প্রায় সাড়ে ১৪০০ বছর পর আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদহূ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুস সালাম মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে র্বণতি اِسْتَوٰى (ইস্তাওয়া) শব্দ মুবারক উনার হাক্বীক্বত মুবারক প্রকাশ-পর্ব-৬৭
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاَمَّا بِنِعْمَةِ رَبِّكَ فَحَدِّثْ
অর্থ: “আর আপনার রব তা‘য়ালা মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে যেই সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছেন, সেই সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক সম্পর্কে আপনি বর্ণনা করুন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা দ্বুহা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১১)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যেমন মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ওহী মুবারক অনুযায়ী প্রাপ্ত নি‘য়ামত মুবারক সম্পর্কে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের মাঝে বর্ণনা মুবারক করেছেন, ঠিক একইভাবে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুনড়বাত মুবারক আদায়ের লক্ষ্যে উনার একক ও অদ্বিতীয় হাক্বীক্বী ক্বায়িম মাক্বাম, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছামাদ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের সম্মানিত ইচ্ছা মুবারক অনুযায়ী উনাদের পক্ষ থেকে বিশেষভাবে প্রাপ্ত নি‘য়ামত মুবারক সম্পর্কে কখনও কখনও কিছু কিছু বিষয় মুরীদদের মাঝে, কায়িনাতবাসীর মাঝে বর্ণনা মুবারক করে সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলকে ধন্য করে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! তেমনিভাবে ১৪৪২ হিজরী শরীফ উনার ৯ই শাওওয়াল শরীফ লাইলাতুস সাবত শরীফ (শনিবার রাত্রে) একটি বিশেষ বিষয় বর্ণনা মুবারক করে সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলকে ধন্য করেছেন। সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! যা সৃষ্টি জগতের কারো জানা ছিলো না।
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার ৬ জায়গায় অর্থাৎ সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আ’রাফ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৪, সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ইঊনুস শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত ৩, সম্মানিত ও পবিত্র সূরা র’দ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২, সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ফুরক্বান শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৯, সম্মানিত ও পবিত্র সূরা সিজদাহ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৪ এবং সম্মানিত ও পবিত্র সূরা হাদীদ শরীফ উনার ৪ নং সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ-এ ثمَُّ اسْتَوىٰ عَلَى الْعَرْشِ (ছুম্মাস্তাওয়া‘আলাল ‘আরশ) উল্লেখ রয়েছেন। আর সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ত্বহা শরীফ উনার ৫ নং সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ-এ اَلرَّحْمٰنُ عَلَى الْعَرْشِ اسْتَوىٰ (আর রহমানু ‘আলাল ‘আরশিস্তাওয়া) উল্লেখ রয়েছেন। এ সকল জায়গায় اِسْتَوىٰ (ইস্তাওয়া) শব্দের অর্থ কি হবে সৃষ্টির কারো জানা ছিলো না, কুল-কায়িনাতের কারো জানা ছিলো না।
এ সম্পর্কে মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছামাদ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “হযরত ইমামে আ’যম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনিসহ আরো বড় বড় ইমাম মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদেরকে সুওয়াল করা হয়েছিলো যে, اِسْتَوىٰ (ইস্তাওয়া) শব্দের অর্থ কি? উনারা বলেছেন যে, اِسْتَوىٰ (ইস্তাওয়া) শব্দের শাব্দিক অর্থ আমাদের জানা রয়েছে, ‘উপবেশন করা, বরাবর হওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি’। কিন্তু মহান আল্লাহ পাক তিনি কিভাবে اِسْتَوىٰ (ইস্তাওয়া) হয়েছেন, এটা আমাদের জানা নেই।”
মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছামাদ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, ‘ اِسْتَوىٰ (ইস্তাওয়া) শব্দের অর্থ কি হবে সৃষ্টির কারো জানা নেই,কুল-কায়িনাতের কারো জানা নেই।’
মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছামাদ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কায়িনাতবাসীকে ইলিম মুবারক উনার গুরুত্ব অনুধাবনের লক্ষ্যে ১৪৪২ হিজরী শরীফ উনার ৮ই শাওওয়াল শরীফ লাইলাতুল জুমু‘আহ শরীফ (জুমু‘আহ্বার রাত) ইরশাদ মুবারক করেন, “মাসআলার জওয়াব দিলে, ফতওয়া দিলে টাকা লাগবে না? হ্যাঁ, টাকা দিতে হবে। এই যে ১৪০০ বছরে اِسْتَوىٰ (ইস্তাওয়া) শব্দের অর্থ কি হবে, কেউ এটা ফায়ছালা দিতে পারলো না। আমি দিবো; টাকা দিতে হবে না? ১৪০০ বছরে ১৪০০ কোটি টাকা দিতে হবে। তাহলে আমি বলবো।” সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-
عَنْ حَضْرَتْ اَلنُّعْمَانِ بْنِ بَشِيْرٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ
اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلتَّحَدُّثُ بِنِعْمَةِ اللهِ شُكْرٌ وَّتَرْكُهَا كُفْرٌ وَّمَنْ لَّ
يَشْكُرِ الْقَلِيْلَ لَ يَشْكُرِ الكَثِيْرَ وَمَنْ لَّ يَشْكُرِ النَّاسَ لَ يَشْكُرِ اللهَ.
অর্থ: “হযরত নু’মান ইবনে বশীর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে প্রাপ্ত সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক সম্পর্কে বর্ণনা করা শুকরিয়া হিসেবে গণ্য এবং বর্ণনা না করা কুফরী। যে ব্যক্তি সামান্য সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক পেয়ে শুকরিয়া আদায় করে না, সে অধিক সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক পেয়েও শুকরিয়া আদায় করবে না। যে ব্যক্তি মানুষের শুকরিয়া আদায় করে না, সে মহান আল্লাহ পাক উনারও শুকরিয়া আদায় করতে পারবে না।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (শু‘য়াবুল ঈমান শরীফ, মুসনাদে আহমদ, আত ত্ববারনী, মাজমা‘উয যাওয়ায়িদ, মুসনাদে বায্যার, কাশফুল খফা, আল ফাতহুল কাবীর ইত্যাদি)
প্রায় সাড়ে ১৪০০ বছর পর মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের পক্ষ থেকে বিশেষভাবে ইলিম মুবারক প্রাপ্ত হয়ে মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছামাদ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত اِسْتَوىٰ (ইস্তাওয়া) শব্দ মুবারক উনার হাক্বীক্বত মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! যেই বিষয়ে সৃষ্টির কারো কোনো ইলিম ছিলো না, কুল-কায়িনাতের কারো কোনো ইলিম ছিলো না। কেউ কখনো জানতোও না। তাহলে এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের সাথে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমতুল্লিল আলামীন, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতো বেমেছাল মহাসম্মানিত তা‘য়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক রয়েছেন, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এক কথায় তিনি শুধু যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী হচ্ছেন তিনি। সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! যার কারণে একমাত্র উনার পক্ষেই সম্ভব হয়েছে اِسْتَوىٰ (ইস্তাওয়া) শব্দ মুবারক উনার হাক্বীক্বত মুবারক প্রকাশ করা। সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
তাই প্রত্যেক মুরীদের জন্য ফরয হচ্ছে, এই বিশেষ নি‘য়ামত মুবারক সম্পর্কে বেশি বেশি আলোচনা করা, বর্ণনা করা। সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এটা হচ্ছে শুকরিয়া আদায়ের বিশেষ মাধ্যম। আমরা শুকরিয়া প্রকাশার্থে এবং তা‘য়াল্লুক্ব-নিসবত ও রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক লাভের প্রত্যাশায় আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমতুল্লিল আলামীন, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি اِسْتَوىٰ (ইস্তাওয়া) শব্দ মুবারক উনার যে হাক্বীক্বত মুবারক প্রকাশ করেছেন, এ বিষয়ে বিস্তারিত লেখা কুল-কায়িনাতবাসীর নিকট তুলে ধরবো। ইনশাআ মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! শুরুতে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাত মুবারক-এ বুছা দিয়ে ইলিম-কালাম, দয়া-দান, ইহসান মুবারক, ফয়েয-তাওয়াজ্জুহ এবং তাওফীক্ব ভিক্ষা চাচ্ছি। আমীন!
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহহির, আছ ছমাদ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ১৪৪২ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৯ই শাওওয়াল শরীফ লাইলাতুস সাব্ত শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ফালইয়াফরহূ শরীফ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল মুবারক-এ ইরশাদ মুবারক করেন, “এখানে আলমে খালক্ব ও আলমে আমর দুইটি বিষয় রয়েছে। আলমে খালক্ব হচ্ছে- যেটা আরশে আযীমের নীচে। অর্থাৎ তাহ্তাছ ছারা বা মাটির নি¤ড়বতম স্তর থেকে আরশে আযীম পর্যন্ত হচ্ছে আলমে খালক্ব। এটা মহান আল্লাহ পাক তিনি ছয় ধাপে সৃষ্টি মুবারক করেছেন। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
اَللهُ الَّذِىْ خَلَقَ السَّموٰتِٰ وَالَْرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِىْ سِتَّةِ اَيَّمٍ
অর্থ: “সেই খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক যিনি আসমানসমূহ (সাত আসমান) এবং সমস্ত যমীন (সাত যমীন) এবং উভয়ের মাঝে যা কিছু আছে, এ সমস্ত কিছু ছয় দিনে তথা ছয় ধাপে সৃষ্টি মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা সিজদাহ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৪)
আবার আরশে আযীম থেকে ঠিক সম উচ্চতা হচ্ছে আলমে আমর। অর্থাৎ তাহতাছ ছারা থেকে আরশে আযীম পর্যন্ত যে পরিমাণ জায়গা; ঠিক আরশে আযীম থেকে সেই পরিমাণ উচ্চতা হচ্ছে আলমে আমর। যা খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হুকুম মুবারক হওয়া মাত্রই সৃষ্টি হয়েছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেছেন, كُنْ فَيَكُوْنُ অর্থ: ‘হও, হয়ে গেছে।’ সুবহানাল্লাহ!
এখন এখানে যেটা বলা হচ্ছে- ثمَُّ اسْتَوىٰ عَلَى الْعَرْشِ (ছুম্মাস্ তাওয়া‘আলাল ‘আরশ) মানুষ তো আসলে ফিক্বির করেনি। অর্থটা খুব সহজ।মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
هُوَ الَّذِىْ خَلَقَ السَّموٰتِٰ وَالَْرْضَ فِىْ سِتَّةِ اَيَّمٍ ثمَُّ اسْتَوىٰ عَلَى الْعَرْشِ
অর্থ: “তিনি সেই মহান আল্লাহ পাক যিনি আসমান-যমীন ৬ দিনে অর্থাৎ ৬ ধাপে সৃষ্টি করেছেন। (কারণ দিন তো তখন ছিলো না।) ৬ ধাপে আসমান-যমীন সৃষ্টি করার পর আরশে ‘আযীমকে আলমে খালক্বের সর্বোচ্চ স্থানে স্থাপন করে আলমে খ¦লক্ব ও আলমে আমরের মধ্যে পার্থক্য সূচনা করে দিয়েছেন।” (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)
এখন আরশে ইস্তাওয়ার অর্থ অনেক লেখেছে- উপবেশন করা, বরাবর হওয়া ইত্যাদি। মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের সাথে এটার কোনো সম্পর্ক নেই। যেমন- মকতুবাত শরীফ-এ লেখা হয়েছে- “মহান আল্লাহ পাক তিনি ‘আল্লাহ’ শব্দ মুবারক থেকেও পবিত্র।” ঠিক মহান আল্লাহ পাক তিনি ইস্তাওয়া থেকেও পবিত্র। আসলে ইস্তাওয়ার সাথে মহান আল্লাহ পাক উনার কোনো সম্পর্ক নেই। মূল বিষয় হচ্ছে, মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, আমি ৬ ধাপে আসমান-যমীন সৃষ্টি করার পর আরশে ‘আযীমকে আলমে খ¦লক্বের সর্বোচ্চ স্থানে স্থাপন করে আলমে খ¦লক্ব ও আলমে আমরের মধ্যে পার্থক্য সূচনা করে দিয়েছি। এটা হচ্ছে ইস্তাওয়া। সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! অন্য কোনো অর্থ না। ‘আমি ইস্তাওয়া করবো। আমি উপরে উঠবো, বসবো কেনো?’ মহান আল্লাহ পাক তিনি তো ছমাদ বেনিয়াজ, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি বেনিয়াজ।
বুঝতে পারছো কি আমার কথা? ‘আমি ৬ ধাপে আসমান-যমীন সৃষ্টি করার পর আরশে ‘আযীমকে আলমে খালক্বের সর্বোচ্চ স্থানে স্থাপন করে আলমে খালক্ব ও আলমে আমরের মধ্যে পার্থক্য সূচনা করে দিয়েছি।’ এটা হচ্ছে ইস্তাওয়া। সুবহানা মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
যেমন- মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
وَالْجِبَالَ اَوْتَدًا
অর্থ: “পাহাড়কে আমি পেরেক হিসেবে স্থাপন করেছি।” যমীনকে স্থীর করার জন্য। আর আলমে খালক্ব ও আলমে আমরের পার্থক্য সূচনা করার জন্য আলমে খালক্বের সর্বোচ্চে আরশে আযীমকে আমি স্থাপন করে দিয়েছি। সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! বুঝতে পারলে অর্থ? এখন কি অর্থ বলতে হবে? কি অর্থ করবে? যেটা করেছি। যেটা বলা হয়েছে। জান্নাত কোথায় আছে? বলো দেখি?
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহহির, আছ ছমাদ, মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “এই মাসের ৩ তারীখ অর্থাৎ ১৪৪২ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৩রা শাওওয়াল শরীফ ইয়াওমুল আহাদ চাশতের সময় আমি দেখলাম- যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদের দুইজনকে। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) উনারা নিজ থেকে আমাকে জানিয়েছেন। আমি খুঁজতেছিলাম যে, اِسْتَوىٰ (ইস্তাওয়া) শব্দের অর্থ কিভাবে? কি হবে? কিন্তু ঐ সময় আমি কোনো কিছু জিজ্ঞাসা করিনি। ঐ সময় আমি জিজ্ঞাসা করিনি। আমি আগেই খুঁজতেছিলাম। এগুলো তো বললে, আর পাওয়া যায় না; অনেক মুরাকাবা-মুশাহাদা করতে করতে করতে করতে যদি কোনো সময় পাওয়া যায়। তখন আমাকে উনি জানালেন, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন যে, ‘আসলে اِسْتَوىٰ (ইস্তাওয়া) শব্দের অর্থ এরা যা করে, এটা কোনোটাই এটার সাথে মিল নেই। এরা যা বলে, এটার সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা তো এটার মুহতাজ না। প্রকৃপক্ষে ইস্তাওয়া হচ্ছে- আলমে খালক্ব আর আলমে আমরের মধ্যে একটা পার্থক্য সূচনা করা। আলমে খালক্বের সর্বোচ্চে আরশে আযীমকে স্থাপন করা হয়েছে।’ পাহাড়কে যেমন পেরেক হিসেবে দেওয়া হয়েছে, এরকম দেয়া হয়েছে। আরশে আযীম সম্মানিত। ঠিকই আছে; জিন-ইনসানের জন্য। মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের জন্য তো সেটা না। উনারা নিজের থেকে আমাকে এটা বললেন যে, ‘বিষয়টা হচ্ছে, এরকমই। এটা ইস্তাওয়া। আসলে অর্থ হচ্ছে- আসমান-যমীন সৃষ্টি করার পর আরশে ‘আযীমকে আলমে খালক্বের সর্বোচ্চ স্থানে স্থাপন করে আলমে খালক্ব ও আলমে আমরের মধ্যে পার্থক্য সূচনা করা। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) এখন মহান আল্লাহ পাক উনি এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি অর্থাৎ উনারা এগুলোর মুহতাজ না। এটা ভাষাগত মহান আল্লাহ পাক তিনি প্রকাশ করছেন। সেটা ভাষাগতভাবেই এরকম।” (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ১৪৪২ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৯ই শাওওয়াল শরীফ লাইলাতুস সাব্ত শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘ফালইয়াফরহূ শরীফ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল মুবারক-এ আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “জানড়বাতের ছাদ হলো আরশে আযীমের নীচে। জানড়বাত আরশে আযীমের নীচে। সবই আরশে আযীমের নীচে। আরশে আযীমকে আলমে খ¦লক্বের উপর স্থাপন করা হয়েছে। আরশে ‘আযীমের উপর হলো আলমে আমর আর এর নীচে হলো আলমে খালক্ব। এর মধ্যে আমি (মহান আল্লাহ পাক আরশে আযীমকে) ইস্তাওয়া করেছি। আমি ইস্তাওয়া হবো কেন্? আমি তো বেনিয়াজ ছমাদ, আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি ছমাদ। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) ওখানে স্থাপন করে দিয়েছি। দিয়ে এর মধ্যে আমি পার্থক্য সূচনা করে দিয়েছি। আলমে আমর উপরে, আলমে খালক্ব নীচে। আলমে খ¦লক্বের শেষ স্থানে হলো আরশে আযীম। সর্বোচ্চ স্থানে। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) এটা মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে কোনো সম্পর্ক নেই, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা বলেছেন, ‘আমাদের সথে اِسْتَوَى (ইস্তাওয়া)-এর কি সম্পর্ক আছে? আমরা তো এর মুহ্তাজ না। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) মানুষ অর্থ করে- উপবেশন করা, বরাবর হওয়া, সমান হওয়া। এটা কোনো অর্থ না। আরশে ‘আযীমকে আলমে খালক্বের সর্বোচ্চ স্থানে স্থাপন করে আলমে খালক্ব ও আলমে আমরের মধ্যে পার্থক্য সূচনা করে দেওয়া হয়েছে, সীমানা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।’ (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)
এখন তোমরা বাংলা অর্থ যেভাবে করো। বুঝতে পারতেছো কি আমার কথা মুবারক? যেমন- ৬ ধাপে আসমান-যমীন সৃষ্টি করা হলো। সৃষ্টি করার পরে এই যে আলমে আমর এখান থেকে। এই জাগাটার মধ্যে আরশে আযীম, সর্বোচ্চে। এর নীচে সব কিছ্-ু আলমে খালক্বের। আবার ঠিক আরশে আযীমের উপরে হলো আলমে আমর। এখন ইস্তাওয়ার অর্থ হলো এটা। কুদরত মুবারক উনার অর্থ আবার পরে এক সময় বলা হবে। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) এখন ইস্তাওয়া অর্থ- উপবেশন করা, বরাবর হওয়া, সমান হওয়া অনেক অর্থ। আসলে কোনো অর্থই এগুলি ই না।
আল্লাহুছ ছমাদ, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ছমাদ, বেনিয়াজ। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) উনাদের সাথে কোনো সম্পর্ক নাই। আসলে উনারা সৃষ্টি করেছেন। আর আরশে আযীম- যেহেতু এখান থেকে মূল বিষয়গুলো জারি হয়, সে হিসেবে আরশে আযীম মহান বা বড়, মর্যাদা সম্পনড়ব। কিন্তু মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের কাছে আরশে আযীম কোনো বিষয় না। এখন বুঝার বিষয় হচ্ছে যে, অর্থ বুঝলে তো সহজ হয়ে গেলো, না বুঝলে তো অনেক কঠিন। যার জন্য এটা কেউ মিলাতে পারেনি। ইস্তাওয়া অর্থটা কি হবে? কোথায় হবে? কিভাবে হবে? এখন বুঝতে পেরেছো ইস্তাওয়ার অর্থ?”
ইস্তাওয়া সর্ম্পকে হযরত ইমাম মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদের অভমিত
আল্লামা হযরত ইমাম আবূ আব্দুল্লাহ মুহম্মদ ইবনে আহমদ ইবনে আবূ বকর ইবনে ফাররাহ্ আনছারী খাযরাজী শামসুদ্দীন কুরতুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিছাল শরীফ ৬৭১ হিজরী শরীফ) তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘তাফসীরে কুরতুবী শরীফ’ উনার মধ্যে বলেন,
وَلَمْ ينُْكِرْ اَحَدٌ مِنَ السَّلَفِ الصَّالِحِ اَنَّهٗ اسْتَوىٰ عَلٰى عَرْشِهٖ حَقِيْقَةً.
وَخُصَّ الْعَرْشُ بِذٰلِكَ لَِنَّهٗ اَعْظَمُ مَخْلُوْقَاتِهٖ وَاِنمََّا جَهِلُوْا كَيْفِيَّةَ الِسْتِوَاءِ لَ تعُْلَمُ حَقِيْقَتُهٗ
অর্থ: “সালফে ছালেহীন অর্থাৎ পূর্ববর্তী সমস্ত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা প্রত্যেকেই এ বিষয়ে স্বীকৃতি দিয়েছেন যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার আরশে আযীম মুবারক-এ হাক্বীক্বীভাবে ইস্তাওয়া হয়েছেন। এর মাধ্যমে আরশে আযীম বৈশিষ্ট্যম-িত হয়েছে। কেননা আরশে আযীম হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার মাখলূকাতের মধ্যে সবচেয়ে সুমহান। ইস্তাওয়ার কাইফিয়্যাত সম্পর্কে ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা প্রত্যেকেই অজ্ঞ অর্থাৎ উনাদের কারো এ বিষয়ে কোনো ইলিম নেই। কেননা এটার হাক্বীক্বত অজানা।” (তাফসীরে কুরতুবী শরীফ ৭/২১৯)
এ সম্পর্কে আল্লামা হযরত ইমাম মুহইউস সুনড়বাহ আবূ মুহম্মদ হুসাইন ইবনে মাস‘ঊদ বাগভী শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিছাল শরীফ ৫১০ হিজরী শরীফ) তিনি বলেন,
﴿ثمَُّ اسْتَوىٰ عَلَى الْعَرْشِ﴾ قَالَ الْكَلْبِىُّ وَمُقَاتِلٌ اِسْتَقَرَّ وَقَالَ اَبوُْ
عُبَيْدَةَ صَعِدَ. وَاَوّلَتِ الْمُعْتَزِلَةُ الِْسْتَوَاءَ بِلِْسْتِيْلَءِ فَاَمّا اَهْلُ السُّنَّةََِ
يقَُوْلُوْنَ اَلِْسْتِوَاءُ عَلَى الْعَرْشِ صِفَةٌ لَِِّ تَعَالٰى بِلَ كَيْفٍ يَجِبُ عَلَى
الرَّجُلِ الِْيْمَانُ بِهٖ وَيَكِلُ الْعِلْمَ فِيْهِ اِلَى اللهِ عَزَّ وَجَلَّ
( অর্থ: “ ثمَُّ اسْتَوىٰ عَلَى الْعَرْشِ -ছুম্মাস্তাওয়া ‘আলাল ‘আরশ এই
সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার অর্থ) হযরত ইমাম কালবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এবং হযরত ইমাম মুক্বাতিল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ উনারা বলেছেন, ‘অবস্থান করেছেন, স্থির হয়েছেন। আর হযরত আবূ উবাইদাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ‘তিনি আরোহণ করেছেন, উপরে উঠেছেন’। বাতিল ফেরক্বা মু’তাযিলারা ইস্তাওয়া শব্দের ব্যাখ্যা করে, ইস্তীলা’ শব্দ দ্বারা। যার অর্থ হচ্ছে- প্রাধান্য ও বিজয় প্রতিষ্ঠা করা, কর্তৃত্ব করা ইত্যাদি’। আর আহলে সুনড়বাত ওয়াল জামা‘য়াত উনারা বলেন, ‘(আল ইস্তাওয়া ‘আলাল ‘আরশ) এটা হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার একখানা ছিফত মুবারক। যার কাইফিয়াত বা ধরণ অজানা। প্রত্যেক ব্যক্তির উপর এ বিষয়ে ঈমান রাখা এবং এ ব্যাপারে ইলিমকে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকটে ন্যস্ত করা বা অর্পন করা ওয়াজিব।” (তাফসীরে বাগবী শরীফ ২/১৯৭)
আল্লামা কাযী ছানাউল্লাহ পানিপথী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বিশ্বখ্যাত তাফসীরগ্রন্থ ‘তাফসীরে মাযহারী শরীফ’-এ বলেন,
ثمَُّ اسْتَوىٰ عَلَى الْعَرْشِ قَالَ الْبَغْوِىُّ وَاَوّلَتِ الْمُعْتَزِلَةُ الِْسْتِوَاءََ
بِلِْسْتِيْلَءِ فَاَمّا اَهْلُ السُّنَّةِ يَقُوْلُوْنَ اَلِْسْتِوَاءُ عَلَى الْعَرْشِ صِفَةٌ لََِِّ
تَعَالٰى بِلَ كَيْفٍ يَجِبُ عَلَى الرَّجُلِ الِْيْمَانُ بِهٖ وَيَكِلُ الْعِلْمَ فِيْهِ اِلَى اللهِ عَزَّ وَجَلَّ
অর্থ: “(ছুম্মাস্তাওয়া ‘আলাল ‘আরশ এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার অর্থ) হযরত ইমাম বাগভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, মু’তাযিলারা ইস্তাওয়া শব্দের ব্যাখ্যা করে, ইস্তীলা’ শব্দ দ্বারা। যার অর্থ হচ্ছে- প্রধান্য ও বিজয় প্রতিষ্ঠা করা, কর্তৃত্ব করা ইত্যাদি’।
আর আহলে সুনড়বাত ওয়াল জামা‘য়াত উনারা বলেন, ‘(আল ইস্তাওয়া ‘আলাল ‘আরশ) এটা হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার একখানা ছিফত মুবারক। যার কাইফিয়্যাত বা ধরণ অজানা। প্রত্যেক ব্যক্তির উপর এ বিষয়ে ঈমান রাখা এবং এ ব্যাপরে ইলিমকে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকটে ন্যস্ত করা বা অর্পন করা ওয়াজিব।” (তাফসীরে মাযহারী ৩/৩৫৯)
হযরত আল্লামা ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত তাফসীরগ্রন্থ ‘তাফসীরে ইবনে কাছীর শরীফ’ উনার মধ্যে বলেন,
}ثمَُّ اسْتَوىٰ عَلَى الْعَرْشِ{ فَلِلنَّاسِ فِىْ هٰذَا الْمَقَامِ مَقَالَتٌ كَثِيْرَةٌ
جِدًّا لَيْسَ هٰذَا مَوْضِعَ بَسْطِهَا وَاِنمََّا يُسْلِكُ فِىْ هٰذَا الْمَقَامِ مَذْهَبُ
السَّلَفِ الصَّالِحِ مَالِكٌ وَالَْوْزَاعِىُّ وَالثَّوْرِىُّ وَاللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ وَالشَّافِعِىُّ
وَاَحَْدُ بْنُ حَنْبَلٍ وَاِسْحَاقُ بْنُ رَاهَوَيْهِ وَغَيْرُهُمْ مِنْ اَئِمَّةِ الْمُسْلِمِيْنَ
قَدِيْمًا وَحَدِيْثًا وَهُوَ اِمْرَارُهَا كَمَا جَاءَتْ مِنْ غَيْرِ تَكْيِيْفٍ وَلَ تَشْبِيْهٍ وَلَتَعْطِيْلٍ
অর্থ: “ (ছুম্মাস তাওয়া ‘আলাল ‘আরশ)। এ স্থানে লোকেরা বহু মতামত পেশ করেছেন এবং বহু জল্পনা-কল্পনা করেছেন। এখানে এগুলোর ব্যাখ্যা দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে আমরা শুধুমাত্র পূর্ববর্তী গুরুজনদের মাযহাব অবলম্বন করেছি। উনারা হচ্ছেন হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত আওযায়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত সুফিয়ান ছাওরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত লায়েস ইবনে সা’দ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত ইমাম শাফি‘য়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, হযরত ইসহাক্ব ইবনে রাহওয়াই রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিসহ পূর্ববর্তী ও পরবর্তী মুসলিম ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম- উনাদের অভিমত হচ্ছে- (ইস্তাওয়া সম্পর্কে) যেরূপ বর্ণিত রয়েছে সেরূপ বিশ্বাস স্থাপন করা কোনো কাইফিয়্যাত বা ধরণ,অবস্থা, সাদৃশ্যত্য ও সংখ্যা নির্ধারণ ছাড়াই।” (তাফসীরে ইবনে কাছীর ৩/৪২৬-৪২৭)
তাফসীরে বাগভী, মাযহারী, আল আসমা ওয়াছ ছিফাত লিলবাইহক্বী, লাওয়ামি‘উল আনওয়ারসহ আরো অন্যান্য কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
وَسَاَلَ رَجُلٌ مَالِكَ بْنَ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ عَنْ قَوْلِهٖ ﴿ اَلرَّحْمٰنُ
عَلَى الْعَرْشِ اسْتَوىٰ ﴾ كَيْفَ اسْتَوىٰ؟ فَاَطْرَقَ رَاْسَهٗ مَلِيًّا وَعَلَهُ
الرُّحَضَاءُ ثمَُّ قَالَ اَلِْسْتِوَاءُ غَيْرُ مَجْهُوْلٍ وَالْكَيْفُ غَيْرُ مَعْقُوْلٍ وَالِْيْمَانُ
بِهٖ وَاجِبٌ وَالسُّؤَالُ عَنْهُ بِدْعَةٌ وَمَا اَظنُُّكَ اِلَّ ضَالًّ ثمَُّ اَمَرَ بِهٖٖٖٖٖٖٖٖٖ فَاُخْرِجَ
অর্থ: “এক ব্যক্তি হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালাম মুবারক- (আর রহমানু ‘আলাল ‘আরশিস্তাওয়া) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলো যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি কিভাবে ইস্তাওয়া হয়েছেন? তখন তিনি উনার মাথা মুবারক অবনত করে সুদীর্ঘ সময় নিশ্চুপ থাকেন। আর উনার অবস্থা এমন হয় যে, প্রচুর পরিমাণ ঘাম ঝড়ে উনার পুরো শরীর ভিজে যায়, তিনি ক্লান্ত হয়ে যান। তারপর তিনি বলেন, ইস্তাওয়াটা সকলের জানা। এর কাইফিয়্যাত বা ধরণ সবার আক্বল বা বুঝের বাইরে। এই বিষয়ে ঈমান রাখা ওয়াজিব। আর এ সম্পর্কে প্রশড়ব করা বিদা‘য়াত তথা গোমরাহী। আমি তোমাকে গোমরাহ মনে করি। তারপর তিনি সুওয়ালকারীকে বের করে দেয়ার জন্য নির্দেশ মুবারক দেন। তখন তাকে বের করে দেওয়া হয়।” (তাফসীরে বাগবী ২/১৯৭, তাফসীরে মাযহারী ৩/৩৫৯)
হযরত ইমাম আ’যম আবূ হানীফাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
نُقِرُّ بَِنَّ اللهَ عَلَى الْعَرْشِ اسْتَوٰى مِنْ غَيْرِ اَنْ يَّكُوْنَ لَهُ حَاجَةٌ اِلَيْهِ
وَاسْتِقْرَار عَلَيْهِ وَهُوَ الْحَافِظُ لِّلْعَرْشِ وَغَيْرِ الْعَرْشِ فَلَوْ كَانَ مُحْتَاجًا لَمَّا
قَدَرَ عَلٰى اِيْجَادِ الْعَالَمِ وَتَدْبِيْرُهُ كَالْمَخْلُوْقِ وَلَوْ كَانَ مُحْتَاجًا اِلَى
الْجُلُوْسِ وَالْقَرَارِ فَقَبْلَ خَلْقِ الْعَرْشِ اَيْنَ كَانَ اللهُ تَعَالٰى! تَعَالَى اللهُ عَنْ
ذٰلِكَ عُلُوًّا كَبِيْرًا
অর্থ: “(হযরত ইমাম আ’যম আবূ হানীফাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ‘আল ওয়াছিয়্যাহ’ নামক কিতাবে বর্ণনা করেন,) আমরা স্বীকৃতি দেই যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি আরশে আযীমের উপর ইস্তাওয়া হয়েছেন। যদিও আরশে আযীমের উপর ইস্তাওয়া হওয়ার এবং তার উপর স্থির হওয়ার উনার কোনো প্রয়োজন ছিলো না। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি আরশে আযীম এবং আরশে আযীম ব্যতীত সমস্ত সৃষ্টির হিফাযতকারী। যদি তিনি মুহতাজ হতেন তাহলে তিনি সৃষ্টি জগৎকে অস্তিত্বে আনতে এবং তা পরিচালনা করতে সক্ষম হতেন না। না‘ঊযুবিল্লাহ! যেমন- সৃষ্টি জগৎ সক্ষম নয়। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি যদি বসা এবং অবস্থান করার মুহতাজ হতেন তাহলে আরশে আযীম সৃষ্টি হওয়ার পূর্বে তিনি কোথায় ছিলেন? মহান আল্লাহ পাক তিনি এটা থেকে বহু উর্ধ্বে ছিলেন।” (আল ওয়াছীয়্যাহ্ ১০পৃ., শারহুল ফিক্বহিল আকবার ৬১ পৃ.,)
‘লাওয়ামি‘উল আনওয়ার’ কিতাবে উল্লেখ রয়েছে,
وَرُوِىَ عَنِ الِْمَامِ الشَّافِعِىِّ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ اَنَّهٗ سُئِلَ عَنِ الِْسْتِوَاءِ اٰمَنْتُ
بِلَ تَشْبِيْهٍ وَصَدَّقْتُ بِلَ تَمْثِيْلٍ وَاِتَّهَمْتُ نَفْسِىْ فِى الِْدْرَاكِ وَاَمْسَكْتُ عَنِ الْخَوْضِ فِيْهِ كُلَّ الِْمْسَاكِ
অর্থ: “হযরত ইমাম শাফি‘য়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্পর্কে বর্ণিত রয়েছে যে, উনাকে ইস্তাওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো, তখন তিনি বলেছিলেন- ‘(মহান আল্লাহ পাক তিনি ইস্তাওয়া হয়েছেন, এই ব্যাপারে) আমি ঈমান এনেছি (তা) তাশবীহ ব্যতীত, বিশ্বাস করেছি (তা) সাদৃশ্যতা ব্যতীত, (এ বিষয়ে) জানার ব্যাপারে আমি নিজেকে অভিযুক্ত করেছি অর্থাৎ এই বিষয়ে আমার জানা নেই এবং এই ব্যাপারে সমস্ত প্রকার অনর্থক কথা-বার্তা থেকে নিজেকে বিরত রেখেছি।” (লাওয়ামি‘উল আনওয়ার ১/২০০, আল বুরহানুল মুআইয়্যাদ ১/১৮)
হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
اِسْتَوىٰ كَمَا ذكََرَ لَ كَمَا يَخْطُرُ لِلْبَشَرِ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি ঐভাবে ইস্তাওয়া হয়েছেন, যেমন তিনি আলোচনা করেছেন। ঐ রকম না, যেরূপ মানুষের অন্তরে উদয় হয়।” (লাওয়ামি‘উল আনওয়ার ১/২০০)
হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো বলেন,
نحَْنُ نؤُْمِنُ بَِنَّ اللهَ عَلَى الْعَرْشِ كَيْفَ شَاءَ وَكَمَا شَاءَ بِلَ حَدٍّ وَلَ
صِفَةٍ يَبْلُغُهَا وَاصِفٌ اَوْ يحَُدُّهٗ اَحَدٌ فَصِفَاتُ اللهِ مِنْهُ وَلَهٗ وَهُوَ كَمَا وَصَفَ نفَْسَهٗ لَ تُدْرِكُهُ الَْبْصَارِ
অর্থ: “আমরা বিশ্বাস করি যে, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি আরশে আযীমের উপর আছেন, যেভাবে ইচ্ছা, যেমন ইচ্ছা, কোনো সীমারেখা ব্যতীত যা কেউ নির্দিষ্ট করেছে এবং কোনো ছিফত ব্যতীত যা কোনো বর্ণনাকারী বর্ণনা করে। কাজেই মহান আল্লাহ পাক উনার ছিফত মুবারক উনার থেকে এবং উনার জন্য। আর তিনি নিজেকে যেমন বর্ণনা মুবারক করেছেন, তিনি তেমন-ই। চক্ষুসমূহ উনাকে দেখেনি।” (তাযকিরাতুল হুফ্ফায)
হযরত ইমাম শায়েখ সাইয়্যিদ আহমদ কবীর রেফায়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আল বুরহানুল মুআইয়্যাদ’ উনার মধ্যে বলেন,
سَاَلَ رَجُلٌ اَلِْمَامَ مَالِكَ بْنَ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ عَنْ قَوْلِه تَعَالٰى
اَلرَّحْمٰنُ عَلَى الْعَرْشِ اسْتَوىٰ فَقَالَ اَلِْسْتِوَاءُ غَيْرُ مَجْهُوْلٍ وَالْكَيْفُ
غَيْرُ مَعْقُوْلٍ وَالِْيْمَانُ بِهٖ وَاجِبٌ وَالسُّؤَالُ عَنْهُ بِدْعَةٌ وَمَا اَرَاكَ اِلَّ
مَامُنَا الشَّافِعِىُّ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ لَمَّا سُئِلَ مُبْتَدِعًا وَاَمَرَ بِهٖ اَنْ يخَّْرُجَ وَقَالَ اِ
عَنْ ذَلِكَ اٰمَنْتُ بِلَ تَشْبِيْهٍ وَصَدَّقْتُ بِلَ تَمْثِيْلٍ وَاِتَّهَمْتُ نَفْسِىْ فِى
الِْدْرَاكِ وَاَمْسَكْتُ عَنِ الْخَوْضِ فِيْهِ كُلَّ الِْمْسَاكِ وَقَالَ الِْمَامُ اَبوُْ
حَنِيْفَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ مَنْ قَالَ لَ اَعْرِفُ اللهَ اَفِى السَّمَاءِ هُوَ اَمْ فِى
الَْرْضِ فَقَدْ كَفَرَ لَِنَّ هٰذَا الْقَوْلَ يوُْهَمُ اَنَّ لِلْحَقِّ مَكَانً وَمَنْ تَوَهَّمَ اَنَّ
اللهُ عَنْهُ عَنِ الِْسْتِوَاءِ لْحَقِّ مَكَانً فَهُوَ مُشَبِّهٌ وَسُئِلَ الِْمَامُ اَحَْدُ رَضِىَ لِ
فَقَالَ اِسْتَوىٰ كَمَا اَخْبَرَ لَ كَمَا يَخْطُرُ لِلْبَشَرِ
অর্থ: “এক ব্যক্তি হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালাম মুবারক- (আর রহমানু ‘আলাল ‘আরশিস্তাওয়া) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। জবাবে হযরত ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ইস্তাওয়াটা সকলের জানা। এর কাইফিয়াত বা ধরণ সবার আক্বল বা বুঝের বাইরে। এই বিষয়ে ঈমান রাখা ওয়াজিব। আর এ সম্পর্কে প্রশড়ব করা বিদা‘য়াত তথা গোমরাহী। আমি তোমাকে গোমরাহ মনে করি। তারপর তিনি সুওয়ালকারীকে বের করে দেয়ার জন্য নির্দেশ মুবারক দেন। আর আমাদের সম্মানিত ইমাম হযরত শাফি‘য়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে যখন ইস্তাওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো, তখন তিনি বলেছিলেন- ‘(ইস্তাওয়ার ব্যাপারে) আমি ঈমান এনেছি (তা) তাশবীহ ব্যতীত, বিশ্বাস করেছি (তা) সাদৃশ্যতা ব্যতীত, (এ বিষয়ে) জানার ব্যাপারে আমি নিজেকে অভিযুক্ত করেছি অর্থাৎ এই বিষয়ে আমার জানা নেই এবং এই ব্যাপারে সমস্ত প্রকার অনর্থক কথা-বার্তা থেকে নিজেকে বিরত রেখেছি।’ আর হযরত ইমাম আ’যম আবূ হানীফাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি বলবে, আমি জানিনা মহান আল্লাহ পাক তিনি কি আসমানে আছেন, নাকি যমীনে? তাহলে নিঃসন্দেহে সে কুফরী করলো। কেননা এর মাধ্যমে ধারণা করা হয় যে, মহান আল্লাহ পাক উনার একটি নির্দিষ্ট মাকান বা স্থান রয়েছে। আর যে ব্যক্তি এরূপ ধারণা করবে যে, মহান আল্লাহ পাক উনার একটি নির্দিষ্ট মাকান বা স্থান রয়েছে, সে মুশাব্বিহা ফিরক্বার অন্তর্ভুক্ত।’ হযরত ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে ‘ইস্তাওয়া’ সম্পর্কে সুওয়াল করা হয়। জবাবে তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ঐভাবে ইস্তাওয়া হয়েছেন, যেমন তিনি সংবাদ দিয়েছেন। ঐ রকম না, যেরূপ মানুষের অন্তরে উদয় হয়।” (আল বুরহানুল মুআইয়্যাদ ১/১৮-১৯)
বিশ্বখ্যাত মুফাসসির আল্লামা আবুল হাসান মুক্বাতিল ইবনে সুলাইমান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘তাফসীরে মুক্বাতিলে’ বলেন,
ثمَُّ اسْتَوىٰ عَلَى الْعَرْشِ يعَْنِىْ اِسْتَقَرَّ عَلَى الْعَرْشِ
অর্থ: “ছুম্মাস তাওয়া ‘আলাল আরশ অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি আরশে আযীম উনার উপর স্থির হয়েছেন।” (তাফসীরে মুক্বাতিল ২/১০৯)
‘তাফসীরে ত্ববারী শরীফ’ উনার ১৩ তম খণ্ডের ৪১১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে,
ثمَُّ اسْتَوىٰ عَلَى الْعَرْشِ فَاِنَّهٗ يعَْنِىْ عَلَ عَلَيْهِ
অর্থ: “ছুম্মাস তাওয়া ‘আলাল আরশ অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি আরশে আযীম উনার উপর অবস্থান করেছেন।”
‘তাফসীরে ত্ববারী শরীফ’ উনার ১৭ তম খণ্ডের ৪৮০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে,
ثمَُّ ارْتَفَعَ عَلَى الْعَرْشِ الرَّحْمٰنُ وَعَلَ عَلَيْهِ
অর্থ: “অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি আরশে আযীম উনার উপরে উঠেছেন এবং অবস্থান করেছেন।”
‘তাফসীরে বাগভী শরীফ’ উনার ৪র্থ খণ্ডের ২৯৩ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে,
ثمَُّ اسْتَوىٰ عَلَى الْعَرْشِ عَلَ عَلَيْهِ
অর্থ: “(ছুম্মাস তাওয়া ‘আলাল আরশ) মহান আল্লাহ পাক তিনি আরশে আযীম উনার উপর অবস্থান করেছেন।”
‘তাফসীরে সাম‘আনী শরীফ’ উনার ২য় খণ্ডের ৩৬৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে,
ثمَُّ اسْتَوىٰ عَلَى الْعَرْشِ قَدْ بَيينَا مَذْهَبَ اَهْلِ السُّنَّةِ فِى الِْسْتِوَاءِ وَهُوَاَنَّهٗ نؤُْمِنُ بِهٖ وَنَكِلُ عِلْمَهٗ اِلَى اللهِ تَعَالى مِنْ غَيْرِ تَْوِيْلٍ وَلَ تَفْسِيْرٍ
অর্থ: “(ছুম্মাস তাওয়া ‘আলাল আরশ) আমরা ইস্তাওয়া বিষয়ে আহলু সুনড়বাত ওয়াল জামায়াতের অভিমত বর্ণনা করেছি। আর তা হচ্ছে- মহান আল্লাহ পাক তিনি ইস্তাওয়া হয়েছেন এটা আমরা বিশ্বাস করি এবং আমরা এর কোনো প্রকার ব্যাখ্যা ও তাফসীর ছাড়া এর ইলিমকে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট অর্পন করেছি।”
এরূপ আরো অসংখ্য বর্ণনা রয়েছে। কলেবর বৃদ্ধির আশাঙ্কায় অতি সংক্ষেপে এখানেই শেষ করা হলো। প্রকৃতপক্ষে اِسْتَوىٰ (ইস্তাওয়া)
সম্পর্কে বর্ণিত অভিমতগুলো কোনটাই শুদ্ধ না। কেউ اِسْتَوىٰ (ইস্তাওয়া) শব্দের হাক্বীক্বতটা বুঝতে পারেনি।
‘ اِسْتَوٰى ’ (ইস্তাওয়া) শব্দের হাক্বীক্বী অর্থ মুবারক-
‘ اِسْتَوىٰ (ইস্তাওয়া) শব্দের অর্থ কি হবে সৃষ্টির কারো জানা ছিলো না, কুল-কায়িনাতের কারো জানা ছিলো না। প্রায় সাড়ে ১৪০০ বছর অতিবাহিত হয়েছে কেউ اِسْتَوىٰ (ইস্তাওয়া) শব্দের অর্থ কি হবে, এটা ফায়ছালা দিতে পারেনি। এই সুদীর্ঘ বছর পর মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের পক্ষ থেকে বিশেষভাবে ইলিম মুবারক প্রাপ্ত হয়ে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি اِسْتَوىٰ (ইস্তাওয়া) শব্দ মুবারক উনার হাক্বীক্বত মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! যেই বিষয়ে সৃষ্টির কারো কোনো ইলিম ছিলো না, কুল-কায়িনাতের কারো কোনো ইলিম ছিলো না। কেউ কখনো জানতোও না।
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহহির, আছ ছমাদ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “এই মাসের ৩ তারীখ অর্থাৎ ১৪৪২ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৩রা শাওওয়াল শরীফ ইয়াওমুল আহাদ চাশতের সময় আমি দেখলাম- যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদের দুইজনকে। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) উনারা নিজ থেকে আমাকে জানিয়েছেন- ‘আসলে اِسْتَوىٰ (ইস্তাওয়া) শব্দের অর্থ এরা যা করে, এটা কোনোটাই এটার সাথে মিল নেই। এরা যা বলে, এটার সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা তো এটার মুহতাজ না। প্রকৃপক্ষে ইস্তাওয়া হচ্ছে- আলমে খালক্ব আর আলমে আমরের মধ্যে একটা পার্থক্য সূচনা করা। আলমে খালক্বের সর্বোচ্চে আরশে আযীমকে স্থাপন করা হয়েছে।”
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ১৪৪২ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৯ই শাওওয়াল শরীফ লাইলাতুস সাব্ত শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ফালইয়াফরহূ শরীফ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল মুবারক-এ ইরশাদ মুবারক করেন, “মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের সাথে এটার কোনো সম্পর্ক নেই। যেমন- মকতুবাত শরীফ-এ লেখা হয়েছে- “মহান আল্লাহ পাক তিনি ‘আল্লাহ’ শব্দ মুবারক থেকেও পবিত্র।” ঠিক মহান আল্লাহ পাক তিনি ইস্তাওয়া থেকেও পবিত্র। আসলে ইস্তাওয়ার সাথে মহান আল্লাহ পাক উনার কোনো সম্পর্ক নেই। মূল বিষয় হচ্ছে, মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, আমি ৬ ধাপে আসমান-যমীন সৃষ্টি করার পর আরশে ‘আযীমকে আলমে খ¦লক্বের সর্বোচ্চ স্থানে স্থাপন করে আলমে খ¦লক্ব ও আলমে আমরের মধ্যে পার্থক্য সূচনা করে দিয়েছি। এটাই হচ্ছেন ইস্তাওয়া হওয়ার হাক্বীক্বী অর্থ। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) অন্য কোনো অর্থ না। ‘আমি ইস্তাওয়া করবো। আমি উপরে উঠবো, বসবো কেনো?’ মহান আল্লাহ পাক তিনি তো ছমাদ, বেনিয়াজ, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি বেনিয়াজ।”
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “জান্নাতের ছাদ হলো আরশে আযীমের নীচে। জান্নাত আরশে আযীমের নীচে। সবই আরশে আযীমের নীচে। আরশে আযীমকে আলমে খ¦লক্বের উপর স্থাপন করা হয়েছে। আরশে ‘আযীমের উপর হলো আলমে আমর আর এর নীচে হলো আলমে খালক্ব। (মহান আল্লাহ পাক তিনি জানিয়েছেন) এর মধ্যে আমি ইস্তাওয়া করেছি। আমি ইস্তাওয়া হবো কেন্? আমি তো বেনিয়াজ ছমাদ, আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি ছমাদ। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) ওখানে স্থাপন করে দিয়েছি। দিয়ে এর মধ্যে আমি পার্থক্য সূচনা করে দিয়েছি। আলমে আমর উপরে, আলমে খ¦লক্ব নীচে। আলমে খালক্বের শেষ স্থানে হলো আরশে আযীম। সর্বোচ্চ স্থানে। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) এটা মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে কোনো সম্পর্ক নেই, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা বলেছেন, ‘আমাদের সথে اِسْتَوىٰ (ইস্তাওয়া)-এর কি সম্পর্ক আছে? আমরা তো এর মুহ্তাজ না। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) মানুষ অর্থ করে- উপবেশন করা, বরাবর হওয়া, সমান হওয়া। এটা কোনো অর্থ না। আরশে ‘আযীমকে আলমে খ¦লক্বের সর্বোচ্চ স্থানে স্থাপন করে আলমে খ¦লক্ব ও আলমে আমরের মধ্যে পার্থক্য সূচনা করে দেওয়া হয়েছে, সীমানা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।” (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “মহান আল্লাহ পাক তিনি ‘ اِسْتَوىٰ (ইস্তাওয়া) হয়েছেন, এটা বলা শুদ্ধ না। কারণ এটা বললে, মহান আল্লাহ পাক উনার ছমাদিয়াত থাকে না। মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই ইরশাদ মুবারক করেছেন, اَللهُ الصَّمَدُ ‘মহান আল্লাহ পাক তিনি ছমাদ তথা বেনিয়ায।’ (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ইখলাছ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২) মহান আল্লাহ পাক তিনি ইস্তাওয়া থেকেও বেনিয়ায। ইস্তাওয়ার সাথে মহান আল্লাহ পাক উনার কোনো সম্পর্ক নেই।” সুবহানা মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
‘ اِسْتَوٰى ’ (ইস্তাওয়া) সংশ্লিষ্ট সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ সমূহ উনাদের ছহীহ তরজমাহ্ মুবারক
(১ ও ২)
اِنَّ رَبَّكُمُ اللهُ الَّذِىْ خَلَقَ السَّموٰتِٰ وَالَْرْضَ فِىْ سِتَّةِ اَيَّمٍ ثمَُّ اسْتَوىٰ عَلَى الْعَرْشِ
অর্থ: “নিশ্চয়ই আপনাদের রব মহান আল্লাহ পাক যিনি আসমান-যমীন ৬ দিনে অর্থাৎ ৬ ধাপে সৃষ্টি করেছেন। ৬ ধাপে আসমান-যমীন সৃষ্টি করার পর আরশে ‘আযীমকে আলমে খালক্বের সর্বোচ্চ স্থানে স্থাপন করে আলম খ¦লক্ব ও আলমে আমরের মধ্যে পার্থক্য সূচনা করে দিয়েছেন।” সুবহানা মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আ’রাফ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৪, সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ইঊনুস শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত ৩)
(৩)
اَللهُ الَّذِىْ رَفَعَ السَّموٰتِٰ بِغَيْرِ عَمَدٍ تَرَوْنَهَا ثمَُّ اسْتَوىٰ عَلَى الْعَرْشِ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক যিনি আসমানসমূহ খুটি ব্যতিত স্থাপন করেছেন অর্থাৎ সৃষ্টি করেছেন। তোমরা তা দেখতে পাচ্ছো। তারপর তিনি আরশে ‘আযীমকে আলমে খ¦লক্বের সর্বোচ্চ স্থানে স্থাপন করে আলম খ¦লক্ব ও আলমে আমরের মধ্যে পার্থক্য সূচনা করে দিয়েছেন।” সুবহানা মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা র’দ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২)
(৪)
اَلرَّحْمٰنُ عَلَى الْعَرْشِ اسْتَوىٰ
অর্থ: “করুণাময় মহান আল্লাহ পাক তিনি আরশে ‘আযীমকে আলমে খ¦লক্বের সর্বোচ্চ স্থানে স্থাপন করে আলম খালক্ব ও আলমে আমরের মধ্যে পার্থক্য সূচনা করে দিয়েছেন।” সুবহানা মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ত্বহা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫)
(৫)
اَلَّذِىْ خَلَقَ السَّموٰتِٰ وَالَْرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِىْ سِتَّةِ اَيَّمٍ ثمَُّ اسْتَوىٰ عَلَى الْعَرْشِ
অর্থ: “(মহান আল্লাহ পাক) যিনি আসমান-যমীন এবং উভয়ের মাঝে যা কিছু আছে সমস্ত কিছু ৬ ধাপে সৃষ্টি করেছেন। ৬ ধাপে সৃষ্টি করার পর আরশে ‘আযীমকে আলমে খ¦লক্বের সর্বোচ্চ স্থানে স্থাপন করে আলম খ¦লক্ব ও আলমে আমরের মধ্যে পার্থক্য সূচনা করে দিয়েছেন।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ফুরক্বান শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৯)
(৬)
اَللهُ الَّذِىْ خَلَقَ السَّموٰتِٰ وَالَْرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا فِىْ سِتَّةِ اَيَّمٍ ثمَُّ اسْتَوىٰ عَلَى الْعَرْشِ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক যিনি আসমান-যমীন এবং উভয়ের মাঝে যা কিছু আছে সমস্ত কিছু ৬ ধাপে সৃষ্টি করেছেন। ৬ ধাপে সৃষ্টি করার পর আরশে ‘আযীমকে আলমে খ¦লক্বের সর্বোচ্চ স্থানে স্থাপন করে আলম খ¦লক্ব ও আলমে আমরের মধ্যে পার্থক্য সূচনা করে দিয়েছেন।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা সিজদাহ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৪)
(৭)
هُوَ الَّذِىْ خَلَقَ السَّموٰتِٰ وَالَْرْضَ فِىْ سِتَّةِ اَيَّمٍ ثمَُّ اسْتَوىٰ عَلَى الْعَرْشِ
অর্থ: “তিনি সেই মহান আল্লাহ পাক যিনি আসমান-যমীন ৬ ধাপে সৃষ্টি করেছেন। ৬ ধাপে আসমান-যমীন সৃষ্টি করার পর আরশে ‘আযীমকে আলমে খালক্বের সর্বোচ্চ স্থানে স্থাপন করে আলম খ¦লক্ব ও আলমে আমরের মধ্যে পার্থক্য সূচনা করে দিয়েছেন।” সুবহানা মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা হাদীদ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৪)
‘ اِسْتَوٰى ’ (ইস্তাওয়া) সংশ্লিষ্ট সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফসমূহে মহান আল্লাহ পাক উনার ৩ খানা সম্মানিত বিশেষ শান মুবারক প্রকাশের বর্ণনা
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহহির, আছ ছমাদ, মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ১৪৪২ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১০ই শাওওয়াল শরীফ লাইলাতুল আহাদ শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ফালইয়াফরহূ শরীফ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল মুবারক-এ ইরশাদ মুবারক করেন, “যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
كُلَّ يَوْمٍ هُوَ فِىْ شَاْنٍ
‘মহান আল্লাহ পাক তিনি একেক দিন, একেক সময় একেক শান মুবারক-এ থাকেন।’ (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আর রহমান শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২৯)
এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ব্যাখ্যা হচ্ছে- মহান আল্লাহ পাক তিনি ক্বদীম (অনাদী) এবং আযালী (চিরন্তন)। তিনি হাদেছ (সৃষ্টি) নন। উনার যাবতীয় সম্মানিত ও পবিত্র ছিফত মুবারকও ক্বদীম ও আযালী। তাই তিনি নতুন কোনো কাজ শুরু করেন না। তিনি শুরুতে যা করেছেন, এখনও তাই করেন। তবে উনার ক্বদীমী (অনাদী) এবং আযালী (চিরন্তন) সম্মানিত শান মুবারক থেকে কোনো কোনো শান মুবারক, কখনও কখনও প্রকাশ পান। সুবহানাল্লাহ!
যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
هُوَ الَّذِىْ خَلَقَ السَّموٰتِٰ وَالَْرْضَ فِىْ سِتَّةِ اَيَّمٍ ثمَُّ اسْتَوىٰ عَلَى الْعَرْشِ
অর্থ: “তিনি সেই মহান আল্লাহ পাক যিনি আসমান-যমীন ৬ ধাপে সৃষ্টি করেছেন। ৬ ধাপে আসমান-যমীন সৃষ্টি করার পর আরশে ‘আযীমকে আলমে খালক্বের সর্বোচ্চ স্থানে স্থাপন করে আলম খ¦লক্ব ও আলমে আমরের মধ্যে পার্থক্য সূচনা করে দিয়েছেন।” সুবহানা মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা হাদীদ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৪)
এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার ৩ খানা সম্মানিত বিশেষ শান মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ মুবারক ঘটেছে।
প্রথম হচ্ছে- মহান আল্লাহ পাক তিনি আসমান-যমীন ৬ ধাপে সৃষ্টি করেছেন। ৬ ধাপে আসমান-যমীন সৃষ্টি করার পর তিনি আরশে আযীমের দিকে বিশেষ দৃষ্টি বা বিশেষ শান মুবারক প্রকাশ করে আরশে আযীমকে তারতীব দান করেন। এটা হলো প্রথম শান মুবারক।
দ্বিতীয় শান মুবারক হচ্ছেন- এই শান মুবারক প্রকাশ করে মহান আল্লাহ পাক তিনি আরশে আযীমকে আলমে খালক্বের সর্বোচ্চ স্থানে স্থাপন করেন। এটা আরেকটা শান মুবারক প্রকাশ করেন। আর তৃতীয় শান মুবারক হচ্ছেন- আরশে আযীমকে আলমে খ¦লক্বের সর্বোচ্চ স্থানে স্থাপন করে আলমে খ¦লক্ব ও আলমে আমরের মধ্যে একটা পার্থক্য সূচনা করে দিয়েছেন।
এটা তৃতীয় শান মুবারক প্রকাশ। অর্থাৎ ইস্তাওয়া করেন। আর এটাই হচ্ছেন ইস্তাওয়ার হাক্বীক্বী বা প্রকৃত অর্থ মুবারক।” (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হাক্বীক্বী শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী সম্মান মুবারক উপলব্ধি করে উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করা, উনার সম্মানিত গোলামীর আনজাম মুবারক দেয়ার এবং উনার সম্মানার্থে দায়িমীভাবে অনন্তকালব্যাপী মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘ফালইয়াফরহূ শরীফ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
0 Comments:
Post a Comment