মহান আল্লাহ পাক তিনি অমুখাপেক্ষী আর মানুষ মহান আল্লাহ পাক উনার মুখাপেক্ষী। তাই মহান আল্লাহ পাক উনাকে মানুষের প্রয়োজন কিন্তু শুধুমাত্র মানুষ নয় কোন সৃষ্টিরই মহান আল্লাহ পাক উনার প্রয়োজন নেই।
নাস্তিকদের আপত্তি ৯ : আল্লাহকে মানুষের প্রয়োজন (Quran 35:15) নাকি মানুষই আল্লাহর প্রয়োজন (Quran 51:56)?
খণ্ডন : মহান আল্লাহ পাক তিনি অমুখাপেক্ষী আর মানুষ মহান আল্লাহ পাক উনার মুখাপেক্ষী। তাই মহান আল্লাহ পাক উনাকে মানুষের প্রয়োজন কিন্তু শুধুমাত্র মানুষ নয় কোন সৃষ্টিরই মহান আল্লাহ পাক উনার প্রয়োজন নেই। মহান আল্লাহ পাক তিনি মানুষ সহ সমস্ত সৃষ্টিকে সৃষ্টি করেছেন উনার রুবুবিয়ত প্রকাশার্থে।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক (Quran 35:15) করেন-
يَا اَيُّهَا النَّاسُ اَنْتُمُ الْفُقَرَاءُ اِلَى اللهِ ۖ وَاللهُ هُوَ الْغَنِيُّ الْـحَمِيْدُ.
অর্থ : “হে মানুষ! তোমরা তো মহান আল্লাহ পাক উনার মুখাপেক্ষী; কিন্তু মহান আল্লাহ পাক তিনি অভাবমুক্ত, প্রশাংসার্হ।” (পবিত্র সূরা ফাতির শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৫)
অত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় তাফসীরে বর্ণিত রয়েছে-
يا أَيُّهَا النَّاسُ أَنْتُمُ الْفُقَراءُ المحتاجون إِلَى اللَّهِ دائما فى الوجود وتوابعه وفى البقاء وفى النجاة من النار والاثابة بالجنة وغير ذلك وتعريف الفقراء نظرا إلى افتقار سائر الخلائق بالاضافة إلى فقرهم غير معتد به فانه حمل الامانة مع كونه ضعيفا ظلوما جهولا فهو أجوع من غيره وَاللَّهُ هُوَ الْغَنِيُّ اللام للعهد أى المعروف بالاستغناء على الإطلاق والانعام العام على الموجودات الْحَمِيدُ (১৫) فى نفسه مستحق الحمد
‘হে মানুষ! সমগ্র সৃষ্টি তাদের অস্তিত্ব, স্থায়িত্ব ও জীবনোকরণ ইত্যাদির জন্য যেমন মহান আল্লাহ পাক উনার সতত মুখাপেক্ষী, তেমনি তোমরাও। বরং তোমাদের মুখাপেক্ষীতা অন্যান্য সৃষ্টি অপেক্ষা আরো অনেক বেশী। কারণ তোমরা অগ্র-পশ্চাৎ চিন্তা না করেই আমানতের গুরুভারকে শিরোধার্য করেছো। সুতরাং তোমরা তো আপনাপন কর্মের হিসাব প্রদান, আমার অসন্তোষ ও নরাকাগ্নি থেকে নিষ্কৃতিপ্রাপ্তির জন্যও আমার মুখাপেক্ষী। আর আমি দ্যাখো, চিরঅভাবমুক্ত, চিরঅমুখাপেক্ষী, চিরপ্রশংসাভাজন।
এখানে ‘আলগানিম’ (অভাবমুক্ত) শব্দটির অঙ্গীভূত হয়েছে ‘আলিফ লাম’। এভাবে অর্থ দাঁড়িয়েছে- ওই পবিত্র সত্তাই মহান আল্লাহ পাক তিনি, যাঁর অমুখাপেক্ষীতা সুবিদিত এবং উনার মুখাপেক্ষী সৃষ্টির প্রতি উনার দয়াবর্ষণের বিষয়টিও কারো অজানা নয়। আর ‘আল হামীদ’ অর্থ প্রশংসাভাজন। অর্থাৎ সত্তাগতভাবেই তিনি সমগ্র সৃষ্টির প্রশংসা লাভের যোগ্য। (তাফসীরে মাজহারী)
মহান আল্লাহ পাক তিনি অন্যত্র (Quran 51:56) ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَا خَلَقْتُ الْـجِنَّ وَالْاِنْسَ اِلَّا لِيَعْبُدُوْنِ.
অর্থ : “আমার ইবাদত করার জন্যই আমি মানব ও জিন জাতি সৃষ্টি করেছি।” (পবিত্র সূরা যারিয়াত শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৬)
অত্র আয়াত শরীফ উনার দ্বারা নাস্তিকরা অপব্যাখ্যা করার অপচেষ্টা করছে যে, মানুষই মহান আল্লাহ পাক উনার প্রয়োজন। নাঊযূবিল্লাহ! কিন্তু অত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় বর্ণিত রয়েছে-
وَما خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ أى الا لامرهم بعبادتي وادعوهم إليه يعنى للتكليف يؤيده قوله تعالى وَما أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا إِلـهاً واحِداً كذا ذكر البغوي قول على رض قال مـجاهد الا ليعرفوا والكفار أيضا يعرفون وجوده تعالى حيث قال اللّه تعالى ولئن سالتهم من خلقهم ليقولن اللّه وقيل معناه الا ليكونوا عباد إلى أو ليخضعوا لى ويتذللوا ومعنى العبادة فى اللغة التذلل والانقياد وكل مخلوق من الجن والانس خاضع لقضاء اللّه تعالى متذلل لمشيته لا يملك أحد لنفسه خروجا عما خلق له وقيل الا ليوحدون اما المؤمنون فيوحدون فى الشدة والرخاء اما الكافرون فيوحدونه فى الشدة والبلاء دون النعمة والرخاء قال اللّه تعالى وإذا ركبوا فى الفلك دعوا اللّه مخلصين له الدين قال صاحب الـمدارك الكفار كلهم يوحدون اللّه فى الاخرة قال اللّه تعالى ثُمَّ لَمْ تَكُن فِتْنَتُهُمْ إِلَّا أَن قَالُوا وَاللَّـهِ رَبِّنَا مَا كُنَّا مُشْرِكِينَ واشراكهم فى الدنيا وهى بعض أحيان وجودهم لا ينافى كونهم مخلوقين للتوحيد قلت والقول ما قال على رض ما سواه اقوال ضعيفة واهية والذي حملهم على ما قالوا ان ظاهر الآية يقتضى انهم خلقوا مرادا منهم الطاعة وتـخلف مراد اللّه تعالى محال وقد قال رسول اللّه ـ صلى الله عليه وسلم ـ كل ميسّر لـما خلق له وقال اللّه تعالى وَلَقَدْ ذَرَأْنَا لِـجَهَنَّمَ كَثِيْرًا مِّنَ الْـجِنِّ وَالْاِنْسِ وقال الكلبي والضحاك والسفيان هذا خاص لاهل الطاعة من الفريقين يدل عليه قراءة ابن عباس ما خلقت الجن والانس من المؤمنين الا ليعبدون وعندى تاويل الآية ما خلقت الجن والانس الا مستعدين العبادة صالحين لها نظيره قوله ـ صلى الله عليه وسلم ـ ما من مولود الا يولد على الفطرة فابواه يهود انه وينصرانه ويمجسانه كما تنتهج البهيمة جمعاء هل تحسون فيها من جدعاء ثم يقول فطرة التي فطر الناس عليها لا تبديل لخلق اللّه متفق عليه من حديث أبى هريرة وهذا التأويل يناسب تاويل على رض ومقتضى هذه الآية ذم الكفار لاجل اضاعتهم الفطرة السليمة هى اصل الخلقة.
অর্থ : “অত্র আয়াত শরীফ উনার অর্থ হচ্ছে- আমার ইবাদত করে মহাসাফল্য লাভ করবে, এই উদ্দেশ্যেই আমি সৃষ্টি করেছি জ্বিন জাতি ও মানবগোষ্ঠিকে।
একটি সন্দেহ : আলোচ্য আয়াতের ভাষ্যে একথাই প্রতীয়মান হয় যে, জ্বিন ও মানুষ মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদত করবে, এটাই ছিলো মহান আল্লাহ পাক উনার অভিপ্রায়। আর মহান আল্লাহ পাক উনার অভিপ্রায় অপ্রতিরোধ্য। তাহলে বহুসংখ্যক জ্বিন ও মানুষের অবাধ্য হওয়ার ঘটনা কীভাবে ঘটে চলেছে? এর রহস্য কী?
সন্দেহের নিরসন : সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি আলোচ্য আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যা করেছেন এভাবে- আমি জ্বিন ও ইনসানকে এজন্যই সৃষ্টি করেছি যে, আমি তাদেরকে ইবাদতের নির্দেশ দান করবো। এরকম বক্তব্যের উল্লেখ রয়েছে অন্য এক আয়াত শরীফ উনার মধ্যেও। যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَما أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا إِلـهاً واحِداً
‘তাদেরকে কেবল এক উপাস্যের ইবাদতের হুকুম দেওয়া হয়েছে।’
বাগবীও এরকম ব্যাখ্যার উল্লেখ করেছেন। আর মুজাহিদ لِيَعْبُدُونِ (ইবাদত করবে) কথাটির অর্থ করেছেন لِيَعْرِفُوْنِ (মহান আল্লাহ পাক উনার পরিচয় লাভ করবে)। কিন্তু মহান আল্লাহ পাক উনার পরিচয় তো কাফিররাও জানে।
যেমন এক আয়াত শরীফ উনার মধ্যে বলা হয়েছে-
وَلَئِنْ سَأَلْتَهُمْ مَّنْ خَلَقَهُمْ لَيَقُوْلُنَّ اللهُ
“হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি যদি তাদেরকে প্রশ্ন করেন, তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছে কে? তারা বলবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি।”
তাহলে বুঝতে হবে, মহান আল্লাহ পাক উনার সম্পর্কে কাফিরদের ধারণা আর মহান আল্লাহ পাক উনার মা’রিফত এক কথা নয়।
কোনো কোনো আলিম لِيَعْبُدُونِ কথাটির অর্থ করেছেন- যেনো তারা আমার সম্মুখে প্রকাশ করে তাদের অক্ষমতা। হয় অনুগত ও বাধ্য। ইবাদতের আভিধানিক অর্থ অক্ষমতা প্রকাশ করা, বিনয়ী হয়ে যাওয়া। এখানেও ‘ইবাদত’ এর অর্থ এরকমই হবে।
বলাবাহুল্য, বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী সকলেই মহান আল্লাহ পাক উনার সিদ্ধান্তের সম্মুখে একই রকম অক্ষম ও অসহায়। কেউ অথবা কোন কিছ্ইু তাদের সৃষ্টি উদ্দেশ্য ব্যহত করতে পারে না।
কোন কোন ব্যাখ্যাতা বলেছেন, এখানে ইবাদত অর্থ মহান আল্লাহ পাক উনার আনুরূপহীন এককত্বের স্বীকৃতি। যদি তাই হয়, তবে বক্তব্যটি দাঁড়াবে- আমি জ্বিন ও মানুষকে সৃষ্টি করেছি আমার অসমকক্ষ এককত্বের স্বীকৃতি প্রদানের জন্য।
উল্লেখ্য, বিশ্বাসীরা তো সুখে-দুঃখে সর্বাবস্থায় মহান আল্লাহ পাক উনাকে ডাকে। কিন্তু দুঃখ-কষ্টে পড়লে অবিশ্বাসীরাও মহান আল্লাহ পাক উনাকে না ডেকে পারে না। যেমন এক আয়াত শরীফ উনার মধ্যে বলা হয়েছে-
اِذَا رَكِبُوْا فِي الْفُلْكِ دَعَوُا اللهَ مُـخْلِصِيْنَ لَهُ الدِّيْنَ
“যখন তারা নৌযানে আরোহণ করে, তখন যথার্থভাবেই মহান আল্লাহ পাক উনাকে ডাকতে শুরু করে।”
‘মাদারেক’ প্রণেতা লিখেছেন, সকল সত্যপ্রত্যাখ্যানকারীই পরকালে মহান আল্লাহ পাক উনার তাওহীদের (এককত্বের) স্বীকৃতি প্রদান করবে। এক আয়াত শরীফ উনার মধ্যে একথা স্পষ্ট করে বলাও হয়েছে।
যেমন-
ثُـمَّ لَـمْ تَكُنْ فِتْنَتُهُمْ اِلَّا اَنْ قَالُوْا وَاللهِ رَبِّنَا مَا كُنَّا مُشْرِكِيْنَ
“অতঃপর তাদের আর কোনো ফিতনা থাকবে না। তারা কেবল বলবে, মহান আল্লাহ পাক তিনিই আমাদের মহান রব তায়ালা। মহান আল্লাহ পাক উনার শপথ! আমরা কখনো অংশীবাদী ছিলাম না।”
সুতরাং তাওহীদের স্বীকৃতি দান ব্যতিরেকে জ্বিন ও মানুষের কোন উপায়ই নেই।
আমি বলি, এ প্রসঙ্গে সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার বক্তব্যটিই অধিকতর বিশুদ্ধ। অন্যান্য বিশ্লেষণগুলো দুর্বল। এ সম্পর্কে বক্তব্য প্রদানকারীগণ উপস্থাপন করে থাকেন আরো একখানা আয়াত শরীফ ও একটি হাদীছ শরীফ। আয়াত শরীফখানা হচ্ছে,
وَلَقَدْ ذَرَأْنَا لِـجَهَنَّمَ كَثِيْرًا مِّنَ الْـجِنِّ وَالْاِنْسِ
‘আমি বহুসংখ্যক জ্বিন ও মানুষকে সৃষ্টি করেছি জাহান্নামের জন্য’।
আর হাদীছ শরীফ খানা হচ্ছে- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- প্রত্যেকের জন্য ওই কাজটিই সহজ, যা সম্পাদনার্থে তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে। কালাবী, জুহাক ও সুফিয়ান সওরী রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা উদ্ভুত দ্বন্দ্বের বাইরে থাকার মানসে বলেছেন, এখানে ‘ইবাদত করবে’ বলা হয়েছে মহান আল্লাহ পাক উনার বিশেষ বিশেষ বান্দাকে লক্ষ্য করে। অর্থাৎ জ্বিন ও মানুষের মধ্যে ইবাদত করবে তারা, যারা কামেল। হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার পাঠে এমতো অর্থই প্রতিধ্বনিত হয়। তিনি পাঠ করতেন-
ما خلقت الـجن والانس من الـمؤمنين الا ليعبدون
তাই আমার মতে আলোচ্য আয়াত শরীফ উনার বিশুদ্ধ ব্যাখ্যা এরকম- আমি জ্বিন ও মানুষকে সৃষ্টি করেছি ইবাদত সম্পাদনের যোগ্য করে। অর্থাৎ তাদের প্রত্যেককে দিয়েছি ইবাদতপ্রবণতা ও তা যথাসম্পাদনের ক্ষমতা। বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ কর্তৃক বর্ণিত একটি হাদীছ শরীফও এমতো ব্যাখ্যার সমর্থক। যেমন- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একবার ইরশাদ মুবারক করলেন, প্রত্যেক মানবশিশু জন্মগ্রহণ করে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার স্বভাব (ফিতরাত) নিয়ে। পরে তার পিতা-মাতা তাকে বানায় ইহুদী-নাছারা, অথবা মুশরিক। যেমন পশুশাবকেরা ভূমিষ্ঠ হয় নিখুঁত দেহাবয়ব নিয়ে। তোমরা কি সেগুলোকে নাসিকা-কর্ত কর্তনকৃত অবস্থায় জন্মগ্রহণ করতে দেখো? তারপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পাঠ করলেন-
فطرة التي فطر الناس عليها لا تبديل لـخلق اللّه
হাদীছ শরীফ খানা হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত হয়েছে। ব্যাখ্যাটি সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার বক্তব্য মুবারক উনার সঙ্গেও মিলে। অতএব বুঝতে হবে, সত্য প্রত্যাখ্যানকারীদের নিন্দা করাই আলোচ্য আয়াত শরীফ উনার উদ্দেশ্য। তারাও জন্মসূত্রে ‘ফিতরাতে সালিমা’ অর্থাৎ অবিপর্যস্ত স্বভাব নিয়ে পৃথিবীতে আসে। কিন্তু তারা সত্যপ্রত্যাখ্যানের আঘাতে সে স্বভাবকে নষ্ট করে দেয়।” (তাফসীরে মাজহারী)
সুতরাং অত্র তাফসীরে পবিত্র সূরা যারিয়াত শরীফ উনার ৫৬নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার বিস্তারিত ব্যাখ্যা করা হয়েছে। মানুষ ইবাদতের উদ্দেশ্যে সৃষ্টি হয়েছে বটে, তবে এই ইবাদত দিয়ে মানুষই সাফল্য লাভ করবে। সমস্ত সৃষ্টিও যদি মহান আল্লাহ পাক উনার কোন ইবাদত নাও করে তাতে সৃষ্টি ক্ষতিগ্রস্ত হবে কিন্তু মহান আল্লাহ পাক উনার কিছুই হবে না।
এছাড়াও পরকালে মানুষ যেখানেই যাক- জান্নাতে যাক বা জাহান্নামে যাক, কোথাও আর ইবাদতের কোন ব্যবস্থা নেই। জান্নাতে মেহমানদারী আর জাহান্নামে শাস্তির ব্যবস্থা। তখনও মহান আল্লাহ পাক উনার কোন লাভ বা ক্ষতি হবে না।
সুতরাং প্রমাণিত হলো মানুষ সর্বাবস্থায় এমনকি তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার মুখাপেক্ষী। কিন্তু মহান আল্লাহ পাক তিনি ক্ষণিকের তরেও কোন সৃষ্টির মুখাপেক্ষী নন। বরং তিনি চিরঅমুখাপেক্ষী।
0 Comments:
Post a Comment