্দাদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুর রহমান ইবনে শাদ্দাদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি অর্থাৎ উনারা ২ জন সম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!

৪. সাইয়্যিদাতুনা হযরত সালামাহ্ বিনতে ‘উমাইস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি।

৫. সাইয়্যিদাতুনা হযরত সুলাইমা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি (কারো কারো মতে)। সুবহানাল্লাহ! সে হিসেবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিতা বৈপিত্রেয় বোন উনারা ৫ জন। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনিসহ উনারা ছিলেন মোট ১২ বোন। সুবহানাল্লাহ! উনাদের প্রত্যেকেরই আম্মাজান ছিলেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত হিন্দ বিনতে ‘আউফ আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! 


সম্মানিত ভাই

স্বাভাবিকভাবে কিতাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার দুইজন সম্মানিত ভাই উনাদের বর্ণনা পাওয়া যায়। সুবহানাল্লাহ! উনারা হচ্ছেন- 

১. সাইয়্যিদুনা হযরত সায়িব ইবনে হারিছ ইবনে হায্ন রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি। সাইয়্যিদুনা হযরত খ¦াতিমুল মুহাজিরীন আলাইহিস সালাম (সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম) তিনি উনার সম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ফার‘আহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা উনাকে সাইয়্যিদুনা হযরত সায়িব ইবনে হারিছ ইবনে হায্ন রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার নিকট সম্মানিত শাদী মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ! 

২. সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বত্বান ইবনে হারিছ ইবনে হায্ন রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি। সুবহানাল্লাহ!

উনারা দু’জন হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আপন ভাই। সুবহানাল্লাহ!


মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ:

পৃথিবীর কোনো কিতাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের মহাসম্মানিত তারীখ মুবারক উল্লেখ নেই। এটা মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত আফসোসের বিষয় যে, মুসলমানরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের মহাসম্মানিত তারীখ মুবারক সংরক্ষণ করতে পারেনি। না‘ঊযুবিল্লাহ!

উল্লেখ্য যে, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি হচ্ছেন একমাত্র যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মাহবূব হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ মহাসম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে, আখাছ্ছুল খাছভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সাথে উনার রয়েছেন বেমেছাল হাক্বীক্বী দায়িমী তা‘য়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক এবং যিয়ারত মুবারক। সুবহানাল্লাহ! যার কারণে একমাত্র উনার পক্ষেই সম্ভব হয়েছে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের, আখাছ্ছুল খাছভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মহাম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের মহাসম্মানিত তারীখ মুবারক এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হওয়ার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তারীখ মুবারকসমূহ প্রকাশ করা। সুবহানাল্লাহ! 

আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন যে, “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের ৩১ বছর পূর্বে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৩রা রজবুল হারাম শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ) বনূ হিলাল গোত্রে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন।” সুবহানাল্লাহ!


সম্মানিত লক্বব মুবারক

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, 

وَلِلّٰهِ الْاَسْـمَاءُ الْـحُسْنٰـى فَادْعُوْهُ بِـهَا.

অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক উনার অনেক সুন্দর সুন্দর সম্মানিত নাম মুবারক তথা সম্মানিত লক্বব মুবারক রয়েছেন, তোমরা সেই সম্মানিত নাম মুবারক তথা সম্মানিত লক্বব মুবারক দ্বারা উনাকে আহ্বান মুবারক করো।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা আ’রাফ শরীফ: সম্মানিত আয়াত শরীফ ১৮০) 

মহান আল্লাহ পাক তিনি যেমন অসীম, ঠিক তেমনিভাবে উনার সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের সংখ্যাও অসীম। সুবহানাল্লাহ! অনুরূপভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পরিপূর্ণ ক্বায়িম মাক্বাম হওয়ার কারণে উনার সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের সংখ্যাও অসংখ্য-অগণিত। সুবহানাল্লাহ! এক কথায় তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন; এছাড়া সমস্ত সম্মানিত লক্বব মুবারক উনার অধিকারী। সুবহানাল্লাহ! ঠিক একইভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সরাসরি সংশ্লিষ্ট এবং সম্পৃক্ত হওয়ার কারণে তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন আলাইহাস সালাম হওয়ার কারণে উনার সম্মানিত লক্বব মুবারক উনার সংখ্যাও অসংখ্য-অগণিত। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া যত সম্মানিত লক্বব মুবারক রয়েছেন, সমস্ত সম্মানিত লক্বব মুবারক উনাদের অধিকারিণী। সুবহানাল্লাহ!

 এখানে উনার কতিপয় মহাসম্মানিত মহাপবিত্র বরকতময় লক্বব মুবারক উল্লেখ করা হলো:

১. اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ عَلَيْهَا السَّلَامُ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম) একমাত্র যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাতা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!

২. اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ اَلثَّالِثَةُ عَشَرَ عَلَيْهَا السَّلَامُ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম) সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেয়ার ধারাবাহিকক্রম মুবারক অনুযায়ী মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন ‘আছ ছালিছাহ্ ‘আশার তথা ১৩তম’। এ জন্য উনাকে ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম’ বলা হয়। সুবহানাল্লাহ!

৩. اَهْلُ بَيْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ(আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ! 

৪. سَيِّدَةُ النِّسَاءِ عَلَى الْعَالَمِيْنَ (সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন) সারা কায়িনাতে যত মহিলা রয়েছেন উনাদের প্রত্যেকের সাইয়্যিদাহ্। সুবহানাল্লাহ!

৫. سَيِّدَةُ نِسَاءِ اَهْلِ الْجَنَّةِ (সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ) জান্নাতবাসী সমস্ত মহিলাগণ উনাদের সাইয়্যিদাহ। সুবহানাল্লাহ!

৬. اٰيَةُ اللهِ (আয়াতুল্লাহ) মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত নিদর্শন মুবারক। 

৭. اَلْبُشْرٰى (আল বুশরা) সম্মানিত সুসংবাদ মুবারক, সম্মানিত সুসংবাদ মুবারক দানকারিণী।

৮. جَامِعةُ النِّعْمَةِ وَالنِّسْبَةِ (জামি‘য়াতুন নি’মাতি ওয়ান নিসবাহ) সমস্ত সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক ও নিবসত মুবারক উনাদের মালিকাহ, সমস্ত সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক ও নিবসত মুবারক দানকারিণী।

৯. اَلْـحَافِظَةُ (আল হাফিযাহ) সর্বোত্তম হিফাযতকারিণী, সর্বশ্রেষ্ঠ সংরক্ষণকারিণী। 

১০. اَلْـحَامِدَةُ (আল হামিদাহ) সর্বোত্তম প্রশংসাকারিণী। 

১১. حَبِيْبَةُ اللهِ (হাবীবাতুল্লাহ) মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীবাহ্।

১২. اَلْـحَلِيْمَةُ (আল হালীমাহ) পরম ধৈর্যশীলা, মহাসহনশীলা।

১৩. اَلْـخَالِصَةُ (আল খ¦ালিছাহ) খালিছাহ, পূত-পবিত্রা, পবিত্রতা দানকারিণী।

১৪. اَلْـخَبِيْرَةُ (আল খ¦বীরাহ) মহাবিচক্ষণা।

১৫. اَلْـخَلِيْلَةُ (আল খ¦লীলাহ) আখাছ্ছুল খাছ মাহবূবাহ।

১৬. خَلِيْلَةُ الرَّحْـمٰنِ (খ¦লীলাতুর রহমান) মহান আল্লাহ উনার আখাছ্ছুল খাছ মাহবূবাহ।

১৭. اَلذَّاكِرَةُ (আয যাকিরাহ) সর্বোত্তম যিকিরকারিণী।

১৮. ذِكْرُ اللهِ (যিক্রুল্লাহ) মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত যিকির মুবারক। অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি নিজেই যিকরুল্লাহ। সুবহানাল্লাহ!

১৯. ذَاتُ الْـخلق العظيم (যাতুল খুলুক্বিল আযীম) সর্বোত্তম সুমহান চরিত্র মুবারক উনার অধিকারিণী। 

২০. ذَاتُ السَّكِيْنَةِ (যাতুস সাকীনাহ) সাকীনাহ, শান্তি, প্রশান্তি, ইতমিনান মুবারক উনাদের মালিকাহ।

২১. ذَاتُ الْعِزَّةِ (যাতুল ‘ইযযাহ) সম্মানিত ইজ্জত মুবারক উনার মালিকাহ।

২২. ذَاتُ الْفَضْلِ (যাতুল ফাদ্বল) সম্মানিত ফযল মুবারক উনার মালিকাহ।

২৩. اَلرَّافِعَةُ (আর রাফি‘য়াহ) সুউচ্চ মর্যাদা-মর্তবা মুবারক উনার অধিকারিণী এবং সুউচ্চ মর্যাদা-মর্তবা মুবারক দানকারিণী।

২৪. رَحْـمَةُ الْاُمَّةِ (রহমাতুল উম্মাহ) সমস্ত উম্মতের জন্য সম্মানিত রহমত মুবারক।

২৫. لِّـلْـعَـالَـمِيْنَ رَحْـمَة (রহমাতুল্লিল ‘আলামীন) সমস্ত আলমের জন্য সম্মানিত রহমত মুবারক।

২৬. رَفِيْقَةُ اللهِ (রফীক্বতুল্লাহ) মহান আল্লাহ পাক উনার রফীক্বাহ, হাবীবাহ। 

২৭. رَفِيْعَةُ الدَّرَجَاتِ (রফী‘য়াতুদ দারাজাত) সকল সুউচ্চ সুমহান মর্যাদা-মর্তাবা ও মাক্বামাত মুবারক উনাদের মালিকাহ।

২৮. اَلزَّاهِدَةُ (আয যাহিদাহ) দুনিয়াবিরাগিণী, মহান আল্লাহ পাক উনার দিকে দায়িমীভাবে রুজু, মহান আল্লাহ পাক উনার দিকে দায়িমীভাবে রুজু করানে ওয়ালা। 

২৯. اَلـزَّكِـيَّةُ (আঝ ঝাকিয়্যাহ) পূত-পবিত্রা, মহাবিচক্ষণা।

৩০. اَلسَّابِقَةُ بِالْـخَيْرَاتِ (আস সাবিক্বাতু বিল খইরাত) খইর, কল্যাণ, ভালাই ইত্যাদি সর্ববিষয়ে অগ্রগামিণী।

৩১. اَلسَّاجِدَةُ (আস সাজিদাহ) সর্বোত্তম সিজদাকারিণী। 

৩২. اَلسَّخِىَّةُ(আস সাখি¦য়্যাহ) মহাদানশীলা।

৩৩. سَعِيْدَةُ (আস সাঈদাহ) সর্বশ্রেষ্ঠ সুখী, সর্বশ্রেষ্ঠ নেকবখ্ত, সৌভাগ্যবান। 

৩৪. اَلسَّلَامُ (আস সালাম) সর্বশ্রেষ্ঠ শান্তিদাতা। 

৩৫. اَلسَيِّدَةُ (আস সাইয়্যিদাহ) সাইয়্যিদাহ, সর্বশ্রেষ্ঠা।

৩৬. سَيِّدَةُ الثَّقَلَيْنِ (সাইয়্যিদাতুছ ছাক্বলাইন) দুই প্রধান সৃষ্টিজীব- জিন ও ইনসানের সাইয়্যিদাহ। 

৩৭. سَـيِّـدَةُ الْكَوْنَيْنِ (সাইয়্যিদাতুল কাওনাঈন) দুই জগতের সাইয়্যিদাহ।

৩৮. اَلشَّافِعَةُ (আশ শাফি‘য়াহ) সর্বোত্তম সুপারিশকারিণী, সর্বশ্রেষ্ঠ শাফা‘য়াতকারিণী।

৩৯. اَلشَّافِـيَةُ (আশ শাফিয়াহ) শিফাদানকারিণী, আরোগ্যদানকারিণী, সমস্ত উম্মতের জন্য যাহিরী-বাতিনী আরোগ্যদানকারিণী।

৪০. اَلشَّاكِرَةُ (আশ শাকিরাহ) যথার্থ পুরস্কারদানকারিণী, যথাযথ শুকরিয়া আদায়কারিণী।

৪১. اَلشَّاهِدَةُ (আশ শাহিদাহ) উপস্থিত, হাযির-নাযির, সাক্ষ্যদানকারিণী।

৪২. اَلشَّرِيْفَةُ (আশ শারীফাহ) সর্বোচ্চ শরীফ, সর্বোচ্চ মর্যাদাবান, সর্বোচ্চ সম্ভ্রান্তশীলা।

৪৩. اَلصَّابِرَةُ (আছ ছাবিরহ) চরম ধৈর্যশীলা।

৪৪. اَلصَّاحِبَةُ (আছ ছাহিবাহ) মালিকাহ, অধিকারিণী।

৪৫. صَاحِبَةُ الشَّفَاعَةِ (ছাহিবাতুশ শাফা‘আহ) সম্মানিত শাফায়াত মুবারক উনার মালিকাহ।

৪৬. صَاحِبَةُ الْفَضِيْلَةِ (ছাহিবাতুল ফাদ্বীলাহ) সম্মানিত ফযীলত মুবারক উনার মালিকাহ।

৪৭. صَاحِبَةُ الْـخَيْرِ (ছাহিবাতুল খইর) সমস্ত কল্যাণ মুবারক উনাদের মালিকাহ।

৪৮. صَاحِبَةُ الْكَوْثَرِ (ছাহিবাতুল কাওছার) সম্মানিত কাওছার মুবারক উনার মালিকাহ, সম্মানিত খাইরে কাছীর মুবারক তথা সমস্ত সম্মানিত ভালাই বা কল্যাণ মুবারক উনাদের মালিকাহ।

৪৯. صَاحِبَةُ الدَّرَجَةِ الْعَالِيَةِ الرَّفِيْعَةِ (ছাহিবাতুদ দারাজাতিল ‘আলিয়াতির রফী‘য়াহ) সুউচ্চ সুমহান সম্মানিত দারাজাত তথা সম্মান ও মাক্বামাত মুবারক উনার মালিকাহ।

৫০. اَلطَّاهِرَةُ (আত্ব ত্বাহিরাহ) পূত-পবিত্রা, পূত-পবিত্রতাদানকারিণী।

৫১. اَلظَّاهِرَةُ (আয যাহিরাহ) অত্যন্ত সুস্পষ্ট, উজ্জ্বল, সুউচ্চ মর্যাদাবান, সর্বশ্রেষ্ঠ বিজয়িনী।

৫২. اَلْعَادِلَةُ (আল ‘আদিলাহ) চরম ন্যায়বিচারকারিণী, চরম ন্যায়পরায়ণা।

৫৩. اَلْعَارِفَةُ (আল ‘আরিফাহ) পরিচিত, অবহিত, জ্ঞাত। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার হাক্বীক্বী সম্মানিত পরিচয় মুবারক লাভকারিণী, মহান আল্লাহ পাক উনার হাক্বীক্বী সম্মানিত পরিচয় মুবারক দানকারিণী।

৫৪. اَلْعَافِـيَةُ (আল ‘আফিয়াহ) মাফকারিণী, ক্ষমাকারিণী।

৫৫. اَلْعَالِـمَةُ (আল ‘আলিমাহ) ‘আলিমাহ, মহাজ্ঞানী।

৫৬. اَلْعَلِيْمَةُ (আল ‘আলীমাহ) ‘আলীমাহ, সর্বজ্ঞাত।

৫৭. اَلْعَزِيْزَةُ (আল ‘আযীযাহ) মাহবূবাহ, মহাসম্মানিতা, বেমেছাল মর্যাদা-মর্তবা ও প্রভাব-প্রতিপত্তি মুবারক উনার অধিকারিণী, মালিকাহ।

৫৮. اَلْعَلِـيَّةُ (আল ‘আলিয়্যাহ) সুউচ্চ, মহামর্যাদাবান, মহাসম্মানিতা।

৫৯. اَلْغَالِبَةُ (আল গ¦ালিবাহ) গ¦ালিবাহ, মহাবিজয়িনী, সর্বাধিক প্রাধান্য বিস্তারকারিণী।

৬০. اَلْغَنِيَّةُ (আল গ¦নিয়্যাহ) মহাসম্পদশালিনী, মহাধনী, অমুখাপেক্ষী, বেনিয়াজ।

৬১. اَلْفَاضِلَةُ (আল ফাদ্বিলাহ) মহাসম্মানিতা, সুউচ্চ মর্যাদা-মর্তবা মুবারক উনার অধিকারিণী, সর্বশ্রেষ্ঠা, সর্বসেরা।

৬২. اَلْفَائِقَةُ (আল ফায়িক্বাহ) সর্বশ্রেষ্ঠা, অনন্যা।

৬৩. اَلْفَارِقَةُ (আল ফারিক্বাহ) হক্ব ও নাহক্বের মাঝে পার্থক্যকারিণী।

৬৪. اَلْفَصِيْحَةُ (আল ফাছীহাহ) সুভাষিণী, বিশুদ্ধভাষিণী।

৬৫. اَلْقَاسِمَةُ (আল ক্বাসিমাহ) বণ্টনকারিণী।

৬৬. اَلْقَائِدَةُ (আল ক্বায়িদাহ) সাইয়্যিদাহ, মহানপরিচালিকা, সম্মানিত হিদায়াত উনার পথে পরিচালনাকারিণী।

৬৭. قَائِدَةُ الْـخَيْرِ (ক্বায়িদাতুল খইর) কল্যাণের দিকে পরিচালনাকারিণী, যিনি সবাইকে কল্যাণের দিকে নিয়ে যান।

৬৮. قَائِدَةُ اللهِ (ক্বায়িদাতু ইলাল্লাহ) মহান আল্লাহ পাক উনার  দিকে পরিচালনাকারিণী, যিনি সবাইকে মহান আল্লাহ পাক উনার দিকে নিয়ে যান।

৬৯. قَائِدَةُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ (ক্বায়িদাতু ইলা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দিকে পরিচালনাকারিণী, যিনি সবাইকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দিকে নিয়ে যান।

৭০. اَلْقَرِيْبَةُ (আল ক্বরীবাহ) চিরনিকটবর্তী, অতি নিকটস্থ, অতি ঘনিষ্ঠ।

৭১. اَلْقَوِيَّةُ (আল ক্বওইয়াহ) সর্বশক্তিমান, মহাশক্তিধর।

৭২. اَلْكَامِلَةُ (আল কামিলাহ) পরিপূর্ণ, পরিপূর্ণতাদানকারিণী। 

৭৩. اَلْكَرِيْـمَةُ (আল কারীমাহ) মহাসম্মানিতা, মহামর্যাদাবান, মহাদানশীলা।

৭৪. اَلْمُؤْتَـمَنَةُ (আল মু’তামানাহ) চির বিশ্বস্ত, সর্বশ্রেষ্ঠা আমানাতদার, আমানতের যথাযথ হিফাযতকারিণী।

৭৫. اَلْمَأْمُوْنَةُ (আল মা’মূনাহ) নিরাপদ, চির বিশ্বস্ত, আমানদানকারী, নিরাপত্তাদানকারী।

৭৬. اَلْـمُؤْمِنَةُ (আল মু’মিনাহ) সর্বশ্রেষ্ঠা ঈমানদার, সর্বশ্রেষ্ঠা মু’মিনাহ, সম্মানিত ঈমান মুবারক দানকারিণী।

৭৭. مَأْوَى الْجِنِّ وَالْاِنْسِ (মা’ওয়াল জিন্নি ওয়াল ইন্স) জিন-ইনসানের আশ্রয়স্থল।

৭৮. اَلْمَاجِدَةُ (আল মাজিদাহ) গৌরবময়ী, মহামর্যাদাবান, মহান, গৌরবান্বিত, মর্যাদাদানকারিণী।

৭৯. اَلْمُبَاركَةُ (আল মুবারিকাহ) বরকতদানকারিণী, কল্যাণদানকারিণী।

৮০. اَلْمُبَارَكَةُ (আল মুবারকাহ) বরকতময়, কল্যাণময়।

৮১. اَلْـمُبَشِّرَةُ (আল মুবাশশিরাহ) সুসংবাদদানকারিণী। 

৮২. اَلْمُبَلِّغَةُ (আল মুবাল্লিগহ) সম্মানিত দ্বীন উনার প্রতি আহ্বানকারিণী। 

৮৩. اَلْمُتَبَسِّمَةُ (আল মুতাবাসসিমাহ) হাস্যোজ্জ্বল, যিনি মুচকি হাসি মুবারক দেন।

৮৪. اَلْمُجَاهِدَةُ (আল মুজাহিদাহ) মুজাহিদাহ, জেহাদকারিণী।

৮৫. اَلْمُجِيْبَةُ (আল মুজীবাহ) জবাবদানকারিণী, সাড়াদানকারিণী, কবুলকারিণী। 

৮৬. اَلْمَجِيْدَةُ (আল মাজীদাহ) মহামর্যাদাবান, মহীয়ান, গৌরবান্বিত, গৌরবময়ী।

৮৭. اَلْمَحْمُوْدَةُ (আল মাহমূদাহ) চরম প্রশংসিত।

৮৮. اَلْمُخْتَارَةُ (আল মুখ¦তারহ) মনোনীত, সর্বশ্রেষ্ঠা, শ্রেষ্ঠত্বদানকারিণী। 

৮৯. اَلْمُخْتَصَّةُ (আল মুখতাচ্ছাহ) বিশেষ ব্যক্তিত্বা মুবারক, আখাছ্ছুল খাছ ব্যক্তিত্বা মুবারক।

৯০. اَلْـمَخْصُوْصَةُ بِالعِزَّةِ (আল মাখ¦ছূছাতু বিল ‘ইজ্জাহ) বিশেষ সম্মান-ইজ্জত মুবারক উনার অধিকারিণী, আখাছ্ছুল খাছ সম্মান-ইজ্জত, মর্যাদা-মর্তবা মুবারক উনাদের মালিকাহ। 

৯১. اَلْـمُرْشِدَةُ (আল মুরশিদাহ) সৎ পথ প্রদর্শনকারিণী, হিদায়াতদানকারিণী।

৯২. اَلْـمُزَكِّيَةُ (আল মুযাক্কিয়াহ) তাযকিয়াদানকারিণী, পবিত্রতাদানকারিণী।

৯৩. اَلْـمُسْتَجِيْبَةُ (আল মুস্তাজীবাহ) সাড়াদানকারিণী, জবাবদানকারিণী।

৯৪. اَلْمُسْتَفِيْضَةُ (আল মুস্তাফীযাহ) ফয়েযদানকারিণী, নূর মুবারক দানকারিনী।

৯৫. اَلْمُسْتَقِيْمَةُ (আল মুস্তাক্বীমাহ) সরল, সঠিক, ইস্তিকামত রাখনে ওয়ালা।

৯৬. اَلْمَسْعُوْدَةُ (আল মাস‘ঊদাহ) সৌভাগ্যশীলা, সর্বশ্রেষ্ঠা ভাগ্যবান, সৌভাগ্যদানকারিণী। 

৯৭. اَلْمَشْهُوْدَةُ (আল মাশহূদাহ) উপস্থিত, হাযির-নাযির।

৯৮. اَلْـمُشَفَّعَةُ (আল মুশাফ্ফা‘আহ) যেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক উনার সুপারিশ কবুল করা হয়। 

৯৯. اَلْمُصْلِحَةُ (আল মুছলিহাহ) ইছলাহদানকারিণী, সংশোধনকারিণী।

১০০. اَلْمُصَدِّقَةُ (আল মুছদ্দিক্বাহ) সত্যায়নকারিণী।

১০১. اَلْمُطَهَّرٌ (আল মুত্বহ্হারহ) পূত-পবিত্রা।

১০২. اَلْمُطَهِّرٌ (আল মুত্বহ্হিরহ্) পূত-পবিত্রতাদানকারিণী।

১০৩. اَلْمَعْرُوْفَةُ (আল মা’রূফাহ) পরিচিত, প্রসিদ্ধ, মশহূর।

১০৪. اَلْـمُعَزَّزَةُ (আল মু‘আয্যাযাহ) মহাসম্মানিতা, মহামর্যাদাবান, সম্মান দানকারিণী, মর্যাদা দানকারিণী।

১০৫. اَلْمَعْشُوْقَةُ (আল মা’শূক্বাহ) মা’শূক্বাহ, সকলের নিকট সর্বাধিক মাহবূবাহ।

১০৬. اَلْمُعَظَّمَةُ (আল মু’য়ায্যামাহ) মহাসম্মানিতা, মহামর্যাদাবান, সম্মান দানকারিণী, মর্যাদা দানকারিণী। 

১০৭. اَلْمُعَلِّمَةُ (আল মু‘য়াল্লিমাহ) মু‘য়াল্লিমাহ, তা’লীমদানকারিণী।

১০৮. اَلْمُعِيْنَةُ (আল মু‘ঈনাহ) সর্বশ্রেষ্ঠ সাহায্যকারিণী।

১০৯. اَلْـمُقَدِّسَةُ (আল মুক্বদ্দিসাহ) উৎসর্গকারিণী, পবিত্রতাদানকারিণী।

১১০. اَلْـمُقَدَّسَةُ (আল মুক্বাদ্দাসাহ) উৎসর্গকৃত, মহাপবিত্রা, পবিত্রতা দানকারিণী।

১১১. اَلْمُكَرَّمَةُ (আল মুর্কারমাহ) মহাসম্মানিতা, সম্মান দানকারিণী।

১১২. اَلْمَالِكَةُ (আল মালিকাহ) মালিকাহ, অধিকারিণী। 

১১৩. مَالِكَةُ الْـجَنَّةِ (মালিকাতুল জান্নাহ) সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার মালিকাহ। 

১১৪. مَالِكَةُ الْكَائِنَاتِ (মালিকাতুল কায়িনাত) সমস্ত কায়িনাতের মালিকাহ।

১১৫. مَالِكَةُ جَامِعِ النِعَمِ(মালিকাতু জামিয়িন নি‘য়াম) সমস্ত সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক উনাদের মালিকাহ।

১১৬. اَلْـمُنْتَصِرَةُ (আল মুনতাছিরহ) সর্বশ্রেষ্ঠ বিজয়িনী, মহাশক্তিধর।

১১৭. مِنّةُ اللهِ (মিন্নাতুল্লাহ) মহান আল্লাহ পক উনার সর্বশ্রেষ্ঠ অনুগ্রহ মুবারক।

১১৮. اَلْـمُنْذِرَةُ (আল মুনযিরহ) ভীতিপ্রদর্শনকারিণী, সতর্ককারিণী।

১১৯. اَلْـمُنِيْبَةُ (আল মুনীবাহ) মালিকাহ, মুনীবাহ, সমস্ত কায়িনাত যেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক উনার গোলাম।

১২০. اَلْـمُغِيْثَةُ (আল মুগীছাহ) সর্বশ্রেষ্ঠ সাহায্যকারিণী, ত্রাণকর্তা, উদ্ধারকারিণী।

১২১. اَلْـمُنِيْرَةُ (আল মুনীরহ) আলোদানকারিণী, উজ্জ্বল, নূর দানকারিণী, হিদায়াত দানকারিণী, ফয়েযদানকারিণী, সম্মানিত রহমত মুবারক দানকারিণী।

১২২. اَلْمَوْعِظَةُ (আল মাও‘িয়য¦হ) সর্বশ্রেষ্ঠ নছীহতকারিণী।

১২৩. اَلْمُهَذَّبَةُ (আল মুহায্যাবাহ) পূত-পবিত্রা, মহাপবিত্রা, পবিত্রতা দানকারিণী।

১২৪. اَلنَّاصِحَةُ (আন নাছিহাহ) সর্বশ্রেষ্ঠ নছীহতকারিণী, উপদেশদানকারিণী।

১২৫. اَلنَّاهِـيَةُ (আন নাহিয়াহ) (সম্মানিত শরী‘য়াত উনার খিলাফ সমস্ত কাজে) নিষেধকারিণী, বারণকারিণী।

১২৬. اَلنِّعْمَةُ (আল নি’মাহ) সর্বশ্রেষ্ঠ নি‘য়ামত মুবারক।

১২৭. نِعْمَةُ اللهِ (নি’মাতুল্লাহ) মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ নি‘য়ামত মুবারক।

১২৮. اَلنَّقِيْبَةُ (আন নাক্বীবাহ) সাইয়্যিদাহ।

১২৯. اَلنُّوْرُ (আন নূর) নূর মুবারক।

১৩০. اَلنُّوْرُ الْمُكَرَّمَةُ (আন নূরুল মুকাররমাহ) মহাসম্মানিত নূর মুবারক।

১৩১. اَلنُّوْرُ الْمُطَهَّرَةُ (আন নূরুল মুত্বহ্হারহ) মহাপবিত্র নূর মুবারক।

১৩২. نُوْرُ اللهِ (নূরুল্লাহ) মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত নূর মুবারক।

১৩৩. نُوْرُ الْكَائِنَاتِ (নূরুল কায়িনাত) সমস্ত কায়িনাতের জন্য নূর মুবারক, আলোকবর্তিকা।

১৩৪. اَلْـهَادِيَةُ (আল হাদিয়াহ) সর্বশ্রেষ্ঠ হিদায়াতকারিণী।

১৩৫. هَدِيَّةُ اللهِ (হাদিয়্যাতুল্লাহ) মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে মহাসম্মানিত হাদিয়া মুবারক, তোহফা মুবারক।

১৩৬. اَلْوَاسِعَةُ (আল ওয়াসি‘আহ) সীমাহীন ইলম মুবারক উনার অধিকারিণী, মহাদানশীলা।

১৩৭. اَلْوَاعِظَةُ (আল ওয়া‘য়িযহ) সর্বশ্রেষ্ঠ ওয়ায়েজ, নছীহতকারিণী, উপদেশদানকারিণী।

১৩৮. اَلْوَافِـيَةُ (আল ওয়াফীয়াহ) পরিপূর্ণ, পরিপূর্ণতাদানকারিণী। 

১৩৯. اَلْوَسِيْلَةُ (আল ওয়াসীলাহ) সর্বশ্রেষ্ঠ ওয়াসীলাহ মুবারক, সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম মুবারক।

১৪০. اَلْوَهَّابَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ (আল ওহ্হাবাহ আলাইহাস সালাম) সর্বশ্রেষ্ঠ দানশীল, সীমাহীন দানকারিণী। সুবহানাল্লাহ! 

এছাড়াও অসংখ্য-অগণিত মহাসম্মানিত বরকতময় লক্বব মুবারক উনাদের মালিকাহ হচ্ছেন মহাসম্মনিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত শৈশবকাল মুবারক

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত শৈশবকাল মুবারক উনার মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম, মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহাস সালাম উনাদের এবং উনার সম্মানিত ভাই-বোন উনাদের সাথে বনূ হিলাল গোত্রে অতিবাহিত করেন। সুবহানাল্লাহ!

 সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার সূচনালগ্নেই সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ আসার পূর্বে সম্মানিত শাদী মুবারক

অধিকাংশের মতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ আসার পূর্বে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার দুইটি শাদী মুবারক হয়। সর্বপ্রথম শাদী মুবারক হয় মাস‘ঊদ ইবনে ‘আমর ইবনে ‘উমায়ের ছাক্বাফীর সাথে। তার সাথে জুদায়ী হওয়ার পর উনার শাদী মুবারক হয় সম্মানিত কুরাইশ বংশ উনার ‘আমিরী শাখার হযরত আবূ রুহ্ম ইবনে আব্দিল উয্যা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সাথে। উনার সম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হন। সুবহানাল্লাহ! কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,

وَكَانَتْ ام الؤمنين سيدتنا حضرت الثالثة عشر عليها السلام (سيدتنا حضرت مَيْمُونَة عليها السلام) فِي الْجَاهِلِيَّةِ عِنْدَ مَسْعُودِ بْنِ عَمْرِو بْنِ عُمَيْرٍ الثَّقَفِيِّ فَفَارَقَهَا وَخَلَفَ عَلَيْهَا ام المؤمنين حضرت أَبُو رُهْمِ بْنُ عَبْدِ الْعُزَّى بْنِ أَبِي قَيْسِ بْنِ عَبْدِ وُدِّ بْنِ نَصْرِ بْنِ مَالِكِ بْنِ حِسْلِ بْنِ عَامِرِ بْنِ لُؤَيٍّ رضى الله تعالى عنه فَتُوُفِّيَ عَنْهَا فَتَزَوَّجَهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.

অর্থ: “জাহিলী যুগে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি মাস‘ঊদ ইবনে ‘আমর ইবনে ‘উমায়ের ছাক্বাফীর নিকট ছিলেন। তার থেকে জুদা হওয়ার পর উনার সম্মানিত শাদী মুবারক হয় হযরত আবূ রুহ্ম ইবনে আব্দুল উয্যা ইবনে আবূ ক্বইস ইবনে আবদে উদ্দ ইবনে নছ্র ইবনে মালিক ইবনে হিস্ল ইবনে ‘আমির ইবনে লুওয়াই ‘আমিরী কুরাইশী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সাথে। তিনি সম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার পর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (‘উয়ূনুল আছার ২/৩৭৫, জাম‘উল ওয়াসায়িল ফী শরহিস শামায়িল ২/৬৮, তালক্বীহ্ ইত্যাদি)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ

খায়বারের জিহাদ অনুষ্ঠিত হয় ৭ম হিজরী শরীফ উনার শুরুর দিকে মুহররমুল হারাম শরীফ মাসে। আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত ‘উমরাতুল কাযা আদায় করার জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেন ৭ম হিজরী শরীফ উনার শেষের দিকে শাওওয়াল শরীফ মাসে। তখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি উনার সম্মানিত বোন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল ফযল লুবাবাহ্ কুবরা বিনতে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা উনাকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার বিষয়ে আলোচনা করার জন্য বলেন। তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল ফযল লুবাবাহ্ কুবরা বিনতে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি উনার সম্মানিত আহাল সাইয়্যিদুনা হযরত খ¦াতিমুল মুহাজিরীন আলাইহিস সালাম (সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আব্বাস ইবনে ‘আব্দুল মুত্ত্বালিব) আলাইহিস সালাম উনাকে বিষয়টি জানান এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ বিষয়টি পেশ করার জন্য বলেন। সুবহানাল্লাহ! তখন সাইয়্যিদুনা হযরত খ¦াতিমুল মুহাজিরীন আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার পক্ষ থেকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার বিষয়ে প্রস্তাব মুবারক পেশ করেন। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সম্মানিত ওহী মুবারক প্রাপ্ত হয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার প্রস্তাব মুবারক কবূল করেন। সুবহানাল্লাহ!

এ প্রসঙ্গে যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

وَامْرَأَةً مُؤْمِنَةً إِنْ وَهَبَتْ نَفْسَهَا لِلنَّبِيِّ إِنْ أَرَادَ النَّبِيُّ أَنْ يَسْتَنْكِحَهَا خَالِصَةً لَكَ مِنْ دُونِ الْمُؤْمِنِينَ.

অর্থ: “যদি কোন মু’মিন মহিলা নিজেকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ পেশ করেন, তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইচ্ছা মুবারক করলে উক্ত মু’মিন মহিলা উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ করতে পারেন। এটা বিশেষ করে আপনার জন্য তথা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য খাছ। মু’মিন উনাদের জন্য নয়।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫০)

হযরত ইমাম মুহম্মদ ইবনে ইঊসুফ ছালিহী শামী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ শরীফ ১১তম খ-ের ২০৭ নং পৃষ্ঠায়’ উল্লেখ করেন, 

عن حضرت قتادة رحمة الله عليه قال تزوج رسول الله صلى الله عليه وسلم حين اعتمر بمكة ام الؤمنين سيدتنا حضرت الثالثة عشر عليها السلام (سيدتنا حضرت مَيْمُونَة بنت الحارث عليها السلام) وهبت نفسها للنبي صلى الله عليه وسلم وفيها نزلت وامرأة مؤمنة إن وهبت نفسها للنبي إن أراد النبي أن يستنكحها خالصة لك من دون المؤمنين

অর্থ: “হযরত কাতাদাহ্ রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ-এ ‘উমরাতুল কাযা আদায় করেন, তখন তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ করেন। সুবহানাল্লাহ! আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি নিজেই উনাকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ পেশ করেন। এ প্রসঙ্গে নাযিল হয়-

وَامْرَأَةً مُؤْمِنَةً إِنْ وَهَبَتْ نَفْسَهَا لِلنَّبِيِّ إِنْ أَرَادَ النَّبِيُّ أَنْ يَسْتَنْكِحَهَا خَالِصَةً لَكَ مِنْ دُونِ الْمُؤْمِنِينَ.

‘যদি কোন মু’মিন মহিলা নিজেকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ পেশ করেন, তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি তিনি ইচ্ছা মুবারক করলে উক্ত মু’মিন মহিলা উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ করতে পারেন। এটা বিশেষ করে আপনার জন্য অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য খাছ। মু’মিন উনাদের জন্য নয়।’ সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫০)

৭ম হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৬ই যিলক্বদ শরীফ লাইলাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (লাইলাতুল ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ) নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৫০ বছর ৪ মাস ১৩ দিন। সুবহানাল্লাহ! 

এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ থেকে ১০ মাইল দূরে সারিফ নামক সম্মানিত ও পবিত্র স্থান মুবারক-এ। সুবহানাল্লাহ! আর এই সম্মানিত ও পবিত্র স্থান মুবারকেই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সাথে প্রথম রাত্র মুবারক অতিবাহিত করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন যে, এই সারিফ নামক সম্মানিত ও পবিত্র স্থান মুবারকেই আপনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করবেন এবং এই সম্মানিত ও পবিত্র স্থান মুবারকেই আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ হবে। সুবহানাল্লাহ!

উল্লেখ্য যে, বিশুদ্ধ মতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত ইহ্রাম মুবারক অবস্থায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ করেন। আর সম্মানিত ইহ্রাম মুবারক থেকে হালাল হয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার অনুষ্ঠান মুবারক অনুষ্ঠিত হওয়ার পর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সাথে প্রথম রাত্র মুবারক অতিবাহিত করেন। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,

عَن حضرت ابْنِ عَبَّاسٍ رضى الله تعالى عنه أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَكَحَ ام الؤمنين سيدتنا حضرت الثالثة عشر عليها السلام (سيدتنا حضرت مَيْمُونَة عليها السلام) وَهُوَ مُحْرِمٌ وَبَنَى بِهَا حَلَالًا بِسَرِفَ وَمَاتَتْ بِسَرِفَ.

অর্থ: “হযরত ইবনে ‘আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত ইহরাম মুবারক অবস্থায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ সম্পন্ন করেন। আর সম্মানিত ইহরাম মুবারক থেকে হালাল হয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার অনুষ্ঠান মুবারক অনুষ্ঠিত হওয়ার পর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সাথে সম্মানিত ও পবিত্র সারিফ নামক স্থান মুবারক-এ প্রথম রাত্র মুবারক অতিবাহিত করেন। সুবহানাল্লাহ! আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত ও পবিত্র সারিফ নামক স্থান মুবারকেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ শরীফ ১/৩৫৯) 

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছে,

عَن حضرت ابْنِ عَبَّاسٍ رضى الله تعالى عنه قَالَ تَزَوَّجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ام الؤمنين سيدتنا حضرت الثالثة عشر عليها السلام (سيدتنا حضرت مَيْمُونَة عليها السلام) وَهُوَ مُحْرِمٌ وَبَنَى بِهَا وَهُوَ حَلاَلٌ وَمَاتَتْ بِسَرِفَ.

অর্থ: “হযরত ইবনে ‘আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত ইহ্রাম মুবারক অবস্থায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ সম্পন্ন করেন। আর সম্মানিত ইহ্রাম মুবারক থেকে হালাল হয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার অনুষ্ঠান মুবারক অনুষ্ঠিত হওয়ার পর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সাথে প্রথম রাত্র মুবারক অতিবাহিত করেন। সুবহানাল্লাহ! আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত ও পবিত্র সারিফ নামক স্থান মুবারকেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ)

ইমাম ত্ববারানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার লিখিত বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আল মু’জামুল কাবীর শরীফ’ উনার মধ্যে বর্ণনা করেন,

عَنْ حضرت أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رضى الله تعالى عنه أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَزَوَّجَ ام الؤمنين سيدتنا حضرت الثالثة عشر عليها السلام (سيدتنا حضرت مَيْمُونَة عليها السلام) بِسَرِفٍ وَبَنَى بِهَا بِسَرِفٍ وَمَاتَتْ بِسَرِفٍ.

অর্থ: “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত ও পবিত্র সারিফ নামক স্থান মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ করেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার অনুষ্ঠান মুবারক অনুষ্ঠিত হওয়ার পর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সাথে প্রথম রাত্রি মুবারক অতিবাহিত করেন এই সম্মানিত ও পবিত্র সারিফ নামক স্থান মুবারক-এ এবং এই সম্মানিত ও পবিত্র সারিফ নামক স্থান মুবারকেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (আল মু’জামুল কাবীর শরীফ)

অপর বর্ণনায় রয়েছে,

وَمَاتَتْ بِسَرِفَ وَدَفَنَّاهَا فِي الظُّلَّةِ الَّتِي بَنَى بِهَا فِيهَا.

অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত ও পবিত্র সারিফ নামক স্থান মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে ছাঁয়ায় (যে সম্মানিত ও পবিত্র স্থান মুবারক-এ) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সাথে প্রথম রাত্রি মুবারক অতিবাহিত করেন, সেখানেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত দাফন মুবারক করা হয়। অর্থাৎ সেখানেই উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ অবস্থিত।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ)

সম্মানিত মোহরানা মুবারক:

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার সম্মানিত মোহরানা মুবারক ছিলেন ৫০০ দিরহাম। সুবহানাল্লাহ!

এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,

تَزَوَّجَهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى مَهْرِ خَمْسِ مِائَةِ دِرْهَمٍ.

অর্থ: “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে ৫০০ দিরহাম মোহরানা মুবারক উনার মাধ্যমে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে সা’দ, শারহুয যারক্বানী ‘আলাল মাওয়াহিব)

সম্মানিত ওলীমা মুবারক

কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,

واولم على ام الؤمنين سيدتنا حضرت الثالثة عشر عليها السلام (سيدتنا حضرت مَيْمُونَة عليها السلام) وبنى بها بسرف.

অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত ও পবিত্র সারিফ নামক স্থান মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ওলীমাহ্ মুবারক করেন এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার পর প্রথম রাত্র মুবারক অতিবাহিত করেন।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে হাক্বা শরীফ ১/৪২১, তাফসীরে রূহুল বয়ান ১/২৫১, জামি‘উ লাত্বফিত তাফসীর ৪/২৬৫)

কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,

عَنْ حضرت أَبِي عَبْدِ اللَّهِ رحمة الله عليه قَالَ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وآله حِينَ تَزَوَّجَ ام الؤمنين سيدتنا حضرت الثالثة عشر عليها السلام (سيدتنا حضرت مَيْمُونَة عليها السلام) أَوْلَمَ عَلَيْهَا وَأَطْعَمَ النَّاسَ الْحَيْسَ.

অর্থ: “হযরত আবূ আব্দুল্লাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ করেন তখন উনার সম্মানার্থে সম্মানিত ওলীমাহ্ মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি মানুষদেরকে ‘হাইস’ নামক খাবার মুবারক খাওয়ান। সুবহানাল্লাহ! (কিতাবুল কাফী ১২/১৯৪)

অপর বর্ণনা রয়েছে,

لما وقع من البركة في وليمتها حيث أشبع المسلمين خبزا ولحما.

অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ওলীমা মুবারক-এ এতো অধিক বরকত হয় যে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা তৃপ্তিসহকারে রুটি এবং গোশত খান।” সুবহানাল্লাহ! (‘উমদাতুল ক্বারী শরহু ছহীহুল বুখারী ২৯/৩৮০)


সম্মানিত তাক্বওয়া মুবারক

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল সম্মানিত তাক্বওয়া মুবারক উনার বিষয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন,

إِنَّهَا كَانَتْ مِنْ أَتْقَانَا للهِ وَأَوْصَلِنَا لِلرَّحِمِ.

 অর্থ: “নিশ্চয়ই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি আমাদের মধ্যে মহান আল্লাহ পাক উনাকে সবচেয়ে বেশী ভয় করতেন অর্থাৎ সবচেয়ে বেশি মুত্তাক্বী ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি সবচেয়ে বেশী আত্মীয়তার সম্পর্ক অটুট রাখতেন। সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরকে হাকিম ৪/৩৪, মুসনাদে হারিছ ১/৫১৩, হিলইয়াতুল আউলিয়া ৪/৯৪, ইছাবাহ্ ৮/২৪ ইত্যাদি) 

হযরত ইবনে হাজার আসক্বালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘ইছাবাহ্’ উনার মধ্যে বলেন, ‘এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ খানা ছহীহ সনদে বর্ণিত।’ সুবহানাল্লাহ! (ইছাবাহ্ ৮/২৪)


নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে একই পাত্র মুবারক থেকে পানি নিয়ে সম্মানিত গোসল মুবারক করা-

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, 

عَنِ حضرت ابْنِ عَبَّاسٍ رضى الله تعالى عنه عَنْ ام الؤمنين سيدتنا حضرت الثالثة عشر عليها السلام (سيدتنا حضرت مَيْمُونَةَ عليها السلام) قَالَتْ كُنْتُ أَغْتَسِلُ أَنَا وَرَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ إِنَاءٍ وَاحِدٍ.

অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি (উনার মহাসম্মানিত খালা) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণনা করেন। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং আমি অর্থাৎ আমরা একই সম্মানিত পাত্র মুবারক থেকে পানি নিয়ে সম্মানিত গোসল মুবারক করতাম।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ ৪৪/৩৭৮)


হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকেসহ সমস্ত কায়িনাতবাসীকে সম্মানিত তা’লীম মুবারক দান

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা একমাত্র মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত সৃষ্টির জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদী বা হিদায়াতদানকারী

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একমাত্র যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত সমস্ত সৃষ্টির জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদী বা হিদায়াতদানকারী। আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ক্বায়িম মাক্বাম হিসেবে একমাত্র মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত সৃষ্টির জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদী বা হিদায়াতদানকারী। সুবহানাল্লাহ! এই বিষয়টি স্বয়ং যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল করে ফায়ছালা মুবারক করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে উদ্দেশ্য মুবারক করে ইরশাদ মুবারক করেন-

وَاذْكُرْنَ مَا يُــتْلـٰى فِـىْ بُــيُـوْتِكُنَّ مِنْ اٰيٰتِ اللهِ وَالْـحِكْمَةِ

অর্থ: “আপনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হুজরা শরীফসমূহে যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওহী মুবারক নাযিল হয়েছেন এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ ইরশাদ মুবারক হয়েছেন, সেগুলো থেকে আপনারা জিন-ইনসানকে, সমস্ত সৃষ্টিকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওয়াজ করুন, নছীহত করুন, তাদেরকে হিদায়াত করুন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহ্যাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৪) 

এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মাধ্যমে স্বয়ং যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাসম্মানিত হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিলাফত মুবারক দিয়েছেন, উনারা যেন জিন-ইনসানকে, সমস্ত সৃষ্টিকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওয়াজ-নছীহত মুবারক করেন, তা’লীম-তালক্বীন মুবারক দেন, তাদেরকে হিদায়াত দান করেন। সুবহানাল্লাহ! 

ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘মুসনাদে আহমদ শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেন,

عَنْ حضرت نُدبَةَ رحمة الله عليها مَوْلَاةِ ام الؤمنين سيدتنا حضرت الثالثة عشر عليها السلام (سيدتنا حضرت مَيْمُونَة عليها السلام) زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَتْ أَرْسَلَتْنِي ام الؤمنين سيدتنا حضرت الثالثة عشر عليها السلام (سيدتنا حضرت مَيْمُونَةُ بِنْتُ الْحَارِثِ عليها السلام) إِلَى امْرَأَةِ حضرت عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ رضى الله تعالى عنه وَكَانَتْ بَيْنَهُمَا قَرَابَةٌ فَرَأَيْتُ فِرَاشَهَا مُعْتَزِلًا فِرَاشَهُ فَظَنَنْتُ أَنَّ ذَلِكَ لِهِجْرَانٍ فَسَأَلْتُهَا فَقَالَتْ لَا وَلَكِنِّي حَائِضٌ فَإِذَا حِضْتُ لَمْ يَقْرَبْ فِرَاشِي فَأَتَيْتُ ام الؤمنين سيدتنا حضرت الثالثة عشر عليها السلام (سيدتنا حضرت مَيْمُونَة عليها السلام) فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لَهَا فَرَدَّتْنِي إِلَى حضرت ابْنِ عَبَّاسٍ رضى الله تعالى عنه فَقَالَتْ أَرَغْبَةً عَنْ سُنَّةِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَقَدْ كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَنَامُ مَعَ الْمَرْأَةِ مِنْ نِسَائِهِ الْحَائِضِ وَمَا بَيْنَهُمَا إِلَّا ثَوْبٌ مَا يُجَاوِزُ الرُّكْبَتَيْنِ.

অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার বাঁদী হযরত নুদ্বাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহা উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি আমাকে (উনার সম্মানিতা বোন উনার ছেলে অর্থাৎ উনার সম্মানিত ভাগিনা) সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ‘আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সম্মানিতা আহলিয়াহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহা উনার নিকট পাঠালেন। সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ‘আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার এবং উনার সম্মানিতা আহলিয়াহ্ উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের সম্পর্ক খুব গভীর ছিলো। কিন্তু আমি দেখলাম যে, উনার সম্মানিতা আহলিয়াহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহা উনার বিছনা মুবারক এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইবনে ‘আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সম্মানিত বিছানা মুবারক পৃথক পৃথক। অর্থাৎ উনারা উভয়ে পৃথক পৃথক বিছানায় শয়ন করেছেন। ফলে আমি ভাবলাম যে, নিশ্চয়ই এটা জুদায়ীর লক্ষণ। অর্থাৎ উনাদের উভয়ের মাঝে জুদায়ী ঘটতে পারে। তখন আমি উনার সম্মানিতা আহলিয়াহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহা উনাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি জবাবে বললেন যে, না। বরং আমি স্বাভাবিক মাজুরতার মধ্যে আছি। যখন আমি স্বাভাবিক মাজুরতার মধ্যে থাকি, তখন তিনি আমার বিছানার নিকটবর্তী হন না। (যার কারণে আমরা উভয়ে এখন আলাদা বিছানায় শয়ন করেছি।) তারপর আমি যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার নিকট এসে এ বিষয়টা আলোচনা করলাম। অর্থাৎ উনাকে পুরো বিষয়টা খুলে বললাম, তখন তিনি আমাকে হযরত ইবনে ‘আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা উনার নিকট পাঠালেন। (উনাকে ডেকে আনার জন্য। যখন হযরত ইবনে ‘আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা তিনি উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক আসলেন, তখন) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি (হযরত ইবনে ‘আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা উনাকে উদ্দেশ্য করে) বললেন, আপনি কি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক থেকে দূরে সড়ে গেছেন? নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তখনও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সাথে (একই সম্মানিত ও পবিত্র বিছানা মুবারক-এ) ঘুমাতেন, যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা মহাসমম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরানী শান মুবারক প্রকাশ করতেন। এই অবস্থায় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের মাঝে শুধু একটি সম্মানিত ও পবিত্র কাপড় মুবারক থাকতো, যা দুই হাটু মুবারক অতিক্রম করতো। সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ ৪৪/৪০২, আল মু’জামুল কাবীর লিত ত্ববারনী ২৪/১২)

ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত ইমাম আব্দুর রাজ্জাক্ব রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি এবং হযরত ইমাম ত্ববারানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারাসহ আরো অন্যান্য ইমাম মুজতাহিদ রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা উনাদের নিজ নিজ কিতাবে উল্লেখ করেছেন, 

عَنْ حضرت مَنْبُوذٍ رحمة الله عليه عَنْ أُمِّهِ قَالَتْ كُنْتُ عِنْدَ ام الؤمنين سيدتنا حضرت الثالثة عشر عليها السلام (سيدتنا حضرت مَيْمُونَة عليها السلام) فَأَتَاهَا حضرت ابْنُ عَبَّاسٍ رضى الله تعالى عنه فَقَالَتْ يَا بُنَيَّ مَا لَكَ شَعِثًا رَأْسُكَ قَالَ حضرت أُمُّ عَمَّارٍ رحمة الله عليها مُرَجِّلَتِي حَائِضٌ قَالَتْ أَيْ بُنَيَّ وَأَيْنَ الْحَيْضَةُ مِنَ الْيَدِ كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدْخُلُ عَلَى إِحْدَانَا وَهِيَ حَائِضٌ فَيَضَعُ رَأْسَهُ فِي حِجْرِهَا فَيَقْرَأُ الْقُرْآنَ وَهِيَ حَائِضٌ. 

অর্থ: “হযরত মানবূয রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার সম্মানিতা আম্মাজান উনার থেকে বর্ণনা করেন। উনার আম্মাজান বলেন, একদা আমি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার নিকট ছিলাম। তখন হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি উনার নিকট আসলেন। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, হে বৎস! কি ব্যাপর, আপনার মাথার চুল মুবারক এলোমেলো কেন? তিনি বলেন, হযরত উম্মু ‘আম্মার রহমাতুল্লাহি আলাইহা (আমার সম্মানিত আহলিয়াহ্) তিনি আমার চুল মুবারক পরিপাটি করে থাকেন। তিনি এখন স্বাভাবিক মাজুরতায় আছেন। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, হে বৎস! হাতে কি কিছু থাকে? আমরা যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরানী শান মুবারক-এ থাকতাম, তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদের নিকট আসতেন এবং আমাদের সম্মানিত কোল মুবারক-এ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল হুদা মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাথা মুবারক) রাখতেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত মুবারক করতেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ ৪৪/৩৯২, মুছান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক্ব ১/৩২৫, আল মু’জামুল কাবীর লিত্ব ত্বাবারানী ২৪/১৪৪, মুসনাদে হুমাইদী ১/৩১৬, মুছান্নাফে আবী শায়বাহ্ ১/১৮৪ ইত্যাদি)

বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি ছিলেন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের মধ্যে ‘রঈসুল মুফাস্সিরীন’। সুবহানাল্লাহ! উনার কাছ থেকে সমস্ত উম্মত হাদীছ, তাফসীর, ফিক্বাহসহ যাবতীয় বিষয়ে তা’লীম গ্রহণ করেছে। সুবহানাল্লাহ! আর উনাকেই তা’লীম-তালক্বীন দিয়েছেন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! তাহলে এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারাসহ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলকেই তা’লীম দান করেছেন এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারাসহ সমস্ত কায়িনাতবাসী সকলেই উনাদের থেকে সম্মানিত তা’লীম মুবারক গ্রহণ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! 

 ‘মুসলিম শরীফ’সহ আরো অন্যান্য কিতাবে উল্লেখ রয়েছে, 

عَنِ حَضْرَتْ ابْنِ عَبَّاسٍ رضى الله تعالى عنه أَنَّهُ قَالَ إِنَّ امْرَأَةً اشْتَكَتْ شَكْوَى فَقَالَتْ إِنْ شَفَانِي اللهُ لَأَخْرُجَنَّ فَلَأُصَلِّيَنَّ فِي بَيْتِ الْمَقْدِسِ فَبَرَأَتْ ثُمَّ تَجَهَّزَتْ تُرِيدُ الْخُرُوجَ فَجَاءَتْ ام الؤمنين سيدتنا حضرت الثالثة عشر عليها السلام (سيدتنا حضرت مَيْمُونَة عليها السلام) زَوْجَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تُسَلِّمُ عَلَيْهَا فَأَخْبَرَتْهَا ذَلِكَ فَقَالَتْ اجْلِسِي فَكُلِي مَا صَنَعْت وَصَلِّي فِي مَسْجِدِ الرَّسُولِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ صَلَاةٌ فِيهِ أَفْضَلُ مِنْ أَلْفِ صَلَاةٍ فِيمَا سِوَاهُ مِنَ الْمَسَاجِدِ إِلَّا مَسْجِدَ الْكَعْبَةِ.

অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার এক মহিলা অত্যন্ত অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন তিনি বলেন, যদি মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে সুস্থ করেন, তাহলে আবশ্যই আমি বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ যেয়ে নামায আদায় করবো। তারপর উক্ত মহিলা তিনি যখন আরোগ্য লাভ করেন, তখন তিনি বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ-এ যাওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। অতঃপর তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার নিকট এসে উনাকে সালাম মুবারক দিয়ে এই বিষয়ে উনাকে অবহিত করেন। তখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি উক্ত মহিলাকে বলেন, আপনি বসুন এবং আমি যা তৈরী করেছি তা খান। আর আপনি (বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ না যেয়ে) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে নববী শরীফ-এ নামায আদায় করুন। সুবহানাল্লাহ! কেনানা, নিশ্চয়ই আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইরশাদ মুবারক করতে শুনেছি, ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে নবীব শরীফ উনার মধ্যে নামায আদায় করা অন্যান্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক-এ নামায আদায় করার চেয়ে হাজার গুন শ্রেষ্ঠ এবং উত্তম। তবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে কা’বা শরীফ উনার বিষয়টি আলাদা।” সুবহানাল্লাহ! (মুসলিম শরীফ, মুসনাদে আহমদ ৪৪/৪০৮, আস সুনানুল কুবরা লিল বাইহাক্বী ১০/১৪১, জামি‘উল উছূল ১১/৫৪০, তারীখে বাগদাদ ২/১৯৯ ইত্যাদি)

এই সকল বর্ণনা থেকে স্পষ্ট হয়ে গেলো যে, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি আক্বাইদসহ যাবতীয় বিষয়ে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকেসহ সমস্ত জিন-ইনসান তামাম কায়িনাতবাসী সবাইকে তা’লীম-তালক্বীন মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি হচ্ছেন সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের মহাসম্মানিত মুয়াল্লিমাহ। সুবহানাল্লাহ! 


এরূপ আরো অসংখ্য বর্ণনা রয়েছেন। কাজেই, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হচ্ছেন একমাত্র মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদী বা হিদায়াতদানকারী। সুবহানাল্লাহ! উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দয়া-দান, ইহসান মুবারক উনাদের বদৌলতেই সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলে সম্মানিত ইলিম মুবারকসহ সমস্ত প্রকার সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক হাছিল করেছেন, করছেন এবং অনন্তকাল যাবৎ হাছিল করতেই থাকবেন। সুবহানাল্লাহ!


সম্মানিত শরীয়ত মুবারক উনার আদেশ-নিষেধের ব্যাপারে এবং সম্মানিত শরীয়ত মুবারক উনার হদসমূহ বাস্তবায়নে দৃঢ়চিত্ততা

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত শরীয়ত মুবারক উনার আদেশ-নিষেধের ব্যাপারে এবং সম্মানিত শরীয়ত মুবারক উনার হদসমূহ বাস্তবায়নে অত্যন্ত দৃঢ়চিত্ত ছিলেন। এ বিষয়ে তিনি কাউকে কোন পরওয়া করতেন না, হোক না সে উনার অতি নিকটাত্মীয়। সুবহানাল্লাহ! যেমন- এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,

قَالَ حَضْرَتْ يَزِيدُ بْنُ الأَصَمِّ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ أَنَّ ذَا قَرَابَةٍ لِام الؤمنين سيدتنا حضرت الثالثة عشر عليها السلام (سيدتنا حضرت مَيْمُونَة عليها السلام) دَخَلَ عَلَيْهَا فَوَجَدَتْ مِنْهُ رِيحَ شَرَابٍ فَقَالَتْ لَئِنْ لَمْ تَخْرُجْ إِلَى الْمُسْلِمِينَ فَيَجْلِدُوكَ ويطهرك ربك لاَ تَدْخُلْ عَلَى بَيْتِي أَبَدًا.

অর্থ: “হযরত ইয়াযীদ ইবনে আছাম্ম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, একবার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার এক নিকটাত্মীয় উনার নিকট আসলো। তখন তিনি তার থেকে শরাবের গন্ধ পেয়ে বললেন, তুমি এখান থেকে বের হয়ে সম্মানিত মুসলমান উনাদের নিকট যাও, উনারা তোমাকে (তোমার অপরাধের শাস্তিস্বরূপ) দোররা মারবেন এবং (ফলে) তোমার রব মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমাকে পবিত্র করবেন।  অন্যথায় তুমি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হুজরা শরীফ-এ আর কখনো প্রবেশ করবে না।” সুবহানাল্লাহ! (আত ত্ববাক্বাতুল কুবরা ৮/১৩৯, সিয়ারু আ’লামিন নুবালা’ ৩/২১৪, আল ইস্তিযকার লিইবনে আব্দিল বার)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ:

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ থেকে ১০ মাইল দূরে সম্মানিত ও পবিত্র সারিফ নামক স্থান মুবারক-এ। সুবহানাল্লাহ! আর এই সম্মানিত ও পবিত্র স্থান মুবারকেই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হওয়ার পর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সাথে প্রথম রাত্র মুবারক অতিবাহিত করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন যে, এই সম্মানিত ও পবিত্র সারিফ নামক স্থান মুবারকেই আপনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করবেন এবং এই সম্মানিত ও পবিত্র স্থান মুবারকেই আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ হবে। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি ৫১ হিজরী শরীফ-এ সম্মানিত হজ্জ মুবারক পালন করতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ তাশরীফ মুবারক রাখেন। সম্মানিত হজ্জ মুবারক আদায় শেষে তিনি সম্মানিত মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করেন।

হযরত ইয়াযীদ ইবনে আছাম্ম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছিলেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার আপন বোনের ছেলে অর্থাৎ ভাগিনা। উনার থেকে বর্ণিত রয়েছে,

قَالَ حَضْرَتْ يَزِيدُ بْنُ الْأَصَمِّ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ ثَقُلَتْ ام الؤمنين سيدتنا حضرت الثالثة عشر عليها السلام (سيدتنا حضرت مَيْمُونَة عليها السلام) زَوْجُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِمَكَّةَ وَلَيْسَ عِنْدَهَا مِنْ بَنِي أَخِيهَا فَقَالَتْ أَخْرِجُونِي مِنْ مَكَّةَ فَإِنِّي لاَ أَمُوتُ بِهَا إِنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَخْبَرَنِي أَنِّي لاَ أَمُوتُ بِمَكَّةَ قَالَ فَحَمَلُوهَا حَتَّى أَتَوْا بِهَا سَرِفَ إِلَى الشَّجَرَةِ الَّتِي بَنَى بِهَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم تَحْتَهَا فِي مَوْضِعِ الْقُبَّةِ فَمَاتَتْ.

অর্থ: “হযরত ইয়াযীদ ইবনে আছাম্ম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত মারীদ্বী শান মুবারক খুব বেশি আকারে প্রকাশ পায়, তখন উনার নিকট উনার ভ্রাতস্পুত্রের মধ্যে কেউ উপস্থিত ছিলেন না। তিনি বললেন, আমাকে তোমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ উনার বাইরে নিয়ে যাও, নিশ্চিত আমি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করবো না। কেননা, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে জানিয়েছেন যে, নিশ্চয়ই আমি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করবো না। তখন উনাকে বহন করে সম্মানিত ও পবিত্র সারিফ নামক স্থানে সেই গাছটির নিকট নিয়ে যাওয়া হলো, যেই গাছটির নিচে একটি তাঁবুতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হওয়ার পর প্রথম রাত্র মুবারক অতিবাহিত করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর তিনি (উক্ত সম্মানিত ও পবিত্র স্থান মুবারক-এ) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আবী ইয়া’লা ১৩/২৭, দালাইলুন নুবুওওয়াহ্ লিল বাইহাক্বী ৬/৪৩৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১০/১১৩, মাজমাউয যাওয়াইদ ৯/২০০)

ইমাম ত্ববারানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার লিখিত বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আল মু’জামুল কাবীর শরীফ’ উনার মধ্যে বর্ণনা করেন,

عَنْ حَضْرَتْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَزَوَّجَ ام الؤمنين سيدتنا حضرت الثالثة عشر عليها السلام (سيدتنا حضرت مَيْمُونَة عليها السلام) بِسَرِفٍ وَبَنَى بِهَا بِسَرِفٍ وَمَاتَتْ بِسَرِفٍ.

অর্থ: “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত ও পবিত্র সারিফ নামক স্থান মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ করেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ উনার অনুষ্ঠান মুবারক অনুষ্ঠিত হওয়ার পর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সাথে প্রথম রাত্রি মুবারক অতিবাহিত করেন এই সম্মানিত ও পবিত্র সারিফ নামক স্থান মুবারক-এ এবং এই সম্মানিত ও পবিত্র সারিফ নামক স্থান মুবারকেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (আল মু’জামুল কাবীর শরীফ)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি ৫১ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৯শে যিলহজ্জ শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে ৯৪ বছর ৫ মাস ১৬ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক। সুবহানাল্লাহ!

এক বর্ণনা মতে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের সময় উনার সামনে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাদিসাহ্ আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা উপস্থিত ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত জানাযা উনার নামায মুবারক

কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,

وَصَلَّى عَلَيْهَا حَضْرَتْ ابْنُ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ.

অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত জানাযা উনার নামায মুবারক পড়ান সাইয়্যিদুনা হযরত ইবনে ‘আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে সা’দ, জাম‘উল ওয়াসায়িল, মাওয়াহিবুল লাদু নিয়্যাহ, শরহুয যারক্বানী, উস্দুল গ¦বাহ্ ইত্যাদ)


মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখা:

ইমাম তিরমিযী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন,

وَمَاتَتْ بِسَرِفَ وَدَفَنَّاهَا فِي الظُّلَّةِ الَّتِي بَنَى بِهَا فِيهَا.

অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত ও পবিত্র সারিফ নামক স্থান মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে ছাঁয়ায় (যে সম্মানিত ও পবিত্র স্থান মুবারক-এ) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সাথে প্রথম রাত্রি মুবারক অতিবাহিত করেন, সেখানেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত দাফন মুবারক করা হয়। অর্থাৎ সেখানেই উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ অবস্থিত।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ)

হযরত ইমাম বুখারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘বুখারী শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেন,

عَنْ حَضْرَتْ عَطَاءٍ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ حَضَرْنَا مَعَ حَضْرَتْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ جنَازَةَ ام الؤمنين سيدتنا حضرت الثالثة عشر عليها السلام (سيدتنا حضرت مَيْمُونَة عليها السلام) بِسَرِفَ فَقَالَ حَضْرَتْ ابْنُ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ هَذِهِ زَوْجَةُ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَإِذَا رَفَعْتُمْ نَعْشَهَا فَلاَ تُزَعْزِعُوهَا وَلاَ تُزَلْزِلُوهَا وَارْفُقُوا.

অর্থ: “হযরত ‘আত্বা’ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সাথে সম্মানিত ও পবিত্র সারিফ নাম স্থানে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত জানাযা মুবারক-এ উপস্থিত হয়েছিলাম। তখন হযরত ইবেন আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেছিলেন, ইনি হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র যাওজাতুম মুর্কারমাহ্ তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম। কাজেই, যখন আপনারা উনার সম্মানিত ও পবিত্র খাটিয়া মুবারক উত্তোলন করবেন, তখন সম্মানিত ও পবিত্র খাটিয়া মুবারক ঝাঁকি দিবেন না এবং কাঁপাবেন না; বরং অত্যন্ত কোমলভাবে আদবের সাথে সম্মানিত ও পবিত্র খাটিয়া মুবারক উত্তোলন করবেন, বহন করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, নাসায়ী শরীফ, মুসনাদে আহমদ, মুসনাদে বায্যার, আখবারু মাক্কা)

কিতাবে উল্লেখ রয়েছে,

ونزل في قبرها ونزل معه حَضْرَتْ عبد الرحمن بن خالد بن الوليد رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ وَحَضْرَتْ يزيد بن الأصم رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ وَحَضْرَتْ عبيد الله رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ

অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার মধ্যে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সাথে হযরত আব্দুর রহমান ইবনে খালিদ ইবনে ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি, হযরত ইয়াযীদ ইবনে ‘আছম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এবং হযরত ‘উবাইদুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনার অবতরণ মুবারক করেন।” সুবহানাল্লাহ! (আল মুন্তাখব ফী কিতাবে আযওয়াজুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১/৫৪)

অপর বর্ণনায় রয়েছে,

ودخل قبرها هو وَحَضْرَتْ عبد الله بن شداد رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ وكل منهما ابن أختها.

অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার মধ্যে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এবং হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে শাদ্দাদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি অর্থাৎ উনারা প্রবেশ করেন। আর উনারা দু’জনই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিতা বোন উনার ছেলে তথা উনার সম্মানিত ভগিনা।” সুবহানাল্লাহ! (শরহু ছহীহুল বুখারী ৪১/৩)

অপর বর্ণনায় রয়েছে,

وَدَخَلَ قَبْرَهَا هُوَ وَحَضْرَتْ يَزِيدُ بْنُ الأَصَمِّ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ وَحَضْرَتْ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ شَدَّادِ بْنِ الْهَادِي رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ وَهُمْ بَنُو أَخَوَاتِهَا وَحَضْرَتْ عُبَيْدُ اللَّهِ الْخَوْلَانِيُّ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ وَكَانَ يَتِيمًا فِي حجرها.

অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার মধ্যে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি, হযরত ইয়াযীদ ইবনে আছাম্ম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এবং হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে শাদ্দাদ ইবনে হাদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারা প্রবেশ করেন। উনারা প্রত্যেকেই ছিলেন উনার সম্মানিতা বোনের ছেলে তথা ভাগিনা। উনাদের সাথে ছিলেন হযরত উবাইদুল্লাহ খাওলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, যিনি ইয়াতীম অবস্থায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কোল মুবারক-এ লালিত-পালিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! (উসদুল গ¦বাহ্, ইস্তী‘য়াব)

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ  শরীফ বর্ণনা:

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ আশারা আলাইহাস সালাম উনার পুরো জিন্দেগী মুবারকই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ! কেননা, তিনি যা করেছেন এবং উম্মতদেরকে যা করতে আদেশ মুবারক করেছেন, প্রত্যেকটাই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ অনুযায়ীই করেছেন। সুবহানাল্লাহ! তবে রাবীগণ উনার থেকে মাত্র কতখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করতে সক্ষম হয়েছেন, এ বিষয়ে ইখতিলাফ রয়েছে। কেউ বলেছেন-রাবীগণ উনার থেকে ১৪৬ টি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করতে পেরেছেন, কেউ বলেছেন- ৮৬ টি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করতে পেরেছেন, আবার কেউ বলেছেন- ৭৬ টি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করতে পেরেছেন। সুবহানাল্লাহ!


মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ আশারা আলাইহাস সালাম উনার থেকে যাঁরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার বোনের ছেলে তথা ভাগিনা হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে শাদ্দাদ ইবনে হাদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এবং হযরত ইয়াযীদ ইবনে আছাম্ম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারা, উনার ভাইয়ের ছেলে তথা ভাতিজা হযরত ‘আব্দুর রহমান ইবনে সায়িব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার নিকট ইয়াতীম অবস্থায় লালিত-পালিত অর্থাৎ উনার সৎপুত্র হযরত ‘উবাইদুল্লাহ খাওলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার বঁ াদী হযরত নুদ্বাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহা তিনি, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার আযাদকৃত দুজন গোলাম হযরত ‘আতা ইবনে ইয়াসার রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এবং হযরত সুলাইমান ইবনে ইয়াসার রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারা দুই ভাই, হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার আযাদকৃত দু’জন গোলাম হযরত ইবরাহীম ইবনে আব্দুল্লাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এবং হযরত কুরাইব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারা, হযরত ‘উবাইদাহ্ ইবনে সাব্বাক্ব রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত ‘উবাইদুল্লাহ ইবনে ‘উতবা রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি এবং হযরত আলিয়াহ বিনতে সাবী’ রহমাতুল্লাহি আলাইহা তিনি অর্থাৎ উনারাসহ আরো অনেকেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছালিছাহ্ ‘আশার আলাইহাস সালাম উনার থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন। সুবহানাল্লাহ!


যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, 

وَرَفَعْنَا لَكَ ذِكْرَكَ.

অর্থ: “আর (আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আমি আপনার সম্মানিত যিকির মুবারক তথা সম্মানিত আলোচনা মুবারক, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক বুলন্দ থেকে বুলন্দতর করেছি।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আলাম নাশ্রহ্ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৪)

মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতটুকু বুলন্দ করেছেন তা জিন-ইনসান, কায়িনাতবাসী কারোই জানা নেই। এক কথায় উনার মহাসম্মানিত শান-মান ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক হচ্ছেন- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি শুধু খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন; এছাড়া যত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক রয়েছেন, সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী। সুবহানাল্লাহ!

ঠিক এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার পরিপূর্ণ মিছদাক্ব হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া যত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক রয়েছেন, সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ!

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,

عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَيْرُكُمْ خَيْرُكُمْ لِنِسَائِـىْ مِنْۢ بَعْدِىْ.

অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তি সর্বোত্তম যে ব্যক্তি আমার পর আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আযওয়াজুম মুত্বহহারাত তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের নিকট সর্বোত্তম।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে বাযযার, মাজমাউয যাওয়ায়িদ, কাশফুল খফা ইত্যাদি)

কাজেই, কেউ যদি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের হাক্বীক্বী মুহব্বত-মা’রিফত, নিসবত-ক্বুরবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক পেতে চায়, তার জন্য ফরযে আইন হচ্ছে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত সাওয়ানেহ্ ‘উমরী মুবারক জানা, উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক জানা, উপলব্ধি করা এবং দায়িমীভাবে অনন্তকাল যাবৎ উনার সম্মানিত গোলামী মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া, উনাকে সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা এবং উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করা। সুবহানাল্লাহ! 

আর কেউ যদি, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের, আখাছ্ছুল খাছভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার হাক্বীক্বী তা‘য়ালুক্ক-নিসবত মুবারক পেতে চায়, মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের হাক্বীক্বী তা‘য়ালুক্ক-নিসবত মুবারক, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক পেতে চায়, তাদের জন্য ফরয হচ্ছে উম্মুল উমাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার হাক্বীক্বী গোলামী করা, উনার সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, উনার সম্মানিত গোলামী মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করা। কেননা তিনি হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিননি আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার হাক্বীক্বী ক্বায়িম মাক্বাম। সুবহানাল্লাহ!

মহান আল্লাহ পাক তিনি আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে, উম্মুল উমাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে সেই তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!



0 Comments: