হুযুরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক । (পর্ব- ১১৫-১৩০)

হুযুরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক । (পর্ব- ১২৫-১৩০)



সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক (১১৫)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফকালীন মু’জিযা মুবারক
মহান আল্লাহ পাক তিনি কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ করেন,
قد جاءكم من الله نور وكتاب مبين- يهدى به الله من اتبع رضوانه سبل السلام و يخرجهم من الظلمت الى النور باذنه و يهدبهم الى صراط مستقيم-
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট থেকে নূর (হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনি এবং সুস্পষ্ট কিতাব (কুরআন শরীফ) এসেছেন। যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট হিদায়েত চায় তাদেরকে তিনি ইসলাম তথা পরম শান্তির পথে পরিচালিত করেন এবং উনারই অনুমতিক্রমে অন্ধকার হইতে বের করে তাদেরকে আলোর পথে নিয়ে যান এবং তাদেরকে সরল সঠিক পথে পরিচালিত করেন। (সূরা মায়িদা : আয়াত শরীফ ১৫,১৬)
قد جاءتكم من الله نور
এ আয়াত শরীফ-এ বর্ণিত ‘নূর’ দ্বারা মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বুঝানো হয়েছে। আর কিতাব দ্বারা কুরআন শরীফকে বুঝানো হয়েছে। (দলীল: সর্বোজন মান্য বিশুদ্ধ তাফসীরসমূহ, হাদীছ শরীফ-এর ছহীহ কিতাবসমূহ ও বিশুদ্ধ তারীখসমূহ)
এ সুসজ্জিত সুন্দর করে সাজানো সারা আলম যার জন্য তৈরি হয়েছে হাজারো লক্ষ কোটি বছর তথা সময় ধরে গুছানো হচ্ছে এই আসমান যমীন তথা সারা জাহানকে। সমস্ত মাখলুকাত যাঁর অপেক্ষায় অপেক্ষিত, যে পরশ মনির অপেক্ষায় সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগন উনারা তাকিয়ে ছিলেন, সমস্ত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা যিনার উপর ছলাত-সালাম পাঠে সদারত, সমস্ত মানব, জিন, হাজারাত-সাজারাত, কুল-কায়িনাত চাতক পাখির মতো যাঁর আগমনের অপেক্ষায় চেয়ে আছে। যাঁর তাশরীফ-এ মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বয়ং এবং গোটা সৃষ্টি সকলেই অভিভুত। এরই মাঝে হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার নূরানী হুজরা শরীফ-এ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম উনার মুবারক কোলে প্রকাশ হলেন অর্থাৎ তাশরীফ আনলেন নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! সময়টি ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ, পবিত্র সোমবার শরীফ ৫৭০ ঈসায়ী খ্রিষ্টাব্দ সুবহে ছাদিক-এর সময়। যেই দিনটি সমস্ত কায়িনাতবাসীর নিকট সাইয়্যিদুল আইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিসেবে মাশহুর। যা পালন করা প্রতিটি মুসলমান নর-নারী তথা গোটা কায়িনাতবাসীর জন্য ফরয ওয়াজিব।
স্মরণীয় যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ-এর সময়টি কায়িনাতবাসীর নিকট সবচেয়ে বেশি স্মরণীয় দিন, সবচেয়ে বড় ঈদের দিন, খুশির দিন তথা যা ছিলো সবচেয়ে সুমহান মু’জিযা শরীফ-এর অন্তর্ভুক্ত। শবে মীলাদ তথা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ-এর যে সমস্ত মু’জিযা ও খুছুছিয়াত প্রকাশ পেয়েছে সে সম্পর্কে এখানে আলোচনা করা হবে। ইনশাআল্লাহ! (ইনশাআল্লাহ চলবে)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক (১১৬)
 সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফকালীন মু’জিযা মুবারক
হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে,
عن حضرت حسان بن ثابت رضى الله تعالى عنه قال انى لغلام يفعة ابن سبع سنين او ثمان أعقل ما رايت وسمعت اذا يهودى بيثرب يصرخ ذات غداة على اطمه يا معشر يهود فاجتمعوا اليه وانا اسمع قالوا ويلك مالك؟ قال طلع نجم احمد الذى ولد به فى هذه الليلة.
অর্থ: হযরত হাসসান ইবনে ছাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি সাত-আট বছরের বালক ছিলাম। তখন আমি দেখতে পেলাম এবং শুনতে পেলাম একদিন এক ইয়াহুদী একটি টিলায় আরোহন করে মদীনা শরীফ-এর ইহুদীদের ডাক দিলো। তারা সমবেত হয়ে জিজ্ঞাস করলো, কি ব্যাপার আমাদেরকে কেনো ডেকেছো? ওই ইহুদী লোকটি বললো, আজ রাত্রিতে হযরত ‘আহমদ’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিলাদত শরীফ লাভ করেছেন। উনার ‘নূর মুবারক’ উদিত হয়েছে। (বাইহাক্বী, আবূ নায়ীন, খাছায়িছুল কুবরা ১ম জিলদ ৭৮ পৃষ্ঠা)
অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে,
عن حضرت عثمان بن أبى العاص رضى الله تعالى عنه قال حدثتنى امى انها شهدت ولادة آمنة أم رسول الله صلى الله عليه وسلم ليلة ولدته قالت فما شىء انظر اليه فى البيت الا نور وانى لانظر الى النجوم تدنو حتى انى لاقول ليقعن على، فلما وضعت خرج منها نور اضاء له البيت والدار حتى جعلت لا أرى الا نورا.
অর্থ: হযরত উছমান ইবনে আবূল আছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার মা আমাকে বলেছেন যে, যখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম উনার কোল মুবারকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিলাদত শরীফ লাভ করলেন তখন আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম। ওই মুবারক সময় আমি উনার হুজরা শরীফ-এ নূর ব্যতীত আর কিছু দেখি নাই অর্থাৎ হুজরা শরীফ-এর চারদিক নূর মুবারক-এর আলোকে উদ্ভাসিত হয়ে গিয়েছিলো। নিশ্চয়ই আমি দেখতে পেলাম সমস্ত তারকারাজী এমনভাবে ঝুঁকে পড়েছিলো মনে হচ্ছিলো যেনো আমার উপরই আছড়ে পড়বে। অতঃপর হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম উনার জিসম মুবারক থেকে একখানা নূর মুবারক উদিত হলো যার ফলে সারা হুজরা শরীফ নূরে নূরানীময় হয়ে উঠলো। সুবহানাল্লাহ! (বাইহাক্বী, তিবরানী, আবূ নায়ীম, ইবনে আসাকির, খছায়িছুল কুবরা) (ইনশাআল্লাহ চলবে)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক (১১৭)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফকালীন মু’জিযা মুবারক
অন্য হাদীছ শরীফ-এ আরো এসেছে,
عن حضرت عرباض بن سارية رضى الله تعالى عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال انى عبد الله وخاتم النبيين وان آدم لمنجدل فى طينته وسأخبركم عن ذلك دعوة أبى ابراهيم عليه السلام وبشارة حضرت عيسى عليه السلام ورؤيا امى التى رأت، وكذلك امهات النبيين يرين، وأن ام رسول الله صلى الله عليه وسلم رأت حين وضعته نورا أضاءت له قصور الشام.
অর্থ: হযরত ইরবাজ ইবনে সারিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই আমি তখন থেকে আল্লাহ পাক উনার আবদ তথা হাবীব এবং আমি খাতামুন নাবিইয়ীন তথা আখিরী নবী নিশ্চয়ই যখন হযরত আদম আলাইহিস সালাম তিনি মৃত্তিকায় অবস্থান করছিলেন। তোমাদের নিকট খবর পৌঁছেছে ওই ব্যাপারে যে আমি হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার দোয়া মুবারক, আমি হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সুসংবাদ এবং আমি আমার মা (হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম) উনার স্বপ্ন মুবারক। যা আমার সম্মানিত মা জননী তিনি মুবারক স্বপ্ন দেখেছেন অনুরূপ স্বপ্ন হযরত নবী রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের জননীগণ উনারাও দেখেছিলেন। মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ-এর ক্ষনে উনার সম্মাণিত মা হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম তিনি এক নূর মুবারক দেখতে পান। সেই নূর মুবারক-এর আলোয় শাম তথা সিরিয়ার রাজ প্রাসাদ আলোকিত হয়েছিলো। সুবহানাল্লাহ! (আহমদ, বাযযার, তিবরানী, হাকিম, বাইহাক্বী, আবূ নায়ীম, খাছায়িছুল কুবরা)
হাদীছ শরীফ-এ এসেছে,
عن حضرت ابن عباس رضى الله تعالى عنهما ان حضرت آمنة عليها السلام قالت لقد علقت به فما وجدت له مشقة حتى وضعته، فلما فصل منى خرج معه نور أضاء له ما بين المشرق الى المغرب، ثم وقع على الأرض معتمدا على يديه، ثم اخذ قبضة من تراب فقبضها ورفع رأسه الى السماء.
অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই হযরত সাইয়্যিদাতুনা আমিনা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে আমার রেহেম শরীফ-এ ধারণ করার পর উনার বিলাদত শরীফ পর্যন্ত আমার কোন কষ্ট অনুভব হয়নি। অতঃপর তিনি যখন যমীনে তাশরীফ নিলেন তখন উনার সাথে একখানা নূর মুবারক উদিত হলো, যার ফলে পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্ত তথা সমস্ত কায়িনাত আলোকিত হয়ে গেলো। পবিত্র বিলাদত শরীফ-এর সময় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার হাত মুবারক দ্বারা মাটিতে ভর দেন। অতঃপর এক মুষ্টি মাটি নিয়ে হাত মুবারক বন্ধ করেন এবং আসমানের দিকে তাকিয়ে থাকেন।” সুবহানাল্লাহ! (খাছায়িছুল কুবরা ১ম জিলদ ৭৯ পৃষ্ঠা, ইবনে সা’দ, ইবনে আসাকির) (ইনশাআল্লাহ চলবে)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক (১১৮)
 সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফকালীন মু’জিযা মুবারক
হাদীছ শরীফ-এ আরো এসেছে,
عن حضرت أبى العجفاء رضى الله تعالى عنه عن النبى صلى الله عليه وسلم قال رأت امى حين وضعتنى سطع منها نور أضاءت له قصور بصرى.
অর্থ: হযরত আবূল আজফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, আমি যখন যমীনে তাশরীফ নিলাম তখন আমার মাতা তিনি আপন জিসম মুবারক থেকে একখানা সুমহান নূর মুবারক জাহির হতে দেখেন যার ফলে সেই নূর মুবারক সিরিয়ার রাজপ্রাসাদসমূহ আলোকিত করে ফেললো। (খাছায়িছুল কুবরা, ইবনে সা’দ)
আরো বর্ণিত রয়েছে,
عن ام المؤمنين حضرت ام سلمة عليها السلام عن سيدتنا حضرت آمنة عليها السلام قالت لقد رأيت ليلة وضعته نورا اضاءت له قصور الشام حتى رأيتها.
অর্থ: উম্মুর মু’মিনীন হযরত উম্মু সালামাহ আলাইহাস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম উনার বরাতে বলেন, হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিলাদত শরীফ লাভের সেই রাত্রি মুবারক-এ আমি একখানা নূর মুবারক প্রকাশ পেতে দেখি। যে নূর মুবারক-এর আলোতে সিরিয়ার রাজ প্রাসাদ পর্যন্ত আলোকিত হয়ে যায়, যার ফলে আমি সিরিয়ার রাজপ্রাসাদসমূহ দেখতে পাই। (খছায়িছুল কুবরা, আবূ নায়ীম)
অন্য বর্ণনায় আরো ইরশাদ হয়েছে,
قالت سيدتنا حضرت آمنة عليها السلام رايت كانه خرج من فرجى شهاب أضاء له الارض حتى رايت قصور الشام.
অর্থ: হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, আমি দেখলাম যে, আমার জিসম মুবারক থেকে একখানা নূর মুবারক প্রকাশ পেলো। তখন উনার সেই নূর মুবারক-এ সারা যমীন আলোকিত হয়ে গেলো। এমনকি আমি সেই নূর মুবারক-এর আলোয় সিরিয়ার রাজপ্রাসাদসমূহ স্পষ্ট দেখতে পেলাম। সুবহানাল্লাহ! (খাছায়িছুল কুবরা, আবূ নায়ীম)
হাদীছ শরীফ-এ আরো এসেছে,
عن حضرت اسحاق بن عبد الله رحمة الله عليه ان ام رسول الله صلى الله عليه وسلم قالت لـما ولدته خرج من فرجى نور اضاء له قصور الشام فولدته نظيفا ما به قذر، ووقع الى الارض وهو جالس على الارض بيده.
অর্থ: হযরত ইসহাক ইবনে আব্দুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত মাতা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, ‘যখন আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিলাদত শরীফ লাভ করেন তখন আমার জিসিম বা শরীর মুবারক থেকে একখানা নূর মুবারক জাহির হলো যার আলোয় সিরিয়ার রাজপ্রাসাদ আলোকিত হয়ে যায়। আর তিনি সম্পূর্ণ পাক পবিত্র অবস্থায় যমীনে আগমন করেন যার মধ্যে বিন্দু থেকে বিন্দু মাত্র কোনো অপবিত্রতা ছিলো না। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যমীনে তাশরীফ নিয়ে মাটিতে হাত মুবারক রাখা অবস্থায় যমীনে বসা ছিলেন। (খাছায়িছুল কুবরা ১ম জিলদ ৭৯ পৃষ্ঠা, ইবনে সা’দ) (ইনশাআল্লাহ চলবে)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক (১১৯)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফকালীন মু’জিযা মুবারক
হযরত কা’ব আহবার রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবসমূহে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা-ছিফত এভাবে ছিলো
محمد رسول الله صل الله عليه وسلم مولده بمكة ومهاجره بيثرب وملكه بالشام-
অর্থ: নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মক্কা শরীফ-এ বিলাদত শরীফ লাভ করবেন, ইয়াছরিব বা মদীনা শরীফ-এ হিজরত করবেন এবং উনার কর্তৃত্ব হবে শাম তথা সিরিয়ার উপর অর্থাৎ সারা জাহানে।
অর্থাৎ মক্কা শরীফ থেকে সিরিয়া পর্যন্ত সমস্ত এলাকা উনার বিছাল শরীফ-এর পূর্বেই ইসলাম-এর ছায়াতলে আশ্রয় নিবে। এজন্য দেখা গেছে সিরিয়া উনার দুনিয়াবী হায়াত মুবারকেই বিজিত হয়েছিলো। কোনো কোনো ইমাম মুজতাহিদগণ উনারা বলেন, এজন্য নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ-এর সময় সিরিয়ার প্রাসাদসমূহ দেখানো হয়েছিলো। আর সিরিয়ার একটি অন্যতম শহর বসরাকে বিশেষভাবে দেখানো হয়েছিলো, অর্থাৎ সিরিয়ার যে স্থানে সর্বপ্রথম হিদায়েতের নূর পৌঁছবে তা হচ্ছে বসরায়।
আরো বর্ণিত রয়েছে, উপরোল্লিখত হাদীছ শরীফসমূহে বিশেষভাবে সিরিয়াকে দেখানোর উদ্দেশ্য এটাও হতে পারে যে চল্লিশজন-এর মধ্যে ত্রিশজন ছিলেন আবদাল, যাঁরা হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার দ্বীন বা ধর্মের অনুসারী ছিলেন। উনাদের সবারই অবস্থান ছিলো সিরিয়ায়। এ সম্পর্কের কারনেই সিরিয়ার উপর হিদায়েতের নূর প্রকাশ করা হয়েছে। পবিত্র মি’রাজ শরীফ-এ সফরকালে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মক্কা শরীফ থেকে সিরিয়া অর্থাৎ মসজিদে আকসা পর্যন্ত ছফর করেন। যে প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন,
سبحان الذى اسراى بعبده ليلا من المسجد الحرام الى المسجد الاقصا الذى بركنا حوله-
অর্থ: “পুতঃপবিত্র মহান আল্লাহ পাক উনার যিনি হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত রাত্রি বেলায় কিছু সময় ছফর করিয়েছেন, যার চতুপার্শ্ব আমি বরকতময় করেছি।” (সূরা বানী ইসরায়ীল : আয়াত শরীফ ১)
প্রকাশ থাকে যে, সিরিয়ার রাজ্য যা মসজিদে আকসা-এর চারপার্শ্বে অবস্থিত। মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে বিশেষ বরকত, রহমত ছড়িয়ে দিয়েছেন। আর বনী ইসরাইল-এর নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের অনেকেই মসজিদে আকসা তথা সিরিয়ায় অবস্থান করেছেন। তবে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ-এর সময় সিরিয়ার রাজ প্রাসাদ দেখার কারণ মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা সবচেয়ে বেশি ভালো জানেন। (সীরাতুল মুস্তফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
(ইনশাআল্লাহ চলবে)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক (১২০)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফকালীন মু’জিযা মুবারক
হাদীছ শরীফ-এ আরো এসেছে,
عن حضرت موسى بن عبيدة رضى الله تعالى عنه عن اخيه قال لما ولد رسول الله صلى الله عليه وسلم فوقع الى الارض وقع على يديه رافعا رأسه ألى السماء وقبض قبضة من التراب بيده فبلغ ذلك رجلا من لهب، فقال لصاحب الخبر لئن صدق هذا الفأل ليغلبن هذا المولود اهل الارض.
অর্থ: হযরত মূসা ইবনে উবায়দা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ভাই থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ লাভের সময় মাটিতে হাত মুবারক রাখেন এবং আসমানের দিকে তিনি মাথা মুবারক উত্তোলন করেন এবং উনার হাত মুবারক-এ এক মুষ্টি মাটি তুলে নেন। অতঃপর যখন এই খবর বনী লাহাব-এর নিকট পৌঁছলো তখন তাদের মধ্যে একজন বললো, যদি এই খবর সত্যিই হয় তাহলে সারা যমীনবাসী উনার অনুসারী হবে। সুবহানাল্লাহ! (খাছায়িছুল কুবরা ১ম জিলদ, ৮০ পৃষ্ঠা)
হাদীছ শরীফ-এ এসেছে,
عن حضرت عبد الرحمن بن عوف رضى الله تعالى عنه عن امه الشفاء بنت عمرو بنت عوف رضى الله تعالى عنها قالت لما ولدت امنة رسول الله صلى الله عليه وسلم وقع على يدى فاستهل، فسمعت قائلا يقول رحمك الله ورحمك ربك. قالت الشفاء فاضاء لى ما بين المشرق والمغرب حتى نظرت الى بعض قصور الروم، قالت ثم البسته واضجعته فلم انشب ان غشيتنى ظلمة ورعب وقشعريرة عن يمينى فسمعت قائلا يقول اين ذهبت به قال الى المغرب واسفر ذلك عنى ثم عاودنى الرعب والظلمة والقشعريرة عن يسارى فسمعت قائلا يقول اين ذهبت به؟ قال الى المشرق، قالت فلم يزل الحديث منى على بال حتى ابتعثه الله، فكنت فى اول الناس اسلاما.
অর্থ: হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আউফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি উনার আম্মা আশশিফা বিনতে আমর ইবনে আউফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ আমার হাত মুবারকে হয়েছে। উনার মুখমন্ডল মুবারক নূরীময় উজ্জ্বল ছিলো। অতঃপর আমি অদৃশ্য থেকে কোন ব্যক্তিকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আপনার প্রতি মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত, আপনার প্রতি আপনার রব মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত। হযরত শিফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি বলেন, অতঃপর আমার সামনে মাশরিক ও মাগরিব তথা পূর্ব-পশ্চিম আলোকিত হয়ে গেলো। এরপর আমি রোম-এর কিছু প্রাসাদও দেখতে পেলাম।
রাবী বলেন, অতঃপর আমি নূরে হাবিবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জান্নাতি কাপড় মুবারক পড়া অবস্থায় শুইয়ে দিলাম। কিছুক্ষণ পর আমার মধ্যে তমসা ও ভীতির একটি পর্দা যেনো পড়ে গেলো এবং আমার শরীর-এ কম্পন এসে গেলো। আমি শুনতে পেলাম কেউ যেনো বলছেন, আপনি উনাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন। জাওয়াব এলো, মাগরিব তথা পশ্চিম প্রান্তে। এরপর আমার থেকে এই অবস্থা কেটে গেলো। অতঃপর পূর্বের অবস্থা আমার মধ্যে আচ্ছন্ন করে নিলো ভয়-ভীতি, অন্ধকার ও কম্পন। আবার শুনতে পেলাম কেউ যেনো বলছেন, উনাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন? জাওয়াব এলো মাশরিক বা পূর্ব দিকে। হযরত শিফা বিনতে আমর ইবনে আউফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুষ্ঠানিক নুবুওওয়াত প্রকাশ পর্যন্ত এই কথা-বার্তা আমার অন্তরে বারবার উদয় হতে থাকে। তিনি যখন উনার আনুষ্ঠানিক নুবুওওয়াত প্রকাশ করলেন আমি তখন সর্বপ্রথম দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করলাম। (খাছায়িছুল কুবরা ১ম জিলদ ৭০ পৃষ্ঠা, আবূ নায়ীম)
(ইনশাআল্লাহ চলবে)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক (১২১)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফকালীন মু’জিযা মুবারক
হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে,
عن حضرت عمرو بن قتيبة رضى الله تعالى عنه قال : سمعت أبى و كان من أوعية العلم قال لـما حضرت ولادة امنة عليها السلام قال الله لملائكته افتحوا ابواب السماء كلها وأبواب الجنان كلها، وامر الله الملائكة بالحضور، فنـزلت تبشر بعضها بعضا، وتطاولت جبال الدنيا، وارتفعت البحار وتباشر أهلها، فلم يبق ملك إلا حضر وأخذ الشيطان فغل سبعين غلا وألقى منكوسا في لجة البحر الخضراء، وغلت الشياطين والمردة، وألبست الشمس يومئذ نورا عظيما، وأقيم على رأسها سبعون الف حوراء في الهواء ينتظرون ولادة حضرت محمد صلى الله عليه وسلم، وكان قد أذن الله تلك السنة لنساء الدنيا أن يحملن ذكورا كرامة لمحمد صلى الله عليه وسلم، وان لا تبقى شجرة إلا حملت ولا خوف إلا عاد أمنا، فلما ولد النبى صلى الله عليه وسلم امتلأت الدنيا كلها نورا وتباشرت الملائكة، وضرب في كل سماء عمود من زبرجد، وعمود من ياقوت قد استنار به فهى معروفة فى السماء قد راها رسول الله صلى الله عليه وسلم ليلة الإسراء، قيل هذا ما ضرب لك استبشارا بولادتك، وقد انبت الله ليلة ولد على شاطىء نهر الكوثر سبعين الف شجرة من المسك الأذفر جعلت ثمارها بخور أهل الجنة، وكل اهل السموات يدعون الله بالسلامة، ونكست الأصنام كلها، وأما اللات والعزى فإنهما خرجا من خزانتهما وهما يقولان ويح قريش جاءهم الأمين جاءهم الصديق لا تعلم قريس ماذا اصابها، وأما البيت فأياما سمعوا من جوفه صوتا وهو يقول الان يرد على نورى الان يجيئنى زوارى، الان أطهر من انجاس الجاهلية، أيتها العزى هلكت، ولم تسكن زلزلة البيت ثلاثة ايام ولياليهن، وهذا اول علامة رأت قريش من مولد رسول الله صلى الله عليه وسلم
অর্থ: হযরত আমর ইবনে কুতুইবা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আমার পিতার নিকট থেকে শুনেছি। তিনি বলেন, যখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম উনার সন্তান নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু উনার বিলাদত শরীফ-এর সময় উপস্থিত হলো তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের নির্দেশ দিলেন তোমরা আসমানের সমস্ত দরজাগুলো খুলে দাও এবং জান্নাতেরও সমস্ত দরজাগুলো খুলে দাও। অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার সামনে সমস্ত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের উপস্থিত হতে আদেশ দিলেন। অতঃপর হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা মুবারক খুশির সংবাদ একে অপরকে দিতে দিতে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট হাযির হতে লাগলেন। ওই সময় সমস্ত পাহাড়গুলো আরো সুউচ্চ হয়ে গেলো এবং সমুদ্রগুলো স্ফীত হয়ে গোলো। এসবের অধিবাসীরা একে অপরকে খুশির সুসংবাদ দিচ্ছিলো। সমস্ত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা হাজির হয়ে গেলেন মহান আল্লাহ পাক উনার সামনে এবং এ দিনের সম্মানার্থে ইবলিস শয়তানকে সত্তরটি শিকল পরিয়ে (লাজ্জাতুল বাহরিল খদ্বরা) বা তাকে কাম্পিয়ান সাগরে উপুর করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিলো। সমস্ত অবাধ্য, দুষ্ট তথা ইবলিস শয়তানের সমস্ত চেলাদের শৃঙ্খলাবদ্ধ করে রাখা হলো। সূর্যকে ওই দিন অসাধারণ নূর বা আলো প্রদান করা হলো এবং তার প্রান্তে শুন্য পরিম-লে সত্তর হাজার হুরকে দাঁড় করানো হলো। যাঁরা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ-এর অপেক্ষায় অপেক্ষিত ছিলেন। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে মহান আল্লাহ পাক তিনি সে বছর পৃথিবীর সকল নারীর জন্য পুত্র সন্তান নির্ধারণ করে দিলেন এবং নির্দিষ্ট করে দিলেন। এটাও নির্ধারণ করলেন যে, কোন বৃক্ষ ফলবিহীন থাকতে পারবে না এবং যেখানে অশান্তি, ফেৎনা-ফ্যাসাদ রয়েছে সেখানে শান্তি ও সস্থি স্থাপিত হয়ে যাবে।
অতঃপর যখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিলাদত শরীফ লাভ করলেন তখন সমস্ত পৃথিবী তথা সারা আলম নূরে পরিপূর্ণ হয়ে গেলো এবং ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা একে অপরকে মুবারকবাদ জানালেন। প্রতিটি আসমানে পদ্মরাগ মনি ও চুনির স্তম্ভ নির্মিত হলো। ফলে আকাশ আলোকিত হয়ে গেলো। নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র মী’রাজ শরীফ-এর রাত্রি মুবারক-এ এসব স্তম্ভ দেখতে পান তখন উনাকে বলা হলো যে, এসব স্তম্ভ আপনার বিলাদত শরীফ-এর ক্ষনে সুসংবাদ বা খুশি প্রকাশার্থে নির্মিত হয়েছিলো। সুবহানাল্লাহ!
যে রাত্রি মুবারক-এ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিলাদত শরীফ লাভ করেন মহান আল্লাহ পাক তিনি তখন হাওজে কাউছার-এর কিনারে সত্তর হাজার মেশক আম্বরের বৃক্ষ সৃষ্টি করেন এবং এসবের ফলক বা পত্ররাজিতে জান্নাতীগণদের সুগন্ধি সাব্যস্ত করেন। সে রাত্রি মুবারক-এ সমস্ত আসমান-এর অধিবাসীগণ নিরাপত্তার জন্য দোয়া করেন। সকল প্রতিমা বা মূর্তি উপুড় হয়ে ভেঙ্গে পড়ে গেলো।
তারা বলাবলি করতে থাকেন, কুরাইশদের মধ্যে ‘আল আমীন’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আগমন করেছেন। ছিদ্দীক্ব তথা নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এসেছেন অথচ কুরাইশদের মধ্যে কিছু সংখ্যক লোকের জানা নেই যে কি আজ ঘটে গেলো। পবিত্র কা’বা শরীফ থেকে কয়েকদিন পর্যন্ত এই আওয়াজ ভেসে আসতে থাকে। কেউ যেনো বলছেন, এখন পূর্ণচন্দ্র আগমন করেছেন, এখন আমার যিয়ারতকারীরা আমার দিকে আগমন করবেন। এখন আমি জাহিলিয়াতের তথা অন্ধকার থেকে পুত ও পবিত্র হয়ে যাবো। হে উযযা! তোমার ধ্বংস এসে গেছে। পবিত্র কা’বা শরীফ-এ ভূকম্পন তিনদিন ও তিন রাত হওয়ার পর তা শেষ হলো।
এটা ছিলো পবিত্র বিলাদত শরীফ-এর প্রথম নিদর্শন যা কুরাইশরা তথা সারা মাখলুকাত অবলোকন করেছিলো। (খাছায়িছুল কুবরা ১ম জিলদ ৮০-৮১ পৃষ্ঠা, আবূ নায়ীম) (ইনশাআল্লাহ চলবে)

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক (১২২)
 সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফকালীন মু’জিযা মুবারক

হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে,
عن حضرت ابن عباس رضى الله تعالى عنه قال كان من دلالات حمل رسول الله صلى الله عليه وسلم ان كل دابة كانت لقريش نطقت تلك الليلة وقبلت حمل برسول الله صلى الله عليه وسلم ورب الكعبة وهو امان الدنيا وسراج اهلها، ولم تبق كاهنة فى قريش ولا فى قبيلة من قبائل العرب الا حجبت عن صاحبتها وانتزع علم الكهنة منها، ولم يبق سرير ملك من ملوك الدنيا الا اصبح منكوسا والملك مخرسا لا ينطق يومه ذلك ومرت وحش المشرق الى وحش المغرب بالبشارات، وكذلك اهل البحار يبشر بعضهم بعضا له فى كل شهر من شهورة نداء فى الارض ونداء فى السماء ان ابشروا فقد ان لابى القاسم ان يخرج الى الارض ميمونا مباركا.
অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে উনার মা হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম তিনি রেহেম শরীফ-এ ধারণ করার নিদর্শনসমূহের মধ্যে একটি হচ্ছে, কুরাইশদের প্রতিটি জীব-জন্ত্রু সেই রাত্রি মুবারক-এ বলেছিলো, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিলাদত শরীফ লাভ করেছেন। তারা বলছিলো, পবিত্র কা’বা শরীফ-এর রব-এর কসম! তিনি যমীনে তাশরীফ নিয়েছেন অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! তিনি হচ্ছেন যমীনবাসীর নিরাপত্তা দানকারী তথা শান্তি দানকারী এবং যমীনবাসীর জন্য প্রদীপ বা আলো। সেই মুবারক রাত্রিতে কুরাইশদের সমস্ত গণক নারীদের সঙ্গীনি জিন আত্মগোপন করে এবং গনক বা অতিন্দ্রীয়বাদীদের বিদ্যা খতম হয়ে যায়। দুনিয়ার সকল বাদশাহদের সিংহাসন ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। সে দিন সমস্ত রাজা-বাদশারা বোবা হয়ে যায়। পূর্বপ্রান্তের জীব-জন্ত্রু পশ্চিমপ্রান্তের জীব-জন্ত্রুদের নিকট শুভসংবাদ পৌঁছাতে থাকে। এভাবে সমুদ্রের প্রাণীকুলও একে অপরকে সুসংবাদ দিতে থাকে। সুবহানাল্লাহ! আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিতা জননীর রেহেম শরীফ-এ অবস্থানকালে প্রত্যেক মাস অতিবাহিত হওয়ার পর আসমানে ও যমীনে ঘোষনা করা হতো শুভ খুশির সংবাদ। এখন হযরত আবূল কাসিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কল্যান, বরকত ও রহমত নিয়ে যমীনে তাশরীফ এনেছেন। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক (১২৩)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফকালীন মু’জিযা মুবারক
قال وبقى فى بطن امه تسعة اشهر كملا لا تشكو وجعا ولا ريحا ولا مغصا ولا ما يعرض للنساء ذوات الحمل، وهلك ابوه حضرت عبد الله عليه السام وهو فى بطن امه، فقالت الملائكة. الهنا وسيدنا بقى نبيك هذا يتيما. فقال الله تعالى انا له ولى وحافظ ونصير وتبركوا بمولده فمولده حضرت ميمون عليها السلام مبارك، وفتح الله تعالى لمولده ابواب السماء وجنانه. فكانت حضرت آمنة عليها السلام تحدث عن نفسها وتقول اتانى ات حين مربى من حمله ستة اشهر فوكزنى برجله فى المنام وقال لى يا حضرت آمنة عليها السلام انك قد حملت بخير العالمين طرا فاذا ولدتيه فسميه محمدا صلى الله عليه وسلم،
অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার সম্মানিতা মাতা হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম উনার রেহেম শরীফ-এ পূর্ণ নয় মাস অবস্থান করেন। কিন্তু উনার সম্মানিতা মাতা উনার পেট মুবারক-এ কোনো ব্যাথা বা অস্থিরতা অনুভব করেননি। সুবহানাল্লাহ! এমন কোনো আলামত হয়নি যা অন্যান্য মহিলাদের গর্ভাবস্থায় হয়ে থাকে। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মাণিতা মা জননীর রেহেম শরীফ-এ অবস্থানের সময় উনার সম্মানিত পিতা সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বিছাল শরীফ লাভ করেন। এতে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা বললেন, হে আল্লাহ পাক! আমাদের রব আপনার সর্বশ্রেষ্ঠ নবী আপনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইয়াতীম হয়ে গেলেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, আমি উনার অভিভাবক, হিফাযতকারী, সাহায্যকারী বা মদদগার তথা হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। হে কায়িনাতবাসী, হে জিন-ইনসান, ফেরেশতারা! তোমরা উনার বিলাদত শরীফ থেকে বরকত হাছিল করো তথা ওই দিন উপলক্ষে সর্বোত্তমভাবে খুশি প্রকাশ করো। আর উনার বিলাদত শরীফ হচ্ছে খুবই বরকতময়।
অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ-এর সময় আসমান এবং জান্নাতের সমস্ত দরজা খুলে দেন। সাইয়্যিদাতুনা হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম তিনি নিজের সম্পর্কে বলেছেন, আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার রেহেম শরীফ-এ অবস্থানের ছয় মাস অতিবাহিত হওয়ার পর আমার নিকট একজন আগন্তুক এসে নিদ্রায় আমার পা মুবারক-এ চুমু খেয়ে বললো, হে হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম আপনি সারা আলমের বা সারাবিশ্বের মনোনীত ব্যক্তিত্বকে রেহেম শরীফ-এ ধারণ করেছেন। যখন তিনি বিলাদত শরীফ লাভ করবেন তখন উনার নাম মুবারক রাখবেন ‘মুহম্মদ’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক (১২৪)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফকালীন মু’জিযা মুবারক
فكانت تحدث عن نفاسها وتقول لقد اخذنى ما ياخذ النساء، ولم يعلم بى احد من القوم، فسمعت وجبة شديدة وامرا عظيما فهالنى ذلك، فرأيت كان جناح طير ابيض قد مسح على فؤادى، فذهب عنى كل رعب وكل وجع كنت اجد، ثم التفت فاذا انا بشربة بيضاء لبنا، وكنت عطشى، فتناولتها فشربتها فاضاء منى نور عال، ثم رايت نسوة كالنخل الطوال، كانهن من بنات عبد مناف يحدقن بى، فبينا انا اعجب واذا بديباج ابيض قد مد بين السماء والارض، واذا بقائل يقول خذوه من اعين الناس، قالت ورايت رجالا قد وقفوا فى الهواء بايديهم اباريق فضة، ورايت قطعة من الطير قد اقبلت حتى غطت حجرى مناقيرها من الزمرد، واجنحتها من اليواقيت، فكشف الله عن بصرى وابصرت تلك الساعة مشارق الارض ومغاربها، ورايت ثلاث اعلام مضروبات علما فى المشرق وعلما فى المغرب وعلما على ظهر الكعبة، فاخذنى المخاض، فولدت محمدا صلى الله عليه وسلم،
অর্থ: সাইয়্যিদাতুনা হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম তিনি নিজের নিফাস বা পবিত্রতা সম্পর্কে বলেন। আমার তাই হয়েছে যা অন্যান্য মহিলাদের হয়ে থাকে। কিন্তু কোনো কাওম বা সম্প্রদায়ের কেউ তা জানতে পারেনি। এরপর আমি ভীষণ গড়গড় শব্দ শুনতে পাই এবং ভীত হয়ে পড়ি। দেখতে পাই, যেনো কোন সাদা পাখির পাখা আমার অন্তর মুবারক স্পর্শ করছে। যার ফলে আমার সমস্ত ভয় ও কষ্ট দূর হয়ে গেলো। সাদা দুধে পূর্ণ একটি পেয়ালা রাখা আছে। আমি পিপাসার্থ ছিলাম তাই পাত্রটি তুলে আমি পান করে নিলাম। এরপর আমার শরীর মুবারক থেকে একখানা খুবই উজ্জল নূর মুবারক জাহির হলো, আমি দেখতে পেলাম কয়েকজন মহিলাকে। যাঁরা খেজুর গাছের ন্যায় লম্বায় দীর্ঘ ছিলেন। মনে হচ্ছিলো উনারা আবদে মানাফ পরিবারের কন্যা। উনারা আমাকে গভীরভাবে দেখতে লাগলেন। অতঃপর আমি আশ্চার্যবোধ করছিলাম। এমন সময় একটি কিংখাব (ফুলকাটা জরিদার রেশমী বস্ত্র) আসমান ও যমীনের মধ্যস্থলে ছড়িয়ে পড়লো। তখন তাদের মধ্যে কেউ বললেন, উনাকে মানুষের দৃষ্টি থেকে আড়ালে নিয়ে যাও।
হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, আমি দেখলাম কিছু লোককে যাঁরা শুন্য মন্ডলে রূপার পাত্র (বদনা) হাতে নিয়ে দন্ডায়মান ছিলো এরপর দেখলাম পাখিদের একটি ঝাঁক আসলো এবং আমার কোল মুবারককে আবৃত করে নিলো। তাদের চঞ্চুরগুলো ছিলো পান্নার মরকতের এবং পাখাগুলো ছিলো ইয়াকুত বা চুনার। অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি আমার দৃষ্টির সামনে সমস্ত কিছু উম্মুক্ত করে দিলেন। যার ফলে আমি যমীনের পূর্ব পশ্চিম সবই দেখতে পেলাম। আরো দেখতে পেলাম তিনটি ঝান্ডা উড্ডীয়মান। একটি পূর্বপ্রান্তে, দ্বিতীয়টি পশ্চিমপ্রান্তে ও তৃতীয়টি পবিত্র কা’বা শরীফ-এর ছাদ মুবারকে। এরপর যখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমনের সময় হলো তখন আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিলাদত শরীফ লাভ করলেন।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক (১২৫)

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফকালীন মু’জিযা মুবারক
فلما خرج من بطنى نظرت اليه فاذا انا به ساجدا قد رفع اصبعيه كالمتضرع المبتهل، ثم رايت سحابة بيضاء قد اقبلت من السماء حتى غشيتة، فغيب عن وجهى وسمعت مناديا ينادى طوفوا بمحمد شرق الارض وغربها وادخلوه البحار ليعرفوه باسمه ونعته وصورته، ويعلمون انه سمى فيها الماحى لا يبقى شىء من الشرك الا محى فى زمنه ثم تجلت عنه فى السرع وقت فاذا انا به مدرج فى ثوب صوف ابيض وتحته حريرة خضراء، وقد قبض على ثلاثة مفاتيح من اللؤلؤ الرطب، واذا قائل يقول قبض حضرت محمد صلى الله عليه وسلم على مفاتيح النصرة، ومفتيح الريح، ومفاتيح النبوة، ثم اقبلت سحابة اخرى يسمع منها صهيل الخيل وخفقان الا جنحة حتى غشية فغيب عن عينى، فسمعت مناديا ينادى طوفوا بمحمد صلى الله عليه وسلم الشرق والغرب، وعلى مواليد النبيين واعرضوه على كل روحانى من الجن والانس والطير والسباع.
অর্থ: অত:পর যখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যমীনে তাশরীফ নিলেন তখন আমি উনাকে সিজদারত দেখলাম। আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিনীতভাবে আঙ্গুল মুবারক উত্তোলন করে রেখেছিলেন। এরপর আমি দেখলাম আকাশে একটা সাদা মেঘ এসে আকাশকে আচ্ছন্ন করে নিলো। অতপর কিছুক্ষণ পর তা অদৃশ্য হয়ে গেলো। অতপর আমি শুনতে পেলাম ‘মুহম্মদ’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পূর্ব পশ্চিমে নিয়ে যাও এবং সমুদ্রে নিয়ে যাও। যাতে সমস্ত সৃষ্টিই উনার পরিচয় লাভ করতে পারে উনার নাম মুবারক আকার-আকৃতি ও গুনাবলী তথা উনার সুমহান ছানা-ছিফত সম্পর্কে ওয়াকিফ হয় এবং তারা সকলেই জানতে পারে তিনি ‘মাহী’ অর্থাৎ তিনি সমস্ত কুফর শিরক ও জাহিলয়াত ইত্যাদি ধ্বংসকারী। আর তিনি সমস্ত শিরককে মিটিয়ে দিবেন। এর পরক্ষণেই উনাকে আমি একটি সাদা পশমী কাপড় মুবারক-এ জড়িত দেখলাম। নিচে ছিলো সবুজ রেশম। আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বহু মূল্যবান ধাতু নির্মিত তিনটি চাবি হাত মুবারক-এর মুঠিতে ধরে রেখেছেন। কোন একজন বললেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সমস্ত সাহায্যের চাবিকাঠি ধারণ করেছেন দ্বিতীয়তঃ তিনি বাতাস তথা বায়ু মন্ডলের চাবি ধারণ করেছেন, তৃতীয়তঃ নুবুওওয়াত তথা রিসালতের চাবিকাঠি তিনি ধারণ করেছেন। অতঃপর একখন্ড মেঘ এলো, যার মধ্য থেকে অশ্বের হ্রেষারব এবং পাখা নাড়ানোর শব্দ ভেসে আসছিলো। অতঃপর তা আমার দৃষ্টি মুবারক থেকে অদৃশ্য হয়ে গেলো। এরপর আমি শুনতে পেলাম কেউ যেনো আহ্বান করছে, ডেকে বলছে নূরে হাবীবী, নূরে মুজাসসাম, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে নিয়ে যাও। সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিলাদত শরীফ-এর স্থানসমূহে নিয়ে যাও। জিন, মানব, পশু, পাখি তথা সমস্ত মাখলুকাতের কাছে নিয়ে যাও। অর্থাৎ সমস্ত আলমে উনাকে নিয়ে উনার ছোহবত, রহমত দানে সকলকে ধন্য করো।

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক (১২৬)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফকালীন মু’জিযা মুবারক
واعطوه صفاء حضرت ادم عليه السلام، ورقة حضرت نوح عليه السلام ، وخلة حضرت ابراهيم عليه السلام ، ولسان حضرت اسماعيل عليه السلام ، وبشرى حضرت يعقوب عليه السلام، وجمال حضرت يوسف عليه السلام، وصورة حضرت داود عليه السلام، وصبر حضرت ايوب عليه السلام، وزهد حضرت يحيى عليه السلام، وكرم حضرت عيسى عليه السلام، واعمروه فى اخلاق الانبياء، ثم تجلت عنه فاذا انا به قد قبض على حريرة خضراء مطوية، واذا قائل يقول بخ بخ قبض حضرت محمد صلى الله عليه وسلم على الدنيا كلها لم يبق خلق من اهلها الا دخل فى قبضته، واذا انا بثلاثة نفر فى يد احدهم ابريق من فضة، وفى يد الثانى طست من زمرد اخضر، وفى يد الثالث حريرة بيضاء فنشرها، فاخرج منها خاتما تحار ابصار الناظرين دونه فغسله من ذلك الابريق سبع مرات، ثم ختم بين كتفيه بالخاتم، ولفه فى الحريرة، ثم حمله فادخله بين اجنحته ساعة ثم رده الى.
অর্থ: নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে পেয়েছেন হযরত আদম আলাইহিস সালাম ‘ছফী’ (পবিত্রতা, সম্মান), হযরত নূহ আলাইহিস সালাম তিনি পেয়েছেন ন¤্রতা বা কোমলতা, হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি পেয়েছেন খলীলিয়াত বা বন্ধুত্ব, হযরত ইসমাইল আলাইহিস সালাম তিনি পেয়েছেন লিসান বা ভাষা হযরত ইয়াকুব আলাইহিস সালাম তিনি পেয়েছেন সুসংবাদ, হযরত ইউসূফ আলাইহিস সালাম তিনি পেয়েছেন অশেষ সৌন্দর্য্য, হযরত দাউদ আলাইহিস সালাম তিনি পেয়েছেন সুমিষ্ট কণ্ঠস্বর, হযরত আইয়ুব আলাইহিস সালাম তিনি পেয়েছেন ছবর, হযরত ইয়াহইয়া আলাইহিস সালাম তিনি পেয়েছেন অমুখাপেক্ষিতা এবং হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম তিনি পেয়েছেন বেমেছাল সম্মান-ইজ্জত। আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের মূল। উনার আখলাক সুমহান চরিত্র মুবারক থেকে সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম একটা অংশ লাভ করেছেন অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মত হচ্ছেন সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! অতপর এই অবস্থা চলে গেলো। অতঃপর আমি আমার আওলাদ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু উনার সবুজ জিসম মুবারক-এ রেশমী পোশাক মুবারক জড়িত বা পড়ানো দেখলাম। একজন কায়িল বা ব্যক্তি বললো, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সারা দুনিয়া তথা সারা আলম দখল করে নিয়েছেন। সারা সৃষ্টির প্রতিটি বস্তু উনার হাত মুবারক-এর মুঠিতে চলে গেছে। এরপর তিনজন ব্যক্তি আসলো। তাদের একজনের হাতে রূপার পাত্র (বদনা) আরেকজনের হাতে সবুজ যামরাদ (পান্না)-এর সবুজ প্লেট এবং তৃতীয়জনের হাতে সাদা রেশম রয়েছে। অতঃপর সেটা খুলে সে একটি খুবই সুন্দর মনোমুগ্ধকর আংটি বের করলো। (বদনা) পাত্র-এর পানি দিয়ে আংটিটি সাতবার ধৌত করতঃ সেটি দিয়ে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দু’কাঁধ মুবারক-এর মধ্যস্থলে মহরে নুবুওওয়াত অঙ্কন করে দিলেন। অতঃপর কিছু সময় আপন পাখায় আবৃত রেখে আমাকে ফিরিয়ে দিলেন। (খাছায়িছুল কুবরা ১ম জিলদ, ৮১, ৮২, ৮৩ পৃষ্ঠা)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক (১২৭)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফকালীন মু’জিযা মুবারক
হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে,
حضرت الحافظ ابو زكريا يحي بن عاءذ رحمة الله عليه فى مولده صلى الله عليه وسلم عن ابن عباس رضى الله تعالى عنه ان حضرت امنة علها السلام كانت تحدث عن يوم ميلاده، وما رأت من العجائب قالت بينا انا اعجب اذا بثلاثة نفر ظننت ان الشمس تطلع من خلال وجوههم بيد احدهم ابريق فضة، وفى ذلك الابريق ريح كريح المسك، وفى يد الثانى طست من زمردة خضراء عليها اربعة نواحى على كل ناحية من نواحيها لؤلؤة بيضاء، واذا قائل يقول هذه الدنيا شرقها وغربها وبرها وبحرها فاقبض ياحبيب الله صلى الله عليه وسلم على اى ناحية شئت منها قالت فدرت لانظر اين قبض من الطست فاذا هو قد قبض على وسطها فسمعت القائل يقول قبض حضرت محمد صلى الله عليه وسلم على الكعبة ورب الكعبة اما ان الله قد جعلها له قبلة ومسكنا مباركا ورأيت بيد الثلث حريرة بيضاء مطوية طيا شديدا فنشرها فاذا فيها خاتم تحار ابصار الناظرين دونه، ثم جاء الى فتناوله صاحب الطست فغسل بذلك الابريق سبع مرات ثم ختم بين كتفيه بالخاتم ختما واحدا ولفه فى الحريرة مربوطا عليه بخيط من المسك الاذفر، ثم حمله فدخله بين اجنحتة ساعة.
قال حضرت ابن عباس رضى الله تعالى عنه كان ذلك رضوان خازن الجنان، وقال فى اذنه كلاما لم افهمه وقال ابشر يا حضرت محمد صلى الله عليه وسلم فما بقى لنبى صلى الله عليه وسلم علم الا وقد اعطيته فانت اكثرهم علما واشجعهم قلبا، معك مفاتيح النصرة قد البست الخوف والرعب لا يسمع احد بذكرك الا وجل فؤاده وخاف قلبه، وان لم يرك يا خليفة الله.
অর্থা: “হযরত হাফিয আবূ যাকারিয়া ইয়াহইয়া ইবনে আয়িয রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মীলাদ বা বিলাদত শরীফ প্রসঙ্গে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণনা করেন যে, “হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম তিনি উনার আওলাদ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ দিবস সম্পর্কে আশ্চর্য ঘটনাবলী বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, আমি ওই দিন বি¯œয়কর কিছু অবলোকন করেছিলাম, এমতাবস্থায় তিনজন ব্যক্তি আগমন করলেন তাদের সৌন্দর্য দেখে মনে হচ্ছিল। সূর্য যেনো উনাদের মুখম-ল থেকে উদিত হচ্ছে। উনাদের একজনের হাতে রূপার বদনা (পাত্র) ছিলো যা থেকে মেশক আম্বরের খুশবু ভেসে আসছে। দ্বিতীয় জনের হাতে যমরুদ বা পান্নার সবুজ চতুস্কোণ প্লেট ছিলো। প্রত্যেক কোনে একটি করে সাদা মোতি জড়ানো ছিলো। অতঃপর কেউ বলছিলো এটি সারা আলম এর পূর্ব-পশ্চিম পানি ও স্থল। আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে লক্ষ্য করে বলা হলো, হে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এটি ধারণ করুন আপনি যেভাবে পছন্দ করুন, হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, একথা শুনে আমিও ঘুরে গেলাম ইহা দেখার জন্য যে, তিনি কোন দিক ধরেন। তিনি মাঝখানে ধরলেন অত:পর। আওয়াজ এলো পবিত্র কাবা শরীফ-এর ক্বসম নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কা’বা শরীফ ধারণ করেছেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য পবিত্র কা’বা শরীফকে ক্বিবলা ও উনার পবিত্রতম বাসস্থান নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আমি দেখতে পেলাম তৃতীয় জনের হাতে খুব উত্তমরূপে ভাজ করা একটি সাদা রেশমী বস্ত্র রয়েছেন। অতঃপর তিনি কাপড়টি খুললেন এবং তার ভিতর থেকে একটি খুবই সুন্দর সুশ্রী আংটি বের করলেন, এরপর আমার দিকে এগিয়ে আসলেন। প্লেট ওয়ালা ব্যক্তি আংটি নিয়ে সাতবার (বদনা) পাত্র-এর পানি দ্বারা ধৌত করলেন। এরপর ইহা নিয়ে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দু’কাঁধ মুবারক-এর মাঝখানে নবুওওয়াত-এর মোহর একে দিলেন। অত:পর সেটি রেশমে ভাজ করে তাতে মেশক-এর সূতা বেঁধে দিলেন। অত:পর আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিলাদত শরীফ লাভ করলেন-এবং কিছুক্ষন তিনি আপনা হতে ছফর করলেন। হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, ওই ব্যক্তি ছিলেন জান্নাতের রিদ্বওয়ান বা রক্ষী ফেরেশতা। এই ফেরেশতা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কর্ণ মুবারক-এ কিছু বললেন। যা আমি ফিকির করিনি। অতপর আল্লাহ পাক তিনি বললেন, হে আমার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপানাকে সুসংবাদ। সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের চেয়ে অনেক অনেক ইলম আপনাকে আমি হাদিয়া করেছি। আপনি উনাদের মধ্যে সর্বাধিক প্রজ্ঞাবান এবং সর্বাধিক সাহসী অন্তর তথা সর্বাধিক থেকে। আপনার নিকট গোটা সৃষ্টির সমস্ত কিছুরই কামিয়াবীর চাবিকাঠি। আপনাকে সবচেয়ে অধিক ব্যক্তিত্ব ও জাকজমক বা সৌন্দর্যতা হাদিয়া করা হয়েছে। হে আল্লাহ পাক উনার খলীফা’ হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাফির-মুশরিক তাথা বিধর্মীরা যখন আপনার ইলম বা নাম মুবারক শুনবে আপনাকে না দেখে থাকলেও তার অন্তর কেঁপে উঠবে।” (খাছায়িছুল কুবরা-জিলদ ১ম পৃষ্ঠা ৮৪)
(ইনশাআল্লাহ চলবে)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক (১২৮)
 সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফকালীন মু’জিযা মুবারক
হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে,
عن حضرت عائشة عليها السلام قالت كان يهودى قد سكن مكة يتجر بها، فلما كانت الليلة التي ولد فيها رسول الله صلى الله عليه وسلم قلا في مجلس من قريش : يا معشر قريش هل ولد فيكم الليلة مولود؟ فقال القوم والله ما نعلمة. قال احفظوا ما اقول لكم ولد هذه الليلة نبى هذه الأمة الأخيرة بين كتفيه علامة فيها شعرات متواترات كأنهن عرف فرس لا يرضع ليلتين، وذلك ان عفريتا من الجن أدخل اصبعه في فمه فمنعه الرضاع، فتصدع القوم من مجلسهم وهم يتعجبون من قوله، فلما صاروا إلى منازلهم اخبر كل انسان منهم أهله، فقالوا قد ولد لعبد الله بن حضرت عبد المطلب عليه السلم غلام سموه محمدا صلى الله عليه وسلم، فالتقى القوم جتى جاءوا اليهودى فاخبروه الخبر. قال فاذهبوا معي حتى انظر اليه فخرجوابه حتى أدخلوه على حضرت امنة عليها السلام فقال اخرجى إلينا ابنك فخرجته وكشفوا له عن ظهره، فرأى تلك اشامة، فوقع اليهودل مغشيا عليه، فلماا أفاق قالوا ويلك ما لك؟ قال والله ذهبت النبوة من بنى اسرائيل أفرحتم به يا معشر قريش أما والله ليسطون بكم سطوة يخرج خبرها من المشرق إلى المغرب.
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়শা ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, একজন ইহুদী ব্যক্তি সে মক্কা শরীফ-এ বসবাস করতো এবং ব্যবসা-বানিজ্য করতো। আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ-এর রজনী মুবারক-এ সে কুরাইশদের মজলিসে এসে বললো, হে কুরাইশগণ! আজ এই রাত্রি মুবারক-এ আপনাদের মধ্যে কোন সন্তান বিলাদত শরীফ লাভ করেছেন কি? কুরাইশগণ বললেন, আমাদের জানা নেই। তখন ওই ইহুদী বলল, জেনে রাখবেন আজ রাত্রি মুবারক-এ আখিরী উম্মতদের নবী, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিলাদত শরীফ লাভ করবেন। উনার দু’কাঁধ মুবারক-এর মাঝে কিছুু চুল মুবারক রয়েছে যা নবুওওয়াতের আলামত বা চিহ্ন। এই সম্মানিত সন্তান তিনি দু’দিন দুধ পান করবেন না। কেননা, জিন বা উনার উম্মতের মুখে আঙ্গুল রেখে থাকে। কুরাইশগণ আশ্চর্যবোধ করে মজলিশ ত্যাগ করলো। উনারা আপন আপন ঘরে পৌঁছে গৃহে লোকজন তথা আহাল-ইয়ালদের নিকট এই সুসংবাদের কথা বললেন। গৃহের লোকজন বললেন, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত পুত্র সন্তান বিলাদত শরীফ লাভ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! উনারা উনার নাম মুবারক রেখেছেন মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আলাইহি ওয়া সাল্লাম। অতঃপর কুরাইশরা ইহুদীর কাছে পৌঁছে এই মুবারক সুসংবাদ জানিয়ে দিলেন। সে ইহুদী বলল, আমাকে উনার নিকট নিয়ে চলুন। আমি এই পবিত্র ছেলে সন্তান উনাকে দেখতে চাই? সে মতে কুরাইশগণ তাকে হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম উনার বাড়িতে নিয়ে গেলো এবং সম্মানিত শিশু সন্তান উনাকে দেখাতে বলল। হযরত মা আমিনা আলাইহাস সালাম তিনি উনার সম্মানিত সন্তান উনাকে দেখালেন। তারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম উনার পিঠ মুবারক খুলে সেখানে একটি তিলের ন্যায় আলামত বা চিহ্ন দেখতে পেলো ইহা দেখে ওই ইহুদী ব্যক্তির জ্ঞান হারিয়ে গেলো। কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরে এলো। কুরাশগণ জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার কি হয়েছে? সে বললো বনী ইসরায়ীল থেকে নবুওওয়াতের ধারা বন্ধ হয়ে গেছে। আপনাদের এতে ঈদ, বা আনন্দ করা অবশ্যক মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! নূরে মুজাসসম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম উনি এমন বিজয়ী হবেন যে, উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, ছানা-ছিফত-এর খবর পূর্ব পশ্চিম তথা সারা আলমে ছড়িয়ে পড়বে।” সুবহানাল্লাহ! (খছায়িছুল কুবরা ১ম জিলদ পৃষ্ঠা নং ৮৪-৪৫, ইবনে সাদ, হাকিম, বায়হাক্বী, আবূ নায়ীম) (ইনশাআল্লাহ চলবে)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক (১২৯)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফকালীন মু’জিযা মুবারক
হাদীছ শরীফ-এ আরো বর্ণিত রয়েছে,
عن حضر ابي الحكم التنوحى رحمة الله عليه قال كان المولود إذاولد فى قريش دفعوه إلى نسوة من قريش الى الصبح فكفأن عليه برمة، فلما ولد رسول الله صلى الله عليه وسلم دفعه حضرت عبد المطلب عليه السلام إلى نسوة يكفئن عليه برمة، فلما أصبحن أتين فوجدن البرمة قد انفلقت عنه باثنتين، فوجدنه مفتوح العينين شاخصا ببصره إلى السماء، فأتاهن حضرت عبد المطلب عليه السلام فقلن له ما رأينا مولودا مثله وجدناه قد انفلقت عنه البرمة ووجدناه مفتوحا عينه شاخصا ببصره إلى السماء، فقال احفظنه فإنى أرجو ان يصيب خيرا، فلما كان اليوم السابع ذبح عنه ودعا له قريشا، فلما أكلوا قالوا يا حضرت عبد المطلب عليه السلام : ما سميته؟ قال سميته محمدا صلى الله عليه وسلم، قالوا فما رغبت به عن أسماء اهل بيتك. قال اردت ان يحمده الله في السماء وخلقه فى الأرض.
অর্থ: “হযরত আবুল হাকাম তানূখী রহমতুল্লাহি উনার থেকে বর্ণিত তিনি বলেন কুরাইশদের মধ্যে কোন শিশু দুনিয়াতে আগমন করলে তাকে হাঁড়ি দেয়ার জন্যে মহিলাদের হাতে সোপর্দ করা হতো। তারা শিশুকে সকাল পর্যন্ত হাঁড়ির নিচে রাখতো। সে মতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ যখন হলো সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম উনাকে মহিলাদের নিকট সোপর্দ করলেন। সকাল হলো তারা দেখলো যে, হাঁড়ি দ্বিখন্ডিত হয়ে গেছে এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উভয় চক্ষু মুবারক খোলা রেখে আসমানের দিকে তাকিয়ে আছেন। মহিলারা হযরত আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম উনাকে বললো, আমরা এমন কোন শিশু কখনও দেখিনি। যার উপর হাঁড়ি ভেঙ্গে গেছে এবং আমরা উনাকে আসমানের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখেছি। হযরত আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনাকে হিফাযত করবেন। আমি উনার খইর তথা ভালাই কামনা করছি।  (ইনশাআল্লাহ চলবে)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক (১৩০)
 সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফকালীন মু’জিযা মুবারক
হাদীছ শরীফ-এ আরো বর্ণিত রয়েছে,
عن حضرت عكرمة رضى الله تعالى عنه قال لما ولد النبى صلى الله عليه وسلم اشرقت الارض نورا، وقال ابليس لقد ولد الليلة ولد يفسد علينا امرنا، فقال له جنوده فلو ذهبت اليه فخبلته، فلما دنا من النبى صلى الله عليه وسلم بعث الله حضرت جبرئيل عليه السلام فركضه ركضة فوقع بعدن-
অর্থ: হযরত ইকরামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ-এর সময় সারা যমীন নূরে নূরানীময় তথা নূরের আলোয় ভরে যায়। ইহা দেখে ইবলিস বললো, আজ রাত্রি মুবারকে এমন একজন সম্মানিত রসূল আগমন করেছেন যিনি আমাদের সমস্ত কাজ-কারবার ধুলিস্যাত করে দিবেন। অতঃপর ইবলিসের এক সহচর তাকে বললো, তাহলে তুমি যাও এবং উনার জ্ঞান-বুদ্ধি বা আকল নষ্ট করে দিয়ে আসো। নাঊযুবিল্লাহ!
অতঃপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকটবর্তী হলো ইবলিস তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনাকে প্রেরণ করলেন। তিনি এসে ইবলিসকে সজোরে লাথি মারলেন। অতঃপর সে (ইবলিস) আদন নামক স্থানে যেয়ে পতিত হলো। (খাছায়িছুল কুবরা ১ম জিলদ ৮৬ পৃষ্ঠা)
হাদীছ শরীফ-এ আরো এসেছে,
عن حضرت معروف بن خربوذ رضى الله تعالى عنه قال كان ابليس يخرق السموات السبع، فلما ولد حضرت عيسى عليه السلام حجب من ثلاث سموات، فكان يصل الى اربع، فلما ولد رسول الله صلى الله عليه وسلم حجب من السبع قال وولد يوم الاثنين حين طلع الفجر.
অর্থ: হযরত মা’রূফ ইবনে খরবূজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইবলিস সে সপ্ত আকাশ পর্যন্ত যেতে পারতো। অতঃপর হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি যখন বিলাদত শরীফ লাভ করলেন তখন তিন আসমানে ইবলিসের যাতায়াত বা প্রবেশাধিকার রহিত হয়ে গেলো। বাকি চার আসমানে সে যাতায়াত করতে পারতো। অতঃপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন বিলাদত শরীফ লাভ করলেন তখন (উনার সম্মানার্থে) ইবলিসের জন্য সপ্ত তথা সব আসমানের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হলো। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র সোমবার শরীফ সোবহে সাদিকের সময় বিলাদত শরীফ লাভ করেন। (খছায়িছুল কুবরা ১ম জিলদ ৮৭ পৃষ্ঠা) (ইনশাআল্লাহ চলবে)

0 Comments: