প্রশ্ন :
জামাতে নামায পড়ার সময় ইমাম সাহেবের তাশাহহুদ পড়া শেষ হলেও মোক্তাদির তাশাহহুদ
পড়তে বিলম্ব হলে সেক্ষেত্রে মোক্তাদি তাশাহ্হুদ পড়া শেষ করে সালাম ফিরাবে নাকি
ইমাম সাহেবের সাথেই সালাম ফিরাতে হবে?
উত্তর :
দোয়ায়ে মাছুরাসহ পূর্ণ আত্তাহিয়্যাতু পড়া ইমামের সাথে সাথে মোক্তাদির উপরও ওয়াজেব।
সেমতে কোন মোক্তাদির আত্তাহিয়্যাতু, দোয়ায়ে মাছুরা শেষ হওয়ার আগেই যদি
ইমামের পড়া শেষ হয়ে যায় এবং ইমাম সালাম ফিরিয়ে ফেলেন, তবুও
মোক্তাদিকে আত্তাহিয়্যাতু ও দোয়ায়ে মাছুরা পড়া শেষ করে ছালাম ফিরাতে হবে।
আর
সেপ্টেম্বর/৯৬ সংখ্যায় নিম্নবর্ণিত প্রশ্নোত্তর ছাপা হয়-
প্রশ্ন :
জামাতে নামায পড়ার সময় আমার আত্তাহিয়্যাতু ও দোয়ায়ে মাছুরা শেষ হওয়ার আগেই যদি
ইমাম সাহেব সালাম ফিরায়ে ফেলেন, তবে আমি কি করবো?
উত্তর :
আত্তাহিয়্যাতু ও দোয়ায়ে মাছূরা শেষ করার পর সালাম ফিরাবেন।
এখন আমার
সুওয়াল হলো, মাসিক মদীনার পর পর দু’টি সংখ্যায় একই বিষয়ে প্রায় একই রকম উত্তর প্রদান করায়, এটাই
বুঝা যাচ্ছে যে, আত্তাহিয়্যাতু-এর ন্যায় “দরূদ শরীফ ও দোয়ায়ে মাছূরা” পাঠ করা ওয়াজিব। সত্যিই কি উক্ত
অবস্থায় মোক্তাদিদের জন্য দরূদ শরীফ ও দোয়ায়ে মাছূরা পাঠ করা ওয়াজিব বা
অত্যাবশ্যকীয়? নির্ভরযোগ্য দলীলের ভিত্তিতে ফায়সালা প্রদান করে আমিসহ সকলের সন্দেহ ও সংশয়
দূর করবেন বলে আশাবাদী।
জাওয়াব :
মাসিক মদীনার উক্ত উত্তর অশুদ্ধ, ভুল ও এ সম্পর্কিত নির্ভরযোগ্য সকল ফতওয়ার খেলাফ হয়েছে।
এ
মাসয়ালার সঠিক উত্তর হলো- দরূদ শরীফ ও দোয়ায়ে মাছুরা পড়া নামাযের মধ্যে কারো জন্য ওয়াজিব
নয়, হোক সে ইমাম বা মোক্তাদী অথবা একা নামাযী। বরং নামাযে দরূদ শরীফ ও দোয়ায়ে
মাছুরা পাঠ করা সুন্নত। কাজেই যদি মোক্তাদীর তাশাহহুদ পাঠের পর দরূদ শরীফ ও দোয়ায়ে
মাছুরা পাঠের বা শেষ করার আগেই ইমাম সাহেব সালাম ফিরান, তবে
মোক্তাদীর জন্য ওয়াজিব ইমাম সাহেবের সাথে সালাম ফিরানো। অর্থাৎ দরূদ শরীফ ও দোয়ায়ে
মাছুরা শেষ করার জন্য সালাম ফিরানোর ক্ষেত্রে ইমাম সাহেবের অনুসরণ না করা, ওয়াজিব
তরকের কারণ।
কেননা
মোক্তাদীর জন্য ওয়াজিব হলো- ইমাম সাহেবকে অনুসরণ করা। আর দরূদ শরীফ ও দোয়ায়ে
মাছুরা পাঠ করা হলো সুন্নত। সুতরাং উক্ত অবস্থায় সুন্নত ছেড়ে দিয়ে ওয়াজিব আমল করতে
হবে। তবে যদি মোক্তাদীর তাশাহহুদ শেষ করার পূর্বেই ইমাম সাহেব সালাম ফিরিয়ে ফেলেন, তখন
মোক্তাদীর জন্য তাশাহহুদ শেষ করেই সালাম ফিরাতে হবে। কারণ ইমাম সাহেবের অনুসরণ করা
যেমন মোক্তাদীর জন্য ওয়াজিব, তদ্রুপ তাশাহহুদ পাঠ করাও ওয়াজিব। কাজেই এরূপ ক্ষেত্রে
তাশাহহুদ শেষ করেই সালাম ফিরাতে হবে।
লক্ষণীয়
বিষয় এই যে, মদীনা সম্পাদক অজ্ঞতা ও গোমরাহী হেতু এরূপ একই মাসয়ালা ভুল হওয়া সত্বেও প্রতি
সংখ্যায় ছাপিয়ে সাধারণ লোকদের ঈমান-আমলের বিরাট ক্ষতি করছে। যা কিনা তার অজ্ঞতা ও গোমরাহীকেই
পরিস্ফুটিত করে তোলে। মদীনা সম্পাদকের উচিৎ গোমরাহী থেকে তওবা করা এবং তাহকীক করে
নির্ভরযোগ্য মাসয়ালা প্রদান করা। তবেই গোমরাহী থেকে মুক্ত হয়ে হিদায়েত লাভ করা
সম্ভব। মহান আল্লাহ পাক সকলকে হিদায়েত-এর উপর কায়েম থাকার তৌফিক দান করুন।
(দলীলঃ-
দুররুল মোখতার, গায়াতুল আওতার,
ফতওয়ায়ে আলমগীরী, আইনুল হেদায়া, মারাকিউল
ফালাহ, তানবীরুল আবছার,
শরহে বেকায়া, শরহে মুনিয়া, মাজমাউল
আনহার, নূরুল ইজা, মালাবুদ্দা মিনহু, বেহেস্তি জিওর, ইত্যাদি)
0 Comments:
Post a Comment