এক নজরে সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আছ ছানী আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত পরিচিতি মুবারক-
সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আছ ছানী আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সিব্তুন (নাতী) আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তিনি হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে বিশেষ ব্যক্তিত্ব মুবারক। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মুহব্বত মুবারকই হচ্ছেন সম্মানিত ঈমান। সুবহানাল্লাহ! আর উনার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা হচ্ছে কাট্টা কুফরী। না‘ঊযুবিল্লাহ!
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আছ ছানী আলাইহিস সালাম উনার এক নজরে মহাসম্মানিত পরিচিতি মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!
নিম্নে এক নজরে উনার মহাসম্মানিত পরিচিতি মুবারক তুলে ধরা হলো-
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক: সাইয়্যিদুনা হযরত আলী আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লক্বব মুবারক: সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ ইত্যাদি ইত্যাদি। সুবহানাল্লাহ!
যেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লক্বব মুবারক দ্বারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেছেন: সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আছ ছানী আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আব্বাজান আলাইহিস সালাম: আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূর আলাইহিস সালাম (সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল আছ ইবনে রবী’ আলাইহিস সালাম) তিনি। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মাজান আলাইহাস সালাম: সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা, আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খইরু ওয়া আফদ্বালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব আলাইহাস সালাম) তিনি। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নানাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম: সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নানীজান আলাইহাস সালাম: আফযালুন নিসা ওয়ান নাস বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, মহাসম্মানিত ও মহাপবত্রি উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মামাজান আলাইহিমুস সালাম:
(১) ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা মাওলানা হযরত আন নূরুল আউওয়াল আলাইহিস সালাম (সাইয়্যিদুনা মাওলানা হযরত ক্বাসিম আলাইহিস সালাম) তিনি,
(২) ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা মাওলানা হযরত আন নূরুছ ছানী আলাইহিস সালাম (সাইয়্যিদুনা মাওলানা হযরত ত্বইয়্যিব আলাইহিস সালাম) তিনি,
(৩) ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা মাওলানা হযরত আন নূরুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম (সাইয়্যিদুনা মাওলানা হযরত ত্বাহির আলাইহিস সালাম) তিনি এবং
(৪) ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা মাওলানা হযরত আন নূরুর রবি’ আলাইহিস সালাম (সাইয়্যিদুনা মাওলানা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম) তিনি। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খালাজান আলাইহিন্নাস সালাম:
(১) বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম (সাইয়্যিদাতুনা হযরত রুক্বইয়্যাহ্ আলাইহাস সালাম) তিনি,
(২) বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ্ আলাইহাস সালাম (সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম আলাইহাস সালাম) তিনি এবং
(৩) বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আন নূরুর রাবি‘আহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম (সাইয়্যিদাতুনা হযরত ফাতিমা আলাইহাস সালাম) তিনি। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ হিজরত মুবারক করার ১৩ মাস ১৬ দিন পূর্বে অর্থাৎ ১ বছর ১ মাস ১৬ দিন পূর্বে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৬শে মুহররমুল হারাম শরীফ ইয়াওমুল খমীস শরীফ (বৃহস্পতিবার)। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার সম্মানিত স্থান মুবারক: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ভাই-বোন আলাইহিমুস সালাম ও আলাইহিন্নাস সালাম: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র এক বোন আলাইহাস সালাম এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুই ভাই আলাইহিমাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ: ১৫ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১০ই রজবুল হারাম শরীফ ইয়াওমুল আহাদ শরীফ (রবিবার)। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র স্থান মুবারক: ইয়ারমুকের সম্মানিত জিহাদ মুবারক উনার ময়দান। সুবহানাল্লাহ!
দুনিয়ার যমীনে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র অবস্থান মুবারক: ১৫ বছর ৫ মাস ১৪ দিন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ: ইয়ারমূক প্রান্তরে। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ইবনু খইরি বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে হযরত যুন নূর আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত সংক্ষিপ্ত জীবনী মুবারক
হাফাদাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-
সাল্লাম তথা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত সিবতুন (নাতি) আলাইহিমুস সালাম এবং মহাসম্মানিতা সিবত্বাতুন (নাতনী) আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সম্মানিত সংক্ষিপ্ত পরিচিতি মুবারক:
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনারা মোট ৮ জন। উনাদের মধ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম উনারা ৪ জন এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত বানাত (মেয়ে) আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ৪ জন। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আবনা’ আলাইহিমুস সালাম উনারা প্রত্যেকেই দুনিয়াবী দৃষ্টিতে অল্প বয়স মুবারক-এ তথা সম্মানিত দুধ মুবারক পানরত অবস্থায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত বানাত (মেয়ে) আলাইহিন্নাস সালাম উনারা প্রত্যেকেই সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার যুগ পেয়েছেন, সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেছেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ হিজরত মুবারক করেছেন এবং উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফও হয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ! উনাদের মধ্যে একমাত্র বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি ব্যতীত অন্যান্য যাঁরা রয়েছেন অর্থাৎ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার এবং আন নূরুর রাবি‘য়াহ সাইয়্যদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের প্রত্যেকেরই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ আলাইহিমুস সালাম ও আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! উনারাই হচ্ছেন হাফাদাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত সিবতুন (নাতি) আলাইহিমুস সালাম এবং মহাসম্মানিতা সিবত্বাতুন (নাতনী) আলাইহিন্নাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
হাফাদাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সিবতুন (নাতি) আলাইহিমুস সালাম এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সিবত্বাতুন (নাতনী) আলাইহিন্নাস সালাম উনারা কত জন এই নিয়ে অনেক ইখতিলাফ রয়েছে। আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সমস্ত ইখতিলাফকে মিটিয়ে দিয়ে ইরশাদ মুবারক করেন যে, “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত হাফাদাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সিবতুন (নাতি) আলাইহিমুস সালাম এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সিবত্বাতুন (নাতনী) আলাইহিন্নাস সালাম উনারা সর্বমোট ১০ জন। সুবহানাল্লাহ! উনারা হচ্ছেন,
১. আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সিবত্বতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত বিনতে যিন নূর আলাইহাস সালাম (সাইয়্যিদাতুনা হযরত উমামাহ আলাইহাস সালাম) অনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মি’রাজ শরীফ সংঘটিত হওয়ার পরের দিন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৮শে রজবুল হারাম শরীফ ইয়াওমুছ ছুলাছা শরীফ (মঙ্গলবার) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বয়স মুবারক ৫০তম বছর মুবারক পার হয়ে ৫১তম বছর মুবারক চলাকালীন। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি ৪৫ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৭শে ছফর শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইওয়ামুল ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ তথা সোমবার) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে ৪৫ বছর ৬ মাস ২৯ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
২. আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূর আলাইহিস সালাম (সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আলী ইবনে আবুল আছ ইবনে রবী’ আলাইহিস সালাম) তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ হিজরত মুবারক করার ১৩ মাস ১৬ দিন পূর্বে তথা ১ বছর ১ মাস ১৬ দিন পূর্বে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৬শে মুহররমুল হারাম শরীফ ইয়াওমুল খমীস শরীফ (বৃহস্পতিবার) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি ১৫ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১০ই রজবুল হারাম শরীফ ইয়াওমুল আহাদ শরীফ সম্মানিত ইয়ারমূক জিহাদ মুবারক উনার ময়দানে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ১৫ বছর ৫ মাস ১৪ দিন দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
৩. আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূর আছ ছানী আলাইহিস সালাম (সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে আবুল আছ ইবনে রবী’ আলাইহিস সালাম) তিনি ২য় হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৮ই শাওওয়াল শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইয়াওমুল ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করা অবস্থায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
এই ৩ জন উনারা আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খইরু ওয়া আফযালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাধ্যমে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
৪. আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম (সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আব্দুল্লাহ ইবনে যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম) তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের ১১ তম বছর মুবারক পার হয়ে ১২ তম বছর মুবারক উনার শুরুতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৫ই রবী‘ঊছ ছানী শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইয়াওমুল ইছনাইনিল ‘আযীম শরীফ) সম্মানিত ও পবিত্র হাবশায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ৫১ তম বছর মুবারক পার হয়ে ৫২ তম বছর মুবারক চলাকালীন। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি ৪র্থ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২২শে জুমাদাল ঊলা শরীফ ইয়াওমুল আরবিয়া’ শরীফ (বুধবার) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে ৬ বছর ১ মাস ১৭ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
৫. সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম) তিনি ৩য় হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৫ই রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুল আরবিয়া শরীফ (বুধবার) বা’দ আছর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি ৪৯ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৮শে সফর শরীফ জুমুয়াহ শরীফ ভোর রাত্রে ফজরের আগে তাহাজ্জুদের শেষ সময় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে ৪৫ বছর ৫ মাস ১৩ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
৬. সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম) তিনি ৪র্থ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৫ই শা’বান শরীফ ইয়াওমুল জুমু‘য়াহ শরীফ বা’দ আছর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি ৬১ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১০ই মুহররমুল হারাম শরীফ ইয়াওমুল জুমু‘য়াহ শরীফ যোহরের সময় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে ৫৬ বছর ৫ মাস ৫ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
৭. আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সিবত্বতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব বিনতে যুন নূর হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ (হযরত আলী) আলাইহাস সালাম। তিনি ৫ম হিজরী শরীফ-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
৮. আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সিবত্বতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত রুক্বইয়্যাহ বিনতে যুন নূর হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ (হযরত আলী) আলাইহাস সালাম। তিনি ৬ষ্ঠ হিজরী শরীফ-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
৯. আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সিবত্বতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে যুন নূর হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ (হযরত আলী) আলাইহাস সালাম। তিনি ৭ম হিজরী শরীফ-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
১০. আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম মুহসিন আলাইহিস সালাম। তিনি ৯ম হিজরী শরীফ-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
উনারা ৬ জন বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মাধ্যমে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, ইবনু খইরি বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আলী ইবনে হযরত যুন নূর (আবুল আছ) আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সিবতুন (নাতি) আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে একজন বিশেষ ব্যক্তিত্ব মুবারক। সুবহানাল্লাহ! কাজেই উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু যিনি খ¦ালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া যত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক রয়েছেন, সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের মালিক হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারকই হচ্ছেন সম্মানিত ঈমান। তাই উনাকে মুহব্বত করা, উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক আলোচনা করা এবং উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক জানা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীসকলের জন্য ফরযে আইন। সুবহানাল্লাহ!
সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আছ ছানী আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ:
শি’ব আবী ত্বালিব থেকে প্রত্যাবর্তন করার পর দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বয়স মুবারক যখন ৪৯ বছর ৬ মাস ৫ দিন তখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। আর সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূর আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ হিজরত মুবারক করার ১৩ মাস ১৬ দিন পূর্বে তথা ১ বছর ১ মাস ১৬ দিন পূর্বে ২৬শে মুহররমুল হারাম শরীফ ইয়াওমুল খমীস শরীফ (বৃহস্পতিবার) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত আক্বীক্বা মুবারক দেয়া এবং সম্মানিত নাম মুবারক রাখা:
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের ৭ম দিনে উনার পক্ষ থেকে সম্মানিত আক্বীক্বা মুবারক দেয়া হয় এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক রাখা হয় ‘সাইয়্যিদুনা হযরত আলী আলাইহিস সালাম’। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল মুহব্বত, আদর, স্নেহ মুবারক-
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূর আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উমামাহ আলাইহাস সালাম উনার ছোট ভাই। সাইয়্যিদুনা হযরত আলী ইবনে আবিল আছ আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উমামাহ আলাইহাস সালাম উনার ন্যায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল মুহব্বত, আদর, স্নেহ মুবারক পেয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি উনার সম্মানিত নানাজান সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত তত্ত্বাবধান মুবারক-এ বেড়ে উঠেন। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত আলী ইবনে আবিল আছ আলাইহিস সালাম তিনি যখন বণী গদ্বিরাহ গোত্রে দুধ মুবারক পানরত ছিলেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি প্রায় সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূর আলাইহিস সালাম উনাকে দেখতে সেখানে যেতেন। একবার তিনি সেখানে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিয়ে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূর আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত কোল মুবারক-এ নিয়ে বুকে জড়িয়ে নেন এবং ইরশাদ মুবারক করলেন,
مَنْ شَارَكَنِـىْ فِـىْ شَىْءٍ فَاَنَا اَحَقُّ بِهٖ
অর্থ: “অন্য সবার থেকে সাইয়্যিদুনা হযরত আলী ইবনে আবিল আছ আলাইহিস সালাম উনার উপর আমার অধিকতর হক্ব রয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ-এ মহাসম্মানিত হিজরত মুবারক-
দুনিয়াবী দৃষ্টিতে যখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ৫৩ বছর, তখন তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ সম্মানিত হিজরত মুবারক করেন। এ সময় সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূর আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক প্রায় সোয়া এক বছর। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত হিজরত মুবারক:
মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সম্মানিত ওহী মুবারক প্রাপ্ত হয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ-এ মহাসম্মানিত হিজরত মুবারক করেন, তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূর আলাইহিস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মাজান উম্মু আবীহা, আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খইরু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ-এ অবস্থান মুবারক করতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর যখন উম্মু আবীহা, আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খইরু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ২য় হিজরী শরীফ উনার সম্মানিত ও পবিত্র যিলক্বদ শরীফ মাসে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ-এ মহাসম্মানিত হিজরত মুবারক করেন, তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূর আলাইহিস সালাম তিনিও উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ-এ মহা মহাসম্মানিত হিজরত মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ-
সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূর আলাইহিস সালাম তিনি প্রকাশ্যে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করার পর বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খাইরু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি প্রায় দেড় বছর দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ সম্পর্কে কিতাবে উল্লেখ রয়েছেন, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খাইরু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ-এ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট যাওয়ার জন্য রওয়ানা হন। পথিমধ্যে উনার উপর হামলা চালালে তিনি উটের পিঠ থেকে পাথরের উপর সম্মানিত তাশরীফ মুবরক নেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি তখন হামেলা শান মুবারক-এ ছিলেন। আঘাতের কারণে উনার একজন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করা অবস্থায় দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন এবং উনার অনেক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘নূরুন নাজাত মুবারক’ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রক্ত মুবারক) প্রবাহিত হন। এর ফলে তিনি দীর্ঘ দিন মারিদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করেন এবং এই মারিদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করা অবস্থায় ৮ম হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৮ই মুহররমুল হারাম শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ তথা সোমবার) ইশরাকের ওয়াক্তে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ৩০ বছর ৬ মাস ১৭ দিন দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মধ্যে তিনিই সর্বাধিক সময় দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূর আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক প্রায় ৮ বছর। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নানাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হুজরা শরীফ-এ সম্মানিত অবস্থান মুবারক-
উম্মু আবীহা, আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খইরু ওয়া আফযালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর উনার মহাসম্মানিত যাওজুম মুকাররাম সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূর (আবুল আছ) ইবনে রবী’ আলাইহিস সালাম তিনি কোন শাদী মুবারক করেননি। সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূর আলাইহিস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নানাজান নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে উনারই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হুজরা শরীফ-এ সম্মানিত অবস্থান মুবারক করতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ!
উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল আযহার মুবারক-এ নিয়ে সম্মানিত ছলাত মুবারক আদায়-
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ قَتَادَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يُـصَـلِّـىْ وَهُوَ حَامِلٌ سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اُمَامَةَ بِنْتَ زَيْنَبَ بِنْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاِذَا سَجَدَ وَضَعَهَا وَاِذَا قَامَ حَـمَلَهَا.
অর্থ: “হযরত আবূ ক্বাতাদা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিতা বানাত আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খইরু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা বানাত (মেয়ে) সাইয়্যিদাতুনা হযরত উমামাহ আলাইহাস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কাঁধ মুবারক-এ নিয়ে সম্মানিত নামায মুবারক আদায় করতেন। যখন তিনি সম্মানিত সিজদা মুবারক করতেন, তখন উনাকে পাশে রেখে দিতেন। আবার যখন সম্মানিত ক্বিয়াম মুবারক করতেন, তখন পুনরায় উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল আযহার মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কোল মুবারক-এ) তুলে নিতেন।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, আবূ দাঊদ শরীফ, নাসায়ী শরীফ, মুসনাদে আহমদ, মুয়াত্তা ইত্যাদি)
অপর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ قَتَادَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ بَيْنَا نَـحْنُ فِى الْمَسْجِدِ جُلُوْسٌ خَرَجَ عَلَيْنَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَـحْمِلُ سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اُمَامَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ بِنْتَ اَبِـى الْعَاصِ بْنِ الرَّبِيْعِ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَاُمُّهَا سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ زَيْنَبُ بِنْتُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهِىَ صَبِيَّةٌ يَّـحْمِلُهَا عَلـٰى عَاتِقِهٖ فَصَلّٰى رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهِىَ عَلـٰى عَاتِقِهٖ يَضَعُهَا اِذَا رَكَعَ وَيُعِيْدُهَا اِذَا قَامَ حَتّٰى قَضٰى صَلَاتَهٗ يَفْعَلُ ذٰلِكَ بـِهَا
অর্থ:“হযরত আবূ ক্বাতাদাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে নববী শরীফ-এ উপস্থিত থাকাকালে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উমামাহ বিনতে আবিল আছ ইবনে রবী’ আলাইহাস সালাম উনাকে নিয়ে আমাদের নিকট মহাসম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন, উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম ছিলেন আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খাইরু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! এ সময় (দুনিয়াবী দৃষ্টিতে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উমামাহ আলাইহাস সালাম) উনার সম্মানিত বয়স মুবারক অল্প ছিলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কাঁধ মুবারক-এ নিয়ে আসেন এবং উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কাঁধ মুবারক-এ নিয়েই সম্মানিত নামায মুবারক আদায় করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি যখন সম্মানিত রুকু মুবারক করতেন, তখন উনাকে পাশে রাখতেন। আর যখন সম্মানিত ক্বিয়াম মুবারক করতেন (দাঁড়াতেন), তখন কোল মুবারক-এ তুলে নিতেন। এভাবেই তিনি উনার সম্মানিত নামায মুবারক শেষ করেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসলিম শরীফ, আবূ দাঊদ শরীফ, নাসাঈ শরীফ, মুসনাদে আহমদ, ইবনে হিব্বান, শু‘য়াবুল ঈমান ইত্যাদি)
উপরোক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফসমূহ উনাদের মাধ্যমে অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উমামাহ আলাইহাস সালাম উনাকে কতো বেমেছাল মুহব্বত মুবারক করতেন, আদর-¯েœহ মুবারক করতেন। যার কারণে তিনি সম্মানিত নামায মুবারক আদায় করা অবস্থায়ও উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল আযহার মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কোল মুবারক-এ) নিতেন। সুবহানাল্লাহ! ঠিক একইভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূর আলাইহিস সালাম উনাকেও বেমেছাল মুহব্বত মুবারক করতেন এবং উনাকে নিয়েও তিনি সম্মানিত সম্মানিত নামায মুবারক আদায় করতেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয়-
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয়ের দিন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূর আলাইহিস সালাম উনাকে উনার সম্মানিত বাহন মুবারক তথা সম্মানিত উট মুবারক উনার পিছনে আরোহণ মুবারক করিয়েছিলেন। এ সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছেন যে,
وَلَمَّا دَخَلَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَكَّةَ يَوْمَ الْفَتْحِ اَرْدَفَ سَيِّدَنَا حَضْرَتْ عَلِيًّا عَلَيْهِ السَّلَامُ خَلْفَهٗ
অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয়ের দিন যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ প্রবেশ করেন, তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূর আলাইহিস সালাম উনাকে উনার সম্মানিত বাহন মুবারক উনার পিছনে আরোহণ করিয়েছিলেন।” সুবহানাল্লাহ!
অপর বর্ণনায় রয়েছেন,
وَكَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَرْدَفَهٗ عَلـٰى رَاحِلَتِهٖ وَفِىْ رِوَايَةٍ اُخْرٰى نَاقَتِهٖ يَوْمَ الْفَتْحِ
অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয়ের দিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূর আলাইহিস সালাম উনাকে উনার সম্মানিত বাহন মুবারক উনার পিছনে অপর বর্ণনায় রয়েছেন উনার সম্মানিত উট মুবারক উনার পিছনে আরোহণ করিয়েছিলেন।” সুবহানাল্লাহ! (ত্ববারনী, মা’রেফাতুছ ছাহাবাহ, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ, উসদুল গবাহ ইত্যাদি)
তাহলে এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূর আলাইহিস সালাম উনাকে কতোটুকু সম্মানিত মুহব্বত মুবারক করতেন এবং উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল। সুবহানাল্লাহ! যেটা সমস্ত জিন-ইনসান ও তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নানাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ-
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূর আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আম্মাজান উম্মু আবীহা, আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খইরু ওয়া আফযালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের ৩ বছর ২ মাস ৪ দিন পর ১১ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরির আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবী‘উল আউওয়াল শরীফ) উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ (সোমবার) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূর আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক প্রায় সোয়া ১১ বছর। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আব্বাজান আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ-
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূর আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আব্বাজান সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূর আলাইহিস সালাম তিনি ১২ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই যিলহজ্জ শরীফ ইয়াওমুল খমীস শরীফ (বৃহস্পতিবার) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ইয়ারমুকের জিহাদ মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক-
১৫ হিজরী শরীফ উনার সম্মানিত ৫ই রজবুল হারাম শরীফ ইয়াওমুছ ছুলাছা শরীফ ইয়ারমূকের সম্মানিত জিহাদ মুবারক শুরু হয়। এই সম্মানিত জিহাদ মুবারক-এ সম্মানিত মুসলমান উনাদের সৈন্যসংখ্যা ছিলেন ৩৫ হাজার। আর খ্রিষ্টানদের সৈন্যসংখ্যা ছিলো ২ লাখেরও বেশি। তবে সরাসরি ময়দানে উপস্থিত ছিলো ২ লাখ। সম্মানিত ৫ই রজবুল হারাম শরীফ ইয়াওমুছ ছুলাছা শরীফ (মঙ্গলবার) থেকে সম্মানিত ১০ই রজবুল হারাম শরীফ ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পর্যন্ত একাধারে ৬ দিন সম্মানিত জিহাদ মুবারক হয় এবং সম্মানিত ১০ই রজবুল হারাম শরীফ সম্মানিত মুসলমান উনাদের চূড়ান্ত বিজয়ী শান মুবারক প্রকাশ পায় অর্থাৎ উনারা চুড়ান্ত বিজয় লাভ করেন। সুবহানাল্লাহ! এ সম্মানিত জিহাদ মুবারক-এ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূর আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! যদিও দুনিয়াবী দৃষ্টিতে তখন উনার সম্মানিত বয়স মুবারক প্রায় সাড়ে ১৫ বছর। সুবহানাল্লাহ! কিন্তু তিনি ছিলেন লম্বা, স্বাস্থ্যবান এবং অনেক শক্তিশালী। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ-
সম্মানিত মুসলমানগণ উনারা ইয়ারমুকের জিহাদ মুবারক-এ ১লাখেরও অধিক খ্রিষ্টানদেরকে হত্যা করেন। আর সম্মানিত মুসলমান উনাদের মধ্যে ৩ হাজার সৈন্য সম্মানিত শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! উনাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূর আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! তিনি এই সম্মানিত জিহাদ মুবারক-এ প্রচ- লড়াই করে অনেক কাফেরকে হত্যা করে জাহান্নামে পাঠিয়ে দেন। অতঃপর তিনি এই সম্মানিত জিহাদ মুবারক উনার শেষ দিন তথা ১০ই রজবুল হারাম শরীফ ইয়াওমুল আহাদ শরীফ সম্মানিত জিহাদ মুবারক উনার ময়দানেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন,
وَسَيِّدُنَا حَضْرَتْ عَلِىُّ بْنُ اَبِـى الْعَاصِ عَلَيْهِ السَّلَامُ قُتِلَ يَوْمَ الْيَرْمُوْكِ
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে যুন নূর আলাইহিস সালাম তিনি ইয়ারমূকের সম্মানিত জিহাদ মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন।” সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত জানাযা উনার নামায মুবারক পড়া এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখা:
ইয়ারমূক প্রান্তরেই উনার সম্মানিত জানাযা উনার নামায মুবারক পড়া হয় এবং সেখানেই উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ অবস্থিত। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে ১৫ বছর ৫ মাস ১৪ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে হযরত যুন নূর আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনার বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক-
ছহিবু ইলমিল আউওওয়ালি ওয়াল ইলমিল আখিরি, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে রয়েছেন, একজন নবী-রসূল আলাইহিস সালাম উনাকে শহীদ করলে, এর কাফফারা বাবদ সত্তর হাজার লোককে ধ্বংস করে দেয়া হয়। আর একজন খলীফা উনাকে শহীদ করা হলে, এর কাফফারা বাবদ পঁয়ত্রিশ হাজার লোককে ধ্বংস করে দেয়া হয়। আর ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শাহাদাত মুবারক উনার সাথে যারা জড়িত, তাদের কমপক্ষে এক লক্ষ চল্লিশ হাজার লোককে কাফফারা বাবদ নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হবে, ধ্বংস করে দেয়া হবে।” সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছেন-
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ سَلَامٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ مَا قُتِلَ نَبِـىٌّ قَطُّ اِلَّا قُتِلَ بِهٖ سَبْعُوْنَ اَلْفًا مِّنْ اُمَّتِهٖ وَلَا قُتِلَ خَلِيْفَةٌ قَطُّ اِلَّا قُتِلَ بِهٖ خَـمْسَةٌ وَّثَلَاثُوْنَ اَلْفًا.
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এমন কোনো নবী আলাইহিস সালাম উনাকে শহীদ করা হয়নি যে, উনার কাফফারা বাবদ উনার উম্মতের সত্তর হাজার লোককে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়নি। সুবহানাল্লাহ! আর এমন কোনো খলীফা উনাকে শহীদ করা হয়নি যে, উনার কাফফারা বাবদ পঁয়ত্রিশ হাজার লোককে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়নি।” সুবহানাল্লাহ! (মুছান্নাফে আবী শায়বাহ ১৫/২২৩, মুছান্নাফে ইবনে আব্দির রাজ্জাক্ব ১১/৪৪৫, আল মাত্বালিবুল আলিয়াহ ১৮/৫২, আছ ছওয়াইকুল মুহ্রিক্বহ ১/৩২৯, ত্ববাক্বতে ইবনে সা’দ ৩/৮৩, ইযালাতুল খফা’ ৬/৩১৯, তাফসীরে রূহুল বয়ান ৮/১৪৬, খাযিন ৩/৩০৩, বাগভী ৬/৫৯, আত তামহীদ ওয়াল বায়ান ১/১৮১, তারীখুল খুলাফা ১/১২৮, আর রিয়াদুন নাদ্বরাহ ফী মানাক্বিবে আশারাহ ১/২২৮, আখবারুল মদীনা ২/২২৫, আল মুহাদ্বারাত ওয়াল মুহাওয়ারাত ১/৭১, ইত্যাদি)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُمَا قَالَ اَوْحَى اللهُ تَعَالـٰى اِلـٰى سَيِّدِنَا حَبِيْبِنَا شَفِيْعِنَا مَوْلَانَا مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنِّـىْ قَتَلْتُ بِيَحْيَـى بْنِ زَكَرِيَّا عَلَيْهِمَا السَّلَامُ سَبْعِيْنَ اَلْفًا وَّاِنِّـىْ قَاتِلٌ ۢبِابْنِ ابْنَتِكَ سَبْعِيْنَ اَلْفًا وَّسَبْعِيْنَ اَلْفًا.
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুমা উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট সম্মানিত ওহী মুবারক করেন যে, নিশ্চয়ই আমি হযরত ইয়াহইয়া ইবনে যাকারিয়া আলাইহিমাস সালাম উনার সম্মানিত শাহাদাত মুবারক উনার সাথে সংশ্লিষ্ট সত্তর হাজার লোককে কাফফারা বাবদ নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছি, ধ্বংস করে দিয়েছি। সুবহানাল্লাহ! আর নিশ্চয়ই আমি আপনার লখতে জিগার, মহাসম্মানিতা আওলাদ, আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার যিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শাহাদাত মুবারক উনার সাথে সংশ্লিষ্ট যারা থাকবে, তাদের সত্তর হাজার এবং সত্তর হাজার তথা এক লক্ষ চল্লিশ হাজার লোককে কাফফারা বাবদ নিশ্চিহ্ন করে দিবো, ধ্বংস করে দিবো।” সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরাকে হাকিম শরীফ ৩/১৯৫, খছায়িছুল কুবরা শরীফ ২/২১৪, ইমতা‘উল আসমা’ ১২/২৩৭, শরহুয যারক্বানী ‘আলাল মাওয়াহিব ১০/১৫২ ইত্যাদি)
এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা আরো বিভিন্ন কিতাবে বিভিন্নভাবে বর্ণিত রয়েছেন। তবে মূল অর্থ মুবারক এক। নিম্নে আরো কয়েকখানা বর্ণনা মুবারক উল্লেখ করা হলো-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لِـىْ حَضْرَتْ جِبْرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ اِنِّـىْ قَتَلْتُ بِدَمِ حَضْرَتْ يَـحْيَـى بْنِ زَكَرِيَّا عَلَيْهِمَا السَّلَامُ سَبْعِيْنَ اَلْفًا وَّاِنِّـىْ قَاتِلٌ ۢ بِدَمِ ابْنِكَ حَضْرَتْ اَلْـحُسَيْنِ بْنِ عَلِـىٍّ عَلَيْهِمَا السَّلَامُ سَبْعِيْنَ اَلْفًا وَّسَبْعِيْنَ اَلْفًا.
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুমা উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন যে, হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি আমাকে বলেছেন, যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, নিশ্চয়ই আমি (মহান আল্লাহ পাক) হযরত ইয়াহইয়া ইবনে যাকারিয়া আলাইহিমাস সালাম উনার সম্মানিত শাহাদাত মুবারক উনার সাথে সংশ্লিষ্ট সত্তর হাজার লোককে কাফফারা বাবদ নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছি, ধ্বংস করে দিয়েছি। সুবহানাল্লাহ! আর নিশ্চয়ই আমি আপনার লখতে জিগার, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শাহাদাত মুবারক উনার সাথে যারা সংশ্লিষ্ট থাকবে, তাদের সত্তর হাজার এবং সত্তর হাজার তথা এক লক্ষ চল্লিশ হাজার লোককে কাফফারা বাবদ নিশ্চিহ্ন করে দিবো, ধ্বংস করে দিবো।” সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী শরীফ ৩/১৮৭)
অপর বর্ণনায় এসেছেন-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُمَا عَنِ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ قَالَ لِـىْ حَضْرَتْ جِبْرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ اِنَّ اللهَ قَتَلَ بِدَمِ حَضْرَتْ يَـحْيَـى بْنِ زَكَرِيَّا عَلَيْهِمَا السَّلَامُ سَبْعِيْنَ اَلْفًا وَّهُوَ قَاتِلٌ بِدَمِ ابْنِ ابْنَتِكَ حَضْرَتْ اَلْـحُسَيْنِ بْنِ عَلِـىٍّ عَلَيْهِمَا السَّلَامُ سَبْعِيْنَ اَلْفًا وَّسَبْعِيْنَ اَلْفًا.
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুমা তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা করেন। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন যে, হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি আমাকে বলেছেন, নিশ্চয়ই যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ইয়াহইয়া ইবনে যাকারিয়া আলাইহিমাস সালাম উনার সম্মানিত শাহাদাত মুবারক উনার সাথে সংশ্লিষ্ট সত্তর হাজার লোককে কাফ্ফারা বাবদ নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছেন, ধ্বংস করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! আর নিশ্চয়ই তিনি আপনার লখতে জিগার, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ, আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার যিনি মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শাহাদাত মুবারক উনার সাথে যারা সংশ্লিষ্ট থাকবে, তাদের সত্তর হাজার এবং সত্তর হাজার তথা এক লক্ষ চল্লিশ হাজার লোককে কাফফারা বাবদ নিশ্চিহ্ন করে দিবেন, ধ্বংস করে দিবেন।” সুবহানাল্লাহ! (শরফুল মুস্ত¡ফা শরীফ)
অন্য বর্ণনায় এসেছেন-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ حَضْرَتْ جِبْرِيْلَ عَلَيْهِ الصَّلـٰوةُ وَالسَّلَامُ اَخْبَرَنِـىْ اَنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ قَتَلَ بِدَمِ حَضْرَتْ يَـحْيَـى بْنِ زَكَرِيَّا عَلَيْهِمَا السَّلَامُ سَبْعِيْنَ اَلْفًا وَّهُوَ قَاتِلٌ ۢ بِدَمِ حَضْرَتْ اَلْـحُسَيْنِ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَبْعِيْنَ اَلْفًا وَّسَبْعِيْنَ اَلْفًا.
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুমা উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন যে, নিশ্চয়ই হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি আমাকে সংবাদ মুবারক দিয়েছেন, নিশ্চয়ই যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ইয়াহইয়া ইবনে যাকারিয়া আলাইহিমাস সালাম উনার সম্মানিত শাহাদাত মুবারক উনার সাথে সংশ্লিষ্ট সত্তর হাজার লোককে কাফ্ফারা বাবদ নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছেন, ধ্বংস করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! আর নিশ্চয়ই তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শাহাদাত মুবারক উনার সাথে সংশ্লিষ্ট যারা থাকবে, তাদের সত্তর হাজার এবং সত্তর হাজার তথা এক লক্ষ চল্লিশ হাজার লোককে কাফফারা বাবদ নিশ্চিহ্ন করে দিবেন, ধ্বংস করে দিবেন।” সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ফী সীরাতি খইরিল ইবাদ ১১/৮১)
এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনার বিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত ওহী মুবারক করে জানিয়ে দিয়েছেন যে-
اِنِّـىْ قَتَلْتُ بِيَحْيَـى بْنِ زَكَرِيَّا عَلَيْهِمَا السَّلَامُ سَبْعِيْنَ اَلْفًا وَّاِنِّـىْ قَاتِلٌ ۢبِابْنِ ابْنَتِكَ سَبْعِيْنَ اَلْفًا وَّسَبْعِيْنَ اَلْفًا.
অর্থ: “নিশ্চয়ই আমি হযরত ইয়াহইয়া ইবনে যাকারিয়া আলাইহিমাস সালাম উনার সম্মানিত শাহাদাত মুবারক উনার সাথে সংশ্লিষ্ট সত্তর হাজার লোককে কাফফারা বাবদ নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছি, ধ্বংস করে দিয়েছি। সুবহানাল্লাহ! আর নিশ্চয়ই আমি আপনার লখতে জিগার, মহাসম্মানিতা আওলাদ, আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার যিনি মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শাহাদাত মুবারক উনার সাথে যারা সংশ্লিষ্ট থাকবে, তাদের সত্তর হাজার এবং সত্তর হাজার তথা এক লক্ষ চল্লিশ হাজার লোককে কাফ্ফারা বাবদ নিশ্চিহ্ন করে দিবো, ধ্বংস করে দিবো।” সুবহানাল্লাহ!
আর এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ব্যাখ্যায় আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মূলত, এক লক্ষ চল্লিশ হাজার কাফির-মুনাফিকদেরকে তো নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়েছেই। শুধু তাই নয়, এই জন্য ক্বিয়ামত পর্যন্ত কোটি কোটি কাফির, মুনাফিক্ব ও উলামায়ে সূ’দেরকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হবে, ধ্বংস করে দেয়া হবে, তাদের অস্থিত্ব বিলীন করে দেয়া হবে।” সুবহানাল্লাহ!
এখন বলার বিষয় হচ্ছে একজন সম্মানিত খলীফা উনাকে শহীদ করার কারণে, কাফফারা বাবদ পঁয়ত্রিশ হাজার লোককে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়। হযরত ইয়াহইয়া ইবনে যাকারিয়া আলাইহিমাস সালাম তিনি হচ্ছেন একজন বিশেষ নবী-রসূল। উনার সম্মানিত শাহাদাত মুবারক উনার সাথে যারা জড়িত ছিলো, কাফফারা বাবদ তাদের সত্তর হাজার লোককে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়েছে; কিন্তু সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শাহাদাত মুবারক উনার সাথে যারা জড়িত ছিলো, তাদের কমপক্ষে এক লক্ষ চল্লিশ হাজার লোককে কাফফারা বাবদ নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়েছে এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত কোটি কোটি কাফির, মুনাফিক্ব ও উলামায়ে সূ’দেরকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হবে, ধ্বংস করে দেয়া হবে, তাদের অস্থিত্ব বিলীন করে দেয়া হবে। সুবহানাল্লাহ!
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যেই হুকুম, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সকল হাফাদাত (নাতী-নাতনী) আলাইহিমুস সালাম ও আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরও ঠিক একই হুকুম।” সুবহানাল্লাহ!
যদি তাই হয়, তাহলে এখান থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে হযরত যুন নূর আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল। সুবহানাল্লাহ! এক কথায় তিনি শুধু যিনি খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! তিনি একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মুহতাজ। এছাড়া কায়িনাতের অন্য কারো মুহতাজ নন; বরং কায়িনাতের সকলেই উনার মুহতাজ। উনার কারণেই কায়িনাতের সকলে সম্মানিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! এই বিষয়টি আরো স্পষ্ট করে দেয়া হয়েছে, নিম্নোক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মাধ্যমে। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
اَنَّ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُوْلُ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ طَهَّرَهُمُ اللهُ مِنْ شَجَرَةِ النُّــبُوَّةِ وَمَوْضِعِ الرِّسَالَـةِ وَمُـخْتَلِفِ الْمَلَائِكَةِ وَبَيْتِ الرَّحْمَةِ وَمَعْدِنِ الْعِلْمِ.
অর্থ: “নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবসময় ইরশাদ মুবারক করতেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে (আমাদেরকে) সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার বৃক্ষ, সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার স্থান, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক (ইত্যাদি সমস্ত কিছু) থেকে পবিত্র রেখেছেন, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে দুররে মানছূর ৬/৬০৬, তাফসীরে ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ اِمَامِ الْاَوَّلِ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ عَـلِـىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ شَجَرَةُ النُّبُوَّةِ وَمَعْدِنُ الرِّسَالَـةِ لَيْسَ اَحَدٌ مِّـنَ الْـخَلَائِقِ يَفْضُلُ اَهْلَ بَيْـتِـىْ غَيْرِىْ.
অর্থ: “ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমরা সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার সম্মানিত বৃক্ষ মুবারক এবং সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার সম্মানিত খনি মুবারক। সুবহানাল্লাহ! সমগ্র সৃষ্টি জগতে একমাত্র আমি ব্যতীত দ্বিতীয় আর কেউই নেই, যে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করে। অর্থাৎ সমগ্র সৃষ্টি জগতে আমার পরেই আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক, ফযীলত মুবারক।” সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ لَّا يُقَاسُ بِنَا اَحَدٌ
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমাদের সাথে অন্য কারো ক্বিয়াস বা তুলনা করা যাবে না।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী শরীফ ৪/২৮৩, জামি‘উল আহাদীছ ২২/২১৯, কানযুল উম্মাল ১২/১০৪, জাম‘উল জাওয়ামি’ ১/২৪৯৫০, যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ ১/১৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৭ ইত্যাদি)
মহান আল্লাহ পাক তিনি ছাহিবু ইলমিল আউওয়ালি ওয়াল ইলমিল আখিরি, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম ইবনে হযরত যুন নূর আল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনার হাক্বীক্বী শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উপলব্ধি করার এবং সে অনুযায়ী উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার, সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক ও সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করার মাধ্যমে হাক্বীক্বী রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, সম্মানিত ইজমা’ শরীফ এবং সম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের সম্মানিত ফতওয়া মুবারক অনুযায়ী ‘নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের যারা মানহানী করবে, তাদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ-। তারা নামধারী মুসলমান হোক বা কাফির হোক অথবা নাস্তিক হোক কিংবা যেকোনো ধর্মেরই অনুসারী হোক না কেন। তাদের তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। এমনকি যারা তাদেরকে সমর্থন করবে, তাদেরও একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড-
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اِنَّ الَّذِيْنَ يُؤْذُوْنَ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ لَعَنَهُمُ اللهُ فِـى الدُّنْيَا وَالْاٰخِرَةِ وَاَعَدَّ لَـهُمْ عَذَابًا مُّهِيْنًا
অর্থ: “নিশ্চয়ই যারা মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে কষ্ট দেয়, তাদের উপর দুনিয়া ও আখিরাতে মহান আল্লাহ পাক উনার লা’নত এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদের জন্য লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৭)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ اِمَامِ الْاَوَّلِ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ عَلِـىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ اٰذَانِـىْ فِـىْ عِتْـرَتِـىْ فَقَدْ اٰذَى اللهَ عَزَّ وَجَلَّ
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ব্যাপারে আমাকে কষ্ট দিলো, সে মূলত যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনাকেই কষ্ট দিলো।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (দায়লামী শরীফ, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৯)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ اِمَامِ الْاَوَّلِ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ عَلِـىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ اٰذَانِـىْ وَعِتْرَتِـىْ فَعَلَيْهِ لَعْنَةُ اللهِ
অর্থ: “ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমাকে এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে কষ্ট দিবে, তার উপর মহান আল্লাহ পাক উনার লা’নত। অর্থাৎ সে মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে লা’নতগ্রস্থ।” নাঊযুবিল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৯)
আর মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَلْعُوْنِيْنَ اَيْنَمَا ثُقِفُوْاۤ اُخِذُوْا وَقُتِّلُوْا تَقْتِيْلًا
অর্থ: “লা’নতগ্রস্ত অবস্থায় তাদেরকে যেখানেই পাওয়া যাবে, সেখানেই পাকড়াও করা হবে এবং অবশ্যই তাদেরকে ক্বতল করা হবে, মৃত্যুদ- দেয়া হবে।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬১)
মহান আল্লাহ পাক তিনি অন্যত্র ইরশাদ মুবারক করেন-
وَالَّذِيْنَ يُؤْذُوْنَ رَسُوْلَ اللهِ لَـهُمْ عَذَابٌ اَلِيْمٌ.
অর্থ: “আর যারা মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দেয়, তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা তাওবা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬১)
সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ اِمَامِ الْاَوَّلِ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ عَلِـىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ سَبَّ نَبِيًّا فَاقْتُلُوْهُ وَمَنْ سَبَّ اَصْحَابِـىْ فَاضْرِبُوْهُ
অর্থ: “ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি কোনো নবী-রসূল আলাইহিস সালাম উনাকে গাল-মন্দ করবে, উনার মানহানী করবে, আপনারা তাকে ক্বতল করুন, মৃত্যুদ- দিন। আর যে ব্যক্তি আমার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে গাল-মন্দ করবে, উনাদের মানহানী করবে, আপনারা তাকে প্রহার করুন।” সুবহানাল্লাহ! (আশ শিফা ২/২২১, ফাতাওয়ায়ে বায্যাযিয়্যাহ ২/২৪২, আল মু’জামুছ ছগীর লিত ত্ববারনী ১/৩৯৩)
অপর বর্ণনায় এসেছেন,
عَنْ اِمَامِ الْاَوَّلِ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ عَلِـىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ عَنِ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ سَبَّ نَبِيًّا مِّنَ الْاَنْۢبِيَاءِ فَاقْتُلُوْهُ وَمَنْ سَبَّ وَاحِدًا مِّنْ اَصْحَابِـىْ فَاجْلِدُوْهُ.
অর্থ: “ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে যে কোনো একজন নবী-রসূল আলাইহিস সালাম উনাকে গাল-মন্দ করবে, উনার মানহানী করবে, আপনারা তাকে ক্বতল করুন, মৃত্যুদ- দিন। আর যে ব্যক্তি আমার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের মধ্য থেকে যে কোনো একজন হযরত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে গাল-মন্দ করবে, উনার মানহানী করবে, আপনারা তাকে প্রহার করুন।” সুবহানাল্লাহ! (আল ফাওয়াইদ ১/২৯৫)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنِ اِمَامِ الثَّالِثِ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ اَلْـحُسَيْنِ بْنِ عَلِىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِمَا السَّلَامُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ سَبَّ اَهْلَ الْبَيْتِ فَاِنَّـمَا يَسُبُّ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ: “ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন ইবনে হযরত আলী আলাইহিমাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে গাল-মন্দ করলো, মানহানী করলো, সে মূলত মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকেই গাল-মন্দ করলো, উনাদেরই মানহানী করলো।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ফী সীরাতি খইরিল ইবাদ ১১/৮)
অতএব, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের আলোকে সম্মানিত ফতওয়া মুবারক হচ্ছেন- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের যারা মানহানী করবে, তাদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ-। তারা নামধারী মুসলমান হোক বা কাফির হোক অথবা নাস্তিক হোক কিংবা যেকোনো ধর্মেরই অনুসারী হোক না কেন। তাদের তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। এমনকি যারা তাদেরকে সমর্থন করবে, তাদেরও একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ-। এ মৃত্যুদ- থেকে রেহাই পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই এবং এ বিষয়ে কোনো প্রকার ওজর-আপত্তি গ্রহণযোগ্য হবে না। স্বাভাবিক অবস্থায় হোক অথবা মাতাল বা নেশাগ্রস্থ অবস্থায় হোক অর্থাৎ যেকোনো অবস্থায়ই হোক না কেন- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের যারা মানহানী করবে, তাদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ-। তাদের তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। এমনকি যারা তাদেরকে সমর্থন করবে, তাদেরও একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ-। এ মৃত্যুদ- থেকে রেহাই পাওয়ার কোন সুযোগ নেই এবং এ ব্যাপারে কারো কোনো ওজর-আপত্তিও গ্রহণযোগ্য হবে না।
‘বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফসহ’ আরো অন্যান্য কিতাবে এসেছেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কা’ব বিন আশরাফকে ক্বতল করার জন্য সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন। তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন,
مَنْ لِّكَعْبِ بْنِ الْاَشْرَفِ فَاِنَّهٗ يُؤْذِى اللهَ وَرَسُوْلَهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ: “আপনাদের মধ্যে কে আছেন, যিনি কা’ব বিন আশরাফকে হত্যা করতে পারবেন? কেননা, সে মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে কষ্ট দেয়।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, আবূ দাঊদ শরীফ, বাইহাক্বী শরীফ, শরহুস সুন্নাহ শরীফ, মুস্তাদরকে হাকিম শরীফ, শিফা শরীফ, আস সাইফুল মাসলূল ইত্যাদি)
তারপর বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত মুহম্মদ ইবনে মাসলামা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি কা’ব বিন আশরাফকে অত্যন্ত সুকৌশলে হত্যা করেন। তাকে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রতি দাওয়াতও দেননি। কেননা সে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দিয়েছে। আর উনাকে যারা কষ্ট দিবে, তাদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ-। তাদের তাওবার কোনো সুযোগ নেই।
আল ইমামুল কাবীর, মাফ্খরাতুল মাগরিব হযরত ইমাম কাযী আবুল ফযল ‘আয়ায ইবনে মূসা আল ইয়াহ্চুবী আস সাব্তী আল মালিকী আন্দালুসী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিলাদত শরীফ ৪৭৬ হিজরী শরীফ এবং বিছাল শরীফ ৫৪৪ হিজরী শরীফ) তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আশ শিফা বিতা’রীফি হুকূকিল মুছত্বফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ উনার ২য় খ-ের ২২১ পৃষ্ঠায় বলেন-
فَدَلَّ اَنَّ قَتْلَهٗ اِيَّاهُ لِغَيْرِ الْاِشْرَاكِ بَلْ لِلْاَذٰى وَكَذٰلِكَ قَتَلَ اَبَا رَافِعٍ قَالَ حَضْرَتْ اَلْبَرَاءُ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ وَكَانَ يُؤْذِىْ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَيُعِيْنُ عَلَيْهِ وَكَذٰلِكَ اَمْرُهٗ يَوْمَ الْفَتْحِ بِقَتْلِ ابْنِ خَطَلٍ وَّجَارِيَتَيْهِ اللَّتَيْنِ كَانَتَا تُغَنِّيَانِ بِسَبِّهٖ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَفِـىْ حَدِيْثٍ اٰخَرَ اَنَّ رَجُلًا كَانَ يَسُبُّهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ مَنْ يَّكْفِيْنِـىْ عَدُوِّىْ فَقَالَ حَضْرَتْ خَالِدٌ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ اَنَا فَبَعَثَهُ النَّبِـىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَتَلَهٗ.
অর্থ: “উক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, কা’ব বিন আশরাফকে র্শিক করার কারণে হত্যা করা হয়নি, বরং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দেয়ার কারণে হত্যা করা হয়েছে। একই কারণে ইহুদী নেতা আবূ রফে’কেও হত্যা করা হয়। হযরত বারা বিন আযিব রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু তিনি তার সম্পর্কে বলেন,
وَكَانَ يُؤْذِىْ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَيُعِيْنُ عَلَيْهِ.
“সে মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দিতো, এবং উনার বিরুদ্ধে উনার শত্রুদেরকে সাহায্য করতো।’ না‘ঊযুবিল্লাহ!
অনুরূপভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয়ের দিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইবনে খত্বাল ও তার দুই দাসীকে হত্যা করার জন্য সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দেন, যারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ব্যঙ্গ-বিদ্রƒপ করে কবিতা আবৃত্তি করতো। না‘ঊযুবিল্লাহ!
অপর এক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছেন,
اَنَّ رَجُلًا كَانَ يَسُبُّهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ مَنْ يَّكْفِيْنِـىْ عَدُوِّىْ فَقَالَ حَضْرَتْ خَالِدٌ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ اَنَا فَبَعَثَهُ النَّبِـىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَتَلَهٗ.
‘এক ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দ করতো, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আপনাদের মধ্যে কে আছেন যিনি আমার দুশমনকে হত্যা করতে পারবেন? তখন সাইফুল্লাহিল মাসলূল (মহান আল্লাহ পাক উনার উন্মুক্ত তরবারী মুবারক) হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু তিনি আরয করলেন, আমি আছি। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে প্রেরণ করেন। অতঃপর হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু তিনি (তার নিকট গিয়ে) তাকে হত্যা করেন’।” সুবহানাল্লাহ! (আশ শিফা ২/২২১ )
আল ইমামুল কাবীর, মাফ্খরাতুল মাগরিব হযরত ইমাম কাযী আবুল ফযল ‘আয়ায রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আশ শিফা বিতা’রীফি হুকূকিল মুছত্বফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ উনার ২য় খণ্ডের ২১৪ পৃষ্ঠায় বলেন-
اِعْلَمْ وَفَّقَنَا اللهُ وَاِيَّاكَ اَنَّ جَمِيْعَ مَنْ سَبَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَوْ عَابَهٗ اَوْ اَلْـحَقَ بِهٖ نَقْصًا فِـىْ نَفْسِهٖ اَوْ نَسَبِهٖ اَوْ دِيْنِهٖ اَوْ خَصْلَةٍ مِّنْ خِصَالِهٖ اَوْ عَرَّضَ بِهٖ اَوْ شَبَّهَهٗ بِشَىْءٍ عَلـٰى طَرِيْقِ السَّبِّ لَهٗ اَوِ الْاِزْرَاءِ عَلَيْهِ اَوِ التَّصْغِيْرِ لِشَأْنِهٖ اَوِ الْغَضِّ مِنْهُ وَالْعَيْبِ لَهٗ فَهُوَ سَابٌّ لَّهٗ وَالْـحُكْمُ فِيْهِ حُكْمُ السَّابِّ يُقْتَلُ.
অর্থ: “জেনে রাখুন! মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে ও আপনাকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ বিশুদ্ধ আক্বীদা ও হুসনে যন মুবারক দান করুন, উনার হাক্বীক্বী শান-মান, ফাযায়িল ফযীলত, বুযুর্গী-সম্মান মুবারক উপলব্ধি করার তাওফীক্ব দান করুন এবং উনার যথাযথ হক্ব মুবারক আদায় করার তাওফীক্ব দান করুন। (আমীন!) যে ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গালি দেবে, নাঊযুবিল্লাহ! বা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কোনো অভিযোগে অভিযুক্ত করবে, নাঊযুবিল্লাহ! বা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওজুদ পাক মুবারক উনার সাথে বা উনার সম্মানিত ছিফত মুবারক উনার সাথে কোনো দোষত্রুটি সংযোজিত করবে, নাঊযুবিল্লাহ! বা উনার সম্মানিত বংশ মুবারক বা সম্মানিত দ্বীন (তথা সম্মানিত শরীয়ত মুবারক বা সম্মানিত সীরত মুবারক বা হুকুমত মুবারক) বা উনার কোনো সম্মানিত স্বভাব মুবারক ও সম্মানিত অভ্যাস মুবারক উনাদের সাথে দোষ-ত্রুটি সংযোজিত করবে। নাঊযুবিল্লাহ! আর এই দোষ-ত্রুটি সংযোজনের বিষয়টি স্পষ্টভাবে হোক বা ইশারা-ইঙ্গিতে হোক বা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিন্দা করার জন্য উনাকে কোনো বস্তু বা ব্যক্তির সাথে উপমা দিবে বা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অবজ্ঞা করবে, নাঊযুবিল্লাহ! বা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত শান-মান মুবারক উনাকে তুচ্ছজ্ঞান করবে, হেয়জ্ঞান করবে, নাঊযুবিল্লাহ! বা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করবে এবং উনার কোনো সম্মানিত আদেশ-নির্দেশ মুবারক বা হুকুম-আহকাম মুবারক উনাদের ব্যাপারে দোষ-ত্রুটি অন্বেষণ করবে, নাঊযুবিল্লাহ! তাহলে সে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দকারী হিসেবে, উনার মানহানীকারী হিসেবে গণ্য হবে। নাঊযুবিল্লাহ! তার ব্যাপারে এ আদেশ কার্যকর হবে, যা সরাসরি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দকারীর ব্যাপারে, উনার মানহানীকারীর ব্যাপারে প্রযোজ্য হয়। তাকে শাস্তিস্বরূপ অবশ্যই ক্বতল করতে হবে, তাকে শাস্তিস্বরূপ অবশ্যই মৃত্যুদ- দিতে হবে।” সুবহানাল্লাহ! (শিফা শরীফ ২/২১৪)
আল ইমামুল কাবীর, মাফ্খরাতুল মাগরিব হযরত ইমাম কাযী আবুল ফযল ‘আয়ায আন্দালুসী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো বলেন-
وَكَذٰلِكَ مَنْ لَّعَنَهٗ اَوْ دَعَا عَلَيْهِ اَوْ تَـمَنّٰى مَضَرَّةً لَّهٗ اَوْ نَسَبَ اِلَيْهِ مَا لَا يَلِيْقُ بـِمَنْصِبِهٖ عَلـٰى طَرِيْقِ الذَّمِّ اَوْ عَبَثَ فِىْ جِهَتِهِ الْعَزِيْزَةِ بِسُخْفٍ مِّنَ الْكَلَامِ وَهَجْرٍ وَّمُنْكَرٍ مِّنَ الْقَوْلِ وَزُوْرٍ اَوْ عَيَّرَهٗ بِشَىْءٍ مِّـمَّا جَرٰى مِنَ الْبَلَاءِ وَالْمِحْنَةِ عَلَيْهِ اَوْ غَمَصَهٗ بِبَعْضِ الْعَوَارِضِ الْبَشَرِيَّةِ الْـجَائِزَةِ وَالْمَعْهُوْدَةِ لَدَيْهِ وَهٰذَا كُلُّهٗ اِجْمَاعٌ مِّنَ الْعُلَمَاءِ وَاَئِمَّةِ الْفَتْوٰى مِنْ لَّدُنِ الصَّحَابَةِ رِضْوَانُ اللهِ عَلَيْهِمْ اِلـٰى هَلُمَّ جَرًّا.
অর্থ:“অনুরূপভাবে যে ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর অভিসম্পাত করবে (নাঊযুবিল্লাহ!) বা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য বদ দো‘আ করবে (নাঊযুবিল্লাহ!) বা উনার ক্ষতি কামনা করবে (নাঊযুবিল্লাহ!) বা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিন্দা করা, অপবাদ দেয়া, দোষী সাব্যস্ত করার উদ্দেশ্যে উনার সাথে এরূপ বস্তু সম্পর্কিত করবে, যা উনার সম্মানিত শান মুবারক উনার খিলাফ, নাঊযুবিল্লাহ! বা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত শান মুবারক-এ, সম্মানিত ত্ববীয়ত বা সুমহান চরিত্র মুবারক-এ নির্বুদ্ধিতামূলক বাক্য, অশ্লীল কথা, অপছন্দনীয় কথা এবং মিথ্যাকে সম্পৃক্ত করবে, নাঊযুবিল্লাহ! বা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র মু’জিযা শরীফ স্বরূপ যে সমস্ত শান মুবারক গ্রহণ করেছেন, তা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তাবাস্সুমী শান মুবারক হোক অথবা মারীদ্বী শান মুবারক হোক অথবা তাকলীফী শান মুবারক হোক না কেন, সে বিষয়ে উনাকে তিরস্কার করবে, নাঊযুবিল্লাহ! অর্থাৎ, মানবীয় স্বভাবসুলভ কারণে স্বাভাবিকভাবে সাধারণ মানুষকে যেসব বিষয় স্পর্শ করে থাকে যেমন রোগব্যাধি, ক্ষুধা, পিপাসা ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে জিন-ইনসানকে মর্যাদা দানের লক্ষ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে এই সকল বিষয়ে যে পবিত্র শান মুবারক গ্রহণ করেছেন, সে পবিত্র শান মুবারক উনাকে অবজ্ঞা করবে, তুচ্ছ জ্ঞান করবে, নাঊযুবিল্লাহ! তাহলে সেও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দকারী হিসেবে গণ্য হবে। না‘ঊযুবিল্লাহ! তার ব্যাপারেও এ আদেশ কার্যকর হবে, যা সরাসরি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দকারীর ব্যাপারে প্রযোজ্য হয়। তাকেও শাস্তিস্বরূপ অবশ্যই ক্বতল করতে হবে, তাকে শাস্তিস্বরূপ অবশ্যই মৃত্যুদ- দিতে হবে। সুবহানাল্লাহ! এ ব্যাপারে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের থেকে অদ্যবধি যত হক্কানী-রব্বানী আলিম-উলামা, ইমাম-মুজতাহিদ ও আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা অতীত হয়েছেন উনারা সবাই ইজমা’ তথা ঐকমত্য পোষণ করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (শিফা শরীফ ২/২১৪)
মূল কথা হলো, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, সম্মানিত ইজমা শরীফ এবং সম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে সম্মানিত শরীয়ত মুবারক উনার ফতওয়া মুবারক হচ্ছেন, যে ব্যক্তি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, আকরামুল আউওয়ালীন ওয়াল আখিরীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিয়ে অথবা উনার সংশ্লিষ্ট যে কোনো বিষয় মুবারক নিয়ে বিন্দু থেকে বিন্দুতমও চূ-চেরা, ক্বীল-ক্বাল করবে, অর্থাৎ উনার মহাসম্মানিত শান মুবারক উনার খিলাফ কোনো বক্তব্য পেশ করবে, কোনো কাজ করবে, যে কোনোভাবে উনার মানহানী করার চেষ্টা করবে, সে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দকারী হিসেবে, উনার মানহানীকারী হিসেবে সাব্যস্ত হবে। নাঊযুবিল্লাহ! তার ব্যাপারে এ আদেশ কার্যকর হবে, যা সরাসরি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দকারীর ব্যাপারে, উনার মানহানীকারীর ব্যাপারে প্রযোজ্য হয়। অর্থাৎ তার একমাত্র শাস্তি হলো মৃত্যুদ-। সে নামধারী মুসলমান হোক বা কাফির হোক অথবা নাস্তিক হোক কিংবা যেকোনো ধর্মেরই অনুসারী হোক না কেন। তার তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। এমনকি যারা তাকে সমর্থন করবে, তাদেরও একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ-। এ মৃত্যুদ- থেকে রেহাই পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আর পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, সরাসরি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, আকরামুল আউয়ালীন ওয়াল আখিরীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দকারী বা মানহানীকারীর উপর যে শাস্তি কার্যকর হবে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম উনাকে এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে গাল-মন্দকারী বা মানহানীকারীর উপরও একই শাস্তি কার্যকর হবে। অর্থাৎ তারও একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ-। সে নামধারী মুসলমান হোক বা কাফির হোক অথবা নাস্তিক হোক কিংবা যেকোনো ধর্মেরই অনুসারী হোক না কেন। তার তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। এমনকি যারা তাকে সমর্থন করবে, তাদেরও একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদ-। এ মৃত্যুদ- থেকে রেহাই পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কেননা উনাদেরকে গাল-মন্দ করার বা উনাদের মানহানী করার অর্থই হচ্ছে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দ করা বা উনার মানহানী করা। না‘ঊযুবিল্লাহ!
এ সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ لَّا يُقَاسُ بِنَا اَحَدٌ.
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমাদের সাথে অন্য কারো ক্বিয়াস বা তুলনা করা যাবে না।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী ৪/২৮৩, জামি‘উল আহাদীছ ২২/২১৯, কানযুল উম্মাল ১২/১০৪, জাম‘উল জাওয়ামি’ ১/২৪৯৫০, যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ ফী মানাক্বিবে যাওইল কুরবা লিমুহিব্বে ত্ববারী ১/১৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৭ ইত্যাদি)
আলোচ্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে-
نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ
(আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম) বলেÑ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে উনার নিজের অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
তাই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنِ الْاِمَامِ الثَّالِثِ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ اَلْـحُسَيْنِ بْنِ عَلِىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِمَا السَّلَامُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ سَبَّ اَهْلَ الْبَيْتِ فَاِنَّـمَا يَسُبُّ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ: “ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন ইবনে হযরত আলী আলাইহিমাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে গাল-মন্দ করলো, উনাদের মানহানী করলো, সে মূলত মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকেই গাল-মন্দ করলো, উনাদেরই মানহানী করলো।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ শরীফ ১১/৮)
কাজেই, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম উনাকে এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আম্মা আলাইহাস সালাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে গাল-মন্দ করা বা উনাদের মানহানী করার অর্থই হচ্ছে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দ করা বা উনার মানহানী করা। না‘ঊযুবিল্লাহ!
আল ইমামুল কাবীর, মুজতাহিদে মত্বলক্ব, হাফিয, শাইখুল ইসলাম হযরত আবূ বকর মুহম্মদ ইবনে ইবরাহীম ইবনে মুনযির নীশাপূরী শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিলাদত শরীফ: ২৪২ হিজরী শরীফ; বিছাল শরীফ: ৩১৯ হিজরী শরীফ) তিনি বলেন-
اَجْمَعَ عَوَامُّ اَهْلِ الْعِلْمِ عَلـٰى اَنَّ مَنْ سَبَّ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُقْتَلُ وَمِـمَّنْ قَال ذٰلِكَ مَالِكُ بْنُ اَنَسٍ وَّاللَّيْثُ وَاَحْمَدُ وَاِسْحَاقُ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِمْ وَهُوَ مَذْهَبُ الشَّافِعِـىِّ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ.
অর্থ: “সকল আহলে ইলম তথা হযরত ইমাম-মুজতাহিদ ও আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা ইজমা’ তথা ঐকমত্য পোষণ করেছেন, যে ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গালি দিবে, উনার মানহানী করবে, তাকে শাস্তিস্বরূপ অবশ্যই ক্বতল করতে হবে, শাস্তিস্বরূপ অবশ্যই মৃত্যুদ- দিতে হবে। সুবহানাল্লাহ! মালিকী মাযহাব উনার সম্মানিত ইমাম হযরত ইমাম মালিক বিন আনাস রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত ইমাম লাইস রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হাম্বলী মাযহাব উনার সম্মানিত ইমাম হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এবং হযরত ইসহাক ইবনে রাওয়াহাইহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারা সকলেই এই মত পোষণ করেছেন এবং এটা হযরত ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাযহাব।” সুবহানাল্লাহ! (আল ইশরাফ ‘আলা মাযাহিবে আহলিল ‘ইলম ৩/১৬, আল ইক্বনা’ ২/৫৮৪, আল ইজমা’ ৮৭ পৃ., শিফা শরীফ ২/২১৫, আস সাইফুল মাসলূল ‘আলা মান সাব্বার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১১৯-১২০পৃ., সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১২/২৩, আল মাওয়াহিবুল লাদুননিয়্যাহ ২/৩৮৪, শরহুয যারক্বানী ‘আলাল মাওয়াহিব ৭/৩৩৭, তাফসীরে কুরতুবী ৮/৮২, আল বাহরুর রায়িক্ব ১৩/৪৯৬, রদ্দুল মুহতার আলাদ দুররিল মুখতার ৪/২৩২ ইত্যাদি)
হযরত ইমাম কাযী আবুল ফযল ‘আয়ায আন্দালুসী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিলাদত শরীফ: ৪৭৬ হিজরী শরীফ এবং বিছাল শরীফ: ৫৪৪ হিজরী শরীফ) তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আশ শিফা বিতা’রীফি হুকূকিল মুছত্বফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ উনার মধ্যে বলেন-
قَالَ اَبُوْ بَكْرِ بْنُ الْمُنْذِرِ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ اَجْمَعَ عَوَامُّ اَهْلِ الْعِلْمِ عَلـٰى اَنَّ مَنْ سَبَّ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُقْتَلُ وَمِـمَّنْ قَالَ ذٰلِكَ مَالِكُ بْنُ اَنَسٍ وَّاللَّيْثُ وَاَحْمَدُ وَاِسْحَاقُ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِمْ وَهُوَ مَذْهَبُ الشَّافِعِـىِّ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ الْقَاضِىْ اَبُو الْفَضْلِ وَهُوَ مُقْتَضٰى قَوْلِ اَبِـىْ بَكْرِ ۣ الصِّدِّيْقِ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَلَا تُقْبَلُ تَوْبَتُهٗ عِنْدَ هٰؤُلَاءِ.
অর্থ: “আল ইমামুল কাবীর, মুজতাহিদে মত্বলক্ব, হাফিয, শাইখুল ইসলাম হযরত আবূ বকর মুহম্মদ ইবনে ইবরাহীম ইবনে মুনযির নীশাপূরী শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সকল আহলে ইলম তথা হযরত ইমাম-মুজতাহিদ ও আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা ইজমা’ তথা ঐকমত্য পোষণ করেছেন, যে ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দ করবে, উনার মানহানী করবে, তাকে শাস্তিস্বরূপ অবশ্যই ক্বতল করতে হবে, শাস্তিস্বরূপ অবশ্যই মৃত্যুদ- দিতে হবে। সুবহানাল্লাহ! মালিকী মাযহাব উনার সম্মানিত ইমাম হযরত ইমাম মালিক বিন আনাস রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত ইমাম লাইস রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হাম্বলী মাযহাব উনার সম্মানিত ইমাম হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত ইসহাক ইবনে রাওয়াহাইহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারা সকলেই এই মত পোষণ করেছেন এবং এটা হযরত ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাযহাব। সুবহানাল্লাহ! কাযী আবুল ফযল আয়ায রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, এটাই সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার অভিমত। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনিসহ উপরোক্ত সমস্ত হযরত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের ইজমা’ তথা ঐকমত্যে (যে ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দ করবে, উনার মানহানী করবে,) তার তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না।” সুবহানাল্লাহ! (আশ শিফা বিতা’রীফি হুকূকিল মুছত্বফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ২/২১৫, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ফী সীরাতি খইরিল ইবাদ ১২/২৩, আল মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়্যাহ ২/৩৮৪)
শায়েখ আল্লামা হযরত ইমাম মুহম্মদ ইবনে মুহম্মদ ইবনে শিহাব ইবনে ইঊসুফ আল বায্যাযী আল হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিছাল শরীফ: ৮২৭ হিজরী শরীফ) তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আল ফাতাওউল বায্যাযিয়্যাহ আওইল জামি‘উল ওয়াজীয শরীফ’ উনার মধ্যে বলেন-
اِذَا سَبَّ الرَّسُوْلَ عَلَيْهِ الصَّلـٰوةُ وَالسَّلَامُ اَوْ وَاحِدًا مِّنَ الْاَنْۢبِيَاءِ عَلَيْهِمُ الصَّلـٰوةُ وَالسَّلَامُ فَاِنَّهٗ يُقْتَلُ حَدًّا وَّلَا تَوْبَةَ لَهٗ اَصْلًا سَوَاءٌ بَعْدَ الْقُدْرَةِ عَلَيْهِ وَالشَّهَادَةِ اَوْ جَاءَ تَائِبًا مِّنْ قِبَلِ نَفْسِهٖ كَالزِّنْدِيْقِ لِاَنَّهٗ حَدٌّ وَّجَبَ فَلَا يَسْقُطُ بِالتَّوْبَةِ كَسَائِرِ حُقُوْقِ الْاٰدَمِيِّيْنَ وَكَحَدِّ الْقَذْفِ لَا يَسْقُطُ بِالتَّوْبَةِ.
অর্থ: “যখন কোনো ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অথবা অন্য সকল হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে যে কোনো একজন নবী-রসূল আলাইহিস সালাম উনাকে গাল-মন্দ করবে, উনার মানহানী করবে, অবশ্যই তাকে হদ্দ বা শাস্তিস্বরূপ ক্বতল করতে হবে, শাস্তিস্বরূপ মৃত্যুদ- দিতে হবে। প্রকৃতপক্ষে তার কোন তাওবা নেই। চাই তাকে বন্দি করার পর তার উপর সাক্ষী পেশ করা হোক অথবা সে স্বেচ্ছায় তাওবাকারীরূপে আসুক সমান কথা। তার হুকুম জিন্দিকের হুকুমের অনুরূপ। কেননা তার উপর হদ্দ তথা শাস্তি ওয়াজিব হয়ে গেছে। কাজেই তার তাওবার দ্বারা তার হদ্দ তথা শাস্তি রহিত হবে না। যেমনিভাবে মানুষের যাবতীয় হক্বসমূহ এবং অপবাদের হদ্দ তথা শাস্তি তাওবার দ্বারা রহিত হয় না।” সুবহানাল্লাহ! (ফাতাওয়ায়ে বায্যাযিয়্যাহ ২/৪৪২)।
শায়েখ আল্লামা হযরত ইমাম মুহম্মদ ইবনে মুহম্মদ ইবনে শিহাব ইবনে ইঊসুফ আল বায্যাযী আল হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো বলেন-
قُلْنَا اِذَا شَتَمَهٗ عَلَيْهِ الصَّلـٰوةُ وَالسَّلَامُ سَكْرَانُ لَا يُعْفٰى وَيُقْتَلُ اَيْضًا حَدًّا وَّهٰذَا مَذْهَبُ اَبِىْ بَكْرِ ۣ الصِّدِّيْقِ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَالْاِمَامِ الْاَعْظَمِ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ وَالثَّوْرِىِّ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ وَاَهْلِ الْكُوْفَةِ وَالْمَشْهُوْرُ مِنْ مَذْهَبِ مَالِكٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ وَاَصْحَابِهٖ قَالَ الْـخَطَّابِـىُّ لَا اَعْلَمُ اَحَدًا مِّنَ الْمُسْلِمِيْنَ اخْتَلَفَ فِـىْ وُجُوْبِ قَتْلِهٖ اِذَا كَانَ مُسْلِمًا وَّقَالَ ابْنُ سَحْنُوْنَ الْمَالِكِىُّ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ اَجْمَعَ الْعُلَمَاءُ اَنَّ شَاتِـمَهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَافِرٌ وَّحُكْمُهُ الْقَتْلُ وَمَنْ شَكَّ فِىْ عَذَابِهٖ وَكُفْرِهٖ كَفَرَ قَالَ اللهُ تَعَالـٰى فِيْهِ ﴿مَلْعُوْنِيْنَ اَيْنَمَا ثُقِفُوْاۤ اُخِذُوْا وَقُتِّلُوْا تَقْتِيْلًا﴾ وَرَوٰى حَضْرَتْ عَبْدُ اللهِ بْنُ مُوْسَى بْنِ جَعْفَرٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ عَنْ عَلِىِّ بْنِ مُوْسٰى رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ عَنْ اَبِيْهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ عَنْ جَدِّهٖ عَلَيْهِ السَّلَامُ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَلِىِّ بْنِ حُسَيْنٍ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ عَنْ اَبِيْهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ عَنِ الْـحُسَيْنِ بْنِ عَلِىٍّ عَلَيْهِمَا السَّلَامُ عَنْ اَبِيْهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ سَبَّ نَبِيًّا فَاقْتُلُوْهُ وَمَنْ سَبَّ اَصْحَابِـىْ فَاضْرِبُوْهُ وَاَمَرَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِقَتْلِ كَعْبِ بْنِ الْاَشْرَفِ بِلَا اِنْذَارٍ وَّكَانَ يُؤْذِيْهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَكَذَا اَمَرَ بِقَتْلِ اَبِىْ رَافِعِ ۣ الْيَهُوْدِىِّ وَكَذَا اَمَرَ بِقَتْلِ ابْنِ خَطَلٍ لِّـهٰذَا وَاِنْ كَانَ مُتَعَلِّقًا بِاَسْتَارِ الْكَعْبَةِ.
অর্থ: “আমরা বলি যখন কোনো ব্যক্তি মাতাল বা নেশাগ্রস্ত অবস্থায়ও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দ করবে, উনার মানহানী করবে, না‘ঊযুবিল্লাহ! তাকেও ক্ষমা করা যাবে না। তাকেও হদ্দ তথা শাস্তিস্বরূপ অবশ্যই ক্বতল করতে হবে, শাস্তিস্বরূপ অবশ্যই মৃত্যুদ- দিতে হবে। সুবহানাল্লাহ! এটাই খলীফাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার, হযরত ইমামে আ’যম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার, হযরত ইমাম সুফ্ইয়ান ছাওরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার এবং কূফাবাসী (আলিম) উনাদের অভিমত। এবং তা হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লহি আলাইহি উনার ও উনার অনুসারীদের অভিমত হিসেবে প্রসিদ্ধ। হযরত ইমাম খত্তাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
لَا اَعْلَمُ اَحَدًا مِّنَ الْمُسْلِمِيْنَ اخْتَلَفَ فِـىْ وُجُوْبِ قَتْلِهٖ اِذَا كَانَ مُسْلِمًا.
‘আমি এমন কোনো মুসলমান পাইনি, যিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দকারীর ক্বতল তথা মৃত্যুদ- আবশ্যক হওয়ার ব্যাপারে মতবিরোধ করেছেন, যদি সে মুসলমান হয়ে থাকে।’ সুবহানাল্লাহ!
হযরত ইমাম ইবনে সাহ্নূন মালিকী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
اَجْمَعَ الْعُلَمَاءُ اَنَّ شَاتِـمَهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَافِرٌ وَّحُكْمُهُ الْقَتْلُ وَمَنْ شَكَّ فِىْ عَذَابِهٖ وَكُفْرِهٖ كَفَرَ.
‘সমস্ত ইমাম মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা এ বিষয়ে ইজমা’ তথা ঐকমত্য পোষণ করেছেন যে, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দকারী, উনার মানহানীকারী কাফির। তার হুকুম হলো, তাকে ক্বতল করতে হবে, মৃত্যুদ- দিতে হবে। আর যে ব্যক্তি এ ধরনের লোকদের কাফির হওয়ার ব্যাপারে এবং শাস্তিযোগ্য হওয়ার বিষয়ে সন্দেহ করবে, সে নিজেও কাফির হবে (এবং তাকেও ক্বতল করতে হবে, মৃত্যুদ- দিতে হবে)।’ সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَلْعُوْنِيْنَ اَيْنَمَا ثُقِفُوْاۤ اُخِذُوْا وَقُتِّلُوْا تَقْتِيْلًا.
‘লা’নতগ্রস্ত অবস্থায় তাদেরকে যেখানেই পাওয়া যাবে, সেখানেই পাকড়াও করা হবে এবং অবশ্যই তাদেরকে ক্বতল করা হবে, মৃত্যুদ- দেয়া হবে।’ সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬১)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মূসা ইবনে জা’ফর আলাইহিমুস সালাম তিনি হযরত আলী ইবনে মূসা আলাইহিমাস সালাম উনার থেকে, তিনি উনার মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম উনার থেকে, উনার মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত দাদা আলাইহিস সালাম উনার থেকে, তিনি মুহম্মদ ইবনে আলী ইবনে হুসাইন আলাইহিমুস সালাম উনার থেকে, তিনি উনার মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম উনার থেকে, তিনি ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন ইবনে আলী আলাইহিমাস সালাম উনার থেকে, তিনি উনার মহাসম্মানিত পিতা সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণনা করেন- নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَنْ سَبَّ نَبِيًّا فَاقْتُلُوْهُ وَمَنْ سَبَّ اَصْحَابِـىْ فَاضْرِبُوْهُ.
‘যে ব্যক্তি কোনো নবী-রসূল আলাইহিস সালাম উনাকে গাল-মন্দ করবে, উনার মানহানী করবে, আপনারা তাকে ক্বতল করুন, মৃত্যুদ- দিন। আর যে ব্যক্তি আমার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে গাল-মন্দ করবে, উনাদের মানহানী করবে, আপনারা তাকে প্রহার করুন।’ সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দেয়ার কারণে তিনি কোনো সতর্কীকরণ ছাড়াই কা’ব ইবনে আশরাফকে শাস্তিস্বরূপ ক্বতল করার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! একই কারণে তিনি আবূ রফে’ নামক ইহুদীকেও শাস্তিস্বরূপ ক্বতল করার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! অনুরূপভাবে একই কারণে তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার গিলাফ মুবারক উনার সাথে ঝুলন্ত থাকা সত্ত্বেও ইবনে খত্বালকে শাস্তিস্বরূপ ক্বতল করার, মৃত্যুদ- দেয়ার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ! (ফাতাওয়ায়ে বায্যাযিয়্যাহ ২/২৪২-২৪৩)
‘নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত শান মুবারক-এ ‘মুত্বহ্হার’ (পূত-পবিত্র) এবং ‘মুত্বহ্হির’ (পূত-পবিত্রতাদানকারী) বলতে হবে’
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এক অনন্য বেমেছাল বিস্ময়কর মহাসম্মানিত ফায়ছালা মুবারক হচ্ছেন, “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত শান মুবারক-এ ‘মুত্বহ্হার’ (পূত-পবিত্র) এবং ‘মুত্বহ্হির’ (পূত-পবিত্রতাদানকারী) বলতে হবে”। সুবহানাল্লাহ! তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আমি একটি বিষয় ফিকির করতে থাকলাম যে, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ বলা হয় ‘মা’ছূম’ তথা নিস্পাপ। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ বলা হয় ‘মাহ্ফূয’ তথা সংরক্ষিত। তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত শান মুবারক-এ কী বলা হবে? আমি বিষয়টি যখন ফিকির করতে থাকলাম, তখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন,
فَاَنَا وَاَهْلُ بَيْتِىْ مُطَهَّرُوْنَ مِنَ الذُّنُوْبِ.
অর্থ: ‘আমি এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম আমরা সকলে যুনূব তথা সমস্ত প্রকার ছগীরা-কবীরা এবং যাবতীয় অপছন্দনীয় কাজ থেকে পূত-পবিত্র।’ সুবহানাল্লাহ!
আমার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ مُطَهَّرٌ (মুত্বহ্হার) তথা পূত-পবিত্র এবং مُطَهِّرٌ (মুত্বহ্হির) তথা পূত-পবিত্রতাদানকারী বলতে হবে। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করলেন, আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত শান মুবারক-এ স্বয়ং যিনি খালিক্ব¡ মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত ত্বহারাত তথা পবিত্রতা মুবারক উনার বিষয়টি সম্পৃক্ত করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন,
اِنَّـمَا يُرِيْدُ اللهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ اَهْلَ الْبَيْتِ وَيُـطَـهِّـرَكُـمْ تَطْهِيْرًا.
অর্থ: ‘হে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম! নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি চান আপনাদের থেকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা দূর করে আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করতে। অর্থাৎ তিনি আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই সম্মানিত সৃষ্টি মুবারক করেছেন।’ সুবহানাল্লাহ!
আমি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে আমার নিজের অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছি। সুবহানাল্লাহ! তাই আমার এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত শান মুবারক-এ مُطَهَّرٌ (মুত্বহ্হার) তথা পূত-পবিত্র এবং مُطَهِّرٌ (মুত্বহ্হির) তথা পূত-পবিত্রতাদানকারী বলতে হবে।” সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
اَنَّ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُوْلُ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ طَهَّرَهُمُ اللهُ مِنْ شَجَرَةِ النُّبُوَّةِ وَمَوْضِعِ الرِّسَالَـةِ وَمُـخْتَلِفِ الْمَلَائِكَةِ وَبَيْتِ الرَّحْمَةِ وَمَعْدِنِ الْعِلْمِ.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবসময় ইরশাদ মুবারক করতেন। আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে (আমাদেরকে) সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার বৃক্ষ, সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার স্থান, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক (ইত্যাদি সমস্ত কিছু) থেকে পবিত্র রেখেছেন, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে দুররে মানছূর ৬/৬০৬, তাফসীরে ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩)
অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মুহতাজ এবং উনাদের সম্মানার্থে উনারা সম্মানিত এবং উনাদের প্রতিই উনারা দায়েমীভাবে রুজু। সুবহানাল্লাহ! ফলে উনারা সমস্ত কিছু থেকেই পবিত্র, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)। সুবহানাল্লাহ! কাজেই সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক ইত্যাদি বরকতময় নিয়ামত মুবারক উনাদের প্রতি রুজু হওয়ার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কোন সুযোগ নেই। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কারণেই সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, সমস্ত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা, সম্মানিত রহমত মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারকসহ সমস্ত কিছুই ফযীলতপ্রাপ্ত হয়েছেন, সম্মানিত হয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ لَّا يُقَاسُ بِنَا اَحَدٌ.
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমাদের সাথে কারো কোনো তুলনা করা যাবে না।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী ৪/২৮৩, জামি‘উল আহাদীছ ২২/২১৯, কানজুল উম্মাল ১২/১০৪, জাম‘উল জাওয়ামি’ ১/২৪৯৫০, যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ ফী মানাক্বিবে যাওইল কুরবা লিমুহিব্বে ত্ববারী ১/১৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৭ ইত্যাদি)
কাজেই সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য ফরযে আইন হচ্ছে সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ফায়ছালা মুবারক অনুযায়ী নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ ‘মুত্বহ্হার’ (পূত-পবিত্র) এবং ‘মুত্বহ্হির’ (পূত-পবিত্রতাদানকারী) বলা, এই পরিভাষা মুবারক ব্যবহার করা। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ফায়ছালা মুবারক অনুযায়ী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের হাক্বীক্বী শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত,বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উপলব্ধি করে ইহকাল ও পরকালে হাকীক্বী কামিয়াবী হাছিল করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত শান মুবারক-এ ব্যবহৃত ‘মুত্বহ্হার এবং মুত্বহ্হির’ সম্মানিত লফয মুবারক উনাদের সম্মানিত অর্থ এবং তাৎপর্য মুবারক-
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এক অনন্য বেমেছাল অত্যন্ত বিস্ময়কর মহাসম্মানিত ফায়ছালা মুবারক হচ্ছেন, “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত শান মুবারক-এ مُطَهَّرٌ (মুত্বহ্হার) তথা পূত-পবিত্র এবং مُطَهِّرٌ (মুত্বহ্হির) তথা পূত-পবিত্রতাদানকারী বলতে হবে”। সুবহানাল্লাহ! তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আমি একটি বিষয় ফিকির করতে থাকলাম যে, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত শান মুবারক-এ বলা হয় ‘মা’ছূম’ তথা নিস্পাপ। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ বলা হয় ‘মাহ্ফূয’ তথা সংরক্ষিত। তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত শান মুবারক-এ কী বলা হবে? আমি বিষয়টি যখন ফিকির করতে থাকলাম, তখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন,
فَاَنَا وَاَهْلُ بَيْتِىْ مُطَهَّرُوْنَ مِنَ الذُّنُوْبِ.
অর্থ: ‘আমি এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম আমরা সকলে যুনূব তথা সমস্ত প্রকার ছগীরা-কবীরা এবং যাবতীয় অপছন্দনীয় কাজ থেকে পূত-পবিত্র।’ সুবহানাল্লাহ!
আমার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত শান মুবারক-এ مُطَهَّرٌ (মুত্বহ্হার) তথা পূত-পবিত্র এবং مُطَهِّرٌ (মুত্বহ্হির) তথা পূত-পবিত্রতাদানকারী বলতে হবে। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করলেন, ‘আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত শান মুবারক-এ স্বয়ং যিনি খালিক্ব¡ মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত ত্বহারাত তথা পবিত্রতা মুবারক উনার বিষয়টি সম্পৃক্ত করেছেন।” সুবহানাল্লাহ!
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের এবং হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের শান মুবারক-এ বলা হয় ‘মাহ্ফূয’। হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ বলা হয় ‘মা’ছূম’। আর স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ফায়ছালা মুবারক হচ্ছেন উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ ‘মুত্বহ্হার ও মুত্বহ্হির’ বলা। সুবহানাল্লাহ!
مَحْفُوْظٌ(মাহ্ফূয) শব্দ মুবারকখানা আরবী ব্যাকরণ অনুযায়ী اسم مفعول (ইসমে মাফ‘ঊল) উনার ছীগাহ। যা حِفْظٌ (হিফ্যুন) ক্রিয়ামূল হতে এসেছেন। অর্থ: সংরক্ষিত। যেহেতু হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের কর্তৃক সংরক্ষিত, তাই উনাদের শান মুবারক-এ ‘মাহ্ফূয’ বলা হয়। সুবহানাল্লাহ!
অনুরূপভাবে مَعْصُوْمٌ (মা’ছূম) শব্দ মুবারকখানা আরবী ব্যাকরণ অনুযায়ী اسم مفعول (ইসমে মাফ‘ঊল) উনার ছীগাহ। যাعَصْمٌ (‘আছমুন) ক্রিয়ামূল থেকে এসেছেন।عَصْمٌ (‘আছমুন) অর্থ- রক্ষা করা, বিরত রাখা। আর مَعْصُوْمٌ (মা’ছূম) অর্থ- নিষ্পাপ।
যেহেতু সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ছগীরাহ-কবীরাহ (ছোট-বড়), কুফরী-শিরকী এবং যাবতীয় অপছন্দীয় কাজ থেকে পবিত্র, তাই উনাদেরকে ‘মা’ছূম’ বলা হয়। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে আক্বাইদের কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন,
اَلْاَنْبِيَاءُ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ كُلُّهُمْ مَعْصُوْمُوْنَ
অর্থ: “সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা মা’ছূম তথা নিষ্পাপ।” সুবহানাল্লাহ!
আক্বাইদের কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,
اَلْاَنْبِيَاءُ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ كُلُّهُمْ مُنَزَّهُوْنَ عَنِ الصَّغَائِرِ وَالْكَبَائِرِ وَالْكُفْرِ وَالْقَبَائِحِ.
অর্থ: “সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ছগীরাহ-কবীরাহ (ছোট-বড়), কুফরী এবং যাবতীয় অপছন্দনীয় কাজ থেকে পবিত্র।” সুবহানাল্লাহ!
এটা হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত খুছূছিয়াত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক। সুবহানাল্লাহ! আর উনারা এই সম্মানিত খুছূছিয়াত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক লাভ করেছেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে। সুবহানাল্লাহ! কেননা হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের কাউকে সম্মানিত নুবুওওয়াত-রিসালাত মুবারক দেয়া হয়নি যতক্ষণ পর্যন্ত উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান না এনেছেন, উনার সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করার, সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার এবং সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করার প্রতিশ্রুতি মুবারক না দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
وَاِذْ اَخَذَ اللهُ مِيْثَاقَ النَّبِـيّٖنَ لَمَاۤ اٰتَيْتُكُمْ مِّنْ كِتٰبٍ وَّحِكْمَةٍ ثُـمَّ جَآءَكُمْ رَسُوْلٌ مُّصَدِّقٌ لِّـمَا مَعَكُمْ لَتُؤْمِنُنَّ بِهٖ وَلَتَنْصُرُنَّهٗ قَالَ ءَاَقْرَرْتُـمْ وَاَخَذْتُـمْ عَلـٰى ذٰلِكُمْ اِصْرِىْ قَالُوْاۤ اَقْرَرْنَا قَالَ فَاشْهَدُوْا وَاَنَا مَعَكُمْ مِّنَ الشّٰهِدِيْنَ فَمَنْ تَوَلّٰى بَعْدَ ذٰلِكَ فَاُولٰٓـئِكَ هُمُ الْفٰسِقُوْنَ.
অর্থ: “আর (আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি স্মরণ করুন ঐ সময়ের কথা) যখন মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের থেকে অঙ্গীকার মুবারক গ্রহণ করলেন যে, আপনাদেরকে সম্মানিত কিতাব মুবারক ও হিকমত মুবারক দেয়া হবে। অতঃপর আপনাদের নিকট একজন মহাসম্মানিত রসূল তথা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করবেন এবং তিনি আপনাদেরকে ও আপনাদের কাছে যা কিছু রয়েছে সমস্ত কিছুর তাছদীক্ব বা সত্যায়ন মুবারক করবেন। আপনারা অবশ্যই অবশ্যই উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক আনবেন এবং উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিবেন। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, আপনারা কি তা স্বীকার করে নিলেন এবং এই মর্মে আমার সম্মানিত ওয়াদা মুবারক গ্রহণ করলেন? উনারা বললেন, আমরা স্বীকার করে নিলাম। মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, তাহলে আপনারা সকলে সাক্ষী থাকুন এবং আমিও আপনাদের সাথে সাক্ষী রইলাম। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর যে এই সম্মানিত ওয়াদা মুবারক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে অর্থাৎ ওয়াদা মুবারক উনার খিলাফ করবে, তারাই হচ্ছে ফাসিক্ব তথা চরম নাফরমান, কাট্টা কাফির।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আল ইমরান শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৮১-৮২)
আর مُطَهَّرٌ (মুত্বহ্হার) শব্দ মুবারকখানা আরবী ক্বাওয়াইদ অনুযায়ী اسم مفعول (ইসমে মাফ‘ঊল) উনার ছীগাহ। অর্থ- পূত-পবিত্র। আর مُطَهِّرٌ (মুত্বহ্হির) শব্দ মুবারকখানা আরবী ক্বাওয়াইদ অনুযায়ী اسم فاعل (ইসমে ফা‘য়িল) উনার ছীগাহ। অর্থ- পূত-পবিত্রতাদানকারী। সুবহানাল্লাহ! এই সম্মানিত লফ্য বা শব্দ মুবারকদ্বয় উনাদের উৎপত্তি হচ্ছেন طُهْرٌ (তুহ্রুন) মূল ধাতু থেকে। অর্থ- পবিত্রতা। যেহেতু সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা সৃষ্টিগত বা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওজূদ মুবারকগত দিক থেকেই পূত-পবিত্র, পূত-পবিত্রতাদানকারী এবং উনাদের সম্মানার্থেই খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত কায়িনাতবাসী সকলেই পবিত্রতা হাছিল করেছেন, করছেন এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত পবিত্রতা হাছিল করবেন। সুবহানাল্লাহ! তাই স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ مُطَهَّرٌ (মুত্বহ্হার) তথা পূত-পবিত্র এবং مُطَهِّرٌ (মুত্বহ্হির) তথা পূত-পবিত্রতাদানকারী বলার জন্য সম্মানিত ফায়সালা মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক উনার একখানা অংশ মুবারক থেকে হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা সৃষ্টি। আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা একই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক থেকে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মূল নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি। সুবহানাল্লাহ! এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছে কুদসী শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,
فَخَلَقْتُكَ وَخَلَقْتُ اَهْلَ بَيْتِكَ مِنَ النُّوْرِ الْاَوَّلِ
অর্থ: “আমি আপনাকে এবং আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র প্রথম ভাগ নূর মুবারক তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র একই নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি মুবারক করেছি।” সুবহানাল্লাহ!
অপর বর্ণনায় রয়েছেন,
فَخَلَقْتُكَ وَاَهْلَ بَيْتِكَ مِنَ الْقِسْمِ الْاَوَّلِ
অর্থ: “আমি আপনাকে এবং আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র প্রথম ভাগ নূর মুবারক তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র একই নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি মুবারক করেছি।” সুবহানাল্লাহ! (নুয্হাতুল মাজালিস, আল বারাহীন)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ حَضْرَتْ اَلْـمِسْوَرِ بْنِ مَـخْرَمَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اَلنُّوْرُ الرَّابِعَةُ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلزَّهْرَاءُ عَلَيْهَا السَّلَامُ (حَضْرَتْ فَاطِمَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ) بِضْعَةٌ مِّنِّىْ فَمَنْ اَغْضَبَهَا اَغْضَبَنِـىْ.
অর্থ: “হযরত মিসওয়ার ইবনে মাখরমাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, উম্মু আবীহা আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন, আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুজাসসাম মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শরীর মুবারক) উনার মহাসম্মানিত নূর মুবারক অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র গোশত মুবারক উনার একখানা সম্মানিত টুকরো মুবারক। সুবহানাল্লাহ! তাই যে ব্যক্তি উনাকে অসন্তুষ্ট করলো, সে মূলত আমাকেই অসন্তুষ্ট করলো।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ শরীফ)
এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা বিশুদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে কারো কোনো দ্বিমত নেই। সমস্ত ইমাম মুজতাহিদ ও আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা একবাক্যে এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা উনাকে বিশুদ্ধ হিসেবে মেনে নিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্পষ্টভাবে ইরশাদ মুবারক করেছেন যে,
اَلنُّوْرُ الرَّابِعَةُ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلزَّهْرَاءُ عَلَيْهَا السَّلَامُ )سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ فَاطِمَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ( بِضْعَةٌ مِّنِّىْ
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, উম্মু আবীহা আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন, আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুজাসসাম মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জিসিম মুবারক) উনার মহাসম্মানিত নূর মুবারক অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র গোশত মুবারক উনার একখানা সম্মানিত টুকরো মুবারক।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ শরীফ)
সুতরাং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা একই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক থেকে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মূল নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি। সুবহানাল্লাহ! তাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক উনার যেই হুকুম মুবারক, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক উনাদেরও ঠিক একই হুকুম মুবারক। সুবহানাল্লাহ! এ প্রসঙ্গে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই ইরশাদ মুবারক করেন,
فَاَنَا وَاَهْلُ بَيْتِىْ مُطَهَّرُوْنَ مِنَ الذُّنُوْبِ.
অর্থ: “আমি এবং আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম আমরা সকলে যুনূব তথা সমস্ত প্রকার ছগীরা-কবীরা এবং যাবতীয় অপছন্দনীয় কাজ থেকে পূত-পবিত্র।” সুবহানাল্লাহ!
এখানে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার নিজের এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক উনার বিষয়টি একই হুকুমের আওতাভুক্ত করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
জলীলুল ক্বদর নবী এবং রসূল হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি যখন তূর পাহাড়ে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিবেন, তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেছিলেন,
فَاخْلَعْ نَعْلَيْكَ اِنَّكَ بِالْوَادِ الْمُقَدَّسِ طُوًى.
অর্থ: “আপনি আপনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলুন। কেননা আপনি সম্মানিত (তূর পাহাড়ের) পবিত্র তুয়া উপত্যকায় তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করতে যাচ্ছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ত্বহা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫)
তূর পাহাড়ে মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ও পবিত্র ‘আরশে ‘আযীম মুবারক থেকে ৭০ হাজার ভাগের এক ভাগ সম্মানিত নূর মুবারক বর্ষিত হয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ! যার কারণে সেই স্থানটি সম্মানিত ও পবিত্র হয়ে গেছেন। সুবহানাল্লাহ! তাই মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে তূর পাহাড়ে উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলে তাশরীফ মুবারক নেয়ার জন্য সম্মানিত নির্দেশ মুবারক করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ! কিন্তু সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফখর মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র না’লাইন শরীফ) উনাদের স্পর্শকৃত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শরাফাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ধূলি-বালি মুবারক) উনাদের পবিত্রতা, মর্যাদা সম্মানিত মূল আরশে আযীম মুবারক উনার থেকেও লক্ষ কোটি গুণ বেশি। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফখর মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র না’লাইন শরীফ) উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শরাফাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ধূলি-বালি মুবারক) পেয়ে সম্মানিত মূল আরশে আযীম মুবারক আরো পবিত্রতা হাছিল করেছেন, মর্যাদাবান হয়েছেন এবং অন্য সকলের উপর ফখর করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
সেটাই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মি’রাজ শরীফ উনার রাতে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেছিলেন,
يَا حَضْرَتْ مُـحَمَّدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا تَـخْلَعْ نَعْلَيْكَ فَاِنَّ الْعَرْشَ يَتَشَرَّفُ بِقُدُوْمِكَ مُتَنَعِّـلًا وَّيَفْتَخِرُ عَلـٰى غَيْرِهٖ مُتَـبَـرِّكًـا.
অর্থ: “আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! দয়া করে আপনি আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফখর মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র না’লাইন শরীফ) খুলবেন না। অর্থাৎ আপনি আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফখর মুবারকসহ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র না’লাইন শরীফসহ) আমার সম্মানিত ও পবিত্র আরশে আযীম মুবারক উনার মধ্যে মহাসম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করুন। কেননা আমার সম্মানিত ও পবিত্র আরশে আযীম মুবারক আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফখর মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র না’লাইন শরীফ) উনাদের পরশ মুবারক পেয়ে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফখর মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র না’লাইন শরীফ) উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শরাফাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ধূলি-বালি মুবারক) উনাদের স্পর্শ মুবারক লাভ করে ধন্য হবেন, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক হাছিল করবেন। সুবহানাল্লাহ! (শুধু তাই নয়,) আমার সম্মানিত ও পবিত্র আরশে আযীম মুবারক আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফখর মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র না’লাইন শরীফ) উনাদের স্পর্শ মুবারক পাওয়ার কারণে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফখর মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র না’লাইন শরীফ) উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শরাফাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ধূলি-বালি মুবারক) লাভ করে বরকতময় হয়ে আরো পবিত্রতা হাছিল করবেন এবং অন্য সবার উপর ফখর করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (ফাতহুল মুত‘য়াল ফী মাদহি খইরিন নি‘য়াল শরীফ)
আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা যেহেতু একই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূর মুবারক থেকে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মূল নূর মুবারক থেকে সৃষ্টি এবং স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক উনার বিষয়টি একই সম্মানিত হুকুম মুবারক উনার আওতাভুক্ত করে দিয়েছেন, তাই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফখর মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র না’লাইন শরীফ) উনাদের স্পর্শকৃত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শরাফাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ধূলি-বালি মুবারক)উনাদের পবিত্রতা, মর্যাদা মুবারকও সম্মানিত ও পবিত্র মূল ‘আরশে ‘আযীম মুবারক থেকে লক্ষ কোটি গুণ বেশি। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফখর মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র না’লাইন শরীফ) উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শরাফাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ধূলি-বালি মুবারক) পেলেও সম্মানিত ও পবিত্র মূল ‘আরশে ‘আযীম মুবারক আরো পবিত্রতা হাছিল করবেন, মর্যাদাবান হবেন এবং অন্য সকলের উপর ফখর করবেন। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উনাদের সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক উনার বিষয়টি কতো বেমেছাল, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান ও তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা এবং কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! উনারা হলেন- مُطَهَّرٌ (মুত্বহ্হার) তথা পূত-পবিত্র এবং مُطَهِّرٌ (মুত্বহ্হির) তথা পূত-পবিত্রতাদানকারী। সুবহানাল্লাহ!
আর এ কারণেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
اَنَّ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُوْلُ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ طَهَّرَهُمُ اللهُ مِنْ شَجَرَةِ النُّبُوَّةِ وَمَوْضِعِ الرِّسَالَـةِ وَمُـخْتَلِفِ الْمَلَائِكَةِ وَبَيْتِ الرَّحْمَةِ وَمَعْدِنِ الْعِلْمِ.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবসময় ইরশাদ মুবারক করতেন। আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে (আমাদেরকে) সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার বৃক্ষ, সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার স্থান, বিভিন্ন হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক (ইত্যাদি সমস্ত কিছু) থেকে পবিত্র রেখেছেন, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে দুররে মানছূর ৬/৬০৬, তাফসীরে ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩)
অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মুহতাজ এবং উনাদের সম্মানার্থে উনারা সম্মানিত এবং উনাদের প্রতিই উনারা দায়েমীভাবে রুজু। সুবহানাল্লাহ! ফলে উনারা সমস্ত কিছু থেকেই পবিত্র, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)। সুবহানাল্লাহ! কাজেই সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, বিভিন্ন হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক ইত্যাদি বরকতময় নি‘য়ামত মুবারক উনাদের প্রতি রুজু হওয়ার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কোন সুযোগ নেই। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কারণেই সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, সমস্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা, সম্মানিত রহমত মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারকসহ সমস্ত কিছুই ফযীলতপ্রাপ্ত হয়েছেন, সম্মানিত হয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় সিলসিলা মুবারক বর্তমান সময় পর্যন্ত যেভাবে জারী রয়েছেন এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত যেভাবে জারী থাকবেন-
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اَلنُّوْرِ الرَّابِعَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ فَاطِمَةَ الْكُبْرَى عَلَيْهَا السَّلَامُ) قَالَتْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كُلُّ بَنِـىْ اُمٍّ يَنْتَمُوْنَ اِلَـى عَصَبَةٍ اِلَّا وَلَدَ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اَلنُّوْرِ الرَّابِعَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ فَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) فَاَنَا وَلِـيُّهُمْ وَاَنَا عَصَبَتُهُمْ.
অর্থ: “উম্মু আবীহা আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, প্রত্যেক মায়ের সন্তান স্বীয় পিতার দিকে সম্পর্কিত হয় কিন্তু উম্মু আবীহা আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমাস সালাম উনারা ব্যতীত। আমিই উনাদের মহাসম্মানিত অবিভাবক এবং আমিই উনাদের মহাসম্মানিত পিতৃপুরুষ।” সুবহানাল্লাহ!(আল মু’জামুল কাবীর লিত ত্ববারনী ৩/৭৪, মুসনাদে আবী ইয়া’লা ১২/১০৯, মাজমাউয যাওয়ায়িদ ৯/৯৯, আল ফাতহুল কাবীর ৩/২২ ইত্যাদী)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ اَلْفَارُوْقِ الْاَعْظَمِ عَلَيْهِ السَّلَامُ (سَيِّدِنَا حَضْرَتْ عُمَرَ عَلَيْهِ السَّلَامُ) قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ كُلُّ بَنِـىْ اُنْثَى فَاِنَّ عَصَبَتَهُمْ لِاَبِيْهِمْ مَا خَلَا وَلَدَ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اَلنُّوْرِ الرَّابِعَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ فَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) فَاِنِّـىْ اَنَا عَصَبَتُهُمْ وَاَنَا اَبُوْهُمْ
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত ফারুকে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এ কথা মুবারক ইরশাদ মুুবারক করতে শুনেছি যে, প্রত্যেক মহিলার সন্তানদের সম্পর্ক স্বীয় পিতার দিকে হয়ে থাকে; কিন্তু উম্মু আবীহা আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমাস সালাম উনারা ব্যতীত। আমিই উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পিতৃপুরুষ এবং আমিই উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র অভিভাবক।” সুবহানাল্লাহ! (আল মু’জামুল কাবীর ৩/৭৩, মাজমাউয যাওয়ায়িদ ৪/২৬০, আল জামি‘উছ ছগীর ২/১৫৯, আল ফাতহুল কাবীর ২/৩০৪, জামি‘উল আহাদীছ ১৫/৩২৫, কানযুল ‘উম্মাল ১২/১৬ ইত্যাদি)
সুতরাং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বংশ মুবারক উনার মহাসম্মানিত লখতে জিগার মুবারক, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার দুইজন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের মাধ্যমে ক্বিয়ামত পর্যন্ত জারী থাকবেন। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ উনাদের উভয়ের মাধ্যমে ক্বিয়ামত পর্যন্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইতি শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা এবং হযরত আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিবেন। সুবহানাল্লাহ!
আর সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পূর্বে সম্মানিত ইমামত মুবারক উনার বিষয়টি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট হস্তান্তর মুবারক করেন। কিন্তু উনার সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক উনার বিষয়টি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান মুছান্না আলাইহিস সালাম উনার নিকট হস্তান্তরিত হন। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান মুছান্না আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক উনার বিষয়টি জরী থাকেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় সিলসিলা মুবারক জারী থাকেন। সুবহানাল্লাহ! আর সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক ও সম্মানিত ইমামত মুবারক উনার বিষয়টি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম যাইনুল আবিদীন আলাইহিস সালাম উনার নিকট সম্মানিত হস্তান্তর মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! যিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুর রবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিসেবে সকলের মাঝে মশহূর। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুর রবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাধ্যমে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক ও সম্মানিত ইমামত মুবারক উনাদের বিষয়টি জারী থাকেন তথা সম্মানিত ইমামত মুবারক এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় সিলসিলা মুবারক জারী থাকেন। সুবহানাল্লাহ! আর সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুর রবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক ও সম্মানিত ইমামত মুবারক উনাদের বিষয়টি হস্তান্তরিত হন উনার মহাসম্মানিত আওলাদ ইমামুল খামিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম মুহম্মদ বাক্বির আলাইহিস সালাম উনার নিকট। উনার পর হস্তান্তরিত হন উনার মহাসম্মানিত আওলাদ ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম জা’ফর ছাদিক্ব আলাইহিস সালাম উনার নিকট। উনার পর হস্তান্তরিত হন উনার মহাসম্মানিত আওলাদ ইমামুস সাবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম মূসা কাযিম আলাইহিস সালাম উনার নিকট। উনার পর হস্তান্তরিত হন উনার মহাসম্মানিত আওলাদ ইমামুছ ছামিন মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আলী রেযা আলাইহিস সালাম উনার নিকট। উনার পর হস্তান্তরিত হন উনার মহাসম্মানিত আওলাদ ইমামুত তাসি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম মুহম্মদ ত্বক্বী আলাইহিস সালাম উনার নিকট। উনার পর হস্তান্তরিত হন উনার মহাসম্মানিত আওলাদ ইমামুল ‘আশির মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আলী নক্বী আলাইহিস সালাম উনার নিকট। উনার পর হস্তান্তরিত হন উনার মহাসম্মানিত আওলাদ ইমামুল হাদী ‘আশার মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আসকারী আলাইহিস সালাম উনার নিকট। অতঃপর সম্মানিত ইমামত মুবারক নয়; শুধু সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক উনার বিষয়টি হস্তান্তরিত হন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আসকারী আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার নিকট। উনার পর উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার নিকট, উনার পর উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার নিকট, উনার পর উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার নিকট। এভাবে সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক উনার বিষয়টি বংশানুক্রমে হস্তান্তরিত হতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ!
আর সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক উনার বিষয়টিও হস্তান্তরিত হতে থাকেন উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান মুছান্না আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে। অর্থাৎ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান মুছান্না আলাইহিস সালাম উনার পর উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার নিকট, উনার পর উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার নিকট, উনার পর উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার নিকট। এভাবে ১১তম ইমাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আসকারী আলাইহিস সালাম উনার পর এসে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান মুছান্না আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে জারিকৃত সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক উনার বিষয়টি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ ইমামুর রবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম যাইনুল আবেদীন আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে জারিকৃত সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক উনার বিষয়টি একত্রিত হয়ে যান। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ ১১তম ইমাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আসকারী আলাইহিস সালাম উনার পর এসে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক আর সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক উনাদের বিষয়টি একত্রিত হয়ে যান। সুবহানাল্লাহ! যার কারণে ১১তম ইমাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আসকারী আলাইহিস সালাম উনার পর থেকে শুধু একটি মাত্র মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় সিলসিলা মুবারক উনার মাধ্যমে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক হস্তান্তর মুবারক হতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক উনাদের বিষয়টি ১১তম ইমাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আসকারী আলাইহিস সালাম উনার পর যেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনার নিকট এসে একত্রিত হয়েছেন, তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক উনার পূর্বে উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার নিকট তা হস্তান্তর মুবারক করেন। তিনি আবার উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার নিকট হস্তান্তর মুবারক করেন, তিনি আবার উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার নিকট হস্তান্তর মুবারক করেন। এভাবে বংশানুক্রমে একটি মাত্র মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় সিলসিলা মুবারক উনার মাধ্যমে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক হস্তান্তরিত হতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! এভাবে বংশানুক্রমে হস্তান্তরিত হতে হতে ৬০০ হিজরীর দিকে সেই সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক উনাদের বিষয়টি হস্তান্তরিত হন আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবূ বকর মুজাদ্দিদী আলাইহিস সালাম উনার নিকট। সুবহানাল্লাহ! যিনি সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত পূর্বপুরুষ আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মুবারক ইচ্ছা ভারতীয় উপমহাদেশকে বিশেষ করে বাংলাদেশকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত পরশ মুবারক উনার মাধ্যমে ধন্য করা। তাই সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আওলাদ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবূ বকর মুজাদ্দিদী আলাইহিস সালাম উনাকে হিন্দুস্তানের আজমীর শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখার জন্য বলেন। সুবহানাল্লাহ! আর এদিকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত খাজা মু‘ঈনুদ্দীন চিশতী আজমিরী সানজিরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম প্রচারের জন্য হিন্দুস্তানের আজমীর শরীফ-এ তাশরীফ মুবারক রাখার জন্য সম্মানিত নির্দেশ মুবারক প্রদান করেন। তখন আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবূ বকর মুজাদ্দিদী আলাইহিস সালাম তিনি এবং হযরত খাজা মু‘ঈনুদ্দীন চিশতী আজমিরী সানজিরী রহমতুল্লাহ আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারা উভয়ে অনেক সফর সঙ্গীসহ আজমীর শরীফ উনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা মুবারক দেন। তারপর সমরকন্দ, লাহোর, মুলতান হয়ে দিল্লী পৌঁছেন। পরবর্তীতে উনারা দীল্লি থেকে আজমীর শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখেন। সুবহানাল্লাহ!
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবূ বকর মুজাদ্দিদী আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মুবারক ইচ্ছা অনুযায়ী আজমীর শরীফ-এ থেকে যান এবং সেখানেই তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! আজমীর শরীফ-এ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ রয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! উনারই অধস্তন মহাসম্মানিত আওলাদ হচ্ছেন আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম সাইয়্যিদ মুহম্মদ আলাউদ্দীন আলাইহিস সালাম তিনি এবং আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম সাইয়্যিদ মুহম্মদ সালাহুদ্দীন আলাইহিস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা। সুবহানাল্লাহ! উনারা ১১ হিজরী শতকের শেষার্ধে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মুবারক ইচ্ছা অনুযায়ী বাংলাদেশ ও তার অধিবাসীদেরকে সম্মানিত রহমত-বরকত মুবারক, সম্মানিত নিয়ামত মুবারক এবং সম্মানিত হিদায়েত মুবারক দানে ধন্য করার জন্য বন্দর নগরী চট্টগ্রামে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! কিছুদিন চট্টগ্রামে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করার পর উনারা দুই ভাই সম্মানিত রহমত-বরকত মুবারক, সম্মানিত নিয়ামত মুবারক এবং সম্মানিত হিদায়েত মুবারক দানে সকলকে ধন্য করার জন্য নূরানীগঞ্জের (নারায়নগঞ্জের) সোনারগাঁও-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! উনারা পাথরে ভেসে এখানে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ! সেই সম্মানিত নিদর্শন মুবারক এখনও অক্ষতভাবে বিদ্যমান রয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম সাইয়্যিদ মুহম্মদ সালাহুদ্দীন আলাইহিস সালাম তিনি সোনারগাঁও এলাকায় সম্মানিত হিদায়েত মুবারক উনার কাজে ব্যস্ত থাকেন এবং সেখানেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! সেখানেই উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ রয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম সাইয়্যিদ মুহম্মদ আলাউদ্দীন আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত ও পবিত্র সোনারগাঁও-এ কিছু দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করার পর সম্মানিত ও পবিত্র সোনারগাঁও উনার অদূরে যে স্থানে সম্মানিত হিদায়েত মুবারক উনার কেন্দ্র গড়ে তুলেন উনার বর্তমান নাম মুবারক “সম্মানিত ও পবিত্র প্রভাকরদী শরীফ”। এই সম্মানিত ও পবিত্র প্রভাকরদী শরীফ উনার মাঝে রয়েছেন আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পূর্বপুরুষ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে কয়েকজন মহাসম্মানিত পূর্বপুরুষ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপাবিত্র রওযা শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম সাইয়্যিদ মুহম্মদ আলাউদ্দীন আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম সাইয়্যিদ মুহম্মদ মালাউদ্দীন আলাইহিস সালাম তিনি, উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম সাইয়্যিদ মুহম্মদ এলাহী বখস আলাইহিস সালাম তিনি, উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম সাইয়্যিদ মুহম্মদ ওয়ালী বখস আলাইহিস সালাম তিনি, উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম তিনি, যিনি আমাদের মহাসম্মানিত হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! আর উনারই মহাসম্মানিত কোল মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক আনেন আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, সুলত্বানুন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
এভাবে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং সাইয়্যিদুন হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক বংশানুক্রমে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট হস্তান্তর মুবারক হন। সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লঅহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা এবং উনার মহাসম্মানিত পূর্বপুরুষ আলাইহিমুস সালাম উনারা প্রত্যেকেই হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের যত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক ও খুছূছিয়াত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক রয়েছেন, সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক ও খুছূছিয়াত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন উনারা। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একক ও অদ্বিতীয় হাক্বীক্বী কায়িম মাক্বাম। সুবহানাল্লাহ! আর উনার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা হচ্ছেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের হাক্বীক্বী ক্বায়িম মাক্বাম। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম তিনি এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আব্বা আলাইহিস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আব্বা-আম্মা আলাইহিমাস সালাম উনাদের হাক্বীক্বী ক্বায়িম মাক্বাম। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন আমাদের মহাসম্মানিতা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন, মহাসম্মানিতা হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের হাক্বীক্বী ক্বায়িম মাক্বাম। সুবহানাল্লাহ! নাক্বীবাতুল উমাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত শাহযাদী ঊলা আলাইহাস সালাম তিনি এবং নিবরাসাতুল উমাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত শাহযাদী ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা হচ্ছেন, মহাসম্মানিত হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের হাক্বীক্বী ক্বায়িম মাক্বাম। সুবহানাল্লাহ! খলীফাতুল উমাম আল মানছূর সাইয়্যিদুনা হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন, মহাসম্মানিত হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের হাক্বীক্বী ক্বায়িম মাক্বাম। সুবহানাল্লাহ!
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সিবতুন ও সিবত্বতুন আলাইহিমুস সালাম ও আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সিবতুন ও সিবত্বতুন (নাতী-নাতনী) আলাইহিমুস সালাম ও আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের হাক্বীক্বী ক্বায়িম মাক্বাম। সুবহানাল্লাহ! এবং উনার মহাসম্মানিত দামাদ আলাইহিমাস সালাম উনারা হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত দামাদ (জামাতা) আলাইহিমুস সালাম উনাদের হাক্বীক্বী ক্বায়িম মাক্বাম। সুবহানাল্লাহ!
এখানে একটি বিষয় বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, যেহেতু ১১তম ইমাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আসকারী আলাইহিস সালাম উনার পর এসে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান মুছান্না আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে জারিকৃত সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক উনার বিষয়টি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুর রবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাধ্যমে জারিকৃত সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক উনার বিষয়টি একত্রিত হয়ে গেছেন। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ ১১তম ইমাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আসকারী আলাইহিস সালাম উনার পর এসে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক আর সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক উনাদের বিষয়টি একত্রিত হয়ে গেছেন। সুবহানাল্লাহ! যার কারণে ১১তম ইমাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আসকারী আলাইহিস সালাম উনার পর থেকে শুধু একটি মাত্র মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় সিলসিলা মুবারক উনার মাধ্যমে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত কুরবত মুবারক এবং সম্মানিত মূল নিয়ামত মুবারক হস্তান্তর মুবারক হতে হতে বর্তমানে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট হস্তান্তরিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় সিলসিলা মুবারক ব্যতীত অন্য কোনো সিলসিলায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা সম্মানিত তাশরীফ মুবারক আনেননি এবং ভবিষ্যতেও এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় সিলসিলা মুবারক ব্যতীত অন্য কোনো সিলসিলায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা সম্মানিত তাশরীফ মুবারক আইবনে না। সুতরাং এ বিষয়টি দিবালোকের ন্যায় অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে, যেহেতু এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় সিলসিলা মুবারক ব্যতীত অন্য কোনো সিলসিলার মাধ্যমে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা সম্মানিত তাশরীফ মুবারক আনেনি এবং ভবিষ্যতেও এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় সিলসিলা মুবারক ব্যতীত অন্য কোনো সিলসিলায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা সম্মানিত তাশরীফ মুবারক আইবনে না, তাই এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় সিলসিলা মুবারক উনার মধ্যেই হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করবেন। সুবহানাল্লাহ!
আর সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারই মুবারক বংশধর আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভূক্ত হবেন হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম তিনি উনার যামানার নির্যাতিত-নিপীড়িত মানব জাতির জন্য সাইয়্যিদুল খুলাফা, আবুল খুলাফা, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ থেকে বিশেষ হাদিয়া বা উপহার মুবারক হিসেবে প্রদত্ত। তাই ‘আস সাফফাহ’ সম্মানিত লক্বব মুবারক উনার একখানা সম্মানিত অর্থ মুবারক হচ্ছেন, ‘সর্বশ্রেষ্ঠ দাতা’ আর ‘মাহদী’ শব্দ মুবারক উনার একটি অর্থ হচ্ছে, ‘হাদিয়া বা উপহার হিসেবে প্রদত্ত’। সুবহানাল্লাহ!
এভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় সিলসিলা মুবারক বর্তমান সময় পর্যন্ত জারী রয়েছেন এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত জারী থাকবেন। সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য যে, এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় সিলসিলা মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে যে সকল সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিয়েছেন এবং সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিবেন উনাদের প্রত্যেক্যের মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহিন্নাস সালাম উনারা এবং মহাসম্মানিতা যাওজাতুম মুকররমাহ আলাইহিন্নাস সালাম উনারা প্রত্যেকেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে সংশ্লিষ্ট রাত মুবারক উনাদের মর্যাদা-মর্তবা, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক লক্ষ কোটি শবে বরাত, শবে ক্বদরের চেয়েও লক্ষ কোটি গুণ বেশি-
একমাত্র যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য ফরযে আইন হচ্ছে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সম্মানিত মুহব্বত মুবারক করা, উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া, উনাদের সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, উনাদের সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করা। সুবহানাল্লাহ!
এ প্রসঙ্গে স্বয়ং যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
قُلْ لَّاۤاَسْاَلُكُمْ عَلَيْهِ اَجْرًا اِلَّا الْمَوَدَّةَ فِى الْقُرْبـٰى وَمَنْ يَّقْتَرِفْ حَسَنَةً نَّزِدْ لَهٗ فِيْهَا حُسْنًا اِنَّ اللهَ غَفُوْرٌ شَكُوْرٌ.
অর্থ: “(আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি সমস্ত বান্দা-বান্দীদের, উম্মতদের, তামাম কায়িনাতবাসী সবাইকে) বলে দিন যে, তোমাদের নিকট কোনো বিনিময় চাওয়া হচ্ছে না, প্রতিদান চাওয়া হচ্ছে না। আর চাওয়াটাও স্বাভাবিক নয়; তোমাদের পক্ষে দেয়াও কস্মিনকালে সম্ভব নয়। বরং তোমাদের জন্য এটা চিন্তা করাটাও কাট্টা কুফরী হবে। তবে তোমরা যদি ইহকাল ও পরকালে হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল করতে চাও, যিনি খালিক্ব¡ মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের হাক্বীক্বী রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক লাভ করতে চাও, তাহলে তোমাদের জন্য দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে, ফরয হচ্ছে, আমার নিকটাত্মীয় তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সম্মানিত মুহব্বত মুবারক করা, সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া, উনাদের সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক বর্ণনা করা। সুবহানাল্লাহ! আর যে ব্যক্তি কোনো নেক কাজ করে আমি তার সেই নেকী উনাকে দ্বিগুণ-বহুগুণে বৃদ্ধি করে দিয়ে থাকি। নিশ্চিয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ ক্ষমাশীল এবং সর্বোত্তম প্রতিদান দানকারী।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা শূরা শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২৩)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-
عَنْ اِمَامِ الْاَوَّلِ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ (سَيِّدِنَا حَضْرَتْ عَـلِـىٍّ عَلَيْهِ السَّلَامُ) قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلنُّجُوْمُ اَمَانٌ لِّاَهْلِ السَّمَاءِ اِذَا ذَهَبَتِ النُّجُوْمُ ذَهَبَ اَهْلُ السَّمَاءِ وَاَهْلُ بَيْتِـىْ اَمَانٌ لِّاَهْلِ الْاَرْضِ فَاِذَا ذَهَبَ اَهْلُ بَيْـتِـىْ ذَهَبَ اَهْلُ الْاَرْضِ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তারকারাজী হচ্ছে আসমানবাসীর জন্য নিরাপত্তাদানকারী। যখন তারকারাজী বিদায় নিবে, তখন আসমানবাসীরাও ধ্বংস হয়ে যাবে। আর আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা হচ্ছেন যমীনবাসীর জন্য, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য নিরাপত্তাদানকারী। যখন আমার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বিদায় ইিবনে, সাথে সাথে সমস্ত যমীনবাসী, সমস্ত কায়িনাতবাসী সকলেই ধ্বংস হয়ে যাবে। অর্থাৎ ক্বিয়ামত সংঘটিত হয়ে যাবে।” সুবহানাল্লাহ! (ফাদ্বায়িলুছ ছাহাবাহ ২/৬৭১, আছ ছওয়ায়িকুল মুহরিক্বহ ২/৬৭৫, আল মু’জাম ১/৪০৪, মিরক্বাত শরীফ ৯/৩৯৮৮, যাখায়িরুল ‘উক্ববাহ ১/১৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৭)
অপর বর্ণায় এসেছেন-
عَنْ حَضْرَتْ سَلَمَةَ بْنِ الْاَكْوَعِ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلنُّجُوْمُ اَمَانٌ لِّاَهْلِ السَّمَاءِ وَاَهْلُ بَيْتِـىْ اَمَانٌ لِّاُمَّتِـىْ.
অর্থ: “হযরত সালামাহ ইবনে আকওয়া’ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তারকারাজী হচ্ছে আসমানবাসীর জন্য নিরাপত্তাদানকারী। আর আমার মহাসম্মানিত ও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা হচ্ছেন আমার সমস্ত উম্মতের জন্য নিরাপত্তাদানকারী।” সুবহানাল্লাহ! (মুছান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ, মুসাদ্দাদ, আবূ ইয়া’লা, হাকিম, তিরমিযী, ত্ববারনী, ইবনে ‘আসাকির, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৬, যাখায়িরুল ‘উক্ববাহ ১/১৭)
অপর বর্ণনায় রয়েছেন,
اَلنُّجُوْمُ اَمَانٌ لِّاَهْلِ السَّمَاءِ وَاَهْلُ بَيْتِـىْ اَمَانٌ لِّاَهْلِ الْاَرْضِ فَاِذَا ذَهَبَ اَهْلُ بَيْـتِـىْ ذَهَبَ اَهْلُ الْاَرْضِ.
অর্থ: “তারকারাজী আসমানবাসীর জন্য নিরাপত্তাদানকারী। আর আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা হচ্ছেন যমীনবাসীর জন্য, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য নিরাপত্তাদানকারী। যখন আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বিদায় নিবেন, সাথে সাথে সমস্ত যমীনবাসী, তামাম কায়িনাতবাসী সকলেই ধ্বংস হয়ে যাবে। অর্থাৎ ক্বিয়ামত সংঘটিত হয়ে যাবে।” সুবহানাল্লাহ!
মূলত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা হচ্ছেন সমস্ত কায়িনাতের মূল এবং মালিক। সুবহানাল্লাহ! উনাদের মুবারক সম্মানার্থেই সমস্ত কায়িনাত টিকে রয়েছে এবং অনন্তকাল টিকে থাকবে। সুবহানাল্লাহ! উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের উপর ফরযে আইন। সুবহানাল্লাহ! উনাদের সম্মানার্থে সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলে সর্বপ্রকার সম্মানিত নিয়ামত মুবারক হাছিল করেছে, হাছিল করছে এবং অনন্তকাল হাছিল করতেই থাকবে। সুবহানাল্লাহ! উনাদের সম্মানার্থেই এই উম্মত পবিত্র শবে বরাত, শবে ক্বদরসহ সমস্ত প্রকার বিশেষ রাত মুবারক লাভ করতে পেরেছে। সুবহানাল্লাহ! তাহলে সেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে সংশ্লিষ্ট যে সকল মহাসম্মানিত বিশেষ রাত্রি মুবারক রয়েছেন, সেই সকল মহাসম্মানিত বিশেষ রাত্রি মুবারক উনাদের ফযীলত মুবারক কতটুকু? মূলত, সেই সকল মহাসম্মানিত বিশেষ রাত্রি মুবারক উনাদের মর্যাদা-মর্তবা, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক লক্ষ কোটি শবে বরাত, শবে ক্বদরের চেয়েও লক্ষ কোটি গুণ বেশি। সুবহানাল্লাহ!
কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন, পবিত্র শবে বরাত ও শবে ক্বদরের রাতে খাছ রহমত বর্ষিত হয়। উক্ত খাছ রহমত মুবারক হরিণের উপর পরলে মৃগনাভী পয়দা হয়, মাছের উপর পরলে আম্বর পয়দা হয়, ঝিনুকের উপর পরলে মুক্তা পয়দা হয়, সাপের উপর পরলে মণি পয়দা হয় অর্থাৎ যেই প্রাণীর উপর উক্ত বিশেষ দিনে রহমত মুবারক বর্ষিত হয়, সেই প্রাণীটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য ম-িত হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ! আর জীন-ইনসানের উপর পরলে জীন-ইনসান ওলীআল্লাহ হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!
যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে সংশ্লিষ্ট মহাসম্মানিত বিশেষ রাত্রি মুবারক-এ যদি কারো উপর সম্মানিত খাছ রহমত মুবারক বর্ষিত হয়, তাহলে সে কী নিয়ামত মুবারক লাভ করবে? মূলত, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে সংশ্লিষ্ট মহাসম্মানিত বিশেষ রাত্রি মুবারক-এ কারো উপর যদি খাছ রহমত মুবারক বর্ষিত হয়, তাহলে নিঃসন্দেহে সে তো সর্বোচ্চ শ্রেণীর ওলীআল্লাহ হবেই, শুধু তাই নয়, সে ব্যক্তি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের আখাছ্ছুল খাছ তা‘য়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক হাছিল করবে, উনাদের খাছ নিয়ামত মুবারক লাভে ধন্য হবে। সুবহানাল্লাহ! আর একজন বান্দা-বান্দী, উম্মত, জিন-ইনসানের জন্য এর চেয়ে বড় আর দ্বিতীয় কোন নিয়ামত মুবারক নেই। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সংশ্লিষ্ট রাত্রি মুবারক উনাদের শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে সংশ্লিষ্ট মহাসম্মানিত বিশেষ বিশেষ রাত্রি মুবারক-এ সারা রাত জেগে উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার, উনাদের সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করার এবং উনাদের সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করার মাধ্যমে আখাছ্ছুল খাছ রহমত মুবারক লাভ করে উনাদের হাক্বীক্বী মুহব্বত-মা‘রিফত, নিসবত-কুরবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করার, উনাদের বিশেষ নিয়ামত মুবারক হাছিল করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
0 Comments:
Post a Comment