সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাঈন আলাইহিস সালাম উনার বেমেছাল ফযীলত মুবারক,খিদমত মুবারক,মুসলমানদের প্রাচুর্যতা,সীমাহীন শান-মান,লক্বব মুবারক,সুওয়াল মুবারক,হিজরত মুবারক,সাদৃশ্যতা মুবারক,ওসিয়ত মুবারক,দুনিয়া ও আখিরাতে আমার বন্ধু-
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আছ ছমাদ মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল মহাসম্মানিত তা‘য়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ১লা মুর্হারমুল হারাম শরীফ ১৪৩৯ হিজরী শরীফ ইরশাদ মুবারক করেন, “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাঈন আলাইহিস সালাম তিনি কোন স্থান মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন, সেই সম্মানিত স্থান মুবারকখানা দেখিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! আমি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ জানতে চাইলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! তিনি কোন সময় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন? তখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে একটি কাটা ওয়ালা ঘড়ি মুবারক দেখালেন। আমি দেখলাম, তখনও উক্ত সম্মানিত ঘড়ি মুবারক-এ ১২:০০ টা বাজেনি। সেকেন্ডের কাটাটি আর ৪৫ সেকেন্ড অতিক্রম করলে ১২:০০ বাজবে। অর্থাৎ ১২:০০ টা বাজতে আর ৪৫ সেকেন্ড বাকি রয়েছে। অর্থাৎ ১১ টা বাজে ৫৯ মিনিট ১৫ সেকেন্ডে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন।” সুবহানাল্লাহ!
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাঈন আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাশরীফ মুবারক গ্রহণের ছয় বৎসর পর বা আমুল ফিলের ৬ বৎসর পর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৩রা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ইয়াওমুল ইছানাইনিল ‘আযীম শরীফ) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি ৩৫ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৮ই যিলহজ্জ শরীফ ইয়াওমুল জুমু‘আহ শরীফ জুমু‘আহ্ উনার নামাযের পূর্বে ১১টা বেজে ৫৯ মিনিট ১৫ সেকেন্ডে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন।” সুবহানাল্লাহ!
এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওয়াক্বেয়াহ মুবারক উনার মাধ্যমে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এক অভূতপূর্ব অনন্য মহাসম্মানিত বেমেছাল তাওয়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক উনার বিষয়টি স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছেন। সুবহানাল্লাহ! এতো গভীর তা‘য়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক! সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাঈন আলাইহিস সালাম তিনি যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন তো ঘড়ি ছিলো না। কিন্তু প্রায় দেড় হাজার বছর পরে এসে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এতো নিঁখুতভাবে বর্ণনা করে দিলেন যে, তিনি কয়টা বেজে, কতো মিনিটে এবং কতো সেকেন্ডে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! প্রকৃতপক্ষে সন্দেহাতীতভাবে পৃথিবীর ইতিহাসে এটা এক নযীরবিহীন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওয়াক্বেয়াহ মুবারক, যেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওয়াক্বেয়াহ মুবারক উনার মেছাল আর নেই। সুবহানাল্লাহ!
চিন্তাশীল ও আক্বলমান্দের জন্য এই একটি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওয়াক্বেয়াহ মুবারকই যথেষ্ট নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত বেমেছাল তা‘য়াল্লুক-নিসবত মুবারক উনার বিষয়টি উপলব্ধি করার জন্য। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে ছহীহ সমঝ দান করুন। আমীন!
আমীরুল মু’মিনীন, কাতিবে ওহী, জামিউল কুরআন, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার বেমেছাল ফযীলত মুবারক
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَن حَضْرَتْ ثُمامة بن حَزْنٍ الْقشيرِي رحمة الله عليه قَالَ شَهِدْتُ الدَّارَ حِينَ أَشْرَفَ عَلَيْهِمْ سيدنا حضرت عُثْمَانُ ذُو النُّوْرَيْـنِ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَقَالَ أنْشدكُمْ بِاللَّه وَالْإِسْلَامَ هَلْ تَعْلَمُونَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدِمَ الْمَدِينَةَ وَلَيْسَ بِهَا مَاءٌ يُسْتَعْذَبُ غَيْرُ بِئْرِ رُومَةَ فَقَالَ مَنْ يَشْتَرِي بِئْرَ رُومَةَ يَجْعَلُ دَلْوَهُ مَعَ دِلَاءِ الْمُسْلِمِينَ بِخَيْرٍ لَهُ مِنْهَا فِي الْجَنَّةِ فَاشْتَرَيْتُهَا مِنْ صُلْبِ مَالِي وَأَنْتُمُ الْيَوْمَ تَمْنَعُونَنِي أَنْ أَشْرَبَ مِنْهَا حَتَّى أَشْرَبَ مِنْ مَاءِ الْبَحْرِ قَالُوا اللَّهُمَّ نعم. فَقَالَ أنْشدكُمْ بِاللَّه وَالْإِسْلَامَ هَلْ تَعْلَمُونَ أَنَّ الْمَسْجِدَ ضَاقَ بِأَهْلِهِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ يَشْتَرِي بُقْعَةَ آلِ فُلَانٍ فَيَزِيدُهَا فِي الْمَسْجِد بِخَير مِنْهَا فِي الْجَنَّةِ . فَاشْتَرَيْتُهَا مِنْ صُلْبِ مَالِي فَأَنْتُمُ الْيَوْمَ تَمْنَعُونَنِي أَنْ أُصَلِّيَ فِيهَا رَكْعَتَيْنِ فَقَالُوا اللَّهُمَّ نعم. قَالَ أنْشدكُمْ بِاللَّه وَالْإِسْلَامَ هَلْ تَعْلَمُونَ أَنِّي جَهَّزْتُ جَيْشَ الْعُسْرَةِ مِنْ مَالِي قَالُوا اللَّهُمَّ نَعَمْ قَالَ أَنْشُدُكُمُ بِاللَّه وَالْإِسْلَامَ هَلْ تَعْلَمُونَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ عَلَى ثَبِيرِ مَكَّةَ وَمَعَهُ سيدنا حَضْرَتْ أَبُو بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَ سيدنا حَضْرَتْ عُمَرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَأَنَا فَتَحَرَّكَ الْجَبَلُ حَتَّى تَسَاقَطَتْ حِجَارَتُهُ بِالْحَضِيضِ فَرَكَضَهُ بِرِجْلِهِ قَالَ اسْكُنْ ثَبِيرُ فَإِنَّمَا عَلَيْكَ نَبِيُّ وَصِدِّيقٌ وَشَهِيدَانِ قَالُوا اللَّهُمَّ نَعَمْ. قَالَ اللَّهُ أَكْبَرُ شَهِدُوا وَرَبِّ الْكَعْبَةِ أَنِّي شَهِيدٌ ثَلَاثًا
অর্থ: হযরত ছুমামা ইবনে হাযন কুশাইরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, (যখন বিদ্রোহীরা সাইয়্যিদুনা হযরত উছমান যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হুজরা শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র গৃহ মুবারক) অবরোধ করে রেখেছিল, এ সময়) আমি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হুজরা শরীফ উনার কাছে উপস্থিত ছিলাম। যখন সাইয়্যিদুনা হযরত উছমান যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হুজরা শরীফ উনার উপর থেকে লোকদের দিকে তাকিয়ে বললেন, আমি তোমাদেরকে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার ক্বসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, তোমরা কি এই ব্যাপারে অবগত আছো যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হিজরত মুবারক করে যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করলেন, তখন ‘রুমার কূপ’ ব্যতীত অন্য কোথাও মিষ্টি পানি পাওয়া যেত না? তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, “যে ব্যক্তি রুমার কূপটি খরিদ করে মুসলমানদের অবাধে ব্যবহারের জন্য ওয়াকফ করে দিবে, বিনিময়ে সে সম্মানিত বেহেশত মুবারক উনার মধ্যে তদপেক্ষা উত্তম কূপ লাভ করবে। সুবহানাল্লাহ! তখন আমি উক্ত কূপটি আমার একান্ত ব্যক্তিগত অর্থে খরিদ করে হাদিয়া মুবারক করি। অথচ আজ তোমরা আমাকে উক্ত কূপের পানি পান করা হতে বাধা দিচ্ছ। এমনকি আমি সমুদ্রের লোনা পানি পান করছি। নাঊযুুবিল্লাহ! লোকেরা বললো, মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! হ্যাঁ, আমরা তা জানি। তারপর তিনি বললেন, আমি তোমাদেরকে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার ক্বসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, তোমরা কি জান যে, যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে নববী শরীফ মুছল্লী উনাদের তুলনায় সংকীর্ণ হয়ে পড়েছিলেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি অমুকের বংশধর হতে এ যমীনটি খরিদ করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে নববী শরীফ বৃদ্ধি করে দিবেন, তার বিনিময়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাকে তা থেকে উত্তম ঘর সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ দান করবেন। তখন আমিই তা আমার ব্যক্তিগত অর্থে খরিদ করে হাদিয়া মুবারক করি। অথচ আজ তোমরা আমাকে সেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে নববী শরীফ উনার মধ্যে দু’রাকায়াত নামায পড়তে বাধা দিচ্ছ। উত্তরে তারা বললো, মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! হ্যাঁ, আমরা তা জানি। অতঃপর তিনি বললেন, আমি তোমাদেরকে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার ক্বসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, তোমরা কি অবগত আছ যে, দারুণ কষ্টের অভিযানে (তাবুক জিহাদে) সৈন্যদিগকে আমি আমার নিজস্ব সম্পদ হতে জিহাদের সামান দিয়ে সাজিয়েছিলাম? লোকেরা বললো, মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! হ্যাঁ আমরা তা জানি। তারপর তিনি বললেন, আমি তোমাদেরকে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার ক্বসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, তোমরা একথাটি অবগত আছ কি, একদা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ উনার অনতিদূরে ‘সাবীর’ পাহাড়ের উপর দ-ায়মান ছিলেন, উনার সাথে সেখানে সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি এবং আমিও উপস্থিত ছিলাম। হঠাৎ পাহাড়টি নড়াচড়া করতে লাগল। এমনকি তা হতে কিছু পাথর নিচের দিকে পড়তে লাগলো। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পাহাড়টিতে স্বীয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বদম মুবারক) ঠুকিয়ে বললেন, স্থির হয়ে যাও হে সাবীর! তোমার উপর একজন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নবী-রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি, একজন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছিদ্দীক্ব এবং দুইজন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শহীদ রয়েছেন। উত্তরে লোকেরা বললো, মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! হ্যাঁ, আমরা তা জানি। অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি বলে উঠলেন, আল্লাহু আকবার! লোকেরা সত্য সাক্ষ্যই দিয়েছে। তারপর তিনি বললেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার রব মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! নিশ্চয়ই আমি একজন শহীদ ব্যক্তি।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ, নাসায়ী শরীফ ও দারু কুতনী)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ خَبَّابٍ رضى الله تعالى عنه قَالَ شَهِدْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ يَحُثُّ عَلَى جَيْشِ الْعُسْرَةِ فَقَامَ سيدنا حضرت عُثْمَانُ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَقَالَ يَا رَسُول الله عَلَيَّ مِائَة بَعِيرٍ بِأَحْلَاسِهَا وَأَقْتَابِهَا فِي سَبِيلِ اللَّهِ ثُمَّ حَضَّ عَلَى الْجَيْشِ فَقَامَ سيدنا حضرت عُثْمَانُ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَقَالَ عَلَيَّ مِائَتَا بَعِيرٍ بِأَحْلَاسِهَا وَأَقْتَابِهَا فِي سَبِيلِ اللَّهِ ثُمَّ حَضَّ فَقَامَ سيدنا حضرت عُثْمَانُ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَقَالَ: عَلَيَّ ثَلَاثُمِائَةِ بَعِيرٍ بِأَحْلَاسِهَا وَأَقْتَابِهَا فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَأَنَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَنْزِلُ عَنِ الْمِنْبَرِ وَهُوَ يَقُولُ مَا عَلَى عُثْمَانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ مَا عَمِلَ بَعْدَ هَذِهِ مَا عَلَى سيدنا حضرت عُثْمَانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ مَا عَمِلَ بَعْدَ هَذِهِ
অর্থ: হযরত আব্দুর রহমান ইবনে খব্বাব রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন, একবার আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ উপস্থিত ছিলাম। সে সময় তিনি “জায়শুল ‘উসরাহ” তথা সম্মানিত তাবুক যুদ্ধে খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে উৎসাহ মুবারক প্রদান করছিলেন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি দাঁড়িয়ে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় গদি ও পালানসহ একশত উট আমার যিম্মায়। সুবহানাল্লাহ! এরপরও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উৎসাহ মুবারক প্রদান করতে থাকলেন। সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি পুনরায় দাঁড়িয়ে বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় গদি ও পালানসহ দুইশত উট আমার যিম্মায়। সুবহানাল্লাহ! আবারও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উৎসাহ মুবারক প্রদান করলেন। সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি আবারও দাঁড়িয়ে বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় গদি ও পালানসহ তিনশত উট আমার যিম্মায়। সুবহানাল্লাহ! (বর্ণনাকারী বলেন-) আমি দেখলাম, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এই কথা মুবারক বলতে বলতে মিম্বর শরীফ থেকে অবতরণ মুবারক করলেনÑ এই সম্মানিত আমল মুবারক উনার পর সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি যে আমলই করেন, উনার জন্য তা ক্ষতিকর হবে না। এই সম্মানিত আমল মুবারক উনার পর সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি যে আমলই করেন, উনার কোনো ক্ষতি হবে না।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ سَمُرَةَ رضى الله تعالى عنه قَالَ جَاءَ سيدنا حضرت عُثْمَانُ عَلَيْهِ السَّلَامُ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِأَلْفِ دِينَارٍ فِي كُمِّهِ حِينَ جَهَّزَ جَيْشَ الْعُسْرَةِ فَنَثَرَهَا فِي حِجْرِهِ فَرَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُقَلِّبُهَا فِي حِجْرِهِ وَيَقُولُ مَا ضَرَّ سيدنا حضرت عُثْمَانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ مَا عَمِلَ بَعْدَ الْيَوْمِ مرَّتَيْنِ.
অর্থ: হযরত আব্দুর রহমান ইবনে সমুরা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন সম্মানিত তাবুক জিহাদ উনার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখন সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি উনার জামা মুবারক উনার আস্তিনে পুরে একহাজার দীনার তথা স্বর্ণমুদ্রা মুবারক নিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ আসলেন এবং দীনারগুলো নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল আযহার মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কোল মুবারক-এ) ঢেলে দিলেন। সুবহানাল্লাহ! (বর্ণনাকারী বলেন,) আমি দেখলাম- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সেই মুদ্রাগুলো উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল আযহার মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কোল মুবারক-এ) উলট-পালট করছিলেন এবং বলছিলেন- আজকের পর সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি যে আমলই করেন না কেন উনার কোনো ক্ষতি হবে না। এই কথা মুবারকখানা তিনি দুইবার বলেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ)
খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খিলাফত মুবারককালে মুসলমানদের প্রাচুর্যতা-
জীবন চরিত ও ইতিহাস গ্রন্থ যারা অধ্যয়ন করেছেন, তারা খুব ভালোভাবেই জানেন যে, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত খিলাফত মুবারক উনার কার্যাবলী অত্যন্ত চমৎকারভাবে আঞ্জাম দিয়েছেন। হযরত হাসান বসরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমি সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার ঘোষককে এ ঘোষণা করতে শুনেছি, হে লোক সকল! তোমাদের দৈনিক ভাতা সকালে এসে নিয়ে যাও। লোকেরা দলে দলে এসে প্রচুর পরিমাণ সম্পদ নিয়ে যেত। খোদার ক্বসম! আমি নিজ কানে শুনেছি, ঘোষক কখনো ডেকে বলতো, তোমাদের কাপড়-চোপড় নিতে আসো। তারা গিয়ে দামী পোশাক-পরিচ্ছেদ নিয়ে আসতো। কখনো ঘোষক ডেকে বলতো, তোমাদের মধু ও অন্যান্য দ্রব্য নিতে আসো। তারা এসে তা নিয়ে যেতো। সুবহানাল্লাহ!
তিনি বলেন, উনার যামানায় ঘরে ঘরে রুযীর ব্যবস্থা ছিলো। সম্পদের প্রাচুর্য ছিলো। লোকদের অবস্থা ছিলো যথেষ্ট সচ্ছল। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার তৃতীয় খলীফা, খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খিলাফত মুবারককালে সম্মানিত মুসলমান উনারা এতোটাই অধিক সুখ, শান্তি, আরাম, আয়েশ, সচ্ছলতা ও প্রাচুর্যতার মধ্যে ছিলেন যে, তখন যাকাত নেয়ার মতো কোনো লোক খুঁজে পাওয়া যেতো না। অর্থাৎ সবাই এতো অধিক ধনী ছিলেন যে, সবাই যাকাত প্রদান করতেন। যাকাত গ্রহণ করার মতো কেউ ছিলেন না। সুবহানাল্লাহ!
কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন,
كَثُرَ الْمَالُ فِي زَمَنِ عُثْمَانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ حَتَّى بِيعَتْ جَارِيَةٌ بِوَزْنِهَا وَفَرَسٌ بِمِائَةِ أَلْفِ دِرْهَمٍ وَنَخْلَةٌ بِأَلْفِ دِرْهَمٍ
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার যামানায় ধন-সম্পদের এতো অধিক প্রাচুর্যতা বৃদ্ধি পেয়েছিলো যে, দাস-দাসী বিক্রি করা হতো স্বর্ণ-রৌপ্যের ওজনে, একটি ঘোড়া বিক্রি করা হতো এক লক্ষ দিরহামের বিনিময়ে (৩ থেকে ৪ কোটি টাকার বিনিময়ে) এবং একটি খেজুর বৃক্ষ বিক্রি করা হতো এক হাজার দিরহামের বিনিময়ে (৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকার বিনিময়ে)।” সুবহানাল্লাহ! (আল ইস্তিয়াব ফী মা’রিফাতিল আছহাব ১/৩২০, আল আওয়াছিম মিনাল ক্বাওয়াছিম ১/৭০, আর রিয়াদুন নাদ্বরাহ ফী মানাক্বিবে আশারাহ লিমুহিব্বে ত্ববারী ১/২১৭, তারীখু মাদীনাতিল মুনাওওয়ারাহ ২/১৩৪, নিহায়াতুল আরব ১৯/৩১৭)
হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন যে, ‘তখন সম্মানিত মুসলমানদের এতো অধিক সচ্ছলতা ছিলো যে, উনারা পৃথিবীর সবচেয়ে দামী কাপড়, কাত্তানের কাপড় দিয়ে নাক মুবারক পরিষ্কার করতেন।’ সুবহানাল্লাহ!
এতো দামী কাপড় দিয়ে যদি নাক মুবারক পরিষ্কার করা হয়, তাহলে সম্মানিত মুসলমান উনারা কত অধিক সচ্ছলতা ও সুখ-শান্তির মধ্যে ছিলেন, তা চিন্তা-ফিকিরের বিষয়। সুবহানাল্লাহ!
তখন হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনিসহ আরো অনেক হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা কান্নাকাটি করতেন যে, এতো অধিক সুখ, শান্তি যে, উনাদের সমস্ত বদলা দুনিয়াতেই দেয়া হয়ে গেলো কিনা! সুবহানাল্লাহ!
তাহলে তখন সম্মানিত মুসলমান উনারা কত অধিক সুখ-শান্তিতে ছিলেন, তা ফিক্বিরের বিষয়। মূলত তখন দুনিয়াটা হয়েছিলো সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার একখানা অংশ মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
যার কারণে উনার সম্মানিত খিলাফত মুবারককালে জগতবাসী দুনিয়ার যমীনে থেকেই সম্মানিত জান্নাতী অমীয় সুখ-শান্তি উপভোগ করেছিলেন। সম্মানিত মুসলমান উনাদের মাঝে প্রাচুর্যতার সাগর উথলিয়ে পড়েছিলো। পৃথিবীর সবচাইতে দামী কাপড়, কাত্তানের কাপড় দিয়ে উনারা নাক মুবারক পরিষ্কার করতেন। দাস-দাসী বিক্রি করা হতো স্বর্ণ-রৌপ্যের ওজনে। যাকাত নেয়ার মতো লোক খুঁজে পাওয়া যেতো না। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দ্বীন ইসলাম ছড়িয়ে পড়েছিলো বিশ্বময়। সমগ্র পৃথিবীর বুকে ছিলো সম্মানিত মুসলমান উনাদের একক আধিপত্য। সম্মানিত মুসলমান উনাদের নাম মুবারক শুনলে কাফির-মুশরিকদের অন্তর-আত্মা কেঁপে উঠতো। কাফির-মুশরিকরা সম্মানিত মুসলমানগণ উনাদের গোলামে পরিণত হয়েছিলো। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি সীমাহীন শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের একক মালিক -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ اُمِّ الْـمُؤْمِنِيْنَ حَضْرَتْ عَائِشَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ قَالَتْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ اَوْحٰـى اِلَـىَّ اَنْ اُزَوِّجَ كَرِيـْمَتَـىَّ مِنْ حَضْرَتْ عُثْمَانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ حَضْرَتْ رُقَيَّةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ وَحَضْرَتْ اُمَّ كُلْثُوْمٍ عَلَيْهَا السَّلَامُ
অর্থ: “উম্মুল মু’মিন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমার নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওহী মুবারক প্রেরণ করেছেন, আমি যেন আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুইজন বানাত আলাইহিমাস সালাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সাথে সুসম্পন্ন করি।” সুবহানাল্লাহ! (মা’রিফাতুছ ছাহাবা লিআবী নাঈম ২২/২২৪)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَيْرُ الشَّفِيْعِ لِـحَضْرَتْ عُثْمَانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ مَا اَنَا اُزَوِّجُ بَنَاتِىْ وَلَكِنَّ اللهَ تَعَالـٰى يُـزَوِّجُـهُـنَّ.
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার জন্য সর্বোত্তম সুপারিশকারী রয়েছেন। আমি আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বানাত আলাইহিমাস সালাম উনাদের সাথে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ সুসম্পন্ন করিনি; বরং মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বয়ং নিজেই সেটা সুসম্পন্ন করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরকে হাকিম)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَقِىَ حَضْرَتْ عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَهُوَ مَغْمُوْمٌ فَقَالَ مَا شَأْنُكَ يَا حَضْرَتْ عُثْمَانُ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ بِاَبِـىْ اَنْتَ يَا رَسُوْلَ اللهِ وَاُمِّـىْ هَلْ دَخَلَ عَلـٰى اَحَدٍ مِّـنَ النَّاسِ مَا دَخَلَ عَلَىَّ تُوُفِّيَتْ بِنْتُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَحِمَهَا اللهُ وَانْقَطَعَ الصِّهْرُ فِيْمَا بَيْنِـىْ وَبَيْنَكَ اِلـٰى اٰخِرِ الْاَبَدِ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَتَقُوْلُ ذٰلِكَ يَا حَضْرَتْ عُثْمَانُ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَهٰذَا حَضْرَتْ جِبْرِيْلُ عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ يَأْمُرُنِـىْ عَنْ اَمْرِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ اَنْ اُزَوِّجَكَ اُخْتَهَا حَضْرَتْ اُمَّ كُلْثُوْمٍ عَلَيْهَا السَّلَامُ عَلـٰى مِثْلِ صَدَاقِهَا وَعَلـٰى مِثْلِ عِدَّتِـهَا فَزَوَّجَهٗ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِيَّاهَا.
অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। (তিনি বলেন, একদা) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাকে চিন্তিত অবস্থায় দেখলেন। তারপর তিনি উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করলেন, হে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম! আপনার কী অবস্থা? (আপনাকে এরূপ চিন্তিত দেখা যাচ্ছে কেন?) তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার জন্য আমার পিতা-মাতা কুরবান হোক! আমার উপর যে মুছীবত এসেছে, সেটা কী অন্য কারো উপর অর্পিত হয়েছে? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার উপর রহম করুন! আর আমার এবং আপনার মাঝে যে, আত্মীয়তার সম্পর্ক মুবারক ছিলেন, তা চিরতরে শেষ হয়ে গেছেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনি এই কথা বলছেন? এইতো ইনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম, তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে আমার নিকট এই সম্মানিত সংবাদ মুবারাক নিয়ে এসেছেন যে, আমি যেন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বোন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনাকে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার অনুরূপ এবং সমপরিমাণ মোহরানা মুবারকসহ আপনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ সুসম্পন্ন করি। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনাকে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার অনুরূপ সম্মানিত মোহরানা মুবারক অনুযায়ী সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ দেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরকে হাকিম শরীফ ৪/৫৪)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَن حَضْرَتْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ سَـمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ مَا زَوَّجْتُ حَضْرَتْ عُثْمَانَ عليه السلام حَضْرَتْ أُمَّ كُلْثُومٍ عليها السلام إِلَّا بِوَحْي مِنَ السَّمَاءِ.
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি শুনেছি, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, আমি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওহী মুবারক উনার মাধ্যমেই সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সাথে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ সুসম্পন্ন করেছি।” সুবহানাল্লাহ! (আশ শরী‘য়াহ ৪/১৯৩৯, আল মু’জামুল আওসাত্ব ৫/২৬৪, আল মু’জামুল কাবীর ২৫/৯২ ইত্যাদি)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছেন,
عَنْ عِصْمَةَ بْنِ مَالِكٍ الْـخَطْمِىِّ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ قَالَ لَمَّا مَاتَتْ بِنْتُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الَّتِـىْ تَـحْتَ عُثْمَانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زَوِّجُوْا عُثْمَانَ لَو كَانَ لِـىْ ثَالِثَةً لَزَوَّجْتُهُ وَمَا زَوَّجْتُهٗ اِلَّا بِالْوَحْىِ مِنَ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ
অর্থ: “হযরত ‘ইছমাহ ইবনে মালিক খত্বমিইয়্যী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আপনারা সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ দিন। যদি আমার তৃতীয় (অবিবাহিত) বানাত (মেয়ে) থাকতেন, আমি উনাকে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ দিতাম। আমি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওহী মুবারক প্রাপ্ত হয়েই সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার নিকট আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বানাত আলাইহিমাস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ দিয়েছি।” সুবহানাল্লাহ! (ত্ববারনী, মাজমাউয যাওয়ায়িদ)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছেন,
وَرَوَى حَضْرَتْ أَبُو هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَفَ عَلَى قَبْرِ ابْنَتِهِ الثَّانِيَةِ الَّتِي كَانَتْ عِنْدَ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ ذِى النُّوْرَيْـنِ عَلَيْهِ السَّلَامُ (سَيِّدِنَا حَضْرَتْ عُثْمَانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ) فَقَالَ أَلَا أَبُو أَيِّمٍ أَلَا أَخُو أَيِّمٍ يُزَوِّجُهَا سَيِّدَنَا حَضْرَتْ ذِا النُّوْرَيْـنِ عَلَيْهِ السَّلَامُ (سَيِّدَنَا حَضْرَتْ عُثْمَانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ) فَلَوْ كَانَ لِي عَشْرٌ لَزَوَّجْتُهُنَّ سَيِّدَنَا حَضْرَتْ ذِا النُّوْرَيْـنِ عَلَيْهِ السَّلَامُ (سَيِّدَنَا حَضْرَتْ عُثْمَانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ) وَمَا زَوَّجْتُهُ إِلَّا بِوَحْيٍ مِنَ السَّمَاءِ
অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার নিকট অবস্থান মুবারক করছিলেন। অতঃপর তিনি বললেন, কোনো পিতা রয়েছেন যে, যিনি উনার মেয়ে এবং কোনো ভাই রয়েছেন যে, যিনি উনার বোনকে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ দিবেন? আমার যদি দশ জন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বানাত (মেয়ে) আলাইহিন্নাস সালাম থাকতেন, তাহলে আমি একজন উনার পর আরেকজন এইভাবে ১০ জনকেই সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ দিতাম। আমি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওহী মুবারক প্রাপ্ত হয়েই সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সাথে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বানাত (মেয়ে) আলাইহিমাস সালাম উনাদেরকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ দিয়েছি।” সুবহানাল্লাহ! (আশ শরী‘য়াহ ৩/৩২৭)
অপর বর্ণনায় এসেছেন,
وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَوْ أَنَّ عِنْدِي مِائَةَ بِنْتٍ يَمُتْنَ وَاحِدَةً بَعْدَ وَاحِدَةٍ زَوَّجْتُكَ أُخْرَى
অর্থ: “যেই মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত কুদরতী হাত মুবারক-এ আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল আম্র মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র প্রাণ মুবারক) উনার ক্বসম, যদি আমার একশত জন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বানাত (মেয়ে) আলাইহিন্নাস সালাম উনারা থাকতেন এবং একজন উনার পর অপরজন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করতেন, তাহলে আমি একজন উনার পর আরেকজন এইভাবে আমার একশতজন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বানাত (মেয়ে) আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে আপনার নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ দিতাম।” সুবহানাল্লাহ! (শরহে মুসনাদে আবী হানীফা ১/৪১৪, মিরক্বাত শরীফ ৯/৩৯২৬, জামি‘উল আহাদীছ শরীফ ১৬/২২, যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ ১/১৬৬, তারীখুল খমীস ১/২৭৬, মাওয়াহিবুল লাদুননিয়্যাহ ১/৪৮১, সিমতুন নুজূম ১/৫১০, আর রিয়াদুন নাদ্বরাহ ১/২০২)
তাহলে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কত বেমেছাল তা জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার বাইরে। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সাইয়্যিদুনা হযরত উছমান ইবনে আফফান আলাইহিস সালাম উনাকে ‘যুন নূরাইন’ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লক্বব মুবারক হাদিয়া মুবারক-
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ اُمِّ الْـمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اَلثَّالِثَةِ اَلصِّدِيْقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ عَائِشَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) قَالَتْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ اَوْحٰـى اِلَـىَّ اَنْ اُزَوِّجَ كَرِيـْمَتَـىَّ مِنْ حَضْرَتْ عُثْمَانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ حَضْرَتْ رُقَيَّةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ وَحَضْرَتْ اُمَّ كُلْثُوْمٍ عَلَيْهَا السَّلَامُ
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমার নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওহী মুবারক প্রেরণ করেছেন, আমি যেন আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুইজন বানাত আলাইহিমাস সালাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সাথে সুসম্পন্ন করি।” সুবহানাল্লাহ! (মা’রিফাতুছ ছাহাবা লিআবী নাঈম ২২/২২৪)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم إِنَّ اللهَ تَعَالَى أَوْحَى إِلَيَّ أَنْ أزَوِّجَ كَرِيمَتَيَّ مِنْ حَضْرَتْ عُثْمَانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ يعنى حَضْرَتْ رقية عَلَيْهَا السَّلَامُ وحَضْرَتْ أم كلثوم عَلَيْهَا السَّلَامُ
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমার নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওহী মুবারক প্রেরণ করেছেন, আমি যেন আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুইজন বানাত আলাইহিমাস সালাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সাথে সুসম্পন্ন করি।” সুবহানাল্লাহ! (ফাদ্বাইলুছ ছাহাবা ১/১১২, আল মু’জামুল আওসাত্ব ৪/১৮, আল মু’জামুছ ছগীর ১/২৫৩, মাজমা‘উয যাওয়াইদ ৫/৩৮৯, আল ফাতহুল কাবীর ১/৩০৪, জামি‘উল আহাদীছ ৭/৪৭৬, ইবনে আদী ৫/৭০, ইবনে ‘আসাকির ৩৯/৪১, জাম‘উল জাওয়ামি’ ১/৮৩৭২, যাখায়েরুল উক্ববা লিমুহিব্বে ত্ববরী ১/১৬৩, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৩৩, আর রিয়াদ্বুন নাদ্বরাহ ১/২০২ ইত্যাদি)
সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ উনার ফলশ্রুতিতে একখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ লক্বব মুবারক-এ ভূষিত হন। আর সেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ লক্বব মুবারকখানা হলেন ‘যুন নূরাইন’ অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুই নূর মুবারক উনাদের অধিকারী।’ সুবহানাল্লাহ! এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দুই নূর মুবারক হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুইজন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বানাত আলাইহিমাস সালাম তথা বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি এবং বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা। সুবহানাল্লাহ!
এই সম্পর্কে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,
وإني زوجته ابنتي فذلك سماه الله عند الملائكة ذا النور وسماه في الجنان ذا النورين فمن شتم حَضْرَتْ عثمان عَلَيْهِ السَّلَامُ فقد شتمني
অর্থ: “আর নিশ্চয়ই আমি আমার দুইজন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বানাত আলাইহিমাস সালাম উনাদেরকে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ দিয়েছি। তাই মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের নিকট সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নাম মুবারক রেখেছেন ‘যুন নূর’ এবং সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নাম মুবারক রেখেছেন ‘যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম’। সুবহানাল্লাহ! ফলে যে ব্যক্তি উনাকে তিরস্কার করলো, সে মূলত আমাকেই তিরস্কার করলো।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (কানযুল উম্মাল ১৩/৫৩)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন,
إِنَّمَا يُسَمَّى حَضْرَتْ عُثْمَانُ عَلَيْهِ السَّلَامُ ذَا النُّورَيْنِ لِأَنَّهُ لَمْ يَجْمَعْ بَيْنَ ابْنَتَيْ نَبِيٍّ فِي التَّزْوِيجِ وَاحِدَةً بَعْدَ الْأُخْرَى مِنْ لَدُنْ آدَمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ إِلَّا حَضْرَتْ عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَلِذَلِكَ سُمِّيَ ذَا النُّورَيْنِ
অর্থ: সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নামকরণ মুবারক করা হয়েছে তথা উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লক্বব মুবারক দেয়া হয়েছে, ‘যুন নূরাইন’। কেননা সাইয়্যিদুনা হযরত আদম ছফীউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার থেকে এই পর্যন্ত একমাত্র সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি ব্যতীত অন্য কোনো ব্যক্তিত্ব মুবারক উনার নিকট হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের দুইজন মেয়েকে শাদী মুবারক দেয়া হয়নি। সুবহানাল্লাহ! আর এই কারণেই সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাকে ‘যুন নূরাইন’ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লক্বব মুবারক হাদিয়া মুবারক করা হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! (আশ শরী‘য়াহ ৩/৩২৭)
এই সম্পর্কে বিশ্বখ্যাত সীরাত বিশারদ হাফিয আবুল ফিদা আল্লামা ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আল বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেন,
ثُمَّ زوَّجه بِأُخْتِهَا الْأُخْرَى سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلنُّوْرُ الثَّالِثَةُ عليها السلام (سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ أم كلثوم عليها السلام) بِنْتُ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلِهَذَا كَانَ يُقَالُ لِـحَضْرَتْ عُثْمَانَ بْنِ عفان ذو النورين عليه السلام
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ পাওয়ার পর উনার অপর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বোন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনাকে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ দেন। এই জন্য উনাকে ‘যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম’ বলা হয়।” সুবহানাল্লাহ! (আল বিদায়াহ্ ওয়ান নিহায়াহ্ ৩/৪১৯)
সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনিই একমাত্র সেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক যিনি পর পর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুইজন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বানাত আলাইহিমাস সালাম উনাদেরকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ করেন, উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেন। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কত বেমেছাল, সেটা জিন-ইনসান ও তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত উছমান যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত সম্পর্কে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার -
সম্মানিত সুওয়াল মুবারক-
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عَنْ حَضْرَتْ أُمِّ كُلْثُومٍ عليها السلام بِنْتِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهَا قَالَتْ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم زَوْجِي خَيْرٌ أَو زَوْجُ حَضْرَتْ فَاطِمَةَ عليها السلام؟ قَالَتْ فَسَكَتَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ قَالَ زَوْجُكِ مِمَنْ يُحِبُّ اللهَ وَرَسُولَهُ وَيُحِبُّهُ اللهُ وَرَسُولُهُ فَوَلَّتْ فَقَالَ لَهَا هَلُمِّي مَاذَا قُلْتُ قَالَتْ قُلْتَ زَوْجِي مِمَنْ يُحِبُّ اللهَ وَرَسُولَهُ وَيُحِبُّهُ اللهُ وَرَسُولُهُ قَالَ نَعَمْ وَاَزِيْدُكِ دَخَلْتُ الْـجَنَّةَ فَرَأَيْتُ مَنْزِلَهٗ وَلَـمْ اَرَ اَحَدًا مِنْ اَصْحَابِـىْ يَعْلُوْهُ فِـىْ مَنْزِلِهٖ.
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণনা করেন। সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি একদা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার মহাসম্মানিত যাওজুম মুকাররাম তথা সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি শ্রেষ্ঠ অথবা আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত যাওজুম মুকাররাম তথা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি শ্রেষ্ঠ? সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (আমার কথা মুবারক শোনে অনেক্ষণ সময়) চুপ থাকলেন। তারপর তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনার মহাসম্মানিত যাওজুম মুকাররাম সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি সেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাদের অন্তর্ভুক্ত যেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনারা মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করেন এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারাও সেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাদেরকে মুহব্বত করেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি (তিনি জাওয়াব শুনে) চলে যেতে থাকলেন। এমতাবস্থায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনি এখানে আসুন। আমি আপনাকে কী বলেছি? সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, আপনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, আমার মহাসম্মানিত যাওজুম মুকাররাম (সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি সেই সকল ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাদের অন্তর্ভুক্ত যেই সকল ব্যক্তিত্ব মুবারক উনারা মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করেন এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারাও সেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, হ্যাঁ (আমি তাই বলেছি)। আর এখন আমি আপনাকে আরো অবহিত করছি যে, (আমি সম্মানিত মি’রাজ শরীফ উনার রাতে) সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার মধ্যে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রেখে আপনার মহাসম্মানিত যাওজুম মুকাররাম সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত মনযিল তথা মাক্বাম মুবারক দেখেছি। উনাকে এমন এক সম্মানিত সুউচ্চ মানযিল তথা মাক্বাম মুবারক দেয়া হয়েছে, আমার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের মধ্যে অন্য কারো মনযিল বা মাক্বাম মুবারক এতো সুউচ্চ দেখিনি।” সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরকে হাকিম ৪/৪৯, মুসনাদে শামিয়্যীন ১/৯৯, ইযালাতুল খফা ৬/২৭৯ ইত্যাদি)
তাহলে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কত বেমেছাল তা এখান থেকে সুস্পষ্ট হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত যূন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সপরিবারে সম্মানিত হিজরত মুবারক-
আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশ পাওয়ার ৫ম বছরের কথা। মুশরিকরা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের উপর যুলুমের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাদের অভিপ্রায় ছিলো এর মাধ্যমে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনাকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া। না‘ঊযুবিল্লাহ! তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কিছু সংখ্যক হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে হাবশায় (আবিসিনিয়ায়) হিজরত মুবারক করার অনুমতি মুবারক দেন।
সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট হাবশায় হিজরত করার অনুমতি মুবারক প্রার্থনা করেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
اُخْرُجْ بـِحَضْرَتْ رُقَيَّةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ مَعَكَ
অর্থ: “আপনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনাকেসহ হাবশায় সম্মানিত হিজরত মুবারক করুন।” (মুস্তাদরকে হাকিম ৪/৫০)
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা যখন হাবশায় (আবিসিনিয়ায়) সম্মানিত হিজরত মুবারক করেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাদের সম্মানিত খুছূছিয়াত মুবারক সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক করেন,
اِنَّهُمَا لَاَوَّلُ مَنْ هَاجَرَ بَعْدَ حَضْرَتْ لُوْطٍ وَّحَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِمَا الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ.
অর্থ: “নিশ্চয়ই সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারাই হচ্ছেন হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার এবং হযরত লূত আলাইহিস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের পর সর্বপ্রথম (সপরিবারে) হিজরতকারী।” সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরকে হাকিম ৪/৫০)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ خَرَجَ عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَمَعَهٗ حَضْرَتْ رُقَيَّةُ بِنْتُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِلٰـى اَرْضِ الْـحَبَشَةِ فَاَبْطَأَ خَبَرُهُمْ عَلـٰى رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَدِمَتِ امْرَاَةٌ مِّنْ قُرَيْشٍ فَقَالَتْ يَا مُحَمَّدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدْ رَأَيْتُ خَتَنَكَ وَمَعَهُ امْرَأَتُهٗ قَالَ عَلـٰى اَىِّ حَالٍ رَاَيْتِهِمَا قَالَتْ رَأَيْتُهٗ قَدْ حَمَلَ امْرَاَتَهٗ عَلـٰى حِمَارٍ مِّنْ هٰذِهِ الدَّبَّابَةِ وَهُوَ يَسُوْقُهَا فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَحِبَهُمَا اللهُ تَعَالـٰى اِنَّ حَضْرَتْ عُثْمَانَ عَلَيْهِ السَّلامُ لَاَوَّلُ مَنْ هَاجَرَ اِلَى اللهِ تَعَالـٰى بِاَهْلِهٖ بَعْدَ حَضْرَتْ لُوْطٍ عَلَيْهِ السَّلامُ
অর্থ: “হযরত আনাস বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা বানাত সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে নিয়ে হাবশায় সম্মানিত হিজরত মুবারক-এ গেলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট উনাদের সংবাদ মুবারক আসতে দেরি হয়ে গেলো। এর মধ্যে একজন কুরাইশী মহিলা হাবশা থেকে সম্মানিত মক্কা শরীফ এলেন। তিনি বললেন, আমি আপনার মহাসম্মানিত জামাতা উনাকে উনার মহাসম্মানিতা যাওজাতুম মুকাররমাহ তথা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সাথে দেখেছি। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জানতে চাইলেন, আপনি উনাদেরকে কী অবস্থায় দেখেছেন? তিনি বললেন, আমি দেখেছি সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে একটি গাধার উপর বসিয়ে (গাধাটিকে) হাঁকিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন,
صَحِبَهُمَا اللهُ تَعَالـٰى اِنَّ حَضْرَتْ عُثْمَانَ عَلَيْهِ السَّلامُ لَاَوَّلُ مَنْ هَاجَرَ اِلَى اللهِ تَعَالـٰى بِاَهْلِهٖ بَعْدَ حَضْرَتْ لُوْطٍ عَلَيْهِ السَّلامُ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদের দু’জনের সাথী হোন। নিশ্চয়ই হযরত লূত আলাইহিস সালাম উনার পর হযরত যূন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি সপরিবারে সম্মানিত হিজরত মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লহ! (আল আহাদ ওয়াল মাছানী ১/১৪৭, আস সুন্নাহ ২/৫৯৬, দালাইলুন নুবুওওয়াহ ২/২৯৭, মা’রিফাতুছ ছাহাবাহ লিআবী নাঈম ২২/২২৬, আল মাত্বালিবুল আলিয়াহ ১৬/৫৩, উসদুল গবাহ ৩/৩৫২, বিদায়াহ-নিহায়াহ ৩/৮৫, তারীখুল ইসলাম লিযযাহাবী ১/১৮৩ ইত্যাদি)
সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সাথে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার বেমেছাল মুশাবাহাহ বা সাদৃশ্যতা মুবারক-
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
إِنَّ إِبْرَاهِيمَ لَأَوَّاهٌ حَلِيمٌ.
অর্থ : “নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি অত্যন্ত নরম দিলের অধিকারী এবং অত্যন্ত ধৈর্যশীল।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা তওবা শরীফ : সম্মানিত আয়াত শরীফ ১১৪)
সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন এই সম্মানিত আয়াত শরীফ উনার পরিপূর্ণ মিছদাক্ব। এই সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عن حضرت ابن عمر رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم إنا نشبه سيدنا حضرت عثمان عليه السلام بأبينا سيدنا حضرت إبراهيم عليه السلام.
অর্থঃ “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই আমরা সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাকে আমাদের সম্মানিত পূর্বপুরুষ সাইয়্যদুনা হযরত ইবরহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সাথে তাশবিহ মুবারক দেই অর্থাৎ সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি আমাদের সম্মানিত পূর্বপুরুষ সাইয়্যদুনা হযরত খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার পরিপূর্ণ সাদৃস্য মুবারক বা অনুরূপ।” সুবহানাল্লাহ! (আল ‘ইলালুল মুতানাহিয়্যাহ লি ইবনে যাওজী ১/২০১, আল ফিরদাউস ১/৫৫, জামি‘উল আহাদীছ ৯/৪২৯, যখীরতুল হুফ্ফায ২/৯৮৯, কানযুল ‘উম্মাল ১১/৫৯২, জাম‘উল জাওয়ামি’ ১/৯০৫৫, লিসানুল মীযান লি ইবনে হাজার ৬/১১৭, তারীখুল ইসলাম ৩/৪৬৯, তারীখুল খুলাফা’ ১/১৩৪ ইত্যাদি)
তাহলে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান কতো বেমেছাল, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একটি বিশেষ সম্মানিত ওসিয়ত মুবারক সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার প্রতি-
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عن حضرت أبي سلهة رضى الله تعالى عنه مولى سيدنا حضرت عثمان عليه السلام قال جعل النبي صلى الله عليه وسلم يسر إلى سيدنا حضرت عثمان عليه السلام ولون سيدنا حضرت عثمان عليه السلام يتغير فلما كان يوم الدار قلنا ألا نقاتل قال لا إن رسول الله صلى الله عليه وسلم عهد إلي أمرا فأنا صابر نفسي عليه.
অর্থ : “সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার আযাদকৃত সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ সালহাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাকে গোপনে একটি বিষয় ইরশাদ মুবারক করলেন, আর সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত চেহারা মুবারক পরিবর্তন হয়ে গেলো। অতঃপর সম্মানিত হুজরা শরীফ অবরোধের দিন আমরা বললাম, আমরা কি জিহাদ করবো না? সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি বললেন না। নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে একটি বিষয়ে সম্মানিত ওসিয়ত মুবারক করেছেন। কাজেই অবশ্যই আমি সেই বিষয়ের উপর ধৈর্য ধারণ করবো।” সুবহানাল্লাহ! (বাইহাক্বী শরীফ, মিশকাত শরীফ(
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عن ام المؤمنين الثالثة سيدتنا حضرت الصديقة عليها السلام أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ادع لي أو ليت عندي رجلا من أصحابي قالت قلت سيدنا حضرت أبو بكر عليه السلام قال لا قلت سيدنا حضرت عمر عليه السلام قال لا قلت ابن عمك سيدنا حضرت علي عليه السلام قال لا قلت فسيدنا حضرت عثمان عليه السلام قال نعم قالت فجاء سيدنا حضرت عثمان عليه السلام فقال قومي قال فجعل النبي صلى الله عليه وسلم يسر إلى سيدنا حضرت عثمان عليه السلام ولون سيدنا حضرت عثمان عليه السلام يتغير قال فلما كان يوم الدار قلنا ألا تقاتل قال لا إن رسول الله صلى الله عليه وسلم عهد إليَّ أمرا فأنا صابر نفسي عليه.
অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আপনারা আমার নিকট ডেকে আনুন। (রাবী বলেন, অথবা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন,) আমার নিকট আমার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের মধ্য থেকে একজন বিশেষ ব্যাক্তিত্ব মুবারক তিনি নেই। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, আমি বললাম, সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, না। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, আমি বললাম, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ‘যম আলাইহিস সালাম তিনি? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, না। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, আমি বললাম, আপনার সম্মানিত চাচাতো ভাই সাইয়্যিদুনা হযরত র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, না। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, আমি বললাম, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, হ্যাঁ। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি আসলেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, (হে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম!) আপনি দাঁড়ান অর্থাৎ আপনি সম্মানিত হুজরা শরীফ উনার ভিতরে প্রবেশ করুন। (রাবী) বলেন, অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাকে গোপনে একটি বিষয় ইরশাদ মুবারক করলেন, আর সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত চেহারা মুবারক পরিবর্তন হয়ে গেলো। অতঃপর সম্মানিত হুজরা শরীফ অবরোধের দিন আমরা বললাম, আমরা কি জিহাদ করবো না? সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি বললেন না। নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে একটি বিষয়ে সম্মানিত ওসিয়ত মুবারক করেছেন। কাজেই অবশ্যই আমি সেই বিষয়ের উপর ধৈর্য ধারণ করবো।” সুবহানাল্লাহ! (সীরাতে ‘উসমান ইবনে ‘আফ্ফান ১/৯৩, তারীখুল ইসলাম ১/৩৮৯-৯০, আল মুস্তাদরকে হাকিম ৩/১০৬, ‘আক্বীদাতু আহলিস সুন্নাতি ওয়াল জাম‘আতি ২/৬৬৩)
সাইয়্যিদুনা হযরত উছমান যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত সম্পর্কে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত সুওয়াল মুবারক-
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنِ حَضْرَتْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ تعالى عَنْهُمَا عَنْ حَضْرَتْ أُمِّ كُلْثُومٍ عليها السلام بِنْتِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهَا قَالَتْ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم زَوْجِي خَيْرٌ أَو زَوْجُ حَضْرَتْ فَاطِمَةَ عليها السلام؟ قَالَتْ فَسَكَتَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ قَالَ زَوْجُكِ مِمَنْ يُحِبُّ اللهَ وَرَسُولَهُ وَيُحِبُّهُ اللهُ وَرَسُولُهُ فَوَلَّتْ فَقَالَ لَهَا هَلُمِّي مَاذَا قُلْتُ قَالَتْ قُلْتَ زَوْجِي مِمَنْ يُحِبُّ اللهَ وَرَسُولَهُ وَيُحِبُّهُ اللهُ وَرَسُولُهُ قَالَ نَعَمْ وَاَزِيْدُكِ دَخَلْتُ الْـجَنَّةَ فَرَأَيْتُ مَنْزِلَهٗ وَلَـمْ اَرَ اَحَدًا مِنْ اَصْحَابِـىْ يَعْلُوْهُ فِـىْ مَنْزِلِهٖ.
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণনা করেন। সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি একদা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার মহাসম্মানিত যাওজুম মুকাররাম তথা সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি শ্রেষ্ঠ অথবা আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত যাওজুম মুকাররাম তথা সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি শ্রেষ্ঠ? সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (আমার কথা মুবারক শুনে অনেক্ষণ সময়) চুপ থাকলেন। তারপর তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনার মহাসম্মানিত যাওজুম মুকাররাম সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি সেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাদের অন্তর্ভুক্ত যেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনারা মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করেন এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারাও সেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাদেরকে মুহব্বত করেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি (জাওয়াব মুবারক শুনে) চলে যেতে থাকলেন। এমতাবস্থায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনি এখানে আসুন। আমি আপনাকে কী বলেছি? সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, আপনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, আমার মহাসম্মানিত যাওজুম মুকাররাম (সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি সেই সকল ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাদের অন্তর্ভুক্ত যেই সকল ব্যক্তিত্ব মুবারক উনারা মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করেন এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারাও সেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, হ্যাঁ (আমি তাই বলেছি)। আর এখন আমি আপনাকে আরো অবহিত করছি যে, (আমি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মি’রাজ শরীফ উনার রাতে) সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার মধ্যে মহাসম্মানিত তাশরীফ মুবারক রেখে আপনার মহাসম্মানিত যাওজুম মুকাররাম সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত মন্যিল তথা মাক্বাম মুবারক দেখেছি। উনাকে এমন এক সম্মানিত সুউচ্চ মানযিল তথা মাক্বাম মুবারক দেয়া হয়েছে, আমার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের মধ্যে অন্য কারো মনযিল বা মাক্বাম মুবারক এতো সুউচ্চ দেখিনি।” সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরকে হাকিম ৪/৪৯, মুসনাদে শামিয়্যীন ১/৯৯, ইযালাতুল খফা ৬/২৭৯ ইত্যাদি)
তাহলে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কত বেমেছাল তা এখান থেকে সুস্পষ্ট হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বয়ং নিজে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সাথে সম্মানিত মু‘য়ানাক্বা মুবারক করেন এবং ইরশাদ মুবারক করেন, আপনি দুনিয়া ও আখিরাতে আমার বন্ধু-
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ حضرت جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللَّهُ تعالى عَنْهُمَا بَيْنَمَا نَحْنُ فِي بَيْتِ ابْنِ حَشَفَةَ فِي نَفَرٍ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ فِيهِمْ سيدنا حضرت أَبُو بَكْرٍ عليه السلام وَسيدنا حضرت عُمَرُ عليه السلام وَسيدنا حضرت عُثْمَانُ عليه السلام وَسيدنا حضرت عَلِيٌّ كرم الله وجهه عليه السلام وَسيدنا حضرت طَلْحَةُ رضى الله تعالى عنه وَسيدنا حضرت الزُّبَيْرُ رضى الله تعالى عنه وَسيدنا حضرت عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ رضى الله تعالى عنه وسيدنا حضرت َسَعْدُ بْنُ أَبِي وَقَّاصٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِيَنْهَضْ كُلُّ رَجُلٍ مِنْكُمْ إِلَى كُفْئِهِ فَنَهَضَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى سيدنا حضرت عُثْمَان عليه السلام َ فَاعْتَنَقَهُ وَقَالَ أَنْتَ وَلِيِّي فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ.
অর্থ : “হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমরা হযরত মুহাজির ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের একটি দল হযরত ইবনে হাশাফাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সম্মানিত হুজরা শরীফ-এ ছিলাম। উনাদের মধ্যে সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ‘যম আলাইহিস সালাম তিনি, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি, সাইয়্যিদুনা হযরত র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি, সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বলহা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি, সাইয়্যিদুনা হযরত যুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি, সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আওউফ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত সা’দ ইবনে আবী ওয়াক্কাছ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি অর্থাৎ উনারা ছিলেন। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, যেন প্রত্যেকেই উনার সমপর্যায়ের যিনি রয়েছেন উনার সাথে মু‘য়ানাক্বা করেন অর্থাৎ মু‘য়ানাকা করার জন্য নির্দেশ মুবারক দিলেন। তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বয়ং নিজে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সাথে সম্মানিত মু‘য়ানাক্বা মুবারক করেন এবং ইরশাদ মুবারক করেন, আপনি দুনিয়া ও আখিরাতে আমার বন্ধু।” সুবহানাল্লাহ! (শরহে মাযাহিবে আহলিস সুন্নাহ ১/৮৮, মুস্তাদরিকে হাকিম ৩/৯৭, মুখতাছারু তারীখে দিশাক্ব ৪/৪৫, আর রিয়াদ্বুন নাদ্বরাহ ১/২১১ ইত্যাদি)
0 Comments:
Post a Comment