আল্লাহ কি আসলেই পৃথিবিকে এমন ভাবে স্থির রেখেছেন যাতে তা টলে না যায়
নাস্তিকদের আপত্তি : আল্লাহ কি আসলেই পৃথিবিকে এমন ভাবে স্থির রেখেছেন যাতে তা টলে না যায় (Quran 35:41, 40:64)?
খণ্ডণ : মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
وَالسَّمَاءِ ذَاتِ الْـحُبُكِ ﴿٧﴾
অর্থ : “আর আকাশ, যা পথ ও কক্ষপথ দ্বারা পরিপূর্ণ।” (পবিত্র সূরা জারিয়াহ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৭)
অর্থাৎ মহাবিশ্বের সমস্ত গ্রহ-নক্ষত্রই কক্ষপথে বিচরণশীল। তাই এগুলো যাতে কক্ষচ্যুত না হয় সেজন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি কুদরতীভাবে তা ধরে রেখেছেন। আর এই ক্ষমতাই হলো মহাকর্ষ।
যেমন ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
إِنَّ اللهَ يـُمْسِكُ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضَ أَن تَزُولَا ۚ وَلَئِن زَالَتَا إِنْ اَمْسَكَهُمَا مِنْ اَحَدٍ مِّن بَعْدِهِ ۚ اِنَّهُ كَانَ حَلِيمًا غَفُوْرًا ﴿٤١﴾
অর্থ : “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি আসমান ও যমীনকে ধরে রেখেছেন, যাতে স্থানচ্যুত না হয়। যদি এগুলো স্থানচ্যুত হয়ে যায়, তবে তিনি ব্যতীত কে এগুলো ধরে রাখবে। তিনি সহনশীল ও ক্ষমাপরায়ণ।” (পবিত্র সূরা ফাত্বির শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৪১)
আবার পৃথিবীর ঘূর্ণনের কারণে ভূপৃষ্ঠ যাতে টলে না যায় সে জন্য মহান আল্লাহ পাক পাহাড় সৃষ্টি করে এর ভারসাম্য রক্ষা করেছেন।
যেমন ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
وَجَعَلْنَا فِي الْاَرْضِ رَوَاسِيَ اَن تَـمِيْدَ بِـهِمْ
অর্থ : “আমি পৃথিবীতে পাহাড় রেখে দিয়েছি যাতে তাদেরকে নিয়ে পৃথিবী ঝুঁকে না পড়ে।” (পবিত্র সূরা আম্বিয়া শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩১)
মহান আল্লাহ পাক তিনি অন্যত্র আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاَلْقٰى فِي الْاَرْضِ رَوَاسِيَ اَن تَـمِيْدَ بِكُمْ
অর্থ : “তিনি পৃথিবীতে স্থাপন করেছেন পর্বতমালা, যাতে পৃথিবী তোমাদেরকে নিয়ে ঢলে না পড়ে।” (পবিত্র সূরা লুকমান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১০)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاَلْقَىٰ فِي الْاَرْضِ رَوَاسِيَ اَن تَـمِيْدَ بِكُمْ وَأَنْهَارًا
অর্থ : “এবং তিনি পৃথিবীর উপর পর্বতমালা স্থাপন করেছেন যে, কখনো যেন তা তোমাদেরকে নিয়ে হেলে-দুলে না পড়ে।” (পবিত্র সূরা নাহল শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫)
সুতরাং উপরোক্ত আলোচনা হতে বুঝা গেল যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাবিশ্ব থেকে যাতে পৃথিবী টলে না যায় সেজন্য মহাকর্ষ সৃষ্টি করেছেন আর ভূপৃষ্ঠকে টলে যাওয়া প্রতিরোধের জন্য পাহাড়-পর্বতগুলো গোঁজ বা খিল হিসেবে যমীনে স্থাপন করেছেন।
আর এই ভারসাম্যপূর্ণ পৃথিবীকে মানুষের বসবাসোপযোগী করেছেন বলেই ইরশাদ মুবারক করেন-
اَللهُ الَّذِي جَعَلَ لَكُمُ الْأَرْضَ قَرَارًا وَالسَّمَاءَ بِنَاءً وَصَوَّرَكُمْ فَأَحْسَنَ صُوَرَكُمْ وَرَزَقَكُم مِّنَ الطَّيِّبَاتِ ۚ ذٰلِكُمُ اللهُ رَبُّكُمْ ۖ فَتَبَارَكَ اللهُ رَبُّ الْعَالَمِينَ ﴿٦٤﴾
অর্থ : “মহান আল্লাহ পাক তিনি পৃথিবীকে করেছেন তোমাদের জন্যে বাসোপযোগী বাসস্থান, আকাশকে করেছেন সমুন্নত এবং তিনি তোমাদেরকে আকৃতি দান করেছেন, অতঃপর তোমাদের আকৃতি সুন্দর করেছেন এবং তিনি তোমাদেরকে দান করেছেন পরিচ্ছন্ন রিযিক। তিনি মহান আল্লাহ পাক, তোমাদের রব তায়ালা। বিশ্বজগতের রব তায়ালা মহান আল্লাহ পাক তিনি বরকতময়।” (পবিত্র সূরা মু’মিন শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৬৪)
0 Comments:
Post a Comment