ফুরফুরা শরীফের মুজাদ্দিদে যামান আমীরুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত মুহইস সুন্নাহ হযরত মাওলানা শাহ ছুফী মুহম্মদ আবূ বকর ছিদ্দীক্বী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সংক্ষিপ্ত সাওয়ানেহ উমরী মুবারক

 

ফুরফুরা শরীফের মুজাদ্দিদে যামান আমীরুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত মুহইস সুন্নাহ হযরত মাওলানা শাহ ছুফী মুহম্মদ আবূ বকর ছিদ্দীক্বী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সংক্ষিপ্ত সাওয়ানেহ উমরী মুবারক


পবিত্র বিলাদত শরীফ:

  ফুরফুরা শরীফের হযরত মুজাদ্দিদে যামান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হিজরী ১২৬৩ সনে হুগলী জিলার ফুরফরা শরীফে পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন।


পবিত্র নসব মুবারক:

  ফুরফুরা শরীফের হযরত মুজাদ্দিদে যামান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি খলীফাতু রসূলিল্লাহ হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম উনার বংশধর এবং হযরত মাওলানা মনছুর বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ১৫তম নিম্নপুরুষ। সুবহানাল্লাহ! 

হযরত মনছুর বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার সেনাপতি হুসাইন বুখারী উনার সাথে বঙ্গদেশে আগমন পূর্বক ফুরফুরা ও উনার পার্শ্ববর্তী স্থানসমূহে এসে বাগদী রাজার সহিত জিহাদ করত: সেখানে বসতি কায়েম করেন। এই যুদ্ধে ৪ জন অতি বুযুর্গ ব্যক্তি শহীদ হন। অদ্যাবধি উনাদের পবিত্র মাজার শরীফ ফুরফুরা শরীফে বিদ্যমান আছে। সুবহানাল্লাহ!

হযরত মাওলানা মনছুর বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে শুরু করে ফুরফুরা শরীফের হযরত মুজাদ্দিদে যামান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পর্যন্ত অনেকেই বিখ্যাত কামিল ও কারামত বিশিষ্ট ওলীআল্লাহ ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!


স্বপ্নে পূর্বাভাস:

ফুরফুরা শরীফের হযরত মুজাদ্দিদে যামান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ৬ষ্ঠতম ও উর্দ্ধতন পুরুষ, হযরত মোস্তফা মাদানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একজন বিখ্যাত ওলীআল্লাহ ছিলেন। তিনি কাশফ যোগে জানতে  পেরেছিলেন যে, উনার ৬ষ্ঠতম নিম্ন বংশধরগণের মধ্যে একজন অতি বিখ্যাত কামিল ওলীআল্লাহ আগমন করবেন। উনার দ্বারা বঙ্গদেশের শিরক বিদয়াত দূরিভূত হবে, এমনকি হিন্দুস্থান ও আরব পর্যন্ত উনার ফায়িজ জারি হবে। বলা বাহুল্য, ফুরফুরা শরীফের হযরত মুজাদ্দিদে যামান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিই যে, সেই মহাপুরুষ তাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নাই। সুবহানাল্লাহ! 

                                              

জাহিরী ইলিম অর্জন: 

ফুরফুরা শরীফের হযরত মুজাদ্দিদে যামান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সিতাপুর, হুগলি ও কলিকাতা প্রভৃতি মাদরাসা হতে ফারেগ হয়ে হিজরী ১৩ শতকের মুজাদ্দিদ হযরত সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মানিত খলীফা মুজাহিদ, হাফেজ জামালুদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট পবিত্র হাদীছ শরীফ ও পবিত্র তাফসীর শরীফ অধ্যায়ন সমাপ্ত করেন। অতঃপর মাওলানা বেলায়েত উনার নিকট মান্তেক, হিকমত ইতাদি ইলিম অর্জন করেন। ২৩ থেকে ২৪ বৎসর বয়সে তিনি জাহিরী ইলিম শিক্ষা সমাপ্ত করেন। অতঃপর পবিত্র মদীনা শরীফে কিছুদিন অবস্থান করে ৪০ খানা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার সনদ লাভ করেন। এর পরে তিনি বহু দুর্লভ কিতাব সংগ্রহ করে ধারাবাহিক ১৮ বৎসর যাবত অধ্যায়ন করেন। সুবহানাল্লাহ!



বাতিনী ইলিম অর্জন: 

ফুরফুরা শরীফের হযরত মুজাদ্দিদে যামান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘মাদারযাদ’ ওলীআল্লাহ ছিলেন। তিনি কুতুবুল ইরশাদ রসূলে নুমা হযরত মাওলানা শাহ ছুফী ফতেহ আলী বর্ধমানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট বাইয়াত গ্রহণ করত: বাতিনী ইলম ও ফায়েযের উচ্চ কামালাত হাছিল করেন। তিনি স্বপ্নযোগে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার ও হযরত জিবরাইল আলাইহিস সালাম উনাদের নিকট থেকে বাতিনী ফায়েয লাভ করেন। এছাড়া তিনি আরো অনেক বুযুর্গ ব্যক্তি থেকে বাতিনী ফায়েয লাভ করে উচ্চ বিলায়েত হাছিল করেন। সুবহানাল্লাহ!


মুজাদ্দিদে যামান: 

ফুরফুরা শরীফের হযরত মুজাদ্দিদে যামান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি গত চৌদ্দ শত হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ ছিলেন।  উনার কামালত, কারামত, ফুয়ুজাত ও তাবলীগ সারা বিশ্বের সর্বত্র ঝরণা ধারার ন্যায় অতি প্রবল বেগে প্রবাহিত হয়েছে। উনার জাহিরী ও বাতিনী ফায়েযে যমীন থেকে শিরক-বিদয়াত দুর হয়ে ইলমে শরীয়ত ও মারিফত প্রভুত পরিমাণে বিস্তার লাভ করেছে। এক বা একাধিক অতি উচ্চ শ্রেণীর কামিল ওলী ও পীর উনার জাহিরী ও বাতিনী ফায়েয লাভ করেন। সর্বত্র সম্মানিত দ্বীন ইসলাম জারি করেন। এছাড়া অগণিত লোক উনার ফায়িয লাভ করে কামিল হয়েছেন। বাংলাদেশ ছাড়িয়ে হিন্দুস্থান ও আরব পর্যন্ত উনার ফায়েয বিস্তার লাভ করেছে। বহু দ্বীনী মাদরাসা, তরীক্বার তালীম, সুন্নতের প্রচার, উনার অলৌকিক দ্বীনী প্রতিভার প্রমান। সুবহানাল্লাহ!


তাছনীফাত: 

ফুরফুরা শরীফের হযরত মুজাদ্দিদে যামান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার আদেশ, অনুমোদন ও অর্থব্যয়ে বহু হাজার হাজার দ্বীনী কিতাব উনার সুযোগ্য খলীফা উনাদের কর্তৃক সমগ্র দেশে প্রচারিত হয়েছে। যাবতীয় বাতিল মতের খ-ন, খাঁটি মাজহাব উদ্ধার, শিরক-বিদয়াত বিনাশ, জাহিরী, বাতিনী ইলমের প্রচার ইত্যাদি যাবতীয় প্রকারের অসংখ্য কিতাবাদি ও সংবাদ পত্র দ্বারা ছহীহ আক্বীদা ও আমলের জোর শোর তাবলীগ করেন। এছাড়াও তিনি বহু জনকল্যাণ মূলক কাজ করেছেন। উনার জীবনী মুবারক বিস্তারিতভাবে পাঠ করলে, উনার বুযুর্গী, কামালত, ফুয়ুজাত, তাবলীগ ও এশায়াতের কিঞ্চিৎ জ্ঞাত হওয়া যায় মাত্র। সুবহানাল্লাহ!


মাযহাব:

প্রকৃত প্রস্তাবে উনার যামানায় বিশ্বে পবিত্র দ্বীন ইসলাম জাগরণের সত্যিকার যুগ আরম্ভ হয়েছে। ইতঃপূর্বে এত ব্যাপক, এত বিরাটভাবে ইলিম প্রচারের ও সংস্কারের কাজ আর হয়নি। যাঁকে কেন্দ্র করে দ্বীনী জগতের এত সংস্কার সাধিত হলো তিনি একজন খাঁটি হানাফী মাযহাবভুক্ত মুকাল্লিদ ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!

 

পবিত্র বিছাল শরীফ:

ফুরফুরা শরীফের হযরত মুজাদ্দিদে যামান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ২৫শে মুহররমুল হারাম শরীফ ইয়াওমুল জুমুয়া বা জুমুয়াবার ছুবহে ছাদিক্বের সময় পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। ভারতের ফুরফুরা শরীফে উনার পবিত্র মাযার শরীফ অবস্থিত। সুবহানাল্লাহ! 




0 Comments: