জানাযা
নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক
বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার কারণ
সুন্নতের
পথিকৃত, হক্বের
অতন্দ্র প্রহরী, দ্বীন
ইসলামের নির্ভীক সৈনিক,
সারা জাহান থেকে কুফরী,
শিরিকী ও বিদ্য়াতের মুলোৎপাটনকারী, বাতিলের আতঙ্ক এবং আহলে সুন্নত ওয়াল
জামায়াতের আক্বীদায় বিশ্বাসী একমাত্র দলীলভিত্তিক মুখপত্র- “মাসিক আল
বাইয়্যিনাত” পত্রিকায়
যত লিখা বা ফতওয়াই প্রকাশ বা পত্রস্থ হয়েছে তার প্রতিটিরই উদ্দেশ্য বা মাকছূদ এক ও
অভিন্ন। অর্থাৎ “মাসিক
আল বাইয়্যিনাতে” এমন
সব লিখাই পত্রস্থ করা হয়,
যা মানুষের আক্বীদা ও আমলসমূহ পরিশুদ্ধ করণে বিশেষ সহায়ক।
তদ্রুপ
“মাসিক
আল বাইয়্যিনাতে” “জানাযা
নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক
বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার উদ্দেশ্য বা মকছূদও ঠিক তাই। কেননা কিছু লোক “ক্বিল্লতে
ইল্ম ও ক্বিল্লতে ফাহ্ম”-
অর্থাৎ কম জ্ঞান ও কম বুঝের কারণে বলে থাকে যে, “জানাযার পর দোয়া করা বিদ্য়াত ও
নাজায়িয।” তাদের উক্ত বক্তব্য একদিক
থেকে যেরূপ ঈমান বা আক্বীদার ক্ষেত্রে ক্ষতির কারণ, অপর দিক থেকে আমলের ক্ষেত্রেও
ক্ষতির কারণ।
প্রথমতঃ
ঈমানের ক্ষেত্রে ক্ষতির কারণ এ জন্য যে, আমাদের আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের
ফতওয়া হলো কোন জায়িয আমলকে নাজায়িয বলা কুফরী। অর্থাৎ ঈমান বিনষ্ট হওয়ার কারণ। অথচ
বান্দার ইবাদত-বন্দেগী বা নেক আমল কবুলযোগ্য হওয়ার জন্যে প্রধানতম শর্ত হচ্ছে-
আক্বীদা শুদ্ধ থাকা অর্থাৎ আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদার ন্যায় আক্বীদা
পোষণ করা। কারণ বিশুদ্ধ আক্বীদা আমল কবুল হওয়ার পূর্ব শর্ত।
দ্বিতীয়তঃ
আমলের ক্ষেত্রে ক্ষতির কারণ এ জন্য যে, তাদের উক্ত অশুদ্ধ বক্তব্যের কারণে
যেরূপ ‘মাইয়্যিত’ জীবিতদের
দোয়া হতে বঞ্চিত হবে তদ্রুপ বঞ্চিত হবে হাদীস শরীফের উপর আমল করা থেকে। কারণ আখিরী
রসূল, হাবীবুল্লাহ্, আশেকে
উম্মত, নূরে
মুজাস্সাম, ফখরে
দু’আলম, রহমতুল্লিল
আলামীন, হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘মাইয়্যিতের’ জন্য অধিক
মাত্রায় এবং ইখলাছের সাথে দোয়া করতে বলেছেন বলে ছহীহ্ হাদীস শরীফে বর্ণিত রয়েছে। শুধু
তাই নয় স্বয়ং আখিরী রসূল,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেরূপ জানাযার নামাযে
মাইয়্যিতের জন্য দোয়া করেছেন অনুরূপ জানাযার বাইরেও মাইয়্যিতের জন্য দোয়া করেছেন।
সুতরাং মাইয়্যিতের জন্য জানাযার নামাযে দোয়া করা যেরূপ সুন্নত, তদ্রুপ
জানাযার বাইরেও সুন্নত। তা জানাযার আগেই হোক বা পরে হোক। সুতরাং বলার অপেক্ষাই
রাখেনা যে, তাদের
বক্তব্যের কারণে সাধারণ লোক একটি সুন্নত পালনের ফযীলত থেকে মাহরূম হবে নিঃসন্দেহে।
মূলকথা
হলো, সকল
মুসলমান যেন “জানাযার
পর দোয়া ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়” সম্পর্কে সঠিক আক্বীদা রাখতে পারে এবং সুন্নত মুতাবিক আমল
করে মহান আল্লাহ্ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সন্তুষ্টি
হাছিল করতে পারে এ মহান উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই বহুল প্রচারিত “মাসিক আল
বাইয়্যিনাতে জানাযার পর দোয়া ও তাঁর প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” দেয়া হলো।
মহান
আল্লাহ্ পাক রব্বুল আলামীন পবিত্র কালামে পাকে ইরশাদ করেন,
كل نفس ذائقة الموت.
অর্থাৎ “প্রত্যেক
প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ বরণ করতে হবে।” (সূরা আলে ইমরান/১৮৫))
কাজেই কোন মুসলমান মৃত্যুবরণ
করার পর জীবিতদের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে যথা শীঘ্র মৃত ব্যক্তির দাফনের
ব্যবস্থা করা এবং দাফন কার্য্যে বিলম্ব না করা। কেননা আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ্
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
اذا مات احدكم فلاتحبسوه واسرعوابه الى قبره.
অর্থঃ- “ তোমাদের
মধ্যে যখন কেউ মৃত্যূ বরণ করে তখন তাকে আবদ্ধ করে রেখে দিওনা বরং যত তাড়াতাড়ি
সম্ভব তাকে দাফন করতে কবরে নিয়ে যাও।” (তাবারানী)
অবশ্য
দাফনের পূর্বে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরী কাজ রয়েছে, যেমন
প্রথমতঃ মাইয়্যিতকে গোসল করানো, দ্বিতীয়তঃ কাফনের কাপড় পরিধান করানো, তৃতীয়তঃ
মাইয়্যিতের উপর জানাযা পড়া।
মূলতঃ
মাইয়্যিতের উপর জানাযা পড়া শুধু ফযীলত লাভেরই কারণ নয় বরং মাইয়্যিতের উপর জানাযা
পড়া স্বয়ং মহান আল্লাহ্ পাক রব্বুল আলামীন-এর নির্দেশ। যেমন তাঁর হাবীব হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে লক্ষ্য করে মহান আল্লাহ্ পাক রব্বুল আলামীন বলেন,
صل عليهم ان صلاتك سكن لهم.
অর্থঃ- “(হে নবী
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনি তাদের (মু’মিনগণের) উদ্দেশ্যে নামাযে জানাযা
পড়ুন। নিশ্চয়ই আপনার নামায তাদের জন্য শান্তির কারণ স্বরূপ।” (সূরা
তাওবা/১০৩)
অত্র
আয়াতে কারীমায় স্বয়ং আল্লাহ্ পাক রব্বুল আলামীন জানাযা নামাযের গুরুত্ব, ফাযায়েল-ফযীলত
বর্ণনা করেছেন। আর তা মু’মিন-মুসলমানগণের
জন্য রহমত, বরকত
ও শান্তির কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। নিম্নে ধারাবাহিকভাবে জানাযা নামায আদায়
করার সুন্নত তরীক্বা সম্পর্কিত আলোচনা পেশ করা হলো-
হানাফী
মাযহাব মুতাবিক জানাযা নামায
আদায় করার
সুন্নত তরীক্বা
জানাযার
নামায যেহেতু ফরযে ক্বিফায়া তাই জানাযা নামাযের নিয়ম-কানুন বা জানাযা নামায পাঠ
করার সুন্নত তরীক্বা অবগত হওয়া সকলের জন্যেই দায়িত্ব-কর্তব্য। জানাযার নিয়ম বর্ণনা
করার পূর্বে এর শর্তাবলী আলোচনা করা দরকার। যেহেতু শর্ত পাওয়া না গেলে জানাযা
নামাযই শুদ্ধ হবেনা। কিতাবে বর্ণিত হয়েছে,
[২২২-২২৫]
الصلاة عليه فرض كفاية واركانها (1) التكبيرات (2) والقيام، وشرائطها سته (1) اسلام الميت (2) وطهارته (3) وتقدمه (4) وحضوره او حضور اكثر بدنه او نصفه مع رأسه (5) وكون المصلى عليها غير ذالك بلاعذر (6) وكون الميت على الارض، فان كان على دابة او على ايدى الناس لم تجزالصلوة على المختار الامن عذر (نور الايضاح ص 129- مراقى الفلاح ص 382، 383، 384- حاشية الطحطاوى على مراقى الفلاح ص 382، 383، 384 البحرالرائق شرح كنز الدقائق ج 2 ص 183)
অর্থঃ- “জানাযা
নামায পড়া ফরয়ে কিফায়াহ। জানাযা নামাযের রুকন হলোঃ তার (১) তাকবীর গুলো (২) এবং
দাঁড়িয়ে নামায পড়া। জানাযা নামাযের শর্ত হলো ছয়টিঃ (১) মাইয়্যিত মুসলমান হওয়া (২)
মাইয়্যিত পবিত্র হওয়া (৩) মাইয়্যিত মুছল্লীর সামনে থাকা (৪) মৃত ব্যক্তির পূর্ণ
লাশ অথবা তার শরীরের অধিকাংশ অথবা অর্ধেক মাথা সহকারে নামাযীদের সামনে বিদ্যমান
থাকা (৫) জানাযা নামায আদায়কারী ব্যক্তি কোন ওযর ছাড়াই আরোহী অবস্থায় না থাকা; (৬)
মাইয়্যিতের লাশ জমীনের উপর থাকা, সুতরাং কোন ওযর ব্যতিরেকে লাশ যদি বাহন বা জন্তুর উপরে থাকে
অথবা মানুষের হাতের উপরে থাকে তবে মুখতার অভিমত মুতাবিক জানাযা নামায জায়িয হবেনা।” (নূরুল্ ঈযাহ্ ১২৯ পৃষ্ঠা, মারাকিউল্ ফালাহ শরহে নুরুল ঈযাহ্
৩৮২, ৩৮৩
ও ৩৮৪ পৃষ্ঠা, হাশিয়াতুত্
ত্বহত্বাবী আলা মারাকিইল ফালাহ্ ৩৮২, ৩৮৩ ও ৩৮৪ পৃষ্ঠা, আল্
বাহর্রু রাইক শরহে কানযুদ্ দাক্বাইক ২য় জিঃ ১৮৩ পৃষ্ঠা)
উল্লিখিত
শর্তগুলো মাইয়্যিত অথবা মুছল্লীর মধ্যে উপস্থিত থাকলে সেই মাইয়্যিতের উপর জীবিত
ব্যক্তির জন্য নামাযে জানাযা পড়া ফরযে কিফায়াহ হয়ে যায়। আর এই নামায পড়ার সুন্নত
ত্বরীকা (নিয়ম) হচ্ছে নিম্নরূপ।
প্রথমতঃ
জানাযা নামাযের নিয়ত করতে হবে,
দ্বিতীয়তঃ
প্রথম তাকবীর বলে তাহ্রীমা বেঁধে ছানা পড়বে,
তৃতীয়তঃ
দ্বিতীয় তাকবীর বলে দরুদ শরীফ পড়বে,
চতুর্থতঃ
তৃতীয় তাকবীর বলে মাইয়্যিতের জন্য দোয়া পাঠ করবে,
পঞ্চমতঃ
চতুর্থ তাকবীর বলে সালাম ফিরাবে
ষষ্ঠতঃ
শুধু প্রথম তাকবীরে হাত উঠাবে, যেমন এ প্রসঙ্গে ফিক্বাহের কিতাবে বর্ণিত আছে,
[২২৬-২৬০]
وهى اربع تكبيرات بثناء بعد الاولى والصلاة على النبى صلى الله عليه وسلم بعد الثانية ودعاء بعد الثالث وتسليمتين بعد الرابعة فلو كبر الامام خمسا لم يتبع ولا يستغفر لصبى ولا لمجنون ويقول اللهم اجعله لنا فرطا واجعله لنا اجرا وذخرا واجعله لنا شافعا ومشفعا- (كنز الدقائق ج 2 ص 183، 184، البحر الرائق شرح كنز الدقائق ج 2 ص 183-184 منحة الخالق ج 2 ص 183-184 – احسن المسائل اردور ترجمه كنز الدقائق ص 60- كشف الحقائق شرح اردو كنز الدقائق ج 1 ص 338- المختصر القدورى ص 41- الجوهرة النيرة شرح مختصر القدورى ج 1 ص 137- 138- اميدانى شرح قدورى ج ا ص 137- 138، المصباح النورى شرح مختصر القدورى ص 56، التسهيل الضرورى لمسائل القدورى ج1 ص 108، الهداية مع الدراية ج1 ص 180- اشرف الهداية شرح اردو هذايه ج 2 ص 425-426 عين الهداية اردو شرج هذايه ج 2 ص 425-426 عين الهداية اردو شرح هذايه ج ا ص 900 نور الدراية من عين الهدايه ج 1 ص؟ 2- 25 فتح القدير ج 2 ص 85-86- الكفاية شرح الهداية ج 2 ص 85-86-87- شرح العناية شرح الهداية ج 2 ص 85-86- نور الايضاح ص 129-130- مراقى الفلاج شرح نور الايضاح ص 284-385-386- حاشية الطحطاوى على مراقى الفلاح ص 384-385- تنوير الابصار- الدر المختار ج 2 ص 212، 213-214- ردالمحتار- شامى ج 2 ص – 212-213- حاشية الطحطاوى على الدر المختار ج 1 ص 373-374- عاية الاوطار ج 1 ص 410-411- مالابد منه ص 93-94 انوار محموده ص 75- شرح وقاية ج 1 ص 181-182- شرح وقاية بحاشية الندوى ج 1 ص 181-182- شرح النقاية شرح مختصر البقاية ج ا ص 316-317- شرح للمولوى اياس ج 1 ص 316-317- الفتاوى العالمكيرية ج 1 ص 164- الفتاوى التاتاخانية ج 2 ص 154. 155- هادية المصلين)
অর্থঃ- “(জানাযা
নামযের নিয়ম-) এটা চার তাকবীরে পড়তে হয়। প্রথম তাকবীরের পর ছানা, দ্বিতীয়
তাকবীরের পর হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালরাম-এর উপর দরুদ শরীফ, তৃতীয়
তাকবীরের পর দোয়া পড়তে হয় এবং চতুর্থ তাকবীরের পরেই ডানে বামে সালাম ফিরাতে হয়।
যদি ইমাম সাহেব পঞ্চম তাকবীর দেন, তখন তার অনুস্মরণ করা যাবেনা। শিশু এবং পাগল ব্যক্তির জন্য
ইস্তিগফারের দোয়া পড়বে না। বরং পড়বে,
اللهم اجعله لنا قرطا واجعله لنا اجرا وذخرا واجعله لنا شافعا ومشقعا.
অর্থঃ- “আয় আল্লাহ্
পাক! তাকে আমাদের জন্য অগ্রগামী, পুরস্কার ও সম্বল হিসেবে গ্রহণ করুন। তাকে আমাদের জন্য
সুপারিশকারী ও সুপারিশ গৃহীতদের মধ্যে শামিল করুন।”
(কানযুদ দাক্বাইক ২য় জিঃ ১৮৩, ১৮৪ পৃষ্ঠা, আল্
বাহর্রু রাইক শরহে কানযুদ্ দাক্বাইক ২য় জিঃ ১৮৩, ১৮৪ পৃষ্ঠা, মানহাতুল
খালিক আলাল বাহরির রাইক ২য় জিঃ ১৮৩, ১৮৪ পৃষ্ঠা, আহসানুল
মাসাইল্ ঊর্দূ তরজমা কানযুদ দাক্বাইক্ব ৬০ পৃষ্ঠা, কাশফুল্ হাক্বাইক্ব শরহে উর্দূ
কানযুদ্ দাক্বাইক্ব ১ম জিঃ ৩৩৮, ১৩৮ পৃষ্ঠা, আল্ মুখতাছারুল কুদূরী ৪১ পৃষ্ঠা, আল্
জাউহারাতুন্ নিয়্যারাহ শরহে মুখতাছারুল্ কুদূরী ১ম জিঃ ১৩৭ পৃষ্ঠা, আল্
মাইদানী শরহে কুদূরী ১ম জিঃ১৩৭, ১৩৮ পৃষ্ঠা, আল্ মিছবাহুন্ নূরী শরহে
মুখতাছারুল্ কুদূরী ৫২ পৃষ্ঠা, আত্ তাসহীলুদ্ দ্বারুরী লিমাসাইলিল্ কুদূরী ১ম জিঃ১০৮
পৃষ্ঠা, আল্
হিদায়াহ মায়াদ্ দিরায়াহ ১ম জিঃ ১৮০ পৃষ্ঠা, আল্ বিনায়াহ ফী শরহিল্ হিদায়াহ ৩য়
জিঃ ২৫১, ২৫২, ২৫৩ পৃষ্ঠা, আশরাফুল
হিদায়াহ শরহে উর্দূ হিদায়াহ ২য় জিঃ ৪২৫, ৪২৬ পৃষ্ঠা, আইনুল্
হিদায়াহ উর্দূ শরহে হিদায়াহ ১ম জিঃ ৯০০ পৃষ্টা, নূরুদ্ দিরায়াহ মিন আইনিল হিদায়াহ
১ম জিঃ ২৪, ২৫
পৃষ্ঠা, ফতহুল
ক্বদীর ২য় জিঃ ৮৫, ৮৬
পৃষ্ঠা, আল্
কিফায়াহ শরহুল হিদায়াহ ২য় জিঃ ৮৫, ৮৬,
৮৭ পৃষ্টা, শরহুল
ইনায়াহ শরহে হিদায়াহ ২য় জিঃ ৮৫ পৃষ্ঠা, নূরুল্ ঈযাহ ১২৯ , ১৩০ পৃষ্ঠা, মারাকিউল্
ফালাহ্ শরহে নুরুল ঈযাহ্ ৩৮৪, ৩৮৫,
৩৮৬ পৃষ্ঠা,হাশিয়াতুত্
ত্বহত্বাবী আলা মারাকিইল ফালাহ ৩৮৪, ৩৮৫, ৩৮৬ পৃষ্ঠা, তানবীরুল্
আবছার, আদ্
দুররুল মুখতার ২য় জিঃ ২১২,
২১৩, ২১৪
পৃষ্ঠা, রদ্দুল
মুহতার, শামী
২য় জিঃ ২১২, ২১৩
পৃষ্ঠা, হাশিয়াতুত্
ত্বহত্বাবী আলাদ্ দুররিল্ মুখতার ১ম জিঃ ৩৭৩, ৩৭৪ পৃষ্ঠা, গাইয়াতুল্
আউত্বার ১ম জিঃ ৪১০,
৪১১ পৃষ্ঠা, মালা
বুদ্দা মিনহু ৯৩, ৯৪
পৃষ্ঠা, আনওয়ারে
মাহমূদাহ্ ৭৫ পৃষ্ঠা,
শরহু বিকায়াহ ১ম জিঃ ১৮১, ১৮২ পৃষ্ঠা, শরহু বিকায়াহ বিহাশিয়াতিন্ নদবী ১ম
জিঃ ১৮১, ১৮২
পৃষ্ঠা, শরহুন্
নিকায়াহ শরহে মুখতাছারুল্ বিকায়াহ ১ম জিঃ ৩১৬, ৩১৭ পৃষ্ঠা, শরহে মাউলুবী
ইলইয়াস্ ১ম জিঃ ৩১৬,
৩১৭ পৃষ্ঠা, আল্
ফাতাওয়াল আলমগীরিয়াহ ১ম জিঃ ১৬৪ পৃষ্ঠা, আল্ ফাতাওয়াত্ তাতারখানিয়াহ ২য় জিঃ
১৫৪, ১৫৫
পৃষ্ঠা, হাদিয়াতুল্
মুছাল্লীন)
উল্লিখিত
ইবারতে সংক্ষিপ্তভাবে জানাযা নামাযের নিয়ম বর্ণনা করা হয়েছে। নিম্নে এর প্রত্যেকটি
বিষয়ের উপর বিশ্ববিখ্যাত ফিক্বাহের কিতাবের উদ্ধৃতিসহ বিশদ আলোচনা করা হলো-
প্রথমতঃ
জানাযা নামাযের
নিয়ত করতে
হবে
[২৬১-২৭০]
হাদীস
শরীফে এসেছে,
انما الاعمال بالنيات.
অর্থঃ- “ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, প্রত্যেকটি আমল (কাজ) নিয়তের উপর
নির্ভরশীল”। (বুখারী শরীফ, ফতহুল বারী, উমদাতুল
কারী, ইরশাদুস্
সারী, মিশকাত
শরীফ, মিরকাত, আশয়াতুল
লুময়াত, শরহুত
ত্বীবী, আত্
তা’লীকুছ
ছবী, মুযাহিরে
হক্ব)
তাই, জানাযা
নামায পড়ার সময় প্রথমে নিয়ত করে নিবে। নিয়ত নিজভাষায় মনে মনে করা ফরয। আর আরবীতে
নিয়ত করা মুস্তাহাসান বা মুস্তাহাব সুন্নত। যেহেতু, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম আরবী ভাষী ছিলেন।
আরবীতে
জানাযা নামাযের নিয়ত (মুক্তাদীদের জন্য)ঃ
[২৭১]
نويت ان اؤدى لله تعالى اربع تكبيرات صلوة الجنازة فرض الكفاية الثناء الله تعالى والصلاة على النبى صلى الله عليه وسلم والدعاء لهذا الميت اقتديت بهذا الامام متوجها الى جهة الكعبة الشريقة الله اكبر.
ইমাম ছাহেব اقتديت بهذا الامام- এর স্থানে
বলবে
انا امام لمن حضر ومن يحضر.
মাইয়্যিত যদি মহিলা বা
অপ্রাপ্ত বয়স্কা মেয়ে হয় তবে لهذا এর স্থানে لهذه পড়তে হবে।
বাংলায় নিয়তঃ আমি জানাযার
চার রাকায়াত ফরযে কিফায়াহ নামায কিবলামুখী হয়ে চার তাকবীরের সাথে এই ইমামের পিছনে
আদায় করছি আল্লাহু আকবার।
দ্বিতীয়তঃ
প্রথম তাকবীর বলে
তাহরীমা
বেঁধে ছানা পড়বে
মনে রাখতে হবে প্রথম তাকবীর বলে তাহরীমা বেঁধে
ছানা পড়তে হবে এবং ছানা-এর মধ্যে وتعالى جدكএর
পর وجل ثنائك যোগ করতে হবে। যা নিম্নবর্ণিত ইবারতে বর্ণিত হয়েছে। তবে
সূরা ফাতিহা পাঠ করা যাবে না।
আর “হাদিয়াতুল মুছাল্লীন” কিতাবে
উল্লেখ আছে শুধু ইমাম ছাহেব জানাযার তাকবীর সমূহ উচ্চ আওয়াজে বলবে, আর
মুক্তাদীগণ চুপে চুপে বলবে। এটাই আমাদের হানাফী মাযহাবের বিশুদ্ধ মত।
[২৭২-২৮২]
(قوله والصلاة ان يكبر تكبيرة يحمد الله عقيبها) عن ابى حنيفة يقول سبحانك الله وبحمدك الى اخره قالوا لايقرأ الفاتحة الا ان يقرأها بنية الثناء ولم تثبت القرأة عن رسول الله صلى الله عليه وسلم وفى موطا مالك عن مالك عن نافع أن ابن عمر كان لايقرأ فى الصلاة على الجنازة- (فتح القدير ج 2 ص 85- الكفاية ج 2 ص 85- العناية ج 2 ص 85- الكفاية ج 2 ص 85- العناية ج 2 ص 85 الجوهرة النيرة ج 1 ص 137- شرح مختصر القدورى بها شية الميدانى ج 1 ص 137- حاشية الهداية مع الدراية ج 1 ص 180- البناية فى شرح الهداية ج 3 ص 252- اشرف الهداية ج 2 ص 426- عين الهداية ج 1 ص 900- نور الدراية ج 1 ص 27- مراقى الفلاح شرح نور الايضاح ص 385)
অর্থঃ- “(জানাযা
নামায এভাবে পড়বে যে,
প্রথম এক তাকবীর বলে আল্লাহ্ তায়ালার হামদ বা প্রশংসা করবে) হযরত আবূ হানীফা
রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণিত। তিনি سبحانك اللهم وبحمدك এর শেষ পর্যন্ত পড়তেন অর্থাৎ তিনি পড়তেন
سبحانك اللهم وبحمدك وتبارك اسمك وتعالى جدك وحل ثنائك ولا اله غيرك.
তাঁরা (হানাফীগণ) বলেন, সূরা
ফাতিহা পড়বে না, তবে
ছানা-এর নিয়তে পড়া যাবে। হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে
ক্বিরয়াত পড়া ছাবিত (প্রমাণ) নাই। ‘মুয়াত্তা ইমাম মালিক’ রহমতুল্লাহি
আলাইহি’ এর
মধ্যে আছে, হযরত
ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত ইমাম না’ফি রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণনা
করেন যে, নিশ্চয়ই
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু জানাযা নামাযে ক্বিরয়াত পড়তেন
না।” (ফতহুল
ক্বদীর ২য় জিঃ ৮৫ পৃষ্ঠা,
আল কিফায়াহ ২য় জিঃ ৮৫ পৃষ্ঠা, আল ইনায়াহ ২য় জিঃ ৮৫ পৃষ্ঠা, আল্ জাউহারাতুন্ নিয়্যারাহ ১ম জিঃ
১৩৭ পৃষ্ঠা, শরহে
মুখতাছারুল্ কুদূরী বিহাশিয়াতিল্ মাইদানী ১ম জিঃ ১৩৭ পৃষ্ঠা, হাশিয়ায়ে
হিদায়াহ মায়াদ্ দিরায়াহ ১ম জিঃ ১৮০ পৃষ্ঠা, আল্ বিনায়াহ ফী শরহিল্ হিদায়াহ ৩য়
জিঃ ২৫২ পৃষ্ঠা, আশরাফুল
হিদায়াহ ২য় জিঃ ৪২৬ পৃষ্ঠা,
আইনুল্ হিদায়াহ ১ম জিঃ ৯০০ পৃষ্ঠা, নুরুদ্ দিরায়াহ্ ১ম জিঃ ২৭ পৃষ্ঠা, মারাকিউল
ফালাহ শরহে নূরুল্ ইযাহ্ ৩৮৫ পৃষ্ঠা)
[২৮৩-২৯৯]
(وهى ان يكبر الله ويثنى) بان يحمد الله مطلقا وهو ظاهر الرواية وقيل بان يقول سبحانك اللهم وبحمدك الخ ولا يقرأ الفاتح فيها خلافا للشافعى ......... ولنا قول ابن مسعود لم يوقت النبى صلى الله عليه وسلم شيأ من القران فى صلوة الجنازة- (شرح النقاية ج 1 ص 316- شرح للمولوى الياس فى شرح الوقاية ج 1 ص 316- نور الهداية- الدر المختار- ردالمحتار- شامى ج 2 ص 212- حاشية الطحطاوى على الدر المختار ج 1 ص 373- غاية الاوطار ج 1 ص 410- الفتاوى التاتار خانية ج 2 ص 155)
অর্থঃ- “(নিয়ত করে’ আল্লাহ্
পাক-এর তাকবীর বলে ‘তাহরীমা
বেঁধে’ ছানা
পড়বে) সাধারণতঃ আল্লাহ্ পাক-এর হামদ বা প্রশংসা করবে। আর এটাই যাহিরে রিওয়ায়িত।
কেউ কেউ বলেন,
سبحانك اللهم وبحمدك وتبارك اسمك وتعاى جدك وجل ثنائك ولااله غيرك.
এই ছানা পড়বে। তার মধ্যে
সূরা ফাতিহা পড়বে না। ইমাম শাফিঈ রহমতুল্লাহি আলাইহি এর খিলাফ (বিপরীত মত পোষণ)
করেছেন। ........ আমাদের হানাফীগণের দলীল; হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর বর্ণনা; হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম জানাযা নামাযে কোন সময়ই কুরআন শরীফ থেকে কিছু পাঠ করেননি। (শরহুন্
নিকায়াহ ১ম জিঃ ৩১৬ পৃষ্ঠা,
শরহু লিমাউলুবী ইলইয়াস্ ফী শরহিল্ বিকায়াহ ১ম জিঃ ৩১৬ পৃষ্ঠা, নূরুল
হিদায়াহ্, আদ্
দুররুল্ মুখতার, রদ্দুল্
মুহতার, শামী
২য় জিঃ ২১২ পৃষ্ঠা,
হাশিয়াতুত্ ত্বহত্বাবী আলাদ্ দুরুরিল্ মুখতার ১ম জিঃ ৩৭৩ পৃষ্ঠা, গাইয়াতুল্
আউতার ১ম জিঃ ৪১০ পৃষ্ঠা,
আল্ ফাতাওয়াত্ তাতারখানিয়াহ ২য় জিঃ ১৫৫ পৃষ্ঠা)
[২৯২-২৯৩]
(قوله وهو سبحانك اللهم وبحمدك الخ) قال فى سكب الانهر والاولى ترك وجل ثناتك الافى صلاة الجنازة- (حاشية الطحطاوى على مراقى الفلاح ص 385 سكب الانهر)
অর্থঃ- “(سبحانك اللهم وبحمدك এটি ছানা) ‘সাকবুল আনহুর’ কিতাবের লিখক বলেন, শুধু
জানাযা নামায ছাড়া অন্যান্য সকল নামাযে (ছানা পড়ার মধ্যে) وجل تنائك তরক করা উত্তম, মুস্তাহাব। অর্থাৎ জানাযা নামাযে ছানা পড়ার সময় وتعالى جدك এর পর وجل ثنائك পাঠ করা মুস্তাহাব বা উত্তম।” (হাশিয়াতুত্ ত্বহত্বাবী আলা মারাকিইল
ফালাহ্ ৩৮৫ পৃষ্ঠা,
সাকবুল্ আনহুর)
[২৯৪-২৯৭]
فيكبر للا فتتاح ويقول سبحانك اللهم الخ (الفتاوى العالمكيرية ج 1 ص 164، شرح الجامع الصغير- قاضى خان- التسهيل الضرورى لمسائل القدورى ج 1 ص 108)
অথ:- প্রথম
তাকবীর বলবৈ অত:পর
পাঠ করবে-
سبحانك اللهم وبحمدك وتبارك اسمك وتعالى جدك وجل ثنائك ولا اله غيرك.
(আল্
ফাতাওয়াল আলমগীরিয়াহ্ ১ম জিঃ ১৬৪ পৃষ্ঠা, শরহে জামিউছ্ ছগীর, কাযীখান, আত্তাসহীলুদ
দ্বারুরী লিমাসাইলিল্ কুদূরী ১ম জিঃ ১০৮ পৃষ্ঠা)
তৃতীয়তঃ
দ্বিতীয় তাকবীর বলে
দরুদ শরীফ
পড়বে
অন্যান্য
নামাযের মধ্যে শেষ বৈঠকে তাশাহহুদ এর পরে যে দরুদ শরীফ তথা দরুদে ইবরাহীম আলাইহিস্
সালাম পড়া হয়, সেই
দরুদ শরীফ পড়তে হবে। কেননা,
এই দরুদ শরীফ পড়াই মুস্তাহাব, সুন্নত। অথবা যে কোন দরুদ শরীফ পড়লেও চলবে।
নিম্নে
এ সম্পর্কিত বিশ্ববিখ্যাত ফিক্বাহের কিতাবসমূহের দলীল পেশ করা হলো¬-
[২৯৮]
(الصلاة على النبى صلى الله عليه وسلم بعد) التكبيرة (الثانية) اللهم صل على محمد وعلى ال محمد الى اخره. (مراقى الفلاح شرح نور الايضاح ص 385-386)
অর্থঃ- “(হযরত নবী
করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উপর দরূদ শরীফ পড়তে হবে) দ্বিতীয় তাকবীরের
পর পড়তে হবে-
اللهم صلى على سيدنا محمد وعلى ال سيدنا محمد كما صليت على سيدنا ابراهيم وعلى ا سيدنا ابراهيم انك حميد مجيد- الهم بارك عى سيدنا محمد وعلى ال سيدنا محمد كما باركت على سيدنا ابراهيم وعلى ال سيدنا ابراهيم انك حميد مجيد-
(মারাকিউল্
ফালাহ্ শরহে নূরুল ঈযাহ্ ৩৮৫, ৩৮৬ পৃষ্ঠা)
[২৯৯]
قوله اللهم صلى على محمد الخ يعنى صلاة التشهد وهو اولى (حاشية الطحطاوى على مراقى الفلاح ص 385-386)
অর্থঃ- “(মারাকিউল
ফালাহ্ গ্রন্থকারের উক্তিঃ
اللهم صلى على سيدنا محمد وعلى ال سيدنا محمد كما صليت على سيدنا ابراهيم وعلى ال سيدنا ابراهيم انك حميد مجيد- اللهم بارك على سيدنا محمد وعلى وعلى ال سيدنا محمد كما باركت على سيدنا ابراهيم وعلى ال سيدنا ابراهيم انك حميد مجيد.
এই দরুদ শরীফ পড়া) অর্থাৎ
তাশাহ্হুদ-এর দরুদ শরীফ। আর এটাই পড়া মুস্তাহাব বা আওলা।” (হাশিয়াতুত্
ত্বহত্বাবী আলা মারাকিইল্ ফালাহ্ ৩৮৫, ৩৮৬ পৃষ্ঠা)
[৩০০-৩০৩]
) قوله ثم يكبر تكبيرة) ثانية (ويصلى على النبى صلى الله عليه وسلم) لان الثناء على الله تعالى يليه الصلاة على النبى صلى الله عليه وسلم كما فى الخطب والتشهد فيقول اللهم صلى على سيدنا محمد وعلى ال محمد كما صليت على ابراهيم وعلى ال ابراهيم انك حميد مجيد، قال عليه السلام "الاعمال خوقوفة والدعوات محبوسة حتى يصلى على اولا واخرا –(الجوهرة النيرة شرح مختصر القدورى ج 1 ص 137- عين الهداية ج 1 ص 900- نورالدرايه ج 1 ص 27- حاشية الطحطاوى على الدرالمختار ج 1 ص 373)
অর্থঃ- (“অতপর
দ্বিতীয় তাকবীর দিবে এবং হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উপর
দরুদ শরীফ পড়বে) কেননা,
নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তায়ালা’র ছানা (প্রশংসা) হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি দরুদ শরীফ পড়া
নিকটবর্তী (লাযিম) করে। যেমন খুত্ববা ও তাশাহ্হুদ-এর মধ্যে করে থাকে। সুতরাং পড়বে
اللهم صلى على سيدنا محمد وعلى ال سيدنا محمد كما صليت على سيدنا ابراهيم وعلى ال سيدنا ابراهيم انك حميد مجيد.
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
الاعمال موقوفة والدعوات محبوسة حتى يصلى على اولا واخرا.
অর্থঃ- “ বান্দাহর
আমল সমূহ স্থির থাকে এবং দোয়া সমূহ বন্দী হয়ে থাকে যতক্ষন পর্যন্ত আমার প্রতি
দোয়ার প্রথমে ও শেষে দরুদ শরীফ পড়া না হয়।” (আল জাউহারাতুন্ নিয়্যারাহ শরহে
মুখতাছারুল্ কুদূরী ১ম জিঃ ১৩৭ পৃষ্ঠা, আইনুল হিদায়াহ ১ম জিঃ ৯০০ পৃষ্ঠা, নূরুদ্
দিরায়াহ ১ম জিঃ ২৭ পৃষ্ঠা,
হাশিয়াতুত্ ত্বহত্বাবী আলাদ্ দুররিল মুখতার ১ম জিঃ ৩৭৩ পৃষ্ঠা)
[৩০৪]
(ثم يكبر تكبيرة) ثانية (ويصلى على النبى عليه اسلام) الصلاة المعروفة فى التشهد. وقيل يقول فى الثانية اللهم صلى على محمده النبى الامى البشير النذير عبدك ورسولك، سيد الانبياء والمر سين وخير الخلائق اجمعين، وعلى ال محمد كما صليت على ابراهيم وعلى ال ابراهيم انك حميد مجيد. اللهم اجعل نواحى صلاتك وفواصل تركاتك وتحيتك ورحمتك ورأفتك على عبدك ونبيك النبى الامى وصلم تسليما كثيرا. (البناية فى شرح الهداية ج 3 ص 252)
অর্থঃ- “(অতপর
তাকবীর বলবে) দ্বিতীয় তাকবীর (এবং হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম-এর উপর দরুদ শরীফ পড়বে) পরিচিত দরূদ শরীফ যা তাশাহুদ-এর মধ্যে পড়া হয়। কেউ
কেউ বলেন, দ্বিতীয়
তাকবীরের পর পড়বে-
اللهم صلى على سيدنا محمد؟ النبى الامى البشير النذير عبدك ورسولك سيد الانبياء والمرسلين وخير اخلائق اجمعين، وعلى ال سيدنا محمد كما صليت على سيدنا ابراهيم وعلى ال سيدنا ابراهيم انك مميد مجيد- الهم اجعل نواحى صلاتك وفواصل بركاتك وتحيتك ورحمتك ورأفتك على عيدك ونبيك النبى الامى وسلم تسليما كثيرا.
(আল বিনায়াহ ফী শরহিল হিদায়াহ
৩য় জিঃ ২৫২ পৃষ্ঠা,
[৩০৫-৩১৬]
ويصلى بعد التكبيرة الثانية كما يصلى فى التشهد وهو الاولى (فتح القدير ج 2 ص 85- عناية ج 2 ص 89، قدورى بحاشية الميد انى ج 1 ص 137- اشرف الهداية ج 2 ص 467- البحر الرائق شرح كنز الدقائق ج 2 ص 183- الدر المختار ج 2 ص 212- رد المحتار- شافى ج 2 ص 212- حاشية الطحطاوى على الدر المختار ج 1 ص 373- غاية الاوطار ج 1 ص 410- شرح للمو لوى الياس بشر ج الوقاية ج 1 ص 316)
অর্থঃ- “দ্বিতীয়
তাকবীরের পর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উপর দরূদ শরীফ পড়বে।
যেমন, তাশাহহুদ্
এর পরে পড়া হয়। আর এটা পড়াই আওলা বা মুস্তাহাব। (ফতহুল্ ক্বদীর ২য় জিঃ ৮৫ পৃষ্ঠা, কিফায়াহ ২য়
জিঃ ৮৫ পৃষ্ঠা, ইনায়াহ
২য় জিঃ ৮৫ পৃষ্ঠা, কুদূরী
বিহাশিয়াতিল্ মাইদানী ১ম জিঃ ১৩৭ পৃষ্ঠা, আশরাফুল হিদায়াহ ২য় জিঃ ৪২৭ পৃষ্ঠা, আল্
বাহর্রু রাইক্ব শরহে কানযুদ দাক্বাইক ২য় জিঃ ১৮৩ পৃষ্ঠা, আদ্
দুররুল্ মুখতার ২য় জিঃ ২১২ পৃষ্টা, রদ্দুল্ মুহতার, শামী ২য়
জিঃ ২১২ পৃষ্ঠা, হাশিয়াতুত্
ত্বহত্বাবী আলাদ্ দুররিল মুখতার ১ম জিঃ ৩৭৩ পৃষ্ঠা, গাইয়াতুল্ আউতার ১ম জিঃ ৪১০ পৃষ্ঠা, শরহু লিল
মাউলূবী ইলইয়াস বিশরহিল্ বিকায়াহ ১ম জিঃ ৩১৬ পৃষ্ঠা,
চতুর্থতঃ
তৃতীয় তাকবীর বলে
মাইয়্যিতের
জন্য দোয়া করবে
তৃতীয়
তাকবীর বলে, সকলেই
মাইয়্যিতের জন্য দোয়ায়ে মা’ছূর
পাঠ করবে। দোয়ায়ে মা’ছূর
কুরআন শরীফ ও হাদীস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত নির্দিষ্ট দোয়াকে বলে। নিম্নে এসম্পর্কিত
দলীল আদিল্লা সমূহ নির্ভরযোগ্য সর্বজনমান্য ফিক্বাহের কিতাব থেকে উপস্থাপন করা
হলো-
[৩১৭-৩৪২]
(قوله ثم يكبر تكبيرة) ثالثة (يدعو فيها لنفسه وللميت وللمسلمين) ......... وقد روى ان انبى صلى الله عليه وسلم كان يقول اللهم اغفر لحينا وميتنا وشاهدنا وغائبنا وصغيرنا وكبيرنا وذكرنا وانثانا اللهم من احييته منا فاحيه عى الاسلام ومن توفيته منا فتوفه على الايمان، ....... هذا اذا كان بالغا عاقلا اما اذا كان صغيرا او مجنونا فليقل اللهم اجعله لنا فرطا واجعله لنا ذخرا واجعله لنا شافعا مشفعا- (الجوهرة النيرة شرح مختصر القدورى ج 1 ص 137- 138، التسهيل الضرورى لمسائل القدورى ج 1 ص 108-109، البناية فى شرح الهداية ج 3 ص 252، عين الهداية ج 1 ص 900، اشرف الهداية ج 2 ص 427، نور الدراية ج 1 ص 27- 28 شرح النقاية ج 1 ص 316-317، شرح للمولوى الياس بشر ح الوقاية ج 1 ص 316، نور الهداية ص 144، حاشية الندوى ج 1 ص 182، قاض خان، مسند احمد بن حنبل، ابو داؤد شريف- بذل المجهود- عون المعبود، شرح ابن داؤد لبدر الدين العينى، ترمذى شريف، تحفة الاحوذى، عارضة الاحوذى، معارف السنن، ابن ماجه شريف، نسائى شريف، ينن الكبرى للنسائى، حاشية للسيوطى- الفتاوى العالمكيرية ج1 ص 164، الفتاوى التاتار خانية ج 2 ص 155)
অর্থঃ- “(কুদূরী
গ্রন্থকার বলেনঃ অতপর একটি তাকবীর দিবে) তৃতীয় তাকবীর (তারপর নিজের জন্য, মাইয়্যিতের
জন্য এবং সমস্ত মুসলমানগণের জন্য দোয়া করবে) ........... হাদীস শরীফে বর্ণিত রয়েছে
“নিশ্চয়ই
নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দোয়া পড়তেন-
اللهم اغفر لحينا وميتنا وشهدنا وغائبناو صغيرنا وكبيرنا وذكرنا وانثانا اللهم من احيته منا فاحيه على الاسلام ومن توفيته منا فتوفه على الايمان.
এই দোয়া তখনই পড়তে হবে, যখন
মাইয়্যিত প্রাপ্তবয়স্ক-বয়স্কা, জ্ঞানসম্পন্ন হবে। কিন্তু যদি মাইয়্যিত অপ্রাপ্ত
বয়স্ক-বয়স্কা অথবা পাগল হয়,
তবে এই দোয়া পড়বে-
اللهم اجعله لنا فرطا واجعله لنا اجراو ذخرا واجعله لنا شاقعا مشفعا.
(মাইয়্যিত
যদি অপ্রাপ্ত বয়স্কা বা পাগলিনী হয় তবে اجعله এর স্থানগুলোতে اجعلها এবং شافعا و مشغعاএর شافعة ومشفعة পড়তে হবে)
(আল
জাউহারাতুন্ নিয়্যারাহ শরহে মুখতাছারুল কুদূরী ১ম জিঃ ১৩৭, ১৩৮ পৃষ্ঠা, আত্
তাসহীলুদ্ দ্বারুরী লি মাসাইলিল্ কুদূরী ১ম জিঃ ১০৮, ১০৯ পৃষ্ঠা, আল্
বিনায়াহ ফী শরহিল্ হিদায়াহ ৩য় জিঃ ২৫২ পৃষ্ঠা, আইনুল্ হিদায়াহ ১ম জিঃ ৯০০ পৃষ্ঠা, আশরাফুল
হিদায়াহ ২য় জিঃ ৪২৭ পৃষ্ঠা,
নূরুদ্ দিরায়াহ ১ম জিঃ ২৭, ২৮ পৃষ্ঠা, শরহুন্ নিকায়াহ ১ম জিঃ ৩১৬, ৩১৭ পৃষ্ঠা, শরহু লিল
মাউলুবী ইলইয়াস বি শরহিল্ বিকায়াহ ১ম জিঃ ৩১৬ পৃষ্ঠা, নূরুল্
হিদায়াহ ১৪৪ পৃষ্ঠা,
হাশিয়াতুন্ নদবী ১ম জিঃ ১৮২ পৃষ্ঠা, ফতওয়ায়ে কাযীখান, মুসনাদু
আহমদ ইবনে হাম্বাল,
আবূ দাউদ শরীফ,
বযলুল্ মাজহুদ্,
আউনুল মা’বূদ, শরহু আবী
দাউদ লিবদরিদ্দীন আইনী,
তিরমিযী শরীফ, তুহফাতুল
আহওয়াযী, আরিদ্বাতুল্
আহওয়াযী, মায়ারিফুস্
সুনান, ইবনু
মাজাহ শরীফ, নাসায়ী
শরীফ, সুনানুল
কুবরা লিন্ নাসায়ী,
হাশিয়াতু লিস্ সুয়ূত্বী, আল্ ফাতাওয়াল্ আলমগীরিয়াহ ১ম জিঃ ১৬৪ পৃষ্ঠা, আল্
ফাতাওয়াত্ তাতারখানিয়াহ ২য় জিঃ ১৫৫ পৃষ্ঠা)
[৩৪৩-৩৫৯]
ويدعو فى الثالثة للميت ولنفسه ولا بويه ولمسلمين ولاتوقيت فى الدعاء ...... وان دعابا لمأثور فما احسنه وابلغه ومن المأثور حديث ....... وفى حديث ابراهيم الاشهل عن ابيه قال كان رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا صلى على الجنازة قال اللهم اغفر لحينا وميتنا وشاهدنا وغائبنا وصغيرنا وكبيرنا وذكرنا وانثانا رواه الترمذى والنسائى ورواه ابو سلمة بن عبد الرحمن عن ابى هريرة عن النبى صلى الله عليه وسلم وزاد فيه الهم من احييته منا فاحيه على الاسام ومن توفيته منا فتوفه على الايمان-
(فتح القدير ج 2 ص 85- كفاية ج 2 ص 85- عناية ج 2 ص 85- حاشية الميدانى على القدورى ج 1 ص 137- نور الايضاح ج 129- مراقى الفلاح شرح نور الايضاج ص 386- حاشية الطحطاوى على مراقى الفلاح ج 386- البحرالرائق شرح كنز الدقائق ج 2 ص 183- احسن المسائل ص 60- ترمذى شريف- تحفة الاحوذى- عارضة الاحوذى- معارف السنن- نسائى شريف- السنن الكيرى للنسائى- حاشية السيوطى للنسائى.
অর্থঃ- “তৃতীয়
তাকবীরের পর মাইয়্যিতের জন্য, নিজের জন্য, পিতা-মাতার জন্য এবং সকল
মুসলমানগণের জন্য দোয়া করবে। আর এতে কোন দোয়াকে নির্দিষ্ট করা হয় নাই .... তবে
নিশ্চয়ই দোয়ায়ে মা’ছূর
(হাদীস শরীফে বর্ণিত দোয়া) অতি উত্তম ও পরিপূর্ণ। হাদীস শরীফে মা’ছূর দোয়া
হচ্ছে ... হযরত ইব্রাহীম আশহুল রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর হাদীসে বর্ণিত আছে। তিনি তার
পিতা থেকে বর্ণনা করে বলেন,
হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন জানাযা নামায পড়তেন, তখন এই
দোয়া পড়তেন-
اللهم اغفر لحينا وميتنا وشاهدنا وغائبنا وصغيرنا وكبيرنا وذكرنا وانثانا.
(তিরমিযী শরীফ, নাসায়ী
শরীফ)
অন্য
রেওয়ায়েতে আছে; হযরত
আবূ সালামা ইবনে আব্দুর রহমান রহমতুল্লাহি
আলাইহি হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণনা করেন। তিনি
হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি উক্ত
দোয়ার মধ্যে অতিরিক্ত মিলিয়ে বলেছেন,
اللهم من احييته منا فاحيه على الاسلام ومن توفيته منا فتوفه على الايمان.
(ফতহুল ক্বদীর ২য় জিঃ ৮৫
পৃষ্ঠা, কিফায়াহ
২য় জিঃ ৮৫ পৃষ্ঠা, ইনায়াহ
২য় জিঃ ৮৫ পৃষ্ঠা, হাশিয়াতুল্
মাইদানী আলাল্ কুদূরী ১ম জিঃ ১৩৭ পৃষ্ঠা, নূরুল্ ঈযাহ ১২৯ পৃষ্ঠা, মারাকিউল্
ফালাহ শরহে নূরুল ঈযাহ ৩৮৬ পৃষ্ঠা, হাশিয়াতুত্ ত্বহত্বাবী আলা
মারাকিইল্ ফালাহ ৩৮৬ পৃষ্ঠা, আল্ বাহরুর রাইক শরহে কানযুদ্ দ্বাক্বাইক্ব ২য় জিঃ ১৮৩
পৃষ্ঠা, আহসানুল
মাসাইল ৬০ পৃষ্ঠা, তিরমিযী
শরীফ, তুহফাতুল
আহওয়াযী, আরিদ্বাতুল
আহওয়াযী, মায়ারিফুস্
সুনান, নাসায়ী
শরীফ, আস্
সুনানুল্ কুবরা লিন্ নাসায়ী, হাশিয়াতুস্ সুয়ূতী লিন্ সানায়ী, হাশিয়াতুত্
ত্বহত্বাবী আলাদ্ দুররিল মুখতার ১ম জিঃ ৩৭৩ পৃষ্ঠা)
পঞ্চমতঃ
চতুর্থ তাকবীরের পর
সালাম
ফিরাবে
চতুর্থ
তাকবীর বলার পর সালাম ফিরাতে হবে। চতুর্থ তাকবীরের পর সালামের পূর্বে কোন দোয়া
নেই। আমাদের ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর মতে জানাযার তাকবীর চারটি।
এটাই হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি-এর শেষ আমল। আর এর উপরই সকলে ইজ্মা বা একমত
হয়েছেন। নিম্নে এ সম্পর্কিত আলোচনা অসংখ্য দলীল-আদিল্লার মাধ্যমে পেশ করা হলো-
[৩৬০-৩৭৭]
ثم يكبرالرابعة ويسلم لانه صلى الله عليه وسلم كبر اربعا فى اخر صلاة صلاها فنسخت ما قبلها- ولو كبر الامام خمسا لم يتابعه- الهداية مع الدراية ج 1 ص 180- الجوهر النيرة ج 1 ص 138- حاشية الميدانى ج1 ص 138- البناية فى شرح الهداية ة ج 3 ص 254- العناية ج2 ص 86- عين الهداية ج1 ص 901- اشرف الهداية ج 2 ص 86- مراقى الفلاح شرح نور الايضاح ص 386- شرح النقاية ج 1 ص 317- شرح للمولوى الياس ج 1 ص 317- نور الهداية ص 144- هادية المصلين- الدر المختار- ردالمحتار- شامى ج 2 ص 214- غاية الاوطار ج 1 ص 412)
অর্থঃ- “অতঃপর
চতুর্থ তাকবীর বলবে এবং সালাম ফিরাবে। কেননা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম সর্বশেষ জানাযা নামাযে চার তাকবীর দিয়েছেন। যাতে পূর্বের অতিরিক্ত সমস্ত
তাকবীর মানসুখ হয়ে গেছে। ইমাম যদি পঞ্চম তাকবীর দেয় তবে তার অনুসরণ করা যাবেনা।” (আল হিদায়াহ
মায়াদ্ দিরায়াহ ১ম জিঃ ১৮০ পৃষ্ঠা, আল্ জাউহারাতুন্ নিয়্যারাহ ১ম জিঃ
১৩৮ পৃষ্ঠা, হাশিয়াতুল্
মাইদানী ১ম জিঃ ১৩৮ পৃষ্ঠা,
আল বিনায়াহ ফী শরহিল হিদায়াহ ৩য় জিঃ ২৫৪ পৃষ্ঠা, আল্ ইনায়াহ ২য় জিঃ ৮৬ পৃষ্ঠা, আইনুল
হিদায়াহ ১ম জিঃ ৯০১ পৃষ্ঠা,
আশরাফুল হিদায়াহ ২য় জিঃ ৪২৭ পৃষ্ঠা, নূরুদ দিরায়াহ ১ম জিঃ ২৮ পৃষ্ঠা, ফতহুল
ক্বদীর ২য় জিঃ ৮৬ পৃষ্ঠা,
মারাকিউল ফালাহ শরহে নূরুল ঈযাহ ৩৮৬ পৃষ্ঠা, শরহুন্ নিকায়াহ ১ম জিঃ ৩১৭ পৃষ্ঠা, শরহু লিল
মাউলুবী ইলইয়াস ১ম জিঃ ৩১৭ পৃষ্ঠা, নূরুল হিদায়াহ ১৪৪ পৃষ্ঠা, হাদিয়াতুল
মুছাল্লীন, আদ্
দুররুল্ মুখতার, রদ্দুল
মুহতার, শামী
২য় জিঃ ২১৪ পৃষ্ঠা,
গাইয়াতুল্ আউতার ১ম জিঃ ৪১২ পৃষ্ঠা)
[৩৭৮-৩৮৩]
ثم يكبر الرابعة ثم يسلم تسليمتين وليس بعد التكبيرة الرابعة قبل السلام دعاء هكذا قى شرح الجامع الصفير لقاضى خان وهو ظاهر المذهب هكذا فى الكافى- (الفتاوى العا لمكيرية ج 1 ص 164- شرح الجامع الصغير لقاضى خان- الكافى، الدر المختار- ردالمحتار- شامى ج 2 ص 213)
অর্থঃ- “অতপর
চতুর্থ তাকবীর দিবে তৎপর (ডানে-বামে) দুটি সালাম ফিরাবে। চতুর্থ তাকবীরের পর
সালামের পূর্বে কোন দোয়া নেই। অনুরূপ ‘শরহুল
জামিইছ ছগীর লিকাযী খান,
কিতাবে আছে। আর এটাই যাহিরে মাযহাব বা মাযহাবের স্পষ্ট রায়। অনুরূপ ‘কাফী’ নামক
কিতাবে আছে।” (আল্
ফাতাওয়াল আলমগীরিয়াহ ১ম জিঃ ১৬৪ পৃষ্ঠা, শরহুল্ জামিইছ্ ছগীর লি কাযী খান, আল্ কাফী, আদ্ দুররুল
মুখতার, রদ্দুল
মুহতার, শামী
২য় জিঃ ২১৩ পৃষ্ঠা)
[৩৮৪-৩৮৫]
الا ان اجتماع اكثر الصحابة على الاربع- (شرح النقاية ج 1 ص 319- البناية فى شرح الهداية ج 1 ص 255)
অর্থঃ- “জানাযা
নামাযে চার তাকবীর এর উপর অধিকাংশ হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহুমগণের ইজ্মা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।” (শরহুন্ নিকায়াহ ১ম জিঃ ৩১৯ পৃষ্ঠা, আল্
বিনায়াহ ফী শরহিল হিদায়াহ ৩য় জিঃ ২৫৫ পৃষ্ঠা)
ষষ্ঠতঃ
শুধু প্রথম তাকবীরেই হাত উঠাবে
অন্যান্য
তাকবীরে হাত উঠাবে না
জানাযা
নামাযে শুধু প্রথম তাকবীরেই হাত উঠাতে হবে। পরবর্তী কোন তাকবীরেই হাত উঠাতে হবেনা।
আর এটাই আমাদের হানাফী মাযহাবের প্রসিদ্ধ মত।
নিম্নে
এ বিষয়ের উপর দলীল-আদিল্লা পেশ করা হলো-
[৩৮৬-৩৯৭]
(قوله ولايرفع يديه الا فى التكبير الاولى) لان كل تكبيرة قائمة مقام ركعة والركعة الثانية والثالثة والرابعة لا ترفع فيها الابدى فكذا تكبيرات الجنازة- (الجوهرة النيرة شرح مختصر القدورى ج1 ص 138- التسهيل الضرورى لمسائل اقدورى ج 1 ص 109- نور الايضاح ص 130- مراقى الفلاح شرح نور الايضاح ص 387- حاشية الطحطاوى على المراقى الفلاج ص 387- شرح وقاية ج 1 ص 181- شرح النقاية ج 2 ص 320- نور الهداية، البحر الرائق شرح كنز الدقائق ج 2 ص 183- الفتاوى العالمكيرية ج 1 ص 164- العينى شرح الكنز- هادية المصلين)
অর্থঃ- “(কুদূরী
গ্রন্থকারের উক্তি- প্রথম তাকবীর ছাড়া পরবর্তী কোন তাকবীরে হাতদ্বয় উঠাবে না)
কেননা, প্রত্যেক
তাকবীর এক এক রাকায়াত সমতুল্য। আর দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ রাকায়াতে (তাকবীরের
জন্য) হাত উঠাতে হয় না। অনুরূপ জানাযা নামাযেও হবে।”
(আল
জাউহারাতুন্ নিয়্যারাহ শরহে মুখতাছারুল কুদূরী ১ম জিঃ ১৩৮ পৃষ্ঠা, আত্
তাসহীলুদ দ্বারুরী লি মাসাইলিল্ কুদূরী ১ম জিঃ ১০৯ পৃষ্ঠা, নূরুল ঈযাহ
১৩০ পৃষ্ঠা, মারাকিউল
ফালাহ শরহে নূরুল্ ঈযাহ ৩৮৭ পৃষ্ঠা, হাশিয়াতুত্ ত্বহত্বাবী আল্
ামারাকিইল ফালাহ ৩৮৭ পৃষ্ঠা, শরহু বিকায়াহ ১ম জিঃ ১৮১ পৃষ্ঠা, শরহুন্
নিক্বায়াহ ১ম জিঃ ৩২০ পৃষ্ঠা, নূরুল্ হিদায়াহ, আল্ বাহর্রু রাইক্ব শরহে কানযুদ্
দাক্বাইক ২য় জিঃ ১৮৩ পৃষ্ঠা, আল ফাতাওয়াল আলমগীরিয়াহ ১ম জিঃ ১৬৪ পৃষ্ঠা, আল্ আইনী
শরহুল কানয, হাদিয়াতুল্
মুছাল্লীন)
[৩৯৮-৪০১]
ولاترفع الايدى فى تكبيرات الجنازة الافى تكبيرة الافتتاح عند مشائخنا رحمهم الله تعالى- (الفتاوى الخانية ج 1 ص 192- البحر الرائق شرح كنز الدقائق ج 2 ص 183- الفتاوى التاتار خانية ج 2 ص 156- هادية المصلين)
অর্থঃ- “জানাযা
নামাযের প্রথম তাকবীর ছাড়া কোন তাকবীরেই হাতদ্বয় উঠাবেনা। এটা আমাদের হানাফী
মাযহাবের মাশাইখ, উলামা-ই-কিরাম
রহমতুল্লাহি আলাইহিম গণের অভিমত।” (আল্ফাতাওয়াল্ খানিয়াহ ১ম জিঃ ১৯২ পৃষ্ঠা, আল্
বাহর্রু রাইক্ব শরহে কানযুদ্ দাক্বাইক্ব ২য় জিঃ ১৮৩ পৃষ্ঠা, আল্
ফাতাওয়াত্ তাতারখানিয়াহ ২য় জিঃ ১৫৬ পৃষ্ঠা, হাদিয়াতুল্ মুছাল্লীন)
উল্লিখিত
দলীল ভিত্তিক আলোচনার মাধ্যমে যা প্রমানিত হলো, তাহচ্ছে- আমাদের আহ্লে সুন্নত ওয়াল
জামায়াতের ফতওয়া মুতাবিক জানাযা নামায পাঠ করার সঠিক নিয়ম হলো-
প্রথমতঃ মাইয়্যিতকে সামনে
রেখে এবং বেজোড় সংখ্যক কাঁতার করে, জানাযা নামাযের নিয়ত করতে হবে।
আরবীতে জানাযা নামাযের নিয়ত নিম্নরূপ-
نويت ان اؤدى لله تعالى اربع تكبيرات صلوة الجنازة فرض الفاية الثناء لله تعالى والصلاة على النبى صلى الله عليه وسلم والداء لهذا الميت اقتديت بهذا الامام متوجها الى جهة الكعبة الشريفة الله اكبر-
মাইয়্যিত যদি মহিলা হয় তবে لهذا الميت এর স্থানে لهذه الميتপড়তে
হবে।
দ্বিতীয়তঃ প্রথম তাকবীর বলে
তাহরীমা বেঁধে নিম্নবর্ণিত ছানা পড়তে হবে-
سبحانك اللهم وبحمدك وتبارك اسمك وتعالى جدك وجل ثنائك ولا اله غيرك.
তৃতীয়তঃ দ্বিতীয় তাকবীর বলে
নিম্নের দরুদ শরীফ পড়তে হবে-
اللهم صل على سيدنا محمد وعلى ال سيدنا محمدكما صليت على سيدنا ابراهيم وعلى ال سيدنا ابراهيم انك حميد مجيد. اللهم بارك على سيدنا محمد وعلى ال سيدنا محمد كما باركت على سيدنا ابراهيم وعلى ال سيدنا ابراهيم انك حميد مجيد.
চতুর্থতঃ তৃতীয় তাকবীর বলে
মাইয়্যিতের জন্য নিম্নোক্ত দোয়া পাঠ করতে হবে। মাইয়্যিত যদি প্রাপ্ত বয়স্ক-বয়স্কা
বা জ্ঞান সম্পন্ন হয় তবে এই দোয়া পড়তে হবে।
اللهم اغفر لحينا وميتنا وشاهدنا وغائبنا صغيرنا وكبيرنا وذكرنا وانثانا الهم من احييته منا فاحييه على الاسلام ومن توفيته منا فتوفه على الايمان.
আর মাইয়্যিত যদি অপ্রাপ্ত
বয়স্ক বা পাগল হয় তবে পড়তে হবে
اللهم اجعله لنا فرطا واجعله لنا اجرا وذخرا واجعله لنا شافعا ومشفعا.
আর মাইয়্যিত যদি অপ্রাপ্ত
বয়স্কা বা পাগলিনী হয় তবে পড়তে হবে।
اللهم اجعلها لنا فرطا واجعلها لنا اجرا وذخرا واجعلها لنا شافعة و مشفعة.
পঞ্চমতঃ দোয়া পড়া শেষ হলেই
চতুর্থ তাকবীর বলে সঙ্গে সঙ্গে সালাম ফিরাতে হবে। ডান দিকে সালাম ফিরিয়ে ডান হাত
এবং বাম দিকে সালাম ফিরিয়ে বাম হাত ছেড়ে দিতে হবে। য
(অসমাপ্ত)
0 Comments:
Post a Comment