১০০টি চমৎকার ঘটনা - পর্ব-৩৯ ( মহিয়সী কন্যা )

মহিয়সী কন্যা-পর্ব-৩৯

একদা হযরত ফারুকে আ'যম আলাইহিস সালাম তিনি নাগরিকদের অবস্থা জানার জন্য পবিত্র নগরী মদীনা শরীফের রাস্তায় ঘুরছিলেন। হঠাৎ এক বাড়িতে এক বৃদ্ধা ও তাঁর কন্যার কথোপকথন শুনে তিনি দাঁড়িয়ে যান। বৃদ্ধা মহিলা তাঁর মেয়েকে বলছেন, 'মা, দুধে পানি মিশিয়ে বিক্রি করলে হয় না? তাহলে আমাদের অবস্থা আরো স্বচ্ছল হতো।' কন্যা তাঁর মায়ের উত্তরে বললেন, 'তা কি করে হয় মা! আমীরুল মু'মিনীন উনার হুকুম কেউ দুধে পানি মেশাতে পারবে না। পবিত্র দ্বীন ইসলাম এটা পছন্দ করে না।' উত্তরে বৃদ্ধা বললেন, 'খলীফা উনার আদেশ হলে তাতে কি হয়েছে? কেউ তো আর দেখছে না।' কন্যা প্রতিবাদ করে বললেন, 'না মা! তা হতে পারে না। প্রত্যেক বিশ্বাসী মুসলমান উনাদের দায়িত্ব-কর্তব্য সম্মানিত খলীফা উনার মুবারক আদেশ মেনে চলা। খলীফা না দেখতে পান, কিন্তু খলীফা উনার যিনি রব মহান আল্লাহ পাক তিনি তো সর্বব্যাপী; তিনি তো দেখতে পাচ্ছেন।'


আমীরুল মু'মিনীন হযরত ফারূক্কে আ'যম আলাইহিস সালাম তিনি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সব কথা শুনলেন, তারপর চলে গেলেন। তিনি ঘটনাটা ভুলতে পারলেন না। ভাবলেন, অজানা ওই মেয়েটিকে কি পুরষ্কার দেয়া যায়! অনেক ভেবে একটা সিদ্ধান্ত নিলেন। পরদিন খিলাফতী দরবার শরীফে এসে খলীফা আলাইহিস সালাম তিনি সেই অজানা মেয়েটিকে ডেকে পাঠালেন। মা ও মেয়ে ভীত সন্ত্রস্ত ও কম্পিত পদে খলীফা উনার মহান দরবার শরীফে এসে উপস্থিত হন। তাঁরা উপস্থিত হলে খলীফা তাঁদের জন্য ভাতা নির্ধারণ করেন এবং মেয়েটিকে উপহারস্বরূপ উনার এক পুত্র হযরত আছিম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সাথে বিবাহ দেন।

পুত্র বিগত রাতের সমস্ত বিবরণ শুনে খুশি হন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার শুকরিয়া আদায় করেন। কেননা এর চেয়ে উপযুক্ত কন্যা আর কোথায় খুঁজে পাওয়া যাবে? এই মহিয়সী মেয়ে উনার ঘরেই হযরত লায়লা বিনতে আছিম রহমাতুল্লাহি আলাইহা বিলাদত শরীফ লাভ করেন, যিনি পরে হযরত উমর বিন আবদুল আযীয রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার ন্যায় মহান খলীফার সম্মানিতা মা হন। সুবহানাল্লাহ!

0 Comments: