সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার বেমেছাল সম্মানিত তা‘য়াল্লুক-নিসবত মুবারক
(১)
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ১লা মুর্হারমুল হারাম শরীফ ১৪৩৯ হিজরী শরীফ ইরশাদ মুবারক করেন, “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাঈন আলাইহিস সালাম তিনি কোন স্থান মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন, সেই সম্মানিত স্থান মুবারকখানা দেখিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! আমি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ জানতে চাইলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কোন সময় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন? তখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে একটি কাটা ওয়ালা ঘড়ি মুবারক দেখালেন। আমি দেখলাম, তখনও উক্ত সম্মানিত ঘড়ি মুবারক-এ ১২:০০ টা বাজেনি। সেকেন্ডের কাটাটি আর ৪৫ সেকেন্ড অতিক্রম করলে ১২:০০ বাজবে। অর্থাৎ ১২:০০ টা বাজতে আর ৪৫ সেকেন্ড বাকি রয়েছে। অর্থাৎ ১১ টা বেজে ৫৯ মিনিট ১৫ সেকেন্ডে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন।” সুবহানাল্লাহ!
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাঈন আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাশরীফ মুবারক গ্রহণের ছয় বৎসর পর বা আমুল ফিলের ৬ বৎসর পর ৩রা রবীউল আউওয়াল শরীফ ইয়াওমুল ইছানাইনিল ‘আযীম শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি ৩৫ হিজরী সনের ১৮ই যিলহজ্জ শরীফ ইয়াওমুল জুমুয়াহ শরীফ (জুমুয়ার) নামাযের পূর্বে ১১:০০ টা বেজে ৫৯ মিনিট ১৫ সেকেন্ডে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন।” সুবহানাল্লাহ!
এই সম্মানিত ওয়াক্বেয়াহ মুবারক উনার মাধ্যমে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার এক অভূতপূর্ব অনন্য বেমেছাল মহাসম্মানিত তাওয়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক উনার বিষয়টি স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছেন। সুবহানাল্লাহ! এতো গভীর মহাসম্মানিত তা‘য়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক! সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাঈন আলাইহিস সালাম তিনি যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন তো ঘড়ি ছিলো না। কিন্তু প্রায় দেড় হাজার বছর পরে এসে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি এতো নিঁখুতভাবে বর্ণনা করে দিলেন যে, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাঈন আলাইহিস সালাম তিনি কয়টা বেজে, কতো মিনিটে এবং কতো সেকেন্ডে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! প্রকৃতপক্ষে সন্দেহাতীতভাবে পৃথিবীর ইতিহাসে এটা এক নযীরবিহীন মহাসম্মানিত ওয়াক্বেয়াহ মুবারক, যেই মহাসম্মানিত ওয়াক্বেয়াহ মুবারক উনার মেছাল আর নেই। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার বেমেছাল মহাসম্মানিত তা‘য়াল্লুক-নিসবত মুবারক উনার বিষয়টি উপলব্ধি করার জন্য চিন্তাশীল ও আক্বলমান্দের জন্য এই একটি মহাসম্মানিত ওয়াক্বেয়াহ মুবারকই যথেষ্ট। সুবহানাল্লাহ!
(২)
এটা চিরন্তন সত্য কথা যে,
قدر نعمت بعد زوال
অর্থ: “সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক উনার ক্বদর সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক হস্তচ্যুত হলে বুঝা যায়।”
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি যে আমাদের জন্য, এই উম্মাহর জন্য, সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য কতো বড় মহাসম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক, সেটা সকলের চিন্তা-কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক পেয়ে সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক উনার ক্বদর করা এবং সেই সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক সম্পর্কে বর্ণনা করা যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক পেয়ে সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক উনার গুরুত্ব উপলব্ধি করা আবশ্যক। অন্যথায় প্রাপ্ত সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক উনার ক্বদর করা সম্ভব নয়। আর প্রাপ্ত সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক উনার গুরুত্ব উপলব্ধি করার জন্য প্রাপ্ত সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক সম্পর্কে বর্ণনা করা ফরয এবং এটা সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক প্রাপ্তির একটা কৃতজ্ঞতা প্রকাশও বটে। এই জন্য যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
وَاَمَّا بِنِعْمَةِ رَبِّكَ فَحَدِّثْ
অর্থ: “আপনার রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে যেই সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক দিয়েছেন, সেই সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক সম্পর্কে আপনি বর্ণনা করুন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা দ্বুহা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১১)
আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَلنُّعْمَانِ بْنِ بَشِيْرٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلتَّحَدُّثُ بِنِعْمَةِ اللهِ شُكْرٌ وَّتَرْكُهَا كُفْرٌ وَّمَنْ لَّا يَشْكُرِ الْقَلِيْلَ لَا يَشْكُرِ الكَثِيْرَ وَمَنْ لَّا يَشْكُرِ النَّاسَ لَا يَشْكُرِ اللهَ.
অর্থ: “হযরত নু’মান ইবনে বশীর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে প্রাপ্ত সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক সম্পর্কে বর্ণনা করা শুকরিয়া হিসেবে গণ্য এবং বর্ণনা না করা কুফরী। যে ব্যক্তি সামান্য সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক পেয়ে শুকরিয়া আদায় করে না, সে অধিক সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক পেয়েও শুকরিয়া আদায় করবে না। যে ব্যক্তি মানুষের শুকরিয়া আদায় করে না, সে মহান আল্লাহ পাক উনারও শুকরিয়া আদায় করতে পারবে না।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (শু‘য়াবুল ঈমান শরীফ, মুসনাদে আহমদ, আত ত্ববারনী, মাজমাউয যাওয়ায়িদ, মুসনাদে বাযযার, কাশফুল খফা, আল ফাতহুল কাবীর ইত্যাদি)
সেটাই আমরা দেখতে পাই যখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত হিজরত মুবারক করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখেন, তখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার অধিবাসীগণ উনারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্বাগত মুবারক জানিয়ে পাঠ করেছিলেন,
طَلَعَ الْبَدْرُ عَلَيْنَا * من ثنيات الوداع
وَجَبَ الشُّكْرُ عَلَيْنَا * ما دعا لله داع
اَيَّهُا الْـمَبْعُوْثُ فِيْنَا * جئت بالامر المطاع
অর্থ: “ছানিয়াতুল বিদা হতে আমাদের উপর পূর্ণচন্দ্র উদিত হয়েছেন। আমাদের উপর শুকরিয়া আদায় করা ফরয-ওয়াজিব হয়ে গেছে এজন্য যে, দায়ি’ তথা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য আমাদেরকে সম্মানিত আহ্বান মুবারক করছেন। সুবহানাল্লাহ! হে মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে প্রেরিত মহাসম্মানিত রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি আমাদের মাঝে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিয়েছেন অনুসরণীয় বিষয়বস্তু তথা সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনাকে নিয়ে।” সুবহানাল্লাহ! (বিদায়াহ-নিহায়াহ, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ, রযীন ইত্যাদি)
আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশার্থে এবং তা‘য়াল্লুক্ব-নিসবত ও রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক লাভের প্রত্যাশায় একখানা বিশেষ মহাসম্মানিত ওয়াক্বেয়াহ মুবারক বর্ণনা করবো। যা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘ফালইয়াফরহূ শরীফ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালনের শামিল। সুবহানাল্লাহ! তাওফীক্ব ভিক্ষা চাচ্ছি সহজ-সরল, সুন্দর ও সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করার। আমীন!
তবে উক্ত বিশেষ ওয়াক্বেয়াহ মুবারক বর্ণনা করার পূর্বে তা ভালোভাবে উপলব্ধি করার লক্ষ্যে প্রাসঙ্গিক একখানা ওয়াক্বেয়াহ মুবারক উনার অবতারণা- হযরত আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে চিনেন না, এমন কোন আলিম পৃথিবীর বুকে নেই। উনারই সম্মানিত জীবনী মুবারক-এ ঘটে যায় জগতবাসীর জন্য একটি শিক্ষনীয় ঘটনা। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে উনার গভীর তা‘য়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক। হযরত আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি প্রতিদিন বা’দ ‘ইশা মুরাকাবায় বসে হিন্দুস্থান থেকে চলে যেতেন সুদূর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দীদার মুবারক-এ। সুবহানাল্লাহ! নিয়মিতভাবে এই তরতীবে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করতেন তিনি। এভাবে বেশ কয়েক বছর অতিবাহিত হলো। একদিন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ তিনি আরজী পেশ করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আপনার আরো অধিক সম্মানিত তা‘য়াল্লুক্ব-নিসবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করতে চাই। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, ‘যদি তাই হয়, তাহলে আপনি শায়েখ আহমদ ফারূক্বী সিরহিন্দী মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট যান, উনার হাত মুবারক-এ বায়াত হন এবং উনার সম্মানিত ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করুন।’ সুবহানাল্লাহ! হযরত আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি চুপ হয়ে গেলেন। তিনি আর কিছু বললেন না। তিনি প্রতিদিনের মতো আজও নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার শেষে উনার বাসগৃহে চলে আসলেন। উনার মাথা চক্কর খেতে লাগলো। কারণ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ‘যেই শায়েখ আহমদ ফারূক্বী সিরহিন্দী মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট যেতে, উনার হাত মুবারক-এ বায়াত হতে এবং উনার সম্মানিত ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করতে’ হযরত আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন তিনি তো উলামায়ে সূ’দের কথায় ‘সেই শায়েখ আহমদ ফারূক্বী সিরহিন্দী মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি’ উনাকে কাফির ফাতওয়া দিয়ে উনার বিরুদ্ধে একখানা বই লিখেছেন! হযরত আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সকালে উঠে তাড়াতাড়ি লিখিত সেই বইখানা স্বহস্তে ছিড়ে টুকরো টুকরো করে আগুনে পুড়িয়ে নিশ্চিহ্ন করে দিলেন। রওয়ানা হলেন সিরহিন্দ শরীফ পানে। যদিও তিনি তখন ক্বাদেরীয়া ত্বরীক্বাহ উনার একজন বিশিষ্ট বুযূর্গ এবং খিলাফতপ্রাপ্ত খলীফা। তারপরেও তিনি সিরহিন্দ শরীফ গেলেন এবং হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার হাত মুবারক-এ বায়াত গ্রহণ করে উনার সম্মানিত ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করার মাধ্যম দিয়ে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আরো অধিক সম্মানিত তা‘য়াল্লুক্ব-নিসবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করলেন। সুবহানাল্লাহ!
হযরত আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার হাত মুবারক-এ বায়াত গ্রহণ করে সম্মানিত ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করার মাধ্যম দিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আরো অধিক তা‘য়াল্লুক্ব-নিসবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করলেন। সুবহানাল্লাহ!
হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক বলার অপেক্ষাই রাখে না। তিনি হচ্ছেন মুজাদ্দিদে আলফে ছানী তথা দ্বিতীয় সহস্রাব্দের মুজাদ্দিদ। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, তিনি হচ্ছেন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের পর থেকে ১৪শ’ হিজরী পর্যন্ত যত হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম এবং যত হযরত মুজাদ্দিদ রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা অতীত হয়েছেন উনাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় ওলীউল্লাহ, সবচেয়ে বড় মুজাদ্দিদ। সুবহানাল্লাহ! তাহলে তিনি কতো সীমাহীন মর্যাদা-মর্তাবা, শান-শুয়ূনাত, মাক্বামত মুবারক উনাদের অধিকারী, সেটা এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ! উনার শান মুবারক-এ স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
يُبْعَثُ رَجُلٌ عَلـٰى اَحَدَ عَشَرَ مِائَةِ سَنَةٍ وَهُوَ نُوْرٌ عَظِيْمٌ اِسْـمُه اِسْـمِىْ بَيْنَ السُّلْطَانَيْنِ الْـجَابِرَيْنِ يَدْخُلُ الْـجَنَّةَ بِشَفَاعَته رِجَالٌ اُلُوْفًا.
অর্থ: “একাদশ হিজরী সনে একজন মহান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনার আবির্ভাব ঘটবে, তিনি হচ্ছেন ‘নূরুন আযীম তথা মহান নূর’। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত ও পবিত্র নাম মুবারক হবে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসম বা নাম মুবারক-এ। তিনি দুই যালিম বাদশাহর মাঝে তাশরীফ মুবারক নিবেন। উনার মুবারক শাফা‘য়াতে (সুপারিশে) হাজার হাজার লোক সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ প্রবেশ করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (জামউল জাওয়াম, জামিউদ দুরার)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন,
يَكُوْنُ فِـىْ اُمَّتِـىْ رَجُلٌ يُقَالُ لَه صِلَةُ يَدْخُلُ الْـجَنَّةَ بِشَفَاعَتِه كَذَا وَكَذَا مِنَ النَّاسِ.
অর্থ: “আমার উম্মতের মাঝে একজন মহান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনার আবির্ভাব ঘটবে। উনাকে ‘ছিলাহ’ বলা হবে। উনার মুবারক শাফা‘য়াতে অসংখ্য মানুষ সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ প্রবেশ করবে।” সুবহানাল্লাহ! (জামউল জাওয়াম, জামিউদ দুরার, জামিউল আহাদীছ, যুহুদ, ইবনে সা’দ, বাইহাক্বী)
মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত কুদরত মুবারক এবং উনার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মু’জিযা শরীফ যে কতো হিকমতপূর্ণ তা জিন-ইনসান কখনো চিন্তা-কল্পনা করে মিলাতে পারবে না। সুবহানাল্লাহ! মূলত, উনারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিশেষ ওয়াক্বিয়াহ মুবারক দ্বারা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সবাইকে শিক্ষা মুবারক দিয়ে থাকেন। হযরত আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ন্যায় হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ক্ষেত্রেও একখানা বিশেষ বরকতময় মহাসম্মানিত ওয়াক্বেয়াহ মুবারক সংঘটিত হয়। সেই মহাসম্মানিত ওয়াক্বিয়াহ মুবারক উনার মধ্যে সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য সীমাহীন বিশেষ ইবরত-নছীহত মুবারক নিহিত রয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! আর সেই মহাসম্মানিত বিশেষ বরকতময় ওয়াক্বেয়াহ মুবারকখানা হচ্ছেন- হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একবার নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ আরজি মুবারক পেশ করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আপনার আরো অধিক সম্মানিত রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক, তা‘য়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক হাছিল করতে চাই, আরো অধিক নৈকট্য অর্জন করতে চাই। তখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, যদি তাই হয়, তাহলে আপনি আমার আখাচ্ছুল খাছ মাহবূব হাবীব, আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আহলু বাইত শরীফ, মুজাদ্দিদে আ’যম, সম্মানিত রাজারবাগ শরীফ উনার যিনি মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম রয়েছেন উনার নিকট যান, উনার নিকট যেয়ে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরহ্ মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক-এ) বায়াত হন এবং উনার থেকে সম্মানিত বিশেষ নি‘য়ামত মুবারক হাছিল করুন। তবেই আপনি আমার আরো অধিক সম্মানিত রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক, তা‘য়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক হাছিল করতে পারবেন, আরো অধিক নৈকট্য মুবারক অর্জন করতে পারবেন। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! অতঃপর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক-এ হযরত শায়েখ আহমদ ফারূক্বী সিরহিন্দী মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি সম্মানিত রাজারবাগ দরবার শরীফ এসে মুজাদ্দিদে আ’যম, সম্মানিত রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ বায়াত হওয়ার জন্য বিনতীভাবে আরজি মুবারক পেশ করেন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যা ইরশাদ মুবারক করেছেন তা ব্যক্ত করেন। তখন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি দয়া করে মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মানিত আরজি মুবারক কবূল করে উনাকে সম্মানিত বায়াত মুবারক করিয়ে স্বীয় মুরীদ হিসেবে কবূল করে নেন। সুবহানাল্লাহ!
এই মহাসম্মানিত ওয়াক্বেয়াহ মুবারক মুজাদ্দিদে আ’যম, সম্মানিত রাজারবাগ শরীফ উানর মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ১৪৩৮ হিজরী সনের ২২শে জুমাদাল ঊলা শরীফ সম্মানিত বিশেষ মাহফিল মুবারক-এ বর্ণনা মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে এই মহাসম্মানিত ওয়াক্বেয়াহ মুবারক থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার কত বেমেছাল মহাসম্মানিত তা‘য়াল্লুক-নিসবত মুবারক। সুবহানাল্লাহ! যেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী কস্মিনকালেও চিন্তা-কল্পনা করে মিলাতে পারবে না। সুবহানাল্লাহ!
মূলত, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মি’রাজ শরীফ উনার রাতে যেমন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছোহবত মুবারক-এ এসে সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে সম্মানিত বিশেষ নি‘য়ামত মুবারক হাছিল করেছিলেন, ঠিক তেমনিভাবে ১৩শ’ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় মুজাদ্দিদ হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিসহ পৃথিবীর ইতিহাসে এই পর্যন্ত যত হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম এবং হযরত মুজাদ্দিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম অতীত হয়েছেন, উনারা প্রত্যেকেই আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছোহবত মুবারক-এ বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে এসে সম্মানিত বিশেষ নি‘য়ামত মুবারক হাছিল করেছেন এবং হাছিল করে যাচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, উনারা প্রত্যেকেই হচ্ছেন মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার সম্মানিত মুরীদ উনাদের অন্তর্ভুক্ত, আর আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি হচ্ছেন উনাদের প্রত্যেকেরই মহাসম্মানিত শায়েখ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম। সুবহানাল্লাহ! কেউ যদি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের আখাচ্ছুল খাছ সম্মানিত তা‘য়াল্লুক্ব-নিসবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করতে চায়, তাহলে তার জন্য ফরযে আইন হচ্ছে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরহ্ মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক-এ) বায়াত গ্রহণ করা। সুবহানাল্লাহ! এই দ্বার সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্যই উন্মুক্ত। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
তাহলে ফিক্বির করতে হবে যে, আমরা কতো বড় মহাসম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক লাভ করেছি! আমরা কি কস্মিনকালেও তা চিন্তা-কল্পনা করে মিলাতে পারবো! হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা ব্যতীত পৃথিবীর ইতিহাসে আর কেউ কি এতো বড় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নি‘য়ামতে ‘উযমা মুবারক লাভ করতে পেরেছেন! তাহলে আমাদের কি করা উচিত! আমাদের কতোটুকু সম্মানিত খুশি মুবারক প্রকাশ করা এবং শুকরিয়া আদায় করা উচিত! উনার সম্মানার্থে শুকুরগুযারীর সাথে সম্মানিত খুশি মুবারক প্রকাশ করে কতটুকু মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘ফালইয়ারহূ শরীফ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা উচিত!
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি আমাদের সবাইকে হাক্বীক্বী ছহীহ সমঝ দান করুন এবং উনার সম্মানার্থে শুকুরগুযারীর সাথে সম্মানিত খুশি মুবারক প্রকাশ করে হাক্বীক্বীভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘ফালইয়ারহূ শরীফ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন! আমীন! আমীন!
(৩)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত শান মুবারক-এ আখাচ্ছুল খাছ বিশেষ তিনখানা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, যেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফসমূহ মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি প্রায় সময় আলোচনা মুবারক করে থাকেন। সুবহানাল্লাহ!
১নং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ:
اَنَّ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُوْلُ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ طَهَّرَهُمُ اللهُ مِنْ شَجَرَةِ النُّبُوَّةِ وَمَوْضِعِ الرِّسَالَـةِ وَمُـخْتَلِفِ الْمَلَائِكَةِ وَبَيْتِ الرَّحْمَةِ وَمَعْدِنِ الْعِلْمِ.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবসময় ইরশাদ মুবারক করতেন। আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে (আমাদেরকে) সম্মানিত নুবুওয়াত মুবারক উনার বৃক্ষ, সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার স্থান, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক (ইত্যাদি সমস্ত কিছু) থেকে পবিত্র রেখেছেন, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী) করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে দুররে মানছূর ৬/৬০৬, তাফসীরে ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩)
২নং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ:
عَنْ حَضْرَتْ عَـلِـىٍّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ شَجَرَةُ النُّبُوَّةِ وَمَعْدِنُ الرِّسَالَـةِ لَيْسَ اَحَدٌ مِّـنَ الْـخَلَائِقِ يَفْضُلُ اَهْلَ بَيْـتِـىْ غَيْرِىْ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমরা সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার সম্মানিত বৃক্ষ মুবারক এবং সম্মানিত রিসালাত মুবারক উনার সম্মানিত খনি মুবারক। সুবহানাল্লাহ! সমগ্র সৃষ্টি জগতে একমাত্র আমি ব্যতীত দ্বিতীয় আর কেউ নেই, যে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করে। অর্থাৎ সমগ্র সৃষ্টি জগতে আমার পরেই আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক, ফযীলত মুবারক।” সুবহানাল্লাহ!
৩নং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ:
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ الله تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ لَّايُقَاسُ بِنَا اَحَدٌ.
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। আমাদের সাথে অন্য কারো তুলনা করা যাবে না।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (দায়লামী ৪/২৮৩, জামি‘উল আহাদীছ ২২/২১৯, কানজুল উম্মাল ১২/১০৪, জাম‘উল জাওয়ামি’ ১/২৪৯৫০, যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ ১/১৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৭ ইত্যাদি)
ইমামুল মুহাদ্দিছীন মিনাল আউওয়ালিন ইলাল আখিরীন, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন যে, “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে বলেছেন যে, আলোচ্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে-
اَهْلُ بَيْتٍ نَـحْنُ
(আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম) বলেন আমি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে আমার নিজের অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছি।” সুবহানাল্লাহ!
তাহলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার কতো বেমেছাল সম্মানিত তা‘য়াল্লুক-নিসবত মুবারক সেটা সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!
0 Comments:
Post a Comment