মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার আনুগত্যেই ইস্তিকামতের মূল

 মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার আনুগত্যেই ইস্তিকামতের মূল

মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কলামে পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট একমাত্র মনোনীত পবিত্র দ্বীন হলো ইসলাম।” পবিত্র দ্বীন ইসলাম একটি ব্যাপক বিষয়ের নাম। যাকে পবিত্র দ্বীন হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। আর এই পবিত্র দ্বীন বা পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার ভিত হল পবিত্র ঈমান। পবিত্র ঈমান উনার সাথে বিশুদ্ধ আক্বীদা ও বিশ্বাসসহ পরম ধর্মীয় আনুগত্যকারী আখ্যায়িত হন মু’মিন নামে। দুনিয়া ও আখিরাতের মুক্তির জন্যই মহান আল্লাহ পাক তিনি মানুষের পালনযোগ্য করে পবিত্র দ্বীন হিসেবে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে মনোনীত করেছেন।

যুগে যুগে এক লক্ষ চব্বিশ হাজার মতান্তরে দুই লাখ চব্বিশ হাজার হযরত নবী ও রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের উপর নাযিলকৃত বিধান তথা ধর্ম প্রচারে প্রবল বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। অনেকে শহীদও হয়েছেন। অনেকের একজন উম্মতও ছিল না। এরপরেও উনারা দ্বীন প্রচারে দৃঢ় ছিলেন। 

পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার প্রচার করতে গিয়ে একই পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন সৃষ্টির মূল, হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুতরাং এটা সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের পবিত্র সুন্নত। বাহ্যিক দৃষ্টিতে হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের এসব ঘটনা বেদনাদায়ক হলেও এসব ঘটনা পরবর্তী উম্মতের জন্য পবিত্র দ্বীন প্রচারে ইস্তিক্বামত থাকার ক্ষেত্রে নছীহতস্বরূপ।

হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি নাযিলকৃত একমাত্র মনোনীত পবিত্র দ্বীন ‘ইসলাম’। এর অনুসারীদেরকে মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার প্রিয়তম হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের প্রতি পরিপূর্ণ আনুগত্যের সাথে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিধানাবলী পালনের জন্যই মহান আল্লাহ পাক তিনি পূর্ববর্তী হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের ঘটনাসমূহ বর্ণনা করেছেন। যেন এসব ঘটনা তাদেরকে মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ইহসানের নিদর্শনরূপে চরম অনুগত হতে সাহায্য করে।

মূলত, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের পবিত্র দ্বীন প্রচারের সেই বৈরী পরিবেশ পরবর্তী সব যুগেই বিদ্যমান। আর এ জন্যেই উম্মতে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মধ্যে যাঁরা ওলী উনাদেরকে পূর্ববর্তী নবীগণের অনুরূপ হাদী হিসেবে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণনা করা হয়েছে। আর যাঁরা যুগের লক্ষ্যস্থল ইমাম, মুজাদ্দিদে যামান, মুজাদ্দিদে আ’যম, উনাদেরকে আখিরী নবী, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ক্বায়িম-মাক্বাম বলে অভিহিত করা হয়েছে। কারণ উনারা নবী নন, বরং উম্মতের ওলী হিসেবে উনাদেরকে যে প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে, তাতে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার উপর ইস্তিকামত থাকা একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত এবং উনার রসূর, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইহসানের কারণেই সম্ভব হচ্ছে। হাক্বীক্বতে যামানার ইমামের ক্ষেত্রে সে কথাটিই প্রযোজ্য যে, এ যুগে তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক উনার নবী ও রসূল নন, এছাড়া যত মুবারক মর্যাদা-মর্তবা ও মাক্বাম রয়েছে মহান আল্লাহ পাক তিনি সবকিছুই উনাকে দান করেছেন।

আমরা যদি গভীরভাবে একটু চিন্তা করি। বিবেককে একটু শানিত করি। বিবেকের জবাব শুনি সেকি বলে? বিবেক এটাই বলে যে, আমাদের চারপাশে শুধু হারাম কাজে ভরপুর। কি ঘরে? কি বাইরে? কি রাস্তায়? কি মাঠে? কি বাজারে? কি শিক্ষাঙ্গনে? কি বাণিজ্যে? কি তথাকথিত রাজনীতিতে? 

বর্তমানে সব জায়গায় ব্যাপক আকারে হারাম কাজ চলছে। সাধারণত মুসলমানগণ যে পোশাক পরিধান করে, তা বিজাতীয়। অনেকের ঘরের পরিবেশও ইসলামী পরিবেশ নয়। অনেকের ঘরে রয়েছে টিভি, ডিভিডি, ভিসিআরসহ বিভিন্ন রকমের বাদ্যযন্ত্র। রাস্তায় বের হলে দেখা যায় শত শত হারাম কাজ। বেপর্দা-বেহায়া, অশ্লীল-অশালীনতায় রাস্তা-ঘাট টইটম্বুর। বিভিন্ন খারাপ অশ্লীল ছবিতে চারপাশ একাকার। সিনেমা হলগুলো হলো গুনাহের আখড়া।

যেখানে শিক্ষাঙ্গন লেখাপড়া শিক্ষা করা হয়, সেখানেও রয়েছে বিভিন্ন হারাম, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে নেই কোনো পর্দা। নেই শিক্ষক, মহিলা শিক্ষিকাদের মধ্যেও। কলেজ ইউনিভার্সিটিগুলোতে তো আরো খারাপ পরিবেশ। এমন কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেগুলোতে প্রায় নগ্ন পোশাক-পরিচ্ছদ পরিধান করে ছাত্রীরা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হয়। নাঊযুবিল্লাহ!

ব্যবসা বাণিজ্য করতে গেলে, মনে হচ্ছে সেখানে শুধু সুদ-ঘুষ, মিথ্যা কপটতা ছাড়া আর কোন গত্যন্তর নেই। তথাকথিত ইসলামী রাজনীতির অবস্থা তো এখন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারপরেও যদি কেউ পবিত্র ইসলামী মন-মানসিকতা নিয়ে কোনো মাওলানা মুফতীর দ্বারপ্রান্তে হাজির হয়, তাহলে দেখতে পায় তারা হারাম কাজে আমজনতাকে হার মানিয়েছে। কি বেহাল অবস্থা মুসলমানদের? কি বেহাল দেশের? কি বেহাল বর্তমান পৃথিবীর? কিভাবে মুসলমানগণ হক্বে থাকবে? 

মহান আল্লাহ পাক তিনি রব্বুল আলামীন উনার অসংখ্য শুকরিয়া এবং অগণিত দুরূদ ও সালাম আখিরী নবী, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তরে। উনারা দয়া করে ইহসান করে আমাদের উপহার দিয়েছেন পঞ্চদশ হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ, আল-মুজাদ্দিদুল আ’যম, জামিউল আওলিয়া, আওলাদে রসূল, রাজারবাগ শরীফ উনার হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাকে। 

তিনি এই কঠিন পরিস্থিতিতেও পরিপূর্ণ পবিত্র সুন্নত উনার পাবন্দ। পবিত্র সুন্নত উনার খিলাফ কোন আমল করেন না। পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস সম্মত উনার সমস্ত আমল-আখলাক, কথা-বার্তা। 

তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার গুণে গুণান্বিত। এই কঠিন ফিতনা-ফাসাদের যুগেও তিনি পরিপূর্ণ হক্বের উপর ইস্তিকামত। পবিত্র কুরআন ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনার আমলে তিনি চরম-পরম দৃঢ়। তার থেকে তিনি এক চুলও বিচ্যূত হন না। উনার মুবারক ছোহবতে যারা আসে তাদের মাঝেও সেই পবিত্র সুন্নত উনার আমল পরিলক্ষিত হয়। তারা নবী প্রেমে এ পবিত্র সুন্নত উনাকে দৃঢ়তার সাথে আঁকড়ে ধরেন। হক্বের পথে তারা পরিচালিত হন। 

কাজেই এ ফিতনা বেষ্টিত সমাজে আল মুজাদ্দিদুল আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মুবারক ছোহবত পেলেই, উনার মুবারক রূহানী ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ পেলেই সকলেই হক্ব পথে হক মতে থাকতে পারবে। অন্যথায় তা একেবারেই অসম্ভব।


0 Comments: