নাস্তিকদের আপত্তি : কুরান কিভাবে নাজিল হল? - এক পবিত্র রাতে (Quran 44:3, 97:1) নাকি পুরো রমজান মাস জুড়ে (Quran 2:185, 17:6, 25:32)!
খণ্ডন : মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ সময় ও অবস্থার প্রেক্ষিতে ধাপে ধাপে ২৩ বছরে নাযিল করেছেন।
যেমন কাফিররা প্রশ্ন করলো পবিত্র কুরআন শরীফ কেন এক দফায় নাযিল হয়নি। তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি এর প্রত্যুত্তরে (Quran 25:32) ইরশাদ মুবারক করেন-
كَذٰلِكَ لِنُثَبّتَ بِهِ فُؤَادَكَ ۖ وَرَتَّلْنَاهُ تَرْتِيْلًا
অর্থ : “আমি এমনিভাবে ক্রমে ক্রমে নাযিল করেছি, আপনার অন্তকরণকে মজবূত করার জন্যে।” (পবিত্র সূরা ফুরক্বান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩২)
উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ দ্বারা পবিত্র কুরআন শরীফ যে, পর্যায়ক্রমে ধাপে ধাপে নাযিল হয়েছে সে বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে।
কিন্তু পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস জুড়ে পবিত্র কুরআন শরীফ নাযিল হয়েছে, এধরনের কোন কথা পবিত্র কুরআন শরীফ উনার কোথাও উল্লেখ নেই। বরং পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাসে পবিত্র কুরআন শরীফ নাযিলের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি (Quran 2:185) ইরশাদ মুবারক করেন-
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِي اُنزِلَ فِيهِ الْقُرْاٰنُ
অর্থ : “পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস হলো সে মাস, যে মাসে পবিত্র কুরআন শরীফ নাযিল করা হয়েছে।” (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৮৫)
আর পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাসের মধ্যে পবিত্র লাইলাতুল ক্বদর শরীফ এক বিশেষ মহিমান্বিত রাত। এই মহিমান্বিত রাতে মহান আল্লাহ পাক তিনি লাওহে মাহফুয থেকে এক দফায় পূর্ণ কুরআন শরীফ বাইতুল মামূরে নাযিল করেন।
তাই মহান আল্লাহ পাক তিনি (Quran 97:1) ইরশাদ মুবারক করেন-
اِنَّا اَنْزَلْنَاهُ فِيْ لَيْلَةِ الْقَدْرِ
অর্থ : “আমি পবিত্র কুরআন শরীফ পবিত্র লাইলাতুল ক্বদর শরীফে নাযিল করেছি।” (পবিত্র সূরা ক্বদর শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১)
আর মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র লাইলাতুল ক্বদর শরীফে পবিত্র কুরআন শরীফ নাযিল করার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পবিত্র লাইলাতুল বরাত শরীফে, যাকে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার পরিভাষায় “লাইলাতুল মুবারাকাহ” নামে অভিহিত করা হয় এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার পরিভাষায় “লাইলাতুন নিসফে মিন শা’বান” নামে অভিহিত করা হয়।
এই লাইলাতুল মুবারাকাহ বা লাইলাতুন নিসফে মিন শা’বান উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ নাযিলের সিদ্ধান্ত নেন। তাই মহান আল্লাহ পাক তিনি (Quran 44:3) ইরশাদ মুবারক করেন-
اِنَّا اَنْزَلْنَاهُ فِيْ لَيْلَةٍ مُّبَارَكَةٍ ۚ اِنَّا كُنَّا مُنْذِرِيْنَ ◌ فِيْهَا يُفْرَقُ كُلُّ اَمْرٍ حَكِيْمٍ ◌ اَمْرًا مّنْ عِنْدِنَا ۚ
অর্থ : “আমি (মহান আল্লাহ পাক) পবিত্র কুরআন শরীফ নাযিল করেছি (অর্থাৎ নাযিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি) পবিত্র লাইলাতুল বরাত শরীফে, নিশ্চয়ই আমি সতর্ককারী। এ মহামান্বিত রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয়ের ফায়সালা (স্থিরীকৃত) করা হয়। আমার পক্ষ থেকে আদেশক্রমে।” (পবিত্র সূরা দুখান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২-৫)
সুতরাং পবিত্র কুরআন শরীফ নাযিলের ফায়সালা (স্থিরীকৃত) করা হয় পবিত্র লাইলাতুন নিসফে মিন শা’বান উনার মধ্যে, আর পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস উনার পবিত্র লাইলাতুল ক্বদর শরীফ উনার মধ্যে লাওহে মাহফুয থেকে এক দফায় পূর্ণ কুরআন শরীফ বাইতুল মামূরে নাযিল করা হয়। সে বাইতুল মামূর থেকে পর্যায়ক্রমে ২৩ বছরে পবিত্র কুরআন শরীফ যমীনে নাযিল হয়। আর যমীনে প্রথম নাযিল হয় পবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ, ইয়ামুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার), পবিত্র হেরা গুহায়।
0 Comments:
Post a Comment