=================================================
অনেকে বলেন হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমনের তারিখ সংশ্লিষ্ট করে আজকেও সে তারিখে কেন পালন করতে হবে? তারিখ পালনের কোন ভিত্তি কি শরীয়তে আছে?
আমার উত্তর, অবশ্যই আছে। কিন্তু বুঝতে গেলে প্রশ্নকারীদের অন্তরে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি মুহব্বত থাকতে হবে। বুখারী শরীফে একটা হাদীছ শরীফ আছে। বুখারী শরীফের “কিতাবুল জানায়েয” অধ্যায়ে একটা পরিচ্ছেদ আছে ‘বাবু মাওতা ইয়াওমাল ইছনাইন’। এখনে একটা হাদীছ শরীফ আছে,
عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ دَخَلْتُ عَلَى أَبِي بَكْرٍ ـ رضى الله عنه ـ فَقَالَ فِي كَمْ كَفَّنْتُمُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ فِي ثَلاَثَةِ أَثْوَابٍ بِيضٍ سَحُولِيَّةٍ، لَيْسَ فِيهَا قَمِيصٌ وَلاَ عِمَامَةٌ. وَقَالَ لَهَا فِي أَىِّ يَوْمٍ تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ يَوْمَ الاِثْنَيْنِ. قَالَ فَأَىُّ يَوْمٍ هَذَا قَالَتْ يَوْمُ الاِثْنَيْنِ. قَالَ أَرْجُو فِيمَا بَيْنِي وَبَيْنَ اللَّيْلِ. فَنَظَرَ إِلَى ثَوْبٍ عَلَيْهِ كَانَ يُمَرَّضُ فِيهِ، بِهِ رَدْعٌ مِنْ زَعْفَرَانٍ فَقَالَ اغْسِلُوا ثَوْبِي هَذَا، وَزِيدُوا عَلَيْهِ ثَوْبَيْنِ فَكَفِّنُونِي فِيهَا. قُلْتُ إِنَّ هَذَا خَلَقٌ. قَالَ إِنَّ الْحَىَّ أَحَقُّ بِالْجَدِيدِ مِنَ الْمَيِّتِ، إِنَّمَا هُوَ لِلْمُهْلَةِ. فَلَمْ يُتَوَفَّ حَتَّى أَمْسَى مِنْ لَيْلَةِ الثُّلاَثَاءِ وَدُفِنَ قَبْلَ أَنْ يُصْبِحَ
অর্থ: হযরত আয়িশা সিদ্দীকা আলাইহাস সালাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি হযরত আবূ বকর সিদ্দীক আলাইহিস সালাম এর নিকট উপস্থিত হলে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, কয় খণ্ড কাপড়ে আপনারা হযরত নাবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনাকে কাফন দিয়েছিলেন? হযরত আয়িশা সিদ্দিক আলাইহাস সালাম বললেন, তিন খণ্ড সাদা সাহুলী কাপড়ে, এগুলোতে (সেলাইকৃত) জামা ও পাগড়ী ছিল না। তিনি আবার জিজ্ঞাসা করলেন, কোন দিন হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিছাল শরীফ প্রকাশ করেন? হযরত আয়িশা সিদ্দিক আলাইহাস সালাম বললেন, সোমবার। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, আজ কি বার? হযরত আয়িশা সিদ্দীকা আলাইহাস সালাম বললেন, আজ সোমবার। তিনি [হযরত আবূ বকর সিদ্দীক আলাইহিস সালাম ] বললেন, আমিও সেটাই আশা রাখি যে, আজ সন্ধ্যার মধ্যে যেন এই ইহকাল ত্যাগ করতে পারি। এরপর অসুস্থকালীন আপন পরিধেয় কাপড়ের প্রতি লক্ষ্য করে তাতে জাফরানী রং এর চিহ্ন দেখতে পেয়ে বললেন, আমার এ কাপড়টি ধুয়ে তার সাথে আরো দু’খণ্ড কাপড় বৃদ্ধি করে আমার কাফন দিবেন। হযরত আয়িশা সিদ্দীকা আলাইহাস সালাম বললেন, এটা (পরিধেয় কাপড়টি) পুরাতন। তিনি বললেন, ইন্তেকাল প্রাপ্ত ব্যাক্তির চেয়ে জীবিতদের নতুন কাপড়ের প্রয়োজন অধিক। আর কাফন হল বিগলিত শবদেহের জন্য। তিনি মঙ্গলবার রাতের সন্ধ্যায় ইন্তেকাল করেন, প্রভাতের পূর্বেই উনাকে দাফন করা হয়। (বুখারী শরীফ: কিতাবুল জানায়েয : হাদীছ নং ১৩০৪)
এখন ফিকিরের বিষয় হলো, ইন্তেকালের সময়ও তিনি হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কথা ভুলেন নাই। তিনি বিছাল শরীফের তারিখ কি সেটা খোঁজ করেছেন, নিজেও বরকত ও সুন্নতের খেয়ালে সেই বারে বিছাল প্রকাশের আকাঙ্খা করেছেন।
এ থেকে কি এটা প্রমান হয় না যে, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সংশ্লিষ্ট সব কিছু সেটা তারিখ / বার/ মাস/ সময় সবই মর্যাদাপূর্ণ ও সেটা পালন করার চেষ্টা করা উম্মতের দায়িত্ব? যদি তাই না হতো তবে সিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম জীবনের শেষ সময় এসে কেন সেই বারে ইন্তেকাল প্রকাশের আগ্রহ করলেন?
যিনি জীবনের কঠিনতম সময়ে সেই বারে ইন্তেকাল প্রকাশের আরজি করতে পারেন তিনি কি নবীজীর বিলাদত বা জন্ম তারিখে বা বারে খুশি প্রকাশ করতে ভুলে গিয়েছিলেন? নাউযুবিল্লাহ।
যিনি জীবনের কঠিনতম সময়ে সেই বারে ইন্তেকাল প্রকাশের আরজি করতে পারেন তিনি কি নবীজীর বিলাদত বা জন্ম তারিখে বা বারে খুশি প্রকাশ করতে ভুলে গিয়েছিলেন? নাউযুবিল্লাহ।
ভুলেন নাই বলেই সর্বশ্রেষ্ট সাহাবী ও ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর সিদ্দিক আলাইহিস সালাম বলেন-
مَنْ اَنْفَقَ دِرْهَمًا عَلَى قِرا ةَ مَوْ لِدِ النَّبىُ صلي اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَان رفيقي فىِ الجَنّةِ
অর্থাৎ- “যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষ্যে এক দিরহাম খরচ করবে সে জান্নাতে আমার সঙ্গী হবে”। (দলীল- আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম, পৃষ্ঠা নং-৭, মাদারেজ আস সউদ ১৫ পৃষ্ঠা, নাফহাতুল আম্বরিয়া” ৮ পৃষ্ঠা, ই’য়ানাতুত ত্বলেবীন)
مَنْ اَنْفَقَ دِرْهَمًا عَلَى قِرا ةَ مَوْ لِدِ النَّبىُ صلي اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَان رفيقي فىِ الجَنّةِ
অর্থাৎ- “যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষ্যে এক দিরহাম খরচ করবে সে জান্নাতে আমার সঙ্গী হবে”। (দলীল- আন নেয়মাতুল কুবরা আলাল আলাম, পৃষ্ঠা নং-৭, মাদারেজ আস সউদ ১৫ পৃষ্ঠা, নাফহাতুল আম্বরিয়া” ৮ পৃষ্ঠা, ই’য়ানাতুত ত্বলেবীন)
0 Comments:
Post a Comment