জানাযা
নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক
বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া
[সমস্ত প্রশংসা
আল্লাহ্ রব্বুল আলামীনের জন্যে এবং অসংখ্য দরূদ ও সালাম আল্লাহ্ পাক-এর হাবীব, আখিরী রসূল, হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি। মহান আল্লাহ্ পাক-এর অশেষ রহ্মতে আমাদের গবেষণা
কেন্দ্র, “মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ”-এর ফতওয়া বিভাগের তরফ থেকে, বহুল প্রচারিত, হক্বের অতন্দ্র
প্রহরী, বাতিলের আতঙ্ক ও আহ্লে
সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদায় বিশ্বাসী একমাত্র দলীল ভিত্তিক মুখপত্র “মাসিক আল বাইয়্যিনাত”
পত্রিকায়
যথাক্রমে টুপির ফতওয়া, অঙ্গুলী চুম্বনের
বিধান, নিয়ত করে মাজার শরীফ যিয়ারত
করা, ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়
হারাম হওয়ার ফতওয়া, জুমুয়ার নামায ফরযে
আইন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া, মহিলাদের মসজিদে
গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী সম্পর্কে ফতওয়া, কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী ও বিদ্য়াতে
সাইয়্যিয়াহ্ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, ফরয নামাযের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, ইন্জেকশন নেয়া রোযা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়
সম্পর্কে ফতওয়া, তারাবীহ্-এর নামাযে
বা অন্যান্য সময় কুরআন শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা জায়িয ও তার
সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, তারাবীহ্ নামায বিশ
রাকায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, দাড়ী ও গোঁফের শরয়ী আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, প্রচলিত তাবলীগ জামায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে
ফতওয়া, আযান ও ছানী আযান মসজিদের
ভিতরে দেয়ার আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, দোয়াল্লীন-যোয়াল্লীন-এর শরয়ী ফায়সালা এবং তার প্রাসঙ্গিক
বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, খাছ সুন্নতী টুপি ও
তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, নূরে মুহম্মদী
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারকের আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়
সম্পর্কিত ফতওয়া এবং শরীয়তের দৃষ্টিতে আখিরী যোহ্র বা ইহ্তিয়াতুয্ যোহ্রের আহ্কাম
এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া পেশ করার পর ২১তম ফতওয়া হিসেবে “জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী
ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করে আসতে পারায় মহান আল্লাহ্ পাক-এর দরবারে অসংখ্য শুকরিয়া।]
জানাযা
নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক
বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার কারণ
সুন্নতের
পথিকৃত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, দ্বীন ইসলামের নির্ভীক সৈনিক, সারা জাহান থেকে কুফরী, শিরিকী ও বিদ্য়াতের
মূলোৎপাটনকারী, বাতিলের আতঙ্ক এবং
আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদায় বিশ্বাসী একমাত্র দলীলভিত্তিক মুখপত্র- “মাসিক আল বাইয়্যিনাত”
পত্রিকায়
যত লিখা বা ফতওয়াই প্রকাশ বা পত্রস্থ হয়েছে তার প্রতিটিরই উদ্দেশ্য বা মাকছূদ এক ও
অভিন্ন। অর্থাৎ “মাসিক আল বাইয়্যিনাতে” এমন সব লিখাই পত্রস্থ করা হয়, যা মানুষের আক্বীদা ও আমলসমূহ পরিশুদ্ধ করণে বিশেষ সহায়ক।
তদ্রুপ “মাসিক আল বাইয়্যিনাতে”
“জানাযা
নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক
বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার উদ্দেশ্য বা মাকছূদও ঠিক তাই। কেননা কিছু লোক “ক্বিল্লতে ইল্ম ও ক্বিল্লতে ফাহ্ম”- অর্থাৎ কম জ্ঞান ও কম বুঝের কারণে বলে থাকে যে, “জানাযার পর দোয়া করা বিদ্য়াত ও নাজায়িয।”
তাদের উক্ত বক্তব্য একদিক
থেকে যেরূপ ঈমান বা আক্বীদার ক্ষেত্রে ক্ষতির কারণ, অপর দিক থেকে আমলের ক্ষেত্রেও ক্ষতির কারণ। প্রথমতঃ ঈমানের ক্ষেত্রে ক্ষতির কারণ এ জন্য যে, আমাদের আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের ফতওয়া হলো কোন জায়িয
আমলকে নাজায়িয বলা কুফরী। অর্থাৎ ঈমান বিনষ্ট হওয়ার কারণ। অথচ বান্দার ইবাদত-বন্দিগী
বা নেক আমল কবুল হওয়ার জন্যে প্রধানতম শর্ত হচ্ছে- আক্বীদা শুদ্ধ থাকা অর্থাৎ
আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদার ন্যায় আক্বীদা পোষণ করা। কারণ বিশুদ্ধ
আক্বীদা আমল কবুল হওয়ার পূর্ব শর্ত।
দ্বিতীয়তঃ আমলের ক্ষেত্রে
ক্ষতির কারণ এ জন্য যে, তাদের উক্ত অশুদ্ধ
বক্তব্যের কারণে যেরূপ ‘মাইয়্যিত’ জীবিতদের দোয়া হতে বঞ্চিত হবে তদ্রুপ বঞ্চিত হবে হাদীস
শরীফের উপর আমল করা থেকে। কারণ আখিরী রসূল,
হাবীবুল্লাহ্, আশেকে উম্মত, নূরে মুজাস্সাম, ফখরে দু’আলম, রহমতুল্লিল আলামীন,
হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘মাইয়্যিতের’ জন্য অধিক মাত্রায় এবং ইখলাছের সাথে দোয়া করতে বলেছেন বলে
ছহীহ্ হাদীস শরীফে বর্ণিত রয়েছে। শুধু তাই নয় স্বয়ং আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
যেরূপ জানাযার নামাযে মাইয়্যিতের জন্য দোয়া করেছেন অনুরূপ জানাযার বাইরেও
মাইয়্যিতের জন্য দোয়া করেছেন। সুতরাং মাইয়্যিতের জন্য জানাযার নামাযে দোয়া করা যেরূপ
সুন্নত, তদ্রুপ জানাযার বাইরেও
সুন্নত। তা জানাযার আগেই হোক বা পরে হোক। সুতরাং বলার অপেক্ষাই রাখেনা যে, তাদের বক্তব্যের কারণে সাধারণ লোক একটি সুন্নত পালনের ফযীলত
থেকে মাহরূম হবে নিঃসন্দেহে।
মূলকথা হলো, সকল মুসলমান যেন “জানাযার পর দোয়া ও
তার সংশ্লিষ্ট বিষয়” সম্পর্কে সঠিক
আক্বীদা রাখতে পারে এবং সুন্নত মুতাবিক আমল করে মহান আল্লাহ্ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সন্তুষ্টি হাছিল করতে পারে এ মহান উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই
বহুল প্রচারিত “মাসিক আল
বাইয়্যিনাতে জানাযার পর দোয়া ও তাঁর প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” দেয়া হলো। মহান আল্লাহ্ পাক রব্বুল আলামীন পবিত্র কালামে
পাকে ইরশাদ করেন,
كل
نفس
ذائقة
الموت
অর্থাৎ “প্রত্যেক প্রাণীকেই
মৃত্যুর স্বাদ বরণ করতে হবে।” (সূরা আলে
ইমরান/১৮৫) কাজেই কোন মুসলমান মৃত্যুবরণ করার পর জীবিতদের প্রতি দায়িত্ব ও
কর্তব্য হচ্ছে যথা শীঘ্র মৃত ব্যক্তির দাফনের ব্যবস্থা করা এবং দাফন কার্য্যে
বিলম্ব না করা। কেননা আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
হাবীবুল্লাহ্, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
اذا
مات
احدكم
فلا
تحبسوه
واسرعو
ابه
الى
قبره.
অর্থঃ-
“ তোমাদের মধ্যে যখন কেউ
মৃত্যু বরণ করে তখন তাকে আবদ্ধ করে রেখে দিওনা বরং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাকে দাফন
করতে কবরে নিয়ে যাও।” (তাবারানী)
অবশ্য দাফনের পূর্বে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও
জরুরী কাজ রয়েছে, যেমন প্রথমতঃ
মাইয়্যিতকে গোসল করানো, দ্বিতীয়তঃ কাফনের
কাপড় পরিধান করানো, তৃতীয়তঃ মাইয়্যিতের
উপর জানাযা পড়া। মূলতঃ মাইয়্যিতের উপর জানাযা পড়া শুধু ফযীলত লাভেরই কারণ নয়
বরং মাইয়্যিতের উপর জানাযা পড়া স্বয়ং মহান আল্লাহ্ পাক রব্বুল আলামীন-এর নির্দেশ। যেমন তাঁর হাবীব
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে লক্ষ্য করে মহান আল্লাহ্ পাক রব্বুল
আলামীন বলেন,
صل عليهم ان صلا تك سكن لهم.
অর্থঃ- “(হে নবী ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনি তাদের (মু’মিনগণের) উদ্দেশ্যে
নামাযে জানাযা পড়ুন। নিশ্চয়ই আপনার নামায তাদের জন্য শান্তির কারণ স্বরূপ।” (সূরা তাওবা/১০৩) অত্র
আয়াতে কারীমায় স্বয়ং আল্লাহ্ পাক রব্বুল আলামীন জানাযা নামাযের গুরুত্ব, ফাযায়েল-ফযীলত বর্ণনা করেছেন। আর তা মু’মিন-মুসলমানগণের জন্য রহমত, বরকত ও শান্তির কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
মাসিক
আল বাইয়্যিনাত-এর পূর্ববর্তী সংখ্যাগুলোতে প্রদত্ত ‘জানাযা’ সম্পর্কিত আলোচনা দ্বারা যা
ছাবিত হয়েছে তার সার সংক্ষেপ হলো “মানুষ মাত্রই মৃত্যু
বরণ করবে, মানুষের মৃত্যুর পর শরীয়তের
নির্দেশ হচ্ছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মৃত ব্যক্তির দাফন-কাফনের ব্যবস্থা করা এবং মৃত
ব্যক্তির রূহের মাগফিরাতের জন্যে মৃত ব্যক্তির উপর “ছলাতুল জানাযা” বা জানাযার নামায
আদায় করা, শুধু তাই নয় জীবিত
ব্যক্তিদের উপর দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো মৃত ব্যক্তির মাগফিরাতের জন্যে অধিক পরিমাণে
দোয়া বা মুনাজাত করা। তাই হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে,
فاخلصوا
له
الدعاء
I اكثرواالدعاء
অর্থঃ- “অধিক পরিমাণে এবং ইখলাছের সাথে মৃত ব্যক্তির মাগফিরাতের
উদ্দেশ্যে দোয়া-মুনাজাত কর।” অতএব,
প্রমাণিত
হলো যে, মৃত ব্যক্তির জন্যে
দোয়া-মুনাজাত করা শরীয়তেরই নির্দেশ, শুধু তাই নয় গত
সংখ্যার আলোচনা দ্বারা এটাও প্রমাণিত হয়েছে যে, জীবিত ব্যক্তিদের পাঠানো দোয়া-দরূদ,
তাসবীহ-তাহলীল, খত্মে কুরআন ইত্যাদি মৃত ব্যক্তিদের জন্যে নাজাতের কারণ। তাই জীবিতদের উচিত
মৃত ব্যক্তিদের রূহের মাগফিরাতের জন্য অধিক মাত্রায় দোয়া-দরূদ, তাসবীহ-তাহলীল,
তওবা-ইস্তিগফার
পাঠ করা। এককভাবে হোক বা সম্মিলিতভাবে হোক,
হাত
তুলে হোক বা হাত না তুলে হোক, মূলতঃ উভয় অবস্থাতেই
মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া-মুনাজাত করা জায়িয ও সুন্নত। তবে দোয়া-বা মুনাজাতে হাত
তোলা সুন্নত ও আদব। আর সম্মিলিত দোয়া কবূল হয় বলে হাদীস শরীফে বর্ণিত রয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো-মৃত ব্যক্তির জন্যে কখন দোয়া করবে? অর্থাৎ শরীয়তে মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া করার নির্দিষ্ট কোন
সময় বর্ণিত আছে কি? মূলতঃ শরীয়ত মৃত
ব্যক্তির জন্যে দোয়া করার ব্যাপারে কোন সময় নির্দিষ্ট করে দেয়নি যে, অমুক সময় দোয়া করতে হবে, আর অমুক সময় দোয়া করা যাবেনা। বরং শরীয়তে মৃত ব্যক্তির জন্য যে কোন সময় দোয়া করার বিধান
রয়েছে, যেমন ইন্তিকালের পর জানাযার
পূর্বে, জানাযার নামাযের মধ্যে, জানাযার পর দাফনের পূর্বে এবং দাফনের পর থেকে কিয়ামত
পর্যন্ত যে কোন সময় মৃত ব্যক্তির জন্যে হাত তুলে ও সম্মিলিত ভাবে দোয়া করা জায়িয ও
সুন্নত। নাজায়িয বা বিদয়াত মোটেও নয়। এ সম্পর্কিত বহু দলীল-আদিল্লাহ কুরআন শরীফ, হাদীস শরীফ, শরাহ, ফিক্বাহ ও ফতওয়ার কিতাব সমুহে রয়েছে। নিম্নে পর্যায়ক্রমে এ
সম্পর্কিত দলীল-আদিল্লাহ সমূহ উল্লেখ করা হলো- ইন্তিকালের
পর জানাযা নামাযের পূর্বে মাইয়্যিতের জন্য
দোয়া করা জায়িয ও সুন্নত হওয়ার প্রমাণ
পবিত্র কুরআন শরীফের অসংখ্য আয়াত শরীফ দ্বারাই
প্রমাণিত হয় যে, মৃত ব্যক্তির জন্যে
জানাযার পূর্বেও দোয়া করা জায়িয ও শরীয়ত সম্মত। কারণ অসংখ্য আয়াত শরীফে
আমভাবেই দোয়া করার ও দোয়া কবূল করার কথা বলা হয়েছে, অর্থাৎ যখনই দোয়া করবে তখনই কবূল করা হবে। যেমন আল্লাহ্ পাক কুরআন
শরীফে ইরশাদ করেন,
[১১২৪]
وقال
ربكم
اد
عونى
استجب
لكم.
অর্থঃ- “তোমাদের রব বলেন, তোমরা আমার নিকট দোয়া কর, আমি তোমাদের দোয়া কবূল করবো।” (সূরা মু’মিন/৬০) উক্ত
আয়াতে কারীমায় আল্লাহ্ পাক যে কোন সময় দোয়া করতে বলেছেন এবং তা কবূল করারও ওয়াদা
দিয়েছেন। এই আয়াতের হুকুম অন্যান্য সময়ের মত জানাযা নামাযের পূর্বেও প্রযোজ্য। অতএব, জানাযা নামাযের পূর্বে দোয়া করা জায়িয এটা আয়াত শরীফ
দ্বারাই প্রমাণিত।
[১১২৫]
واذا
سالك
عبادى
عنى
فانى
قريب
اجيب
دعوة
الداع
اذا
دعان.
অর্থঃ- “(হে আমার হাবীব
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার বান্দাগণ যখন আপনার কাছে জিজ্ঞাসা করে আমার
ব্যাপারে, বস্তুতঃ আমি রয়েছি সন্নিকটে। যাঁরা দোয়া করে, তাঁদের দোয়া কবূল করে নেই, যখনই আমার কাছে দোয়া করে।” (সূরা বাক্বারা/১৮৬) উক্ত আয়াতে কারীমায় اذا
دعان ‘যখনই দোয়া করবে’
এর
দ্বারা নামাযের পূর্বের সময়ও শামিল হয়। কারণ,
আল্লাহ্
পাক নির্দিষ্ট কোন সময়ের জন্য দোয়া করা খাছ করেননি। বরং যে কোন সময় দোয়া করলেই
আল্লাহ্ পাক কবূল করেন। অনুরূপ আরো অসংখ্য আয়াতে কারীমায় আল্লাহ্ পাক আমভাবে যে কোন
সময়ে দোয়া করতে নির্দেশ দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, মহান আল্লাহ্ পাক অন্যত্র সরাসরি মৃত ব্যক্তির জন্যে
দোয়া-ইস্তিগফার করার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ্ পাক ইরশাদ করেন,
[১১২৬]
والذين
جاءو
من
بعدهم
يقولون
ربنا
اغفر
لنا
ولاخواننا الذين سبقونا بالايمان.
অর্থঃ- “আর এই সম্পদ তাদের
জন্য, যারা তাদের পরে এসেছে। তারা বলেন, হে আমাদের রব! আমাদেরকে এবং আমাদের (পূর্বে) ঈমানে অগ্রগামী
ভাইগণকে ক্ষমা করুন।” (সূরা হাশ্র/১০) উক্ত আয়াত শরীফে স্পষ্টতঃই ইন্তিকালের পর মৃত
ব্যক্তির জন্যে দোয়া ইস্তিগফারের কথা উল্লেখ আছে। সুতরাং কুরআন শরীফের আয়াত
শরীফ দ্বারাই প্রমাণিত যে, জানাযার পূর্বেও মৃত
ব্যক্তির জন্যে দোয়া করা জায়িয ও শরীয়ত সম্মত। অনুরূপ
অসংখ্য হাদীস শরীফ প্রমাণ করে যে, জানাযার পূর্বে মৃত
ব্যক্তির জন্যে দোয়া করা জায়িয তো বটেই বরং সুন্নত। যেমন, হাদীস শরীফের কিতাব সমূহে বর্ণিত আছে,
[১১২৭-১১৩২]
عن
ابن
شهاب
قال
اخبرنى
خارجة
بن
زيدبن
ثابث
ان
ام
العلاء
امراة
من
الانصار
بايعت
النبى
صلى
الله
عليه
وسلم
اخبرتة
انه
اقتسم
المهاجرون فرعة فطارلنا عثمان بن مظعون فانزلناه فى ابياتنا فوجع وجعه الذى توفى فيه فلما توفى وغسل وكفن فى اثوابه دخل رسول الله صلى اله عليه وسلم فقلت رحمة الله عليك ابا السائب فشهادتى عيك لقد اكرمك الله فقال النبى صلى الله عليه وسلم ومايدريك ان الله اكرمه فقلت بابى انت يارسول الله فمن يكرمه الله فقال اما هو فقد جاءه اليقين والله انى لارجو له الخير. (بخارى شريف ج 1 ص 166- فتح البارى ج 3 ص 114، عمدة القارى ج 8 ص 15، ارشاد السارى- شرح الكرمانى ج 7 ص 54 -55، تيسير البارى)
অর্থঃ- “হযরত ইবনে শিহাব
রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার কাছে খবর দেন
হযরত খারিজা ইবনে যায়েদ ইবনে ছাবিত রহমতুল্লাহি আলাইহি। উম্মুল আ’লা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা নামের জনৈক আনছারী মহিলা যিনি
হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট বাইয়াত গ্রহণ করেছেন। তিনি বলেন, মুহাজিরগণকে যখন লটারীর মাধ্যমে মদীনার আনছারগণের মধ্যে
(পূণর্বাসনের জন্য) ভাগ করছিলেন, তখন হযরত উসমান ইবনে
মাযঊন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আমাদের ভাগে পড়েন। আমরা তাঁকে আমাদের বাড়ীতে
স্থান দিলাম। পরে তিনি রোগাক্রান্ত হলেন এবং সে রোগে ইন্তিকাল করলেন। ইন্তিকালের পর তাঁকে গোসল
দিয়ে কাফনের কাপড় পরানো হলো, এমন সময় রসূলুল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আসলেন। (বর্ণনা কারিনী বলেন) আমি বললাম,
رحمة
الله
عليك
ابا
السائب
فشهادتى
عليك
لقد
اكرمك
الله.
“হে হযরত আবূ সাইব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! (হযরত উসমান ইবনে মাযঊন
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর উপাধি) আপনার উপর আল্লাহ্ পাক-এর রহমত বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি
নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পাক আপনাকে সম্মাণিত করেছেন।” তখন হযরত নবী করীম
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন, হে উম্মুল আ’লা! তুমি একথা কেমন
করে জানলে? উত্তরে আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার পিতা
আপনার জন্য কুরবান হোক, (যদি তিনি সম্মাণিত
না হয়ে থাকেন) তা হলে আল্লাহ্ পাক আর কাকে সম্মাণিত করবেন। তিনি (হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, একথা নিশ্চিত যে, তার ইন্তিকাল হয়ে গেছে,
والله
انى
لارجو
له
الخير.
‘আল্লাহ্র শপথ!
আমি অবশ্যই তাঁর জন্যে উত্তম দোয়া করি।’ (বুখারী শরীফ ১ম জিঃ ১৬৬ পৃষ্ঠা, ফতহুল্ বারী ৩য় জিঃ ১১৪ পৃষ্ঠা, উমদাতুল্ ক্বারী ৮ম জিঃ ১৫ পৃষ্ঠা, ইরশাদুস্ সারী,
শরহুল্
কিরমানী ৭ম জিీĀ̀쿏㳰 পৃষ্ঠা,
তাইসীরুল্
বারী)
[১২৩৩-১১৪৩]
عن
ابى
هريرة
رضى
الله
عنه
قال
نعى
لنا
رسول
الله
صلى
الله
عليه
وسلم
النجاشى
صاحب
الحبشة
اليوم
الذى
مات
فيه
فقال
استغفروا لاخيكم. (بخارى شريف ج 1 ص 177، فتح البارى ج 3 ص 199، عمدة القارى ج 8 ص 132، ارشاد السارى، شرح الكرمانى ج 7 ص 11، تيسير البارى، مسلم شريف ج 1 ص 309، مسلم بشرح النووى ج 4 ص 22، شرح الابى والسنوسى ج 3 ص 363، المفهم ج 2 ص 611، فتح الملهم ج 2 ص 497)
অর্থঃ- “হযরত আবূ হুরাইরা
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
যেদিন
হাবশার অধিপতি ‘নাজ্জাশী’র ইন্তিকাল হয়েছে,
সে দিন
রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে তার ইন্তিকালের সংবাদ জানিয়ে
বললেন, استغفروا
لاخيكم ‘তোমরা তোমাদের ভাইয়ের জন্য মাগফিরাত
কামনা কর অর্থাৎ দোয়া কর।” (বুখারী শরীফ ১ম জিঃ
১৭৭ পৃষ্ঠা, ফতহুল্ বারী ৩য় জিঃ ১৯৯
পৃষ্ঠা, উমদাতুল্ ক্বারী ৮ম জিঃ ১৩২
পৃষ্ঠা, ইরশাদুস্ সারী, শরহুল্ কিরমানী ৭ম জিঃ ১১১ পৃষ্ঠা, তাইসীরুল বারী,
মুসলিম
শরীফ ১ম জিঃ ৩০৯ পৃষ্ঠা, মুসলিম বিশ্রহিন্
নববী ৪র্থ জিঃ ২২ পৃষ্ঠা, শরহুল্ উবাই ওয়াস্
সিনূসী ৩য় জিঃ ৩৬৩ পৃষ্ঠা, আল্ মুফহিম ২য় জিঃ
৬১১ পৃষ্ঠা, ফতহুল মুলহিম ২য় জিঃ ৪৯৭
পৃষ্ঠা)
[১১৪৪-১১৪৮]
ابن
سعينة
يحدث
انه
سمع
ام
سلمة
زوج
النبى
صلى
الله
عليه
وسلم
تقول
سمعت
رسول
الله
صلى
الله
عليه
وسلم
يقول
مامن
عبد
تصيبه
مصيبة
فيقول
انا
لله
وانا
اليه
راجعون
اللهم
اجرنى
فى
مصيبتى
واخلف
لى
خيرا
منها
الا
اجره
الله
فيه
مصيبته
واخلف
له
خيرا
منها
قالت
فلما
توفى
ابو
سلمة
قلت
كما
امرنى
رسول
الله
صلى
الله
عليه
وسلم
فاخلف
الله
لى
خيرا
منه
رسول
اله
صلى
الله
عليه
وسلم.
(مسلم
شريف
ج
1 ص
300،
مسلم
بشرح
النووى
ج
3 ص
221،
فتح
الملهم
ج
2 ص
468،
شرح
الابى
والسنوسى ج 3 ص 314، المفهم ج 2 ص 57-571)
অর্থঃ- “হযরত ইবনে সাফীনা
রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন। তিনি নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর স্ত্রী
উম্মে সালমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহাকে বলতে শুনেছেন যে, আমি রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে
শুনেছি। তিনি বলেছেন, কোন মানুষের উপর যখন
কোন বিপদ আসে তখন সে যদি বলে-
انا
لله
وانا
اليه
راجعون
اللهم
اجرنى
فى
مصيبتى
واخلف
لى
خيرا
منها.
অর্থঃ- “আমরা আল্লাহ্ পাক-এর
জন্য এবং তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তন করব। আয় আল্লাহ্ পাক! আমাকে বিপদে ধৈর্য্য ধারণ করার
ক্ষমতা দিন এবং উত্তম প্রতিদান দান করুন।”
তবে আল্লাহ্ পাক তাকে বিপদে
ধৈর্য্য ও উত্তম প্রতিদান দিবেন। হযরত উম্মে সালমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বলেন, যখন আবূ সালমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর ইন্তিকাল হলো, তখন আমি রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর
নির্দেশ অনুযায়ী দোয়াটি পাঠ করলাম। ফলে আল্লাহ্ পাক আমাকে তার চেয়ে উত্তম প্রতিদান হযরত
রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দান করলেন।” (মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ ৩০০ পৃষ্ঠা, মুসলিম বিশরহিন্ নববী ৩য় জিঃ ২২১ পৃষ্ঠা, ফতহুল্ মুলহিম ২য় জিঃ ৪৬৮ পৃষ্ঠা, শরহুল্ উবাই ওয়াস্ সিনূসী ৩য় জিঃ ৩১৪ পৃষ্ঠা, আল্ মুফহিম ২য় জিঃ ৫৭০, ৫৭১ পৃষ্ঠা)
[১১৪৯]
عن
ام
سلمة
رضى
الله
عنها
ان
ابا
سلمة
حدثها
انه
سمع
رسول
الله
صلى
الله
عليه
وسلم
يقول
ما
من
مسلم
يصاب
بمصيية
فيفزع
الى
ما
امر
الله
به
من
قوله
انا
لله
وانا
اليه
راجعون
اللهم
عندك
احتسبت
مصيبتى
فاجرنى
فيها
وعوضنى
منها
الا
اجره
الله
عليها
وعاضه
خيرا
منها
قالت
فلما
توفى
ابو
سلمة
ذكرت
الذى
حدثنى
عن
رسول
الله
صلى
الله
عليه
وسلم
فقلت
انا
له
وانا
اليه
راجعون
الهم
عندك
احتسبت
مصيبتى
هذه
فاجرنى
عليها
فاذا
اردت
ان
اقول
وعضنى
خيرا
منها
قلت
فى
نفسى
اعاضى
خيرا
من
ابى
سلمة
ثم
قلتها
فعاضنى
اله
محمدا
صلى
الله
عليه
وسلم
واجرنى
فى
مصيبتى.
(ابن
ماجة
شريف
ص
116)
অর্থঃ- “হযরত উম্মে সালমা
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লামকে হযরত আবূ সালমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলতে শুনেছেনঃ যখন কোন
মুসলমান বিপদে পড়ে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে আল্লাহ্ পাক-এর নির্দেশ মুতাবিক-
انا
لله
وانا
اليه
راجعون.
(আমরা আল্লাহ্ পাক-এর জন্য এবং
নিশ্চিতভাবে তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন কারী) পাঠ করে এবং বলে অর্থাৎ দোয়া করে
اللهم عندك احتسبت مصيبتى فاجرنى فيها وعوضنى منها.
‘আয় আল্লাহ্ পাক! আমি আপনার কাছে বিপদে ছওয়াবের আশা করি। কাজেই আপনি আমাকে এর
পুরস্কার দিন এবং আমাকে এর প্রতিদান দিন।’
তখন আল্লাহ্ পাক তাকে
পুরস্কৃত করেন এবং এর চেয়ে উত্তম বিনিময় দান করেন। রাবী (উম্মে সালমা
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা) বলেন, যখন হযরত আবূ সালমা
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ইন্তিকাল করেন,
তখন
আমি হযরত আবূ সালমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম থেকে আমার কাছে যে হাদীস বর্ণনা করেছিলেন, তা স্মরণ করলাম এবং বললাম
انا
لله
وانا
اليه
راحعون
اللهم
عندك
احتسبت
مصيبتى
هذه
فاجرنى
عليها.
‘আমরা তো আল্লাহ্ পাক-এর জন্য। নিশ্চিতভাবে আমরা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী। আয় আল্লাহ্ পাক!
আমার এ বিপদের পুরস্কার তো আপনারই কাছে রয়েছে। কাজেই আমাকে এর পুরস্কার দান
করুন।’ এরপর যখন’ আমি কিছু বলতে ইচ্ছা করলাম, আমাকে এর চাইতে উত্তম কিছু দান করুন,
তখন
আমি মনে মনে বললাম, হযরত আবূ সালমা
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু অপেক্ষা আমাকে
কিছু দান করুন। তারপর আমি তা বললাম। তখন আল্লাহ্ পাক আমাকে বিনিময়ে সাইয়্যিদুনা, হাবীবুনা হযরত মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে
দান করলেন এবং আমার বিপদে তিনি আমাকে পুরস্কৃত করলেন।” (ইবনু মাজাহ শরীফ ১১৬ পৃষ্ঠা)
[১১৫০-১১৭১]
عن
ام
سلمة
رضى
الله
عنها
قالت
قال
رسول
الله
صلى
الله عليه وسلم اذا حضرتم المريض او الميت فقولوا خيرا فان الملئكة يؤمنون على ماتقولون قالت فلما مات ابو سلمة اتيت النبى صلى الله عليه وسلم فقلت يا رسول الله صلى الله عليه وسلم ان ابا سلمة قد مات قال قولى اللهم اغفرلى وله واعقبنى منه عقبى حسنة قالت فقلت فاعقبنى الله من هو خيرلى منه محمدا صلى الله عليه وسلم. (مسلم شريف ج 1 ص 300، مسلم بشرح النووى ج 3 ص 222، فتح الملهم ج 2 ص 568، شرح الابى والسنوسى ج 3 ص 315، المفهم ج 2 ص 571- 572، ترمذى شريف ج 1 ص 117، تحفة الاحوذى ج 4 ص 53 عارضة الاحوذى ج 4 ص 200، ابو داؤد شريف ج 2 ص 88، بذل المجهود ج 5 ص 184، عون المعبود ج 3 ص 158، شرح ابى داؤد، لبدر الدين العينى ج 6 ص 33، ابن ماجة شريف ص 105، مشكوة شريف ص 140، مرقاة ج 4 ص 13، اشعة اللمعات، اللمعات، شرح الطيبى، التعليق الصبيح، مظاهر حق، مرأة امناجيح)
অর্থঃ- “হযরত উম্মে সালমা
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
রসূলুল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমরা যখন কোন রোগী অথবা মৃত ব্যক্তির নিকট উপস্থিত হও, তখন তার সম্পর্কে ভাল মন্তব্য বা দোয়া কর। কেননা, ফিরিশ্তা আলাইহিমুস্ সালামগণ তোমাদের দোয়ার উপর আমীন বলে
থাকেন।
হযরত
উম্মে সালমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বলেন,
যখন
হযরত আবূ সালমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (তাঁর স্বামী)-এর ইন্তিকাল হলো, তখন আমি হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর
কাছে বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম! হযরত আবূ সালমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ইন্তিকাল করেছেন। তিনি বললেন, তুমি এ দোয়া পড়,
اللهم
اغفرلى
وله
وله
واعقبنى
منه
عقبى
حسنة.
অর্থাৎ “আয় আল্লাহ্ পাক!
আমাকে এবং তাঁকে ক্ষমা করে দিন এবং আমাকে তাঁর পর উত্তম প্রতিদান প্রদান করুন।” তিনি বলেন, আমি এ দোয়া পাঠ করলাম। আল্লাহ্ পাক আমাকে তাঁর চেয়ে
উত্তম প্রতিদান সাইয়্যিদুনা, হাবীবুনা হযরত
মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দান করলেন।” (মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ ৩০০ পৃষ্ঠা, মুসলিম বিশ্রহিন নববী ৩য় জিঃ ২২২ পৃষ্ঠা, ফতহুল্ মুলহিম ২য় জিঃ ৫৬৮ পৃষ্ঠা, শরহুল উবাই ওয়াস্ সিনূসী ৩য় জিঃ ৩১৫ পৃষ্ঠা, আল্ মুফহিম ২য় জিঃ ৫৭১, ৫৭২ পৃষ্ঠা, তিরমিযী শরীফ ১ম জিঃ
১১৭ পৃষ্ঠা, তুহফাতুল্ আহওয়াযী ৪র্থ জিঃ
৫৩ পৃষ্ঠা, আরিদ্বাতুল্ আহওয়াযী ৪র্থ
জিঃ ২০০ পৃষ্ঠা, উরফুশ্ শাযী, আবূ দাউদ শরীফ ২য় জিঃ ৮৮ পৃষ্ঠা, বযলুল্ মাজহুদ ৫ম জিঃ ১৮৪ পৃষ্ঠা, আউনুল্ মা’বূদ ৩য় জিঃ ১৫৭
পৃষ্ঠা, শরহে আবী দাউদ লি বদরিদ্দীন
আইনী ৬ষ্ঠ জিঃ ৩৩ পৃষ্ঠা, ইবনু মাজাহ শরীফ ১০৫
পৃষ্ঠা, মিশকাত শরীফ ১৪০ পৃষ্ঠা, মিরক্বাত ৪র্থ জিঃ ১৩ পৃষ্ঠা, আশয়াতুল্ লুময়াত, লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী,
আত্ তা’লীকুছ্ ছবীহ্,
মুযাহিরে
হক্ব, মিরয়াতুল্ মানাজীহ)
[১১৭২-১১৮৮]
عن
ام
سلمة
رضى
الله
عنها
قالت
دخل
رسول
الله
صلى
الله
عليه
وسلم
على
ابى
سلمة
وشق
بصره
فاغمضة
ثم
قال
ان
الروح
اذا
قبض
تبعه
البصر
فضج
ناس
من
اهله
فقال
لاتدعوا
على
انفسكم
الا
بخير
فان
الملئكة
يؤمنون
على
ماتقولون ثم قال اللهم اغفر لابى سمة وارفع درجته فى المهديين واخلفه فى عقبه فى الغابرين واغفرنا وله يارب اعالمين وافسح له فى قبره ونور له فيه. (مسلم شريف ج1 ص 301، مسلم بشرح النووى ج 3 ص 223، فتح المهم ج 2 ص 469، شرح الابى والسنوسى ج 2 ص 317، ابو داؤد شريف ج 2 ص 89، بذل المجهود ج 5 ص 185، عون المعبود ج 2 ص 159، المفهрĀ̀쿏㳰ص 36، مشكوة شريف ص 141، مرقاة ج 4 ص 15، اشعة اللمعات، اللمعات، شرح الطيبى، التعليق الصبيح، مظاهرحق، مرأة المناجيح)
অর্থঃ- “হযরত উম্মে সালমা
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
হযরত
রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবূ সালমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু-এর কাছে গেলেন তখন তাঁর চোখদ্বয় উল্টে রয়েছে। হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার চোখদ্বয় বন্ধ করে দিলেন এবং বললেন, রূহ যখন নিয়ে যাওয়া হয়, তখন চোখ তৎপ্রতি অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। এ কথা শুনে তাঁর পরিবারের
লোকগণ উচ্চস্বরে কেঁদে উঠলেন। তিনি (হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা নিজেদের জন্য উত্তম দোয়া কর। কেননা, ফিরিশতা আলাইহিমুস্ সালামগণ তোমাদের দোয়ার উপর আমীন বলেন। এরপর তিনি বলেন
অর্থাৎ দোয়া করেন,
اللهم
اعفر
لابى
سلمة
وارفع
درجته
فى
المهديين واخلفه فى عقبه فى الغابرين واغفر لنا وله يارب العالمين وافسح له فى فبرة ونور له فيه.
অর্থাৎ “আয় আল্লাহ্! আপনি
আবূ সালমাকে মাফ করে দিন এবং তাঁর মর্যাদা যাঁরা হিদায়েত প্রাপ্ত হয়েছেন তাঁদের
ন্যায় সমুন্নত করুন। তাঁর পরিবার-পরিজন,
যাঁরা
তাঁর পশ্চাতে আছে, আপনি তাদের
জিম্মাদারী গ্রহণ করুন। হে সারা আলমের রব! আপনি আমাদেরকে এবং তাকে ক্ষমা করুন। আয় আল্লাহ্ পাক!
আপনি তাঁর জন্য তাঁর কবরকে প্রশস্ত করে দিন এবং তা তাঁর জন্য আলোকিত করুন।” (মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ ৩০১ পৃষ্ঠা, মুসলিম বিশ্রহিন্ নববী ৩য় জিঃ ২২৩ পৃষ্ঠা, ফতহুল্ মুলহিম ২য় জিঃ ৪৬৯ পৃষ্ঠা, শরহুল্ উবাই ওয়াস্ সিনূসী ২য় জিঃ ৩১৭ পৃষ্ঠা, আল মুফহিম ২য় জিঃ ৫৭৩ পৃষ্ঠা, আবু দাউদ শরীফ ২য় জিঃ ৮৯ পৃষ্ঠা,
বযলুল্
মাজহুদ ৫ম জিঃ ১৮৫ পৃষ্ঠা, আউনুল মা’বূদ ৩য় জিঃ ১৫৯ পৃষ্ঠা, শরহু আবী দাউদ লি বদরিদ্দীন আইনী ৬ষ্ঠ জিঃ ৩৬ পৃষ্ঠা, মিশকাত শরীফ ১৪১ পৃষ্ঠা, মিরকাত ৪র্থ জিঃ ১৫ পৃষ্ঠা, আশয়াতুল্ লুময়াত, লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তা’লীকুছ্ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব,
মিরয়াতুল্
মানাজীহ)
[১১৮৯-১১৯২]
حدثنا
خالد
الحذاء
بهذا
الاسنار
نحوه
غير
انه
قال
واخلفه
فى
تر
كته
وقال
اللهم
اوسع
له
فى
قبره
ولم
يقل
افسح
له
وزاد
قال
خالد
الحذاء
ودعوة
اخرى
سابعة
نسيتها.
(مسلم
شريف
ج
1 ص
301،
مسلم
بشرح
النووى
ج
3 ص
223،
فتح
الملهم
ج
2 ص
469،
شرح
الابى
والسنوسى ج 3 ص 317)
অর্থঃ- “হযরত খালিদুল্
হায্যা রহমতুল্লাহি আলাইহি এ সনদে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি বলেছেন, তাঁর উত্তরাধিকারীগণের মধ্য থেকে প্রতিনিধি নিযুক্ত করুন এবং
বলেছেন,
اللهم اوسع له فى قبره.
অর্থাৎ “আয় আল্লাহ্ পাক! তাঁর কবরকে প্রশস্ত করে দিন। কিন্তু তিনি افسح
له শব্দ বলেননি। তিনি আরো বলেন যে, হযরত খালিদুল্ হায্যা রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, সপ্তম আর একটি দোয়া করেছিলেন, যা আমি ভুলে গেছি।” (মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ
৩০১ পৃষ্ঠা, মুসলিম বিশ্রহিন্ নববী ৩য়
জিঃ ২২৩ পৃষ্ঠা, ফতহুল্ মুলহিম ২য়
জিঃ ৪৬৯ পৃষ্ঠা, শরহুল্ উবাই ওয়াস্
সিনূসী ৩য় জিঃ ৩১৭ পৃষ্ঠা)
[১১৯৩-১২০৬]
عن
معقل
بن
يسار
رضى
الله
عنه
قال
قال
رسول
الله
صلى
اله
عليه
وسلم
اقرؤا
يس
على
موتاكم.
(ابوداؤد شريف ج 2 ص 89، بذل المجهود ج 5 ص 185، عون المعبود ج 3 ص 160، شرح ابى داؤد بدر الدين العينى ج 6 ص 39، ابن ماجة شريف ص 105، مسند احمد بن حنبل، مشكوة شريف ص 141، مرقاة ج 4 ص 16، اشعة اللمعات، اللمعات، شرح الطيبى، التعليق الصبيح، مظاهرحق، مرأة المنا جيح)
অর্থঃ- “হযরত মা’ক্বাল ইবনে ইয়াসার রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা তোমাদের ইন্তিকাল বরণকারী ব্যক্তিদের নিকট ‘সূরা ইয়াসীন’ পাঠ কর।” (আবূ দাউদ শরীফ ২য় জিঃ ৮৯ পৃষ্ঠা, বযলুল মাজহুদ ৫ম জিঃ ১৮৫ পৃষ্ঠা, আউনুল মা’বূদ ৩য় জিঃ ১৬০
পৃষ্ঠা, শরহু আবী দাউদ লি বদরিদ্দীন
আইনী ৬ষ্ঠ জিঃ ৩৯ পৃষ্ঠা, ইবনু মাজাহ শরীফ ১০৫
পৃষ্ঠা, মুসনাদু আহমদ ইবনে হাম্বল, মিশকাত শরীফ ১৪১ পৃষ্ঠা, মিরকাত ৪র্থ জিঃ ১৬ পৃষ্ঠা, আশয়াতুল্ লুময়াত, লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তা’লকিুছ্ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব,
মিরয়াতুল
মানাজীহ)
[১২০৭]
عن
شداد
بن
اوس
رضى
الله
عنه
قال
قال
رسول
الله
صلى
الله
عليه
وسلم
اذا
حضرتم
موتاكم
فاغمضوا
البضر
فان
البصر
يتبع
الروح
وقولوا
خيرا
فان
الملائكة تؤمن على ما قال اهل البيت. (ابن ماجة شريف ص 106)
অর্থঃ- “হযরত শাদ্দাদ ইবনে
আউস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
হযরত
রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন তোমরা তোমাদের কারো ইন্তিকালের পর সেখানে হাযির হবে, তখন তোমরা তার চোখ বন্ধ করে দিবে। কেননা, চোখ রূহের অনুসরণ করে। আর তোমরা তার ব্যাপারে ভাল
দোয়া করবে। কেননা, গৃহবাসীরা যে দোয়া করে থাকে, ফিরিশ্তা আলাইহিমুস্ সালামগণ তার উপর আমীন বলেন।” (ইবনু মাজাহ শরীফ ১০৬ পৃষ্ঠা)
[১২০৭]
عن
حمنة
بنت
جحش
انه
قيل
لها
قتل
اخوك
فقالت
رحمه
الله
وانا
لله
وانا
اليه
راجعون
قالوا
قتل
زوجل
قالت
واحزناه
فقال
رسول
الله
صلى
الله
عليه
وسلم
ان
فقال
رسول
الله
صلى
الله
عليه
وسلم
ان
للزوج
من
المرأة
لشعبة
ماهى
لشئ
(ابن
ماجة
شريف
ص
115)
অর্থঃ- “হযরত হামনা বিনতে
জাহাশ্ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা থেকে বর্ণিত। তাঁকে বলা হলো যে, তাঁর ভাইকে শহীদ করা হয়েছে। তখন তিনি বললেন,
رحمه
الله
وانا
لله
وانا
اليه
راجعون.
‘আল্লাহ্ পাক তাঁর প্রতি রহমত করুন।’
আমরা
আল্লাহ্ পাক-এর জন্য এবং নিশ্চিতভাবে তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন কারী।’ তারা বললেন, তোমার স্বামীকে শহীদ
করা হয়েছে। তিনি বললেন, আফসোস, আমরা তার জন্য চিন্তিত। তখন রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, নিশ্চয়ই স্বামীর
প্রতি মহিলাদের এমন ভালবাসা রয়েছে, যা অন্য কিছুতে নেই।” (ইবনু মাজাহ শরীফ ১১৫ পৃষ্ঠা)
[১২০৯-১২১৯]
وضع
عمر
بن
الخططاب
رضى
الله
عنه
على
سريره
فتكفنه
الناس
يدعون
ويثنون
ويصلون
عليه
قبل
انيرفع.
(مسلم
شريف،
مسلم
بشرح
النووى،
فتح
اللهم،
شرح
الابى
واسنوسى، بخارى شريف فتح البارى، عمدة القارى، ارشاد السارى، شرح الكر مانى، تيسير البارى، مرقاة شرح مشكوة شريف ج 10)
অর্থঃ- “হযরত উমর ইবনুল
খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে তাঁর খাঁটের উপর রাখা হয়েছিল। অতঃপর লোকেরা তাঁকে
ঘেরাও করে দোয়া, দরূদ পড়ছিলেন তাঁকে
উঠিয়ে নেয়ার পূর্বে।” (মুসলিম শরীফ, মুসলিম বিশ্রহিন্ নববী, ফতহুল্ মূলহিম, শরহুল্ উবাই ওয়াস্
সিনূসী, বুখারী শরীফ, ফতহুল্ বারী, উমদাতুল্ ক্বারী, ইরশাদুস্ সারী,
শরহুল্
কিরমানী, তাইসীরুল্ বারী, মিরক্বাত শরহে মিশকাত শরীফ ১০ম জিঃ) উল্লিখিত আয়াতে কারীমা এবং ছহীহ্ হাদীস শরীফ
সমূহ থেকে স্পষ্ট প্রমাণিত হলো যে, ইন্তিকালের পরে
জানাযা নামাযের পূর্বে মাইয়্যিতের জন্য হাত তুলে এবং একাকী বা ইজ্তিমায়ী দোয়া করা
সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত।
মৃত
ব্যক্তিকে দাফন করার পর দোয়া করা জায়িয ও
সুন্নত হওয়ার প্রমাণ
আখিরী রসূল, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত ব্যক্তির জন্যে জানাযার পূর্বে
যেরূপ দোয়া করেছেন, তদ্রুপ দাফনের পরেও
দোয়া করেছেন বলে হাদীস শরীফে স্পষ্ট
উল্লেখ আছে। অতএব দাফনের পূর্বে যেরূপ মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া করা জায়িয ও সুন্নত তদ্রুপ
দাফনের পরেও মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া করা জায়িয ও সুন্নত। ফিক্বাহের মশহুর কিতাব “ফতওয়ায়ে” আলমগীরীতে” উল্লেখ আছে যে,
“একটি
উট যবেহ্ করে তার গোশ্ত বানাতে যতটুকু সময় লাগে ততটুকু সময় দাফনের পর কবরের নিকট
বিলম্ব করা এবং কুরআন শরীফ তিলাওয়াত,
দোয়া-দরূদ, তাছবীহ্-তাহ্লীল পাঠ করা মুস্তাহাব সুন্নত। নিম্নে এ সম্পর্কিত দলীল-আদিল্লাহ সমূহ উল্লেখ করা হলো-
[১২২০-১২২৪]
عن
عثمان
ابن
عفان
رضى
اله
عنه
قال
كان
انبى
صلى
الله
عيه
وسلم
اذا
فرغ
من
دفن
الميت
وقف
عليه
فقال
استغفروا لاخيكم واسالواله بالتشبيت فانه الان يسئل. (ابو داؤد شريف ج 2 ص 103، شرح ابى داؤد لبدر ادين العينى، بذل المجهود، عون المعبود، الجوهرة النيرة ص 141)
অর্থঃ- “হযরত উসমান ইবনে
আফ্ফান রদ্বিয়াল্লাহ তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন কোন
মাইয়্যিতের দাফন কার্য শেষ করতেন, তখন তিনি কবরের
পার্শ্বে দাঁড়িয়ে বলতেন, তোমরা তোমাদের
ভাইয়ের জন্য মাগফিরাত কামনা কর এবং সে যেন সুদৃঢ় থাকতে পারে, তার জন্য দোয়া কর। কেননা,
এখনই
তাকে সুওয়াল করা হবে।” (আবূ দাউদ শরীফ ২য়
জিঃ ১০৩ পৃষ্ঠা, শরহু আবী দাউদ
লিবদরিদ্দীন আইনী, বযলুল মাজহুদ, আউনুল মা’বূদ, আল্ জাউহারাতুন্ নাইয়ারাহ ১৪১ পৃষ্ঠা)
[১২২৫-১২৩০]
اخبرنى
عبد
الله
رجل
من
قريش
عن
محمد
بن
قيس
بن
مخرمة
بن
المطلب
انه
قال
يوما
الا
احدثكم
عنى
وعن
امى
قال
فظننا
انه
يريد
امه
التى
ولدته
قال
قالت
عائشة
الا
احدثكم
عنى
وعن
رسول
الله
صلى
الله
عليه
وسلم
قلنا
بلى
قال
قالت
لما
كانت
ليلتى
التى
كان
النبى
صلى
الله
عليه
وسلم
فيها
عندى
ائقلب
فوضع
رداءه
وخلع
نعليه
فوضعهما
عند
رجليه
وبسط
طرف
اذاره
عن
فراشه
فاضطجع
فلم
يلبث
الارث
ماظن
ان
قدر
قدت
فاخذ
رداءه
رويدا
او
انتعل
رويدا
وفتح
الباب
رويدا
فخرج
ثم
اجافه
رويدا
فجعلت
درعى
فى
رأسى
واحتمرت
وتقنعت
اذارى
ثم
انطلقت
عى
اثره
حتى
جاء
البقيع
فقام
فاطال
القيام
ثم
رفع
يديه
ثلاث
مرات
ثم
انحرف
فانحرفت
فاسرع
فاسرعت
فهرول
فهرولت
فاحضر
فاحضرت
قسبقته
فدخلت
فليس
الا
ان
اضطجعت
فدخل
فقال
مالك
يا
عائش
حشيا
رابية
قالت
قلت
لا
شئ
قال لتخبرينى او ليخبرنى اللطيف الخبير قالت قلت يارسول الله صلى الله عليه وسلمك بابى انت وامى فاخبرته قال فانت السواد الذى رايت امامى قلت نعم فلهدنى فى صدرى لهدة او جعتنى ثم قال اظننت ان يحيف الله عليك ورسوله قالت مهمايكتم الناس يعلمه الله نعم قال فان جبريل عليه السلام اتانى حين رايت فنادانى فاخفاه منك فاجبته فاخفيته منك ولم يكن يدخل عليك وقد وضعت ثيابك وظننت ان قدر قدت فكرهت ان اوقظك وخشيت ان تستوحشى فقال ان ربك يأمرك ان تأتى اهل البقيع فتستغفر لهم قالت قلت كيف اقول لهم يا رسول الله صلى الله عليه وسلم قال قولى السلام على اهل الديار من المؤمنين والمسلمين ويرحم الله المستقدمين منا وامستأخرين وانا ان شاء الله بكم للاحقون. (مسلم شريف ج 1 ص 313- 314، مسلم بشرح النووى، فتح الملهم، شرح الابى والسنوسى، المفهم، مشارق الانوارص 178-179)
অর্থঃ- “হযরত আব্দুল্লাহ
রহমতুল্লাহি আলাইহি নামের জনৈক কুরাইশী হযরত মুহম্মদ ইবনে ক্বাইস ইবনে মাখরামা
ইবনে মুত্তালিব রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি একদিন বলেন,
আমি কি
তোমাদেরকে আমার ও আমার মায়ের কথা শুনাবো না?
রাবী
(হযরত আব্দুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি) বলেন,
আমরা
মনে করলাম, তিনি তার ধাত্রী মায়ের কথা
বলতে চাচ্ছেন। এর পর তিনি বললেন, হযরত আয়িশা
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বলেছেন, আমি কি তোমাদেরকে
হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও আমার কথা শুনাবো না? আমরা বললাম হ্যাঁ,
নিশ্চয়ই
বর্ণনা করুন। (রাবী) বলেন, তিনি বললেন, হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার পালার
যে রাতে আমার কাছে ছিলেন, সে রাতে তিনি বাইরে
থেকে এসে চাদর রেখে দিলেন, জুতা খুলে নিলেন এবং
জুতা দুটি তাঁর পায়ের দিকে রেখে চাদরের এক কিনারা বিছানার উপর বিছিয়ে দিলেন এবং
শুয়ে পড়লেন। তিনি ততটুকু সময় অপেক্ষা করেন যতটুকু সময়ে তিনি আমার ঘুমিয়ে পড়ার ধারণা করলেন। তখন অতি সন্তর্পনে
চাদর নিলেন, জুতা পরলেন ও দরজা খুলে
বেরিয়ে গেলেন। তারপর আস্তে করে দরজা বন্ধ করে চলে গেলেন। আমিও আমার উড়না মাথায় দিলাম, জামা পরে নিলাম এবং ইযার বেঁধে নিলাম। তারপর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পিছনে পিছনে রওয়ানা হলাম। তিনি জান্নাতুল বাক্বীতে
পৌঁছে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেন। তিনবার দোয়ায় হাত উঠালেন। তারপর ফিরে আসতে লাগলেন, আমিও রওয়ানা হয়ে পড়লাম। তিনি দ্রুত গতিতে আসতে
লাগলেন, আমিও আমার গতি বাড়িয়ে দিলাম। তিনি ঘরে এসে
পৌঁছলেন, আমিও তার পূর্বক্ষণে এসে
পৌছলাম এবং ঘরে প্রবেশ করেই শুয়ে পড়ার সাথে সাথে রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম এসে প্রবেশ করলেন এবং বললেন,
হে
আয়িশা! কি হয়েছে? তুমি ঘন ঘন
দীর্ঘশ্বাস গ্রহণ করছ কেন? আমি বললাম, কিছুই না। হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি বলে দাও নতুবা সর্বজ্ঞ, সূক্ষ্মদর্শী আল্লাহ্ পাক আমাকে জানিয়ে দিবেন। হযরত আয়িশা রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহা বলেন, তখন আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার
পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হোক। অতপর ঘটনা বর্ণনা করলাম। হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আমার সামনে একটি
ছায়ার মত দেখা যাচ্ছিল, তাহলে সে ছায়া তুমিই
ছিলে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তখন তিনি আমাকে একটু চাপ দিলেন। তাতে আমি কিছুটা ব্যথা অনুভব
করলাম।
তারপর
বললেন, তুমি কি ধারণা করেছিলে
আল্লাহ্ পাক এবং তাঁর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অবিচার করবেন? হযরত আয়িশা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বললেন, হাঁ অনেক সময় মানুষ গোপন করতে চায়, আর আল্লাহ্ পাক প্রকাশ করে দেন। হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হযরত জিব্রীল
আলাইহিস্ সালাম এসেছিলেন। যখন তুমি আমাকে বের হতে দেখেছিলে। এসে তিনি আমাকে ডাকলেন এবং
তোমার থেকে ব্যাপার গোপন রাখতে চাইলেন। আমি তাঁর ইচ্ছানুযায়ী তোমার থেকে গোপন রাখলাম। তিনি তোমার ঘরে
প্রবেশ করতে চাচ্ছিলেন না। যেহেতু তুমি কাপড় রেখে দিয়েছিলে। আর আমি ধারণা করলাম তুমি
ঘুমিয়ে পড়েছ, তাই তোমাকে জাগানো পছন্দ
করিনি এবং আমার আশংকা হলো তুমি (একাকী) ভয় পাবে। হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস্
সালাম বললেন, আপনার রব আপনাকে আদেশ করেছেন, জান্নাতুল বাক্বীতে গিয়ে তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন। হযরত আয়িশা
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! তাদের জন্য
আমরা কি দোয়া করবো? হযরত রসূলুল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, এ দোয়া করবে-
السلام
على
اهل
الديار
من
المؤمنين والمسلمين ويرحم الله المستقدمين منا واالمستأخرين وانا ان شاء الله بكم للاحقون.
শুদ্ব “কবরবাসী মু’মিন-মুসলমানগণের প্রতি সালাম। আল্লাহ্ পাক আমাদের অগ্রগামী
ও পশ্চাৎগামী সবার প্রতি রহম করুন। ইনশাআল্লাহ্ অবশ্যই আমরাও তোমাদের সাথে মিলিত হবো।” (মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ ৩১৩, ৩১৪ পৃষ্ঠা, মুসলিম বিশরহিন্
নববী, ফতহুল্ মুলহিম, শরহুল্ উবাই ওয়াস্ সিনূসী, আল্ মুফহিম, মাশারিকুল্ আনওয়ার
১৭৮, ১৭৯ পৃষ্ঠা)
[১২৩১]
عن
سعيد
بن
امسيب
رضى
الله
عنه
قال
حضرت
ابن
عمرفى
جنازة
فلما
وضعها
فى
اللحد
قال
بسم
الله
وفى
سبيل
الله
وعلى
ملة
رسول
الله
فلما
اخذ
فى
تسوية
الكبن
على
اللحد
قال
اللهم
اجرها
من
الشيطان
ومن
عذاب
القبر
الهم
جاف
الارض
عن
جنبيها
وصعد
روحها
ولقها
منك
رضوانا
قلت
ياابن
عمر
اشئ
سمعته
من
رسول
الله
صلى
الله
عليه
وسلم
ام
قلته
برايك
قال
انى
اذا
لقادر
على
القول
بل
شيئ
سمعته
من
رسول
اله
صلى
الله
عليه
وسلم.
(ابن
ماجة
شريف
ص
112)
অর্থঃ- “হযরত সাঈদ ইবনে
মুসাইয়্যিব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর
সাথে এক জানাযা নামাযে উপস্থিত ছিলাম। যখন তিনি কবরে লাশ রাখেন, তখন বলেন,
بسم
الله
وفى
سبيل
الله
وعلى
ملة
رسول
الله
صلى
الله
عليه
وسلم.
অর্থাৎ “আল্লাহ্ পাক-এর নামে, আল্লাহ্ পাক-এর পথে এবং রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম-এর ত্বরীকা মুতাবিক রাখলাম।” কবরের উপর মাটি সমান করে দেয়ার সময় তিনি বলতেন,
اللهم
اجرها
من
الشيطان
ومن
عذاب
القبر
اللهم
جاف
الارض
عن
جنبيها
وصعد
روحها
ولقها
منك
رضوانا.
আমি বললামঃ হে হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু! আপনি কি একথা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে
শুনেছেন? তিনি বলেন, আমি এরূপ বলার সমর্থ রাখি, তবে আমি একথা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে শুনেছি।” (ইবনু মাজাহ শরীফ ১১২ পৃষ্ঠা)
হাদীস শরীফের উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা প্রমাণিত
হলো যে, আখিরী রসূল হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহুমগণ দাফনের পরও মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া-ইস্তিগফার করেছেন। তাই ফিক্বাহের কিতাব
সমূহেও দাফনের পর মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া করাকে জায়িয ও সুন্নত বলা হয়েছে। যেমন কিতাবে উল্লেখ
আছে,
[১২৩২]
السوال:
قبرستان
میں
ھاتہ
اٹھا
کر
دعا
مانگنا کیسا ھے؟
الجواب:
فی
نفس
میت
کیلئے
استغفار
کرنا
اور
ھاتہ
اٹھا
کر
دعا
مانگنا
قبر
ستان
میں
جائز
ھے.
(فتاوئے محمودیۃ ج 2 ص 393)
অর্থঃ- “সুওয়ালঃ কবরস্থানে
হাত উঠিয়ে মুনাজাত করা কিরূপ? জাওয়াবঃ মূলতঃ মৃত ব্যক্তির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং
হাত উঠিয়ে মুনাজাত করা কবরস্থানেও জায়িয।”
(ফতওয়ায়ে
মাহমূদিয়া ২য় জিঃ ৩৯৩ পৃষ্ঠা)
[১২৩৩-১২৪৭]
قبرستان
میں
بحالت
قیا
م
قبلہ
روخ
ھوکر
اور
دونوں
ھاتہ
اٹھا
کر
دعا
کرنا
اداب
میں
سے
ھے
اور
مسنون
ھے
بدعت
تھیں
ھے
... حضور صلی اللہ علیہ وسلم لے متعلق حدیث میں ھے جاء البقیع فاطال القیام ثم رفع یدیہ ثلاث مرات. (مسلم شریف ج1 ص 213- 213، مسلم بشرح النووی، فتح الملھم، شرح الابی والسنوی، المفھم، خزانۃ الفتاوی، فتاوی عالمکیریہ، بنایۃ، فتح القدیر، ابو
عوانۃ. در المختار، فتاوی رحیمیہ ج 3 ص 102، امداد الفتاوی ج 1 ص 73، فتاوے رشیدیہ ص 234، احسن الفتاوی ج 4 ص 210)
অর্থঃ- “কবরস্থানে দাঁড়ানো
অবস্থায়, ক্বিবলামুখী হয়ে উভয় হাত
উঠিয়ে দোয়া-মুনাজাত করা আদব ও সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত। বিদয়াত মোটেও নয়। ..... সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে হাদীস শরীফে উল্লেখ করা হয় যে, “তিনি জান্নাতুল্ বাক্বী কবরস্থানে আসলেন, অতঃপর অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলেন। আর উভয় হাত উঠিয়ে তিনবার
দোয়া-মুনাজাত করলেন।” (মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ
২১৩, ২১৪ পৃষ্ঠা, মুসলিম বির্শহিন্ নববী, ফতহুল্ মুলহিম, শরহুল্ উবাই ওয়াস্
সিনূসী, আল্ মুফহিম, খাযানাত্ল ফাতাওয়া,
ফাতাওয়ায়ে
আলমগীরী, বিনায়া, ফতহুল্ ক্বদীর,
আবূ
আওয়ানাহ, দুররুল মুখতার, ফাতাওয়ায়ে রহীমিয়া ৩য় জিঃ ১০২ পৃষ্ঠা, ইমদাদুল্ ফাতাওয়া ১ম জিঃ ৭৩ পৃষ্ঠা, ফাতাওয়ায়ে রশীদিয়া ২৩৪ পৃষ্ঠা, আহসানুল ফাতাওয়া ৪র্থ জিঃ ২১৫ পৃষ্ঠা) উপরোক্ত বিস্তারিত ও নির্ভরযোগ্য দলীল-আদিল্লার
ভিত্তিতে স্পষ্টই প্রমাণিত হলো যে, জানাযা নামাযের পর, দাফনের পর ও কবর জিয়ারতের সময় উভয় হাত উঠিয়ে সম্মিলিতভাবে
মুনাজাত করা মুস্তাহাব সুন্নত। এটাকে নাজায়িয,
মাকরূহ
ও বিদয়াত বলা গোমরাহী ব্যতীত কিছুই নয়।
[১২৪৮-১২৪৯]
سوال.
قبرستان
میں
ھاتہ
اٹھا
کر
دعا
مانگنا
درست
ھے
یا
نھیں؟
الجواب.
فی
ردا
لمحتار.
واداب
زیارۃ
القبور
ثم
یدعو
قائما
طویلا.
اسے
دعا
کاجائز
ھونا
ثابت
ھوا
اور
ھاتہ
اٹھانا
مطلق
اداب
دعاء
سے
ھے
پسں یہ بھی درست ھوا. (امداد الفتاوی ج1 ص 83)
অর্থঃ-“সুওয়ালঃকবরস্থানে
হাতউঠিয়ে দোয়া করা জায়িয কিনা? জাওয়াবঃ রদ্দুল মুহতারে
উল্লেখ আছে, “কবর যিয়ারতের আদব হলো
যিয়ারতের পর দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে দোয়া করবে। এর দ্বারা দোয়া করা জায়িয প্রমাণিত হলো আর হাত
উঠানো হচ্ছে দোয়ার আদব, সুতরাং দোয়ায় হাত
উঠানোও জায়িয।” (ইমদাদুল ফতওয়া ১ম জিঃ ৭৩০
পৃষ্ঠা)
[১২৫০]
سوال.
بعد
دفن
میت
کے
چند
قدم
ھٹ
کر
فاتحہ
وغیرہ
پڑ
ھنی
چاھئے
یا
نھیں؟
جواب.
چند
قدم
ھٹنا
اسکی
کچہ
اصل
نھیں
مگر
بعد
دفن
کے
اگر
ایصال
ثواب
کیلئے
گچہ
بخشے
تو
درست
ھے.
(فتاوے
رشیدیہ
ص
228)
অর্থঃ- “সুওয়ালঃ মৃত
ব্যক্তিকে দাফন করার পর কয়েক কদম সরে গিয়ে ফাতেহা ইত্যাদি পাঠ করা যাবে কিনা? জাওয়াবঃ কয়েক কদম
সরে আসার কোন ভিত্তি নেই। তবে ঈছালে ছাওয়াবের জন্যে কিছু বখশিয়ে দেয়া জায়িয।” (ফতওয়া রশীদিয়া ২২৮ পৃষ্ঠা)
[১২৫১-১২৫৩]
سوال.
میت
کو
دفن
کرنے
کے
بعد
قبر
چر
کچہ
دیر
ٹھیڑنا
اور
دعا
کر
نا
ثابت
ھے.
مگر
اس
دعاء میں رفع یدین کی تصریح کھیں نظر سے نھیں گزری. اس وقت دعاء میں رفع یدین ثابت ھے یا نھیں....؟
الجواب.
بمقتضائے قائدہ رفع یدین مستحب ھے. اور دعا بوقت زیارۃ القبور میں ثبوت رفع دین سے
بھی اسکی تائید ھوتی ھے.
.... اسکے بعدحدیث میں رفع یدین کی تصریح مل گئی قال الحافظ رحمہ اللہ تعالی وفی حدیث ابن مسعود رضی
اللہعنہ، رایت رسول اللہ صلی اللہ علیہ وسلم فی
قبر عبد اللہ ذی البجادین الحدیث وفیہ فلما فرغ من دفنہ استقبل القبلۃ رافعا یدیہ. اخرجہ ابوعوانہ فی صحیحہ (فح الباری ج 11 ص 122) اب استحباب رفع یدین میں کوئی
تأمل نھیں رھا. (احسن الفتاوی ج 4 ص 224)
অর্থঃ- “সুওয়ালঃ মৃত
ব্যক্তিকে দাফন করার পর কবরস্থানে কিছুক্ষণ বিলম্ব করা এবং দোয়া করার তো প্রমাণ
রয়েছে।
কিন্তু
উক্ত দোয়ায় হাত উঠানোর কোন প্রমাণ দৃষ্টিগোচর হয়নি। .. কবরস্থানে দোয়া করার সময়
হাত উঠানো প্রমাণিত আছে কিনা? জাওয়াবঃ উছূল মুতাবিক দোয়ায় হাত উঠানো মুস্তাহাব, কবর যিয়ারতের সময় হাত উঠানোর প্রমাণ দ্বারাও এটা মুস্তাহাব
প্রমাণিত হয়। এছাড়াও হাদীস শরীফে উক্ত দোয়ায় হাত উঠানোর প্রমাণ পাওয়া যায়। যেমন, হাফিয ইবনে হাজর আস্কলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, হযরত ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, “আমি দেখেছি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত
আব্দুল্লাহ ........... রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর দাফন কার্য শেষ করে
ক্বিবলামুখী হয়ে এবং উভয় হাত উঠিয়ে (দোয়া করেছেন)। এটা আবূ আওয়ানা তার কিতাবে
বর্ণনা করেছেন,” (ফতহুল বারী ১১তম জিঃ
১২২ পৃষ্ঠা) সুতরাং (দাফনের পর) দোয়ায় হাত উঠানো মুস্তাহাব এ ব্যাপারে কোনই সন্দেহ
নেই।” (আহসানুল ফতওয়া ৪র্থ জিঃ ২২৪ পৃষ্ঠা, অনুরূপ খাইরুল ফতওয়া ৩য় জিঃ ১৫৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে)
[১২৫৪-১২৫৬]
دفن
کے
بعد
ایک
دفعہ
دعا
مانگنا
حدیث
سے
ثابت
ھے.
کما
فی
سنن
ابی
داؤد
کان
النبی
صلی
اللہ
علیہ
وسلم
اذا
فرغ
من
دفن
المیت
وقف
علی
قبرہ
وقال
استففروا لاخیکم واسئلوا اللہ لہ یللتٹبیت
فاتہ الان یسئل. (ردالمحتار، احسن الفتاوی. 127)
অর্থঃ- “দাফনের পরে একবার
(মৃত ব্যক্তির জন্যে) দোয়া করা হাদীস”
শরীফ
দ্বারাই প্রমাণিত। যেমন, “সুনানে আবূ দাউদে উল্লেখ আছে, রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত ব্যক্তিকে
দাফন করে তার কবরের নিকট দাঁড়াতেন এবং বলতেন,
তোমাদের
ভাইয়ের জন্যে ইস্তিগফার বা ক্ষমা প্রার্থনা কর। আর সে যেন দৃঢ় থাকতে পারে
সেজন্যে আল্লাহ্ পাক-এর নিকট দোয়া কর। কেননা,
এখনই
তাকে প্রশ্ন করা হবে।” (রদ্দুল মুহতার, আহ্সানুল ফতওয়া/১২৭) [১২৫৭-১২৬০]
دفنانے
کے
بعد
سر
اھنے
پر
سور
ہ
بقرہ
کی
ابتد
ائی ایتیں اور پائیں کی
طرف سورہ بقرہ کی اخری
ایتیں پڑھکر دیر تک قران شریف وغیرہ پڑھنے اور بارگاہ خداوندی میں نھا یت عاجزی وانکساری کے ساتہ میت کیلےء دعائے مغفرت کرنے کا بھی ثبوت ملتاھے. (مشکوۃ ص 149، کتاب الاذکار امام نووی ص 111، (فتاوے رحیمیہ ص 324، وکذا
فی امداد الفتاوی ج. 1 ص 824)
অর্থঃ- “(মৃত ব্যক্তিকে)
দাফনের পর মাথার নিকটে ‘সূরায়ে বাক্বারার” প্রথম আয়াত শরীফ এবং পায়ের নিকটে সূরায়ে বাক্বারার শেষ আয়াত
শরীফ পাঠ করে বেশী সময় ধরে কুরআন শরীফ ইত্যাদি পাঠ করার এবং আল্লাহ্ পাক-এর নিকট
আযিযী-ইনকেসারীর সাথে মৃত ব্যক্তির জন্যে মাগফিরাতের দোয়া করারও প্রমাণ পাওয়া যায়।” (মিশকাত/১৪৯, কিতাবুল আযকার ইমাম নববী/১১১, ফতওয়ায়ে রহিমীয়া/৩৬৫, অনুরূপ ইমদাদুল
ফতওয়া ১ম জিঃ ৭২৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে)
[১২৬১]
سواال.
میت
کیلئے
دعا
کرنا
کھ
جواب
منکر
ونکیر
میں
ثابت
قدمرھے
اور
تخفیف
کے
لئے
کلمہ
پڑھنا بعد دفن کے جائز ھے یا نہ؟
الجواب:
یہ
جائز
ھے
کلمہ
پڑھتے
رھیں
اور میت کے لئے جواب منکر و نکیر میں ثابت قدم
رھنے کی دعا کر تے رھیں. (فتاوے دارالعلوم دیو
بند. ج 4 ص 393-400)
অর্থঃ- “সুওয়ালঃ- মৃত
ব্যক্তি যেন মুনকির-নকীর এর সুওয়ালের জবাবে দৃঢ় থাকতে পারে এবং সহজে জবাব দিতে
পারে, সে জন্যে দাফনের পর দোয়া করা
ও কালিমা পাঠ করা জায়িয কিনা? জাওয়াবঃ এটা জায়িয। কালিমা শরীফ পাঠ করতে থাকবে এবং মৃত ব্যক্তি যেন
মুনকির-নকীরের সুওয়ালের জাওয়াবে ছাবিত কদম বা দৃঢ় থাকতে পারে সে জন্যে দোয়া করতে
থাকবে।” (ফতওয়ায়ে দারুল উলুম দেওবন্দ ৫ম জিঃ ৩৯৩ পৃষ্ঠা ও ৪০০
পৃষ্ঠা)
[১২৬২]
دفن
کے
بعد
میت
کیلئے
دعائے
مغفرت
کرنی
جائز
ھے.
مگرھاتہ
اٹھا
کر
دعا
کرنی
لازم
نھیں
ھے.
خواہ
ھاتہ
ا
ٹھائے
یا
نہ
اٹھائے
دونوں
جائز
ھیں. ص 38،
ھاں دفن سے فارغ ھونے کے بعد متصل دعائے مغفرت کرنا ایک حدیث شریف میں مذکور ھے. جو سنن ابو داود میں مروی ھے. لھذایہ
جاتز اور مسئحب ھے. ص 53. (کفایت المفتی ج 4 ص 38-53)
0 Comments:
Post a Comment