বনী ইসলাঈলের পাপাচারে লিপ্ত হওয়ার প্রেক্ষিতে মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার ব্যাপারে বেয়াদবীমূলক বক্তব্যের দাঁতভাঙ্গা জবাব
নাস্তিকদের আপত্তি : ঈশা (Jesus) কি দোজখে যাবে? - না (Quran 4:158, 3:45) এবং হ্যা (Quran 21:98 as he is worshiped by millions of Christians)!
খণ্ডন: মহান আল্লাহ পাক উনার কর্তৃক মনোনীত সর্বোচ্চ স্তরের আব্দ হচ্ছেন হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনারা। তাই উনাদের শান-মান মুবারক সম্পর্কে এ ধরনের প্রশ্ন করাই বেয়াদবী।
আর তাই মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার শান-মান মুবারক সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক করেন-
اِذْ قَالَتِ الْمَلَائِكَةُ يَا مَرْيَـمُ اِنَّ اللهَ يُبَشّرُكِ بِكَلِمَةٍ مّنْهُ اسْـمُهُ الْمَسِيْحُ عِيْسَى ابْنُ مَرْيَـمَ وَجِيْهًا فِي الدُّنْيَا وَالْاٰخِرَةِ وَمِنَ الْمُقَرَّبِيْنَ ◌
অর্থ : “যখন হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা বললেন, হে হযরত উম্মু রূহিল্লাহ আলাইহাস সালাম! মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে উনার এক কালাম মুবারক উনার সুসংবাদ দিচ্ছেন, উনার নাম মুবারক হলো মসীহ হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম। তিনি দুনিয়া ও আখিরাতে মহাসম্মানের অধিকারী এবং মহান আল্লাহ পাক উনার ঘনিষ্ঠদের অন্তর্ভুক্ত ।” (পবিত্র সূরা অএল ইমরান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৪৫)
আবার মহান আল্লাহ পাক তিনি যে হযরত রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে ইয়াহুদীদের চক্রান্ত থেকে উদ্ধার করে আসমানে স্বশরীর মুবারকে উঠিয়ে নিয়েছেন সে প্রসঙ্গে ইরশাদ মুবারক করেন-
بَل رَّفَعَهُ اللهُ اِلَيْهِ ۚ وَكَانَ اللهُ عَزِيْزًا حَكِيْمًا ◌
অর্থ : “বরং মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে নিজের কাছে উঠিয়ে নিয়েছেন। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি হচ্ছেন মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।” (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫৮)
উপরোক্ত আয়াত শরীফদ্বয় উনাদের মধ্যে হযরত রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার শান-মান মুবারক সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। অথচ নাস্তিকরা তাদের গুমরাহির প্রবলতা ও ইসলাম বিদ্বেষীতার কারণে হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্পর্কে এলোমেলো বক্তব্য প্রদানের নিমিত্তে নিম্নোক্ত আয়াত শরীফ উনার অবতারণা করে সাধারণ মুসলমান উনাদেরকে বিভ্রান্ত করা অপচেষ্টা করছে-
اِنَّكُمْ وَمَا تَعْبُدُونَ مِن دُوْنِ اللهِ حَصَبُ جَهَنَّمَ اَنْتُمْ لَـهَا وَارِدُوْنَ ◌
অর্থ : “তোমরা এবং মহান আল্লাহ পাক উনার পরিবর্তে তোমরা যাদেরকে উপাস্য হিসেবে গ্রহণ করেছ, সেগুলো দোযখের ইন্ধন। তোমরাই তাতে প্রবেশ করবে।” (পবিত্র সূরা আম্বিয়া শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৯৮)
এই আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার পরিবর্তে বনী ইসরাইলরা যাদেরকে উপাস্য হিসেবে গ্রহণ করেছ তাদেরকে দোযখের ইন্ধন বানানো বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। আর পরবর্তী আয়াত শরীফ উনার মধ্যে বনী ইসরাইলীদের উপাস্য বস্তুগুলো যে মূর্তি তা স্পষ্ট করে দেয়া হয়েছে। আর তাই মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
لَوْ كَانَ هٰؤُلَاءِ اٰلِـهَةً مَّا وَرَدُوْهَا ۖ وَكُلٌّ فِيْهَا خَالِدُوْنَ ◌
অর্থ : “এই মূর্তিরা যদি উপাস্যই হত, তবে জাহান্নামে প্রবেশ করত না। প্রত্যেকেই তাতে চিরস্থায়ী হয়ে পড়ে থাকবে।” (পবিত্র সূরা আম্বিয়া শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৯৯)
সুতরাং পবিত্র সূরা আম্বিয়া শরীফ উনার পবিত্র ৯৮নং আয়াত শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত উপাস্যদের সাথে হযরত রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে সম্পৃক্ত করা স্পষ্টই ভন্ডামি বৈ কিছুই নয়।
এছাড়াও মুসলমান উনাদের জন্য হযরত রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে ইংরেজীতে Jesus নামে অভিহিত করা সম্পূর্ণরূপে কুফরী। কেননা খ্রিষ্টানরা Jesus নামে যাকে অভিহিত করে সে ব্যক্তি হযরত রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি নন। যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَقَوْلِـهِمْ اِنَّا قَتَلْنَا الْمَسِيْحَ عِيْسَى ابْنَ مَرْيَـمَ رَسُوْلَ اللهِ وَمَا قَتَلُوهُ وَمَا صَلَبُوْهُ وَلٰكِن شُبّهَ لَـهُمْ ۚ وَاِنَّ الَّذِيْنَ اخْتَلَفُوْا فِيْهِ لَفِي شَكّ مّنْهُ ۚ مَا لَـهُم بِهِ مِنْ عِلْمٍ اِلَّا اتّبَاعَ الظَّنّ ۚ وَمَا قَتَلُوْهُ يَقِيْنًا ◌
অর্থ : “আর তাদের একথা বলার কারণে যে, মসীহ হযরত রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে শহীদ করেছি যিনি ছিলেন মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল। অথচ তারা না উনাকে শহীদ করেছে, আর না শুলীতে চড়িয়েছে, বরং তারা এরূপ ধাঁধায় পতিত হয়েছিল। বস্তুতঃ তারা এ ব্যাপারে নানা রকম কথা বলে, তারা এক্ষেত্রে সন্দেহের মাঝে পড়ে আছে, শুধুমাত্র অনুমান করা ছাড়া তারা এ বিষয়ে কোন খবরই রাখে না। আর নিশ্চয়ই উনাকে তারা শহীদ করতে পারেনি।” (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫৭)
যেহেতু খ্রিষ্টানরা ক্রুশবিদ্ধ ব্যক্তিটিকে Jesus নামে অভিহিত করে থাকে। অথচ মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَا قَتَلُوهُ يَقِينًا ◌ بَل رَّفَعَهُ اللهُ إِلَيْهِ ۚ
অর্থ : “আর নিশ্চয়ই হযরত রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে তারা শহীদ করতে পারেনি। বরং মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাকে নিজের কাছে উঠিয়ে নিয়েছেন।” (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫৭-১৫৮)
সুতরাং Jesus নামে অভিহিত ব্যক্তিটিকে হযরত রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম জ্ঞান করা কিংবা হযরত রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে Jesus নামে অভিহিত করা সম্পূর্ণরূপে কুফরী।
0 Comments:
Post a Comment