“পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র
ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে
কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়
সম্পর্কে ফতওয়া”-
পেশ করতে পারায় মহান
আল্লাহ পাক উনার পবিত্র দরবার শরীফ-এ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।
সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব
চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব উনার উপর মউত পর্যন্ত
ইস্তিক্বামত থাকা ফরয
নির্দিষ্ট মাযহাব মানতে
হবে কেন?
(৯৯৮)
সম্মানিত শরীয়ত উনার
দৃষ্টিতে চার মাযহাব উনাদের যেকোনো একটি নির্দিষ্ট মাযহাব মানা বা অনুসরণ করা ফরয।
এ বিষয়ে অকাট্ট যুক্তি ও দলীল প্রমাণ বিদ্যমান রয়েছে। তা নিম্নে আলোচনা করা হলো:
সম্মানিত শরীয়ত উনার
মাসয়ালাগুলি দু’প্রকার।
১। যা পবিত্র কুরআন শরীফ ও
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের দ্বারা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত মাসয়ালা। ২। যা স্পষ্টভাবে
বলা হয়নি বরং ব্যাখ্যা সাপেক্ষ।
প্রথমটি আবার দু’প্রকার।
(১) দলীল-প্রমাণ অধিক থাকার কারণে একাধিক মত বিশিষ্ট। (২) বিরোধহীন অর্থাৎ সকলেই
একমত।
একাধিক মত বিশিষ্ট
মাসয়ালাগুলি আবার দু’প্রকারের। (১) দলীলগুলির মধ্যে পূর্বের কোন্টি এবং পরের
কোন্টি? তা জানা আছে (২) কিংবা
জানা নেই।
উক্ত প্রকারভেদের যে
মাসয়ালাগুলি স্পষ্ট প্রমাণিত, বিরোধহীন অর্থাৎ সকলেই একমত আর যে মাসয়ালাগুলি বিরোধযুক্ত অর্থাৎ দলীল
প্রমাণ অধিক থাকার কারণে একাধিক মত বিশিষ্ট হওয়া সত্ত্বেও তার পূর্ববর্তী ও
পরবর্তী দলীল জানা আছে। এগুলির মধ্যে কোনোরূপ ক্বিয়াস করা জায়িয নেই এবং এর মধ্যে
কারো ক্বিয়াসের অনুসরণ করাও প্রয়োজন নেই। কারণ এর জন্য তো পবিত্র কুরআন শরীফ ও
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে স্পষ্ট দলীল-প্রমাণ ও মিমাংসা আছেই। তাই এ
ক্ষেত্রগুলিতে কোনো প্রকার ক্বিয়াসের প্রয়োজন নেই।
তাছাড়া উক্ত প্রকারভেদের
মধ্যে যে সকল মাসয়ালাগুলি সুস্পষ্টভাবে বলা হয়নি বরং ব্যাখ্যাসাপেক্ষ অথবা দলীল
প্রমাণ স্পষ্টভাবে বর্ণিত আছে কিন্তু তার মধ্যে পরস্পরে এমন ইখতিলাফ যে তার কোনটি
পূর্বের ও কোনটি পরের তা তাহক্বীক্ব করা অত্যন্ত কঠিন। এমন বিষয়গুলি আমল করবে কি
করবে না। যদি তার কিছুই আমল করা না হয়, তবে মহান আল্লাহ পাক উনার নিম্নোক্ত ঘোষণা মুবারক উনার খিলাফ করা হবে-
মহান আল্লাহ পাক তিনি
ইরশাদ মুবারক করেন-
اَيَحْسَبُ الْاِنْسَانُ اَنْ يُتْرَكَ سُدًى
অর্থাৎ “মানুষ কি মনে করে
যে তাদেরকে এমনিতেই ছেড়ে দেয়া হবে।” (পবিত্র সূরা আল ক্বিয়ামাহ শরীফ: পবিত্র আয়াত
শরীফ ৩৬)
اَفَحَسِبْتُمْ
اَنَّمَا خَلَقْنَاكُمْ عَبَثًا
অর্থ: “হে মানুষ তোমরা কি
মনে করো যে, তোমাদেরকে অযথা সৃষ্টি
করেছি।” (পবিত্র সূরা মু’মিনূন: পবিত্র আয়াত শরীফ ১১৫) অর্থাৎ তোমাদেরকে অযথা
সৃষ্টি করা হয়নি। বরং তোমাদেরকে দায়িত্ববান করে সৃষ্টি করা হয়েছে।
এতে বুঝা যায় যে- সব বিষয়ই
আমল করতে হবে। কিন্তু যদি সব বিষয় আমল করতে হয় তবে সে বিষয়গুলোর ব্যাপারে হ্যাঁ বা
না নির্দিষ্ট কিছু জানা না থাকলে তো আমল করা সম্ভব নয়। আর উক্ত বিষয়গুলির দলীল
কখনোই জানা সম্ভব না, কারণ একে তো ঐ বিষয়ে কোনো স্পষ্ট দলীল নেই। দ্বিতীয়ত: যেগুলির দলীল আছে
কিন্তু তার মধ্যে পরস্পর বিরোধযুক্ত দলীলগুলির কোনটি পূর্বের ও কোনটি পরের তা জানা
নেই। এমন বিষয়গুলিতে কোনো হুকুম নির্দিষ্টভাবে জানতে হলে বাধ্য হয়ে ছহীহ ক্বিয়াস
উনার মাধ্যমেই জানতে হবে। তাছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই। কিন্তু সকলের ক্বিয়াস
গ্রহণযোগ্য নয়। বরং কারো ক্বিয়াস গ্রহণযোগ্য, আবার কারোটা গ্রহণযোগ্য নয়। সকলের ক্বিয়াস যে
গ্রহণযোগ্য নয় তা পবিত্র কুরআন শরীফ উনার পবিত্র আয়াত শরীফ দ্বারাই স্পষ্টভাবে
প্রমাণিত। যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَلَوْ
رَدُّوْهُ اِلَى الرَّسُوْلِ وَاِلٰى اُولى الْأَمْرِ مِنْهُمْ لَعَلِمَهُ الَّذِيْنَ
يَسْتَنْۢبِطُوْنَهٗ مِنْهُمْ
অর্থ: আর যদি তারা উক্ত
বিষয় পেশ করতো সম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট এবং উনাদের
মধ্যে যাঁরা উলিল আমর উনাদের নিকট, তাহলে অবশ্যই তারা উনাদের থেকে ঐ বিষয় সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে পারতো, তাদের মধ্যে যারা
ইস্তিম্বাত বা ইজতিহাদ করেন।” (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৮৩)
উল্লিখিত পবিত্র আয়াত শরীফ
উনার মধ্যে বর্ণিত استنباط শব্দের
প্রকৃত অর্থ হচ্ছে কূপের গভীরতা থেকে পানি তোলা। সে জন্যই কূপ খননকালে প্রথম যে
পানি বের হয় তাকে আরবীতে ماء مستنبط বলা হয়।
কিন্তু এখানে উদ্দেশ্য হলো কোন বিষয়ের গভীরে গিয়ে তার প্রকৃত তাৎপর্য সম্পর্কে জ্ঞাত হওয়া। (তাফসীরে কুরতুবী)
ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত
ত্বরীক্বত, ইমামুল মুফাসসিরীন মিনাল
আউয়ালীন ইলাল আখিরীন, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ
মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস
সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “একমাত্র ছহীহ ও গ্রহণযোগ্য মতে, সম্মানিত আহলে যিকির তথা হক্কানী-রব্বানী আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি
আলাইহিম উনারাই হচ্ছেন প্রকৃত উলুল আমর।” সুবহানাল্লাহ!
এ প্রসঙ্গে যিনি খালিক্ব
মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
فَاسْأَلُوْا
اَهْلَ الذِّكْرِ اِنْ كُنْتُمْ لَا تَعْلَمُوْنَ
অর্থ: “তোমরা যারা জানো না, তারা সম্মানিত আহলে যিকির
তথা হক্কানী-রব্বানী আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদেরকে জিজ্ঞাসা করো।”
সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নহল শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ
৪৩)
এ সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত
শরীফ উনার মধ্যে সরাসরি স্বয়ং যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি
সম্মানিত আহলে যিকির তথা হক্কানী-রব্বানী আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম
উনাদেরকে জিজ্ঞাসা করতে বলেছেন অর্থাৎ উনাদেরকে অনুসরণ করতে বলেছেন। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি
অন্যত্র ইরশাদ মুবারক করেন-
وَلَا
تُطِعْ مَنْ اَغْفَلْنَا قَلْبَهٗ عَنْ ذِكْرِنَا وَاتَّبَعَ هَوَاهُ وَكَانَ اَمْرُهٗ
فُرُطًا
অর্থ: “তোমরা ঐ ব্যক্তির
অনুসরণ করো না, যার ক্বলব বা অন্তর আমার সম্মানিত ও পবিত্র যিকির মুবারক থেকে গাফিল। সে তার
নফস বা প্রবৃত্তির অনুসণ করে থাকে এবং তার আমলগুলো হয়ে থাকে সম্মানিত শরীয়ত মুবারক
উনার খিলাফ।” নাঊযুবিল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা কাহ্ফ শরীফ : সম্মানিত ও
পবিত্র আয়াত শরীফ ২৮)
এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত
শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে, যার ক্বলব বা অন্তর মহান
আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ও পবিত্র যিকির মুবারক থেকে গাফিল, তাকে কস্মিনকালেও অনুসরণ
করা যাবে না। কেননা, তার অন্তর মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ও পবিত্র যিকির মুবারক থেকে গাফিল
থাকার কারণে সে তার নফস বা প্রবৃত্তির অনুসরণ করে থাকে এবং তার কাজগুলো হয়ে থাকে
সম্মানিত শরীয়ত মুবারক উনার খিলাফ বা বিপরীত। না‘ঊযিবল্লাহ!
তাহলে এ সম্মানিত ও পবিত্র
আয়াত শরীফ থেকেও স্পষ্টভাবে বুঝা যাচ্ছে যে, সম্মানিত আহলে যিকির তথা হক্কানী-রব্বানী আউলিয়ায়ে
কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদেরকেই অনুসরণ করতে হবে। সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং উপরোক্ত সম্মানিত ও
পবিত্র আয়াত শরীফদ্বয় উনাদের থেকে এ বিষয়টিই দিবালোকের ন্যায় অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে
প্রমাণিত হলো যে, সম্মানিত আহলে যিকির তথা হক্কানী-রব্বানী আউলিয়ায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি
আলাইহিম উনাদেরকেই অনুসরণ করতে হবে। যারা সম্মানিত আহলে যিকির তথা হক্কানী-রব্বানী
আউলিয়ায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের অন্তর্ভুক্ত না, তাদেরকে কস্মিনকালেও
অনুসরণ করা যাবে না। আর সম্মানিত আহলে যিকির তথা হক্কানী-রব্বানী আউলিয়ায়ে কিরাম
রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারাই হচ্ছেন প্রকৃত উলুল আমর। সুবহানাল্লাহ!
তবে সম্মানিত আহলে যিকির
তথা হক্কানী-রব্বানী আউলিয়ায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের মধ্যে কোন বিষয়ে
যদি কোনো ইখতিলাফ দেখা দেয়, তাহলে যেই সম্মানিত আহলে যিকির বা হক্কানী-রব্বানী আউলিয়ায়ে কিরাম উনার নিকট
সম্মানিত ও পবিত্র কুরআন শরীফ এবং সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের দলীল
মুবারক বেশি থাকবে, উনার দিকে রুজু হতে হবে, উনার অনুসরণ করতে হবে। সুবহানাল্লাহ!
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ
পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
يَا
اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا اَطِيْعُوا اللّٰهَ وَاَطِيْعُوا الرَّسُولَ وَاُولِى
الْأَمْرِ مِنْكُمْ فَاِنْ تَنَازَعْتُمْ فِىْ شَىْءٍ فَرُدُّوهُ اِلَى اللّٰهِ وَالرَّسُوْلِ
অর্থ: “হে ঈমানদারগণ!
তোমরা যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনাকে অনুসরণ করো এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ও উলুল আমর তথা হক্কানী-রব্বানী আউলিয়ায়ে
কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদেরকে অনুসরণ করো। আর যদি তোমরা কোনো বিষয় নিয়ে
ইখতিলাফে পতিত হও, তাহলে তোমরা যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল, উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের দিকে রুজু হও।
অর্থাৎ যেই উলুল আমার তথা সম্মানিত আহলে যিকির বা হক্কানী-রব্বানী আউলিয়ায়ে কিরাম
উনার নিকট সম্মানিত ও পবিত্র কুরআন শরীফ এবং সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের
দলীল বেশি থাকবে উনার অনুসরণ করো।” সুবহানাল্লাহ!
(সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নিসা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৯)
এ প্রসঙ্গে সম্মানিত ও
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَن
حضرت ابْنِ عَبَّاسٍ رضى الله تعالى عنه قَالَ: قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم، اَيُّ جُلَسَائِنَا خَيْرٌ؟ قَالَ: "مَنْ ذَكَّرَكُم اللّٰهَ رُؤْيَتُهُ
وَزَادَ فِى عِلْمِكُمْ مَنْطِقُه وَذَكَّرَكُمْ بِالْاٰخِرَةِ عَمَلُه".
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস
রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সুওয়াল করা হলো, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
আমাদের জন্য কাদের মজলিস উত্তম অর্থাৎ আমারা কাকে অনুসরণ করবো। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যাঁকে দেখলে মহান আল্লাহ
পাক উনার স্মরণ মুবারক হয়, যাঁর কথা শুনলে দ্বীনী ইলম বৃদ্ধি পায় এবং যাঁর আমল দেখলে পরকালের আমল করতে
ইচ্ছে হয়।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আবী ইয়া’লা মূছিলী ৪/৩২৬, নাওয়াদিরুল উছূল ২/৩৯, আল মাত্বালিবুল আলিয়াহ
১২/১৭৬, তাফসীরে কুরতুবী ১৩/২২৭, ইতহাফ লিলকিনানী ৬/৩৮২
ইত্যাদী)
সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ
শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن
النبيّ صلّى الله عليه وسلّم اَنّه سُئِل عن اَولياء الله تعالى، فقال هُمُ الّذين
اداموا ذُكِرَ الله تَعَالى
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ওলীআল্লাহ তথা
আউলিয়ায়ে কিরাম উনাদের সম্পর্কে সুওয়াল করা হলো। (জবাবে) তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, উনারাই ওলীআল্লাহ তথা
আউলিয়ায়ে কিরাম, যাঁরা দায়িমীভাবে যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ও
পবিত্র যিকির মুবারক করেন।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে সমরক্বন্দী ২/১২৩)
আর যিনি খালিক্ব মালিক রব
মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছে কুদসী শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ
মুবারক করেন-
اِنَّ
اَوْلِيَائِىْ مِنْ عِبَادِى الَّذِيْنَ يُذْكَرُوْنَ بِذِكْرِىْ
অর্থ: “নিশ্চয়ই আমার
বান্দা উনাদের মধ্যে ঐ সকল ব্যক্তিত্ব মুবারকগণই আমার ওলী, যাঁরা সবসময় আমার সম্মানিত
ও পবিত্র যিকির মুবারক করেন।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে বাগভী শরীফ ৪/১৪০, তাফসীরে মাযহারী ৫/৪০)
সুতরাং সম্মানিত আহলে
যিকির বা হাক্কানী-রব্বানী আউলিয়ায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারাই হচ্ছেন
প্রকৃত উলুল আমর। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র সূরা নিসা শরীফ উনার
৮৩ নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার দ্বারা একথাও বোঝা যাচ্ছে যে, যেসব বিষয়ে কোন নছ তথা
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের থেকে স্পষ্ট বুঝা যায় না অর্থাৎ
সাধারণ লোক বুঝে না, সেগুলোর হুকুম ইমাম ও মুজতাহিদগণ উনারা ইজতিহাদ ও ক্বিয়াসের রীতি অনুযায়ী
পবিত্র কুরআন শরীফ উনার পবিত্র আয়াত শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ থেকে উদ্ভাবন করবেন।
তার কারণ, এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে
যে, নতুন কোনো বিষয়ের সমাধান
কল্পে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম উনার
বর্তমানে উনার নিকট যাও। আর যদি উনাকে না পাও, তাহলে ফক্বীহগণের নিকট যাও। কারণ, উনাদের মধ্যেই বিধান
উদ্ভাবন করার মত পরিপূর্ণ যোগ্যতা রয়েছে।
এ বর্ণনা দ্বারা যে
বিষয়গুলো প্রতীয়মান হয়। তাহলো- নছ বা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ
উনাদের সরাসরি নির্দেশের অবর্তমানে উলিল আমর উনাদের কাছে যেতে হবে।
দ্বিতীয়ত: মহান আল্লাহ পাক
উনার নির্দেশ মুবারক দু রকম। কিছু হলো সরাসরি নছ বা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র
সুন্নাহ শরীফভিত্তিক এবং কিছু হলো পরোক্ষ ও অনউদ্ভাবিত, যা মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র আয়াত শরীফ উনার গভীরে
নিহিত রেখেছেন।
তৃতীয়ত: এ ধরণের অন্তর্নিহিত মর্মগুলো ক্বিয়াস ও
ইজতিহাদের মাধ্যমে উদ্ভাবন করা ফক্বীহগণের একান্ত দায়িত্ব।
চতুর্থত: এসব বিধানের
ক্ষেত্রে ফক্বীহগণ উনাদের অনুসরণ করা সাধারণ মানুষের জন্য ফরয। (আহকামুল কুরআন
জাসসাস, মায়ারিফুল কুরআন)
অর্থাৎ অনউদ্ভাবিত
বিষয়াবলীর জ্ঞান বা দলীল প্রমাণ শুধুমাত্র হযরত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম
উনাদেরই রয়েছে। অতএব, কারো ক্বিয়াস গ্রহণযোগ্য হবে, আবার কারো ক্বিয়াস গ্রহণযোগ্য হবে না। যাঁদের ক্বিয়াস গ্রহণযোগ্য হবে উনারাই
হলেন মুজতাহিদ বা মুস্তাম্বিত। আর যাদের ক্বিয়াস গ্রহণযোগ্য নয় তাদেরকে মুক্বাল্লিদ
বা অনুসারী বলা হয়।
অতএব, মুক্বাল্লিদগণের জন্য
নির্দিষ্ট কোনো মুজতাহিদ উনার অর্থাৎ চার মাযহাবের যে কোনো এক মাযহাব অনুসরণ করা
ফরয-ওয়াজিব। যেমন, মহান আল্লাহ পাক তিনি নির্দেশ মুবারক করেন-
وَاتَّبِعْ سَبِيْلَ مَنْ اَنَابَ اِلَىَّ
অর্থ: যিনি আমার দিকে রুজু
আছেন উনার পথ অনুসরণ করুন। অর্থাৎ যিনি দ্বীন ইসলাম উনার নেক আমল উনার দিকে পূর্ণ
ধাবিত উনার পথ অনুসরণ করো। (পবিত্র সূরা লুক্বমান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর
১৫)
একথা সুস্পষ্টভাবে
প্রমানিত যে, মাযহাব চতুষ্ঠয়ের চার ইমাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা প্রত্যেকেই প্রত্যেক
বিষয়ে অবশ্যই কামিল ও মুত্তাক্বী ছিলেন। তাই উনাদের অনুসরণ করা উল্লিখিত পবিত্র
আয়াত শরীফ দ্বারাই ফরয সাব্যস্ত হলো। অর্থাৎ, প্রত্যেকের জন্যই চার মাযহাবের যেকোনো একটি মাযহাব
অনুসরণ করা ফরয সাব্যস্ত হলো।
মুজতাহিদ ইমাম ও কামিল লোক
তো অনেক ছিলেন তবে উক্ত চারজন ইমামকেই তাক্বলীদ করতে হবে কেন?
একথার জাওয়াব এই যে, এ ব্যাপারে সকলেই একমত যে, হানাফী মালিকী, শাফিয়ী ও হাম্বলী এ চার
মাযহাবের মধ্যেই মোটামুটি সকল বিষয়েরই ফায়ছালা রয়েছে। তবে শুধুমাত্র হানাফী
মাযহাবেই খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ মুবারক পরিচালনার সকল দিক নির্দেশনা
রয়েছে। যা অন্য কোনো মাযহাবে নেই। তাই সকল ইমাম মুজতাহিদ একমত হয়ে ফায়ছালা মুবারক
দিয়েছেন যে, উল্লিখিত ৪টি মাযহাবের
যেকোনো একটি অনুসরণ করতে হবে। এ কারণেই মাযহাব ৪টির মধ্যে সীমাবদ্ধ।
৪টি মাযহাবের মধ্যে শুধু
একটি মাযহাবের অনুগত হতে হবে কেন? এর জাওয়াব এই যে, মাসয়ালাগুলি দু’প্রকারের। যথা: (১) সকলেই একমত (২) সকলেই একমত নয় অর্থাৎ
ইখতিলাফ সম্বলিত। সর্বসম্মত মত বিশিষ্ট মাসয়ালাগুলি সকলের মতক্রমেই পালন করা সম্ভব, কিন্তু সকলেই একমত নয়
অর্থাৎ ইখতিলাফ সম্বলিত মাসয়ালাগুলিতে তো সকলের মতানুসরণ করা সম্ভব নয়, বরং এক্ষেত্রে কারো মতের
অনুসরণ করবে, আবার কারো মত ত্যাগ করবে। আবার যার অনুসরণ করবে তার মধ্যে বিশেষত্ব থাকতে
হবে। যে কারণে উনার দিকে খাছভাবে রুজু হওয়া শর্ত করেছেন।
অতএব, যার মধ্যে দ্বীনদারী বেশী
পাওয়া যাবে উনারই অনুসারী হতে হবে। কিন্তু বেশী দ্বীনদারী কি? এর তাহক্বীক্ব বা
সত্যাসত্য বিশ্লেষণ করা যেতে পারে। বিস্তারিত বিশ্লেষণ এটাই যে, প্রত্যেকটি বিরোধজনক
মাসয়ালাতেই জ্ঞাত হওয়া যে এর হক বা সঠিকতা কোন্ দিকে এবং সংক্ষেপে এই যে, প্রত্যেক ইমামের পূর্ণ অবস্থার প্রতি দৃষ্টিপাত করা যে
অধিকাংশ বিষয় সূত্রে কে বেশী দ্বীনের প্রতি আকৃষ্ট।
উল্লিখিত আলোচনা দ্বারা
প্রমাণিত হলো যে, খাঁটি পূর্ণ শরীয়ত পন্থী হতে হলে প্রত্যেক বিষয়ে অবশ্যই নির্দিষ্ট কারো
তাক্বলীদ করতে হবে এবং তা শুধু প্রসিদ্ধ ৪ জন ইমামের মধ্যে যে কোনো একজনকেই অনুসরণ
করতে হবে। যে যার তাক্বলীদ বা অনুসরণ করবে তাকে উনারই মাযহাবালম্বী বলা হয়। সেই
সূত্রে কেউ হানাফী, কেউ শাফিয়ী, কেউ মালিকী, কেউ হাম্বলী হচ্ছে। অতএব, এটি বিদয়াত বেশরা’ বা র্শিক মোটেই নয়। বরং যারা ঐরূপ বলবে প্রকৃতপক্ষে তারাই
বেশরা’, বাতিল, গোমরাহ্, লা-মাযহাবী ফিরক্বা ও
ফিতনাবাজ হিসেবে সাব্যস্ত হবে।
আমরা মাযহাবে মুহম্মদী
ছেড়ে হানাফী
মাযহাব কেনো গ্রহণ করবো?
সালাফী, ওহাবী, আহলে হাদীছ, লা-মাযহাবী, গোমরাহ্ ও বাতিলপন্থীদের
অনেকে বলে থাকে যে, আমরা মাযহাবে মুহম্মদীকে ছেড়ে মাযহাবে হানাফী, শাফিয়ী, মালিকী, হাম্বলী কেনো গ্রহণ করবো?
গোমরাহীমূলক এ প্রশ্নের
জাওয়াবে বলতে হয় যে, মূলত তাদের দ্বীন ও মাযহাব বিষয়ে কোনো জ্ঞানই নেই। তাই তারা দ্বীনে
মুহম্মদীকে মাযহাবে মুহম্মদী বলছে। কারণ দ্বীন ও মাযহাবের মধ্যে অনেক পার্থক্য, দ্বীন বলে সম্মানিত শরীয়ত
উনার উছূল (মূল) বিষয়সমূহের সমষ্টিকে যেমন- মহান আল্লাহ পাক উনাকে, নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে, হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে, আখিরাত, তাক্বদীর ইত্যাদীকে সত্য
জেনে বিশ্বাস করা। আর মাযহাব বলে আমলী (পালনীয়) বিষয়সমূহের সমষ্টিকে এবং এর
প্রত্যেকটির জন্য উছূল (মূলধারা) অতি প্রয়োজনীয়। অতএব, দ্বীন হলো মূলবস্তু এবং মাযহাব তার শাখা-প্রশাখা। তাই
দু’টির বিষয় এক নয়। নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার থেকেই দ্বীনের সর্বপ্রকার মূল বিষয় প্রকাশ হয়।
তাই বলা হয়- দ্বীনে
মুহম্মদী। মাযহাবে মুহম্মদী বলা হয় না মোটেও। বরং হযরত ছহাবায়ে কিরাম
রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম ও হযরত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের থেকে দ্বীন
উনার শাখা-প্রশাখা উৎপত্তি হয়, তাই বলা হয় মাযহাবে ছহাবী, মাযহাবে ইমাম ও
ত্বরীক্বায়ে ইমাম। দ্বীনে ইমাম বলা হয় না, কারণ ইমাম উনাদের থেকে দ্বীনের মূল বিষয় উৎপত্তি বা সৃষ্টি হয়নি। সুতরাং দ্বীনে ইমাম বলা যেমন ভুল, তেমনই মাযহাবে মুহম্মদী
বলাও মারাত্মক ভুল।
স্মরণীয় যে, ইমাম উনাদের মাযহাব মান্য
করা সূত্রে হানাফী, শাফিয়ী, মালিকী, হাম্বলী হওয়া ও বলা কোনো দোষণীয় হতে পারে না। কেননা পবিত্র দ্বীন হলো বড় দেশ
বড় শহর বা বড় কবিলার বা দলের ন্যায় এবং মাযহাব নির্দিষ্ট ঠিকানায় শহর, গ্রাম বা বংশের ন্যায়। তাই
যখন কাউকে দেশের কথা জিজ্ঞাসা করবে তখন বলবে বাংলাদেশ এবং যখন নির্দিষ্ট ঠিকানার
কথা জিজ্ঞাসা করবে তখন বলবে- সিরাজগঞ্জ এতে তাকে বাংলাদেশ হতে বহির্ভূত হওয়া
বুঝাবে না বরং এটাই বুঝাবে যে, বাংলাদেশের অন্তর্গত সিরাজগঞ্জ। এরূপ যখন বংশ জিজ্ঞাসা করবে তখন বলবে যথা
কুরাঈশ বংশ, আবার যখন গোত্র বা গোষ্টির
কথা জিজ্ঞাসা করবে তখন বলবে বণী হাশিম গোত্র, সাইয়্যিদ বংশ। অর্থাৎ কুরাঈশ বংশ হাশিমী বা সাইয়্যিদ
গোত্র। সে সূত্রেই তাকে কুরাইশীও বলা হয় আবার হাশিমী, সাইয়্যিদ, ছিদ্দীক্বীও বলা হয়।
তদ্রুপই কেউ জাতির কথা
জিজ্ঞাসা করলে- জাতি মুসলমান এবং দ্বীনের কথা জিজ্ঞাসা করলে দ্বীন ইসলাম এবং
মাযহাবের কথা জিজ্ঞাসা করলে হানাফী বা শাফিয়ী বলা হয়। এটা কুফরী হতে পারে না।
যেমন- খাছ দেশ, খাছ স্থান, খাছ বংশ ও খাছ উপাধী পরিচয় দিতে বলা হয় মাদানী, মক্কী, মিছরী, বিহারী, দেহলভী, লাখনভী, ছিদ্দীক্বী, ফারূক্বী, উছমানী, রহমানী ইত্যাদী। কেউই ভুল ধরে বলে না যে, তুমি তো আরবী, তুমি তো ভারতী, তুমি তো মানুষ। তবে তুমি মাদানী, মক্কী, ছিদ্দীক্বী, কুরাইশী কি করে হলে? এটি তো মিথ্যা। কেননা, মাদানী, মক্কী, মিছরী বললে আরাবী হওয়ার
বাইরে বুঝায় না। আর দেহলভী, লাখনভী বললে ভারতীয় হওয়ার বহির্ভূত বুঝায় না। তেমনই ছিদ্দীক্বী, ফারূক্বী, মিছরী বললে আরবী ও কুরাইশী
খিলাফ বা ইসলামের খিলাফ বুঝায় না মোটেই। বরং তারই অন্তর্ভূক্ত এবং ঠিকানা আরো সঠিক
ও শক্ত বুঝায় যে দ্বীন ইসলামের হানাফী মাযহাব ভুক্ত। যেমন জাতি হিসেবে মুসলমান
জাতি বা সাইয়্যিদ বা খান গোত্র প্রভৃতি সঠিক ঠিকানা দেয়া হয়। তাতে দেশ মানুষ ও
মুসলমান হতে বহির্ভূত বুঝায় না।
সুতরাং নির্দিষ্ট স্থান ও
বংশ বিহীনের যেমন কোনো পরিচয় বা সম্মান থাকে না। তদ্রুপই বর্তমানে দ্বীনের নির্দিষ্ট
ঠিকানা ভিন্ন দ্বীনদার মুসলামান হওয়ারও কোনো মানে হয় না। কারণ নির্দিষ্ট স্থান না
থাকলে যেমন উদাসীনের মতো যথা-তথা ঘোরা-ফেরা করতে থাকে, তদ্রুপই নির্দিষ্ট কোনো অনুসরণীয় পথ না থাকলেও বিভিন্ন
মতে যা-তা করে দ্বীন ইসলাম নষ্ট করে ভ্রষ্ট পথে চলতে থাকে। এজন্য বহুবিধ কারণে
মাযহাব চতুষ্ঠয়ের চারজন মহান ইমাম ও মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের যে কোনো
একজনকে অনুসরণ করা জরুরী বা ফরয। তাই হানাফী, মালিকী, শাফিয়ী ও হাম্বলী এ মাযহাব চতুষ্ঠয়ের যেকোনো একটি মাযহাব উনাকে ইন্তিকাল
পর্যন্ত মান্য করা ফরয হিসেবে ফাতাওয়া দেয়া হয়েছে।