জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া - ৭

  গবেষণা কেন্দ্র- মুহম্মদিয়া জামিয়া  শরীফ জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া   [সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্ রব্বুল আলামীনের জন্যে এবং অসংখ্য দরূদ ও সালাম আল্লাহ্ পাক-এর হাবীব, আখিরী রসূল, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি। মহান আল্লাহ্ পাক-এর অশেষ রহ্মতে গবেষণা কেন্দ্র, “মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ”-এর ফতওয়া বিভাগের তরফ থেকে, বহুল প্রচারিত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, বাতিলের আতঙ্ক ও আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদায় বিশ্বাসী একমাত্র দলীল ভিত্তিক মুখপত্র মাসিক আল বাইয়্যিনাতপত্রিকায় যথাক্রমে টুপির ফতওয়া, অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান, নিয়ত করে মাজার শরীফ যিয়ারত করা, ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া, জুমুয়ার নামায ফরযে আইন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া, মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী সম্পর্কে ফতওয়া, কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী ও বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ্ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, ফরয নামাযের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, ইন্জেকশন নেয়া রোযা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, তারাবীহ্-এর নামাযে বা অন্যান্য সময় কুরআন শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা জায়িয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, দাড়ী ও গোঁফের শরয়ী আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, প্রচলিত তাবলীগ জামায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, আযান ও ছানী আযান মসজিদের ভিতরে দেয়ার আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, দোয়াল্লীন-যোয়াল্লীন-এর শরয়ী ফায়সালা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, খাছ সুন্নতী টুপি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া, ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারকের আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়া এবং শরীয়তের দৃষ্টিতে আখিরী যোহ্র বা ইহ্তিয়াতুয্ যোহ্রের আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া পেশ করার পর ২১তম ফতওয়া হিসেবে জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়াপেশ করে আসতে পারায় মহান আল্লাহ্ পাক-এর দরবারে অসংখ্য শুকরিয়া।]
জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার কারণ
            সুন্নতের পথিকৃত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, দ্বীন ইসলামের নির্ভীক সৈনিক, সারা জাহান থেকে কুফরী, শিরিকী ও বিদ্য়াতের মূলোৎপাটনকারী, বাতিলের আতঙ্ক এবং আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদায় বিশ্বাসী একমাত্র দলীলভিত্তিক মুখপত্র- মাসিক আল বাইয়্যিনাতপত্রিকায় এ যাবৎ যত লিখা বা ফতওয়াই প্রকাশ বা পত্রস্থ হয়েছে এবং ইনশাআল্লাহ হবে তার প্রতিটিরই উদ্দেশ্য বা মাকছূদ এক ও অভিন্ন। অর্থাৎ মাসিক আল বাইয়্যিনাতেএমন সব লিখাই পত্রস্থ  হয়, যা মানুষের আক্বীদা ও আমলসমূহ পরিশুদ্ধ করণে বিশেষ সহায়ক।         
            তদ্রুপ মাসিক আল বাইয়্যিনাতে” “জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার উদ্দেশ্য বা মাকছূদও ঠিক তাই। কেননা কিছু লোক ক্বিল্লতে ইল্ম ও ক্বিল্লতে ফাহ্ম”- অর্থাৎ কম জ্ঞান ও কম বুঝের কারণে বলে থাকে যে, “জানাযার পর দোয়া করা বিদ্য়াত ও নাজায়িয।”   
            তাদের উক্ত বক্তব্য একদিক থেকে যেরূপ ঈমান বা আক্বীদার ক্ষেত্রে ক্ষতির কারণ, অপর দিক থেকে আমলের ক্ষেত্রেও তদ্রুপ ক্ষতির কারণ।            
            প্রথমতঃ ঈমানের ক্ষেত্রে ক্ষতির কারণ এ জন্য যে, আমাদের আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের ফতওয়া হলো কোন জায়িয আমলকে নাজায়িয বলা কুফরী। অর্থাৎ ঈমান বিনষ্ট হওয়ার কারণ। অথচ বান্দার ইবাদত-বন্দিগী বা নেক আমল কবূল হওয়ার জন্যে প্রধানতম শর্ত হচ্ছে- আক্বীদা শুদ্ধ থাকা অর্থাৎ আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদার ন্যায় আক্বীদা পোষণ করা। কারণ বিশুদ্ধ আক্বীদা আমল কবূল হওয়ার পূর্ব শর্ত।        
            দ্বিতীয়তঃ আমলের ক্ষেত্রে ক্ষতির কারণ এ জন্য যে, তাদের উক্ত অশুদ্ধ বক্তব্যের কারণে যেরূপ মাইয়্যিতজীবিতদের দোয়া থেকে বঞ্চিত হবে তদ্রুপ জীবিতরা বঞ্চিত হবে হাদীস শরীফের উপর আমল করা থেকে। কারণ আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্, আশিকে উম্মত, নূরে মুজাস্সাম, ফখরে দুআলম, রহমতুল্লিল আলামীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাইয়্যিতেরজন্য অধিক মাত্রায় এবং ইখলাছের সাথে দোয়া করতে বলেছেন বলে ছহীহ্ হাদীস শরীফে বর্ণিত রয়েছে। শুধু তাই নয় স্বয়ং আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেরূপ জানাযার নামাযে মাইয়্যিতের জন্য দোয়া করেছেন অনুরূপ জানাযার বাইরেও মাইয়্যিতের জন্য দোয়া করেছেন। সুতরাং মাইয়্যিতের জন্য জানাযার নামাযে দোয়া করা যেরূপ সুন্নত, তদ্রুপ জানাযার বাইরেও সুন্নত। তা জানাযার আগেই হোক বা পরে হোক। সুতরাং বলার অপেক্ষাই রাখেনা যে, তাদের বক্তব্যের কারণে সাধারণ মানুষ একটি সুন্নত পালনের ফযীলত থেকে মাহরূম হবে নিঃসন্দেহে।       
            মূলকথা হলো, সকল মুসলমান যেন জানাযার পর দোয়া ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়সম্পর্কে সঠিক আক্বীদা রাখতে পারে এবং সুন্নত মুতাবিক আমল করে মহান আল্লাহ্ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সন্তুষ্টি হাছিল করতে পারে এ মহান উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই বহুল প্রচারিত মাসিক আল বাইয়্যিনাতে জানাযার পর দোয়া ও তাঁর প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়াদেয়া হলো।   
            মাসিক আল বাইয়্যিনাত-এর পূর্ববর্তী সংখ্যাগুলোতে প্রদত্ত জানাযাসম্পর্কিত আলোচনা দ্বারা যা ছাবিত হয়েছে তার সার সংক্ষেপ হলো মানুষ মাত্রই মৃত্যু বরণ করবে, মানুষের মৃত্যুর পর শরীয়তের নির্দেশ হচ্ছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মৃত ব্যক্তির দাফন-কাফনের ব্যবস্থা করা এবং মৃত ব্যক্তির রূহের মাগফিরাতের জন্যে মৃত ব্যক্তির উপর ছলাতুল জানাযাবা জানাযা নামায আদায় করা। শুধু তাই নয় জীবিত ব্যক্তিদের উপর দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো মৃত ব্যক্তির মাগফিরাতের জন্যে অধিক পরিমাণে দোয়া বা মুনাজাত করা। তাই হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে,
فاخلصوا له الدعاء - اكثروا الدعاء.
অর্থঃ- ইখলাছের সাথে ও অধিক পরিমাণে মৃত ব্যক্তির মাগফিরাতের উদ্দেশ্যে দোয়া-মুনাজাত কর।”   এখন প্রশ্ন হলো- মৃত ব্যক্তির জন্যে কখন দোয়া বা মুনাজাত করবে? অর্থাৎ শরীয়তে মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া করার নির্দিষ্ট কোন সময় বর্ণিত আছে কি?     
            মূলতঃ শরীয়ত মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া করার ব্যাপারে কোন সময় নির্দিষ্ট করে দেয়নি যে, অমুক সময় দোয়া করতে হবে, আর অমুক সময় দোয়া করা যাবেনা। বরং শরীয়তে মৃত ব্যক্তির জন্য যে কোন সময় দোয়া করার বিধান রয়েছে। যেমন ইন্তিকালের পর জানাযার পূর্বে, জানাযার নামাযের মধ্যে, জানাযার পর দাফনের পূর্বে এবং দাফনের পর থেকে কিয়ামত পর্যন্ত যে কোন সময় মৃত ব্যক্তির জন্যে হাত তুলে ও সম্মিলিতভাবে দোয়া করা জায়িয ও সুন্নত। নাজায়িয বা বিদয়াত মোটেও নয়। এ সম্পর্কিত বহু দলীল-আদিল্লাহ কুরআন শরীফ, হাদীস শরীফ, শরাহ, ফিক্বাহ ও ফতওয়ার কিতাব সমুহে রয়েছে।
জানাযা নামাযের পর দাফনের পূর্বে মাইয়্যিতের জন্য দোয়া করা জায়িয ও সুন্নত হওয়ার প্রমাণ
জানাযার পর দাফনের পূর্বেও মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া করা জায়িয ও সুন্নত। কেননা-          
          প্রথমতঃ কুরআন-সুন্নার কোথাও জানাযার পর দাফনের পূর্বে দোয়া করতে নিষেধ করা হয়নি।          
            দ্বিতীয়তঃ কুরআন শরীফ ও হাদীস শরীফে আমভাবে দোয়া করার নির্দেশ এসেছে অর্থাৎ কুরআন শরীফের বর্ণনা মতে যে কোন সময় দোয়া করা জায়িয ও শরীয়ত সম্মত।             তৃতীয়তঃ অসংখ্য হাদীস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত যে, হাবীবুল্লাহ্, আশিকে উম্মত হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ স্বয়ং নিজেরাই অনেক ক্ষেত্রে জানাযার পর দাফনের পূর্বে মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া করেছেন। তাই অনুসরণীয় ইমাম-মুজতাহিদ ও ফক্বীহগণ জানাযার পর দাফনের পূর্বে মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া করাকে জায়িয বলে ফতওয়া দিয়েছেন। নিম্নে এ সম্পর্কিত দলীল-আদিল্লাহ সমূহ পর্যায়ক্রমে উল্লেখ করা হলো-
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
 [১৩৯৭-১৪১২]

عن ابن عباس رضى الله عنه ان النبى صلى الله عليه وسلم قرأ عى الجنازة بفاتحة الكتاب. (ترمذى شريف ج ا ص 122، تحفة الاحوذى ج 4 ص 108، عارضة الاحوذى ج 4 ص 244، ابو ذاؤد شرف ج 2 ص 100، بذل المجهود ج ه ص 206، عون المعبود ج 3 شرح ابى داؤد لبدر الدين العينى ج 6، ابن ماحة شريف ص 108 مشكوة شريف ص 146، مرقاة ج 4 ص 59، اشعة اللمعات ج 1 ص 686، المعات، شرح الطيبى ج 3 ص 373، التعليق الصبيح، مظاهر حق ج 2 ص 51، مراة الناجيح ج 2 ص 479)
অর্থঃ- হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত ব্যক্তির উপর সূরা ফাতিহা পাঠ করেছেন।” (তিরমিযী শরীফ ১ম জিঃ ১২২ পৃষ্ঠা, তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ জিঃ ১০৮ পৃষ্ঠা, আরিদ্বাতুল আহওয়াযী ৪র্থ জিঃ ২৪৪ পৃষ্ঠা, আবূ দাউদ শরীফ ২য় জিঃ ১০০ পৃষ্ঠা, বযলুল মজহুদ ৫ম জিঃ ২০৬ পৃষ্ঠা, আউনুল মাবূদ ৩য় জিঃ, শরহু আবী দাউদ লিবদরিদ্দীন আইনী ৬ষ্ঠ জিঃ, ইবনু মাজাহ শরীফ ১০৮ পৃষ্ঠা, মিশকাত শরীফ ১৪৬ পৃষ্ঠা, মিরক্বাত ৪র্থ জিঃ ৫৯ পৃষ্ঠা, আশয়াতুল্ লুময়াত ১ম জিঃ ৬৮৬ পৃষ্ঠা, লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী ৩য় জিঃ ৩৭৩ পৃষ্ঠা, আত্ তালীকুছ্ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব ২য় জিঃ ৫১ পৃষ্ঠা, মিরয়াতুল্ মানাজীহ ২য় জিঃ ৪৭৯ পৃষ্ঠা)             উক্ত হাদীস শরীফ খানার ব্যাখ্যায় মুহাদ্দিসীন-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ জানাযা নামাযের পর দোয়া করা জায়িয বলেছেন। যেমনঃ
 [১৪১৩]

واحتمال دارد کہ برجنازۃ بعد از نماز یا پیشں ازار بقصد  تبرک خواندہ باشد چنا نکہ الان متعارف است واللہ اعلم. (اشعۃ اللمعات ج 1 ص 686)
অর্থঃ- সম্ভবতঃ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানাযা নামাযের পরে অথবা পূর্বে বরকতের জন্য সূরা ফাতিহা পাঠ করেছেন। যেমন, আজকাল এর প্রচলন দৃষ্টি গোচর হয়। আল্লাহ্ পাক অধিক জ্ঞাত।” (আশয়াতুল্ লুময়াত ১ম জিঃ ৬৮৬ পৃষ্ঠা)
 [১৪১৪]

جنازے پربعد ازنماز کے یا پھلے نماز کے بقصد  تبرک کے پڑھی ھو واللہ اعلم. (مظاھر حق ج 2 ص 52)


অর্থঃ- “(সম্ভবতঃ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জানাযা নামাযের পরে অথবা পূর্বে বরকতের জন্য সূরা ফাতিহা পাঠ করেছেন। আল্লাহ্ পাক অধিক জ্ঞাত।” (মুযাহিরে হক্ব ২য় জিঃ ৫২ পৃষ্ঠা)
 [১৪১৫]

اس کی شرح میں اشعۃ اللمعات میں ھے واحتمال  دارد کہ بر جنازہ بعد ازنماز یا پیش ازاں بقصد تبرک خواندہ باشد چنانکہ الان متعارف است" ممکن ھے کہ حضور علیہ الصلوۃ والسلام نے سورة فاتحہ نماز کے بعد یا نماز سے پھلے برکت کے لئے پڑھی  ھو جیساکہ اجکل رواجھے، اس سے معلوم ھوأ کہ شیخ عبد الحق علیہ الر حمۃ کے زمانہ  میں بھی رواج تھا کہ نماز جنازہ کے اگے اور بعد سورہ فاتحہ وغیرہ برکت کے لئے پڑھتے تھے اور  حضرت شیخ نے اس کو منع نہ فرمایا بلکہ حدیث پراس کو محمول کیا. (جاء الحق حصہ 1 ص 262)

অর্থঃ- “(উক্ত হাদীস শরীফখানার) ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে আশয়াতুল লুময়াতনামক কিতাবে উল্লেখ আছে, “সম্ভবতঃ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানাযা নামাযের পরে অথবা পূর্বে বরকতের জন্য সূরা ফাতিহা পাঠ করেছেন। যেমন, আজকাল এর প্রচলন দৃষ্টি গোচর হয়।এর থেকে বুঝা গেল, হযরত শায়খ আব্দুল্ হক্ব মুহাদ্দিস দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর যুগেও জানাযা নামাযের আগে ও পরে বরকতের জন্য সূরা ফাতিহা পাঠ করার প্রচলন ছিল। অথচ হযরত শায়খ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তা নিষেধ করেননি, বরং এটাকে হাদীস শরীফসম্মত বলে উল্লেখ করেছেন।” (জায়াল হক্ব ১ম জিঃ ২৬২ পৃষ্ঠা)
 [১৪১৬-১৪২৮]

عن ابى هريرة رضى الله عنه قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول اذا صليتم على الميت فاخلصوا له الدعاء. (ابوداؤد شريف ج اص 100، بذل المجهود جه ص 206، عون المعبود ج 3 ص 188، شرح ابى داود لبدر الدين العينى ج 6 ص 143، ابن ماجة شريف ص 109، مشكوة شريف ص 146، اللمعات، كرح الطيبى ج 3 ص 373، التعليق الصبيح، مظاهر حق ج 2 ص 52، مرأة المناجبح ج 2 ص 479)
অর্থঃ- হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সল্লাম-এর কাছ থেকে শুনেছি। তিনি বলেছেন, যখন তোমরা কোন মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে জানাযা নামায পড়বে, তখন তার জন্য খালিছভাবে দোয়া করবে।” (আবূ দাউদ শরীফ ১ম জিঃ ১০০ পৃষ্ঠা, বযলুল্ মাজহুদ ৫ম জিঃ ২০৬ পৃষ্ঠা, আউনূল ্মাবূদ ৩য় জিঃ ১৮৮ পৃষ্ঠা, শরহু আবী দাউদ লিবদরিদ্দীন আইনী ৬ষ্ঠ জিঃ ১৪৩ পৃষ্ঠা, ইবনু মাজাহ শরীফ ১০৯ পৃষ্ঠা, মিশকাত শরীফ ১৪৬ পৃষ্ঠা, মিরকাত ৪র্থ জিঃ ৫৯ পৃষ্ঠা, আশয়াতুল্ লুময়াত ১ম জিঃ ৬৮৬ পৃষ্ঠা, লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী ৩য় জিঃ ৩৭৩ পৃষ্ঠা, আত্ তালীকুছ্ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব ২য় জিঃ ৫২ পৃষ্ঠা, মিরয়াতুল্ মানাজীহ ২য় জিঃ ৪৭৯ পৃষ্ঠা)      উক্ত হাদীস শরীফের অর্থ তিন প্রকারের হতে পারে, (১) যখন জানাযা পড়বে তখন জানাযা নামাযের মধ্যে মৃত ব্যক্তির জন্য খালিছভাবে দোয়া করবে। (২) জানাযা নামাযে খালিছ দোয়া পাঠ করবে অর্থাৎ সূরা ক্বিরয়াত পাঠ করবেনা। (৩) জানাযা নামাযের পর মৃত ব্যক্তির জন্যে খালিছ দোয়া করবে। কেননা অনেকেই শেষোক্ত দুটি অর্থও গ্রহণ করেছেন। সুতরাং উক্ত হাদীস শরীফটি জানাযার ভিতরে দোয়া করার ব্যাপারে যেরূপ দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য তদ্রুপ জানাযার পর দোয়া করার ব্যাপারেও দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য।            হাদীস শরীফের উপরোক্ত আলোচনা থেকে এটাই ছাবিত হলো যে, জানাযার পর দাফনের পূর্বে মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া করা হাদীস শরীফেরই নির্দেশ এবং স্বয়ং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খাছ সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত।            উল্লেখ্য, কুরআন শরীফ ও হাদীস শরীফের সাথে সাথে ফিক্বাহ ও ফতওয়ার কিতাবের বক্তব্য দ্বারাও প্রমাণিত হয় যে, জানাযার পর দাফনের পূর্বে দোয়া করা জায়িয। অনুসরণীয় ইমাম-মুজতাহিদগণ তাঁদের কিতাব সমূহে জানাযার পর দাফনের পূর্বে মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া করা জায়িয হওয়ার পক্ষেই ফতওয়া দিয়েছেন।             নিম্নে বিশ্ব বিখ্যাত ও নির্ভরযোগ্য ফিক্বাহ ও ফতওয়ার কিতাব থেকে ইমামগণের ফতওয়া তুলে ধরা হলো-
 [১৪২৯-১৪৩২] 

عن عبد اله بن ابى بكر قال: لما التقى الناس بمؤنة، جلس رسول الله صلى الله عليه وسلم على المنبرء وكشف له ما بينه وبين الشام، فهو ينظر الى معركتهم، فقال عليه السلام: اخذ الراية زيد بن حارثة، فمضى حتى استشهد، وصلى عليه ودعا له، وقال استغفرواله، وقد دخل الجنة، وهو يسعى، ثم اخذ الراية جعفر بن ابى طالب، فمضى حتى استشهد، فصلى عليه رسول الله صلى الله عليه وسلم ودعاله، وقال: استغفروا له، وقد دخل الجنة، فهو يطير فيها بجنا حين حيث شاء، (نصب الراية لا حاديث الهداية ج 2 ص 274، فتح القدير ج 2 ص 81، مواهب اللدنية ج 2، نور الهداية ج 1 ص 143)
অর্থঃ- হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবু বকর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ মাঊনানামক স্থানে মিলিত হলেন, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মিম্বরে উঠে বসলেন। তখন তার কাছে শাম দেশের (মুতার যুদ্ধের) অবস্থা স্পষ্ট প্রকাশিত হচ্ছিল। তিনি হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের যুদ্ধের অবস্থা দেখতে ছিলেন। অতঃপর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, (যুদ্ধে) হযরত যায়িদ ইবনে হারিসা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু পতাকা ধরলেন, অতঃপর তিনি শহীদ হয়ে গেলেন। তাই তিনি তাঁর উপর জানাযা নামায পড়লেন এবং তাঁর জন্য দোয়া করলেন এবং বললেন, তোমরাও তাঁর জন্য ইস্তিগফার কর। তিনি জান্নাতে চলে গেছেন,আর তা খুবই দ্রুত। হযরত জাফর ইবনে আবু তালিব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু পতাকা ধরলেন অতঃপর তিনিও শহীদ হয়ে গেলেন। তাই, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উপর জানাযা নামায পড়লেন এবং তাঁর জন্য দোয়া করলেন এবং বললেন, তোমরাও তাঁর জন্য ইস্তিগফারের দোয়া কর। তিনি তাড়াতাড়ি জান্নাতে চলে গেছেন এবং সেখানে দুটি ডানা নিয়ে যেখানে ইচ্ছা সেখানে উড়ে বেড়াবেন।” (নাছবুর রাইয়াহ্ লি আহাদীসিল হিদায়াহ্ ২য় জিঃ ২৮৪ পৃষ্ঠা, ফতহুল ক্বদীর ২য় জিঃ ৮১ পৃষ্ঠা, মাওয়াহিবুল্ লাদুন্নিয়া ২য় জিঃ, নূরুল হিদায়াহ্ ১ম জিঃ ১৪৩ পৃষ্ঠা)
 [১৪৩৩] 
ورى عن ابن عباس رضى الله عنهما وابن عمر رضى الله عنه انهما فاتهما الصلاة على الجنازة فلما حضرا مازادا على الاستغفار له. ( المبسوط للسر خسى ج 2 ص 67)
অর্থঃ- হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা ও হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তাঁদের দুজনের একদা জানাযা নামায ফউত হলো। যখন তাঁরা (নামাযের পর মাইয়্যিতের কাছে) উপস্থিত হলেন, তখন মাইয়্যিতের জন্য অতিরিক্ত ইস্তিগফার করলেন।” (আল্ মাবসূত লিস্ সারাখসী ২য় জিঃ ৬৭ পৃষ্ঠা) [১৪৩৪]

وعبد الله بن سلام رضى الله عنه فاتته الصلاة على جنازة عمر فلما حضر قال ان سبقتمونى بالصلاة عليه للاتسبقونى بالدعاء له. (المبسوط للسر خسى ج 2 ص 67)
অর্থঃ- হযরত আব্দুল্লাহ্ বিন সালাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহু আমীরুল মুমিনীন হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর জানাযা পাননি। (জানাযার পর) তিনি যখন (সেখানে) উপস্থিত হলেন তখন বললেন, “তোমরা জানাযা নামায যদিও আমার পূর্বে পড়ে ফেলেছ, তবে দোয়ার ক্ষেত্রে আমার থেকে অগ্রগামী হয়োনা।”(আল মাবসূত লিস সারাখসী ২য় জিঃ ৬৭ পৃষ্ঠা) [১৪৩৫-১৪৩৬]

قال ابو حنيفة الثورى ان التعزية سنة قبل الدفن لابعده لان شدة الحزن تكون قبل الدفن فيعزى ويدعوله. (ميزان الكبرى للشعر انى، جاء الحق حصه اص 264)
অর্থঃ- হযরত ইমাম আবূ হানীফাতাছ্ ছাওরী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন যে, দাফনের পরে নয় বরং দাফনের আগে সমবেদনা জ্ঞাপন করা সুন্নত। কেননা, দাফনের আগে বিরহ-বেদনা অনেক বেশী থাকে। তাই, (দাফনের পূর্বে) শোক প্রকাশ করবেন এবং মাইয়্যিতের জন্য দোয়া করবেন।” (মীযানুল্ কুবরা নিশ্ শারানী, জায়াল হক্ব ১ম হিচ্ছা ২৬৪ পৃষ্ঠা)
 [১৪৩৭-১৪৩৮] 
لايدعو بعد التسليم كما فى الخلاصة وعن الفضلى لابأس به. (البحر الرائق شرح كنز الدقائق ج 2 ص 183، رضوية)

অর্থঃ- সালামের পর দোয়া করবেনা যেমনটি খুলাছায় আছে। ফযলী থেকে বর্ণিত আছে যে, জানাযা নামাযের সালামের পর দোয়া করতে কোন অসুবিধা নেই- অর্থাৎ জায়িয।” (আল বাহরুর রাইক্ব শরহে কানযুদ্ দাক্বাইক্ব ২য় জিঃ ১৮৩ পৃষ্ঠা, অনুরূপ রেযভিয়াতেও উল্লেখ আছে)
 [১৪৩৯] 

وان ابا حنيفة لما مات فختم عليه سبعون الفا قبل الدفن. (طحطاوى شريف)
অর্থঃ- যখন  হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি ইন্তিকাল করেন, তখন দাফনের আগে তাঁর জন্য সত্তর হাজার বার কুরআন শরীফ খতম করা হয়।” (ত্বহত্বাবী শরীফ) [১৪৪০]

ويقول بعد صلوة الجنازة اللهم اتحرمنا اجره الخ. (نهر الفائق شرح كنز الدقائق)
অর্থঃ- জানাযা নামাযের পর পড়বে,

اللهم لا تحرمنا اجره ولا تفتنا بعده واغفر لنا وله.
অর্থাৎ- আয় আল্লাহ্ পাক! ইন্তিকাল জনিত কারণে ধৈর্য্য ধারণের ছওয়াব থেকে আমাদেরকে বঞ্চিত করবেন না। আর ইন্তিকালের পর  আমাদেরকে পরীক্ষায় ফেলবেন না। আর আমাদের ও তার (মৃত ব্যক্তির) গুণাহ্খতা ক্ষমা করুন।”(নাহরুল ফাইক্ব শরহে কান্যুদ্ দাকাইক্ব)
[১৪৪১]
بعضے حضر اتنے سلام کے بعد یہ دعاء بھی لکھی ھے. کہ یہ پڑھے. أللھم ربنا اتنا فی الدنیا حسنت و فی الاخرۃ حسنۃ وقنا برحمتک عذاب القبر  وعذاب النار. (کشف الحقائق شرح کنذ الدقائق ج 1 ص 339)
অর্থঃ- কোন কোন হযরত উলামা-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহি জানাযা নামাযের সালামের পর এ দোয়া পড়ার কথা লিখেছেন,
اللهم ربنا اتنا فى الدنيا حسنة وفى الاخرة حسنة وقنا برحمتك عذاب القبر وعذاب النار.

অর্থাৎ আয় আমাদের রব! আমাদেরকে দুনিয়ার মধ্যে এবং আখিরাতের মধ্যে মঙ্গল (ভালাই) দান করুন। আর আপনার রহমতের দ্বারা আমাদেরকে কবরের আযাব এবং জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করুন।” (কাশফুল্ হাক্বাইক্ব শরহে কানযুদ্ দাক্বাইক ১ম জিঃ ৩৩৯ পৃষ্ঠা)
 [১৪৪২]
চৌদ্দশত হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ, ইমামুল হুদা, কুতুবুল আলম, ফক্বীহুল উম্মত, মুজাহিদে আযম হযরত আবু বকর ছিদ্দীকী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি স্বয়ং নিজেই জানাযার পর কাতার ভঙ্গ করে হাত তুলে ও সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করতেন এবং তাঁর বিখ্যাত মত-পথনামক কিতাবে তা জায়িয বলে ফতওয়া দিয়েছেন। যেমন, উক্ত কিতাবে উল্লেখ আছে, “আরো কতগুলো মাসয়ালা যেগুলোকে ফুরফুরার পীর ছাহেব ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি জায়িয বলতেন ও নিজেও আমল করতেন। যথা কবরে তালকীন করা, জানাযা নামাযের পর কাঁতার ভঙ্গ করে মুর্দার জন্য মাগফিরাতের দোয়া চাওয়া ও ছওয়াব রিসানী করা, মীলাদের মাহ্ফিলে দাঁড়িয়ে ইয়া নবী সালামু আলাইকাপড়া, মুর্দার জন্য লাখ কলমা ও কুরআন শরীফ খতম করে ছওয়াব রিসানী করা, কবর জিয়ারত করা, (ওহাবীরা কবর জিয়ারত নাজায়িয বলে)। নবী আলাইহিমুস সালাম ও ওলীগণের ওয়াছীলা দিয়া খোদার নিকট দোয়া চাওয়া (ওহাবীরা নাজায়িয বলে), ওয়াজের মাহ্ফিলে উচ্চ শব্দে  দরূদ শরীফ পড়া, পীর ওলীগণের লাশ মুবারক মাটিতে খায় না, যিয়ারতের সময় কবরের  দিকে হাত উঠিয়ে দোয়া চাওয়া, বুযূর্গ ব্যক্তির তাযীমের জন্য দাঁড়িয়ে পড়া, কবরের নিকট কুরআন শরীফ পাঠ করা, আখিরী যোহ্রের নামায পড়া ইত্যাদি । (ফুরফুরা শরীফের মত ও পথ ২৬, ২৭ পৃষ্ঠা)
 [১৪৪৩-১৪৪৪] 
بحر زخار كفته بعد سلام بخواهتد اللهم اتحرمنا اجره ولا تفتنا بعده واغفر لنا وله. (زاد الاخرة باب نهم ص 112، بحر زخار)

অর্থঃ- বাহরে যুখ্খারগ্রন্থকার বলেন, জানাযা নামাযের সালামের পর এই দোয়া পড়বেন,

اللهم لتحر منا اجره ولا تفتنا بعده واغفر لنا وله.

অর্থাৎ আয় আল্লাহ্ পাক! ইন্তিকাল জনিত কারণে ধৈর্য্য ধারণের ছওয়াব হতে আমাদেরকে বঞ্চিত করবেন না। আর ইন্তিকালের পর আমাদেরকে পরীক্ষায় ফেলবেন না। আর আমাদের ও তার (মৃত ব্যক্তির) গুণাহ্ মাফ করুন।” (যাদুল আখিরাহ্ ৯ম বাব ১১২ পৃষ্ঠা, বাহরে যুখখার)
 [১৪৪৫-১৪৪৬] 

بحر زخار میں ھے کہ بعد سلام یہ دعا پڑ ھے اللھم لاتحرمنا اجرہ ولاتفتنا بعدہ واغفرلنا ولہ.
(ھدیۃ المصلین لمجددی برکتی رحمۃ اللہ علیہ ص 112، بحر زخار)

অর্থঃ- বাহরে যুখ্খারনামক কিতাবে উল্লেখ আছে যে, (জানাযা নামাযের) সালামের পর এই দোয়া পাঠ করবে। আয় আল্লাহ্ পাক! ইন্তিকাল জনিত কারণে ধৈর্য্য ধারণের ছওয়াব হতে আমাদেরকে বঞ্চিত করবেন না। আর ইন্তিকালের পর আমাদেরকে পরীক্ষার মধ্যে ফেলবেন না। আর আমাদের ও তার (মৃত ব্যক্তির) গুণাহ্ মাফ করুন।” (হাদিয়্যাতুল্ মুছাল্লীন লি মুজাদ্দিদী বরকতী রহমতুল্লাহি আলাইহি ১১২ পৃষ্ঠা, বাহ্রে যুখ্খার)
[১৪৪৭]

ودر روایتے ست لہ رسول علیہ السلام بر مردہ نماز گزاردپس بگفت اللھم ان فلان بن فلان فی ذمتک دخل فی جوارک فقہ من فتنۃ القبر وعذاب النار وانت اھل الوفاء والحق اللھم اغفرلہ وارحمہ انک انت  الغفور الرحیم. (زاد الاخرۃ باب نھم ص 112)

অর্থঃ- কোন কোন রিওয়ায়েতে রয়েছে যে, হযরত রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানাযা নামায পড়ে এ দোয়া করেছেন,

اللهم ان فلان بن فلان فى ذمتك دخل فى جوارك فقه من فتنة القبر وعذاب انار وانت اهل اوفاء والحق اللهم اغفر ه وارحمه انك انت الغفور الرحيم.

অর্থাৎ আয় আল্লাহ্ পাক! অমুকের পুত্র অমুক আপনার জিম্মাদারী ও হিফাযতে রয়েছে। আপনি তাকে কবরের পরীক্ষা ও দোযখের আযাব হতে রক্ষা করুন। আপনি ওয়াদা ও হক্ব পূরণকারী। অতএব, আপনি তাকে মাফ করে দিন ও তার প্রতি রহম করুন। নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল ও মহা দয়াবান।” (যাদুল্ আখিরাহ ৯ম বাব ১১২ পৃষ্ঠা)
 [১৪৪৮-১৪৪৯] 

بعض روابتوں میں ھے کہ حضور صلی اللہ علیہ وسلم نے نماز جنازہ پڑھی پھریہ دعا یڑھی. اللھم  ان  فلان بن فلان (یھاں پرنام لے) فی ذمتک دخل  فی جوارک فقہ من فتنۃ القبر وعذاب النار وانت اھل  الوفاء والحق اللھم اغفرلہ وار حمہ انک انت الغفور الرحیم. (ھدیۃ المصلین ص 112. 113، زاد الاخرۃ)

অর্থঃ- কোন কোন রিওয়ায়েতে আছে যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানাযা নামায পড়ার পর এই দোয়া করেছেন,

اللھم ان فلان بن فلان (یھاں پرنام لےفی ذمتک دخل فی جوارک فقہ من فتنۃ القبر وعذاب النار وانت اھل الوفاء والحق اللھم اغفرلہ وارحمہ انک انت الغفور الرحیم.
অর্থাৎ আয় আল্লাহ্ পাক! অমুকের পুত্র অমুক (এখানে মৃতের নাম বলবেন) আপনার জিম্মাদারী ও হিফাযতে রয়েছে। আপনি তাকে কবরের পরীক্ষা ও দোযখের আযাব হতে রক্ষা করুন। আপনি ওয়াদা ও হক্ব পূরণকারী। অতএব, আপনি তাকে মাফ করে দিন ও তাকে রহম করুন।নিশ্চয়ই আপনি মহা ক্ষমাশীল ও মহা দয়াবান।” (হাদিয়্যাতুল্ মুছাল্লীন ১১২ ও ১১৩পৃষ্ঠা, যাদুল্ আখিরাহ)           
উপরোক্ত বর্ণনা দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, স্বয়ং আখিরী রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানাযার পর মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া করেছেন। সুতরাং জানাযার পর দোয়া করা জায়িয তো অবশ্যই বরং খাছ সুন্নত।
[১৪৫০]

وخواندن قران مجيد بر ميت ودعا درحق او قبل بر داشتن جنازه و... يش ازفن سبب نجات ازاحوا اخرت وعذاب قبراست. (شرح برزخ)
অর্থঃ- জানাযা উঠিয়ে নেয়া ও দাফন করার পূর্বে অর্থাৎ জানাযা নামাযের পরে মাইয়্যিতের জন্যে কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করা ও মুনাজাত করা আখিরাতের কঠিন অবস্থা এবং কবর আযাব হতে পরিত্রাণ পাওয়ার বিশেষ কারণ।” (শরহে বরযখ)
[১৪৫১] 

اچھا طریقہ ثواب رسانی کا مردہ کے حق مین یہ ھیں کہ قبل دفن جس قدر ھو سکے کلمہ یاقران شریف یا درود یا کوئی سورت اپرہ کر ثواب  بخشے. (تحفۃ الغا فلین ص 3)

অর্থঃ- মাইয়্যিতের জন্য দোয়া করার উত্তম পদ্ধতি হলো, দাফন করার পূর্বে যতটুকু সম্ভব হয় দোয়া, দরূদ, তাসবীহ, সূরা, ক্বিরয়াত পাঠ করে বখশিয়ে দেয়া।” (তুহফাতুল গাফিলীন ৩য় পৃঃ)
[১৪৫২-১৪৫৩] 

وفى نافع المسلمين رجل رفع يدبه بد عاء الفاتحة للميت قبل الدفن جاز (جواهر انفيس شرح در القيس ص 132- نافع المسلمين)
অর্থঃ-নাফিউল মুসলিমীন”, কিতাবে উল্লেখ আছে যে, মাইয়্যিতের জন্য দাফনের পূর্বে (অর্থাৎ জানাযা নামাযের পর) উভয় হাত উঠিয়ে মুনাজাত করা জায়িয।” (জাওয়াহিরুন্ নাফীস শরহে দুররুল ক্বাইস ১৩২ পৃষ্ঠা, নাফিউল মুসলিমীন) [১৪৫৪-১৪৫৫]

فاتحہ ودعا برائے میت پیش ازد فن درست است وھمیں است بروایت معمولہ کذا فی خلاصۃ الفتح. (کشف الغطا، خلاصۃ الفتح)
অর্থঃ- দাফন করার পূর্বে অর্থাৎ জানাযার পর মাইয়্যিতের জন্য ফাতিহা পাঠ ও দোয়া করা জায়িয। এ রিওয়ায়েত অনুযায়ী আমল করা হয়েছে। খুলাছাতুল্ ফাত্হনামক কিতাবে অনুরূপ আছে। (কাশফ্ল্ ুগিত্বা, খুলাছাতুল্ ফাত্হ)
[১৪৫৬-১৪৫৭] 

سوال: ھمارے جلال پور جٹاں میں ایک  مھاجر مولوی صاحب ھیں وہ حسب ذیل باتیں  کرتے ھیں ... بعد نماز جنازہ کے دعا کرنا  حرام ھے."
الخواب: مولوی مذکورکے یہ تمام مسائل غلط  اور بے بنیاد ھیں. ختم، فاتحہ، دعا بعد نماز  جنازہ وغیر کار خیر ھیں. ان کے کرنے والا مستحق ثواب ھے. (فثاوی نعیمیہ ص 125. 126، جاء الحق)
অর্থঃ- প্রশ্নঃ আমাদের জালালপুরে এক মুহাজির মৌলভী ছাহেব বলেন যে, .... “জানাযা নামাযের পর দোঁয়া করা হারাম।”- এ ব্যাপারে ওলামায়ে দ্বীন কি বলেন? জবাবঃ উল্লিখিত মৌলভী ছাহেবের উক্ত বক্তব্য ভুল এবং ভিত্তিহীন। জানাযা নামাযের পর খত্ম, ফাতিহা ও দোয়া পাঠ ইত্যাদি করা উত্তম কাজ। এরূপ আমলকারী ছাওয়াবের উপযুক্ত।” (ফাতাওয়ায়ে নাঈমিয়াহ্ ১২৫-১২৬ পৃষ্ঠা, জায়াল হক্ব)  [১৪৫৮-১৪৬১]

زاد الاخرۃ میں نھر فائق شرح کنز الدقائق اور بحر زخار سے نقل فر مایا بعداز سلام بخواند اللھم لاتحرمنا لجرہ ولاتفتنا بعدہ واغفرلنا ولہ. (جاء الحق  ج 1 ص 264. زاد الاخرۃ، نھر الفائق شرح کنز  الدقائق، بحر زخار)
অর্থঃ- যাদুল্ আখিরাতকিতাবে নাহরুল্ ফাইক্ব শরহে কানযুদ্ দাক্বাইকবাহরে যুখ্খারথেকে বর্ণিত আছে যে, সালাম ফিরানোর পর এ দোয়াটি পড়বেন। অর্থাৎ আয় আল্লাহ্ পাক! আমাদেরকে এর ছওয়াব থেকে বঞ্চিত করবেন না। আর ইন্তিকালের পর আমাদেরকে ফিৎনা ফাসাদের মধ্যে ফেলবেন না। আমাদেরকে ও তাকে মাফ করুন।” (জায়াল হক্ব ১ম জিঃ ২৬৪ পৃষ্ঠা, যাদুল্ আখিরাহ, নাহরুল্ ফাইক্ব শরহে কানযুদ্ দাক্বাইক্ব, বাহরে যুখখার)
[১৪৬২-১৪৬৩] 

چو از نماز فارغ شوند مستحب است کہ امام یا صالح دیگر فاتحہ بقرتا مغلحون طرف سر جنازہ  وخاتمہ بقرامن الرسول طرف بائیں بخواند کہ در  حدیث وارداست ودر بعض حدیث بعداز دفن واقع  شدہ ھر دو وقت کہ میسر شود مجوازست. (مفتاح الصلوۃ مصنف مولانا فتح محمد صاحب  برھا نپوری ص 112 - جاء الحق)
অর্থঃ-যখন জানাযা নামায শেষ হবে, তখন এটা মুস্তাহাব যে, ইমাম অথবা অন্য কোন নেককার সূরা বাক্বারারহৃ مفلحون পর্যন্ত মাইয়্যিতের মাথার কাছে এবং সূরা বাক্বারার শেষ আয়াত امن الرسول মাইয়্যিতের বাম পার্শে¦ পাঠ করবেন। কেননা, এ রকম হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে। কোন কোন হাদীস শরীফে দাফনের পরে এরূপ করার কথা বর্ণিত আছে। সম্ভব  হলে উক্ত দুসময়েই  পড়া জায়িয আছে।” (মিফতাহুছ্ ছালাহ মুছান্নিফ মাওলানা ফতেহ মুহম্মদ ছাহেব বুরহানপুরী ১১২ পৃষ্ঠা, অনুরূপ জায়াল হক্বেও আছে)
[১৪৬৪]

نماز جنازہ کے بعد صفیں توڑگر دعا مانگنا جائز ھے فرض واجب نھیں، حدیث شریف میں ھے اذا صلیتم علی المیت فاخلصوا لہ الدعاء. (خیر الفثاوی ج  3 ص 270)

অর্থঃ- নামাযে জানাযা-এর কাঁতার ভঙ্গ করে দোয়া করা জায়িয আছে। তবে ফরয, ওয়াজিব নয়। হাদীস শরীফে আছে, অর্থাৎ যখন তোমরা মাইয়্যিতের উদ্দেশ্যে নামায পড় তখন তার জন্য ইখলাছের সাথে দোয়া কর।” (খাইরুল ফাতাওয়া ৩য় জিঃ ২৭০ পৃষ্ঠা)
[১৪৬৫-১৪৬৬]

نماز جنازہ کے بعد صفیں توزکر دعا مانگنا جائزھے فرض واجب نھیں .....  علامہ سرخسی رحمۃ اللہ علیہ مبسوط  میں فرماتے ھیں کہ حضرت عبد  اللہ  بن سلام رضی اللہ تعالی عنہ حضرت عمر رضی اللہ تعالی عنہ کے جنازے   پرا ئے تو جنازہ ھو چکا تھا اپنے فرمایا ان سبقتمونی بالصلوۃ علیہ  فلا تسبقونی بالدعاء لہ.
البتہ تارک کو ملامت نھیں کرنی چاھئے البتہ جو شخص اس کو بدعت یا خلاف شرع کھتاھے وہ قابل ملامت ھے. ( خیر الفتاوی ج 3 ص 270، مبسوط  للسرخسی)

অর্থঃ- নামাযে জানাযা-এর কাঁতার ভঙ্গ করে দোয়া করা জায়িয।  তবে ফরয, ওয়াজিব নয়। ...... আল্লামা সারাখসী রহমতুল্লাহি আলাইহি মাবসূতনামক তাঁর লিখিত কিতাবে উল্লেখ করেন, হযরত আব্দুল্লাহ্ বিন সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আমীরুল মুমিনীন হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর জানাযা পাননি। (জানাযার পর) তিনি যখন (সেখানে) উপস্থিত হলেন তখন বললেন, “তোমরা জানাযা নামায যদিও আমার পূর্বে পড়ে ফেলেছ, তবে দোয়ার ক্ষেত্রে আমার থেকে অগ্রগামী হয়োনা।
নিশ্চয়ই জানাযার পর দোয়া তরক্বকারীকে তিরস্কার বা নিন্দনীয় মনে করা যাবেনা। কিন্তু যে ব্যক্তি উক্ত দোয়াকে বিদ্য়াত কিংবা খিলাফে শরাবলবে সে ব্যক্তি তিরস্কার বা নিন্দার পাত্র হবে।” (খাইরুল ফাতাওয়া ৩য় জিঃ ২৭০ পৃষ্ঠা, মাবসুত্ লিস্ সারাখসী)
[১৪৬৭]
بعد نماز جنازہ ایصال ثواب: سوال (3103) : بعد نماز جنازہ قبل دفن اولیاء میت مصلیوں سے کھتے ھیں کہ اپ لوگ تین تین مرتبہ سورہ اخلا ص پڑہ کرمیت کو اس کاثواب بخش دیں.
الجواب: اس میں کچہ حرج نھیں ھے پس اگر بعد نماز جنازہ کے تمام لوگ یا بعض سورہ اخلاص کوتین بار پڑہ کرمیت کوثواب پھنچا دیں تو اس  میں کچہ حرج نھیں ھے. (فتاوی دار العلوم دیوبند ج 5  ص 418)

অর্থঃ- জানাযা নামাযের পর ঈছালে ছওয়াব প্রসঙ্গেঃ
সুওয়াল ৩১০৩)ঃ জানাযা নামাযের পর মৃতের ওলী উপস্থিত মুছল্লীগণকে লক্ষ্য করে বলেন যে, আপনারা তিন বার সূরা ইখলাছ পড়ে মাইয়্যিতের উপর ছওয়াব বখ্শিয়ে দিন। (এটা কিরূপ?) জাওয়াবঃ এরূপ করাতে কোন দোষ বা ক্ষতি নেই। সুতরাং জানাযা নামাযের পর যদি সকল লোক অথবা কিছু লোক সূরা ইখলাছ তিনবার পড়ে মাইয়্যিতের জন্য ছওয়াব রিসানী করে তাতে কোনই ক্ষতি নেই। (অর্থাৎ জায়িয)।”(ফাতাওয়ায়ে দারুল উলূম দেওবন্দ ৫ম জিঃ ৪১৮ পৃষ্ঠা)
[১৪৬৮] 

بعد نماز جنازہ ایصال: سوال (3134): بعد  نمازجنازہ قبل دفن چند مصلیوں کا ایصال  ثواب کے  لئے صورہ فاتحہ ایک بار اور سورہ اخلاص تین بار  اھستہ اواز سے پڑھنا اور امام جنازہ یاکسی نیک أدمی کا دونوں ھاتہ اٹھا کر مختصر دعا کر نا  شرعا درست ھے یا نھیں؟
الجواب: اس میں کچہ حرج نھیں ھے ..... (فتاوی دار العلوم دیوبند ج 5 ص 434- 435)


অর্থঃ- জানাযা নামাযের পর ঈছালে ছওয়াব প্রসঙ্গেঃ সুওয়াল (৩১৩৪)ঃ জানাযা নামাযের পর দাফনের পূর্বে কতক মুছল্লী (মৃতের প্রতি) ছওয়াব রিসানী করার জন্য অল্প আওয়াজে একবার সূরা ফাতিহা, তিনবার সূরা ইখলাছ পড়া এবং জানাযা নামাযের ইমাম অথবা কোন নেক লোকের জন্যে (জানাযা নামাযের পরে) উভয় হাত উঠিয়ে সংক্ষিপ্ত  মুনাজাত করা শরীয়তে জায়িয কিনাজাওয়াবঃ এরূপ পদ্ধতিতে মুনাজাত করাতে কোন ক্ষতি নেই।...।” (ফাতাওয়ায়ে দারুল উলূম দেওবন্দ ৫ম জিঃ ৪৩৪, ৪৩৫ পৃষ্ঠা)
[১৪৬৯]

پھر کھا ھے کہ محمد بن الفضل نے یہ کھاھے  کہ اگر جنازہ کی نماز کے بعد دعا کرلی جائے  تو کوئی مضائقہ نھیں. (نفع المفتی والسائل ص 410)
অর্থঃ- হযরত মুহম্মদ ইবনে ফযল রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, যদি জানাযা নামাযের পর দোয়া করে তাতে কোন অসুবিধা নেই।” (নাফউল মুফতী ওয়াস্ সাইল ৪১০ পৃষ্ঠা) [১৪৭০] 

تاھم نماز جنازہ سے فارغ ھونے کے بعد فردا فردا اگر لوگ دعا مانگ لیں توکچہ مضائقہ بھی نھیں. (کفایت المفتی ج4 ص 92)


অর্থঃ- জানাযা নামায পড়ার পর যদি লোকেরা পৃথক পৃথকভাবে মুনাজাত করে তবে কোন ক্ষতি নেই।” (কিফায়াতুল মুফতী ৪র্থ জিঃ ৯২ পৃষ্ঠা)
[১৪৭১]

ھاں لوگ اپنے اپنے دل میں بغیر ھاتہ اٹھائے دعائے مغفرت کرتے رھیں تویہ  جائز ھے. (کفایت المفتی ج 4 ص 74، 75)
অর্থঃ- হ্যাঁ (জানাযার পরে)  যদি লোকেরা আলাদা আলাদাভাবে মনে মনে হাত উঠানো ছাড়া দোয়া, মাগফিরাত করে তবে তা জায়িয হবে।” (কিফায়াতুল মুফতী ৪র্থ জিঃ ৭৪, ৭৫ পৃষ্ঠা)
উল্লেখ্য, মুফতী কিফায়াতুল্লাহ ছাহেব যদিও অজ্ঞতার কারণে ইজ্তিমায়ী দোয়াকে ও হাত উঠানোকে অস্বীকার করেছেন, কিন্তু জানাযার পর দোয়া করাকে ঠিকই জায়িয বলেছেন।
[১৪৭২] 
بعد از نماز جنازہ فورا بیٹھ کر کلمہ کلام پڑھنا درست ھے یا نہ؟
الجواب: نماز جنازہ کے بعد فورا اجتماعی طورپر تمام کا بیٹہ کر قرأن کی تلاوت کرنا ثابت نھیں  البتہ اگر کوئی علیحدہ طور پر میت کے لئے دعا وقلاوت کرے تو درست ھے. (خیر الفتاوی ج 3 ص 224)

অর্থঃ- জানাযা নামাযের পর হঠাৎ বসে কালিমা, কালাম পড়া জায়িয কিনা? জাওয়াবঃ জানাযা নামাযের পর হঠাৎ সকলে একত্রে বসে কুরআন তিলাওয়াত করা ছাবিত নেই। তবে যদি কেউ পৃথক পৃথক ভাবে জানাযার পর মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া ও কুরআন তিলাওয়াত করে তা জায়িয রয়েছে।” (খাইরুল ফতওয়া ৩য় জিল্দ ২২৪ পৃষ্ঠা)
[১৪৭৩] 

جنازے کے بعد دعا کرنے ھوتو صفوں کے ترتیب  کو توڑ دیا جائے. اور ھر شخص اپنے طور پر  بغیر ھاتہ اٹھائے دعاکرے تو مضائقہ نھیں. (اختلاف امت اور صراط مستقیم ج 1 ص 122)

অর্থঃ- জানাযার পর দোয়া করতে হলে কাঁতার ভেঙ্গে দিবে এবং প্রত্যেকেই হাত উঠানো ব্যতীত দোয়া করবে। এরূপ করাতে কোন অসুবিধা নেই।” (ইখতিলাফে উম্মত আওর ছিরাতে মুস্তাকীম ১ম জিঃ ১২২ পৃষ্ঠা)
[১৪৭৪] 

شریمت کا حکم یہ ھے کہ جو عبادت اجتماعی طور پر اداگی کئی ھے اس کے بعد تو دعاء اجتما عے طور پر کی جائے مگر جو عبادت الگ الگ اداکی  گئی ھو اسکے بعد دعاء بھی انفر ادی طور پر ھونی چاھیے. (اختلاف امت اور صراط  مستقیم حصہ 1 ص 120)

অর্থঃ- শরীয়তের নির্দেশ হলো যে ইবাদত ইজতেমায়ীভাবে আদায় করা হয় এরপর দোয়া মুনাজাতও ইজতিমায়ীভাবে করবে। আর যে ইবাদত পৃথক পৃথকভাবে করা হয়, এরপর দোয়াও পৃথক পৃথকভাবে করবে।” (ইখতিলাফে উম্মত আওর ছিরাতে মুস্তাক্বীম ১ম হিচ্ছা ১২০ পৃষ্ঠা)         উক্ত দেওবন্দী আলিমের মতে জানাযা যেহেতু জামায়াতের সাথে অর্থাৎ ইজতিমায়ীভাবে আদায় করা হয়, তাই এরপর ইজতিমায়ীভাবে দোয়া করবে। উক্ত ইবারতের দ্বারা মুলতঃ এটাই বুঝানোই হয়েছে।            উল্লিখিত দলীলভিত্তিক আলোচনা দ্বারা অকাট্ট ও সুস্পষ্টভাবেই প্রমাণিত হলো যে, মৃত ব্যক্তির মাগফিরাতের জন্য জানাযার পূর্বে, জানাযার পর, দাফনের পূর্বে ও দাফনের পর হাত তুলে  ও সম্মিলিতভাবে দোয়া-মুনাজাত করা জায়িয তো বটেই বরং সুন্নতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সুন্নতে ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম ও সুন্নতে উম্মত। যার প্রমাণ কুরআন শরীফ, হাদীস শরীফশরাহ, ফিক্বাহ্ ও ফতওয়ার কিতাবে রয়েছে। এটাকে হারাম, না

0 Comments: