একজন কুতুবুজ্জামান- উনার দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান- সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযুর ক্বিবলা সাইয়্যিদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার সাওয়ানেহে উমরী মুবারক-পর্ব-৫৫

 


ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দাওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছহিবে কাশ্ফ ওয়া কারামত, ফখরুল আউলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছহিবে  ইস্মে আযম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদুর রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম-উনার স্মরণে-

একজন কুতুবুজ্জামান-উনার দিদারে মাওলা উানার দিকে প্রস্থান-

মুর্শিদ ক্বিবলার সঙ্গে সম্পর্কের গভীরতা

          কুতুবুজ্জামান, আওলার্দু রসূল, হযরতুল আল্লামা, শাহ্ ছূফী, সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান  আলাইহিস সালামছিলেন মাদারজাদ ওলী, হাক্বীক্বত বিশারদ এবং সূক্ষ্মদর্শী আত্মজ্ঞ ওলীআল্লাহ্। কুতুবুল আলম, সুলতানুল আরিফীন, হযরত মাওলানা, শাহ্ ছূফী, আবু নজম মুহম্মদ নাজমুস্ সায়াদাত ছিদ্দীকী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহিও ছিলেন মাদারজাদ ওলী এবং সূক্ষ্ম অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন। কাজেই অভিন্ন ধারায় কামিয়াবীর শীর্ষ পর্যায়ে উভয়ের মাঝে সংগত কারণেই গভীর আত্মিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এমন সুগভীর জানাজানি এবং অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কের কারণেই হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান  আলাইহিস সালাম উনার প্রাণের আঁকা মুর্শিদ ক্বিবলার খানকা শরীফের দরজায় হাজির হওয়া মাত্রই তিনি (মুর্শিদ ক্বিবলা) খানকা শরীফ থেকে বেরিয়ে এসে অন্তরঙ্গ মুরীদকে পরম মমতায় আলিঙ্গন করতেন এবং ভেতরে আপন সান্নিধ্যে নিয়ে যেতেন। মুর্শিদ ও মুরীদের ক্রমবর্ধিষ্ণু অগ্রযাত্রায় এমন মধুর সম্মিলন এবং অন্তরজাত সংস্পর্শ আল্লাহ্ পাক-উনার মাহবুব ওলীগণের জীবন আচরণে বিরল নয়। এ বিষয়ে পূর্বেও কিঞ্চিত আলোকপাত করা হয়েছে।

          ওলীয়ে মাদারজাদ, কুতুবুল আলম, সুলতানুল আরিফীন, শায়খুত্ তরীক্বত, গাউসে জামান, হযরতুল আল্লামা, শাহ্ ছূফী আবু নজম মুহম্মদ নাজমুস্ সায়াদাত ছিদ্দীকী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি ১৯১৩ ঈসায়ী/ ১৩৩৩ হিজরী সালের রবিউল আউয়াল মাসের এক পূর্ণ চন্দ্র রজনীর সুবহে সাদিকের সময় জন্ম গ্রহণ করেন। জন্মকালে উনার অনেক কারামত প্রকাশিত হয় মর্মে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়। ছোটকাল থেকেই তিনি খুব ভাবনাশীল ও চিন্তামগ্ন ছিলেন। উনার স্মরণশক্তি ছিল প্রখর। তিনি ছিলেন আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী। অতি অল্প বয়সেই তিনি অতুলনীয় বুযূর্গী, সুগভীর ইল্মে যাহির ও ইল্মে বাতিন হাছিল করেন। তা এতো গভীর, সূক্ষ্ম ও শাণিত ছিল যে, তিনি মুজাদ্দিদ পিতা হযরতুল আল্লামা আবু বকর ছিদ্দীকী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি-উনার দরবার শরীফের নিগূঢ় তাছাউফ তত্ত্ববিদ এবং সমকালীন ব্যুৎপত্তিসম্পন্ন অন্যান্য আলিমগণের ঈর্ষার পাত্র হয়ে উঠেছিলেন। উনার জীবন যাপন পদ্ধতি ছিল সহজ-সরল এবং অতি সাদাসিধে ধরণের। বুযূর্গ পিতার সমুদয় গুণাবলীর মাত্রানুপাত সমাবেশে উনার যাহির ও বাতিন ছিল পরিপূর্ণ নিয়ামতে ভরপুর। উনার মুবারক জীবন পুরোপুরি জানা গেলে মুযাদ্দিদুয্যামান, কুতুবুল আলম, ইমামুল মিল্লাত ওয়াদ্ দ্বীন, কাইউমুয্যামান, হযরতুল আল্লামা আবু বকর ছিদ্দীকী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি-উনার বুযূর্গী, কামিয়াবীর শীর্ষ সোপান এবং মুসলিম উম্মাহ-উনার প্রতি উনার অপরিসীম অবদানের মাত্রা উপলব্ধি করা সহজ ও সম্ভব হয়।

          মাদারজাদ ওলী, হযরতুল আল্লামা শাহ ছূফী আবু নজম মুহম্মদ নাজমুস্ সায়াদাত ছিদ্দীকী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি-উনার ছোহবতে এসে উনার মধুর আচরণ ও আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বে কেউই মুগ্ধ না হয়ে পারতোনা। ১৯৩২ ঈসায়ী সালে উনার শাদী মুবারক অনুষ্ঠিত হয়। মাত্র ছাব্বিশ বছর বয়স মুবারকে তিনি পিতৃহারা হন। মুজাদ্দিদ পিতার অতুলনীয় স্নেহ, বর্ণনাতীত মুহব্বত, সোপর্দিত নিয়ামতরাজি ও ফয়েজ উনার কামিয়াবীর অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত করে। মুজাদ্দিদুয্যামান হযরতুল আল্লামা আবু বকর ছিদ্দীকী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি একবার হযরত মুুজাদ্দিদে আলফেছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি-উনার মাজার শরীফ জিয়ারতে ভারতের সিরহিন্দ শরীফে যান। দরবার শরীফের এক খাদিম স্বপ্নযোগে আদিষ্ট হয়ে হযরত মুজাদ্দিদে আলফেছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি-উনার একটি টুপি মুবারক উনাকে হাদিয়া প্রদান করেন। ঐ টুপি মুবারক তিনি উনার পাঁচ বুযূর্গ পুত্র সন্তানের মধ্যে ওলীয়ে মাদারজাদ, হযরতুল আল্লামা, শাহ্ ছূফী, আবু নজম মুহম্মদ নাজমুস্ সায়াদাত ছিদ্দীকী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহিকে আগ্রহভরে দান করেন। এতে উনার মর্যাদা এবং উনার প্রতি পিতার মুহব্বতের আধিক্য উপলব্ধি করা যায়।    (অসমাপ্ত)

আবা-১১৪

0 Comments: