“পবিত্র কুরআন শরীফ,
পবিত্র
হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র
ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে
কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়
সম্পর্কে ফতওয়া”-
পেশ করতে পারায়
মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র দরবার শরীফ-এ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।
সম্মানিত
ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব উনার
উপর মউত পর্যন্ত ইস্তিক্বামত থাকা ফরয
ফক্বীহ উলামা
কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের তবকা বা স্তর মহান আল্লাহ তায়ালা উনার পক্ষ থেকে হযরত ফুক্বাহা কিরাম
রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা এক মহান নিয়ামত। উনাদের অবদানের কারণে আমরা উপহার
পেয়েছি একটি সুশৃঙ্খল শরয়ী হুকুম-আহকাম বা বিধি-বিধান উনাদের নিয়মতান্ত্রিক
বিষয়ভিত্তিক সমাধান বা চূড়ান্ত ফাতাওয়া। এ ইমাম, মুজতাহিদ, ফক্বীহ, উলামা,
আউলিয়া, আছফিয়া ও মাশায়িখ কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম
উনারা উনাদের মাসয়ালাগুলো যুগের পরিবর্তনের কারণে মানুষের নতুন নতুন সমস্যার
মুকাবিলায় মাযহাব চতুষ্ঠয়ের আবিস্কৃত উছূল বা মূলনীতি অনুযায়ী শরীয়ত উনার চারটি
দলীল পবিত্র কুরআন মাজীদ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ শরীফ ও পবিত্র ছহীহ
ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে সমাধান দিয়ে গেছেন। আর যুগ-যামানার পরিবর্তনের কারণে
হযরত ফক্বীহ উলামা কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের তবাক্বাত বা স্তর হয়েছে ৭টি।
যে ৭টি স্তরের উপর পরবর্তী ইমাম, মুজতাহিদ, আউলিয়া,
আছফিয়া, ফুক্বাহা ও উলামা কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম
উনারা একমত হয়েছেন। তবে দু’-একটি স্তরের ব্যাপারে কিছু পার্থক্য থাকায় আমরা এখানে
মূলমূল তিনটি কিতাবের ইবারত নামসহ তুলে ধরলাম। তন্মধ্যে গবেষণার দৃষ্টিতে লক্ষ্য
করে দেখা গেছে যে, তৃতীয় কিতাবটির
তালিকাটি অধিক গ্রহণযোগ্য ও প্রমাণসাপেক্ষ।
৭ম তবকা তথা শেষ
স্তর ও তার পরবর্তী যুগ সম্পর্কে অস্পষ্টতার জাওয়াব:
নি¤েœ উল্লেখিত দ্বিতীয় কিতাব ‘আল-জামিউছ ছগীর লিল্ লাখ্নবী’তে ৭ম
তবকার আলোচনায় উল্লেখ আছে-
بل يجمعون ما يجدون كحاطب الليل
অর্থ: ‘বরং (সপ্তম
তবক্বার ফক্বীহ) উনারা রাতে কাঠ সংগ্রহকারীদের ন্যায় মাসয়ালা সংগ্রহ করবেন।’
এ ইবারতখানা
শুদ্ধই রয়েছে, তবে তা ব্যাখ্যা
সাপেক্ষ। নিম্নে ব্যাখ্যা উল্লেখ
করা হলো:
ব্যাখ্যামূলক
অনুবাদ: সপ্তম তবক্বার ফক্বীহ উনারা পূর্ববর্তী ফক্বীহ উলামা কিরাম রহমতুল্লাহি
আলাইহিম উনাদের পক্ষ থেকে অকাট্য আদিল্লাহ্-র ভিত্তিতে প্রদত্ত চূড়ান্ত ফায়সালা
উনার মধ্যে যা পাবেন তা-ই রাতে কাঠ সংগ্রহকারীদের ন্যায় সংগ্রহ করে নিজে মাসয়ালা
শিক্ষা করবেন এবং মানুষদেরকে ফাতাওয়া দিবেন।
বিস্তারিত
ব্যাখ্যা:
বিস্তারিত
ব্যাখ্যার অনেকগুলো দিক রয়েছে। যা আলাদা-আলাদা নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
(১) পবিত্র কুরআন মাজীদ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের স্পষ্ট
কোনো নছ বা অকাট্য দলীল উনাদের ইশারা বা ইঙ্গিতের উপর অনুমান করে নতুন কোনো
উদ্ভাবিত সমস্যার সমাধান বের করাকেই ‘ক্বিয়াস’ ও ‘ইজতিহাদ’ করা বলা হয়ে থাকে।
ইজতিহাদকৃত বা ক্বিয়াসকৃত মাসয়ালার ছহীহ সমাধানকে ‘ছহীহ ক্বিয়াসী মাসয়ালা’, আর ‘ছহীহ ক্বিয়াসী মাসয়ালা’ উনার উপর সমসাময়িক
নেককার-পরহেযগার বিচক্ষণ মুজতাহিদ,
ফক্বীহ
ও উলামা কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা একমত পোষণ করলে তাকে ‘পবিত্র ইজমাউল
উম্মাহ শরীফ’ উনার মাসয়ালা বলা হয়ে থাকে।
পবিত্র কুরআন
মাজীদ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের অসংখ্য দলীল দ্বারা প্রমাণিত যে, পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ ও মৌলিক ছহীহ ক্বিয়াস
সম্মানিত দীন ইসলাম উনার হুজ্জত বা দলীল। তাই এ দুই দলীলকে অস্বীকার করা মূলত:
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদেরকে অস্বীকার করার মতোই কুফরী।
(২) তবাক্বাতুল ফুক্বাহার ৬ষ্ঠ তবকার পর ক্বিয়ামত পর্যন্ত
বিশাল-বিস্তৃত যামানা হচ্ছে ৭ম তবকা বা স্তর। এ তবকার ফক্বীহ উনারা কেউ নতুনভাবে
উছূল বা মূলনীতি তৈরি করতে পারবেন না। মূলনীতি তৈরি করেছেন শুধু ১ম তবকার মাযহাব
চতুষ্ঠয়ের চারজন মহান ইমাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা। দ্বিতীয় তবকা থেকে ৭ম
তবক্বা পর্যন্ত উনারা শুধু পূর্ব আবিষ্কৃত উছূলের ভিত্তিতে এবং অন্যান্য
নিয়ম-নীতির আলোকে মাসয়ালার সমাধান বের করে ফাতাওয়া দিতে পারবেন।
(৩) ৭ম তবকার কতক বৈশিষ্ট্যের মধ্যে একটি বৈশিষ্ঠ্য হচ্ছে:
উনারা রাতে কাঠ সংগ্রহকারী ব্যক্তির ন্যায় শুধু পূর্ব ফায়সালাকৃত মাসয়ালাগুলো
সংগ্রহ করবেন, নিজে শিক্ষা করবেন, ছাত্রদেরকে শিখাবেন এবং মানুষদেরকে পূর্ববর্তী
ফক্বীহ উনাদের কিতাবের বরাতেই ফাতাওয়া দিবেন। এটা এমন একপ্রকার মাসয়ালা- যে
মাসয়ালার ব্যাপারে অকাট্য দলীল-আদিল্লাহ্-র ভিত্তিতে ৭ম তবকার ফক্বীহ উনাদের
পূর্বের তবকার ফক্বীহগণ চূড়ান্ত ফায়সালা দিয়ে রেখেছেন। যেমন: হানাফী মাযহাব উনার
চূড়ান্ত ফাতাওয়া মতে, উযূর ফরয ৪টি।
কিন্তু যদি কেউ হানাফী মাযহাব উনার মুক্বাল্লিদ দাবি করার পর ফাতাওয়া দেয় যে, উযুর ফরয ৬টি। তাহলে তার এ দাবি ও ফাতাওয়া ভুল
হওয়ার কারণে বাতিল বা পরিত্যাজ্য হবে। এরকম অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে।
(৪) তবে যদি ৭ম তবকার ফক্বীহ উনারা ‘যে সমস্ত সমস্যা
যুগ-যামানার পরিবর্তন ও বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে একেবারেই নতুন উদ্ভব হয়’ এমন
কোনো মাসয়ালার সমাধান দিতে মুখোমুখি হন,
তাহলে
তখন উনারা নিজ নিজ মাযহাব উনার মূল ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার
আবিষ্কৃত উছূল বা মূলনীতিকে সামনে রেখে পবিত্র কুরআন মাজীদ, পবিত্র সুন্নাহ শরীফ ও পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ
শরীফ উনাদের ইশারা বা ইঙ্গিত ধরে সমাধান বের করার চেষ্টা করবেন। এতে যাঁর সমাধানের
মধ্যে পবিত্র দীন ইসলাম উনার চারখানা দলীলের সাথে যত মিল পাওয়া যাবে এবং যাঁর
নির্ভরযোগ্য দলীল যতো বেশি হবে, উনারই ফাতাওয়া বা
সমাধান ততো বেশি গ্রহণযোগ্য ও ছহীহ হবে। আর এ মাসয়ালার সমাধান বা ফাতাওয়াকেই গ্রহণ
করা সকলের জন্য ফরয হিসেবে সাব্যস্ত হবে। যেমন: বর্তমান যামানায় একেবারেই কতক নতুন
উদ্ভাবিত সমস্যার সমাধান দিয়েছেন পঞ্চদশ হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, আওলাদুর রসূল,
ঢাকা-রাজারবাগ
শরীফ উনার মামদূহ মুরশিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম
তিনি। উনার অসংখ্য তাজদীদীমূলক ফাতাওয়া বা সমাধানের মধ্যে কতক হচ্ছে: পবিত্র ঈদে
মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপলক্ষ্যে পবিত্র
সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা কুল-কায়িনাতবাসী সকলের জন্য ফরযে আইন, ইসলামের নামে গণতন্ত্র করা হারাম, হরতাল করা হারাম, লংমার্চ করা হারাম, ব্লাসফেমী আইন চাওয়া হারাম, কুশপুত্তলিকা দাহ করা হারাম ইত্যাদী।
(৫) পঞ্চদশ হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ আ’যম মামদূহ হযরত মুরশিদ
ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন: ক্বিয়ামতের পূর্বে উলুল্ আযম
মিনার রুসুল, নবী ও রসূল হযরত
ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বাস্তবে আখিরী যামানার উম্মত উনার মর্যাদা লাভ
করার জন্য দুনিয়ায় আসবেন এবং হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম উনাকে সাথে নিয়ে
দু’জনই একসাথে কাফির দাজ্জালকে হত্যা করবেন। উনি চল্লিশ বছর দুনিয়াতে বাহ্যিকভাবে
পবিত্র হায়াত মুবারকে অবস্থান করবেন। এ পবিত্র হায়াত মুবারকে তিনি মাযহাব
চতুষ্ঠয়ের কোনো মাযহাবের উছূলকে ও মাসয়ালাকে অনুসরণ করবেন না। তবে তিনি পবিত্র
কুরআন মাজীদ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের উপর নিজে ইজতিহাদ করে সেই মাসয়ালা
অনুযায়ী আমল করবেন। মানুষেরা দেখতে পাবে যে,
উনার
মাসয়ালা হানাফী মাযহাব উনার মাসয়ালার সাথে মিলে যাচ্ছে, তাই তারা ধারনা করবে তিনি হয়তো হানাফী
মাযহাবকে অনুসরণ করছেন। আসলে তিনি কোনো মাযহাবকেই অনুসরণ করবেন না।
এখান থেকে বুঝা
যাচ্ছে যে, তবকাতুল ফুক্বাহা উনার
নিয়ম-পদ্ধতির অধীন সকলেই নন।
নিম্নে তবকাতুল ফুক্বাহা উনার
তালিকা অর্থসহ উল্লেখ করা হলো:
(৯৬৭-৯৬৮)
مطلب فى طَبَقَاتُ الْفُقَهَاءِ اَلْاُوْلى:
طَبَقَةُ الْمُجْتَهِدِيْنَ فِى الشَّرْعِ كَالْاَئِمَّةِ الْاَرْبَعَةِ رَضِىَ الله
عَنْهُمْ وَمَنْ سَلَكَ مَسْلَكَهُمْ فِىْ تَأْسِيْسِ قَوَاعِدِ الْاُصُوْلِ، وَبِه
يَمْتَازُوْنَ عَنْ غَيْرِهِمْ.
অর্থ: তবাক্বাতুল
ফুক্বাহা অর্থাৎ ফক্বীহ উলামা কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের স্তর সম্পর্কে
আলোচনা:
১ম তবকা বা স্তর:
মুজতাহিদীন ফিশ শারয়ি (সম্মানিত শরীয়ত উনার মূল মুজতাহিদ বা ইজতিহাদকারী ফক্বীহ):
যেমন, মাযহাব চতুষ্ঠয়ের চারজন ইমাম
রহমতুল্লাহি আলাইহিম এবং যাঁরা উছূলের ক্ষেত্রে নিজেদের নির্ধারিত নীতিমালা
অনুযায়ী চলেছেন। এ দ্বারা উনারা যোগ্যতায় অন্যান্যগণের থেকে যে অনন্য তা প্রমাণিত
হয়।
ব্যাখ্যা: ১ম
তবকার ফক্বীহ উনাদেরকে ‘মুজতাহিদীন ফিশ শারয়ি’ ছাড়াও আরো কতক নামে ডাকা হয়। যেমন:
‘মুজতাহিদীন ফিল উছূল অর্থাৎ মূল উছূল আবিষ্কারক, ‘আল মুজতাহিদুল মুতলাক্ব অর্থাৎ একক অনন্য মুজতাহিদ, আল-মুজতাহিদুল মুস্তাক্বিল, মুজতাহিদীন ফিদ দ্বীন অর্থাৎ দ্বীন ইসলাম উনার
মূল মুজতাহিদ ইমাম ইত্যাদি।
اَلثَّانِيَةُ: طَبَقَةُ الْمُجْتَهِدِيْنَ
فِى الْمَذْهَبِ كَاَبِىْ يُوْسُفَ وَمُحَمَّدٍ وَسَائِرِ اَصْحَابِ اَبِىْ حَنِيْفَةَ
الْقَادِرِيْنَ عَلى اِسْتِخْرَاجِ الْاَحْكَامِ مِنْ الْاَدِلَّةِ عَلى مُقْتَضَى
الْقَوَاعِدِ الَّتِىْ قَرَّرَهَا اُسْتَاذُهُمْ اَبُوْ حَنِيْفَةَ فِى الْاَحْكَامِ
وَاِنْ خَالَفُوْهُ فِىْ بَعْضِ اَحْكَامِ الْفُرُوْعِ لَكِنْ يُقَلِّدُوْنَه فِىْ
قَوَاعِدِ الْاُصُوْلِ، وَبِه يَمْتَازُوْنَ عَنِ الْمُعَارِضِيْنَ فِى الْمَذْهَبِ
كَالشَّافِعِىِّ وَغَيْرِهِ الْمُخَالِفِيْنَ لَه فِى الْاَحْكَامِ غَيْرِ مُقَلِّدِيْنَ
لَه فِى الْاُصُوْلِ.
অর্থ: ২য় তবকা বা স্তর:
মুজতাহিদীন ফিল মাযহাব (মাযহাব উনার মূল ইমাম উনার অধিন মুজতাহিদ বা ইজতিহাদকারী
ফক্বীহ): যেমন, হযরত ইমাম আবূ
ইঊসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম মুহম্মদ
রহমতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত ইমাম আবূ হানীফাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার অন্যান্য
সকল ছাত্রগণ। উনারা নির্ধারিত নিয়ম-নীতি অনুযায়ী আদিল্লাহ্-র ভিত্তিতে ইজতিহাদ
করার উপযুক্ত আলিম ছিলেন এবং যদিও কোনো কোনো আনুসঙ্গিক মাসয়ালায় হযরত ইমাম আ’যম
রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাথে মতভেদ করেছেন,
কিন্তু
সকলেই হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার উছূলের কায়েদা অনুযায়ী মাসয়ালা নিরূপণ
করেছেন। তবে এ ব্যাপারে বিপরীত উছূলের ভিত্তিতে হানাফী মাযহাব উনার বিপরীতে হুকুম
দিয়েছেন হযরত ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি ও অন্যান্যগণ (যেমন: হযরত ইমাম মালিক
বিন আনাস রহমতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি)।
الثَّالِثَةُ: طَبَقَةُ الْمُجْتَهِدِينَ
فِي الْمَسَائِلِ الَّتِي لَا نَصَّ فِيهَا عَنْ صَاحِبِ الْمَذْهَبِ كَالْخَصَّافِ
وَأَبِي جَعْفَرٍ الطَّحَاوِيِّ وَأَبِي الْحَسَنِ الْكَرْخِيِّ وَشَمْسِ الْأَئِمَّةِ
الْحَلْوَانِيِّ وَشَمْسِ الْأَئِمَّةِ السَّرَخْسِيِّ وَفَخْرِ الْإِسْلَامِ الْبَزْدَوِيِّ
وَفَخْرِ الدِّينِ قَاضِي خَانْ وَأَمْثَالِهِمْ ، فَإِنَّهُمْ لَا يَقْدِرُونَ عَلَى
شَيْءٍ مِنْ الْمُخَالَفَةِ لَا فِي الْأُصُولِ وَلَا فِي الْفُرُوعِ لَكِنَّهُمْ يَسْتَنْبِطُونَ
الْأَحْكَامَ فِي الْمَسَائِلِ الَّتِي لَا نَصَّ فِيهَا عَلَى حَسَبِ الْأُصُولِ وَالْقَوَاعِدِ
.
অর্থ: ৩য় তবকা বা
স্তর: মুজতাহিদীন ফিল্ মাসায়িল (হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার অস্পষ্ট
মাসয়ালা স্পষ্টভাবে সমাধানকারী মুজতাহিদ বা ইজতিহাদকারী ফক্বীহ): যেমন, হযরত খছ্ছাফ রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত আবূ জা’ফর ত্বহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত আবুল হাসান কারখী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত শামসুল আইম্মাহ্ হালওয়ানী রহমতুল্লাহি
আলাইহি, হযরত শামসুল আইম্মাহ্
সারাখসী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ফখরুদ্দীন
বাযদুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ফখরুদ্দীন
ক্বাদী খান রহমতুল্লাহি আলাইহি ও উনাদের মতো অন্যান্য ফক্বীহগণ। উনারা আনুসঙ্গিক
মাসয়ালায় ও উছূলে হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিপরীত কিছু করতে পারতেন
না। যে সমস্ত মাসয়ালা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি পরিষ্কার মিমাংসা করে
যাননি, উনারা শুধু ইহাই উনার
নির্ধারিত উছূল ও নিয়ম-নীতি অনুসারে ইস্তিম্বাত বা সমাধান বের করতেন।
الرَّابِعَةُ : طَبَقَةُ أَصْحَابِ التَّخْرِيجِ
مِن الْمُقَلِّدِينَ كَالرَّازِيِّ وَأَضْرَابِهِ ، فَإِنَّهُمْ لَا يَقْدِرُونَ عَلَى
الِاجْتِهَادِ أَصْلًا ، لَكِنَّهُمْ لِإِحَاطَتِهِمْ بِالْأُصُولِ وَضَبْطِهِمْ لِلْمَآخِذِ
يَقْدِرُونَ عَلَى تَفْصِيلِ قَوْلٍ مُجْمَلٍ ذِي وَجْهَيْنِ وَحُكْمٍ مُبْهَمٍ مُحْتَمِلٍ
لِأَمْرَيْنِ مَنْقُولٍ عَنْ صَاحِبِ الْمَذْهَبِ أَوْ أَحَدٍ مِنْ أَصْحَابِهِ بِرَأْيِهِمْ
وَنَظَرِهِمْ فِي الْأُصُولِ وَالْمُقَايَسَةِ عَلَى أَمْثَالِهِ وَنَظَائِرِهِ مِنْ
الْفُرُوعِ. وَمَا فِي الْهِدَايَةِ مِنْ قَوْلِهِ كَذَا فِي تَخْرِيجِ الْكَرْخِيِّ
وَتَخْرِيجِ الرَّازِيّ مِنْ هَذَا الْقَبِيلِ.
অর্থ: ৪র্থ তবকা
বা স্তর: আছহাবুত্ তাখরীজ মিনাল মুক্বাল্লিদীন (হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি
ও উনার ছাত্রদের প্রদত্ত মাসয়ালার মুজমাল বা অস্পষ্টাংশ ও মুবহাম বা বহু অর্থবোধক
মাসয়ালাগুলি ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করে স্পষ্ট ফায়সালা প্রদানকারী মুক্বাল্লিদীন বা
অনুসারী ফক্বীহ): যেমন, হযরত ইমাম আবূ বকর
জাছ্ছাছ রাযী রহমতুল্লাহি আলাইহি ও উনার মতো একই শ্রেণীর ফক্বীহগণ। মূলত: উনারা
স্বাধীনভাবে ইজতিহাদ করতে পারতেন না। কিন্তু হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি ও
উনার ছাত্রগণের উছূল ও নিয়ম-নীতি গ্রহণের ক্ষেত্রে বিচক্ষণতা থাকার কারণে মাযহাব
উনার ইমামগণ থেকে বর্ণিত ‘দু’রকম অর্থবোধক অস্পষ্ট বাক্যের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ এবং
দু’রকম হুকুম সম্বলিত অস্পষ্ট দুর্বোধ্য হুকুম’ উনাদের কোনো একটিকে নির্ধারণ করে
নিজেদের মতানুযায়ী বিস্তারিত বিশ্লেষণ করতে পারতেন। ‘আল-হিদায়াহ’ কিতাবের স্থানে
স্থানে কোনো কোনো মাসয়ালায় যে, ‘অনুরূপ হযরত ইমাম
কারখী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সমাধান’ ও ‘অনুরূপ হযরত ইমাম আবূ বকর জাছ্ছাছ রাযী
রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সমাধান’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে ইহা উনাদের স্বাধীন ইজতিহাদ
নয়, বরং উক্ত শ্রেণীর (তাখরীজ
মিনাল মুক্বাল্লিদীন) ইজতিহাদ হিসেবে ধরতে হবে।
الْخَامِسَةُ : طَبَقَةُ أَصْحَابِ التَّرْجِيحِ
مِنْ الْمُقَلِّدِينَ كَأَبِي الْحَسَنِ الْقُدُورِىِّ ، وَصَاحِبِ الْهِدَايَةِ وَامْثَالِهِمْ
، وَشَأْنُهُمْ تَفْضِيلُ بَعْضِ الرِّوَايَاتِ عَلَى بَعْضٍ ، كَقَوْلِهِمْ هَذَا
أَوْلَى ، وَهَذَا أَصَحُّ رِوَايَةً ، وَهَذَا اوْفَقُ لِلنَّاسِ
.
অর্থ: ৫ম তবকা বা
স্তর: আছহাবুত্ তারজীহ্ মিনাল মুক্বাল্লিদীন (দলীল-আদিল্লাহ-র ভিত্তিতে
যাচাই-বাছাই করে এক হুকুমকে অন্য হুকুমের উপর অগ্রাধিকার দেয়ার যোগ্যতা সম্পন্ন
মুক্বাল্লিদীন বা অনুসারী ফক্বীহ): যেমন,
হযরত
আবুল হাসান কুদূরী রহমতুল্লাহি আলাইহি,
‘আল-হিদায়াহ্’
প্রণেতা হযরত বুরহানুদ্দীন আলী ইবনে আবূ বকর ফারগানী মারগিনানী রহমতুল্লাহি আলাইহি
ও অনুরূপ অন্যান্য ফক্বীহ উনারা। উনারা হযরত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহি
উনাদের একাধিক রিওয়ায়াত থেকে কতক রিওয়ায়াতকে কতক রিওয়ায়াতের উপর প্রাধান্য দেয়ার
যোগ্যতা রাখতেন। যেমন: উনাদের কথা ‘ইহা উত্তম’, ‘ইহা অধিক বিশুদ্ধ রিওয়ায়াত বা বর্ণনা’ ও ‘ইহাই মানুষের কাছে
অধিক যুক্তিযুক্ত’।
وَالسَّادِسَةُ: طَبَقَةُ الْمُقَلِّدِينَ
الْقَادِرِينَ عَلَى التَّمْيِيزِ بَيْنَ الْأَقْوَى وَالْقَوِيِّ وَالضَّعِيفِ وَظَاهِرِ
الْمَذْهَبِ وَالرِّوَايَةِ النَّادِرَةِ ، كَأَصْحَابِ الْمُتُونِ الْمُعْتَبَرَةِ
مِنْ الْمُتَأَخِّرِينَ ، مِثْلُ صَاحِبِ الْكَنْزِ ، وَصَاحِبِ الْمُخْتَارِ ، وَصَاحِبِ
الْوِقَايَةِ ، وَصَاحِبِ الْمَجْمَعِ ، وَشَأْنُهُمْ أَنْ لَا يَنْقُلُوا الْأَقْوَالَ
الْمَرْدُودَةَ وَالرِّوَايَاتِ الضَّعِيفَةَ .
অর্থ: ৬ষ্ঠ তবকা
বা স্তর: আল-মুক্বাল্লিদীনাল ক্বাদিরীন আলাত্ তাময়ীয: (পূর্ববর্তী ফক্বীহ্ উনাদের
ক্বওল সমূহকে বিশেষণ অনুযায়ী পার্থক্য নির্ণয়ে সক্ষম মুক্বাল্লিদীন বা অনুসারী
ফক্বীহ): উনারা পূর্ববর্তী ফক্বীহ উনাদের ক্বওল সমূহকে বিশেষণ অনুযায়ী ‘অধিক
শক্তিশালী’, ‘শক্তিশালী’, ‘দূর্বল’,
‘মাযহাবের
প্রকাশ্য ফায়সালা বা প্রকাশ্য রিওয়ায়াত’ ও ‘বিরল রিয়ায়াত’ উনাদের মধ্যে পার্থক্য
নির্ণয় করতে সক্ষম ছিলেন। যেমন- পরবর্তী উলামা কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের
মধ্যে নির্ভরযোগ্য মুতূন (মূল ফিক্হ উনার কিতাব) সমূহের লেখকগণ। যেমন: ‘আল-কান্য
তথা আল-কানযুদ দাক্বায়িক্ব’ কিতাবের লেখক হযরত আব্দুল্লাহ বিন আহমদ বিন মাহমূদ
নাসাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৭১০ হিজরী, ‘আল-মুখতার’ কিতাবের লেখক হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাহমূদ বিন
মাওদূদ আবুল ফদল মূছিলী হানাফী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৬৮৩ হিজরী, ‘আল-বিক্বায়াহ্’ কিতাবের লেখক ফক্বীহ তাজুশ
শরীয়াহ মাহমূদ বিন ছদরুশ শরীয়াহ আকবর আহমদ আব্বাদী মাহবূবী বুখারী হানাফী
রহমতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৬৭৩ হিজরী ও ‘আল-মাজমা’ তথা মাজমাউল বাহরাঈন ওয়া
মুলতাক্বান্ নাহ্রাঈন’ কিতাবের লেখক ফক্বীহ ইবনুস্ সায়াতী মুযাফ্ফারুদ্দীন আহমদ
বিন আলী বিন ছা’লাব সায়াতী বা’লাবাক্কী হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৬৯৪
হিজরী। উনাদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে: উনারা নিজ নিজ কিতাবে পরিত্যাজ্য ক্বওল বা মত এবং
দ্বঈফ বা দূর্বল বর্ণনা নকল বা সংকলন করেননি।
وَالسَّابِعَةُ : طَبَقَةُ الْمُقَلِّدِينَ
الَّذِينَ لَا يَقْدِرُونَ عَلَى مَا ذُكِرَ، وَلَا يُفَرِّقُونَ بَيْنَ الْغَثِّ وَالسَّمِينِ.
(رد المحتار على الدر المختار مقدمة مطلب فى طبقات الفقهاء الـمجلد الاول الصفحة: ۷۷
المؤلف: ابن عابدين محمد امين بن عمر الشامى الحنفى رحمة الله عليه المتوفى ۱۲۵۲ هجرى،
شرح عقود رسم المفتى)
অর্থ: ৭ম তবকা বা
স্তর: মুক্বাল্লিদীন (উপরোল্লিখিত ৬টি তবকার নিয়ম-নীতি অনুযায়ী উনাদেরকে তাকলীদ বা
অনুসরণকারী ফক্বীহ): পূর্বতন ফক্বীহ উলামা কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের
নির্ভরযোগ্য ফায়সালার ব্যাপারে সমালোচনা করার কোনো ক্ষমতা উনাদের নেই। উনারা
দূর্বল ও শক্তিশালী বর্ণনার মধ্যেও পার্থক্য করার ক্ষমতা রাখেন না। (বরং উনারা
উনাদের পূর্ববর্তী নির্ভরযোগ্য মাযহাবী কিতাব থেকে উছূল ও ক্বাওয়ায়িদ তথা মূলনীতি
ও নিয়ম-কানূন অনুযায়ী মাসয়ালা লিখবেন,
শিখবেন, শিখাবেন ও আলোচনা করবেন।) (রদ্দুল মুহতার
আলাদ্ দুররিল মুখতার, মুক্বাদ্দিমাহ্, মাতলাব বা বিষয়: তবাক্বাতুল ফুক্বাহা ১ম খ- ৭৭
পৃষ্ঠা লেখক: হযরত ইবনু আবিদীন মুহম্মদ বিন আমীন বিন উমর শামী হানাফী রহমতুল্লাহি
আলাইহি ওয়াফাত: ১২৫২ হিজরী, শরহু উকূদি রসমিল
মুফতী)
(৯৬৯-৯৭০)
وقال ابن كمال باشا الرومي رحمة الله عليه
صاحب الإصلاح والايضاح وغيره المتوفى سنة اربعين وتسعمائة في بعض رسائله : الفقهاء
على سبع طبقات: الاولى: طبقة المجتهدين فى الشرع : كالائمة الاربعة ومن
سلك مسلكهم في تأسيس قواعد الاصول واستنباط الأحكام والفروع عن الادلة الاربعة من غير
تقليد لأحد لا فى الفروع ولا فى الاصول
অর্থ: ‘আল-ইছলাহ্’, ‘আল-ঈদ্বাহ’ ও এছাড়া আরো অন্যান্য কিতাব উনাদের
লেখক হানাফী মাযহাব উনার ফক্বীহ, মুফতী, আল্লামা হযরত ইবনু কামাল পাশা রূমী হানাফী
রহমতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৯৪০ হিজরী তিনি উনার কোনো কোনো কিতাবে বলেছেন যে, হযরত ফক্বীহ উলামা কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম
উনাদের তবক্বা বা স্তর ৭টি:
১ম তবকা বা স্তর:
মুজতাহিদীন ফিশ শারয়ি (সম্মানিত শরীয়ত উনার মূল মুজতাহিদ বা ইজতিহাদকারী ফক্বীহ):
যেমন, মাযহাব চতুষ্ঠয়ের চারজন
ইমাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম। যাঁরা উছূল বা মূলনীতির ক্ষেত্রে নিজেদের নির্ধারিত
নীতিমালা অনুযায়ী চলেছেন এবং উক্ত নিয়ম-নীতির আলোকে শাখা-প্রশাখামূলক মাসয়ালায় ও
উছূলে অন্য কোনো মুজতাহিদকে অনুসরণ না করে
পবিত্র কুরআন মাজীদ, পবিত্র সুন্নাহ
শরীফ, পবিত্র পবিত্র ইজমাউল
উম্মাহ শরীফ ও পবিত্র ছহীহ ক্বিয়াস শরীফ এ চারখারা দলীলের ভিত্তিতে যাবতীয়
শাখামূলক মাসয়ালা ইস্তিম্বাত বা গবেষণা করে বের করেছেন।
الثانية : طبقة المجتهدين في المذهب : كابي
يوسف ومحمد وسائر أصحاب ابي حنيفة القادرين على استخراج الاحكام عن الأدلة المذكورة
على مقتضى القواعد التي قررها استاذهم ابو حنيفة فإنهم وإن خالفوه في بعض احكام الفروع
لكنهم يقلدونه في قواعد الاصول وبه يمتازون عن المعارضين في المذهب.
অর্থ: ২য় তবকা বা
স্তর: মুজতাহিদীন ফিল মাযহাব (মাযহাব উনার অধিন মুজতাহিদ বা ইজতিহাদকারী ফক্বীহ):
যেমন, হযরত ইমাম আবূ ইঊসুফ
রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম মুহম্মদ
রহমতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত ইমাম আবূ হানীফাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার অন্যান্য
সকল ছাত্র উনারা। উনারা নির্ধারিত নিয়ম-নীতি অনুযায়ী উল্লেখিত আদিল্লাহ্-র
ভিত্তিতে ইজতিহাদ করার উপযুক্ত আলিম ছিলেন এবং যদিও কোনো কোনো আনুসঙ্গিক মাসয়ালায়
হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাথে মতভেদ করেছেন, কিন্তু সকলেই হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি
আলাইহি উনার উছূলের কায়েদা অনুযায়ী মাসয়ালা নিরূপণ করেছেন। এর দ্বারা উনারা বিপরীত
মাযহাব (মালিকী, শাফিয়ী ও হাম্বলী)
উনাদের থেকে নিজ মাযহাব উনার মাসয়ালাকে সনাক্ত করে পার্থক্য করে দিয়েছেন।
সুবহানাল্লাহ!
والثالثة : طبقة المجتهدين فى الـمسائل التي
لا رواية فيها عن صاحب المذهب : كالخصاف والطحاوى وأبى الحسن الكرخي والسرخسي والحلوائى
والبزدوى وقاضيحان وامثالهم فإنهم لا يقدرون على المخالفة للشيخ لا فى الفروع ولا في
الاصول لكنهم يستنبطون الأحكام فى المسائل التى لا نص فيها عنه على حسب أصول قررها
وقواعد بسطها
অর্থ: ৩য় তবকা বা
স্তর: মুজতাহিদীন ফিল্ মাসায়িল (হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার অস্পষ্ট
মাসয়ালা স্পষ্টভাবে সমাধানকারী মুজতাহিদ বা ইজতিহাদকারী ফক্বীহ): যেমন, হযরত খছ্ছাফ রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত আবূ জা’ফর ত্বহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত আবুল হাসান কারখী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত শামসুল আইম্মাহ্ সারাখ্সী রহমতুল্লাহি
আলাইহি, হযরত শামসুল আইম্মাহ্
হালওয়ানী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ফখরুদ্দীন
বাযদুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ফখরুদ্দীন
ক্বাদী খান রহমতুল্লাহি আলাইহি ও উনাদের মতো অন্যান্য ফক্বীহগণ।
উনারা আনুসঙ্গিক
মাসয়ালায় ও উছূলে হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিপরীত কিছু করতে পারতেন
না।
যে সমস্ত মাসয়ালা
হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি পরিষ্কার মিমাংসা করে যাননি, উনারা শুধু ইহাই উনার নির্ধারিত উছূল ও
বিস্তৃত নিয়ম-নীতি অনুসারে ইস্তিম্বাত বা
সমাধান বের করতেন।
والرابعة : طبقة اصحاب التخريج من المقلدين
: كالرازي واضرابه فإنهم لا يقدرون على الاجتهاد أصلا لكنهم لإحاطتهم بالأصول وضبطهم
للمأخذ يقدرون على تفصيل قول مجمل ذي وجهين وحكم محتمل لامرين منقول عن صاحب المذهب
او عن واحد من اصحابه المجتهدين برايهم ونظرهم في الأصول والمقايسة على امثاله ونظائره
من الفروع
অর্থ: ৪র্থ তবকা
বা স্তর: আছহাবুত্ তাখরীজ মিনাল মুক্বাল্লিদীন (হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি
ও উনার ছাত্রদের প্রদত্ত মাসয়ালার মুজমাল বা অস্পষ্টাংশ ও মুবহাম বা বহু অর্থবোধক
মাসয়ালাগুলি ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করে স্পষ্ট ফায়সালা প্রদানকারী মুক্বাল্লিদীন বা
অনুসারী ফক্বীহ): যেমন, হযরত ইমাম আবূ বকর
জাছ্ছাছ রাযী রহমতুল্লাহি আলাইহি ও উনার মতো একই শ্রেণীর ফক্বীহগণ। মূলত: উনারা
স্বাধীনভাবে ইজতিহাদ করতে পারতেন না। কিন্তু হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি ও
উনার ছাত্রগণের উছূল ও নিয়ম-নীতি গ্রহণের ক্ষেত্রে বিচক্ষণতা থাকার কারণে মাযহাব
উনার ইমামগণ থেকে বর্ণিত ‘দু’রকম অর্থবোধক অস্পষ্ট বাক্যের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ এবং
দু’রকম হুকুম সম্বলিত অস্পষ্ট দুর্বোধ্য হুকুম’ উনাদের কোনো একটিকে নির্ধারণ করে
নিজেদের মতানুযায়ী বিস্তারিত বিশ্লেষণ করতে পারতেন।
الخامسة : طبقة اصحاب الترجيح من المقلدين
كابي الحسين القدروي وصاحب الهداية وامثالهما وشأنهم تفضيل بعض الروايات على بعض
অর্থ: ৫ম তবকা বা
স্তর: আছহাবুত্ তারজীহ্ মিনাল মুক্বাল্লিদীন (দলীল-আদিল্লাহ-র ভিত্তিতে
যাচাই-বাছাই করে এক হুকুমকে অন্য হুকুমের উপর অগ্রাধিকার দেয়ার যোগ্যতা সম্পন্ন
মুক্বাল্লিদীন বা অনুসারী ফক্বীহ): যেমন,
হযরত
আবুল হাসান কুদূরী রহমতুল্লাহি আলাইহি,
‘আল-হিদায়াহ্’
প্রণেতা হযরত বুরহানুদ্দীন আলী ইবনে আবূ বকর ফারগানী মারগিনানী রহমতুল্লাহি আলাইহি
ও অনুরূপ অন্যান্য ফক্বীহ উনারা। উনারা হযরত ইমাম-মুজতাহিদ উনাদের একাধিক রিওয়ায়াত
থেকে কতক রিওয়ায়াতকে কতক রিওয়ায়াতের উপর প্রাধান্য দেয়ার যোগ্যতা রাখতেন।
والسادسة
: طبقة المقلدين القادرين على التمييز بين الاقوى والقوي والضعيف وظاهر المذهب وظاهر
الرواية والرواية النادرة : كاصحاب المتون الاربعة المعتبرة من المتاخرين مثل : صاحب
الكنز وصاحب المختار وصاحب الوقاية وصاحب المجمع.
অর্থ: ৬ষ্ঠ তবকা
বা স্তর: আল-মুক্বাল্লিদীনাল ক্বাদিরীন আলাত্ তাময়ীয: (পূর্ববর্তী ফক্বীহ্ উনাদের
ক্বওল সমূহকে বিশেষণ অনুযায়ী পার্থক্য নির্ণয় সক্ষম মুক্বাল্লিদীন বা অনুসারী
ফক্বীহ): উনারা পূর্ববর্তী ফক্বীহ উনাদের ক্বওল সমূহকে বিশেষণ অনুযায়ী ‘অধিক
শক্তিশালী’, ‘শক্তিশালী’, ‘দূর্বল’,
‘মাযহাব
উনার প্রকাশ্য বর্ণনা’, ‘যাহিরুর রিওয়ায়াত
বা হযরত ইমাম মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ছয়খানা প্রসিদ্ধ কিতাব উনাদের
বর্ণনা’ ও ‘বিরল রিওয়ায়াত’ উনাদের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করতে সক্ষম ছিলেন। যেমনটি
ছিলেন- পরবর্তী উলামা কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের মধ্যে নির্ভরযোগ্য মুতূন
(মূল ফিক্হ উনার কিতাব) সমূহের লেখকগণ। যেমন: ‘আল-কান্য তথা আল-কানযুদ
দাক্বায়িক্ব’ কিতাবের লেখক হযরত আব্দুল্লাহ বিন আহমদ বিন মাহমূদ নাসাফী
রহমতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৭১০ হিজরী,
‘আল-মুখতার’
কিতাবের লেখক হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাহমূদ বিন মাওদূদ আবুল ফদল মূছিলী হানাফী
রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৬৮৩ হিজরী,
‘আল-বিক্বায়াহ্’
কিতাবের লেখক ফক্বীহ ছদরুশ শরীয়াহ্ আছগর উবাইদুল্লাহ বিন মাসঊদ বিন তাজুশ শরীয়াহ
মাহমূদ বিন ছদরুশ শরীয়াহ আকবর আহমদ আব্বাদী মাহবূবী বুখারী হানাফী রহমতুল্লাহি
আলাইহি ওয়াফাত: ৭৪৭ হিজরী, ‘আল-মাজমা’ তথা
মাজমাউল বাহরাঈন ওয়া মুলতাক্বান্ নাহ্রাঈন’ কিতাবের লেখক ফক্বীহ ইবনুস্ সায়াতী
মুযাফ্ফারুদ্দীন আহমদ বিন আলী বিন ছা’লাব সায়াতী বা’লাবাক্কী হানাফী রহমতুল্লাহি
আলাইহি ওয়াফাত: ৬৯৪ হিজরী ও উনাদের মতো অন্যান্য ফক্বীহ উনারা।
والسابعة: طبقة المقلدين الذين لا يقدرون
على ما ذكر ولا يفرقون بين الغث والسمين ولا يميزون الشمال عن اليمين بل يجمعون ما
يجدون كحاطب الليل انتهى ملخصا. وكذا ذكره عمر بن عمر الأزهري المصري المتوفى سنة تسع
وسبعين وألف في آخر كتابه الجواهر النفيسة شرح الدرة المنيفة في مذهب أبي حنيفة.
(الجامع الصغير الفصل
الأول في ذكر طبقات الفقهاء والكتب الجزء الاول الصفحة ۷ المؤلف: العلامة الهند الشيخ
محمد عبد الحي اللكنوي الحنفى رحمة الله عليه المتوفي سنة ۱۳۰۴ هجرى، الجواهر المضية
في طبقات الحنفية الباب: اعلم أن الفقهاء على سبع طبقات الجزء ۱ الصفحة ۵۵۸ المؤلف:
ابو محمد عبد القادر بن ابى الوفاء محمد بن ابى الوفاء القرشى الحنفى رحمة الله عليه
سنة الولادة ۶۹۶ هجرى سنة الوفاة ۷۷۵ هجرى الناشر: مير محمد كتب خانه مكان النشر: كراتشى
عدد الأجزاء ۱)
অর্থ: ৭ম তবকা বা
স্তর: মুক্বাল্লিদীন (উপরোল্লিখিত ৬টি তবকার নিয়ম-নীতি অনুযায়ী উনাদেরকে তাকলীদ বা
অনুসরণকারী ফক্বীহ): পূর্ববর্তী ফক্বীহ উলামা কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের
প্রদত্ত নির্ভরযোগ্য ফায়সালার ব্যাপারে উনারা কোনো সমালোচনা করার ক্ষমতা রাখেন না।
উনারা দূর্বল ও শক্তিশালী বর্ণনার মধ্যেও পার্থক্য করার ক্ষমতা রাখেন না। উনারা
ডান থেকে বামকে পার্থক্য করারও ক্ষমতা রাখেন না। বরং উনারা পূর্ববর্তী ফক্বীহ
উলামা কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের চূড়ান্ত ফায়সালাতে যা পান তা-ই রাতে কাঠ
সংগ্রহকারীদের ন্যায় সংগ্রহ করেন। সারসংক্ষেপে শেষ হলো। অনুরূপ ফক্বীহ আলিম হযরত
উমর বিন উমর আযহারী মিছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ১০৭৯ হিজরী তিনি উনার
সর্বশেষ লিখিত কিতাব ‘আল-জাওয়াহিরুন নাফীসাহ্ শরহুদ্ দুররাতিন মুনীফাহ্ ফী মাযহাবি
আবী হানীফাহ্’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেছেন। (আল-জামিউছ ছগীর লিল্ লাখনবী লেখক:
ফক্বীহ, মুফতী, আল্লামাতুল হিন্দ শায়েখ মুহম্মদ আব্দুল হাই
লাখনবী হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ১৩০৪ হিজরী, আল-জাওয়াহিরুল মুদ্বিয়্যাহ্ ফী তবাক্বাতিল
হানাফিয়্যাহ্ পরিচ্ছেদ: জেনে রাখুন! নিশ্চয়ই তবাক্বাতুল ফুক্বাহা অর্থাৎ ফক্বীহ
উলামা কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের স্তর ৭টি ১ম খ- ৫৫৮ পৃষ্ঠা লেখক: হযরত আবূ
মুহম্মদ আব্দুল ক্বাদির বিন আবুল ওয়াফাহ মুহম্মদ বিন আবুল ওয়াফা কুরাশী হানাফী
রহমতুল্লাহি আলাইহি বিলাদত: ৬৯৬ হিজরী ওয়াফাত: ৭৭৫ হিজরী প্রকাশক: মীর মুহম্মদ
কুতুবখানা প্রকাশস্থান: করাচী খ- সংখ্যা:১)
(৯৭১)
فليعلم أنهم على سبع طبقات:
اَلْأُولَى: طَبَقَةُ الْمُجْتَهِدِينَ فِي
الشَّرْعِ: كَالْأَئِمَّةِ الْأَرْبَعَةِ الامام ابى حنيفة النعمان رحمة الله عليه
الولادة سنة ۸۰ هجرى المتوفى سنة ۱۵۰ هجرى والامام مالك رحمة الله عليه المتوفى سنة
۱۷۹ هجرى والامام الشافعى رحمة الله عليه المتوفى
سنة ۲۰۴ هجرى والامام احمد بن محمد بن حنبل رحمة الله عليه المتوفى سنة ۲۴۱ هجرى رضى
الله تعالى عنهم.
জেনে রাখা উচিত, নিশ্চয়ই হযরত ফক্বীহ উলামা কিরাম রহমতুল্লাহি
আলাইহিম উনাদের তবক্বা বা স্তর ৭টি।
অর্থ: প্রথম তবকা:
মুজতাহিদীন ফিশ্ শারয়ি (শরয়ী মূল উছূল উদ্ভাবণকারী মুজতাহিদ বা ইজতিহাদকারী
ফক্বীহ): যেমন, মাযহাব চতুষ্ঠয়ের
ইমাম উনারা। বিশিষ্ট তাবিয়ী, ইমাম আ’যম আবূ
হানীফাহ্ নু’মান বিন ছাবিত রহমতুল্লাহি আলাইহি, বিলাদত শরীফ: ৮০ হিজরী, বিছাল শরীফ: ১৫০ হিজরী। হযরত ইমাম মালিক বিন আনাস
রহমতুল্লাহি আলাইহি, ওয়াফাত শরীফ: ১৭৯
হিজরী। হযরত ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি,
ওয়াফাত
শরীফ: ২০৪ হিজরী। হযরত ইমাম আহমদ বিন মুহম্মদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি, ওয়াফাত শরীফ: ২৪১ হিজরী।
اَلثَّانِيَةُ: طَبَقَةُ الْمُجْتَهِدِينَ
فِي الْمَذْهَبِ: كالامام ابى يُوسُفَ رحمة الله عليه المتوفى سنة ۱۸۲ هجرى وَالامام
مُحَمَّد بن الحسن الشيبانى رحمة الله عليه المتوفى سنة ۱۸۹ هجرى والامام زفر رحمة
الله عليه المتوفى ۱۵۸ هجرى والامام حسن بن زياد رحمة الله عليه المتوفى سنة ۲۰۴ هجرى
والامام حماد بن الامام الاعظم رحمة الله عليه المتوفى سنة ۱۷۶ هجرى وَبقية أَصْحَابِ
أَبِي حَنِيفَةَ الْقَادِرِينَ عَلَى اسْتِخْرَاجِ الْأَحْكَامِ مِنْ الْأَدِلَّةِ
عَلَى مُقْتَضَى الْقَوَاعِدِ الَّتِي قَرَّرَهَا أُسْتَاذُهُمْ الامام الاعظم فِي
الْأَحْكَامِ وَإِنْ خَالَفُوهُ فِي بَعْضِ أَحْكَامِ الْفُرُوعِ، لَكِنْ يُقَلِّدُونَهُ
فِي قَوَاعِدِ الْأُصُولِ غالبا وَبِهِ يَمْتَازُونَ عَنْ الْمُعَارِضِينَ فِي الْمَذْهَبِ
كالامام الشَّافِعِيِّ وَغَيْرِهِ.
অর্থ: দ্বিতীয়
তবকা: মুজতাহিদীন ফিল্ মাযহাব (নিজ মাযহাবের উছূলের আঙ্গীকে স্বাধীনভাবে
ইজতিহাদকারী মুজতাহিদ ফক্বীহ): যেমন,
হযরত
ইমাম আবূ ইঊসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি,
ওয়াফাত
শরীফ: ১৮২ হিজরী। হযরত ইমাম মুহম্মদ বিন হাসান শাইবানী রহমতুল্লাহি আলাইহি, ওয়াফাত শরীফ: ১৮৯ হিজরী। হযরত ইমাম যুফার
রহমতুল্লাহি আলাইহি, ওয়াফাত শরীফ: ১৫৮
হিজরী। হযরত ইমাম হাসান বিন যিয়াদ রহমতুল্লাহি আলাইহি, ওয়াফাত শরীফ: ২০৪ হিজরী। হযরত ইমাম হাম্মাদ
বিন ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি,
ওয়াফাত
শরীফ: ১৭৬ হিজরী। এবং হযরত ইমাম আবূ হানীফাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার অন্যান্য
ছাত্রগণ যাঁরা স্বীয় উস্তায হযরত ইমাম আবূ হানীফাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারই
উদ্ভাবিত নির্দিষ্ট উছূল বা নিয়ম-নীতির আলোকে দলীল-আদিল্লাহ উনার ভিত্তিতে আহকামী
মাসয়ালার সমাধান দিতে সক্ষম ছিলেন। যদিও উনাদের শাখা-প্রশাখামূলক কোনো কোনো
মাসয়ালা উনার খিলাফ হতো, কিন্তু উনারা
প্রাধান্যের ভিত্তিতে উনার মূলনীতিকেই অনুসরণ করতেন। তবে এ ব্যাপারে (বা উছূলের
ক্ষেত্রে) হানাফী মাযহাব উনার বিপরীত অবস্থানে ছিলেন হযরত ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি
আলাইহি ও অন্যান্যগণ (যেমন: হযরত ইমাম মালিক বিন আনাস রহমতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত
ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি)।
اَلثَّالِثَةُ: طَبَقَةُ الْمُجْتَهِدِينَ
فِي الْمَسَائِلِ: الَّتِي لَا نَصَّ فِيهَا عَنْ صَاحِبِ الْمَذْهَبِ كَالْخَصَّافِ
رحمة الله عليه المتوفى سنة ۲۶۱ هجرى وَأَبِي جَعْفَر الطَّحَاوِيِّ رحمة الله عليه
المتوفى سنة ۳۲۱ هجرى وَأَبِي الْحَسَنِ الْكَرْخِيِّ رحمة الله عليه المتوفى سنة ۳۴۰
هجرى وَشَمْسِ الْأَئِمَّةِ الْحَلْوَانِيِّ رحمة الله عليه المتوفى سنة ۴۵۴ هجرى وَشَمْسِ
الْأَئِمَّةِ السَّرَخْسِيِّ رحمة الله عليه المتوفى سنة ۴۹۰ هجرى وَفَخْرِ الْإِسْلَامِ
الْبَزْدَوِيِّ رحمة الله عليه المتوفى سنة ۴۸۴ هجرى وبرهان الدين محمود بن الصدر صاحب
الذخيرة و المحيط والشيخ طاهر بن احمد صاحب خلاصة الفتاوى المتوفى سنة ۵۴۲ هجرى وَفَخْرِ الدِّينِ
قَاضِي خَانْ رحمة الله عليه المتوفى سنة ۵۹۲ هجرى وابن الهمام صاحب التحرير وفتح القدير
المتوفى سنة ۸۶۱ هجرى
وَأَمْثَالِهِمْ، فَإِنَّهُمْ لَا يَقْدِرُونَ عَلَى شَيْءٍ مِنْ الْمُخَالَفَةِ لَا
فِي الْأُصُولِ وَلَا فِي الْفُرُوعِ لَكِنَّهُمْ يَسْتَنْبِطُونَ الْأَحْكَامَ فِي
الْمَسَائِلِ الَّتِي لَا نَصَّ فِيهَا عَلَى حَسَبِ الْأُصُولِ وَالْقَوَاعِدِ.
অর্থ: তৃতীয় তবকা:
মুজতাহিদীন ফিল্ মাসায়িল (মুজতাহিদীন ফিল্ মাযহাব উনাদের কাছ থেকে যাঁদের কোন
বর্ণনা নেই অর্থাৎ যাঁরা মুজতাহিদ ফিশ্ শারয়ি উনাদের ইস্তিম্বাতকৃত মাসয়ালায়
উনাদেরই মূলনীতিতে ইজতিহাদকারী মুজাহিদ ফক্বীহ): যেমন, হযরত ইমাম খছ্ছাফ রহমতুল্লাহি আলাইহি, ওয়াফাত শরীফ: ২৬১ হিজরী। হযরত ইমাম আবূ
জা’ফর ত্বহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি,
ওয়াফাত:
৩২১ হিজরী। হযরত ইমাম আবুল হাসান কারখী রহমতুল্লাহি আলাইহি, ওয়াফাত শরীফ: ৩৪০ হিজরী। হযরত ইমাম শামসুল
আইম্মাহ্ হালওয়ানী রহমতুল্লাহি আলাইহি,
ওয়াফাত
শরীফ: ৪৫৪ হিজরী। হযরত ইমাম শামসুল আইম্মাহ্ সারাখসী রহমতুল্লাহি আলাইহি, ওয়াফাত শরীফ: ৪৯০ হিজরী। হযরত ফখরুল ইসলাম
বাযদবী রহমতুল্লাহি আলাইহি, ওয়াফাত শরীফ: ৪৮৪
হিজরী। ‘আয-যখীরাহ্’ ও ‘আল-মুহীত’ কিতাবের লেখক হযরত ইমাম বুরহানুদ্দীন মাহমূদ বিন
ছদর রহমতুল্লাহি আলাইহি। ‘খুলাছাতুল্ ফাতাওয়া’ কিতাবের লেখক হযরত শায়েখ ত্বাহির
বিন আহমদ রহমতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত শরীফ: ৫৪২ হিজরী। হযরত ফখরুদ্দীন ক্বাদী খান
রহমতুল্লাহি আলাইহি, ওয়াফাত শরীফ: ৫৯২
হিজরী। ‘আত-তাহরীর’ ও ‘ফতহুল ক্বদীর শরহুল হিদায়াহ্ আলা বিদায়াতিল মুবতাদী’
কিতাবের লেখক হযরত ইবনুল হুমাম রহমতুল্লাহি আলাইহি, ওয়াফাত শরীফ: ৮৬১ হিজরী। এছাড়াও অনুরূপ অন্যান্য
ইমাম-মুজতাহিদ ও ফক্বীহ উনারা। কেননা,
উনারা
পূর্ববর্তী ইমাম-মুজতাহিদ উনাদের উছূল বা মৌলিক নিয়ম-নীতি ও শাখা-প্রশাখামূলক
মাসয়ালার বিপরীত সিদ্ধান্ত দিতে কোনো ভাবেই সক্ষম ছিলেন না। বরং উনারা উনাদেরই
প্রদত্ত মাসয়ালাকেই ইজতিহাদ করে মাসয়ালা ইস্তিম্বাত করতেন। এ ক্ষেত্রে মূল উছূল ও
নিয়ম-নীতির প্রয়োজন মনে করতেন না।
اَلرَّابِعَةُ: طَبَقَةُ اَصْحَابِ التَّخْرِيجِ
مِنْ الْمُقَلِّدِينَ: كَابى بكر الجصاص الرَّازِيِّ رحمة الله عليه المتوفى ۳۷۰ هجرى
والجرجانى رحمة الله عليه المتوفى سنة ۳۹۸ هجرى والقدورى المتوفى سنة ۴۲۸ هجرى والدبوسى
المتوفى سنة ۴۳۰ هجرى وَأَضْرَابِهمِ، فَإِنَّهُمْ لِإِحَاطَتِهِمْ بِالْأُصُولِ وَضَبْطِهِمْ
لِلْمَآخِذِ يَقْدِرُونَ عَلَى تَفْصِيلِ قَوْلٍ مُجْمَلٍ ذِي وَجْهَيْنِ، وَحُكْمٍ
مُبْهَمٍ مُحْتَمِلٍ لِأَمْرَيْنِ، مَنْقُولٍ عَنْ صَاحِبِ الْمَذْهَبِ أَوْ أَحَدٍ
مِنْ أَصْحَابِهِ بِرَأْيِهِمْ وَنَظَرِهِمْ فِي الْأُصُولِ وَالْمُقَايَسَةِ عَلَى
أَمْثَالِهِ وَنَظَائِرِهِ مِنْ الْفُرُوعِ. فقول صاحب الْهِدَايَةِ كَذَا فِي تَخْرِيجِ
الرَّازِيّ رحمة الله عليه مِنْ هَذَا الْقَبِيلِ.
অর্থ: ৪র্থ তবকা
বা স্তর: আছহাবুত্ তাখরীজ মিনাল মুক্বাল্লিদীন (হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি
ও উনার ছাত্রদের প্রদত্ত মাসয়ালার মুজমাল বা অস্পষ্টাংশ ও মুবহাম বা বহু অর্থবোধক
ফায়সালাগুলি ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করে স্পষ্ট ফায়সালা প্রদানকারী মুক্বাল্লিদীন বা
অনুসারী ফক্বীহ): যেমন, হযরত ইমাম আবূ বকর
জাছ্ছাছ রাযী রহমতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৩৭০ হিজরী, হযরত জুরজানী রহমতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৩৯৮ হিজরী, হযরত আবুল হাসান কুদূরী রহমতুল্লাহি আলাইহি
ওয়াফাত: ৪২৮ হিজরী, হযরত দাবূসী
রহমতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৪৩০ হিজরী ও উনার মতো একই শ্রেণীর ফক্বীহগণ। মূলত:
উনারা স্বাধীনভাবে ইজতিহাদ করতে পারতেন না। কিন্তু হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি
আলাইহি ও উনার ছাত্রগণের উছূল ও নিয়ম-নীতি গ্রহণের ক্ষেত্রে বিচক্ষণতা থাকার কারণে
মাযহাব উনার ইমামগণ থেকে বর্ণিত ‘দু’রকম অর্থবোধক অস্পষ্ট বাক্যের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ
এবং দু’রকম হুকুম সম্বলিত অস্পষ্ট দুর্বোধ্য হুকুম’ উনাদের কোনো একটিকে নির্ধারণ
করে নিজেদের মতানুযায়ী বিস্তারিত বিশ্লেষণ করতে পারতেন। যেমনটি ‘আল-হিদায়াহ’
কিতাবের মুছান্নিফের উক্তি, ‘অনুরূপ হযরত ইমাম
আবূ বকর জাছ্ছাছ রাজী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সমাধান’ বলে হিদায়াহ্ কিতাবে উল্লেখ
করা হয়েছে ইহা উনার স্বাধীন ইজতিহাদ নয়,
বরং
উক্ত শ্রেণীর (তাখরীজ মিনাল মুক্বাল্লিদীন) ইজতিহাদ হিসেবে ধরতে হবে।
اَلْخَامِسَةُ: طَبَقَةُ أَصْحَابِ التَّرْجِيحِ
مِنْ الْمُقَلِّدِينَ: كَصَاحِبِ الْهِدَايَةِ برهان الدين رحمة الله عليه المتوفى
سنة ۵۹۳ هجرى والاسبيجابى المتوفى سنة ۵۳۵ هجرى وابن كمال المتوفى سنة ۹۴۰ هجرى والاوزجندى
وابى السعود وَأَمْثَالِهِمْ، وَشَأْنُهُمْ تَفْضِيلُ بَعْضِ الرِّوَايَاتِ عَلَى بَعْضٍ،
كَقَوْلِهِمْ هَذَا أَوْلَى، وَهَذَا أَصَحُّ رِوَايَةً، وَهَذَا أَوْفَقُ لِلنَّاسِ.
অর্থ: ৫ম তবকা বা
স্তর: আছহাবুত্ তারজীহ্ মিনাল মুক্বাল্লিদীন (দলীল-আদিল্লাহ-র ভিত্তিতে
যাচাই-বাছাই করে এক হুকুমকে অন্য হুকুমের উপর অগ্রাধিকার দেয়ার যোগ্যতা সম্পন্ন
মুক্বাল্লিদীন বা অনুসারী ফক্বীহ): যেমন,
‘আল-হিদায়াহ্’
প্রণেতা হযরত বুরহানুদ্দীন আলী ইবনে আবূ বকর ফারগানী মারগিনানী রহমতুল্লাহি আলাইহি
ওয়াফাত: ৫৯৩ হিজরী, হযরত আসবীজাবী
রহমতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৫৩৫ হিজরী,
হযরত
ইবনু কামাল রহমতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৯৪০ হিজরী, হযরত আওযাজান্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত আবূ সাঈদ রহমতুল্লাহি আলাইহি ও অনুরূপ
অন্যান্য ফক্বীহ উনারা। উনারা হযরত ইমাম-মুজতাহিদ উনাদের একাধিক রিওয়ায়াত থেকে কতক
রিওয়ায়াতকে কতক রিওয়ায়াতের উপর প্রাধান্য দেয়ার যোগ্যতা রাখতেন। যেমন: উনাদের কথা
‘ইহা উত্তম’, ‘ইহা অধিক বিশুদ্ধ
রিওয়ায়াত বা বর্ণনা’ ও ‘ইহাই মানুষের কাছে অধিক যুক্তিযুক্ত’।
اَلسَّادِسَةُ: طَبَقَةُ الْمُقَلِّدِينَ
الْقَادِرِينَ عَلَى التَّمْيِيزِ: بَيْنَ الْأَقْوَى وَالضَّعِيفِ والمذهب وَالرِّوَايَةِ
النَّادِرَةِ كَأَصْحَابِ الْمُتُونِ الاربعة من الْمُتَأَخِّرِينَ صَاحِبِ الْكَنْز
النسفىِ المتوفى سنة ۷۱۰ هجرى وَصَاحِبِ الْمُخْتَار مجد الدين المتوفى سنة ۶۸۳ هجرى
وَصَاحِبِ الْوِقَايَةِ تاج الشريعة المتوفى سنة ۶۷۳ هجرى وَصَاحِبِ الْمَجْمَعِ مظهر
الدين المتوفى سنة ۶۹۴ هجرى وامثالهم وَشَأْنُهُمْ أَنْ لَا يَنْقُلُوا الْأَقْوَالَ
الْمَرْدُودَةَ وَالرِّوَايَاتِ الضَّعِيفَةَ.
অর্থ: ৬ষ্ঠ তবকা
বা স্তর: আল-মুক্বাল্লিদীনাল ক্বাদিরীন আলাত্ তাময়ীয: (পূর্ববর্তী ফক্বীহ্ উনাদের
ক্বওল সমূহকে বিশেষণ অনুযায়ী পার্থক্য নির্ণয় সক্ষম মুক্বাল্লিদীন বা অনুসারী
ফক্বীহ): উনারা পূর্ববর্তী ফক্বীহ উনাদের ক্বওল সমূহকে বিশেষণ অনুযায়ী ‘শক্তিশালী’, ‘দূর্বল’,
‘হানাফী
মাযহাব উনার প্রকাশ্য ফায়সালা’ ও ‘বিরল রিয়ায়াত’ উনাদের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয়
করতে সক্ষম ছিলেন। যেমন- পরবর্তী উলামা কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের মধ্যে
নির্ভরযোগ্য চারখানা মুতূন (মূল ফিক্হ উনার কিতাব) সমূহের লেখকগণ। যেমন: ‘আল-কান্য
তথা আল-কানযুদ দাক্বায়িক্ব’ কিতাবের লেখক হযরত আব্দুল্লাহ বিন আহমদ বিন মাহমূদ
নাসাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৭১০ হিজরী, ‘আল-মুখতার’ কিতাবের লেখক হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাহমূদ বিন
মাওদূদ আবুল ফদল মূছিলী হানাফী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৬৮৩ হিজরী, ‘আল-বিক্বায়াহ্’ কিতাবের লেখক ফক্বীহ তাজুশ
শরীয়াহ মাহমূদ বিন ছদরুশ শরীয়াহ আকবর আহমদ আব্বাদী মাহবূবী বুখারী হানাফী
রহমতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৬৭৩ হিজরী ও ‘আল-মাজমা’ তথা মাজমাউল বাহরাঈন ওয়া
মুলতাক্বান্ নাহ্রাঈন’ কিতাবের লেখক ফক্বীহ ইবনুস্ সায়াতী মুযাফ্ফারুদ্দীন আহমদ
বিন আলী বিন ছা’লাব সায়াতী বা’লাবাক্কী হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৬৯৪
হিজরী। উনাদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে: উনারা নিজ নিজ কিতাবে পরিত্যাজ্য ক্বওল বা মত এবং
দ্বঈফ বা দূর্বল বর্ণনা নকল বা সংকলন করেননি।
اَلسَّابِعَةُ : طَبَقَةُ الْمُقَلِّدِينَ:
الَّذِينَ لَا يَقْدِرُونَ عَلَى مَا ذُكِرَ، وَلَا يُفَرِّقُونَ بَيْنَ الْغَثِّ وَالثمين.
(ادب المفتى الصفحة ۵۶۸-۵۶۹ المؤلف: المفتى الاعظم علامة السيد محمد عميم الاحسان المجددى
البركتى الحنفى الماتريدى رحمة الله عليه الولادة: ۲۲ محرم ۱۳۲۹ هجرى الوفاة: ۱۰ شوال
۱۳۹۵ هجرى النشر: دار الكتاب ديوبند)
অর্থ: ৭ম তবকা বা
স্তর: মুক্বাল্লিদীন (উপরোল্লিখিত ৬টি তবকার নিয়ম-নীতি অনুযায়ী উনাদেরকে তাকলীদ বা
অনুসরণকারী ফক্বীহ): পূর্বতন ফক্বীহ উলামা কিরাম উনাদের নির্ভরযোগ্য ফায়সালার
ব্যাপারে সমালোচনা করার কোনো ক্ষমতা উনাদের নেই। উনারা দূর্বল ও শক্তিশালী বর্ণনার
মধ্যেও পার্থক্য করার ক্ষমতা রাখেন না। (আদাবুল মুফতী ৫৬৮-৫৬৯ পৃষ্ঠা লেখক:
আল-মুফতিউল আ’যম আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ আমীমুল ইহসান মুজাদ্দিদী বরকতী হানাফী
মাতুরীদী রহমতুল্লাহি আলাইহি বিলাদত: ২২ মুহররমুল হারাম ১৩২৯ হিজরী, ওয়াফাত: ১০ শাওওয়াল ১৩৯৫ হিজরী প্রকাশনা:
দারুল কিতাব দেওবন্দ) মাযহাব মান্য করা ও তৎসংশ্লিষ্ট বিষয়ে পরিপূর্ণ ইল্ম অর্জন করার জন্য এবং সঠিক মাসয়ালার
আলামত সনাক্ত করার জন্য অত্র তবাকাতুল ফুক্বাহা মুখস্ত করা ও বুঝা অতিব জরুরী।
মহান আল্লাহ তায়ালা ও উনার রসূল নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুবারক দরবার শরীফে আমরা সকলেই সেই তাওফীক্ব চাই। আমীন!
দলীলসমূহ: রদ্দুল
মুহতার আলাদ দুররিল মুখতার উনার ভূমিকা,
আল-জামিউছ
ছগীর লিল লাখনবী, আদাবুল মুফতী
লিআমীমিল ইহসান বরকতী, আল-জাওয়াহিরুল
মুদ্বিয়্যাহ ফী তবাক্বাতিল হানাফিয়্যাহ,
শরহে
উকূদু রসমিল মুফতী, উমদাতুর রিয়ায়াহ, আন-নাফিউল কবীর, ফাতাওয়া ও মাসাইল-ইফাবা ১ম খ- ১৬৬-১৭১ পৃষ্ঠা।