সুওয়াল :
ভাড়াকরা জায়গায় জুমুয়া ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের জামায়াত সহীহ হবে কিনা,দলীলসহ
জানিয়ে বাধিত করবেন।
জাওয়াব :
হ্যাঁ, ভাড়াকরা জায়গায় সন্দেহাতীতভাবেই জুমুয়া ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের জামায়াত সহীহ্
হবে। পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করার জন্য তা জামায়াতেই হোক অথবা একাকিই হোক, যেমন
ওয়াক্ফকৃত স্থান শর্ত নয়। তদ্রুপ জুমুয়ার জামায়াত শুদ্ধ হওয়ার জন্য ও আমাদের
হানাফী মায্হাবে ওয়াক্ফকৃত স্থানের শর্তারোপ করা হয়নি। অর্থাৎ যে কোন স্থানে যে
কোন নামায আদায় করলেই সহীহ্। কারণ জুমুয়ার নামায সহীহ্ বা শুদ্ধ হওয়ার শর্ত হলো-
(১) امام
رهنا - ইমাম বা খতীব থাকা, অন্যান্য
নামাযের জন্য যে উপযুক্ত জুমুয়ার নামাযের ইমামতির জন্যও সে উপযুক্ত হবে। সুতরাং
মুসাফির, রোগী ও গোলামের ইমামতিও জায়েয।
(২) جما
عت هونا –
জামায়াত হওয়া, আমাদের হানাফী মাযহাব মতে ইমাম ব্যতীত তিনজন মোক্তাদী হওয়া জামায়াতের জন্য
শর্ত। এবং খুৎবার শুরু থেকে প্রথম রাকায়াতের সিজদা পর্যন্ত তিনজন মোক্তাদী উপস্থিত
থাকতে হবে। অবশ্য সিজদা করার পর মোক্তাদী চলে গেলে জুমুয়া সহীহ্ হবে।
(৩) ظهر
وقت هونا - যোহর
নামাযের সময় হওয়া,
যোহর ওয়াক্ত শুরু হবার পূর্বে ও শেষ হবার পরে জুমুয়ার নামায
পড়লে জুমুয়া সহীহ বা দুরস্ত হবে না। অর্থাৎ যোহর ওয়াক্তের মধ্যেই জুমুয়া পড়তে হবে।
(৪) خطبه
هونا - খুৎবা হওয়া, অর্থাৎ জুমুয়ার ফরয নামাযের পূর্বে
খতীব মুসল্লীদের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে আরবীতে কমপক্ষে এক তাসবীহ্ পরিমাণ পাঠ করবে।
খুৎবা কমপক্ষে এক তাসবীহ্ পরিমাণ পাঠ করা ওয়াজিব। নামাযের পরে খুৎবা পড়লে জুমুয়ার নামায
সহীহ্ হবে না। খুৎবা যোহর ওয়াক্তের মধ্যে হওয়া বাঞ্চনীয়। যোহর ওয়াক্তের পূর্বে বা
পরে খুৎবা পাঠ করলে জুমুয়া সহীহ্ হবে না।
(৫) اذن
عام رهنا -জনসাধারণের প্রবেশাধিকার
থাকা, অর্থাৎ যে স্থানে জুমুয়ার নামায পড়া হবে, সে স্থানে সকলের প্রবেশাধিকার
থাকা চাই।
(৬) شهر
هونا শহর হওয়া, অর্থাৎ
বড় মসজিদের ক্বওল পাওয়া যাওয়া।
মূলত মহান
আল্লাহ পাক উনার রসূল,
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনাকে অন্যান্য হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণ উনাদের উপর যে বিশেষ
ছয়টি ফযীলত দেয়া হয়েছে,
তন্মধ্যে একটি হচ্ছে-
جعلت لى الارض ممجدا وطهورا.
অর্থ : “আমার
জন্য যমিনকে মসজিদ (সিজদার স্থান) এবং পবিত্র করে দেয়া হয়েছে।”
অর্থাৎ মহান
আল্লাহ পাক উনার রসূল,
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার জন্য সারা যমিনকে নামাযের স্থান করে দিয়েছেন।
তবে
ওয়াক্ফকৃত স্থানে নির্মিত মসজিদে জুমুয়া ও পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করাতে যে ফযীলত রয়েছে, তা পাওয়া
যাবেনা। (মুসলিম শরীফ,
শরহে নববী, মেশকাত, মেরকাত, লুময়াত, আশয়াতুল লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, তা’লীকুছ্
ছবীহ্, মোযাহেরে হক্ব,
আইনুল হেদায়া, আলমগিরী, শামী, দুররুল
মোখতার, ফাতহুল ক্বাদীর,
বেনায়া, মাবছূত, তাতারখানিয়া, বাহরুর রায়েক, মারাকিউল
ফালাহ্)
0 Comments:
Post a Comment