মহান আল্লাহ পাক উনার আরশ প্রকৃতপক্ষেই উনার শক্তি এবং ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ। আবার এটাও সত্য যে, মহান আল্লাহ পাক উনার আরশ পানির উপর স্থাপিত। কিন্তু মহান আল্লাহ পাক তিনি এই সৃষ্ট আরশ উনার মুখাপেক্ষী নন।

মহান আল্লাহ পাক উনার আরশ প্রকৃতপক্ষেই উনার শক্তি এবং ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ। আবার এটাও সত্য যে, মহান আল্লাহ পাক উনার আরশ পানির উপর স্থাপিত। কিন্তু মহান আল্লাহ পাক তিনি এই সৃষ্ট আরশ উনার মুখাপেক্ষী নন।

নাস্তিকদের আপত্তি ১ : মুসলিমদের দাবি কুরানে উল্লেখিত আল্লাহর ‘আরশ’ (Quran 57:4প্রকৃত পক্ষে তার শক্তি এবং ক্ষমতার প্রকাশ হিসেবে বোঝানো হয়েছে (The throne symbolizes the power and sovereignty of Allah's rule) ! কিন্তু উক্ত দাবির ভিত্তি কোথায় যখন কুরানেই বলা আছে যে আল্লাহর আরশ স্থাপিত ছিল পানির ওপর (Quran 11:7)?

(সৌজন্যেঃ রাইট হার্ট)

খণ্ডন : মহান আল্লাহ পাক উনার আরশ প্রকৃতপক্ষেই উনার শক্তি এবং ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ। আবার এটাও সত্য যে, মহান আল্লাহ পাক উনার আরশ পানির উপর স্থাপিত। কিন্তু মহান আল্লাহ পাক তিনি এই সৃষ্ট আরশ উনার মুখাপেক্ষী নন। কেননা, মহান আল্লাহ পাক তিনি তখনও ছিলেন, (আছেন ও থাকবেন) যখন আরশ সৃষ্টিই হয়নি।

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

اَللهُ الصَّمَدُ

অর্থ : “মহান আল্লাহ পাক তিনি কোনো কিছুর মুখাপেক্ষী নন।” (পবিত্র সূরা ইখলাছ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২)

মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন- 

فَلَا تَضْرِبُوا لِلّٰهِ الْأَمْثَالَ ۚ

অর্থ : “অতএব, মহান আল্লাহ পাক উনার কোন সাদৃশ্য সাব্যস্ত করো না।” (পবিত্র সূরা নাহল শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৭৪)

সুতরাং মহান আল্লাহ পাক তিনি স্থান, দিক, সময় থেকেও পবিত্র। কোন কিছু সৃষ্টি করার পূর্বে যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি কোন স্থানে অবস্থান ব্যতীত ছিলেন, এখনও তিনি আছেন। আসমান-যমীন ধ্বংসের পরেও মহান আল্লাহ পাক তিনি থাকবেন। সৃষ্টির অবস্থানের জন্য স্থানের প্রয়োজন হয়, সৃষ্টি কোন সুনির্দিষ্ট দিকে থাকে, দু’টি সৃষ্টির মাঝে দূরত্ব থাকে, একটি আরেকটি থেকে পৃথক বা কাছাকাছি থাকে। কিন্তু মহান আল্লাহ পাক তিনি এসব অবস্থা থেকে পবিত্র।

মহান আল্লাহ পাক তিনি সৃষ্টির অস্তিত্বের পূর্বে যেমন সময় ও স্থান থেকে পবিত্র অবস্থায় ছিলেন, এখনও তিনি সব ধরনের স্থান ও সময় থেকে পবিত্র। এই কথাটি সংক্ষেপে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

اَنْتَ الْاَوَّلُ فَلَيْسَ قَبْلَكَ شَىْءٌ وَاَنْتَ الْاٰخِرُ فَلَيْسَ بَعْدَكَ شَىْءٌ وَاَنْتَ الظَّاهِرُ فَلَيْسَ فَوْقَكَ شَىْءٌ وَاَنْتَ الْبَاطِنُ فَلَيْسَ دُوْنَكَ شَىْءٌ

অর্থ : “আপনিই প্রথম, আপনার পূর্বে কিছু নেই। আপনিই শেষ, আপনার পরে কিছু নেই। আপনিই প্রকাশ্য, আপনার উপরে কিছু নেই। আপনিই গোপন, আপনার নিচে কিছু নেই।” (মুসলিম শরীফ : কিতাবুয যিকরি ওয়া দু‘আয়ি ওয়া তাওবাতি ওয়াল ইসতিগ¦ফার : বাবু মা ইয়াক্বূলু ‘ইন্দান নাওমি ওয়া আখ¦যিল মাদ্ব্জা’)

আর তাই সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বর্ণনা মুবারক করেন-

ﻛﺎﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﻻ ﻣﻜﺎﻥ، ﻭﻫﻮ ﺍﻵﻥ ﻋﻠﻰ ﻣﺎ ﻋﻠﻴﻪ ﻛﺎﻥ

অর্থ : “যখন কোন স্থান ছিলো না, তখনও মহান আল্লাহ পাক তিনি ছিলেন। তিনি এখনও স্থান থেকে পবিত্র অবস্থায় আছেন।” (আল-ফারকু বাইনাল ফিরাক, আবু মনসুর বাগদাদী, পৃ.৩৩৩)

সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুর রবি’ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন,

اَﻧﺖ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺬﻱ ﻻ ﻳـَﺤﻮﻳﻚ ﻣﻜﺎﻥ

অর্থ : “হে মহান আল্লাহ পাক! আপনি সেই সত্ত্বা, কোন স্থান যাঁকে পরিবেষ্টন করতে পারে না।” (ইতহাফুস সাদাতিল মুত্তাকিন, আল্লামা মোর্তজা জাবিদী, খ- ৪, পৃষ্ঠা ৩৮০)

ইমামে আ’যম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার আল-ফিকহুল আবসাতে বলেন-

ﻗﻠﺖُ ﺃﺭﺃﻳﺖَ ﻟﻮ ﻗﻴﻞ ﺃﻳﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ؟ ﻓﻘﺎﻝ ﺃﻱ ﺃﺑﻮ ﺣﻨﻴﻔﺔ ﻳﻘﺎﻝ ﻟﻪ ﻛﺎﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻭﻻ ﻣﻜﺎﻥ ﻗﺒﻞ ﺃﻥ ﻳﺨﻠﻖ ﺍﻟﺨﻠﻖ، ﻭﻛﺎﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻭﻟـﻢ ﻳﻜﻦ ﺃﻳﻦ ﻭﻻ ﺧَﻠْﻖ ﻭﻻ ﺷﻰﺀ، ﻭﻫﻮ ﺧﺎﻟﻖ ﻛﻞ ﺷﻰﺀ

অর্থ : “যদি আপনাকে প্রশ্ন করা হয় মহান আল্লাহ পাক তিনি কোথায়? ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এর উত্তরে বলেন, তাকে জিজ্ঞাসা করা হবে, সৃষ্টির অস্তিত্বের পূর্বে, যখন কোন স্থানই ছিলো না, তখনও মহান আল্লাহ পাক তিনি ছিলেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি তখনও ছিলেন যখন কোন সৃষ্টি ছিলো না, এমনকি ‘কোথায়’ বলার মতো স্থানও ছিলো না। সৃষ্টির একটি পরমাণুও যখন ছিলো না তখনও মহান আল্লাহ পাক তিনি ছিলেন। তিনিই সব কিছুর সৃষ্টা।” (আল-ফিকহুল আবসাত, পৃষ্ঠা ২০)

ইমাম হযরত শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-

اِﻧﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻛﺎﻥ ﻭﻻ ﻣﻜﺎﻥ ﻓﺨﻠﻖ ﺍﻟـﻤﻜﺎﻥ ﻭﻫﻮ ﻋﻠﻰ ﺻﻔﺔ ﺍﻷﺯﻟﻴﺔ ﻛﻤﺎ ﻛﺎﻥ ﻗﺒﻞ ﺧﻠﻘﻪ ﺍﻟـﻤﻜﺎﻥ ﻻ ﻳـﺠﻮﺯ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺘﻐﻴﻴﺮ ﻓﻲ ﺫﺍﺗﻪ ﻭﻻ ﺍﻟﺘﺒﺪﻳﻞ ﻓﻲ ﺻﻔﺎﺗﻪ

অর্থাৎ যখন কোন স্থান ছিল না তখনও মহান আল্লাহ পাক তিনি ছিলেন। এরপর মহান আল্লাহ পাক তিনি স্থান সৃষ্টি করেন। কিন্তু মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার অনাদি গুণেই গুণান্বিত রয়েছেন, যেমন স্থান সৃষ্টির পূর্বে ছিলেন। মহান আল্লাহ পাক উনার সত্ত্বায় কোন পরিবর্তন হয় না, উনার কোন গুণেও কোন পরিবর্তন বৈধ নয়।” (ইতহাফুস সাদাতিল মুত্তাকিন ২য় খ- ২৪ পৃষ্ঠা)

ইমাম ইবনে জারীর তবারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-

ﻓﺘﺒﻴَّﻦ ﺇﺫًﺍ ﺃﻥ ﺍﻟﻘﺪﻳـﻢ ﺑﺎﺭﻯﺀ ﺍﻷﺷﻴﺎﺀ ﻭﺻﺎﻧﻌﻬﺎ ﻫﻮ ﺍﻟﻮﺍﺣﺪ ﺍﻟﺬﻱ ﻛﺎﻥ ﻗﺒﻞ ﻛﻞ ﺷﻰﺀ، ﻭﻫﻮ ﺍﻟﻜﺎﺋﻦ ﺑﻌﺪ ﻛﻞّ ﺷﻰﺀ، ﻭﺍﻷﻭﻝ ﻗﺒﻞ ﻛﻞ ﺷﻰﺀ، ﻭﺍﻵﺧﺮ ﺑﻌﺪ ﻛﻞ ﺷﻰﺀ، ﻭﺃﻧﻪ ﻛﺎﻥ ﻭﻻ ﻭﻗﺖ ﻭﻻ ﺯﻣﺎﻥ ﻭﻻ ﻟﻴﻞ ﻭﻻ ﻧـﻬﺎﺭ، ﻭﻻ ﻇﻠﻤﺔ ﻭﻻ ﻧﻮﺭ ﻭﻻ ﺳـﻤﺎﺀ ﻭﻻ ﺃﺭﺽ ﻭﻻ ﺷـﻤﺲ ﻭﻻ ﻗﻤﺮ ﻭﻻ ﻧـﺠﻮﻡ، ﻭاَﻥ ﻛﻞ ﺷﻰﺀ ﺳﻮﺍﻩ ﻣـﺤﺪَﺙ ﻣﺪﺑَّﺮ ﻣﺼﻨﻮﻉ، ﺍﻧﻔﺮﺩ ﺑـﺨﻠﻖ ﺟـﻤﻴﻌﻪ ﺑﻐﻴﺮ ﺷﺮﻳﻚ ﻭﻻ ﻣُﻌﻴﻦ ﻭﻻ ﻇﻬﻴﺮ، ﺳﺒﺤﺎﻧﻪ ﻣِﻦْ ﻗﺎﺩﺭ ﻗﺎﻫﺮ.

অর্থ : “স্পষ্টতঃ ক্বদীম বা অনাদী সত্ত্বা একমাত্র মহান আল্লাহ পাক তিনি, তিনিই সবকিছু সৃষ্টি করেছেন। তিনিই সব কিছুর অস্তিত্বের পূর্বে ছিলেন। তিনিই সব কিছু ধ্বংসের পরেও থাকবেন। তিনিই সবকিছুর পূর্বে, তিনিই সবকিছুর পরে। তিনি তখনও ছিলেন যখন কোন সময় ছিলো না। রাত দিন, আলো-আধার, আসমান-যমীন, চন্দ্র-সূর্য, তারকারাজি কিছুই ছিলো না। মহান আল্লাহ পাক তিনি ছাড়া সবকিছুই মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টি, উনার নিয়ন্ত্রণাধীন। কোন অংশীদার, সাহায্যকারী বা সহযোগী ছাড়া তিনি একাই সবকিছু সৃষ্টি করেছেন। মহান ক্ষমতাধর ও কর্তৃৃত্বপরায়ণ সব সৃষ্টি থেকে পবিত্র।” (তারীখে তবারী ১ম খ- ৩০ পৃষ্ঠা)

সুতরাং, প্রমাণিত হলো যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি স্থান থেকে সম্পূর্ণ পবিত্র। মহান আল্লাহ পাক তিনি তখনও ছিলেন যখন স্থান বলতে কোন বিষয়ই ছিল না। আর যেহেতু মহান আল্লাহ পাক তিনি স্থান থেকে পবিত্র তাই আরশ মুবারক থেকেও মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র।

এই বিষয়ে সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বর্ণনা মুবারক করেন-

اﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﺧﻠﻖ ﺍﻟﻌﺮﺵ اﻇﻬﺎﺭًﺍ ﻟﻘﺪﺭﺗﻪ ﻻ ﻣﻜﺎﻧًﺎ ﻟﺬﺍﺗﻪ

অর্থ : “মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজের কুদরত প্রকাশের জন্য আরশ সৃষ্টি করেছেন, নিজ সত্ত্বার স্থান হিসেবে নয়।” (আল-ফারকু বাইনাল ফিরাক, আবু মনসুর বাগদাদী, পৃ.৩৩৩)

কিন্তু নাস্তিক সহ কিছু বদ মাযহাব ও বদ আক্বীদার লোক পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ব্যবহৃত اِسْتَوٰى শব্দ মুবারক উনার অপব্যাখ্যা করে সমাজে ফিতনা বিস্তার করতে চায়।  

এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

هُوَ الَّذِىْ اَنْزَلَ عَلَيْكَ الْكِتَابَ مِنْهُ اٰيَاتٌ مُّـحْكَمَاتٌ هُنَّ اُمُّ الْكِتَابِ وَاُخَرُ مُتَشَابِـهَاتٌ  ۖ  فَأَمَّا الَّذِيْنَ فِىْ قُلُوْبِـهِمْ زَيْغٌ فَيَتَّبِعُوْنَ مَا تَشَابَهَ مِنْهُ ابْتِغَاءَ الْفِتْنَةِ وَابْتِغَاءَ تَأْوِيْلِهِ  ۗ  وَمَا يَعْلَمُ تَأْوِيْلَهُ اِلَّا اللهُ  ۗ  وَالرَّاسِخُوْنَ فِى الْعِلْمِ يَقُوْلُوْنَ اٰمَنَّا بِهِ كُلٌّ مِّنْ عِنْدِ رَبِّنَا ۗ  وَمَا يَذَّكَّرُ اِلَّا اُوْلُو الْاَلْبَابِ.

অর্থ : “তিনিই আপনার প্রতি কিতাব নাযিল করেছেন। তাতে কিছু আয়াত শরীফ রয়েছে সুস্পষ্ট, সেগুলোই কিতাবের আসল অংশ। আর অন্যগুলো রূপক। সুতরাং যাদের অন্তরে কুটিলতা রয়েছে, তারা অনুসরণ করে ফিৎনা বিস্তার এবং অপব্যাখ্যার উদ্দেশ্যে তন্মধ্যেকার রূপকগুলোর। আর সেগুলোর ব্যাখ্যা মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত কেউ জানে না। আর যাঁরা সুগভীর ইলমের অধিকারী, উনারা বলেন, আমরা পবিত্র কুরআন শরীফ উনার প্রতি ঈমান এনেছি। এই সবই আমাদের মহান রব তায়ালা উনার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে। আর বোধশক্তি সম্পন্ন ব্যক্তিরা ছাড়া অপর কেউ শিক্ষা গ্রহণ করে না।” (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৭)

আর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ تَلَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم هَذِهِ الْآيَةَ {هُوَ الَّذِيْٓ أَنْزَلَ عَلَيْكَ الْكِتٰبَ مِنْهُ اٰيٰتٌ مُّحْكَمٰتٌ هُنَّ أُمُّ الْكِتٰبِ وَأُخَرُ مُتَشٰبِهٰتٌ ط فَأَمَّا الَّذِيْنَ فِىْ قُلُوْبِهِمْ زَيْغٌ فَيَتَّبِعُوْنَ مَا تَشَابَهَ مِنْهُ ابْتِغَآءَ الْفِتْنَةِ وَابْتِغَآءَ تَأْوِيْلِهٰ ﺻ ج وَمَا يَعْلَمُ تَأْوِيْلَه”ٓ إِلَّا اللهُ ﺻ ﻣ وَالرَّاسِخُوْنَ فِى الْعِلْمِ يَقُوْلُوْنَ اٰمَنَّا بِهٰ لا كُلٌّ مِّنْ عِنْدِ رَبِّنَا ج وَمَا يَذَّكَّرُ إِلَّآ أُولُوا الْأَلْبَابِ (৭)} قَالَتْ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم : فَإِذَا رَأَيْتِ الَّذِيْنَ يَتَّبِعُوْنَ مَا تَشَابَهَ مِنْهُ فَأُوْلَئِكِ الَّذِيْنَ سَمَّى اللهُ فَاحْذَرُوْهُمْ.

অর্থ : “হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আয়াত শরীফ খানা- هُوَ الَّذِي أَنْزَلَ عَلَيْكَ الْكِتَابَ ............ إِلاَّ أُولُو الأَلْبَابِ তিলাওয়াত মুবারক করলেন। হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঘোষণা মুবারক করেন যে, যারা মুতাশাবাহাত আয়াত শরীফ উনাদের পেছনে ছুটে, তাদের যখন আপনি দেখবেন, তখন মনে করবেন যে, তাদের কথাই মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বলেছেন। সুতরাং তাদের ব্যাপারে সাবধান থাকবেন।” (বুখারী শরীফ : কিতাবুত তাফসীর; মুসলিম শরীফ : কিতাবুল ইল্ম্ : বাবুন নাহ্য়ি ‘আনিল জিদালি ওয়াত তিবা‘য়ি মুতাশাবিহিল ক্বুরআন; আবূ দাঊদ শরীফ : কিতাবুস সুন্নাহ : বাবুন নাহ্য়ি ‘আনিল জিদালি ওয়াত তিবা‘য়ি মুতাশাবিহিল ক্বুরআন; ইবনে মাজাহ শরীফ : কিতাবুল মুকাদ্দিমা)

অর্থাৎ আয়াত শরীফ দুপ্রকার যথাঃ (১) আয়াতে ‘মুহকামাত’ যেটির একটিমাত্র অর্থ হয় এবং যার একাধিক কোন অর্থ নেই; (২) আয়াতে ‘মুতাশাবিহাত’ যার একাধিক অর্থ হয়। তবে যেই অর্থটি মহান আল্লাহ্ পাক উনার শান মুবারকে মানায় সেটিই চয়ন করতে হবে, আর যে অর্থটি মহান আল্লাহ্ পাক উনার শান মুবারকে মানায় না সেটি গ্রহণযোগ্য নয়। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ব্যবহৃত اِسْتَوٰى শব্দ মুবারকও একাধিক অর্থ জ্ঞাপক। আর তাই মহান আল্লাহ পাক উনার শান মুবারকে ব্যবহৃত اِسْتَوٰى শব্দ মুবারক সম্বলিত ৭ খানা আয়াত শরীফ যথা-

১. পবিত্র সূরা আ’রাফ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৪

২. পবিত্র সূরা ইউনুস শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩

৩. পবিত্র সূরা র’দ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২

৪. পবিত্র সূরা ত্ব-হা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৫

৫. পবিত্র সূরা ফুরক্বান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৯

৬. পবিত্র সূরা সাজদাহ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৪

৭. পবিত্র সূরা হাদীদ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৪

উনাদের প্রকৃত অর্থ হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক তিনি আরশকে নিয়ন্ত্রণ ও হিফাযতে নিলেন। কারণ اِسْتَوٰى শব্দ মুবারক উনার ১৫টি অর্থের প্রতি ইঙ্গিত দেখিয়েছেন হযরত ইবনুল আরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি, উনার ‘আল আওয়াসেম ওয়াল কাওয়াসেম’ কিতাবে আর ১৮টি অর্থের ব্যবহার দেখিয়েছেন তিরমিযী শরীফ উনার শরাহ ‘আরিদ্বাতুল আহওয়াযী’ কিতাবে।

যেমন পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

وَاسْتَوَتْ عَلَى الْـجُوْدِىِّ  ۖ

অর্থ : “আর (হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার নৌকা) জুদী পর্বতে স্থিতি লাভ করলো।” (পবিত্র সূরা হুদ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৪৪)

অত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ব্যবহৃত اِسْتَوٰى শব্দ মুবারক দ্বারা اَلتَّمَكُّنُ وَالْاِسْتِقْرَارُ অর্থাৎ স্থিতি লাভ করা বা অবস্থান গ্রহণ করা বুঝানো হয়েছে। (লিসানুল আরব ১৪তম খ-, পৃষ্ঠা-৪১৪, ৩য় সংস্করণ, দারু ছদের, বৈরুত, লেবানন; মুখতারুস্ সিহাহ, পৃষ্ঠা-১৫৮, ৫ম সংস্করণ, মাকতাবাতুল আসরিয়্যাহ, বৈরুত, লেবানন, ১৪০২ হিজরী)

পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছে-

فَاسْتَوٰى عَلٰى سُوْقِهِ

অর্থ : “আর স্বীয় কা-ের উপর মজবুতভাবে দাঁড়িয়েছে।” (পবিত্র সূরা ফাত্হ্ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৯)

অত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ব্যবহৃত اِسْتَوٰى শব্দ মুবারক দ্বারা اَلْاِسْتِقْامَةُ وَالْاِعْتِدَالُ অর্থাৎ সোজা হওয়া বা বরাবর হওয়া বুঝানো হয়েছে। (মুখতারুস্ সিহাহ, পৃষ্ঠা-১৫৮, ৫ম সংস্করণ, মাকতাবাতুল আসরিয়্যাহ, বৈরুত, লেবানন, ১৪০২ হিজরী)

পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে অন্যত্র বর্ণিত রয়েছে-

وَلَمَّا بَلَغَ اَشُدَّهُ وَاسْتَوٰى اٰتَيْنَاهُ حُكْمًا وَعِلْمًا ۚ

অর্থ : “আর যখন হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি যৌবনে পদার্পন করলেন এবং পরিণত বয়স্ক হয়ে গেলেন, তখন আমি উনাকে হিকমত ও ইল্ম্ হাদিয়া মুবারক করলাম।” (পবিত্র সূরা ক্বাছাছ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৪)

অত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ব্যবহৃত اِسْتَوٰى শব্দ মুবারক দ্বারা اَلتَّمَامُ وَالْاِنْـهَاءُ অর্থাৎ পরিণত বয়সে পৌঁছা বা পূর্ণতা লাভ করা বুঝানো হয়েছে। (লিসানুল আরব ১৪তম খ-, পৃষ্ঠা-৪১৪, ৩য় সংস্করণ, দারু ছদের, বৈরুত, লেবানন)

তাহলে দেখা যাচ্ছে, উপরে বর্ণিত اِسْتَوٰى শব্দ মুবারক উনার ৩টি অর্থের কোনটিই মহান আল্লাহ পাক উনার শান মুবারক-এ  মানায় না, তাই উক্ত অর্থত্রয় এ ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য নয়।

اِسْتَوٰى শব্দ মুবারক উনার একটি অর্থ হলো اَلْاِسْتِلَاءُ وَالْقَهْرُ অর্থাৎ পরাক্রান্ত হওয়া বা ক্ষমতা গ্রহণ করা বা নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করা। (মুখতারুস্ সিহাহ, পৃষ্ঠা-১৫৮, ৫ম সংস্করণ, মাকতাবাতুল আসরিয়্যাহ, বৈরুত, লেবানন, ১৪০২ হিজরী)

মহান আল্লাহ পাক উনার শান মুবারক-এ পরাক্রান্ত হওয়া বা ক্ষমতা গ্রহণ করা বা নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করা অর্থে اِسْتَوٰى শব্দ মুবারক মানায়। কেননা, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- 

وَبَرَزُوا لِلّٰهِ الْوَاحِدِ الْقَهَّارِ

অর্থ : “অদ্বিতীয় এবং সংরক্ষক মহান আল্লাহ পাক উনার সামনে সবাই পেশ হবে।” (পবিত্র সূরা ইবরাহীম শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৪৮)

আবার اِسْتَوٰى শব্দ মুবারক উনার আরেকটি অর্থ হলো تَوَلّٰى الْمُلْكَ অর্থাৎ রাজত্ব গ্রহণ করা। (মু’জামুল ওয়াসিত, পৃষ্ঠা-৪৬৬, প্রথম প্রকাশ, যাকারিয়া বুক ডিপো, দেওবন্দ, ২০০১ খৃ.)

বর্ণিত রয়েছে-

اسْتَوٰى عَلٰى سَرِيْرِ الْمُلْكَ كِنَايَةٌ عَنْ التَّمَلُّكِ وَاِنْ لَـمْ يَـجْلِسْ عَلَيْهِ كَمَا قِيْلَ مَبْسُوْطُ الْيَدِ وَمَقْبُوْضُ الْيَدِ كِنَايَةٌ عَنْ الْـجُوْدِ وَالْبُخْلِ

অর্থ : “বাদশাহ রাজসিংহাসনে আরোহণ করলো একথা বলা হয় রাজত্ব গ্রহণের প্রতি ইঙ্গিত করে যদিও সে রাজসিংহাসনে আরোহণ নাও করে থাকে। যেমন- প্রশস্ত হাত ও মুষ্টিবদ্ধ হাত দ্বারা (যথাক্রমে) বদান্যতা ও কৃপণতার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়।” (লিসানুল আরব ১৪তম খ-, পৃষ্ঠা-৪১৪, ৩য় সংস্করণ, দারু ছদের, বৈরুত, লেবানন; মিসবাহুল মুনীর ১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা-২৯৮, মাকতাবাতুল ইলমিয়্যাহ, বৈরুত, লেবানন; তাজুল আরূস ৩৮তম খণ্ড, পৃষ্ঠা-৩৩১, দারুল হিদায়াহ, বৈরুত) 

সুতরাং মহান আল্লাহ পাক উনার শান মুবারক-এ রাজত্ব গ্রহণ করা অর্থেও اِسْتَوٰى শব্দ মুবারক মানায়। কেননা اِسْتَوٰى শব্দ মুবারক উনার আরেকটি অর্থ হলো جلس ‘জালাসা’ অর্থাৎ বসা বা উপবেশন করা। কিন্তু মহান আল্লাহ পাক তিনি আরশ্-এ বসে আছেন বলে অনুবাদ করা হলে বসার সিফত মানুষ, ফেরেশতা, জ্বিন ব্যতীতও অন্যান্য সৃষ্টির মাঝেও বিরাজমান বিধায় সেটা মহান স্রষ্টা উনাকে সৃষ্টির কাতারে নিয়ে আসার অপপ্রয়াস হয়ে দাঁড়ায়।

অথচ মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ  ۖ

অর্থ : “কোন কিছুই উনার অনুরূপ নয়।” (পবিত্র সূরা শূরা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১১)

মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-

وَلَـمْ يَكُنْ لَّهٗ كُفُوًا اَحَدٌ

অর্থ : “আর উনার সমতুল্য কেউ নেই।” (পবিত্র সূরা ইখলাছ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৪)

সুতরাং এরূপ কুফরী অনুবাদ করলে, পবিত্র ক্বুরআন শরীফ উনার অনেকগুলো আয়াত শরীফ একে অপরের সাথে সাংঘর্ষিক হবে। আর এই বিষয়টি ঘটে বক্র অন্তরের অধিকারীদের ‘মুতাশাবিহাত’ আয়াত শরীফ সমূহের ব্যাখ্যা তালাশ করার মাধ্যমে পথভ্রষ্টতার দিকে অগ্রসরের কারণে।

আর তাই বাদশাহ রাজসিংহাসনে আরোহণ না করলেও ‘বাদশাহর রাজসিংহাসনে আরোহণ’ দ্বারা যেমন রাজত্ব গ্রহণের প্রতি ইঙ্গিত করে কিংবা প্রশস্ত হাত ও মুষ্টিবদ্ধ হাত দ্বারা যথাক্রমে বদান্যতা ও কৃপণতাকে বুঝিয়ে থাকে। ঠিক তেমনি মহান আল্লাহ পাক উনার শান মুবারক-এ اِسْتَوٰى শব্দ মুবারক উনার অর্থ রাজত্ব গ্রহণ বা ক্ষমতা প্রকাশ বুঝাতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিছ ও মুজ্তাহিদ এবং মালিকী মাযহাব উনার ইমাম, হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছেন, ‘মহান আল্লাহ্ পাক তিনি আরশে ইস্তাওয়া করলেন’ তবে এখানে ‘ইস্তাওয়া’ উদাহরণ ছাড়া মানতে হবে, যেভাবে মহান আল্লাহ্ পাক উনার শান মুবারকে মানায়। কিভাবে মহান আল্লাহ্ পাক তিনি আরশে ইস্তাওয়া করলেন, এই অবস্থা থেকে তিঁনি পবিত্র। যদি যে কেউ কোন কিতাব পাঠ করতে থাকে, তাহলে হয় বসে, শুয়ে, না হয় দাড়িয়ে পাঠ করে থাকে, এখানে একটি নির্দিষ্ট অবস্থার মধ্যে থেকেই পাঠ করতে হচ্ছে। সুতরাং মহান আল্লাহ্ পাক তিনি আরশে ইস্তাওয়া করলেন, এখানে ইস্তাওয়া অবস্থা ছাড়াই মানতে হবে। কেননা ‘খালিক’ উনার ক্ষেত্রে অবস্থা ও অবস্থান মানলে ‘মাখলুকের’ সাথে তুলনা হয়ে যাবে। আর ‘মাখলুকের’ সাথে ‘খ¦লিক’ উনার তুলনা হলেই তা শিরক্-এর অন্তর্ভূক্ত হবে। সুতরাং মহান আল্লাহ্ পাক উনার ক্ষেত্রে কোন অবস্থা মানা যাবে না। কারণ মহান আল্লাহ্ পাক তিনি অবস্থা ও অবস্থান হতে পবিত্র। আর সৃষ্টির সিফত হচ্ছে, জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সর্বদাই কোন না কোন অবস্থার মধ্যে থাকে। এটিই হলো সৃষ্টির আলামত, আর মহান আল্লাহ্ পাক তিনি সৃষ্টির যাবতীয় আলামত এবং সকল প্রকার অবস্থা থেকে পবিত্র। 

হযরত ইমাম কুশাইরি রহমতুল্লাহি ‘আলাইহি তিনি বলেন, মহান আল্লাহ্ পাক তিনি আরশে ইস্তাওয়া করলেন মানে মহান আল্লাহ্ পাক তিনি আরশ্কে হিফাজত করলেন। আর এটা বলা কিংবা বিশ্বাস রাখাই যাবে না যে, মহান আল্লাহ্ পাক তিনি আরশে বিরাজমান বা আরশে বসে আছেন। কেননা আমরা সকলেই জানি, আরশে আযীম চার পায়া বিশিষ্ট এক বিশাল ‘মাখলুক’ যা চারজন ফেরেশতা নিজের কাঁধে বহন করে রেখেছেন। এখন যদি কেউ মহান আল্লাহ্ পাক উনাকে আরশ্ উনার উপর বসা আছেন জ্ঞান করে তাহলে অর্থ দাঁড়াবে যে, চারজন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা মহান আল্লাহ্ পাক উনাকে বহন করে রেখেছেন। নাউযুবিল্লাহ্! আর হ্যাঁ, এই আক্বীদাই হচ্ছে ইহুদীদের আক্বীদা। তারা বলে মহান আল্লাহ্ পাক তিনি ৬ দিনে যমীন ও আসমান সৃষ্টি করলেন, অতঃপর তিনি ক্লান্ত হয়ে আরশে বিশ্রাম নিলেন। নাঊযুবিল্লাহ্!

সুতরাং মহান আল্লাহ পাক তিনি হচ্ছেন, আরশ উনার সংরক্ষক। তাই মহান আল্লাহ পাক উনার আরশ পানির উপর- এর দ্বারা এটা বুঝায় না যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি আরশ উনার মুখাপেক্ষী। বরং আরশ হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে মহান আল্লাহ পাক উনার শক্তি এবং ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ।


0 Comments: