নাস্তিকদের আপত্তি : মানব সৃষ্টির উদ্দেশ্য কি? শূধু আল্লাহর উপাসনা করা (Quran 51:56) নাকি সেই সাথে মুহম্মদের সুন্নাহ অনুসরন করা (Quran 7:158)!
খণ্ডন : মহান আল্লাহ পাক তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর মানব সৃষ্টির উদ্দেশ্যও জানিয়ে দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَا خَلَقْتُ الْـجِنَّ وَالْاِنْسَ اِلَّا لِيَعْبُدُوْنِ
অর্থ : “আমার ইবাদত করার জন্যই আমি মানব ও জিন জাতি সৃষ্টি করেছি।” (পবিত্র সূরা যারিয়াহ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৬)
এখন মানুষ কিভাবে ইবাদত করবে, সে বিষয়টি শিক্ষা দেয়ার জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে প্রেরণ করেছেন। অর্থাৎ হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতিনিধি বা খ¦লীফা। আর তাই উনাদের আদেশ মান্য করার অর্থই হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ মান্য করা এবং উনাদের আদেশ অমান্য করার অর্থই হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ অমান্য করা।
এ বিষয়টিই মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَّن يُطِعِ الرَّسُوْلَ فَقَدْ اَطَاعَ اللهَ ۖ وَمَن تَوَلّٰى فَمَا اَرْسَلْنَاكَ عَلَيْهِمْ حَفِيْظًا.
অর্থ : “যে লোক রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হুকুম মান্য করবে সে মহান আল্লাহ পাক উনারই হুকুম মান্য করলো। আর যে লোক বিমুখতা অবলম্বন করলো, আমি আপনাকে তাদের জন্য রক্ষণাবেক্ষণকারী নিযুক্ত করে পাঠাইনি।” (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৮০)
নাস্তিকরা যেহেতু মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি ও উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে থাকে এবং তারা নিতান্তই মূর্খ তাই তারা বিষয়গুলো নিয়ে মতপার্থক্য করে থাকে।
বিষয়টি বুঝার জন্য সামান্য একটি উদাহরণের অবতারণা করা হলো। সাধারণত কোন একটি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমকে বেগবান করার জন্য বিভিন্ন কাজের উপযোগী করে বিভিন্ন সেকশনে ভাগ করে নেয়া হয়। প্রতিটি সেকশনে বিভিন্ন কর্মচারী কাজ করে থাকে। প্রতিটি সেকশনের কার্যাবলী সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য এক একজন দায়িত্বশীল নিযুক্ত থাকে যারা উক্ত সেকশনের কর্মচারীদেরকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কর্মচারীদের জন্য যখন কোন আদেশ-নির্দেশ প্রদান করে তখন প্রতিটি সেকশনের দায়িত্বশীলের মাধ্যমেই করে থাকে। প্রতিটি দায়িত্বশীল সেকশনের কর্মচারীদের উপর সে আদেশ-নির্দেশগুলো প্রয়োগ করে।
কর্মচারীদেরকে নির্দেশগুলো সেকশনের দায়িত্বশীলরাই প্রদান করে। কর্মচারীরা দায়িত্বশীলের সে আদেশ পালনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির প্রধানেরই আদেশ পালন করে।
এটি দুনিয়াবী একটি উদাহরণ। এ সমস্ত দায়িত্বশীলরা সবাই ভুল-ত্রুটিযুক্ত। তাই আদেশ-নির্দেশ প্রদানের মধ্যে নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির বিষয় জড়িত থাকে। কিন্তু হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ হতে ওহী মুবারক নাযিল হওয়া ব্যতীত নিজ থেকে কোন কথা বলেন না বা নিজ থেকে কোন কাজ করেন না।
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَا يَنْطِقُ عَنِ الْـهَوٰى ◌ اِنْ هُوَ اِلَّا وَحْيٌ يُوحٰى ◌
অর্থ : “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজ থেকে কোন কথা বলেন না বা কোন কাজ করেন না, যে পর্যন্ত উনার প্রতি ওহী মুবারক প্রেরণ করা হয়।” (পবিত্র সূরা নজম শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩-৪)
আর তাই, মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরণ করার জন্য আদেশ মুবারক প্রদান করেছেন।
যেমন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
قُلْ يَا اَيُّهَا النَّاسُ اِنّـي رَسُوْلُ اللهِ اِلَيْكُمْ جَـمِيْعًا الَّذِي لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِ ۖ لَا اِلٰهَ اِلَّا هُوَ يُـحْيِي وَيُـمِيْتُ ۖ فَاٰمِنُوا بِاللهِ وَرَسُوْلِهِ النَّبِيّ الْاُمّيّ الَّذِي يُؤْمِنُ بِاللهِ وَكَلِمَاتِهٖ وَاتَّبِعُوْهُ لَعَلَّكُمْ تَهْتَدُوْنَ ◌
অর্থ : “(হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি বলে দিন। হে মানব সম্প্রদায়! আমি তোমাদের সবার প্রতি মহান আল্লাহ পাক উনার প্রেরিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সমগ্র আসমান ও যমীনে মহান আল্লাহ পাক উনারই রাজত্ব। তিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তিনি জীবন ও মৃত্যু দান করেন। সুতরাং তোমরা সবাই বিশ্বাস স্থাপন করো মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি, উনার প্রেরিত মূল নবী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি, যিনি বিশ্বাস রাখেন মহান আল্লাহ পাক উনার উপর এবং উনার সমস্ত কালাম মুবারক উনাদের উপর। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরণ করো যাতে তোমরা সরল পথপ্রাপ্ত হতে পারো।” (পবিত্র সূরা আ’রাফ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫৮)
সুতরাং স্পষ্টতই প্রমাণিত হলো যে, মানব সৃষ্টির উদ্দেশ্য হচ্ছে শুধুমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার উপাসনা বা ইবাদত করা। আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুন্নাহ মুবারক উনার অনুসরন করা মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদত উনারই নামান্তর।
0 Comments:
Post a Comment