খাসী, বলদ ইত্যাদি দ্বারা পবিত্র কুরবানী করা দুরস্ত ও শরীয়তসম্মত
তো অবশ্যই বরং খাছ সুন্নত উনার অন্তর্ভুক্ত :
পবিত্র হাদীছ
শরীফ উনার মধ্যে ও ফিক্বাহ্র কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে, কোন প্রাণীর কোন এক অঙ্গ যেমন- কান, লেজ ইত্যাদির এক তৃতীয়াংশের বেশী নষ্ট হয়ে গেলে তা দ্বারা কুরবানী
করা জায়িয নেই। কোন কোন ক্ষেত্রে যেমন দাঁত অর্ধেকের বেশী যদি থাকে, তাহলে তা দিয়ে কুরবানী করা দুরুস্ত রয়েছে।
এ উছূলের
উপর ক্বিয়াস করে কোন কোন আলিম নামধারী মূর্খ ও গুমরাহ লোকেরা বলে থাকে যে, খাসী ও বলদ ইত্যাদি প্রাণী দ্বারা কুরবানী করলে নাকি কুরবানী
দুরুস্ত হবেনা। নাঊযুবিল্লাহ! অথচ এ ধরণের ক্বিয়াস অশুদ্ধ, নাজায়িয এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বিরোধী। কেননা স্বয়ং মহান
আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজে খাসী কুরবানী করেছেন। যা পবিত্র
হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ جَابِرٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ ذَبَحَ الِنَّبُّى صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ الذَّبْحِ كَبْشَيْنِ أَقْرَنَيْنِ اَمْلَحَيْنِ مَوْجَوْئَيْنِ.
অর্থ : “হযরত
জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
এক কুরবানী উনার দিন সাদা-কালো মিশ্রিত রঙ্গের শিং বিশিষ্ট খাসীকৃত দু’টি তাজা দুম্বা
কুরবানী করলেন।” (আবূ দাঊদ শরীফ)
কাজেই, এ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয়, খাসী এবং খাসীকৃত প্রাণী কুরবানী করা জায়িয তো বটেই বরং খাস
সুন্নত উনার অন্তর্ভুক্ত। খাসী করার কারণে প্রাণীর মধ্যে ছূরতান (প্রকাশ্য) যে ত্রুটি
বা খুঁত হয়, সেটা শরয়ী ত্রুটি বা খুঁতের অন্তর্ভুক্ত
নয়।
**********************************
খাসীকৃত পশু কুরবানী করা খাছ সুন্নত মুবারক
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن حضرت جابر رضى الله تعال عنه قال ذبع النبى صلى الله علعة وسلم يوم الذبح كبشين اقرنين املحين موجوئين فلما وجههما قال انى وجهت وجهى الّذى فطر السموت والارض على ملة ابراهيم حنيفا وما انا من المشركين ان صلوتى ونسكى ومحياى ومماتى لله رب العالمين لاشريك له وبذلك أمرت وانا من المسلمين اللهم منك ولك عن محمد وامته بسم الله والله اكبر ثم ذبح رواه احمد وابو داود وابن ماجة والدارمى وفى رواية لاحمد وابى داود والترمذى ذبح بيده وقال بسم الله والله اكبر اللهم هذا عنى وعمن لم يضح من امتى .
অর্থ:- “হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এক পবিত্র কুরবানী উনার দিনে দুটি ধূসর রংয়ের শিংওয়ালা খাসীকৃত দুম্বা যবেহ করলেন এবং যখন উনাদেরকে ক্বিবলামুখী করলেন, বললেন- আমি আমার চেহারাকে ফেরালাম উনার দিকে যিনি আসমানসমূহ ও যমীনকে সৃষ্টি করেছেন, সকল দিক হতে বিমুখ হয়ে এবং নিজকে হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত দ্বীন উনার উপর প্রতিষ্ঠিত করে, আর আমি মুশরিকদের অন্তর্গত নই (যারা দেব-দেবীর নামে যবেহ করে থাকে)। উপরন্তু আমার নামায, আমার কুরবানী, আমার অবস্থান বা হায়াত ও আমার মউত বা ইনতেকাল সবই বিশ্বজগতের পালনকর্তা মহান আল্লাহ পাক উনার উদ্দেশ্যে। উনার কোনো শরীক নেই। আমি এর জন্য আদিষ্ট হয়েছি এবং আমি মুসলমানদের (আত্মসমর্পণকারীদের) অন্তর্গত। আয় আল্লাহ পাক! আপনার পক্ষ হতেই প্রাপ্ত এবং আপনারই জন্য উৎসর্গিত। আপনি কবুল করুন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ হতে এবং উনার উম্মতগণের পক্ষ হতে। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ‘বিসমিল্লাহি ওয়াল্লাহু আকবর’ বলে যবেহ করলেন।” (আহমদ শরীফ, আবূ দাউদ শরীফ, ইবনে মাজাহ শরীফ, দারিমী শরীফ)
আবু দাউদ শরীফ, আহমদ শরীফ ও তিরযিমী শরীফ উনাদের মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আপন হাত মুবারকে যবেহ করলেন এবং বললেন, ‘বিসমিল্লাহি ওয়াল্লাহু আকবর’। আয় আল্লাহ পাক! এটা আমার পক্ষে এবং আমার উম্মতগণের মধ্যে যারা পবিত্র কুরবানী করতে পারেনি তাদের পক্ষে কবুল করুন।”
উল্লিখিত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, খাসীকৃত পশু কুরবানী করা শুধু জায়িযই নয়, বরং খাছ সুন্নত মুবারক। পাশাপাশি উল্লিখিত দোয়া মুবারক পাঠ করে উল্লিখিত নিয়মে নিজ হাতে পশু কুরবানী করা খাছ সুন্নত মুবারক বলে প্রমাণিত হলো।
************************************************************************
0 Comments:
Post a Comment