ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দাওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছহিবে কাশ্ফ ওয়া কারামত, ফখরুল আউলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল
হক্ব,
গরীবে নেওয়াজ, আওলাদুর রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম-উনার স্মরণে-
একজন কুতুবুজ্জামান-উনার
দিদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-
হজ্ব সমাপন এবং মসজিদে
নববীতে বিশেষ নিয়ামত লাভ
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সঙ্গে জাগ্রত অবস্থায় যার সাক্ষাৎ হয়নি, তার জন্য
স্বপ্নযোগে দিদারলাভ বিরাট কামিয়াবী। এই অতুলনীয় সাফল্য ও সৌভাগ্য লাভে মানুষের প্রার্থনা, প্রয়াস ও
আমলের কোন ভূমিকা নেই। এটি কেবলই আল্লাহ্ পাক-উনার মেহেরবানী। তাইতো বিদগ্ধ কবি এভাবে
তার অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন,
“আমি চাই উনার মিলন। আর তিনি চান আমার বিরহ। তাই উনার ইচ্ছায়
আমি আমার মিলনের প্রত্যাশা পরিত্যাগ করলাম।” মিলন ও বিরহের তাত্ত্বিক ব্যাখ্যায়
হযরত আরিফ শিরাজী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, “মিলন ও বিরহ দিয়ে কী হয়। যা’ কাম্য, তাতো বন্ধুর
সন্তুষ্টি। এটি অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, আপনি প্রিয়তমের নিকট উনাকে ছাড়া অন্য
কিছু চাইবে।”
স্বপ্ন ও জাগ্রত অবস্থায় দিদারলাভ সম্পর্কে হাদীছ শরীফে অনেক ফযীলত বর্ণিত হয়েছে।
হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-উনার বর্ণনায় আশিকে উম্মত হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, “যে ব্যক্তি আমাকে স্বপ্নে দেখে, প্রকৃতপক্ষে
সে আমাকেই দেখে। কারণ,
শয়তান কখনো আমার আকৃতি ধারণ করতে পারেনা।” (তিরমিযী)
তিনি আরো ইরশাদ করেছেন, “যে ব্যক্তি
স্বপ্নে আমার যিয়ারত লাভ করবে, সে অচিরেই জাগ্রত অবস্থায়ও আমার দিদার লাভ করবে। আর শয়তান আমার
ছূরত ধারণে অক্ষম।”
(বুখারী,মুসলিম) উল্লিখিত
হাদীছ শরীফ দু’টির মর্মবাণী হলো যে,
যে ব্যক্তি সরওয়ারে দো’জাহাঁ, হাবীবে কুওয়াতে
আজালান ওয়া আবাদান,
রসূলে মকবুল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার
যিয়ারত লাভ করবে,
তা’
জাগ্রত অবস্থায় হোক অথবা স্বপ্নযোগেই হোক, সে দুনিয়া
ও আখিরাতে কামিয়াবী হাছিল করবে। উভয় অবস্থার দিদারেই (স্বপ্নযোগে অথবা জাগ্রত অবস্থায়)
কামিয়াবী রয়েছে। তবে জাগ্রত অবস্থায় দিদারলাভ, দিদারলাভকারীর অতি উঁচু মাকামের (কামিয়াবীর
পরিণত সোপান) পরিচয় বহন করে। স্বপ্নযোগে অবিরাম সাক্ষাৎ লাভ তো বটেই, জাগ্রত অবস্থায়ও
হাবীবে আ’যম, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন যিয়ারত লাভ এবং
সার্বক্ষণিক যোগাযোগ-সংশ্লিষ্টতায় আশিকে নবী, আওলাদুর রসূল, আফযালুল ইবাদ, ওলীয়ে মাদারজাদ, হযরতুল আল্লামা
শাহ্ ছূফী সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি যে অতুলনীয় মর্যাদা
ও মাকামে অধিষ্ঠিত হয়েছেন,
তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। আউয়ালু শাফিয়ীন, হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সঙ্গে অনেক ক্ষেত্রে স্বপ্নে অতি সাধারণ স্তরের
মানুষেরও (যে সাক্ষাতের প্রত্যাশাও করেনি) সাক্ষাৎ লাভ হয়ে থাকে। তবে সাক্ষাৎ লাভের
পর সে ব্যক্তি খোশ নছীবের অধিকারী হয়ে যায়, যদি সে নেক নিয়তে ঈমান ও আমলে নিবেদিত
থাকে এবং পরিপূর্ণরূপে সুন্নতের পাবন্দ হয়। জাগ্রত অবস্থায় অবিরাম দিদার ও নিয়ামত লাভে
কামিয়াব হওয়ার জন্য লিসানুল হক্ব, ফখরুল আউলিয়া, মুসতাজাবুদ দাওয়াত, আওলাদুর রসূল, হযরতুল আল্লামা
সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতুল্লাহি আলাইহি-উনার মতো পরিপূর্ণ আশিক এবং আল্লাহ্
পাক-উনার মাহবুব ওলী হওয়া আবশ্যক।
মসজিদে নববীতে আজ সে মুবারক
দিদার সংঘটিত হচ্ছে। প্রত্যাশা পূরণের পরম মুহূর্তে তন্দ্রাচ্ছন্ন আশিক নির্বাক। আদব
ও বিনয়ের সঙ্গে তিনি রহমতে আলম, মাশুকে মাওলা, ছহিবে খুলুক্বে আযীম, সাইয়্যিদুল
কাওনাইন, হাবীবুল্লাহ,
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কদমবুছি করলেন, কপাল মুবারকে
চুমু খেলেন। অস্ফুট আওয়াজে নিবেদন জানালেন, “ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, অনুগ্রহ করে আমাকে গ্রহণ করুন, আমাকে পূর্ণ
করুন, কামিয়াব করুন।”
রউফুর রহীম, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার প্রিয় আওলাদকে কাছে টেনে নিলেন। জড়িয়ে ধরলেন এবং বললেন, “আপনি আমার
আশিক, আপনি পরিপূর্ণ,
আপনি কামিয়াব।” (অসমাপ্ত)
আবা-১১৯
0 Comments:
Post a Comment