সৃষ্টির ইতিহাসে এই প্রথম আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদহূ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুস সালাম মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুদরত মুবারক উনার হাক্বীক্বত মুবারক বর্ণনা-পর্ব-৬৮
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহহির, আছ ছমাদ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ১৪৪২ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৮ই শাওওয়াল শরীফ লাইলাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (লাইলাতুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ বা সোমবার রাত) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ফালইয়াফরহূ শরীফ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল মুবারক-এ ইরশাদ মুবারক করেন, “কুদরতের বিষয়টা জানতে চায় কে? কারা কারা জানতে চায়? হ্যাঁ? (তারপর কায়িনাতবাসীকে ইলিম মুবারক উনার গুরুত্ব অনুধাবনের লক্ষ্যে বলেন,) পয়সা জমা দিতে হবে। কয় টাকা এনেছো? তাহলে কিভাবে শুনবে? তাহলে কিভাবে হবে? ইস্তাওয়ার বিষয়টা তো সহজ ছিলো। এটা তো কঠিন। ঐটা ১৪শ’ কোটি টাকা দিতে হলে, তাহলে এটা ২৮শ’ কোটি টাকা দিতে হবে। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) হ্যাঁ? কি বলো? কি? ইস্তাওয়াটা সহজ ছিলো, এটা তো কঠিন। ঐটা ১৪শ’ কোটি টাকা দিতে হলে, এটা ২৮শ’ কোটি টাকা দিতে হবে। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) অন্যথায় কিভাবে হবে? এনেছো টাকা? তাহলে জানবে কিভাবে? কিভাবে জানবে? বলো দেখি- এখন কি সংক্ষেপে শুনবে, না বিস্তারিত শুনবে? কোন্টা শুনবে? সংক্ষেপে শুনতে চাইলে, এক দুই কথায় শেষ করে দিবো। আর বিস্তারিত শুনতে চাইলে, আমি বিস্তারিত বলবো। এখন কোন্টা শুনবে? বলো।
(আরজী: দুটাই শুনবো।)
অ- দুটাই শুনবে? আচ্ছা। কঠিন বিষয়। বিস্তারিত শুনলে তো সময় লাগবে।
১ নাম্বার হলো বিস্তারিত শুনতে হলে- হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার কাছে আমি আরজু করেছিলাম। উনি আমাকে প্রথমে দেখালেন কুদরতটা কি। মহান আল্লাহ পাক তিনি হাযির-নাযির কিভাবে? ইলিম আর কুদরত দ্বারা। মহান আল্লাহ পাক তিনি হাযির-নাযির হচ্ছেন ইলিম এবং কুদরতের মাধ্যমে। আর যাহির হচ্ছেন কিভাবে? আসমা’ ও ছিফতের মাধ্যমে। হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনি কুদরতের একটা মেছালী ছূরত আমাকে দেখালেন। একটা গোলাকার বৃত্ত যা ধুঁয়ার মতো। প্রথম। আচ্ছা; ঠিক আছে। এরপর মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের তরফ থেকে আমাকে বলা হলো যে, এটা বুঝতে হলে ‘সূরা ইখলাছ শরীফ’ আর ‘সূরা কাওছার শরীফ’ বুঝতে হবে। কিভাবে বুঝতে হবে? সূরা ইখলাছ শরীফ-এ কি বলা হয়েছে?
قُلْ هُوَ اللهُ اَحَدٌ. اَللهُ الصَّمَدُ. لَمْ يلَِدْ وَلَمْ يوُْلَدْ. وَلَمْ يَكُنْ لَّهُ كُفُوًا اَحَدٌ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক উনি একক। মহান আল্লাহ পাক উনি বেনিয়াজ। উনি কারো কাছ থেকে না, উনার থেকে কেউ না। উনার সমকক্ষ কেউ নেই।”
এই ছমাদিয়াত আগে বুঝতে হবে। এটা হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার শান মুবারক-এ।
আর ‘সূরা কাওছার শরীফ’ বুঝতে হবে। কিভাবে বুঝতে হবে? ‘সূরা কাওছার শরীফ’-এ বলা হচ্ছে-
اِنَّ اَعْطَيْنكَٰ الْكَوْثَرَ. فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ. اِنَّ شَانِئَكَ هُوَ الَْبْتَرُ
প্রথম।
اِنَّ اَعْطَيْنكَٰ الْكَوْثَرَ
‘নিশ্চয়ই আমি আপনাকে কাওছার হাদিয়া মুবারক করেছি।’এখানে ঐ কাওছার অর্থে না। এখানে আমভাবে সমস্ত খায়ের-বরকত আপনাকে হাদিয়া মুবারক করা হয়েছে। এই অর্থে। এরপর- فَصَلِّ অর্থ
এখানে কি হবে? এখানে ছলাত অন্য কিছু না। এখানে অর্থ হবে- মহান আল্লাহ পাক
اِنَّ اللهَ وَمَٰٓلئِكَتَهٗ يُصَلُّوْنَ عَلَى النَّبِىِّ
“নিশ্চয়ই যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার সকল সম্মানিত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি দায়িমীভাবে সম্মানিত ছলাত মুবারক পাঠ করে যাচ্ছেন তথা উনার সম্মানার্থে দায়িমীভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘ফালইয়াফরহূ শরীফ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে যাচ্ছেন।” সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক উনি যেমন ছলাত পাঠ করেন, আপনাকেও ছলাত পাঠ করতে হবে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনিও ছলাত পাঠ করেন আল্লাহ পাক উনার শান মুবারক-এ।
আবার,
لِرَبِّكَ وَانْحَرْ
وَانْحَرْ অর্থ কি? কুরবানী করা। ফানা হয়ে যাওয়া। মহান আল্লাহ
পাক উনার জন্য সব ফানা-বাক্বা হয়ে যেতে হবে।
اِنَّ شَانِئَكَ هُوَ الَْبْتَرُ
এটার অর্থ হচ্ছে- নিশ্চয়ই আপনার শত্রুরা নির্বংশ অর্থাৎ এখানে শত্রুদের কোনো অংশ থাকবে না। শত্রুরা এখানে আর আসতে পারবে না। এটা আলাদা। এটার আরেকটা অর্থ করা হলো-
قُلْ اِنَّ صَلَتِىْ وَنُسُكِىْ وَمَحْيَاىَ وَمَمَاتِىْ لَِِّ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ. لَ شَرِيْكَ لَهُ
‘আপনি বলুন, নিশ্চয়ই আমার ছলাত, কুরবানী, হজ্জ, ইবাদত-বন্দেগী, আমার হায়াত, আমার মউত সমস্ত কিছুই মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। উনার কোন শরীক নেই।’
সব কিছু মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য, কোনো শরীক নেই। ঠিক আছে। এখন এই জিনিসটা বুঝানোর পর বলা হলো- ৪টা জিনিস এখানে সংযুক্ত হবে। কি ৪টা জিনিস সংযুক্ত হবে? মূল জিনিসটার সাথে ৪টা জিনিস সংযুক্ত হবে। সেটা প্রাথমিকভাবে বলা হচ্ছে-
ثمَُّ دَنَ فَتَدَلّٰى. فَكَانَ قَابَ قَوْسَيْنِ اَوْ اَدْنٰى
অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি মহান আল্লাহ পাক উনার নিকটবর্তী হলেন, ঝুঁকে গেলেন। কি পরিমাণ? ধনুকের দুই মাথা। ঐ ধনুক না। একটা ধুনুকের দুই মাথা টান দিলে যেমন মিলে যায়, এরকম। তাদের অর্থ তাদের কাছে। আর হাদীছ শরীফ-এ বলা হচ্ছে-
لِىْ مَعَ اللهِ وَقْتٌ لَّ يَسْعٰنِىْ فِيْهِ مَلَكٌ مُّقَرَّبٌ وَلَ نَبِىٌّ مُّرْسَلٌ
‘মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে আমার এমন একটি সময় রয়েছে, অর্থাৎ দায়েমীভাবে ২৪ ঘন্টা এমন নিছবত মুবারক রয়েছেন যেখানে কোনো নৈকট্যপ্রাপ্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের এবং হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের স্থান সঙ্কুলান হয় না।’ সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এমন নিসবত, এখানে কারো কোনো সম্পর্ক নেই। ২৪ ঘন্টা উনি দীদার মুবারক-এ মশগুল আছেন। আর আরেকটা হলো-
وَمَا يَنْطِقُ عَنِ الْهَوىٰ. اِنْ هُوَ اِلَّ وَحْىٌ يوُّْحٰى
‘ওহী মুবারক ছাড়া উনি কোনো কথা মুবারক বলেন না, কোনো কাজ মুবারক করেন না, কোনো সম্মতি মুবারক প্রকাশ করেন না।’
সেটা কি? সেটা হচ্ছে- ঐ হাদীছে কুদসী শরীফ-
يَ حَبِيْبْ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَنَ وَاَنْتَ وَمَا سِوَاكَ خَلَقْتُ لَِجْلِكَ
“আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি এবং আপনি। আর আপনি ছাড়া যা কিছু রয়েছে সমস্ত কিছু আমি আপনার সন্তুষ্টি মুবারক উনার জন্যই সৃষ্টি করেছি।” সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি বললেন,
يَ رَبِّ اَنْتَ وَمَا اَنَ وَمَا سِوَاكَ تَرَكْتُ لَِجْلِكَ
‘আয় বারে এলাহী! শুধু আপনি, আমিও না। আপনি ছাড়া আর যা কিছু রয়েছে, সমস্ত কিছুই তরক করেছি আপনার রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করার লক্ষ্যে। আমি তো আপনার মধ্যে ফানা-বাক্বা।’
এই পর্যন্ত আসলো। এরপরে যে বিষয়টা বুঝতে হবে- ঈমান রক্ষা করবে সবাই। ঈমানটা নষ্ট করো না কেউ। একটা কঠিন বিষয়। এরপর যেই জিনিসটা হলো, মহান আল্লাহ পাক উনি কিভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সৃষ্টি করলেন, সেটা মহান আল্লাহ পাক উনি আমাকে দেখালেন। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) দেখলাম- আল্লাহ পাক উনি উনার পাশে নূর মুবারক স্থাপন করলেন। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) বললেন, প্রথম আয়াত শরীফ-
قَدَّرَ فَهَدٰى
মহান আল্লাহ পাক নিজে বললেন। এখানে কি এর অর্থ? মহান আল্লাহ পাক বললেন,
يَدُوْرُ حَيْثُ شَاءَ اللهُ تَعَالٰى
এখানে কুদরত নাই।
يَدُوْرُ حَيْثُ شَاءَ اللهُ تَعَالٰى
এর অর্থ হচ্ছে আসলে- ঘূর্ণীয়মান না, অবস্থান। ঠিক ঐ হাক্বীক্বতটা মহান আল্লাহ পাক উনি প্রকাশ করলেন, যেটা সরাসরি নূর মুবারক, যা উনার পাশে উনি বসালেন। এটা হলো-
يَدُوْرُ حَيْثُ شَاءَ اللهُ تَعَالٰى
সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
আর কুদরতটা কী? মহান আল্লাহ পাক উনি নিজের ভাষায় বললেন, বাংলায় এটা ‘নিয়ন্ত্রণ’। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) মহান আল্লাহ পাক নিজেই বললেন উনার ভাষায়। অর্থাৎ আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি আমার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)
একটা হচ্ছে,
] } قَدَّرَ فَهَدٰى{ ]اَلَْعْلَى: ৩
] }قَدَّرَهٗ تَقْدِيْرًا{ ]اَلْفُرْقَانُ: ২
দুই খানা আয়াত শরীফ। সমস্ত কিছু দিয়ে, আমরা যেটা বলি যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মহান আল্লাহ পাক সমস্ত কিছু দিয়েই সৃষ্টি করেছেন। ঐ জিনিসটাই মহান আল্লাহ পাক উনি সরাসরি আমাকে দেখিয়ে দিলেন। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
আর কুদরত মুবারক অর্থ- কুদরত উনার সরাসরি অর্থ হচ্ছে- এক. প্রথম অর্থ হচ্ছে- নিয়ন্ত্রণ। দুই. দ্বিতীয় অর্থ হচ্ছে- ছোহ্বত। তিন. তৃতীয় অর্থ হচ্ছে- যিয়ারত। চার. চতুর্থ অর্থ হচ্ছে- দীদার।
এই যে তারা বলে, মহান আল্লাহ পাক উনাকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি দেখেননি। না‘ঊযুবিল্লাহ! একবার দেখেছেন। না‘ঊযুবিল্লাহ! এটা শুদ্ধ না। উনি ২৪ ঘন্টাই যিয়ারত মুবারক-এ আছেন। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)
এরপরে বললেন, এটা আরেকটু বুঝার জন্য সহজ। যেটা আমরা বলি সব সময়। অনেকে হয়তো বুঝেনা। যে, কালেমা শরীফখানা। আল্লাহ পাক উনার মধ্যে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি প্রবেশ করেন নি, উনিও উনার মধ্যে প্রবেশ করেন নি। দুইজন পাশাপাশি। মহান আল্লাহ পাক উনি সৃষ্টি করে রেখেছেন। এখন সেখান থেকে মহান আল্লাহ পাক উনি যখন সৃষ্টি করলেন, তখন দেখা গেলো আসলে কিছুই নেই। শুধু মহান আল্লাহ পাক উনি আর উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নুরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি অর্থাৎ উনারা। আর যা কিছু রয়েছে, সমস্ত কিছু ঐ নূর মুবারক থেকে একটা অংশ নিয়ে পরে সৃষ্টি করা হয়েছে।
এখন এক কথায় হচ্ছে-
يَدُوْرُ حَيْثُ شَاءَ اللهُ تَعَالٰى
] } قَدَّرَ فَهَدٰى{ ]اَلَْعْلَى: ৩
] }قَدَّرَهٗ تَقْدِيْرًا{ ]اَلْفُرْقَانُ: ২
এটা ‘সূরা আ’লা শরীফ’ ও ‘সূরা ফুরক্বান শরীফ’ উনাদের মধ্যে আছে। আর এটা আবার সরাসরি মহান আল্লাহ পাক উনি বললেন যে, কুদরত উনার সরাসরি বাংলায় অর্থ হচ্ছে- ‘নিয়ন্ত্রণ’। আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি আমার নিয়ন্ত্রণে আছেন। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)
এটাই হচ্ছে-
وَمَا يَنْطِقُ عَنِ الْهَوىٰ. اِنْ هُوَ اِلَّ وَحْىٌ يوُّْحٰى
‘ওহী মুবারক ছাড়া উনি কোনো কথা মুবারক বলেন না, কোনো কাজ মুবারক করেন না, কোনো সম্মতি মুবারক প্রকাশ করেন না।’
আর ঐ বিষয়টা
يَ حَبِيْبْ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَنَ وَاَنْتَ وَمَا سِوَاكَ خَلَقْتُ لَِجْلِكَ
قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَ رَبِّ اَنْتَ وَمَا اَنَ وَمَا سِوَاكَ تَرَكْتُ لَِجْلِكَ
“আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি এবং আপনি। আর আপনি ছাড়া যা কিছু রয়েছে সমস্ত কিছু আমি আপনার সন্তুষ্টি মুবারক উনার জন্যই সৃষ্টি করেছি। সুবহানাল্লাহ! জবাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আয় বারে এলাহী! শুধু আপনি, আমিও না। আপনি ছাড়া আর যা কিছু রয়েছে, সমস্ত কিছুই তরক করেছি আপনার রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করার লক্ষ্যে। আমি তো আপনার মধ্যে ফানা-বাক্বা।’
আর ওখানে আরেকটা জিনিস রয়ে গেছে। সেটা হলো-
فَصَلِّ لِرَبِّكَ
এখানে একটা বিষয় রয়েছে। সেটা হলো- যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি ইরশাদ মুবারক করেন,
لَ اُحْصِىْ ثَنَاءً عَلَيْكَ وَلَوْ حَرَصْتُ وَلٰكِنْ اَنْتَ كَمَا اَثْنَيْتَ عَلٰى نفَْسِكَ
“(বারে এলাহী!) আমি তো আপনার অনেক সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করতে চাই। কিন্তু আপনি তো ঐ রকমই যেমনটি আপনি আপনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করেছেন, প্রশংসা মুবারক করেছেন।”
মহান আল্লাহ পাক উনি বললেন, এই সবগুলো মিলে শেষ পর্যন্ত মূল অর্থ হচ্ছে,
يَدُوْرُ بِلْقُدْرَةِ حَيْثُ شَاءَ اللهُ تَعَالٰى
‘(সব মিলালে হবে-) আমি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সমস্ত কিছু দিয়ে সৃষ্টি মুবারক করে উনাকে আমার সাথে সংযুক্ত করেছি। এবং আমার নিয়ন্ত্রণেই উনি আছেন। এটাই হলো মূল কুদরত।’ (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)
বুঝতে পেরেছো কিছু? কঠিন জিনিস। এটা বুঝা কঠিন বিষয়। এখন ফিক্বির করতে হবে। এই কতোগুলো কথা মহান আল্লাহ পাক উনি সরাসরি আমাকে বলছেন। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আর উনার সাথে উপস্থিত ছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যে সমস্ত নিয়ামত মুবারক দিয়ে মহান আল্লাহ পাক সৃষ্টি করেছেন, এটা আমাকে সরাসরি দেখিয়েছন। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) এখন মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কোনো সংযুক্ত না, পাশাপাশি। প্রবেশও করেননি, জুদাও হননি।”
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহহির, আছ ছমাদ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ১৪৪২ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৮ই শাওওয়াল শরীফ লাইলাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (লাইলাতুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ বা সোমবার রাত) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ফালইয়াফরহূ শরীফ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল মুবারক-এ ইরশাদ মুবারক করেন, “এটা বুঝা কঠিন বিষয়। এখন ফিক্বির করতে হবে। এই কতোগুলো কথা মহান আল্লাহ পাক উনি সরাসরি আমাকে বলেছেন। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আর উনার সাথে উপস্থিত ছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যে সমস্ত নিয়ামত মুবারক দিয়ে মহান আল্লাহ পাক সৃষ্টি করেছেন, এটা আমাকে সরাসরি দেখিয়েছেন। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) এখন মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কোনো সংযুক্ত না, পাশাপাশি। প্রবেশও করেননি, জুদাও হননি। আবার সংযুক্ত, সম্মিলিত।” (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)
এর ২ দিন পর অর্থাৎ ১৪৪২ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২০শে শাওওয়াল শরীফ লাইলাতুল আরবিয়া শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ফালইয়াফরহূ শরীফ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল মুবারক-এ জানতে চাওয়া হয়েছিলো- ‘বিষয়টা কি রকম?’ জবাবে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহহির, আছ ছমাদ, মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার দুই হাত মুবারক উনাদের পৃষ্ঠদেশ মিলিয়ে দেখালেন, আমি যেভাবে দেখছি- একবারে এরকম, লাগানো। পাশাপাশি। মহান আল্লাহ পাক যেখানে থাকেন, একদম পাশাপাশি। (দুই হাত মুবারক উনাদের পৃষ্ঠদেশ মিলিয়ে আবার দেখালেন,) এভাবে লাগানো। কোনো ফাঁক নেই। ভিতরে প্রবেশও করেননি, আবার আলাদাও হননি। একদম লাগানো। (সুবহানা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরপরও হাক্বীক্বত তো আরো কিছু রয়ে গেছে।
সুওয়াল: এ ঘটনা মুবারক কি ইস্তাওয়ার পরে ঘটেছে?
জওয়াব মুবারক: হ্যাঁ, হ্যাঁ, পরে।
সুওয়াল: মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মধ্যে কোনো পার্থক্য ছিলো, নাকি একই রকম?
জওয়াব মুবারক: একই রকম। মহান আল্লাহ পাক উনি তো নূর না। মহান আল্লাহ পাক উনি তো কুদরতীভাবে। ঐটা আরেক কুদরত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নূর মুবারক। এক রকম-ই দেখা গেছে। পার্থক্য মেছালী ছূরত মুবারকে মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বাভাবিক ভাবেই আকার মুবারকে বড়। মানে পবিত্র আকার মুবারক-এ পার্থক্য।” (সুবহানা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহহির, আছ ছমাদ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ১৪৪২ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৮ই শাওওয়াল শরীফ লাইলাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (লাইলাতুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ বা সোমবার রাত) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ফালইয়াফরহূ শরীফ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল মুবারক-এ ইরশাদ মুবারক করেন, “ইস্তাওয়া হচ্ছেন এক বিষয়। আর কুদরত মুবারক হচ্ছেন সরাসরি অজুদ মুবারক উনার সাথে সম্পর্কযুক্ত বিষয়। আর এই কুদরত মুবারক উনার অর্থটা মহান আল্লাহ পাক উনি সরাসরি বাংলায়ই বলেছেন- নিয়ন্ত্রিত আমার দ্বারা। আর আরবীটা বলেছেন, ঐ আয়াত শরীফ-
[ }قَدَّرَ فَهَدٰى{ ]اَلَْعْلَى: ৩
‘ক্বদ্দারা’ মানি এখানে তাক্বদীর শব্দ দিয়ে হেদায়াত দিয়েছেন। অর্থাৎ সব নিয়ামত দিয়েই সৃষ্টি করেছি। অর্থাৎ নূর মুবারক উনার কোনো ছূরত মুবারক নেই। সরাসরি অজুদ মুবারক, নূর মুবারক এনে স্থাপন করেছেন। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)
আর
] }قَدَّرَهٗ تَقْدِيْرًا{ ]اَلْفُرْقَانُ: ২
এটা একই কথা। এই আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে অনেক কিছু লেখে। আসলে এগুলো ওদের ভাষাগত দিক দিয়ে বর্ণনা। কিন্তু হাক্বীক্বত হলো- তাক্বদীরে সব ফায়ছালা করে দেয়া হয়েছে অর্থাৎ সমস্ত নেয়ামত যা কিছু আছে সমস্ত কিছুর মালিকানা সব দিয়ে মহান আল্লাহ পাক উনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে স্থাপন করেছেন। তখন কিছুই ছিলো না, ফাঁকা। তারপর ওখান থেকে নূর মুবারক নিয়ে ধাপে ধাপে সবকিছু সৃষ্টি করেছেন। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)
এই সৃষ্টির যে বিষয়টা, এই বিষয়টাও সরাসরি মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে দেখিয়েছেন। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) এটা তো মানুষ বুঝবে না। এখন যদি বলো মানুষের ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে। (না‘ঊযু বি মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) তাহলে সব বলাও মুশকিল। মহান আল্লাহ পাক উনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সৃষ্টি করলেন, আনলেন, এটা আমাকে দেখালেন। কিভাবে দেখালেন? এটা তো মানুষ বুঝবে না। উনি তো দেখিয়েছেন আমাকে। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)
এখন শুনো, ফিক্বির করো। যদি কোনো প্রশড়ব থাকে, পরে করলে আমি জওয়াব দিয়ে দিবো ইনশাআল্লাহ। কোনো অসুবিধা নেই। এখন এগুলো মানুষের বুঝের বাহিরে। এগুলো ভাষা দিয়ে সবটা প্রকাশ করা যায় না। এই যে আমি বলেছি। যে কালিমা শরীফ লেখা আছে-
لَ اِلٰهَ اِلَّ اللهُ
এরপরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক
مَُمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
পাশাপাশি। কিন্তু একজনের ভিতরে আরেকজন না। মহান আল্লাহ পাক উনার থেকে উনি জুদাও না, আবার মহান আল্লাহ পাক উনার ভিতরেও না। কিন্তু পাশাপাশি।
এগুলো তো মানুষ বুঝবে না। এখন যারা শুনছে, এদের অনেকে হয়তো বুঝে নাই। বুঝবে না। এটা ফিক্বির করতে হবে। আর যদি তোমাদের কোনো প্রশড়ব থাকে, পরে জিজ্ঞাসা করলে আমি বলে দিবো ইনশাআল্লাহ। কিন্তু ভাষা দিয়ে বুঝানো অত্যান্ত কঠিন।
এখন শেষ যে কথাগুলো, এগুলো মহান আল্লাহ পাক উনার নিজের বক্তব্য। আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যখন যাহির করা হলো উনি পাশে অবস্থান করতেছেন। উনার অজুদ মুবারক, কুদরত মুবারক। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)
বিষয়টা মানুষের আক্বীদাহর সাথে সম্পৃক্ত। কেউ প্রশড়ব করতে পারে যে, আপনি দেখলেন কিভাবে? আমাকে দেখানো হয়েছে। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)
এখানে অনেক প্রশড়ব আছে। সব প্রশড়ব দরকার নেই। এখন ফিক্বির করো সবাই কতটুকু বুঝতে পেরেছো । বুঝতে পেরেছো? হ্যাঁ? এটা ফিক্বির করতে হবে। বার বার শুনতে হবে এটা। রেকর্ডটা শুনো বার বার। এরপর যদি কোনো প্রশড়ব থাকে, প্রশড়ব করলে আমি জওয়াব দিবো। ইনশাআল্লাহ!
এখানে আগেই আমি একটা প্রশড়ব বলতে পারি এবং জওয়াবও দিতে পারি। সেটা হলো- অনেকে বলতে পারে- তখন কিছু ছিলো না, তাহলে আপনি ছিলেন কোথায়? আপনি দেখলেন কিভাবে?
এক গোলামের উক্তি: ‘মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন।’ এটা আমি আগেই বলে দিলাম। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)
এটা মহান আল্লাহ পাক তিনি দেখিয়েছেন। দেখা তো সম্ভব ছিলো না। এটা একটা কঠিন বিষয়। কুদরত তো আর মানুষ বুঝে নি। তবে শেষের বক্তব্য-কথাগুলি, হুবহু মহান আল্লাহ পাক উনার। উনি সরাসরি স্পষ্টভাবে বলেছেন। সমস্ত নেয়ামত মুবারকসহ যে নূর মুবারক যাহির করলেন, সেই বিষয়টা বা হাক্বীক্বতটা আমাকে স্পষ্ট দেখিয়েছেন। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সংযুক্ত করার কিছু নেই। মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে যেমন সংযুক্ত করার কিছু নেই, একইভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেও সংযুক্ত করার মতো কিছু নেই। সর্বপ্রকার নিয়ামত মুবারক দিয়েই সৃষ্টি করেছেন। এবং সেখান থেকে নূর মুবারক নিয়েই সবকিছু সৃষ্টি করেছেন। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)
আর মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা এখানে সংশ্লিষ্ট অর্থাৎ সম্পৃক্ত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি মহান আল্লাহ পাক উনার দ্বারাই পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রিত। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) অন্য ভাষায় হচ্ছে- উনার থেকে হিস্সা নিয়ে বাকি সবাইকে সৃষ্টি করা হয়েছে। নবী হন, রসূল হন বা অন্যকেহ হন, ওখান থেকে হিস্সা নিয়েই অর্থাৎ নূর মুবারক নিয়েই সৃষ্টি করা হয়েছে। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)
দুইটা আয়াত শরীফ। সূরা আ’লা শরীফে
[ }قَدَّرَ فَهَدٰى{ ]اَلَْعْلَى: ৩
আর সূরা ফুরক্বান শরীফে
] }قَدَّرَهٗ تَقْدِيْرًا{ ]اَلْفُرْقَانُ: ২
সুওয়াল: কতদিন আগের ঘটনা মুবারক?
জওয়াব মুবারক: ঘটনা তো কয়েক দিন আগের।
প্রথম সূত্রপাত করেছেন উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনি। উনিই একদিন কোনো এক প্রসঙ্গে আমাকে বলেছিলেন যে, ‘আমার কাছে আসতে হবে না?’ আমি বলেছি, ‘আসতে হবে’। তারপর উনি বলেছেন, ‘ইলিম শিখতে হলে তো আমার থেকে শিখতে হবে।’ আমি বলেছি, ‘হ্যাঁ’। তো প্রাথমিকটা উনি দেখিয়েছেন। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)
সুওয়াল: কুদরত মুবারকটা কেমন ছিলো?
জওয়াব মুবারক: এটা গোল, একটা বলের মতো। (উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনি কুদরতের মেছালী ছূরতটা) দেখিয়ে বললেন যে, কুদরতের মেছালী ছূরত হলো এটা। উনি কুদরত মুবারকের মেছালী ছূরতটা দেখিয়েছেন। এরপর মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের তরফ থেকে আমাকে বলা হলো যে, এটা বুঝতে হলে মহান আল্লাহ পাক উনার ছমাদিয়াতটা বুঝতে হবে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছমাদিয়াতটা বুঝতে হবে, উনার শানটা বুঝতে হবে। উনাকে যে মহান আল্লাহ পাক উনি সব হাদিয়া করেছেন, এটা বুঝতে হবে। আর মহান আল্লাহ পাক উনি যেমন ছলাত পাঠ করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনিও ছলাত পাঠ করেন মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি। যাহিরীভাবে মানুষ দেখে না, বুঝে না।
এর পরবর্তী সময় মূল জিনিসটা প্রকাশ করলেন। এখন এগুলি ইলমী বিষয়, ফিক্বিরের বিষয়। যারা ফিক্বির করবে, তারা হয়তো বুঝতে পারে।
সবাই তো বুঝবে না। কারণ পবিত্র কুদরত মুবারক তো পবিত্র কুদরত মুবারকই।
এখন আবার পবিত্র কুদরত মুবারক উনার মধ্যেও পার্থক্য আছে। স্বাভাবিকভাবে পবিত্র কুদরত মুবারক মহান আল্লাহ পাক উনার একটা জাতী ছিফত। যা সৃষ্টি নয়। আবার মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে অলৌকিক কোনো জিনিস বের হলে সেটাকেও পবিত্র কুদরত মুবারক বলা হয়। যেমন- নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের থেকে অলৌকিক বিষয়কে ‘মু’জিযা শরীফ’ বলা হয়, আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের অলৌকিক বিষয়কে ‘কারামত’ বলা হয়।
এখন যারা আছে তারা বুঝেছে কি না? বুঝতে হবে, ফিক্বির করতে হবে। আর ইল্মের বিষয়টা তো কঠিন। পবিত্র ইল্ম মুবারক তো মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে আসে। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
} [ اِنمََّا الْعِلْمُ عِنْدَ اللهِ{ ]اَلْمُلْكُ: ২৬
‘নিশ্চয়ই ইল্ম মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে।’
এজন্য বলেছিলাম যে, এটা ভাষা দিয়ে মিলানো বা বুঝানো খুব কঠিন। প্রকাশ করাটাও কঠিন। আবার বুঝানোও কঠিন। এখন কেউ যদি ফিক্বির না করে, সে বুঝবে না। এটা ফিক্বির করতে হবে বুঝতে হলে। আর বিষয়গুলিতো এক সাথে ফিকির করতে হবে, তখন বুঝা যাবে। বিচ্ছিনড়ব বিষয়। ইস্তাওয়াটা বুঝা গেছে সহজে। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইস্তাওয়া করিয়েছেন, পার্থক্য সূচনা করেছেন। এটা তুলনামূলক সহজ বিষয় ছিলো। কিন্তু পবিত্র কুদরত মুবারক তো কঠিন বিষয়। এটা একদম বা একেবারে সরাসরি ওজুদ মুবারক উনার সাথে সংশ্লিষ্ট। এটার ব্যাখ্যা মানুষ করবে কিভাবে? আর এ বিষয়গুলো যদি মহান আল্লাহ পাক তিনি সরাসরি না বলেন, তাহলে বুঝার তো কোনো কিছু পাওয়া যাবে না আগে বা পরে।
يَدُوْرُ بِلْقُدْرَةِ حَيْثُ شَاءَ اللهُ تَعَالٰى
এখন يَدُوْرُ حَيْثُ شَاءَ اللهُ تَعَالٰى এখানে يَدُوْرُ বলতে আসলে
ঘুর্ণয়মান না, অবস্থান মুবারক। মহান আল্লাহ পাক তিনি সরাসরি সৃষ্টি করে অবস্থান করালেন উনার নিয়ন্ত্রণে। ওটাই
] } قَدَّرَ فَهَدٰى{ ]اَلَْعْلَى: ৩
] }قَدَّرَهٗ تَقْدِيْرًا{ ]اَلْفُرْقَانُ: ২
সব দিলেন।
আর এরপরে بِلْقُدْرَةِ (বিল কুদরত)। আসলে بِلْقُدْرَةِ (বিল কুদরত)
অর্থ নিয়ন্ত্রন অর্থাৎ এখানে অন্য কোনো বিষয় নয়। কুদরত মুবারক। এটা সরাসরি মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে একটা নিসবত। মহান আল্লাহ পাক উনি নিয়ন্ত্রণকারী। এটা আর কারো সাথে নেই। একমাত্র নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে, আর কারো সাথে না। আবার ঠিক ওই ওজুদ মুবারক থেকে নূর মুবারক নিয়েই সমস্ত কিছু সৃষ্টি করা হয়েছে। এখানে কারো সম্পর্ক নেই। একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের নিসবত মুবারক।” (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!)
0 Comments:
Post a Comment