“পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র
মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ
করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া”- পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক
উনার পবিত্র দরবার শরীফ-এ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।
পূর্ব প্রকাশিতের পর
সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত
উনার মধ্যে পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা
সম্মানিত ইমাম-মুজতাহিদ
রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা সম্মানিত শরীয়ত উনার সঠিক মাসয়ালাগুলো যা পবিত্র কুরআন
শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে সুপ্ত বা পুশিদা বা গুপ্ত যা বুঝা অত্যন্ত
কঠিন ও কষ্টসাধ্য এবং আওয়ামুন্নাস বা সাধারণ মানুষের জন্য অস্পষ্ট সেগুলো স্পষ্টভাবে
লিপিবদ্ধ করেন। যা পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনার অন্তর্ভুক্ত।
সুতরাং পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ সম্মানিত শরীয়ত উনার একাংশ অর্থাৎ
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মতই অকাট্য দলীল। সুবহানাল্লাহ!
নিম্নে
এ সম্পর্কিত কিছু প্রমাণ উল্লেখ করা হলো-
সম্মানিত শরীয়ত উনার মধ্যে
এমন অনেক বিষয় রয়েছে যা সম্মানিত ইমাম মুজতাহিদ উনারা ক্বিযাস করে ফায়ছালা করেছেন।
যার প্রমাণ সরাসরি পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের কোথাও নেই। অথচ সকলেই তা মেনে নিয়েছে ও আমল করছে।
এমনকি মাযহাব বা ইজমা-ক্বিয়াস অস্বীকারকারীরাও তা মানে ও আমল করে।
প্রথম প্রমাণ
(১০৬১)
বিখ্যাত মুহাদ্দিছ হযরত
ইমাম ইবনে হাজার আসক্বালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি ও ইমাম নববী রহমতুল্লাহি আলাইহি
উনারা উনাদের তাকরীব, তাহযীব, মীযান ও তাদরীব নামক গ্রন্থে পবিত্র হাদীছ শরীফ সংগ্রহকারী মুহাদ্দিছ উনাদের
জীবনী মুবারক ও দোষ গুণ বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেছেন। এতে পূর্ববর্তী আলিম উনাদের
বিচারে কাউকে সত্যবাদী, কাউকে মিথ্যাবাদী, কাউকে মেধাবী, কাউকে পাপী ও পথভ্রষ্ট এবং
কাউকে অপরিচিত ও প্রতারক বলা হয়েছে। এর দ্বারা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের সত্যাসত্য
নির্ণয় করা হয়েছে। এটা মানলে পবিত্র হাদীছ শরীফ অবগত হওয়া সম্ভব হবে। এটা কিন্তু
মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের আদেশ নির্দেশ মুবারক নয়। পবিত্র কুরআন শরীফ
ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে এর নাম নিশানা পর্যন্ত নেই। এটা ইমাম মুজতাহিদ
উনাদের ক্বিয়াসী ফায়ছালা। মুসলমান উনারা এ ক্বিয়াসী ফায়ছালার প্রতি বিশ্বাস করে
পবিত্র হাদীছ শরীফ মানছেন। একে আসমাউর রিজাল বলে। এখন কেউ যদি এ বিনা দলীলের কথা
অমাণ্য করে তবে পবিত্র হাদীছ শরীফ কাকে বলে, তা জানতে পারবে না। আর যদি মান্য করে তাহলে মহান আল্লাহ পাক উনাকে ও উনার রসূল
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে
ব্যতীত অন্য কারো মতালম্বন করে কাফির ও মুশরিক হবে কি না?
২য় প্রমাণ
(১০৬২)
পুত্র, মাতা পিতার আদেশ, আহলিয়া (স্ত্রী), আহাল (স্বামী) উনার আদেশ, প্রজা, রাজার আদেশ, গোলাম মুনিবের আদেশ পালন
করে থাকে। এতে তারা মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের ব্যতীত অন্যদের আদেশ পালন করে
মাযহাব বিরোধীদের মতে তারা কাফির হবে কিনা?
৩য় প্রমাণ
(১০৬৩)
উছূলে হাদীছ শরীফ উনার
মধ্যে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের অবস্থা বর্ণিত আছে। পবিত্র হাদীছে মুতাওয়াতির, মাশহূর, আযীয, গরীব, ছহীহ, হাসান, দ্বয়ীফ, মারফু, মওকুফ, মাকতু, মুরসাল, মুয়াল্লাক, মুনকাতি ইত্যাদি বিবিধ
প্রকার পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের কোনটা গ্রহনীয়, কোনটা পরিত্যাজ্য। বিদয়াতী, অপরিচিত, স্মৃতিশক্তি রহিত ব্যক্তিদের বর্ণিত পবিত্র হাদীছ শরীফ ছহীহ হবে কি না? পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের সত্যাসত্য নির্ণয় করতে চাইলে ইহা মান্য করা একান্ত
আবশ্যক।
কিন্তু এই বিদ্যার প্রমাণ
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে নেই। এটা ইমাম মুজতাহিদ
উনাদের ক্বিয়াসী ফায়ছালা ভিন্ন আর কিছুই নয়। এখন যদি কেউ এটা অমান্য করে, তবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
পবিত্র হাদীছ শরীফ নষ্ট করলো, আর যদি মানে তবে পবিত্র কুরআন
শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ ভিন্ন উপরোক্ত আলিম উনাদের তাকলীদ করে কাফির ও মুশরিক
হবে কি না?
৪র্থ প্রমাণ
(১০৬৪)
ইমাম বুখারী, মুসলিম, আবূ দাউদ, নাসায়ী, ইবনে মাযাহ, তিরমিযী, মালিক, আহমদ প্রভৃতি হাদীছ শরীফ উনাদের লিখক ইমামগণের মধ্যে কেউ কেউ প্রথম শ্রেণীর
অগ্রগণ্য এবং কেউ কেউ দ্বিতীয় শ্রেণীভুক্ত ছিলেন।
উনাদের মধ্যে কেউই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনাকে দেখেননি। সুতরাং উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র নুরুছছালাম অর্থাৎ পবিত্র যবান মুবারক
থেকে কোন হাদীছ শরীফই শ্রবণ করেননি। কিন্তু উপরোক্ত মুহাদ্দিছগণ নিজ নিজ ক্বিয়াসে
যে হাদীছ শরীফকে সত্য বা ভ্রান্তিমূলক বলেছেন এবং যে হাদীছ শরীফ বর্ণনাকারীকে
সত্যবাদী বা মিথ্যাবাদী বলেছেন, তাই মুসলিম জগতের লোক মেনে
আসছেন। ছহীহ বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মুয়াত্তা শরীফ, আবূ দাউদ শরীফ, তিরমিযী শরীফ, নাসায়ী শরীফকে ছিহাহ
সিত্তাহ বলা হয়। এর হাদীছ শরীফ থাকতে অন্যান্য হাদীছ শরীফ গ্রন্থের হাদীছ শরীফ
ধর্তব্য হবে না। প্রথমেই ছহীহ বুখারী শরীফ, তারপর ছহীহ মুসলিম শরীফ ইত্যাদি গ্রহণ করতে হয়। এগুলো সমস্তই ক্বিয়াসী কথা।
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে উপরোক্ত মুহাদ্দিছ উনাদের
কোনো কথাই বর্ণিত নেই। এক্ষেত্রে কেউ যদি উক্ত হাদীছ বিশরাদগণের বিনা দলীলের উক্তি
না মানে, তবে সমস্ত হাদীছ শরীফ
বাতিল হয়ে যাবে। আর যদি মানে তবে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ ভিন্ন
অপরের বিনা দলীলের উক্তি মেনে কাফির ও মুশরিক হবে কি না?
৫ম প্রমাণ
(১০৬৫)
ইমাম ফখরুদ্দীন রাযী
রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম জারীর তাবারী
রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম ইবনে কাছীর
রহমতুল্লাহি আলাইহি, কাজী বায়যাবী রহমতুল্লাহি
আলাইহি ও হযরত ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা পবিত্র কুরআন
শরীফ উনার তাফসীর লিখেছেন। যা দ্বারা পবিত্র আয়াত শরীফসমূহ উনাদের নাযিল হওয়ার
কারণ, সময় ও প্রকৃত অর্থ বুঝা যায়।
এগুলো ব্যতীত পবিত্র কুরআন শরীফ উনার প্রকৃত অর্থ অনুধাবন করা যায় না। কয়েকটি
উদাহরণ দিলে বিষয়টি ভালভাবে বুঝা যাবে।
১ম উদাহরণ
পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ আছে-
(১০৬৬)
وَأَنْ تَجْمَعُوْا بَيْنَ الْأُخْتَيْنِ
উনার প্রকৃত আভিধানিক অর্থ
হচ্ছে- দুই সহোদরা বোনকে একত্রিত করা হারাম। কিন্তু এই আভিধানিক অর্থ এর প্রকৃত
অর্থ নয়। টিকাকারগণ এর প্রকৃত অর্থ এরূপ লিখেছেন যে, দুই সহোদরা বোনের একজনকে বিবাহ করে তার বর্তমানে অন্য বোনকে বিবাহ করা হারাম।
২য় উদাহরণ
পবিত্র কুরআন শরীফ উনার
মধ্যে আরো উল্লেখ আছে-
(১০৬৭)
فَاَيْنَمَا تُوَلُّوْا فَثَمَّ وَجْهُ اللهِ
অর্থ: তোমরা যে দিকে মুখ
ফিরিয়ে নামায পড়ো, মহান আল্লাহ পাক সেদিকেই
আছেন। এতে প্রমাণিত হয় নামায পড়ার সময় কা’বা শরীফ উনার দিকে মুখ করার আবশ্যকতা
নেই। কিন্তু টিকাকারগণ এর প্রকৃত অর্থ লিখেছেন যে স্থানে থেকে তোমরা কা’বা শরীফ
উনার দিকে মুখ করে নামায পড়ো, সে স্থানেই মহান আল্লাহ
পাক তোমার নামায কবুল করবেন।
৩য় উদাহরণ
(১০৬৮)
ছলাত শব্দের আভিধানিক অর্থ
নিতম্ব, হেলান, যাকাত শব্দের অর্থ পবিত্রতা লাভ করা, ছওম শব্দের অর্থ নিরস্ত্র হওয়া ও হজ্জ শব্দের অর্থ ইচ্ছা করা। এখানে এটা তার
প্রকৃত মর্ম নয়। টিকাকারগণ এর প্রকৃত অর্থ নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত লিখেছেন। এখানে পবিত্র কুরআন শরীফ বুঝতে হলে উক্ত তাফসীরকারক উনাদের মত
গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে
উনাদের মতামতের অধিকাংশই বর্ণিত হয়নি। তাহলে যারা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র
হাদীছ শরীফ ভিন্ন তাফসীরকারক উনাদের মত অনুসরণ করবে তারা কাফির ও মুশরিক হবে কিনা?
৬ষ্ঠ প্রমাণ
(১০৬৯)
মহান আল্লাহ পাক তিনি
পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে নামায পড়তে, গোলাম আযাদ করতে ও জন্তু শিকার করতে আদেশ মুবারক করেছেন। কিন্তু ইমামগণ
প্রথমটিকে ফরয, দ্বিতীয়টিকে মুস্তাহাব ও
তৃতীয়টিকে মুবাহ সাব্যস্ত করেছেন। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে এগুলোর স্পষ্ট
কোনো মিমাংসা নেই। এক্ষেত্রে কেউ যদি ইমাম উনাদের ফায়ছালা মেনে না নেয়, তাহলে নামাযকে মুস্তাহাব অথবা মোবাহ বলে এবং গোলাম আযাদ এবং পশু শিকার করাকে
ফরয বলে গোমরাহ হবে, আর যদি তা স্বীকার করে নেয়
তাহলে ইমাম উনাদের মাযহাব মানতে বাধ্য হলো।
৭ম প্রমাণ
(১০৭০)
মহান আল্লাহ পাক তিনি
ইরশাদ মুবারক করেন-
نِسَاؤُكُمْ حَرْثٌ لَّكُمْ
তোমাদের আহলিয়ারা তোমাদের
শষ্যক্ষেত্র। তোমরা যে দিক দিয়ে ইচ্ছা করো ঐ শষ্যক্ষেত্রে গমণ করো।
এই পবিত্র আয়াত শরীফ উনার
স্পষ্ট মর্মানুসারে আহলিয়াদের বড় ইস্তিঞ্জার রাস্তা দিয়ে নির্জনবাস করা সাব্যস্ত
হয়। ইমাম উনারা ক্বিয়াস করে এই পবিত্র আয়াত শরীফ উনার প্রকৃত অর্থ স্থির করেছেন।
এখন কেউ যদি ইমাম উনাদের ক্বিয়াসী ব্যবস্থা স্বীকার না করে, তাহলে আহলিয়াদের বড় ইস্তিঞ্জার রাস্তা দিয়ে নির্জনবাস করার ফতওয়া প্রদান করে
বিশ্বের মুসলমানদেরকে গোমরাহ করবে। আর যদি ক্বিয়াসী ব্যবস্থা গ্রহণ করে তবে ইমাম
উনাদের মাযহাব মেনে কাফির ও মুশরিক হবে কি না?
৮ম প্রমাণ
(১০৭১)
পবিত্র কুরআন শরীফ উনার
মধ্যে উল্লেখ আছে-
فَمَا اسْتَمْتَعْتُمْ بِهٖ
مِنْهُنَّ فَاتُوْهُنَّ أُجُوْرَهُنَّ
আহলিয়াদের (স্ত্রী লোক)
সাথে মুতা বিবাহ করে তাদের দেন মোহর পরিশোধ করো।
এই পবিত্র আয়াত শরীফ উনার
অর্থানুসারে মুতা নিকাহ হালাল সাব্যস্ত হয়। এক অথবা দশদিন অথবা নির্দিষ্ট মেয়াদ
উল্লেখ করে বিবাহ করাকে মুতা বিবাহ বা কন্টাক্ট ম্যারেজ বলা হয়। এইরূপ কোনো
নির্দিষ্ট মেয়াদ উল্লেখ করে নিকাহ করা সম্মানিত শরীয়তে হারাম সাব্যস্ত হয়েছে। ইমাম
উনারা ক্বিয়াস করে উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার প্রকৃত অর্থ প্রকাশ করেছেন। এখন যদি
ইমাম উনাদের ক্বিয়াসী ব্যবস্থা অস্বীকার করে তবে মেয়াদী নিকাহ হালাল মনে করে
গোমরাহ হবে। আর যদি স্বীকার করে তবে ইমাম উনাদের মাযহাব মানতে বাধ্য হবে।
৯ম প্রমাণ
(১০৭২)
পবিত্র কুরআন শরীফ উনার
মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
فَكُلُوْا مِمَّا ذُكِرَ اسْمُ اللهِ عَلَيْهِ
অর্থ: যে বস্তুর উপর মহান
আল্লাহ পাক উনার নাম মুবারক উচ্চারণ করা হয়েছে তা খাও।
উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ
উনার স্পষ্ট মর্মানুসারে প্রত্যেক হালাল, হারাম যে কোনো বস্তু হউক না কেন বিসমিল্লাহ পড়ে খেলে তা হালাল হবে। কিন্তু
হযরত ইমাম মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা ক্বিয়াস করে এর প্রকৃত অর্থ প্রকাশ
করেছেন। যেমন পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
(১০৭৩)
وَلَا تَأْكُلُوْا مِمَّا لَمْ يُذْكَرِ اسْمُ
اللهِ عَلَيْهِ
অর্থ: যে বস্তুর উপর মহান
আল্লাহ পাক উনার নাম মুবারক উচ্চারণ করা হয়নি, তা আহার করো না।
উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ
উনার স্পষ্ট মর্মানুসারে কোনো খাদ্য সামগ্রী বিসমিল্লাহ না পড়ে খেলে হারাম হবে।
কিন্তু ইমাম মুজতাহিদ উনারা নিজ ক্বিয়াসে এর অর্থ অন্যরূপ সরল সত্য মর্ম প্রকাশ
করেছেন।
এখন যদি ইমাম মুজতাহিদ
উনাদের ক্বিয়াসী ব্যবস্থা অমান্য করে তবে হারাম বস্তুকে হালাল ও হালালকে হারাম বলে
কাফির হবে। আর যদি মানে তবে ইমাম মুজতাহিদ উনাদের মাযহাবকে মানতে বাধ্য হবে।
১০ম প্রমাণ
(১০৭৪)
পবিত্র কুরআন শরীফ উনার
মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
وَكَلِمَةُ اللهِ وَرُوْحٌ مِّنْهُ
অর্থ: “হযরত ঈসা রূহুল্লাহ
আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার বাক্য ও তা হতে একটি রূহ (আত্মা)
মুবারক।”
উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ
উনার স্পষ্ট অর্থ গ্রহণ করলে আধুনিক খ্রিস্টানী মত সাব্যস্ত হয়। কিন্তু এটা বিভ্রান্তিমূলক
অর্থ। ইমাম মুজতাহিদ উনারা ক্বিয়াস করে এর প্রকৃত অর্থ ব্যক্ত করেছেন। এখন যদি
ইমাম মুজতাহিদ উনাদের মত না মানে তবে খ্রিষ্টীয় মতাবলম্বী হবে। আর যদি মানে তবে
ইমাম উনাদের মাযহাব ধরতে বাধ্য হবে।